গতকাল রাতে ওয়াজ শুনছিলাম। শীতকালে দুইটা জিনিস বারে, একটা বিবাহ অপরটা ওয়াজ। ইদানিং ওয়াজ যাতে বেশি মানুষ শুনতে পারে তাই গোলিতে গোলিতে আয়োজকরা মাইক বসায়া দেয়। ওয়াজ শুনবিনা মানে, শুনতে হবেই, এই পন করেই তারা ওয়াজ আয়োজন করছেন বলে মনে হয়। কিছুদিন আগে এক ওয়াজ শোনার অভিজ্ঞতা থেকে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিছিলাম। সেদিন জনৈক মোল্লা বিবর্তনবাদ, বিজ্ঞান ইত্যাদি বিষয়ে আলোচনা করেছিলেন। গতকাল এক মোল্লা করলেন বুদ্ধিজীবী বিষয়ক আলোচনা। উনি দাবি করলেন যে বুদ্ধিজীবী যাদের বলা হয় তাদের যেহেতু কোরান সুন্নাহর জ্ঞান নাই সুতরাং ওনারা হলেন তথাকথিত বুদ্ধিজীবী, আসল না। উনি দাবি করলেন যে শুধু কোরানের জ্ঞান থাকলেই চলবে, জগতে আমাদের আর কোন জ্ঞানের দরকার নাই। যেই মাইকে পুরা এলাকা কাপিয়ে তিনি এই ঘোষনা দিচ্ছিলেন সেই মাইকটাকি কোরানের জ্ঞান দিয়েই বানানো হইছিলোকিনা সেই প্রশ্ন আমার মনে আসলেও তা প্রকাশ করার উপায় পাইনাই তখন। এখন করছি, ব্লগে।
কিন্তু ব্লগে কাদের কাছে করছি। অপেক্ষাকৃত শিক্ষিত, প্রগতিশীল, আধুনিক মধ্যবিত্ত্ব অথবা উচ্চবিত্ত্ব একটা জনগোষ্ঠি আমার ব্লগ, ফেসবুকের বন্ধু এবং ফলোয়ার। ঐ মোল্লা যাদের কাছে মাইক লাগিয়ে ওয়াজ করেছেন তারা এই শ্রেণীতে পরেন না। আমি যাদের উদ্দেশ্যে ফেসবুকে এই স্ট্যাটাস দিচ্ছি, যাদের উদ্দেশ্যে ব্লগে লিখছি, তাদের সাথে ঐ মোল্লার মাইকে ঘোষিত ওয়াজ যারা শুনছেন তাদের একট শ্রেণীগত দ্বন্দ এভাবে তৈরি হচ্ছে। এইসব দ্বন্দের একটা চুড়ান্ত উদাহরণ হতে পারে আসিফ মহিউদ্দীনের উপর হামলা। কিন্তু এটা আনন্দের কথা না। কারন ফেসবুকের এই শ্রেণী সংখ্যায় ওয়াজ শোনা শ্রেণীর হিসাবে অত্যন্ত নগন্য। বাংলাদেশে যারা নিজেদের মুক্তমনা দাবি করে তারা সংখ্যায় খুব বেশিনা। বাংলাদেশে তারা টিকে আছে, টিকে গেছে কারন এদেশের মানুষের দীর্ঘকালের মুক্তমত ও মানবতাবাদের ইতিহাস আছে বলে। বাংলাদেশের এই ইতিহাস আছে বলেই বাংলাদেশ পাকিস্তান অথবা আফগানিস্তান হয়ে যায়নাই। কিন্তু এই যে ১৫/১৬ কোটি জনতা, তার কাছে মোল্লার ওয়াজ কতো দ্রুত পৌছে, তার চিন্তা ভাবনায় সাম্প্রদায়িকতা ও অজ্ঞতার মৌলবাদ কতো দ্রুত নিজের জায়গা করে নিয়েছে, নিচ্ছে। এদেশের চিরাচরিত প্রগতিশীলতার যে ইতিহাস তার সাথে ব্রিটিশ আমলে জন্ম নেয়া আধুনিকদের প্রগিতশীলতার যে আমূল শ্রেণীগত দুরত্ব তৈরি হয়েছে তার ফাক দিয়েই কিইন্তু ওয়াহিবীবাদ, দেওবন্দী প্রভাব, জামাতি ইসলামিস্ট রাজনীতি, হিজবুতি খেলাফতী স্বপ্নদোষ ইত্যাদি এই দেশে জায়গা করে নিয়েছে। এইসকল প্রভাব ও স্বপ্নদোষ সংশ্লিষ্ট মানুষের আয় রোজকার, ক্ষমতার স্বার্থে নিজের নিজের মতো ইসলাম প্রচার করেছে, তা দিয়ে জনগণকে প্রভাবিত করেছে, উত্তেজিত করেছে, বাধ্য করেছে গোটা দেশের রাজনীতিটাই বদলে দেয়ার। একাত্ত্বরের পর যখন ধর্ম রাজনীতি নিষিদ্ধ হয় তখন থেকেই ওয়াজ বেরেছে এই দেশে। এখন তার ফলাফল আমরা দেখি। এবং খুব অবাক করা কারনে আমরা আবার অবাকও হই। কিন্তু এই সহজ সত্যটার মুখোমুখি আমরা হতে পারিনা যে এদেশের মৌলবাদী, ধর্মান্ধ, সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠি নিজেদের স্বার্থ, নিরাপত্ত্বা এবং ক্ষমতার জন্যে অনেক বেশি পরিশ্রমী, আদর্শবাদী এবং উদ্দেশ্যের প্রতি বিশ্বস্ত। সাংগঠনিক কাজের প্রয়োজনে ফান্ড কালেকশনে তারা নির্লজ্জ। পুজিবাদী দুনিয়ায় ব্যাবসায়ীর মতোই তারা নেকি ক্রেডিটএর লোভ দেখিয়ে জনগণকে বিভ্রান্ত করে। রিয়েল এস্টেট কোম্পানির মতো পরকালে বেহেশতের জমির মালিকানার নানান রকম প্রজেক্ট তারা তৈরি করে রেখেছে। ওয়াজে, মসজিদে, মাদ্রাসায়, ইসলামিস্ট রাজনৈতিক দলে বিভিন্ন কিস্তির ব্যাবস্থা আছে আজীবন যেসব কিস্তি দিয়ে যে কেউ পরকালে কয়েকটা পৃথিবীর সমান জমির মালিক হতে পারেন, মালিক হতে পারেন অগনিত হুরির।
আমাদের মুক্তমনারা এর বিপরীতে কি করেছে? তারা প্রত্যেকেই নিজ নিজ জ্ঞান বুদ্ধির গরিমা নিয়েই ব্যস্ত থেকেছে। কে কার চেয়ে বড় মুক্তমনা, কে কারচেয়ে বড় মানবতাবাদী সেইটা প্রমান করার চেয়ে বড় কোন কাজ তাদের আছে বলে মনে হয়না। তবে তাদের কেউ যখন আক্রান্ত হয়, আহত হয়, খুন হয় তখন মাঝে মাঝে তাদের টনক নড়ে। টনক কিছুক্ষন পেন্ডুলামের মতো এদিক সেদিক নড়াচরা শেষ হলে আবার শুরু হয় তাদের ব্যক্তিগত কায়দায় নিজেকে মুক্তমনা প্রমানের দৌড় ঝাপ। অন্য কোন মুক্তমনার ভক্ত বারলে তারে বানায় নবী, কিন্তু নিজে আবার ঠিকই নিজের ভক্ত পরিবেষ্টিত হয়ে তৃপ্তির ঢেকুর তোলে। আমাদের এদেশের মুক্তমনাদের কোন লক্ষ্য নাই, উদ্দেশ্য নাই, ব্যক্তি প্রচার ছাড়া। দেশের একটা শ্রেণীর মাঝে হয়তো গুরুত্বপূর্ণ কাজ করা হচ্ছে, কিন্তু সারা দেশের বিপুল জনতার হিসাবে মুক্তমনারা পিছিয়ে যাচ্ছে মোল্লাদের সাথে পাল্লা দিয়ে। নিজেদের ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র ভক্ত গোষ্ঠি নিয়ে তারা এদেশের কোটি কোটি জনতার চেয়ে প্রতিদিন দূরে সরে যায়, যোজন যোজন দূরে। আর মহল্লায় মহল্লায় অলিতে গলিতে মাইক লাগিয়ে মোল্লারা নিজেদের ধর্মান্ধতা, সাম্প্রদায়িকতা প্রচার করে। সেগুলা প্রচারের বিনিময়ে তারা টাকা পায়, দেশের মানুষ থেকে চাদা তুলে পায়, বিদেশী পেট্রো ডলার থেকে পায়। নিজেদের শ্রেণী স্বার্থ বিষয়ে তারা অত্যন্ত সচেতন। যেটা এদেশের মুক্তমনাদের শিখতে আরো অনেকদিন লাগবে।
আমি নিজে এই ত্রুটিমুক্ত হওয়ার চেষ্টা করি। ফেসবুক বা ব্লগ আমার একমাত্র জায়গা না। এদেশের যে বিরাট জনগোষ্ঠি ইন্টারনেট, ব্লগ অথবা ফেসবুকের সাথে পরিচিত না, অথবা নিয়মিত অংশগ্রহণ করেনা তাদের জন্যেই আমি একটি পাঠাগারের সাথে যুক্ত, আরজ আলী মাতুব্বর পাঠাগার। আমি চাই পাড়ায় পাড়ায় পাঠাগার গড়ে উঠুক, যা হবে এই দেশের প্রতিটি এলাকার তরুন তরুনির ইবাদত খানা। যেখানে জ্ঞানার্জন সবচেয়ে বড় ইবাদত হবে, যেখানে মানুষের চেয়ে বড় কোন সেবার বস্তু অথবা আরাধ্য থাকবেনা। যেখানে সে মুক্তভাবে, মুক্তমনে পাঠ করবে। যেখানে নিয়মিত পাঠচক্র, কর্মশালার মতো খুতবার ব্যবস্থা থাকবে। খুতবায় মোল্লাকে কিছু জিজ্ঞাস করা যায়না। এসব পাঠচক্র, কর্মশালায় প্রশ্নে কোন বাধা থাকবেনা। ওয়াজ মাহফিলের বদলে লালন সঙ্গীত সন্ধ্যার আয়োজন হবে, আয়োজন হবে নানান সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। এদেশের হাজার বছরের প্রগতিশীল চর্চার সাথে সবার পরিচয় হবে, সারা দুনিয়ায় কি হচ্ছে, জ্ঞান বিজ্ঞান কোথায় যাচ্ছে তা সম্বন্ধে সবাই জানবে। ধর্ম নিয়া প্রশ্ন তোলা হবে, রাজনীতি নিয়া প্রশ্ন তোলা হবে। শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস, ভাষা দিবস, স্বাধীনতা দিবস উদযাপনের সাথে প্রতিটি তরুনের সম্পর্ক তৈরি হবে। এইরকম একটা স্বপ্ন থেকেই আমরা একটি পাঠাগার চালাই, আরজ আলী মাতুব্বর পাঠার। ঠিক এই কাজগুলাই এই পাঠাগারটি করে। আগামী ২৪ জানুয়ারি পাঠাগারটির প্রথম সম্মেলন। ছয় বছর আগে প্রতিষ্ঠা হলেও পাঠাগারের কোন সম্মেলন এর আগে হয়নাই। এই সম্মেলনে, এই মাহফিলে, এই জলশায় অনেকে উপস্থিত হবেন, অনেক নতুন প্রাণের অভিষেক হবে পাঠাগারের সদস্য পদে, অনেক তরুন সদস্যের খেলাফত হবে বিভিন্ন দায়িত্বপূর্ণ পদে। আপনাকে এইখানে দাওয়াত। অবশ্যই উপস্থিত হবেন। এবং অবশ্যই আমাদেরকে বেশি বেশি করে চান্দা দিবেন। আমরা বাকির লোভ দেখাই না, আমরা নগদে বিশ্বাসী। আমাদের সাথে থাকুন, আমাদের সহযোদ্ধা হউন, আমাদের সহযোগি হউন এবং সেই সাথে এই দুনিয়াতেই, এই বাংলাদেশেই আপনার জন্যে, আপনার সন্তানের জন্যে সুন্দর, সুস্থ্য, আশাবাদী বেহেশত বিনির্মান করুন, যেখানে শুধুমাত্র মতপ্রকাশের জন্যে আপনার উপর কেউ ঝাপিয়ে পরবেনা অস্ত্র হাতে। আমরা শুধু ফেসবুকে না, শুধু ব্লগে না, আমরা রাজপথে, অলিতে, গলিতে, মহল্লায় লড়াই করছি। আমরা হেরে গেলে আপনি হেরে যাবেন, আমরা জিতে গেলে আমাদের পাঠাগারের মতো আরো হাজারো পাঠাগার হবে বাংলাদেশে, এবং বিশ্বাস করেন সেইটা একটা দেখার মতো বাংলাদেশ হবে।
সম্মেলনের সফলতা কামনা করি।
চমৎকার মুক্ত মনা সাজার প্রচেষ্টা। মুক্ত মনা মানে হলো মুসলমানের এবং ইসলামের বিরোধীতা করা নিজের অর্জিত ক্ষুদ্র উপলব্দি ও জ্ঞানের দ্বারা।
লেখাটি গুরুত্বপূর্ণ। উদ্যোগের সাফল্য কামনা করি।
বরাবরই আমি হোরাসের যুক্তিতর্কের গুনমুগ্ধ। এবারও হতাশ হইনি।
(Y)
আপনাদের উদ্যোগ প্রশংসনীয়।
@হোরাস,
দুঃখিত উপরর লিন্কটি ভুল এসেছে। এখানে
চান্দা দেয়ার উপায় কী? জলশায় উপস্থিত হতে অক্ষম দুরত্বের কারণে।
লেখাটি পড়ে ভাল লেগেছে ।খুবই গুরুত্বপূরণ ।
#লেখা এবং মন্তব্য পড়ে মনে হচ্ছে এখানে শব্দার্থতাত্ত্বিক পরিবর্তনের কিঞ্চিত চেষ্টা করা হয়েছে 😕
অনেকে প্রমাণ করতে চেষ্টা করেছেন :-s
Free Thinker = Atheist
আবার অনেকের দাবি, :-s
Free Thinker ⊆ Atheist
#সেই গত শতকে একটি মস্ত ভুল ছিল, যারা বেশি ঘাঁটাঘাঁটি করতেননা তারা মনে করতেন (পপুলার ধারণা) :-
Communist = Atheist
Capitalist = Liberalist
কিন্তু বাস্তবে যে তা ছিলনা এটা ব্যাখা করা বাহুল্য!!!
হতে পারে অনেক ক্ষেত্রেই ব্যাপারটা হয়, তবে মোটেও সব ক্ষেত্রে হয়না। সুতরাং, সিরিয়াস আলোচনায় এমন “পপুলার” ব্যবহার্য রীতি বর্জনীয়।
Monotheism, Polytheism, Iconoclasm, Atheism, Agnosticism, Naturalism, Secularism, Skepticism, Acosmism, Pantheism, এমনকি Nihilism কিংবা এমন সমগোত্রের (জ্ঞানগত আলোচনায়) আরও যতকিছু আছে তা সবই পরস্পরিক ভিন্নতার জন্যই শাব্দার্থিক ভাবে আলাদা। আবার অপর গোত্রের শব্দ যেমন Capitalism, Communism, Authoritarianism, Despotism কিংবা Anarchism অথবা আরেক গোত্র Logicism, Freethought, Rationalism কিংবা Empiricism এসবও নিজ নিজ সংজ্ঞায় সংজ্ঞায়িত।
কল্পনা-মত নিজ নিজ আপন ব্যাখ্যায় একটি যেন আরেকটির ভেতর আমরা না ঢুকিয়ে দেই এদিকে আমাদের সবার সতর্ক দৃষ্টি রাখা উচিৎ 🙂
@সংবাদিকা,
আপনার প্রতি অনেক অনেক শুভেচ্ছা।যদিও আপনার মন্তব্যটি আমার মন্তব্যের প্রত্যুত্তরে নয় তবে মন্তব্যটি আমার মন্তব্যের বিষয় সংশ্লিষ্ট বলে উত্তর দেওয়ার প্রয়োজন মনে করছি।আমি কোন বিশেষজ্ঞ ব্যক্তি নই এক্ষেত্রে এটাও জানিয়ে রাখার প্রয়োজন মনে করছি। এখন প্রশ্ন আসতে পারে, সিরিয়াস বিষয়ে আমার মত সাধারণ একজন ব্যক্তি কেন অংশ নিল? উত্তর হল যেহেতু ব্লগ সাধারণের মন্তব্য করার সুযোগ দিয়েছে সে কারণেই মন্তব্য টি করা। তারপরও প্রশ্ন আসতে পারে মন্তব্যের ন্যুনতম মান থাকা উচিত কিনা। সে ক্ষেত্রে আমার কথা হচ্ছে যেহেতু মন্তব্য গুলো মডারেশন হয়ে আসে সে কারণে আমার চেয়ে এ ব্যপারে তাদের দায়িত্ব বেশি।
atheist, deist, agnotic, socialist সবাই আলাদা এবং তাদের মতাদর্শও ভিন্ন, এ ব্যপারে আমার কোন দ্বিমত নেই কিন্তু সমস্য হচ্ছে বাংলার ক্ষেত্রে deist, agnostic প্রতিশব্দ না থাকায় প্রায় সব ক্ষেত্রেই এদেরকেও নাস্তিক বলা হয়।
একজন atheist কে socialist হতে হবে তার কোন মানে নেই কিন্তু একজন socialist বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই atheist, এবং নীতিগত ভাবেও socialist এর অবস্থান atheist এর কাছাকাছি।
আপরদিকে একজন ধার্মীককে যেমন মুকমনা বলা যায় না প্রায় অনুরুপ কারণেই একজন atheist কে মুক্তমনা বলা যায় না। উপরের মন্তব্যে এ বিষয়ে আমার দৃষ্টিভঙ্গি তুলে ধরেছি এবং এটি প্রচলিত কোন কারণ নয়, কারণটি নীতিগত। আপনাকে ধন্যবাদ।
@বিষন্নতা,
হা হা…… ভাই আমিও তুলনামূলক ভাবে অনেক নবীন ব্লগার। আমি এখানে “নন-সিরিয়াস” বলতে বুঝিয়েছি “চায়ের আড্ডায়” যেসব ব্যবহারযগ্যো তা 🙂 তাই বলে highbrow আলোচনার যায়গা ব্লগ নয়। তার জন্য আছে প্রফেশনাল ফোরাম।
ব্লগ, বিভিন্ন বৈচিত্রময় পেশার মানুষ পারস্পরিক অভিজ্ঞতা – ভাব বিনিময়ের মাধ্যমে আমাদের সবার নিজ নিজ প্রাত্যহিক বাস্তব জীবনের বাহিরে অন্য জগত সম্পর্কে জানা এবং মনন শানিত করার এক অনন্য মাধ্যম।
বাংলায় “নাস্তিক” শব্দটি বেশ বিভ্রান্তিকর।যদিও অর্থগত দিক থেকে একে ইংরেজী “Atheist” শব্দের প্রতি শব্দ ধরা হয়, কিন্তু ব্যবহারিক ক্ষেত্রে “নাস্তিক” শব্দটিকে অনেক সময় ইংরেজী “Atheist” , “Deist” এবং “Agnostic” এর প্রতিশব্দ হিসাবে আমরা ব্যবাহার করে থাকি। “নাস্তিক” শব্দটিকে যদি ইংরেজি এই তিনটি শব্দের প্রতিশব্দ হিসাবে ব্যবহার করা হয় তাহলে তেমন কিছু বলার নেই। কিন্তু “নাস্তিক” শব্দটি দ্বারা যদি শুধু “”Atheist” বুঝানো হয় তাহলে বলতে হয় যে, নাস্তিকরা কোন ভাবেই মুক্তমনা নন। কোরআন ভুল হতে পারে, তার বর্ণিত আল্লাহর অস্তিত্ব না থাকতে পারে বা একই ভাবে যু্ক্তিসঙ্গত কারণে ঈশ্বর, ভগবান না থাকতে পারে কিন্তু কোন সৃষ্টিকর্তা নেই, আমার জানা মতে বিজ্ঞান এমন কোন স্থীর সিদ্ধান্তে এখনও পৌছাতে পরেনি। বিশ্ব সৃষ্টি সম্পর্কিত বিজ্ঞানের গবেষণা আমার জানা মতে এখনও প্রাথমিক পর্যায়ে রয়ে গেছে কাজেই তার উপর ভিত্তি করে কেউ যদি সৃষ্টি কর্তা নেই এ স্থির সিদ্ধান্তে পৌছান তবে তাকে মুক্তমনা বলা যায় না।কারণ মুক্তমনা হতে হলে প্রথমেই কোন ব্যক্তিকে যুক্তিতর্ক এবং বিজ্ঞান দ্বারা প্রমাণিত বিষয়েই শুধু বিশ্বাস করতে হবে উপরন্ত একজন মুক্তমনার অন্যতম কাজ হচ্ছে তার বিশ্বাসে অটল না থেকে সামান্য সন্দিহান থাকা, এর অর্থ হচ্ছে নিজের বিশ্বাস এবং যুক্তিকে পাল্টা যুক্তি এবং বিশ্বাসের কষ্টি পাথরে যঁচাই করার সুযোগ রাখা। এর পরি প্রেক্ষিতে বলা যায় যে একজন নাস্তিক একজন মুক্তমনা ব্যক্তি নন।
আরকেটি বিষয় হল ব্লগার আসিফের উপর হামলার জন্য প্রায় সবাই মৌলবাদীদের প্রতি ইঙ্গিত করছেন।প্রমাণ ছাড়া একথাটি বলাও ঠিক মুক্তমনার লক্ষণ নয়। আমার একথা বলার উদ্দেশ্য এটা নয় যে মৌলবাদিরা নির্দোষ বা মৌলবাদীদের খারাপ বলায় আমার কষ্ট লাগছে বরং এ কথাটি আমি বলছি এ কারণে যে যেন একদিকে দৃষ্টি নিবদ্ধ রাখতে গিয়ে আসল অপরাধী অন্য গোষ্ঠীর হলে সে যেন আড়ালে থেকে না যায়। কারণ আমার জানা মতে ব্লগার আসিফের উপর অনেক গোষ্ঠীই নাখোশ ছিল।
@বিষন্নতা,
বিজ্ঞান ছাড়াও দার্শনিক অবস্থান থেকে কেউ সিদ্ধান্ত নিতে পারে। বিজ্ঞান ছাড়া সিদ্ধান্ত নেয়া যাবে না এমন কোন কথা নাই।
বিজ্ঞান কয়েকদিন আগেও হিগস বোসনের অস্তিত্ব প্রমান করতে পারেনি কিন্তু সবাই কোন রকম সন্দেহ ছাড়াই হিগস বোসনের অস্তিত্ব স্বীকার করত। বিজ্ঞানিরা এখন বলছে মাল্টিভার্স ঈশ্বর ছাড়াই সৃষ্টি হতে পারে। এর স্বপক্ষে অনেক পরোক্ষ প্রমান পাওয়া যাচ্ছে, হয়ত একদিন প্রত্যক্ষ প্রমানও পাওয়া যাবে। গিভ সাম টাইম।
আমি যেটা বলতে চাচ্ছি তা হল বিজ্ঞান কিছুটা হলেও প্রমান দিচ্ছে। যতটুকু প্রমাণ দিচ্ছে তার ভিত্তিতেই সিদ্ধান্ত নেয়াটা অযৌক্তিক হবে কেন? হিগস বোসনের মত! ডার্ক ম্যাটারের মত! অন্যদিকে ঈশ্বরের থাকার পক্ষে যেখানে শুধুমাত্র “গাট” ফিলিং ছাড়া আর কোন প্রমানই নাই।
আর বিজ্ঞান যদি উল্টটা প্রমান করে তাহলে কেঊ মেনে নেবে না এমনটা ধারণা করলেন কেন সেটাও বুঝলাম না?
ব্লগার আসিফ গত দুই-তিন বছরে মৌলবাদীদের কাছ থেকে যে পরিমাণ হুমকি ধামকি পেয়েছে তাতে প্রথম অবস্থায় অন্য কিছু মনে আসার কোন কারণ নেই। পুলিশ যদি অপরাধীদের ধরতে না পারে তবে মৌল্বাদীদের গত দুই-তিন বছরের হুমকি ধামকির দায় নেয়া ছাড়া উপায় নাই। আর তাদের জন্যে এইটা নূতন কিছু না। আপনি যদি বলেন আমি একটা কাজ করব আর যদি সেই কাজটা ঘটে তবে সন্দেহের তীর আপানার দিকেই প্রথমে যাবে। অবাক হওয়ার কিছু নাই।
@হোরাস,
প্রথমে একটি বিষয় পরিষ্কার হওয়া প্রয়োজন সেটা হচ্ছে আমি বলেছি “সৃষ্টিকর্তা”, আমি “ঈশ্বর” “আল্লাহ” বা “ভগবান” বলিনি।
“ঈশ্বর” “আল্লাহ” বা “ভগবান” প্রত্যেকের বৈশিষ্ট ভি্ন্ন হলেও এদের কিছু কমন মিল রয়েছে। এরা সবাই সত্বা, এরা মানুষ কে বিভি্ন্ন আদেশ, নির্দেশ দিয়েছেন এদের চাওয়া পাওয়ার অনুভূতি আছে।সৃষ্টি কর্তার ধারণা সেদিক থেকে একদম ভি্ন্ন।সৃষ্টি কর্তার সাথে ধর্মের কোন সম্পর্ক নাই।
দার্শনিক অবম্থান থেকে ঈশ্বর থাকা না থাকা উভয় পক্ষেই মতামত রয়েছে আর তা যদি শুধু সৃষ্টি কর্তা হয় তাহলে তো কথায় নেই।
বিজ্ঞানিরা “হতে পারে” বলছেন “হয়েছে” বলেন নি।কিছুদিন পর এটা প্রমাণ হতে পারে একথাও অস্বীকার করছি না।শুধু বলছি কোন বিষয় প্রমানিত হওয়ার আগে সেটা সঠিক এ রকম স্থির সিদ্ধান্তে উপনিত হওয়া মুক্ত মনের পরিচয় না।
আবারও আমি বলব বিশ্ব সৃষ্টি রহস্য সম্পর্কে এখনও বিজ্ঞানীদের গবেষণা খুবই প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে।কাজেই এর উপর ভি্ত্তি করে কোন স্থির সিদ্ধান্তে পৌঁছানো যায় না।
না ভাই, পুলিশ যদি আপরধী ধরতে না পারে সে দায়ভার সব সময়ই সরকারের (ক্ষমতায় আওয়মীলীগ, বি,এন,পি জামাত যে`ই থাকুক না কেন)।
আর আমার জানা মতে ব্লগার আসিফ এর উপর ক্ষমাতসিন দলেরও কম আক্রোশ ছিলনা, এবং তিনি আহত হওয়ায় সে দলের লোকজনও মিষ্টি বিতরণ করেছে। এখানে আমার কথা হচ্ছে ব্লগার আসিফের উপর হামলার জন্য নির্দিষ্ট কোন গোষ্ঠীকে দায়ী করার চেয়ে অধিক প্রয়োজন আমাদের দৃষ্টিকে সজাগ রাখা যেন ঘোলা পানিতে একজন মাছ স্বীকার করে অপরের ঘাড়ে দোষ চাপিয়ে ফায়দা লুটতে না পারে।
@বিষন্নতা,
সে জন্যেই ত হিগস বোসনের উদাহরণ দিলাম। বিজ্ঞানীরা তাদের মডেলের উপর ভিত্তি করে প্রেডিক্ট করেছিলেন এটা পাওয়া যাবে। পাওয়ার আগেই সবাই জানত এটা পাওয়া যাবে। বিজ্ঞানীরা সিঙ্গুলারিটিতে মহাবিশ্বের যে মডেল দাড় করিয়েছেন সেটা প্রেডিক্ট করছে মহাবিশ্ব সৃষ্টি হওয়ার জন্য কারো ইন্টারভেনশন দরকার নেই। তাই সেটা বিশ্বাস করাটাই বরং বেশী যুক্তি সংগত। মডেল অনুসারে বিজ্ঞানিরা ডার্ক ম্যাটার এখনো খুজে পাননি কিন্তু সবাই মনে করেন ডার্ক ম্যাটার আছে। মডেল বলছে এরকম কিছু থাকতে হবে। এখন বিজ্ঞানিরা মুক্তমনা না একথাটা কি বলা যাবে?
থাক্লেও সে আক্রোশের মাত্রা মৌল্বাদীদের লেভেলে ছিল না। এবং তারা মেরে ফেলার হুমকী দিয়েছে বলে মনে পড়ে না। এসব কিছুই আমার জানা আছে বলেই বলছি।
@হোরাস,
অনেক আগের একটা আর্টিকেল আছে তবে ক্ল্যাসিক “Tomorrow Never Knows“। বৈজ্ঞানিক অনুমান সম্পর্কিত বিজ্ঞানের পপুলার misconception খুব সহজ ভাষায় ব্যাখা করা আছে। ওখানে এক জায়গায় অ্যালবার্ট আইনস্টাইন এর উদ্ধৃতি দেওয়া হয়েছে-
এটাতো গেল ভৌত বিজ্ঞানের কথা। জীববিজ্ঞানেও এমন অনেক উদাহরণ আছে; চিকিৎসা বিদ্যায় খুব সাম্প্রতিক কাল পর্যন্তও মনে করা হত পাকস্থলী আলসার কোন জীবানু দ্বারা সৃষ্টি সম্ভব নয়; এসিডের জন্য। কিন্তু এখন আমরা জানি খুবই সম্ভব।
বিজ্ঞানিরা যথেষ্ট যুক্তির কারণেই প্রেডিক্ট করেন, যার কতগুলো হয় আবার কিছু কিছু হয়না। বিজ্ঞানের এখনও অকল্পনীয় অনেক আবিষ্কার বাকি আছে। একবিংশ শতাব্দিতেই সব infer করে conclusion এ পৌঁছানো বোধয় কাজের কাজ নয় 🙂
হুম, এটা একান্ত আপনার মত। আক্রোশের মাত্রা আর হামলার সম্ভাব্যতা দুটো ভিন্ন জিনিস। আর যেকোন ধর্মীয় চরমপন্থী এবং সেক্যুলার জাতীয়তাবাদী চরমপন্থীর মধ্য নাম ছাড়া, কাজের পার্থ্যক্য আছে বলে মনে হয়না।
অপরাধী কে এটা বের হওয়ার আগ পর্যন্ত আমাদের অনুসিদ্ধান্ত বর্জন করা উচিৎ।
@সংবাদিকা,
উদাহরনের জন্য ধন্যবাদ। মূল পয়েন্টে যাওয়ার আগে শিউর হওয়া যাক আমরা কি নিয়ে কথা বলছি। এখানে ইশ্বর আছে কি নাই সেটা ইস্যু না। ইস্যু হচ্ছে বিদ্যমান তথ্যের উপোর ভিত্তি করে কেউ যদি সিদ্ধান্ত নেয় ইশ্বর নেই তবে তাকে মুক্তমনা বলা যাবে কিনা? আমি বলছি যাবে। কেন? কারণ বিদ্যমান মডেল/তথ্য সেদিকেই নির্দেশ করে। আইনস্টাইন কিংবা অন্য বিজ্ঞানীরা যেটা বলেছিলেন তা বিদ্যমান তথ্যের উপর ভিত্তি করে এবং তারা ভুল প্রমানিত হয়েছেন। এতে কি তাদের মুক্তমনা বলা যাবে না? অবশ্যই যাবে। এটাই আমার পয়েন্ট।
আবারও ধন্যবাদ।
এটা বলা যত সহজ করাটা ততটাই কঠিন। আর আসিফের ক্ষেত্রে যখন আগে থেকেই তারা বলে রেখছে সুযোগ পেলে ওকে ওরা মেরে ফেলবে।
আশা করি আপনি সব সময় এটা মেইনটেইন করতে পারেন।
@হোরাস,
আপনারা যে বিষয়ে আলোচনা করছেন আমি ওটাতে মন্ত্যব্য করিনি; শুধু আপনার
একটি আর্গুমেন্ট ব্যাপারে বলতে চেস্টা করেছি –
ধন্যবাদ 🙂
@সংবাদিকা, ক্লিয়ার করার জন্য ধন্যবাদ। তবে আপনার হাইলাইট করা অংশটার ভুল কোথায় ধরতে পারিনি। এভাবেই ত বিজ্ঞান আজ এতদূর এসেছে। বিজ্ঞানীরা তাদের কাছে বিদ্যমান তথ্যের উপর বিশ্বাস করে সিদ্ধন্ত নিয়েছিলেন এবং সেই সিদ্ধান্তকে প্রমান করার জন্য দিনরাত নিরলস পরিশ্রম করেছেন বলেই আজ পৃথিবী সমতলের বদলে গোলাকার। তবে সবাই যে সঠিক প্রমানিত হবেন এমন কোন কথা নেই। তবে মডেল যেটা প্রেডিকশঅন করে তা থেকে সিদ্ধান্ত নিতে কখনো বিজ্ঞানীরা পেছপা হন না। এ কারনেই বিজ্ঞান আজ এতদূর আসতে পেরেছে। মহাবিশ্ব সম্পর্কিত মডেল প্রেডিক্ট করে মহাবিশ্ব আপনা আপনি সৃষ্টি হতে পারে এবং সেটা ফলসিফায়েবল। তাই সেটা নিয়ে তাদের সিদ্ধান্ত নিতে কোন সমস্যা হয় না। তারা ভুল হতে পারেন তবে তাদের বিশ্বাস নিয়ে কাজ করে গেলেই শুধু সত্যটা জানা যাবে, নইলে নয়। এই কনভিকশনই বিজ্ঞানের সামনে এগিয়ে চলার মূল চালিকা শক্তি।
@হোরাস,
বিজ্ঞানের যা ভবিষ্যৎবাণী সফল হয়েছে সিংহভাগই আগে গাণিতিক ভাবে প্রমাণিত ছিল কিছু কিছু পস্ট্যুল্যূশন সত্য হয়েছে। সমস্যা হল যেসব কেবল ইনফারেন্স করা হয়েছে ঐ সব নিয়ে।
“ব্রহ্মাণ্ড সৃষ্টি”…. এর “পক্ষে” অভিজ্ঞতাজনিত কিংবা পরীক্ষামূলক কোন প্রমাণ যেমন নেই এর “বিপক্ষেও” তেমন কোন প্রমাণ নেই। ঠিক যেমন নেই এই মহাবিশ্বের আয়তন কত?? ভর কত??? এর জন্য কি একক ধরা হবে??? কিংবা এর আয়তন এবং ভর যদিও থাকে তাহলে এই “মহাবিশ্বটিই” বা কিসের মধ্য আছে???
ব্যাপার হল বর্তমান বিজ্ঞানের যে মশল্লা আছে তা দিয়ে এসব জানা সম্ভব নয়। হয়ত ভবিষ্যতে পারা যাবে। আমার জানা মতে সমসাময়িক বিজ্ঞানীরাও এসব নিয়ে গবেষণা করেননা। দু-একজন যারা করেনা তারা মূলত “বিষয়টি” নিয়ে করেননা; জ্ঞানের জগতে যা যা আছে ওসব ঘাটা ঘাঁটি করে পক্ষে-বিপক্ষে প্রমাণ হাজির করার চেষ্টা করেন।
আপনাকে ধন্যবাদ 🙂
ব্রহ্মাণ্ড সৃষ্টির আজ পর্যন্ত সবচাইতে গ্রহণযগ্যো তত্ত্ব বিগব্যাং তত্ত্ব তবে এটাতেও অনেক পরিশুদ্ধির বাকি আছে। এরও কয়েকটি মডেল আছে। এটা এখানে আলোচনা বাহুল্য।
“ব্রহ্মাণ্ড সৃষ্টি” = “ব্রহ্মাণ্ড কারও দ্বারা সৃষ্টি”
@সংবাদিকা,
গানিতিক মডেল সল্ভ করার পরেই বিজ্ঞানীরা মাল্টিভার্স তত্বও পেয়েছেন।
@হোরাস,
এটা একটা হাইপোথিসিস…… অনেকে বলেন নির্দিস্ট সংখ্যক অনেকের দাবী অসীম ব্রহ্মাণ্ড !!!
অফটপিক,
আচ্ছা কারও মনে প্রশ্ন জাগেনি নির্দিস্ট সংখ্যক হোক কিংবা অসীমই হোক…… কোন আধার এসব ব্রহ্মাণ্ড ধারন করছে !!! কিংবা ঐ আধারই কিসের মধ্য আছে!!!!
@ সংবাদিকা, অবশ্যই হাইপোথিসিস। সে ব্যাপারে দ্বিমত নাই।
অবশ্যই মনে আসে, সবাই এটা নিয়ে ভাবে। বিজ্ঞানীরা বলেন তাদের হাতে পর্যাপ্ত জ্ঞান নেই এই প্রশ্নের উত্তর দেবার। আর ধর্মগুরুরা বলেন এটা নিয়ে চিন্তা করোনা। শুধু স্রষ্টাই এই প্রশ্নের উত্তর জানে। আর আমরা আম জনতা ধর্ম গুরুদের কথা মেনে নেই কারন এটা আমাদের মনকে প্রবোধ দিতে সাহায্য করে তাই।
@সংবাদিকা,
প্রায় একই রকম কথা একজন একটি ইসলামী সাইটে যুদ্ধাপরাধীদের ব্যাপারে বলেছেন। বিচারের রায় না হওয়া পর্যন্ত গোলাম আজম, নিজামী, সাঈদীকে যুদ্ধাপরাধী বলা অনুচিৎ। এ রকম আরো তিনটা ঘটনা দেখলাম- নাফিস, মালালা ও আসিফের বেলা। তিনটার সাথেই মৌ্লবাদী ইসলাম বা ইসলামী সন্ত্রাস জড়িত। দুনিয়ায় এমন হাজার ঘটনা নিত্যদিন ঘটছে কিন্তু প্রমাণ সাপেক্ষ অনুসিদ্ধান্তের তর্ক খুব কমই উঠে। আচ্ছা আপনি কি সব সময় এই সিদ্ধান্তে অটল থাকতে পারবেন? একটা আনকোড়া উদাহরণ দেই- আকাশের ভাব দেখে আমি বললাম, আজ বৃষ্টি হতে পারে। পরে দেখা গেল বৃষ্টি হলোনা। আমি কি মুক্তমনা রইলাম? কিংবা বিগ ব্যাং যদি মিথ্যা প্রমাণিত হয়, অথবা আলোর চেয়ে গতিশীল কিছু আছে যারা বলেছিলেন সেই বিজ্ঞানীদের কি মুক্তমনা বলা যাবে?
@আকাশ মালিক,
যদিও মন্তব্যটি সংবাদিকার উদ্দেশ্য করা, কিন্তু আমার মন্তব্য থেকে বিষয়টির অবতারণা দেখে আমি এর জবাব দেওয়ার প্রয়োজন মনে করছি। আপনি বলেছেন,
হ্যা ভাই আপনি মুক্তমনা রইলেন। কেউ যদি বলে থাকেন আজ মনে হয় বৃষ্টি হবে না, তিনিও মুক্তমনা রইলেন। কারণ সম্ভাব্য একটি বিষয় কে ( “হতে পারে” ) সম্ভাবনার দ্বারাই আপনারা প্রকাশ করেছেন কোন কনক্লুশন টানেননি। অর্থাৎ আপনি আপনার মন কে খোলা রেখেছেন “হতে পারে” শব্দটি ব্যবহার করে বা আপনি আপনার এ বিশ্বাসের ব্যাপারে কিছুটা সন্দিহান। এটাই আপনার মুক্ত মনের পরিচয়।
আপরদিকে এ ঘটনাতে কেউ যদি বলতেন “আজ বৃষ্টি হবেই” , তবে বৃষ্টি হোক বা না হোক তাকে আর মুক্ত মনা বলা যায় না কারণ সম্ভাব্য বিষয়ে তিনি কনক্লুশন টেনে দিয়েছেন।
আশা করি আমার অবস্থানটা আপনাকে বোঝাতে সক্ষম হয়েছি। আপনাকে ধন্যবাদ। (F)
@আকাশ মালিক,
১। ঐ যুদ্ধাপরাধীরা বাঙ্গালী এবং তারা যাদের হত্যা করেছে তারাও বাঙ্গালী। অপরাধীদের বিচার যারা করছে এবং বিচার যারা চাচ্ছে তারাও বাঙ্গালী এবং ঘটনা চক্রে আমিও আমিও বাংলাভাষায় কথা বলি কেননা আমিও বাঙ্গালী।
তারা যখন তাদের পক্ষে যুক্তি দিবে ওটা কোন ভাষায় দিবে????
২। আপনার কি সংশয় আছে ঐ সব ব্যাক্তিদের অপরাধ প্রমানিত নয়??? এক-দুইজন ছাড়া সবার অপরাধ আয়নার মতই প্রমানিত এবং পৃথিবীর যেকোন আদালতে তা প্রমান হবে। ঐ এক-দুইজনেরটাও প্রমান হবে আশা করা যায়। সবচাইতে বড় কথা সরকার আরও কয়েকজনকে ছাড় দিয়েছে তাদের শীর্ষ নেতৃত্বের সাথে ব্যক্তিগত সম্পর্কের কারণে।
৩। এখানে আইনের কথা হচ্ছে; ব্যক্তিগত নয়।
৪। মালালারটা হামলাকারী নিজে স্বীকার করেছে।
৫। নাফিসের কেস খুবই কমপ্লেক্স। এক কথায় উত্তরের স্কোপের বাহিরে।
৬। আসিফ মহিউদ্দিনের উপর হামলাকারী কে আগে তা বের হউক। যেই হউক তার বিচার হতে হবে।
@হোরাস,
আমার চেয়ে অনেক ভাল ভাবে সংবাদিকা আপনার মন্তব্যের জবাব দিয়েছেন, সে কারণে সে বিষয়ে আর কথা বলতে চাচ্ছি না। শুধু আপনার মন্তব্যের একটি অংশের জবাব দিতে বাধ্য হচ্ছি। আপনি বলেছেন,
বিজ্ঞানী হলেই তিনি মুক্তমনা হবেন এমন কথা ঠিক নয়। ধর্মে বিশ্বাসী বিজ্ঞানীর সংখ্যা কি এ পৃথিবীত খুব কম? বাংলাদেশের ডঃ এম শমসের আলী এক অতিমাত্রায় ধর্মে বিশ্বাসী বিজ্ঞানী, আমার জানা মতে নিউটনও ছিলেন ধর্ম বিষ্বাসী। তারা যদি মুক্ত মনা হন তাহলে ধার্মিকরাই বা মুক্তমনা হবেন না কেন?
এই ব্লগে এই লিন্ক টিতে গেলে দেখতে পাবেন ব্লগার চমৎকার ভাবে বর্ণনা করেছেন একই ব্যক্তি সম্পূর্ণ বিপরীত ধর্মী কতগুলো বিশ্বাস নিয়ে কিভাবে খুব স্বাভাবিক জীবন যাপন করেন। নামকরা বিশ্ববিদ্যলযের বিজ্ঞানের অধ্যাপক কিন্তু তিনি গোঁড়া ধার্মিক এটা আমি নিজে দেখেছি।
বিজ্ঞানীদের মুক্তমনা হওয়াটা স্বাভাবিক। কিন্তু বাস্তবিক অর্থে আনেক বিজ্ঞানীকে দেখা যায় নির্দিষ্ট বিষয়ের উপর গবেশণা করতে করতে তিনি মুক্তমনার পরিবর্তে আরও সংকির্ণ মনা হয়ে গেছেন।
@বিষন্নতা,
আপনি ঝোপের আশে পাশে পিটিয়েই যাচ্ছেন। আমি বলিনি সব বিজ্ঞানীই মুক্তমনা হয়ে থাকে। বিজ্ঞানী এখানে ইস্যু হল কখন? আমি বলেছি কেউ যদি এরকম সিদ্ধান্ত নেয় তবে তাকে মুক্তমনা বলা যাবে না কেন?
আপনি অভিযোগ করেছেন
প্রথমত প্রমানিত জিনিষে কেউ বিশ্বাস করে না। সেটা প্রমানিত। আর তাছাড়া আমি দেখিয়ে দিলাম আপনার এই সংজ্ঞা ভুল। আইন্সটাইন et al যদি মুক্তমনা হয়ে থাকে তবে তিনি/তাহারা অপ্রমানিত জিনিষে বিশ্বাস করতেন। এরপরেও এটা নিয়ে আর কিছু বলবার অবকাশ আছে বলে আমি মনে করি না।
@বিষন্নতা,
এটা একেবারেই নতুন ধারার অভিযোগ দেখতে পাচ্ছি।
দেখেন ঈশ্বর আছেন, এইটাই একটা বিশ্বাসের ব্যাপার। ঈশ্বর নেই এটি কোনমতেই একটি অপ্রমাণিত বিশ্বাস নয়,কাজেই আপনার অভিযোগ গ্রহণযোগ্য না।ঈশ্বর যে আছেন, সেটা প্রমাণের দায়ভার উনার নিজের, আপনার বা আমার নয়।
কাজেই একটা সঠিক কারন দেখিয়ে বলেন যে কেন স্রস্টা নামক কিছু একটা কে বিশ্বাস করতেই হবে?আপনি কি নিজে স্রষ্টাকে দেখেছেন? দয়া করে বলে বসবেন না যে এত বড় মহাবিশ্ব একা একা সৃষ্টি হতে পারে না, কারন এটার মত ভঙ্গুর যুক্তি আর কিছু নেই।যদি কোনকিছুই স্রষ্টা ছাড়া সৃষ্টি না হতে পারে, তবে এটাও মনে করার কারন আছে যে স্রষ্টা নামক জিনিসটার স্রষ্টা কে।এটার উত্তর কিন্তু আস্তিকরা কোনদিন দিতে পারেন নি, বরং প্রতিবারই পিছলে গেছেন।
যাহোক আমি বরং এটাই বলব যে ঈশ্বর থাকতেও পারেন আবার না থাকতেও পারেন।যদি ঈশ্বর নিজে এসে আমার সাথে দেখা করেন তবে আমি তাকে মেনে নেব।তার আগ পর্যন্ত ঈশ্বরের অস্তিত্ব বা অনস্তিত্ব নিয়ে মাথা ঘামানোর দরকার মনে করি না আমি। মানে ঠিক নাস্তিক বলতে যা বুঝায় আমি হয়ত তা নই। তো এবার কি আপনার সংজ্ঞা অনুযায়ী আমি মুক্ত মনার দলে পড়ি?
@অর্ফিউস,
আমি ঈশ্বর এর কথা বলিনি আমি বলেছি স্রষ্টার কথা। কেন সেটা উপরে ব্যখ্যা করেছি। আপনার চিন্তা ধারা যদি উপরোক্ত বক্তব্যের মতো হয়, তাহলে আমার মতে অবশ্যই আপনি মুক্তমনা।
হ্যাঁ, মওলানা সাহেব ঠিক কথাই বলেছেন। কারণ কোরান হাদিছ তো শুধু মাত্র নামাজ রোজার জন্য নয়। এর উপর জ্ঞান অর্জন করলে মানব জাতির বেচে থাকার জন্য সব ধরণের জ্ঞান বিজ্ঞানের কথা পাওয়া যাবে।
অমুছলিমদের নিকট হতে আর কোনই জ্ঞ্যান বিজ্ঞান ধার করার দরকার পড়বেনা।
এর মধ্যে পাওয়া যাবে, সব চাইতে উত্তম রাস্ট্র বিজ্ঞান, সমাজ বিজ্ঞান,প্রশাসন বিজ্ঞান, আইন বিজ্ঞান, ব্যবসা বিজ্ঞান।
আর তা ছাড়াও পাওয়া যাবে, চিকিৎসা বিজ্ঞান,পদার্থ বিজ্ঞান, রসায়ন বিজ্ঞান,মহাকাস বিজ্ঞান।
আর কি চাই?
শুধু মাত্র যেটা দরকার এখন, তা হল কোরান হাদিছের প্রতি শব্দ ও বাক্যের অর্থ ভাল করে বুঝে বুঝে পড়ার।
দেখুন না,মুসলমানেরা কোরান হাদিছ ভাল ভাবে বুঝে পড়েনা বলেই তো মুসলমানদের এত অবনতি।
আসুন আমরা সবাই কোরান হাদিছ কে নিজে ভাল করে বুঝে বঝে হৃদয়ঙ্গম করার চেষ্টা করি এবং ধাপে ধাপে উন্নতি লাভ করি।
সংগঠনের কোন বিকল্প নাই। কিন্তু নাস্তিকতা যেহেতু কোন পূর্ণাঙ্গ দর্শন না সে জন্য নাস্তিকতার ব্যানারে গড়ে ওঠা সংগঠন আগ্রাসী হয়ে উঠতে বাধ্য। শুধুমাত্র ঈশ্বর নাই, এই কথা বলার জন্য সংগঠন গড়ে ওঠার মতন বোকামো মনে হয় আর কিছুতেই হবে না কারন, ঈশ্বরের চাইতে অনেক বড় সমস্যা সমাজে বিদ্যমান। মুক্তমন আর নাস্তিকতা এক জিনিস না, যদিও একজন মুক্তমনাকে যুক্তির খাতিরেই নাস্তিক হতে হবে। এভাবে বললে মনে হয় ভালো বলা হয়, সকল মুক্তমনাই নাস্তিক, কিন্তু সকল নাস্তিক মুক্তমনা নয়।
সুতরাং সঙ্গত কারনেই আমাদের জানা দরকার বেশি সমস্যা বা আসল সমস্যা কোথায়। এই জিনিস না জানলে আমরা সুবিধাপ্রাপ্ত ইন্টারনেটশোষী জনতা আওয়াজ ছাড়া আর কিছুই করতে পারব না যদিও তার বিপরীতে অন্য গোষ্ঠী ঠিকই আখের গোছাতে থাকবে।
বাঙলাদেশের মতন গরীব দেশে নাস্তিকতার মতন এলিট মতবাদ গৃহিত হয় সাধারনত সমাজের সুবিধাপ্রাপ্ত মুষ্টিমেয় কিছু মানুষের কাছে যাদের বেশিরভাগেরই দুনিয়ার কোন কিছুতেই কিছু আসে যায় না। যার জন্য ভার্চুয়াল ঝড় তোলা ছাড়া সত্যিকারের কর্মকান্ড বলতে যা বোঝায় সেটা তারা করতে রাজি থাকে না এবং সেটা তাদের শ্রেনীচরিত্রের কারনেই।
আরেকটা যেটা হয় কেউ কেউ পারে না, সুযোগের অভাবে বা আরো পরিষ্কার করলে বললে ইচ্ছা থাকলেও পারে না পছন্দানুযায়ী কোন সংগঠনের অনস্তিত্ত্বের কারনে। সেদিক থেকে আপনি খুবই চমৎকার একটা কাজ করে চলেছেন। অভিনন্দন আপনাকে।
@সাইফুল ইসলাম,
অসাধারন কথা বলেছেন। (Y)
@সাইফুল ইসলাম,
ওনার এই উদ্যোগ আসলেই অত্যন্ত প্রশংসনীয়। এই উদ্যোগ নিজগুণেই দাঁড়াবার যোগ্যতাসম্পন্ন। এর পেছনে এই মুক্তমনারা একাট্টা হও, “যিনি মানবতাবাদের কথা বলেন, মুক্তমতের কথা বলেন তাকে সম্মান করতে হবে। সে গুরুস্থানীয় হলে সেই সম্মান তাকে দিতে হবে” এই সুপারস্ট্রাকচারগুলো কিন্তু একেবারেই নেসেসারি ছিলো না। আমার মতে এরকম উদ্যোগে এই সুপারস্ট্রাকচারগুলো উপস্থিতি বরং মূল উদ্যোগটার জন্যে ক্ষতিকর হবার সম্ভাবনাই রাখে। একদল লোক একত্র হয়ে গুরুস্থানীয়কে সম্মান করতে বসলে সেখানে ক্রিটিকাল চিন্তাভাবনা কাল্টের কোলে মৃত্যুবরণ করতে পারে।
@রূপম (ধ্রুব),
এবং এটাই হয়ে এসেছে এতকাল, ইতিহাসও তার সাক্ষী। পারলৌকিক বলয় থেকে বেরিয়ে এলেও লৌকিক-গুরু-বৃত্তে, বন্দি হয়ে যায় জাগতিক কৌতূহল। তখন আধেয়-র চেয়ে আধার হয়ে ওঠে মুখ্য।
@সাইফুল ইসলাম,
চমৎকার বলেছেন।
@সাইফুল ইসলাম,
নাস্তিকেরা যদি একত্রিত হয়ে কোন সংগঠনের জন্ম দেয় তবে সমস্যা কোথায়? কেউ তো আর নিজেকে শত ভাগ মুক্তমনা দাবী করতে পারে না। এটা একটা চলমান প্রক্রিয়া। নারীবাদী, সাম্যবাদী, মানবতাবাদী, পরিবেশবাদী সবাই একজন আরেকজনের পরিপূরক। তাই প্রতিটি প্রগতিশীল সংগঠনের একজন আরেকজনের প্রতি সহযোগীতা ও শ্রদ্ধার ভাব থাকাটা বাঞ্ছনীয়। এক্ষেত্রে কোনরকম দ্বন্দ্ব সৃষ্টি করা কেবলমাত্র প্রতিক্রিয়াশীল শক্তিকেই সাহায্য করবে।
@অশোক,
সমস্যার কিছু নাই তো! বাঙলাদেশে রক্তচোষাদের জন্য আলাদা সংগঠন আছে। বাঙলাদেশে যুদ্ধাপরাধীদের আলাদা সংগঠন আছে। বাঙলাদেশে ত্যানা প্যাঁচানো কলমলেখিয়েদের আলাদা সংগঠন আছে। সুতরাং নাস্তিকদের জন্য আলাদা সংগঠন খোলাটা তো রীতিমতন দায়িত্বের পর্যায়ে পড়ে নাস্তিকদের জন্য।
আমার সমস্যা এইখানে না, আমার সমস্যা হল, আপনার উদ্দেশ্যটা কী আসলে সেখানে। সারা দুনিয়ার জনগন আজকে নাস্তিক হলে দুনিয়ার কী এমন আকাশ পাতাল হবে?
দূর্ণীতি কমবে?
রক্তচোষাচুষি কমবে?
বাসে ধর্ষন কমবে?
গার্মেন্টসে পুরে রোস্ট হওয়া কমবে?
ধোঁয়ায় দম বন্ধ হয়ে হত্যার সংখ্যা কমবে?
রাস্তার জানজট কমবে?
জনগন পেট ভরে ভাত পাবে?
আপনি ইন্টারনেট ব্যাবহার করার সুবিধা পান, পঞ্চগরের রইস মিয়া ইন্টারনেট ব্যাবহার করতে পারবে? ভিক্ষুকের সংখ্যা শুণ্যতে নামবে?
ফ্লাইওভারের নীচে চাপা পড়ে মানুষ হত্যা বন্ধ হবে?
আম্লিগ-বিম্পির গনতন্ত্রের ভালোবাসা কমবে?
সীমান্তে ফেলানী হত্যা বন্ধ হবে?
ইন্ডিয়ার দাদাগীরি বন্ধ হবে?
আম্রিকার মানবতার ঝান্ডা ওড়ানো বন্ধ হবে এই বাঙলায়?
বসুন্ধরা, যমুনা ফিউচার পার্কে আপনি আমি যাই, আমার আপনার পাশেই বস্তির কলিম চাচা তার পরিবার নিয়ে এসব জায়গায় বাজার করতে যেতে পারবে?
বছরে ৭ ৮বার করে বিদ্যুতের দাম বাড়ানো বন্ধ হবে?
কুইক রেন্টাল পাওয়ার প্ল্যান্টের মতন মামদোবাজি বন্ধ হবে?
এবং আপনি চাইলে এমন আরো অজস্র ???? দিয়ে ভরিয়ে দিতে পারব।
এখন বলেন এর কোনটা আপনার নাস্তিকদের সমন্বয়ে গড়ে ওঠা সংগঠন করতে পারবে?
না পারলে শুধুশুধু এনার্জি নষ্ট করার কোন মানে নাই। কারন ঐ সংগঠনের ঘরে বসে তাস খেলা মাছি মারা আর জাকির নায়েকের মতন একটা মোল্লার গোষ্ঠি উদ্ধার করে নিজেরাই আরেক মোল্লাগোষ্ঠি হওয়া ছাড়া আর কিছু হবে বলে আমার ক্ষুদ্র মস্তিষ্কে ধরে না। উদাহরন চান??
এই পোস্টের মন্তব্যেই দেখেন হাকিম চালকা নামের একজন মাওলানা আছে। ওনারে আপনি যাই জিজ্ঞেস করবেন তারই একটা সহি ইসলামি উত্তর পাবেন। ইসলাম সংক্রান্ত লেবেঞ্চুস লেখা ছাড়া উনি সাধারন কোন পোস্টে মন্তব্য করেন না। কারন সেটা ইসলামি না।
আর হারিয়ে যাওয়া ভবঘুরে নামের আরেক মুফতি আছে(পড়ুন ছিল)বস্তুত চাকলা সাহেব তারই একনিষ্ঠ সেক্রেটারি, তার কাছেও আপনি যাই জিজ্ঞেস করবেন তারই হাদিস কোরানের নিয়মানুযায়ী ইসলামি উত্তর পাবেন। কিন্তু এত গো-এষনায় কারো কি কিছু ছিড়েছে? এক গাছও না।
সুতরাং আমি, শুধুমাত্র নাস্তিকদের জন্য, নাস্তিকদের দ্বারা এবং নাস্তিকদের সংগঠন গড়ার ব্যাপারে তেমন কোন যুক্তি পাই না। আপনার থাকলে পেশ করুন। আলোচনা চলুক।
ধন্যবাদ।
@সাইফুল ইসলাম,
ভাই শুনেন, আপনার অন্যান্য যুক্তি খুবই সঠিক। ওগুলাকে নানাভাবে বন্ধ করার রাস্তা হয়ত আছে।কিন্তু মহাদেব আমেরিকা থামানোর আসলেই কোন রাস্তা আছে কি?আপনার কিছু চিন্তা চেতনা থাকলে শেয়ার করেন।এই রাক্ষসটাকে( আমেরিকা) কিভাবে থামানো যায় এইটা আমার মাথায় আসেনা।আমারতো মনে হয় না যে আগামী ৫০০ বছর আমেরিকার দাদাগিরির হাতথেকে কারো নিস্তার আছে।সোভিয়েত ছিল এদের বিরুদ্ধে একটা বড় শক্তি, কিন্তু সেটাও আর নাই।এই একক পরাশক্তির বিরুদ্ধে লড়াইয়ের রাস্তা আসলেই কি আছে?আপনার কি মনে হয়?
আমিও পাইনা তবে, বাংলাদেশ নামের এই নতুন ধর্মধামে মুক্ত মনা সহ সব শ্রেনীর মানুষের জন্য ন্যায় বিচার পাবার জন্য একটা আইন থাক, আর সেই আইনের বাস্তব প্রয়োগ হোক এটা চাই। এতেই আসিফের মত মুক্ত মনের মানুষরা নিরাপদে কাজ করার সুযোগ পাবেন।আর হুমায়ুন আযাদের মত লেখক কে মরতে হবে না নির্মম ভাবে।
সুতরাং এইখানে শুধুমাত্র নাস্তিক নাস্তিক করে চিল্লানোর আসলেই মানে নেই, এর স্থলে বরং সকল মুক্ত মনে মানুষের একটা একতা দরকার।এতে কিছুটা কাজের কাজ হতে পারে বলেই আমার বিশ্বাস।
@অর্ফিউস,
জনগনের সামনে কোন কুতুব কোন দিন মিনার উচু করতে পারে নাই। পারবেও না।
আলাদাভাবে মুক্তমনা মানুষদের জন্য আইন চাওয়ার সাথে আমি মুসলমানদের জন্য আলাদা আইন করার কিংবা প্রত্যেকটা ধর্মের লোকদের জন্য আলাদা আলাদা আইন করতে হবে এই চাওয়ার কোন পার্থক্য দেখলাম না।
আর যদি সব শ্রেণীর মানুষের কথা বলেন তাহলে মুক্তমনারা আবার কারা? আলাদা প্রজাতি নাকি?!
@সাইফুল ইসলাম,
দেখা যাক।আমেরিকাতে তো আপাতত পুঁজিবাদ ছাড়া কিছু দেখছি না। দেখি জনগন কবে কাজটা করতে পারে। করতে যে ঢের সময় লেগে যাবে সেটা বুঝতে পারছি কিন্তু। 🙂
যতদিন পর্যন্ত জনগণ জাগছে পরিপুর্ন ভাবে, ততদিন পর্যন্ত তো যারা ধর্মের চাপাবাজির বিরুদ্ধে লেখেন আর সহিংসতার স্বীকার হন। তাদের জন্য একটা কিছু করা লাগবে না?না হলে তো বিপ্লব হবার আগেই সব বিপ্লবী রা সাফ হয়ে যেতে পারে সরকারের( সেটা পুঁজিবাদী বা ধর্মের রক্ষক যারাই হোক না কেন) মার খেয়ে। :-s
@সাইফুল ইসলাম,
আপনি বাংলাদেশের যে সমস্যাগুলো আলোকপাত করেছেন তা সমাধান করা রাজনৈতিক দলের দায়িত্ব। কিন্তু বিভিন্ন প্রগতিশীল সংগঠনগুলো এক ধরণের প্রেশার গ্রুপ হিসাবে কাজ করতে পারে। আমাদের দেশের প্রেক্ষাপটে নাস্তিকদের নিজেদের একটা সংগঠন থাকা অত্যন্ত জরুরী। বিপদে আপদে যেন একজন আরেকজনকে সাহায্যে এগিয়ে আসতে পারে। একই কারনে সমকামীদেরও সংগঠন থাকা উচিত। এ ছাড়া মানুষের ভিতর জমা থাকা হাজার বৎসরের জঞ্ঝাল ছাপ করার জন্যও এ সব সংগঠনের উপযোগীতা অস্বীকার করা যায় না। আপনি যে সমস্যাগুলো বললেন , তার পিছনে অন্যতম এক কারণ হলো দারিদ্রতা এবং সম্পদের অসম বন্টন। এই গরীবদেশে ধর্মের পিছনে যে সময়, শক্তি এবং অর্থের অপচয় হ্য় তা বলার অপেক্ষা রাখে না। দেশের উন্নতির জন্য হাজারটা ফ্রন্টে লড়াই করা প্রয়োজন। হাকিম চাকলাদাররা যদি এক ফ্রন্টে লড়াই করে তো ,করুক না। আপনাকে তো কেউ অন্য ফ্রন্টে লড়াই করতে বারণ করে নাই। প্রগতিবিরোধী আদরের ধর্মটিকে আঘাত না করে সামনে এগোতে পারবেন বলে তো মনে হয় না।
ধন্যবাদ
@অশোক,
রাজনৈতিক দলের দায়িত্ব মানে? ভাত তেল আলুর দাম বাড়লে নিশ্চই রাজনৈতিক দলের দাদারা যেহেতু বাড়িয়েছে সেহেতু কমানোও তাদের দায়িত্ব বলে গালি একটাও কম দেন না? জ্যামে আটকায়ে থাকলে নিশ্চই রাজনৈতিক দলের কাজ বলে মেজাজটা প্রফুল্ল হয়ে ওঠে না?
এতগুলো সমস্যা দেখানোর পরেও আপনার কাছে প্রধান সমস্যা হচ্ছে নাস্তিক সমস্যা!
বাঙলাদেশের ইতিহাসে ২, ৪ জন নাস্তিক নিহত হওয়ায় আপনার মানবিকতাবোধ জেগে উঠেছে, সেই সাথে বিপ্লবী হয়ে নাস্তিক বাঁচাও প্রকল্পের ডাক দিয়ে বসে আছেন।
প্রত্যেকদিন সড়ক দূর্ঘনায় মানুষ মরছে, শ্রমিক পুড়িয়ে মারা হচ্ছে, দম বন্ধ হয়ে মারা যাচ্ছে, চিকিৎসা না পেয়ে মানুষ মারা যাচ্ছে তখন আপনার মানবিকতা ঝান্ডা ন্যাতানো অবস্থা থেকে ঠিক চাগিয়ে উঠতে পারছে না এই তো?
আচ্ছা বুঝলাম, আপনারা একটা সংগঠন বানালেন। আপনাদের কাজ কী হবে? দের দু হাজার বছর পর পর দু একটা আসিফের গায়ে ছুরির কোপ আর আপনাদের বিপ্লবী লাফালাফি? অন্যান্য সময়? মাছি মারা?
এই কথা কোন মুসলমান বললে এতক্ষনে মুক্তমনায় হাকিম চাকলা সহ আরো বহু কুতুবরা এখানে কোরান হাদিসের আয়াত তুলতে তুলতে হাতে ব্যাথা করে করে সাম্প্রদায়িকতার সূত্র আবিষ্কার করে প্রমান করত ইসলাম কত সাম্প্রদায়িক। আরে ভাই ধর্ম কি শুধুশুধু সাম্প্রদায়িক/ধ্বংসাত্নক হয়? আপনি বঞ্চনা, শোষন, দারিদ্র, অসাম্য নাই করেন, শিবির করা পোলাপানের ঠ্যাকাই পড়ছে রাস্তায় পিটাপিটি করতে নামতে! একটা অযৌক্তিক অসাম্যের সমাজে এমন সাম্প্রদায়িকতা, ধ্বংসাত্নক কাজকারবার হবেই কারন সাধারন মানুষ এই ব্যাবস্থার উপরে ক্ষুব্ধ।কেউ তো আর জন্ম থেকেই শিবির না। তাদের হাতে একটা অল্টারনেটিভ সিস্টেম আছে(সিস্টেম ভুল সেটা মানলাম) সুতরাং সেটা তারা প্রয়োগ করতে চাইবেই। তার উপরে আছে সংবিধানের হাস্যকর রাষ্ট্রধর্মের বিধান। এই অবস্থায় নাস্তিকদের জন্য সংগঠন করতে আপনার মধ্যবিত্ত কিংবা উচ্চবিত্ত মগজ চাইতেই পারে কিন্তু সেটা উত্তপ্ত মগজেরই কারসাজি। ঠান্ডা মাথায় ভাবুন কোন সমস্যার সমাধান বেশি জরুরী। মানুষকে নাস্তিক বানানো নাকি উপরে দেয়া আমার অতিক্ষুদ্র একটা তালিকা।
শেষ কথা হল, সংগঠন করার অধিকার আপনার আছে। এমন কী আমিও সংগঠনের পক্ষে। কিন্তু শুধু নাস্তিক বাঁচাও প্রকল্পে নাস্তিকদের দ্বারা, নাস্তিকদের জন্য এবং নাস্তিকদের তৈরী রাজনীতি উন্নাসিক সংগঠনে আমি শুধু বোকামো, বোকামো আর বোকামো দেখি যেটা সুস্থ মস্তিষ্কে করতে আমি রাজি না।
আপনার নাস্তিক সংঘের জন্য রইল শুভেচ্ছা।
আগামি জেনারেশন এর জন্য মুক্তচিন্তার সমাজ এর স্বপ্ন আমরা কম বেশী প্রতিটা নাস্তিক/মুক্তচিন্তকই দেখি। কিন্তু সকলেই মনে করে যে সেই সমাজ আপন-আপনি তৈরী হয়ে থাকবে আর আমাদের পরবর্তী জেনারেশন তাতে আরাম করে সুখে শান্তিতে দিন কাটাবে। এমন চিন্তাভাবনা করা আর আকাশ কুসুল ভাবা একই।
সংঘবদ্ধ না হলে এ ধরনের সমাজ আমরা কল্পনাও আমাদের বোকামি ছাড়া আর কিছুই না।
পারভেজ আলম ভাই এর লাইব্রেরীর কনসেপ্টা খুবই ভাল লাগলো। আমাদের “বাংলাদেশ বিজ্ঞান ও যুক্তিবাদী সংগঠন” মাঠে কাজ করার প্রত্যাশা নিয়ে ইতোমধ্যেই শুরু করেছে সাপ্তাহিক পাঠ-চক্রের কর্মশালা।
লেখাটিতে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ কথা আছে, যা নিয়ে গভীর আলোচনা হতে পারে। আসলেই মুক্তমনারা শতধা বিভক্ত, কেবল নিজ নিজ পরিধিতেই যেন ব্যস্ত, অন্যদিকে মোল্লারা কিন্তু অনেক সংগঠিত।
এই ব্যাপারটা আমারও নজরে এসেছিল। কিছুদিন আগে আমি তাই আপনারই মত কিছুটা হতাশ হয়ে ফেসবুকে লিখেছিলাম –
খুব যে লাভ হয়েছিল তা নয়। তারপরেও আশা করতেই হবে। করতে হবে নিজেদের সার্ভাইভালের জন্যই। আসিফ মহিউদ্দীনের উপর হামলার পরেও যদি আমাদের টনক না নড়ে তবে দুর্ভাগ্যেরই।
যাহোক, আপনার আরজ আলী মাতুব্বরের সম্মেলনের সফলতা কামনা করছি।
@অভিজিৎ, ধন্যবাদ দাদা আপনার অসাধারণ স্ট্যাটাস এখানে পোষ্ট করার জন্য। ফেসবুকে খুবই অনিয়মিত আমি আর সে কারনেই স্ট্যাটাসটা আমার চোখে পড়েনি।
সত্যই কিছু অতিমাত্রায় লিবারেল লোকজন আজকাল আবেগ শুন্য হতে গিয়ে,মনে হয় বোধ বুদ্ধিও হারিয়ে ফেলেছেন। এটাও বুঝতে চাননা তাঁরা যে বাস্তব দুনিয়াতে, বিশেষ করে অতিমাত্রার ধর্মীয় সংবেদনশীল এলাকার বাসিন্দারা আর যাই হোক যুক্তি, মানবতা এইসব কিছুই বুঝবেন না।
আমার মনে হয় যে কিছু মুক্ত মনা রা নাম পরিচয় গোপন রাখে, অন্তত ব্লগে, তার কারন মুক্ত মনাদের কোন, সঙ্ঘবদ্ধতা নেই, কাজেই আক্রান্ত হলে দেশের প্রচলিত আইন ছাড়া প্রতিকার পাবেন না; সেই আইন যা আসলে প্রতিক্রিয়াশীলদের রক্ষা করার ঢাল হিসাবেই তৈরি হয়েছে।
কাজেই এই আইনে প্রগতিশীলদের সুবিচার পাওয়ার তেমন কোন সম্ভাবনা নেই, যদি না প্রগতিশীলরা একাট্টা হয়ে আইনগুলিকে আরও মানবিক করে তোলার জন্য আন্দোলন করেন।যদিও আমার জানা নেই যে বিড়ালের গলায় ঘন্টা বাধবে কে! বলতে কষ্ট লাগছে তবু বলতে হচ্ছে যে , আসিফ সুবিচার পাবেন না। আমাদের বাংলাদেশে এটা সম্ভব না।
এদেশে দিন দিন আইন তৈরী হচ্ছে প্রতিক্রিয়াশীলদের দাবী অনুসারে।কাজেই আসিফের মত মানুষ এই আইনে সুবিচার কিভাবে পাবেন আমার জানা নেই।
লেখক কেও অভিনন্দন (F) , আর নিজে লজ্জিত হচ্ছি কারন লেখকের মত , অথবা আসিফের মত এই সৎ সাহস আরও অনেকের মত আমার ভিতরেও নেই, কারনটা ওই একটাই।মারধোর খাবার ভয়, এবং তার পর কোনপ্রকার সুবিচার পাব না।
আসিফের পরিবার অন্তত আসিফের পাশে আছে, আমার পরিবার সেটাও থাকবে বলে ভরসা করতে পারি না।কাজেই জান বাঁচাতে চুপ চাপ থাকি।
@অভিজিৎ ভাই, আপনার প্রতিটা কথার সাথেই সহমত। অনেকেই যখন অভিযোগ করে যে আপনারা মুক্তমনারা একটি ধর্মগোষ্ঠি অথবা জাতীয়তাবাদী গ্রুপ হয়ে যাচ্ছেন আমি মোটেই সেটাকে অভিযোগ গন্য করিনা। টেকার জন্যে, বিকাশের জন্যে সংগবদ্ধতা জরুরি। মুক্তমনাদের জন্যে নিজ নিজ পার্থক্য বজায়ে রেখেও সংগবদ্ধ হওয়া সম্ভব, সেটা না পারলে আর মুক্তমনা বলে দাবি করে কি লাভ। মুক্তমনা হওয়াটাতো শ্রেফ চিন্তার বিষয় না, চর্চারও বিষয়।
কারো অনুসারী হওয়া বা কারো নেতৃত্ব মানা অথবা কাউকে গুরুস্থানীয় গন্য করা দোষের কিছু না। আপনি যেই মতেরই হন না কেনো এই বিষয়গুলা থাকবেই, সামাজিক প্রাণীর ক্ষেত্রে বিশেষ করে মানুষের মতো ‘ভাষা’ নির্ভর প্রাণীর ক্ষেত্রে এটা খুবি সত্য। কিন্তু ভক্তি থাকলেই সেটা সমালোচনাহীণ হবে এমন কোন নিয়ম নাই। আমাদের দেশেই ভক্তিবাদের ক্ষেত্রে পুরা এর বিপরীত ট্রাডিশন আছে। বুদ্ধ থেকে লালন পর্যন্ত এদেশে যতো বড় বড় দার্শনিক এসেছেন তারা বৈদিক অথবা শরিয়তী বিধী বিধান, জাত পাত সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে প্রশ্ন তুলেছেন, ভক্তদের পরামর্শ দিয়েছেন এসব ক্ষেত্রে প্রচন্ড ক্রিটিকাল হওয়ার। এদের অনেকেই ভক্তির কথা বলেছেন, কিন্তু সেই ভক্তি সমালোচনাহীন অন্ধ ভক্তি না। মধ্যযুগের নাথ সাহিত্য গোরক্ষ বিজয় এক্ষেত্রে অন্যতম উদাহরণ, যেখানে গোরক্ষনাথ তার গুরু মীননাথকে ভুল ধরিয়ে দিয়ে ঠিক পথে ফিরিয়ে এনেছেন। মীননাথ বিরাট ফিগার, সহজীয়া এবং নাথ দুই সম্প্রদায়েরই আদী গুরু। সেই গুরুর ভুল ধরিয়ে গোরক্ষনাথ সাম্রাজ্য বিজয়ের চেয়েও বড় কাজ করেছেন এইটা হইলো উপজিব্য। গোরক্ষবিজয় আবার লিখেছেন একজন নাথবাদী মুসলমান শেখ ফয়জুল্লাহ। এই বিষয়গুলাকে আমাদের ধরতে হবে, নিজেদের ইতিহাস ঐতিহ্য থেকে মুক্তমনা হওয়ার ধারণা ও চর্চাগুলো বের করে আনতে হবে। মানুষকে সম্মান করতে হবে, যিনি মানবতাবাদের কথা বলেন, মুক্তমতের কথা বলেন তাকে সম্মান করতে হবে। সে গুরুস্থানীয় হলে সেই সম্মান তাকে দিতে হবে, তবে অবশ্যই ভক্তি অন্ধ হওয়া যাবেনা, ক্রিটিকাল হতে হবে।
@অভিজিৎ, এই প্রসঙ্গে আমিও বলেছিলাম –
কিন্তু লাইক দেওয়াটাই সার হয় আরকি।
@অভিজিৎ,
আমার একটি ব্যক্তিগত মতামত আছে। কেবল ঈশ্বর বিশ্বাস অবিশ্বাসের উপর কোন সংগঠন দাঁড়াতে পারেনা। আমি দেখেছি বেশির ভাগ রাষ্ট্রিয়/মানবিক ব্যপারে আমাদের মতামত এতই ভিন্ন হয় যে একে অন্যকে গালাগালি দিতে দেখি। তাই আমার প্রশ্ন প্রগতিশীলতা কি কেবল ধর্ম/ঈশ্বরেই সীমাবদ্ধ থাকবে ?
ঈশ্বর অবিশ্বাসী দুই গ্রুপের কাঁদা ছোড়াছুড়ি দেখতে দেখতে বিরক্ত হয়ে ব্লগ পড়া বন্ধ করে দিয়েছিলাম(মুক্ত-মনার কথা বাদ) ।