লেখকঃ অনিকীন
এই লেখাটা পড়লে আমি ধরে নেব আপনি আগের লেখাটা (লিঙ্ক) পড়েছেন, নিরাপত্তামূলক ব্যাবস্থাগুলো নিয়েছেন, রুটিন পরিবর্তন করেছেন এই পোস্টে আরো কিছু ধাপ ও কিছু গুরুত্বপূর্ণ রেফারেন্স দেয়া হল ঠান্ডা মাথায় পোষ্টটা পড়ুন
# হাঁ, আমি জানি সবসময় অতি সতর্ক অবস্থায় থাকা, নিয়মিত আচরণের প্যাটার্ন পরিবর্তন করা বেশ কষ্টকর তবে মৌলবাদীদের সহজ টার্গেট হওয়ার চাইতে, খুন হয়ে যাওয়ার চাইতে তা অনেক ভালো অভ্যাস হয়ে গেলে এতটা চাপ মনে হবেনা বাসায় বা নিরাপদ স্থানে সতর্কতার স্তর কমিয়ে রাখলেও চলবে, কিন্তু উন্মুক্ত স্থানে যেমন রাস্তায় বা পাবলিক প্লেসে আপনার অবশ্যই সতর্ক থাকা উচিত তবে এখন বাসাতেও যে পুরোপুরি নিরাপদ থাকা যায়না তা তো দেখতেই পাচ্ছেন
# মার্শাল আর্ট শিখুন কিছু জিনিস আছে যেগুলো অভ্যাস ছাড়া আয়ত্তে আনা কঠিন আপনি অন্যদের চাইতে অনেক দ্রুত শিখতে পারবেন কারণ আপনি জানেন আপনি নিজেকে বাঁচানোর জন্য শিখছেন তবে মনে রাখবেন আসল সংঘর্ষের সময় আপনি কোন রেফারি পাবেন না, টাইম লিমিট থাকবেনা, কোন ফেয়ার প্লে থাকবেনা আপনার লক্ষ্য থাকবে যে কোন ভাবে শত্রুকে দ্রুত নিষ্ক্রিয় করে পালানো
রিফ্লেক্স বাড়ানো, আঘাত সহ্য করার শক্তি বৃদ্ধি, দ্রুত পা ও শরীর স্থানান্তর করতে পারা, একসাথে একাধিক আক্রমণকারীকে সামলানো, শরীরের ভালনারেবল স্থানগুলোতে কার্যকর ভাবে তীব্র আঘাত করতে পারা এগুলো গুরুত্বের সাথে শিখুন
আগের পোষ্টেই বলেছিলাম আবারো বলছি, কয়েকজন একসাথে থাকা চূড়ান্ত মুহূর্তে খুব বড় পার্থক্য তৈরি করে দিতে পারে রণদীপম বসুদের খুন করতে পারেনি কারণ তাঁরা কয়েকজন একসাথে ছিলেন তারেক রহিম হাত দিয়ে চাপাতির আঘাতগুলো আটকিয়েছেন বলে মাথায় গুরুতর কোন আঘাত না লাগায় আহত হলেও বেঁচে গেছেন
# আশপাশের লোকজনের সাথে স্পর্শকাতর বিষয়গুলো নিয়ে কথা বলবেন না সবাইকে চোখ বুজে বিশ্বাস করবেন না আপনি জানেন না কার মাঝে কি লুকিয়ে আছে এটা খুব বেশি দেখেছি – আপনার আচরণ দেখে বা অন্যদের কাছ থেকে শুনে অনেকেই নাস্তিক সেজে তথ্য নিতে চাইবে আপনি তাদের ফাঁদে পড়ে সেন্সেটিভ ব্যাপারগুলো নিয়ে কথা বলা শুরু করবেন না এরকম দু জনকে সনাক্ত করতে পেরেছি যারা শিবিরের সক্রিয় কর্মী কিভাবে চিনলাম ? ওয়ার ক্রাইম ট্রাইবুনাল কে সেক্স ট্রাইবুনাল ডাকা, ইসলামী ব্যাংকে একাউন্ট, ফেসবুক ফ্রেন্ডলিস্টে আইএস সমর্থনকারী লোক, জঙ্গিদের কাজগুলোকে যৌক্তিক হিসেবে দেখানো এরকম
মৌলবাদী না হলেও যে আপনি পুরোপুরি নির্ভর করতে পারবেন এমনটা নয় নিজেকে নাস্তিক দাবি করা অনেক লোকের মধ্যেও কমনসেন্স আর বুদ্ধিমত্তার খুব অভাব দেখা যায় নিজেকে যুক্তিবাদী দাবি করলে এটা আশা করাই যায় যে তাঁরা অন্তত মৌলবাদী জঙ্গিদের চেয়ে বেশি বুদ্ধিমান হবেন নিজের ও সহযোদ্ধাদের অবস্থান ভালনারেবল করবেন না
# আবারো বলছি, শত্রুর দৃষ্টিকোণ থেকে দেখতে শিখুন আপনি কাওকে খুন করতে চাইলে কোথায় অবস্থান করতেন ? সেসব জায়গা দিয়ে যাওয়ার সময় বেশি সতর্ক থাকুন সম্ভাব্য সব পালানোর পথ আগে থেকেই চিনে রাখুন সবসময় সবকিছুতেই, বাসায় বা বাইরেই নিরাপত্তার জন্য বিকল্প ব্যাবস্থা রাখুন ব্যাকআপ প্ল্যানটাই আপনার জীবন বাঁচাবে
# সাহসী হওয়াটা চূড়ান্ত পরিস্থিতিতেও আপনাকে কাজ করতে সাহায্য করবে ভয়ের অভাব মানেই সাহস নয় শুধু বোকাদেরই কোন ভয় থাকেনা বরং সাহস হল কোন পরিস্থিতির আসল ঝুঁকি ও সুযোগগুলো বুঝতে পেরে বুদ্ধিমত্তার সাথে ভয়কে নিয়ন্ত্রন করা এগুলোর ভারসাম্য থাকাটাও গুরুত্বপূর্ণ মাথা ঠান্ডা রাখুন, যুক্তি দিয়ে সমস্যাটা সমাধানের চেষ্টা করুন সব ধরণের ঝগড়া বিবাদ এড়িয়ে চলুন পৃথিবীর প্রায় সব জায়গাতেই প্রগতি, বিজ্ঞান, মুক্তচিন্তাকে যুদ্ধ করেই সামনে যেতে হয়েছে কখনো হতাশ হবেন না এই সংঘর্ষটা অনিবার্য ছিল
# মানসিক দৃঢ়তা বেঁচে থাকার ক্ষেত্রে খুব বড় প্রভাব রাখে যুক্তরাষ্ট্রের পর্বত আরোহী অ্যারন র্যালস্টোন কে অনেকেই চেনেন ২০০৩ সালে ক্যানিয়নল্যন্ড ন্যাশনাল পার্কে হাইকিং এর সময় পা পিছলে পড়ে ও আকস্মিকভাবে পাথরের খাঁজে তার হাত আটকে যায় টানা প্রায় ছয়দিন আটকে থাকার পর ভোঁতা ছুড়ি দিয়ে নিজের হাত কেটে বাইরে বেরোয়, তারপর ওই অবস্থায় প্রায় ৫ মাইল হেঁটে মানুষের দেখা ও সাহায্য পায় বেঁচে থাকার জন্য এরকম দৃঢ় মানসিকতা থাকা উচিত আক্রান্ত অবস্থায় আপনার মানসিক জোর আপনার বেঁচে থাকায় খুব বড় প্রভাব রাখতে পারে
# আপনি যদি লিষ্টেড ব্লগার হোন অথবা অনলাইনে কখনো ছবি বা পরিচয় প্রকাশ করে এমন কোন তথ্য দিয়ে মুক্তচিন্তার লেখালেখি করে থাকেন বা কখনো থ্রেট পেয়ে থাকেন তবে আপনার খুবই সতর্ক হওয়া উচিত শত্রুকে কখনো ছোট করে দেখতে নেই খালি হাতে গুলি চাপাতির সামনে পড়ার মত খারাপ অবস্থা আর হয়না
# ফার্স্ট এইড জানাটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ এটা আপনার জীবন বাঁচাবে এমনকি আপনার কখনো দরকার না হলেও আপনি অন্যদের সাহায্য করতে পারবেন (https://en.wikibooks.org/wiki/First_Aid)
# “মানুষ ছাড়া ক্ষেপারে তুই মূল হারাবি” মানুষজনের থেকে বিচ্ছিন্ন হবেন না মানুষ শেখার খুব বড় মাধ্যম তবে এজন্য আপনাকে বাড়ির খবর, হাড়ির খবর সব দিতে হবে তা নয়
* ডিফেন্স এর টেকনিক্যাল ব্যাপারগুলো আরো ভালোভাবে জানেন এমন অনেকে এখানে আছেন আবার অনেকে আছেন যারা এক্সট্রিম ভায়োলেন্সে মৃত্যুর সামনে থেকে বেঁচে ফিরেছেন আপনার জানা বিষয়গুলো অথবা যে কাজ বা সিদ্ধান্ত আপনাকে চরম অবস্থায় বেঁচে থাকতে সাহায্য করেছে তা বিশ্লেষণ করে এখানে বলুন আপনি আক্ষরিক অর্থেই মানুষের জীবন বাঁচাতে সাহায্য করবেন (আমি নিজে দুবার মৃত্যুর সামনে থেকে ফিরেছি একবার ইউনিভার্সিটিতে পলিটিকাল আক্রমণ, অন্যবার ছিনতাইকারীদের সামনে দুই ক্ষেত্রেই আমি একা ছিলাম তখন ভায়োলেন্স নিয়ে এতটা সচেতন ছিলাম না প্রথমবার কিভাবে বেঁচেছি মনে নেই এক সপ্তাহ নড়া চড়া করতে পারিনি দ্বিতীয়বার বেঁচেছি বিপদ কয়েক মুহূর্ত আগে অনুমান করতে পারায়)
আমি আশা করব আপনি নিচের বইগুলো পড়বেন (এবং এটা ধরে নিয়েই আমি লিখেছি) ভায়োলেন্স নিয়ন্ত্রন করতে পারা শুধুমাত্র এখন নয়, সারা জীবনই আপনার কাজে লাগবে
এখানে ( http://gen.lib.rus.ec/ ) সবগুলো বই পাবেন কোন বই না পেলে আমাকে জানান
১। The Little Black Book of Violence: What Every Young Man Needs to Know About Fighting
– Lawrence A. Kane, Kris Wilder (খুব খুব গুরুত্বপূর্ণ একটা বই পুরো বইটা মনোযোগ দিয়ে পড়ুন সেকশন টু আর এপেনডিক্স গুলো খুব ভালোভাবে পড়ুন অন্য কোন বই না পড়লেও শুধু এটা পড়লেও চলবে )
২। Facing Violence : preparing for the unexpected – Rory Miller
৩। Meditations on Violence – Rory Miller (গুরুত্বপূর্ণ)
৪। The Gift of Fear – Gavin De Becker (শেষ অধ্যায়টাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ শুধু এটা পড়লেই চলবে)
৫। SAS Survival Handbook, third edition – John Wiseman ( ফাস্ট এইড বই, গুরুত্বপূর্ণ )
মনে রাখবেন, পোষ্ট বা বইগুলো পড়লেই আপনি নিরাপদ হয়ে যাবেন না এজন্য আপনাকে কাজ করতে হবে আপনার নিরাপত্তা আপনাকে নিশ্চিত করতে হবে কাজের মাধ্যমে নিজের নিরাপত্তা নিয়ে তখনই নিশ্চিত হতে পারবেন যখন আপনি শত্রুদের চাইতে সামগ্রিক ভাবে কয়েক ধাপ এগিয়ে থাকবেন
ভালো থাকুন ধন্যবাদ
অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ন পোস্ট। ভাই, একটা অন্যায় আবদার করি, বইগুলো আমাকে ইমেইল করতে পারবেন? আমি পেশায় একজন আইনরক্ষী, একটা সারভাইভাল ম্যানুয়াল লিখতে চাইছি। পিডিএফ হলে সবচেয়ে ভাল হয়।
[email protected]
আরও যদি কোন বই থাকে, পাঠালে আমি এবং আমার অধীনস্থ সহকর্মীরা চিরকৃতজ্ঞ থাকব।
সবচেয়ে বড় কথা : কে ব্লগারদের চিনিয়ে দিচ্ছে তা খুঁজে বার করার চেষ্টা করুন |
আরো ভালো করে বললে চাপাতির বা গুলির আঘাত সহ্য করার শক্তিবৃদ্ধি , ১০ জনের সাথে একা কুস্তি করতে পারার ক্ষমতা , শরীরের ভালনারেবেল স্থানগুলোতে হাত দিয়ে মারা ক্ষমতা ইত্যাদি |
এর সাথে অধমের টিপস :
নিজের সাথে পিস্তল বা আগ্নেয়াস্ত্র রাখুন | চাপাতির বিরুদ্ধে আগ্নেয়াস্ত্র খুব কার্যকরী | দু একটাকে গুলি করলে বাকিগুলো পালাবে |
সবচেয়ে বড় কথা : কে ব্লগারদের চিনিয়ে দিচ্ছে তা খুঁজে বার করার চেষ্টা করুন | দেখবেন বেশিরভাগ পরিচয় ফেসবুক নামক জানোয়ারের খোঁয়ার থেকে হচ্ছে | আর বাদ বাকি সব পাড়া পড়শীর দল | জান্নাতে যাবার লোভে ব্লগারদের চিনিয়ে দিচ্ছে |
খুবই সঙ্গত কথা | খুব হিসেব করে কথা বলা উচিত | আর দোহাই ফেসবুক করবেন না | এটা হলো মুক্তমনাদের মৃত্যুফাঁদ |
সব মিলিয়ে লেখাটা খুবই সময়োপযোগী এবং তথ্যসমৃদ্ধ |
বন্দুক দিয়ে আসলে কোনো সমস্যার সমাধান হয় না। উল্টো এসব কথা বললে, নেক্সট টাইম ৫৭ ধারায় গ্রেফতারের পর ছবি তোলার আগে সামনে কী-বোর্ড, পেনড্রাইভ, মনিটর এর সাথে সাথে কিছু সাজানো পাইপগান ধরিয়ে দেবে সরকারী টিকটিকি বৃন্দ। এবং, সহলেখকদের খুঁজতে বের হবার পর ‘বন্দুক যুদ্ধে হত’, গল্পটাও চালু হবে। মুক্তমনা লেখকদের বুঝতে হবে, যে আনসারুল্লাহর চেয়ে বড় আনসারুল্লাহ হচ্ছে, সেইসব বাহিনি যারা এদেরকে তথ্য দিয়ে, জামিন দিয়ে সহযোগিতা করছে।
আর সবাই, অমি রহমান পিয়ালের মত সেলিব্রিটি না, যে চাইলেই পিস্তলের লাইসেন্স পাবে।
আমাদের প্রধান অস্ত্র হচ্ছে আমাদের আইডিয়া। কারণ, সেই v for vendetta এর মত করে বলতে হয়, “Ideas are bulletproof”.
এ মুহুর্তে সবচে বড় পদক্ষেপ হচ্ছে ফেসবুক এর মোহ ও জন পরিচিতির মোহ ত্যাগ। এবং pen name এ লেখালিখি করা। আর যারা তালিকাবদ্ধ হয়ে গেছেন তাদের জন্য এই লেখার টিপসগুলো কার্যকর হবে।
হ্যা ঠিকই তো | আমি তো ভুলেই গেছলাম এরকম সম্ভাবনার কথাটা |
আচ্ছা আমাদের তথ্যগুলি কে ফাঁস করছে বলুন তো ? সেটা কোথা থেকে ফাঁস হচ্ছে ? নেট থেকে না পাড়া থেকে ? যদি নেট থেকে হয় তাহলে আমাদের কম্পুটার কলাকৌশল দিয়ে আমরা প্রতিপক্ষকে ধোঁকা দিতে পারি | আর পাড়া থেকে হলে আপনার টিপস গুলো হয়ত কাজে লাগবে |
ফেসবুকের মোহ ত্যাগ করতে হবে আর মুক্তমনা ব্লগের সাইবার সিকিউরিটি জোরদার করতে হবে | কোনো ব্লগারের কার্যকলাপে বিন্দুমাত্র সন্দেহ হলেই তাকে প্রবেশ করতে দেয়া হবে না | তার আইপি এড্রেস থেকে তার পরিচয় খুঁজে বের করতে হবে | তাহলেই সে কে আর তার পিছনে কোন ঘুঘুরা আছে তা বুঝা যাবে | সেটা একটা বিরাট জয় হবে |
এমন ব্যবস্থা করতে হবে যাতে নেট থেকে কখনো মুক্তমনাদের পরিচয় ফাঁস না হয় |
সব সমস্যার সমাধানের কথা বলিনি । লিখেও কি সব সমস্যার সমাধান করা যায় ? নিজেকে বাঁচানোর কথা বলেছি ।
শ্রম প্রতিমন্ত্রীর ভাগিনা কুপিয়েছে বলে স্বীকার করার পরেও তাকে ছেড়ে দেয়া হয় , আসামী হাতেনাতে ধরা পরার পরেও এখনও একজনের ও কোন বিচার হলনা , আর আপনি এখনো বিশ্বাস করে বসে আছেন মদিনা সনদে দেশ চালাতে চাওয়া বাংলাদেশ সরকার ব্যাটমান , সুপারম্যানের মত আপনাকে নিরাপত্তা দেবে ?
সেন্সরিং , সেন্সরিং এভরিহয়ার, নোহয়ার এ প্লেস টু টক ।