এক শাফিলিয়ার শোকগাঁথা
“I don’t pretend like we’re the perfect family no more,
desire to live is burning,
my stomach is turning,
but all they think about is honour,”– শাফিলিয়া
চঞ্চল মতির সুন্দর চেহারার একজন মেধাবী ছাত্রী ছিল ১৭ বছরের তরুণী শাফিলিয়া। আজ থেকে ৯ বছর পূর্বে ২০০৩ সালে এই নিরপরাধ মেয়েটিকে নির্মম ভাবে খুন করে তার আপন মা ও বাবা। আরো পাঁচ-দশটা মেয়ের মতো তার চোখেও সপ্ন ছিল। সাধ ছিল বড় হয়ে আইনজীবী হবে। পরাধীন নারী নয়, স্বাধীনভাবে একজন মানুষ হয়ে বাঁচতে চেয়েছিল শাফিলিয়া। ২০১০ সালে প্রকাশিত বাংলাদেশের ইত্তেফাক পত্রিকা থেকে ঘটনার কিছু কিছু বিবরণ এখানে তোলে দেয়া হলো।
পাকিস্তানি এই পরিবারটির বাস উত্তর পশ্চিম ইংল্যান্ডের চেশায়ারে। ৫০ বছর বয়স্ক ইফতিখার আহমেদ ও তার স্ত্রী ফারজানা আহমেদের (৪৭) চার কন্যা ও এক পুত্র নিয়ে সংসার। ছেলেমেয়েরা জন্মসূত্রে ব্রিটেনের নাগরিক। ২০০৩ সালের ১১ সেপ্টেম্বর খুন করা হয় বড় মেয়ে শাফিলিয়া আহমেদকে। কিন্তু অসীম দক্ষতায় ইফতিখার আহমেদ তার মেয়ের লাশ গুম করে ফেলেন। ছেলেমেয়েদের শাসিয়ে দেন তারা যেন এ ব্যাপারে মুখে টু শব্দ না করে। শাফিয়ালা স্কুলে যাওয়া বন্ধ করে দিলে কয়েকদিন পর তার স্কুলের পক্ষ থেকে যোগাযোগ করা হয় ইফতিখার দম্পতির সঙ্গে। স্কুল কর্তৃপক্ষকে তারা জানিয়ে দেন শাফিলিয়া ‘নিঁখোজ’ হয়েছে। আর নীরব থাকা নিরাপদ হবে না মনে করে তারা পুলিশের কাছে মেয়ের নিঁখোজ হওয়া নিয়ে একটা সাধারণ ডায়েরি করেন। শাফিলিয়ার স্কুলের পক্ষ থেকেও পুলিশের কাছে বিষয়টি অবহিত করা হয়। মাঠে নামে ব্রিটেনের পুলিশ ও গোয়েন্দারা। হন্যে হয়ে তারা শাফিলিয়ার ‘অপহরণকারীদের’ পিছু ছোটে।
পরের বছর ইফতিখারদের আবাসস্থান থেকে ১১০ কিলোমিটার দূরে কাম্ব্রিয়ায় কেণ্ট নদীতে বন্যায় ভেসে আসা কার্টনে ভর্তি একটি লাশের দেহাবশেষ পাওয়া যায়। তার সাথে থাকা ব্রেসলেট ও আংটি এনে পুলিশ ইফতিখার দম্পতিকে দেখান। তারা সনাক্ত করেন এটা তাদের মেয়েরই লাশ। কিন্তু কেবল হাড়গোড় থেকে পুলিশ কিছু বুঝে উঠতে পারে না। এক দফা ময়না তদন্ত হয়। কিছুই উদ্ধার করা গেল না। আরেক দফা ময়নাতদন্ত হয়। অভিমত দেয়া হয়, শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়েছে। লাশ থেকে দাঁত এনে শাফিলিয়ার ডেন্টিস্টকে দেখানো হয়। তিনিও কিছু মনে করতে পারেন না। শেষে পরিচয় নিশ্চিত করতে ডিএনএ টেস্ট করা হয়। ডিএনএ টেস্টে প্রমাণ হয় এটা ইফতিখার দম্পতির ‘গুম’ হওয়া কন্যা শাফিলিয়া।
এবার পুলিশের সামনে দ্বিতীয় বিপদ। মা-বাবার চোখে কুমিরের অশ্রু। মেয়ের খুনিদের বের করে দিতে হবে, খুনের বিচার করতে হবে। পুলিশের উপর তারা চাপ দিতে থাকেন। জলজ্যান্ত আদরের মেয়েটা ‘গুম’ হয়ে গেল আর পুলিশ গোয়েন্দারা করছে কী! এভাবে কেটে যায় টানা সাত বছর। চরম লজ্জায় পড়ে যায় বাঘা বাঘা ব্রিটিশ গোয়েন্দারা। কারণ দেশটিতে এভাবে দীর্ঘদিন খুনির লুকিয়ে থাকা কিংবা খুনের রহস্য উদঘাটন না হওয়া অনেকটা অবিশ্বাস্য। সব রাস্তাতেই চেষ্টা করে গোয়েন্দারা। কিন্তু কোনো ক্লু খুঁজে পায় না। এই ক্লু খুঁজে না পাওয়ার আরেকটা কারণ হলো সাক্ষীদের উর্দু ভাষা ও মা বাবার অনবরত নাটকীয় মিথ্যাচার। কিন্তু ঘটনা দেরিতে হলেও উদঘাটন হয় ছোট মেয়ে আলিশার এক অদভুত আচরণের মাধ্যমে।
২০১০ সালের ২৫ আগস্ট শাফিলিয়ার বাবা ইফতেখার আহমেদ এশার নামাজ পড়তে মসজিদে যান। তার ছোট মেয়ে আলিশা তার দুই বন্ধুকে নিয়ে তাদের নিজের বাড়িতেই ডাকাতি করে করে বসেন! মুখে কালো মুখোশ পরিহিত আলিশা ও তার দুই সঙ্গী তাদের বাড়িতে ঢুকে তার মা, দুই বোন এবং ভাইকে অস্ত্রের মুখে বেঁধে তাদের মুখে টেপ লাগিয়ে দেন। তারা ঘর থেকে প্রায় ৫০ হাজার মার্কিন ডলার সমমূল্যের নগদ অর্থ এবং স্বর্ণালংকার নিয়ে পালিয়ে যান। কয়েক দিনের মধ্যেই পুলিশ আলিশাকে সন্দেহ করে তাকে গ্রেফতার করে। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি ঘটনার সাথে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেন। তার দুই সহযোগী লাপাত্তা হয়ে যায়। নিজের বাড়িতে ডাকাতি, এই অস্বাভাবিক ঘটনার কারণে আলিশাকে জিজ্ঞাসাবাদে মনোঃরোগ বিশেষজ্ঞের সহায়তা নেয়া হয়। একপর্যায়ে আলিশা সাত বছর ধরে বুকের মাঝে যে কষ্ট লুকিয়ে রেখে বেড়ে উঠেছেন তা প্রকাশ করে হাউমাউ করে কেঁদে ওঠেন। কিভাবে তাদের ছোট ছোট ভাই-বোনের সামনে মা-বাবা তাদের বড় বোনকে হত্যা করেছিলেন সেই কাহিনী শোনান। কিন্তু তার কথা পুরোপুরি বিশ্বাস করা ঠিক হবে না, এমন মনে করে পুলিশ তার বাবা ইফতিখার আহমেদ, মা ফারজানাসহ সব ভাই বোনের ফোনে আঁড়িপাতা শুরু করে। তাদের কথাবার্তা থেকে এই হত্যাকান্ডে জড়িত থাকার স্পষ্ট আলামত পেয়ে ২০১০ সালের ২ সেপ্টেম্বর গ্রেফতার করা হয় এই দম্পতিকে।
পুলিশ আদালতে জানায়, ২০০৩ সালে মেয়ে নিঁখোজ হওয়া সত্ত্বেও ইফতিখার পুলিশে খবর দেননি। তাদের কল লিস্ট চেক করে দেখা গেছে, তারা মেয়ের মোবাইলে কল দেয়ারও চেষ্টা করেননি! তার মানে তারা জানতেন কল দিয়ে লাভ হবে না। অথচ এর আগে একবার শাফিলিয়া রাগ করে তার বান্ধবীর বাসায় চলে গেলে তাকে খুঁজে বের করতে হেন কোনো চেষ্টা বাকি রাখেননি তারা। একারণে এই দম্পতিকে সন্দেহভাজন হিসেবে ২০০৪ সালে একবার গ্রেফতার করা হয়েছিল। তবে তারা চমৎকার অভিনয় করে পুলিশকে বিশ্বাস করতে বাধ্য করেন যে তারা নির্দোষ। পরে তাদের ছেড়ে দেয়া হয়। পুলিশ যখনই তাদের ধার ভিড়তে চেয়েছে, সুচতুর ইফতেখার ও তার পাকিস্তানি ফ্যামিলি আত্মীয়রা পুলিশকে বর্ণবাদী, মুসলিম বিদ্বেষী অপবাদ দেয়ার চেষ্টা করেছেন।
আলিশার কাছে আদালত প্রশ্ন করেন, কেন তার মা বাবা তার সম্ভাবনাময়ী বোনকে এভাবে খুন করলেন। জবাবে আলিশা জানান-
ঘটনার সময় আপা ছিলেন ১৭ বছরের তরুণী। পড়তেন এ লেভেলে। তুখোড় মেধাবী ছিলেন। তার স্বপ্ন ছিল পড়াশোনা শেষ করে বড় আইনজ্ঞ হবেন। ব্রিটেনের স্থানীয় মেয়েদের মতো স্বাধীনচেতা ছিলেন। কিন্তু মা বাবার চাওয়া ছিল আপা রক্ষণশীল ঘরানার মেয়ে হোন। সব সময় তার উপর চলতো মা বাবার গোয়েন্দাগিরি। আপা স্কুল থেকে ফিরলে গোপনে তার স্কুলব্যাগ চেক করা হতো। মোবাইল ফোনের কললিস্ট চেক করা হতো। ছেলেদের নাম্বারে কথা বলার প্রমাণ পেলে বকাঝঁকা করা হতো। বড় আপা পছন্দ করতেন জিন্সের প্যান্ট, টি শার্টসহ ব্রিটেনের নতুন প্রজন্মের সব পছন্দের পোশাক। চুলে রং লাগাতেন, ঠোঁটে লিপস্টিক পরতেন। কিন্তু আম্মা আব্বা এসব পছন্দ করতেন না। এক পর্যায়ে তারা সিদ্ধান্ত নেন, তাকে কৌশলে পাকিস্তানে নিয়ে সেখানে একটা ধর্মভীরু পরিবারের ছেলের সাথে তার বিয়ে দিয়ে দিবেন। একদিন তাকে পাকিস্তানে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে বিয়ে সাব্যস্ত হওয়ার পর আপা একদিন ওয়াশিং ব্লিচ পান করে আত্ম্যহত্যার চেষ্টা করে। আব্বা আম্মা ডাক্তারের কাছে মিথ্যা সাক্ষী দিলেন এই বলে যে, ঘরে ইলেক্ট্রিক ছিলনা তাই অন্ধকারে পানি মনে করে আপা ব্লিচ পান করেছেন। রুগ্ন, মৃতপ্রায় অবস্থায় আপাকে আবার ব্রিটেনে নিয়ে আসা হয়। ফিরে এসে সুস্থ হয়ে তিনি আবার পড়াশোনায় মনোযোগী হোন। আপা ছিলেন স্কুলের সকলের প্রিয় মুখ। মেধাবী হবার কারণে শিক্ষকরা খুব স্নেহ করতেন। সব বিষয়ে একশ পার্সেন্টের কাছাকাছি নম্বর পেতেন। সুন্দরী হবার কারণে বন্ধুরা তাকে ‘অ্যাঞ্জেল’ বা পরী বলে ডাকতো। রোদে পুড়ে বৃষ্টিতে ভিজে অগণিত সমাজ কল্যান কর্ম, চ্যারিটি সংস্থার কর্মসূচিতে অংশ নিতেন। বড় হয়ে সমাজকর্মী হওয়ার, মানুষের সেবা করার সপ্ন দেখতেন। পড়াশোনার মাঝে পার্টটাইম চাকরি করতেন একটি টেলিমার্কেটিং কোম্পানিতে। সেই উপার্জনের অর্থের একটা অংশ দাতব্য কর্মসূচিতে খরচ করতেন। লেটেস্ট ফ্যাশনের পোশাক, নতুন ডিজাইনের জুতা পছন্দ করতেন আর একই সাথে রান্না-বান্না এবং ঘরকন্যার কাজেও আপা ছিলেন সমান পটু। আপা ভাল ইংরেজি কবিতাও লিখতেন। তার ডাইরি ভরা প্রচুর ইংরেজি কবিতা ছিল।
সব চেয়ে অবিশ্বাস্য কান্ডটা হলো, খুনের সিদ্ধন্তটা এসেছিল জন্মধারিনী মায়ের মুখ থেকে। আলিশা খুনের বর্ণনা দিচ্ছেন-
আপার দুই হাত শক্ত করে ধরে রেখেছেন আব্বা। আম্মা বললেন-অনেক হয়েছে, আর নয়। এখানেই খেলা শেষ করে দেয়া যাক! মার কথা শুনে বাবা তাকে বললেন একটা পলিথিন ব্যাগ আনার জন্য। মা তাই করলেন। এরপর বাবা জোরে একটা ধাক্কা মেরে আপাকে ঘরের মেঝের ওপর ফেলে দেন। বাবা তার দুই হাটু আপার দুই উরুর উপর তুলে দিয়ে তাকে অনড়ভাবে ধরে রাখেন। আর দুই হাত দিয়ে ধরে রাখেন আপার দুই বাহু। বাবার শক্তিশালী বিশাল শরীরের কাছে আপার কেবল মোচড়ামুচড়িই সার! পরে বাবা তাড়াতাড়ি পলিথিন ব্যাগটা আপার নাকে মুখে ‘সুন্দর করে’ চেপে ধরতে বলেন। মা তাই করেন। আপা জোরে জোরে নিঃশ্বাস টেনে দম নেয়ার চেষ্টা করে। কিন্তু পলিথিন ব্যাগের কারণে সেটা সম্ভব হয় না। সে সর্বশক্তি দিয়ে গোঙানি দেয়ার চেষ্টা করে। আর মা সর্বশক্তি দিয়ে পলিথিনের ব্যাগটা নাকে মুখে অনড়ভাবে চেপে ধরে রাখার চেষ্টা করেন। কষ্টে আপার চোখ দুটো যেন গর্ত থেকে বের হয়ে আসছিল। একদিকে প্রাণে বাঁচার সর্বোচ্চ চেষ্টা, আরেকদিকে নাকমুখ বন্ধ করে নিঃশ্বাস বন্ধ করার জোর চেষ্টা। আমরা সকল ভাইবোন এই হত্যার দর্শক। অসহায়ের মতো দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দেখছি। একপর্যায়ে দেখা গেল, আপা রণে ভঙ্গ দিয়েছে! আর দাপাদাপি করছেন না। তারপর আপা নিঃশ্বাস নেয়ার চেষ্টা বন্ধ করে দিলেন। পা ছোড়াছুড়ি থামিয়ে দিলেন। বুঝলাম সব শেষ! মা মুখ থেকে পলিথিন ব্যাগটা সরিয়ে নিলেন। তারপর কোনো কারণ ছাড়াই আপার নিথর শরীরটার বুকের উপর বাবা কষে একটা লাথি দিলেন। আপাকে নির্মমভাবে হত্যা করতে দেখে আমি উপরের তলায় চলে যাই। কিছুক্ষণ পর আবার নিচে এসে উঁকি মেরে দেখার চেষ্টা করি, আব্বা আম্মা কী করছেন। দেখি মা একটি কার্টনে স্কচটেপ লাগাচ্ছেন আর বাবা আপার লাশ কার্টনে ভরার উপযুক্ত করার জন্য কেটে খন্ড খন্ড করছেন! বিভৎস এই দৃশ্য দেখে আমি আবার উপরে চলে যাই। কিছুক্ষণ পর দরজা খোলার শব্দ পেয়ে বাইরে তাকিয়ে দেখি আব্বা কার্টনটা পাজাকোলা করে ধরে বাড়ির বাইরে নিয়ে যাচ্ছেন। এরপর গাড়িতে করে বাবা কার্টনটা কোথায় নিয়ে গিয়েছিলেন তা কেউ জানেনা।
চোখের সামনে বড় বোনের নৃসংশ হত্যাকান্ড ও লাশ টুকরা করার দৃশ্য দেখে শাফিলিয়ার ভাই বোনদের মধ্যে মৃত্যুভয় ঢুকে যায়। তারা অসীম দক্ষতায় নিজেদের মধ্যে ঘটনাটি গোপন রাখে। তাদের হুমকি দেয়া হয়েছিল, কেউ জানতে পারলে তাদের পরিণতিও শাফিলিয়ার মতো হবে। ইফতেখার আহমেদ ও তার স্ত্রী ফারজানা তাদের সন্তানদের এমন ভাবে মিথ্যা বলার ট্রেইনিং দিয়েছিলেন তা শুনে অবাক হতে হয়। বেশ কয়েকবার ছোট ছেলে ও ছোট মেয়ে খুব দক্ষতার সাথে পুলিশকে ধোকা দিতে সক্ষম হয়েছিল। কিন্তু কোন নোংরা মিথ্যাই পবিত্র সত্যটাকে ঢেকে রাখতে পারেনি।
কিন্তু ডাকাতি মামলায় তাদের ছোট মেয়ে আলিশাকে গ্রেফতার করার পর আলিশাই জানিয়ে দেন ওই খুন তার মা বাবা করেছেন। তার কথা পুরোপুরি বিশ্বাস না হওয়ায় বাড়ির সবার ফোনে আঁড়ি পাতা হয়। ফোনে একদিন ফারজানা (শাফিলিয়ার মা) স্বামীর কাছে জানতে চান, ‘তারা ধরা পড়বে না তো? শাস্তি হবে না তো?’ ইফতিখার তার স্ত্রীকে অভয় দিয়ে বলেন, ‘চিন্তা করো না। আমাদের অপরাধ আদালতে প্রমাণ করার কোনো সুযোগই রাখিনি।’ আরেকদিন তিনি স্ত্রীকে বলেন, ‘ব্রিটেনে খুনের ঘটনা শতভাগ নিশ্চিত না করতে পারলে সাজা হয় না। তুমি যদি ৪০ জনকেও খুন কর, তুমিই যে খুন করেছো এটা শতভাগ প্রমাণ না করা পর্যন্ত কিছুই করতে পারবে না আদালত!’
পুলিশ শতভাগ নিশ্চিত হয়েই তাদেরকে গ্রেফতার করেছিল। এখান থেকে তাদের মুক্তির কোন উপায় ছিলনা, শুধু প্রমাণের জন্যে সময়ের অপেক্ষাই এই দেরীর কারণ। সে দিন আদালতে মা বাবার মুখের দিকে তাকিয়ে কন্যা আলিশা আবেগপ্রবণ হয়ে সাক্ষ্য দেয়া বন্ধ করে দিতে পারে, এই আশঙ্কায় তার কাঠগড়ার সামনে একটি পর্দা ঝুলিয়ে দেয়া হয়েছিল যাতে সে তার মা-বাবার মুখ দেখতে না পারে। আলিশার মুখে, জন্মদাতা পিতা ও গর্ভধারিনী মায়ের হাতে নিজের আপন সন্তান খুনের লোমহর্ষক এই হত্যাকান্ডের অবিশ্বাস্য ঘটনার বর্ণনা শুনে সেদিন চেষ্টার আদালতই নয় সারা দুনিয়া হতবাক হয়ে গিয়েছিল। আজ ৩রা আগষ্ট শুক্রবার ২০১২ আদালত সেই দুই ঘাতক খুনীদের ২৫বছরের কারাদন্ড শাস্তি দিয়েছেন। সারা দুনিয়া অবাক বিষ্ময়ে তাকিয়ে দেখলো কেমন করে সামাজিক প্রথা, অন্ধ বিশ্বাস আর তথাকথিত পারিবারিক ঐতিহ্যের কাছে হার মানলো রক্তসম্পর্কের পবিত্র ভালবাসা।
httpv://www.youtube.com/watch?v=suCtN-e9Gkc
আরো তথ্যাবলি-
মাঝে মাঝে মনে হয়, এই একুশ শতকে এসেও অধিকাংশ মুসলমান কেনো মানুষ হলো না। নাকি কোরান হাদিস তাদের কোনোদিনই মানুষ হতে দেবে না ?
@হৃদয়াকাশ,
আপনার প্রত্যেকটা কথার সাথে একমত।
কী ভাবে সাবধান হবে? ক্যানাডায় শরিয়া আইন প্রতিষ্ঠা করতে মডার্ণ আধুনিক শিক্ষিত মুসলমানরা আন্দোলন করে। ইংল্যান্ডের স্কুল কলেজে হিজাব বোরখার জন্যে সরকারকে চাপ দেয়। রাস্তাঘাট বন্ধ করে মসজিদ মাদ্রাসা তোলা হচ্ছে। এর শেষটা যে কোথায় কেউ হয়তো এখন বলতে পারবেনা। তবে বিশ্ব যে এক রক্তক্ষয়ী সাংস্কৃতিক সংঘাত, এক ভয়াবহ পরিস্থিতির সম্মূখীন হতে যাচ্ছে তা বোধ হয় বলার অপেক্ষা রাখেনা।
@হৃদয়াকাশ,
শুধু মুসলমানরাই সম্মানরক্ষার জন্য খুন করে না, অন্য ধর্মের লোকেরাও করে থাকে. তাই এই অপরাধে সব ধর্মের লোকেরাই দায়ী. আসলে ধর্ম জিনিসটাই এখন অত্যন্ত বর্বর একটা জিনিস হয়ে দাড়িয়েছে. এটাকে দূর করাই উচিত.
একদিকে মানব সভ্যতা থেকে একদল মানুষ ঝেটিয়ে বিদেয় করতে চাচ্ছে হাজার বছরের বিদ্যমান নানা পাশবিক সংস্কার অপরদিকে একদল মানুষ নিজেকে অন্ধকারে নিমজ্জিত রেখে মানব চরিত্রে এঁকে দিচ্ছে হিংস্রতার অমোচনীয় তিলক। এসব ঘটনা কী শুধু নারীকে দাবিয়ে রাখার জন্য নাকি কোনো মানসিক বৈকল্য তা নিয়ে গবেষণা হওয়া দরকার। বিচ্ছিন্নভাবে ঘটলেও এসব ঘটনার ফ্রিকুেয়ন্সি নেহায়েত কম নয়। ঘটনাটা পড়ে আর কিছু বলার ভাষা থাকে না।
এই ঘটনার কথা কাল রাতেই শুনেছিলাম।
ঘটনাক্রমে কাল রাতেই ভ্যাংকুভারের এমন এক অনার কিলিং এর ঘটনা দেখছিলাম, সেখানে ছিল এক পাঞ্জাবী শিখ পরিবার, মূল পরিকল্পনাকারী মেয়ের মা এবং চাচা। অপরাধ ধনী চাচার ৬০ বছর বয়সী নির্বাচিত পাত্রকে বিয়ে না করে নিজের প্রেমিককে বিয়ে করা। এই ঘটনা আমার কাছে তেমন নুতন কিছু না, এ নিয়ে লেখার সময় কিছুটা ঘাটাঘাটি করেছিলাম, জন্মদাতা মাতা পিতা কিভাবে নিজ সন্তানকে স্বহস্তে হত্যা করতে পারে তার বহু রোমহর্ষক ঘটনা পড়েছি। তবে এই বিশেষ ঘটনায় হতাশ হয়েছি মাল্টি-কালচারকে সম্মান করার নামে থানা পুলিশের নিস্পৃহ ভূমিকা পালনের আলামত দেখে। যেই কালচার মানবতা বিরোধী সেই অপকালচারকে সমূলে উতপাটনই জরুরী।
কেউ কেউ শুধু পাকিস্তানীদের মনে হয় সিংগেল আউট করছেন। এটা আসলে পাকিস্তানী স্পেসিফিল সমস্যা নয়। যেসব সমাজে নারীদের মর্যাদা কম সেসব সমাজেরই ট্রেড মার্ক এটা। যেমন ভারতে, বিশেষ করে পাঞ্জাবেও এই সমস্যা আছে। যেসব সমাজ গোঁয়াড়ের মত বদ্ধ প্রাচীনপন্থী ধর্মীয় মূল্যবোধে চলার দাবী করে, পরিবর্তন পরিবর্ধনের দাবী অগ্রাহ্য করে সেসব সমাজেই এই সমস্যা ব্যাপক, যেমন পাকিস্তান, মধ্যপ্রাচ্য। এসব দেশে অনার কিলিং বলতে গেলে আইনত পুরো সিদ্ধ না হলেও সামাজিক ভাবে স্বীকৃত। ধর্মীয় নেতারা এর বিরুদ্ধে আইন করতে গেলে ধর্ম গেল বলে তেড়ে আসে। এই সুবিধের জন্য পশ্চীমে বসবাসরত এসব পরিবার হত্যাকান্ড বিনা বিচারে সঙ্ঘটিত করতে পারবে জেনে কায়দা করে কাজটি দেশে এনে করে।
পাকিরা তো মানুষ নয়, ওরা তো চিরদিনই বর্বর, তবে ধার্মিক! আমার প্রশ্ন, কোন তারা নিজেদের দেশ ছেড়ে অন্য দেশে অর্থাৎ কাফেরদের দেশে যায়? সেখানে তো ধর্ম রক্ষা করা নাও যেতে পারে আর যদি তারা দেখলো তার সন-ান তাদের ধর্মানুসারে চলে না, তখন তারা কেন দেশে ফিরে গেলো না? নাকি ডলার ইজ ফার্স্ট গড? ডলারের লোভ না হলে কাফেরদের দেশে যাওয়া কেন বা থাকা কেন? আল্লা কি পাকিদের নিজ দেশে সুখে রাখতে পারে না? কোটি কোটি ডলার দিতে পারে না? এসব বর্বরদের ২৫ বছরের সাজা দেয়া ঠিক নয়, এদের মৃত্যুদণ্ড হওয়া উচিত! এবং তা হওয়া উচিত জ্বালাময়ীভাবে। যেমন, আমাদের স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় পাকি পশুরা গণহত্যা করেছে, যে অত্যাচার করেছে তার চেয়েও ভয়ংকর অত্যাচার করে এদের তিলে তিলে মৃত্যুই ছিলো একমাত্র শিক্ষা।
আমার নিজের অভিজ্ঞতা থেকে একটি সত্য ঘটনা বলছি, ১৯৮২ সালের ঘটনা তখন মার্কিন ভিসার জন্য ফি লাগতো না। প্রায় সকলেই ইন্টারভিউ দিতে যেতো। হাজার হাজার লোক সারা রাত দাঁড়িয়ে লাইন রক্ষা করতো। সকালে ইন্টারভিউতে ঢুকাতো সম্ভবত ২’শ বাকি সব বাদ পড়তো। তখন প্রায় যুবকদেরই ভিসা দিতো না কারণ তারা গিয়ে আর ফিরে আসে না, তাই। যাহোক, আমার এক খ্রীস্টান বন্ধুর বোন দু’দিন চেষ্টা করে ঢুকতে পারলো তাও রাতের বেলায় একজনকে লাইনে দাঁড় করিয়ে রেখে। আমি ও আমার বন্ধুটি বাইরে দাঁড়িয়ে আছি বোনটি কখন বের হবে জানি না। দু’জনে লোকজনদের কাছ থেকে একটু দূরে সরে গল্প করছি। এক বয়ষ্ক লোক (৬০/৬৫) হবে। আমাদের কাছে এসে সালাম দিলো, আমি সালামের জবাব দিলাম। তিনি যেচে এসে হাতের টোকেনটি (ভিসার টিকিট) দেখিয়ে বললেন, “দেখো, আমি ভিসা পেয়েছি, বিকেল তিনটায় আসতে হবে।” আমি জিজ্ঞেস করলাম, কেন যাবে চাচা? উত্তরে যা বললেন, আমরা তো ইচ্ছা হচ্ছিলো একটা চড় বসিয়ে দেই, কিন’ মুরুব্বি মানুষ তাই রাগ সামলে নিলাম। তিনি যা বললেন, তাতে আমার খ্রীষ্টান বন্ধুটির মনের অবস’া কি হয়েছিলো আজও জিজ্ঞেস করিনি। তিনি বলছিলেন, “যাচ্ছি এইজন্য যে, ছেলে পড়াশোনা করতে যেতে চায়, তাই গিয়ে দেখে আসি ছেলে ঈমানের সাথে থাকতে পারবে কিনা? শুনেছি ওখানে (আমেরিকাতে) ওরা নাকি বেঈমানদারের মতো পোষাক পড়ে ঘুরে বেড়ায়।” এর উত্তরে আমি বলেছিলাম, হ্যাঁ চাচা আপনারও যাওয়া দরকার নেই আপনারও ঈমান নষ্ট হয়ে যাবে ওইসব অর্ধ উলঙ্গ অত্যন- সুন্দরী হুরীদের দিকে চোখ পড়লে কারোই ঈমান থাকবে না। অতএব ছেলেকে তো পাঠাবেনই না আপনিও যাবে না। আর ওরা সব শূকর খায়, ছেলেকে শূকর খাইয়ে বেঈমানদার বানিয়ে ফেলবে আর ওইসব হুরীরা তাকে আটকে রাখবে। ভদ্রলোক আর কোন কথা না বলে যেন দৌড় মারলেন।
পাকিদের পক্ষে সব ধরণের বর্বরতাই সম্ভব। মেয়েটার জন্য কষ্ট হচ্ছে। তার দুর্ভাগ্য সে পাকিস্তানের একটা বর্বর পরিবারে জন্মগ্রহণ করেছে। পৃথিবীর তার কাছে অনেক কিছু পাওয়ার ছিলো। হলো না।
শাফি, তোমার মৃত্যু আমাদের অপরাধী করে দেয়!!!
শুধু শাফিলিয়ার বাবা মা এই মানসিকতার, তাই নয়। তাদের ছেলে জুনায়েদ সমর্থন করে বাবা মায়ের কর্মকান্ডকে। স্পষ্টই বোঝা যায়, তার কন্যাও মুক্তি পাবে না পশুত্বের হাতে, যদি সে ভুল করেও শাফিলিয়ার মত স্বাধীন চেতা হয়ে থাকে।
দ্য টেলিগ্রাফের বর্ণনায়,
এই ধরণের চিন্তা ভাবনা যাদের মধ্যে কাজ করে, কিচ্ছুটি করার থাকে না সেখানে। বাবা-মা তো সন্তানের সবচেয়ে নিরাপদ আশ্রয় বলে মানুষ শিখেছে এতোটা কাল। আজ কোথায় সন্তানের সেই নিরাপত্তা?
যে মেয়েটির জন্য তাদের গর্বিত হওয়া উচিত ছিল, তাকেই তারা লজ্জার কারণ ভেবেছে! খুন করেছে!
এইধরণের অনার কিলিং যে শুধু পাকিস্তানিদের মধ্যে হচ্ছে, তা নয়, বরং বাংলাদেশেও হয়। কষ্টে বুকটা ভারী হয়ে আসে। এই পৃথিবীর সব কন্যা সন্তানের ভ্রূণের জন্য আজকাল আতংক হয়।
@নীল রোদ্দুর,
তিনটা প্রশ্ন মনে জাগে –
(১) যে কারণে কোরানে পুরুষকে নারীর উপর কর্তৃত্ব ও প্রাধান্য দেয়া হলো, একই কারণে নারীকে পুরুষের উপর কোন প্রকার কর্তৃত্ব বা প্রাধান্য দেয়ার বাণী কি লেখা আছে?
(২) যে কারণে কোরানে পুরুষকে পারমিশন দেয়া হলো নারীকে প্রহার করার জন্যে, একই কারণে পুরুষকে প্রহার করার পারমিশন দিয়ে কি কোন আয়াত কোরানে আছে?
(৩) অনার কিলিং এর ভিকটিম সব সময়ই নারী, ঠিক একই আচরণ, একই ব্যবহার করার কারণে পুরুষকে খুন করা হয়না কেন?
নারীর উপর কর্তৃত্ব করার, নারীকে শাসন করার, ধমক দেয়ার, শাস্তি দেয়ার, প্রহার করার, গৃহবন্দী করার, হিজাব বোরখার নামে বস্তাবন্দী করার, পুরুষের বাধ্য রাখার, দমন-পীড়ণ, নিপীড়ন করার এবং আলটেমেটিলি নারীকে খুন করার আদেশ কোরানেই আছে। যারা বলে এর সাথে ইসলামের কোন সম্পর্ক নাই, তারা শুধুই ভন্ডামি করেনা, পরোক্ষভাবে এই খুনকেই সমর্থন করে। এই বিশ্বাস এই মানসিকতা নিয়ে তারা বড় হয়েছে, তাই তাদের কল্পিত আল্লাহকে খুশী রাখতে অনার কিলিং কিছু নারীরাও গোপনে অথবা প্রকাশ্যে সমর্থন করে।
এবার নিচের কেইসটা ফলো করুন-
httpv://www.youtube.com/watch?v=S5yHUfw89cc
httpv://www.youtube.com/watch?v=3j220xGjXcU
httpv://www.youtube.com/watch?v=tp0lHtiDVHU
httpv://www.youtube.com/watch?v=qEkRIib__U0&feature=relmfu
httpv://www.youtube.com/watch?v=ViOHEZJbT-M&feature=relmfu
ভাষা নেই মুখে! জানোয়ার!!!
বলার কিছুই নাই আমরা সভ্যতার এ যুঘেও অসভ্যতার সেই যিঞ্জির ভাংতে পারছিনা ,আর এর জন্য দায়ী পশ্চাৎ করণ ধর্মই । :-Y
httpv://www.youtube.com/watch?v=3qN3xgUJGXc
শাফিলিয়ার ঘটনা আমাকে খুব নাড়া দিয়েছিল। মুসলমানদের মধ্যে যে ভাবে অনার কিলিং ছড়িয়ে পড়েছে তা রীতিমত ভয়াবহ।
@সৈকত চৌধুরী,
ধন্যবাদ সৈকত ভাই, ভিডিওটি সংযোজন ও পড়ে মন্তব্যের জন্যে।
আমার এক পাকিস্তানি বন্ধুর কাছে এ রকম কয়েকটি অনার কিলিঙের রোমহর্ষক ঘটনা শুনেছিলাম। কী বলব ভয়ে গা কাঁপছে।
@তামান্না ঝুমু,
আমি তো একসময় ইয়ুথ ওয়ার্কার ছিলাম। সোসিয়েল সার্ভিসের সাথে বেশ কিছুদিন কাজ করেছি। জেনেছি দেখেছি বিভিন্ন সমাজ সোসাইটির বিচিত্র রূপ। দেখেছি একই সমাজে কী ভাবে গড়ে উঠে বিভিন্ন মানসিকতায় নতুন প্রজন্ম। মানুষের জীবনে সংস্কৃতি-প্রথার প্রভাব কেমন হয় তা তো আমরা কম বেশী সবাই জানি। নতুন প্রজন্মের কিশোরদের জন্যে আমার বড় মায়া হয় কারণ আমি তাদেরকে খুব কাছে থেকে দেখেছি, তারপর নিজেরও সন্তান আছে। এদের উপর অন্যায় নিপীড়ণ নির্যাতন দেখলে মনটা খারাপ হয়ে যায়। এখানে আরেকটা ঘটনা দেখুন-
httpv://www.youtube.com/watch?v=Zq7lYbdx1gI
আমরা কোথাকার বাসিন্দা?এই পৃথিবীর !যে কোন হত্যাই মর্মান্তিক,কিন্তু নিজের অপত্য কে হত্যা ?মন খারাপ করিয়ে দিলেন ।মানুষের বর্বরতার শেষ কোথায় বলতে পারেন?
প্রথমত লেখককে অশেষ ধন্যবাদ বিস্তারিতভাবে বিষয়টি তুলে আনার জন্যে। মানুষের প্রকৃতিগত মেজাজ এখন প্রথা-ধর্ম কিঙবা সামাজিক বিধিবদ্ধতায় আড়ষ্ঠ। একটা সময় ছিলো- যখন মানুষের কাছে সবচেয়ে নিরাপদ আশ্রয় ছিলো তার পরিবার, বস্তুত পারিবারিক কাঠামোর ভিত্তিইতো ছিলো সামাজিক নিরাপত্তা ও সামাজিকীকরণের সঠিক বিকাশ। কিন্তু এই প্রতিষ্ঠানটিও এখন ধর্মীয় গোঁড়ামী এবঙ নানাবিধ কুসঙস্কারাচ্ছন্নতায় আক্রান্ত; কতোটা ভয়াবহভাবে আক্রান্ত- আপনার পোস্টই তার প্রমাণ। একটি বিষয় মাঝে মাঝে স্পষ্টতার সীমারেখা টানে এই প্রেক্ষিতে যে- ধর্ম, সম্ভবত মানুষের (যদি তার তাত্ত্বিক ও প্রায়োগিক বিষয়টি নিয়ে ভালো বোধ না থাকে) বিকারগ্রস্থতার কারণ হয়। এর একটি বড়ো নিদর্শন পাকিস্তান নামক রাষ্ট্রটি। ১৯৭১ সালের মহাকাব্যিক মুক্তিযুদ্ধে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী যে বর্বরতার নিদর্শন রেখেছে- তা কেবল তাদের জাতিগতভাবে প্রাপ্ত নৃশঙসতাই বোঝায় না, তাদের উত্তরাধিকারসূত্রে প্রাপ্ত বিকারগ্রস্থতাও বোঝায়। এরা ধর্মকে স্রেফ ঢাল হিশেবে ব্যবহার করে এবঙ এর একটি সার্টিফাইড রূপদানের চেষ্টা করে। আশ্চর্য হলেও সত্য- এদের গণমাধ্যমও সে ধারার।
আপনার পোস্ট থেকে সত্যিই একটি সুন্দর ও জরুরী দিক বেরিয়ে আসলো। আলোচনায় হয়তো এর একটি সার্বিক দিক পর্যবেক্ষণ সম্ভব। (Y)
@শনিবারের চিঠি,
ভাবছি কতো পাষাণ হৃদয় হলে একজন মা তার সন্তানকে নিজের হাতে খুন করতে পারে? পশুদাচরণের এই প্রেরণা আসে কোত্থেকে?
আমি বিবিসি বাংলা অনুষ্ঠানে শুনলাম উভয়ের ২৫ বছরের কারাদন্ড হয়েছে। কোনটা সঠিক?
@আঃ হাকিম চাকলাদার,
২৫ বছরই। ধন্যবাদ। অসুরেরা মেয়েটাকে না মেরেও পারত ঘরত্যাগী করে দিতে। সোসিয়েল সার্ভিসের কাছে তুলে দিতে। কিন্তু প্রাণে মারার মধ্যে তারা দুনিয়া আখেরাতের কোন লাভ দেখেছিল তারাই জানে।
অত্যন্ত মূল্যবান মন্তব্য। হ্যাঁ অন্ধ বিস্বাষের বসবর্তি হয়ে মানুষ না পারে এমন কোন জঘন্য অপরাধ নাই।
ঠিক সময়ে এহেন মর্মান্তিক হৃদয় বিদারক ঘটনাটি আমাদের সম্মুখে তুলে ধরার
জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।