সাতক্ষীরায় আগুন কেন?
আকাশ মালিক।
(দিদির জিজ্ঞাসার প্রতি উত্তরে)
আপনার লেখায় যে মানুষগুলোর উপর অত্যাচারের কাহিনি বিবৃত করেছেন তা নিয়ে বলার কিছু নেই, এগুলো দেখলে এক ধরণের অসহায়ত্ব গ্রাস করেতে থাকে, এটা জাতি হিসেবে আমাদের সবার ব্যর্থতা।
ভিডিওতে ধারন করা অনল, সেই লেলিহান অগ্নিশিখা আর ঐ ব্যানারগুলো দেখে মাথাটা ঠিক ছিলনা দিদি। অসহায়ত্বের গ্রাসে পড়ে মানুষ যেমন ঈশ্বরকে গালি দেয়, এ রকম বাম ঘরানার আর শিক্ষিত সুশীলদেরই যা মুখে এসেছে কিছু বলেছি। তারা যে শিক্ষিত জ্ঞানী গুনী বিদ্বান এতে আমার বিন্দুমাত্র সন্দেহ নেই। আর এ জন্যেই তাদের প্রতি আমার এক প্রকার অন্ধ শ্রদ্ধা চিরদিন ছিল। এমন শ্রদ্ধা বিশ্বাস থেকেই বহু বছর আগে একদিন সেতারা হাসেম নামের এক পুরুষের কাছে অন্ধভক্তির মোহে, আবেগে একটি খোলা চিঠি লিখেছিলাম। বলেছিলাম- ‘এ মণিহার আপনার নাহি সাজে’। তিনি সদালাপীদের মন যোগাতে ইসলামের সমালোচনাকারীদের প্রচুর অবজ্ঞা, তিরষ্কার, তাচ্ছিল্য অপমান করতেন। সদালাপীরা তাকে ফুলের মালা দিয়ে বরণ করে নিয়েছিল। বস্তুত সেখান থেকেই বামপন্থি বা কম্যুনিষ্টদের সম্মন্ধে আমার জানার শুরু।
পরে তাদের একরোখা রাজনীতি, মন্তব্য, বিবৃতি, বহু ধারায় বিভক্ত তাদের গতিবিধি লক্ষ্য করে বুঝতে পারলাম, মুখে যত বেশী মাটির কথা বলেন, কাজে কর্মে মাটি ও বাস্তব থেকে তারা লক্ষ যোজন দূরে বাস করেন। এ যেন আকাশে বাস করে মাটির মানুষ নিয়ে কবিতা লেখা। এমন কোন জাতীয় ইস্যু বা সমস্যা নেই যেখানে তারা আমেরিকার ষড়যন্ত্র আর বঙ্গবন্ধুর দোষ খুঁজে পান না। ঘটনার কার্য-কারণ খুঁজে বের করতে দ্বান্দিক বস্তুবাদের পরশ পাথরে ঘষে মেজে তারা সব সময়ই আবিষ্কার করতে পারেন, সকল সমস্যা এই দুই জায়গায়। তাদের বক্তব্য বিবৃতি মাঝে মাঝে শেখ মুজিব হত্যা সমর্থন ও ইসলামী জঙ্গীবাদের প্রেরণা হয়ে দাঁড়ায়। এ দিকে সাহিত্যিক, কলামিষ্ট, সাংবাদিক, বুদ্ধিজীবি কবিরাও তাদের মগজ, বিবেক বন্ধক দিয়ে দিয়েছেন স্বার্থলোভী রাজনীতিবিদ আর ধর্মান্ধ মূর্খদের কাছে। তাই আজ হুমায়ন আহমেদ, নজরুলকে ছাড়িয়ে মুসলমানদের কাছে পপুলারিটির উচ্চাসনে অধিষ্টিত আছেন। তিনি জাতীয় সাহিত্যিক না হয়ে মুসলিম সাহিত্যিক হতে চলেছেন। আমেরিকার হাসপাতালে বসে ব্ল্যাক ফ্রাইডের মাঝে আমেরিকার মুসলিম বিদ্বেষ আবিষ্কার করে প্রবন্ধ লিখতে পারেন, সাতক্ষীরার আগুন দেখে তার হাতে কলম উঠেনা? আর উঠলেই বা কী? তিনি তো দূর্বল কিছু হাদিস দিয়ে ধর্মেরই সাফাই গাইবেন, তার অর্থহীন নীতিবাক্য জিহাদীদের ঠ্যাংটাও শুনেনা। ঘুঘু বারবারই এসে ধান খেয়ে যায়।
এ অনাচার অত্যচার চোখে দেখেও সুশীলদের বিবেক জাগ্রত হয় না? ধর্মবাদীরা চোখের সামনে মানবতা বি্রোধী, দেশদ্রোহী শ্লোগান দিয়ে গর্জন করে সেই মাটির উপর দাঁড়িয়ে, যে মাটির নীচে ঘুমিয়ে আছেন লক্ষ মানিক সোনা? সিংহরূপী কেশর ফুলিয়ে হুংকার দিয়ে সারা দেশ কাঁপিয়ে তুলে, নারকীয় তান্ডব ঘটায়, সুশীলরা নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করেন। মুসলমানরা সাতক্ষীরায় তিন ঘন্টা অবরোধ করে (ঠিক যেমনটি করেছিলেন মুহাম্মদ মদীনার বনু নাদির গোত্রের সাথে) দশটা পরিবারের মানুষের ঘর পুড়ায়, লুটপাট করে সহায় সম্পদ, চুরি করে সোনা দানা অলঙ্কারপত্র, কেউ ওদেরকে থামাতে সাহস করেনা। ঘরগুলো জ্বলে পুড়ে সম্পূর্ণ ভষ্ম না হওয়া পর্যন্ত অগ্নিনির্বাপক দলের মানূষকে তারা আগুন নেভাতেই দেয় নি। এরা এতো শক্তি, এতো সাহস পায় কোথায়? আমাদের মাথায় তারা উঠলো কী ভাবে? বুদ্ধিজীবীদের মস্তিষ্কে সেই প্রশ্নটা একবারও জাগেনা? কিছুই করার নেই, বলার নেই? কলেজ ইউনিভার্সিটির টগবগে তরুণ ছাত্ররাও মাথা নত করে বসে রইলো? অন্তত নির্যাতিতদের প্রতি একটু সহানুভুতি প্রদর্শণের লক্ষ্যেও তো পত্রিকায় তারা দু-কলম লিখতে পারেন। তা পড়ে সংখ্যালঘুরা শান্তনা পেতে পারতো, কিছু মানুষ তো তাদের পাশে আছে। একমাত্র জনকণ্ঠ ছাড়া কোন দৈনিক পত্রিকা খবরটাকে তেমন গুরুত্ত্বই দেই নি। উইকিপিডিয়ায় ঘটনার বর্ণনা থেকে সামান্য উল্লেখ করছি-
A week after the attacks, the majority of the Hindu victims still remained terrorized. Members of many of the families haven’t returned to their houses
পত্রিকার ভূমিকা কী ছিল?
Main stream Bangladeshi Media completely maintained a silence over this incident. Then as the Hindu Students of Jagannath Hall of Dhaka University protested against the persecution. Bangladeshi Media highlighted this event.
কেন সবাই সবাই মুখ ফিরিয়ে নিল? হিন্দুরা আমার দেশের মানুষ না? এ দেশে জন্ম নেয়াই কি তাদের আজন্ম পাপ?
এখানে বাংলাদেশে হিন্দু সম্প্রদায়ের শতকরা পরিমানটা দেখা যাক-
১৯৪১—২৮, ০%
১৯৫১—২২, ০%
১৯৬১—১৮, ৫%
১৯৭৪—১৩, ৫%
১৯৮১—১২, ১৩%
১৯৯১—১১, ৬২%
২০০১—৯, ২%
আর বর্তমানে ৯%
এরই পরিপ্রেক্ষিতে মুক্তমনায় ফরিদ আহমেদের একটি লেখা থেকে কিছুটা উদৃতি তুলে দিলাম-
পাকিস্তানের জন্মের সময়ে পূর্ববাংলায় হিন্দুর সংখ্যা ছিল প্রায় তিরিশ শতাংশ। এই তিরিশ শতাংশের হাতেই ছিল অর্থনীতির মূল চালিকাশক্তি। কিন্তু রাষ্ট্রযন্ত্র হিন্দুদের প্রতি বৈরী হবার কারণে এই শক্তিকে তাঁরা কাজে লাগাতে পারেন নি। বরং তাঁদের শক্তিকে খর্ব করার জন্য রাষ্ট্র একে একে নানান ধরনের আইন-কানুন পাশ করতে থাকে। আর এতে করেই বিপন্নবোধ করতে থাকে হিন্দুরা। রাষ্ট্রের এই একপেশে আচরণের কোনো পালটা জবাব তাঁদের হাতে ছিল না। এই বিপন্নতার কারণেই শুরু হয় হিন্দুদের ভারতগামী সমুদ্রসম মিছিল। ১৯৪১ সালের আদমশুমারীতে বর্তমান বাংলাদেশ অঞ্চলে যেখানে হিন্দুর সংখা ছিল ঊনত্রিশ শতাংশ, সেখানে ১৯৯১ সালে সেটা এসে দাঁড়িয়েছে মাত্র ১৩ শতাংশে। ২০০১ সালের আদমশুমারীতে এই সংখ্যা মাত্র ৯ শতাংশ। এই হারে চলতে থাকলে বাংলাদেশ যে একদিন হিন্দুশূন্য মোসলমানের দেশ হয়ে যাবে সে কথা বলাই বাহুল্য।
দেশ হিন্দু শুন্য এখনও হয়ে যায়নি সত্য কিন্তু মুসলমান হতে কি আর বাকী আছে? নিত্যদিন বাঘের মতো গর্জন করে, খোলা ময়দানে শিশু কিশোরদের সামনে নিয়ে, হাজার হাজার মানুষের উপস্থিতিতে হিন্দুদের দেব-দেবীর নাম ধরে হুজুরেরা তাচ্ছিল্য, তিরষ্কার, কটুক্তি অপমান করে চলেছে, আর সেই ওয়াজ ইউ টিউবে ছেড়ে দেয়া হচ্ছে। পারবে হিন্দুরা দলবদ্ধ হয়ে তাদের ধর্মীয় অনুভুতিতে আঘাত হানার অভিযোগ এনে মুসলমানদের পাঁচ-সাতটা ঘর পুড়িয়ে দেবার সাহস করতে? ২৪ ঘণ্টার ভেতরে মুসলমানরা বাংলাদেশে বনি-খুরাইজার ঘটনা ঘটিয়ে ছাড়বে। কাদীয়ানীরা তা টের পেয়ে গেছেন অনেক আগেই।
অসাম্প্রদায়ীক একটি দেশের সপ্ন বাস্তবায়নে জাতি ধর্ম নির্বিশেষে মানুষ রক্ত দিল, জীবন দিল। যে দেশ স্বাধীন হলো অসাম্প্রদায়ীক চেতনায়, স্বাধীনতার পরে সে দেশের সংখ্যালঘু হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষেরা কেমন ছিলেন তা জানার জন্যে এই পর্যায়ে এসে আমি শ্রদ্ধেয় অধ্যাপক অজয় রায়ের একটি লেখা স্ম্বরণ করিয়ে দিতে চাই। অজয় রায় ২০০৮ সালে তাঁর ‘বিচারের বাণী নীরবে নিভৃতে কাঁদে’ প্রতিবেদনে তিক্ত-বিরক্ত বেদনা ভরা মনে লিখেন-
’I thought that I would not write any more stories under the heading, “Bicharer Vani Nirabe Nivrite Kande … ..” Honestly speaking I am fed up with what is happening in Bangladesh as regards persecution on minorities in general on Hindus in particular.
কেন, হিন্দুরা কি মুক্তিযুদ্ধে অংশ গ্রহন করেন নি? এ দেশের স্বাধীনতার জন্যে তারা কি জীবন দেন নি? মুসলমানদের মধ্যে জাতিবৈষম্য, শ্রেণী বিদ্বেষ নতুন করে কি সৃষ্টি হলো, নাকি আগে থেকেই এর বীজ অঙ্কুরিত ছিল তাদের মন ও মানসে? কোথায় এর উৎস? মুসলমানরা ভাবতে পারলো কী ভাবে যে, এ দেশ শুধু মুসলমানের? অজয় রায় তাঁর লেখায় বর্ণনা করেন-
‘In the village of Sahebabd the poor helpless Hindu families once again witnessed the terrible and shocking atrocities let loose by the local armed miscreants. On September 1, 2008 a group of armed antisocial and miscreants raided ransacking the village, forcibly evicted Hindus from their homes, and injured many in the process. The hooligans supported by the political touts not only looted the valuables of the household properties, but told the families that being Hindus they have no right to live in Moslem Bangladesh’
মুসলিম বাংলাদেশ? কে শিখায়েছে তাদের এই জাতিবিদ্বেষ, কোথা থেকে আসে সেই প্রেরণা? কেন এই অবিচার কেন এই বৈষম্য? এমন তো হওয়ার কথা ছিলনা। অধ্যাপক অজয় রায় তাঁর লেখাটি শেষ করেন একটি ছোট্ট স্বকরুণ প্রশ্ন রেখে-
In the mean while the sufferers suffer, lament and wait for the justice that never to be found and remains as illusive as ever before the very eyes of the culprits. We too lament remembering Tagore’s immortal sayings, “ Bichrer Vani Nirabe Nivrite Kande .. ’ .
This time the ‘nivrita people’ are the unfortunate Hindu minorities of an unknown village called Sahebabad. The big question mark is will the fleeing people ever come back to their ancestral homes. Who knows? Who cares for them?
প্রশ্নটা তো আমারও। Who cares for them? উৎসাহী পাঠক বাংলাদেশের সংখ্যালঘুদের অবস্থা জানতে রাহুল গুপ্তের এই লেখাটিও পড়ে নিতে পারেন। অজয় রায় প্রশ্ন রেখেছেন দেশ ত্যাগী মানুষেরা কি ফিরে আসবে? স্বাধীনতা যুদ্ধের পর মুক্ত-নতুন স্বাধীন দেশে যারা ফিরে এসেছিল বা আসতে চেয়েছিল তাদের সহায় সম্পত্তির কী হলো? কীভাবে আমারই দেশের মানুষের বাড়িঘর জায়গা-জমি, কখনও শত্রু সম্পত্তি আর কখনও অর্পিত সম্পত্তি হলো এ নিয়ে সাম্প্রতিক আমাদের আদিল মাহমুদ ভাই একটি চমৎকার লেখা লিখেছেন। এ কি সেই ১৪শো বছরের পুরোনো দারুল হারব আর দারুল ইসলাম?
সরকার আর রাজনীতিবিদ? এদের কথা কী বলবো? এরাও তো তাদেরই মানুষ যারা ব্যানার হাতে রাস্তায় দাঁড়িয়ে গর্জন করছে। এই তো গত মাসে (১২ মার্চ) দিনাজপুরের নারায়ণ ঠাকুর দূর্গা মন্দির মূর্তি সহ ভেঙ্গে চুরমার করে দেয়া হলো। চট্টগ্রামে কী ঘটেছিল, পত্রিকার রিপোর্টটা দেখা যাক-
February 11, 2012 : Authorities in the city of Chittagong, south Bangladesh, banned public gatherings on Friday after several Hindu temples were ransacked and vandalized by Islamic extremists. Footage of the temples shows broken windows, overturned and smashed furniture, and even statues and paintings of Hindu deities thrown to the ground or broken.
হিন্দুদের দেব-দেবীর মূর্তি ভাঙ্গলে তাদের ধর্মীয় অনুভুতিতে আঘাত লাগেনা? সাতক্ষীরার ঘটনায় সরকার ইতোমধ্যে আবিষ্কার করে ফেলেছে, এটা কোন সাম্প্রদায়ীক হামলা নয়। অজুহাতটা লক্ষ্য করুন- কোন এক নাদান (সম্ভবত ভুল বশতঃ) মুসলমানের একটা ঘরেও আগুন লাগিয়ে দেয় আর সেই ঘরে এক খানি কোরান শরিফ ছিল সেটাও আগুনে পুড়ে যায়। কি সর্বনাশা কথা! এখন মামলা মোকদ্দমা হবে কোরান পুড়ানোর কারণে হিন্দুদের সর্বনাশের জন্যে নয়। ঠিক যেমন নিজামীকে বন্দী করার নির্দেশ হয়, সে নিজেকে নবীর সাথে তুলনা করার জন্যে, যুদ্ধাপরাধের জন্যে নয়। নাটকের লেখক মুসলমান, স্কুলের শিক্ষক মুসলমান, নাটকে অংশ গ্রহনকারী ছাত্ররা মুসলমান আর ঘর পুড়লো হিন্দুদের। আমি বলি, হিন্দুদের আর কতোখানি ঘর পুড়লে ঘটনাকে সাম্প্রদায়ীক হামলা হিসেবে আখ্যায়ীত করা যাবে? সরকার কথা বলবে ভোটের পাল্লায় ওজন করে, তার নিজের স্বার্থ রক্ষা করে। আমার জিজ্ঞাসা, আমরা কার স্বার্থ রক্ষা করি?
আমি জানি নিরপেক্ষ বিশ্লেষণকামী বন্ধুরা আমার এই লেখাটাকে একপেশে বলে অপবাদ দিতে পারেন। হিন্দু সংখ্যাগরিষ্ট এলাকায় প্রভাবশালী হিন্দু কর্তৃক মুসলমানদের হেয় প্রতিপন্ন করা, নিম্ন শ্রেণীর জ্ঞান করা, সে ইতিহাসও কিছুটা জানি। হিন্দুদের বাড়ির উপর দিয়ে মুসলমানরা ছাতা মাথার উপর রেখে যেতে পারতোনা, জুতা খুলে যেতে হতো, এ সবই সত্য। আর এটা মানুষের সৃষ্টি প্রথা না ধর্মগ্রন্থ থেকে উৎসারিত তা নিয়েও তর্ক করা যায়। কিন্তু সেটা এখানে সম্পূর্ণই অপ্রাসঙ্গীক।
আপনার লেখাটা যদি মাইনরটির প্রতি অবিচারের বিরুদ্ধে লিখে থাকেন তাহলে তা এখানে কোনভাবেই ফুটে ওঠেনি।
না তা হয়নি। চেষ্টাও করিনি। সেটা কোন বিশ্লেষণমূলক বা গবেষণাধর্মী লেখা মোটেই নয়। প্রথমে চেয়েছিলাম শুধু ছবিগুলো দিয়ে শিরোনাম দিবো ‘ছবি কথা কয়’। নীচে এক লাইনের একটা গানের কলি লিখে দিবো- ‘জগতবাসী একবার আসিয়া/ সোনার বাংলা যাও দেখিয়ারে’। শেষে দেখলাম এ যেন ঠিক এই ঘটনার সাথে খাপ খায়না। তারপর ভাবলাম শুধু ছবি আর ভিডিও ক্লিপ্, এবং সাথে দুটো প্রশ্ন- ‘জাতির বিবেক কোথায়’? ‘সাতক্ষীরায় আগুন কেন’? ব্যস। নাহ, দুই লাইনের এতো ছোট্ট লেখা, এটা মুক্তমনায় মানায় না। প্রশ্ন দুটোর পেছনের ভাবনা (ক্ষোভও বলতে পারেন)নিয়ে কিছু একটা লিখতে হবে। তো, লেখার আগে ফটো আপলোড করতে করতে জান শেষ। একটা ফটো আপলোড করি তো পরের বার আরেকটা করতে ভুলে যাই প্রথমে কীভাবে করেছিলাম। সন্ধ্যা সাতটা থেকে ভোর পাঁচটা। হ্যাঁ, কিছুটা গার্বেজই হয়তো লিখেছি তবু-
যদি সবাই থাকে মুখ ফিরায়ে সবাই করে ভয় —
তবে পরান খুলে– ও তুই মুখ ফুটে তোর মনের কথা একলা বলো রে॥
এই আর কী? জানি আমার এ অরণ্য রোদন তাদের তালাবদ্ধ কর্ণকুহরে কোন তরঙ্গ-ধ্বনি তুলতে পারবেনা, যারা লোভ আর ক্ষমতার মোহে অন্ধ ও বধীর হয়ে গেছে।
দিদি, আমরা যারা বিদেশে থাকি, বড়জোর ব্লগে লেখালেখি করে মনকে শান্তনা দিতে পারবো, স্বদেশের তরে কিছু একটা করেছি, কিন্তু আমাদের লেখা প্রাকটিক্যাল ফিল্ডে খুব একটা প্রভাব ফেলতে বা কিছু একটা ঘটাতে পারবে বলে মনে হয়না। হ্যাঁ, অন্যায়ের প্রতিবাদ করা বা সমস্যা সমাধানের পথে এগিয়ে আসা সকল নাগরিকের কর্তব্য, কিন্তু শিক্ষিত বুদ্ধিজীবীরা দিকনির্দেশক হয়ে সর্বাগ্রে থাকবেন এটা কামনা করা কি অবান্তর? ফারহাদ মাজহার, বদরুদ্দিন ওমরেরা কোথায়? কোথায় নব্য মুসলমান মতিউর রহমান, শফিক রেহমান, হুমায়ুন আহমেদেরা?
না, দিদি, এই নিশ্চুপ নীরবতা মেনে নেয়া যায়না। কোন একটা দূর্বোধ্য কারণে কেউ ধর্মগ্রন্থের প্রতি অঙ্গুলী নির্দেশ করতে চান না। দিদি, এই কোরান আমার একমাত্র বোনের বিয়েতে আলোকসজ্বা তো দূরের কথা, পুকুর পারে একটা তোরণ বাঁধতেও দেয় নি। বিয়ের দিনের আনন্দ জীবনে একবারই তো আসে। ঠিক না? এই কোরান আমার নিকটাত্বীয় এক মহিলার উপর সতীন চড়ায়েছে। স্বামী তাকে তালাকের হুমকি দিয়ে রেখেছিল, যেমনটি হজরত উমর দিয়েছিলেন নবীর বউদেরকে। কোথায় যাবে মহিলা? বাপের পায়ের তলায় মাটি নাই, তার উপর মহিলার নিজের কোলে দুই অবুঝ শিশু। এই ধর্মগ্রন্থ আমার বন্ধু প্রফেসার আবুলকে সাত গ্রামের মানুষের সামনে বিবস্ত্র করে মসজিদের পুকুরে গোসল করায়ে তওবাহ করায়েছে। কেড়ে নিয়েছে তার হাতের কলম। সে আজ মানসিকভাবে বিপর্যস্ত। এ সব কিছুর উপাদান ধর্মগ্রন্থে আছে, আমি কোরান বুঝেই পড়েছি। আমার ক্ষোভটা সেখানেই দিদি। এখনো আমার চারপাশে ধর্ম তার নোংরা শক্ত হাতে অক্টোপাসের মতো জড়িয়ে আছে। আমি চাই সবল শিক্ষিতজনেরা, দূর্বল অসহায়, অত্যাচারিত মানুষের পাশে এসে দাঁড়ান, সমস্যার মূলে অঙ্গুলীনির্দেশ করুন। আমি চাই জগতের মানুষ, আমাদের নতুন প্রজন্ম এ অভিশপ্ত জীবন থেকে মুক্তি পাক। আর যেন কোন হিন্দুর ঘর পুড়েনা। আর যেন দেখতে না হয় এমন উৎপীড়ন। এ আমার, এক নিরুপায়ের শেষ মিনতি ছাড়া আর কিছু নয়। এ দেশের বিদ্বান গুণীদের কাছে, দেশবাসীর কাছে আমার প্রশ্ন রইলো, সাতক্ষীরায় আগুন কেন?
সহায়ক লেখা ও তথ্যসুত্র-
Ethnic Cleansing In Bangladesh
Rahul Gupta
Islamic Fundamentalists Strikes Udichi again at Netrokona
Ajoy Roy
সেখানকার নদী কি এমনই মধুমতি
ফরিদ আহমেদ।
শত্রু/অর্পিত সম্পত্তি আইন – দেশের এক কালো অধ্যায়।
আদিল মাহমুদ
Why Muslims destroy Hindu Temples?
Anwar Shaikh (সকলের প্রতি এই বইটি পড়ার বিশেষ অনু্রোধ রইলো)
Bicharer Vani Nirabe Nivrite Kande … ..
Minority Persecution Continues unabated
-Ajoy Roy
ইনটারনেট উইকিপিডিয়া http://en.wikipedia.org/wiki/2012_Fatehpur_Violence
ধন্যবাদ আকাশ মালিক। সাতক্ষীরার আগুন তবু চোখে পড়ে। ফতেয়াবাদের ঘটনাও প্রকাশ হয়ে পড়ে। কিন্তু আরো কত শত ঘটনা যে চুপচাপ ঘটে চলেছে। বাংলাদেশের মত ছদ্ম-গণতান্ত্রিক দেশে হিন্দুদের যে কী পরিমাণ অপমানের আগুন সইতে হয় প্রতিটি ক্ষেত্রে তা ভুক্তভোগী ছাড়া আর কারো পক্ষে বোঝা সম্ভব নয়।
সেই ১৯৭১ থেকে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে হিন্দু বা সংখ্যালঘুদের উপর নির্যাতন। চট্টগ্রামের রাউজানে এইসব অহরহ দেখেছি ছোটবেলায়। হিন্দু হওয়ার দোষে কতবার আমাদের আর পার্শ্ববর্তি গ্রামে ডাকাতি হয়েছে। এরপর ১৯৯০ সালে দেখলাম নিজের চোখের সামনে- নিজের এলাকায় চট্টগ্রামের রহমতগঞ্জের মন্দিরে আগুন দিতে, দেওয়ানবাজার এলাকার হিন্দুদের মুদি দোকান লুট। তারপর বাঁশখালীতে ১১ জন কে পুড়িয়ে হত্যা করা, ফতেয়াবাদের লোকনাথ মন্দির ভাঙচুর–বলে শেষ করা যাবে না। পরিশেষে সব হামলা, হত্যা নিক্ষেপিত হয় দুর্গন্ধ রাজনীতির কুয়োতে আর হিন্দুরা হতে থাকে নিঃস্ব।
আকাশ মালিক, আপনাকে ধন্যবাদ জানিয়ে ছোট করবো না। ধর্মের করাল্গ্রাস থেকে যতদিন এই মানব সমাজ মুক্ত হবে না, দেখতে হবে আমাদের এই নিয়তি।
এই নৃশংস্ ও ঘৃণ্য সাম্প্রদায়িক সহিংসতার বিপরীতে একটা হৃদয়স্পর্শী ঘটনার উল্লেখ করি। স্মৃতির গলি দিয়ে হেঁটে যেতে যেতে ফিরে যাওয়া যাক ১৫ই আগস্ট ১৯৯৩ এঃ
হিন্দু-মুসলীম সহমর্মিতার এক বিরল উদাহরণঃ
১৯শে আগস্ট ১৯৯৩ এ দৈনিক ইত্তেফাকের নিজস্ব সংবাদদাতা আমিনুল ইসলাম চৌধুরীর প্রতিবেদন।
ঘটনাটি ১৫ ই আগস্ট ১৯৯৩ এর। ঘটেছিল সিরাজগঞ্জ জেলার কুতুবদিয়ার সন্নিহিত প্রত্যন্ত মাতারবাড়ী দ্বীপে। এখানে একদল দুষ্কৃতকারীর হাতে বিনষ্ট হয়েছিল কয়েকটি হিন্দু সম্প্রদায়ের ঘরবাড়ী এবং দুইটি মন্দির। এলাকার মুসলমান বাসিন্দারা ১৫ই আগস্ট গৃহনির্মাণ সামগ্রী নিয়ে মিছিল সহকারে হিন্দু পাড়ায় উপস্থিত হয় এবং এই সময়ে এক আবেগ বিধুর পরিবেশের সৃষ্টি হয়। স্থানীয় মসজিদের ইমাম সাহেব প্রথম একটি বাড়ি পুনর্নির্মাণের জন্য ভিত খুঁটিটি পোতেন এবং দেশের শান্তি ও সম্প্রীতির জন্য মোনাজাত করেন। এলাকার সকল শ্রেণির মানুষ চাঁদা তুলে দুষ্কৃতকারীদের সকল অপরাধের ক্ষতচিহ্ণ মুছে ফেলার জন্য আয়োজন করে এক মানব সম্প্রীতি অনুষ্ঠান। দেশের বুদ্ধিজীবী সম্প্রদায়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক,ছাত্র,রাজনীতিবিদ, আলেম সমাজ এতে অংশগ্রহণ করেন। অনুষ্ঠানে বক্তৃতা রাখেন বিশিষ্ট লেখক আহমদ সফা, বিশিষ্ট আলেম মওলানা আলহাজ জাফর আলম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞানের অধ্যাপক ড: অজয় রায়, অধ্যাপক নারায়ন বিশ্বাস,দার্শ্নিক ড:আনিসুজ্জামান, সাবেক সংসদ সদস্য অসমান সারোয়ার আযম চৌধুরী, মোফাখখারুল ইসলাম প্রমুখ।
প্রতিবেদনে উল্লেখিত ব্যক্তিরা কোথায় আজ? মাতারবাড়ী দ্বীপে যা করেছিলেন আজ সাতক্ষীরায় কি তা করা যায় না?
“কে শিখায়েছে তাদের এই জাতিবিদ্বেষ, কোথা থেকে আসে সেই প্রেরণা? কেন এই অবিচার কেন এই বৈষম্য?”- এসব সহজ প্রশ্ন, উত্তরটাও সহজ। বিদেশী আরবীয় সংস্কৃতির চর্চা আপনারা শিক্ষিত মুসলমানরাও করেন। সৈয়দ শামসুল হক বৃহত্তর মুসলিম কমিউনিটির সদস্য হিসেবে গর্ববোধ করেন।
“নাটকের লেখক মুসলমান, স্কুলের শিক্ষক মুসলমান, নাটকে অংশ গ্রহনকারী ছাত্ররা মুসলমান আর ঘর পুড়লো হিন্দুদের। “- নাটকের পরিচালক ছিলেন তিনি। এটাও দোষ বটে। আপনারা মুসলমান দেশে বাস করেও এইসব সাংস্কৃতিক কাজ করতে যান কেন? গান, নাটক ভালোবাসেন, ঘরের ভেতরে গিয়ে করেন। আমার বন্ধু বলে- এরকম হতে
থাকলে হিন্দুরা বাংলাদেশের আর কোন সাংস্কৃতিক, সাহিত্যিক, দার্শনিক কর্মকান্ডে আর আসবেন না।
“বুদ্ধিজীবীদের মস্তিষ্কে সেই প্রশ্নটা একবারও জাগেনা?” ইসলামী বুদ্ধিজীবি বলেন।
“ফারহাদ মাজহার, বদরুদ্দিন ওমরেরা কোথায়? কোথায় নব্য মুসলমান মতিউর রহমান, শফিক রেহমান, হুমায়ুন আহমেদেরা?”- শুধু এরা কেন? সিরাজুল ইসলাম, আনিসুজ্জামান, বিচারপতি হাবিবুর রহমান, মঞ্জুরুল আহসান খান আরও অমুক তমুক এদের লেখা কোথায়?
“এই ধর্মগ্রন্থ আমার বন্ধু প্রফেসার আবুলকে সাত গ্রামের মানুষের সামনে বিবস্ত্র করে মসজিদের পুকুরে গোসল করায়ে তওবাহ করায়েছে। কেড়ে নিয়েছে তার হাতের কলম। সে আজ মানসিকভাবে বিপর্যস্ত।” বিস্তারিত জানতে চাই। কি হয়েছিল? তিনি কি কিছু বলেছিলেন, করেছিলেন?
# এমনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের বিষয়টি আপনারা যারা বিদেশে থাকেন, তারা আন্তর্জাতিক অঙ্গনে প্রশ্নটি রাখুন।
@ ছেঁড়াপাতা, আপনার দেয়া তথ্য “আমি কিছুদিন এমন ডাটা কালেকশ করেছিলাম, বিশ্বাস করবেন না প্রতি সপ্তাহে ২ থেকে ৩ টা মন্দিরে আক্রমন হয়, অত্যাচার তো আছেই” প্রকাশ করুন।
“নাকি এটা মধ্যপ্রাচ্যের অঙ্গসংস্থান হয়ে গেছে?? ” অঙ্গরাষ্ট্র হওয়ার পায়তারা করছে। সেদিন বাসে আসতে শুনলাম আগামী ২০১৬-২০ সালের মধ্যেই বাংলাদেশে ইসলামী শাসনের স্বপ্ন দেখছে তবলীগওয়ালারা।
@আকাশ মালিক
এই সাম্প্রদায়িকতার রয়েছে উপমহাদেশের পরিসরে এক ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট এবং বাঙলাদেশের বাস্তবতায় রাষ্ট্রলালিত সাম্প্রদায়িকতার একতরফা শিকার হচ্ছে প্রধানত জনসংখ্যার মাত্র ৮ -৯% সংখ্যালঘু হিন্দু জনগোষ্ঠী, যদিও বৌদ্ধ-খৃষ্টান প্রমুখ অন্য সংখ্যালঘুরাও রাষ্টীয় উপেক্ষা ও নির্যাতনের শিকার হচ্ছে।
.
আমাদের আরো মনে রাখতে হবে যে এ সাম্প্রদায়িকতার রয়েছে দুটি মাত্রা- ধর্মীয় ও রাজনৈতিক। মূলত রাজনৈতিক উদ্দেশ্যেই সাম্প্রদায়িক চেতনার লালন ও বিকাশ।কিন্ত্ত এ দেশে যথার্থ গণতান্ত্রিক আধুনিক ধর্মনিরপেক্ষ সমাজ সৃষ্টি হয় নি বলে মানুষের মূল সাংস্কৃতির আশ্রয়স্থল হচ্ছে নিজ নিজ ধর্ম,যেখানে তাঁরা কেবল স্বতন্ত্র নয়, হিন্দু -মুসলিম বহু বিষয বিবদমান প্রতিপক্ষ। তাই সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট করার ক্ষেত্রে
শান্তি ও সম্প্রীতি বাহন ধর্ম্ই মোক্ষম ভূমিকা পালন করে থাকে।তাই নিজ দেশে যুগ যুগ ধরে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিরাজমান -এমন আপ্তবাক্য মুখস্থ করতে গিয়ে সমস্যাকে পাশ কাটিয়ে বা অস্বীকার করে সমস্যা থেকে আমরা কেউই উদ্ধার পার না। বরং গভীর সঙ্কট ডেকে আনতে পারে।এ সময়ে দেশের বিবেকবান নাগরিক ও প্রগতিশীল গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক শক্তির এ বিষয়ে গভীরভাবে ভাবা ও করণীয় স্থির করা জরুরি বলেই মনে করছি। আবার আমরা তো এও জানি কখন্ও কখন্ও কোনো কোনো আশা -আকাঙক্ষা- আবেদন অরণ্য রোদন্ই মাত্র।
@মক্তমনা এডমিন
ত্রুটি সংশোষন
উপরের মন্তব্যে “১ হাজার” এর স্থলে কেটে “১ শত”বসিয়ে দিনl সংখ্যাটা আমার ভূল হয়ে গিয়েছে।
ধন্যবাদ
বাংলাদেশ সরকার বা রাজনৈতিক দলগুলী আর কীই বা করতে পারে। রাজনৈতিক দলগুলী তো ভোট পাওয়ার কাছে বন্দী। যেদিকে জনসমর্থন বেশী রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের বেশী ভোট পাওয়ার আসায় তাদেরই মন যুগিয়ে চলতে বাধ্য হতে হয়।
গতকাল সকাল ৭:৩০ এর বিবিসি বাংলার খবরে শুনলাম, ফ্রান্সে নাকি বর্তমানে ৮০ লক্ষ মুসলমান!! কী ভয়ংকর কথা!!ইংল্যান্ডে বর্তমানে কত মুসলমান আছে কেহ পারলে আমাকে জানালে বাধিত হব।
খোদ ইউরোপেরই এই অবস্থা।
মুসলমানেরা জন্ম নিয়ন্ত্রন মানেনা। শুধু বাংলাদেশেই নয়, মুসলমানেরা যেদেশেই ঢুকেছে সেখানেই ভাইরাসের মত ছড়িয়ে পড়তেছে!! ভয়ংকর ব্যাপার বটে!!
নিউইয়র্কে অন্ততঃ ১০০ টি মসজিদ রয়েছে। প্রায় প্রতিটি মসজিদ”ইসলামিক কমুনিটি সেন্টার” নাম দিয়ে সরকারের কাছ থেকে লাইসেন্স বের করে এখানেই মাদ্রাসা ও হেফজ খানা (কোরান মুখস্ত করা) শিক্ষা প্রতিস্ঠান রম রমা ভাবে চালাচ্ছে।
একজন ইসলামিক পন্ডিত বল্লেন “নিই ইয়র্কে প্রতিবৎসর অন্ততঃ ১ হাজার কোরানের হাফেজ বের হচ্ছে।
খোদ আ্যামেরিকারই এই অবস্থা। এ ভাবেই মুসলমানদের সারা বিশ্বে ভাইররাসের মত ছড়িয়ে পড়া ছাড়া উপায় থাকছেনা।
ভয়াবহ ব্যাপার বটে!!
এই সমস্যার সমাধান মনে হয় একটাই ‘সবাই ইসলাম গ্রহন করা’ কারন ইসলাম ছাড়া বাকী সব ধর্ম ভুয়া, তো ভুয়া ধর্মের লোকদের হত্যা করলেই কি আর নির্যাতন করলেই বা কি ? ভুয়া ধর্মের লোকজন তো মানুশই না !!
যে দেশের রাস্ট্র ধর্ম থাকে সেই দেশের ঐ ধর্ম ছাড়া অন্য ধর্মের লোকজন থাকে কেন ? কিভাবে থাকে ? কেন এখনো এই দেশ থেকে বের করে দেয় না , কেন কেন কেন ?
আসুন আমরা সবাই মিলে মুসলিম ছাড়া বাকী যারা আছে সবাইকে দেশ থেকে বের করে দেই , যদি না পারি তা তো হত্যা করা ছাড়া আর কোণ উপায় কি আছে ?
ছি ছি ছি ছি ছি বাংলাদেশের সবাইকে ছি ছি ছি সাথে সাথে নিজেকেও :-Y :-Y :-Y :-Y :-Y :-Y :-Y
ভাই আপনার লেখাটা অনেক ভালো লাগলো, তথাকথিত সুশীলদের ভাব দেখানো লেখা দেখে অতিষ্ঠ হয়ে গেছি, তার গা বাচানো লেখা লিখে নিজেদের সম্মান বজায় রাখার চেষ্টা করে। কিন্তু আপনার এমন সাবলীল লেখা দেখে সত্যি অনেক অভিভুত হয়ে গেছি। কিন্তু ভাই এমন বাড়ি পুড়ানো ঘটনা, মন্দির ভাঙার ঘটনা, অত্যাচার নিপীড়ন যে কি পরিমানে প্রতিদিন ঘটছে তা শুনলে নিজের কাছেই নিজের বিশ্বাস হয়না। আমি কিছুদিন এমন ডাটা কালেকশ করেছিলাম, বিশ্বাস করবেন না প্রতি সপ্তাহে ২ থেকে ৩ টা মন্দিরে আক্রমন হয়, অত্যাচার তো আছেই। কিন্তু এগুলো আমাদের তথাকথিত মিডিয়াতে আসেনা। বিভিন্ন নামী/বেনামী মিডিয়াগুলোর তথ্য একত্রিত করে অবাক হয়ে গিয়েছিলাম। আমরা কী সত্যি সত্যি ই একটা গণতান্ত্রিক দেশে বাস করি? এটা কি সত্যি সত্যি অসাম্প্রদায়িক দেশ? যদি তাই হয় তার প্রমান কি? এভাবে হিন্দু, খ্রীষ্টান বৌদ্ধ, উপজাতিরা আক্রমনের স্বীকার হবে কেন? এটা কি তাদের দেশ না? নাকি এটা মধ্যপ্রাচ্যের অঙ্গসংস্থান হয়ে গেছে?? এর উত্তর কে দেবে????
আপনার এই লেখা পড়ে আমি বাক্যরূদ্ধ। আমি বাঙলাদেশের হিন্দু সম্প্রদায়ের করুণ অবস্থার উপর যত লেখা পড়েছি তার মাঝে আপনার লেখাটি ভাস্বর হয়ে থাকবে।
এর কারণ? আপনি বাহবা নেবার জন্য বা মুদ্রিত হয়ে প্রকাশ হবার জন্য এ’লেখা লিখেননি। আপনি আমাদের রক্তের ধারা–হিন্দুদের সাথে একাত্নতা বোধ করেছেন। আমারও তাই অবস্থা। আমার সেই কিশোর দিনের হিন্দু সাথীরা আজ কোথায়? কেউই, বাঙলাদেশে নেই। ওরা ই-মেলে আমকে লিখে–পাকিস্তানি আমলে হিন্দুরা অনেক ভালো অবস্থায় ছিল।
ছিঃ
এই হচ্ছে বঙবন্ধুর কল্পিত ধর্মনিরপেক্ষ বাঙলাদেশ। আজ তাঁরই কণ্যা ইসলামি বাঙলাদেশের উপর ইসলামি শাসন চালিয়ে যাচ্ছেন। ইনার আমলেই হয়ত দেখব বাঙলাদেশের হিন্দুদের সংখ্যা শতকরা দুই অথবা তিন ভাগে নেমে যাবে। আর হয়ত ইনার আমলেই দেখব বাঙলদেশ আরবের দাসত্ব রাস্ট্রে পরিণত হচ্ছে। জামাত, বিএনপি, হারাকাতুল জিহাদ, বাঙলা ভাই-এর দরকার নেই। আজ বাঙলাদেশ সত্য সত্যি এক ইসলামি রাস্ট্রে পরিণত হয়ে যাচ্ছে–আমাদের চোখের সামনে।
বিশ্ববিদ্যালয়ে বামপন্থী রাজনীতি করেছি, নিষিদ্ধ কম্যুনিস্ট পার্টির সভায় যোগদান করেছি। কমরেডদের ডাইলেক্টিক্যাল মাটিরিয়ালিজম, হিস্টরিক্যাল মাটির্যিয়ালিজম জ্ঞান, শ্রমিক কৃষিকদের প্রতি তাঁদের দরদ দেখে অভিভূত হয়ে যেতাম। তাঁদের গতবাঁধা বিপ্লবের বুলি শুনে ভক্তিগদ্গদ হয়ে পড়তাম।
হায়, সেসব কমরেডরা আজ কোথায়। আজ জানি এইসব ভণ্ড কম্যুনিস্টরা আজ কোরান তেলাওয়াত করে, হাদিস এবং শরিয়ার মাঝে খুজে পায় মার্ক্সের বাণী। দেখছি, আশ্চর্য হয়ে এই কম্যুনিস্ট এবং বাম পন্থীরাই আজ ইসলামি সন্ত্রাসের সব চাইতে বড় দোসর। ইসলামি সহিংসতা ও বর্বররতার বিরুদ্ধে টুঁ শব্দটি করে না। ইসলামি সাম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধে একটি লাইনও লিখে না।
হাসব না কাঁদব!
@আবুল কাশেম,
ছোট বেলা অর্থাৎ সেই মাদ্রাসা ও স্কুলের মধ্যবর্তি ভবঘোরে সময়ে প্রতিদিন বিকেল বেলা সিলেটের উদীচী শিল্পীগুষ্টির আসরে বসে থাকতাম। মন্ত্রমুগ্ধ হয়ে তাদের গান আর জ্ঞানী কথাগুলো শুনতাম। সেই সুবাদে আছর আর মাগরিবের নামাজটাও ফাঁকি দেয়া যেতো। তাদের আসর থেকেই রবীন্দ্র সঙ্গীতের সাথে আমার পরিচয়। সত্যি কথা বলতে কি, আমি এখনও বিশ্বাস করি, জ্ঞানে গুণে চরিত্রে, বিশ্বস্ততায় কম্যুনিস্টপন্থীগণ তুলনামূলকভাবে বাংলাদেশের সকল রাজনৈ্তিক দলের চেয়ে ভাল। আওয়ামী লীগ সমর্থন করি শুধু নাই মামুর চেয়ে কানা মামু ভাল হিসেবে।
এই কথাটা আমি এক ব্লগে একবার বলেছিলাম, আওয়ামী লীগের হাত ধরেই বাংলাদেশে শরিয়ার আইন কায়েম হবে। আওয়ামী লীগের অনেক নেতাকেই প্রকাশ্যে বলতে শুনেছি যে, তারা ধর্মনিরপেক্ষতায় বিশ্বাস করেন না। শুনলে অবাক হবেন, ইংল্যান্ডে যতগুলো শিশু কিশোর মাদ্রাসায় ভর্তি হয় তাদের বাবারা প্রায় সকলেই আওয়ামী লীগ সমর্থক।
বাস্তবকে মেনে নিয়ে হিন্দুদের উচিত ভারতে চলে আসা।
হায়,হায়,সর্বনাস!!!
যে কোরান অনুসরন করে সমগ্র মানব জাতি জাহান্নামের আগুন হতে রক্ষা পাইবে সেই কোরান নিজেই এই পৃথিবীর আগুনে দগ্ধ হইল?
কোরানেরই বর্ণনায় ইব্রাহীম নবীকে অগ্নিকুন্ডে নিক্ষেপ করা হইলে, সেই অগ্নিকুন্ড আরামদায়ক ফুলের বাগিচায় পরিনত হয়ে গিয়েছিল। আর সেখানে কোরান নিজেই আগুনে দগ্ধ হইল? সর্বনাস!!!
হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান, ও পার্বত্য উপজাতিরা এত জ্বালাও পোড়াও, খুন, ধর্ষণের পরেও উদার ইসলামের শান্ত সুশীতল রূপটি দেখতে পারছে না যা সত্যি দুঃখ ও হতাশাজনক। তাদের প্রত্যেকের উচিত ধর্মানুভুতির সুফল প্রাপ্তি নিশ্চয়তার খতিরে দলে দলে স্ব-জাতি, ধর্ম বিসর্জন দিয়ে ইসলাম কবুল করা। তাহলেই কেবল বাংলার বুক থেকে সাতক্ষীরার মত ঘটনা বিদূরিত হবে।
@রাজেশ তালুকদার,
এটাই ছিল আরব তথা সারা দুনিয়ার প্রতি সাম্রাজ্যবাদী ইসলামের শ্লোগান। এ ভাবেই রাতের অন্ধকারে বিভিন্ন উপজাতির উপর আক্রমন করে তাদের ঘর বাড়ি আগুনে পুড়িয়ে দিয়েছিলেন মুহাম্মদ। ভীত-সন্ত্রস্ত মানুষেরা প্রাণ বাঁচাতে বাধ্য হয়ে ইসলাম কবুল করেছিল। জ্বালাও পোড়াও, খুন, ধর্ষণ এ সব মুহাম্মদেরই শিক্ষা।
আমি বলি, শান্তির ধর্মের দাবীদার তথাকথিত মডার্ণ শিক্ষিত মুসলমানরা, যাসনা ওদের কাছে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে। একবার প্রমান করে আয়- মুসলমানের ঘরে শুধু হারামি কুত্তার বাচ্চা জন্ম নেয়না কিছু মানুষও নেয়।
@আকাশ মালিক,
লেখাটি পড়েও মন্তব্য করার মত ভাষা খুঁজে পাচ্ছি না বলে । রবীন্ত্রনাথের লেখা ভাব যেখানে গভীর ভাষা সেখানে মূক জাতীয় লাইনের অবস্থা আমার।
সামাজিক ও মানবিক দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে “মুখ ফুটে তোর মনের কথা একলা” বলার উদ্যোগের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।
@গীতা দাস,
গীতা দি, জানেন রাতের আগুন দেখে কোন্ জিনিসটা আমাকে পাগলপ্রায় করে তুলেছিল? আমার মনে প্রশ্ন জেগেছিল, এই দশটা ঘরের কোন একটাতে যদি কোন ঘুমন্ত শিশু আটকা পড়ে তখন কী হবে, এই চিন্তাটা কি কোন মুসলমানের মাথায় আসলোনা? দেখুন দিদি, এই দশটি পরিবারের সকলেই হয়তো সেই নাটক সম্মন্ধে কিছুই জানেন না বা নাটকে অংশ গ্রহন করেন নি। আজ যে শিশুটি ইসলামের এই নমুনা দেখলো, সে কি কোনদিন ভুলতে পারবে? এই ঘটনা তার সারা জীবনের জন্যে দুঃসপ্ন হয়ে থাকবেনা? শিশুটি বুঝবে কী ভাবে যে কোন অপরাধে তার প্রীয় খেলনাটি আগুনে পুড়ে ছাই হয়ে গেলো? সে কি কোনদিন এই ঘটনা ভুলতে পারবে? সে একদিন কোরান খুলে দেখবে এর উৎস কোথায়? তার কাছে ইসলামের বা মুসলমানদের পরিচয়টা কি দাঁড়ালো?
খোকা ঘুমালো পাড়া জুড়ালো বর্গী এলো দেশে—-
সরকার? সে তো অপেক্ষায় আছে- কাদম্বিণী মরিয়া প্রমাণ করুক সে এখনও মরে নাই।
আকাশ ভাইকে ধন্যবাদ অনেকদিন পর তার চিরাচরিত আবেগ-মিশ্রিত ভাষায় বাংলাদেশের সংখ্যালঘুদের করুন অবস্থাকে তুলে ধরার জন্য।
ধর্মীয় বিদ্বেষ হেতু মুসলিমরা যে কি জঘন্য অমানবতা চর্চা করতে পারে, তা কল্পনারও অতিত।
@আলমগীর হুসেন,
আলমগীর ভাই, আপনার লেখা কই?
কথাটা বোধ হয় সকল ধর্মের বেলায়ই খাটে। যেমন প্যাস্কেল বলেন- Men never do evil so completely and cheerfully as when they do it from religious conviction.” – Pascal
কোন এক মণীষী বলেছিলেন- একটা জাতি বা দেশের সভ্যতার মানদণ্ড সেই দেশে সংখ্যালঘুদের অবস্থান। আমরা কেমন সভ্য জাতি প্রমাণ হয়ে গেছে।
@আকাশ মালিক, @আকাশ মালিক,
আকাশ ভাই, কথাটা অবশ্য আমি আজকের দিনের পরিপ্রেক্ষিতে বলেছি। ঐতিহাসিক পরিপ্রেক্ষিতে আপনার এ উক্তি সম্পূর্ণ সত্য।
আজকাল নতুন কিছু লেখা হচ্ছে না। এত্ত ভাল ভাল লেখক বেরিয়ে গেছে যে, তাদের লেখা পড়তে পড়তেই অবসর সময় পার হয়ে যায়।
আপনারা বিদেশ থেকে লিখার মাধ্যমে প্রতিবাদ করেন। আর আমরা ঘরের পাশে বসেও না দেখার ভান করছি। পাড়া-প্রতিবেশিরাও একবারও এগিয়ে এলো না। আর পত্রিকাগুলোর তো চরিত্রই নেই। এসব সংবাদ জায়গা পেলে এক কলাম দিলেও দিতে পারে। আপনার লেখাটা ভাল হয়েছে। ধন্যবাদ।
@shilpi,
ঐ যে ছবিতে সব কিছু হারিয়ে পোড়া কম্বল সামনে নিয়ে মহিলা কাঁদছেন, যান না উনার পাশে, একটা কম্বল অথবা একটা শাড়ি, কিংবা কিছু টাকা নিয়ে। বলুন না, মা আমার অপারগতা, অক্ষমতা ক্ষমা করে এই ক্ষুদ্র সাহায্যটুকু গ্রহণ করুন।
আপনারা পারবেন, ডাক দিন, সঙ্গবদ্ধ হো্ন, সরকারের কাছে আওয়াজ তুলুন- ‘অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই আর ভিকটিমদের সম্পূর্ণ ক্ষতি পূরণ দিতে হবে’।
আল্লার কোরানের হেফাজতকারী ত আল্লা নিজেই। কোরান পুড়ে যাবার সময় তিনি কোথায় ছিলেন?
এ রকম মর্মস্পর্শী লেখা আমি বহুদিন পড়িনি। আমি বাকরহিত।
@তামান্না ঝুমু,
তাইলে একটা কবিতা লিখেন এই কপাল পোড়াদের নিয়ে যারা নিজের দেশে পরবাসী হয়ে সদা আতংক ও নিরাপত্তাহীনতায় দিন কাটাচ্ছে। ওখানে গিয়ে বলুন- নমিতা, বোনটি আমার তোরা এ দেশ ছেড়ে চলে যাসনে।
@আকাশ মালিক,
আমি ভরসা পাই না ভাইয়া। আমার মনে হয় যে এই দেশ থেকে চলে গিয়ে ঐ বোনেরা ভাল থাকবে।কারন এই হতচ্ছাড়া বাংলাস্তানের কোন আশা আমি র দেখি না। আপনি কি ভাইয়া দেখেন? 🙁
ধন্যবাদ।আশ্চর্য জনক ভাবে আজকে মানুষের যে শেষ ভরসা মিডিয়া, তারাও এই ব্যপারে নিশ্চুপ।হাটহাজারীর ঘটনা তো ঘটার কয়েকদিন পরো ঠিক কি ঘটেছিল জানা যায় নি !! আরা আমাদের মানবাধিকার চেয়ারম্যান যে কি না গলা ফাটায়া চিল্লায় তারে এই সব ব্যপারে একটা কথা দূরের কথা অক্ষর বলতে শোনা যায় না।
একটু আগে দেখলাম এমেনেস্টি ইন্টাঃ হরতালে বিশ্বনাথে দু জন মারা যাওয়ার ঘটনায় তদন্তের দাবি করেছে। খুব ভালো কথা। ঐ হারামিরা কি এইসব দেখে না হাটহাজারি, সাতক্ষীরা, পরশুরাম কি ঘটে??? সেলুকাস।কি আর বলব।ঘটনা গুলো এতো বেশি বেশি ঘটে যে আমাদের গা সওয়া হয়ে গেছে। তাই এসব ব্যপারে কিছু বললে আবার সাম্প্রদায়িক সীল পরে যায়।হাত পা ভাংলে মানবাধিকার লঙ্ঘিত হয় আর মানুষ মারলে, ঘর বাড়ি পুরালে ,ধর্ষিত হলে মানবাধিকার লংঘিত হয় না। না হেসে পারা যায় না। :guli: :guli: :guli:
@অগ্নি,
ধন্যবাদ লেখাটি পড়া ও সহমত জ্ঞাপনের জন্যে। নিক যখন অগ্নি নিয়েছেন এবার আগুন ঝরা একটি লেখা ছাড়েন, আমরা পড়ি।