লিঙ্কঃ হ্যাকারস’ ক্যাম্প (প্রথমার্ধ)
আমাকে যদি জিজ্ঞেস করা হয় অ্যামেরিকায় এসে আমি কি দেখে সবচেয়ে বেশি মুগ্ধ হয়েছি; প্রথমত বলব, ডিস্যাবলদের প্রতি সামাজিক দৃষ্টিভঙ্গি। ডিস্যাবলরা হচ্ছে এখানে হুইল চেয়ারে বসে ঘুরে বেড়ানো ভিআইপি। ক্ষণিকের তরেও তাদেরকে বুঝতে দেয়া হয় না, তারা ডিস্যাবল, তাদের স্বাভাবিকভাবে চলবার ফিরবার ক্ষমতা নেই। আর দ্বিতীয়ত বলবো টাইমিং, সময়ানুবর্তিতা। যখন যেখানে যা শুরু হবার কথা তাই হবে, যখন শেষ হবার কথা ঠিক তখনই শেষ হবে। এসবই হচ্ছে সত্যিকারের অ্যামেরিকান বিউটি। অতএব, বিউটির ধারা অব্যাহত রেখে পূর্বঘোষিত সময়ানুযায়ী সকাল সাড়ে আটটায় ক্লাশ শুরু। চটুল চঞ্চল হাসি হাসি মুখে ইন্সট্রাক্টর শুরু বলতে শুরু করলো, প্লিজ ডোন্ট ড্যু এনিথিং ইল্লিগ্যাল ইন ইওর ক্যারিয়ার; বাট…(নীরবতা)…নাথিং আই উইল শো ইউ টুডে ইজ লিগ্যাল। তুমুল হাসির মধ্য দিয়ে ক্লাশের শুরু।
যেখানটাতে আমাদের ক্লাশ হয়, সেটা আসলে একটা কলেজ। ক্লাশের ফাঁকে দুই ঘন্টা পরপর ব্রেক দেয়া হয়। এ-সময়টাতে কলেজের স্টুডেন্টরা এসে আমাদের জিজ্ঞেস করছে, এই তামাম দুনিয়া এত ভালো ভালো কাজ থাকতে কেন আমরা হ্যাকার হবার মনোবাসনা পোষণ করলাম, ঠিক কিভাবে আমরা হ্যাক্ করি এবং আমাদের জীবন-যাপনইবা কেমন। ভাবখানা এমন যে আমরা অন্য কোনো গ্রহ থেকে এখানে উড়ে চলে এসেছি। প্রশ্নগুলোর জবাবে আমাদের দেয়া সাধারণ উত্তর শুনেও তারা বিস্ময়ে অভিভূত হয়ে যাচ্ছে। আমেরিকানদের কাজই হচ্ছে কারণে-অকারণে বিস্মিত হয়ে যাওয়া, অবাক হয়ে যাওয়া। রাস্তায় দাঁড়িয়ে একদল সাধারণ অ্যামেরিকানকে যদি বলা হয় পৃথিবী সূর্যের চারদিকে ঘোরে, সাথে সাথে দু’একজন অজ্ঞান হয়ে পড়ে যাবে। তারপর অজ্ঞান অবস্থা থেকে উঠে দাঁড়িয়ে বিজ্ঞের মত বলবে, পৃথিবী অবশ্যই ঘোরে, না হলে শুধু শুধু আমি মাথা ঘুরে পড়ে যাব কেন।
তবে ক্লাশ নয়, আসল মজাটা শুরু হয়, হোটেলে ফেরার পর। কেউ কাউকে আগে থেকে চেনে না। একজন আরেকজনকে দেখে শুধু ভাবছে, না-জানি কত বড় হ্যাকার, কত কি-না জানে। নদীর এপার-ওপার টাইপ ব্যাপার-স্যাপার। সে যাই হোক না কেন, সবিশেষ প্রয়োজনে হোটেলের ইন্টারনেটের সাথে যুক্ত হতে গেলেই দেখতে পাওয়া যায়, হোটেলের নেটওয়ার্কের নামে অনেকগুলো নেটওয়ার্ক, দু’একটা বর্ণ একটু এদিক-সেদিক করা। রাত বাড়ার সাথে সাথে কপাল দোষে কোনো রুমে গিয়ে উঁকি দিলে দেখা যায়, বিডিআর বিএসএফ এর মত সতর্ক ভাব ধরে সব যন্ত্রপাতি আর ল্যাপটপ নিয়ে বসে আছে, নেটওয়ার্ক দিয়ে যাওয়া অন্যদের ম্যাসেজ ক্যাপচার করার জন্য, সম্ভব হলে পাসওয়ার্ড। বড়শি হাতে মৎস শিকারী যেমন বসে থাকে, এই বুঝি কোনো বোকা মাছ এসে তার টোপ গিলতে শুরু করলো, তেমন করে বসে আছে আধুনিক এই ডিজিটাল শিকারীর দল।
ওদিকে, চারদিকে আতঙ্ক ছড়িয়ে দিয়ে নিরপরাধ, দুঃখী হোটেলটার কম্পিউটার নিয়ন্ত্রিত ফায়ার এলার্ম বেজে উঠে আহাজারি করতে করতে । নিয়মানুযায়ী এলার্ম বেজে উঠার সাথে সাথে সমস্ত হোটেল খালি করে ফেলা হয়। গোটা রাস্তায় তর্জন-গর্জন করতে করতে ফায়ার সার্ভিসের লালমুখো গাড়ী এসে উপস্থিত হোটেল চত্ত্বরে। ব্যাপক ভাব গাম্ভীর্য নিয়ে ফায়ার সার্ভিসের লোকজন সবকিছু তন্ন তন্ন করে, অবশেষে এলার্ম বেজে উঠার কোনো কারণই খুঁজে পায়না। বীরের মত ত্রাণকর্তা হয়ে হোটেলে প্রবেশ করে, বিড়ালের মত মিউমিউ করে বেরিয়ে যায়। তাও একদিন নয়, দুইদিন নয়, দিন দিন-প্রতিদিন। শুধু হোটেলের আলোকিত চত্ত্বরের এককোণে জমে থাকা গাঢ় অন্ধকারে বীরত্বের ক্রুর হাসি হেসে যায় দু’চারটি তরুণ, সে হাসি দেখতে পায় না অন্য আরেকটি প্রাণীও। নিষিদ্ধ আনন্দই এখনো পর্যন্ত পৃথিবীর সবচাইতে বিকট আনন্দ।
পুরো সপ্তাহ ধরে নেটওয়ার্ক ড্যাটা অ্যানালাইসিস, অ্যাটাক্, ফরেনসিক, ম্যালওয়্যার ডিটেকশান বিভিন্ন বিষয়ে আমাদের প্রশিক্ষণ চললো। তবে সর্বশেষ দিনটি নির্ধারিত ছিলো কম্পিটিশান এর জন্য। ক্যাপচার দ্যা ফ্লাগ (সিটিএফ) কম্পিটিশান। পাঁচজন, পাঁচজন করে কম্পিটিশানের জন্য একেকটা গ্রুপ তৈরী করা হলো। কম্পিটিশানের নিয়ম হলো- সব গ্রুপগুলোকে অর্থাৎ সব কম্পিউটারগুলোকে একটা লোকাল নেটওয়ার্কের মধ্যে যুক্ত করে দেয়া হবে। সে একই নেটওয়ার্কে অনেকগুলো মেশিন-ও(সার্ভার) যুক্ত থাকবে। প্রতিযোগীদের কাজ হচ্ছে সেই মেশিনগুলোর সিকিউরিটি ব্রেক করে সেখানে নিজের ফ্ল্যাগ সেট করে আসা। ব্যাপারটা আরেকটু ব্যাখ্যা করে বলা যাক। ধরুন একটা সুরক্ষিত ঘর আছে, এই ঘরগুলো হচ্ছে একেকটা মেশিন(সার্ভার)। প্রথমে খুঁজে বের করতে হবে, কিভাবে এই ঘরের ভিতরে ঢুকা যায়, ঘরের কোন দরজা বা জানালাটি নড়বড়ে বা খোলা। সেটা খুঁজে ঘরের ভিতর প্রবেশ করতে হবে। তারপর প্রবেশ যে করা হয়েছে সেটার প্রমাণ হিসেবে প্রবেশকারীর একটা পরিচয়(চিহ্ন) ঘরের মধ্যে রেখে আসতে হবে। প্রতিটা দলেরই একটা করে নাম বা পরিচয় প্রতিযোগিতা শুরুর আগেই দিয়ে দেয়া হয়। তবে, ঘরে ঢুকে শুধু নিজের পরিচয় রেখে আসলেই চলবে না। বের হওয়ার সময় এমন ব্যবস্থা করে আসতে হবে, দরজা বা জানালাগুলোকে এমনভাবে শক্ত করে বন্ধ করে দিয়ে আসতে হবে, যাতে করে অন্য কেউ আর সেখানে ঢুকতে না পারে। এতে করে অন্যরা সেখানে ঢুকে তাদের চিহ্ন রেখে আসতে পারবে না, অর্থাৎ তাদের আর পয়েন্ট পাওয়ার উপায় থাকবে না। তার মানে, যার আগে যে ব্রেক করতে পারবে সে তত বেশি এগিয়ে যাবে এবং অন্যদের সম্ভাবনা ততই কমে যাবে। উল্লেখ্য, যে মেশিনগুলোর সিকিউরিটি ব্রেক করতে হবে তার অনেকগুলোই পাসওয়ার্ড দিয়ে সুরক্ষিত। এর মধ্যে ভিসতা এবং এক্সপি মেশিনের পাসওয়ার্ড ব্রেক করা একেবারেই দুধ-ভাত।
প্রতিযোগিতার আগের দিন রাতে সে এক রণপ্রস্তুতি। এ যেন এক রণক্ষেত্র, পলাশী যুদ্ধের জন্য সবাই প্রস্তুত হতে যাচ্ছে। হোটেলের বিশাল হলরুমে প্রতিটা টিম রাত জেগে প্রত্যেকের কাজ ভাগাভাগি করে নিচ্ছে, আয়োজকরা সরবরাহ করছে অফুরন্ত পিৎসা, মিউজিক আর ড্রিংক। প্রতিটি টিমের প্রস্তুতির অংশ হিসেবে অপরিহার্যভাবে প্রয়োজন ইন্টারনেট কানেকশান, অনেককেই ইন্টারনেট থেকে প্রয়োজনীয় সফটওয়্যার ডাউনলোড করতে হবে, নিদেনপক্ষে কিছু টিউটোরিয়াল দেখতে হবে। কিন্তু এর মধ্যেই কোনো এক সাধুপুরুষ হোটেলের ইন্টারনেট সিস্টেমের কন্ট্রোল নিয়ে নিলো। বেচারী হোটেলখানা যেন এক নিলামের ঘড়ি, যে যেমন করে পারছে বারোটা-একটা বাজিয়ে নিচ্ছে। সাধুপুরুষ কোনোভাবেই কাউকে ইন্টারনেট ব্যবহার করতে দিবে না। এদিকে অন্যরা ব্যস্ত হয়ে পড়েছে কোথা থেকে ব্যাপারটা ঘটানো হচ্ছে সেটা উদ্ঘাটন করে আনার জন্য। এটা তাদের জন্য চরম মান সন্মানের ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। চোরের উপর বাটপারিটুকু মেনে নেয়া যাচ্ছে না। ক্ল্যাশ অব টাইটানস্। এর মধ্যে সারাদিন আমাদের যিনি ইন্সট্রাকটর ছিলেন তিনি হলরুমে এলেন। কি করে যে সকাল আটটা থেকে সন্ধ্যা ছয়টা পর্যন্ত একটা মানুষ টানা লেকচার দিয়ে গেলেন, প্র্যাক্টিক্যালি সব করে দেখালেন, সন্ধ্যাবেলায় ঠিক সকালবেলার মতই স্ট্যামিনা নিয়ে থাকলেন, সেটা নিয়ে যেই না উনার একটু প্রশংসা করতে যাবো যাবো, তখনি তিনি বিদায় নিয়ে বলেন, একটু পরেই উনাকে অনলাইলনে ক্লাশ নেয়ার জন্য তৈরী হতে হবে। রাত দিন বলে কিছু নাই না-কি এদের? আমিতো শুনেই টায়ার্ড হয়ে গেলাম। হিসেব করে বের করার চেষ্টা করলাম, কত ঘন্টায় এদের একদিন। বিস্ময়ের ঘোর কাটতে না কাটতেই দেখি আমাদের টিমের একজনের গার্লফ্রেন্ড তাকে ম্যাসেজ পাঠিয়েছে, ডেফ কন-এ (হ্যাকারদের সবচেয়ে বড় সন্মেলন) কে একজন ঘোড়ার ডিম জাতীয় কিছু একটা তৈরী করে দেখিয়েছে, তাতে করে উৎসাহে সে আপ্লুত হয়ে পড়েছে। কোন দুনিয়ায় যাই? এর গার্লফ্রেন্ড খবর পাঠাচ্ছে দাঁতভাঙ্গা এক কনফারেন্সে কে কি করে তামাম দুনিয়া উদ্ধার করে ফেলেছে সেটার। মিনিটে মিনিটে টের পেতে শুরু করলাম, এ কাদের ভিতর এসে আমি উপস্থিত হয়েছি।
এদিকে অস্ট্রেলিয়া-ভারত ক্রিকেট ম্যাচ এর মত বিভিন্ন দল অন্য দলগুলোকে হুমকি দিয়ে বেড়াচ্ছে। কেউ বলছে আধা ঘন্টার মধ্যে অন্য টিমদের নেটওয়ার্ক থেকে উড়িয়ে দেবে, কেউ বলছে ভালো চাইলে হার্ডডিস্ক বাসায় রেখে তারপর এসে কম্পিটিশানে যোগ দিতে, কেউ আবার বলছে এক স্ক্রিপ্ট দিয়ে সবার হার্ডডিস্ক খালি করে দেবে। যুদ্ধের এই সমস্ত হুমকি ধামকির মধ্যে বিপত্তি বাধালো আমার টিমের একজন, আমেরিকান এয়ারফোর্স এর অফিসার। তার দক্ষতার আভাস পেয়ে ভেবেছিলাম নির্ঘাৎ নবাবের সেনাপতি মীর মদন, কিন্তু যুদ্ধ শুরুর আগ মুহূর্তে তার এহেন আমতা আমতা ভাব দেখে মীর মদনের মদন পরিবর্তিত হয়ে জাফর দিয়ে প্রতিস্থাপিত হবার শঙ্কা দেখা দিলো। সে না-কি সব কিছু করতে পারবে, কিন্তু কম্পিউটারে হাত দিতে পারবে না। বেটা বলে কি? যুদ্ধ করবে কিন্তু তলোয়ার হাতে নিবে না; ফুটবল খেলবে কিন্তু বলে লাথি মারবে না। মামার বাড়ীর আবদার না-কি। আমাদের টিমের আরেক সদস্য, যে প্রতি দশ মিনিট অন্তর অন্তর তার মেয়ের গুণগান করতে ব্যস্ত হয়ে পড়ে, সে গর্বিত-পিতা ফুঁসে উঠলো। আমেরিকানদের সৌজন্যবোধ কোথায় নেমে গেছে, সেটা নিয়ে এই পিতৃহ্যাকার চিন্তিত হতে হতে কেঁদে ফেলার আগেই সবাই বুঝতে পারি মূল কাহিনীটা কোথায়। আমাদের এই মহান সেনাপতি মীর মদন একজন পুরোনো পাপী। তার ইতিমধ্যে ঘটানো কীর্তির খেসারতস্বরূপ কোর্ট থেকে কম্পিউটারে কাজ করার উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা আছে। অতএব, শত ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও কম্পিউটার ব্যবহার করে সরাসরি সে কম্পিটিশানে অংশগ্রহণ করতে পারবে না। আমি চকচক চোখে কচকচ করে তাকিয়ে তাকিয়ে দেখলাম, এবার আর মিনিট নয়, সেকেন্ডে সেকেন্ডে টের পেতে শুরু করলাম আমি কাদের মাঝে এসে উপস্থিত হয়েছি।
নির্দিষ্ট দিনে যথাসময়ে শুরু হলো কম্পিটিশান। সামনে বড় স্ক্রিনে সব টিমের পয়েন্ট দেখানো হচ্ছে। ভিসতা/এক্সপি’র পাসওয়ার্ড বের করতে আমার সময় লেগেছিলো দশ মিনিট। প্রসন্ন ভাব নিয়ে অন্যদেরকে সেটা বলতে গেলে তারা অবাক হয়ে গিয়েছিলো। কোনোভাবেই তারা এত বেশি সময় লাগার কারণ বুঝতে পারছে না। আমার প্রসন্ন মুখ বিষণ্ন হতে বেশি দেরি হলো না। বিভিন্ন দিকে তাকিয়ে দিকে দেখি কেউ চুল ছিঁড়ছে, কেউ লাফিয়ে উঠছে, কেউ দুইহাতে সমানে কি-বোর্ড চেপে যাচ্ছে। কিন্তু, ঘটার মধ্যে যাহা ঘটিলো, তাহার নাম আসল ঘটনা। একটা টিম বিচারকদের যে-মেশিনটা থেকে স্কোরবোর্ড দেখানো হচ্ছিলো, সেটা ব্রেক করে নিজেদের স্কোর সবার উপরে উঠিয়ে বসে থাকলো। অর্থাৎ কিছু না করেও তারাই ফার্স্ট হয়ে গেলো কিছুক্ষণের জন্য। অতঃপর, যথাসময়ে তাদের কীর্তিকলাপ ধরা পড়লো এবং জরিমানা হিসেবে তাদের অতিরিক্ত পয়েন্ট তো কাটা হলোই, প্রাপ্য পয়েন্ট থেকেও কিছু পয়েন্ট কেটে নেয়া হলো। এ-জাতীয় কম্পিটিশান নিয়ে নীচে দেয়া সিএনএন এর বেশ কিছুদিন আগের ভিডিও আছে।
হ্যাকিং সম্পর্কিত কম্পিটিশান নিয়ে সিএনএন ভিডিও
যথাসময়ে প্রতিযোগিতা শেষ হলে বিজয়ী দলকে পাঁচ হাজার ডলার পুরস্কার দেয়া হলো। সমাপনী বক্তব্যে সিনেটরের রেকর্ড করা বক্তব্য দেখানো হলো। অন্যসব বক্তারা নিজদের কথা বললেন, কিছু স্কলারশিপ ঘোষণা করলেন। ক্যাম্পে অংশগ্রহণকারীদের জন্য বেশ কিছু দামী ট্রেনিং কোর্স ফ্রি করে দিলেন। তবে, ঘুরে ফিরে সবার একটাই মূল বক্তব্য, ইউনাইটেড স্টেটস্ অব অ্যামেরিকা না-কি আমাদের এই প্রতিযোগীদের দিকে তাকিয়ে আছে, জাতিকে উদ্ধারের মহাদায়িত্ব না-কি আমাদের। যাই হোক, সবশেষে ভার্জিনিয়ার গভর্নর স্বাক্ষরিত সার্টিফিকেট নিয়ে, সবার ফটো তুলে, সবার থেকে বিদায় নিয়ে শেষ হলো অসাধারণ একটি ক্যাম্প।
এখানে একটা কথা বলে নিই, হ্যাকার কিন্তু অপরাধী না, যে অর্থে আমরা হ্যাকারদের অপরাধী হিসেবে ভুল করে থাকি, তারা আসলে হ্যাকার নয়, তাদেরকে বলা হয় ক্র্যাকার। কিন্তু শাব্দিক অর্থ যাই হোক না কেন, আধুনিক মিডিয়ায় হ্যাকার শব্দটি, নেগেটিভ অর্থেই ব্যবহৃত হয়ে থাকে। ব্যক্তিগতভাবে আমেরিকার অনেক জায়গাতেই আমাকে বিভিন্ন প্রয়োজনে টিমে কাজ করতে হয়েছে। সবখানে সবাইকে যথাসম্ভব হেল্প করতেই দেখেছি। এরা টিমমেট হিসেবে খুবই ভালো। কিন্তু এখানে এই হ্যাকার সম্প্রদায়ের সাথে কাজ করতে গিয়ে মনে হলো, এরা একদমই অন্যরকম, সবার থেকে আলাদা। অপরকে হেল্প করা বা জানানো যেন এদের কাছে নেশার মত। এত আগ্রহ নিয়ে সবাই সবার সাথে সবকিছু শেয়ার করছে, দেখতেই ভালো লাগে। জানিনা হ্যাকারদের প্রতি সামাজিক দৃষ্টিভঙ্গি এতে প্রভাব রাখে কি-না। সোজা কথায়, ‘হ্যাকার হ্যাকার মাসতুতো ভাই’। এই শেয়ার-শেয়ার ভাবটা আমি ধূমপায়ীদের মধ্যেও দেখতে পাই। সিগারেটের এত এত দোষ, কিন্তু একটা গুণ তার মেনে নিতেই হবে। সিগারেট অবিসংবাদিতভাবে মানুষে মানুষে বন্ধুত্ব বাড়ায়, মানুষকে সামাজিক করে। অচেনা-অজানা জায়গায়, অপরিচিত একজন লোক আরেকজন লোককে কি মায়াময় ভঙ্গিতে জিজ্ঞেস করে, ভাই একটা সিগারেট হবে। আর অন্যজন, দ্বিগুণ উৎসাহে হাত বাড়িয়ে আকর্ণবিস্তৃত হাসি হেসে বলছে, আছে ভাই, আছে। কী অপূর্ব! ভাই একটা সিগারেট হবে-এক বাক্য দিয়েই বন্ধুত্বের শুরু। কিন্তু সমস্যাটা হচ্ছে, মালিবাগ মোড় হোক আর শিকাগোর কানাগলিই হোক ছিনতাইয়ের শুরুটাও হয়, ঠিক এই একই বাক্য দিয়ে।
একটু ডেভিল’স এডভোকেট হই? রাজূ আপনি কি ভাবে শতভাগ নিশ্চিত হলেন যে আপনাকে এবং আপনার সতীর্থদের মাপা হচ্ছিল না পুরো সময়টায়? হয়ত আপনারা ই ছিলেন গবেষণার বিষয় বস্তু। নির্দিষ্ট আঙ্গিকে নির্দিষ্ট পরিবেশে আপনারা কি আচরন করছেন , কি সিধান্ত নিচ্ছেন সেটি কেউ লিপিবদ্ধ করছিলেন না তা কি বলা যায়? যাদের বাছাই করা হয়েছিলো তাদের বর্তমান, পুর্বের এবং ডাইর্ভাস আইডেন্টিটির কথা ভেবে দেখুন। কি ভাবছেন?
@কেয়া রোজারিও,
উকালতি পেশায় এ কেন এলেন না, বুঝতে পারছি না।
@স্বপন মাঝি,
উনার আবৃত্তি শুনলে আপনি বলতেন সবকিছু ছেড়ে দিয়ে উনার শুধু আবৃত্তিই করা উচিত। খুবই চমৎকার। এখানে একটা লিঙ্ক দিলাম। শুনে দেখুনঃ http://www.mukto-mona.com/Articles/keya/robin.mp3
@মইনুল রাজু,
শুনতে শুনতে মন খুব খুব খারাপ হয়ে গেল। এই যে মন খারাপ হয়ে যাওয়া, এক অনেকে ভাল চোখে দেখে না, আমার কিন্তু মনে হয়,কোন কিছু পড়ে বা শুনে মন খারাপ হওয়াটা মন ভাল-র অভিমুখে ধনাত্মক প্রতিক্রিয়া।
@মইনুল রাজু,
আজি আপনার মন্তব্য পড়লাম।
আপ্লুত হলাম , কেননা আমি ভুলতে বসেছি অথচ কিছু স্বজন মনে রেখেছেন যে আমি একদা আবৃত্তি করতাম।
আর কি আশ্চর্য দেখুন, আজি সেই দিন যে দিন উপলক্ষে আপনার দেয়া লিঙ্কের কবিতা টি লেখা হয়েছিলো।
জগন্নাথ হলের ধসে যাওয়া ছাদ নিয়ে আমার সেই পুরোন লেখা।
http://blog.mukto-mona.com/?p=2769
@কেয়া রোজারিও,
না না, যেকোনো কিছুইতো তারা লিপিবদ্ধ করতে পারে, সেক্ষেত্রে আমাদেরতো কিছু করার নেই। তবে, বাছাই করা হয়েছিলো একটা অনালাইন কম্পিটিশানের মাধ্যমে। কিন্তু আমার কিংবা সতীর্থদের আচরণ গবেষণা করে কিছু সিদ্ধান্তে যদি তারা আসতে পারে, তো আসুক না, কিন্তু আমি যে সেখান থেকে অনেক কিছু শিখলাম সেটাই আমার পাওনা। 🙂
আপনার চমৎকার পর্যবেক্ষণের জন্য সাধুবাদ। ভালো থাকবেন। 🙂
আপনি একজন জাত লেখক। সিগারেটের বিষয়ে যা লিখেছেন, সেটা কি আপনার একেবারে মৌলিক, নাকি অন্যকোথাও হতে অনুপ্রাণিত? আমি আগে কখনও শুনিনি। অসাধারন!
@আতিকুর রহমান সুমন,
অনেক ধন্যবাদ আপনাকে। না অন্য কোথাও থেকে না, লেখার সময় মনে এসেছিলো।
ভালো থাকবেন। 🙂
সর্বোনাশ ! তাইলে আর শুধু শুধু কষ্ট কইরা ফ্রি পাওয়া সাইটে এতো এতো লেখা লিখে কী লাভ !! কবে কে এসে দিলো সব ডিলিট কইরা !! আর আমি তখন সর্বস্বান্ত হইয়া কাপড় মাথায় তুলে ফুটপাথ দিয়ে দৌড়াই !!!
আজ থেকে লেখালেখি বন্ধ !!!
এইগুলান কী শুনাইলেন ভাই ! ভেবেছিলাম, ডায়েরি যখন হারিয়ে যায়, তখন নাহয় ওয়েবসাইটে অক্ষয় করে রাখি। এখন তো দেখছি- কী আশায় বাঁধি খেলাঘর, বেদনার বালুচরে !!
বড় কষ্ট পাইলাম আপনার লেখা পড়ে ! এই কষ্ট কেমনে মুছি !!!!!
@রণদীপম বসু,
কষ্ট পাবেন না। চুরি-ডাকাতির উপায় যেমন আছে, সেগুলো থেকে রক্ষা পাওয়ার উপায়ও আছে। একটু শুধু সতর্ক থাকতে হবে। আপনাকে কষ্ট দিতে পেরে ভালো লাগছে 😛 ।
অসাধারন। আপনার বর্ণনা ভঙ্গি ও রসবোধে ভালো লেগেছে।
:lotpot: :lotpot: :lotpot:
আসলেই এরা হ্যাকারের দল।নিঃসন্দেহে!
@রাহনুমা রাখী,
ধন্যবাদ মন্তব্যের জন্য। ভালো থাকবেন। 🙂
মইনুল রাজু,
আপনার পিসি পর্যন্ত পৌঁছে গেলে হয়তো সবই করা সম্ভব।
আমি বিস্ময়ে, কিছুটা ভয়ে অভিভূত হয়ে যাচ্ছি যে, আপনারা ( হ্যাকাররা) চাইলেই ( পিসির ঠিকানা জানলে) আমার ভিসতার বারটা বাজাতে পারেন। বলা যায় আপনাদের করুণার উপর দাড়িয়ে আছি।
পিসি পর্যন্ত পৌছা ব্যাপারটা ভাল ভাবে বুঝলাম না। এই কম্পু কানাকে কি একটু বুঝিয়ে বলবেন? ধরুন আপনি আমার প্রতিবেশী, WiFi থেকে কি আমার পিসির ঠিকানা জানা সম্ভব? নাকি আরও details জানতে হবে? সর্বনাশ এড়াতে করনিয়ই বা কি? কোন একটা প্রোগ্রামিং ল্যাংগুয়েজ শিখলে কি হ্যাকিং করা যাবে বা নিজেকে প্রটেকশন দেয়া যাবে? উল্লেখ্য বহু আগে বেসিক এবং সি কিছুটা শিখেছিলাম। এগুলো দিয়ে কি ঝাড় ফুক দেয়া যাবে?
অনেকগুলো অফ টপিকের প্রশ্ন করায় দুঃখিত।
@হেলাল,
ইন্টারনেটের সাথে যুক্ত সব পিসি’র একটা পরিচয় আছে। আইপি অ্যাড্রেস বলতে পারেন। আপনার পিসি পর্যন্ত পৌছা যাবে যদি আপনার আইপিটা জানতে পারি। তবে আসল আইপি ব্যবহার না করে টেম্পোরারী, প্রাইভেট বিভিন্ন ধরণের আইপি ব্যবহার করা হয়। আমি যা বললাম সেখানে সবদিক বললাম না, আরো অনেক ব্যাপার আছে আসলে। সে-সবে ব্যাখ্যায় এখানে যাচ্ছি না।
প্রতিবেশির ওয়াইফাইয়ের ভিতর আপনি যদি থাকেন। তাহলে তার সব জানা সম্ভব। আমার এখানে সব প্রতিবেশির পাসওয়ার্ড থেকে শুরু করে সব আমার জানা আছে। আমি নিজে ক্র্যাক করেছি। তবে কিছু টুলস্ লাগে, যেমন ধরুন ডিকশনারী লাগে, যেটা নেট থেকে ডাউনলোড করা যায়।
প্রোগ্রামিংয়ের খুব কঠিন কিছু না, সহজ কিছু জিনিস লাগে। বিশেষ করে জানা থাকতে হয় কিছু ইউনিক্স কমান্ড। ওয়ারল্যাস নেটওয়ার্কের পাসওয়ার্ড হ্যাক করার জন্য আপনাকে একটা ভিডিও দিচ্ছি। হয়তো অনেক কিছু বুঝতে পারবে না, কিন্তু এটা বুঝতে পারবেন যে কি পরিমাণ সোজা এই জিনিসটা।
http://www.securitytube.net/video/152
অনেক ধন্যবাদ আপনাকে। হ্যাপি হ্যাকিং 🙂
@হেলাল,
তবে এখন অনেক টুল আছে জেগুল দিয়ে আপনে অতি সহজেই wifi হাক করতে পারবেন। এই সব টুল অনেক সহজে পাওয়া যায় বলে এখন আমাদের রিস্ক টা এখন বেশি। আর আমরা যে অপারেটিং সিস্টেম বাবহার করি সেটা হল পাইরেটেড কপি। এই গুলার কন হালনাগাদ হয় না তাই সহজেই হ্যাক করা যায়।
@আনুপাম,
খুবই সত্য কথা। বাংলাদেশে থাকতে আমাকে মাসে একবার উইন্ডোজ ইন্সটল করতে হতো। এখানে গত দুইবছর ধরে ব্যবহার করছি, এখনো কোনো সমস্যা হচ্ছে না।
টুল এর কথা যেটা বললেন, আমার মনে হয়, সেটাতে খুব একটা আনন্দ পাওয়া যায় না। ব্যাপারটা অন্য কেউ হ্যাক করছে, আর আপনি বসে দেখছেন – কিছুটা এরকম।
তবে এটা ঠিক যে, খুব দ্রুত কিছু করতে চাইলে টুল এর বিকল্প নেই। আমার হোটেলে যখন একই নামে একাধিক নেটওয়ার্ক ছিলো, তখন অ্যান্ড্রয়েড ফোনে একটা সফট্অওয়ার ব্যবহার করে সবাই সাথে সাথে দেখে নিলো কোন জায়গায়, কত দূরে এক্সেস পয়েন্টগুলো আছে। তারপর সেটা দেখে হোটেলের এক্সেস পয়েন্টটা চেনা গেলো। টুল থাকার কারণেই সেটা সম্ভব হয়েছে। 🙂
আমি এক কম্পানি তে জব করতাম আর সাথে সাথে এথিকাল হাকার নামে একটি ক্লাস করতাম।একদিন অফিস চলা কালিন আমি একটা টুল ব্যবহার করি, সাথে সাথে অফিস এর নেট টা বন্দ হয়ে জায়। পরে অফিস থেকে আমাকে একটা ওয়ারিং লেটার দেয়। এর পর দিন আমি জব তা ছেরে দেই। তখন থেকে চিন্তা করে ছিলাম যে আর কখন এ কাজ করব না। আজ এটা পরে আবার এই বিসয়ে পরা লেখা করতে ইছে করসে।
@আনুপাম,
“এ কাজ কখনো আর করবো না”, এরকম না করে আপনি তখন থেকে চিন্তা করতে পারতেন, একাজ এমন কোনভাবে করা যেতে পারে যাতে করে অফিস থেকে ধরতে না পারে। 🙂
যদি ভবিষ্যতে খুব ডিম্যান্ডিং কিছু করার ইচ্ছে থাকে, তাহলে মনে হয় এটার উপর কাজ করতে পারেন। যদি সব কিছু ঠিক মত করতে পারেন, তাহলে আপনার কাছে আসতেই হবে।
ধন্যবাদ।
অসাধারণ। শুধু হ্যাকিং করার জন্যই কম্পুবিজ্ঞান পড়তে ইচ্ছা করে 😛
@পৃথিবী,
কম্পিউটার বিজ্ঞান খুব ইন্টারেস্টিং একটা সাবজেক্ট। পড়তে পারেন। বেশ চমৎকার কিছু জিনিস আছে এখানে। 🙂
@মইনুল রাজু, আমার অবশ্য জীববিজ্ঞানেই আগ্রহ বেশি, তবে দেশে আন্ডারগ্র্যাড করলে কম্পুতেই করব। যেই যন্ত্র নিয়ে সারাদিন বসে থাকি, তার সম্পর্কে তো বলতে গেলে কিছুই জানি না।
@পৃথিবী,
আমার হাতে যদি এখন অপশান থাকতো আমি জীববিজ্ঞান-ই হয়তো নিতাম। কিন্তু আমার সময়ে বাংলাদেশে কম্পিউটার বিজ্ঞানের এত বেশি ক্রেজ ছিলো,সেটা কাটিয়ে উঠতে পারিনি। দুইটা সাবজেক্টের সবচেয়ে বড় পার্থক্য হলো একটা ডিল করে মানুষের তৈরী যন্ত্রে নিয়ে, আরেকটা ডিল করে সেই যন্ত্রের নিপুণ কারিগর অর্থাৎ মানুষ বা অন্য জীবন নিয়ে।
আপনার রসবোধের প্রশংসা করতে হয়। যান্ত্রিক জীবনের বা সমাজের হা্ল-চাল বলতে গিয়ে যে ভাবে
উপমা দিয়ে প্রাণ-দান করেছেন, তাতে মনে হচ্ছে সেদিন আর বেশি দূরে নয়, যেদিন আপনাদের হাতের ছোঁয়ায় মদও পবিত্র ( আশা কৌতুকটা জানা আছে) হয়ে উঠবে।
@স্বপন মাঝি,
আগে শোনা কৌতুক বারবার শুনতে ভালো লাগে। বলেই ফেলতেন না হয় আরেকবার।
ধন্যবাদ মন্তব্যের জন্য। 🙂
@ মইনুল ভাই,
ভিসতা এবং এক্সপি মেশিনের পাসওয়ার্ড ব্রেক করা একেবারেই দুধ-ভাত।
কন কি, অভাগারে ডর দেখান কেন। দয়া করে আমার কম্পুতে ঢুইকেন না।
@হেলাল,
না, ভয়ের কিছু নেই। আমি আপনার নেটওয়ার্কের ইনফরমেশান না পেলে কিছুই করতে পারবো না। সেটা পাওয়া সহজ না। কিন্তু আপনার পিসি পর্যন্ত পৌঁছে গেলে হয়তো সবই করা সম্ভব, বুঝতেই পারছেন সেটা সম্ভব না। অতএব, ভয়ডরের কিছুই নেই। 🙂
ভাল লাগল… 😉
@মার্ক শুভ,
ধন্যবাদ। 🙂
চরম!! :))
:lotpot: :lotpot:
@টেকি সাফি,
ধন্যবাদ। হোটেলের কাস্টমারদের জন্য একটা ডেস্কটপ কম্পিউটার ছিলো। আসার সময় দেখি সেটাতে একটা ডেস্কটপ পিকচার দেখা ছাড়া আর কিছুই করা যায় না। 🙂
আহা সাধু সাধু! চমৎকার লাগল আপনার অভিজ্ঞতা। আমি ভাই আপনার লেখার ফ্যান হইয়া গেলাম।
আইচ্ছা আফনের টিম কত পয়েন্ট পাইছিল? :))
@সাইফুল ইসলাম,
দিলেনতো সব নষ্ট করে, আসল প্রশ্নটাই করে ফেললেন। :)) আমদের টিম ৮০০ পয়েন্ট পেয়েছিলাম। যারা ফার্স্ট হয়েছিলো তারা ২০০০ এর মত। কিন্তু, ২০০০ মানে যে অনেক বেশি কিছু করে ফেলেছে তা নয়। যেমন, প্রথম ব্রেক করতে পারলেই ১০০০ পয়েন্ট। তারপর অন্যরা ব্রেক করেলে পায় ২০০ পয়েন্ট।
ধন্যবাদ মন্তব্যের জন্য। 🙂
@সাইফুল ইসলাম, আমিও এইটাই ভাবতেছিলাম!
আমি বাংলাদেশেই একটা কল সেন্টারে চাকরি করতাম। আমাদের কিছু ট্রেনার এবং সুপারভাইজার ছিলেন যাদেরকে চোখের সামনে ৩০ ঘন্টা ৪৮ ঘন্টা দাঁড়িয়ে থেকে কথা বলতে দেখেছি। যেখানে ৮ ঘন্টা কাজ করেই আমাদের তেল চলে যেত সেখানে এই মানুষগুলো কি খেয়ে জানিনা ৩০ ঘন্টা টানা দাঁড়িয়ে থেকে আমাদেরকে চিয়ার আপ করার চেষ্টা করত যখন আমরা ঝিমিয়ে পড়তাম! মুখে সারাক্ষণ হাসি, জোকস বলছে মজা করছে, ট্রেইন করছে বকা দিচ্ছে, একজনকে দেখেছিলাম জ্বরে চোখ লাল হয়ে আছে তবু মুখে হাসি আর কথার ফুলঝুরি!
@লীনা রহমান,
হাসি হাসি মুখ করে থাকাটা বিরাট এক যোগ্যতা। হাসি হাসি মুখে অনেক নেগেটিভ জিনিস বললেও, যাকে বলা হচ্ছে তার জন্য মেনে নেয়া সহজতর হয়। এখানকার মানুষজন খুব পরিশ্রমী, না-হলেতো আসলে এত উন্নতি সম্ভব হতো না এদেরকে দিয়ে।
ভালো থাকবেন। 🙂
@মইনুল রাজু, আমাদের অপেরাশন্স অফিসার ও ট্রেনারদের ২ জন ছিলেন বাঙালি ও বাংলাদেশি আর আরেকজন ছিলেন ভারতীয়। এজন্যই আসলে বেশি অবাক হয়েছিলাম। বাঙালিদের মাঝে এনার্জি ও স্ট্যামিনা একটু কম দেখা যায় তো। আমিই তো একটু রোদে থাকলে প্রেসার নেমে টেমে ফেইন্ট হয়ে যাওয়ার অবস্থা হয়। আর প্রায় ২ দিন টানা প্রাণবন্ত থাকা আমার পক্ষে অসম্ভব। স্যারদের এই ব্যাপারতা তাই আমাকে খুবই আকর্ষন করেছিল।
@লীনা রহমান,
আমার দোকানে অনেক ‘রেড বুল’ বিক্রি হয়। এটা পান করলে চোখের রাজ্য ঘুম থেকে উধাও হয়ে যায়।
@স্বপন মাঝি,
আমার দোকানে অনেক ‘রেড বুল’ বিক্রি হয়। এটা পান করলে চোখের রাজ্য থেকে ঘুম উধাও হয়ে যায়। বাংলাদেশে কি এমন কিছু বেরিয়েছে?
@স্বপন মাঝি, কিজানি, আমি এইসবের খবর জানিনা। তবে থাকাতা অস্বাভাবিক কিছু না। বাংলাদেশে অবশ্য ইয়াবার চল খুব হয়েছে, এই ট্যাবলেট খেলা নাকি ক্লান্তি আসেনা। আমি এমনিতেই অনিদ্রা রোগী তাই বন্ধুরা টেস্ট করলেও আমি করিনি।
😀
লেখাটা পড়ে খুব মজা পেলাম!!!
@লাট্টু গোপাল,
জানানোর জন্য ধন্যবাদ আপনাকে। 🙂
এসব কি সত্যি ঘটনা, নাকি গল্প? ফায়ার এলার্ম, ইন্টারনেট কানেকশন, বিচারকদের ফলাফল ইত্যাদি হ্যাকের ঘটনাগুলো সত্যিই এত হাস্যকর 😀 :hahahee: :lotpot: :rotfl:
অনেক ধন্যবাদ। দারুণ একটা লেখার জন্য :guli:
@শঙ্কর,
সবগুলোই সত্যি এবং আরো অনেক কিছু আমি লেখার মধ্যে তুলে ধরতে পারিনি। ওদের মুখভঙ্গি, স্টাইল দেখেই আপনি অন্যরকম এক কৌতুহল অনুভব করবেন। সবাই খুব মজার মজার বেশ খোলামেলা ভাবে কথা বলে, একজন আরেকজনকে যথাসম্ভব হেল্প করে।
ভালো থাকবেন। 🙂
খুব ভাল লেগেছে। আপনার স্বভাবসুলভ রসবোধ এ লেখাতেও পেয়েছি। সবচেয়ে মজা পেয়েছি, একটি টিমের বিচারকদের মেশিন ব্রেক করে কিছুক্ষণের জন্য ফার্স্ট হওয়ার ঘটনায়। তবে একটা জিনিস এখনও বুঝতে পারিনি; তা হল, হ্যাকিং কি ইল্লিগাল? হ্যাকিং এবং ক্র্যাকিং এর মধ্যে পার্থক্যই বা কি? আর সিগারেটের বন্ধুত্ব বাড়ানোর ক্ষমতার ব্যাপারে আমি আপনার সাথে একমত। আমার এক সহকর্মীকে দেখেছি, কারো সাথে মনোমালিন্য হলে পরক্ষনেই সিগারেট অফার করে একসাথে সুখটান দিতে!
@কাজি মামুন,
আমাদের এক বন্ধু হ্যাকার টিম আছে। এরা কয়দিন আগে র্যাবের ওয়েবসাইটের একটা ফাঁক আবিস্কার করে, এই ফাঁক দিয়ে ডাটাবেসে ঢুকে এবং তারপর সাইট এডমিনকে ব্যাপারটা ইনফর্ম করে। হ্যাকিং কিছু সময় ইল্লিগ্যাল, যেমন অন্যের তথ্য বিনা অনুমতিতে দেখা আইন ভঙ্গ করে তবে হ্যাকাররা সবসময় বিনা অনুমতিতেই করে এমন ভাবার কারণ নেই। কারণ আমি কোন স্ক্রিপ্ট বানালে এই হ্যাকারগ্রুপের হাতেই আগে দিই, এটার উইক পয়েন্ট খুজে বের করার। এটা কিন্তু লিগ্যাল।
ক্র্যাকার হচ্ছে হ্যাকারের শয়তানি রূপ। এরা যদি র্যাবের ডাটাবেজে ঢুকে দিত ডাটাবেজটা ডিলিট করে মানে তথ্যের আংশিক বা পুরোপুরি বিকৃতি ঘটাত তাহলেই এরা হ্যাকারের বদলে ক্র্যাকার হয়ে যেত। হ্যাকাররা আসলে সিকিউরিটি এক্সপার্ট আর ক্র্যাকাররা সিকিউরিটি এক্সপার্ট+ভিলেন। হ্যাকাররা অনেক সময় সের্ফ কৌতুহল থেকেও বিভিন্ন ছিদ্র খুজে বেড়ায় আর ক্র্যাকাররা বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই কোন খারাপ উদ্দেশ্য সাধনের জন্য হ্যাক করে থাকে।
@টেকি সাফি,
পারফেক্ট ডেফিনিশান। অনেক ধন্যবাদ। 🙂
@টেকি সাফি,
অনেক ধন্যবাদ। আসলে ‘মুক্তমনা’ আমার জন্য এক বিরাট রত্নভাণ্ডার। মাত্র কয়েক মাস আগে এর সন্ধান পেয়েছি। প্রথম কয়েকদিন তো নাওয়া-খাওয়া ভুলে ‘ই-বুক’গুলো নিয়ে পড়েছিলাম। কত কিছু যে শিখেছি, তার ইয়ত্তা নেই। তবে আফসোস আরও আগে কেন এর খোঁজ পাইনি।
@কাজি মামুন,
আসলে খুবই মজার একটা ক্যাম্প ছিলো। সবকিছু লেখায় তুলে আনতে পারিনি, ওদের হাব-ভাব, স্টাইল, চুলের বাহার সবকিছু দেখে ব্যাপক মজা পেয়েছিলাম। ভালো থাকবেন। 🙂
(Y) (D)
@নিউ ম্যান,
🙂 (F)