এক শাফিলিয়ার শোকগাঁথা

“I don’t pretend like we’re the perfect family no more,
desire to live is burning,
my stomach is turning,
but all they think about is honour,”– শাফিলিয়া

চঞ্চল মতির সুন্দর চেহারার একজন মেধাবী ছাত্রী ছিল ১৭ বছরের তরুণী শাফিলিয়া। আজ থেকে ৯ বছর পূর্বে ২০০৩ সালে এই নিরপরাধ মেয়েটিকে নির্মম ভাবে খুন করে তার আপন মা ও বাবা। আরো পাঁচ-দশটা মেয়ের মতো তার চোখেও সপ্ন ছিল। সাধ ছিল বড় হয়ে আইনজীবী হবে। পরাধীন নারী নয়, স্বাধীনভাবে একজন মানুষ হয়ে বাঁচতে চেয়েছিল শাফিলিয়া। ২০১০ সালে প্রকাশিত বাংলাদেশের ইত্তেফাক পত্রিকা থেকে ঘটনার কিছু কিছু বিবরণ এখানে তোলে দেয়া হলো।

পাকিস্তানি এই পরিবারটির বাস উত্তর পশ্চিম ইংল্যান্ডের চেশায়ারে। ৫০ বছর বয়স্ক ইফতিখার আহমেদ ও তার স্ত্রী ফারজানা আহমেদের (৪৭) চার কন্যা ও এক পুত্র নিয়ে সংসার। ছেলেমেয়েরা জন্মসূত্রে ব্রিটেনের নাগরিক। ২০০৩ সালের ১১ সেপ্টেম্বর খুন করা হয় বড় মেয়ে শাফিলিয়া আহমেদকে। কিন্তু অসীম দক্ষতায় ইফতিখার আহমেদ তার মেয়ের লাশ গুম করে ফেলেন। ছেলেমেয়েদের শাসিয়ে দেন তারা যেন এ ব্যাপারে মুখে টু শব্দ না করে। শাফিয়ালা স্কুলে যাওয়া বন্ধ করে দিলে কয়েকদিন পর তার স্কুলের পক্ষ থেকে যোগাযোগ করা হয় ইফতিখার দম্পতির সঙ্গে। স্কুল কর্তৃপক্ষকে তারা জানিয়ে দেন শাফিলিয়া ‘নিঁখোজ’ হয়েছে। আর নীরব থাকা নিরাপদ হবে না মনে করে তারা পুলিশের কাছে মেয়ের নিঁখোজ হওয়া নিয়ে একটা সাধারণ ডায়েরি করেন। শাফিলিয়ার স্কুলের পক্ষ থেকেও পুলিশের কাছে বিষয়টি অবহিত করা হয়। মাঠে নামে ব্রিটেনের পুলিশ ও গোয়েন্দারা। হন্যে হয়ে তারা শাফিলিয়ার ‘অপহরণকারীদের’ পিছু ছোটে।

পরের বছর ইফতিখারদের আবাসস্থান থেকে ১১০ কিলোমিটার দূরে কাম্ব্রিয়ায় কেণ্ট নদীতে বন্যায় ভেসে আসা কার্টনে ভর্তি একটি লাশের দেহাবশেষ পাওয়া যায়। তার সাথে থাকা ব্রেসলেট ও আংটি এনে পুলিশ ইফতিখার দম্পতিকে দেখান। তারা সনাক্ত করেন এটা তাদের মেয়েরই লাশ। কিন্তু কেবল হাড়গোড় থেকে পুলিশ কিছু বুঝে উঠতে পারে না। এক দফা ময়না তদন্ত হয়। কিছুই উদ্ধার করা গেল না। আরেক দফা ময়নাতদন্ত হয়। অভিমত দেয়া হয়, শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়েছে। লাশ থেকে দাঁত এনে শাফিলিয়ার ডেন্টিস্টকে দেখানো হয়। তিনিও কিছু মনে করতে পারেন না। শেষে পরিচয় নিশ্চিত করতে ডিএনএ টেস্ট করা হয়। ডিএনএ টেস্টে প্রমাণ হয় এটা ইফতিখার দম্পতির ‘গুম’ হওয়া কন্যা শাফিলিয়া।
এবার পুলিশের সামনে দ্বিতীয় বিপদ। মা-বাবার চোখে কুমিরের অশ্রু। মেয়ের খুনিদের বের করে দিতে হবে, খুনের বিচার করতে হবে। পুলিশের উপর তারা চাপ দিতে থাকেন। জলজ্যান্ত আদরের মেয়েটা ‘গুম’ হয়ে গেল আর পুলিশ গোয়েন্দারা করছে কী! এভাবে কেটে যায় টানা সাত বছর। চরম লজ্জায় পড়ে যায় বাঘা বাঘা ব্রিটিশ গোয়েন্দারা। কারণ দেশটিতে এভাবে দীর্ঘদিন খুনির লুকিয়ে থাকা কিংবা খুনের রহস্য উদঘাটন না হওয়া অনেকটা অবিশ্বাস্য। সব রাস্তাতেই চেষ্টা করে গোয়েন্দারা। কিন্তু কোনো ক্লু খুঁজে পায় না। এই ক্লু খুঁজে না পাওয়ার আরেকটা কারণ হলো সাক্ষীদের উর্দু ভাষা ও মা বাবার অনবরত নাটকীয় মিথ্যাচার। কিন্তু ঘটনা দেরিতে হলেও উদঘাটন হয় ছোট মেয়ে আলিশার এক অদভুত আচরণের মাধ্যমে।

২০১০ সালের ২৫ আগস্ট শাফিলিয়ার বাবা ইফতেখার আহমেদ এশার নামাজ পড়তে মসজিদে যান। তার ছোট মেয়ে আলিশা তার দুই বন্ধুকে নিয়ে তাদের নিজের বাড়িতেই ডাকাতি করে করে বসেন! মুখে কালো মুখোশ পরিহিত আলিশা ও তার দুই সঙ্গী তাদের বাড়িতে ঢুকে তার মা, দুই বোন এবং ভাইকে অস্ত্রের মুখে বেঁধে তাদের মুখে টেপ লাগিয়ে দেন। তারা ঘর থেকে প্রায় ৫০ হাজার মার্কিন ডলার সমমূল্যের নগদ অর্থ এবং স্বর্ণালংকার নিয়ে পালিয়ে যান। কয়েক দিনের মধ্যেই পুলিশ আলিশাকে সন্দেহ করে তাকে গ্রেফতার করে। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি ঘটনার সাথে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেন। তার দুই সহযোগী লাপাত্তা হয়ে যায়। নিজের বাড়িতে ডাকাতি, এই অস্বাভাবিক ঘটনার কারণে আলিশাকে জিজ্ঞাসাবাদে মনোঃরোগ বিশেষজ্ঞের সহায়তা নেয়া হয়। একপর্যায়ে আলিশা সাত বছর ধরে বুকের মাঝে যে কষ্ট লুকিয়ে রেখে বেড়ে উঠেছেন তা প্রকাশ করে হাউমাউ করে কেঁদে ওঠেন। কিভাবে তাদের ছোট ছোট ভাই-বোনের সামনে মা-বাবা তাদের বড় বোনকে হত্যা করেছিলেন সেই কাহিনী শোনান। কিন্তু তার কথা পুরোপুরি বিশ্বাস করা ঠিক হবে না, এমন মনে করে পুলিশ তার বাবা ইফতিখার আহমেদ, মা ফারজানাসহ সব ভাই বোনের ফোনে আঁড়িপাতা শুরু করে। তাদের কথাবার্তা থেকে এই হত্যাকান্ডে জড়িত থাকার স্পষ্ট আলামত পেয়ে ২০১০ সালের ২ সেপ্টেম্বর গ্রেফতার করা হয় এই দম্পতিকে।

পুলিশ আদালতে জানায়, ২০০৩ সালে মেয়ে নিঁখোজ হওয়া সত্ত্বেও ইফতিখার পুলিশে খবর দেননি। তাদের কল লিস্ট চেক করে দেখা গেছে, তারা মেয়ের মোবাইলে কল দেয়ারও চেষ্টা করেননি! তার মানে তারা জানতেন কল দিয়ে লাভ হবে না। অথচ এর আগে একবার শাফিলিয়া রাগ করে তার বান্ধবীর বাসায় চলে গেলে তাকে খুঁজে বের করতে হেন কোনো চেষ্টা বাকি রাখেননি তারা। একারণে এই দম্পতিকে সন্দেহভাজন হিসেবে ২০০৪ সালে একবার গ্রেফতার করা হয়েছিল। তবে তারা চমৎকার অভিনয় করে পুলিশকে বিশ্বাস করতে বাধ্য করেন যে তারা নির্দোষ। পরে তাদের ছেড়ে দেয়া হয়। পুলিশ যখনই তাদের ধার ভিড়তে চেয়েছে, সুচতুর ইফতেখার ও তার পাকিস্তানি ফ্যামিলি আত্মীয়রা পুলিশকে বর্ণবাদী, মুসলিম বিদ্বেষী অপবাদ দেয়ার চেষ্টা করেছেন।

আলিশার কাছে আদালত প্রশ্ন করেন, কেন তার মা বাবা তার সম্ভাবনাময়ী বোনকে এভাবে খুন করলেন। জবাবে আলিশা জানান-

ঘটনার সময় আপা ছিলেন ১৭ বছরের তরুণী। পড়তেন এ লেভেলে। তুখোড় মেধাবী ছিলেন। তার স্বপ্ন ছিল পড়াশোনা শেষ করে বড় আইনজ্ঞ হবেন। ব্রিটেনের স্থানীয় মেয়েদের মতো স্বাধীনচেতা ছিলেন। কিন্তু মা বাবার চাওয়া ছিল আপা রক্ষণশীল ঘরানার মেয়ে হোন। সব সময় তার উপর চলতো মা বাবার গোয়েন্দাগিরি। আপা স্কুল থেকে ফিরলে গোপনে তার স্কুলব্যাগ চেক করা হতো। মোবাইল ফোনের কললিস্ট চেক করা হতো। ছেলেদের নাম্বারে কথা বলার প্রমাণ পেলে বকাঝঁকা করা হতো। বড় আপা পছন্দ করতেন জিন্সের প্যান্ট, টি শার্টসহ ব্রিটেনের নতুন প্রজন্মের সব পছন্দের পোশাক। চুলে রং লাগাতেন, ঠোঁটে লিপস্টিক পরতেন। কিন্তু আম্মা আব্বা এসব পছন্দ করতেন না। এক পর্যায়ে তারা সিদ্ধান্ত নেন, তাকে কৌশলে পাকিস্তানে নিয়ে সেখানে একটা ধর্মভীরু পরিবারের ছেলের সাথে তার বিয়ে দিয়ে দিবেন। একদিন তাকে পাকিস্তানে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে বিয়ে সাব্যস্ত হওয়ার পর আপা একদিন ওয়াশিং ব্লিচ পান করে আত্ম্যহত্যার চেষ্টা করে। আব্বা আম্মা ডাক্তারের কাছে মিথ্যা সাক্ষী দিলেন এই বলে যে, ঘরে ইলেক্ট্রিক ছিলনা তাই অন্ধকারে পানি মনে করে আপা ব্লিচ পান করেছেন। রুগ্ন, মৃতপ্রায় অবস্থায় আপাকে আবার ব্রিটেনে নিয়ে আসা হয়। ফিরে এসে সুস্থ হয়ে তিনি আবার পড়াশোনায় মনোযোগী হোন। আপা ছিলেন স্কুলের সকলের প্রিয় মুখ। মেধাবী হবার কারণে শিক্ষকরা খুব স্নেহ করতেন। সব বিষয়ে একশ পার্সেন্টের কাছাকাছি নম্বর পেতেন। সুন্দরী হবার কারণে বন্ধুরা তাকে ‘অ্যাঞ্জেল’ বা পরী বলে ডাকতো। রোদে পুড়ে বৃষ্টিতে ভিজে অগণিত সমাজ কল্যান কর্ম, চ্যারিটি সংস্থার কর্মসূচিতে অংশ নিতেন। বড় হয়ে সমাজকর্মী হওয়ার, মানুষের সেবা করার সপ্ন দেখতেন। পড়াশোনার মাঝে পার্টটাইম চাকরি করতেন একটি টেলিমার্কেটিং কোম্পানিতে। সেই উপার্জনের অর্থের একটা অংশ দাতব্য কর্মসূচিতে খরচ করতেন। লেটেস্ট ফ্যাশনের পোশাক, নতুন ডিজাইনের জুতা পছন্দ করতেন আর একই সাথে রান্না-বান্না এবং ঘরকন্যার কাজেও আপা ছিলেন সমান পটু। আপা ভাল ইংরেজি কবিতাও লিখতেন। তার ডাইরি ভরা প্রচুর ইংরেজি কবিতা ছিল।

সব চেয়ে অবিশ্বাস্য কান্ডটা হলো, খুনের সিদ্ধন্তটা এসেছিল জন্মধারিনী মায়ের মুখ থেকে। আলিশা খুনের বর্ণনা দিচ্ছেন-

আপার দুই হাত শক্ত করে ধরে রেখেছেন আব্বা। আম্মা বললেন-অনেক হয়েছে, আর নয়। এখানেই খেলা শেষ করে দেয়া যাক! মার কথা শুনে বাবা তাকে বললেন একটা পলিথিন ব্যাগ আনার জন্য। মা তাই করলেন। এরপর বাবা জোরে একটা ধাক্কা মেরে আপাকে ঘরের মেঝের ওপর ফেলে দেন। বাবা তার দুই হাটু আপার দুই উরুর উপর তুলে দিয়ে তাকে অনড়ভাবে ধরে রাখেন। আর দুই হাত দিয়ে ধরে রাখেন আপার দুই বাহু। বাবার শক্তিশালী বিশাল শরীরের কাছে আপার কেবল মোচড়ামুচড়িই সার! পরে বাবা তাড়াতাড়ি পলিথিন ব্যাগটা আপার নাকে মুখে ‘সুন্দর করে’ চেপে ধরতে বলেন। মা তাই করেন। আপা জোরে জোরে নিঃশ্বাস টেনে দম নেয়ার চেষ্টা করে। কিন্তু পলিথিন ব্যাগের কারণে সেটা সম্ভব হয় না। সে সর্বশক্তি দিয়ে গোঙানি দেয়ার চেষ্টা করে। আর মা সর্বশক্তি দিয়ে পলিথিনের ব্যাগটা নাকে মুখে অনড়ভাবে চেপে ধরে রাখার চেষ্টা করেন। কষ্টে আপার চোখ দুটো যেন গর্ত থেকে বের হয়ে আসছিল। একদিকে প্রাণে বাঁচার সর্বোচ্চ চেষ্টা, আরেকদিকে নাকমুখ বন্ধ করে নিঃশ্বাস বন্ধ করার জোর চেষ্টা। আমরা সকল ভাইবোন এই হত্যার দর্শক। অসহায়ের মতো দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দেখছি। একপর্যায়ে দেখা গেল, আপা রণে ভঙ্গ দিয়েছে! আর দাপাদাপি করছেন না। তারপর আপা নিঃশ্বাস নেয়ার চেষ্টা বন্ধ করে দিলেন। পা ছোড়াছুড়ি থামিয়ে দিলেন। বুঝলাম সব শেষ! মা মুখ থেকে পলিথিন ব্যাগটা সরিয়ে নিলেন। তারপর কোনো কারণ ছাড়াই আপার নিথর শরীরটার বুকের উপর বাবা কষে একটা লাথি দিলেন। আপাকে নির্মমভাবে হত্যা করতে দেখে আমি উপরের তলায় চলে যাই। কিছুক্ষণ পর আবার নিচে এসে উঁকি মেরে দেখার চেষ্টা করি, আব্বা আম্মা কী করছেন। দেখি মা একটি কার্টনে স্কচটেপ লাগাচ্ছেন আর বাবা আপার লাশ কার্টনে ভরার উপযুক্ত করার জন্য কেটে খন্ড খন্ড করছেন! বিভৎস এই দৃশ্য দেখে আমি আবার উপরে চলে যাই। কিছুক্ষণ পর দরজা খোলার শব্দ পেয়ে বাইরে তাকিয়ে দেখি আব্বা কার্টনটা পাজাকোলা করে ধরে বাড়ির বাইরে নিয়ে যাচ্ছেন। এরপর গাড়িতে করে বাবা কার্টনটা কোথায় নিয়ে গিয়েছিলেন তা কেউ জানেনা।

চোখের সামনে বড় বোনের নৃসংশ হত্যাকান্ড ও লাশ টুকরা করার দৃশ্য দেখে শাফিলিয়ার ভাই বোনদের মধ্যে মৃত্যুভয় ঢুকে যায়। তারা অসীম দক্ষতায় নিজেদের মধ্যে ঘটনাটি গোপন রাখে। তাদের হুমকি দেয়া হয়েছিল, কেউ জানতে পারলে তাদের পরিণতিও শাফিলিয়ার মতো হবে। ইফতেখার আহমেদ ও তার স্ত্রী ফারজানা তাদের সন্তানদের এমন ভাবে মিথ্যা বলার ট্রেইনিং দিয়েছিলেন তা শুনে অবাক হতে হয়। বেশ কয়েকবার ছোট ছেলে ও ছোট মেয়ে খুব দক্ষতার সাথে পুলিশকে ধোকা দিতে সক্ষম হয়েছিল। কিন্তু কোন নোংরা মিথ্যাই পবিত্র সত্যটাকে ঢেকে রাখতে পারেনি।

কিন্তু ডাকাতি মামলায় তাদের ছোট মেয়ে আলিশাকে গ্রেফতার করার পর আলিশাই জানিয়ে দেন ওই খুন তার মা বাবা করেছেন। তার কথা পুরোপুরি বিশ্বাস না হওয়ায় বাড়ির সবার ফোনে আঁড়ি পাতা হয়। ফোনে একদিন ফারজানা (শাফিলিয়ার মা) স্বামীর কাছে জানতে চান, ‘তারা ধরা পড়বে না তো? শাস্তি হবে না তো?’ ইফতিখার তার স্ত্রীকে অভয় দিয়ে বলেন, ‘চিন্তা করো না। আমাদের অপরাধ আদালতে প্রমাণ করার কোনো সুযোগই রাখিনি।’ আরেকদিন তিনি স্ত্রীকে বলেন, ‘ব্রিটেনে খুনের ঘটনা শতভাগ নিশ্চিত না করতে পারলে সাজা হয় না। তুমি যদি ৪০ জনকেও খুন কর, তুমিই যে খুন করেছো এটা শতভাগ প্রমাণ না করা পর্যন্ত কিছুই করতে পারবে না আদালত!’

পুলিশ শতভাগ নিশ্চিত হয়েই তাদেরকে গ্রেফতার করেছিল। এখান থেকে তাদের মুক্তির কোন উপায় ছিলনা, শুধু প্রমাণের জন্যে সময়ের অপেক্ষাই এই দেরীর কারণ। সে দিন আদালতে মা বাবার মুখের দিকে তাকিয়ে কন্যা আলিশা আবেগপ্রবণ হয়ে সাক্ষ্য দেয়া বন্ধ করে দিতে পারে, এই আশঙ্কায় তার কাঠগড়ার সামনে একটি পর্দা ঝুলিয়ে দেয়া হয়েছিল যাতে সে তার মা-বাবার মুখ দেখতে না পারে। আলিশার মুখে, জন্মদাতা পিতা ও গর্ভধারিনী মায়ের হাতে নিজের আপন সন্তান খুনের লোমহর্ষক এই হত্যাকান্ডের অবিশ্বাস্য ঘটনার বর্ণনা শুনে সেদিন চেষ্টার আদালতই নয় সারা দুনিয়া হতবাক হয়ে গিয়েছিল। আজ ৩রা আগষ্ট শুক্রবার ২০১২ আদালত সেই দুই ঘাতক খুনীদের ২৫বছরের কারাদন্ড শাস্তি দিয়েছেন। সারা দুনিয়া অবাক বিষ্ময়ে তাকিয়ে দেখলো কেমন করে সামাজিক প্রথা, অন্ধ বিশ্বাস আর তথাকথিত পারিবারিক ঐতিহ্যের কাছে হার মানলো রক্তসম্পর্কের পবিত্র ভালবাসা।

httpv://www.youtube.com/watch?v=suCtN-e9Gkc

আরো তথ্যাবলি-

দ্যা ইনডিপেন্ডেন্ট-

দ্যা টেলিগ্রাফ-

দৈনিক ইত্তেফাক-

ইয়োর্কশ্যার পোষ্ট-