অবশেষে মাননীয় আদালত স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে শুরু করে নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়, গোয়েন্দা পুলিশ এবং তদন্তকারী কর্মকর্তাদের কাছে আমার হত্যা-চেষ্টার তদন্তের ফলাফল নিজ উদ্যোগেই জানতে চেয়েছেন এবং নর্থসাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপরে একটি রুল জারি করেছেন। মাননীয় আদালতকে এজন্য অসংখ্য ধন্যবাদ, সরকারের বিরুদ্ধে নানা আন্দোলনের কারণে সরকার বাহাদুর সম্ভবত আমার উপরে ভাল পরিমাণই বিরাগভাজন হয়েছে, এবং তারা যা পরিকল্পিতভাবেই ধামাচাপা দিতে চেয়েছিল, মাননীয় আদালত তা জানতে নিজেই সরকারকে তলব করেছেন।
যেহেতু আওয়ামী ঘরানার মানুষ নই, কট্টর আওয়ামী পন্থী ব্লগারদের অনলাইন জোটের অন্যতম চক্ষুশূল বলেই আমি পরিচিত, তাই আমাকে হত্যার চেষ্টার সময় সরকার থেকে কোন ধরণের সহযোগিতা আমি পাই নি, এমনকি আমার মামলাটি তারা আমলেই নেন নি। কিছু সূত্র থেকে জানতে পেরেছি, আমার উপরে বর্বর আক্রমণের পরে কয়েকজন আওয়ামী পন্থী ব্লগার অনলাইনে উল্লাস প্রকাশ করেছে জামাত শিবির-হিজবুত তাহরীরের পাশাপাশি। আমি জানি না তারা কী পদার্থে তৈরি, কিন্তু একজন মানুষকে হত্যার বর্বর চেষ্টার সময় অন্য একজন মানুষ, তাদের মধ্যে যতই মতবিরোধ থাকুক, তারা কীভাবে উল্লাস করে!
অসুস্থ অবস্থায় বারবার আমি বলেছি, আমার উপরে এই হামলার পিছনে ধর্মান্ধ মৌলবাদী গোষ্ঠী রয়েছে, তখন আমার কথা তারা মোটেও আমলে নেন নি। এমনকি প্রচার মাধ্যমকেও নির্দেশ দেয়া হয়েছিল আমার উপরে হত্যার উদ্দেশ্যে আক্রমণকে যেন গুরুত্ব সহকারে না ছাপানো হয়।
না, তাদের প্রতি আমার কোন বিদ্বেষ, কোন ঘৃণা, কোন প্রতিশোধ স্পৃহা নেই। তারা তাদের কাজটিই করেছে, তারা তাদের পন্থাতেই তাদের পরিচয় জানিয়ে গেছে। তারা আমাকে পিছন থেকে একের পর এক চাপাতি এবং ছুরি দিয়ে ক্রমাগত কুপিয়ে গেছে, আমাকে বর্বরের মত হত্যা করতে চেয়েছে, এবং অবশেষে আমাকে রক্তাক্ত করে, ক্ষতবিক্ষত করে চোরের মত দৌড়ে পালিয়ে গেছে। হামলার ধরণ দেখে বেশ বোঝা যাচ্ছিল, তারা আমার গলাটি শরীর থেকে আলাদা করে ফেলতে প্রাণান্ত চেষ্টা করেছিল। তারা জানত না তারা কী করছে, তারা জানে না তারা কী করেছে। ধর্ম-জাতীয়তাবাদ-রাজনৈতিক মতাদর্শগত দ্বন্দ্ব মানুষের মানসিকতা এমন ভাবে আচ্ছন্ন করে ফেলে, মানুষের মানসিকতা এমন ভাবে দখল করে ফেলে যে, তারা আর যৌক্তিক চিন্তাভাবনার মাঝে বসবাস করে না। তাদের কেউ হয়ত কোন মাদ্রাসার ছাত্র, অথবা শীর্ষস্থানীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের মেধাবী ছাত্র-যারা তাদের প্রাচীন কুসংস্কার থেকে একটুও বের হতে পারে নি। যাদের ছোট বেলা থেকেই শেখানো হয়েছে বিধর্মী-নিধর্মী-মুক্তমনা-মুক্তচিন্তার মানুষ মাত্রই ঘৃণ্য, তাদের হত্যা করাটাই পৃথিবী এবং তাদের ঈশ্বরের কাজ করা। তাদের ধর্মগুরু বা রাজনৈতিক গুরু হয়ত তাদের নির্দেশ দিয়েছে এই কাজটি করতে, তারা অনুগত ভৃত্যের মত নিজের বিবেক এবং মস্তিষ্ক না খাটিয়েই কাজটি করেছে।
সাধারণত লেখার কারণে চোরাগোপ্তা আক্রমণ, হত্যার চেষ্টা তখনই করা হয়, যখন তারা আর আলোচনা বা যুক্তিতর্কের মাধ্যমে কোন মতবাদ প্রতিষ্ঠিত করতে পারে না। শেষ অস্ত্র হিসেবে তারা ব্যবহার করে চাপাতি এবং বোমা, হত্যা করে মুখ বন্ধ করে দিতে চায় সবসময়। তারা জানে না যে, ভয়ভীতি প্রদর্শণ করে শ্রদ্ধা ভক্তি অর্জন করা যায় না, অর্জন করা যায় ঘৃণা এবং ভীতি। আমার লেখা হয়ত তাদের ধর্মগুরু বা রাজনৈতিক গুরু বা পীর সাহেবদের পছন্দ হয় নি। কারো সব লেখা যদি সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের পছন্দ হওয়া শুরু করে, তবে অবশ্যই ধরে নিতে হবে লেখকটির মত চরিত্রহীন এবং ভণ্ড আর দ্বিতীয়টি নেই। একজন চিন্তাশীল মানুষ যখন পাঠকের ইচ্ছা এবং সুবিধা অনুসারে লিখবে, পাঠক যেভাবে চায়, যেমন করে চায় সেভাবে নিজেকে তৈরি করবে, তখন সে আর মননশীল থাকে না, হয়ে পরে নিকৃষ্টমানের বুদ্ধিবেশ্যা- যে নিজেকে নানা রঙে রাঙিয়ে পাঠকের মন জয় করতে আগ্রহী, পাঠককে সুড়সুড়ি দিতে আগ্রহী। তাদের নাড়া দিতে, পাঠকের চেতনার ভিত্তিমূল কাঁপিয়ে দিয়ে নতুন মননশীলতা সৃষ্টি বা চিন্তার জগতকে নতুন আলো দেখাবার ব্যাপারে তাদের কোন উৎসাহ নেই। কারো যদি আমার লেখা পছন্দ না হয়ে থাকে, তবে খুব সহজেই আমার লেখা এড়িয়ে চলা যায়। আমার লেখা কারো ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করতে পারে, আমার লেখা কারো জামাতানুভূতিতে আঘাত করতে পারে, আমার লেখা কারো আওয়ামীয়ানুভূতিতে আঘাত করতে পারে, আমার লেখা কারো ভগবানানুভূতিতে আঘাত করতে পারে, আমার লেখা কারো মুহাম্মাদানুভূতিতে আঘাত করতে পারে, আমার লেখা কারো আল্লানুভূতিতে আঘাত করতে পারে, আমার লেখা কারো সেনাবাহিনীয়ানুভূতিতে আঘাত করতে পারে, আমার লেখা কারো জাতীয়তাবাদানুভূতিতে আঘাত করতে পারে, আমার লেখা কারো সরকারানুভূতিতে আঘাত করতে পারে, আমার লেখা কারো মুজিবানুভূতিতে আঘাত করতে পারে, আমার লেখা কারো জিয়ানুভূতিতে আঘাত করতে পারে, এরকম লক্ষ লক্ষ অনুভূতিতে আমার লেখা আঘাত করতে পারে। আমি জনগণের এই সমস্ত নানাবিধ অনুভূতির রক্ষণাবেক্ষণের দায় নিই নি, যারা তাদের এই সকল অনুভূতি অক্ষত রাখতে চাইবেন, তারা নির্দ্বিধায় আমার লেখা এড়িয়ে চলে যাবেন, কাউকে আমি আমার লেখা পড়তে বাধ্য করি নি। আমার বাক-স্বাধীনতার ব্যবহার আমি করে যাবো, আমার কথা আমি বলে যাবো। সময় নির্ধারণ করবে আমি সঠিক ছিলাম নাকি তারা, সময় নির্ধারণ করবে আমি কতটা সফলতার সাথে ব্যর্থ হয়েছিলাম, সময় নির্ধারণ করবে আমি সময়ের চাইতে কতটা অগ্রসর ছিলাম নাকি ছিলাম পশ্চাৎপদ।
সেদিন রিকশায় করে অফিসের গেইটের সামনে আসতেই দেখলাম একটু দূরে অন্ধকারে তিনজন বা দুইজন ছেলে গেইটের সামনেই দাঁড়িয়ে আছে। ঐ বিল্ডিং এর কেউ হবে ভেবে আমি তাকালাম না, নেমে রিকশা ভাড়া ২০ টাকা এগিয়ে দিয়ে বললাম, পাঁচ টাকা ফেরত দেন। সাথে সাথেই মাথার পেছনে চাপাতির বাট অথবা অন্য কোন ভারী জিনিস দিয়ে আঘাত করা হল। এক সেকেন্ড মাথাটা ঝিম হয়ে গেল, কিছুই চিন্তা করতে পারছি না। এর মধ্যে আমার মাথাটিকে বগলের মধ্যে নিয়ে একজন আমাকে চেপে ধরলো, আরেকজন পিছন থেকে কোপানো শুরু করে দিল। পিঠে, ঘাড়ে এবং গলায় তখন কোপানোর আঘাত একের পর এক এসে লাগছে। তবে খুব ভালভাবে টের পাওয়া যাচ্ছে না, মাথার যন্ত্রণায় পিছনে কোপানোর ব্যথাগুলো বেশি লাগছিল না। শুধু বুঝতে পারছিলাম পিছনে মারাত্মক কিছু ঘটে যাচ্ছে। চশমাটা প্রথম আঘাতের সময়ই চোখ থেকে পরে গিয়েছিল। গায়ে ভারী এবং মোটা একটা জ্যাকেট ছিল, টের পাচ্ছিলাম আমার পিঠের উপরে কেউ প্রায় চড়ে বসেছে, এবং খুব প্রফেশনাল ভঙ্গিতে কুপিয়ে যাচ্ছে। প্রফেশনাল ভঙ্গি বললাম এই কারণে যে, পুরো সময়ে তারা মুখ থেকে টু শব্দটিও বের করেনি। সাধারণ আক্রমণকারী বা উত্তেজনার বশে যারা আক্রমণ করতে আসে, তারা আক্রমণের সময় গালি দেয়, মুখ দিয়ে নানা ধরণের আওয়াজ করে। এটা আক্রমণের স্বাভাবিক আচরণ। কিন্তু তারা পুরোটা সময় মুখ দিয়ে একটা শব্দও বের করে নি, যা থেকে বোঝা যায় তারা এই কাজে দক্ষ, দক্ষ না হলে মুখ দিয়ে অন্তত গালি দিত, বা আল্লাহু আকবর বলতো, বা অন্ততপক্ষে আহ উহ শব্দটুকুও করতো।
প্রথমেই তারা আমার মাথাটিকে বগলের ভেতরে ধরে অন্য হাত দিয়ে একটি ছুরি সামনে থেকে গলা বরাবর ঢুকিয়ে দেয়। এই আঘাতটি ছিল সবচাইতে মারাত্মক, পরে যেটা ডাক্তার জানিয়েছিলেন। মানুষের হৃদপিণ্ড থেকে একটি ভেইন সরাসরি মস্তিষ্কে চলে যায়, এবং সেটা কেটে দিতে পারলে কয়েক মিনিটেই রক্ত ক্ষরণে মানুষের মৃত্যু ঘটবে বলে নিশ্চিত হওয়া যায়। এই আঘাতটি আমার জ্যাকেটের হুডে লেগে গলার একটা বড় অংশ কেটে বেড়িয়ে যায়। আমার গলাটি দুইভাগ করে ফেলার চেষ্টাই ছিল তাদের। এরপরে তারা পিঠে এবং ঘাড়ে একের পর এক আঘাত করতে থাকে। প্রতিটি আঘাতই ছিল সরাসরি ছুরি ঢুকিয়ে দেয়া। ঘাড়ের দুই পাশে তারা এমনভাবে গভীর আঘাত দুটি করে, যেন আমার ঘাড়ের স্পাইনাল কর্ড কেটে ফেলা যায়। একটি আঘাত ছিল ৬ সে মি গভীর, আরেকটি ৪ সে মি গভীর। দুটো স্পাইনাল কর্ডের একদম পাশ ঘেঁষে ঢুকে গেছে, আর আধা সেমি পাশে লাগাতে পারলে আমাকে আর দেখতে হতো না!
চশমাটা পরে গিয়েছিল, রাস্তাটিও অন্ধকার ছিল। মাত্র কয়েক সেকেন্ড সময়, আমি ব্যাপারটা বুঝে ওঠার আগেই আমাকে অনেক গুলো কোপ দেয়া হয়েছে। আমি তখন বেঁচে থাকার আকুতিতে প্রবল শক্তি দিয়ে উঠে দাঁড়াবার চেষ্টা করলাম, গা ঝাড়া দিলাম। তারা আমার পিঠ থেকে প্রায় ছিটকে পরে গেল। তাদের মধ্যে একজন আবার এগিয়ে আসলো, এসে আমার পেট লক্ষ্য করেই সম্ভবত চাপাতি চালালো। এই কোপটি আমার শরীরের বাম দিকে লাগলো, হাড্ডিতে গিয়ে ঠেকলো; ঘুরে যাবার কারণে পেটে লাগলো না। পেটে লাগলে নাড়িভূঁড়ি বের হয়ে যেত।
এরপরে তারা যা করার করে ফেলেছে ভেবেই দৌড় দিল। একটু সামনের দোকান থেকেও আমার চিৎকার শুনে দুইজন ভদ্রলোক ছুটে এলেন। শুনতে পেলাম, কেউ বলছে, হায় হায়, “পুরাই মার্ডার কইরা ফালাইছে দেখি। ভাই আপনেরে তো কোপাইছে”।
এই কথা শোনার পরে ঘাড়ে হাত দিয়ে দেখি ফিনকি দিয়ে রক্ত বেরুচ্ছে। আমার শার্ট প্যান্ট এবং রাস্তা সবই রক্তে ভিজে গেছে। আমার হাতে তখনও আমার এন্ড্রয়েড ট্যাবটা ধরা, তারা ট্যাব মোবাইল বা মানিব্যাগের দিকে ফিরেও তাকায় নি। একজনকে বললাম ভাই চশমাটি খুঁজে দেন, সে খুঁজে দিল। আমি চশমাটা পড়েই জিজ্ঞেস করলাম, হাসপাতাল কোনদিকে। একজন রাস্তার ঐ পাড়ের হাসপাতালটি দেখিয়ে দিল। আমি দৌড়ে বড় রাস্তাটি পাড় হয়ে হাসপাতালে ঢুকে গেলাম।
হাসপাতালে ঢুকে চিৎকার দিয়ে বললাম, ডাক্তার ডাকেন, রক্ত থামান। তাড়াতাড়ি রক্ত না থামালে মরে যাবো। তারা আমাকে অপেক্ষা করতে বলল। তারা সম্ভবত পুলিশের জন্য অপেক্ষা করছিল, পুলিশকে খবর দেয়া হয়েছে। পুলিশ আসার আগে তারা আমাকে স্পর্শও করবে না। আমি তখন চিৎকার দিয়ে তাদের ধমকাচ্ছি, কিন্তু তারা বিশেষ কিছুই করছে না। পুলিশ আসার পরে তারা আমার শরীর থেকে রক্তগুলো মুছে দিল, গেঞ্জিটা কেটে ফেললো এবং জ্যাকেটটা খুলে দিল। এরপরে ক্ষতগুলো দেখে তারা আমাকে বললো, আপনি মনসুর আলী হাসপাতালে চলে যান। আপনার অপারেশন লাগবে।
একজন একটা রিকশা নিয়ে আসলো, সেই আমাকে টেনে রিকশায় তুললো, আমি চললাম মনসুর আলী হাসপাতালে। তখন বাসায় বড় বোনকে ফোন দিলাম, সে ফোন ধরছিল না। দুলাভাই পরে ফোন ধরলো, তাকে বললাম চলে আসতে। এরপরে বাকী বিল্লাহ ভাই এবং অনন্য আজাদকে ফোন দিলাম নিজেই, ফোন দিয়ে বললাম আমাকে কুপিয়েছে। ততক্ষণে রিকশা হাসপাতালে চলে এসেছে।
ঐ হাসপাতালে তখন ডাক্তাররা একটা অপারেশন করছে, তারা আমাকে অপেক্ষা করতে বলল। অন্যমনস্ক শরৎ ভাই তখন ফোন দিলেন, আমি শুনলাম সে ফোন দিয়ে হাউমাউ করে কাঁদছে। এদিকে সামহোয়্যার ইন ব্লগে ততক্ষণে পোস্ট করে ফেলা হয়েছে, কয়েকজন ব্লগার মনসুর আলী হাসপাতালেও চলে এসেছে। তাদের একজন হচ্ছেন সেলিম আনোয়ার ভাই। তিনি এসে ডাক্তারদের বললেন, উনি অনেক বিখ্যাত ব্লগার, উনার কিছু হলে একটারও চাকরি থাকবে না। এই কথা শুনে কয়েকজন ডাক্তার আমার রক্ত বন্ধ করার চেষ্টা শুরু করলেন। পিছনের কয়েকটা ক্ষত তিনি সেলাই করলেন, কিন্তু ঘাড়ের ক্ষত দুটো দেখে বললেন এই ক্ষততে অপারেশন লাগবে। এখান থেকে সব নার্ভ মস্তিষ্কে যায়, এখানে সামান্য এদিক সেদিক হলে আমি মারা যাবো। তিনি আমার ডান দিকের ক্ষতটাকে আঙ্গুল ঢুকালেন, এবং বললেন তার পুরো আঙ্গুল ঢুকে যাচ্ছে, ক্ষতটা এতই গভীর। এবং অন্যদের বললেন সম্ভবত বাঁচানো যাবে না।
ততক্ষণে বাকী ভাই, মাহবুব রশিদ, শফিউল জয় থেকে শুরু করে আমার দুলা ভাই, ভাগিনা অনিন্দ্য, অনন্য আজাদ সহ অনেক পরিচিত লোকজন চলে এসেছে। ডাক্তার ঢাকা মেডিকেলে ট্রান্সফার করলেন কোনমতে ঘাড়ের ক্ষত দুটো ব্যান্ডেজ করে দিয়ে। এম্বুলেন্সের জন্য অপেক্ষা করছিলাম, এবং বুঝে উঠতে পারছিলাম না বাঁচবো কিনা! অনন্য আজাদ তখন কাঁদছে, সে কী ভাবছিল জানি না। হঠাৎ দেখি সে কাঁদতে কাঁদতে আমাকে চুমু দিয়ে বসেছে। আমি সেই অবস্থাতেও হেসে দিলাম এটা দেখে।
এম্বুলেন্স আসলে চলতে শুরু করলাম। ভাগিনা অনিন্দ্যর মুখ থমথম করছে, বার বার আমাকে জাগিয়ে রাখছিল, আমার ঘাড় দুই হাত দিয়ে ধরে রেখেছে যেন গাড়ির ধাক্কায় বাঁকা হয়ে না যায়। পরে বুঝেছিলাম আমার স্পাইনাল কর্ডের অবস্থা খুব খারাপ ছিল, গাড়ির ধাক্কায় স্পাইনাল কর্ডের কিছু হলে পুরো শরীর প্যারালাইজড হয়ে যেতে পারতো। বড় বোনেরা চলে এসেছে ঢাকা মেডিকেল কলেজে, মিনু মনি ছন্দা চন্দনা আপার অবস্থা তখন ভয়াবহ, পরে মুমু আপাও চলে এসেছিল, দেশের বাইরে থেকে আরেকবোন তখন খালি ফোন করে যাচ্ছে।
ঢাকা মেডিকেলে এসে দেখি মনিরুদ্দিন তপু ভাই, ফারুক ওয়াসিফ ভাই এবং মাহবুব শাকিল ভাই ইতিমধ্যে অনেক কিছুর ব্যবস্থা করে ফেলেছেন। হাসপাতালে ডঃ ইমরানও উপস্থিত আছেন, উনার সাথে ফেসবুকে কথাবার্তা হত। তিনি বললেন তিনি আমার লেখা নিয়মিতই পড়েন। ফেসবুকে খবর শুনে বাসা থেকে ছুটে এসেছেন।
এরপরে আমাকে এক্স রে করতে পাঠানো হল, চোখ খুলে দেখি অনেক লোক এসে পরেছে। সেই ঘোরের মধ্যে সবার কথা মনেও নাই, মাহবুব রশিদ, বাবু আহমেদ, তাওসীফ হামিম আর বাধন স্বপ্নকথককে দেখলাম মনে হল। আমি তখন পুরোপুরি সেন্সে আছি, বোঝার চেষ্টা করছি তাদের কথাবার্তা, বাঁচবো কী বাঁচবো না! সবার মুখের অবস্থা দেখে তখন মনে হচ্ছিল মারা যাবো। হঠাৎ ইচ্ছা হল, মারা যাবার আগে একটা সিগারেটে শেষ টান দিয়ে যাই। মাহবুব রশিদ পুরনো বন্ধু, তার কাছে জিজ্ঞেস করলাম সিগারেট আছে কিনা। সব মানুষগুলো তখন আরো জোরে চিৎকার চেঁচামেচি শুরু করলো! ভাবলো মাথায় আঘাত লাগায় মাথা পুরাই গেছে!
এরপরে ডক্টর প্রতাপ, তার সাথে সামহোয়্যারের আরেকজন ব্লগার কাম ডাক্তার ইনকগনিটো এবং একজন নারী ডাক্তার আমাকে নিয়ে রীতিমত যুদ্ধ শুরু করলেন। অপারেশনের রুমে তখন শুয়ে শুয়ে প্রচণ্ড ঠান্ডায় থরথর করে কাঁপছি। ডঃ প্রতাপ অপারেশন রুমে প্রথমে লোকাল এনেস্থেশিয়া দিয়ে চেষ্টা করলেন, এবং আমাকে হার্ট ফাউন্ডেশনে পাঠাবেন কিনা তা নিয়ে আলাপ শুরু করলেন। গলার কাছে তখন ফুলে গেছে বিকট ভাবে, রক্ত জমাট হয়ে আছে। সেটা অনেকখানি কেটে তিনি নিশ্চিত হলেন আমার গুরুত্বপূর্ণ ভেইনটি কাটেনি।
এরপরে ঘাড়ের ক্ষত দুটো দেখে আমার বোনের কাছ থেকে বন্ড সাইন করালেন যে, আমি মারা গেলে ডাক্তারদের কোন দায় থাকবে না। এই কথা শুনে তাদের কান্নাকাটি শুরু হয়ে গেছে। তারপরে ডাক্তার আমার ঘাড়ের ক্ষতটাতে আঙ্গুল ঢুকালেন, এটা দেখার জন্য যে ঐ জায়গার নার্ভগুলো কতটা ঠিক ঠাক আছে। সেই মুহূর্ত কী ভীষণ যন্ত্রণাদায়ক ছিল তা বোঝানো যাবে না, যার এরকম হয়েছে সেই শুধু বুঝবে। শরীরের সব নার্ভ সেখান দিয়ে পাস হয় বলে সেটা শরীরের অন্যতম সেনসিটিভ জায়গা। আমি তখন গলাকাটা গরুর মত চিৎকার করছি, আমার চিৎকার শুনে পাশের রুমে বাবু আহমেদ এবং আমার আরেক ভাগিনা হিমালয় সেন্সলেস হয়ে ধরাম করে পরে গেল। ক্ষতটিতে পুরো আঙ্গুল ঢুকে যাবার পরে ডাঃ প্রতাপ আবার আরেকটি বন্ড সই করালেন, কারণ বাঁচবার আশা খুব কম ছিল, এবং অপারেশন শুরু করলেন জেনারেল এনেস্থাশিয়া দিয়ে। জ্ঞান হারাবার আগে শুধু দেখলাম ডাঃ ইমরান ঘামে টেমে আমার দিকে তাকিয়ে আছে, ডাঃ প্রতাপ আর আরেকজন মহিলা ডাক্তার আমার উপরে ঝুঁকে আছে।
৭০ টার উপরে সেলাই, মোট আটটি আঘাত, দুটো ক্ষতের গভীরতা ৬ সে মি এবং ৪ সে মি, তিনব্যাগ রক্ত দিয়েছে ছোটভাই সৌরদীপ দাসশগুপ্ত, আমার ভাগিনা অনিন্দ্য এবং নাসিম ভাই। জ্ঞান যখন ফিরলো, দেখলাম মুখ থেকে নাক থেকে কি জানি বের হচ্ছে, নিঃশ্বাস বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। সেই মুহূর্তে মারা যাচ্ছিলাম, কে জানি মুখে কি দিলেন, মুখ পরিষ্কার হয়ে গেল। এভাবে কয়েকবার করার পরে বেঁচে উঠলাম। তারপরে কড়া ঔষধের প্রভাবে কয়েকঘন্টা ঝিম মেরে ছিলাম। পরে ডাক্তারের সাথে যখন কথা হচ্ছিল, তারা বিস্ময় প্রকাশ করছিল যে, এতবড় আক্রমণের পরেও আমি কীভাবে নিজেই হাসপাতাল পর্যন্ত পৌছেছি! ডাক্তার প্রতাপ বলেছেন, দৃঢ় মানসিক বল এবং অফুরন্ত প্রাণশক্তি না থাকলে এইরকম আঘাত থেকে বেঁচে ফেরা অসম্ভব ব্যাপার।
সকালে বড়বোন এসে বলল, আমার ভালবাসার মানুষটি এসেছে, কিন্তু তাকে ভিতরে ঢুকতে দেয়া হচ্ছে না। বাইরে বসে কাঁদছে। আমি অনেক কষ্টে তাকে বললাম, ওকে নিয়ে আসো। সে এসে যখন হাত ধরলো, বুঝতে পারলাম এ যাত্রা বেঁচে গেছি। আর কোন ভয় নাই। বেচারি সারারাত কান্নাকাটি করেছে, আমার চাইতে তার উপর দিয়েই বেশি ঝড় ঝাপটা গেছে মনে হল। চুলগুলো পুরা কাকের বাসা করে চলে এসেছে। তাকে দেখলেই আমার সব সময় হার্টবিট বেড়ে যায়, এবারেও সেটাই হল। তখন আমার সারা শরীরে অসংখ্য নল লাগানো, কড়া ঔষধের প্রভাবে আমি নেশাগ্রস্থের মত তাকিয়ে আছি। এই সময়ে মনে হচ্ছিল আবার জীবন ফিরে পাচ্ছি।
অসংখ্য ব্লগার, অসংখ্য মানুষ আমার জন্য ছুটে এসেছেন, আমার পাশে দাঁড়িয়ে একজন ব্লগার হাউমাউ করে কেঁদে ফেলেছেন। এই ভালবাসার ঋণ আমি কীভাবে শোধ করবো জানি না। কয়েকবার হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ থেকেও সাবধান করা হয়েছে, এত মানুষের আসা যাওয়া নিয়ে। তার উপরে হাসপাতালের ডাক্তার, নার্স থেকে শুরু করে সবাই ধারণা করেছে, আমি কোন বিশাল ব্যক্তিই হবো হয়তো। কারণ তা না হলে এত মানুষ দেখতে আসে না, ভালবাসা জানাতেও আসে না।
আবার অনেকেই আমাদের না জানিয়েই অনেক কাজ করে দিয়ে গেছেন, আমার পাশের সিট সবসময়ই খালি ছিল। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে একটি সিট খালি পড়ে আছে, এমন ঘটনা খুব স্বাভাবিক নয়। এই কাজটি কে করে দিয়েছে তা এখনো জানতে পারি নি। মানুষের উপরে আস্থা হারাই নি, হারাবো না কোনদিন। আমার উপরে যারা আক্রমণ করেছিল তারাও মানুষ, আবার আমার জন্য যারা সারাটা রাত অক্লান্তভাবে দৌড়াদৌড়ি করেছে, কেঁদেছে, আমাকে বাঁচিয়ে রাখার জন্য প্রার্থণা করেছে, তারাও মানুষ। এই অফুরন্ত ভালবাসাই আমাকে টেনে নিয়ে এসেছে মৃত্যুর হাত থেকে। অসংখ্য মানুষ, অসংখ্য ব্লগার, অসংখ্য শুভানূধ্যায়ী খুব গোপনে এসে দেখে গেছেন, ভালবাসা জানিয়ে গেছেন, কোন না কোন ভাবে পাশে দাড়িয়েছেন, তাদের সবার কথা এখন স্মরণে নেই কড়া ঔষধের প্রভাবের কারণে। তবে তাদের এই ঋণ আমি কোনদিন শোধ করতে পারবো না।
তবে বদলে যাও বদলে দাও অর্থাৎ প্রথম আলো গোষ্ঠী এই ঘটনার পরে খুব বাজে ভাবেই নিজেদের প্রগতিশীল মুখোশ খুলে নগ্ন মূর্তি ধারণ করেছিল। ডয়েচ ভেলে থেকে একটি পুরস্কার পাবার পরে খুব যত্ন সহকারে আমার নামটি পত্রিকা থেকে সরিয়ে দেয়া হয়, বাকি যারা পুরস্কার পেয়েছিলেন তাদের নাম থাকলেও সেখানে আমার নামটি ছিল না অজ্ঞাত কারণে। আর এবারও তারা আমার উপরে হত্যা প্রচেষ্টাকে সাধারণ ছিনতাইয়ের ঘটনা হিসেবে প্রমাণের চেষ্টা করে, এবং পরের দিন জানায় যে, ডেস্কে আমার রিপোর্টটি জমা দেয়া হয়েছিল, সেটি প্রথম পাতাতে বড় করেই যাবার কথা ছিল, কিন্তু হায়, সেটি নাকি ডেস্ক থেকে অদৃশ্য হয়ে যায়। তাই আমার খবরটি স্থান পায় পত্রিকাটির একদম এক কোনায়, তাও সেখানে বলা হয় এটি ছিনতাইয়ের ঘটনা! প্রথম আলোর এই ধরণের কর্মকাণ্ড অত্যন্ত দুঃখজনক, তারা ব্লগারদের সম্ভবত ফান ম্যাগাজিনের জোকস লেখক ছাড়া গুরুত্বপূর্ণ কিছু ভাবতেই রাজি নয়। তবে শাহবাগ আন্দোলনের পরে তারা ব্লগারদের নিয়ে আবার মাতামাতি শুরু করেছে। এটা অবশ্য ভাল দিক বটে।
তবে অন্যান্য পত্রিকাগুলো সেসময়ে অত্যন্ত ভালভাবে রিপোর্ট করেছে, তার জন্য তাদের আন্তরিকভাবে ধন্যবাদ জানাই। সমকালে শ্রদ্ধেয় সাংবাদিক আবদুল গাফফার চৌধুরী একটি অনবদ্য কলাম লিখেছেন, তার জন্য উনাকে ধন্যবাদ দেয়াটাও ধৃষ্টতা হবে।
আমাকে আক্রমণের পরে গতমাসে ব্লগার আহমেদ রাজীব হায়দারকেও একই কায়দায় আক্রমণ করা হয়, একই কায়দায় হত্যা করা হয়। তাকে জবাই করে ফেলে রেখে যায় দুর্বৃত্তরা। মেঘদলের গানটি এখানে খুবই প্রাসঙ্গিকঃ
ওম অখণ্ডমণ্ডলাকারং ,ব্যাপ্তং যেন চরাচরম্ ।
তত্পদং দর্শিতং যেন, তস্মৈ শ্রীগুরবে নমঃ
লাব্বাইক, আল্লাহুম্মা লাব্বাইক,
লাব্বাইক আল্লাহ শারিকা লা,
ইন্নাল হামদা ওয়ান নেয়ামাতা, লাকা ওয়ালমুল্ক্
লা শারিকা লা ।
বুদ্ধং শরণং গচ্ছামি।
ধম্মং শরণং গচ্ছামি ।
সঙ্ঘং শরণং গচ্ছামি ।
বল হরি, হরিবোল, তীর্থে যাবো
বিভেদের মন্ত্রে স্বর্গ পাবো ।
লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ্,
মানুষ কোরবানী মাশাল্লাহ্।
হালেলুইয়া জেসাস ক্রাইস্ট,
ধর্মযুদ্ধে ক্রুসেড বেস্ট।
রাজিব হত্যা মামলায় ৫ জন নর্থসাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ধরা পরেছে এবং নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয় ধর্মান্ধ মৌলবাদী সন্ত্রাসী তৈরির ঘাঁটি কী না, তা খতিয়ে দেখতে আদালতে একটু রুল জারি হয়েছে। তাদের দেখে বোঝার উপায় নেই তারা নর্থসাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের মত একটি আধুনিক এবং মানসম্পন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র, কোন কওমি মাদ্রাসার ছাত্র হলেই বরঞ্চ তাদের বেশি মানাতো। জানা গেছে, তারা তাদের এক শিবির কর্মী বড়ভাই, যে তাদের প্রায়শই ইসলামি জলসায় সবক দিত, সে এই হত্যা করতে হুকুম দেয়। নির্বোধ ধর্মান্ধ ছেলেগুলোর সাথে রাজিবের বিন্দুমাত্র কোন শত্রুতা ছিল না, রাজিব সম্পর্কে তারা কিছু জানতোও না। কিন্তু তাদের বলা হয়েছে ‘রাজিবের ব্লগের কারণে সর্বশ্রেষ্ঠ ধর্ম বলে দাবীকৃত-যেই ধর্মের রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব স্বয়ং আল্লাহ নিয়েছেন, সেই ইসলাম এখন হুমকির মুখে, সর্বশক্তিমান আল্লাহও এখন হুমকির মুখে, ইসলাম এবং আল্লাহকে রক্ষা না করলে আর হচ্ছে না’; তাই তারা চাপাতি দিয়ে একজন নিরস্ত্র ব্লগ লেখককে কুপিয়ে কুপিয়ে শেষে জবাই দিয়ে কীভাবে ইসলাম এবং আল্লাহকে রক্ষা করতে সমর্থ হলেন, আমি ঠিক জানি না।
একবার নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের হিজবুত তাহরির সদস্য কয়েকজন ছেলে আমাকে ধর্মীয় বয়ান দিতে এসেছিল। আমাকে ধর্মবয়ান দিতে আসা লোকজন অধিকাংশ সময়ই বিধ্বস্ত অবস্থায় পালিয়ে যায়, তারাও পালিয়েছিল। এরপরে তারা তাদের দলের নেতাদেরকেও নিয়ে এসেছিল, তারাও মোটামুটি মুখ কালো করে বিদায় নিয়েছিল। এরকম তর্ক যুদ্ধ বেশ কয়েকবারই হয়েছে, ২০০৪ থেকে ২০০৭ সালের মধ্যে আমি তাদের সাথে বেশ কয়েকবার তর্ক করেছি। আমি দেখেছি, তারা প্রাতিষ্ঠানিক পড়ালেখায় বেশ ভাল সিজিপি’র অধিকারী হলেও তারা রীতিমত জাংকহেড ফার্মের মুরগি, বাবা মা পড়ালেখা ছাড়া অন্য কোন দিকে নজর দিতে দেয় নি বলে ধর্ম দিয়ে তাদের মগজ ধোলাই খুব সহজ কাজ।
আমার ভাগিনা নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র। তারা বাবা একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা, মুক্তিযোদ্ধার সার্টিফিকেট সেখানে জমা দিলে নিয়ম অনুসারে ফুল স্কলারশিপ পাওয়া যায়। একজন মুক্তিযোদ্ধার পরিবারের জন্য এইটুকু মোটেও বেশি কিছু না, বরঞ্চ তার অসামান্য অবদানের জন্য তাকে একটু সম্মান জানানো। রাষ্ট্র হিসেবে আমরা আমাদের বীর মুক্তিযোদ্ধাদের তেমন কিছু দিতে পারি নি, যেখানে রাজাকারদের গাড়িতে পতাকা উড়েছে, সেখানে মুক্তিযোদ্ধারা থেকে গেছে বঞ্চিত, অবহেলিত।
মুক্তিযোদ্ধার সার্টিফিকেট জমা দেয়ার সময় নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ডেপুটি চেয়ারম্যান অফ ফাইন্যান্সিয়াল এইড সার্টিফিকেট দেখে নাক কুচকে বলেছিল, “তোমাদের তো পড়ালেখা করারই প্রয়োজন নাই। বাপে কবে কী না কী করে গেছে, সেই সার্টিফিকেট বেচেই তোমাদের চলে যাবে। সরকার তো তোমাদের জন্যেই বসে আছে, কোনমতে পাশ দিলেই চাকরি। অন্যরা কষ্ট করবে আর তোমরা বাসায় বসে বসে আরাম করবা।” এছাড়াও নানা ধরণের রসাত্মক বক্তব্য দিয়েছিল, যা শুনে আমার ভাগিনা রাগে দুঃখে বেশ কয়েকদিন কারো সাথে কথাই বলে নাই।
এরপরে ভাগিনাকে দীর্ঘদিন তাদের অফিসে তার মুক্তিযোদ্ধা পিতাকে নিয়ে ঘুরতে হয়েছে, বেশ কয়েকমাস তাদেরকে নানাভাবে হেনস্থা করা হয়েছে। তার অপরাধ ছিল, সে একজন মুক্তিযোদ্ধার সন্তান এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়ম অনুসারেই সে আবেদন করেছিল। সে জানতো না, কাগজে কলমে অনেক কিছুই লেখা থাকে, সেগুলো বাস্তবে থাকে না। নানা টেবিলে ঘুরে ঘুরে নানাজনার নানা প্রশ্নের উত্তর দিতে হয়েছে, তার বাবা আসলেই মুক্তিযুদ্ধ করেছে কী না, অথবা মুক্তিযুদ্ধ করে থাকলেই বা কী? দেশের এমন কী উন্নতি হয়েছে? পাকিস্তান আমলেই তো অনেক ভাল ছিল। অথবা ভারতের চক্রান্তে দেশ ভাগ হয়ে গেল, তৌহীদী মুসলিমদের দেশকে দুই ভাগ করে ফেলা হল, কী আফসোস কী আফসোস!
যেই বিশ্ববিদ্যালয়ের এডমিনিস্ট্রেশনে এই ধরণের লোকজন থাকে, যাদের এই দেশের মুক্তিযোদ্ধাদের সম্পর্কে সামান্যতম সম্মান বোধটুকু নেই, তারা কীভাবে একটা প্রথম সাড়ির বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হয় তা আমার জানা নেই। আর এই সমস্ত শিক্ষকদের দ্বারা শিক্ষাপ্রাপ্তরা যদি ধর্ম অবমাননার কারণে মানুষ জবাই শুরু করে, তাহলে কাকে কী বলবো?
নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয় সহ দেশের বেশ কয়েকটি প্রথম সাড়ির বিশ্ববিদ্যালয়ের গুরুত্বপূর্ণ কয়েকজন শিক্ষক হিজবুত তাহরিরের সক্রিয় সদস্য। শিবিরও প্রচুর পরিমাণে দেখতে পাওয়া যায়। তাই বলে ঢালাও ভাবে কোন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীদের মৌলবাদী বা হিজু বা শিবির বানানো উচিত না, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে জড়িয়ে এই ধরণের ট্যাগিং অত্যন্ত আপত্তিকর। কিন্তু কিছু বিষয় অবশ্যই সতর্ক থাকা উচিত বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীদের থেকে শুরু করে কর্তৃপক্ষকে। বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক হিসেবে কাউকে নেয়ার আগে অবশ্যই যাচাই করা উচিত, ঐ লোকটি জামাত শিবির কিংবা হিজবুত কিংবা অন্য কোন ধর্মীয় মৌলবাদী সংগঠনের সাথে জড়িত কিনা। সেরকম হলে তাদের নিষিদ্ধ করাই জরুরী, কারণ একজন শিক্ষক পড়ালেখায় হয়ত খুব ভাল সিজিপিধারী, কিন্তু সে ভেতরে ভেতরে মৌলবাদী চিন্তার ধারক বাহক হতে পারে। এবং তার হাত ধরে যারা শিক্ষা গ্রহণ করবে, তাদের মধ্যে কয়েকজন মৌলবাদে দীক্ষা নেবেই। একই ভাবে, এখনকার বাবা মাও তাদের সন্তানকে এমন ভাবে গড়ে তোলেন যে, পড়ালেখা ছাড়া ছেলেমেয়েরা অন্য কোন কাজে মনোযোগই দেয় না। ছেলেমেয়েরা ইতিহাস জানেন না, বিজ্ঞান জানে না, সাহিত্য বোঝে না, তারা খালি বোঝে পড়ালেখা আর সিজিপি। সেই ছেলেটি যখন নামাজ রোজা শুরু করে, অতিরিক্ত ধর্মপ্রবণ হয়ে ওঠে, স্বাভাবিকভাবেই বাবা মা তাতে খুশি হয়। সে হয়তো জানেও না ছেলে কোন পথে যাচ্ছে।
জামাত ইসলামী সহ মৌলবাদী সাম্প্রদায়িক দলগুলোর শীর্ষ নেতারা, যারা কিনা সারাজীবন মাদ্রাসা শিক্ষার পক্ষে, ধর্মভিত্তিক শিক্ষাব্যবস্থা পক্ষে আন্দোলন করেছে, দরিদ্র শিবির কর্মীদের উস্কানি দিয়েছে, মাঠে নামিয়ে দিয়ে পুলিশের গুলি খেতে বাধ্য করেছে, তাদের ছেলেপেলেরা কখনই মাদ্রাসার ছাত্রছাত্রী হয় না। তাদের ছেলেমেয়েদের ইংরেজি মাধ্যমে পড়ানো হয়, তারা প্রথম সাড়ির বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ালেখা করে। আর শিবিরের মিছিলে পুলিশ পিটিয়ে মারার সময় পুলিশের গুলিতে প্রাণ হারায় সেই দরিদ্র শিবির কর্মীটি, যে হলে সিট পাবার, ইসলামী ব্যাংকে চাকরি পাবার আশায় শিবিরের মিছিলে যোগ দিয়েছিল। এখন জামাত শিবির হিজবুত তাহরির দরিদ্র ছেলেদের সাথে সাথে ধনী পরিবারের ছেলেদের দিকেও তাদের কালো হাত বাড়িয়ে দিয়েছে! আর এর জন্য সেই সব বাবা মারও দায় অস্বীকার করা যায় না, যারা ছেলেমেয়েদের উৎকৃষ্ট মানের নির্বোধ মাথামোটা ফার্মের মুরগিতে পরিণত করে কর্পোরেট দুনিয়ার একটি প্রোডাক্টে পরিণত করার স্বপ্ন দেখেন।
বিষবৃক্ষের শেকড় উপড়ে না ফেললে বিষাক্ত ফল জন্মাতেই থাকবে। একটা একটা ফল কেটে দিয়ে লাভ হবে না, কারণ গোঁড়ায় পানি ঢালা হচ্ছে, সার দেয়া হচ্ছে, একটি ফল কেটে দিলে দশটি জন্মাবে।
আমি জানি না কাল আমার উপরে আবারো আক্রমণ আসবে কিনা। জামাত শিবিরের হিটলিস্টেড ব্লগারদের মধ্যে আমার নাম সবগুলো হিটলিস্টেই রয়েছে, আমাকে তারা হত্যা করতেই পারে। হুমায়ুন আজাদ বলেছিলেন, ‘এখনো বিষের পেয়ালা ঠোঁটের সামনে তুলে ধরা হয় নি, তুমি কথা বলো! ‘ আর তাই কথা বলে যেতেই হবে, লিখে যেতেই হবে।
মৃত্যু অত্যন্ত স্বাভাবিক একটি ঘটনা। তাই মৃত্যুকে স্বাভাবিকভাবেই গ্রহণ করার সাহস আমার আছে বলেই মনে করি। ধর্মান্ধ মৌলবাদী সাম্প্রদায়িক অপশক্তির বিরুদ্ধে গত কয়েকবছর ধরেই লিখে যাচ্ছি অবিরাম, এই যুদ্ধে অনেক প্রিয় বন্ধু পেয়েছি, অনেক শত্রুও তৈরি হয়েছে স্বাভাবিকভাবেই। আদর্শিক শত্রু, ব্যক্তিগত শত্রু থেকে শুরু করে অনেক মানুষের প্রতিহিংসার শিকার হওয়াটাও আমার কাছে এত গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নয়। সমালোচনাকে গ্রহণ করি, প্রত্যেকের বাক-স্বাধীনতাকে সম্মান করি বিধায় ফেসবুক-ব্লগে জামাত শিবির হিজবুত তাহরির থেকে শুরু করে আমাকে গালিদাতা এবং মৃত্যু হুমকিদাতাদেরকেও ব্লক করি না। কারণ আমি মনে করি মানুষের চিন্তাশীলতার দরজাগুলো কখনও বন্ধ করে দেয়া যাবে না। এমনকি আমাকে যারা হত্যা করতে চেয়েছিল, আমাকে যারা নানাভাবে আক্রমণ করেছে, তাদের প্রতিও আমার কোন বিদ্বেষ নেই। কারণ তারা জানে না তারা কী করছে। তাদেরকে এভাবেই শেখানো হয়েছে, মগজ ধোলাই করা হয়েছে, তাদেরকে হত্যা করার প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে। তাদের শিক্ষাব্যবস্থা এবং মগজধোলাইয়ের প্রক্রিয়া যেদিন বন্ধ হবে, সেদিনই আমি ভাববো আমার উপরে আক্রমণের বিচার হয়েছে।
এই যুদ্ধে কতক্ষণ টিকে থাকবো জানি না। কিন্তু একটাই অনুরোধ থাকবে, মৃত্যুর পরে অনুগ্রহ করে আমাকে ধর্ম অন্ত প্রাণ অথবা প্রাচীন বা মধ্যযুগীয় কুসংস্কার সম্পর্কে শ্রদ্ধাশীল বলে প্রচার প্রচারণা কেউ চালাবেন না। আমি আমার পুরোটা জীবন ব্যয় করেছি এসবের বিরুদ্ধে যুদ্ধে, মৃত্যুর পরে আমি সেগুলোর কাছে পরাজিত হতে চাই না।
আমি চাই না আমার কোন জানাজা হোক। আমার জানাজার হাজার হাজার মানুষের উপস্থিতি বরঞ্চ আমাকে আরো ছোট করে ফেলবে। আমি জাতীয় বীর হতে চাই নি, জনপ্রিয় হবার ইচ্ছা আমার নেই। আমি আমার নিজের নীতি আদর্শ নিয়ে বেঁচে আছি এবং সেগুলো নিয়েই মৃত্যুবরণ করতে চাই। আমি যেমন, আমি সেটাই; দোষেগুণে পরিপূর্ণ একজন সাধারণ মানুষ, যে চিন্তা করতে শিখেছে। বাড়তি বিশেষণ বা নানা ধরণের শব্দ ব্যবহার করে আমার মৃত্যুর পরে আমাকে মহান বানাবার কোন প্রয়োজন নেই। আমার মরদেহ কোন মেডিকেল কলেজে দেয়া হবে, আমার চোখ থেকে শুরু করে সমস্ত অঙ্গপ্রত্যঙ্গ মানব কল্যাণে ব্যবহৃত হবে। আমার চোখ দিয়ে আরেকজন অন্ধ মানুষ পৃথিবীর রঙ রূপ দেখবে, এর চাইতে আনন্দের আর কিছু হতে পারে না। আমার কিডনি থেকে শুরু করে যা কিছুই ব্যবহার যোগ্য হবে, সেগুলো কোন অসুস্থ মানুষকে দিয়ে দেয়া হবে। আমার বাকিটা শরীর মেডিকেল কলেজের ছাত্র ছাত্রীরা নিয়ে গবেষণা করবে, যেন তারা মানবদেহ এবং অস্ত্রোপচার সম্পর্কে আরও অভিজ্ঞতা লাভ করতে পারে।
স্বর্গ নরকে বিশ্বাসী নই, এই পৃথিবীই আমার সবকিছু, এই দেশের মাটিই আমার ঠিকানা। যেই যুদ্ধ শুরু করেছিলাম আমরা সবাই মিলে, সেই যুদ্ধ চালিয়ে যেতে হবে, ভয় পেলে চলবে না। জয় আমাদের হবেই।
জয় বাঙলা। মানুষের চেতনার মুক্তি ঘটুক, মানুষের জয় হোক। বিপ্লব দীর্ঘজীবী হোক।
মন্তব্য নিষ্প্রয়োজন!
আমি বেশ কয়েকমাস অসুস্থ ছিলাম, তারপর যখন সামু তে আসিফকে খুঁজছি ,আপনার নতুন লেখার খোঁজ করছি কিছুই পাচ্ছি না, ফেসবুকে কয়েকজনকে জিজ্ঞাসা করছি তারা কিন্তু ভয়ে কিছু বলতে পারছে না। বিভিন্ন সাইট থেকে আসিফ মহিউদ্দিন সার্চ দিয়ে কিছুটা জানতে পারছিলাম , আজ আপনার নিজের কলম থেকে জেনে একটা রিফ্লেক্স এ্যাতোই গলা দিয়ে উঠবার চেষ্টা করছে যে জীবনে যে নির্ণয় নিয়েছিলাম ; জীবনে কাউকে ঘৃণা করবোনা তার প্রতি বিশ্বস্ত থাকতে পারছিনা। আঘাত আপনার কলমকে আরো শক্ত আরও শক্তিশালী করবে এই প্রত্যয় পৃথিবীকে আরও সুন্দর করার লক্ষ্যে পৃথিবী থেকে ধর্ম নামক ব্যাধি নিরাময় প্রচেষ্টা নিরন্তর চলার আশায় রইলাম।
বিপ্লব দীর্ঘজীবি হোক।
তাদের ধর্মগুরু বা রাজনৈতিক গুরু হয়ত তাদের নির্দেশ দিয়েছে এই কাজটি করতে, তারা অনুগত ভৃত্যের মত নিজের বিবেক এবং মস্তিষ্ক না খাটিয়েই কাজটি করেছে।
যার যা কাজ সেটাই করেছে।
:-[
আমার দেশ থেকে আসার মাত্র কয়েকদিনের আগের ঘটনা।।
প্রিয় বন্ধু কে দেখতে রোজ হাসপাতালে ছুটে গিয়েছি।।
আসিফ ওর আদর্শ ও নীতিতে আজীবন অটুট থাকুক।। সুস্থ্য থাকুক। ওর লেখার ধার যেন এতটুকু না কমে।।
আমি মনে করি ব্রুনর মত জীবন উৎসর্গ না করে গালিলিউর মত একটু কৌঁসুলি হয়ে আপনার চলা উচিত। অন্যথায় হুমায়ুন আজাদ বা রাজিব হায়দার এর মত আপনাকে আমরা হারাব। কারন ধার্মিকদের কাছে জীবনের কোন মূল্য নেই । ওরা কিছু ধর্মীয় বানীর কাছে জীবন সঁপে দিয়েছে। ওদের কাছে পরকালই আসল । কিন্তু আপনার জীবনের মূল্য প্রগতিশীল বিজ্ঞানপ্রেমিদের কাছে অনেক দামী। তাই নিজের স্বাধীন মত প্রকাশের জন্য সংগ্রাম করবেন আশা করি কিন্তু আত্মঘাতী হবেন বা জীবন আত্মাহুতি দিবেন এটা আমি সমর্থন করি না । কারন আপনাদের মত মানুষদের অনুপস্থিতি মানবতাবাদ প্রতিষ্ঠার আন্দোলনকে ধীরগতি করবে।
@আসিফ ভাই…
আপনার উপরে আক্রমনের তীব্র নিন্দা এবং এর সঠিক বিচার দাবি করি। আপনার সব লেখা পরিনি, কিছু কিছু পরেছি, শুনেছি আপনি অনেক নামকরা ব্লগার, অনেক ভাল লিখেন। আজকের লেখাটাও সুন্দর হয়েছে। অভিনন্দন।
পৃথিবীতে প্রায় ধর্মেরই মধ্যে কিছু উগ্রপন্থি দেখা যায় তথা এরা মানব সমাজেরই অংশ তথা কিছু কিছু মানুষই উগ্রপন্থী। কিন্তু আমার মনে হয় এই কিছু মানুষের কারনে আপনি একজন ধর্মীয় অবতার নিয়ে বা একটা বিরাট কওমের বিশ্বাস নিয়ে প্রকাশ্যে নোংরা বা কতুক্তি করবেন, সেটা মনে হয় ঠিক না, কিংবা আপনাকে সেতা মানায় না। কারন যেহেতু আপনি ভাল বোঝেন বা জানেন সেহেতু আপনার উপর একটা সামাজিক দায়িত্ব এমনিতেই আরোপ হয়। এটা আমার একান্তই ব্যাক্তিগত মতামত। ভালো না লাগলে আমি দুঃখিত। তবে বাক স্বাধীনতা অবশ্যই থাকা উচিত। আপনার এই কথাটি আমার ভাল লেগেছে যে আমিতো কাউকে জোর করে আমার লেখা পরাইনি বা আমার লেখা এরিয়ে গেলেই পারে। আমি এই ব্যাপারে সম্পূর্ণ একমত।
আপনার এই কথার সাথে আমি কিছু মতামত জোগ করতে চাই। তা হল আমরা মানুষেরা নিরবিচ্ছিন্ন ভাবে এগিয়ে চলেছি , ধীরে ধীরে সমাজ পরিবর্তন হয়েছে, একেক সময়ে একেক মহাপুরুষরা এসেছে। এই আধুনিক বিজ্ঞানের যুগে আমরা কেউ কেউ হয়ত ধর্মকে একটা বাধা হিসাবে ভাবি, তাই সরাসরি অনেক সময় একজন বা দুজন উগ্রপন্থী মানুষকে আক্রমন করতে গিয়ে পুরা একটি জাতির বিশ্বাস নিয়েই কতাক্ষ করে লিখে বসি। কিন্তু গত ১৫০০ বছর ধরে ধর্ম বা ধর্মীয় অনুশাসন এর বিপক্ষে অনেকে বলে গেছেন। কিন্তু কাজের কাজ কিছু হয়নি। তাই আপনি যে বলেছেন সময়ে বোঝা যাবে আপনি সঠিক কি সঠিক না, আসলে এটা কোনদিন বোঝা যাবে না কারন আমরা অতিতে গিয়ে ভবিষ্যৎ বদলে দিতে পারি না। বর্তমানে থেকেই বদলাতে হয়। যদি অতীতে জেতে পারত মানুষ এবং নিজের ভুল গুলি শুধরে দিতে পারত তবে দেখা যেত আসলে ভবিষ্যৎ কেমন হয়, তখন বোঝা যেতো কার মেথড বেসি ফলপ্রসূ। তবে ধর্মীয় কুসংস্কার গুলির অবশ্যই অবসান হওয়া দরকার।
যাই হোক আপনার মত আবার কেউ শিকার হোক তা কোন ভাবেই মেনে নেয়া যায় না। আপনার দীর্ঘ জীবন কামনা করি।
কিছুই বলার নেই…আমি বাকরুদ্ধ…এই ধর্মান্ধ জানোয়ারগুলো থেকে মানুষ কবে মুক্তি পাবে??? রাগে-ক্ষোভে-দুখে আমি পরাজিত-লজ্জিত…মুক্তি চাই, মুক্তি… @ আসিফ মহিউদ্দীন ভাই মানুষ কি কখনোই জাগবে না???
আপনি সুস্থ হয়ে ফিরে আসবেন সেটাই কামনা করেছিলাম। ভালো লাগলো ব্লগে আপানার বিচরন দেখে।
লেখাটি পড়ে স্তব্ধ হয়ে গেলাম! বিশেষ করে আপনাকে হত্যা চেষ্ঠার ঘটনা এবং নিজে থেকেই হাসপাতালে ছুটে আসা, চিকিৎসা শুরু না করায় সে অবস্থায়ও তাদের তাগাদা দেয়া, পরিচিতদের ফোন দেয়া। এতো বড় হামলার পরও এতো কিছু করতে পারা সত্যিই অবাক করার মতো। আপনার অফুরন্ত প্রাণশক্তি আমাকে অভিভূত করেছে। সহানুভূতি বা সমবেদনা জানালে আপনাকে ছোট করা হবে।
লাল সালাম।
🙁 🙁
লেখাটির জন্য আমি প্রতীক্ষা করে ছিলাম । প্রতীক্ষা পুর্ন হলো ।
অসংখ্য ধন্যবাদ । নিরাপত্তা ও সুস্হতার জন্য প্রার্থনা সবসময় ।
শুভকামনা ।
আসিফ মহিউদ্দীন
মরনঘাতী আক্রমণের মুখ থেকে ফিরে এসে আবার লেখার জন্য আপনাকে অভিনন্দন।
অধ্যাপক হুমায়ুন আজাদকেও একইভাবে আঘাত করা হয়েছিল। তিনি বেঁচে গিয়েছিলেন। কিন্তু ক’দিন পরে হঠাত মারা গেলেন। নিজে প্রতি খেয়াল রাখবেন।
অভিজিত রায় সানিউরের উপর আক্রমণের প্রতিবাদে বাংলানিউজ২৪ লেখা নিবন্ধে লিখেছেন
উদ্ধৃতিতে এদেশে মুক্তচিন্তা চর্চাকারীদের ওপর বিভিন্ন সময় আক্রমণের সংক্ষিপ্ত বিবরণ আছে। গত কয়েকদিনে মুক্তবুদ্ধির চর্চা করে না বা লেখালেখি করে না এমন কিছু মানুষও দুর্বৃত্তদের হাতে নিহত হয়েছে তাদের মধ্যে নারায়নগঞ্জের কিশোর ত্বকীও আছে।
এইসব মানুষের নিরাপত্তার দায়িত্ব রাষ্ট্রের। এসব হত্যাকাণ্ডের বা আক্রমণের পিছেন যারা রয়েছে তাদের বিচার করার দায়িত্বও রাষ্ট্রের। রাষ্ট্র বার বার নিজের দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হচ্ছে। দেখছি ঘৃণা জানাচ্ছি। কিন্তু কার্যকর কিছু করতে পারছি না।
হুমায়ুন আজাদ আক্রান্ত হওয়ার পরে একটি আন্দোলন গড়ে উঠেছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ সারা দেশে। যারা আন্দোলন করেছিলাম তাদের কেউ কেউ হয়ত এখন রাষ্ট্রের বিভিন্ন দায়িত্বে আছে। আর অনেকে হয়ত নিষ্ক্রিয় সমাজে ভিরে গেছে আমার মতো। কে জানে কেউ হয়ত এখনও অন্য কোনো আন্দোলনে অংশ নিচ্ছে। আন্দোলন করার সময়ও জানতাম এখনও বিশ্বাস করি– যারা ক্ষমতায় থাকে তারাই অনেক কিছু নির্ধারণ করে।
শাহবাগ গণজাগরণ মঞ্চের আন্দোলনে উত্সাহের সাথে অংশ নিয়েছি। আন্দোলন থেকে একটি নেতৃত্ব সৃষ্টি হয়েছে। যেসব ছাত্র নেতারা কদিন আগেও ব্যাপক মানুষের কাছে অপরিচিত ছিলেন তারা আজ সুপরিচিত। এসব নেতাদের কেউ কেউ ভবিষ্যতে রাষ্ট্র ক্ষমতায় অংশ নেবেন। গণ জাগরণের মধ্যে বেড়ে ওঠা এসব নেতারা কি পারবে রাষ্ট্রকে দুর্বৃত্ত মুক্ত করতে? পারবে কি ধর্মান্ধতা থেকে মানুষকে মুক্ত করতে?
বাংলাদেশের খবরে আপানার কথা জেনেছিলাম। আজ জানলাম অনেক কিছু। হে মহা গুণী আপ্নাকে স্যালুট।
@আসিফ ভাই;
আমি আপনার লেখা খুব বেশি পড়িনি। তবে আপনি অনেক সাহসী লেখা লিখতেন বলে জানতাম।আজ থেকে আমি আপনার ভক্ত হয়ে গেলাম। আপনার লেখা, আপনার প্রানশক্তি আমাকে সামনে এগিয়ে যেতে প্রানশক্তি জোগাবে।
আসিফ ভাই,
মানুষগুলো আপনাকে যতো বেশি ঘৃণার বাণী দেয়, আপনি ততো মহান হতে থাকেন। কেনো জানি না, আপনার প্রতি আমার ভালবাসাটাও ততোই গাঢ় হয়। আপনার প্রবল প্রাণশক্তি দেখে প্রতিটি ক্ষণে নতুন করে বেচে উঠি, লড়াই করার অনুপ্রেরণা পাই। নিজের জীবন বিপন্ন করে, ব্যাক্তিগত স্বার্থচিন্তাকে দূরে ঠেলে প্রতিনিয়ত আপনারা যেভাবে বুদ্ধিবৃত্তিক লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন এই পশ্চাৎপদ জনপদে, এর সাফল্য আসতে বাধ্য। ইতিহাস সাক্ষি।
আপনার প্রমত্ত জীবনীশক্তির একজন বিমুগ্ধ প্রেমিক আমি। পরমায়ূ কামনা করি আপনার।
জয় বাঙলা। জয়তু মুক্তমন, মুক্তমত, মুক্তমানুষ। জয়তু আসিফ ভাই।
@আসিফ,
যুদ্ধ শুরু হয়েছে, যুদ্ধ চলবে। আপনার কলম লিখে চলুক নিরন্তর- বিষের পেয়ালা ঠোঁটের সামনে তুলে ধরার পরেও।
একটা ধর্মের সৃষ্টি কর্তা কিভাবে এমন নির্দয়, নির্মম, বর্বর হয়!!! তাঁর সৃষ্টি তাঁর সমালোচনা করবে বলে তাঁর মুমিন উম্মতেরা কোপানোর জন্য ঝাঁপিয়ে পরবে, এ কেমন সৃষ্টি কর্তা তা আমার বোধগম্য নয়। আরব্য রজনীর গল্পের মত ধর্মগুলোকে জিইয়ে রেখে জঙ্গিবাদ দূরকরা কখনই সম্ভবনা, কারণ সরিষার ভেতরে ভূত থাকলে সে ভূত তাড়াবো কি করে!!! মানুষকে সচেতন করতে হলে প্রথমেই ধর্মের অসারতাগুলো বুঝাতে হবে, ধর্মগুলো যে মানুষ্য সৃষ্ট কল্পকাহিনী সেটা বুঝতে পারলে মানবিক দিকগুলো তাঁর মাঝে এমনিতেই ফুটে উঠবে। যারা আসিফ ভাইকে কোপালো, রাজিব ভাইকে নির্মমভাবে হত্যা করল, সানিউরকে আক্রমণ করল তাঁরা কি ধর্মের বাইরে কোন কাজ করেছে? যারা আমার সাথে দ্বিমত পোষণ করবেন তাঁদেরকে আমি সবিনয়ে অনুরোধ করব দয়াকরে আপনি আপনার ধর্মগ্রন্থটা ভালভাবে বাংলায় বুঝে শুনে পড়ে আসুন। আর আসিফ ভাইকে বলব, যুগে যুগে আসিফ-রাজিবরা বাঁচলে বাঘের মত বাঁচে, মরলেও বাঘের মতই মরে, তাঁরা কখনও বিড়ালের মত মিও মিও করে না। আবার গর্জে উঠুক আপনার কলম………….
জঘন্য নেক্কারজনক হত্যা প্রচেষ্টার পরেও ধর্মান্ধদের ভয়ে ভীত না হয়ে মুক্তচিন্তার স্বপক্ষে আপনার নির্ভিক কলম চালনা অসীম প্রেরণার দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে। আমরা ভাগ্যবান মুক্তচিন্তার সহযাত্রী হিসাবে আপনাকে অসময়ে খোয়াতে হয়নি। আশাকরি আপনার হত্যাপ্রচেষ্টাকারীরা অচিরেই আইনের আওতায় আসবে।
যুক্তিবুদ্ধিতে পর্যুদস্তরা শারীরিকভাবে আক্রমণ করবে, এটার নাম ধর্মরক্ষা। এরা নিজেদের জীবনকে ভালবাসেনা, গর্ভধারিণীর প্রতি কর্তব্য পালন করে না ( করলে কী আর অন্যকে খুন করে ফেরারি হয় ?) এদের কাছে দেশপ্রেম বহু দূরের বিষয়।
আপনাকে কিভাবে জানাবো যে, আপনাকে আবার ফিরে পেয়ে আমি কত আনন্দিত । আপনার প্রাণ শক্তি, সাহস সব কিছুকে ধন্যবাদ জানাই। আপনি বেঁচে থাকুন আমাদের মাঝে স্বাভাবিক সুন্দর ভাবে এটাই কামনা করি। আবারো স্বাগতম আপনাকে ।ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন। আপনার উপর যারা আক্রমণ করেছে তাদেরকে বলবো হিংসার পথ ত্যাগ করে মানবতার পথ অবলম্বন করুণ। একটা মানুষের জীবনের দাম সারা পৃথিবীর চেয়েও মূল্যবান ।একটা মানুষের সাতে জড়িয়ে আছে শত মানুষের জীবন । কে পাপী কে , কে নিষ্পাপী তা খুদার হাতেই ছেড়ে দেন।
আপনার জায়গায় আমি থাকলে হয়ত আতঙ্কেই মারা যেতাম। অসাধারণ সাহসিকতার জন্য শ্রদ্ধা আর ভালবাসা জানাই।
আসিফ,
যে কথাটা বলতে এসেছিলাম উপরে আদিল মাহমুদ তা বলে দিয়েছেন। অনেকেই যারা আসিফ, রাজীব, সানিউরের উপর হামলা জায়েজ করতে ব্যস্ত আছেন, তারা কি বুঝতেও পারছেন না,নাস্তিকরা খতম হলে আসবে তাদের পালা?
যাই হোক, আপনার যে জিনিসটা আমার ভালো লাগে সেটা হলো আপনি এই আক্রমণের পরও সাহস হারাননি, বরং আগের মতই লিখে গেছেন। আপনার এই সংগ্রাম অব্যাহত থাকুক সেই কামনা করি। ভালো থাকবেন।
মুক্তবুদ্ধির বিকাশের জন্য সহায়ক পারিপার্শ্বিকতার প্রয়োজন হয়lআমাদের দেশের অধিকাংশ মানুষ দরিদ্রlমানুষের বেঁচে থাকার জন্য প্রয়োজনীয় মৌলিক অধিকার থেকে তারা বঞ্ছিতl প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার অধিকার থেকে এ দেশের অধিকাংশ মানুষ বঞ্ছিতlবেঁচে থাকাই যেখানে সংগ্রাম সেখানে গবেষণাধর্মী মনস্তত্ত্ব গড়ে উঠার প্রশ্নই আসে নাlঅপর দিকে আমাদের শিক্ষা ব্যাবস্থার ত্রুটির কারনে যারা শিক্ষার সুযোগ পাচ্ছে তাদের মধ্যে বিজ্ঞানমনস্কতা গড়ে উঠছে নাlফলে ধর্ম এখনো আফিমের মত মানুষকে আচ্ছন্ন করে রাখছেlমানুষ প্রথা ভেঙ্গে যৌক্তিক বিচার বিশ্লেষণ করতে পারছে নাlএকটি শোষণমুক্ত এবং বিজ্ঞানভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠা করতে না পারলে এ সমস্যার সমাধান করা যাবে নাl
মৌলবাদের বিরুদ্ধে আপনার সংগ্রাম অব্যাহত থাকুকl
শুভ কামনাl
জীবনের সাথে সংগ্রাম করে আপনার বেঁচে যাওয়ার সক্ষমতাকে হাজার সালাম। আপনার প্রতি সহানুভূতি জানিয়ে আপনার এ সক্ষমতাকে ছোট করবো না। আপনার একটি কথা আমার খুব ভাল লেগেছে,
আপনার আর যারা আপনাকে আক্রমন করছে তাদে মধ্যে পার্থক্য হল আপনি ভালবাসতে শিখেছেন তারা শিখেনি।তাদের জীবন পরিচালিত হয় অন্ধ ভয় এবং লোভের দারা।স্নিদ্ধ ভালবাসায় সিক্ত হতে তারা শিখেনি, তাই তাদের কাছে অন্যের জীবনের যেমন মূল্য নেই একই ভাবে মূল্য নেই নিজের জীবনেরও।
আরেকটি বিষয় উল্লেখ করতে হয়, বাংলাদেশের মাটি এখনও মুক্তমনের বীজ বপনের উপযুক্ত নয়। তাই বীজ বপনের চেয়ে জরুরী হল মাটির পরিচর্যা করা, না হলে ফল তো হবেই না ববং যারা বীজ বপন করতে চাইবেন তাদের জীবন হবে বিপন্ন।
– এই কথাগুলি নাস্তিক্য মানসিকতার সকলেরই জীবদ্দশায় বলে যাওয়া উচিত। নইলে তাদের মৃত্যুর পরেও রেহাই নেই। মৃত্যুর পর শুরু হয় নানান লোকাচার, তামাশা আর সেসব কেন্দ্রকরে উন্মাদীয় বিতর্ক। ব্লগার রাজীবের জানাযা কেন্দ্র করে তো মহা প্রলয়ই ঘটে গেল। হুমায়ুন আজাদের জানাযা নিয়েও মৌলবাদীরা বাঁকা হাসি দেয়, এত নাস্তিক নাস্তিক ফালাফালি করে ধর্ম গালাগালি করে কি হল…?
উগ্রতা শুধু জামাত শিবিরের মাঝেই নেই। যুদ্ধপরাধীদের বিচার কেন্দ্র করে এক ধরনের উগ্র মানসিকতা ভালভাবে বিকশিত হয়েছে। এদের ঘটে এই সামান্যতম বস্তুটিও নেই যে আপনার ওপর যে কারনে হামলা হয়েছে সেই একই কারনে হামলা তাদের ওপর আসাও কেবল সময়ের ব্যাপার মাত্র, ধর্মের চাদর গায়ে দিলেও রেহাই পাওয়া যাবে না, আওয়ামী সরকারও বাঁচাতে পারবে না। সত্য বলতে এই আন্দোলন শুরু হবার পর থেকেই আশংকা করছিলাম কবে জানি শাহবাগে কোন ইস্যু নিয়ে নিজেদের মধ্যেই লেগে যায়, ছূপা ছাগু পাওয়া শুরু হয়ে যায়। জামাত শিবির সরাসরি মাঠে নামায় সেটা মনে হয় হয়নি।
@আদিল ভাই, যারা মৃতদেহের সৎকার নিয়ে শীৎকার তোলে, মনে হয় না এদের কথায় কান দিলেও চলে কি বলেন?দুনিয়াতে এত কিছু থাকতে মানুষের মৃতদেহ কেন কিছু মানুষের কাছে ঘৃণার অথবা হাসি তামাশার বস্তু হবে সেটা আমার মাথায় আসে না।
আমি সব রাজাকারদের ফাঁসীর পক্ষে।কিছু লোক আছে যারা কিনা মরার পরেও রাজাকার দের জন্যে এই দেশের মাটিতে কবরের জায়গাটাও দিতে রাজি নয়( খোঁজ নিয়ে দেখেন এমন অনেক লোককেই পাবেন) , আমি কিন্তু তাদের ঘোর বিরোধী। সে রাজাকার হোক,কাফের হোক, মুসলিম হোক বা মুরতাদ, সত্যি মরার পর শেষকৃত্যে বাধা দেয়ার চেষ্টার মত বর্বরতা মনে হয় আর কিছু নেই, যেমন রাজিবের শেষ কৃত্য নিয়ে যেভাবে হুমকি দেয়া হল।
@অর্ফিউস,
পড়ুন,
মনে হয় এদের কথায় কান না দিলেও চলে কি বলেন 🙂
এই দেশকে মৌলবাদীদের থেকে মুক্ত করার এখনই সঠিক সময় …. :-s
জামাত শিবির যে সব হিট লিস্ট বানিয়েছে, সেই মোতাবেক তারা আগাবে। শিবিররা একটা শ্লোগান দেয়- “শিবির কাউরে ধরে না, ধরলে তারে ছাড়ে না।” একাত্তরে জামাতের যে চরিত্র তা-ই এখন প্রকাশ পাচ্ছে। কিছুক্ষণ আগে শুনলাম- সানিউর রহমানকেও আক্রমণ করা হয়েছে। এখন একাকী চলাফেরা করা খুবই মুশকিল হয়ে পড়ছে। ওত পেতে আছে ওরা কখন কাকে গ্রাস করবে। সেজন্য খুবই সাবধানে চলাফেরা করতে হবে বর্তমানে।
আসিফ মহিউদ্দীন,
সত্যি শিউড়ে উঠার মতোই ব্যাপার। আমি তো মনে করি ধর্মের প্রয়োজন হয় নির্বোধদের জন্যে! কারন এরা জানেইনা যে কোনটা ধর্ম আর কোনটা অধর্ম! আর সেই জন্যেই সব ধরনের পাপীদের পাপস্খলনের বিধান ধর্মে আছে। পাপ করবে আর ধর্মীয় বিধানে পাপ স্খলণও হবে! অন্যায় করার প্রবৃত্তিটা এদের সহজাত বোধহয়। অতএব এদের অনেক অনেক কাজের সাথেই অন্যায়ের একটা যোগসুত্র থাকবেই। আর নিধার্মিক বা নাস্তিকরা তো নিজের উপড়েই নির্ভরশীল, যা করবে দায়িত্ত্ব তার নিজের। কাজেই নিজের আদালতে নিজেকে মুক্ত রাখতে সে সতর্ক!
লেখাটার শেষে যে অভিব্যক্তির প্রকাশ ঘটেছে কিভাবে তা আমার মতো হলো জানিনে। কিন্তু যে ঔদার্য্য আর প্রাণশক্তির প্রকাশ ঘটালেন তা আমাদের মাঝেও সঞ্চারিত হোক, সে প্রত্যাশা করি। আজ বাংলাদেশ, তার তরুণ প্রজন্ম যে লড়াইয়ে নেমেছে, সেখান থেকে ফেরার পথ নেই। তাই আঘাতে, রক্তে, ঘামে নেয়ে হলেও ঐ অসুস্থ প্রবৃত্তি থেকে আমাদের উত্তর প্রজন্মের পরিত্রানের পথ বের করতেই হবে। দীর্ঘজীবী হোক আপনার কলম।
@কেশব অধিকারী,
মূল্যবান বক্তব্য।
কী বলি? সান্তনা দেয়া মানে ধৃষ্টতা দেখানো।
একটাই কথা সুস্থ থাকুন, কলম দীর্ঘজীবী হোক।
@আসিফ মহিউদ্দিনঃ কি ভয়াবহ! আশা করি এই শারীরিক এবং মানসিক বিপর্যয় দ্রুতই কাটিয়ে উঠবেন।আপনার লেখনী শক্তি অনেককেই সাহস যোগায়। বিজ্ঞান শিক্ষার প্রয়োজনীয়তা নিয়ে বেশী করে লিখুন। সাবধানে থাকুন, এড়িয়ে এবং এগিয়ে চলুন।
মি: আসিফ ,
আপনার লেখা দেখে বুঝা গেল যে দেশের কিছু অল্প বয়স্ক ছেলেরা কি পরিমান ধর্মোন্মাদ হয়ে গেছে। আপনার ওপর বর্বোরিত আক্রমনের তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি আর একই সাথে সকল ছাত্রদের আহ্বান জানাচ্ছি, ধর্মের নামে তারা যেন আর যাই হোক খুন খারাবিতে জড়িয়ে না পড়ে। সবাই তো জানে – শেষ বিচারের দিন আল্লাহ সবার বিচার করবে। তো কেউ যদি নাস্তিক বা মুরতাদ হয় , আল্লাহ তখনই তো তার শাস্তি দেবে। এই দুনিয়ায় যদি কেউ তার শাস্তি দান করে , তাহলে সে তো শেষ বিচারের সময় কোন শাস্তি পাবে না। তার মানে যে কাজ আল্লাহ নিজ হাতে নিয়ে নিয়েছে সে কাজ দুনিয়ার কোন মানুষের হাতে নেয়া আল্লাহর সাথেই ধৃষ্টতা করার সামিল। এটা এক মহা শিরক।
আচ্ছা একটা ব্যক্তিগত প্রশ্ন করি মি আসিফকে। ডা: মুসফিক নামের এক লোক দেখলাম আপনার নামে বদনাম করে বিভিন্ন ব্লগে অথচ আপনারা উভয়েই একই আদর্শের মানুষ। বিষয়টা কি ?
@বিদ্রোহী,
ঠিক এই বিষয়টা যখন ভাবি, প্রশ্ন করতে ইচ্ছে করে খাটি (!) মুসলিম জনগনও কেন দেশে আইন,পুলিশ,কোর্ট এসব চায়, তারা কি বিশ্বাস করেনা ”শেষ বিচারের দিন আল্লাহ সবার বিচার করবে” ?
হাসি পায় যখন এটাই ভাবি সরকারও তাহলে আমার মতই নাস্তিক ! :lotpot:
@আসিফ মহিউদ্দীন
আপনার লেখাটি পড়ে শিউরে উঠলাম। ওই মুহুর্তে আপনার জায়গায় নিজেকে কল্পনা করতেই গায়ের লোম খাড়া হয়ে উঠছে। জানিনা এই সংগ্রামে কার কে কতটুকু অবদান রাখতে পারবে । শুধু এইটুকু বুঝতে পারছি আপনার মত মানুষের খুব প্রয়োজন । বিশ্বাস করুন এই মুহুর্তে মনে হচ্ছে আমার নিজের অনাগত বছরগুলো যদি আপনার অনাগত বছরের সাথে যোগ করে দিতে পারতাম দেশের উপকারে আসত। ধন্যবাদ দিয়ে আপনাকে ছোট করব না, শুধু বলব ঠিক এরকম একজন আসিফ মহিউদ্দীন হয়েই থাকুন সারাজীবন, আমরা আপনার পাশে আছি,থাকব।
অনেক শুভকামনা রইল..
আরো লিখুন..মুক্ত মনাদের প্রজ্ঞা আর সাহস থেকে আমি যেমন অনুপ্রাণিত হই.. আরো বহু মানুষকে অনুপ্রাণিত করার কাজটি অব্যাহত থাকুক আপনার সাহসী লেখনীতে .. নয়তো.. আপনার কথাই ধার করে বলি:
অভিবাদন – সাবধানে থাকুন – ভাল হয়ে উঠুন – আপনার কলম আমাদের পাথেয় হউক।
আপনার ওপর হামলার পর আমাদের বন্ধুদের আড্ডায় আপনার কথাটা উঠে এসেছিল, সেখানেই এক বন্ধু বাপ্পি মং কে কোট করছি-
লেখাটার জন্য ধন্যবাদ, হয়তো অনেকেই সতর্ক হতে পারবে এ থেকে।
কলমে উত্তর দেবার ক্ষমতা যাদের নেই, তারা দা ছুরি দিয়ে কুপিয়ে লেখককে ক্ষান্ত করার অপচেষ্টা করে। তারা জানে না যে, কলম কখনও থেমে যায় না। ক’জনকে কোপাবে ওরা, ক’টি কলম থামাবে ওরা?
গুলশান এলাকার ধনাঢ্য্ মানুষের মাঝেই অতি ধর্মপ্রবণতা প্রবল। তারা ব্যক্তিগত জীবনে কতটা ন্যায়নিষ্ঠ বা সৎ সেটা সবাই জানে। কিন্তু তাদের ধর্মান্ধতা সীমাহীন। হজ্জের মওসুমে কিম্বা রমজান মাসে এই এলাকা মিনি মক্কা মদিনা হয়ে যায়। প্রতিবছর হজ্জ পালন করেন, এমন মানুষই এখানে বেশী।
কিন্তু এই ধর্ম পালনের মন্দ দিক হল- এরা প্রায় সবাই তাদের বখে যাওয়া সন্তানদের নামাজ পরাতে পারলেই খুশী। সন্তানদের জন্যে মানারাত কিংবা অন্য কোন জামাত/হিজু পন্থী শিক্ষক রেখে দেওয়া হয় দ্বীনি শিক্ষার প্রয়োজনে। সেখানের শুরু হয় হিজুকরনের প্রথমিক ধাপ।
আমি একজনকে চিনি। তিনি নিজে আকণ্ঠ মদ খান। দুই বিয়ে করেছেন। তারপরেও নিয়মিত থাইল্যান্ড/সিঙ্গাপুর যাবার দরকার পড়ে। তিনি ট্যাক্স ফাঁকি দেবার সব রাস্তা চেনেন। এবং প্রতিটা ইম্পরট এল সি তে ওভার ইনভইয়সিং করেন বলে শোনা যায়।
আবার তিনি ভীষণ খুশী তার পুত্র একটা বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ে অথচ তার কোন মেয়ে বন্ধু নেই। খুব নামাজ পড়ে। আর মাঝে মধ্যে দ্বীনি কাজে বের হয়।
আপনার লেখাটা অন্যন্ত সময়োপযোগী।
আপনার উপর হামলার ঘটনাটা ভীষণ বেদনাদায়ক। ধর্মান্ধদের বিরুদ্ধে রুখে না দাঁড়ালে এদেশ পাকিস্তান হয়ে পড়বে। গত কদিনে প্রায় শখানেক মানুষ মারা পরেছে। তাতেই আমার আতঙ্কিত। অথচ এদেশ যদি পাকিস্তান টাইপ দেশে পরিনত হয়, এমন সংখ্যক মানুষ সপ্তায় সপ্তায় মারা পড়বে। আসিফ, আপনার যুদ্ধটা চালিয়ে যান।
@মুরশেদ,
আপনি কি শোনেন নি সেই হাদিস – যে পবিত্র হজ্জ ব্রত পালন করল সে যেন নতুন শিশুরূপে জন্মগ্রহণ করল ?
তাহলে আকাম কুকাম, অন্যায় অপরাধ, পাপ কাজ যারা বেশী করবে তারাই তো বেশী বেশী হজ্জ করবে, তাই না ?
কলমের জবাব যারা কলম দিয়ে দিতে পারে না, তাদের মতাদর্শ আসলেই দুর্বল।
আমি একজন জোরালো ইমান্দার মুসলমান। আমি আমার বিশ্বাশে অটুট। আমার বিশ্বাষ আমিই সঠিক পথে আছি। আপনি আমার বিশ্বাষের পক্ষে যুক্তি দিলেন কি বিপক্ষে যুক্তি দিলেন তাতে আমার বিশ্বাষের কমতি বা ঘাটতি বিন্দু মাত্রও হয়না।
আমার বিশ্বাষ সমস্ত যুক্তির উর্ধে।
আর আপনার যুক্তিতেই যদি আমার ঈমান (বিশ্বাষ) কে টলিয়ে দিতে পারে, সেরকম ঈমান(বিশ্বাষ)তো রাখাই উচিৎ নয়।
এখানে হত্যা করার প্রশ্নটা আসে কোথা থেকে? তাতো আমার বুঝে আসেনা। তার অর্থ তাদের ভয় আপনার যুক্তির সামনে তারা এলে তাদের ঈমান ফুরুৎ করে উড়ে যাবে?
সত্য বিষয়বস্তুর যুক্তি প্রমাণ তো আরো বেশী জোরালো হইবে। তাতে এত ভয় কেন?
একেবারে জীবনে মেরে ফেলে দিয়ে যুক্তিতর্কের অবসান করে জয়লাভ করতে হবে?
এভাবে কতদিন চালানো যাবে?
@আসিফ মহিউদ্দীন,
আপনি যে যুদ্ধে নেমেছেন সেই যুদ্ধের এক সামান্য সহযোদ্ধা হিসাবে নিজেকে গৌরবান্বিত মনে করছি।
আপনার প্রতি অনেক অনেক শুভ কামনা। ভাল থাকুন, সুস্থ থাকুন। (F) (F) (F)
-গোলাপ
@গোলাপ, 🙂
শুধু কর্পোরেট দুনিয়ার একটি প্রোডাক্টে পরিণত হচ্ছে না,প্রোডাক্ট তো অন্যের ক্ষতি করে না,তারা সাথে শহীদ বা গাজী হওয়ার স্বপ্নেও বিভোর হচ্ছে।তারা ধর্মসেনা হচ্ছে।
আর প্রথম আলো? কার্টুনিষ্ট আরিফের ঘটনার পর থেকে বাসায় প্রথম আলো রাখা বন্ধ করে দিয়েছিলাম।
মুক্তিযোদ্ধার সন্তান নিয়ে নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের নোংরামি বন্ধ করার ব্যবস্থা করা উচিত। স্কলারশিপের নামে তো অপমান করছে।
যাহোক,এত কোপাকুপির সময় এবং কোপাকুপির পর নিজের অবস্থা নিজেই পর্যবেক্ষণ করার ক্ষমতা বিরল। আপনার প্রাণশক্তি ও মানসিক সামর্থ আমাকে অভিভূত করেছে।
@গীতা দাস, অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।
আসিফ,
লেখাটা এখানে দেওয়ার জন্য ধন্যবাদ। আপনাকে আঘাত করার অংশটুকু পড়ে স্তব্ধ হয়ে গেলাম। নিজেকে আপনার জায়গায় কল্পনা করে শিউরে উঠলাম।
আপনাকে আঘাতের পর কিছু করতে না পারি, মুক্তমনাতে আমার অক্ষম হাতে একটা ব্যানার করেছিলাম-
[img]http://blog.mukto-mona.com/wp-content/themes/neobox/headers_backup/asif_mohiuddin/asif_banner.jpg[/img]
মুক্তমনা, ফেসবুকে আর পত্রিকায় আপনাকে নিয়ে লেখালিখির কারনে নানাজনের বিরাগভাজন হয়েছিলাম। আইজুগোষ্ঠি, আর বলাইগোষ্ঠি সহ অনেকেই সমালোচনায় মুখর ছিলেন, কেন আমি আসিফের পক্ষে কথা বলছি। একটা মানুষ চাপাতির কোপে রক্তাতক হয়ে মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছে, আর তারা আপনি কবে উর্দুসাহিত্য-এর পক্ষে ওকালতি করেছিলেন, সেটা পুঁজি করে আপনাকে ‘পাকিপ্রেমী’ প্রমাণ করতে সচেষ্ট। মানুষের সংকীর্ণতা আমাকে ব্যথিত করে। ওরা সব কিছুই ‘দলীয়’ দৃষ্টিকোন থেকে দেখে। আমি উনাদের চেষ্টা করেও বোঝাতে পারিনি যে, আইজুরা যদি কখনো আহত হয়, ঠিক একইভাবেই আমি কলম ধরব তাদের জন্যও, আজ যেমন লিখেছি সানিউরকে নিয়ে, তার লেখা বা কাজের সাথে একমত না হলেও।
@অভিজিৎ দা, মানুষকে অমানুষে পরিণত করতে ধর্ম এবং রাজনীতির কোন তুলনা নেই। আমি জানতাম ঐ গোষ্ঠীগুলো এমন অবস্থায়ও আমার বিরুদ্ধে আবোল তাবোল বকবে তবে মুক্তমনা মানুষগুলো ঠিকই পাশে থাকবে এটাও জানতাম। আপনার এবং মুক্তমনার উপরে অনলাইনের সকল মুক্তচিন্তার মানুষেরই প্রত্যাশার জায়গাটা অনেক বেশি। ভাল থাকুন সবসময় এটাই কামনা করি।
@অভি দা,
আপনার সঙ্গে এ ক ম ত। আরো খানিকটা যোগ করে বলি:
দীর্ঘ পর্যবেক্ষণে দেখেছি, অমি রহমান পিয়াল, আরিফ জেবতিক, ডাক্তার আইজুদ্দীনসহ বেশ কয়েকজন লিজেন্ড ব্লগার আগাপাশতলা বিচার না করেই হুট যাকে-তাকে হেনেতন একটি ট্যাগ দিয়ে বসেন। বিষয়টি মারত্নক আত্নঘাতি, প্রায় নকশাল প্রবণতার সমান। তাদের প্রত্যেকের বিপরীত পাঠ বা পরমত সহিষ্ণুতায় কখনো কখনো মারাত্নক ঘাটতি দেখা যায়। সম্প্রতি অরপি’র ফেবু নোটেও মাত্রাহীনভাবে মুক্তমনাকে আক্রমণ করা হয়েছে।
এসবই আমার কাছে অতি উচ্চ অহং ও সংস্কৃতির সংকটজনিত আচরণের বহিঃপ্রকাশ বলে মনে হয়।
প্রসঙ্গত জানিয়ে রাখি, ওই তিন ব্লগারের প্রতি আমার কোনো মুগ্ধতা নেই, অশ্রদ্ধাও নেই।
আসিফের প্রতি শুভেচ্ছা রইলো। চলুক। (Y)
(Y)
আসিফ, আপনাকে অভিনন্দন জানিয়ে নিজেকে খেলো করবো না। শুধু নিরব স্যালুট।
মৃত্যু’র পর আর কিছু নেই এটা বিশ্বাস করেও মৃত্যুকে জয় করার সাহসিকতার কোনো তুলনা হয় না।
@সফিক, অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।
কিন্তু এই সময়টা ঐক্যের, এই সময়টা প্রতিরোধের। মরণ কামড় ধেয়ে আসছে ক্রমশ, মুক্তচিন্তার মানুষগুলো এখন একসাথে না হলে সামনে অন্ধকার সময়।
@আসিফ মহিউদ্দীন,
বাকরুদ্ধ হয়ে গেছি, কী বলে সান্তনা দেবো ভাষা খুঁজে পাচ্ছিনা। শুধু প্রার্থনা করি আপনি বেঁচে থাকুন আমাদের মাঝে, সুখে শান্তিতে নিরাপদে আরো অনে—ক দিন বহু দিন।
@আকাশ মালিক, অনেক ধন্যবাদ। বেঁচে যেহেতু আছি যুদ্ধ চলবে।
লেখাটি সামহোয়্যার ইন ব্লগেও আজ প্রকাশিত হয়েছে বলে শুধুমাত্র নিজ নীড়পাতায় প্রকাশ করলাম। মডারেটরগণ চাইলে প্রথম পাতাতে প্রকাশ করতে পারেন। ধন্যবাদ।
@আসিফ মহিউদ্দীন,
পোস্টটির গুরুত্ব বিচারে সামনে নিয়ে আসা হল।
@মুক্তমনা এডমিন, অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে। আজ কিছুক্ষণ আগে আরেকজন অনলাইন একটিভিস্ট সানিউর রহমানকেও চাপাতি আক্রমণ করা হয়েছে। রক্তের হোলি খেলা শুরু করেছে ধর্মান্ধ মৌলবাদী গোষ্ঠী।
@আসিফ মহিউদ্দীন,
সানিউর কিন্তু মুখ খুলছে না যে সে আসলে কি নিয়ে লেখা লেখি করত।