”রাজনীতি” দেশীয় নয় বৈদেশিক থুক্কু আর্ন্তজাতিক। কথাটা মজা করে বলতে ইচ্ছে করল। বাংলাদেশে বাস বলে নয়। রাজনৈতিক মার্ক’সো-জালে জন্ম নেওয়া সোনার বাংলা বলে। অনেক জ্ঞানী গুনীজন আছেন যারা গুছিয়ে বলবেন। দেখতে দেখতে সরকারের সিংহভাগ সময় পার হয়ে গেলো। সাথে সাথে বাচ্চু রাজাকার (আবুল কালাম আজাদ) সুযোগ বুঝে ঝোপে কোপ দিয়ে পালালো। ওর গলায় দড়ি দেখবার প্রত্যাশায় সবারই। সবার মুখে শুনি। বিচার রাজনৈতিক আদলে নাকি আইনের অন্তরালে। আমার মত সাধারণের দাবি যার পায়ে বেল কাটা ঢুকে সে বুঝে; একাত্তরের নির্মম নির্যাতনের সাক্ষীরা আজোও রাত-বিরাতে ভরকে উঠেন। বিচার হবে হতেই হবে। ম্যাডাম আমাদের পূর্ব-পুরুষেরা স্বাধীনতা চেয়েছেন, কিন্তু জঙ্গিবাদ চায়নি। মা-বাবা-ভাই-বোন-সন্তান-জনগন এবং আপাকে সহযোগীতা করতে না পারলে; জনগনের যাত্রাপথে বিষ কাটা না ছড়ালেই মঙ্গল এটা দশে বলে। ছোট বেলায় হাদিসে পড়েছি মহানবীর যাত্রাপথে এক দুষ্টবুড়ির কাটা রাখার মত।
একটা গল্প আছে ইতিমধ্যে যা সবার কাছে বেশ প্রিয় তা হল মা ও সন্তানের গল্প। বেশ কিছুদিন ধরে মা-সন্তান এর সম্পর্ক বেশ খারাপ যাচ্ছে। সন্তান বখাটে হয়ে যাওয়ায়। মা খুবই চিন্তাগ্রস্থ। তাই মা সন্তানকে লাইনে মানে ভালো করার জন্যে বলছেন ”তাড়া তাড়ি ঘরে ফিরে আসো তা না হলে কিন্তু লাদেন বাবার মত অবস্থা হবে”। সুর ধরে বলি গত সপ্তাহের সবচেয়ে আলোচিত খবর ২০০৯ সালের মুম্বাই হামলার সাথে জড়িত লস্কর-ই-তাইয়্যিবার সিনিয়র নেতা হাফিজ সাইদ এর উপর কোটি ডলার পুরুষ্কার ঘোষনা করছেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। পাকিস্তানের জন্য এক দু:সংবাদ! আর তাক লাগানো কর্মকান্ডে ইতিমধ্যে যার জুরি নাই সেই উইকিলিকস এর কর্ম প্রণালীতে বেড়িয়ে আসা খবর গত ৫ই এপ্রিলে প্রকাশিত সংবাদ মাধ্যমের মধ্যে আমরা অবগত এক গোপনীয় তারবার্তায় স্টেড ডিপার্টমেন্টকে পাঠানো পাকিস্তানে আমেরিকার সাবেক রাষ্ট্রতদূত এননি ডাব্লিউ পিটারসন লিখেছেন ”ভারত লস্কর-ই-তাইয়্যিবার সিনিয়র নেতাদের বিরুদ্ধে যে তথ্য-প্রমাণ দাখিল করেছেন তা পর্যাপ্ত নয়”।
ঢাকার বাতাস এমনিতেই অনেক গরম। রাস্তায় দাড়িয়ে এক গ্লাস আখের রস মজা করে খেলে বোধ হয় দেহে কিছুটা স্বস্থি ফিরে আসে। কিন্তু গত ৫ এপ্রিল ভারতের প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ দূত সাতিন্দার লাম্বা আমাদের আরাম হারাম করে বল্লেন ” জঙ্গিবাদ বাংলাদেশ থেকে পরিচালিত হয়” বলে এক আগ্নেয়গিরি প্রসব করলেন। এমনিতেই মায়ের পেটে কয়েক সন্তান নিয়ে এক জ্বালাময় অবস্থা তত্বাবধায়ক না ইভিএম না যুদ্ধাপরাধ না গোল-মাল সব মিলিয়ে আমাদের মস্তিস্কের সিগন্যাল যখন বার বার ইন্টানেট মোডেমের নেটওয়ার্কের মত ড্রপ করছে তখন মাঝে মধ্যে সাম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধে ঢাকার প্রেসক্লাব এর সামনে বা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কোন কোন স্থানে সভা-সেমিনার এ চিৎকার-চেচামেচি দেখে কেনো যেনো ৬৪ বছর বয়সী এবং ৬৭ তম ইউনাইটেড স্টেড সেক্রেটারী অব স্টেড ম্যাডাম ক্লিনটনকে ”চিৎকার-চেচামেচিকারীদের” তরফ থেকে এক লাল স্যালুট দিতে মন চাইল। নিউয়র্ক থেকে প্রকাশিত ফরবেস ম্যাগাজিন এ চোখে পড়ল বিশ্বের সবচেয়ে ক্ষমতাধর নারীদের তালিকায় দ্বিতীয় স্থান অধিকারীনি হিলারী রোদহাম ক্লিনটন। বেশ ভাল লাগল। দীর্ঘ ৪৪ বছরের পল্যিটিক্যাল ক্যারিয়ারে সবচেয়ে উজ্জলতর সময় পার করে আসছেন ১৯৯৩ থেকে আজব্দি।
বাচ্চা কাচ্চার হোমওয়ার্ক আর অফিস ছুটির পর মাঝে মধ্যে দূরে কোথাও ঘুরে আসতে মনচায় সাধের পরিবারকে নিয়ে। মন চায় পকেট চায় না তাই সহযাত্রি হয়ে ঘুরে আসা যাক বিশ্বের আলোচিত সংবাদপত্রগুলোর সাথে; যখন তারা ব্যস্ত সময় পার করছেন আরব স্প্রিং, ওয়াল স্ট্রিট আর বর্তমানে ইরানে। অজানা নয় আরব স্প্রিং বা আরব আপরাইজিং খুব জনপ্রিয় একটি নাম। শুরুতেই বুঝে উঠতে পারিনি এর অর্থ কি? ১৮ই ডিসেম্বর ২০১০ এক ঐতিহাসিক সময়কাল যা আরবের শাসকদের ভাগ্যলিখন বদলে দেয়। একে একে ক্ষমতা ছেড়ে দিতে বাধ্য হয়েছেন তিউনেসিয়া, ইজিপ্ট, লিবিয়া এবং ইয়েমেন এর শাসকেরা। হাওয়া লেগেছে রক্তস্নাত হয়েছে আলজেরিয়া, সুদান, ইরাক, জর্দান, কুয়েত, মরোক্কো, ওমান, লেবানন, মাওরিতানিয়া, সৌদি আরব, ওয়েস্ট্রান সাহারা এবং ইসরাইল এর বর্ডার। আন্দোলন এখনো অব্যাহত রয়েছে বাহারাইন এবং সিরিয়াতে। বর্তমানে সিরিয়ার অবস্থা নাজুক থেকে নাজুকতর হতে যাচ্ছে। গত বছর মানে ২০১১ এর জানুয়ারীর ২৬ তারিখ শুরু হওয়া সিরিয়ার এ আন্দোলনে এ যাবৎ ৬০৯২-৬৯২৯ জন সিরিয়া সরকারী হিসাবে আর বিভিন্ন সূত্র মতে ১০১০০ -১২৫০০জনের বেশি আন্দোলনকারী মারা যান। ৩২০০০ এর অধিক আহত এবং ১০০,০০০ এর বেশি আন্দোলনকারী গ্রেফতার হন। এ পরিসংখ্যান প্রতি দিন বেড়ে চলছে। জাতিসংঘ এবং আরবলীগ একের পর এক সময় বেধে দিচ্ছেন যাতে সিরিয় সরকার এ সহিংসতা বন্ধ করেন আর তা শেষ অবদি আগামী ১০ এপ্রিল বেধে দিলেন সিরিয় সরকারকে। ১লা এপ্রিল ম্যাডাম ক্লিনটন বলেছেন ”সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাসার-আল-আসাদকে অবশ্যই যেতে হবে”। এদিকে রাশিয়ার যুদ্ধ জাহাজ সিরিয়ার বন্দর তারতাসে এসে পৌছেছে গত ৩রা এপ্রিল। রাশিয়া সিরিয়াকে অস্ত্র প্রদান করছে । আর ইসরাইল এবং আমেরিকাকে এক প্রকার হুঙ্কার প্রদান করেছে। তেল এর দেশ লিবিয়ার ভরা কলস ফুটো হবার পর আরেক তেলের দেশ ইরান এখন বেশ নড়বড়ে অবস্থায় রয়েছে। বেশ কিছুদিন ধরে শুনে আসছি ’পারমানবিক’ বিষয়ে সমঝোতা না হলে ইরান আক্রমন করবে আমেরিকা সহ তার সখি-সতীনেরা। গত ৪ঠা এপ্রিল ম্যাডাম হিলারী বলেন ’ইরান- নিউক্লিয়ার প্রোগাম’ এর বিষয়ে এই মাসে ৬ ক্ষমতাধর দেশ ব্রিটেন, চীন, ফ্রান্স, জার্মানী, রাশিয়া এবং আমেরিকা এক বৈঠকে বসবেন। ইরান চ্যাপ্টার এই মাসে ফাইনাল করা হবে। বিজ্ঞজনের মতে ইরান ৩য় বিশ্বযুদ্ধের মাষ্টার ইঞ্জিনের চাবি। সবাই নড়ে চরে বসেছেন কেউ কেউ হয়তো ভাবছেন ২য় পৃথিবীতো আছেই। বিগত বছর কয়েক আগে থেকে বিশ্বের নামকরা ভবিস্যৎ ব্যাখ্যা প্রদানকারী ব্যক্তি ও দল বলে আসছেন ২০১২তে নাকি পৃথিবী ধংবব হয়ে যাবে আর তা নিয়ে বিশ্ব বিখ্যাত চলচিত্র নির্মাতা প্রতিষ্ঠান হলিউড থেকে নির্মিত হল ”২০১২” চলচিত্রটি। বেশ কয়েকবার যত্নসহকারে চলচিত্রটি দেখলাম। বেশ ভাল লাগল আর ভয়ও লাগল। গ্রেনেড এর বদলে নিউক্লিয়ার বোমা মারলে আর্ন্তজাতিক অপরাধের জন্য দেশীয় আইনের মাধ্যমে গঠিত আর্ন্তজাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে এখন পযর্ন্ত যারা গ্রেফতার রয়েছেন সেই সব কু-খ্যাত রাজাকার-আলবদর- আলসামস বাহিনীর হোতাদের বিচার বানচাল হয়ে যেতে পারে। আশা করা যায় ”দেলু” ভাই কারাগারে ওয়াজ জারি রেখেছেন। তাইতো এখনো ”২০১২” বাস্তবায়িত হতে হতে আটকে আছে। এই সব ভন্ড মিসকিনদের দ্রুত বিচার করার দাবী যুদ্ধাপরাধ বিচারমঞ্চের সাথে কোটি বাঙ্গালীর।
Leave A Comment