স্বাধীনতা অর্জনের দীর্ঘ ৪২ বছর পর যখন বাংলাদেশ নিজেদের কলঙ্ক মুক্ত করার প্রথম অধ্যায়ে পা রেখেছে, ঠিক তখনই জাতিসংঘ থেকে শুরু করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, সৌদি আরব, তুরষ্ক, পাকিস্তানের মত দেশগুলো তার বিরোধিতা করে চলছে। শুধু তাই নয়, পাকিস্তানের জামাতে ইসলামের শাখা তাদের সহযোদ্ধা কাদের মোল্লার ফাঁসির রায়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছে। এমনকি তারা পাকিস্তানকে আহ্বান জানাচ্ছে বাংলাদেশের ওপর আক্রমণ করার জন্য। বিস্ময়ের সঙ্গে লক্ষ্য করতে হয় পাকিস্তানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী নিসার আলি খান কাদের মোল্লার ফাঁসিতে অত্যন্ত আপত্তিকর বক্তব্য প্রদান করেছেন। পাক-স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন,- “একাত্তর সালে পাকিস্তানের পক্ষ সমর্থন করে কাদের মোল্লা দেশ-প্রেমিকের দায়িত্ব পালন করেছিলেন। পূর্ব পাকিস্তান বিচ্ছেদ হওয়ায় পাকিস্তানিদের মনে যে ক্ষত সৃষ্টি হয়েছিল, তাতে আবারও ব্যাথা দেওয়া হলো এই ফাঁসির মাধ্যমে।”
এই তালিকায় পিছিয়ে নেই পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ দলের প্রধান ও সাবেক ক্রিকেট তারকা ইমরান খান। ইমরান খান, একজন মানবাধিকার কর্মীর কাছে কাদের মোল্লা সম্পর্কে শুনে তাকে ‘নির্দোষ’ হিসেবে দাবি করেছেন। তিনি দাবি করেন, ওই মানবাধিকারকর্মীই নাকি তাঁকে বলেছেন কাদের মোল্লার বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ আনা হয়েছিল, তা সব মিথ্যা। আর সেগুলোর ব্যাপারে ইমরান খান কিছুই জানতেন না।
এই ব্যাপারে একটু বিশ্লেষণ করা যাক; দেখা যাক বেশির ভাগ পাকিস্তানীরা বাংলাদেশের স্বাধীনতা সম্পর্কে কি জানে। যেখানে পাকিস্তানের পাঠ্যপুস্তকে এখন পর্যন্ত উল্লেখ আছে,- ”১৯৭১ সালে পাকিস্তান ও মুসলিম ভাইদেরকে বিভাজনের মূল কারণ ছিল ইন্ডিয়ার ষড়যন্ত্র আর শেখ মুজিব ছিল তার মূল নায়ক।” সে সময়ে পশ্চিম পাকিস্তানী নাগরিকদের কাছ থেকে এই গণহত্যার খবর কিভাবে আড়াল করা হয়েছিল, এই মর্মে প্রভাবশালী পাকিস্তানী দৈনিক “দ্য ডন” এর রিপোর্ট দেখা যাক:
Soon after the military operation ‘Searchlight’ began in former East Pakistan on March 25, 1971, the uprising became the subject of discussion all over the world. Chained by censorship, West Pakistan newspapers did not give a single word to their readers about what was happening in the Eastern wing; hence only foreign news radio was heard and believed. BBC’s were the most popular broadcasts.
পাকিস্তানী সামরিক বাহিনীর এই নৃশংসতা যাতে কোনভাবেই আন্তর্জাতিক মিডিয়ায় প্রচার হতে না পারে এজন্যও তারা সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা চালায়। ২৫ মার্চের আগেই অধিকাংশ বিদেশী সাংবাদিককে পূর্ব পাকিস্তান ত্যাগে বাধ্য করা হয়। এমনকি এই রাতে যারা ঢাকায় অবস্থান করছিলেন, তাদেরকে হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টাল (বর্তমান হোটেল রূপসী বাংলা) এ অবরূদ্ধ রাখা হয়। তবুও একাধিক বিদেশী সাংবাদিক জীবনের ঝুঁকি নিয়ে এই রাতের রিপোর্ট লিখেন। এদের মাঝে এ্যান্থনি ম্যাসকারেনহাস এবং সাইমন ড্রিং এর নাম বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। তারা সে সময় পূর্ব পাকিস্তানে আসলে কি ঘটছে সে ব্যাপারে বিশ্বকে জানাতে যথেষ্ট উদ্যোগ নিয়েছিলেন।
এছাড়া, জুলফিকার আলী ভুট্টোর দৌহিত্র ফাতিমা ভুট্টো ”Songs of Blood and Sword” নামের একটা বই লিখেছেন। সেই বই নিয়ে ”দৈনিক প্রথম আলো” একটা প্রতিবেদনও ছেপেছিলো। বইটিতে লেখা হয়েছে,- ‘পাকিস্তানী সেনাবাহিনী যুদ্ধের কৌশল হিসেবে চার লাখ নারীকে ধর্ষণ করেছে। বাঙালি জনগোষ্ঠীকে শায়েস্তা করা ও দুর্দশায় ফেলার অংশ হিসেবেই পাকিস্তান সৈনিক বাহিনী এ কাজ করেছে। সেই বইতে ”সুসান ব্রাউনমিলার”কে কোট করা হয়েছে, সঙ্গে এটাও লেখা হয়েছে যে ফাতিমা তার পিতামহ জুলফিকার আলী ভুট্টোকে দেখেছেন, বুদ্ধিজীবী হত্যার জন্য সিন্ধুর জেনারেল গুল হাসানকে খুব এক চোট ধমকে ছিলেন। ফাতিমা তার পিতামহকে জুলফিকার আলী ভুট্টোকে মহাপুরুষ বানিয়ে দেননি। ফাতিমা আরও লিখেছেন, মুজিব চেয়েছিলেন তাঁর দল এককভাবে সংবিধান রচনা করবে এবং তাঁকে সরকার গঠনের সুযোগ দেওয়া হবে। সেনাবাহিনী যদিও ভুট্টোকে আওয়ামী লীগের সমপরিমাণ সুযোগ-সুবিধা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল, কিন্তু তাতে তিনি (ভুট্টো) আশ্বস্ত হতে পারেননি। এরপর ফাতিমার বিশ্লেষণ করেছেন, সেনাবাহিনী এই দুজনকে একে অপরের বিরুদ্ধে ব্যবহার করেছে এবং যাতে শান্তিপূর্ণ কোনো সমাধান না হয় তা নিশ্চিত করেছে। তাঁর ভাষায়, ”এরপর সারা পূর্ব পাকিস্তানে দাঙ্গা ও রক্তের বন্যা বইতে লাগল।”
এবার ফিরে দেখা যাক, সমগ্র পাকিস্তানের রাজনৈতিক অঙ্গনে কাদের মোল্লা বিষয়ে তাদের প্রতিক্রিয়া। এক দিকে যখন পাকিস্তানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী চৌধুরী নিসার আলি খান আর তেহরিক-ই-ইনসাফ দলের প্রধান ও সাবেক ক্রিকেট তারকা ইমরান খান স্বাধীনতার ৪২ বছর পরেও যখন বাংলাদেশের আভ্যন্তরীণ বিষয়ে তাদের নাক গলানোর চেষ্টা করছেন। সেই সঙ্গে গতকাল সোমবার পাকিস্তান জাতীয় পরিষদে কাদের মোল্লার মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের নিন্দা জানিয়ে একটি প্রস্তাব পাস করা হচ্ছে ঠিক তখন পাকিস্তানের পিপলস পার্টি আর এমকিউএম সংসদে সেই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছে। একই সঙ্গে প্রতিবাদ জানিয়েছে, সেখানকার একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মুল কমিটির শাখা সেক্যুলার ফোরামও। পাকিস্তান পিপলস পার্টি (পিপিপি) সাংসদ আবদুল সাত্তার বাচানি পরিষদকে এ ধরনের প্রস্তাব গ্রহণ না করার আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, ‘পুরো বিষয়টিই বাংলাদেশের একান্ত অভ্যন্তরীণ বিষয়। আমাদের উচিত হবে না একটি স্বাধীন ও সার্বভৌম দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয় নিয়ে এ ধরনের প্রস্তাব পাস করা।’
যদিও কিছুদিন আগে ”দৈনিক প্রথম আলো”কে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে ইমরান খান বলেছিলেন,- বাংলাদেশের কাছে পাকিস্তানের নিঃশর্ত ক্ষমা চাওয়া উচিত। তিনি দাবি করেন, ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ পাকিস্তানী বাহিনী বাংলাদেশে অভিযান শুরুর আগে তিনি শেষ বিমানে করে ঢাকা ছেড়েছিলেন। ১৯৭১ সালে বাঙালি হত্যায় পাকিস্তানী সামরিক শাসকদের নির্দেশ প্রদান প্রসঙ্গে ইমরান খান বলেন, ‘আমি নিজ কানে শুনেছি, তারা বলেছে, এই বামন ও কালোদের হত্যা কর। তাদের একটা শিক্ষা দাও।’ ইমরান খানের সাক্ষাৎকারে তিনি আরো বলেছিলেন,’৭১ থেকে শিক্ষা নেয়নি পাকিস্তান। ইমরান জানিয়েছিলেন, তিনি বিশ্বাস করেন, ১৯৭১ সালে পাকিস্তানী অপরাধীরা শাস্তি পেলে পশতুনরা আজ হয়রানির শিকার হতো না।আজ একজন মানবাধিকার কর্মীর কাছে কাদের মোল্লা সম্পর্কে শুনে তাকে ‘নির্দোষ’ হিসেবে দাবি করাটা ইমরান খানকে জেনারেল নিয়াজীর যোগ্যতম উত্তরসূরী হিসেবে বিশ্বের সামনে উপস্থাপন করে। আজ ইমরান খান বলছেন,- ‘১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর “ঢাকার পতন” আমাদের চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছে পুরো ব্যাপারটির নিষ্পত্তিই সে সময় গণতান্ত্রিকভাবেই হওয়া উচিত ছিল।’ এর কারন হলো ইমারান খানের চাচা জেনারেল নিয়াজী। তাই আজ চাচা জেনারেল নিয়াজীর পরিচালিত সেনাহত্যা যজ্ঞের সহযোগী কাদের মোল্লাকে নির্দোষ দাবী করে নিজেকে উন্মোচিত করেছেন ইমরান খান। তার এই বক্তব্যের এবং কাদের মোল্লাকে সমর্থন জানানোর মানে এই দাঁড়ায়, ৭১ এর হত্যাযজ্ঞ তার চোখে মানবতা বিরোধী অপরাধই ছিলোনা।
আন্তর্জাতিক বিশ্বের চোখে পাকিস্তান আজ একটি ব্যর্থ রাষ্ট্র। তারা তাদের নিজের দেশের মানুষের জীবনের নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ। বছরে আনুমানিক গড়ানুপাতে ৫ হাজারের মতো মানুষ আত্মঘাতি বোমা হামলায় মারা যাচ্ছে। পাকিস্তান সমগ্র বিশ্বের চোখে একটি তালেবানী রাষ্ট্র হিসেবে পরিচিত। জুলফিকার আলী ভুট্টো, বেনজীর ভুট্টো, মোহাম্মদ জিয়াউল হকের মতো রাষ্ট্রপ্রধানদের আততায়ীর আক্রমণে মৃত্যু বারে বারে ইতিহাসের পূণরাবৃত্তি করে। তারা মুখে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র হিসেবে নিজেদের পরিচয় দিলেও এখন পর্যন্ত একটি সরকারও সামরিক শাসনের দখলদারীত্ব ছাড়া স্থাপন করতে পারেনি। ২০০১ টুইনটাওয়ারের ঘটনা থেকে শুরু করে আজমল কাসব ও তার বাহিনীর ভারতের তাজমহল হোটেলের উপর আক্রমণ পাকিস্তানের হিংস্রতাই প্রমাণ করে। যে আমেরিকা এক সময় পাকিস্তানকে সমর্থন দিয়েছিলো, তাদের দেশেই সবচেয়ে সন্দেহভাজন নাগরিকদের দলে পাকিস্তানীরা। অসংখ্য হলিউড সিনেমা বা সিরিয়ালের দিকে তাকালে দেখা যায়, ইসলামিক রাষ্ট্রের সন্ত্রাসী হিসেবে এক পাকিস্তানী নাগরিকই সেটির ভিলেন চরিত্রের ভূমিকায় রয়েছে। যদিও পাকিস্তানের এই পরিস্থিতির জন্য আমেরিকার ভূমিকা সবচেয়ে বেশি অনস্বীকার্য।
১৯৭১ সালে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর সাথে হাত মিলিয়েছিল কিছু সুবিধাবাদি দেশদ্রোহী রাজাকার, আলবদর, আল শামস আর বিহারীদের একটি বিশাল অংশ। এই বিশেষ বাহিনীর একজন ছিল কাদের মোল্লা। সেই কাদের মোল্লার ফাঁসিতে পাকিস্তানের এমন ভূমিকায় বাংলাদেশীরা অবাক হয় না।নিজেদের কৃতকর্মকে বৈধতা দিতেই প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে পাকিস্তান। এই পাকিস্তান এক সময় আমাদের অস্তিত্বকে অস্বীকার করেছিলো। এমনকি গত ৪২ বছরে ৭১ এর গণহত্যা ও মানবতা বিরোধী অপরাধের জন্যও বাংলাদেশের কাছে রাষ্ট্রীয় ভাবে ক্ষমা চায়নি তাদের সরকার। বাংলাদেশের রাজনীতিতে জামাতের মতো একটি সংগঠনকে সমর্থন করে বার বার একটি কথাই স্মরণ করিয়ে দেয় পাকিস্তান, আর তা হলো বাংলাদেশের কাছে নিজেদের পরাজয়কে আজও তারা মেনে নিতে পারেনি। তাই কাদের মোল্লার ফাঁসি তাদের জন্য আরেকটি পরাজয় মাত্র। পরিশেষে ইমরান খানের এই বক্তব্য বিপরীতে স্যার হুমায়ুন আজাদের করা একটি উক্তি মনে পড়ে যায়,- ”পাকিস্তানীদের আমি অবিশ্বাস করি, যখন তারা হাতে গোলাপ নিয়ে আসে- এমন কী তখনো।”
httpv://www.youtube.com/watch?v=SDANKHiZaj8
ফারজানা কবীর খান (স্নিগ্ধা)
তথ্যসূত্রঃ
১) উইকিপিডিয়া বাংলা
২) ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইমস স্ট্র্যাটেজি ফোরাম
৩) বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধের অনলাইন আর্কাইভ
৪) বিভিন্ন জাতীয় এবং বিদেশী পত্রিকার অনলাইন আর্কাইভ
৫) www.genocidebangladesh.org
৬) Songs of Blood and Sword – ফাতিমা ভুট্টো
৭) www.cadetcollegeblog.com
আমি নিয়মিত মন্তব্য করি আমার সাধ্যমত তবে দু:খের বিষয় হল একটা মন্তব্য গুলি প্রকাশ হয়ন না। তার কারন জানতে পারি।
পোষ্ট সংশ্লিষ্ট অর্থবহ মন্তব্য করলে অবশ্যই প্রকাশ হবে। আশা করছি এ ব্যাপারে যত্নবান হবেন।
ফারজানা কবীর খান স্নিগ্ধা ,
মুক্তমনা ব্লগে আপনাকে স্বাগতম।
আপনার অবগতির জন্য জানাচ্ছি যে, এই ইমরান খান আর ক্রিকেটার ইমরান খান কিন্তু এক নয়। 😉 😉 😉
যেইরুপ আমাদের ইসলামের কাণ্ডারি কাদের মোল্লা আর কসাই কাদের ও এক নয়। :rotfl: :rotfl: :rotfl:
@নিলয় নীল,
ধন্যবাদ।
আপনাকে একটা কথা বলা প্রয়োজন, এই নীলয় নীল কিন্তু সেই নীলয় নীল নয় 😀 😀 😀 :lotpot:
পাকিস্তানি পলিটিশিয়ানরা গর্দভ রাগিণীর হাকডাক দিয়ে সব কিছু প্রমান করে দিয়ে জামায়াতকে পুরো ন্যাংটো করে দিল……
মুক্তমনায় স্বাগতম 🙂
লেখায় (Y)
@সংবাদিকা, ধন্যবাদ আপনাকে। (F)
কাদের মোল্লার ফাঁসির প্রশ্নে পাকিস্তানী সরকার ও ইমরান খানের অবস্থান স্পষ্টই বুঝিয়ে দিয়েছে যে, ১৯৭১ এখনো পাকিস্তানের থাবার মধ্যেই আছে।
চমৎকার চিন্তাশীল নোটের জন্য স্নিগ্ধাকে অভিনন্দন। মুক্তমনায় স্বাগতম। (Y)
@বিপ্লব রহমান,
ধন্যবাদ বিপ্লব দা। ভাল থাকবেন।
@ফারজানা কবীর খান স্নিগ্ধা,
এই নোটটি গুরুচণ্ডালি ডটকম-এর মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সংকলনে সংযুক্ত করা হয়েছে। [লিংক] (Y)
@বিপ্লব রহমান,
আবারো ধন্যবাদ বিপ্লব দা।
আপনাকে আমি আপনার ছোট ছোট বক্তব্য (অন্যত্র দেয়) থেকে চিনি। যা নতুনকরে ভাবতে শেখায়। মুক্তমনায় স্বাগতম। লেখাটি গুছানো আর প্রাণবন্ত। আরোও লিখুন।
এখান থেকেই বোধ হয় পাকিস্তানীদের ইনার মাইন্ড সেটটিকে বোঝা যায়। আমাদের সম্পর্কে ওদের মনোভাবের পরিবর্তন কখনো হবেনা। আমার কাছে কি মনে হয় জানেন? মাইকেল মধুসূদনের চেতনায় রামেদের চোখে সুগ্রীবরা যেমন ছিলো, পাকিস্তানীদের চোখে বাঙ্গালীরাও তেমনই! তবে পার্থক্য আছে, রামেরা সুগ্রীবদের সর্বনাশ করেনি, যা পাকিস্তানীরা আমাদের ক্ষেত্রে করেছে। সর্বান্তকরণে এই ঘৃনাবোধকে আমি ঘৃনাবোধ করি।
@কেশব কুমার অধিকারী,
আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ আমাকে উৎসাহিত করবার জন্য। ভাল থাকবেন।
সব পাকিস্তানিদেরই বাংলাদেশিদের সাথে ভালো মানুষ সাজার একটা প্রবনতা রয়েছে। কিন্তু, সেই সীমারেখাটা অণ্ডকোষে চাপ পড়ার আগ পর্যন্ত। যেই ওইখানে চাপ পড়ে, সেই ভালো মানুষির মুখোশটা খুলে পড়ে যায়। হামিদ মীর, ইমরান খানদের এখন সেই দশা। বাঙালিরা কষে তাদের সবচেয়ে নাজুক জায়গায় লাথি মেরেছে।
মুক্তমনায় স্বাগতম আপনাকে স্নিগ্ধা। লেখাটা চরম হয়েছে। (F)
@ফরিদ আহমেদ,
ধন্যবাদ ফরিদ ভাই। আপনার লেখা গুলো সব সময় আমাদের অনুপ্রাণিত করে। আর পাকিস্তানীরা যে কি তাড়াতাড়ি চেহারা পাল্টায় তা আমি তাদের সঙ্গে কাজ করে বুঝেছি। এরা দু মুখো না এরা চার মুখো প্রাণী।
@ফারজানা কবীর খান স্নিগ্ধা
(C)
@কাজী রহমান,
🙂 (Y) (F)
ইমরান খান প্রথম আলোর সাথে সাক্ষাৎকারে যা বলেছিলেন আর এখনকার কথার মধ্যে যে পার্থক্য তা তার রাজনৈতিক অবস্থানগত। আর এতে সহজেই অনুমেয় রাজনীতিতে মিথ্যাচারের ভূমিকা।
আর সহমত,
@গীতা দাস,
অনেক অনেক ধন্যবাদ গীতা দি। আমি আপনার লেখা খুব মন দিয়ে পড়ি।
বাংলাদেশের কাছে পাকিস্থানের এই পরাজয়ের ধারা অব্যাহত থাকবে চিরকাল। যতদিন পাকিস্থান ৭১’এ বাঙ্গালিদের কাছে তাদের পরাজয় মেনে না নিবে এবং রাষ্ট্রীয়ভাবে ক্ষমা না চাইবে ততদিন পাকিস্থানের সাথে বাংলাদেশের কোন সৰ্ম্পক থাকতে পারে না।
জয় বাংলা। জয় বঙ্গবন্ধু।
@তারিক,
অনেক ধন্যবাদ, তারিক। পাকিস্তান যতদিন বাংলাদেশের কাছে অফিসিয়ালী ক্ষমা চাইবে না তাদের অনৈতিক হামলা আর অপকর্মের জন্য ততদিন পর্যন্ত আমাদের সংগ্রাম চলবেই।
মুক্তমনায় স্বাগতম আপুনি। লেখাটি বেশ জমপেশ হয়েছে। এখন থেকে নিশ্চয়ই মুক্তমনায় নিয়মিত লিখবেন। ভাল থাকুন। (F)
@রতন কুমার সাহা রায়,
অনেক ধন্যবাদ রানা ভাই। আপনাদের উৎসাহ পেয়েই আজ আমি মুক্তমনায়। (W)
আপনাকে মুক্তমনায় দেখে খুব ভালো লাগছে স্নিগ্ধা। নিয়মিত লিখবেন আশা করি। অনেক শুভেচ্ছা।
@তামান্না ঝুমু,
আপনাকেও অনেক ধন্যবাদ তামান্না।
স্নিগ্ধাদিকে শুভেচ্ছা।
(Y)
@সৈকত চৌধুরী,
আপনাকেও ধন্যবাদ সৈকত দা।
মুক্তমনায় স্বাগতম, স্নিগ্ধা।
লেখাটা বেশ গোছানো হয়েছে। চালায় যান 🙂
@অভিজিৎদা,
মুক্তমনায় লেখার জন্য আমাকে অনেক অনুশীলন করতে হয়েছে। আপনার উৎসাহের জন্য ধন্যবাদ। আমি বিশ্বাস করি, মুক্তমনায় লিখতে হলে একটি মান বজায় রাখতে হয়। যা খুশী আমি মুক্তমনায় লিখতে পারি না। আবারো ধন্যবাদ আমাকে মুক্তমনায় লেখার সুযোগ করে দেবার জন্য।
পাকিস্তান রাষ্ট্রএর ফাউন্ডেশনটাই হচ্ছে হিন্দু ভারতের প্রতি ঘৃণা। ঘৃণার বিজ বপন করে রাষ্ট্র বানালে, সেই রাষ্ট্রর যা হাল হওয়া উচিত তাই হয়েছে।
আমি মনে করি না কোন মানুষ ঘৃণা নিয়ে জন্মায়। রাষ্ট্র, সমাজ, পরিবার তাকে ঘৃণা করতে শেখায়। আমার এক শিখ বন্ধু সম্প্রতি এক পাকিস্তানী মহিলাকে বিয়ে করেছে। দুজনেরই দ্বিতীয় বিয়ে। সেই ভদ্রমহিলাও আমাকে বলছিলেন, পাকিস্তানে ভারতের বিরুদ্ধে ছোটবেলা থেকে এত কানে পোরা হয়, পরে কোন ভারতীয়র সাথে মিশতেও অসস্তি লাগে। এখন নিকার পর অবশ্য তিনি প্রো ইন্ডিয়ান এবং পাকিস্তানের তীব্র সমালোচক।
@বিপ্লব পাল
আমিও এমন কিছু দম্পতিকে চিনি, ভারত ও পাকিস্তানী (জুটি) বেশ ভাল দম্পতি হন। কিন্তু কোন বাংলাদেশী যখন একজন পাকিস্তানীকে বিয়ে করেন, তখন আমি বুঝতে পারি না। অবশ্য ভালবাসা কোন সীমান্তের ধার ধারে না। ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য। 🙂
@ফারজানা কবীর খান স্নিগ্ধা,
আর হ্যাঁ- আপনি কিন্ত আপনার অভিজ্ঞতার নিরিখে যেভাবে পাকিস্তানি এবং ভারতীয় বিরোধি কথা আপনার স্টাটাসে লেখেন-তাতে আপত্তি জানিয়ে রাখলাম। মিডিয়ার লোকজন, কি ভারত, কি পাকিস্তান কি বাংলাদেশ-কোথাও সিধা কাঠির হয় না। তাদের দেখে আপামর ভারতীয় বা পাকিস্তানীদের সম্মন্ধে মন্তব্য করা ঠিক না। আমি কিন্ত খারাপ পাকিস্তানি কমই দেখেছি।
@বিপ্লব পাল,
এই ব্লগটির মধ্যে আপনি অন্য আরেকটি ব্লগের কথা কেন টেনে আনলেন, যা মুক্তমনায় প্রকাশিতই হয়নি, তাতে আমি আপত্তি জানিয়ে রাখলাম।
আপনার আপত্তির জন্য ধন্যবাদ। আমাদের মুক্তিযুদ্ধ, এমনকি যুদ্ধাপরাধীদের বিচার সংক্রান্ত বিষয়ে পাকিস্তানী রাজনীতিবীদরাও অনেক আপত্তি জানিয়েছেন। আপনিও জানাতেই পারেন। আপনার সৌভাগ্য যে আপনাকে কোন খারাপ পাকিস্তানী দেখতে হয়নি (হ্যা, দু একজন ব্যাতিক্রম আছে, আমার দুর্ভাগ্য আমি কখনো ভাল পাকিস্তানি দেখিনি) আমি আমার কর্মক্ষেত্রে ভারত ও পাকিস্তানীদের সঙ্গে আমার অভিজ্ঞতা সম্পর্কে লিখেছিলাম। এটাকে পুরো ভারতবাসী বা পাকিস্তানবাসীর বিরুদ্ধে নেয়ার কোন মানে হয় না। তারপরও যারা ডয়েচে ভেলেতে একদিনের জন্যও কাজ করেছেন, তাদের অভিজ্ঞতা সম্ভব হলে জিজ্ঞ্যেস করে নিবেন। তাছাড়া,
ভারত এবং পাকিস্তানীদের সম্পর্কে অভিজ্ঞতা নিয়ে আমার শুধু একটা ব্লগই আছে। আর সবচেয়ে বড় কথা হলো, যেটা লিখেছি সেটা আমার অভিজ্ঞতাটি ছিল কর্মক্ষেত্রে ভারতীয় ও পাকিস্তানিদের ক্ষমতার অপব্যবহার নিয়ে। আপনার ভাল পাকিস্তানি বন্ধু থাকতেই পারে তাতে আমার কোন আপত্তি নেই। কিন্তু আপনার আপত্তির জন্য আমি আমার অভিজ্ঞতা লিখতে পারবো না, সেটা ভাবাও ঠিক হবে না। 🙂
স্নিগ্ধা আপা, আপনাকে মুক্তমনায় দেখে আমি খুব খুশি হলাম। মানুষকে জাগ্রত করার চেষ্টায় আমরা এগিয়ে যাবো। কাদের মোল্লারা কাদের দ্বারা সৃষ্টি, কেনই বা তাদের আনা হলো, কেন রাজ্য রাজত্ব দুটোই দেওয়া হলো। তার সব বেরিয়ে আসবে লেখার মাধ্যমে।
ধন্যবাদ আপনাকে।
পাকিস্তানের জন্মই হয়েছিল উগ্র সাম্প্রদকায়িকতা ভিত্তি করে, সে জগত থেকে তারা কখনো বেরুতে পারেনি, কোনদিন পারবে কিনা তার জবাব ইতিহাস দিতে পারবে। যে দেশের জন্মই হয় উগ্রতার ওপর সে দেশের এমন ধারা আচরন, সংস্কৃতি অবাক করার মত কিছু না। বাংলাদেশও সে সময় উপমহাদেশীয় আমলে পিছিয়ে পড়া সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলমান জনগোষ্ঠী্র ক্ষোভের কারনে ধর্মীয় জাতীয়তাবোধের অবাস্তব ফাঁদে পা দিয়েছিল, তবে ভুল ভাংগতে বাংগালীর বেশী সময় লাগেনি।
পাকিস্তান ‘৭১ সাল নিয়ে কখনো এপোলজিষ্টের ভূমিকা নেয়, কিন্তু সাংস্কৃতিকভাবে সেই আনাদের কোন কোন দোষ নেই, সবই হিন্দু ভারতের দোষ চেতনায় লালন পালন করে। তাদের স্কুলের বাচ্চাদের সরকারী ভাবে বই পুস্তকেও সে তত্ত্ব মাথায় পোরা হয়।
Social studies textbooks teach that India attacked us in 1948 and 1965 (class five); and Kargil (class three, Meri Kitab). Bengali separatism was a result of Hindu teachers and traders; and “after 1965 war India conspired with the Hindus of Bengal and succeeded in spreading hate among the Bengalis about West Pakistan and finally attacked on East Pakistan in December 71, thus causing the breakup of East and West Pakistan.” In fact, some textbooks say that we had almost won the 1971 war!
@আদিল মাহমুদ, গুরুত্বপূর্ণ তথ্য এবং আপনার মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ 🙂
@আদিল মাহমুদ,
আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ তথ্য হলো আজকের ব্রেকিং নিউজ : পাকিস্তানে বাংলাদেশ দূতাবাসে হামলার হুমকি তেহরিক-ই-পাকিস্তানের
http://www.kalerkantho.com/online/world/2013/12/19/32425
সত্যি আজ দিনটা অনেক সুন্দর কারন একই দিনে বেশ কয়েকটা সময়পযগি লেখা পড়লাম।খুব ভাল লিখেছেন, বলার বিশেষ কিছুই নেই। শুধু শুভেচ্ছা রইল (F)
এরা আরো ডুববে, ডুবতেই থাকবে। মানবাধিকার হরন করে, বা মানুষের উপর নির্যাতন করে টিকে থাকা যায় না। পাকিস্তান আজো টিকে আছে কারন হয়ত আমেরিকার সমর্থন আছে। তবে দেখেছেন যে দিন দিন এই দেশের ভিক্ষা করার হার বেড়ে গেছে। হয়ত এমন দিন আসবে যে আমেরিকার ভিক্ষা ছাড়া এরা একটা ছোটখাট সেনাবাহিনীই পুষতে পারবে না। যে দেশে ব্লাস্ফেমী নামের বীভৎস আর ভীতিকর আইন আছে, আর আছে এর দারুন অপপ্রয়োগ, সে দেশের ভবিষ্যৎ সবাই জানে, শুধু (হয়ত) কিছু আধা পাকি বাংলাদেশি ছাড়া।
যে দেশ জন্মের পর থেকে বেশিরভাগ সময়ে সেনা শাসনে থাকে, সেই দেশের পক্ষে মানবাধিকারের বুলি আসলেই শোভা পায় না।
সত্যি হুমায়ুন আযাদ ন্যায্য কথা বলেছিলেন। অনেক ন্যায্য কথাই তিনি বলতেন আর তাই তাকে বাংলাদেশী আধাপাকিরা ( যারা ন্যায্য কথায় ভয় পায়) চাপাতি দিয়ে কুপিয়ে প্রমান করেছিল যে তিনি সত্যি অনেক কঠিন মৌলবাদী দুর্গে হানা দেবার ( লেখনীর দ্বারা) জন্য সম্ভবত একমাত্র যোগ্য বাংলাদেশি ছিলেন। খুবই পরিতাপের বিষয় যে উনি আমাদের মাঝে আর নেই, কিন্তু তাঁর চিন্তাধারা যেগুলোর বেশিরভাগের সাথেই আমি একমত, সেগুলো আমাদের জন্য হয়ে আছে ঘোর অন্ধকারের মধ্যে আলোর দিশারী হয়ে।
পাকিস্তানের পিণ্ডি আরেকবার চটকিয়ে ( এছাড়া আমার মত ছা পোষা মানুষ আর কিবা করতে পারে!), হুমায়ুন আজাদ এবং আপনারা সবাই যারা স্রোতের বিপরীতে লড়াই করছেন, তাদের কে শ্রদ্ধা জানিয়ে এই মন্তব্য শেষ করছি।
তবে একটু অপেক্ষা করেন দেখবেন কিছু বাঁশের কেল্লা পার্টি 😉 এসে গেল বলে। সেক্ষেত্রে অনেকের সাথেই এই অধমও আপনাদের পাশে থেকে বাশের কেল্লা কে মোকাবিলা করবে তার সীমিত সামর্থ দিয়ে, কথা দিলাম। ভাল থাকেন এবং আরো লেখেন। (Y)
@দারুচিনি দ্বীপ, আমাকে উৎসাহ দেবার জন্য ধন্যবাদ। আর বাঁশের কেল্লা বাহিনীকে ভয় পেলে দেশকে আর ভালবাসা হবে না। শুভ কামনা রইলো। 🙂
মুক্তমনা ব্লগে আপনাকে স্বাগতম।
ভাল লাগল। তবে সময় নিয়ে আর একটু কষ্ট করলে আরও বিস্তৃত পরিসরে লিখতে পারতেন।
@কবীর সেলিম,
ধন্যবাদ সেলিম ভাই। চেষ্টা করবো যাতে আরো লিখতে পারি।