পূর্ব থেকে পশ্চিম
পরশপাথর
পর্বঃ ৬
‘মার্গারেট এন্ডারসন’ গালভরা হাসি নিয়ে স্টেইজে উঠেই তার সেই বহুল প্রচারিত গেইমটা শুরু করে দিলেন; যার কথা বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইট, প্রোগ্রামের সময়সূচী এমনকি ওরিয়েন্টেশানের লিফলেটসহ সব জায়গায় একেবারে আয়োজন করে লিখে রাখা হয়েছে। ওরিয়েন্টেশানের শুরুতে ইউনিভার্সিটি অব ইলিনয়ের সব গুণগান শেষ করে বহুল প্রতীক্ষিত ‘গেইম শো’ শুরু হলো। গেইমের নাম ‘স্ট্যান্ড–আপ এন্ড সীট–ডাউন গেইম’, তার ভাষ্য মতে এটি ‘ওয়ার্ম আপ’ জাতীয় গেইম। গেইমের নিয়মও খুব সোজা, সে একটা একটা করে মহাদেশের নাম বলবে, তারপর সেই মহা দেশ থেকে যারা এসেছে তারা উঠে উঠে দাঁড়াবে এবং তারপর বসে পড়বে। প্রথমে সে বলল, ‘এন্টার্কটিকা’; স্বাভাবিকভাবেই কেউ উঠে দাঁড়ায়নি। তারপর একে একে সব শেষে ‘এশিয়া’ বলার সাথে সাথে তুমুল সোরগোলসহ মনে হলো পুরো হলটাই উঠে দাঁড়িয়ে গেলো। তা না হয়ে উপায় কি! বিশ্বের এক–তৃতীয়াংশ মানুহষইতো ইন্ডিয়া আর চীনের। আমি মনে মনে বলি, ‘কি এমন তোমার গেইম, পিএইচডি করতে আসা লোকজনকে দিয়ে তুমি ‘স্ট্যান্ড–আপ সীট–ডাউন’ গেইম খেলাচ্ছো; একবার যদি বাংলাদেশে নিয়ে তোমাকে দিয়ে ‘হা–ডু–ডু’ খেলিয়ে নিতে পারতাম, তাহলে বুঝতে ‘ওয়ার্ম আপ’ গেইম কাকে বলে।’ কিন্তু মজার ব্যাপার হচ্ছে হচ্ছে, এই নিম্নমানের অতি সাধারণ একটি জিনিসকে সে অযথাই গেইম নাম দিয়ে যা করল, তা হেসে লুটোপুটি খাওয়ার জন্য যথেষ্ট।
এরপর বিভিন্ন গ্রুপে প্রতি টেবিলে যারা বসে আছে তাদেরকে কিছু কিছু পেপার ধরিয়ে দেয়া হলো; এরা আবার দুই পয়সার কাজ করে তিন পয়সার মন্তব্য পেতে খুব পছন্দ করে। ‘আমরা কিভাবে আমাদের মানোন্নয়ণ করতে পারি বলে তুমি মনে করো?’, এই ধরণের ন্যাকামি টাইপ কিছু প্রশ্নের উত্তর পূরণ করা জাতীয় পেপার। আমরা আমাদের টেবিলে বসেছিলাম বাংলাদেশ থেকে আসা পাঁচজন, আর তিনজন ইন্ডিয়ান। আমরা সবাই বাংলাদেশের এবং ফুল–ফান্ড নিয়ে পিএইচডি করতে এসেছি শুনে তাদের আকাশ থেকে পড়বার দশা হলো। শুধু তারা নয় ,আসলে অনেক দেশের অনেকের সাথেই কথা বলে দেখেছি। বেশিরভাগই বাংলদেশ বলে কিছুর নামই শোনেনি, চেনেইনা; যারা চেনে তারাও ভাবতেই পারেনা যে ওই দেশের মানুষ পিএইচডি জাতীয় কিছু করতে পারে। কি জানি, তারা হয়তো ভাবে, এ–দেশের মানুষগুলি ধর্মের অজুহাত দিয়ে মহাসমারোহে সারা দেশে একযোগে বোমা ফাটাবে, দুর্নীতি করে বছর বছর রেকর্ড গড়বে আর প্রাকৃতিক দূর্যোগের মুখে পতিত হয়ে হাহাকার করবে; তাদের প্রধানমন্ত্রী অসহায়ভাবে কাঁদো কাঁদো গলায় আন্তর্জাতিক সাহায্য চেয়ে আবেদন করবে। হজ্জ্বের নাম করে সৌদি বাদশার পকেটে প্রতিবছর যে টাকা যায়, তা দিয়ে হয়তো একটা ভয়াবহ দূর্যোগ মোকাবেলা করা যায়, অথচ সেই লাভের টাকা থেকে অপদার্থ সৌদি বাদশার জাতেরা কয়েক পয়সার শুকনো খেজুর আর উটের মাংস পাঠিয়ে আমাদের নাম চিরস্থায়ীভাবে পাঠিয়ে দেয় ভিক্ষুকের লিস্টে। বিশ্ব দরবারে এ–জাতি ভিক্ষুকের জাতি।
কদাচিৎ, ডঃ ইউনুসেরা নোবেল পুরস্কার নিয়ে আসলে তার সবচেয়ে বড় সমালোচক হয়ে উঠে তারই দেশের লোকেরা। নোবেল বিজয়ী হিসেবে বিশ্বের দরবারে তাঁর যে সন্মান আছে, তার সিকিভাগও নেই তাঁর নিজের দেশে। সে–দেশে সন্মান যে শুধু বড়বাপ আর বড়নানার সন্তানদের। বরং, সেখানকার মানুষ এখন ডঃ ইউনুসকে পূর্বের চেয়ে অধিক সমালোচনার দৃষ্টিতে দেখে, নোবেল প্রাইজ পাওয়ার পর তার সন্মানহানি হয়েছে ঢের বেশি। কাউকে সন্মান দিতে সে–জাতির খুব লজ্জা লাগে। তাই বিশ্ববাজারে নিজের দেশেকে যখন পরিচয় করিয়ে দিতে যাই তখন খুঁজে পাইনা কিছুই। তবে এত না–থাকার মাঝেও একটা মূল্যবান জিনিস কিন্তু আছে। ‘স্বাধীনতা’; আমাদের সন্মানের সর্বশেষ এবং একমাত্র বস্তু। কেউ যখন কোন দেশকে চিনতে পারে না, প্রথমেই জিজ্ঞেস করে, ‘এটি কি স্বাধীন দেশ?’ খুব গর্ব করে বলতে পারি, বাংলাদেশ স্বাধীন দেশ, আমরা নয়মাস যুদ্ধ করে স্বাধীনতা পেয়েছি তিরিশ লক্ষ শহীদের রক্তের বিনিময়ে। ত্রিশ লক্ষ শুনে চমকে উঠে কেউ কেউ, আরো একবার চমকে উঠি আমিও, আমরাও। কি আর আছে আমাদের বলবার মত। গরীব একটা দেশ, বেশভূষাহীণ, খাবার নেই, শিক্ষা নেই, চিকিৎসা নেই, বাসস্থান নেই; আছেতো শুধু হাহাকার আর হাহাকার।
হলঘর থেকে বের হয়ে আরো একটা জায়গায় নিয়ে যাওয়া হলো আমাদের এবং বসিয়ে দেয়া হলো বিভিন্ন টেবিলে গ্রুপ করে। এবারকার টেবিলে আমি একজনমাত্র বাংলাদেশী। বাকী সবাই অন্যদেশের; জার্মানি, চীন, তুরস্ক; সবাই নতুন। একটি মাত্র চেয়ার ফাঁকা। সবার সাথে সবার কথা বার্তা চলছে, সবাই নিজেদের বিভিন্ন জিনিস নিয়ে বলছে। ঠিক তখনি, শীতের শেষের দিকে হঠাৎ যেমন বসন্তের বাতাস প্রথম বারের মত করে এসে অজানা এক অপূর্ব সুখের পরশ বুলিয়ে যায়; কল্পনার রাজ্যে লাল–নীল ডানা মেলে উড়তে গেলে যখন মনে হয় এই বুঝি ছুঁয়ে গেলো মেঘ, এই বুঝি স্পর্শ করা যাবে আকাশ; আগোছালো আনমনা সময়ে হঠাৎ করে যখন চমক দিয়ে যায় বিজলি–বিদ্যুত; সেই সমস্ত অনুভূতিগুলোকে জাগিয়ে দিয়ে হঠাৎ করে পাশের খালি চেয়ারটাতে এসে বসলো পৃথিবীর কোন এক রাঙ্গা রাজকন্যা। আমি নিজেকে বুঝাতে চেষ্টা করি হাজার হাজার মাইল দূরে কোথা থেকে আসবে সুরঞ্জনা কিংবা লাবণ্যরা, কে চাইবে পাখির নীড়ের মত চোখ তুলে। তবু, সবকিছু এলোমেলো করে দিতেই বুঝি ‘মহুয়া’রা আসে পৃথিবীর পথে পথে, ‘পদ্মাবতী’রা চেয়ে থাকে চোখের দিকে, ‘বনলতা’রা বসে মুখোমুখি। আমি অবাক হয়ে তাকিয়ে থেকে পরিচিত হলাম; আর হতবাক হয়ে পড়তে থাকলাম গলায় লাগানো পরিচয়পত্র। সেখানে ছোট্ট করে লেখা পৃথিবীর সবচেয়ে মায়াবী, সবচেয়ে প্রেমময় শব্দ ‘বাংলাদেশ’।
বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে ক্যাম্পাস ট্যুরের মাধ্যমে সবকিছুর সাথে পরিচয় করিয়ে দেয়া হলো প্রথমে। তারপর দুপুরের খাবার শেষে চোখ ধাঁধানো ‘শিকাগো’ শহর ঘুরিয়ে দেখানো হলো ট্রলিতে করে এবং সেদিনের মতো সবকিছুর সমাপ্তি ঘোষণা হয়ে গেলো। পরবর্তী দিন আবার অফিসিয়াল কিছু জিনিস জানবার জন্য আমাদের আসতে বলা হলো অন্য আরেকটা জায়গায়। সেদিন বিভিন্ন সংগঠন বিভিন্ন কিছুর আয়োজন করে সবাইকে ছোট ছোট উপহার, কলম, টি–শার্ট ইত্যাদি দান করে দু’হাত ভরিয়ে ফেললো। সেদিনকার প্রোগ্রাম মূলত টিচিং অ্যাসিস্ট্যান্টদের(টিএ) জন্য, তাদের কাজ কি হবে সেই সমস্ত বুঝিয়ে দেবার জন্য। ‘বারবারা’ নামের ষাটোর্ধ্ব ভদ্রমহিলা হয়তো তার নামকরণের সার্থকতা প্রমাণ করার জন্যই বারবার করে বলতে থাকলো, ‘যার যা প্রশ্ন আছে যেন করে ফেলে এবং সেরা প্রশ্নের জন্য পুরস্কৃত করা হবে।’ অন্যদিকে, প্রশ্নগুলোর উত্তর দেবে আগের বছর যারা টিচিং অ্যাসিস্ট্যান্ট হিসেবে এসেছে তারা, তাদের অভিজ্ঞতা থেকে। সবাইকে কলম আর কার্ড ধরিয়ে দেয়া হলো প্রশ্ন করবার জন্য। যথারীতি মহামূল্যবান প্রথম প্রশ্ন, ‘Can we date with our students?’ উত্তরটা অবশ্যই ‘No’, তবে একটু মুচকি হেসে।
সবকিছু শেষে সেখান থেকে বেরিয়ে আসতে না আসতেই কোন এক সুন্দরী ভিনদেশি তরুণী লাজলজ্জার মাথা খেয়ে বলে উঠল, ‘Do you wanna have a kiss?’ আমি তাড়াতাড়ি আশপাশে আর পিছনে তাকিয়ে দেখি কেউ নেই। তার মানে আমাকেই বলছে। ভাবছি, এ–বলে কি? কিন্তু সে যাই বলুক আমার মুখ থেকে বেরিয়ে গেলো, ‘Sure’। বলতে না বলতেই সে কলমসহ একটা ফর্ম এগিয়ে দিচ্ছে। কি আশ্চর্য! এখানে kiss করবার জন্য আবার ফর্ম ফিল–আপ করতে হয় না কি? অবশ্য তাতেই বা কি? বড় কিছু পাবার জন্য ছোট কিছু কাজতো করতেই পারা যায়। খুশি মনে kiss ফর্ম ফিল–আপ করতে গিয়েই দেখি, হায়! এতো ‘quiz’। সে আমাকে আসলে জিজ্ঞেস করেছে, ‘Do you wanna have a quiz?’ কোথায় ‘kiss’ আর কোথায় ‘quiz’। ভারাক্রান্ত মনে আস্তে আস্তে চলে গেলাম নিজের ডিপার্টমেন্টে। নিজের পরিচয় দিয়ে সব কিছু বলার পর সেখানকার কমবয়সী মেয়েটা বলে উঠলো, ‘Do you wanna have your kiss?’ আমি আকাশ থেকে পড়ি পড়ি, কি বলে এরা এইসব! আমি কি kiss বিশ্ববিদ্যালয়ে এসে ভর্তি হলাম না কি? কিন্তু ন্যাড়া একবারই বেলতলায় যায়। আর বোকামি করছি না।আমি নিশ্চিত হবার জন্য তাকে জিজ্ঞেস করলাম, ‘quiz না কি?’ সে আমার ভুল সংশোধন করে দিয়ে বলল, ‘quiz না kiss’. না না করতে করতে করতেও শেষ পর্যন্ত বলেই ফেললাম, ‘Yes.’ আমার কাছ থেকে হ্যাঁ শুনবার সাথে সাথেই বালিকা যারপরনাই খুশি হয়ে আস্তে আস্তে কাছে এসে আমার হাত ধরে তুলে দিলো টিএ রুমের চাবি। আসলে সে জিজ্ঞেস করেছিলো,‘Do you wanna have your keys?’ (চলবে…)
পরশপাথর
নভেম্বার ০৯, ২০০৯
বরাবরের মত মজার আর রসালো লেখা।
পাত্থর ভাই, সবে তো কলির সন্ধ্যে । ধীরে ধীরে আরো পাবেন। কালচারাল শকের সবে তো শুরু। যখন প্রতিটি পদে পদে থ্যাঙ্কুর বন্যায় ভাসিয়া যাবেন। আপনি হাটতে যান, ঘুরতে যান, কিছু কিনতে যান – শুনবেন কেবলই থ্যাঙ্কু আর ওয়েলকাম। দেখবেন রাস্তায় বেরুলেই চেনেন না জানেন না – এমন সব লোক (লিস্টে সুন্দরী মেয়েরাও থাকতে পারে তা বলাই বাহুল্য) আপনার দিকে তাকিয়ে সোউজন্যমুলক একটা এক চিলতে হাসি দেবে। অনেকে আবার এলিভেটরে শুরু করবে যত রাজ্যের গল্প – বিউটিফুল ওয়েদার আউট সাইড – ইজ’ন্ট ইট?
রেস্টুরেন্টে ঢুকলে আরো বিপদ। যে কোন জায়গায় একটা খাবার অর্ডার করলেই সুন্দরী ওয়েটারের কাছ থেকে আপনি প্রশ্ন শুনবেন –
– সো হোয়াট সাইড ডু ইউ ওয়ান্ট?
আপনি হয়তো ভাববেন, করলাম একটা বার্গার ওর্ডার এর মইধ্যে আবার সাঈড মাইড কি! পরে মেনুতে দেখবেন বার্গারের সাথে সাব-মেনু হিসেবে আছে ফ্রেঞ্চফ্রাই, সালাড, বেকড পটেটো। যে কোন একটা আপনাকে পছন্দ করতে হবে।
আপনি হয়ত পছন্দ করলেন সালাড।
তখন আবার প্রশ্ন আসবে –
– হোয়াট কাইন্ড অব ড্রেসিং ডু ইউ ওয়ান্ট ?
আপনার আবার ভ্যাবাচ্যাকা খাওয়ার পালা। আপনাকে সালাডের ড্রেসিং গুলোর নাম জানতে হইবেক। যদি আপনি না জানেন, তবে আপনি ওয়েটারের ঘারেই প্রশ্নটা চাপিয়ে দিতে পারেন এই বলে –
– হোয়াট ড্রেসিংস ডু ইউ সার্ভ নরমালি?
ওয়েটার তখন উজার করে দেবে ড্রেসিং এর ঝাঁপি – র্যাঞ্চ, ব্লু চিজ, হানি মাস্টার্ড, ক্লাসিক রাসবেরি…।
আপনি শেষটা মনে রাখতে গিয়ে নির্ঘাৎ প্রথমটা ভুলে যাবেন। যা হোক তারপরও কষ্টে সৃষ্টে বলবেন – র্যাঞ্চ।
তখন হয়তো আবার প্রশ্ন শুনবেন –
– ডু ইউ ওয়ান্ট ইট অন দ্য টপ?
—- এই র’মের প্রশ্ন চলতেই থাকবে…
তবে থাকতে থাকতে একটা স্ময় পরে দেখবেন টিউন্ড হয়ে গেছেন। সবার কথাই ঠিক ঠাক মত বুঝতে পারতেছেন। আপ্নিও এলিভেটরে উঠে অপরিচিত কাঊকে দেখে হাসি দিয়ে ভ্যাজর ভ্যাজর করে গল্প শুরু করে দেবেন। তখন বুঝবেন অভিযোজন কম্পলিট।
ভাবছেন রেহাই পেয়েছেন? না রে বাপু। এতো সোজা নয়। হয়ত বছর কয়েক পরে দেশে গেলেন বাবা মাকে দেখতে। তখন দেখবেন বিপরীত কালচারাল শকের খেলা। রাস্তা দিয়ে চলতে গিয়ে অপরিচিত কাঊকে দেখলে অটোমেটিক হাসি দিয়ে দেবেন (ছেলেরা ভাববে ছাগল, আর মেয়েরা ভাববে ক্যাবলা), কিংবা মোবাইলের সিম কার্ড কিনে দোকানদারকে বলে বসবেন থ্যাঙ্কু। দোকানদার অবশ্য আমেরিকান কায়দায় ‘ওহ ইউ আর মোস্ট ওয়েলকাম’ না বলে আপনার দিকে সরু চোখে তাকিয়ে থেকে এক গাল হেসে বলবে – ‘ভাইজান আমেরিকা থন আইছেন, না?’
ওয়েল্কাম টু দ্য কনফিউজড ওয়ার্ল্ড!!!! :rose:
@অভিজিৎ,
আরো আছে, রাত তিনটার সময়ও দেখি দৌড়াচ্ছে, ভোর ছয়টার সময়ও দেখি দৌড়াচ্ছে। এদের প্রবলেমটা কি?
সরি, এক্সকিউজ মি, থ্যাঙ্ক ইউ, ওয়েলকাম, ক্যুড ইউ প্লিজ এই পাঁচটা জিনিস জানলে টোফেল-এ যে-কাউকে ১২০ এর মধ্যে ৯০ দিয়ে দেয়া উচিৎ।
আর কুকুর! সুন্দর সুন্দর পেখম(?)ওয়ালা কুকুরগুলোর সাথে ফষ্টি-নষ্টি কর সমস্যা নাই, তাই বলে বুড়িগঙ্গার তীরে ময়লার উপর বসে থাকে সে-রকম কুকুরের গালে গাল ঘষে ছাল তুলে ফেললে রাগ না করে পারা যায় না।
খাবারের কথা আর বলেন না, টার্কিস খেতে গেছি। দেখি আমাদের দেশি বেগুনের বাহারি আয়োজন করে, দাঁতভাঙ্গা নাম দিয়ে দাম করে রেখেছে ১৪ ডলার। আরে বেগুনতো বেগুন, তাকে যে-নামেই ডাকি না কেন?
আর পারি না।
বেশ মজা পেলাম। এ পর্বে ফরিদ ভাইয়ের (গণ-মামা)বিশেষ অবদান রয়েছে বলে মনে হচ্ছে।
@সৈকত চৌধুরী,
সঙ্গদোষ বুঝছেন। আগে এরকম ছিলাম না। এখন যা দেখবেন, সব আপনার মামার প্রভাব।
ভালো থাকুন।
পাথর ভাই এর ব্যাচেলর জীবন তো যা মনে হচ্ছে খুব বেশী দিন আর নেই 😉
প্রথম দিন ওরিয়েন্টেশন অভিজ্ঞতা মনে হয় সব খানেই মোটামুটি একই। আমার মনে হচ্ছিল হুবহু আমার সেই প্রথম দিন। কয়জন কোন দেশ মহাদেশ থেকে এসেছ, সবচেয়ে দুরের যে তাকে গেঞ্জী ছূড়ে মারা এই জাতীয় ব্যাপার স্যপার।
তবে ভাইজান গায়ের চামড়া একটু মোটা করে নেন, শিকাগোতে মাশাল্লাহ ঠান্ডা নেহায়েত মন্দ পড়ে না। অবশ্য শীত বিষয়ক কষ্ট অভিজ্ঞতা থেকে দেখেছি বেশীরভাগেরই প্রথম বছরই শুধু হয়।
@আদিল মাহমুদ,
জীবন নিয়ে আমি ব্যাপক খুশী, ব্যাচেলর না কি সেটা খুব একটা অর্থবহ না। আমি বেঁচে আছি, এই খুশীতেই অস্থির।
আর শীতের কথা কি বলবো? হয়ত ‘-১’ ডিগ্রিতে কাঁপছি, আর বড়রা বলছে, এখন যদি কাঁপতে থাকো, শীতকালে তুমি কি করবে? আমি বলি ‘-১’ ডিগ্রি তাপমাত্রা, এটা কি গ্রীষ্মকাল? তারা বলে, গ্রীষ্ম না হলেও শরৎ কাল। দেখি একটা শীত বেঁচে থাকা যায় কি না।
@পরশ পাথর,
আরে শীত নিয়ে ভয় করবেন না, ব্যাপার না। এক মাঘে শীত যায় না ভুল প্রমান করে ঠিক ই দেখবেন টিকে গেছেন, পরের বছর থোড়াই কেয়ার করছেন।
আর ব্যাচলের জীবনের মজাই আলাদা। যতদিন পারেন ব্যাচেলর থেকে যান। আর আমেরিকায় তো কথাই আছে যে লাইফ বিগেইনস এট ফর্টি। কাজেই…জস্মিন দেশে যদাচার…খুলে নদী পার।
@পরশ পাথর,
বাঁইচ্চা গেছেন কানাডা বা উত্তর ইউরোপে গিয়া পড়েন নাই।তা না অইলে বুঝতেইন কত ধানে কত চাল আছিল।
লেখা চালাইয়া যান,সব সময় সাথে রইছি।
@মাহবুব সাঈদ মামুন,
দূরত্ব যতই হোক, কাছে থাকুন। :laugh: