আজ রক্ত ঝরানো ২১ আগষ্ট
আকাশ মালিক
আজ ২১ আগষ্ট। বাংলাদেশের ইতিহাসে সে দিনটি আর অন্যান্য দিনের মত সাধারণ দিন নয়, এক বিভীষিকাময় কলংকিত দিন। সে দিনের গ্রেনেড হামলা, দানবীয় সন্ত্রাস,নারকীয় জঘন্যতম হত্যাজজ্ঞ অবলোকন করে সারা পৃথিবীর বিবেক স্তব্ধ বাকরুদ্ধ হয়ে যায়। বিশ্ব রাজনীতিবৃন্দ এই বীভৎস হত্যাকান্ডের হোতা ঘাতকদের প্রতি ঘৃণা ধিক্ষার জানালেন। কিন্তু নামের কিছু হিংস্র জানোয়ার, কিছু অমানুষ এই ভয়াল দৃশ্য উপভোগ করলো প্রেক্ষাগৃহে ছবি দেখার মত নীরব দর্শক হয়ে। তারা আর কেউ নয়, বি এন পি নামের এ দেশেরই একটি রাজনৈতিক দল, আর এ দেশেই জন্ম নেয়া কুলাঙ্গার কিছু বেজন্মা দেশের স্বাধীনতার শত্রু কিছু ইসলামী সংগঠন। কোনো দেশের কোনো রাজনৈতিক দল তার রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ বিরোধী দলকে খুন করে হত্যা করে সমূলে উৎখাত করে দিতে বার বার পরিকল্পিতভাবে হত্যাজজ্ঞ চালিয়েছে এমন প্রমাণ পৃথিবীর ইতিহাসে কয়টি আছে আমার জানার নেই।
ঘাতকেরা শুধু প্রতিপক্ষ রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগকেই নিশ্চিহ্ন করে দিতে চেয়েছিল ভাবলে ভুল হবে, তারা একটি আদর্শ একটি চেতনাকে ধ্বংস করে দিতে চেয়েছিল। এর আগে তারা সেই চেষ্টাই করেছিল স্বাধীনতার স্তপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যা করে। ডঃ অজয় রায় সেই হত্যাকান্ডের উদ্দেশ্য বর্ণনায় লিখেন-
‘অনেকে বিষয়টির গভীরে না গিয়ে বলে থাকেন শেখ মুজিব ও তাঁর সরকারকে উৎখাত করা হয়েছে অপশাসন ও দুর্নীতির কারণে কিন্তু তা ঠিক নয়। বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করা হয় তাঁর আদর্শের জন্য, যে আদর্শ বাঙালী জাতীয়তাবাদ, ধর্মনিরপেক্ষ এবং উদারনৈতিক গণতন্ত্রকে তুলে ধরেছে। অন্যদিকে তাঁর হত্যাকারীদের উদ্দেশ্য ছিল এই হত্যাকাণ্ডের মধ্য দিয়ে পুরানো পাকিস্তানী ধ্যানধারণায় প্রবর্তন এবং বাংলাদেশকে একটি ধর্মতাত্ত্বিক স্টেটে রূপান্তরিত করা এবং সেক্যুলার বাঙালী জাতীয়তাবাদের স্থলে ‘মুসলিম বাংলা’ নামের আদর্শভিত্তিক ‘বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদের প্রবর্তন। স্বঘোষিত হত্যাকারীদের একজন হত্যা ষড়যন্ত্রের মূল নায়ক কর্ণেল ফারুক একটি সাক্ষাৎকারে স্পষ্টভাবেই বলেছিলেন- “শেখ মুজিবকে অবশ্যই মৃত্যুবরণ করতে হত। কারণ ঐ ব্যক্তিটি তার ধর্ম ইসলামের প্রতি বিশ্বাসঘাতকতা করেছে — যে বিশ্বাস আমাদের জনগণের ধর্ম…।” হত্যাকাণ্ডের আর একজন নায়ক মেজর রশীদের ভাষ্যমতে ‘১৯৭৪’ এর গ্রীষ্মকালে ফারুক ও রশীদ মুজিবকে উৎখাতের ষড়যন্ত্রমূলক পরিকল্পনা শুরু করে — যার উদ্দেশ্য ছিল বাংলাদেশকে ধর্মভিত্তিক ‘ইসলামিক রিপাবলিক রাষ্ট্রে পরিণত করা।’
সে দিন ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যার পরিকল্পনায় সমর্থন দিয়েছিলেন বি এন পি’র প্রতিষ্ঠাতা মেজর জিয়াউর রহমান, আর ২০০৪ সালের ২১ আগষ্টের নারকীয় হত্যাজজ্ঞের পরিকল্পনা করা হয়েছিল তারই পুত্র তারেক জিয়ার হাওয়া ভবনে বসে। আওয়ামী লীগকে দুনিয়া থেকে বিলীন করে দিতে বিএনপি পরামর্শ করলো একাত্তরের ঘাতক মুজাহিদ, ইসলামী জঙ্গী সংগঠনের খুনীদের সাথে। মুফতি হান্নান পরিষ্কার জানিয়ে দিয়েছে কারা কারা এই হত্যাপরিকল্পনায় ছিলেন-
দীর্ঘ ৯ বৎসর যাবত ২১ আগষ্টের গ্রেনেড হামলায় আহত শতাধিক আওয়ামী লীগ কর্মী-সমর্থক শতশত বিষাক্ত স্প্লিন্টার দেহে বহন করে অসহ্য যন্ত্রনা নিয়ে দূর্বিষহ দিন কাটাচ্ছেন। অনেকেই জীবনের তরে পঙ্গু হয়ে গেছেন। তারা বলছেন যারা মরে গেছে তারাই বেঁচে গেছে, মৃত্যু বেদনা নিয়ে এ বাঁচার চেয়ে মরাটাই শ্রেয় ছিল। অথচ ঘাতকদের অনেকেই আজও মুক্ত স্বাধীন জীবন যাপন করছে।
প্রশ্ন উঠেছে আওয়ামী লীগ কেন ৫ বছরেও এদের ধরে এনে বিচার করতে পারলোনা। পঁচাত্তরে যেমন জিয়া সরকার ইনডেমনিটি বিল পাস করে ঘাতকদের বিচারের পথ রুদ্ধ করে দিয়েছিল ২০০৪ সালেও ক্ষমতাসীন বি এন পি-জামাত জোট সরকার বিচারের সকল পথ বন্ধ করার যাবতীয় বন্দোবস্ত করে রেখেছিল। ২০০৮ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর থেকে বি এন পি-জামাত ও তাদের সমমনা ইসলামী দলগুলো জোট সরকারের ৫ বছরের সকল দুষ্কর্ম-অপকর্ম, হত্যাকান্ডের বিচার যাতে না হয় সেই লক্ষ্যে ক্ষমতাসীন বর্তমান আওয়ামী লীগের গোটা শাসনামল জুড়ে সরকারকে অস্থির করে তুলতে সচেষ্ট ছিল অব্যাহত হরতাল সন্ত্রাস, ধ্বংসের মাধ্যমে। যদিও জানি ঘাতকদের বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করাতে আওয়ামী লীগ সরকার যতটুকু করেছে অন্য কেউ সেইটুকুও কোনদিন করতোনা তবু তা ভিক্টিমদের, সান্তনা দিতে পারবেনা। মহান মুক্তিযুদ্ধের আদর্শ-চেতনা বাঁচিয়ে রাখার লক্ষ্যে, অসাম্প্রদায়ীক বাংলাদেশ, সুষ্ট গনতন্ত্র প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে মানবতা বিরোধী এ হত্যাজজ্ঞের বিচার অবশ্যই হতে হবে। বছর ঘুরে আগষ্ট আসলেই মনটা আতংকিত হয়, বুকটা ভয়ে ধুরুধুরু করে, ১৫ আগষ্ট, ১৭ আগষ্ট, ২১ আগষ্ট দেখেছি, না জানি এই আগষ্টে কী হয়। এই দিনগুলোর ইতিহাস জানার ও আমাদের নতুন প্রজন্মকে জানানোর প্রয়োজন আছে, দেশের স্বার্থে, জাতির স্বার্থে মানবতার স্বার্থে।
বাংলার ইতিহাসের অন্যান্য কলঙ্কময় দিবসের মতো 21 শে আগষ্টও একটি কলঙ্কময় দিন। এই দিনে যারা আহত এবং নিহত হয়েছেন তাদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানাই। আর এই অমানবিক হত্যাকান্ড যারা ঘটিয়েছিলো তাদের সকলের বিচারের দাবি জানাচ্ছি।
লেখাটির জন্য ধন্যবাদ জানাই আকাশ মালিক ভাইকে।
আকাশ মালিক ভাই,
যেভাবে একটা ধারাবাহিক রাজনৈতিক চিত্র তুলে ধরেছেন, অতুলনীয়! তবে যারা বিতর্ক তারা করবেই। এতো কিছু জানার পরেও যখন দেখি সেই সব অপঘাতকদের এদেশের মানুষ নেতা হিসেবে দেখতে চায় তখন ওদের জন্যে খুব করুনা বোধ করি! কিন্তু শংকিত হই এদেশের মানুষের জন্যে। কতোটা হতাশা আর নিরাপত্তাশীনতার মধ্যে ওরা থাকতে চায় আর আকাশ ছোঁয়া আশা করে! এই যে বৈপরীত্য এটি আসলেই বেদনা দায়ক। আমি প্রথম আলোর সংবাদ গুলোর মন্তব্য গুলোতে মাঝে মাঝে চোখ বুলাই। খুব অবাক লাগে এদেশের মানুষের চেতনা আর চিন্তার দৌড় দেখে!
@কেশব অধিকারী,
আগামী দিনের বাংলাদেশ-
[img]http://i1088.photobucket.com/albums/i332/malik1956/hefajot_zps708ff8e7.jpg[/img] [img]http://i1088.photobucket.com/albums/i332/malik1956/download_zps7e03a43d.jpg[/img][img]http://i1088.photobucket.com/albums/i332/malik1956/islam_taleban_beat_women_zps5901d147.jpg[/img]
@আকাশ মালিক, 🙁 হইতেও পারে। তবে যেন না হয় এই কামনা করি। বুঝেনইতো অসহায়ের একমাত্র কামই হল দোয়া দরুদ পড়া। তবে মনে হয় না দোয়া দরুদে কাজ হবে। 🙁
@আকাশ মালিক,
আরও আছে আগামীতে ৬৩ জেলার সফল বোমা হামলার মোহড়ার পর ৫০৭ উপজেলায় সফল মোহড়া অনুষ্ঠিত হবে। দেখার জন্য মানসিক প্রস্তুতি নিন…
সাথে সাথে নির্বাচন পরবর্তী প্রশাসনিক শুন্যতার সময় হাজার হাজার লাশের মিছিল (যদি বিএনপি-হেফাজত-জামাত ক্ষমতায় আসে…); ইতিমধ্যে তারা ঘোষণা করে বসে আছে আগামীতে ক্ষমতায় আসলে বাংলাদেশের ইতিহাস নতুন করে লিখতে হবে!!
অনেক সুশীল এখনো জানে না কারা ২১ আগষ্ট ঘটিয়েছিল! তারেক জিয়া আর ইসলামী জঙ্গিরা এক মত হতে পেরেছিল ২১ আগষ্ট ঘটানোর জন্য কারণ তাদের সবার পথই নিষ্কন্টক হতে পারে এই ঘটনায়। বিএনপির জন্য আওয়ামী লীগ নামের দলটি এক বড় বাধা। এই দলটি কোনভাবে নৃত্রত্বশূন্য হয়ে গেলে ভোটের দৌড়ে তার প্রতিদ্বন্দিতা আর কেউ থাকে না। অন্যদিকে ইসলামী জঙ্গিদের জন্য সবচেয়ে বড় বাঁধা মুক্তিযুদ্ধের চেতনা। তাদের কাঙ্খিত খেলাফতের জন্য তারা এই মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে গর্ব করা মানুষদেরকে বড় বাধা মনে করে। আওয়ামী লীগ ভোটের রাজনীতিতে দৌড়ে এগিয়ে থাকার জন্য নানাভাবে নিজেকে আদর্শচুত্যু করেছে। তবু তারাই এদেশের মুক্তিযুদ্ধকে এখনো লালন করে। বারবার জঙ্গি হামলা এই দলের নেতাকর্মীদের উপর এই সত্যটাই প্রতিষ্ঠিত করে। যারা দ্বিমত করবেন এই বিষয়ে তারা কি বলবেন কেন ২১ আগষ্ট ঘটেছিল? কেন গোপালগঞ্জে শেখ হাসিনার জনসভার সামনে মনকে মন বোমা পুতে রেখেছিল মুফতি হান্নান?
আকাশ মালিক, নানা রকম কটুক্তি, ট্যাগ গায়ে বসানোর মত রিস্ক থাকা সত্ত্বেও এই লেখাটি লেখার জন্য আপনাকে অশেষ ধন্যবাদ। আগে মনে করতাম, “মুক্তিযুদ্ধের চেতনা” নাম শুনলে জামাত শিবির কুলাঙ্গারদেরই শুধু গায়ে চুলকানি লাগে। কিন্তু এখন জানি, অনেক প্রগতিশীল সুশীল নিরপেক্ষবাদীরও এই চুলকানি রোগ আছে। কাজেই প্রস্তুত হোন। লেখাটির জন্য আবার ধন্যবাদ আপনাকে।
@সুষুপ্ত পাঠক,
আরেয় ভাই, এরা কি সুশীল নাকি? এরা হল সুশিলের ভংধারী প্রতিক্রিয়াশীল।চিন্তা করবেন না, এদের কে দেরিতে হলেও জনতা চিনতে পারবে। 🙂
আওয়ামীলীগ নেত্রী হিসেবে নয়, বিরোধী দলের নেত্রী হিসেবেও নয়, বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধান মন্ত্রী হিসেবেও নয়, শেখ মজিবের মেয়ে হিসেবেও নয়, আমি ২১ আগষ্ট খবরটি শুনে ও টিভিতে দেখে ঐদিন হতভম্ব হয়ে গিয়েছিলাম একটা সমাবেশে, এতগুলো মানুষকে লক্ষ্য করে কি করে কোন মানুষ এমন আক্রমণ চালায়!এটা একমাত্র ৭১ সালের আক্রমণকারীদের উত্তরসূরীরাই করতে পারে।
@গীতা দাস,
সেটাই দিদি। আর তারা ঘিরে আছে আমাদেরকে চতুর্দিক থেকে, বেঁচে আছে আমাদের সাথে মিলে মিশে নিশ্চিন্তে নিরাপদে।
@আকাশ মালিক,
আপনি ভালো আছেন? লেখা পড়িনি। না পড়ে আপনাকে জিজ্ঞাস করছি। পারলে ফেবু তে উকি দিয়েন।
ধন্যবাদ সংবাদিকাকে ,সুন্দর একটি মন্তব্য করার জন্য|আমিও এর সাথে পুরোপুরি একমত -আমরা সবাই চাই গ্রেনেড হামলাকারীদের উপযুক্ত বিচার হোক|
এটা হল আমাদের আইনের শাসনের দুঃখ জনক উদাহরণ। সাবেক রাষ্ট্রপতি হয়ত নৈতিক ভিত্তি হারিয়েছিলেন কিন্তু সবাই হারায়নি। আমরা চাই ২১ শে আগস্টের বর্বরোচিত গ্রেনেড হামলার বিচার যেন উপযুক্ত ভাবে হয় এবং সকল দোষী ব্যক্তি যেন যথোপযুক্ত শাস্তি পায়।
আমি হলফ করে বলতে পারি – এই পাঁচ বছরেও এই মামলার সুরাহা হয়নি কেবল এবং কেবল মাত্র এর থেকে কোন রাজনৈতিক ফায়দা নেওয়া যাবেনা এজন্য!! রাজনৈতিক ক্ষমতা যেকোনো কিছুর চেয়ে আকর্ষণীয়। এর জন্য অনেকে নিজের বিবেককেও বিক্রি করে দিতে পারে।
@সংবাদিকা,
আসলে ‘৯১ পরবর্তী শাসন ব্যবস্থায় মনে হয় না রাষ্ট্রপতির কোন রকম ভুমিকা আছে।উনাকে জা করানো হবে উনি তাই করতে বাধ্য থাকবেন তাই নয় কি? আপনার কি মনে হয়?
@অর্ফিউস,
আর কিছু না পারুক – বিবেক কে বিক্রি না করে পদত্যাগ করতে তো পারবেন…
@সংবাদিকা,
তাতে কিবা আসবে যাবে বলেন?আরেকজন আসবেন এবং সেই একই কথা। তারচেয়ে তিনি দলের প্রতি বিশ্বস্ত থেকেছেন। জানি এর প্রেক্ষিতেও আপনার ন্যায্য জবাব আছে, আমি নিজেও জানি যে সেটা কি।তবে দেশের যে রাজনৈতিক কালচার তাতে এতোটা আশা করা ঠিক নয়।
তবে মনে হয় দেশে প্রেসিন্ডসিয়াল ফর্ম চালু হলে ভাল হয়।সেক্ষেত্রে দুই নেত্রী পালাক্রমে প্রেসিডেন্ট হবেন, আর বিবেক বিক্রির সঙ্কটে কাউকে পড়তে হবে না।
নীচের কথাগুলো সবার কাছে চরম সুশীল শোনাবে। ২১ শে আগস্ট এর উপলক্ষ্যে অন্য একটি ব্লগে আমি এই লেখাটি দিয়েছি।
বাংলায় একটা কথা প্রচলিত আছে যে কাক কখনো কাকের মাংস খায় না। ইংরেজীতেও এরকম একটি প্রচলিত কথা আছে Honor among thieves। এই দুটো কথারই একই রকম তাৎপর্য। সবচেয়ে অনৈতিক সামাজিক পরিমন্ডলের মধ্যেও কিছু নুন্যতম নিয়ম থাকতে হয় যা কেউ ভংগ করবে না। কারন এই নিয়মগুলোও না মানলে সেই জগৎ দ্রুত ভেংগে পড়ে সবাইকেই বিলুপ্ত করে ফেলবে।
সবাই মোটামুটি জানে যে পন্চাশ, ষাট আর সত্তর দশকে আমেরিকার সিআইএ শীতল যুদ্ধের অজুহাতে সারা দুনিয়া কিরকম দাবড়ে বেড়িয়েছে। বিশ্বজুড়ে একের পর এক ক্যু, হত্যা, প্রতি বিপ্লব প্ল্যানিং থেকে শুরু করে সবরকমের সহায়তা দিয়েছে। আমেরিকার ভিতরেই ধীরে ধীরে সিআইএ’র এই অবাধ গ্যাংস্টারিজমের বিরুদ্ধে তীব্র জনমত গড়ে ওঠে। জনমতের চাপে ১৯৭৫ সালের নভেম্বরে সেনেটর ফ্র্যাংক চার্চের নেতৃত্ব একটি বিশেষ সিলেক্ট কমিটি গঠিত হয় বিভিন্ন অভিযোগগুলি তদন্ত করার জন্যে ও সরকারকে পলিসি সাজেশন দেয়ার জন্যে। চার্চ কমিটি ৬০ দিন ধরে শুনানী ও ৮০০০ পাতার জবানবন্দী নেয় অজস্র সরকারী কর্মচারী ও সাধারন মানুষদের মধ্য থেকে। তার পরে কমিটি সাড়ে তিনশ পাতার একটি রিপোর্ট দেয়।
রিপোর্টে বিদেশী জাতীয় নেতাদের অ্যাসাসিনেশন প্রসংগে উল্লেখ করা হয় যে স্পষ্ট প্রমান পাওয়া গেছে যে সিআইএ দুই জন নেতাকে হত্যার চেষ্টায় সরাসরি জড়িত ছিলো, কংগোর প্যাট্রিস লুমুম্বা আর ফিডেল ক্যাস্ট্রো। এছাড়া ডমিনিকান রিপাবলিকের রাফায়েল ট্রুহিলো (Rafael Trujillo), দক্ষিন ভিয়েতনামের নো ডিং জিয়েম (Ngo Dihn Diem) আর চিলে’র রেনে স্নাইডার এর হত্যার সাথে পরোক্ষভাবে ইনভলভড ছিলো। চার্চ কমিটি তার রিপোর্টে বলে যে যুদ্ধের সময় ছাড়া এভাবে অন্য দেশের নেতৃত্ব হত্যার চেষ্টা আমেরিকান মূল্যবোধ আর আর্ন্তজাতিক ন্যায়নীতির একেবারে প্রতিপন্থী। সবচেয়ে বড়ো কথা এভাবে শান্তির সময়ে অন্য দেশের নেতাকে টার্গেট করলে দুনিয়াব্যাপী আমেরিকার নিজের কর্মচারী এবং স্বয়ং প্রেসিডেন্টই প্রতিশোধমূলক আক্রমনের শিকার হবে।
চার্চ কমিটির রিপোর্টের প্রেক্ষিতে ১৯৭৬ সালে প্রেসিডেন্ট ফোর্ড এক্সিকিউটিভ অর্ডার ১১৯০৫ জারী করেন যেখানে স্পষ্টভাবে বলা হয়, “No employee of the United States shall engage in, or conspire to engage in political assassination.” এর পরে অবশ্য এই আদেশের অনেক পরিবর্ধন, পরিমার্জন হয়। আমরা তো আজ দেখছিই যে আমেরিকা কেমন অবাধ ড্রোন হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। তবে এই আদেশের মূল নিয়মটি আর ভংগ করা হয় নি। ১৯৭৬ এর পরে আমেরিকা’র, কোন বিদেশী রাজনৈতিক নেতার গোপন হত্যাচেষ্টায় জড়িত থাকার কোন গ্রহনযোগ্য কথা ওঠে নি। ১৯৮৬ সালে রিগ্যানের সময়ে লিবিয়ায় গাদ্দাফীর বাসায় বিমান হামলা করা হয়েছিলো বটে কিন্তু সেটা ইউরোপের বিভিন্ন স্থানে বোমা সন্ত্রাসে লিবিয়ান গোয়েন্দা বাহিনীর সরাসরি সম্পৃক্ততার প্রমান পাওয়ার পরেই এবং সেটা গুপ্ত হামলাও ছিলো না।
আজ ২১ শে আগস্ট বাংলাদেশের রাজনীতির এক কালো দিবস। এই দিনে ২০০৪ সালে বাংলাদেশের প্রধান দুটি রাজনৈতিক ধারার একটির নেতৃত্বকে নির্মূল করার চেষ্টা হয়েছিলো। আমি জানি না এই ঘটনায় সরাসরি কারা জড়িত। নানা কারনেই বিভিন্ন রকম সরকারী তদন্তে সব সময়ে আস্থা রাখা যায় না। তবে একথা অস্বীকার করার কোন উপায় নেই যে ঘটনার পরে সেই সময়ের সরকার অত্যান্ত ন্যাক্কারজনক ভূমিকা পালনে করেছিলো। ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত তো করে নি ই। সেসময়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রনালয় ‘জজ মিয়া’ নামের আরেকটি চরম লজ্জা জনক ঘটনার সূত্রপাত করেছিলো চরম অপরাধটিকে চাপা দিতে। সেসময়ের সরকারে থাকা রাজনৈতিক দলের এটি উপলদ্ধি করা দরকার ছিলো যে তাদের নিজের স্বার্থেই বিরোধী নেতৃত্বের সুরক্ষা নিশ্চিত করা দরকার।
আগেই বলেছি যে সবচেয়ে অনৈতিক পরিমন্ডলেও কিছু নীতিমালা মানতে হয়, নাহলে কোন ইক্যুইলিব্রিয়াম সৃষ্টি হয় না এবং পুরোপুরি অরাজকতা পেয়ে বসে। আমাদের রাজনীতির বড়ো বড়ো প্রতিপক্ষদের বোঝা উচিৎ যে তাদের নিজেদের একান্ত স্বার্থেই কিছু নীতি কখনো ভংগ করা উচিৎ নয়। এর অন্যথা হলে খুন, গুম এর বিষাক্ত চক্র দিনে দিনে তাদেরকে গ্রাস করবে সাধারন জনগনের চেয়েও বেশী দ্রুতভাবে।
@সফিক,
বোল্ড করা বাক্যটির পরেও আগে পরের কথাগুলোর জন্যে – (Y) (Y) :clap :clap :clap :clap
@সফিক,
সেইটাতো ভাইজান অবশ্যই। সুশীলের কাছে আমরা অশীল কথা আশাও করি না। -:)
আমি কি স্বপ্ন দেখেতেসি নাকি জেগেই আছি, একটু পরীক্ষা করে নেই দাঁড়ান।
তবে বোল্ড করা কথাগুলির জন্য( স্বীকার অথবা উপলব্ধি করার জন্য) আপনাকে আন্তরিক ধন্যবাদ!!!
মর্মান্তিক ঘটনা । ২০০৪ সালের এই গ্রেনেড হামলার বিচারের এত শম্বুক গতি কেন সেটা অবশ্য বোধগোম্য ।অন্যদিকে ২০১২ সালে সৌদি দূতাবাস কর্মকর্তা খালাফ আল আলীর হত্যাকান্ডের বিচার এবং রায় কার্যকরের নিরিখে ডেথ রেফারেন্স শুনানী অগ্রাধিকার ভিত্তিতে করা হয়েছে সূ্ত্র। এই গ্রেনেড হামলার কয়েক মাস বাদে সাবেক অর্থমন্ত্রী কিবরিয়া সাহেবকে আরেক গ্রেনেড হামলায় সিলেটে হত্যা করা হয় ২০০৫ সালের ২৭শে জানুয়ারী মাসে। সেটার বিচার হলো না। প্রায় একই সময় সেসময়কার ব্রিটিশ হাই কম আনোয়ার সাহেব একই ধরনের হামলা থেকে অল্পের জন্য বেঁচে যান সিলেটে। বাংলাদেশের অনেক অন্তরালের নায়কদের সিলেট কানেকশন আছে। ২০০৪ সালের সেনা প্রধান হাসান মশহুদ , ডিজিএফআই – এর ব্রিগেডিয়ার বারী , তারেক রহমান , আসমী উলফা , শীর্ষ মুফতী গন এবং আরও অনেকে যাদের নাম নেয়া মানা ! যারা বাস্তব জীবনের রোমাঞ্চ ভালবাসেন এবং সেটা খুঁজে নেয়ার মত চোখ আছে তাদের উচিৎ সিলেটে কিছুদিন কাটিয়ে আসা।
বাংলাদেশে সব কিছুই যে আওয়ামী এবং বি এন পি র ইশারায় চলে এমন ভাবাটা ভুল। সব বড় ঘটনার পেছনে আওয়ামী -বিএনপি-জামাতের অদৃশ্য হাত দেখার চেষ্টাও ভুল। এ সবই অর্বাচীনের অতি সরলীকরণ। বিদেশী কেউ নয় ! দেশেই তাদের চাইতেও বহুগুনে শক্তিধর স্বদেশী মহল আছে যাদের নাম নেয়া যায় না এবং কেউ নেয় না । ভাসুরের নাম নাকি নেয়া মানা ! আমাদের মুক্তমনায় যারা দিন রাত নাম ধরে আল্লাহ- মুহাম্মাদ -মুজিব-জিয়ার কল্লাপাত করেন , তারাও পারবেন না এই মহলের কারও নাম ধরে কল্লাপাত করতে । ইলিয়াসের মত ডাকসাইটে কোটিপতি হাজার ক্যাডারের নেতা পর্যন্ত হাওয়ায় মিলিয়ে গেছে।
@সংশপ্তক ভাই,
হায় খোদা, মনে হয় বুঝে গেছি যে আপনি কাদের কথা বলছেন। 🙁 মনে এদের কথাই বলছেন। যদি সেইটাই হয় তবে আমি আর কিছু বলতে চাই না। মানে কিছু বলি নাই আর কি।
@সংশপ্তক,
অশরীরি কোন জীন-ভুত না তো?
ডরাইলাম ভাই কারণ জন্মই সিলেট। ভাসুরের একটু নাম-পরিচয় ঠায় ঠিকানা বলেন।
লেখাটি পড়ে মন্তব্য করার জন্যে ধন্যবাদ।
@আকাশ মালিক,
আমারও ধারণা সেটাই। এত গুলি মানুষের মানুষের মৃত্যু , গ্রেনেডের শব্দে শেখ হাসিনার নিজের কর্ণযুগল ক্ষতিগ্রস্থ হওয়ার পরেও মামলার অগ্রগতি নেই। সাধারণ ফৌজদারী মামলার আসামীর তালিকায় কয়েকজন সেনা অফিসারের নাম কেন ? তাদের তো কোর্ট মার্শাল হওয়ার কথা সেনা আইন , ১৯৫২ মোতাবেক যার উপসংহারের জন্য কয়েক মাস বড়জোড় লাগার কথা ? অবশ্য সেদিক থেকে দেখলে , যুদ্ধপরাধীদের সেনা আইনে সামরিক বিচারালয়ে বিচার হওয়ার কথা ছিল যুদ্ধের পরপরই। সে সুযোগ এখনও আছে যদিও। কিন্তু সেটা না করে নপুংসক এক আইনে বিচার চলছে । কাদের খুশী রাখতে ? কর্নেল ফারুক-রশিদের বিচার আইনানুযায়ী সেনা আইন , ১৯৫২ মোতাবেক হলে ১৯৭৫ সালেই তাদের ফায়ারিং স্কোয়াডে যেতে হত , অথবা ফাঁসী। কিন্তু তা হয় নি। শেষমেষ, ২০০৯ সালে জেনারেল মঈনকে এর ব্যবস্থা করতে হয়েছে যেহেতু ১৯৯৬ – ২০০১ ক্ষমতায় থেকেও হাসিনা ফারুক রশিদকে ফাঁসিতে ঝোলাতে পারেন নি।
খালেদা জিয়া তার আপন স্বামীর হত্যার বিচার করতে পারেন নি। উনার কথা থাক , দূর্মুখের ভাষায় ২০০১-২০০৬ এর সময়কার সমান্তরাল সরকারী দপ্তর হাওয়া ভবনের এক সময়ের একছত্র অধিপতি তারেকও তার বাবার হত্যার বিচার করতে চায় নি। অগত্যা , এখন কোমর সোজা করে হাটতে পারে না , ১-১১ – এর সময় গুলশানের ব্লাকহোলে কিছুদিন নানাবিধ থেরাপী পাওয়ার পর। আপনারা হয়তো বলবেন , কেন ? এর বিচার তো জেনারেল এরশাদই করে দিয়েছেন সেনা আইনে এক গাদা মুক্তিযোদ্ধা অফিসারকে জিয়ার হত্যার কয়েক মাসের মধ্যেই ১৯৮১ সালেই কোর্ট মার্শালের মাধ্যমে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে !! তাহলে একই অপরাধে কর্নেল ফারুক – রশিদের কেন কোর্ট মার্শাল হয় নি? এটা একটা নীতিগত প্রশ্ন।এই সবকিছু সোলাইমানী যাদুর বলেই ঘটছে ! শিশি থেকে যে জ্বীন একবার বের হয়েছে তাকে শিশির ভেতর ফের কে ঢুকাবে ?
১৯৭১ সালে পাকিস্তান সেনা বাহিনী – রাজাকার -আল বদর যে অপরাধ করছে তা সেনা আইন ১৯৫২ মোতাবেক বিচারযোগ্য। ১৯৭৫ সালের বঙ্গবন্ধু হত্যা , ১৯৮১ সালের জিয়া হত্যা এবং বিশেষ করে ২০০৪ সালের ২১ শে অগাস্ট গ্রেনেড হামলাও তাই। বিবেক বিক্রি করা সাংবাদিকেরা এগুলো লিখবে না। কথিত বাকশালের চার সংবাদ পত্রের কথা তারা বলে , কিন্তু জিয়া-এরশাদের গনতন্ত্রের সময় -এমনকি এখনও তারা কিছুই করতে পারেনি , পেটের দায়ে , জানের ভয়ে কিংবা লোভে। অকাট্য প্রমানছাড়া কিছু সরকারী লোকের দূর্নীতির কথা লেখার অর্থ অনুসন্ধানী সাংবাদিকতা নয় , গনতন্ত্র নয় । ঠোঁটকাটা লোকেরা বলে যে ‘চাঁদার পয়সা’ না দিলে খবরের কাগজে গাদা গাদা দূর্নীতির প্রতিবেদন আসে। এদের দিয়ে হবে না। আপনারা পারবেন , আপনারা লিখুন।
কি দরকার সিলেটে যাওয়ার ? এখন যেখানে আছেন ভালই আছেন। ধন্যবাদ।
@সংশপ্তক,
আপনার সবগুলো কথার সাথে একমত। কোন একদিন হয়তো সুদিন আসতেও পারে সেই আশায়ই এই লেখালখি। সে দেশটাকে যে বড় ভালবাসি, যে দেশের মাটিতে নাড়ি পুতা। ছয় বছর আগে দেশে ছিলাম। শায়েখ আব্দুর রহমান যে দিন ধরা খায় সেদিন আমি সিলেট। ঘুরে দেখলাম তার ভাড়াটিয়া বাসা, গুলশান হোটেল যেখানে বদরুদ্দিন কামালের উপর বোমা মারা হয়, শাহজালালের মাজারের সেই জায়গাটার ভিডিও করলাম যেখানে বৃটিশ হাই কমিশনারকে হত্যার লক্ষ্যে বোমা মারা হয়। শহর থেকে গ্রাম ঘুরে দেখেছি আর মনে মনে বারবার বলেছি এ আমার দেশ নয় এ দেশ আমরা চাইনি। এখন কতটুকু পরিবর্তন হয়েছে জানিনা, কিন্তু নাড়ির টানে, মাটির টানে, আপনজনের টানে মাঝে মাঝে যেতেই হবে হয়তো যতদিন বেঁচে আছি।
আওয়ামী লীগের মাথা মোটা বলদেরা তাদের ভুলগুলো এখনও ধরতে পারে নাই। ৭৫এর ১৫ আগষ্ট থেকে ও ২০০৪ এর ২১ আগষ্ট থেকে কোন শিক্ষা নিয়েছে বলে মনে হয়না।
@আকাশ মালিক,
আওয়ামী সমর্থকরাও কম যায় না।অনেকেই এইযে লীগের ধর্মপ্রেমে আর ধর্মীয় দলের সাথে জোট করায় খুশি হইসে।ব্যাপারটা শুভ লক্ষন না রে ভাই।
@আকাশ মালিক,
নাড়ি তো আমারো বাংলাদেশেই পোঁতা ভাইরে, আর আছিও এই দেশেই।আমি আপনার জায়গায় হলে আসতামই না।আগে নিজের জান, পরে আপনজন। নিজে বাঁচলে বাপের নাম। কথাটা খারাপ শুনায়, কিন্তু এ ছাড়া আর কি করনীয় আছে? নিচে যে ভবিষ্যৎ বাংলাদেশের চিত্র দেখাইলেন এইটা হইলে তো নাড়ির পাশাপাশি আমাদেরও পোঁতা হবে মাটির নিচে।
@সংশপ্তক,
ভাই আপনার মন্তব্য পুরাটাই দারুন হয়েছে।পুরা একমত আমি।আর দেখেন quote এর বোল্ড করা অংশ। এইটা আমিও শুনেছি।
আমি এক সাংবাদিকের কথা জানি জিনি নাকি ৫০০০০ টাকার কম বেতন পেয়েও ঢাকায় বিশাল বাড়ি করেছেন।গাড়িও আছে।
সেই রক্ত ঝরানো ২১ আগষ্ট আমরা কিভাবে ভুলব ? আমরা ভুলি নাই।
দেশবাসী কি এত তাড়াতাড়িই ভুলে গেছে তারেক/বাবর গ্যাং এর সেই নারকীয় হত্যাকান্ডের কথা ???
আকাশ মালিক ভাই, ভাল লিখেছেন । (Y)
@তারিক,
এই দিনগুলোর ইতিহাস আমাদের নতুন প্রজন্মকে জানিয়ে দিন, দেশের স্বার্থে, জাতির স্বার্থে মানবতার স্বার্থে, যেন এমন দিন তাদেরকে কোনদিন দেখতে না হয়।
@তারিক,
আমার তো মনে হয় ভুলেই গেছে!
ধন্যবাদ আকাশ মালিক সুন্দর একটি লেখা উপহার দেয়ার জন্য। শুভেচ্ছা নিন ভাই (F)
এক নিঃশ্বাসে পড়ে ফেললাম।
শুধু এই হরতাল নিয়েই একটা আপত্তি আছে আমার। হরতালে লীগও কম যায় না সেটা যে কারনেই হোক না কেন।কাজেই এইটা নিয়ে একটু সাবধান থাকা ভাল।
বি.দ্র. একটা কথা, এই লেখা দেখে কিন্তু অনেকের চুলকানী শুরু হয়ে যাবে, কাজেই নিজের বর্মটি আশা করি ঠিক মত পরে নিয়েছেন।তীর ঠেকাতে ঢালের পাশাপাশি বর্মও দরকার আছে। আর তাছাড়া এই ব্লগে একজন সর্ব বিষয়ে পণ্ডিত ক্যাভালরী আর্চার আছেন যিনি কিনা বি এন পির সব কিছুতেই ফুলের গন্ধ পান। কাজেই এই ক্যাভালরী আর্চারের বিরুদ্ধে ভাল ব্যাবস্থা নিয়ে রেখেছেন তো?না হলে কিন্তু আপনার খবর আছে। :p
@অর্ফিউস,
আওয়ামী লীগের গা থেকে যে ঢাল যে পরিধান খুলে নেয়ার জন্যে ঘাতকেরা এত মরিয়া হয়ে উঠে, আওয়ামী লীগ নিজেই যদি তা খুলে ফেলতে উদ্যত হয় তাহলে আক্ষেপ ছাড়া আমাদের কীইবা করার আছে?
নাহ, সেদিকে আর যাওয়ার দরকার নাইন। কাদা ছোঁড়াছুঁড়িতে লেখক আসবেনা আর লেখা যদি না আসে ব্লগ বাঁচবেনা সোজা হিসাব। কেউ যদি ব্যক্তিআক্রমনে উদ্যোগী হন, আমি অবজ্ঞা করার চেষ্টা করবো, অন্যতায় ব্লগের ক্ষতি হবে। লেখাটি পড়ে ভাল লেগেছে জেনে এবং মন্তব্য করার জন্যে আপনাকে ধন্যবাদ।
@আকাশ মালিক,
ধন্যবাদ এ সুন্দর লেখাটির জন্য।
আর অনেক কিছু বাদই দিলাম, ইতিহাসের জঘণ্যতম এই একটি মাত্র কাজের জন্য বিএনপির কখনোই ক্ষমতায় আসা উচিত নয়। আর এর পেছনের নায়কদের অন্যতম তারেক-বাবর-হারিছ-পিন্টুদের আজীবন জেলে থাকা উচিত। উচিত তো অনেক কিছুই কিন্তু বাংলাদেশে “উচিত”গুলো বাস্তবায়ন হতে অনেক দিন লেগে যায়। কিন্তু আশাহত হওয়ার কোন কারণ নেই, বংগবন্ধু হত্যার বিচার দেরীতে হলেও হয়েছে। তারেক-বাবর-হারিছ-পিন্টুদের বিচারও একদিন হবেই। হয়ত আজ নয়, হয়ত কালও নয়; কিন্তু পরশু তো অবশ্যই। জয় বাংলা।
@ভজন সরকার,
আপনাদের মত দেশপ্রেমিক আছেন বলেই এখনও আশাহত হইনা। জয় বাংলা।