মুক্তিযুদ্ধে ক্ষয়ক্ষতি নিয়ে আন্তর্জাতিক পরিসরে গবেষণা হয়েছে অনেক। আজকে আলোচনা করবো কিছু আন্তর্জাতিক গবেষণা এবং পত্রপত্রিকা নিয়ে। নিবন্ধের প্রথম পর্বে থাকবে যুদ্ধ কালীন সময়ে আন্তর্জাতিক সংবাদপত্রগুলোতে (বাংলাদেশ, ভারত এবং পাকিস্তানী সংবাদপত্র ব্যাতিত) শহীদের সংখ্যা সম্পর্কে কি বলা হয়েছে। নিবন্ধের দ্বিতীয় পর্বে থাকবে আন্তর্জাতিক গনহত্যা বিশেষজ্ঞের মতামত মুক্তিযুদ্ধের ক্ষয়ক্ষতি সম্পর্কে। তৃতীয় অংশে থাকবে একজন কিংবদন্তীতূল্য গনহত্যা গবেষকের বাংলাদেশ সম্পর্কে গবেষণার আদ্যপান্ত। উল্লেখ্য এসব গবেষণা কিন্তু পত্রিকার রিপোর্ট বা কেবলই অনুমান ভিত্তিক নিবন্ধ নয় বরং থিসিস পেপার নির্ভর যেগুলো স্থান করে নিয়েছে অনেক রিসার্চ জার্নালে, আর তাই ফেলনা বলে উড়িয়ে দেয়ার সুযোগ নেই।

মুক্তিযুদ্ধের ক্ষয়ক্ষতি পরিমাপক করার জন্য আমি একটা পদ্ধতি ব্যাবহার করি ‘Concordia approach’ যার মানে করলে মোটামুটি দাঁড়ায় আমার নিজস্ব মতকে ভুল ধরে নিয়ে শত্রুপক্ষের মতকে ঠিক প্রমাণ করার চেষ্টা। এজন্য মুক্তিযুদ্ধের ঘটনা বর্ণনা করার সময় বরাবরই দেশী ইতিহাসবিদ-লেখকদের কোটেশান পারতপক্ষে গ্রহণ না করে আমরা চেষ্টা করি কোন থার্ড পার্টি কিংবা পাকিস্তানী কোন লেখকের বই থেকে কোট করতে। ফলে যদি দেখানো যায় আন্তর্জাতিক অথবা পাকিস্তানী ইতিহাসবিদের মতেই পাকিস্তানিদের কথা অগ্রহণযোগ্য তখন সেই আর্টিকেলের গ্রহণযোগ্যতা বেড়ে যায় অনেক গুন, সাথে সাথে দেশ বিরোধীদের কথা বলার সুযোগও থাকে না।
আসুন খুঁজে দেখছি একাত্তরের বিদেশী সংবাদপত্রগুলো। ঐ সময়ের মৃত মানুষের সংখ্যা নিয়ে বিদেশী পত্রিকাগুলোতে কি কি সংখ্যা দেয়া আছে সেটার একটা ডাটা শীট তৈরি করবো আমরা। যদিও এ পদ্ধতিতে মুক্তিযুদ্ধের সময় শহীদের সংখ্যা নিরূপণের চেষ্টা বোকামি। কারণটাও খুবই সহজ, মুক্তিযুদ্ধের সময় বাংলাদেশ ছিল বিদেশী সাংবাদিক মুক্ত। সাংবাদিকদের বড় অংশকেই বের করে দেয়া হয় ২৫ মার্চ রাতে,

দ্যা ডেইলি টেলিগ্রাফের ২৭শে মার্চ ১৯৭১ সংখ্যাটা পড়লে সবার কাছে পরিস্কার হয়ে যাবে সাংবাদিকদের গ্রেফতার করে বের করে দেয়ার ঘটনাটি। আমি ঐ রিপোর্ট থেকে খানিকটা উদ্ধৃত করছি,

“স্বাধীনতা আন্দোলনকে ধূলিস্যাৎ করতে সেনাবাহিনী যখন অভিযানে নামে সেই সময় থেকেই পূর্বপাকিস্তানে অবস্থানরত সকল বিদেশী সাংবাদিককে অস্ত্রের মুখে ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলে অবরুদ্ধ করে রাখা হয়। এবং পরে সবাইকে ধরে প্লেনে উঠিয়ে করাচিতে নিয়ে যাওয়া হয়।

ডেইলি টেলিগ্রাফ পত্রিকার সংবাদদাতা সাইমন ড্রিং হোটেলের ছাদে লুকিয়ে থেকে গ্রেপ্তার এড়াতে সক্ষম হন; যদিও তাঁকে গ্রেপ্তার করার জন্য অবিরাম চেষ্টা চালানো হয়েছে। সাইমন ড্রিং ছাড়া কেবল এ্যসাসিয়েটেড প্রেস-এর ফটোগ্রাফার মাইকেল লরেন্ট গ্রেপ্তার এড়াতে সক্ষম হয়েছিলেন। সাইমন ড্রিং জ্বলন্ত ঢাকা শহরে ব্যাপকভাবে ঘুরে দেখার সুযোগ পান। গতকাল একটি প্লেনে করে তিনি পশ্চিম পাকিস্তানে আসতে সক্ষম হন। দু’দুবার তার বস্ত্র উন্মোচন করে তল্লাশী চালানো এবং তার লাগেজ পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হলেও, কৌশলে তিনি ঢাকায় নেয়া নোটগুলোসহ সোমবার সকালে ব্যাংকক পৌঁছে এই রিপোর্ট পাঠান।“

(দ্যা ডেইলি টেলিগ্রাফ, ২৭শে মার্চ ১৯৭১)

সাইমন ড্রিং এর মত হাতে গোণা যে কয়েকজন সাংবাদিক লুকিয়ে ছিলেন তাদের কাছে আসলেও সামগ্রিক ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া অসম্ভব ছিল কারণ অভিযান চলছিল সারা দেশ জুড়ে। পুরো দেশের সমস্ত খবর একত্র করে একটা ফিগার নির্ণয় করা প্রায় অসম্ভব একটা কাজ ছিল, এবং এই কথা সেই সময়ের সংবাদপত্রগুলোতেও এসেছে বারবার। পড়তে গিয়ে দেখেছি যখনি একটা ফিগারের কথা বলা হচ্ছে তখনি আবার বলা হচ্ছে সামগ্রিক অবস্থা আমরা জানি না, সংখ্যাটা এর চেয়েও অনেক বেশী হতে পারে।

আসুন দেখা যাক এতকিছুর পরেও বিভিন্ন টাইম লাইনে আন্তর্জাতিক সংবাদপত্রগুলো কি লিখেছে মুক্তিযুদ্ধের ক্ষয়ক্ষতি সম্পর্কে;

১) Times একাত্তরের এপ্রিলের শুরুতেই লিখেছে ৩ লাখ ছাড়িয়েছে এবং বাড়ছে।

২) News Week এপ্রিলের মাঝামাঝি সময়ে ১৯৭১ লিখেছে সাত লক্ষ।

৩) The Baltimore sun ১৪ মে ১৯৭১ লিখেছে ৫ লাখ।

৪) The Momento, Caracas জুনের ১৩ তারিখে লিখেছে ৫ থেকে ১০ লক্ষ।

৫) কাইরান ইন্টারন্যাশনাল ২৮ জুলাই লিখেছে ৫ লক্ষ।

৬) Wall Street Journal ২৩ জুলাইয় রিপোর্ট করেছে, সংখ্যাটা ২ থেকে ১০ লক্ষ।

৭) Times সেপ্টেম্বরের বলছে প্রায় ১০ লক্ষাধিক।

৮) দি হ্যাম্পস্টেড অ্যান্ড হাইগেট এক্সপ্রেস- লন্ডন ১লা অক্টোবর ১৯৭১ বলেছে শহীদের সংখ্যা ২০ লক্ষ।

৯) ন্যাশনাল জিওগ্রাফী ১৯৭২ সালের সেপ্টেম্বরে লিখেছে শহীদের সংখ্যা ৩০ লক্ষ।

এর সাথে সাথে ১৯৮১ সালে ইউ এন ইউনির্ভাসাল হিউম্যান রাইটসের ডিকলেয়ারেশানের কথা মনে করিয়ে দেই। সেখানে লেখা হয়েছে;

“মানব ইতিহাসে যত গণহত্যা হয়েছে এর মধ্যে বাংলাদেশের ১৯৭১’ এর গণহত্যায় স্বল্পতম সময়ে এই সংখ্যা সর্ববৃহৎ। গড়ে প্রতিদিন ৬,০০০ – ১২,০০০ মানুষকে হত্যা করা হয়েছে। .. .. .. এটি হচ্ছে গণহত্যার ইতিহাসে প্রতিদিনে সর্ব্বোচ্চ নিধনের হার।”

তার পাক বাহিনী এই কাজ (দিনপ্রতি ৬০০০-১২০০০ বাঙালী নিধন) করেছে মোটামুটি ২৬০দিনে (একাত্তুরের ২৫-এ মার্চ থেকে শুরু করে ১৬ই ডিসেম্বর পর্যন্ত)।

বাঙালী নিধনের লোওয়ার লিমিট: ৬০০০ x ২৬০ = ১৫,৬০,০০০ (১৫ লক্ষ ৬০ হাজার)। আর নিধনের আপার লিমিট: ১২০০০ x ২৬০ = ৩১,২০,০০০ (৩১ লক্ষ ২০ হাজার)।

এটা আমার কথা না ইউ এন ইউনির্ভাসাল হিউম্যান রাইটসের ডিকলেয়ারেশান

আমরা এখান উল্লেখিত পত্রিকার প্রতিবেদন থেকে কয়েকটি প্রতিবেদন নিয়ে কিঞ্চিত আলোচনা করবো

১) টাইমস ৫ই এপ্রিল ১৯৭১
২) হ্যাম্পস্টেড অ্যান্ড হাইগেট এক্সপ্রেস এর প্রতিবেদন
৩) ন্যাশনাল জিওগ্রাফীর প্রতিবেদন

টাইমস ৫ এপ্রিল তাদের প্রতিবেদনে লিখেছে

“গত সাপ্তাহে পাকিস্তানে তিক্ত গৃহ যুদ্ধের প্রথম দফা শেষ হয়েছে। এক্ষেত্রে বিজয়ী সম্ভবত পশ্চিম পাকিস্তানের নিষ্ঠুর সেনা বাহিনী। বিদ্রোহী পূর্ব পাকিস্তানে তার ৮০ হাজার পাঞ্জাবী ও পাঠান সৈন্যের শক্তিশালী বাহিনী মোতায়েন রয়েছে। সেখানকার কূটনীতিক, সন্ত্রস্ত উদ্বাস্তু আর গোপন বার্তার মাধ্যমে যেসব বার্তা পাওয়া যাচ্ছে তাতে ব্যাপক গরমিল রয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে মৃতের সংখ্যা ৩ লাখ ছাড়িয়ে গেছে।”

পঁচিশে মার্চ যুদ্ধ শুরু হবার পর ১৭ই এপ্রিল মুজিব নগর সরকার গঠনের আগেই সংখ্যাটা ৩ লাখ ছাড়িয়ে যায়, ভেবে দেখুন একবার

আশ্চর্যজনক ভাবে ১৯৭১ সালের ১লা অক্টোবর লন্ডনের ‘দি হ্যাম্পস্টেড অ্যান্ড হাইগেট এক্সপ্রেস’ তাদের এক চমকপ্রদ প্রতিবেদন প্রকাশ করে। যদিও হ্যাম্পস্টেড অ্যান্ড হাইগেটের সেই প্রতিবেদন একটা দীর্ঘ আলোচনার দাবী রাখে, অন্য কোন সময় এটা নিয়ে বিস্তারিত কথা বলা যাবে। কারো আগ্রহ থাকলে আন্দালিব রাশদীর বিদেশীর চোখে একাত্তর বইটা পড়ে দেখতে পারেন, সেখানে পুরো প্রতিবেদনটা দেয়া আছে। চমৎকার ব্যাপারটা হচ্ছে সেই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে একটা মানবধিকার সংগঠনের কথা যাদের নাম অপারেশন-ওমেগা। মুক্তিযুদ্ধের সময় শরণার্থী শিবিরে কাজ করতো অনেক বিদেশী সংগঠন, তারা যেমন খাদ্য, ঔষধের ব্যাবস্থা করতো তেমনি বস্ত্র এবং থাকার জায়গা সাস্থ্যসেবা এসব নিয়েও কাজ করতো কিন্তু এসব সংগঠনের কেউই সেই সময় বর্ডার ক্রস করে বাংলাদেশে প্রবেশ করার সাহস পায় নি, অপারেশন-ওমেগার দুঃসাহসী কর্মীরা কাজটা করলেন। তারা বুঝতে পেরেছিলেন সীমান্তে যে দুর্দশা তারা দেখতে পাচ্ছেন সেটার থেকেও অনেক খারাপ অবস্থা ভেতরের মানুষগুলোর। তা না হলে তারা দেশ ছেড়ে এই অনিশ্চিত শরণার্থীর জীবন বেছে নিতো না। তাছাড়া সীমান্তের এপাড়ে তো মাত্র এক কোটি বাকি সাড়ে ছয় কোটি তো ওপারে। দুঃসাহসী কাজটা তারা করে ফেলেন। তারাই মুক্তিযুদ্ধের সময় একমাত্র বিদেশী সংগঠন যারা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বাংলাদেশের ভেতরে ঢুকে ত্রান বিতরণ করেন।
একদিন ত্রান বিতরণ করার সময় ৪জন স্বেচ্ছাসেবককে গ্রেফতার করে পাকিস্তানীরা। তাদের যশোরের একটি কারাগারে ১১ দিন আটক রাখা হয় এবং এরপর সরাসরি লন্ডনে ফেরত পাঠিয়ে দেয়া হয়। সংস্থাটির অন্যতম সদস্য বেন ক্রো হ্যাম্পস্টেড অ্যান্ড হাইগেট এক্সপ্রেস কে জানায় যশোরে কারাগারে থাকাকালীন সময়ে তিনি জানতে পারেন এখন পর্যন্ত এখানে ২০ লাখ লোককে হত্যা করা হয়েছে।

কারাগার থেকে মুক্ত হয়ে দেশে ফিরে যাবার অনেক পর পহেলা অক্টোবর প্রকাশিত হয় এই খবর। তাহলে আঁচ করা সম্ভব এর মধ্যে আরও কত মানুষ মৃত্যুকে বরণ করে নিয়েছে। আর সীমান্তের ঐ পারের শরণার্থীদের কথা তো বাদই দিলাম।

এবারে আসি ন্যাশনাল জিওগ্রাফীর সেই বিশেষ সংখ্যাটি নিয়ে। যদিও পত্রিকাটি বাহাত্তরের কিন্তু পশ্চিমা বিশ্বে অত্যন্ত জনপ্রিয় একটি পত্রিকা যখন ৩০ লক্ষ সংখ্যাটিকে মেনে নিয়েছে তখন আমাদেরও একটু খুঁজে ঘুরে আসা দরকার প্রতিবেদনটি থেকে। ব্লগার শিক্ষানবিস সেই প্রতিবেদনটির সম্পূর্ণ অনুবাদ করেছেন, আমি কেবল গনহত্যার অংশটুকু ছবি সহ তুলে দিচ্ছি;

“গণহত্যা শেষে একটি জাতির উত্থান
শ্লোগান দিয়ে বা ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করে কোন লাভ হয়েছে কি-না জানি না। শুধু জানি, পৃথিবীর ১৪৭তম স্বাধীন দেশ হিসেবে বাংলাদেশ ঠিকই নিজের পায়ে দাঁড়াতে শুরু করেছে। এদেশের মানুষ যেন নতুনভাবে জীবন সংগ্রাম শুরু করেছে। ১৯৭১ সালে নয় মাসের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের কথা চিন্তা করলে একে সত্যিই অলৌকিক বলে ভুল হয়।
বাংলাদেশীদের জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে যুদ্ধের প্রভাব সুস্পষ্ট। শহর বলি আর গ্রামই বলি, সর্বত্র একই অবস্থা। জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্র আর দেশের প্রতিটি স্থানেই পুনর্গঠনের কাজ চলছে। কিন্তু আরোগ্য লাভের এই প্রচেষ্টাও বোধ করি খুব কষ্টকর।
শেখ মুজিবের সরকার বলছে, দেশে ১৯৭১ সালের মার্চ থেকে ডিসেম্বরের মধ্যে ৩০ লক্ষ বাঙালি নিহত হয়েছে। সংখ্যাটি হয়তো অতিরঞ্জিত, কিন্তু সে সময় ঢাকাসহ এই বিস্তীর্ণ নদীমাতৃক দেশের প্রতিটি প্রান্তে যে হত্যাযজ্ঞ সংঘটিত হয়েছে তা নিঃসন্দেহে গণহত্যার খুব কাছাকাছি।
যতদিনে যুদ্ধ শেষ হয়েছে, ততদিনে পঁচে যাওয়া লাশের মাংস খেয়ে খেয়ে শকুনেরা আরও মোটাতাজা হয়ে উঠেছে। এতোই মোটা হয়েছে যে, তারা আর আগের মতো স্বচ্ছন্দে উড়তে পারে না। যুদ্ধ পরবর্তী বাংলাদেশের যেন কোন প্রাণশক্তিই অবশিষ্ট নেই। থাকবে কি করে, জাতীয়তাবাদে উদ্বুদ্ধ হয়ে প্রাণশক্তির পুরোটাই যে বাঙালিরা যুদ্ধের ময়দানে ঢেলে দিয়ে এসেছে। সরকার ভিক্ষুকে পরিণত হতে বাধ্য হয়েছে। প্রয়োজনের খাতিরে তাকে বিশ্বব্যাপী ভিক্ষাবৃত্তি করে বেড়াতে হয়েছে। আর এভাবেই ইতিহাসের বৃহত্তম ত্রাণ কর্মসূচীর সূচনা ঘটেছে।
স্ক্যান্ডিনেভীয় এক দেশ থেকে ত্রাণ হিসেবে আসা একটি চালান এক্ষেত্রে উল্লেখ করার মত। তারা ভাল বুঝেই গরম কাপড় পাঠিয়েছে। ইউরোপে এই কাপড়গুলো স্কি করার জন্য ব্যবহৃত হয়। নাতিশীতোষ্ণ এক দেশে কি-না এলো স্কি-ক্লোদিং। ঢাকার এক ত্রাণকর্মী আমাকে বললেন, “অনেকেরই বাংলাদেশের ভৌগলিক অবস্থান সম্পর্কে সুস্পষ্ট কোন ধারণা নেই। অনেকে মনে করে, হিমালয়ের কাছেপিঠে কোথাও হবে। আবার অনেকে ভাবে, দক্ষিণ দিকে থাইল্যান্ডের প্রতিবেশী হবে হয়তো।”

vrdoas

operationomega-800x600

তর্কের খাতিরে যদি ন্যাশনাল জিওগ্রাফির ঐ সংখ্যাটাও বাদ দেই তবু পরিস্কার বলা যায় হ্যাম্পস্টেড অ্যান্ড হাইগেট এক্সপ্রেসের শহীদের সংখ্যা ২০ লাখ বলা সেই প্রতিবেদনটি যেটা প্রকাশ হয়েছিলো অক্টোবরের ১ তারিখ, সেই প্রতিবেদনের ঘটনা কাল সম্ভবত আগস্টের কিংবা বড়োজোর সেপ্টেম্বরে (কারণ বেন ক্রো নিজে সেই পত্রিকার সাংবাদিক ছিলেন না, এগারো দিন জেলে ছিলেন এবং তারপর ছাড়া পেয়ে দেশে যেতে কয়দিন লেগেছে আমরা জানি না কিন্তু যত কম সময়ই লাগুক ঘটনার সময়টা অক্টোবরের লেখা প্রকাশের অনেক আগে)

এই নিউজটাকে জোর দিচ্ছি কারণ যারা মুক্তিযুদ্ধের সময় ৩০ লাখ শহীদের ব্যাপারটা বাড়াবাড়ি মনে করেন দাবী করেন সংখ্যাটা অনেক কম এবং উদ্দেশ্যমূলক ভাবে বানানো তাদের কাছে তুলে ধরতে যে সংখ্যাটা হঠাৎ করে গজিয়ে ওঠে নি। আন্তর্জাতিক দৈনিক বলছে এপ্রিলে সাত লক্ষ, জুলাইতে দশ লক্ষ, সেপ্টেম্বরে বিশ লক্ষ তাহলে ডিসেম্বরে কত… ?

সমস্ত তথ্য অনুসারে যদি আমরা শহীদের সংখ্যার ক্রমবৃদ্ধির গ্রাফটি দেখি তাহলে অনেক পরিস্কার হয়ে যাবে পুরো ব্যাপারটাঃ

EG0MbHB

খুব বাড়িয়ে বলা হচ্ছে কি, আকাশ থেকে আসা ফিগার মনে হচ্ছে ?