হ্রদের জল কাকের মতো কালো
চারিদিকে তার ভেড়ার লোমের মতো ঘন, টিয়াপাখির পালকের মতো সবুজ অরণ্য
উপরে ঘাস ফড়িঙের মতো নীল আকাশে তুলোর মতো সাদা সাদা মেঘের ভেলা
হ্রদের জলে আরেকটি আকাশ যেন ডুব দিয়ে আছে।

হ্রদের কানে কানে বাতাস এসে চুপি চুপি কথা কয়
জল তাতে শিরশিরিয়ে কেঁপে কেঁপে ওঠে
মাছেরা খেলা করে জলের তলে
বাতাস গাছেদের পাতার সাথে কথা বলে।

একটি কালো মেয়ে কালো পানকৌড়ির মতো টুপ টুপ ডুব দিচ্ছে সেই কালো জলে
সাঁতার কাটছে মাছেদের সাথে
কখনো বা সে তীরে এসে বসছে
আর গভীর চোখে তাকিয়ে দেখছে, গভীর কালো জলের দিকে
ঘন সবুজ বনের দিকে, নীল আকাশের দিকে, সাদা মেঘের দিকে
অনাবিল নৈঃশব্দের দিকে।

গাছেদের সবুজ নিঃশ্বাস এসে নিবিড়ভাবে চুমে যাচ্ছে তার তনুমন
চুপি চুপি ব’লে যাচ্ছে তাদের বহু জীবনের জমানো না বলা বহু কথা
শীতল কালো জল এসে চুমে যাচ্ছে তার জলে ডোবানো চরণদুটি
মেয়েটি তার সমস্ত মনপ্রাণ জুড়িয়ে নিচ্ছে
জলের ছোঁয়ায়,পাতাদের নিঃশ্বাসের পরশে, অফুরন্ত সবুজের সমারোহে, পাখিদের গানে
আর ভাবছে, এইভাবে এইখানে যেন কাটে তার অনন্ত জন্মজন্মান্তর
এই সময়, এই অনাবিল ভালো লাগার অনুভূতি যেন মহাকাল ফুরিয়ে গেলেও ফুরিয়ে না যায়।