‘উন্নয়ন, উন্নয়ন, উন্নয়ন না ছাই,
রামপালে কাপ্তাই লেকের
কান্না শুনতে পাই…’
চলেছে লং মার্চ। ২৪ সেপ্টেম্বর সকাল ১১টায় প্রেসক্লাবে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ শেষে শুরু হলো ছাত্র-জনতার বিশাল বহরের রামপাল অভিমুখে যাত্রা। সুন্দরবন রক্ষার দৃঢ় প্রত্যয় সকলের চোখে-মুখে। মাথার ওপরে গনগনে সূর্য। খর রোদ, ভ্যাপসা গরম।
লং মার্চের পুরো যাত্রা পথের তথ্য সংবাদ কাভারের জন্য আমি চলেছি বহরের সঙ্গে। প্রেসক্লাবে একে-তাকে ফোন, খোঁজাখুজি করেও মিডিয়ার গাড়িটি খুঁজে পাইনি। পরে জেনেছি, লং মার্চের মিডিয়া টিমের গাড়িটি শ্যামলীতে আটকা পড়েছে।
আমার তখন দিশেহারা অবস্থা। দু-দুটি ভারি ব্যাগ নিয়ে আগুন গরমের ভেতর আমার পক্ষে হেঁটে যাওয়া সম্ভব নয়। তথ্য সংবাদ সংগ্রহ ও লেখার জন্য শাররীক সুস্থ্যতা এবং বেশ খানিকটা মস্তিস্কের শীতলতা একান্ত জরুরি। কারণ লেখালেখির কাজটি পরিশ্রমের।
আমার ব্যাগ দুটির ওজনও বেশ। একটিতে আট-দশদিনের কাপড়-চোপড় [৪০০ কিমি দীর্ঘ ৫ দিনের লং মার্চ শেষে সুন্দরবন দেখার ইচ্ছে]; আরেকটিতে আমার নেটবুক ও টুকিটাকি। বুদ্ধি করে জাতীয় কমিটির একটি ব্যানার লাগানো পিক-আপে কাপড়ের ব্যাগটি তুলে দেই। সেটিতে স্বেচ্ছাসেবী বেশ কয়েকজন মাইক লাগিয়ে অবিরাম শ্লোগান দিচ্ছেন। সেখানের পরিচিত একটি মুখ আমাকে সাহস জোগায়। নাম বিস্তৃত মেয়েটি বলে, ভাইয়া, আপনি চিন্তা করবেন না। যখনই চাইবেন, তখনই আপনার ব্যাগ পেয়ে যাবেন।
প্রেসক্লাব থেকে লং মার্চের যাত্রা শুরু হয়ে যায়। বিভৎস তাপদাহ উপেক্ষা করে ছাত্র-জনতার বিশাল মিছিল ঢাকার পথে এগিয়ে চলেছে। অবিরাম শ্লোগান: চলো রে চলো/ লং মার্চ, লং মার্চ/ ঢাকা থেকে সুন্দরবন/ লং মার্চ, লং মার্চ…ইত্যাদি। এরই মধ্যে ঘেমেনেয়ে একাকার। মিছিল শাহবাগ হয়ে এলিফ্যান্ট রোড হয়ে সায়েন্স ল্যাবরেটরি পৌঁছালে আমি একটি অগ্রবর্তী বাহিনীকে পাই। তারা ‘উদীচী’র ব্যানারে ছাদ খোলা একটি পিক আপ ভ্যানে লং মার্চের সমর্থনে গান গাইতে গাইতে চলেছে। আমি পিক আপটিতে ওঠার জন্য মরিয়া হয়ে ছুট লাগাই। কোন কারণে গাড়িটির গতি খানিকটা মন্থর হলে সেটি আমার জন্য সহায়ক হয়। গাড়ির কাছাকাছি পৌঁছাতেই সেখান থেকে সাংস্কৃতিক দলের কর্মীরা হাত বাড়িয়ে আমাকে টেনে তোলেন। …
অপরিচিত একদল ছেলে-মেয়ের মধ্যে এসে পড়ায় নিজেকে খানিকটা রবাহুত বলে মনে হয়। গুটিশুটি মেরে এক কোনে বসে পড়ি। ব্যাগ থেকে একটি টুপি বের করে মাথা বাঁচানোর চেষ্টা করি। লোহার পাটাতন আগুনের মতো গরম হয়ে উঠেছে ততোক্ষণে। পুরো শরীর ঘামে ভিজে একসা। ব্যাগ থেকে পানির বোতল বের করে ছোট্ট একটি চুমুক দিতে না দিতেই আশেপাশের ছেলেমেয়েরা হাত বাড়ায়। মুহূর্তেই পুরো বোতল খালি। লং মার্চের বহর ততোক্ষণে আসদ গেট পৌঁছেছে। বহরের একটি অংশ ততোক্ষণে মানিক মিয়া এভিনিউ ধরে যাত্রা শুরু করেছে। আরেকটি অংশ আমাদের পিক আপটিকে অনুসরণ করে।
আমার জড়তা পিক আপ ভ্যানের গানের দলটিই কাটাতে সাহায্য করে। একে একে কচি মুখগুলো আমার সঙ্গে পরিচিত হয়ে। সিরাজগঞ্জের স্মরণ নামে একটি ছেলের কথা মনে পড়ছে। এসএসসি পড়ুয়া ছেলেটির গানের পাশাপাশি নাটকের ঝোঁক। বাড়িতে নাটকের ওয়ার্কশপের নাম করে বেরিয়ে পড়েছে লং মার্চের বহরে। দলনেত্রী প্রীতির কথায় জানা গেল, এটি তার পঞ্চম লং মার্চ। মাঝ বয়সী বাসদের একজন সার্বক্ষণিক কর্মী বললেন, জাতীয় কমিটির সাত-সাতটি লং মার্চে চট্টগ্রাম থেকে এসে যোগ দিয়েছেন তিনি। পুরো যাত্রা পথে নানান রাজনৈতিক কথা, আলাপচারিতায় তিনি যথেষ্ট সঙ্গ দিয়েছেন আমাকে। নোটপত্র ঘেঁটেও তার নামটি কিছুতেই উদ্ধার করতে পারছি না বলে তার কাছে মনে মনে ক্ষমা প্রার্থণা করা ছাড়া উপায়কি।
আমি বিস্ময়ের সঙ্গে লক্ষ্য করি, গুমট গরম, পানি শুন্যতা, ছোট্ট পিক আপে গাদাগাদি করে ওঠা একদল সাংস্কৃতিক কর্মী — তাদের কোন কিছু নিয়ে কোন অভিযোগ নেই। তারা প্রত্যেকেই হাসি-ঠাট্টা করতে করতে যুথবদ্ধতায় গেয়ে চলেন একের পর এক সদ্য লেখা গান। কেউ ঢোল, কেউ বা হারমোনিয়াম বা বাঁশিতে সঙ্গত করেন। মাঝে মাঝে শ্লোগানও দেয় দলটি। কোথাও ভীড় দেখলে তারা পিক আপটি থামিয়ে লিফলেট বিলি করেন। মাইকে বর্ণনা করেন লং মার্চের যৌক্তিকতা।
এরই মাঝে বন্ধু বরেষু, গণ সংহতির জোনায়েদ সাকী, ফিরোজ আহমেদ, আবুল হাসান রুবেলসহ বেশ কয়েকজন টেলিফোনে আমার খোঁজ খবর নেন। বলা ভালো, তাদের উৎসাহেই আমার লং মার্চের বহরে যোগ দেওয়া। শ্রদ্ধেয় আনু মুহাম্মদ ভাই তো বটেই। …
‘উদীচী’র গানের দলটি আমাকে প্রেরণা জোগায়। মনে পড়ে যায়, ২৫ বছর আগে আমিও আগুন ঝরা দিনগুলোতে লিড শ্লোগানার হিসেবে নেতৃত্ব দিয়েছি নব্বইয়ের ছাত্র-গণ অভ্যুত্থানে। সে এক রূপকথার দিন। আমার ভেতর থেকে একে একে গরম ইত্যাদি নিয়ে অভিযোগসমূহে উবে যেতে থাকে। নিজেকে বোঝাই, বিপ্লব তোমার নাম। জেলখানা থেকে সাবেক নকশাল নেতা পিতা আজিজ মেহের রেখেছেন এই নাম। তুমি পারবে, পারবেই। …
গাড়িটি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় পৌঁছাতেই আমি টুক করে নেমে পড়ি। আমার জানা ছিল, সেখানে খাবার বিরতি। অর্থাৎ বেশ খানিকটা অবসর। আমি একটি ট্যাপ থেকে হাতমুখ ধুয়ে পানির বোতলটি আবার ভরে নিয়ে ওরস্যালাইন গুলে খাই। খানিকটা বিশ্রামের পর ব্যাগ থেকে নেটবুক টেনে নিয়ে নিশব্দে অভ্যস্ত হাতে দ্রুত টাইপ করতে থাকি। অনলাইন ভার্সনের জন্য একটি তাজা খবর মেইল করি।
এরপর ভীড়ের ভেতর এলোমেলো ঘুরতে ঘুরতে আবিস্কার করি সাংবাদিক সহকর্মী মলয় সাহাকে। পুরো যাত্রাপথে মলয় দা’ই হয়ে ওঠে আমার সিনিয়র বন্ধু ও সহচর।…
—
ছবি: লেখক।
—
সংযুক্ত: ঢাকা-রামপাল লং মার্চ নিয়ে এই লেখকের কয়েকটি প্রতিবেদন পড়া যাবে নীচের লিংকগুলোতে।
‘সুন্দরবন ঘোষণা’য় শেষ হলো লংমার্চ ১১ অক্টোবরের মধ্যে প্রকল্প বাতিল, নইলে প্রতিরোধ ..
fb.me/1QXnlQTP6
পিছু হটল প্রশাসন, লংমার্চ রামপাল যাচ্ছে সুন্দরবন রক্ষার স্বার্থে রামপালে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ… fb.me/1nIb3ShJE
রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র: লংমার্চ রামপালে ঢুকতে দেবে না প্রশাসন
… fb.me/1xg1A24aE
UPDATE: #LongMarch reached at Jessor; #SaveSundarban #SaveBangladesh fb.me/6pg0B4VdQ
রামপাল অভিমুখী লংমার্চকে পথে পথে সংবর্ধনা আ. লীগের পাল্টা কর্মসূচি সংঘর্ষের আশঙ্কা …
fb.me/1IEBzJdl2
সুন্দরবন আমাদের বাঁচায়। আসুন, সুন্দরবন রক্ষা করে আমরা তার ঋণ শোধ করি।…
fb.me/Kn9nkm8Q
যারা এই নোটটি পড়ছেন, রামপাল বিতর্কে অংশ নিচ্ছেন, তাদের প্রত্যেককে আন্তরিক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাই। চলুক। (Y)
—
আপেডট:
রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্র প্রজেক্ট বিষয়ক নিবন্ধ প্রসঙ্গে :: তানভীর ইসলাম
[লিংক]
সরকার একবার কোন কিছুর গোঁ ধরলে তা করেই ছাড়বে। ঠেকানোর কোন উপায় আসলে নেই। আবার বিদ্যুতের আমাদের এতই ঘাটতি যে বিদ্যুৎকেন্দ্র না হলেই নয়।
সুন্দরবন রক্ষা আমাদের করতেই হবে। নয়তো ১) প্রাকৃতিক ভারসাম্য নষ্ট হবে ২) প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে দক্ষিনাঞ্চলকে কোনভাবেই বাঁচানো যাবে না।
“তেল গ্যাস রক্ষা কমিটি” আন্দোলন করছেন, আমরা জানতে পারছি যে আজ নয়তো কাল সুন্দরবনের উপর বিরূপ প্রভাব পড়বেই। তাঁরা আমাদের সামনে তুলে না ধরলে আমরা আসলেই এ ব্যাপারে সচেতন হতাম না। তাঁরা বিশেষজ্ঞ, আমাদের সামনে বিশেষায়িত দৃষ্টিভংগিতে কুফলগুলো তুলে ধরছেন।
কিন্তু,
১) এই কমিটিতে এত বিশেষজ্ঞ থাকা সত্বেও একটা ভাল বিকল্প জায়গার সন্ধান কেন তাঁরা বের করছেন না?
২) তাঁরা চাইলেই প্রত্যক্ষভাবে সরকারের সাথে বিকল্প স্থান নিয়ে আলোচনা করতে পারতেন, সেই চেষ্টা কি তাঁরা করেছেন?
৩) তৌফিক-ই-ইলাহী টনি স্টার্ক নন যে কোন ভাবেই তাকে ডিংগিয়ে সরকারের মত পরিবর্তন করা যাবেনা। এমনকি সঠিকভাবে চেষ্টা করলে হয়তো কুইক রেন্টাল থিওরীকেও হয়তো বাতিল করা যেত।
আর আমার কাছে সব চাইতে বড় প্রশ্ন—-
যেখানে নাকি দেশী ওরিয়ন গ্রুপের সাথে প্রস্তাবিত তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে ইউনিটপ্রতি সর্বোচ্চ ৪ টাকা দামে বিদ্যুৎ কেনার চুক্তি করা হয়, সেখানে এনটিপিসি’র সাথে তার চাইতে এত বেশী দামে কেনার চুক্তি করার অর্থই বা কি!! আর ১৫ শতাংশ অর্থ বিনিয়োগ করে ভারত কিভাবেই বা ৫০ শতাংশ উৎপাদন অংশীদার হতে পারে!!
আমাকে কেউ কি একটু খোলাশা করে বোঝাতে পারবেন? আমার মাথা ঠিক কাজ করছে না।
@এনালিস্ট,
আকাশ মালিক ভাইয়ের শেয়ারকৃত প্রথম লিংক-এ গেলে “আঞ্জুমান ইসলাম এর লেখায়” সঠিক উত্তর পাবেন, সেটা হল:
এটি সম্পূর্ণ সুষম আন্তজার্তিক একটি চুক্তি। এই প্রকল্প ব্যয়ের ৭০ শতাংশ ঋণ এবং ৩০ শতাংশ ইক্যুইটি। ৭০ শতাংশ ঋণ ও এর সুদ কেবল বাংলাদেশ পরিশোধ করবে একথা আদৌ সত্য নয়। ইনফ্যাক্ট এসব বলে ইচ্ছাকৃতভাবে এই প্রকল্প সম্পর্কে জনমনে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করা হচ্ছে বলে মনে করছি। যে ৭০ শতাংশ ঋণ হিসাবে নেওয়া হবে তার সুদ ‘বাংলাদেশ-ইন্ডিয়া ফ্রেন্ডশিপ পাওয়ার কোম্পানি লি.’ (যার মালিকানা ৫০:৫০) পরিশোধ করবে। ইক্যুইটি ৩০ শতাংশের মধ্যে ১৫ শতাংশ বাংলাদেশ এবং ১৫ শতাংশ ভারত সরকার প্রদান করবে।
বিভ্রান্তি সৃষ্টিকারীদের উত্তর অনেকটা এরকম না : সাম্রাজ্যবাদী আম্রিকা আর ভারতের দালাল আম্লিগ সরকার দেশ বেইচা দেওয়ার জন্য এমন চুক্তি করতেছে !!! :-Y :-X :-Y
যারা এই ছোট্ট নোটটি পড়ছেন, বিতর্ক করছেন বা মতামত দিচ্ছেন, তাদের প্রত্যেককে সাধুবাদ।
জানিয়ে রাখি, ভারতের এনটিপিসি কম্পানি রামপালে তাপবিদ্যুত কেন্দ্র নির্মানের কাজ পেয়েছে। এই কম্পানির বিরুদ্ধে পরিবেশ বিরুদ্ধ বিদ্যুত কেন্দ্র নির্মানের গুরুতর অভিযোগ আছে। এ নিয়ে সেখানে মামলাও হয়েছে। [লিংক]
এনটিপিসি’কে নিয়ে দেওয়া লং মার্চের একটি শ্লোগান মনে পড়ছে:
”নিজের দেশে পারো না
আমাগো দেশে আইছো ক্যান?” 😛
কোন কারণে দ্বিতীয় লিংকটি আসেনি, নিচে আবার দেয়া হলো। এবার যদি কাজ না করে তাহলে বাক্যটি কপি পেষ্ট করে গুগলে চালান দিন।
রামপাল: বিভ্রান্তিকর ‘কিছু অভিযোগ, কিছু উত্তর’– কল্লোল মোস্তফা
এ বিষয়ে প্রায় পরস্পর বিরোধী দুটো লেখা এখানে পড়া যেতে পারে-
রামপাল: কিছু অভিযোগ কিছু উত্তর– আঞ্জুমান ইসলাম
রামপাল: বিভ্রান্তিকর ‘কিছু অভিযোগ, কিছু উত্তর’- কল্লোল মোস্তফা
রামপাল প্রকল্পের পরিবেশগত স্বল্প এবং দীর্ঘ মেয়াদী প্রভাবের উপর বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ণ বোর্ডের উদ্যোগে গবেষণা পরিচালিত হয়েছে। সেই গবেষণার উপর ভিত্তি করে প্রায় সাড়ে ছয়শত পৃষ্টার একটি Environmental Assessment প্রতিবেদন এ বছরের জানুয়ারী মাসে প্রকাশ করা হয়। আগ্রহী পাঠক চাইলে রিপোর্টি ডাউনলোড করে পড়তে পারেন।
সমালোচনা এবং আলোচনা উভয়ই সজ্ঞানে করাই উত্তম। আমার বিশ্বাস হয় না যে , রামপাল নিয়ে যারা আকাশ বাতাস কাঁপাচ্ছেন এবং চায়ের কাপে ঝড় তুলছেন তাদের সবাই জানেন যে তারা কি বলছেন।
@সংশপ্তক,
সমালোচনা এবং আলোচনা উভয়ই সজ্ঞানে করাই উত্তম। আমার বিশ্বাস হয় না যে , রামপাল নিয়ে যারা আকাশ বাতাস কাঁপাচ্ছেন এবং চায়ের কাপে ঝড় তুলছেন তাদের সবাই জানেন যে তারা কি বলছেন। (Y) (Y) (Y)
@সংশপ্তক,
প্রতিবেদনটা ৬৭৬ পাতার। পড়তে বেশ কয়েকদিন সময় লাগবে। আপনার কাছ থেকে রেডিমেইড একটা ধারনা নিতে চাচ্ছি। রিপোর্টের মূল বক্তব্য কী? কী সিদ্ধান্ত দিচ্ছে রিপোর্ট?
@সাইফুল ইসলাম,
সময়ের অভাবে উত্তর দেয়ায় দেরি হয়ে গেল। যদিও যাওয়া যায় কিন্তু প্রকল্পটি নিয়ে আমি কোন সামাজিক অথবা রাজনৈতিক বিতর্কে যাব না। আমি বরং প্রকল্পটির ব্যাপারে বৈজ্ঞানিক তদন্তে আগ্রহী।
বাংলাদেশের মত ঘন বসতিপূর্ণ দেশে স্থান নির্বাচনে খুব বেশী বাছ বিচার করার সুযোগ তো নেই , সেটাকে বরং বিলাসিতা বলা যায়। অন্য কোন জায়গায় সুন্দরবন না থাকলেও , মানুষের বসতি তো আছে ! আবার জ্বালানী কয়লা সরবরাহ করার জন্য যোগাযোগ ব্যবস্থাসহ সারা বছর জুড়ে নদীর নাব্যতার বিষয়টাও জড়িত।
যে কোন উচ্চ ক্ষমতার বিদ্যুৎ কেন্দ্রে বিদ্যুৎ চুম্বকীয় তরঙ্গ (EMF) সৃষ্টি হয় যা দেয়াল দিয়ে প্রতিরোধ করা যায় না। এই তরঙ্গ মানব দেহের ডি এন এ ভেদ করে ক্যান্সার সেল তৈরীতে সক্ষম – এটা নিয়ে অনেক গবেষণা এখনও চলছে । যে জায়গায়ই কেন্দ্র বসান না কেন এই ঝুঁকি থাকবেই । সামর্থ থাকলে বলতাম যে, সব তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র বন্ধ করে দিয়ে দেশের সমস্ত বিদ্যুৎ আমদানী করা হোক। যে দেশে এখনও বিদ্যুৎ সেবা সরকারী ভর্তুকি ছাড়া কল্পনা করাই যায় না , সেখানে বিদ্যুৎ আমদানির কথা তোলা গরীবের ঘোড়া রোগের মত শোনাবে ।
রিপোর্টের ১১ , ১২, ১৩ এবং ১৪শ অধ্যায়ে ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা ,পরিবেশ ব্যবস্থাপনা ও পর্যবেক্ষণ পরিকল্পনা এবং লাভ ক্ষতির বিশ্লেষণ নিয়ে বিস্তারিত বর্ণনা ও আলোচনা করা হয়েছে। যদিও লাভ ক্ষতির হিসেবে প্রকল্পটিকে সেখানে ইতিবাচক হিসেবেই দেখানো হয়েছে , ভালো হত যদি এসব তথ্য উপাত্ত মন্টি কার্লো জাতীয় সিমিউলেটরে দিয়ে বিশ্লেষণ করা যেত। আমার জানা মতে , আপনাদের অনেকেরই মন্টি কার্লো নিয়ে কাজ করার অভিজ্ঞতা আছে। পারলে সিমিউলেট করে দেখতে পারেন।
@সংশপ্তক,
হাস্যকর মন্তব্য… পাওয়ার প্ল্যান্ট কিংবা ইলেকট্রিক পাওয়ার ট্রান্সমিশন সম্পর্কে”সম্যক জ্ঞান” অর্জন পূর্বক এ সম্পর্কে মন্তব্য করা উচিত- ভাসা ভাসা “জানা” দিয়ে কিছু বলতে গেলে এমন উল্টাপাল্টা হই যাবে – কেননা এটা সমাজ বিজ্ঞান নয় ভৌত বিজ্ঞান। তাছাড়া তড়িৎ চৌম্বকীয় বিকিরণ কিসে কিসে সৃষ্টি হয়, কেন হয় – এটা কোন পর্যায় কতটুকু ক্ষতিকর এটাও গুরুত্বপূর্ন।
@সংবাদিকা,
ভাই, দুখের সাথে জানাচ্ছি যে বিজ্ঞান আমার সাবজেক্ট না। অঙ্কের ভয়ে বিজ্ঞান ছেড়ে বানিজ্য বিভাগে চলে গেছিলাম এই অঙ্ক ( পদার্থ বিজ্ঞানেও অঙ্ক গুলা মারাত্বক ) ভীতিতে মেলাদিন আগে,মাধ্যমিক লেভেলেই, সত্যি স্বীকার করতে আমি বাধ্য, এখানে লজ্জা পেলে চলবে না।
তবে যদি সংশপ্তকের কথা হাস্য কর মনে হয় আপনার তবে শুধু এটুকু বলে থেমে থাকলে আমার মত বিজ্ঞান মুর্খরা বুঝবে কিভাবে? কাজেই দয়া করে বুঝিয়ে বলেন!! :-O
@সংবাদিকা,
:hahahee: ইলেক্ট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং এর জ্ঞান নিয়ে মলিকিউলার বায়োলজী বোঝার চেষ্টা করলে হাস্যরসের সৃষ্টি হওয়া অসম্ভব কিছু নয় । যা হোক, এরকম কেইস নতুন কিছু নয় ।
@সংশপ্তক,
মলিকিউলার বায়োলজি, জেনেটিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং, মেকাট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ারিং কিংবা কোয়ান্টাম মেকানিক্স ইত্যাদি ইত্যাদি – এখনো মনে পরে হাইস্কুল 10-11-12 ক্লাসে এবং আন্ডারগ্রেড ফার্স্ট-সেকেন্ড ইয়ারে কিছু সহপাঠী যেকোন আলোচনাতেই এসব গালভরা নামের জটিল সব সাবজেক্টের কথা নিয়ে আসত….. যদিও ওদের অনেকের ধারনাই ছিলনা এসবের কোন বিষয়ের আলোচনার এবং গবেষণার স্কোপ কতটুকু :hahahee:
@সংশপ্তক ভাই,
নাহ এভাবে হবে না। নিচে দেখেন কারো কারো কাছে আপনার মন্তব্যটি হাস্যকর শোনাচ্ছে।
যদিও আমি বুঝলাম না যে আপনার কথার মধ্যে অযৌক্তিক বিষয় আসলে কোনটি। সুন্দর ভাবেই তো বললেন, আমি তো অন্তত ভুল কিছু দেখলাম না আপনার বক্তব্যে।
ঘোড়া রোগ বাংলাদেশের মানুষের একটা আদি রোগ।অন্য এক পোষ্টে একজন কে আজকের ইলিশের দাম আর ১৫ বছর আগের ইলিশের দাম বুঝিয়েছি। আগে ইলিশ পচত , কম দামী বলে কেউ নিত না, আজ বাঙ্গালী ইলিশের জন্য হাহাকার করে। বেশি দাম দিয়েও আগের জিনিস আর পাওয়া যায় না।
যদি দামী জিনিসটাই হয় আমাদের কাছে মুখ্য তবে আমরা না হয় গাঁটের পয়সা উড়িয়ে বেশি দামেই বিদ্যুৎ কিনব। আর যদি কমদামে ভাল জিনিস কিনে সেটার মর্ম আমরা বুঝতে পারি, তবে মনে হয় জাতি হিসাবে আমরা আরো এগিয়ে যাব। তব কেন জানি মনে হয় যে এটা সম্ভব নাও হতে পারে।
@অর্ফিউস,
বিশেষ কোটায় নিয়োগ পাওয়া পিডিবির কেউ না তো ? :hahahee:
@সংশপ্তক ভাই, এতক্ষনে অরিন্দম কহিলা বিষাদে….. 🙁
থাক এইটার মধ্যে আমার ঢুকে আর লাভ নেই, যা বুঝার বুঝে নিয়েছি, বিতর্ক্টা তাহলে হচ্ছে
ইলেক্ট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং এর জ্ঞান নিয়ে মলিকিউলার বায়োলজী! থাক এখানে আমার মোটা মাথা না গলানোই ভাল :lotpot:
:hahahee: সেইটা তো আপনাকে খুঁজে পের করতে হবে আপনি দুঁদে গোয়েন্দা, এইটা আপনি ভাল বের করতে পারবেন। দেখেন খোঁজ খবর করে 😛 , পেলেও পেতে পারেন কিছু অমুল্য রতন :))
@অর্ফিউস,
সারা পৃথিবীইতো বিভিন্ন মানব সৃষ্ট তরঙ্গে তরঙ্গায়িত – এটা কোন পর্যায় কতটুকু ক্ষতিকর – এর বেনেফিট রেসিও কতটুকু এটাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ন – এজন্যই X-Ray এখনো চিকিৎসা বিজ্ঞানে ব্যবহৃত হয়। এটা ক্ষতি, সেটা ক্ষতি ওটা ক্ষতি বলে তো লাভ নেই। 😀 আর রামপালে যে ক্ষতিকর প্রভাব নিয়ে বিতর্ক চলছে ওটাতে EMR Hazard থেকে বিভিন্ন পর্যায়ের Chemical Hazard টাই যৌক্তিক ভাবে বেশি আলোচিত হচ্ছে। আর EMR এর প্রভাব শুধু পাওয়ার প্ল্যান্ট কেন্দ্রিক নয় – যত ট্রান্সমিশন ক্যাবল এবং সাবস্টেশন আছে সবই এর মধ্য পরে- সবচাইতে বড় কথা যেখানেই কারেন্ট ব্যবহৃত হয় সেখানেই কম বেশি এটার প্রভাব থাকে – সাথে আরও কিছু থাকে 🙂
অনেক সময় পরিবেশ বাদীরা পরিবেশ এর উপর সচেতনতায় গাছ গাছালির অন্তর্বাস পরে সবার সামনে…… পায়ে কিন্তু ঠিকই ডিজাইনার্স চামড়ার সেন্ডেল থাকে আবার বাসায় যাওয়ার সময় এসি গাড়ি ছাড়া চড়তে পারেনা – :rotfl:
R&D হতে Producing পর্যন্ত সামগ্রিক এনার্জি এন্ড পাওয়ার সেক্টরে পৃথিবীর কোন দেশটা কোন ভাবেই ভর্তুকি দেয়না বড্ড জানতে ইচ্ছে করছে :lotpot:
@সংবাদিকা, ওহ তাহলে এই ব্যাপার? 🙂 ধন্যবাদ আপনাকে ব্যখ্যা করে আপনার আপত্তি বুঝিয়ে দেয়ার জন্য, এবং সংশপ্তক ভাইয়ের আপনার প্রতি করা রেসপন্স দেখে! যাক এইটা আপনাদের ভিতর থাক, এর মধ্যে ঢুকে আমার আর কাজ নেই। আপ্নারা দুইজন মিলে নিজেদের বিষয় নিয়ে কাটাকাটি করেন, আমরা পড়তে থাকি 😀 । তবে বিদ্যুৎ আমার চাই, কিভাবে পাব জানি না।সারাদিনে মোটামুটি ঘন্টা ছয় সাতেক লোড শেডিং খেয়েছি গত মাসেও :-s
লং মার্চ সফল হোক
বিদ্যুৎ কেন্দ্রের বিকল্প আছে কিন্তু সুন্দরবনের কোন বিকল্প নাই
@আম্মানসূরা,
সুন্দরবনের বিতর্ক আপাতত বাদ দিচ্ছি। কিন্তু একটা ব্যাপার পরিষ্কার বুঝলাম না, একটু বুঝিয়ে বলবেন কি? বিদ্যু কেন্দের বিকল্প নাকি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের জন্য বিকল্প স্থানের কথা বললেন? যদি প্রথমটা হয়, তবে বিদ্যুত কেন্দের বিকল্প টা কি জিনিস দয়া করে বুঝিয়ে বলবেন, ধন্যবাদ।
@অর্ফিউস,
না রে ভাই আমি স্থানের কথা বলেছি।
আমাদের দেশ নদী মাতৃক দেশ তাই নৌ পরিবহন সুবিধা প্রাপ্ত দথানের অভাব হবে না।
বিপ্লব,
চমৎকার অভিজ্ঞতা! আমারো সেই দিন গুলোর কথা মনে করিয়ে দিচ্ছে এই লেখাটি। ধন্যবাদ সে জন্যে আপনাকে। আমি কিন্তু আসলে চাইনা যে সুন্দর বনের মতো একটা সম্পদ এভাবে ধ্বংস হোক। কিন্তু এটিও তে ঠিক যে, অপর্যাপ্ত শক্তি নিয়ে উন্নয়ন কর্মকান্ডের কোন রূপরেখা প্রনয়ন সম্ভব নয়। আমাদের দেশে স্বাভাবিক শক্তিই চাহিদার তুলনায় অতি আপ্রতুল। বিগত দিন গুলোতে রেন্টাল পাওয়ার প্ল্যান্ট দিয়ে কোন ভাবে ঘাটতি মিটিয়েছে সরকার যা সাময়িক। ব্যয় বহুল এবং পরিবেশের জন্যেও অত্যন্ত ক্ষতিকর। বিগত বি এন পি সরকারের সময় গোটা দেশ যে কি অসহ্য যন্ত্রনায় ছিলো সে কথা আমি বিস্মৃত হই নি। রামপাল এ প্রস্তাবিত বিদ্যুৎ কেন্দ্রের কারনে কি কি ধরনের পরিবেশ বিরুদ্ধ প্রভাব আসতে পারে, আমি এ সংক্রান্ত তথ্য খুঁজে পাইনি। এমনকি এসংক্রান্ত কোন স্টাডি হয়েছে কিনা তাও জানতে পারছি না। আমি দীর্ঘদিন ঘোড়াশালে ছিলাম সেখানে যে তাপ-বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি আছে, তার পরিপ্রক্ষিতে কি ধরনের পরিবেশ বিপর্যয় ঘটেছে বিগত কয়েক দশকে তার কোন তথ্য কি জানা আছে? শীতলক্ষা নদীর জল যতদূর জানি সেখানকার দুটি সার কারখানা আর আশেপাশের ট্যানারী সহ কিছু ছোট শিল্প-কারখানার দ্বারা দারুন ভাবে দুষিত! এমনকি পরবর্তীতে সারকারখানা গুলো তাদের প্রধান বর্জ নিয়ন্ত্রনেরও ব্যবস্থা নিয়েছিলো। কিন্তু সেটা কতোটা ফলপ্রসূ জানা নেই। অনুরূপভাবে তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রটির জন্যেও নিশ্চয়ই কিছু দুষন নদীটিকে ধ্বংস করছে! কিন্তু আসলে দরকার গবেষনা মূলক নির্ভরযোগ্য তথ্য। জাতীয় তেলগ্যাস রক্ষা কমিটি নিশ্চয়ই মনে করেন না যে দেশে পর্যাপ্ত শক্তি উৎসের দরকার নেই। সে ক্ষেত্রে রামপালের পরিবর্তে কি আর কোন স্থান তাঁরা নির্দ্দেশ করেছেন, যেখানে সুলভে বিদ্যুৎ কেন্দ্রস্থাপন এবং বিতরন সম্ভব?এ ব্যাপারে কি জাতীয় তেল গ্যাস রক্ষা জাতীয় কমিটির কোন গ্রহনযোগ্য স্টাডি আছে? সরকারের এ স্থাপনার বিপরীতে আর কি কি বিকল্প হতে পারতো সে সম্পর্কে বিস্তারিত কোন প্রস্তাব কি তাদের তরফে দেওয়া হয়েছিলো? এসব আমি বিস্তারিত জানতে ইচ্ছুক। এছাড়াও আমি যতদূর জানি প্রকল্পটি সরকার নিয়েছে অন্ততঃ ২বছরেরও বেশী আগে। আমার ধারনা অতীতের এই সময়টা যথেষ্ট এ ব্যপারে গ্রহনযোগ্য গবেষনা এবং সমীক্ষার জন্যে। আমি ব্যক্তি গত ভাবে খুঁজেছি, কিন্তু গবেষনা মূলক তথ্য পাইনি, যা পেয়েছি তা সবই অনুমান নির্ভর আলোচনা। দয়া করে এবিষয়ে একটা অনুসন্ধানী রিপোর্ট সম্ভব হলে উপস্থাপন করবেন। বিষয়টি জানার কৌতুহল থেকেই এই দাবী।
@কেশব অধিকারী,
যে কোন প্রকল্পের আগেই ফিজিবিলিটি ষ্টাডি করা হয়, যেখানে এখনকার দিনে পরিবেশগত দিক খুবই গুরুত্ব পায়। সেটা নানান পর্যায়ের এনভায়রনমেন্ট এসেসমেন্ট হিসেবে করা হয়, করে ইন্ডিপেন্ডেন্ট কন্সালট্যান্ট। বহুল আলোচিত টিপাইমুখ, এই রামপাল এসব নিয়েও তেমন এসেসমেন্ট হয়েছে। সে মূল্যায়নে পাশ না করলে প্রকল্প বাদ, সোজা কথা।
টিপাইমুখের কিংবা রামপাল কোন প্রকল্পের মূল্যায়নেই ক্ষতিকর তেমন কিছু নেই। তারপরেও দুই দেশের পরিবেশবাদীরাই দুই প্রকল্পের বিরুদ্ধে সোচ্চার। শুনতে যুক্তিহীন হলেও একেবারে যুক্তিহীনও বলা যায় না।
আমি টিপাইমুখের রিপোর্ট পড়েছিলাম, তাতে ক্ষতিকর কিছু ছিল না। রামপালের রিপোর্ট পড়িনি, শুনেছি সেটা পিডিবির ওয়েব সাইটে পাওয়া যায়। ডাউনলোড করে পড়ে নিতে পারেন।
কিছু না জেনেই সাধারন ভাবে বলতে পারি যে আধুনিক টেকনোলজির যুগে একেবারে ভয়াবহ বিপর্যয়ের আশংকা না থাকলে যে কোন প্রকল্পই সদিচ্ছা থাকলে পরিবেশ বান্ধব করেই করা যায়। রামপালও তেমন করাই সম্ভব।
অন্যদিকের চিত্র হলে আমাদের অঞ্চলের বাস্তবতা চিন্তা করতে হবে। এনভায়রনমেন্টাল রিপোর্ট তৈরী করা হয় যারা প্রকল্প চালাবে তারা সব আইন কানুন সঠিক ভাবে মেনে চলবে এই সরল এজাম্পশনে। আমাদের দেশে এর নিশ্চয়তা দেবে কে? রাজধানী ঢাকা শহরে সকলের চোখের সামনে বুড়িগংগা নদী হত্যা করা হল, গত ২০ বছরের অধিক নিয়মিত নানান লেখালেখি সভাসমিতি দেখে আসছি। কি করা গেছে সে বিপর্যয় রোধে? রামপাল আপাতত ক্ষতিকর না হলেও ২০ বছর পর এমন কিছু ফল আনবে না কে বলতে পারে? কিছু লোকে কাগজে আর্টিকেল লিখবে, সরকার কিছু গাল ভরা ঘোষনা দেবে… একবার এত বড় প্রকল্প শুরু হয়ে গেলে সেটা আর সরাবার বা বন্ধ করার উপায় থাকবে না।
এসব দিকও চিন্তা করার আছে, কেবল কাগুজে রিপোর্ট কি বলে তার উপর পূর্ন বিশ্বাস আমাদের অঞ্চলে কার্যকরী নাও হতে পারে। আমার মতে অন্য আর কোন বিকল্প যায়গা পাওয়া গেলে সুন্দরবনের ওপর ওন ধরনের ঝুকি না নেওয়াই ভাল। যায়গা সংকটের দেশে কাজটি কঠিন হলেও মনে হয় না একেবারেই অসম্ভব। এই সরকারই তো কিছুদিন আগে আচমকা আন্তর্জাতিক বিমান বন্দর ভালুকা না রাজশাহী কোথায় সরিয়ে নেবে ঘোষনা দিয়েছিল। যায়গা নিশ্চয়ই আছে, হয়ত সঠিক ভাবে যোগাযোগের স্থাপনা করতে হবে।
@আদিল মাহমুদ,
ঠিক আছে, আমি পি ডি বির সাইট থেকে দেখবো নিশ্চয়ই। সূত্রের খবরের জন্যে ধন্যবাদ। ঠিক বলেছেন, যে এতো-বড় প্রকল্প একবার শুরু হয়ে গেলে সেটা স্থানান্তর অসম্ভব। অন্তত: আমাদের দেশের প্রেক্ষিতে। আপাত: দৃষ্টিতে আমারো সেরকমই ধারনা। কিন্তু যে তেল গ্যাস রক্ষা কমিটি এ আন্দোলনের ডাক দিয়েছে, তারা কি সরকারের কাছে কোন প্রস্তাবনা দিয়েছে যে প্রকল্পটি রামপালে না করে এখানে বা ওখানে করা যেতে পারে? তারা যে এতোবড় একটি আন্দোলনের সাথে সম্পৃক্ত, নিশ্চয়ই তাদের এব্যাপারে বিষদ পর্যবেক্ষণ আছে! এতে তো কোন সন্দেহ নেই যে এ প্রকল্পটির দ্বারা অদূর ভবিষ্যতে আমাদের সুন্দর বন আক্রান্ত হবেই। বায়ু বা পানি দূষণে না হলেও (সে সম্ভাবনা নিয়ন্ত্রণ করা হবে ধরে নিলেও আমি নিশ্চিত নই) মানুষ দূষণে তা হবে। জনস্রোত বাড়লে ভূমি দস্যুরাও পেছনে পেছনে দৌড়াবে! আমার আপনার জন্যে গৃহ নির্মাণ হবে! লক্ষ-কোটি টাকায় সেসব আবার আমরাই কিনবো! এদিকে জঙ্গল-প্রাণ উজাড় হবে! এসব চোখ বন্ধ করে বলে দেওয়া যায় আমাদের বুড়িগঙ্গা-শীতলক্ষ্যার দিকে তাকালে। বুড়িগঙ্গা –শীতলক্ষ্যা শুধু দুষিত হয়নি দখলও হয়েছে! সরকার তো বিগত দুবছরেরও অধিক কাল ধরে প্রকল্পটির জন্যে কাজ করছে। কিন্তু এই তেল গ্যাস রক্ষা কমিটি এতদিন ঘুমিয়ে ছিলো কেনো? যখন ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন হবে তখন কেনো? বিগত দিনে এ ব্যাপারে তারা কোন উল্লেখযোগ্য তৎপরতা দেখায়নি কেনো? অথবা বিকল্প স্থানে তা স্থাপনের দাবী কেনো জানাচ্ছেন না? তার মানে কি এ শুধু বিরোধিতার জন্যে আয়োজন? আমার জানা নেই।
অথচ দেখুন, দেশের সমৃদ্ধির পেছনে পর্যাপ্ত পাওয়ার সাপ্লাই নিশ্চিত না থাকলে কোন দিকেই এগিয়ে যাওয়ার কোন পথ নেই। আমাদের সুন্দরবন কেও রক্ষা করতে হবে, আমাদের শক্তির অনুসন্ধানও দরকার। এ ক্ষেত্রে এই তেল গ্যাস রক্ষা কমিটি কিন্তু সরকারের সহযোগী হয়েই কাজ করতে পারতো। বিকল্প প্রস্তাব কিন্তু তাদের কাছেই সরকার আশা করতে পারে। আমার ধারনা অধ্যাপক আনু মোহাম্মদের সাথে যুক্ত পরিবেশ বিশেষজ্ঞ বৃন্দের এ ব্যপারে হয়তো গবেষণা থেকে থাকতে পারে, সেই সব গবেষণা পত্রের ভিত্তিতে ব্যাপক আকারে সেমিনার সিম্পোজিয়াম বিশ্ববিদ্যালয় গুলোতে হতে পারতো। এতে সচেতনতাও বাড়ত, এবং সরকার কোন ভুল সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকলে তা পরিশোধনও সম্ভব হতো।
বিগত কিছুদিনের অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে মনে হচ্ছে বিরোধিতার নামে বিরোধিতা আর অন্যদিকে সরকারের জেদ! কার জেদ কতো শক্ত, এ যেনো তার কসরৎ চলছে! সবাই কি যুক্তিহীন আর জ্ঞান শূন্য? আমরা আম জনতা সাধারণ বুদ্ধিতে কিছুটা বুঝলেও সম্পূর্নতঃ বিভ্রান্ত বলেই আমার ধারনা।
@কেশব অধিকারী,
আমার তেল গ্যাস রক্ষা কমিটি জাতীয় সংস্থার দৃষ্টিভংগী সম্পর্কে কোন ধারনা নাই। ওনাদের হয়ে কোন জবাব তাই আমি দিতে পারব না। আমি যা বলেছি তা নিতান্তই আমার কথা, খুবই সাধারন দৃষ্টিভংগী থেকে। এনারা যতটা মনে হয় বাম দৃষ্টি সম্পন্ন লোকজন, যদিও সেটা বড় কথা না।
যতটা মনে পড়ে রামপাল নিয়ে ক্যাঁচাল এইই প্রথম নয়। বেশ ক’মাস আগেই বিতর্ক শুরু হয়েছিল, সম্ভবত উত্তাল রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে হাইলাইট ধরে রাখতে পারেনি।
আমাদের বিদ্যুতের সংকট এর প্রবল যে অন্তত এই বিষয়ে মনে হয় দেশের সকলে একমত হবে। নুতন বিদ্যুৎ কেন্দ্র অবশ্যই দরকার। সরকারকে ধন্যবাদ দিতে হয় এমন একটা বাস্তব ভিত্তিক প্রকল্প হাতে নেওয়ায়। তবে এটাও বলব যে সুন্দরবনের মত বিরল একটি প্রাকৃতিক সম্পদের ওপর কোন রকম ঝুকি নেওয়া এড়ানো গেলে সবচেয়ে ভাল। এ বন এমনিতেই হুমকির মুখে আছে, লোভী মানূষের বন কাটা জাতীয় কার্যক্রম ছাড়াও ভারতীয় দাদারা পদ্মা শুকিয়ে পানি তুলে নেওয়ার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ায় লবনাক্ততা বাড়ার কারনে ম্যানগ্রোভ বন এমনিতেই উজাড় হচ্ছে। এর সাথে এই প্রকল্প যোগ হলে কাগুজে রিপোর্ট যাইই বলুক আমি মোটামুটি নিশ্চিত ২০ বছর পর টের পাওয়া যাবে। এর সরাসরি ইম্প্যাক্ট কতটা হবে সে তর্ক বাদ দিয়েও বলক যায় যে একে কেন্দ্র করে আপনার বলা মত নানান মনুষ্য ততপরতা বাড়লে পরিবেশ নষ্ট হতে শুরু করবেই। বিশেষ করে আমাদের দেশে কেউই পরিবেশ সচেতন নয়।
উন্নয়ন এবং প্রকৃতি সংরক্ষন দুয়ের বিরোধ সবখানেই আছে। আমাদের দেশেও থাকবে সেটাও স্বাভাবিক। বিরোধীদের একটি আপাত শক্ত যুক্তি হল খোদ ভারতের গুজরাটেই এমন প্রকল্প বাদ দিতে হয়েছে পরিবেশগত হুমকির কারনে। যাই হোক, দুই পক্ষের যুক্তিতর্ক থেকে মোটামুটি গ্রহনযোগ্য সমাধান বার করা গেলে সবচেয়ে ভাল হত। আমাদের দেশে সেটা হবার জো নেই। মূল বিষয়ের যুক্তিতর্কের চাইতে কে কোন ঘরানার, কার অন্তর্নিহিত মোটিভ কি এসবই হয়ে দাঁড়ায় বড়। আরো বড় কথা, কেউই আর কাউকে বিশ্বাস করে না। আমাদের দেশে সূস্থ আলোচনা যুক্তিতর্কের অবস্থা কোনদিনই ছিল না, এখন দিনে দিনে আরো কঠিন হয়ে দাঁড়াচ্ছে। চরমপন্থাই এখন ট্রেডমার্ক।
যতটা মনে হয় এই প্রকল্প চুড়ান্তভাবে ভিত্তিপ্রস্তর বিশিষ্ট প্রকল্প হিসেবেই থেকে যাবার সম্ভাবনা আছে।
@আদিল ভাই, আপনি না আসলে কথা বার্তা জমেই না 😀
একেবারে সঠিক কথা! ১০০% সহমত।
দিলাম ধন্যবাদ সরকারকে!
ভাই শুনেন আমিও সংসপ্তক ভাইয়ের মত পশু প্রজাতির মানুষ, আগে আমার নিজের পেট ভরাব আর তার পর প্রানী অধিকারের কথা আসতে পারে। এড়ানো গেলে অবশ্যই হবে, তবে দেশের আরো বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মান করা হোক ( এটা সহ), এতেই জীবন বাঁচবে।বর্তমান জামানায় ইন্টারনেট না হলেও চলে, কিন্তু বিদ্যুৎ পানির মতই দরকারী জিনিস। দেশে যে হারে গরম বাড়ছে, এতে ভাত না খেয়ে থাকা যায়, কিন্তু পানি আর বাতাস ছাড়া থাকা যায় না। কাজেই এই কাজ খালেদা করলেও আমি তার সাফাই গাইতাম এমন কি বিশ্ব হারামী রাজাকার মন্ত্রীরা করলেও!!!
পার্ফেক্ট।
আমি যতদুর জানি, ভারতে বিদ্যুৎ ঘাটতি খুবই কম। কাজেই এদের দিকে তাকালে চলবে কেন? বামনদের চাঁদে হাত দেবার চেয়ে আগে খেয়ে পরে বাঁচা দরকার। এতে উচ্চতা খানিক বাড়তেও পারে( বামন প্রজাতির)
;-( ঠিক!
এটাও ঠিক। তবে আমি চাই খুব তাড়াতাড়ি বিদ্যুৎ উৎপাদন বাড়ানো হোক, কিভাবে সেটা আমার দেখার দরকার নেই, যে আমাকে বিদ্যুৎ দেবে, আমি তাকে ভোট দিব,এটাই সাফ কথা ( অবশ্য রাজাকার দের ছাড়া, কারন এই সম্প্রদায়ের এই দেশে রাজনীতি করার অধিকারই নেই)
@অর্ফিউস,
আদিল ভাই, পড়েন ভাত না খেয়েও একদিন থাকা যায়
@অর্ফিউস,
মানুষের চাহিদাই চুড়ান্তভাবে জেতে। পরিবেশের হুমকি এর কাছে গৌণ হয়ে যায়, এটাই নিয়ম। এভাবেই কত বন বাঁদাড় উজাড় হয়ে গেছে। কাওরন বাজার থেকে সোনার গাঁ/সুন্দরবন হোটেলের পাশ দিয়ে যে তেরছা বড় রাস্তা এখন হাতিরপুলের দিকে গেছে সেটা হয়েছিল ‘৭৯ সালে। এখন কে বিশ্বাস করবে যে এই এলাকায় বর্ষাকালে সাগরের মত বিলের পানি থৈ থৈ করত? সামান্য দু’একটা বসতি ছিল পানির ওপর যারা নৌকায় চলাচল করত।
বিদ্যুত লাগবে কোন সন্দেহ নেই, প্রকল্প খুবই দরকার। কিন্তু একই সাথে সুন্দরবনকে ঝূঁকির বাইরে রাখা গেলে মন্দ কি? রামপাল ছাড়া কি অন্য কোন এলাকা কোনভাবেই বার করা যেত না? এই প্রশ্নের জবাব জানা গেলে আমার মতামত পরিষ্কার হত।
প্রধান বিরোধী দল জানিয়ে দিয়েছে যে তারা এই প্রকল্পের বিরুদ্ধে। কাজেই সরকার যদি নির্বাচনে বদল হয় (যার সম্ভাবনা ভালই আছে) তার মানে এই প্রকল্পের অপমৃত্যু। আর এই সরকারও থাকলে এত বড় প্রকল্প কতটা এগিয়ে নিতে পারে সেটা দেখার বিষয়। পদ্মা ব্রিজের মত না আবার গোত্তা খায়।
@আদিল ভাই,
সেটা তো অবশ্যই যেত। আমিও তো সেইটাই বললাম, কিন্তু আমার কথার মাঝে সরকারের প্রতি একটু খোঁচাও ছিল, কিন্তু ব্যাপারটা ভাল মত বুঝাতে পারি নাই :)) ।
তবে বিকল্প না পেলে সুন্দরবনই সই, কারন নিজে বাঁচলে নাকি বাপের নাম 😉 , তাই বললাম আরকি!
@কেশব অধিকারী, @আদিল মাহমুদ,
আপনাদের আলোচনায় নতুন কিছু না কিছু শিখছি। সহ ব্লগার কল্লোল মোস্তফার প্রাসঙ্গিক —রামপাল: বিভ্রান্তিকর ‘কিছু অভিযোগ, কিছু উত্তর’ নোটটি দেখার অনুরোধ রইলো।
এতে রামপাল নিয়ে মুখস্ত সরকারি বুলির মোক্ষম জবাব দেওয়া আছে।
@আদিল মাহমুদ,
বড় কোন শিল্প করতে গেলে ২০ বছর কেন অন্তত ২০০ বছরে কি সমস্যা হতে পারে তাও বিবেচনায় আনা উচিত।
@ডাইনোসর, তাহলেই হয়েছে, এদেশে আর কিছুই হবে না।
আপটেড:
কুষ্টিয়া সফরে প্রধানমন্ত্রী
ভারতের বিদ্যুতের সঙ্গে রামপালের
ফলকও উন্মোচন!
—
বিষয়টি সত্যিই বিস্ময়কর। লং মার্চের দ্বিতীয় দিনেই প্রধানমন্ত্রীর তথ্য উপদেষ্টা ড. তৌফিক ই ইলাহী ২২ অক্টোবর রামপাল বিদ্যুত কেন্দ্রের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপনের ঘোষণা দিয়ে ঔদ্ধত্ব প্রকাশ করেছেন। এরপরেই তড়িঘড়ি করে ভেড়ামারা থেকে রামপাল প্রকল্প আগাম উদ্বোধনের খবর।
প্রতিবাদে, ক্ষোভে ফেটে পড়েছেন তেল, গ্যাস, খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুত, বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটির নেতা কর্মীরা।
হঠাৎ করে শেষ করে দিলেন যেন? লিঙ্কগুলো তো আসেনি। মন চায় আমিও যদি আপনাদের সাথী হতে পারতাম। (Y) (F)
আকাশ মালিক,
এক মত ।লেখাটি অসম্পূর্ণ লাগছে।আর ইতিহাসের স্বার্থে ২৪ সেপ্টেম্বরের সাথে সালটি উল্লেখ করা প্রয়োজন ছিল। যাহোক,দাবিটির সাথে একমত।
@গীতা দাস,
দিদি, ২৪ সেপ্টেম্বর এখনো জ্বলছে। এমনকি লং মার্চের ঘোষণা পর্ব ২৮ সেপ্টেম্বরও। প্রাসঙ্গিক লিংকগুলোর খবরে পুরো লং মার্চ ধরা পড়বে।
আরেকবার জানাই, নোটটি সূচনা পর্ব মাত্র। সে এক ভয়ংকর কষ্টকর, কিন্তু আনন্দময় যাত্রা। সময় পেলে পরের পর্বগুলো লেখা যেতে পারে। তবে সেটি এক ঘেয়ে আত্নকথন হতে পারে!
আপনাকেও অনেক ধন্যবাদ।
@আকাশ মালিক,
আপনার বিনীত পাঠের জন্য ধন্যবাদ। টাইপো ঠিক করেছি। লিংকগুলো কপি-পেস্ট করে নতুন উইন্ডো খুললে পাওয়া যাবে।
নোটটি সূচনা পর্ব মাত্র। সে এক ভয়ংকর কষ্টকর, কিন্তু আনন্দময় যাত্রা। সময় পেলে পরের পর্বগুলো লেখা যেতে পারে। তবে সেটি এক ঘেয়ে আত্নকথন হতে পারে!
@বিপ্লব রহমান,
তা তো ওপরের ছবিই সাক্ষী দিচ্ছে। আহা, দল বেঁধে ট্রাকের উপরে আর ভাটির স্রোতে ভাসা নৌকায় বসে গান গাওয়ার মজাটাই আলাদা। হায়! বহুদিন আমার জন্মভুমিটাকে দেখিনি। ও হ্যাঁ, ভিডিও করবেন কিন্তু দাদা।
httpv://www.youtube.com/watch?v=ip2ypSmFa0M
@আকাশ মালিক, (Y)