আমরা যারা বিবর্তনবাদ, যুক্তিবাদ নির্ভর চিন্তাধারা রাখি, আমাদের জানা যে এই জীবকুল,মানব সমাজ ভগবানের দ্বারা তৈরি নয়। হুট করে মানুষকে ঈশ্বর তৈরি করে নি। মানুষ এসেছে একটা বিবর্তনীয় ধারায় সেই দিক থেকে চিন্তা করলে সব মানুষই সমান, কেউ ঈশ্বর পেরিত সন্তান হতে পারে না। কিন্তু যুগে যুগে বিভিন্ন ধর্মে লক্ষ্য করেছি কিছু ধূর্ত, অতিচালাক, মানব সমাজে প্রভাব সৃষ্টিকারী ব্যক্তি নিজেকে ঈশ্বরের পেরিত সন্তান হিসাবে দাবী করে নানা অলৌকিক কাহিনী সৃষ্টি করে মানব সমাজে নিজেদের আধিপত্য বিস্তার করে গেছে।
সেই অলৌকিক কাহিনীগুলি যীশু, হজরত মহম্মদ থেকে শুরু করে অনেক ধর্ম পুরুষদের সাথে জড়িয়ে আছে।
তবে আজ আমি যাকে নিয়ে আলোচনা করব তিনি বাংলার হিন্দুদের মধ্যে প্রভাব সৃষ্টিকারী তথাকথিত অলৌকিক শক্তিধর পুরুষ রামকৃষ্ণ পরমহংস দেব।
উনাদের নিয়ে আমি তেমন আলোচনা করার মতো তেমন প্রয়োজনবোধ করি না। কারণ আমি যখন উনাদের জীবনী পড়তে যাই তখন অলৌকিক ঘটনাগুলি বিন্দুমাত্র বিশ্বাস হওয়া তো দূরে থাক রীতিমত হাস্যকর পাগলামি বলে মনে হয়।
অথচ সাধারণ মানুষ তো বটেই অনেক উচ্চ শিক্ষিত ডক্টরেট ডিগ্রিধারী মানুষও যখন এদের অলৌকিক ক্রিয়াকলাপগুলি বিশ্বাস করে তখন দু:খই হয়।
রামকৃষ্ণ যখন তার ধর্মীয় ভাবধারা প্রচার করতে শুরু করেন, তখন বাংলা তথা ভারতে ধর্ম বিপ্লব চলছে। ধর্মীয় গুড়ামী, কুসংস্কার, অমানবিকতার বিরুদ্ধে এবং যুক্তিবাদী সমাজ গঠনের লক্ষ্যে বাংলা তথা ভারতবর্ষে ব্রাক্ষ সমাজ সহ অনেক সংগঠন সক্রিয় ছিল। রামকৃষ্ণ কিভাবে এই সংগঠনগুলিকে ধ্বংসের পরিকল্পনা করেন তা পরবর্তীতে আলোচনা করব।
যাইহোক, যার কর্মময় জীবনটাই অলৌকিকতায় ভরা তার জন্মকে অলৌকিকতায় ভরে দেওয়া হবে তা তো স্বাভাবিকই।
যেমন যিশুর বেলায় দেখি কুমারী মায়ের গর্ভে জন্ম নেওয়া যীশুকে ঈশ্বরের পুত্র বলে চালানোর চেষ্টা, সেইরকম রামকৃষ্ণের বেলায় ও ব্যতিক্রম নয়
যাইহোক প্রথম জন্ম দিয়ে শুরু করি তারপর না হয় কর্মে যাব।
১৮৩৫ খ্রী: রামকৃষ্ণের বাবা ক্ষুদিরাম তীর্থ ভ্রমণে যান। স্বামীর অবর্তমানে রামকৃষ্ণের মা চন্দ্রাদেবী স্বপ্ন দেখলেন একটি জ্যোতির্ময় মূর্তি তার শয্যায় রয়েছেন! তার ঘুম ভেঙ্গে গেল। কিন্তু তখনও তিনি যেন ঐ জ্যোতির্ময় মূর্তি দেখতে পেলেন। মনে হল কে যেন দরজা ভেঙ্গে তার শয়ন কক্ষে ঢুকছে। তিনি তাড়াতাড়ি উঠে আলো জ্বালেন। কিন্তু দেখলেন, দরজায় খিল দেওয়া আছে, ঘরে কেউ নেই।
এরপর একদিন তিনি প্রতিবেশী ধ্বনি কামরানী সঙ্গে শিব মন্দিরে শিব বিগ্রহের সম্মুখে দাঁড়িয়েছিলেন। শিব বিগ্রহ থেকে একটি জ্যোতির্ময় শিখা বিচ্ছুরিত হয়ে তীর-বেগে তার দিকে ছুটে আসলো। এ সম্পর্কে ধ্বনীকে তিনি কিছু বলার আগেই তিনি সংজ্ঞা হারিয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়লেন। ধ্বনি তার চোখে মুখে জল দিয়ে তার মূর্ছা ভাঙ্গিয়ে তাকে ঘরে আনলো। সে তার কাছে আনুপূর্বক ঘটনা শুনে ভাবলো চন্দ্রার মাথায় অসুখ হয়েছে। কিন্তু চন্দ্রাদেবী ভাবলেন তিনি সন্তান সম্ভব্য হয়েছেন।
এইভাবে অলৌকিকতার মধ্য দিয়ে ১৮৩৬ খ্রী: ১৮ই ফেব্রুয়ারি তারিখে জন্ম হয় গদাধরের (রামকৃষ্ণের) (ঠাকুর রামকৃষ্ণের জীবন ও বাণী – স্বরূপানন্দ – পৃ: ৮)
এইবার বুঝুন ঠেলা, গর্ভসঞ্চারের কি সুন্দর ব্যাখ্যা! এইভাবে যদি ভগবানের গর্ভসঞ্চারের ক্ষমতা থাকতো তাহলে পৃথিবীতে পুরুষ প্রাণীর কোন প্রয়োজন থাকত না। সব পুরুষ প্রাণীগুলি প্রাকৃতিক নির্বাচনে বিলুপ্তির পথে ধাবিত হত।
আমার মনে হয় এইসব ধর্ম-পুরুষদের পাশে এইসব কাহিনী জুড়ে তাদের অপমানিত করেছে তাদের শিষ্যরা।
উপরিউক্ত ঘটনা হাস্যকর তো বটেই। আর যদি তা বিন্দুমাত্র সত্যি হয় তা হলে নারীর কোকিলা-চরণের একটা আভাস পাওয়া যাচ্ছে।
যীশু বা রামকৃষ্ণের জন্মের অলৌকিকতা দান করতে গিয়ে রীতিমত তাদের অবৈধ সন্তানের পর্যায়ে নিয়ে এসেছেন তাদের শিষ্যরা।
রামকৃষ্ণকে যেভাবে দয়ালু সবধর্মে বিশ্বাসী বলে সর্বস্তরে প্রচার করা হয়। আসলে তিনি কতটুকু দয়ালু ছিলেন যথেষ্ট সন্দেহের অবকাশ রাখে।
উনার জীবনী পড়তে গিয়ে আমার মনে হয়েছে তিনি ছিলেন চরম বর্ণ বিদ্বেষী, ব্রাহ্মণ্যবাদী। দু একটা ঘটনা দিয়ে উদাহরণ দেই –
রামকৃষ্ণ ছিলেন দারিদ্র ব্রাহ্মণ পরিবারের ছেলে। চরম দারিদ্র্যের কারণে তার ভাই রামকুমার দক্ষিণেশ্বর কালী মন্দিরের পৌরহিত্য গ্রহণ করার সিদ্ধান্ত নেন। অথচ সেই মন্দিরের প্রতিষ্ঠাতা রাণী রাসমণি ছিলেন তথাকথিত শূদ্র বংশের। ভাইয়ের শূদ্রের মন্দিরের পৌরহিত্য গ্রহণ করার তীব্র বিরুধী ছিলেন রামকৃষ্ণ। প্রতিবাদ করতে গিয়ে তিনি রামকুমারকে বলেছিলেন – “আমার পিতা ও পূর্বপুরুষরা কেউ শূদ্রের অন্ন গ্রহণ করেনি, এই মন্দিরে পৌরহিত্য গ্রহণ করে তিনি সর্বপ্রথম একাজ করবেন এবং তাতে চাটুজ্জে পরিবারের কলঙ্ক হবে।“
তারপরও রামকুমার ঐ মন্দিরের পুরোহিত হয়েছিলেন এবং রামকৃষ্ণকে সেখানে নিয়ে যান। অনিচ্ছা সত্ত্বেও রামকৃষ্ণ ভাইয়ের মনযোগাতে সেখানে যান ঠিকই কিন্তু রীতিমত বেঁকে বসেন। তিনি মন্দিরের প্রসাদ গ্রহণ করতে অস্বীকার করেন এবং স্বহস্তে রান্না করে খেতেন। শেষে অনেকটা বাধ্য হয়ে মন্দিরের পৌরহিত্য গ্রহণ করেন এবং কালী সাধক হয়ে উঠেন।
আরেকটা ঘটনাবলি – একদিন তিনি সম্পূর্ণ উলঙ্গ অবস্থায় একগাছের তলায় বসে সাধনা করতে বসেছেন। সেই সময় উনার ভাগ্নে এই অবস্থায় দেখতে পেয়ে জিজ্ঞেস করল – “মামা তুমি পৈতে খুলে রেখেছে? অথচ ব্রাহ্মণদের পৈতে খুলে রাখা অনুচিত। “
এর উত্তরে রামকৃষ্ণ ভাগ্নেকে বললেন – “আমি ব্রাহ্মণ, সকলের চেয়ে বড়’ – এই অভিমানের চিহ্ন এবং একটা পাশ, মাকে ডাকতে হলে ঐ সব ফেলে রেখে একমনে ডাকতে হয়। তাই পৈতে খুলে রেখেছি। ধ্যান করা শেষ হলে ফিরবার পথে আবার পরব।“
এখানে প্রশ্ন থাকে ব্রাহ্মণ, সকলের চেয়ে বড় এটা যদি অভিমানের চিহ্ন এবং পাশ হয় তবে ধ্যান শেষে পৈতে পরবার প্রয়োজন কি? না কি অদৃশ্য ভগবানের কল্পনা করার সময় আমি ব্রাহ্মণ নই সাধারণ মানুষ আর মানব সমাজে ফিরে আসলে “আমি ব্রাহ্মণ, সকলের চেয়ে বড়” ? তাই মনে হয় আসল কথা।
ছোটবেলা থেকেই রামকৃষ্ণ ছিলেন হিষ্টিরিয়ার রোগী। হঠাৎ হঠাৎ তিনি অজ্ঞান হয়ে পড়তেন। আর এই রোগকে পল্লবিত করতে গিয়ে তার শিষ্যরা বলেন তিনি নাকি মাঝে মধ্যে ভাব সমাধিতে চলে যেতেন।
তাছাড়া ছিল উনার হরমোনের সমস্যা যার জন্য উনার মধ্যে পুরুষালি ভাবগুলি কম ছিল।
এই কারণই হয়তো উনাকে বিবাহিত জীবন থেকে ব্যর করেছিল।
এই প্রসঙ্গে স্বরূপানন্দ তার ঠাকুর রামকৃষ্ণের জীবন ও বাণী বইতে বলেছেন –
“সাধন-কালে রামকৃষ্ণ মাঝে মাঝে মথুরবাবুর(রাণী রাসমণির জামাতা) বাড়ীতে মেয়েদের সঙ্গে সময় কাটাতেন। মেয়েরা রামকৃষ্ণের সান্নিধ্যে কোনরূপ সংকোচ করত না। রামকৃষ্ণ তাদেরই একজন এই বোধ তাদের মধ্যে সঞ্চারিত হয়েছিল। বাল্যকাল থেকে যখন কলসি কাঁধে জল নিয়ে বাড়ী ফিরতেন তখন কেউ তাকে পুরুষ বলে বুঝতেই পারতো না।“
এখানেও অন্ধবিশ্বাসী শিষ্যরা উনার মহত্ব বাড়াতে এই হরমোনের সমস্যাকে কালীর ভর বলে এখনও চালায়।
যাইহোক রামকৃষ্ণের লোক দেখানো গরীব দরদ সম্পর্কে একটু দৃষ্টিপাত করি –
তিনি একবার দেওঘরের বৈদ্যনাথ মন্দির দর্শনে গিয়েছিলেন। রামকৃষ্ণ একদিন পার্শ্ববর্তী একটি গ্রাম দিয়ে যাওয়ার সময় এখানকার গ্রামবাসীদের দারিদ্র করুন অবস্থা দেখে কাতর হলেন এবং জমিদার মথুর বাবুকে এই সব দারিদ্র লোকদের অন্ন বস্ত্র দিতে বললেন। মথুর বাবু ইতস্তত করে বললেন।
“এই তীর্থ যাত্রায় অনেক টাকা লাগবে। তাই এদের সাহায্যে করা আমার দ্বারা সম্ভব নয়।“
কিন্তু রামকৃষ্ণ এদের শোচনীয় দু:খ দারিদ্র দেখে কাঁদতে লাগলেন “ছি: ছি:! তুমি কি বলছো? আমি এদের ছেড়ে বারানসিও যেতে চাই না।“ তিনি অবশেষে মথুরবাবুর সঙ্গ ছেড়ে দরিদ্র গ্রামবাসীর সঙ্গে বসলেন। মথুরবাবু শেষে বাধ্য হয়ে কলকাতা থেকে কয়েক গাঁট কাপড় এনে এদের মধ্যে বিতরণ করেন এবং এদের সকলকে খাওয়ানোর ব্যবস্থা করলেন।
ভেবে দেখুন মায়া কান্না আর কাকে বলে? একবেলা খাওয়ালে আর একবার বস্ত্র বিতরণ করলে যে দরিদ্রের দারিদ্র দূর হয় তাই আশ্চর্যের। বরং তিনি পুরো ভারতের প্রয়োজন নেই এই এলাকার স্থায়ী দারিদ্র দূরীকরণে একটা ব্যবস্থা নিতেন তাহলে উনাকে প্রকৃত গরীব দরদী বলতাম।
আর কাপড় ও খাবারের ব্যবস্থা করার জন্য মথুরবাবুর দ্বারস্থ হওয়ার প্রয়োজন কি? মা কালী যেহেতু উনার সব কথা শুনেন। সেহেতু মা কালীর কাছে দরিদ্র গ্রামবাসীর সমস্যা কথা বললেই তো সব সমস্যার সমাধান হয়ে যেত।
অবশ্য মা-কালির প্রতি তিনি কতটুকু আস্থাশীল ছিলেন তাও সন্দেহ হয়। কারণ তিনি নিজেই বলেছেন- “সত্যি কি তুই আছিস মা? না, এসবই মনের কল্পনা? তুই আছিস তবে আমি তোকে দেখতে পাই না কেন? তবে এসব কি আকাশ কুসুম? (ঠাকুর রামকৃষ্ণের জীবন ও বাণী – স্বরূপানন্দ- পৃ: ৮)
এইবার একবার ভাবুন তো পৃথিবীর সব মানুষ যদি তার কাজ কর্ম ছেড়ে ঈশ্বর সাধনায়
মগ্ন হয়ে যায় তবে সমস্ত পৃথিবীর কি অবস্থা হবে? না থাকবে মানব সমাজ, না থাকবে ঈশ্বর কল্পনা করার কেউ।
কিন্তু রামকৃষ্ণ তো এই আদর্শই প্রচার করতে চেয়েছিলেন। শুধু সংসার ত্যাগ নয় মানুষের সেবামূলক পেশার উপর আঘাত করতে দ্বিধা-বোধ করেন নি।
একটা উদাহরণ দেই – একদিন ঠাকুর তাঁর ভক্তদের কাছে বলছিলেন,”ডাক্তার উকিল ও দালাল এদের ঈশ্বর লাভের পথে এগোন কঠিন।“
বিশেষ করে ডাক্তারদের প্রতি বললেন, “মনটা যদি ঔষধের ফোটায় পড়ে থাকে, তবে কি করে সে অসীম অনন্তকে চিন্তা করবে?“
এটা শুনে রামকৃষ্ণের শিষ্য জনৈক নাগ মহাশয় ডাক্তারি ছাড়তে দৃঢ় সংকল্প হলেন এবং ঔষধের বাক্স বই গঙ্গায় ফেলে দিয়েছিলেন।
বাহ! আদর্শের প্রশংসা না করে পারা যায় না। ডাক্তারির মতো একটা বাস্তব মহত সমাজ সেবামূলক কাজ ছেড়ে যার অস্তিত্ব নেই তাকে খোজার মধ্যেই মহত্ব বেশী তাই না?
আমি প্রথমই বলেছিলাম রামকৃষ্ণ যখন ধর্মীয় ভাবধারা প্রচার শুরু করেন তখন ধর্মবিপ্লব চলছে।
তিনি ব্রাহ্মসমাজের তীব্র বিরুদ্ধি ছিলেন। অথচ ব্রাহ্ম সমাজকে তিনি অতি কৌশলে ঝোপ বুঝে কোপ মারতে দ্বিধা-বোধ করেন নি।
১৮৭৮ খ্রীষ্টাব্দে ব্রাহ্মসমাজের নেতা কেশবচন্দ্র সেন কোচবিহারের মহারাজার সঙ্গে তার শিশু কন্যার বিয়ে দিলে বাল্যবিবাহ বিরুধী ব্রাহ্মসমাজ দ্বিধা বিভক্ত হয়ে পড়ে। কেশব চন্দ্রের অনুরাগী তাকে ত্যাগ করে সাধারণ ব্রাহ্ম সমাজের প্রতিষ্ঠা করে। এইভাবে ব্রাহ্মসমাজে বিভেদ সৃষ্টি হয়।
ব্রাহ্মসমাজ বিরোধী রামকৃষ্ণ সুযোগ বোঝে কেশবচন্দ্রের কার্যের সমর্থনে বললেন –
“জন্ম,মৃত্যু,বিবাহ ভগবানের ইচ্ছার উপর নির্ভর করে তাই এতে দোষ কি আছে? কেশব গৃহী, সে মেয়ের বিয়ে দিয়ে পিতার কর্তব্য পালন করেছে, এতে ধর্মের কোন হানি হয় নি।“
বাহ! কি সুন্দর কথা। বিবাহ, জন্ম, মৃত্যু সব ভগবানের ইচ্ছা। অথচ উন্নত বিশ্বে আজ বাল্য বিবাহ নাই বলেই চলে, আর জন্ম যদি ভগবানের হাতেই থাকতো তবে আমরা জন্ম নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি কিভাবে গ্রহণ করছি? নাকি উন্নত বিশ্বের দেশ থেকে ভগবান সব নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে লেজ গুটিয়ে পালাচ্ছেন? যাদের ধর্ম-পুরুষ ভেবে জনসাধারণ পূজা করে এরাই প্রগতি বিরুধী সমাজের বড় শত্রু।
ব্রাহ্ম সমাজের বিরুধীতা করতে গিয়ে নারীকে গরু ছাগলের সাথে তুলনা করতে কার্পণ্য করেননি রামকৃষ্ণ।
শিবনাথ শাস্ত্রী রামকৃষ্ণের কামিনী-কাঞ্চন ত্যাগের আদর্শ সম্পর্কে তিনি রামকৃষ্ণকে বলেছিলেন, “
স্ত্রী লোকেরা ব্রাহ্মসমাজের সদস্যা ব্রাহ্মধর্ম হল একটি সামাজিক ও গাহস্থ্য ধর্ম, ব্রাহ্মসমাজ নারীজাতিকে শিক্ষা ও স্বাধীনতা দিতে চায়। সুতরাং কামিনী ত্যাগের কঠোর আদর্শ আমরা বিশ্বাস করি না।“
এর পরিপ্রেক্ষিতে রামকৃষ্ণ বলেছিলেন – “চারাগাছ নিয়ে মালী কি করে? ছাগল গরু থেকে বাঁচাবার জন্য বেড়া দেই। পরে চারাগাছ যখন বেড়ে ওঠে তখন আর বেড়া দেওয়ার দরকার হয় না। আমাদের আধ্যাত্মিক জীবনেও আমরা তাই করি।“
শিবনাথ তাতে বলেছিলেন – “আমি আপনার মতো নারী জাতির কাজকে গরু ছাগলের মতো ধ্বংসাত্মক মনে করি না। আমাদের সংগ্রাম ও সামাজিক অগ্রগতিতে তারা সহায় হতে পারে।
রামকৃষ্ণের এক শিষ্য গিরিশচন্দ্র ঘোষ শ্রী রামকৃষ্ণ, শ্রী শ্রী মা ও বিবেকানন্দ বইতে তখনকার ধর্ম বিপ্লবের কথা বলতে গিয়ে বলেছেন –
“পরমহংসদেব যখন জগৎ সমক্ষে উদয় হন, তখন ঘোরতর ধর্মবিপ্লব।“
জড়বাদী মুক্তকণ্ঠে বলিতেছেন – “জড় হইতেই সমস্ত,জড়ের সংযোগেই আত্মা, জড় ব্যতীত আর কিছু নাই।“ ব্রাহ্ম সমাজ বলেন – “বেদ, বাইবেল, কোরান প্রভৃতি কিছুই মানিবার আবশ্যক নাই, কোনটিই অভ্রান্ত নয়, কোনটিই ঈশ্বর বাক্য নয়। এমন সময় পরমহংসদেব প্রচার করলেন “কোন ধর্ম কোন ধর্মের বিরোধী নয়। বাহ্য দৃষ্টিতেই বিরোধ কিন্তু সকল।
ধর্মে ধর্মে বিরোধ আছে কি নেই? তা অন্তর্দৃষ্টি বাহ্য দৃষ্টি দুভাবে দেখলেই বোঝা যায়।
যাক এখন প্রশ্ন উঠতে পারে প্রাচীন ভারত থেকে দেখে আসছি নানা সময় নানা যুক্তিবাদী মতবাদ আন্দোলনের আকার নিলেও তা পুরো সফল হতে পারে না। কোন না কোন ঈশ্বর সন্তান নামধারী ব্যক্তি এসে একে প্রতিহত করে দেয়। যেমন প্রাচীন ভারতে শঙ্কর বেদান্তের ভাব জোয়ারে বস্তুবাদ ধ্বংস হয় আর উনবিংশ শতকে ধর্ম-বিদ্রোহ প্রতিহত করে রামকৃষ্ণের ভাব জোয়ারে।
কিন্তু এর কারণ কি? প্রথমত আমার মনে হয় বিভিন্ন সময়ের যুক্তিবাদী আন্দোলনগুলি একটি নির্দিষ্ট বুদ্ধিজীবী শ্রেণীর কাছে রয়ে গিয়েছিল সাধারণ মানুষের কাছে এর সারমর্ম সঠিকভাবে পৌঁছায়নি।
দ্বিতীয়ত আদিযুগ থেকে চলে আসা অলৌকিক চিন্তাধারাগুলি বংশ পরম্পরায় আমাদের মস্তিষ্কের কোষে কোষে রয়ে গেছে তাই একটু অলৌকিকতার সুড়সুড়ি পেলেই যুক্তির ধার না ধরেই জনশ্রুত সেই অলৌকিকতার নামধারী ব্যক্তিদের দিকেই ছুটতে থাকে। তবে আজ সময় এসেছে এটা ভেবে দেখার আমরা একটা সুন্দর সমাজ গঠনের লক্ষ্যে নিয়ে নিজের যুক্তি বুদ্ধিকে কাজে লাগিয়ে সামনের দিকে নিয়ে যাব নাকি অলৌকিকতার ধ্বজাধারীদের আদর্শ মেনে অন্ধ থেকে যাব।
(কিছুদিন আগে রামকৃষ্ণ মিশনের পৃষ্ঠপোষক এক ডক্টরেট-ধারী ব্যাক্তির সঙ্গে রামকৃষ্ণের অলৌকিকতার ঘটনাগুলি নিয়ে তর্কে জড়িয়ে যাই। তর্কাতর্কির এক মুহূর্তে তিনি যখন দেখলেন তিনি আর বেশী যুক্তি দেখাতে পারছেন না। তখন তিনি আমাকে গণ্ডমূর্খ, নির্বোধ ইত্যাদি পদবিতে ভূষিত করে আমার উপর ঝাপিয়ে পড়েন। এরপর থেকেই একটা লেখা লেখব বলে ভাবছিলাম কিন্তু সময় সুযোগ হয়ে উঠছিল না। অনেক ব্যস্ততার মধ্যে লেখাটি তৈরি করেছি। কোন ভুল থাকলে ক্ষমা প্রার্থী সঙ্গে সমালোচনাও কাম্য)
আপনার বক্তব্য শুনে আমার মনে হলো গরু বাঘের মাংস খাচ্ছে।
আপনি নিজের স্বার্থ চরিতার্থ করার জন্য একটা কোলাজ তৈরী করেছেন, এবং তাতে আপনার যে জিনিস গুলিকে মনে হয়েছে তুলে ধরলে আপনার কার্য সিদ্ধি হবে সেগুলিই খালি তুলে ধরেছেন ।
ক) আমরা শরৎ মহারাজের রামকৃষ্ণ লীলাপ্রসঙ্গকে, আকর গ্রন্থ হিসেবে ধরি, সেখানেও ঠাকুরের জন্মসম্বন্ধে একি শিব হতে আগত তরঙ্গের দৃষ্ট হওয়ার কথা উল্লেখ করেছেন। তিনি কি একবারও বলেছেন যে ঠাকুরের জন্মের কারণ সেই জ্যোতি ছিল ?? আপনি প্রভু যীশুর জন্মপ্রসঙ্গের যে ঘটনার উল্লেখ করেছেন, সেরকম কোনো ঘটনার উল্লেখ বইয়ে আছে??
খ) রামকৃষ্ণ না হয় প্রবল শূদ্র বিদ্বেষ ছিলেন, তার দুচারটে উল্লেখ করি।
উপনয়নের সময় তিনি ধনী কামারিণীর কাছে রীতি অনুযায়ী প্রথম ভিক্ষা নিয়েছিলেন, এখন ধনী তো ব্রাহ্মণী ছিলেন??রাণী রাসমণিকে তিনি অষ্টনায়িকার এক নায়িকা বলতেন, হয় তেল মারার জন্য আর না হয় প্রবল শূদ্র বিদ্বেষী ভাবনার প্রকাশ ??
গ) আচ্ছা এরপর আসি মায়া কান্নার কথা, স্বামীজিকে রামকৃষ্ণ একবার জিজ্ঞেস করছিলেন তুই কি চাস, তখন রামকৃষ্ণ বলেছিলেন, তুই তো বড় হীন বুদ্ধির, ভেবেছিলাম তুই বিশাল বটবৃক্ষ হবি, তোর ছায়ায় এসে শান্তি পাবে, তুই চাস কিনা তুচ্ছ সমাধি। মায়া কান্না কাঁদতে পারতেন বলেই তো এতগুলো মানুষের কথা চিন্তা করেছিলেন??
আপনার যুক্তি শুনে আপনাকে Communist বলে বোধ হয়, ধর্ম যত না গাঁজা খাওয়ায় তার থেকে বেশী গাঁজা খাওয়ায় Communism, Communist are pseudo fascists. তার উৎকৃষ্ট প্রমাণ পৃথিবীর সামনে আছে।
ঘ) ভগবান রুদ্র, মহেন্দ্রলাল সরকার ত্রনারা তো এমনি এমনি পাশ করেছিলেন, আর আপনি তো না পাশ করেই বিজ্ঞানী এবং ডাক্তার?? রামকৃষ্ণ যদি বলে পাখি আকাশে ওড়ে, সেটার যুক্তি প্রমাণ আপনাদের বড় ফিকে লাগে কারণ তিনি ধর্মীয় ভাবাবেগে বলছেন, কিন্তু যদি Stephen Hawking বলে Alien হয়, তার অস্তিত্ব আছে, এমনি এমনি সেটা প্রমাণ হয়ে যায়, তাই নয় কি??
অল্প বিদ্যা চিরকালই ভয়ঙ্করী, তাই আগে পাণ্ডিত্য অর্জন করুন তারপর না হয় নেতা গিরি করবেন।
এই ভাঁওতাবাজ লোকটা সারাজীবন যে কি পরিমান সুখ সমৃদ্ধির মধ্যে কাটিয়েছে তা আমাদের অবিদিত নয়। ভাঁওতা দিয়ে দিয়ে যে বিপুল পরিমাণ সম্পত্তি তৈরি করেছিল তারও তো হিসেব নাই। শেষ বয়সটা তো একটা প্রাসাদ ভাড়া করে রাজসুখে কাটিয়েছে। জীবিত থাকাকালীন খ্যাতিও তো হয়েছিল জগৎ জোড়া। বর্ণবিদ্বেষী ছিল বলেই না সবার বিরুদ্ধে গিয়ে, শুদ্র তো সামান্য, মুসলিমের হাতের রান্নাও খেয়েছিল। ব্রাহ্মণবাদী ছিল বলেই শিষ্যরাও তো সবাই ব্রাক্ষণ। প্রধান শিষ্য বিবেকানন্দ তো উচ্চবংশীও ব্রাক্ষণ। এমনকি এই ব্রাক্ষণ শিষ্যের হাতের রান্না তার খুব প্রিয় ছিল। সমাধি নয়, অজ্ঞান হয়ে যেত, আবার এমন ভেলকি অজ্ঞান হয়ে দাড়িয়ে থাকত। মানসিক রোগের চিকিৎসার জন্য ডাক্তার দেখানো হতো, কিন্তু ডাক্তারকেও বোকা বানাতো, তারাও রোগ ধরতে পারতো না। উল্টে তারাই এই ধূর্তটার গুনে মুগ্ধ হয়ে তার ভক্ত হয়ে যেত। মা কালীর ওপর আস্থা থাকেনি বলেই তো বলত “সত্যি কি তুই আছিস মা? না, এসবই মনের কল্পনা?” যেমন আমরাও মাঝে মাঝে অভূতপূর্ব দৃশ্য দেখে নিজের চোখকে বিশ্বাস করতে পারিনা। ঠিকই তো, মায়া কান্না না কেঁদে ওই গরীব দুঃখী গুলোর সারাজীবনের খাওয়া পড়ার দায়িত্ব নেওয়া উচিত ছিল। জমিদারি তো ওনার ছিলই। নাহলে মা কালীকে বললেই তো ম্যাজিক হয়ে যেত, মা কালী হয়তো ভুল করে ওদের প্রথমে গরীব করে ফেলেছে। পাগল লোকটা সবাইকে সংসার কর্ম ছেড়ে ধর্মে মন দিতে বলেছে। তাইতো বলেছে এক হাতে কর্ম করো আর এক হাতে ঈশ্বর কে ধরে রাখো। হরমোনের সমস্যা ছিল বলেই তো সখ্য ভাবে (রাধাভাবে) সাধনা। আবার স্ত্রী মনোভাবাপন্ন ছিল, মেয়েদের সঙ্গে সময় কাটাত বলেই না মেয়েদের গরু ছাগল বলেছে। হয় তো বাঁদরের হরমোনও ছিল, সেই জন্যই দাস্যভাবে সাধনা। এইসব অলৌকিক ঘটনা প্রচার করার জন্যই তো শিষ্যদের বলেছিল সিদ্ধিলাভই হলো সাধনার মূল উদ্দেশ্য। রামকৃষ্ণ মিশনের সন্ন্যাসীরা সেই বানী অনুসরণ করেই তো আজও সব জায়গায় অলৌকিক সব ভেলকিবাজি দেখিয়ে বেড়াচ্ছে। ব্রাক্ষ ধর্মের একেশ্বরবাদ মুছে দেওয়ার চেষ্টাতেই তো তার প্রধান শিষ্য বিবেকানন্দ বেদান্তের অদ্বৈতবাদ প্রচারের চেষ্টা করেছিল যা আজও চলছে। ‘Religion is realization’ এসব বিবেকানন্দের আজে বাজে কথা। কে জানে বাপু এসব করে লাভ কি হলো?
বিবেকানন্দ কায়স্থ ছিলেন ব্রাক্ষ্মণ নন।
তা তিনি জানেন। উপরের প্রতিটি কথাই উনি ব্যঙ্গ করে বলেছেন। আক্ষরিক অর্থে বলেননি।
সুমিতবাবু ও তাঁর সমর্থকদের উদ্দেশে একটাই কথা বলবো — আপনাদের চৈতন্য হোক। এটুকু বলে রাখি, আপনারা কম জানেন এবং তার থেকেও কম মানেন। যাঁরা নিজেদের যুক্তিবাদী বলে দাবি করছেন, তাঁরা জেনে রাখুন, নিজেকে যুক্তিবাদী বলা ও হওয়ার মধ্যে বিস্তর ফারাক। দু’পাতা বই পড়ে অতলস্পর্শী সমুদ্র ও অনন্ত আকাশের বিচার নাই বা করলেন।
Hysteria আর suspended animation সম্পূর্ণ রূপে আলাদা জিনিস,আমি ধার্মিক নই কোনো গুরু মহাপুরুষ নিয়ে আমার মাথা ব্যথা নেই কিন্তু ডাক্তারি না জেনে ডাক্তারি টার্ম ব্যবহার এর নামে মানুষকে বিভ্ৰান্ত করলে আমার অসুবিধে আছে!! এরপর বক্তব্য পরিবেশন করার আগে পড়াশুনো করে নেবেন একটু আসলে ডাক্তারি শব্দ দুম করে ইউস করা যায়না অন্তত না জেনে!! ফরেনসিক এর suspended animation পড়ার অনুরোধ রইলো!! “মুক্তমনা” মানে কি সবজান্তা তাতো নয় যাইহোক!!
Our conception of Truth depends upon the conception of ourselves. সত্য সম্বন্ধে আমাদের ধারণা আমাদের নিজেদের সম্বন্ধে ধারণার ক্রমোন্নতির তালের ওপর নির্ভর করে। আমরা বর্তমানে আমাদের জ্ঞানের যে বৃত্তে অবস্থান করছি, ঠিক সেখান থেকেই জীব, জগৎ ও ঈশ্বর সম্বন্ধে আমাদের মতামত প্রকাশ করছি। এপ্রসঙ্গে ঠাকুরের বাণী হলো : ১) মূলো খেলে মূলোর ঢেঁকুর ওঠে। ২) তোমার একপোয়া মদে নেশা হয়ে যায়, সুঁড়ির দোকানে কত মদ আছে জেনে তোমার লাভ কি?
শ্রীরামকৃষ্ণ আমাদের শিক্ষা দেন : সব মতকে নমস্কার করবে, তবে একটি আছে নিষ্ঠাভক্তি। সবাইকে প্রণাম করবে বটে, কিন্তু একটির উপরে প্রাণ-ঢালা ভালবাসার নাম নিষ্ঠা। কারুকে নিন্দা করো না, পোকাটিরও না। নারায়ণই এই সব রূপ ধরে রয়েছেন। যেমন ভক্তি প্রার্থনা করবে তেমনি এটাও বলবে- ‘যেন কারও নিন্দা না করি।’
আধ্যাত্মবাদ সম্পর্কে আমার যা মনে হয়-
প্রথমে আসি যুক্তি বিষয়ে। যুক্তির ভিত্তি আসলে অভিজ্ঞতা। প্রথমে অভিজ্ঞতার আলোকে আমরা ঘটনা পরম্পরাকে কার্য-কারণ সম্পর্কে সম্পর্কিত করে থাকি। পরে কার্য এবং কারণের কোন একটি দেখে অপরটি সম্পর্কে আভাস পেয়ে থাকি। যখন এই কার্য-কারণ সম্পর্কে কে পূর্বের অভিজ্ঞতা দিয়ে সম্পর্কিত করা সম্ভব হয় না তখন আমরা তাকে অযৌক্তিক বলে থাকি।
আমার কথা হল- আমার অভিজ্ঞতায় যা নেই, তা অন্য কারো অভিজ্ঞতায় থাকবেনা এটি ধরে নেয়াটা চিন্তার সীমাবদ্ধতা। যুক্তি যাকে ব্যাখ্যা করতে পারেনা তা অসম্ভব- এটি মেনে না নিয়ে ঘটনাটি ব্যাখ্যায় যুক্তি অপারগ- এভাবে ভাবা যেতে পারে।
রামকৃষ্ণ বিষয়ে যা ভাবি-
রামকৃষ্ণের ভক্তকূল তার অনেক কিছুকেই ভক্তিরসে ডুবিয়ে অতিরঞ্জিত করেছেন- আপনার এ বক্তব্যের সঙ্গে আমি একমত। তবে, এগুলো আমার কাছে গৌণ। আমার কাছে সবচেয়ে আবেদন রাখে ধর্মতত্ত্বের গভীর বিষয়ে তার সহজ ভাষ্য।
আরেকটি বিষয় স্বীকার করা যাক। সৃষ্টি জগতের পেছনে কোন কারিগর আছেন কিনা এই প্রশ্ন আমাকে দ্বিধায় ফেলে দেয়। কিংবা রামকৃষ্ণের মত অনেক মানুষকে দিব্যপুরুষ জ্ঞানে দেখার বিষয়টি সেই দিব্যপুরুষদের সম্মোহন কিনা এই প্রশ্নও বার বার উদয় হয়। এই জায়গায় এসে একটি বিষয় আমাকে পক্ষপাতী করে তুলেছে ক্রমশ। নরেন্দ্রনাথ এর মত আধুনিক যুক্তিবাদী তরুণ, যিনি ঠাকুরকে মুখের উপর সরাসরি ভণ্ড বলেছিলেন, ঠাকুরের সংস্পর্শে তার জীবনের পথ গেল বদলে। এখানে এসে আমি সংশয়বাদী থেকে ক্রমশই আস্তিক।
একটা মানুষের দোষ ত্রুটি না থাকাটাই অস্বাভাবিক…রামকৃষ্ণ সম্পর্কে আমরা যা জানি তার অধিকাংশটাই শ্রীম রচিত কথামৃত থেকে…সেটা যে 100 ভাগ নির্ভরযোগ্য একটা ঐতিহাসিক নথি এর কোনো মানে নেই…বিবেকানন্দরও অনেক কথা পরস্পর বিরোধী..শুধু কথামৃত পড়ে আপাত ভক্তিতে মজে আমাদের ব্যাক্তিগত জীবনে যথার্থ ধর্মলাভ হয় না। হাঁ তিবে কিছু চরিত্র গঠন হইতে পারে মাত্র. বিদেশি তথা একজন মেয়ে(সিস্টার নিবেদিতা) হয়ে এই দেশের আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে এদেশের জন্য নিজের জীবন সমর্পন করে, সেই মেয়ে রামকৃষ্ণ মিশন এর কেউ হয়না বলে তারিয়ে দেয় সেই প্রতিষ্ঠানের পুরুষ লিঙ্গধারী ব্যক্তিরা কদর্য বিবেকহীন নয়তো কি ??!!
হুঁ একদম ঠিক কথা সিস্টার নিবেদিতার সাথে এরকম অবিচার হয়েছিল …দোষত্রুটি থাকা মানুষ অন্যকে কি শিক্ষা দেবে ? …নিজের দোষ ত্রুটি আগে নিজে দেখুক নিজের ভুল বুঝুক তারপর তো অন্যদের আদেশ উপদেশ
লেখকের ভেবে দেখা উচিত ছিল যে পরমপুরুষ শ্রী শ্রী রামকৃষ্ণ দেবের মা কুমারীও ছিলেন না বা স্বামী র সঙগে থাকতেন না এমনও নয় তাহলে তাঁর গর্ভবতী না হওয়ার কারণ কী? আর সন্দেহের অবকাশ কোথায় তা হলে কি উনি ওনার মায়ের গর্ভবতী হওয়ার ব্যাপারে ও সনদেহ করেন???
সঠিক কথা বলেছেন। সব ধর্মের গুরুদের সম্পর্কে অলৌকিক কাহিনী ছড়ায় তাদের শিষ্য ও অন্ধ ভক্তেরা। এই বিষয়ে বিজ্ঞানসম্মত ব্যাখ্যা দিতে গেলেই, ভক্তরা তেড়ে আসেন। এটা সব যুক্তিবাদীর কপালেই জোটে। এখন আবার ত্রিশূল বাহিনীর তাড়া খেতে হয়। চার্বাকের অবস্থা অনেকেই জানি।
দয়াকরে সম্পূর্ন লিখাটা পরবেন
আচ্ছা ধরে নিলাম উনি পাগল, অসুস্থ। তবে কেন তিনি বললেন “ছাদে যাবার যেমন অনেক পথ আছে তেমনি ঈশ্বরের কাছে পৌছানোর ও অনেক পথ আছে,কেন তিনি খৃষ্টান ও মুসলিম ধর্ম মতে সাধন করতে গেলেন?
কেনই বা তিনি সব ধর্মই যে মানবতাবাদী,ধর্মে ধর্মে যে কোন ভেদ নেই তা বলে গেলেন?আর কেনইবা রবীন্দ্রনাথ উনাকে উৎসর্গ করে লিখলেন ” বহু সাধকের সাধনার ধারা ধ্যায়ানে তোমার মিলিয়াছে তারা,তোমার আগমনে নতুন তীর্থ জন্মিল এ ধরাতে।”-আমার জানা মতে রবীন্দ্রনাথ তো পাগল ছিলেন না।কি প্রয়োজন পরলো উনার কবিতা উৎসর্গিত করার।ততদিনে তো তিনি নোবেল পেয়ে গিয়েছিলেন? কেন অযথা অসুস্থ, পাগল, সামান্য মানুষের জন্য উনার প্রান কাঁদল? কেন ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর উনার সম্মূখে নত মস্তকে দারালেন।উনি তো বিদ্যাসাগর ছিলেন,তার পরও কি কুসংস্কার গেলো না বিদ্যাসাগরের????
নাকি সত্যিই কোন কারণ ছিল উনাদের এরূপ শ্রদ্ধা প্রদর্শন করার????????????????????????
আর শেষ কথা মানুষ মাত্রই ভুল, আপনি কি উনার জীবনি ও বানী থেকে কিছুই পান নি যা শুধু হিন্দু নয় পুরো মানব জাতির জন্য শিক্ষনীয়? যদি আপনার উত্তর না হয় তবে আপনি পুনরায় উনার সম্পর্কেজানার চেষ্টা করুন।কারন জোর করে কিচ্ছু চাপানো সম্ভব না, যদি সম্ভব হয় ও তা হলেও তা দীর্ঘস্থায়ী হয় না।কারন সত্য একদিন ঠিকই প্রকাশিত হয়।আর আমি একজন ইঞ্জিনিয়ার হয়ে বিশ্বাস করি আল্লাহ / ভগবান বলে অবশ্যই একজন আছেন।যদি পৃথিবীর সব অঞ্চলের সংস্কৃতি ও ভাষা এক হতো তবে সব ধর্ম ও রীতি, এবং নাম ( আল্লাহ, ভগবান) একই হত।
আপনার মতে কি ঈশ্বের যুক্তি আছে? তবে আমার দেখা একটি সাধারণভাবে রাখা ছোট পাথরের শিবলিঙগ কিভাবে মেঝের উপর সেটে যার? বহুচেষ্টার পর বহু লোকের চেষ্টাতে এটি নরেবসে, যা আর পরে কোনদিন এটি বসেনি। তবেকি এটা চু্মবক্ত না ,আলাদা কিছু? দাদা সঠিক যুক্তিদেবেন, কারণ আমি একজন scince educated.
লেখাটির মধ্যে উদারমানসিকতা নেই।পুরোটাই একজন যুগপুরুষকে পঙ্কিল করার চেষ্টা।এটা মুক্তমানসিকতার পরিচয় নয়।মুক্তমনা তিনি ছিলেন বলেই এতকাল তিনি বাঙালীর ঘরে ঈশ্বররূপে পূজিত।
তিতলি উদারমানসিকতা বলতে ঠিক কী বুঝিয়েছেন তা বোধগম্য নয়। মনুষ্য সমাজে ব্যক্তিপূজা প্রাচীন কাল থেকেই প্রচলিত। প্রাচীন সমাজে ক্যারিশম্যাটিক কিছু করে দেখাতে পারলেই তিনি হয়ে যেতেন নবী, ঈশ্বরের দূত, দেবতা ইত্যাদি ইত্যাদি। অথচ তারাও ছিলেন রক্তমাংসের মানুষ এবং সকল মানবিক দোষত্রুটিযুক্ত। কিন্তু তাদের ভক্তরা তাদের প্রতি এতোটাই অন্ধ ছিলেন যে, তাদের বিন্দুমাত্র দোষত্রুটিও তাদের চোখে ধরা পড়ত না, বরং তাদের ত্রুটি বিচ্যুতিগুলোর একটা অলৌকিক ব্যাখ্যা দাঁড় করিয়ে তাদেরকে ঈশ্বরের পর্যায়ে নিয়ে যেতেন।
সবধর্ম চর্চাতেই ভুল আছে।তবে রামকৃষ্ঞ হিন্দুধর্মে উদারতার আহ্বানও করেছেন।ঈশ্বরের সঙ্গে আত্মিক মেলবন্ধন স্থাপন করেছেন।
জীবকেই শিব বলেছেন
বলেছেন সব ধর্মই এক।যে যেমন ডাকে——–ওয়াটার পানি জল
ধর্ম বিপ্লবে তাঁর অবদান অনস্বীকার্য
তবে যুগ প্রভাবতো থাকবেই
সব ধর্মই যদি এক হয় তবে, কোরান আর বেদ একই জিনিস। কিন্তু কোরান এবং বেদের অনুসারীরা কি তা স্বীকার করেন? সব ধর্ম এক-এটা সস্তা জনপ্রিয়তা পাওয়ার জন্য এক সস্তা শ্লোগান।
১০০ বছর পড়ে দেখবেন, রাম রহিম, আল্লামা সফিদেরকে এভাবেই মাথায় তুলে নাচা হবে। তখন তাদের নিয়েও এসব মিথ তৈরি হবে। ধর্ম এভাবেই টিকে থাকে।
আপনার জ্ঞানচক্ষু খোলার প্রয়োজন আছে
জ্ঞান আপেক্ষিক জিনিস। বলুন তো কে বেশী জ্ঞানী, ইসকনের শ্রীল প্রভুপাদ নাকি স্বামী বিবেকানন্দ? কিন্তু শ্রীল প্রভুপাদ তো স্বামী বিবেকানন্দকে একটা রাস্কেল বলে অভিহিত করেছেন, আর ইন্দিরা গান্ধীকে বেশ্যা।
রেফারেন্সগুলো না দিলে চলে?
আর ধর্ম নিয়ে বাড়াবাড়ি ঠিক না। যার যার ধর্ম তার তার কাছে।
এটা ধর্ম নিয়ে বাড়াবাড়ি নয়, মানুষের মধ্যকার ধর্মান্ধতাকে দূর করে আলো জ্বালার প্রচেষ্টা। মানুষের ধর্মান্ধতাকে পুঁজি করে ভারতে বহু ধর্মগুরুরা এখন ধর্ষণের দায়ে কারাগারে আছেন।ধর্ষণের শিকার যারা তারা যদি ধর্ম কি তা আসলেই বুঝতে পারতো তাহলে ওই গুরুদের দ্বারা ধর্ষণের শিকার হতে হতো না।
ভাই. ভালো লাগলো
বিক্রম মজুমদার, আপনি বলছেন — “সেই সময় আনেক বড় বড় ডাক্তার এবং কবিরাজ তার সান্নিধ্যে এসেছিলেন, তারা কি এই ব্যাপারটি ধরতে পারেন নি।” আপনাকে বলি — থাকতেই পারে। ডাক্তার-কবিরাজ কেন, বিজ্ঞানীরাও থাকতে পারে। তাতে কী হল ? তাঁরা তো রামকৃষ্ণের চিকিৎসার দায়িত্ব নিতে যাননি। তাঁরা ভক্ত। ভক্তের চোখ বন্ধ থাকে, কিংবা অর্ধ-নিন্মীলিত। তাঁরা রামকৃষ্ণের হিস্টিরিয়া নির্ণয় করতে আসতেন না, আসতেন ধর্মকথা শুনে পুণ্যার্জন করতে। আগ বাড়িয়ে কেন বলতে যাবে ‘উনি হিস্টিরিয়া রোগী’। রামকৃষ্ণের যে হিস্টিরিয়া ছিল তা বুঝতে ডাক্তার-কবিরাজ লাগে না। রামকৃষ্ণের পরিবার কখনো নিজেদের উদ্যোগে মানসিক ডাক্তারকে দেখিয়েছেন ? দেখাননি। উলটে রামকৃষ্ণের এই অস্বাভাবিকতাকে তোল্লা দিয়ে ধান্ধাপানি করে নিয়েছেন। শুধু পরিবারই নয়, তাঁর চারপাশে সবসময় ঘিরে থাকা আপ্ত্য-সহায়করাও এ সুযোগ হাতছাড়া করেননি। এখনও চোখ-কান খোলা রাখলে দেখতে পাবেন শিশুর অস্বাভাবিক জন্মকে কাজে লাগিয়ে ঈশ্বর বানিয়ে তার পরিবারেরা ধান্ধাপানি করে চলেছেন। সময় বদলেছে। রামকৃষ্ণের যুগ আর নেই। এই ধান্ধাপানির ব্যবসা কিছুদিন পর হুমড়ি খেয়ে পড়ে। সঠিক চিকিৎসায় সেরে ওঠে। রামকৃষ্ণের দুর্ভাগ্য ! তিনি পরিবার এবং স্তাবকদের লালসার শিকার। তাঁর আরও বেশি সর্বনাশ হয়েছে বিবেকানন্দ আসার পর থেকে। সঠিক সময়ে সঠিক চিকিৎসা পাননি। যথাযথ চিকিৎসা পেলে আর পাঁচটা মানুষের মতো গদাধর চট্টোপাধ্যায়ও সুস্থ-স্বাভাবিক জীবনযাপন করতে পারতেন।
ধান্ধাপাণি শব্দটি আর যার সাথেই হোক এর ব্যাপারে খাটবেনা।তখনকার ভারতের সামাজিক পটভূমি জানলে এমন কথা আপনি বলতেননা।তাছাড়া তার পরিবার কোনদিন তাকে নিয়ে ঐ “ধান্দাপাণি” করেনি।কারণ তারা সৎ ছিলেন। তার হিস্টিরিয়া রোগ থাকতেই পারে ।কিন্তু একজন তথাকথিত অশিক্খিত মানুষ ধর্মের উর্ধে যে মানবিকতার পাঠ দিয়েছিলেন সেটা বুঝতে গেলে মন লাগে।সেটা সবার থাকেনা।আর অবশ্যই মহাপুরুষের জীবনী পাঠ করতে হয়।পরের মুখের ঝাল খেলে চলেনা।
মহেন্দ্রলাল সরকার বুঝি প্রথম দিন থেকে ভক্ত ছিলেন??
আর ” ধান্দাপানি”, মানুষের মরার পরে কি ধান্দা বাকি থাকে ভাই, যে নরেনকে বলেছিলেন, তুই তো বড় হীন বুদ্ধির ভেবেছিলাম তুই মহীরুহ হবি, মানুষ তোর ছায়ায় এসে শান্তি পাবে, তুই কিনা চাস মুক্তি।
আগে নিজে ভেবে দেখুন যে কথা গুলো আপনি বলছেন তার মানে টা কী ?
যীশু ও নিজের 12 জন শিষ্য কে পাহাড়ের ওপর নির্জনে সন্নাসী জিবনের কথা আলাদা করে বলেছিলেন st.mathews এ আছে আর সধারন মানুষ কে ভিন্ন কথা বলেছেন
একটি মানুষ দুটি যায়গায় দু রকম কথা বলতেই পারে যেমন নিজের বৌ কে স্ত্রী এবং জননী কে মা
যদিও দুজনই মহিলা কিন্তু ওধিকার আলাদা
তেমনই গৃহী আর সন্নাসী শিষ্য দের আলদা উপদেশ সব কথার উত্তর আমি দিতে পারি আগে নিজের মাথার চিন্তা গুলি উন্নত করুণ আশা করি আপনি বুঝতে পেরেছেন
লেখকের লেখা পড়ে নিজকে একটু শুধরে নিতে চাই। কারন, যেকোন বিষয়ে বা কারো সম্বন্ধে কিছু বলতে গেলে আমাদের দেখা উচিত যেন কারো অস্নমান নাহয়। যুক্তি-ত্রকের দ্বারা নিজের জ্ঞান ও বিষ্যকে উপরে নেওয়া যেতে পারে, কিন্তু অপরজনকে অস্নমান করে নয়।
লেখক তার লেখায় বলেছেন মানুষ ও সমাজ ঈশ্বর দ্বারা তৈয়ারী নয়। মানুষ এসেছে একটা বিবর্তনীয় ধারায় সেই দিক থেকে চিন্তা করলে সব মানুষই সমান, কেউ ঈশ্বর পেরিত সন্তান হতে পারে না। একে মেনে নিয়ে জিজ্ঞাসা করছি, “জীবের প্রাণ বা আত্মা” কোথাথেকে আসে? সেকি বিব্রত্নীয় ধারার কোন ধারা দিয়ে প্রাবাহিত হয়। ঈশ্বর বলে কেউ নেই, এ কথা ঠিক, কিন্তু সৃষ্ঠি হওয়ার কারন সঠিক ভাবে জানা দরকার। শুধু লেখকে র কাছে আবেদন, তিনি যেন এই জীব সৃষ্ঠির কারনটা সঠিক ভাবে ব্যাখ্যা করেন। তিনি একযায়গায় বলেছেন যে, ‘হুট করে মানুষকে ঈশ্বর তৈরি করে নি’ , এতে কি বুঝায়? লেখক কি ক্রম প্রয্যায়ে সেই ঈশব্রের উপর নিরভ্রশীল হয়ে গেলন না। আমার মনে হয় লেখক নিজে আত্মবিশ্বাসী নন। লেখক কি লিখতে গিয়ে কি লেখলেন তা একবার যেন ভালো করে ভাবেন। কোন কিছু লেখার উপর প্রমান স্বরূপ বিষয় উথপ্ন করা বা ব্যাখ্যা করা উচিত। না হলে বিষয়টি খেলো হয়ে জায়।
আমি প্রথমে ব্লেছি যে, কাউকে অপমান করে কিছু বলা ঠিক নয়। লেখক যে ভাবে রামকৃষ্ণএর জন্ম সম্বন্ধে ইঙ্গিত করেছেন, সেটা ঠিক হয়নি বলে মনে হয়। অলৌকিক ভাবে কখনও গর্ভ সঞ্চার হয়না। মা একজন নারী, প্রকৃতি, তার সম্বন্ধে খারপ ইঙ্গিত করা একজন জ্ঞানী ব্যাক্তি হিসাবে শোভা পায়না। এরচেয়ে বেশী কিছু ব্লাটা ঠিক হবেনা মনে হয়।
আর একটা বিষয়, রামকৃষনণের হিস্টিরিয়া রোগ ছিল, তা ধরে নিইয়ে বলছি, সেই সময় আনেক বড় বড় ডাক্তার এবং কবিরাজ তার সান্নিধ্যে এসেছিলেন, তারা কি এই ব্যাপারটি ধরতে পারেন নি। লেখকের এই সম্বন্ধে কি প্রামান আছে, তা দেওয়া উচিত। তার উপর তার হ্রমহ্নের যে সমস্যা ছিল, সেই বিষয়ে লেখকে প্রামান দেওয়া উচিত। তবে পাঠক সমাজ সঠিক ভাবে গ্রহণ করতে পারবে।
সব সমালোচকই রামকৃষ্ণ মিশনে থেকে পড়াশুনা বা প্রতিপালিত হ্ননি। কেউ কেউ ছদ্মনামে নিজকে জাহির করতে গিয়ে, শুকনো ডালা ভেঙে পড়ে হাত-পা ভাংবে। ব্লগে লেখা সহজ, কিন্তু প্রকাশ্যে তা পারা যায়না।
সর্ব শেষে বলব যখন লিখেছেন, তার উত্তর যারা চাইবেন , তাদের দিতে হবে। শ্তদ্রু ব্যানারজ্জীর ক্তহাগুলি র স্টহিকভাবে উত্তর দিবেন বলে আশা রাখি।
তথ্য সমৃদ্ধ লেখা । তথ্য আর একটু ভরপুর হলে আরও ভাল লাগত । লেখার প্রসঙ্গে কিছু কথা ।
আমি দেখেছি যারা মাদ্রাসা শিক্ষায় শিক্ষিত তারা মহম্মদ এবং আল্লার বিশ্বাসে অটল । যারা হিন্দু মঠের শিক্ষায় শিক্ষিত তারা ভগবান বা ভগবানের কোন চ্যালার ওপর বিশ্বাস করে । তেমনি বৌদ্ধ মঠে শিক্ষিত ব্যক্তিরা ভগবান বুদ্ধকে বিশ্বাস করে ।খ্রিষ্টানদের ক্ষেত্রে তেমনি, খ্রিষ্টান মিশনারিরা প্রভু যিশু এবং গডে বিশ্বাস করে । আল্লা,ভগবান,গড বা এদের কোন শাগরেদ নামে পরিচিত মহান ব্যক্তির বিরুদ্ধে কোন কথা তুললেই, এইসব প্রতিষ্ঠানের শিক্ষায় শিক্ষিত ব্যক্তিরা রে রে করে ওঠে । কার্যক্ষেত্রে কিছু কিছু সময় ধারালো অস্ত্র নিয়ে নাস্তিক বলে ঘাড়ে লাফিয়ে পড়েন ।
আপনি আপনার লেখার শেষপাতে একজন একজন ডক্টরেট ডিগ্রিধারী ব্যক্তির সাথে আপনার বিতন্ডার কথা শুনিয়েছেন । যতদূর জানি আমার কথা মিলে যাবে – আপনি খোঁজ নিয়ে দেখুন উনি কত ছোটবেলা থেকে রামকৃষ্ণ মিশন ও মঠে পড়াশুনা করেছে, ধুতি পরে প্রেয়ার করেছে,মিশনের চন্নমেত্ত খেয়েছে এবং দিনের পর দিন কুসংস্কারের নিগড়ে ডুবেছে । এই ধরনের মানুষের ডিগ্রি দেখে চমকাবার কিছু নেই । কারন- প্রকৃত শিক্ষা নিশ্চয়ই অন্যের দ্বারা চালিত হওয়া নয়, নিজের বুদ্ধির উন্নয়ন ঘটিয়ে বাস্তববোধ নিয়ে চলাই প্রকৃত শিক্ষা । রামকৃষ্ণদেব সম্বন্ধে যে অলৌকিক মিথ্যে কাহিনিগুলো প্রচলিত আছে তা নিয়ে এরকম বিভিন্ন ডিগ্রিধারী লোক বিভিন্ন বই লিখেছেন । ওইসব অপরিচিত ডিগ্রিধারী লেখক এবং আপনার পরিচিত ডিগ্রিধারী ব্যক্তিটি বাস্তব জীবনে কারুর মধ্যে ওই অলৌকিক ঘটনার যেকোন একটি ঘটনা প্রত্যক্ষ করেছেন ? ওনারাও জানেন সত্যি ঘটনাগুলো বাস্তবিকই ঘটা সম্ভব নয় । কিন্তু কি করা যাবে ছোট থেকে মহারাজের অঙ্গুলিহেলনে মানুষ, মহারাজের চাপকানিতে শেখা কথাগুলো নিশ্চয়ই ভুল হতে পারে না । তাই পরের মুখে শেখাবুলি নিয়ে যুক্তিতে না পেরে অগত্যা হাতাহাতি করতে হয় । সেজন্য ডিগ্রি দেখে কিছু ভাববেন না । কালের স্রোতে ভেসে পূঁথি মুখস্ত করলে IA, BA, MA……..ডিগ্রি বাড়তেই থাকে । প্রকৃত শিক্ষা হয় কী ? রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, টমাস আলভা এডিসন, ষ্টিভ জোবস প্রভৃতি বরেন্যে ব্যক্তিবর্গের বিশেষ কোন প্রতিষ্ঠানিক ডিগ্রি ছিল না । অথচ এরা নিজ নিজ পরিসরে দিকপাল । আমার চেনা জানার মধ্যে দেখেছি বড় বড় ডিগ্রিধারী ব্যক্তি বিগ্রহকে সাষ্টাঙ্গে প্রনাম করছে, অন্ধ কুসংস্কার হাতে বেঁধে গলায় ঝুলিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে, ধর্মের মতো অন্ধকারকে নিয়ে তর্ক করছে । এদের দেখে লজ্জিত হই, কিন্তু এগিয়ে যেতে ভয় পাই না ।
ঈশ্বর দেখা বা ঈশ্বরের সাথে কথা বলা মনোবিজ্ঞানের ভাষায় একটি মানসিক রোগ । এই বিশেষ মানসিক রোগকে সিজোফ্রেনিয়া বলে । শ্রী শ্রী ঠাকুর রামকৃষ্ণ পরমহংসদেব এই মানসিক রোগে আক্রান্ত ছিলেন । শুধু রামকৃষ্ণদেব নয়, বহু সিদ্ধ পুরুষ এই মানসিক রোগে আক্রান্ত ছিলেন । ঠিকমতো চিকিৎসা হলে এই রোগ সেরে যায় ।
রামকৃষ্ণদেবের শিষ্য স্বামী বিবেকানন্দের বহুচর্চিত একটি বাণী হল – “গীতা পাঠ অপেক্ষা ফুটবল খেলা অনেক বেশী শ্রেয়”। প্রশ্ন হলো এই কথাটি বিবেকানন্দ নিজে বিশ্বাস করতেন ? কিংবা তার গুরুজী ? শিকাগো মহাধর্ম সভায় বিশ্বের মাঝে হিন্দুধর্মের প্রানপ্রতিষ্ঠা করেছিলেন যে ব্যক্তিটি তিনি বিবেকানন্দ । এহেন ব্যক্তির মুখে গীতার অবমাননা অবাক হতে হয় । যেখানে গীতা হিন্দুধর্মের প্রধান ধর্মগ্রন্থ গুলির মধ্যে অন্যতম । কট্টর হিন্দুবাদীরা প্রমাদ গুনলেন, হঠাৎ করে কিছু বললেন না । কারন তারা জানতেন বিবেকানন্দ হিন্দুত্ববাদী, হিন্দুত্বের বরপূত্র- নিশ্চয়ই বিবেকানন্দের এমন উক্তির পেছনে গূঢ় অভিসন্ধি আছে । তাই তা না বুঝে কিছু হঠাৎ বলা যাবে না ।
কী ছিলো এই গূঢ় অভিসন্ধি ? অতি বুদ্ধিমান বিবেকানন্দ বুঝতে পেরেছিলেন আধুনিক শিক্ষায় শিক্ষিত, বিশেষত নবযৌবন প্রাপ্ত যুব সমাজ প্রাচীন ঘোরতর অন্ধকার কাটিয়ে নবজাগরন দেখতে চাইছে । এদের আয়ত্ত করা খুবই মুশকিল । ঈশ্বর দিয়ে এদের আর আটকানো যাবে না ।এরা নতুন কথা চাইছে, নতুন সমাজ চাইছে । বুদ্ধিমান বিবেকানন্দ এহেন চটকদারী মন্তব্য করে যুব সমাজকে বিভ্রান্ত করে আশ্রমে আনতে লাগলেন । কট্টর হিন্দুত্ববাদীরা অলক্ষ্যে হাসলেন । যুব সমাজ ভাবল বুঝি নতুন কিছু পেয়েছি । কিন্তু কিছুদিন পর তাদের অনেকেরই মোহভঙ্গ হয়েছে । এতো নতুন গ্লাসে পূরনো মদ । গিয়ে দেখা গেল সেই ভগবানে প্রনাম, সেই বই পড়া (বইগুলি রামকৃষ্ণ ও বিবেকানন্দ সম্বন্ধীয়, গীতাকে একটু পাশে সরিয়ে রেখে আর কী),কিন্তু ফুটবল বলে কিছু নেই । তাহলে আমরা গিয়ে কী দেখলাম –
সেই তো রানী, সেই তো রাজা, সেই তো একই ঢ়াল তলোয়ার,
সেই তো একই রাজার কুমার পক্ষীরাজে,
শুনব না যা, ওসব বাজে ।
সোজাকথা
যে চ্যালার কথা আপনি বললেন সেই চ্যালার স্ত্রী একদিন বলেছিলেন যে যদি গুরুর কোন কথা নিয়ে দ্বিধা থাকে তাহলে তাকে মুখোমুখি প্রশ্ন করো।গুরু বলে তার কথা অন্ধভাবে মেনে নিওনা।আর বিবেকানন্দ একদা দেখেন যে যুবসমাজ ধর্মচর্চা করে যেন নিজেদের স্বাভাবিক বৃত্তিকে ধ্বংস করে ফেলছে।তাই তিনি একথা বলেছেন যেটি স্বাধীনতা সংগ্রামে বিপ্লবীদের অনুপ্রেরণা জুগিয়েছিল।সেই বিপ্লবীদের কেউ ছিলেন ডাক্তার কেউ অধ্যাপক কেউ বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বর্ণপদকপ্রাপ্ত।অতএব কেউ মূর্খ ছিলেননা।আর যে ধর্ম সময়ের সাথে সাথে নিজেকে আপগ্রেড করার মানসিকতা রাখে এবং সেটাকে তথাকথিত ঈশ্বরের দান বলে চোখবন্ধ করে রাখেনা সে আর যাইহোক কুসংস্কারাচ্ছন্ন নয়।অবশ্য এটা বুঝতে গেলে নিরপেক্খ দৃষ্টি লাগবে।আর রবীন্দ্রনাথ পরলোকচর্চা করতেন।তাহলে কতখানি সংস্কারমুক্ত ছিলেন তিনি সেটা বোঝাই যাচ্ছে।
আপনার মতো এত বড় মূর্খ, বোকা ও শয়তান লোক পৃথিবীতে একটা ছাড়া দুটো হয় না। কোন ব্যক্তি কে ভালো বলা খুব সহজ। খারাপ বলতে গেলে সঠিক তথ্য সহকারে পড়াশোনা করা দরকার। রামকৃষ্ণের বাণী গুলো পড়বেন। তাহলে হয়তো শয়তানি করার প্রবৃত্তি থেকে কিছুটা রেহাই পাবেন।
আপনাদের মতো অন্ধ ভক্তরাই রামকৃষ্ণদের সৃষ্টি করে। রামকৃষ্ণের চাইতে উৎকৃষ্ট বাণী আপনি নিজেও বানাতে পারবেন। বাণীতে কী এসে যায়? অনেক দুর্বৃত্তও অনেক সুন্দর সুন্দর কথা বলে মানুষকে ধোঁকা দেয়ার জন্য।
লেখা প্রসঙ্গে মূর্খ যাদুকরের কিছু কথাঃ
হে অশেষ জ্ঞানী লেখক আমার অভিনন্দন গ্রহণ করুন আপনার এই নির্ভিক সত্যবাদীতার জন্য । যেকোনো যুক্তিবাদী বিচার হওয়া উচিত পক্ষপাত শূণ্য । আপনি লেখাটির শেষে আপনার লেখার প্রকৃত উদ্দেশ্য ব্যক্ত করে পাঠক গণকে জানিয়ে দিয়েছেন যে আপনার মূল উদ্দেশ্য সেই ডক্টরেটধারী ব্যক্তিটির উপর প্রতিহিংসা চরিতার্থ করা । এতেই বোঝাযায় আপনার লেখায় যুক্তিবাদের বিশুদ্ধতা কতটা । যাই হোক এমন অকপট ভাবে নিজের যুক্তিবাদের স্বরূপ উন্মুক্ত করাটা যদি আপনার স্বভাবতঃ নির্বুদ্ধিতা না হয় তাহলে বলতেই হবে আপনার সাহস আছে নিজের উলঙ্গ প্রতিহিংসাপরায়ণতাকে সোজা সাপটা ভাবে স্বীকার করার ।
প্রথমতঃ বলি আমার মনে হয় কোনো কিছু সম্বন্ধে কিছু বলা বা লেখার আগে সেই বিষয়টি সম্বন্ধে ভাল ভাবে পড়াশোনা না করে কোনো মন্তব্য করা যুক্তিবাদের পর্যায়ে মনে হয় পড়েনা, মুক্তমনের পর্যায়ে তো নয়ই । এই লেখাটি লেখার আগে শ্রীরামকৃষ্ণ সম্বন্ধিয় অস্বীকৃত কোনো ভুলভাল বই না পড়ে কথামৃত, স্বামীজীর পত্রাবলী জাতীয় প্রামাণ্য গ্রন্থ গুলি পড়া উচিত ছিল বলে আমার মনে হয় । দ্বিতীয়তঃ অলৌকিকতা ও তার উপায়গুলি সম্বন্ধে যথাযথ পড়াশুনা করা দরকার ছিল ।
আমি উপরিউক্ত বই গুলি মন দিয়ে পড়েছি বলেই আমার বিশ্বাস এবং আমি একজন যাদুকর, তাই অলৌকিকতার ঘাঁচ-ঘোঁচ গুলো মোটামুটি আমার চেনা । এই বকলমেই আমার কিছু বলার আছে, ভাল ভাবে পড়ে বুঝে প্রকৃত যুক্তির সঙ্গে উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করবেন । অবশ্য যদি উত্তর দেওয়ার মত মানসিকতা আপনার থাকে ।
শ্রীরামকৃষ্ণের জীবনের যেটুকু কথা জানা যায় তার মধ্যে ভক্তদের ভক্তিরসাপ্লুত আরোপিত ঘটনাগুলি বাদ দিলে এবং একই গাছের ডালে দু রঙের ফুলের ঘটনাটি ছাড়া আর কোন ঘটনাকে মঞ্চোপযোগী যাদু বা হস্তলাঘব বলে ব্যাখ্যা করা যায় ??? প্রামাণ্য গ্রন্থগুলি পড়লে জানতে পারবেন স্বামী বিবেকানন্দ এবং শ্রী শ্রী রামকৃষ্ণদেব বার বার অলৌকিকতা বা সিদ্ধাইকে ঈশ্বরলাভের অন্তরায় বলে প্রচার করেছেন ।
ভক্তরা তাঁর সম্বন্ধে কি কি অলৌকিকতা আরোপ করেছে সেজন্য তাঁর বিরুদ্ধে আপনি কলম তুলছেন এবং তাঁর মায়ের চরিত্র সম্বন্ধে কটু মন্তব্য করছেন । এখন আপনার এই লেখাটি পড়ে যদি অন্য ধর্মের কোনো বন্ধু সমস্ত হিন্দুধর্মের মানুষদের প্রতি আঙ্গুল তোলেন এবং আপনার মায়ের চরিত্র নিয়ে প্রশ্ন তোলেন তাহলে সেটার যুক্তিযুক্ততা যতটুকু, আপনার লেখার যৌক্তিকতাও ঠিক ততটাই ।
আপনি পৈতে খুলে রাখা ও পরার দ্বিচারিতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন । খুব ভাল কথা । আশা করব আপনি নিজে দ্বিচারিতামুক্ত । তাই যদি হয় তাহলে এই কথা গুলো শুধু এই অনলাইন ব্লগের নিরাপদ আশ্রয়ে না বলে ঐ বিরিঞ্চি বা সাঁই দের জনসভাতেও গিয়ে উচ্চ কন্ঠে বলতে পারতেন । পেরেছেন কি ??? পারেন নি কারণ আপনি ভাল করেই জানেন যে ওখানে বললে ভক্তের দল আপনাকে ততক্ষণাত কবরে পাঠাবার ব্যবস্থা করত । মানুষকে দ্বিচারিতা করতে হয় অবস্থা বিশেষে । অবতারের ও ক্ষিদে পায়, ঘুম পায়, শরীর খারাপ হয় । কারণ মানুষের মনটা অবতার বা দেবসুলভ হতে পারে, শরীরটা নয় ।
রামকৃষ্ণ বাঙলার ধর্মবিপ্লবের গতি রুদ্ধ করেননি বরং তাকে ডায়নামিক রূপ দিয়েছিলেন । ব্রাহ্ম ধর্ম সম্বন্ধে লেখার আগে আপনার ব্রাহ্ম ধর্মকে জানা উচিত ছিল সঠিক ভাবে । ব্রাহ্ম ধর্ম ব্রহ্ম বা একেশ্বরবাদের কথা বলে যা আদি বৈদিক ঈশ্বরচেতনার সঙ্গে সমগোত্রিয় । শ্রীরামকৃষ্ণ কখনই একে মিথ্যে বলেননি বা হেয়জ্ঞান করেন নি । গীতার সর্বধর্ম পরিত্যাজ্য মামেকং স্মরণং ভজ বা অন্যান্য ধর্মের ধর্মগ্রন্থে দাবী করা নিজেদের শ্রেষ্ঠত্বের বদলে তিনি শুনিয়েছেন পরিমার্জিত ডায়নামিক এক ধর্মের বাণী, “যত মত, তত পথ” এবং তার স্পষ্ট ব্যাখ্যাও দিয়েছেন । এই মতবাদ প্রকৃতপক্ষেই ইউনিভার্সাল হিউম্যানিসম । পূর্বে সুফি সাধকরা এবং সম্রাট আকবর এই ধরণের মতবাদ প্রচারের চেষ্টা করলেও সাধারণের কাছে এর মর্মোপলব্ধী দূর্বোধ্য হওয়ায় তা হালে পাণি পায় নি । শ্রীরামকৃষ্ণ এটাকে সর্বসাধারণের বোঝার মত করে প্রচার করায় এই মত সাধারণ মানুষ গ্রহণ করতে পেরেছিল সহজেই । একে কি ধর্মবিপ্লব বলব না ?
ব্রাহ্ম ধর্ম সাধারণের কাছে স্বীকৃতি পাওয়া এমনিতেই কঠীন ছিল । কিছু উচ্চশিক্ষিতের মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল এই ধর্ম । সাধারণ মানুষ এই ধর্মের ব্রহ্মের বিশালত্বের ধারণা নিতে পারেনি । উদাহরণ স্বরূপ বলি সিলিকন ভ্যালীতে কর্মরত আল্ট্রামর্ডান কোনো প্রবাসী ভারতীয়কে যদি এই শ্লোক টি বোঝাতে যাই সে প্রথাগত ভাবে সহজে বুঝতে পারবে কী ?
বাসাংসী জীর্ণাণী যথা বিহায়, নবানী গৃহ্নাতি নরোহপরাণী
তথা শরীরাণী যথা বিহায় জীর্ণানন্যানী, সংযাতি নবানি দেহি ।।
কিন্তু তাকে যদি এই ভাবে শ্লোকটির অনুবাদ করে দিই তাহলে তার পক্ষে বোঝা সহজ হবে —
When All the memories are full …No more place is left to use in the temp folders ….The system reboots to clearup the memories and to start a new session …But that reboot doesn’t mean the termination of the system ….Only running processes are killed temporarily ..
ঠিক একই কাজটি করেছিলেন শ্রী শ্রী রামকৃষ্ণদেব । ধর্মের সূক্ষতম ধারণাটিকে চলতি কথায় সাধারণ মানুষের বোধগম্য করে তুলেছিলেন । কোটী টাকা খরচা করে যজ্ঞ করতে বলেন নি । মানসপূজা করতে বলেছিলেন ।
এবারে আসি মানবদরদীতার কথায় । আচ্ছা আপনি এই লেখাটা লিখেছেন কেন ??? মানুষের যুক্তিবোধ জাগরণের জন্য ? তা এখানে কেন ? আপনার এই লেখায় ধর্মধ্বজীদের তো একটা চুল ও ছেঁড়া যাবেনা, যান না ফিল্ডে গিয়ে ধর্ম সভা গুলোর মধ্যে দাঁড়িয়ে চীৎকার করে বলুন, “সব ঝুঠা হ্যায়” । আপনি বলবেন অল্প অল্প করে মানুষ জাগবে, আপনার এই লেখা পড়ে অন্য কেউ লিখবে, সেটা পড়ে অন্যকেউ । ঠিক এই ভাবে ভাবুন শ্রীরামকৃষ্ণের জীবন একটা সিম্বল । একটা ট্রাবলশুটিং গাইড । সারা জীবনটাই তিনি ছোটো ছোটো করে তাঁর শিষ্যদের ভবিষ্যত কর্মপন্থার উপদেশ হাতে কলমে দিয়ে গেছেন ।
মিশনের বাইরে থেকে ওই সর্বধর্ম সমন্বয়ের প্রতিকের খিল্লি উড়িয়ে চলে না এসে মিশনের কাজ সম্পর্কে জানুন । দরিদ্রনারায়ণের সেবায় অংশ নিয়ে দেখুন অলৌকিকতা নয় ভগবানের কোন সন্ধান শ্রীরামকৃষ্ণ দিয়ে গেছেন । দোরে দোরে ঘুরে জমা করা কিছু জামা কাপড়, আপনার তথাকথিত “কুসংস্কারী” রামকৃষ্ণভক্তদের সাধ্য মত দান করা কম্বলের বিশাল বিশাল বস্তা কাঁধে নিয়ে যখন শীতের ভোরে কিছু দুরন্ত দামাল ছেলে কোনো কিছুর লোভে নয় জাস্ট এমনি ই কণকণে ঠান্ডা নদী হেঁটে পেরোয়, তখন তাদের মধ্যে থেকে বোঝার চেষ্টা করুন ঠিক কোন ভগবানের সন্ধান শ্রীরামকৃষ্ণ দিয়ে গেছেন । সারাদিন ভাগারের ময়লা ঘাঁটা কচি কচি ছেলে-মেয়ে গুলোকে যখন বিকেলের পড়ন্ত বেলায় নিয়ে এসে পড়ানো লেখানো গান শেখানো ছবি আঁকানোর মধ্যে দিয়ে জীবনের মূল স্রোতটা চেনানোর চেষ্টা হয়, আর তাদের রাত্রের খাবার পরিবেশন করতে, তাদের এঁটো বাসন ধুতে নিয়মিত আসে নামী শিল্পপতিরা, তাদের মধ্যে থেকে বুঝুন ঠিক কোন আদর্শের সূচনা সেদিন মথুরবাবুর সামনে করেছিলেন ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণ ।
সেদিন ঠাকুর শ্রী রামকৃষ্ণ একটা গ্রামের কিছু মানুষকে কয়েকটা কাপড় দেওয়া আর একবেলার জন্য পেটপুরে খাওয়ানোর ব্যবস্থা করেছিলেন । আজ তাঁর নির্দেশিত ভাবধারায় স্বামীজীর সৃষ্টি রামকৃষ্ণ মিশন হাজার হাজার দরিদ্র মানুষকে জীবনের মূল স্রোতে ফেরাচ্ছে নিরবচ্ছিন্ন ভাবে বছরের পর বছর । সেদিন তাঁর কথায় নাগ মহাশয় ব্যবসায়িক ডাক্তারীর সমস্ত কিছু গঙ্গায় বিসর্জন দিয়েছিলেন, আজ যখন চারিদিক সুবিধাবাদী অর্থপিশাচ ডাক্তারে ভরে যাচ্ছে আস্তে আস্তে, তখন খোঁজ নিয়ে দেখুন প্রতি বছর শয়ে শয়ে বড় বড় ডাক্তার কেউ সব ত্যাগ করে সন্ন্যাস নিয়ে কেউ বা আবার সংসারে থেকেই বিনামূল্যে রামকৃষ্ণ মিশনের স্বাস্থকেন্দ্রগুলিতে নিরলস সেবা দিয়ে চলেছেন ।
মশাই এগুলো আপনার এদিক ওদিক থেকে শোনা বা কোনো বিশেষ একটি দেশের প্রভাবশালী ধর্মের বাহবা পাওয়ার উদ্দেশ্যে কল্পিত তথ্য নয় । একদম নিজের চক্ষু-কর্ণের অভিজ্ঞতা। প্রমাণ চাইলে দিতে পারি । তাই বলছি বিবেকানন্দ, রামকৃষ্ণকে যা খুশী গালাগালি দিন না বারণ করবনা । কিন্তু তাঁদের অবদান বা কাজের সম্বন্ধে না জেনে অকারণে কালীমালিপ্ত করার চেষ্টা করলে সেটা যুক্তিবাদী সাজার ভন্ড প্রচেষ্টা বা ইচ্ছাকৃত ভাবে আপনার নির্দিষ্ট স্বার্থসিদ্ধির (সম্ভবতঃ কোনো একটি ধর্মের লোকের চোখে হিরো সাজার) প্রচেষ্টা বলেই ধরে নেব ।
পরিশেষে বলি ইন্টারনেটে লেখালিখি করছেন । তা সে লেখা যতই অযৌক্তিক, স্বার্থগন্ধযুক্ত এবং “বাল”খিল্য হোক না কেন । গুগলের সঙ্গে নিশ্চয়ই পরিচয় আছে । ওখানে গিয়ে প্লাসিবো শব্দটির অর্থ সার্চ করুন । ওটি এমন একটি চিকিৎসা পদ্ধতি যেটা যুক্তিবাদী মননে কোনোভাবেই গৃহিত হওয়ার কথা নয় । কিন্তু মজার ব্যাপার হল ওটি এখন সারা বিশ্বে স্বীকৃত একটি অত্যন্ত কার্যকারী চিকিৎসা পদ্ধতী । প্রায় সমস্ত হাসপাতাল বা ক্লিনিকেই সময়ে সময়ে এর প্রয়োগ করা হয় । শিবজ্ঞানে জীবসেবার বা রামকৃষ্ণ মিশনের মূল মোটো “আত্মনোমোক্ষার্থং জগদ্ধিতায় চ” আদর্শ প্রচারে শ্রীরামকৃষ্ণ যদি অলৌকিকতার ব্যবহার করেও থাকেন তাহলে জানবেন সেই সময়ের আচারসর্বস্ব ধর্মের রমরমা ভরা সমাজে এই প্লাসিবো বা মিসডায়রেক্সনের প্রয়োজন ছিল ।
নমস্কারান্তে
শতদ্রু ব্যানার্জ্জী (ডেভিড)
@শতদ্রু ব্যানার্জ্জী,
অসাধারণ লেখা । ধন্যবাদ । আপনার লেখাটি পড়ে অসম্ভব আনন্দিত হয়েছি।
@সৌরভ চৌধুরী,
এত বোরিং ও বিশালাকৃতি মন্তব্য পড়ার জন্য আপনাকেই আমার ধন্যবাদ দেওয়া উচিত দাদা ।
:good:
শতদ্রু বাবু আপনার সাথে কি কোনো ভাবে যোগাযোগ করা যায়?.. আপনাকে খুব ভালো লাগলো
@শতদ্রু ব্যানার্জ্জী,
//শিবজ্ঞানে জীবসেবার বা রামকৃষ্ণ মিশনের মূল মোটো “আত্মনোমোক্ষার্থং জগদ্ধিতায় চ” আদর্শ প্রচারে শ্রীরামকৃষ্ণ যদি অলৌকিকতার ব্যবহার করেও থাকেন তাহলে জানবেন সেই সময়ের আচারসর্বস্ব ধর্মের রমরমা ভরা সমাজে এই প্লাসিবো বা মিসডায়রেক্সনের প্রয়োজন ছিল ।//
কথাটা জীবসেবা না মানুষ সেবা হবে? এতই যখন উনি শিবজ্ঞানে জীবসেবা করতেন তাহলে কেন অসহায় জীবদের হত্যাকৃত দেহ খেতে দ্বিধা করতেন না?
@রনবীর সরকার,
ধন্যবাদ রনবীর বাবু, আমায় সংশোধন করিয়ে দেবার জন্য । আপনার ন্যায় ব্যাকরণ পারদর্শী পাঠকদের কথা মাথায় রেখে আমার কথাটি “শিবজ্ঞানে জীবসেবা” না লেখাই উচিত ছিল । কথাটি্র ভাবপ্রকাশের ক্ষেত্রে ব্যাকরণ গত ভাবে ভুল হয়েছে স্বীকার করছি । ওর পরিবর্তে আপনার যুক্তি অনুযায়ী শিবজ্ঞানে মানবসেবা লেখাই উচিত ছিল । কারণ বস্তুতঃই আমাদের পক্ষে অসহায় অবলা জীব (যাহা জড় নয়, অর্থাৎ উদ্ভিদ ও প্রাণীকূল) দের খেয়ে জীবনধারণ ছাড়া উপায় নেই । বিধাতা আমাদের ক্লোরোফিল যুক্ত চামড়া দেননি, সালোকসংশ্লেষের ক্ষমতাও দেন নি । তাই আমাদের জীবসেবা দেখাতে গেলে একেবারে নিরালম্ব উপবাস করে চলতে হবে (জল ও খাওয়া চলবেনা, কারণ জলে কত অবলা অসহায় ব্যাক্টিরিয়া আছে বলুন তো !!!) । এছাড়া চলাফেরাও করা যাবেনা একজায়গায় চুপটি করে বসে থাকতে হবে (চলাফেরার সময় কত অবলা কীট, আমাদের পদপীষ্ট হয়ে দেহত্যাগ করে !!!) যতক্ষণ না আমরা নিজেরাই জীব থেকে জড়ে পরিণত হই । তাই ঠিকই বলেছেন আমাদের প্রাথমিক ভাবে উল্টোপাল্টা কমিটমেন্ট না করে ক্লিয়ারলি “মানবসেবার” ব্যাপারে লক্ষ্য দিতে হবে ।
বিঃদ্রঃ — এর পরে আবার কেউ এই “শিবজ্ঞানে জীবসেবা” কথাটির “শিব” কথাটি সাম্প্রদায়িক এই বলে আপত্তি তুলতেই পারেন তাই আমি আগাম আমার তরফ থেকে এবং শ্রী শ্রী রামকৃষ্ণ – বিবেকানন্দের তরফে ক্ষমা চেয়ে সংশোধন করে দিয়ে নতুন করে কথাটি লিখলাম — “সর্বশক্তিমান জ্ঞানে মানব সেবা”
ওহো দেখেছেন !!! “সর্বশক্তিমান” কথাটায় অনেকে আবার পুঁজিপতি (“শক্তির উৎস বন্দুকের নল” ইত্যাদি অনুসারে) ফ্যাসিস্ট মনোভাব দেখতে পেতে পারেন । সরি দাদা ভুল হয়ে গেছে । আমার পক্ষে আর নতুন কিছু কথা বার করা সম্ভব হচ্ছেনা । আপনারা বরং ঐ “শিবজ্ঞানে জীবসেবা” কথাটার জায়গায় নিজেদের বুদ্ধিমত্তা অনুসারে বোঝার মত কথা বসিয়ে নেবেন ।
নমস্কার
@শতদ্রু ব্যানার্জ্জী,
//কথাটি্র ভাবপ্রকাশের ক্ষেত্রে ব্যাকরণ গত ভাবে ভুল হয়েছে স্বীকার করছি //
হ্যা. হ্যা. এটা ব্যাকরনগত ভুল?? 🙂
//কারণ বস্তুতঃই আমাদের পক্ষে অসহায় অবলা জীব (যাহা জড় নয়, অর্থাৎ উদ্ভিদ ও প্রাণীকূল) দের খেয়ে জীবনধারণ ছাড়া উপায় নেই । বিধাতা আমাদের ক্লোরোফিল যুক্ত চামড়া দেননি, সালোকসংশ্লেষের ক্ষমতাও দেন নি । তাই আমাদের জীবসেবা দেখাতে গেলে একেবারে নিরালম্ব উপবাস করে চলতে হবে (জল ও খাওয়া চলবেনা, কারণ জলে কত অবলা অসহায় ব্যাক্টিরিয়া আছে বলুন তো !!!) । এছাড়া চলাফেরাও করা যাবেনা একজায়গায় চুপটি করে বসে থাকতে হবে (চলাফেরার সময় কত অবলা কীট, আমাদের পদপীষ্ট হয়ে দেহত্যাগ করে !!!) যতক্ষণ না আমরা নিজেরাই জীব থেকে জড়ে পরিণত হই । //
এবিষয়ে আসলে অনেক লজিক দেখানো যাবে, ব্যক্টেরিয়া/উদ্ভিদ ও প্রাণী এক কথা নয়। ব্যাক্টেরিয়া/উদ্ভিদের প্রাণীদের মতো আত্মচেতনা ও আত্মানুভূতি নেই।
আমরা ক্ষুদ্রমতি সাধারন মানুষ। আমরা হয়ত সবজীবকে সেবা করার মতো মানসিকতা নাও দেখাতে পারি। অবশ্য এই সাধারন মানুষদের মধ্যেও অনেকেরই সবজীবকে সেবা করার প্রবনতা আছে , যেটা আপনার মহান রামকৃষ্ণদেবের ছিল না। একটু বলবেন উনি কেন শুধু মানব সেবা করতে বললেন? হিন্দুধর্মের পুনর্জন্মে তো উনি নিশ্চয় বিশ্বাস করতেন। তাহলে একজন মানুষ তো পরজন্মে একটি ছাগলও হতে পারে। তাহলে উনি একজন মানুষকে কি করে খেতে পারেন?
@রনবীর সরকার,
আচ্ছা দাদা একটু বলবেন আপনার চুলের রঙ সোনালী নয় কেন ? কিম্বা আপনার একটি বৃহৎ লাঙ্গুল নাই কেন ?
আসলে এই সোনালী চুল, কিম্বা বৃহৎ লাঙ্গুল থাকার প্রবণতা কিন্তু অনেক জীব বা মানুষেরই আছে, আপনার নাই কেন বলতে পারেন ?
আপনি বলেছেন —- “অবশ্য এই সাধারন মানুষদের মধ্যেও অনেকেরই সবজীবকে সেবা করার প্রবনতা আছে , যেটা আপনার মহান রামকৃষ্ণদেবের ছিল না। একটু বলবেন উনি কেন শুধু মানব সেবা করতে বললেন? হিন্দুধর্মের পুনর্জন্মে তো উনি নিশ্চয় বিশ্বাস করতেন। তাহলে একজন মানুষ তো পরজন্মে একটি ছাগলও হতে পারে। তাহলে উনি একজন মানুষকে কি করে খেতে পারেন?”
কী অদ্ভুত কথা । ওনার কি ছিলনা, কেন ছিলনা সেটা আমায় জিজ্ঞাসা করছেন কেন ? জানার প্রয়োজন থাকলে হয় নিজে ওনার সম্বন্ধে, ওনার জীবন সম্বন্ধে পড়াশোনা করুন অথবা শর্টকাটে মারতে চাইলে প্ল্যানচেট করুন । আপনার সত্যি জানার ইচ্ছা থাকলে আপনাকে খেটে জানতে হবে । আর এঁড়ে তর্ক করার ইচ্ছা থাকলে আমি কেন, আইনস্টাইন এলেও যুক্তি জিনিসটা আপনার ব্রেণের গ্রে ম্যাটারে সুড়সুড়ি দেওয়াতে পারবে না ।
প্রসঙ্গত বলি আপনার কথা মেনে নিলেও আত্মিক চেতনার দিক থেকে মানুষ অন্যান্য প্রাণীদের থেকে অনেক উপরে । (উদ্ভিদ বা ব্যাক্টেরিয়ার আত্মিক চেতনা নেই কথাটি বৈজ্ঞানিক ভাবে ভুল, ভাবতে সত্যিই লজ্জা করে, আচার্য জগদীশ চন্দ্র বসুর সমমাতৃভাষার কেউ এই কথাটা বলছে এবং নিজেকে যুক্তিবাদী বলে দাবী করছে) উদ্ভিদ বা অন্যান্য প্রাণীর আত্মিক চেতনা মানুষের থেকে অনেক কম । তা আপনি যখন আত্মিক চেতনা কম বলে উদ্ভিদ ইত্যাদি কে বাদই দিলেন তখন বুঝতে হবে যে আপনি আত্মিক চেতনার পরিমাণকে প্রায়োরিটি নির্ধারক মান হিসাবে ধরছেন । সেই দিক থেকে দেখতে গেলে মানুষের প্রায়োরিটি আগে আসছে । অতয়েব মানুষের সেবা আগে করে তারপর সম্ভব হলে অন্যান্য জীবের সেবা করতে হবে । তা দাদা আপনি বেশী নয় আপনার জেলার সব মানুষ বা ছাড়ুন আপনার শহরের সব মানুষকে সেবা করে সুখী করতে পারবেন কী ? আপনি হয়ত পারলেও পারতে পারেন । তবে আমাদের মত “সাধারণ মানুষের” পক্ষে কাজটা অসম্ভব । তাই তার যেটুকু মাত্র পারা যায় সেটুকুতেই আত্মনিয়োগ করার কথা ঠাকুর বলে গেছেন । সেটা করে কমপ্লিট করার পর না হয় বাকী জীবসেবার কথা ভাবা যাবে।
যেকোনো বিষয়ে লজিক নিয়ে কথা বলাটাই মনে হয় যুক্তিবাদ বা মুক্তমনের পরিচয় । “এ বিষয়ে অনেক লজিক দেখানো যেতে পারে” বলে লজিকটাকে এড়িয়ে যাওয়া ঠিক কিসের পরিচয় আমার জানা নাই । বিভিন্ন বিষয়ে যেমন নানা লজিক থাকতে পারে তেমনি অনেকে আবার ইল্লজিকাল অপ্রাসঙ্গিক কথা বলে তাঁদের প্রতি করা প্রশ্ন গুলি কাপুরুষের মত এড়িয়ে যেতে পারেন ।
অতীব দুঃখের বিষয়, মুক্তমনা একটি চমৎকার যুক্তিবাদ ভিত্তিক ওয়েবসাইট হওয়া সত্ত্বেও পার্মানেন্ট মেম্বারশীপের স্বীকৃতি শুধু কমেন্টের সংখ্যার উপরই নির্ভরশীল । গুণগত মানের উপর মনে হয় নয় ।
অসাধারণ একটি লেখা. এই লেখাটা তৈরি করা হয়েছে স্বারুপানান্দের লেখা রামকৃষ্ণের জীবনী ও বাণী থেকে. কয়েকটা ঘটনার উল্লেখ আছে.
১) রামকৃষ্ণের জন্ম.
২) রামকৃষ্ণের বর্ণ বিদ্বেষ.
৩) রামকৃষ্ণের দরিদ্র সেবা.
৪) অন্য কর্মের প্রতি রামকৃষ্ণের বিদ্বেষ.
৫) রামকৃষ্ণের হিস্টিরিয়া রোগ.
৬) রামকৃষ্ণের হরমনের সমস্যা.
৭) অন্য ধর্মের আন্দোলনের প্রতি রামকৃষ্ণের দৃষ্টিভঙ্গি.
এগুলির কোনটাই সভ্য সমাজে গ্রহনীয় হতে পারে না. তবে যখন তখন অজ্ঞান হয়ে যাবার ব্যাপারটাকে হিস্টিরিয়ার চেয়ে ফিটের ব্যামো বললে বোধহয় কারো আপত্তি থাকবে না.
রামকৃষ্ণের চরিত্রের এই দিকগুলি তুলে ধরার জন্যে লেখককে আন্তরিক ধন্যবাদ.
@অতিথি লেখক,
“যখন তখন অজ্ঞান হয়ে যাবার ব্যাপারটাকে হিস্টিরিয়ার চেয়ে ফিটের ব্যামো বললে বোধহয় কারো আপত্তি থাকবে না” ।
“রামকৃষ্ণের হরমনের সমস্যা”।
অসাধারণ । কী ভালো ডাক্তার । ২০১৪ তে দাড়িয়ে ১৮৮৬ সালের আগের রোগ ধরে দিচ্ছেন, তাও রোগীকে না দেখে । আপনি তো ডাক্তার বিধান চন্দ্র রায়-কে ও টপকে যাবেন ।
আপনি কী কাওকে দেখেছেন যে ফিট হয়ে বসে রয়েছেন এবং তিনি হাসছেন ?
“এগুলির কোনটাই সভ্য সমাজে গ্রহনীয় হতে পারে না” ।
তাহলে মথুরানাথ বিশ্বাস, অধরলাল সেন, মহেন্দ্রনাথ গুপ্ত, স্বামী বিবেকানন্দ, স্বামী ব্রম্ভানন্দ, কেশবচন্দ্র সেন, রামচন্দ্র দত্ত, বিদ্যাসাগর, স্বামী বিজ্ঞানানন্দ, শম্ভুচরণ মল্লিক, বলরাম বসু, সুরেন্দ্রনাথ মিত্র, মনোমোহন মিত্র (আর আছেন, দরকার পড়লে তাদের নাম উল্লেখ করবো) এনারা আপনার কাছে কোন সমাজের মধ্যে পড়ছেন ?
ভালো করে কথাম্ ত পরার চেষ্ঠা করুন….যদি সত্যই সদিচ্ছা থাকে …কামনা – বাসনা – লালসা আমাদেরকে সুখ – দুঃখের তারনায় ছারখার করে দিচ্ছে….. যদি শান্তি চান সবাই কথাম্ ত পরুন ………
যুক্তি অবশ্যই দরকার…কিন্তু তা দিয়েও বেশী দূর এগোন যাচ্ছে না…….তখন প্রমান দরকার…….মিষ্টি খেয়েই ঠিক উপলব্ধি করা যায় ..কতটা মিষ্টি …. তারপর কি দরকার ঠিক উপলব্ধির জন্য…কথাম্ ত পরুন
আল পটকা মন্তব্য যুক্তি পেশ করার জন্য আপনাকে শুভেচ্ছা………….
@subha jit,
আপনি কী ভালোমতো আমার লেখাটি পড়েছেন, তাহলে বলতেন না কথামৃত পড়ুন । আগে আমার লেখাটি ভালো করে পড়ুন । আমি নিজেও রামকৃষ্ণদেব -র পক্ষে । অতএব আপনার লেখাটি যুক্তিহীন ।
আমি নিজে কথামৃত, লীলাপ্রসঙ্গ, রামকৃষ্ণ ভক্তমণ্ডলী ইত্যাদি বইগুলি ভালোভাবে পড়েছি । এছাড়া দক্ষিণেশ্বর মন্দির কতৃক প্রকাশিত মাতৃশক্তি ম্যাগাজিন, উদ্বোধন ম্যাগাজিন নিয়মিত পড়ি ।
আপনি লিখেছেন “আল পটকা মন্তব্য যুক্তি পেশ করার জন্য আপনাকে শুভেচ্ছা………….” । কোনটি আলটপকা মন্তব্য সেটা বলবেন কী ?
যেহেতু আপনি রামকৃষ্ণদেব -র পক্ষে লিখেছেন তাই বেশি কিছু লিখলাম না ।
নমস্কার করি, শ্রী রামকৃষ্ণ, মা, স্বামীজির চরণে পরনাম জানাই।
অসাধারণ একটা লেখা পড়লাম এবং ঘটনাবলী নিয়ে যে ভাবে এই অপূর্ব
সুন্দর করে গুছিয়ে লিখেছেন তার জন্য ধন্যবাদ আপনাকে।
সুমিত বাবু এবং তার সমর্থকরা কী উত্তর দেওয়া বন্ধ করে দিয়েছেন ?
সুমিত বাবু, রামকৃষ্ণ দেব এর সম্বন্ধে উল্টোপাল্টা লেখার আগে তার বিষয়ে লেখা সমকালীন বই গুলি পড়ে দেখা দরকার ছিল । কোনও মানুষকে চট করে নিচ করে দেখানো যায় আর কেউ কেউ হইত তাকে না বুঝেই সমর্থন করেন । তবে এটা সঠিক পন্থা নয় । এই ভাবে কোনও মানুষকে নিচ দেখিয়ে আপনার লাভ কী জানি না, তবে আপনার উদ্দেশ সম্বন্ধে আমার সন্দেহ রযেছে ।
আপনি কী মনে করেন তাকে সেসময় যারা সমর্থন করেছিলেন বা এখনো করছেন তারা সবাই আপনার আমার মত সাধারণ মানুষ ? তাছাড়া একটা প্রবাদ বাক্য তো নিশ্চই আপনার জানা আছে সকল মানুষকে সবসময় বোকা বানানো যায় না, তাহলে আপনারা এরকম লেখা পোস্ট করেন কী ভাবে ?
আর বলছেন বিবেকানন্দের জন্য তিনি বিখ্যাত হয়েছেন , আপনি কী জানেন কার কাছ থেকে বিবেকানন্দ রামকৃষ্ণ-এর নাম শুনেছিলেন । আগে সেটা জানুন ……
শ্রীমান সুমিত দেবনাথ সোজাসুজি আপনার লেখার উদ্দেশ্য সম্পর্কে বলা যায় সত্যাশ্রিত ও মঙ্গল জনক নয়। ধর্মের বোধ মানুষকে সুপথে চালিত করে। প্রাচীন তম সংবিধান প্রণেতা মনুর মতে — সেই রাজা সুখি যার প্রজারা শিক্ষিত(ধার্মিক) । কুপের ধারে গরু চরতে দেখলে প্রাচীন কাল থেকেই মানুষ গরুটিকে দুরে সরিয়ে দিতে দেরি করত না — এটা পাণীনিও দেখে ছেন (কুপাত্ গাং বারয়) লাভ হাণী প্রয়োজন অপ্রয়োজন সব কথা ছাড়িয়ে ধর্মের বোধ মানুষকে একাজে চালিত করেছে । শঙ্করাচার্য্য বালক বয়সে দেখে ছিল চোর ব্রাহ্মণের বস্ত্র লঙ্ঘন করে যেতে পারছে না, কারন ধর্মের বোধ। সেই বোধে কুঠারাঘাত করার আগে শুন্যস্থান কি দিয়ে পুরন করবেন তা বলুন। রাম রাবণকে মারার আগেই বিভিষণের অভিষেক করে ছিলেন।
@প্রণব বর,
প্রনব বাবু, আমার মনে হয় আপনি হয় “ধর্ম” কথার অর্থটিকে খুবই বিস্তারিত ( Wide) অর্থে অথবা খুবই সঙ্কুচিত (narrow) অর্থে ব্যবহার করছেন। আপনি যে অর্থে বলেছেন সেটি আপনার প্রথম উদাহরণ থেকে মানে দাঁড়ায় (কুপের ধারে গরু চরতে দেখলে প্রাচীন কাল থেকেই মানুষ গরুটিকে দুরে সরিয়ে দিতে দেরি করত না) “Logic বা যুক্তি বোধ ” কিন্তু দ্বিতীয় উদাহরণ থেকে মানে দাঁড়ায় “ভয় বোধ”। তাই আগে ধর্ম কি সেটা পরিষ্কার ভাবে সংজ্ঞায়িত করুন।
আপনার প্রথম অর্থটিকে নিলে নিজেই রামকৃষ্ণ দেবের কাজ কর্মের সঠিক মুল্যায়ন করতে পারবেন যেমন লেখক করেছেন। আর যদি দ্বিতীয় অর্থটি নেন তাহলে আপনি সত্যি খুঁজে পাবেন না যে ধর্ম না থাকলে তার শূন্য স্থান কে পুরন করবে। আর এই রকম মন্তব্য করেই চলবেন।
আমার উত্তর হল আপনি ধর্ম কথাটির দ্বিতীয় অর্থটি অভ্যাস ( Practice or Exercise) করার থেকে প্রথম অর্থটি অভ্যাস করলেই সমস্ত সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে।
@সন্দীপন,
রামকৃষ্ণ দেবের কাজ কর্মের সঠিক মুল্যায়ন করতে গেলে আগে তত্কালীন লেখকদের বইগুলি পড়ে নেবেন । না হলে রামকৃষ্ণ সম্পর্কে যে যা বোঝাবে আপনি তাই বুঝবেন ।
“ধর্ম” কথার বিস্তারিত ( Wide) অর্থ বলতে আপনি কী বোঝেন সেটা জানতে চাই ।
আর যেটা বলছেন “ভয় বোধ” সেটা “ভয় বোধ” নয়। ধর্ম কিভাবে মানুষকে সুপথে চালিত করে তাই বলেই মনে হয় ।
জগতে এমন অনেক কিছুই আছে যা আমার আপনার উপলব্ধির বাইরে ।আমরা যা বুঝিনা তার কি অস্তিত্ব নাই ? বিবেকানন্দের রামকৃষ্ণকে বোঝার ক্ষমতা কি আমাদের থেকেও কম , নাকি সব বুঝেও তিনি চুপ থেকে একটা মিথ্যাচরন করেছেন ?
সুমিত,
আপনি কি রামকৃষ্ণের কথামৃত বইটা পড়েছেন ?
খুবই ভাল লেখা। আমাদের সবার খুব কাজেও লাগবে। ধন্যবাদ সুমিত দেবনাথ কে এবং মুক্তমনা কে।
@বিপ্লব দাস, মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ বিপ্লব দা।
লেখাটা নিয়ে অনেক কথা ইতোমধ্যেই বলা হয়ে গেছে। অনেকেই বিবেকানন্দকে নিয়ে আমার আগেকার লেখাটির লিঙ্ক দিয়েছেন, যেটিতে আমি রামকৃষ্ণের কিছু অমিয় বাণী তার কথামৃত হতে উদ্ধৃত করেছিলাম –
আমি আনন্দিত যে বিভিন্ন খ্যাতনামা ব্যক্তিত্বদের ব্যাপারে নির্মোহ এবং সংশয়ী দৃষ্টি : মুক্তমনের আলোয় বিভাগটি ক্রমশঃ পরিপূর্ণ হয়ে উঠছে। সুমিত দেবনাথকে চমৎকার লেখাটির জন্য ধন্যবাদ।
@অভিজিৎ, ধন্যবাদ অভিজিৎদা আপনার সুন্দর মন্তব্যের জন্য। আপনার লেখাটি এখানে পাওয়া লিংক থেকে পড়েছি। আপনার লেখাটি দারুন তথ্যবহুল, মুক্তমনার জন্য এটা একটা অমূল্য সম্পদ।
পারি না অভিজিৎ দা, এইসব বোজরুকি দেখে চুপ থাকতে পারি না। চুপ থেকেই সমাজের স্রোতে মিশে যেতে চেষ্টা করি তা আমার দ্বারা বোধ হয় সম্ভব হবে না।
কাজি নজরুল ইসলামের কবিতার কয়েকটি লাইন খুব মনে পড়ে –
বন্ধু গো,আর পারি না বলিতে , বড় বিষ-জ্বালা এই বুকে!
দেখিয়া শুনিয়া ক্ষেপিয়া গিয়াছি, তাই যাহা আসে কই মুখে।
রক্ত ঝরাতে পারি না ত একা,
তাই লিখে যাই এ রক্ত-লেখা,
প্রার্থনা ক’রো যারা কেড়ে খায় তেত্রিশ কোটি মুখের গ্রাস,
যেন লেখা হয় আমার রক্ত-লেখায় তাদের সর্বনাশ!
@অভিজিৎ,
উপরের কথাগুলি রামকৃষ্ণ কোন পরিস্থিতিতে বলেছিলেন, কাদের বলেছিলেন তা যদি লিখতেন তাহলে সকলে বুঝতে পারতেন আপনি কোন ভুলপথের দিকে সকলকে নিয়ে যেতে চাইছেন।
@সৌরভ চৌধুরী,
কথা না বাড়িয়ে কন সূত্রে রামকৃষ্ণ এগুলো বলেছিলেন লিখে দিন ত!!!
কথামৃত আমারো একটু আধটু পড়া আছে। আর সেটা না পাড়লে চেপে যান মশাই। লোকে হাসবে!
@বিপ্লব পাল,
রামকৃষ্ণ কথা গুলি বলেছিলেন তার ত্যাগী ভক্তদের উদ্দেশে ।
কথায় আছে অল্প বিদ্যা ভয়ঙ্করী । একটু আধটু কথামৃত পড়া হলে হবে ? ভাল করে নিজেই পড়ে নিন । এত লিখতে পারছেন আর পুরো কথামৃত পড়তে গেলেই যত কষ্ট ? এর সঙ্গে রামকৃষ্ণ লীলাপ্রসঙ্গ, ভক্ত মালিকা বইগুলি পড়ে দেখবেন।
আর লোকে হাসবে বলছেন, সেটা তো আপনাদের লেখা পড়ে ই হাসবে ।
একটা ভালো মানুষকে নিচ দেখিয়ে কী আনন্দ বুঝি না ?
@বিপ্লব পাল,
রামকৃষ্ণ কথাগুলি বলেছিলেন তার ত্যাগী ভক্তদের উদ্দেশে ।
কথায় আছে অল্প বিদ্যা ভয়ঙ্করী । একটু আধটু কথামৃত পড়া হলে হবে । এত কথা লিখতে পারছেন, আর পড়তে গেলেই যত কষ্ট? শুধু কথামৃত পড়লে হবে, এর সঙ্গে লীলাপ্রসঙ্গ, ভক্তমালিকা বইগুলি পড়ে দেখবেন।
আর লোকে হাসবে বলছেন, সেতো আপনার লেখা পড়ে, না বুঝে লিখে যাচ্ছেন।
একটা ভালো মানুষকে নিচ দেখিয়ে কী আনন্দ বুঝি না?
@সৌরভ চৌধুরী,
আপনার কি ঘটে এটুকু আছে বোঝার জন্য যে উনি যে কথাগুলি বলেছেন তা নারী বিদ্বেশী? উনি বলতেই পারতেন বৈরাগ্যের জন্য নারী সঙ্গ ত্যাগ করতে হবে। কিন্ত “নারী বাজে” ফাঁসানো টাইপের তাই নারী সঙ্গ ত্যাগ করতে হবে, তা কিন্ত মিসোগাইনিস্ট বক্তব্য।
তা নারীটির নাম যদি ভগিনী নিবেদিতা বা মাদার টেরেসা হয়, তাহলেও কি রামকৃষ্ণ একই কথা বলতেন?
@বিপ্লব পাল,
রামকৃষ্ণদেব -এর পরিস্থিতি অনুযায়ী, ভক্ত অনুসারে কিরকম ভাবে তার উপদেশ দিতেন তার বিবরণ দিচ্ছি:-
ত্যাগী সন্ন্যাসী ভক্তদের উদ্দেশে বলেছেন :-
১) “সন্ন্যাসীর পক্ষে কামিনী কাঞ্চন ত্যাগ । সন্ন্যাসী স্ত্রীলোকের পট পর্যন্ত দেখবে না। স্ত্রীলোক কেমন জানো, – যেমন আচার তেতুল; মনে পড়লে মুখে জল সরে, সামনে আনতে হয় না । ”
২) “সন্ন্যাসীরা যে সংসার একবার ত্যাগ করেছে, আর তাতে প্রবেশ করবে না । যে থুথু একবার ফেলা হয়েছে, আবার তাহা খাওয়া উচিত নয় । ”
৩) “সন্ন্যাসী বা ত্যাগী হলে অর্থউপার্জন কী কামিনী সহবাস করা দূরে থাক, যদি হাজার বত্সর সন্ন্যাসের পর, স্বপ্নেও কামিনী সহবাস হচ্ছে বলে জ্ঞান হয় ও ………..হয়, অথবা অর্থের দিকে আসক্তি জন্মে, তা হলে অতদিনের সাধনা তত্ক্ষনাত্ নষ্ট হয়ে যায়”।
সংসারী ভক্তদের উদ্দেশে বলেছেন :-
১) “সংসারে থাকলে বিবাহ করা উচিত। দশবিধ সংস্কারের মধে বিবাহ ও একটি সংস্কার। ”
২) “যত স্ত্রীলোক সব শক্তিরুপা। সেই আদ্যাশক্তিই স্ত্রী হয়ে, স্ত্রী রূপ ধরে রয়েছেন।”
৩) ” জলে নৌকা থাকে ক্ষতি নাই, কিন্তু নৌকায় জল না থাকে, সংসারে থাকো ক্ষতি নাই, কিন্তু তোমার ভিতরে যেন সংসার না থাকে।”
রামকৃষ্ণদেব-এর মহিলা ভক্তদের কতগুলি নাম উল্লেখ করছি- রানী রাসমণি, যোগিন মা, গোলাপ মা, গৌরী মা, লক্ষ্মী দিদি ………… ।
এর থেকেই বোঝা যাচ্ছে আপনি যেটা বলছেন – ” “নারী বাজে” ফাঁসানো টাইপের তাই নারী সঙ্গ ত্যাগ করতে হবে” সেটা কতখানি ভুল ।
আগে নিজে ভাল করে বই পড়ে নিজের ঘটে জ্ঞান বাড়ান, তারপর বিরুদ্ধে লিখবেন, পরের মুখে ঝাল খাবেন না।
বিবেকানন্দ কেন রামকৃষ্ণদেব-কে অবতার বরিষ্ঠ বলেছেন আগে সেটা জানুন, তারপর মিসোগাইনিস্ট বক্তব্য না ফেমিনিষ্ট বক্তব্য এসব লিখবেন ।
সলিড
বিবেকানন্দ কিছু করেছেন-রামকৃষ্ণ একদম কিছু না করে শুধু পাগলামো করেই বিবেকানন্দের দৌলতে নাম ডাক করেছেন।
তবে রামকৃষ্ণর নেম টু ফেম- কথামৃত। বইটির সাহিত্যমূল্য অনেক বলেই আমি মনে করি।
আসলে জীবনের যেহেতু কোন পরম উদ্দেশ্য নেই -যুক্তিহীন ভাববাদে গদগদে হয়ে কাটাতে অনেকেই ভালবাসেন। আমি অনেককেই বলেছি-এর থেকে নিজের উপায় বাড়াতে, ছেলের শিক্ষায় মন দিন। এই শ্রেনীর অনেকের কাছে রামকৃষ্ণ পরম গ্রহনীয়। কারন যুক্তির বাইরে, শুধু ভালোবেসে বা অঈ জাতীয় ভাববাদ দ্বারা মোহবিষ্ট হয়ে যে আনন্দে থাকা যায়, সেটাই রামকৃষ্ণ দেখিয়েছিলেন। মদ খেয়ে লোকে বাস্তব ভুলে মনের আনন্দে থাকে-আবার ভক্তিবাদে গদগদে হয়েও লোকে বাস্তব ভুলে মহানন্দে থাকে। মাতাল হওয়া দোষের না হলে, ইহাও দোষনীয় না। শুধু ইহা মাতলামো ব্যাতীত কিছুই নহে। অতিরিক্ত মদ্যপান যেমন ক্ষতিকর-অরিরিক্ত ধর্মানুভূতিও তাই। আবার লিমিটের মধ্যে থাকলে মদ্যপানে দোষ নেই-তেমন বাড়াবারি না করলে, ভক্তিবাদ ও নির্দোষ।
@বিপ্লব পাল,আপনার মন্তব্য দেখে অশেষ খুশি হয়েছি। এবং মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদও জানাচ্ছি।
সাহিত্য মূল্য বেশী থাকতেই পারে। যেমন মহাভারতের কাব্যিক গুন নিয়ে আমার কোন সন্দেহ নেই। কিন্তু মহাভারতের চরিত্রগুলিকে আমি কোনদিন বাস্তব ভাবতে পারি না। এর কোন ঐতিহাসিক ভিত্তি নেই। কিন্তু ভারতের অধিকাংশ লোক আজও এই চরিত্রগুলিকে কাল্পনিক ভাবতে পারে না। এটা কি হওয়া কাম্য? না কি এই অন্ধ বিশ্বাস থেকে বেরিয়ে এসে বাস্তবটাকে মনে নেওয়াটাই কাম্য?
রামায়নের এক কাল্পনিক নায়ককে বাস্তবে এনে তো এক হিন্দুবাদী দল ভারতের ক্ষমতায়ই বসে যায়। আর হিন্দুবাদী সংগঠনগুলি তো এই কাল্পনিক নায়ককে প্রতিষ্টা করতে কামানই দেগে ফেলে। দেখুন মানুষের অন্ধত্ব কোন পর্যায়ে – এই কাল্পনিক নায়কই তাদের কাছে সব কিছু, বাস্তব মানব সমাজকেও এই ক্ষেত্রে তারা তুচ্ছ মনে করে। ভারতের ৮০% শতাংশ মানুষের যে নিদারুন অবস্থা সেই ব্যাপারে তারা কতটুকু সচেতন?
মদ্যপান একদম না করলেও আমরা বেঁচে থাকতে পারি। মদ্যপান জীবনের জন্য অপরিহার্য নয়, তেমনি ভাববাদ ছাড়াও বোধ হয় আমরা বেঁচে থাকতে পারব। তাই নয় কি?
ঐতিহাসিক নয়।কিন্তু বাস্তব।মহাভারত যে আজও প্রাসঙ্গিক। যাহা নাই ভারতে তাহা নাই ভারতে।শুনেছেন কথাটা??
@বিপ্লব পাল,
রানী রাসমনি, মথুরানাথ বিশ্বাস, অধরলাল সেন, মহেন্দ্রনাথ গুপ্ত, স্বামী বিবেকানন্দ, স্বামী ব্রম্ভানন্দ, কেশবচন্দ্র সেন এনারা তাহলে বলতে চাইছেন একজন পাগল-কে সমর্থন করেছিলেন।
আপনি কী জানেন বিবেকানন্দ কার কাছ থেকে প্রথম রামকৃষ্ণর নাম শুনেছিলেন । আগে সেটা জানুন । আপনি বোধ হয় এটাও জানেন না বিবেকানন্দ-র আগে কেশবচন্দ্র সেন রামকৃষ্ণ-র নাম প্রচার করেছিলেন।
একটা পাগলের জন্য কেউ এমনি এমনি একটা বই লিখে দিল, এটা কী বিশ্বাসযোগ্য?
মশাই , ছোট মুখে একটা কথা বলি ক্ষমা করবেন। জীবনের লক্ষ কি ? আপনি সারাজীবন জ্ঞান অর্জন করলেন.. ভালো কথা । আপনার অর্জিত জ্ঞান যদি আপনার মনকে খুশি তে রাখে আনন্দে রাখে তাহলে ঠিক আছে। যদি এমন একটা জিনিস পাই , যা পেলে সারাজীবন সব কিছু ভুলে আনন্দে থাকা যায় , কেন থাকবোনা? সিম্পল ব্যাপার তো।
আমার রামকৃষ্ণের কথা শুনলে মনে পরে সারদা দেবীর কথা । ওনার মত দুঃখী মানুষ মনে হয় পৃথিবীতে খুব কম আছে । আধাপাগল স্বামীর ঘর করতে হয়েছে আর তার মৃত্যুর পরও তার জীবন খুব একটা ভাল হয় নি। আমার ছোট বোনের জন্য বাবা একটা কালারড বই এনেছিল সারদা দেবীকে নিয়ে। যদি চিনি দিয়ে মিষ্টি করতে চেয়েছিল কাহিনী, তবুও এতটা ডিপ্রেসিং কাহিনী খুব কমই পড়েছি। রামকৃষ্ণের কাহিনী সারদার দুঃক্ষের কাহিনী।
@আধ্যাত্মিক, সারদা দেবী কতটুকু দু:খেছিলেন নাকি ভাবে গদগদ ছিলেন জানি না। কিন্তু এই মানসিক রোগীকে তিনি সুস্থ করার চেষ্টা করেন নি বা উনার সঙ্গে বিচ্ছেদও ঘটান নি।
হয়ত বা ‘স্বামীই পরমগুরু’ এই ভাবই উনাকে বিচ্ছেদ ঘটাতে দেয় নি।
@সুমিত দেবনাথ,
কিছুটাতো অবশ্যই দুঃখী ছিলেন। আর ব্রাহ্মণ স্বামী থেকে বিবাহ বিচ্ছেদ ?? রামকৃষ্ণের দিনে হিন্দু পরিবারে বিবাহ বিচ্ছেদ কল্পনা করা যায় না। এখনকার সময় কতটা গ্রহনযোগ্য, বিবাহ বিচ্ছেদ তা জানি না কিন্তু তখন প্রায় অসম্ভবই ছিল। তাছাড়া সারদা দেবী হয়ত তার নয়তি কে মেনে নিয়েছিলেন, যেহেতু তাকে সবজায়গায় ধার্মিক স্ত্রী হিসেবে বলা হয়। কিন্তু এখনকার দিনে তার দিকে তাকালে দুঃক্ষই হয়।
কী দিন পড়েছে যে একটা পাগলের প্রলাপ নিয়েও এখন গবেষনা করতে হয়…!!!
@থাবা, বেশিরভাগ মানুষ যখন পাগলদের নিয়ে মেতে উঠে তখন এদের নিয়ে গবেষণা করতেই হয়। কারণ আমিও তো এই সমাজের একজন। 🙁
ধর্ম নিয়ে কারো সাথে দু-লাইন কথা বললেই বোঝা যায় কে কোন লেভেলের বেকুব, মজা পাই তখন বেশ, বুঝতে পারি কতটা অন্ধকারে ডুবে আছে এই সব মানুষেরা। আপনার উপর আক্রমনটা কি শুধু ভাষাগত পর্যায়েই সীমাবদ্ধ ছিলো নাকি শারিরীক পর্যায়ে ও গিয়েছিলো!
@গরীব মানুষ,হ্যাঁ আপনি বেকুবদের সাথে মজা পান আর আর আমি যখন এদের সঙ্গে কথাবলি তখন এদের অন্ধত্ব দেখে নিজেই বেকুব হয়ে যাই।
না, শুধুমাত্র ভাষাগত দিক দিয়েই আক্রমনটা হয়েছিল।
রামকৃষ্ণের কালী কিন্তু শুধু কল্যানময়ী নন। উনি একই সাথে প্রলয়রূপী। অন্তত ঈশ্বর বলে কেউ থাকলে তার রূপটা যে শুধু কল্যাণের নয় সেটা অন্তত রামকৃষ্ণ বুঝতে পেরেছিলেন। এজন্য তিনি অবশ্যই বাহবা পেতে পারেন। (কথামৃতে এরকম অনেক কথা আছে এই মূহুর্তে সঠিকভাবে একটাও মনে পরছে না। 🙁 তাই রেফারেন্স দিতে পারছি না)
সাঁই বাবারে নিয়া লেখা চাই। ভারতে সাঈ বাবা মনে হয় ঈশ্বরের ও উপরে শুনছি। মন্ত্রী, মিনিস্টার, আম-কাঠাঁল জনতা বাবার অলৌকিক কর্মকান্ডে হতবাক। তাই কালী এই ভয়াভহ চেহারা নিয়াও প্রভাব বিস্তার করতে পারে নাই। আওবশ্য এইখানে রেসিজম ও হইতে পারে কালী মনে হয় বাঙ্গালী বইলা হয়ত এতো পাত্তা পাই নাই। :-X 😛 😉
@অগ্নি, ভারতে সাঁইকে নিয়ে যথেষ্ট আলোচনা হচ্ছে। সময় সুযোগ করে লেখা দেওয়ার চেষ্টা করব। তবে এই দায়িত্ব যদি মুক্তমনার অন্য কোন লেখক নেন তবে আরও ভাল হবে। কারণ আমার থেকে অনেক অনেক জ্ঞানী লোক এখানে আছেন।
শুধু এদের প্রভু হয়ে থাকতে চাই।
@কামরুল আলম, মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ। তবে এত ভাগে না করে একত্রে মন্তব্য করলে ভাল হত।
এটা আমার জব্বর লাগছে-
এটাই আসল কথা।
হায়রে মানব মুক্তির পথ পদরশক……
দেখা যাচ্ছে যে যুগে যুগে জারজ গুলোই মানুষকে সবচেয়ে বেশী প্রভাবিত করত । তাহলে জারজ নিয়ে এত মাথাব্যাথা কেন?
যারা ডক্টরেট ডিগ্রি পায় তারা সবচেয়ে জ্ঞানী , তাই না ???
আবুল ফজলের সেই উক্তিতি একটু সংশোধন করতে হলঃ
ডিগ্রি মানেই জ্ঞানী,
ডিগ্রি মানেই বুদ্ধিমান,
ডিগ্রি মানেই বুদ্ধির মুক্তি।
লেখা খুবই ভালো হয়েছে সুমিতদা। এই পরম হাঁসটির আসল রূপ অভিদা বিবেকানন্দকে নিয়ে লেখাটিতেই ফাঁস করে দিয়েছিলেন। তার ছিল চরম নারী বিদ্বেষ। কাল্পনিক মা কালীকে নিয়ে তার ভক্তির সীমা না থাকলেও বাস্তবের নারীদের প্রতি তার কোন ভালো মনোভাব ছিল না। তার একটা অমৃত বচন পড়েছিলাম বাণী চিরন্তনীতে-“মেয়ে মানুষ ভক্তিতে কেঁদে গড়াগড়ি দিলেও তাকে বিশ্বাস করবে না”। বিবাহিত দম্পতিদের তিনি পরামর্শ দিতেন ভাই বোনের মত থাকতে। এগুলি পাগলামি ছাড়া আর কি?বহু যুক্তিবাদী মনমানসিকতার মানুষকে তিনি বিভ্রান্ত করেছিলেন। পুরনো ধর্মীয় কুসংস্কারগুলিকেই তিনি নতুন মোড়কে উপস্থাপন করতেন আর কিছুই না।
@আলোকের অভিযাত্রী, প্রথমে মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ জানাচ্ছি। হিন্দুবাদীরা এইরকমই,এরা একদিকে যেমন নারীকে অদৃশ্য দেবীর আসনে বসিয়ে পুজা করতে পারে। তেমনি বাস্তবে নারীকে পায়ের নীচে ফেলে মাড়াতেও পারে।
জানিনা অভিজিৎ-এর স্ববিরোধী বিবেকানন্দ শিরোনামের লেখাটা পড়েছেন কিনা। মূলতঃ বিবেকানন্দকে নিয়ে লেখা হলেও, রামকৃষ্ণ সম্বন্ধে বেশ ভাল ধারনা দেয়া আছে সেখানে।
@প্রতিফলন, অভিদার লেখা তো আমি সাধারণত মিস করি না। তবে মধ্যে কিছুদিন মুক্তমনায় আসতে পারি নি। তখন বোধ হয় মিস হয়েছে আজই পড়ে নেব। মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।
আলৌকিকতাতে সাঁই বাবার জুড়ি পাওয়া দুষ্কর। সাঁই বাবা এই সব ভৌতিক, অদ্ভুত, এবং তাজ্জবের কর্মকাণ্ড দেখিয়ে শ্রী শ্রী রামকৃষ্ণ পরমহংস দেবকে হার মানিয়ে দিয়েছেন।
সব চাইতে বিষ্ময়কর ব্যাপার হচ্ছে সাঁই বাবার অগুনতি পশ্চিমা স্বেতাঙ্গ মুরীদরাও এই সব অলৌকিক কর্মকাণ্ডে বিশ্বাসী। বিংশ–একবিংশ শতব্দীতে সাঁই বাবার মত ভণ্ড পীর, ফকীর, সাধু…পাওয়া যাবে না, বা এখনও জন্মে নাই।
@আবুল কাশেম, সাই বাবা কিন্তু ভারতের অন্যান্য স্থানে প্রভাব বিস্তার করলেও বাঙ্গালী অঞ্চলগুলিতে তেমন প্রভাব নেই। বাঙ্গালী অঞ্চলে এখনও বিশাল অংশের উপর ছড়িয়ে আছে রামকৃষ্ণের প্রভাব। ভারতে এমন বাঙ্গালী পরিবার বোধ হয় কম আছে যেখানে ‘রামকৃষ্ণের জীবন ও বাণী’ বইখানি পাওয়া যাবে না।
@আবুল কাশেম,
বামাক্ষ্যাপা, ত্রৈলঙ্গস্বামী, রামঠাকুরের মতো সাধকদের অলৌকিকতার কাছে সাইবাবার অলৌকিকতা আসলে কিছুই না। 🙂
শ্রীরামকৃষ্ণের সবচেয়ে বড় অলৌকিকতা বলতে গেলে বলতে হবে নরেন্দ্রনাথকে তার দলে আনা। এই ব্যপারটা আমি এখনো বুঝে উঠতে পারিনা। কারন নরেন্দ্রনাথ কিন্তু কালী বিশ্বাসের ১৮০ ডিগ্রী বিপরীতেই ছিলেন।
অবশ্য ভারতের অন্য সাধকদের তুলনায় শ্রীরামকৃষ্ণের অলৌকিকতার গল্প একটু কমই শোনা যায়। মনে হয় উনার প্রতি মা কালী একটু কমই কৃপা করেছিলেন। 🙂
@রনবীর সরকার,
অলৌকিকতা বলছেন কেন?বলুন সবচেয়ে বড় কৌশল। ছলে বলে কৌশলে প্রতিভাবান মাথাগুলিকে জব্দ করাই ছিল রামকৃষ্ণের বড় কৌশল।
@রনবীর সরকার,
শ্রী শ্রী রামকৃষ্ণ লীলাপ্রসঙ্গ, রামকৃষ্ণ ভক্তমালিকা বই দুটি পড়ুন, অনেক কিছু জানতে পারবেন । অকারণে খুত বের করে লাভ কী ?
@সুমিত, আর একটু বিস্তারিত হলে আরও ভালো হতো। কারণ এইসব বুজুর্গ দের নিয়ে লিখতে হলে এদের কথিত অলৌকিকতাকে যুক্তির টেবিলে উলঙ্গ ব্যাবচ্ছেদ করতে হবে। বলাই বাহুল্য, রামকৃষ্ণ ছিলেন হিস্টিরিয়া রোগী আর পূর্ণ পাগল আর এই পাগলরে নিয়ে শিক্ষিত সমাজে কত মাতামাতি- ভাবতেই মাথায় আগুন জ্বলে।
একটা সিরিজ নামিয়ে ফেলুন না এই রামকৃষ্ণ পাগলটাকে নিয়ে!!!! দারুণ হবে কিন্তু। স্বল্প পরিসরে হলেও লেখাটা ভালো হয়েছে। :guli: :guli:
@আমি আমার, কত মানসিক রোগী যাদের মনরোগ চিকিৎসকের কাছে যাওয়া উচিৎ তারাই হয়ে যান আমাদের বাবাজী, মাতাজী। ভবিয্যতে আরও বিস্তারিত লেখার চেষ্টা করব। মন্তব্যের জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।
@আমি আমার,
রামকৃষ্ণ দেব কে বুজুর্গ, হিস্টিরিয়া রোগী আর পূর্ণ পাগল এইসব বিশেষণে আপনি ভূষিত করেছেন । কিন্তু আপনি কী কোথাও পড়েছেন বা জেনেছেন তিনি টাকার জন্য ধর্মের বাণী প্রচার করেছেন বা নতুন ধর্মমত তৈরী করেছেন। বরং তিনিই প্রথম বললেন “যত মত, তত পথ ” । তাহলে আপনি তাকে বুজুর্গ বললেন কী করে?
রামকৃষ্ণ ছিলেন হিস্টিরিয়া রোগী আর পূর্ণ পাগল । মানুষটি যদি পূর্ণ পাগল ই হতেন তাহলে বলতে হ্য় রানী রাসমনি, মথুরানাথ বিশ্বাস, কেশবচন্দ্র সেন, বিদ্যাসাগর, গিরিশচন্দ্র ঘোষ, অধর সেন, শম্ভুনাথ মল্লিক, বিবেকানন্দ, শ্রী ম , ব্রহ্মানন্দ, স্বামী সারদানন্দ, স্বামী বিজ্ঞানানন্দ (আরো আছেন তাদের নাম উল্লেখ করলাম না, যদি দরকার হ্য় করব) এনারা সকলেই পূর্ণ পাগল ছিলেন ।
রামকৃষ্ণ ছিলেন হিস্টিরিয়া রোগী। এই ডাক্তারী সার্টিফিকেট আপনি কোথায় পেলেন । দেখাতে পারবেন ?
তাছাড়া আপনি বা আপনার মতাদর্শীরা কী অর্থে ওনাকে হিস্টিরিয়া রোগী, পাগল বলছেন তা যদি সঠিক ভাবে বলতে না পারেন তাহলে বলতে হয় আপনি বা আপনারা পূর্ণ পাগল অথবা তোতাপাখি । যার নিজস্ব কোনও চিন্তা ভাবনা বলে কিছু নেই, যা শুনবে তাই বলবে ।
ধর্মীয় বিরিঞ্চিবাবারা এখনও আমাদের সমাজে ভাইরাস ছড়াচ্ছে এবং এতে করে হাজার হাজার হিস্টিরিয়া রোগীর জন্ম হচ্ছে, নিচের ভিডিওটি একটু খেয়াল করুন দেখুন ভন্ডামী কাহাকে বলে!!!-
httpv://www.facebook.com/profile.php?id=1075151172
ছোটবেলা থেকেই রামকৃষ্ণ ছিলেন হিষ্টিরিয়ার রোগী। হঠাৎ হঠাৎ তিনি অজ্ঞান হয়ে পড়তেন। আর এই রোগকে পল্লবিত করতে গিয়ে তার শিষ্যরা বলেন তিনি নাকি মাঝে মধ্যে ভাব সমাধিতে চলে যেতেন।
ধর্মীয় বিরিঞ্চিবাবারা এখনও আমাদের সমাজে ভাইরাস ছড়াচ্ছে এবং এতে করে হাজার হাজার হিস্টিরিয়া রোগীর জন্ম হচ্ছে, নিচের ভিডিওটি একটু খেয়াল করুন দেখুন ভন্ডামী কাহাকে বলে!!!- httpv://www.youtube.com/watch?v=QThu1SHsM_c&feature=share
@জিল্লুর রহমান, ধন্যবাদ ভিডিওটি শেয়ার করার জন্য।
বলতে হবে কেন ,মা কালী কি দেখতে পান না? নাকি গরীবদের দেখলে ওনার দয়া আসে না?
@সন্দীপন, ভগবান দেখতে পারেন না, নিবোর্ধ তাই তো ধর্মগুরু ধরতে হয়। 😀
রামকৃষ্ণ সম্পর্কে যতটুকু পড়েছি তাতে তার বুদ্ধির সীমা নিয়েও আমার মধ্যে সংশয় আছে। আমার ধারণা রামকৃষ্ণ বিখ্যাত হয়েছেন বিবেকানন্দের ঘাড়ে পা রেখে। বিবেকানন্দ তার সাথে না থাকলে তার নাম আজ কেউ মনে রাখত না।
@অভীক, না উনার বুদ্ধি সম্পর্কে আমার কোন সংশয় নেই। যথেষ্ট বুদ্ধিমান ছিল বলেই ভন্ডামী করেও মানুষের মধ্যে প্রভাব বিস্তার করেছিল।
একদম সত্যি।রামকৃষ্ণকে উন্মাদ বৈ কিছু মনে হয় না।ওনার সম্পর্কে আরেকটা কথা বেশ প্রচলিত উনি নাকি অনেক জটিল তত্ব একদম জল্বত তরলং করে বুঝিয়েছেন। আমি তো দেখি যে উনি যেটা বলেছেন সেটা প্রাসঙ্গিক না হলেও মানুষ ওটাকে ঘুরিয়ে প্রাসঙ্গিক করে ফেলছে। টাকা মাটি, মাটি টাকা কিনবা যতমত ততপথ আমার কাছে হাস্যকর মনে হয়, কারণ এই কথা কোনাভাবেই বাস্তব সম্মত নয়। আবার দেখবেন রামকৃষ্ণ মঠ গুলোতে (ঢাকায় কেন্দ্রীয়) উপরে গম্বুজে হিন্দু, মুস্লিম, খ্রিষ্টান…… প্রধান চারটি ধর্মের প্রতীক লাগানো, কি ধরনের ভন্ডামি !! চিন্তা করে দেখেছেন কি ??? সর্বধর্ম সমন্বয়!! হা হা হা। হিন্দু আর কয়েকজন মুসল্মান ছাড়া তাদের যে কেউ চুল দিয়েও গোনে না তারা কি এইটা জানে না 😀 :-s :lotpot:
@অগ্নি, এটাই দু:খের যে সাধারণ মানুষ এই ব্যাপারগুলি বোঝে না। আমাদের দায়িত্ব নিয়ে সাধারণ মানুষের কাছে বোজরুকিগুলি পৌঁছে দিতে হবে। এই ভাবে একদিন সমাজ পরিবর্তন আসবেই। মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।
লেখাটি আরো তথ্য সমৃদ্ধ হতে হবে।। অর্থাৎ আপনি যে রোগ গুলি বলছেন ওগুলো আপনি যেখান থেকে সংগ্রহ করেছেন সেই বই বা তথ্য গুলোর ও উল্লেখ থাকলে ভালো হতো।
ব্রাক্ষ শব্দটা কি ব্রাহ্ম হবে? অভ্রে লিখতে হলে=
ব+র+আ+হ+ম= ব্রাহ্ম হবে।
@আকাশ মালিক, ভূল ধরে দেওয়ার জন্য ধন্যবাদ। ঠিক করে দিয়েছি।
আর বিস্তারিত থাকলে ভাল হইত… তারপর ও পোস্ট এর জন্য :clap
@মোঃ সাব্বির আলম, লেখাটি পড়ার জন্য ধন্যবাদ। সময় সুযোগের অভাবে লেখাটা বড় করতে যাই নি সংক্ষিপ্তভাবে বিষয়বস্তুটা তোলার চেষ্টা করেছি মাত্র।