লিখেছেন: তাপস শর্মা
সতর্কীকরণ:
এই পোস্টের যাবতীয় বিষয় একান্তই ব্যাক্তিগত অনুভূতির ফসল!ধর্ম কিংবা যাবতীয় প্রথার বিরুদ্ধাচারণ থাকলেও এটাকে সরলীকরণ করার কোনো প্রয়োজন নেই। কেননা আমার ব্যক্তিগত অনুভূতির বাইরে যারা ধর্ম এবং তাঁর সার্থকতা নিয়ে চর্চা করেন এদের প্রতি বিন্দুমাত্রও বিদ্বেষ এই লেখার উদ্দেশ্য নয়। ব্যাক্তিগত ভাবে যাদের প্রসঙ্গ এসেছে সেগুলি যেভাবে অনুভব করেছি তাই এই লেখায় বর্ণিত হয়েছে….
————————–
শাশ্বত সত্য বলে একটা কথা আছে। সত্যের পরাকাষ্ঠা হিসেবে অনেক সময় এঁকে সুন্দরভাবে এঁকে দেওয়া হয় ভুয়া এবং জাল জিনিষের উপরে। ধর্ম, জাত প্রথা ইত্যাদির প্রসঙ্গে যত চুপ থাকা যায় ততই মঙ্গল, কেননা একে নিয়ে কথা বলাই মানে হল কোন অশনি সংকেত, অনেকটা ছেলেবেলায় আপত্তিকর কোনকিছু করে ফেলার মত। জীবনের বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিচিত্রসব মানুষ এর সঙ্গে সাক্ষাত এর ফলে আমার ধর্মাভিজ্ঞতাও বিচিত্র ধরণের। এমন একটা সোসাইটি গড়ে উঠেছে যেখানে জাত তো পরে আসবে আগে মানুষের খাবার দেখেও মানুষকে ঘৃণা করা হয়। যেখানে একটা হিন্দু শিশুকে শুনতে হয় – ছিঃ ওরা মুসলমান, ওরা গরু খায়, ওদের সাথে মিশবি তুই, জঘন্য? আবার একটা মুসলিম সন্তানকে শুনতে হয় – ওরা কাফের এর জাত। শুয়োর খায় ওরা, ওদের সাথে মেশা হারাম! এগুলি যারযার ধর্মের কাছে শাশ্বত সত্য!
অনেক কথা আছে যেগুলি আদতে বলতে গেলেও না বলাই থেকে যায়। কখনো কখনো ভাবি আসলেই আমি কতটুকু সভ্য? কারণ ঐ সভ্যতার আড়ালে আমার সত্যটা ঢাকা পড়ে গেছে হয়তো। গুজরাট দাঙ্গা হয়ে যাওয়ার পর তাই হয়তো এইসব সত্যবাদী সত্তাধারীদের বলতে শুনি – দোষ তো আর কারও একার নয়? তখন পর্দার আড়ালে লুকিয়ে থাকা এইসব স্বঘোষিত এবং সমাজপালিত সভ্যতার দোসরদের বলতে পারিনা যে, একটা ধারালো ব্লেড গলায় নিয়ে খেলা করেন তো দেখি?
আস্তিকতা কিংবা নাস্তিকতা – এই দুইটা জিনিষ না হয় পরে আসবে। জীবনে চলার ক্ষেত্রে সামান্য বোধ এবং জ্ঞানটুকু যখন লোপ পায় ধর্মের খপ্পরে তখন আর বলার মতো কিছুই থাকেনা। চরম ধার্মিক এবং জাতপাতে বিশ্বাসী মানুষগুলিই সমাজের হায়নাদের আরও বেশী করে মদত দিয়ে যাচ্ছে সেই অনাদিকাল থাকেই, সেটা প্রত্যক্ষ না হোক পরোক্ষভাবে তো বটেই। মন্দির মসজিদে গিয়ে সকাল না হতেই হা’ঈশ্বর বলে মাথা লুটায় অথচ ভ্রান্তি বিলাসে এদের তুলনা নেই! আসলে একটা বিশাল সংখ্যক সাধারণ মানুষ এর কাধে দোষ চাপিয়ে লাভ নেই যদিও। ব্যাপারটা অনেকটাই ধাঁচে আইসক্রিম বানানোর মতো। একটা রুটিন এর জীবনে অভ্যস্ত ম্যাঙ্গো পিপল নিজের বোধশক্তি নিয়ে বেশী নাড়াচাড়া করতে পছন্দ করেন না, কিংবা বলা চলে সেই ধাঁচ থেকে বেরিয়ে আসার চেষ্টাও করেন না। এবং এদের কারণেই ধর্ম ব্যবসার অনেক রমরমা। গঙ্গার মৃত আবর্জনার স্তুপে ভেসে যাওয়া জল এরা পান করে নেয় ঈশ্বরের ভক্তিবলে কিংবা কোন পীর এর দরগার তেলে ভেজা ধাগা বেধে রোগ নিরাময়ের চেষ্টা করেন। সবটাই চালিয়ে দেওয়া হয় পরম্পরা ও বিশ্বাসের নামে। আর সেই আস্থার রক্ষক হলেন দ্বীন এর পথে চলা হাজারো ম্যাঙ্গো পিপল। আসলে কারো বিশ্বাস এর উপর কথা বলার অভিপ্রায় আমার নেই। ব্যাপারটা হল অন্ধত্বের এবং সেই অন্ধত্বের হাত ধরেই জন্ম নেয় সংকীর্ণতা। এবং সেই সংকীর্ণতাকেই আমার ভয়!
ঈশ্বরের সত্তায় বিশ্বাসীদের একটা বিশাল ব্যাধির নাম হল – মুক্তধারায় ঈশ্বর স্মরণ। সামান্য শিক্ষার অধিকারী কোন মানুষ, কিংবা তথাকথিত ইলিটারেট মানুষ তো দূরের কথা অনেক বড় বড় পদাধিকারী ব্যাক্তিকেও ‘যুক্তি’ নামে কোন কিছুকে তুড়ি মেরে উড়িয়ে দিতে দেখেছি। একটা উদাহারণ দিচ্ছিঃ ঈশ্বর মানুষকে সৃষ্টি করেছেন এবং সেই ঈশ্বরের অপার মহিমায় নাকি এই দুনিয়া চলে, ইনফেক্ট ঐ শক্তিমান বস্তুটির ( ইয়ে মানে ঈশ্বর ) অনুমতি এবং ইচ্ছে ব্যাতিরেক নাকি এই দুনিয়ায় কিছুই হচ্ছেনা বা হতে পারেনা, তার জন্যই সব চলছে। এমন কি পৃথিবীও ঘুরছে, আমরা ঘুরছি। — এই বিশ্বাসটা প্রায় সব ধর্মের ব্যাখ্যাতেই প্রায় একই রকম। সব পান্ডারা তাদের ধর্মের প্রভুকে ঐ চালকের আসনে বসিয়ে থাকেন। গ্যালিলিও ব্যাটাকেও শেষ পর্যন্ত বলতে হয়েছিল – হ, পিথিমীর চারদিকে সূর্যিমামা ঘুরে! অনেক সময় কথা বলতে না চাইলেও বৃথা তর্কে জড়িয়ে যাই। এমনই এক উচ্চপদস্থ কর্তার সাথে কথা হচ্ছিল, উনি আবার ইন্টেলেকচুয়ালও বটে। আমাদের এখানে একটা সংস্থা আছে – ‘প্রজাপতি ব্রম্মকুমারী’ বলে, সেখানে ঈশ্বরের পায়ের তলায় গিয়ে জ্ঞানচর্চার স্বরূপ এবং আধ্যাত্মিক্তার পথে উত্তরণ শেখানো হয়। উনি সেখানকার কত্তাব্যাক্তি। ভয়ানকভাবে ‘হিন্দু’ তিনি। তিনি আমাকে একবার বাগে পেয়ে বেদ থেকে শুরু করে ভগাবান মণু অবধি আধ্যাত্মজ্ঞান বাটলেন। সবশেষে ঐ একই বিলাপ – সবার উপর ঈশ্বর সইত্য, তাঁহার উপর নাই।
শুনেছিলাম খুব মনযোগ দিয়ে উনার কথা। পেট ফেটে হাসি আসছিল, তবুও কোন রকমে আটকে রেখে শেষে উনাকে প্রশ্ন করলাম – আপনি চার্লস ডারউইন এর নাম শুনেছেন?
উনি মহাবিরক্ত হয়ে বললেন – এটা কেমন শিশু সুলভ প্রশ্ন। উনাকে কে না জানেন।
আমি বললাম – তাহলে ন্যাচারাল সিলেকশন নিয়েও আপনার ভালো আইডিয়া আছে নিশ্চয়ই।
জবাবে উনি – ডারউইন দাদুর পীর ( ইয়ে মানে উনি যাজক ছিলেন তো ) বাবার ইতিহাস থেকে শুরু করে বাপ কক্তৃক বিতাড়িত ডারউইন এর ইতিহাস এবং ন্যাচালাল সিলেকশন নিয়ে উনার গবেষণার একটা লম্বা ফিরিস্তি দিলেন। – সত্যি কথা বলতে আমিও এত ভালো জানতাম না। উনাকে বললাম – তাহলে আমি তা মানেন ডারউইন যা বলেছেন?
উনার উত্তর অনেকটা এই রকম – হে ছোকরা, বিজ্ঞান বিজ্ঞানের জায়গায় ঠিক আছে। ডারউইন ভালোই বলেছেন কিন্তু শেষ কথা এক কথা, ঈশ্বরের বিশ্বাস হল সর্ব সত্য। যদি ঈশ্বরই না থাকতেন তাহলে তুমি আর আমি কোত্থেকে আসতাম? আর ডারউইনইবা কোথায় থেকে জন্ম নিতেন।
-লে হালুয়া! আমি আর উনাকে কিছুই বলি নাই। কিছু বলার ভাষা আমার কাছে ছিল না। কেননা কি করে মানুষ জন্ম নেয়, আমি আর উনি যে কি করে জন্ম নিয়েছি আর ডারউইন এর জন্ম যে কি করে হয়েছে, তার পেছনে ‘কি কি করা’ হয় – এগুলি আর উনাকে বলার কোন ইচ্ছে আমার ছিল না।
আস্তিকদের প্রতি আমার কোন বিদ্বেষ নেই। ততক্ষণ নেই যতক্ষণনা সেটা আমার মাথা ব্যাথার কারণ হয় কিংবা অন্যের ক্ষতির কারণ হয়। যখন আমার মাথা ব্যাথার কারণ হয় তখন আমি সামান্য জঙ্গিপনা করে থাকি। এবার সে যেই হোক না কেন, আমার বাপ হলেও উনার নিস্তার নাই। এই রকমই ঘটনা হল ঐ ঈশ্বর স্মরণ এর ব্যাপার। মন্দিরে কিংবা মহল্লায় অথবা মসজিদে ইয়া সাইজের শব্দ যন্ত্র লাগিয়ে ঈশ্বরকে ডাকা, কীর্তন করা কিংবা ওয়াজ – মেজেফিল এর আয়োজন করা আমার কাছে মহাবিরক্তির বিষয়। কারোর পড়ার ডিস্টার্ব করা, কারোর স্বাস্থের ক্ষতি করা, কারোর দৈনিক জীবন যাপনের পথে আঘাত হানা – ঈশ্বর স্মরণ করতে গিয়ে এই অধিকার তাদের কে দিয়েছে?
… এমন কিছু আমার মাথা ব্যাথার কারণ হলে আমি নিজের পন্থা ইউজ করি। হালের একটা ঘটনা বলছি –
সারাদিন ৩৫-৩৮ ডিগ্রী টেম্পারেচারে থাকলে মানুষের টেম্পার কতটা গরম হয়? সেদিন আমার মেজাজ ভয়ানক খিটখিটে হয়ে ছিল। আর এর উপর যদি কোন মাছি মাথার উপর ভ্যান ভ্যান করে তো? – সেটাই হয়েছে। আমার পাড়ায় আজ শ্রীমান পুলিন বিহারীর বাড়িতে হরিনাম সংকীর্তন। আর যায় কই! উনি দুইটা ইয়া সাইজের মাইক লাগাইয়া জনগণকে ভগবানের লেজের তলে টানার জন্য যথাসাধ্য চেষ্টা করে যাচ্ছিলেন। বিকট শব্দে বাজছে – তুমি মা জগতের উদ্ধারিনী মা, ইত্যাদি… মেজাজ এর পুরাই ফালুদা। কি করব ভাবছিলাম। এরপর আমার সাউন্ড সিস্টেমের ফুল ভলিউম বাড়িয়ে গান চালিয়ে দিলাম – ‘ক্রিপ্টিক ফেইট’ এর : “রক্ত গরম। ইচ্ছে করে তোরে ধরে ঠান্ডা মাথায় হাসি মুখে গলা টিপে হত্যা করি” : পুরাই ধাতব….. এইবার আমার আশেপাশের সবাই শুনছিল ভয়ানক জ্যামিং … আহ! কি শান্তি। আর আমি এক গেলাস কফি নিয়া দুলতেই থাকলাম…
একটা ব্যাপার আমি খুব লক্ষ্য করেছি যে, আস্তিকরা নাস্তিকদের সেই অর্থে সহ্য করতে পারেনা। একবারে সত্যি কথা বললে আমার মাকেও যদি আমি খাঁটি আস্তিক বলে ধরে থাকি, তাহলে বলতে হয় এক অর্থে তিনিও তাঁর সন্তানকে সহ্য করতে পারেন না। আমার গরুর মাংস খাওয়ার কিসসা শুনে উনি আমার সাথে কথা বলেননি বহুদিন। কেন? একটা খাবারইতো খেয়েছি, জাত গেল কোত্থেকে আমার? কি করে আমার ধর্ম বিনাশ হল? ঘটনা হল, দীর্ঘকাল ধরে চলে আসা পরম্পরাকে এঁরা এমনভাবে আঁকড়ে ধরে আছেন যে অন্য কোন কিছুই এঁদের কাছে ধোঁয়াশায় পরিপূর্ণ হয়। কিন্তু সভ্যতা বিবর্তিত হতে হতে আজ এখানে এসে পৌঁছেছে, সব কিছুই সময়ের সাথে পরিবর্তিত হয়। সুতরাং পরম্পরাও পরিবর্তিত হতে বাধ্য! কিন্তু তা ঠিক সেই মাত্রায় হচ্ছেনা, এটাই ত্রুটি। যেমন আমার গ্রামের বাড়িতে এখনো কোন শুভ অনুষ্ঠানের দিনে পাড়ার বুড়ো মুরুব্বি মানুষেরা পর্যন্ত আমাকে ছোট কর্তা বলে ( ব্রাহ্মণ বলে কথা ! ) গড় হয়ে প্রণাম করতে আসেন। ভীষণ লজ্জা ও সংকোচ হয়! এটা কিসের পরম্পরা?
আমার অভিজ্ঞতায় নাস্তিকদের আমি দেখিনি যে কোন আস্তিককে ঘৃণা করতে কিংবা বিনা কারণে তার সাথে কোন বিবাদে যেতে। কিন্তু নাস্তিকদের প্রতি আস্তিদের অনেক ধরণের মনোভাব আমি দেখেছি। এঁরা ‘আমাকে আমার মতো থাকতে দাও’ মতে বিশ্বাসী হলেও নাস্তিকদের কথায় তাদের চালচলনে বিশেষ ক্ষিপ্তও হয়ে থাকেন। কেন ভাই নাস্তিকদের ওদের মতো থাকতে দিন না, সমস্যা কোথায়? আবার অনেক সময় আস্তিকরা নাস্তিকদের লাইনে আসুন বলে, দ্বীনের পথে আনার চেষ্টাও দিয়ে থাকেন। … আবার অনেক সময় যা জানেনা যা বুঝেনা যা নিয়ে মানুষের বিন্দুমাত্রও আইডিয়া নাই তা নিয়া যখন মানুষ খোঁচা মারে তখনও বিরক্ত লাগে। ঈশ্বরতত্ব প্রচার ইত্যাদি… কিন্তু তাঁর জানাটাও স্পষ্ট হওয়া চাই। তা না করে ঠ্যাংর ট্যাংর করলে মাথা আউলা হয় না…!! এভাবেও ধর্ম বিপ্লব সংগঠিত হয়।
মহান চন্দ্রবিন্দু লিখে গেছেন – “খোঁচা মারো ঠেলা দাও এই জরদগবে, পাঁজিতে লেখা আছে আজ বিপ্লব হবে।”
সমস্যা কখনোই ঈশ্বরে বিশ্বাস বা আস্তিকতা নিয়ে হয়না। সমস্যাটা হয় অন্ধভক্তি ও নিরাসক্তি নিয়ে। ধর্ম,জাত – কেন্দ্রিক যত বিপর্যয় হয়ে গেছে এর মূলে ধর্মীয় মৌলবাদ দায়ী হলেও মূল ভিত্তি কিন্তু ধর্মাচার! এর মানে আমি এই সরলীকরণ করছি না যে ধার্মিক মাত্রই ধর্মীয় মৌলবাদী। কিন্তু সব ঘটনার একটা সাধারণ সম্পৃক্ততা হল – ধার্মিকরা ধর্মের নামে যেকোন কিছু করেই প্রায়ই পার পেয়ে যান। অনেক ক্ষেত্রেই ধার্মিকরা প্রচুর ভুল এবং বিশ্রী কাজে সায় দিয়ে থাকেন, সেটা প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষ দুই প্রকারই হতে পারে। আমার জাত ভাইরেরা অমুকদিন ঐ ইয়েদের ক্ষতি করে এলো, আর আমি ভালো মুমিন সেজে চুপ মেরে গেলাম এবং তাদের কাজে গর্ববোধ করলাম – এটাই এক ধরণের সমর্থন।
যদিও বিচিত্র ধর্মের বিচিত্রগুণ আমি দেখেছি। একান্তই ব্যাক্তিগত অবজারবেশন – পুরুষের ধর্মাচার অনেকটা উন্মুক্ত হয়ে থাকে। কিন্তু নারীরা পুরুষদের চেয়ে অতিমাত্রায় ধার্মিক হয়ে থাকেন। ওদের প্রকাশটা নীরব, কিন্তু তীক্ষ্ণ। একটা ঘটনা শেয়ার করছি-
একদিন সন্ধ্যার পর দেখি বাড়িতে কিসের সব তোড়ঝোড় চলছে। ঘটনা কি আমার কাকিমা’কে জিজ্ঞাসা করতেই চোখ কপালে তুলে বলল – কি’রে তুই? আজ বাড়িতে সন্ধ্যার পর ‘নন্দ নারায়ণ’ (ইয়ে মানে উনি দেবতা বিশেষ) এর কাছে ভোগ চড়ানো হবে তাও জানিস না। আমার কাকিমণি আমার ভগবানের প্রতি অজ্ঞতা নিয়ে আমাকে উঠতে বসতে নানা জ্ঞান ও তিরস্কার করে থাকেন। তাই আমি কথা না বাড়িয়ে কাচুমাচু হয়ে কেটে পড়লাম। এসে দেখি আমার মা’ও বিজি। এরপর আর কি সন্ধ্যার পর থেকেই শুরু হল ভগবানের লেজ টানাটানির আসর, ভাগ্যিস মাইক সিস্টেম নেই, নইলে……। তবুও মোটামোটি মাথায় যন্ত্রণা ধরানোর মতো চিক্কুর দিয়ে বাড়ির সব মহিলাকূল ( মা, জ্যাঠিমা, কাকিমা’রা) ভগবানেরে এই ধরতিতে নামিয়ে আনল বলে কথা। এমনিতে এরা কেউ আমাকে ঘাটায় না, হিন্দু বাড়িতে এই ম্লেচ্ছ কি করে জন্মালো এই নিয়ে বাড়ির মহিলাদের চিন্তার শেষ নেই!! … যাই হোক কি করি এই অবস্থায় গান চালালে নিজ বাসায় মহিলাকুলের রোষানলে পড়ার মত অবস্থা। … কিন্তু হঠাতই পরিত্রাতার ভূমিকায় ফোন এল আমার এক বান্ধবীর। আমিও আহা কি আনন্দ আকাশে বাতাসে বলতে বলতে কিত্তনের শোক ভুলে লুল ফেলতে চলে গেলাম।
… সে কীর্তন এর আওয়াজ পাইয়া জিজ্ঞাসা করল – ইহা কি বস্তু?
আমি কইলাম – আরে কিছুনা। ওসব আজাইরা ক্যাচাল।
ও বলল – আজ তো আমাদেরও প্রেয়ার চলছে।
আমি প্রমাদ গুনলাম। এখানে বলে রাখি আমার এই বান্ধবি অবাঙ্গাল হৈলেও একজন খাঁটি মুসলিম মুমিনা। ওরে কইলাম – আইচ্ছা। ভালা কথা, তয় আমার লাইগ্যা কি প্রেয়ার কল্লা?
জবাবে সে আইটেম বুম ফাটাইল, অংরেজীতে যা কইল তার সারমর্ম এই – আমি মহান আল্লার কাছে তুমার লাইগ্যা দুয়া করছি তুমি যাতে দ্বীনের পথে আসো ( আজ্ঞে সেও জানে আমি বজ্জাত, বাস্টার্ড ), আমি চাইছি তুমি যাতে আল্লাহর রহমতে বিশ্বাস কর এবং তার লাইগ্যা আল্লা তুমারে হেল্পাইব, তুমি শুধু আল্লাহ’রে মানবা এবং একজন খাডি মুসলিম হৈবা। আল্লা তুমারে সব খুশি আর জন্নত দিব। … এই কইয়া মুমিনা তাড়াতাড়ি কইল প্রেয়ারে দেরী হৈতেছে। খুদাপেজ। আমিও কইলাম – খুদাপেজ।
এরপর কিছুক্ষন দম নিলাম। এতকিছু একসাথে ঘটে গেলে দম নেওয়া লাগে। এরপর যা করলাম তার সারসংক্ষেপ এমনঃ
কীর্তন তখন মাঝামাঝি অবস্থায়। বিরতি চলছে। এই সময়টা মনে হয় দেওয়া হয় ভগবানকে খাওদা দাওয়াগুলি টেস্ট করার জন্য। আমি সটান গিয়ে নাট মন্দিরের সামনে দাঁড়ালাম। ওরা ভাবল পুলার বোধ-উদয় হৈছে। এরপর আমি আমার প্রিয় মুমিনার সাথে যা কথা হল তা উগরাইয়া দিলাম। সাথে ইছলাম ধর্মের নানা উপকারিতা এবং আজকের দিনে ( শবে-মেরাজ ) আল্লা কি করে তার বান্দাদের নামাজ এর অনুমতি দিলেন তার পূর্ণাঙ্গ ব্যাখ্যা দিয়ে ওদের মুখগুলির দিকে তাকিয়ে পিছার বারি খাওয়ার হাত থেকে রক্ষা পেতে কেটে পড়লাম সুরসুর করে। আমার মা মোটামোটি জানে আমার স্বভাব, তুবুও তাঁর মুখটা ভয়ানক কঠিন দেখাল, কাকিমা এবং জ্যাঠিমা প্রায় মূর্ছা যাবার মতো অবস্থা, আর আমার মাসিমণি এবং উপস্থিত অন্যান্য পারিষদরা অলমোস্ট হায় হায় ধ্বনি তুলল। এরপর আর কীর্তনের আওয়াজ পাওয়া গেলনা ভালো করে, তা হ্রস্ব থেকে হ্রস্বতর হয়ে গেলো।
………
এবং তারপর রাতের খাবার আমাকে নিজে একাএকা খেতে হয়েছে, কেউ আমাকে খাবার দেয় নি। কেউ আমার সঙ্গেকথা কয় নাই। …
হিন্দু ঘরে জন্ম গ্রহনকারি নাস্তিকদের পরিনাম একি। তারা প্রথমে নিজেদের উদার বলে পরিচয় দেয়…তারপর মুসলমান হয়। আসল কারণ হল মুসলিম মেয়েদের/ছেলেদের সাথে প্রেম ও বিয়ে। মুসলিমরা এদেরকে সিস্টেম এ ধর্মান্তরিত করে।
আপনার হাই রেজাল্যুশান ছবিওয়ালা ব্যানার ভালো লাগছে বইলা গেলাম, তাপস শর্মা। এইরকম আরও দিয়েন। 🙂
@রূপম (ধ্রুব),
হ। চেষ্টা করুম দেওনের লাইগ্যা।
তাপস’দা, প্রথমেই অভিনন্দন নাও, নিজের জীবনের এই তিক্ত অভিজ্ঞতা সবার সাথে আলোচনা করার জন্য| এই ধরনের একটা পর্যায় তোমার-আমার মতো সবাই অতিক্রম করে| এবার আমার অভিজ্ঞতা কিছু বলি,
আমার মা-বাবা দুজনেই ধার্মিক মানুষ| কিন্তু তাতে বাড়াবাড়ি নেই| বরং ধর্মপ্রকাশে বাড়াবাড়ি তারা দুজনেই পছন্দ করেননা| বাবা তার তরুণ জীবনে নাস্তিক এবং সমাজতান্ত্রিক মনোভাবের ছিলেন| বলতে গেলে নাস্তিকতা বিষয়ক মনোভাবে তার কাছ থেকেই হাতে খড়ি| কিন্তু মা স্বাভাবিক ভাবেই সমাজের এই ধর্ম-দর্শন ত্যাগ করে আসতে পারেননি| কিন্তু আমার কখনোই কিন্তু একজন মুক্তমনা হয়ে বেড়ে উঠতে গিয়ে কোনো সমস্যা হয়নি এই পরিবারে| বরং কোনো কিছু নিয়ে প্রশ্ন করার ব্যাপারে আমি বরাবরই উত্সাহ পেয়ে এসেছি| পরে জীবনের উত্থান-পতনে বাবা কোনভাবে ঈশ্বর বিশ্বাসী হয়ে ওঠেন| কিন্তু তার জন্য কোনো নির্দিষ্ট ধর্মকর্ম তাকে আমি করতে দেখিনি| তিনি বিশ্বাস করেন একজন সৃষ্টিকর্তা আছেন, আবার এও বিশ্বাস করেন তার জন্য আলাদা কোনো আয়োজনের প্রয়োজন পড়েনা| বলতে গেলে তিনি একটি মিশ্র অনুভূতির মাঝে অবস্থান করে চলেছেন| কিন্তু তার এই অবস্থান থেকে আমার মনে একটি প্রশ্ন আসে, ঈশ্বর বিশ্বাসী হওয়ার জন্য কি কোনো নির্দিষ্ট ধর্ম পালন করা জরুরি কিনা? আমার মনে হয়, হয়তো জরুরি নয়| এতে কিন্তু বিভিন্ন ধর্মভেদে সাংঘর্ষিক অবস্থাটিও কমে আসে|
আমি নিজে ঈশ্বর বিশ্বাস করিনা| তুমি ভালো করেই জানো| কিন্তু আমার এই জীবন ধারাতে আমার মা-বাবা কখনো কোনো বাধা প্রদান করেননি| বরং এই প্রশ্নে তারা নিরব| আমিও, তাদের সাথে যখন কথা হয়েছে যুক্তি দিয়েছি কিন্তু কখনোই সেটা মনোমালিন্য এ পরিনত হয়নি| হয়তো এটাই আমার জন্য একটি বড় পাওয়া|
সমাজের সব থেকে বড় সমস্যাটি হচ্ছে, শিশুকাল থেকে আমাদের অনেক কিছু শেখানোর আয়োজন করা হয়, কিন্তু আসল জিনিসটি শেখানো হয়না ঠিক করে| আর তা হলো, প্রশ্ন করা| বরং উল্টো কিছু সুনির্ধারিত জীবনযাত্রা আমাদের অনুসরণ করতে বাধ্য করা হয়| এতে অনেকে সেটাতেই অভ্যস্ত হয়ে পড়ে, অনেকে সাহস দেখিয়ে গন্ডিবদ্ধ জীবন থেকে বেড়িয়ে আসে| কিন্তু পরের দলের লোকসংখ্যা কম| কারণ সবাই একটি অলীক মায়াতে জীবন কাটাতে পছন্দ করে, বাস্তবের রুক্ষতাকে কেউ যুক্তি দিয়ে বিচার করতে আগ্রহী হয়না| আমাদের জন্মের আগে যেমন কিছু ছিলোনা এবং মৃত্যুর পরেও কিছু নেই, এই কঠিন বাস্তবটি বেশিরভাগ লোক মানতে চায়না| আর এর থেকেই আসে মৃত্যুর পরেও বেঁচে থাকার এক অলীক বিশ্বাস| আর যা আরো তীব্র করে দেয় ধর্মগুলো| আর যেকোনো ধর্ম এই পারলৌকিক সুখ-সাচ্ছ্যন্দের মোক্ষম অস্ত্রটি প্রয়োগ করেই তাদের অনুসারীদের দল ভারী করে| আসলে কালের গ্রাসে নিজের অস্তিত্ব বিলীন হয়ে যাবে, এই সুতীব্র অনুভূতিটি আমাদের মানসিকভাবে যতোটা দুর্বল করে দেয়, সেখান থেকে বের হয়ে অধিকাংশ লোক আসতে পারেনা|
যাই হোক, যৌক্তিক আলোচনা চলুক| আবারও ভালো লাগা জানাচ্ছি লেখার প্রতি|
@অর্ফিয়াস,
থ্যাঙ্কস ব্রাদার।
তোমার অভিজ্ঞতা শেয়ার কর এখানে, ভালো লাগবে।
০২।
(Y)
আসলে আমাদের পারিপার্শ্বিক পরিবেশ আমাদের বদলের জন্য অনেক দায়ি। সমাজ যখন একটা যায়গায় এসে স্থবির হয়ে যায়, তখন কিছু মানুষ সেটাকে অস্বীকার করে বেড়িয়ে আসতে চান, সেটাই তখন ঐ সমাজ ব্যাবস্থায় অসামাজিক হয়ে যায়। স্ট্রাগল তখনই শুরু হয়, সেই ধারা অব্যাহত থাকে…
খুব সুন্দর লিখেছেন। অনেক ধন্যবাদ আর শুভেচ্ছা লেখাটার জন্য 🙂 (F)
@অচেনা,
আপনাকেও অনেক ধন্যবাদ লেখাটি পড়ার জন্যে।
ভেরিগুড ভেরিগুড ঝালমুড়ি ডালমুট। অর্থাৎ কিনা লেখা ভারি মুখরোচক হয়েছে। 😛
তার উপরে আরেকজন বিনোদনী ব্যক্তিক্ত্ব এসে উপরি আরো কিছু বিনোদন দান করে গেছেন, একেবারে সোনায় সোহাগা 😀
@কৌস্তুভ,
বটে!
বিনোদন সর্বত্র! তাই যেখানে পাওয়া যায় হারিয়ে লাভ নেই
ইসলামে বণর্বাদ (ভেদ) নেই কে বললেন ভাইজান! সৈয়দের বাচ্চারা আছে না! রসুলের খাস বংশধর। আমার হিসেবে এক বাংলাদেশেই যত সৈয়দ আছে তার সংখ্যা গোটা সউদি (আমি বলি চউদি) আরবের লোক সংখ্যার চেয়ে বেশী। তবে অন্তত এইদেশে এই ভেদ ততটা মমর্ভেদী নয়। আপনার যদি টাকাপয়সা থাকে/আপনার ছেলেটি যদি উচ্চ শিক্ষিত হয় অথবা আপনার কন্যাটি যদি খুবই সুন্দরী হয় – তাহলে আপনি এটা জয় করবার আশা করতে পারেন। তবে ইসলামের প্রাথমিক যুগে মোহাজের-আনসার, আরব-অনারব, সাদা-কালো, তাবেয়িন-সাবেয়িন – এসব ভেদাভেদ সব সময়েই ছিল এবং কিছুকিছু বিভিন্ণ ভাবে এখনো আছে। মনে রাখবেন সেই প্রথম যুগে কুরাইশ ছাড়া কেউ খলিফা হতে পারেনি!
(Y) (Y)
আপনাকে এখানে দেখতে পেয়ে অসম্ভব ভাল লাগছে, তাপসদা! লেখাটা অসম্ভব সুন্দর হয়েছে! আপনার স্বভাবসুলভ ভাষায় বিরাট কিছু সত্যের দিকে আমাদের দৃষ্টি নিবদ্ধ করেছেন! শেষের কাহিনীটা তো অনবদ্য!
(Y)
(Y)
পুনশ্চঃ মুক্তমনায় আপনাকে নিয়মিত দেখতে পেলে অসম্ভব ভাল লাগবে!
@কাজি মামুন,
ধন্যবাদ মামুন ভাই।
দৌড়ের উপরে আছি আজকাল কিছুটা। তবুও চেষ্টা করব নিয়মিত হবার। আগে নীরব পাঠক ছিলাম এখানে। দেখি এখন কতটুকু সরব হতে পারি।
গরু বা শূকর কি খাচ্ছি সেটা বড় কথা নয়। প্রশ্নটা হল ভাল লাগে বলে খাচ্ছি, নাকি নিজে কত উদার এই আত্মপ্রবঞ্চনা মেখে বদবু ছড়াচ্ছি?
@ভাস্কর,
খাওয়াটা তো দোষের না। তবে আত্মপ্রবঞ্চনা ব্যাপারটা তো একেবারেই আলাদা। যদি আমাকে প্রশ্ন করেন, তাহলে আমি ব্যাক্তিগত ভাবে বলব – আমি নিজের সবচে বড় সমালোচক হতে পারি। আমি বরাবরই বলে থাকি – আমি পারফেক্ট নই, অনেক দোষ আছে আমার মধ্যেও। তবে চেষ্টা করি আমার দোষগুলির জন্য যাতে অন্যের ক্ষতি না করে । চেষ্টা করে যাই নিয়মিত মানুষ হয়ে থাকার জন্য। এই তো …
মুক্তমনায় স্বাগতম !
@রণদীপম বসু,
ধন্যবাদ রণ দা… 🙂
হিন্দু ধর্ম ছাড়া অন্য কোন ধর্মে বর্ণের উৎপত্তি নেই। তাই এইধর্ম ছাড়া অন্য কোন ধর্ম মানুষকে ঘৃণা করতে শেখায়নি। এই ধর্ম মনুস্য সমাজকে চারভাগে বিভক্ত করেছিল।
ক) ব্রাহ্মণ: পূজা-পার্বন, যাগ-যজ্ঞ, ধর্মশাস্ত্র পাঠ ও রক্ষণাবেক্ষণের অধিকার যারা সংরক্ষিত করেছিল।
খ) ক্ষত্রিয়: অস্ত্র-শস্ত্রের ব্যাবহার, দেশরক্ষা ও দেশ শাসনে যারা নিয়োজিত হত।
গ) বৈশ্য: ব্যবসা-বাণিজ্য, কৃষিকাজ ও পশুপালনের দ্বারা যারা জীবিকা নির্বাহ করত।
ঘ) শূদ্র: উপরোক্ত তিন শ্রেণীর সেবাকাজে যারা ব্যপ্ত হয়েছিল।
এই শ্রেণী বিভাগের ব্যাখ্যায় ব্রাহ্মণরা প্রচার করেছিল যে পৃথিরীর সৃষ্টিকর্তা ব্রহ্মা তার শরীরের বিভিন্ন প্রত্যঙ্গ থেকে মানুষ সৃষ্টি করেছেন। ব্রহ্মার মুখ থেকে সৃজিত হয়েছে ব্রাহ্মণ এবং এই কারণে তারা দেবতার পক্ষ থেকে কথা বলতে পারে, হাত থেকে সৃষ্টি হয়েছে ক্ষত্রিয় অর্থাৎ যোদ্ধা শ্রেণী, উরু থেকে বৈশ্য অর্থাৎ বণিক শ্রেণী, আর পদযুগলের ময়লা থেকে শূদ্র অর্থাৎ ভৃত্য শ্রেণী।
শূদ্রদের জীবন ছিল অতি কষ্টের, কিন্তু তার চেয়েও কষ্টের ও লাঞ্ছনার জীবন ছিল তাদের যারা ছিল অচ্ছুৎ। অচ্ছুৎ গণ্য করা হত তাদের যারা এই চতুর্বর্ণের কোনটার মধ্যেই পড়ে না। অচ্ছুৎরা সবচেয়ে নোংরা কাজ করতে বাধ্য থাকত। এরা হল মুচি, ম্যাথর বা ডোম, কাওরা বা শুকর পালক ইত্যাদি। মনে করা হত এদের গাত্র স্পর্শ করা মাত্রই কোন লোক অপবিত্র হয়ে যায়। ভূমিষ্ঠ হওয়ার মূহূর্ত থেকেই অচ্ছুতের সন্তানকে অশুচি ভাবত লোকে।
শুধু তাই নয় ব্রাহ্মণরা বিভিন্ন বর্ণভূক্ত লোকজনের জন্যে নির্দিষ্ট ধরণের কাজ ও আচার ব্যাবহারের নিয়ম বেঁধে দিয়েছিল:
শরীরের সর্বোত্তম প্রত্যঙ্গ থেকে উৎপত্তি লাভের ফলেই একজন হয় ব্রাহ্মণ-সারা পৃথিবীর প্রভু। ব্রাহ্মণদের যদি কিছু ভাল লাগে, বিনা খেদে তাকে তা প্রদান করা উচিৎ
ঈশ্বর শুধুমাত্র একটি কর্তব্য সমাধার জন্যেই শূদ্রদের নির্দেশ দিয়েছেন: বিনয়াবনত চিত্তে তোমা অপেক্ষা উচ্চবর্ণের লোকদের সেবা কর।
উচ্চ বর্ণদের সম্পর্কে যদি কোন শূদ্র অপমানজনক কোন কথা বলে, তবে তার মুখ উত্তপ্ত লৌহপিন্ড দ্বারা বন্ধ করে দাও। ব্রাহ্মণদের সঙ্গে তর্করত শূদ্রদের মুখ ও কানে ফুটন্ত তেল ঢেলে দিতে রাজাই আদেশ দেবেন।
শূদ্র ব্রাহ্মণকে হাত বা ষষ্ঠি দ্বারা প্রহার করার চেষ্টা করলে শূদ্রের হাত কেটে ফেলার জন্যে যোগ্য হয়, আর রাগান্বিত হয়ে পা দ্বারা আঘাত করলে তার পা কেটে ফেলা উচিৎ।
ব্রাহ্মণের ক্ষেত্রে মৃত্যুদন্ডের স্থলে মস্তক মুন্ডনই চরম শাস্তি।
ব্রাহ্মণকে বাদ দিয়ে ক্ষত্রিয় কখনও সাফল্য লাভ করে না এবং ক্ষত্রিয় ব্যাতিরেকে ব্রাহ্মণেরও কোন সাফল্য নেই।
ঈশ্বরই রাজা ও ক্ষত্রিয়দের সৃষ্টি করেছেন, যাদের কাজ হল এইসব নিয়ম ঠিকমত পালিত হচ্ছে কিনা দেখা।
অবশ্য উপরের কথাগুলো সবাই কম বেশী জানেন, আর আমার বক্তব্যের মূল বিষয়ও এটা নয। আমি যা বলছি তা
– এই উক্তি প্রসঙ্গে। মানুষকে ভালবাসলে অবশ্যই ধর্মকে ঘৃণা করতে হবে- যদি কিনা সে ভালবাসার স্বরূপ এমন হয়, যা স্বীকৃত নয়। একটা জোকস দিয়ে বিষয়টি পরিস্কার করি-
এক শক্ত সামর্থ্য যুবতী গ্রামে কাজ কাম করত। সে সবসময় সাজুগুজু করে থাকত, আর সঙ্গে রাখত একটা পাটি। একদিন এক গৃহকর্তী তাকে জিজ্ঞেস করল- ‘তোমার সঙ্গে সবসময় একটা পাটি থাকে কেন?’
সে বলল-‘কি করব চাচী, আমি মানুষকে খুবই ভালবাসি।’
জানি অধিকাংশই আমার সাথে একমত হবেন না।
ভাইজান উপরে যে বেত্তান্ত দিলেন, বর্ণবাদ নিয়ে সেটা আমাদের তৃতীয় শ্রেণীর পাঠ্য বইতেই আছে। তো এটাকে ফলাও করে এখানে বলার কোন কারণ বুঝে উঠতে পারলাম না। কারণ এটা বর্ণবাদ এর পোস্ট না। আপনে আবার শেষে এসে বলেছেন আপনার মূল বক্তব্য এইটা নয়। তো এগুলি এই পোস্টে এসে লেখার উদ্দেশ্যটা কি ভাইজান?
যাই হোক লিখেছেন যখন বলি, এই সমস্ত কু-বাদ ( বর্ণবাদ ) হিন্দু সভ্যতায় প্রতীকি হিসেবে ধরা হত। ব্রাহ্মণদের আধিপত্য লাভের সেই কৌশল আরও কয়েকশ বছর পূর্বেই অক্কা পেয়েছে। বর্ণবাদ = এখন ধর্ম চর্চা সমার্থক তা একেবারেই বলা চলেনা। যদিও হিন্দু ধর্মের বর্ণবাদের জঘন্য প্রভাব এখনো ভারতের দক্ষিন ও উত্তর প্রদেশের নানা অঞ্চলগুলিতে বিক্ষিপ্তভাবে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে। সেগুলির অবস্থা কল্পনাতীত। হিন্দু বর্ণবাদ নিয়ে লিখব অচিরেই, তখন এই টিয়োটরিয়েল দিয়েন ভাইজান, আপনার দাওয়াত রইলো।
০২।
হাসাইতে আইছেন নাকি? জোকসটাও তো হল না ভাইজান। কি লিখতে কি লিখে ফেললেন। নাস্তিকতার আধার কি জিনিষ না বোঝেন? আধার মানে আন্ধাইর নয় ভাইডি, আধার মানে কোন কিছুর মধ্যেকার মূল জিঘাংসা। উত্তরণ থেকে পথ খুঁজে ধর্মের পাতলুন নিয়ে টানাটানি করলে মানুষকে দেখতে পাবেন কোত্থেকে? তখন ‘যুবতী’ই দেখবেন।
একটা অতি সাধারণ ইয়ে দেই – যদি আপনি মুসলিম মুমিন হন এবং লুঙ্গির মুরিদ হন তাহলে আল্লাহর দরবারে শিন্নি না চড়িয়ে দুইটা পথ শিশুরে পেট ভরে খেতে দিন। আর যদি আপনি হিন্দু মুমিন হন এবং রামাবলীর ফাত্না বিবর হয়ে থাকেন তাইলে বিশাল খরচ করে যে ভোগ এবং আরও নানা উপাচার দিয়ে ভগবান বিশেষের ইয়েতে ইয়ে করে থাকেন সেটা দিয়ে কোন দুর্গতের পাশে দাঁড়ান।
—- এইবার বলতে পারেন, আমি এত্ত বড় বড় কথা ঝারছি তাহলে আমি কি করছি? বা করি? জ্বী, কর্তা আমি কিছুই করিনা, যথাসাধ্য অমানুষ আর ছাগল না হওয়ার চেষ্টা করি।
ধন্যবাদ।
@তাপস শর্মা,
আপনি বলেছেন, এই লেখা একান্তই ব্যাক্তিগত অনুভূতির ফসল। আর এই সব অভিজ্ঞতা প্রত্যেকটি মানুষের কমবেশী আছে। তাহলে আপনি এখানে নতুন করে কি বলতে চেয়েছেন? কাদের উদ্দেশ্যে এই লেখা? আপনি যেমন বলছেন মানুষকে ভালবাসেন বলেই ধর্মকে ঘৃণা করেন, তেমনি ধার্মিকেরা বলবে,মানুষকে আর তাদের ধর্মকে ভালবাসেন বলেই নাস্তিকতাকে ঘৃণা করেন। তাতে আপনার মানুষকে ভালবাসার কথা অসার হয়ে যাবে। মনে রাখবেন, আপনি ধর্মকে ঘৃণা করে কখনও ধার্মিকদের কাছে পৌঁছুতে পারবেন না। আর তাদের কাছে পৌঁছুতে না পারলে আপনার সমস্ত কর্মকান্ড অসার। আপনার মা আর কাকীর কাছে জিজ্ঞেস করে দেখেন, আপনার সম্পর্কে তাদের ধারণা কি? যে নিজ পরিবারের কাছে অসম্মনীয়, সে কখনও অপরের কাছে সম্মানীয় হবে না। অবশ্য সে নিজেকে নিজের কাছে সম্মানীয় ভেবে আত্মতৃপ্তি লাভ করতে পারে।
মন্তব্যের জন্যে ধন্যবাদ।
@mkfaruk,
পুনশ্চঃ
মানুষকে ভালবাসি বলেই ধর্মকে ঘৃণা করি। – যাই হোক আপনারে জাগানোর মত কাঠবলদ আমি নই। ছেলেবেলায় একটা কথা শুনেছিলাম, যে জেগে জেগে ঘুমায় তাকে জাগানো যায় না, তাই আমিও আপনাকে জাগানোর বৃথা চেষ্টা করব না। নিশ্চিন্তে ঘুমান!
এবং, পুনশ্চঃ
আমি কিছুই করিনা, যথাসাধ্য অমানুষ আর ছাগল না হওয়ার চেষ্টা করি।
@mkfaruk,
আপনি নিশ্চিৎ হিন্দু ধর্ম ছাড়া আর কোন ধর্মে বিভাজন নেই? খোদ ইসলাম ধর্মেই রয়েছে চারটি মাজহাব তাতে আবার দুই তরিকা সুন্নি ও শিয়া। বর্ণ বৈষমাই না থাকলেও এক মাঝহাবের লোক অপর মাঝহাবের লোকের ইবাদত প্রক্রিয়াকে অগ্রাহ্য করে।
মানুষ বিষয়টি অনেক বড় অনেক ব্যাপক ধর্ম সেখানে বিশ্বাসের ভিত্তিতে করা একক মাত্র।তাই আমি সৈকতের সাথে একমত যে মানুষকে ভালোবাসি বলেই ধর্ম তথা বিভাজনকে চরমভাবে ঘৃণা করি।
@mkfaruk,
ফারুক সাহেব তাহলে বলুন তো অমুসলিমদের কেন “আস্ সালামালাইকুম” অর্থাৎ তোমার উপর শান্তি বর্ষিত হউক বলার বিধান নাই। কিংবা কোন মিলাদ মাহফিল বা অন্য কোন ধর্মীয় অনুষ্ঠান বা বিশ্ব ইস্তেমায় কখনো শুনেছেন কি একমাত্র মুসলমান ছাড়া ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে সব মানুষদের জন্য দোয়া কামনা করতে? এতে কি আপনার মনে হয় না এতে মার্জিত রূপে প্রকাশ্যে ঘৃণা লুকিয়ে আছে?
@রাজেশ তালুকদার,
এটা কোন বোধবুদ্ধি সম্পন্ন মানুষ বলতে পারে? ধর্মের কূ-সংস্কার গুলো বা ধর্মের মানবতা বিরোধী দিকগুলো তুলে ধরে মানুষকে সচেতন করা একজন শিক্ষিত লোকের কাজ হওয়া উচিৎ, তবে অবশ্যই তা ধর্মকে ঘৃণা করে নয়। কারণ যখনই কেউ ধর্মকে ঘৃণার দৃষ্টিতে দেখবে, তখনই তার কাছ থেকে ধার্মিকেরা সরে যাবে। তাহলে লেখাগুলো কাদের উদ্দেশ্যে হবে?
এটাই বলতে চেয়েছি।
আর আমি আমার হিন্দু টিচার বা মুরুব্বিদের একইভাবে সন্মান জানাই যেভাবে একজন মুসলিম টিচার বা অন্য মুরুব্বিদেরকে জানাই। তাদের মধ্যে আমি কোন পার্থক্য করি না। কেউ কি প্রমান করতে পারবে, মুহম্মদ তার পিতৃব্য আবু তালিবকে সালাম জানাতেন না? আর হ্যাঁ, আবু তালিবের মৃত্যুর পর মুহম্মদ তার জন্যে দোয়া করেছিলেন। তবে আমার লেখা থেকে কেউ যদি কষ্ট পান, তবে আমি তার জন্যে দু:খ প্রকাশ করছি। কেননা কাউকে আঘাত দেবার জন্যে আমি লিখিনি।
আমি কখনও ইস্তেমার দোয়া-দরূদ শুনে দেখিনি, তবে আপনার কথাটা একদম ফেলে দেবার মত নয়। গোঁড়া মুসলিমরা হাদিস আর কোরান ছাড়া অন্য কিতাব পড়ে না, সুতরাং তাদের কাছ থেকে ভালকিছু আশা করা যায় না। আর এ জন্যেই তো মুক্তমনা, ধর্মের ঐ দিকগুলো সমাজের কাছে, ব্যক্তির বিবেকের কাছে তুলে ধরা, নয়-কি?
আপনার মন্তব্যের জন্যে ধন্যবাদ।
@mkfaruk,
জনাব, একটু রয়েসয়ে। কি বলছেন বা কি বলতে চাচ্ছেন সেটা আগে নিজের কাছে ক্লিয়ার হোন। একবার বলছেন যে বর্ণবাদ একটা বিশেষ ধর্মের ভিত্তি। পরক্ষণেই নূতন টার্ম নিয়ে এসেছেন যে ধর্মের বলে কি করে সম্মান আদায় হয় ইত্যাদি…
০২।
জ্বী, পারে। আলবাত পারে। যেমন আপনি বলতে পারেন কোন এক ‘যুবতী‘র কথা ( আপনার প্রথম কমেন্ট দ্রষ্টব্য ) যাকে আপনি উদাহারণ হিসেবে এনেছেন মানবতাবাদ প্রসঙ্গে। সেই আপনার আবালিতকুদ্দুস জোকস এর ব্যাখ্যা দিতে যদি বলেন তাও দিতে পারি। সেই রুচি আর নাই।
শিক্ষিত লোক ধর্মের কুসংস্কার এর ব্যাখ্যা দেবে আস্তিকদের ধরে ধরে। তাইলেই তার মানবতা ঠিক হবে। — এটাই বলতে চাইছেন। জনাব আগে ধর্ম আর কুসংস্কার এই দুই জিনিষ এর পার্থক্য নির্ণয় করতে শিখেন। আপনি সুকৌশলে এখানে একটা চরম কাসুন্দি ঢুকিয়ে দিচ্ছেন যে ধার্মিক মানেই এপোলজিস্ট এটা আমি বা আমরা বলতে চাচ্ছি। ব্যাপারটা এমন নয় ভাইজান। হে হে , দেখেন ধর্ম আর ধার্মিক সমার্থক হয়ে গেলে, ক্যামনে কী? ধর্মগ্রন্থে যেহেতু তার অনুগত মুমিনদের উদ্দেশ্যে সৎ পথে চলার কথা আছে, তো ওরা চলেনা কেন? এইবার অধার্মিকের কাজ বুঝি এইটা বুঝানো যে আপনার ধর্মের গ্রন্থ বলেছে – সত্য পথে চলতে, আপনে চলেন না কেন? – বলি, ভাইরে ধর্মটা পালন করছে কে??
০৩।
আমি জানাই না। মুরুব্বি মানেই তাদের সম্মান জানাতে হবে তা আমি কস্মিন কালেও মানিনা। এবং আমি পার্থক্যও করি। ভালো মানুষ এবং খারাপ মানুষ – এই দুই ভাগে ভাগ করে আমি সম্মান ও থু থু দেই। তা মুরুব্বি হোক কিংবা যে হরিদাস পালই হোক। মানুষের বিচার হবে কর্মের নিরিখে তার বয়েসের নিরিখে নয়।
আর ” কেউ কি প্রমান করতে পারবে, মুহম্মদ তার পিতৃব্য আবু তালিবকে সালাম জানাতেন না? আর হ্যাঁ, আবু তালিবের মৃত্যুর পর মুহম্মদ তার জন্যে দোয়া করেছিলেন” বলতে কি চাচ্ছেন ভাই। কোন ধর্মের পীর কিংবা প্রচারক তার পারিবারিক জীবনে কাকে সম্মান করল কাকে ঠুয়া মারল এতে বর্ণবাদের কি সম্পর্ক ? কিংবা এতে করে ধর্মীয় আলামতের সহস্র অসামঞ্জস্য ঢেকে যায় কি করে? … কি সব বলছেনরে ভাই… ধুর!
আবারও আমিও বলি মানুষকে ভালবাসি বলেই ধর্মকে ঘৃণা করি। – যাই হোক আপনারে জাগানোর মত কাঠবলদ আমি নই। ছেলেবেলায় একটা কথা শুনেছিলাম, যে জেগে জেগে ঘুমায় তাকে জাগানো যায় না, তাই আমিও আপনাকে জাগানোর বৃথা চেষ্টা করব না। নিশ্চিন্তে ঘুমান!
@mkfaruk,
ভাই, সহজ বাংলা ভাষায় কিছু কথা বলি। ধর্ম একটা প্রতিষ্ঠান, যার নিয়ম কানুন মেনে চলতে ধার্মিকেরা বাধ্য এবং কোন রকম প্রশ্ন ছাড়াই বিশ্বাস করতে হবে, এটাই ধর্ম-এর সার কথা, সেটা যেই ধর্মই হোক না কেন। এখন কোন মুক্তমনা মানুষের পক্ষে চোখ বন্ধ করে ধর্ম মানা সম্ভব না।
দুনিয়ায় আজ যত হানাহানি, তার পিছনে ধর্ম। ধর্মের কারণেই দ্বিগবিদিক শুন্য হয়ে মানুষ আরেকজন মানুষকে মারছে। তাহলে ধর্মকে ঘৃণা না করে কোন উপায় আছে?
ধর্ম যেখানে বিভেদ রেখা টেনে দিচ্ছে মানুষে মানুষে, মানুষকে শ্রদ্ধা সম্মান করতে না শিখিয়ে কেবল ঈশ্বকে ভক্তি করতে শিখাচ্ছে, সেইখানে ধর্মকে সম্মান করার প্রশ্নই উঠে না। কোনদিন শুনিনি, মুসলিমরা বলে, মানুষে মানুষে ভাই ভাই, বলে মুসলিমে মুসলিমে ভাই ভাই। এই বিভাজনটা আসছে কোথা থেকে?
গরুর মাংশ খাওয়া আর শুকরের মাংস খাওয়া এতো সমস্যাটা কোথায়? একটা খাবারই তো। কিন্তু সেই কারনে একজন কেন আরেকজনের সাথে মিশবে না?
এই কথাগুলোই তাপস শর্মা লিখেছেন তার লেখায়। আর সৈকত চৌধুরী এই বিভাজন সৃষ্টি কারী প্রতিষ্ঠানটিকে এইজন্যই ঘৃণা জানিয়েছেন। তিনি কোন মানুষকে ঘৃণা করেন নি। যে মানুষের কাছে মানুষের চেয়ে ধর্ম বড় তারাই কেবল ধর্মকে ঘৃণা করলে দূরে সরে যাবে। তাকে কাছে রাখতে গিয়ে ধর্মকে পছন্দ করা সম্ভব না।
একজন মানুষ বিশ্বাস করে ড্রাগ নিলে তার কোন ক্ষতি হবে না, ধুমপান করলে সে করে অন্যদের কিছু না। তাকে সম্মান দেখাতে গিয়ে কি ড্রাগসকে সম্মান দেখাতে হবে? এইগুল কোন ব্যক্তির শুধু ক্ষতি করে না, আশেপাশের মানুষগুলোকেও আক্রান্ত করে। মাদক যেমন মানুষকে অন্ধ করে দেয়, ধর্মও তেমন। মানুষকে ভালোবাসলে ঐগুলোকে ভালোবাসা সম্ভব না।
একজন মানুষেরর ধর্মবিশ্বাসকে ততক্ষণ টলারেট করা যায় যতক্ষণ তা অন্যকে প্রভাবিত করছে না, নিরবে নিভৃতে সে একান্ত ভাবে কিছু করছে। কিন্তু যখনি তা ব্যক্তির সীমা ছাড়িয়ে সমাজে আসছে, রাষ্টে আসছে, অতিয়াবেগি হয়ে অন্যকে ঘৃণা করছে, হাতে অস্ত্র নিচ্ছে অন্য ধর্মের মানুষকে নাশ করার জন্য। তখন ধর্ম অবশ্যই ঘৃণার্হ।
@নীল রোদ্দুর,
আমি কি বলতে চেয়েছি তা আপনি কেন বুঝতে পারেননি তা বুঝলাম না আমিও তো বিদেশী কোন ভাষায় লিখিনি। আপনি ধর্মকে ঘৃণা করবেন না চুম্মা দেবেন তা সম্পূর্ণ আপনার ব্যক্তিগত। আর আপনার ব্যক্তিগত পছন্দ অপছন্দ বাড়ীতে রেখে দেন, সেটাই ভাল। এখানে ঐসব নিয়ে অলোচনা ফালতু।
এখানে ধর্ম নিয়ে আলোচনা করতে চাইলে ধর্মের কোথায় কি ধরণের ভুল আছে, সেইসব তুলে ধরে মানুষকে সচেতন করেন এবং ধর্মের অসারতা তুলে ধরেন। যারা ধর্মকে না জেনে না বুঝে পালন করছে, তাদের তা কাজে লাগবে। নিশ্চয় আর কিছু বলার অপেক্ষা রাখে না।
@mkfaruk,
আমি আপনার এই কথাটার উত্তর দিয়েছি। কোন বোধ বুদ্ধি সম্পন্ন মানুষ আলবত এই কথা বলতে পারে, কারণ ধর্ম-এর দোষ ত্রুটি দেখানোর জন্য ধর্মকে ঘৃণা করা যাবে না, এমন কোন কথা নেই। ঘৃণা করেও দোষ ত্রূটি ভালোভাবেই দেখানো যায়। আপনি কাউকে হুট করে ইচ্ছে হলেই বোধবুদ্ধিহীন বলতে পারেন না। কেউ যদি মানুষকে ভালোবাসে বলে ধর্মকে ঘৃণা করে আর তাতে যদি আপনার খারাপ লাগে, তাহলেই সেই খারাপ লাগা আপনিই আপনার পকেটে রাখুন। এইখানে কেউ আপনাকে যাকে তাকে বোধবুদ্ধি হীন বলার অধিকার যেমন দেয় নি, তেমনি ধর্মকে ঘৃণা করা যাবে কি যাবে না, সেটাও কেউ আপনার কাছে জানতে চাইনি। আপনার খারাপ লাগা আপনি নিজের কাছেই রাখেন।
ধন্যবাদ।
@mkfaruk,
আগেও বলেছি, এখনো বলছি – ধর্মের ভুল কিংবা শুদ্ধিতার দোসর কারা সেটা আগে ভালো করে দেখেন। নইলে এন্তার হাউকাউ করে লাভ হবেনা।
আর ধর্মকে না জেনে না বুঝে পালন করছে মানে? ধর্ম নিজেই একটা ফালতু টার্ম। এর আবার ভুল আবার শুদ্ধি কি? আপনি কি বলতে চাইছেন, এখানে আমরা বলি যে – হে মুমিন এইভাবে ধর্ম পালন করবেন না তাইলে আপনার ইয়েতে ইয়ে হবে, এটা না করে ইয়ে যুক্ত ইয়ে করেন তাইলে আর ইয়েতে ইয়ে হবেনা। কোনটা চাচ্ছেন?
একটা কথা ক্লিয়ার করেন – আপনি এই গোটা লেখাটা নিয়ে তো কিছু বলেন নি, শুধু শুধু একটার পর একটা বেতুকা টার্ম নিয়ে আসছেন। একটার জবাব দিয়ে দিলে ওটা ক্লিয়ার না করে অন্য দিকে জাম্প করছেন। সমস্যা কোথায় সেটা বলেন? … এই লেখায় কি বলেছি বা আদৌ বলতে চেয়েছি সেটা আগে অনুধাবন করুন।। এরপর না হয় ধর্মের উপকারিতা নিয়ে আমরা কথা বলব। ঠিকাছে।
@mkfaruk, আপনি আবার !!!!হা কপাল :-Y
@তাপস দা,
আমিও আপনার অভিজ্ঞতার সাথে পরিচিত।কিন্তু একটা জিনিস আমি লক্ষ্য করেছি আস্তিকদের বা ধার্মিকদের যদি আপনি নিয়ত উপহাস করেন তারা আরো রক্ষণশীল গোঁড়া হয়ে যায়।আপনার কাছে ব্যাপারটা রসালো হলেও তাদের কাছে ভয়ানক।আর এটা করা উচিতও নয়।তাদেরকে ঠাণ্ডা মাথায় এসবের অসারতা বোঝানো উচিত।
আর গরু খাবার ব্যাপারে (হিন্দুদের) আমি বলব যে স্বাভাবিক নিয়ম ভাঙ্গার চেষ্টা সবারই মাঝেই কম বেশি থাকে।সে হিসেবে আমি নিজেকে মুক্তমনা প্রমাণ করার জন্যে গরু খাবার বিরোধী।আমি গরু-শূকর সবই খাই।এই জন্যে খাই আমার ভালো লাগে বলে।নিজেকে নাস্তিক প্রমাণের জন্য নয়।
আর আজকাল যারা নিজেদের নাস্তিক বলে পরিচিতি দেয়।তারা উপহাস এ খুবি পটু।দিনশেষে কিন্তু আমরা সবাই মানুষ।তাই তাদের উপহাস না করে যতক্ষণ পারা যায় বোঝানো উচিত।ধর্মের কুফল সম্পর্কে,ইতিহাস সম্পর্কে জানানো উচিত।
আমি একবার রামকৃষ্ণ মিশনের এক মহারাজ কে বলেছিলাম ,সন্যাসীদের কাজ বাইরে ঘুরে ঘুরে ধর্ম প্রচার করা, আপনারা তো সারাদিন ঘরে বসে থাকেন………।ফলাফল বুঝতেই পারছেন শুধু ভদ্রতার খাতিরে বাইচা গেছিলাম।তবে মহারাজ্যির রিএকশন দেইখা মজা পাইছি।মঠের উপ্রে চার ধর্মের সাইন লাগানো থাকে, মটো হইল যতমত ততোপথ ।এর চেয়ে বড় ভন্ডামি এর কি হতে পারে।
একবার এক মুসলিম বন্ধু আমারে মুমিন বানানোর তরিকা হিসেবে জাকির নায়েকের কথা বলছিলেন।কিভাবে মোহাম্মদের কথা গীতা, পুরাণ, বেদে আছে।আমি প্রথমে ঐগুলা ব্যাখ্যা করলাম।বললাম আর রেফারেন্স গুলা যদি সত্যিও হয় এর মানে দাঁড়াইল হিন্দু ধর্ম সত্য আর তোরা সবাই হিন্দু ,কারণ নবী কল্কি অবতার। বললাম দেখ ,এইডা ঠিক হিন্দু ধর্মে কলি যুগে কল্কি অবতারের কথা আছে।আর অবতার মানেই, ঈশ্বর। আর ঈশ্বর মানেই বিষ্ণুর অবতার।এখন দেখ রামকৃষ্ণ বলছে তিনিই রাম তিনিই কৃষ্ণ, দুইয়ে মিলা রামকৃষ্ণ।আবার ঠাকুর অনূকূল বলছে তিনি বিষ্ণুর অবতার।আবার ঠাকুর হরিচাদ বলছে তিনিই পূর্ণব্রহ্ম।এই রকম আরো আছে…। কথা হইল এদের একজনেরও যদি কথা সত্য হয়, তাহলে বাকী গুলা ভূয়া।আর একই সাথে কল্কি অবতারের কোটা পূরন। এখন তুই বল কি করা।
:guru: :guru:
@অগ্নি,
আপনার মন্তব্যটি খুবই ভালো লাগল। বেশ তাৎপর্যপূর্ণও বটে। অনেক ভালো কয়েকটি দিক নিয়ে আলোকপাত করেছেন।
ব্যাপারটা উপহাসের নয়, আসলে ব্যাপারটা দাঁড়ায় অন্ধত্বের মহাজনীর। মহাজন প্রথার সুদখোর মহাজনের টিপ সই দিয়ে চুপচাপ দাসত্বের মতোই ধর্মের অঙ্গরক্ষকরা এগিয়ে যাচ্ছেন। এর জন্য প্রায় বৃহত্তর অংশে দায়ী এরাই। নাস্তিকেরা যদি কালো ঠুলি পড়িয়ে বলে দেয় – রাজা তোর কাপড় কই তাহলে ওদের গায়ে লাগবে বৈকি। কিন্তু সেটাতেও যদি তাদের উত্তরণ না হয় তাহলে সেটা ওদের ক্ষতি। ওদের অপারংগতা। কিন্তু কাউকে একেবারে হীন বলে শুধু শুধু মান হানি করার পক্ষে আমি নই। আমার এই লেখায় দেখেন আমি বলতে চেয়েছি – ” আস্তিকতা কিংবা নাস্তিকতা – এই দুইটা জিনিষ না হয় পরে আসবে। জীবনে চলার ক্ষেত্রে সামান্য বোধ এবং জ্ঞানটুকু যখন লোপ পায় ধর্মের খপ্পরে তখন আর বলার মতো কিছুই থাকেনা। চরম ধার্মিক এবং জাতপাতে বিশ্বাসী মানুষগুলিই সমাজের হায়নাদের আরও বেশী করে মদত দিয়ে যাচ্ছে সেই অনাদিকাল থাকেই, সেটা প্রত্যক্ষ না হোক পরোক্ষভাবে তো বটেই। মন্দির মসজিদে গিয়ে সকাল না হতেই হা’ঈশ্বর বলে মাথা লুটায় অথচ ভ্রান্তি বিলাসে এদের তুলনা নেই! আসলে একটা বিশাল সংখ্যক সাধারণ মানুষ এর কাধে দোষ চাপিয়ে লাভ নেই যদিও। ব্যাপারটা অনেকটাই ধাঁচে আইসক্রিম বানানোর মতো। একটা রুটিন এর জীবনে অভ্যস্ত ম্যাঙ্গো পিপল নিজের বোধশক্তি নিয়ে বেশী নাড়াচাড়া করতে পছন্দ করেন না, কিংবা বলা চলে সেই ধাঁচ থেকে বেরিয়ে আসার চেষ্টাও করেন না। এবং এদের কারণেই ধর্ম ব্যবসার অনেক রমরমা। গঙ্গার মৃত আবর্জনার স্তুপে ভেসে যাওয়া জল এরা পান করে নেয় ঈশ্বরের ভক্তিবলে কিংবা কোন পীর এর দরগার তেলে ভেজা ধাগা বেধে রোগ নিরাময়ের চেষ্টা করেন। সবটাই চালিয়ে দেওয়া হয় পরম্পরা ও বিশ্বাসের নামে। আর সেই আস্থার রক্ষক হলেন দ্বীন এর পথে চলা হাজারো ম্যাঙ্গো পিপল। আসলে কারো বিশ্বাস এর উপর কথা বলার অভিপ্রায় আমার নেই। ব্যাপারটা হল অন্ধত্বের এবং সেই অন্ধত্বের হাত ধরেই জন্ম নেয় সংকীর্ণতা। এবং সেই সংকীর্ণতাকেই আমার ভয়! ”
০২।
সহমত। আমার এই লেখায় বিফ এর প্রসঙ্গ একটা অনুষঙ্গ হিসেবে এসেছে, এটা খেয়াল করে দেখেছেন নিশ্চয়ই।
০৩।
বস। সামান্য দ্বিমত আছে। আমি অস্বীকার করছি না অনেকেই উপহাস করেন। কিন্তু বুঝানোর একটা লিমিটিসেশ আছে। আর সহ্যের একটা সীমা আছে। ধার্মিক ( নীরব ) আর ধার্মিক ( ছাগু ) – এই দুই এর মধ্যে কিন্তু বিস্তর তফাত। ছাগুদের কাঁঠাল পাতা দিতে দিতে গাছ পরিষ্কার করে ফেললেও, ওরা লাইনে আসেন বলে হাঁক দিতেই থাকে।
০৪।
শেষের কথাগুলি এবং আপনার অভিজ্ঞতাগুলিই কিন্তু প্রমাণ করে যে ধার্মিকবেশী সত্তাগুলি কত রকমের হয়।
০৫।
আসলে অনেক ধরণের ফালতু অভিজ্ঞতা থেকে বলছি যে ধার্মিকতা আজকাল একটা নৈমিত্তিকতা যেমন হয়ে গেছে তেমনি নব্য নাস্তিক বলে একটা ট্রেন্ডও এসেছে। ধার্মিকদের যতই আপনি একটা জিনিষ বোঝাতে চেষ্টা করুন না কেন সেই – যে কপাল সেই মাথা প্রবাদের মতোই ঘুরে ফিরে একই যায়গায় এসে যায়। আর নব্য নাস্তিকদের একটু বেশী মাত্রায় ঘ্যানর ঘ্যানর ও জঙ্গীপনাও পীড়াদায়ক বটে। তবে একটা সামঞ্জস্য আনাও জরুরী।
আগামী পর্বগুলিতে অন্যদিকগুলি নিয়েও আলোচনার ইচ্ছে রাখি। আশা করছি পাশে থাকবেন। পরিশেষে আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ লেখাটি পড়ার জন্যে। 🙂
@তাপস শর্মা,
😛 😀 😀
বেশ কাজের একটা লেখা।
(Y) মানুষকে ভালবাসি বলেই ধর্মকে ঘৃণা করি।
@সৈকত চৌধুরী,
আপনাকে অনেক ধন্যবাদ লেখাটি পড়ার জন্যে।
সত্যিই ”মানুষকে ভালবাসি বলেই ধর্মকে ঘৃণা করি।”
@সৈকত চৌধুরী,
(Y) (F)
@সৈকত চৌধুরী, দাদা কি চমতকার একটা কথা বলেছেন…সারা জীবন ভুল্ বার নয়…ধর্মগুলোর ঈশ্বরদের মানুষের উপর অন্যায় মেনে নিতে পারিনি জন্য ধর্ম ছেড়েছি… (Y)
আমার অবস্হা এর চাইতে কিছুটা ভালো ছিল – বোধহয়। বাবা,জেঠা কমিউজমে বিশ্বাস করতেন। ঈদের দিনে সন্ধ্যায় বাড়িতে শমসু কাকা,দুলাল দার বাড়ি থেকে টিফিন ক্যারিয়ারে করে সেমাই ও গরুর মাংস আসত। মা কিছুতেই ঘরে ঢুকাত না..বাইরের দেউড়িতে বসে বাবাকে আলাদা ভাবে খেতে দেখেছি। বড় হয়ে নিজেও সেই সংস্কৃতি থেকে বের হয়ে আসতে পারিনি কারণ অজস্র মুসলমান বন্ধুর কারণে।কোনদিন ভাবিনি যে..এই মাংস আমার জন্যে নিষিদ্ধ। এ কারণে বোধহয়,বাবা মারা যাবার পর দুলালদা (সফিকুল ইসলাম সিকদার) ১৫ দিন ক্ষুর চালাননি দাঁড়িতে। বহুবছর রোজার মাসে ৩০ দিন দুলালদাকে দেখেছি দুপুরে মার রান্না করা খাবার খেতে। আমার আর দুলালদার ধর্মটা আলাদা ছিলো সেটা ও উপলব্ধি করিনি কখনো।সমসু কাকা দিদির বিয়েতে সম্প্রদান করতে চেয়েছিলো..সেদিন ধর্ম বড় বাধা হয়েছিলো, মানবিকতা ও ভালবাসা এভাবে মার খায় বোধ হয়!যুক্তি ছিলো..সে ও তাঁর মেয়ে।কাকার মেয়ে আর দিদি ছিলো খুব ভালো বন্ধু। বিজয়ার দিনে নিঃসংকোচে তাঁদের প্রণাম করেছি বয়োজ্যেষ্ঠ বলে । এই সাংস্কৃতিক পরিমন্ডলে নিজে বড় হয়ে ভেবেছি…কাদের হারালাম!!! যাঁরা তথাকথিত বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিগ্রী না নিয়ে আমাকে অনেক বিষয়ে শিক্ষা দিয়ে গেছেন…যা পারেনি কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় নামক প্রতিষ্ঠান।এই বিষয়ে লেখার ইচ্ছে আছে মুক্তমনায়। আপনার লেখাটা ভালো লাগল খুব। আশাকরি আরো সুন্দর লেখা পাবো অদুর ভবিষ্যতে।
@অসীম,
আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ আপনার অভিজ্ঞতা আমার সাথে শেয়ার করার জন্যে। আসলেই ভালো লাগল আপনার এই উৎকর্ষতা দেখে।
লিখুন, পড়ব অবশ্যই।
০২।
লেখার ইচ্ছে আছে অবশ্যই।
পরিশেষে বলি – ভ্রান্ত ধারণা নয়, শুধুমাত্র যুক্তির পথে মুক্তি খুঁজুক বিশ্ব।
@অসীম, পুরো ঘটনাটা জানতে খুব ইচ্ছে করছে…কোন্ দিন যদি সময় পান লিখবেন …এই আবদার করলাম
(Y) (Y) (Y) (Y) (Y) (Y)
@শান্ত কৈরী,
লেখাটি পড়ার জন্য ধন্যবাদ রইলো।
আপনার লেখা ভালো লেগেছে, সুন্দর লিখেছেন। আপনার লেখার মূল বক্তব্যের সাথে আমি সহমত পোষণ করি।
কিছু মনে না করলে একটা প্রশ্ন জিজ্ঞেস করি,
এই শব্দগুলো কি আপনি আপনার কথ্য ভাষায় ব্যবহার করেন? কোন অঞ্চলের কথ্য ভাষা জানাবেন কি? পুরো লেখাটা এতো সুন্দর করে লেখা, মাঝে মাঝে হঠাৎ করে এই শব্দগুলো যখন এসেছে, তখন লেখার আবহটা বজায় থাকেনি।
এগুলো যদি আপনি কৌতুক করার জন্য ব্যবহার করে থাকেন, তাহলে সবিনয়ে জানাতে চাই মজা করে কথা বলার জন্য প্রকৃত শব্দগুলোর লেজ ধরে ধরে সেগুলো বদলে দেবার প্রয়োজন হয় না, বরং রসবোধ সৃষ্টি এবং তা বোঝার জন্য কিছুটা বুদ্ধি ব্যবহার করলেই হয়।
একজন মানুষ বা একটি গোষ্ঠী মূল শব্দগুলোকে রসালো করে তুলবার উদ্দেশ্যে যদি উচ্চারণ করতে পারার বা লিখতে পারার অপারগতা জনিত কারণে নয়, বরং ইচ্ছাকৃতভাবে শব্দগুলোকে বিকৃত করে অপভ্রাংশে পরিণত করে, তা অন্যদের ভালো নাও লাগতে পারে। ব্যক্তিগত ভাবে এই প্রাকটিসটা আমার ভালো লাগে না বলে জানালাম। লেখা ভালো লাগলেও শব্দ বিকৃতি ভালো লাগে নি।
@নীল রোদ্দুর,
প্রথমে তো লেখাটি পড়ার জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।
০১।
এগুলি কোন বিশেষ অঞ্চলের আঞ্চলিক ভাষা নয় ভাই। সামান্য ব্লগীয় সমীকরণ মাত্র।
০২।
সামান্য কৌতুক সৃষ্টি করতেই এই কথাগুলি ব্যাবহার করা। কোন অনৈতিক কিংবা অসামঞ্জস্যতা সৃষ্টি করা এই লেখার উদ্দেশ্য নয়।
০৩।
এগুলি মোটেই শব্দ বিকৃতি নয়, আসলে প্রমিত এর ব্যাবহার নিয়ে হালে হই চই কম হয়নি। যাই হোক, আগেই বলেছি সামান্য ব্লগীয় রসবোধ থেকেই এই শব্দগুলি লেখা। বাংলা ভাষাকে কোন অন্য সংমিশ্রণ দান করা কিংবা বিকৃত করা এই ‘শব্দ’গুলির উদ্দেশ্য নয়।
০৪।
পরিশেষে বলি, মুক্তমনায় হয়তো এই ধরণের শব্দ বা বাক্যবন্ধ ব্যাবহার করা সমাদৃত নয়। আমার প্রথম লেখা এখানে, বুঝতেই পারছেন। যদি এই ধরনের শব্দে আপত্তি থাকে, অবশ্যই আমি ভবিষ্যতে এইসব শব্দ বাদ দিয়েই লেখার চেষ্টা করব।
মুক্তমনায় স্বাগতম জানাচ্ছি। আপনার বিচিত্র অভিজ্ঞতার কথা জেনে ভাল লাগল। আমরা সবাই কমবেশি এই ধরণের স্তর পার হয় এখানে এসেছি।
একদম সঠিক পর্যবেক্ষণ।
যদি তোর ডাক শুনে কেউ না আসে … তবে একলা চলো রে … ♫ ♬ ♭
মুক্তমনায় নিয়মিত অংশগ্রহণ কামনা করছি।
@অভিজিৎ,
অসংখ্য ধন্যবাদ অভিজিৎ দা। আপনার মন্তব্য পেয়ে ভালো লাগল। লেখালেখি নিয়মিতভাবে করার ইচ্ছে আছে এখানে।
গানটা আমারও ভীষণ প্রিয়।