ডিজিটালাইজেশানের এই অবধারিত যুগে বাংলাদেশের সরকার, রাজনীতি এবং জীবন-যাপন, সবকিছুর ডিজিটাল হয়ে যাবার খবর হাওয়ায় ভাসছে। বাংলা কিংকর্তব্যবিমূঢ় শব্দটি বলতে দাঁত ভেঙ্গে গেলেও, ইংরেজী ডিজিটাল শব্দটি বলা খুব সহজ বিধায় পাড়ার ইউনিয়ন পরিষদ মেম্বার থেকে শুরু করে মসজিদের ইমাম, পান খেয়ে ঠোঁট লাল করে রাখা সাংসদ থেকে শুরু করে পেট-মোটা পুলিশ অফিসার সবাই মিলে একযোগে ডিজিটাল বলতে বলতে বাংলার আকাশ-বাতাস পর্যন্ত ডিজিটালাইজড্ করে তুলেছেন।
তবে বাংলাদেশ ডিজিটাল হলাম হলাম করতে করতেই বিশ্বে শুরু হয়ে গেছে ডিজিটাল আক্রমণ। ভারত আর চীন থেকে যে পরিমাণ তথ্য প্রযুক্তিবিদ গ্র্যাজুয়েট হয়ে বের হচ্ছে, তার ধারে কাছেও নেই ডিজিটাল প্রযুক্তির সবচেয়ে বড় ব্যবহারকারী মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। সচেতন ব্যক্তিমাত্রই এখন জানেন যে, ভবিষ্যতের যুদ্ধ গোলাবারুদে হবে-না, ঢাল-তলোয়ারের যুগতো অনেক আগেই শেষ; ভবিষ্যতের যুদ্ধ হবে ডিজিটাল যুদ্ধ, সে–যুদ্ধের যোদ্ধারাও হবেন ডিজিটাল যোদ্ধা।
হ্যাকিং কিংবা সাইবার আক্রমণের সাথে সবাই কম বেশি পরিচিত, অন্ততপক্ষে শুনেছেন হয়তো। প্রয়োজনীয় সংখ্যক তথ্যপ্রযুক্তিবিদ তৈরী করতে না পারলে, ভবিষ্যতের বড় ধরণের প্রতিদ্বন্দ্বী ভারত আর চীনের সাথে এই যুদ্ধ কি করে মোকাবেলা করবে যুক্তরাষ্ট্র? বস্তুতঃ আমেরিকার বহু বড় বড় ডিজিটাল কারখানা চালিয়ে নিয়ে যাচ্ছে চায়নিজ আর ইন্ডিয়ানরা। চাকুরী না হয় আমেরিকাতেই করলো, কিন্তু যুদ্ধ যখন শুরু হবে তখনতো এই যোদ্ধারা আমেরিকার পক্ষে যুদ্ধ করবে না, করবে তাদের নিজ দেশের পক্ষে। সেই ভবিষ্যত ভাবনা থেকে পুরো আমেরিকায় শুরু হয়েছে, সিকিরিটি এবং হ্যাকিংয়ের উপর নাগরিকদের প্রশিক্ষণ দেয়ার কার্যক্রম। উদ্দেশ্যটা আরেকটু ভালো করে দেখতে চাইলে ক্লিক করুন এখানে। ইউএস সাইবার চ্যালেঞ্জ নামের এই কার্যক্রমের ডিরেক্টর ক্যারেন ইভান্স। ব্যাক্তিগতভাবে তার সাথে আমার দুবার কথা হয়েছে। কথা বলতে বলতে খুবই হালকা মেজাজে কিছু রসিকতা করে গিয়েছিলেন ভদ্রমহিলা। তারপর যখন দেখি এফবিআই, এনএসএ’র শীর্ষস্থানীয় ব্যাক্তিরা তাকে দেখে চুপসে যাচ্ছেন তখন আমার টনক নড়ে। ঘুণাক্ষরেও বুঝতে পারিনি এতক্ষণ কার সাথে কথা বলছিলাম। এই ভদ্রমহিলার প্রোফাইল উল্লেখ করতে গেলে এক পৃষ্ঠায় শেষ করা যাবে না। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট এর অফিসে তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ক অ্যাডমিনিস্ট্রেটর হিসেবে কাজ করেন। ক্যারেন ইভান্স এর দেয়া সাক্ষাতকারে তার কণ্ঠেই সাইবার চ্যালেঞ্জ সম্পর্কে জানতে পারবেন নীচের এই ভিডিওটি দেখে।
আমার সাথে ক্যারেন এর দেখা হয়, অগাস্ট এর প্রথম দিকে, ভার্জিনিয়ার রিচমন্ডে অনুষ্ঠিত হওয়া সাইবার ক্যাম্পএ। সমস্ত ইউএসএ জুড়ে অনলাইন প্রতিযোগিতার মাধ্যমে শীর্ষে অবস্থানকারী প্রতিযোগীদের আমন্ত্রণ জানানো হয় বিভিন্ন ক্যাম্পে। ক্যাম্পে নাম করা কিছু সিকিউরিটি বিষয়ক বিশেষজ্ঞ সপ্তাহব্যাপী সাইবার সিকিউরিটি বিষয়ক ট্রেনিং দেবেন, হ্যাকিং এবং এর কায়দা-কানুন সম্পর্কে অবহিত করবেন, যাতে করে প্রতিযোগীরা পরবর্তীতে আরও দক্ষ সাইবার যোদ্ধা হয়ে তৈরী হতে পারে। সপ্তাহব্যাপী ক্যাম্পের সম্ভাব্য সব খরচ তারাই বহন করবেন। অনলাইন প্রতিযোগিতায় আমার স্থান প্রথম দিকেই ছিলো, কিন্তু সমস্যা হলো আমি এদেশের নাগরিক না। আমেরিকানরাতো আর নিজের পয়সায় অন্য দেশীয়দের প্রশিক্ষণ দেয়াবে না। কারণে অকারণে কখনো সেটা দিয়ে থাকলেও আগেতো তাদের নিজের নাগরিকদের প্রশিক্ষণ দিয়ে শেষ করাবে, তার পরেইতো অন্যদের নাম আসবে। প্রতিযোগিতার সময় স্পষ্ট উল্লেখ ছিলো, প্রতিযোগিতায় সবাই অংশগ্রহন করতে পারবে, কিন্তু শুধু আমেরিকার নাগরিকদের জন্য ক্যাম্প-এ প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা থাকবে। কিছু দিনের মধ্যে দেখি ক্যারেন আমাকে মেইল করা জানালো, সপ্তাহব্যাপী ক্যাম্প-এর জন্য আমাকে নির্বাচিত করা হয়েছে, আমি যাওয়ার জন্য প্রস্তুত কি-না? হায়! কাকে সে কি বলে, আমি এমন এক জাতিগোষ্ঠীর প্রতিনিধি যারা ফ্রি পেলে আলকাতরাও খায়। আলকাতরাতো নয়ই, সে জিজ্ঞেস করছে আমি মিল্ক চকলেট খেতে রাজি আছি কি-না। কিন্তু আমার মাথায় কিছুই ঢুকছে না, আমাকে যেতে বলে কেনো। আমিতো এখানকার সিটিজেন না, এরা কি আমাকে সিটিজেনশিপ দিয়ে দিলো না-কি।
যা খুশি তা-ই হোক আমি ঠিকই সময়মতো গিয়ে উপস্থিত হয়ে গেলাম ক্যাম্পে। পুরো সফরে আমার সাথে ছিলো কলকাতার তথাগত। তথাগত যে কারো নাম হতে পারে সেটা তথাগত নিজেও বিশ্বাস করতে চায় না। এখানকার যে লোকটা সবচেয়ে সুন্দর করে তার নাম বলতে পারে, সে তাকে ডাকে টটাগোটা। আমাদের জন্য বরাদ্দকৃত হোটেলে সে-দিনের মত থেকে পরের দিন চলে গেলাম স্থানীয় একটি কলেজে, যেখানে সপ্তাহব্যাপী ক্যাম্পের পুরো প্রশিক্ষণ চলবে। সেখানে গিয়েতো আমাদের চোখ কপালে উঠে গেলো। চারিদিকে শুধু অ্যামেরিকান আর অ্যামেরিকান। সমস্ত আমেরিকার যেখানেই যাই না কেন, সব জায়গায় চায়নিজ আর ইন্ডিয়ানদের আধিপত্য। এখানে পঞ্চাশ এর উপরে মানুষ, কিন্তু একজনও চায়নিজ বা ইন্ডিয়ান নেই। তাহলে আমরা দুই বাঙ্গাল কি করে এদের ভিতর ঢুকে গেলাম? এতো দেখি কমেডি অব এররস্। অবশেষে এই বলে সান্ত্বনা পেলাম যে, যা হবার হয়েছে, কম্পিটিশান করেইতো এসেছি, গায়ের রঙ দেখেতো আর নির্বাচিত করেনি নিশ্চয়।
যথাসময়ে শুরু হলো প্রোগ্রাম। প্রথমেই এফবিআই প্রধান এর রেকর্ড করে পাঠানো বক্তব্য শোনানো হলো। শুনতেই দেখি মহা বিপদ। শুরু করলো প্রিয় আমেরিকান জাতিকে দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ করার মধ্য দিয়ে, আমেরিকার জন্য এই হ্যাকার সম্প্রদায় কতটা গুরুত্বপূর্ণ সেটা বলার মধ্য দিয়ে। তারপর ঘুরে ফিরে একটা কথাই বলে গেলো, কি করে তাদের নিজের জাতির জন্য নিজেকে উৎসর্গ করতে হবে, আউটসাইড অ্যাটাক্ থেকে কি করে তাদের ডিজিটাল অবকাঠামো রক্ষা করতে হবে, বিশেষ করে তৃতীয় বিশ্বে যেখানে কোনো আইন কানুন প্র্যাকটিস্ হয় না। শুনেই আমি একটু নড়ে-চড়ে বসি, ব্যাটা বলে কি? বলবি তো বলবি, তা তৃতীয় বিশ্বের এই আমাকে ডেকে আনলি কেন? খুশির বিষয় হচ্ছে এখানে মানুষজন কথা কম বলে, কাজ বেশি করে। বলতে গেলে দশ মিনিটের মধ্যেই কর্তাব্যক্তিদের তৃতীয়-চতুর্থ বিশ্বজাতীয় সব কথা-বার্তা শেষ হয়ে গেলো।
এখনো আমরা ভেবে কূল পাচ্ছি না, আমাদেরকে ডাকার কি কারণ থাকতে পারে। অবশেষে, আমরা দুই বাঙ্গাল- এক বাংলাদেশীয় বাঙ্গাল, আরেক পশ্চিমবঙ্গীয় বাঙ্গালকে কেন একান্তই আমেরিকানদের জন্য করা একটি ক্যাম্পে আমন্ত্রণ জানানো হলো, সে ব্যাপারে আমরা একটা সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে পারলাম। কোনো এক বইতে পড়েছিলাম, আধুনিক সভ্যতা কতদূর চলে গেছে সেটা বুঝানোর এবং দেখানোর জন্য, সভ্যতা থেকে বিচ্ছিন্ন কোনো এক জংলী আদিবাসী গোত্র থেকে তিন জন মানুষকে প্লেনে করে উঠিয়ে নিয়ে আসা হয়। তাদেরকে সপ্তাহ ধরে বিভিন্ন শহর-বন্দর-সভ্যতা ঘুরিয়ে দেখিয়ে তারপর গহীন অরণ্যে তাদের আদিনিবাসে ছেড়ে দেয়া হয়। উদ্দেশ্য ছিলো, তারা গিয়ে তাদের গোত্রের অন্য সবাইকে বলে বুঝাবে কি দেখে এসেছে, পৃথিবী কতদূর এগিয়ে গেছে, আর তারা এখনো কত পিছনে কোথায় পড়ে আছে। হওয়ার মধ্যে যা হয়েছিলো, দুই দিন পর জঙ্গলের মাঝ দিয়ে প্রবাহিত হওয়া নদীতে তাদের তিনজনের লাশ খুঁজে পাওয়া গিয়েছিলো। বাইরের পৃথিবীতে গিয়ে অপবিত্র হয়ে আসার কারণে নিজ গোত্রীয় লোকরাই তাদের হত্যা করেছিলো। আমরা নিশ্চিত হয়ে গেলাম ডিজিটাল প্রযুক্তি কতদূর কোথায় এগিয়ে গেছে সেটা বুঝানোর জন্য আমাদেরকে ধরে আনা হয়েছে। নিজেকে বনমানুষ বলে মনে হতে লাগলো। তবে, বনমানুষ হওয়ার মধ্যে খারাপ কিছু নেই। মন মানুষ আর বন মানুষ সবাই সে একই মানুষ।
কিন্তু সকল জল্পনা কল্পনার অবসান ঘটিয়ে কিছুক্ষণের মধ্যেই, আমরা আমাদের মতো কিছু ইউরোপিয়ান বনমানুষ পেয়ে গেলাম, যারা আমাদের মত এখানকার নাগরিক নয়। তবে, সবচেয়ে বড় যে আবিষ্কার, খাবার টেবিলে বসে দেখি আমাদের দিকে এগিয়ে আসছে আমাদের মতোই এক বাদামি চামড়ার বনমানুষ। মনে মনে বলছিলাম, নিজ দেশ থেকে হাজার হাজার মাইল দূরে, ভার্জিনিয়ার এই গহীণ জঙ্গলের ভিতর তুমি কে হে মহাপুরুষ, যার গাত্রবর্ণ আমারই বর্ণের কাছাকাছি। পরিচয় জানালো। পরিচিত হতেই দেখি, হায় খোদা! জীবনে কোনো দিন বিশ্বাস করিনি গুরুজনদের, তাদের কথাকে অবান্তর বলে উড়িয়ে দিয়েছি। যুগে যুগে কালে তারা এক বিশেষ অঞ্চলের মানুষের কথা বলেছেন, চাঁদের দেশে গেলেও না-কি পাওয়া যায় তাদেরকে। বিশেষ অঞ্চল বলাতে বুঝতে কি কষ্ট হচ্ছে? আচ্ছা তাহলে বিশেষ জেলা বলা-ই ভালো। চাঁদের দেশে গেলেও না-কি পাওয়া যায় এই জেলার মানুষদেরকে। এবার হয়তো ব্যাপারটা জলের মত পরিষ্কার হয়ে গেছে। এই বিদেশ বিভূঁইয়ে, ভারতীয় উপমাহাদেশতো দূরে থাক, গোটা এশিয়া মহাদেশের একটা মানুষও যেখানে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না, সেখানেও পেয়ে গেলাম আশরাফুল মাখলুকাত, সন্মানিত এক নোয়াখালিবাসীকে, আমার নিজ জেলারই কোনো এক সাধুপুরুষ।
“তারপর” ‘আমাদের’ আর পায় কে, কার বাড়ীতে কি রান্না হয় সেটার খবরও নিয়ে ফেললাম। পঞ্চাশ জেনারেশান মিলালে না-কি প্রেসিডেন্ট রুজভেল্টও বাংলাদেশের আক্কাস আলীর আত্মীয় হয়ে যায়। আমরাও অমুক চেয়ারম্যানের প্রথম শ্বশুরের পরের ঘরের আগের সন্তান জাতীয় সম্পর্ক খুঁজে খুঁজে, দুজন যে খুব কাছের মানুষ সেটা বের করে ফেললাম। কারণ আমরা জানতাম, নোয়াখালীতে সবাই সবার আত্মীয়। ওর নামটাইতো এখনো বলা হলোনা- সারোয়ার। এ নামতো আমার কাছে সহজ, অন্যদের কাছে যে কি হবে, সেটা নিয়েই ভাবছিলাম। বলেই রাখি, আমার ‘mainul’ নামখানাও এদের কাছে এতই কঠিন যে, আমার এক প্রফেসর আমার কাছে ই-মেইল পাঠান ‘Dear Manual’ লিখে। মইনুল হয়ে গেলাম ম্যানুয়েল। অতএব, নামকরণের চিরন্তন নিয়ম অনুযায়ী সারোয়ারও কিছু একটা হয়ে যাবে, সে অপেক্ষাতেই আছি। কিছুক্ষণের মধ্যেই সারোয়ার ক্যাম্পের একজনের সাথে পরিচিত হতে না হতেই অভিনন্দন জানিয়ে সে বলে উঠলো, ওহহ্! স্টার ওয়ার। নাইস্ নেইম।
লিঙ্কঃ হ্যাকার্স ক্যাম্প (দ্বিতীয়ার্ধ)
(চলবে…)
মইনুল রাজু
[email protected]
হা হাহা হা হা হা !
মন্তব্য করবো কী ! আমি তো ভাই এখনো ম্যানুয়াল আর স্টারওয়ারই সামলাইতে পারতেছি না ! হা হা হা হা হা !!!
@রণদীপম বসু,
আমার নিজেরো সামলাতে বেশ কষ্টই হয়েছিলো।
কখনও কোন বই ধরলে সেটা শুরু না করে উঠতাম না। আর আপনি কিনা এরকম একটা মাজাদার জমজমাট কাহিনী মাঝপথে ঝুলিয়ে রেখে আমাদের ধৈর্য্য পরী্ক্ষা নিচ্ছেন। এই কারণেই আপনাকে মাইনাস দেয়া দরকার।
লেখাটা যে খুবই ভালোলেগেছে সেটা নিশ্চয়ই আলাদা করে বলতে হবে না। 🙂
@হোরাস,
আমি লিখে দেখি দশ পৃষ্ঠা হয়ে গেছে। সে-জন্য দুই পার্ট করে দিলাম। এখন মনে হচ্ছে একসাথে দিলেই ভালো করতাম। 😛
ধন্যবাদ মন্তব্যের জন্য। 🙂
কোন ঘটনার বর্ননা কিভাবে এত প্রাঞ্জলময় করে পাঠকদের আকর্ষনীয় করে তুলতে পারে আপনার লেখাটা তার প্রমান।
এক কথায় অসাধারন উপস্থাপনা (Y)
বিদেশে নামের বিরম্বনা এড়াতে বাঙ্গালী, ইন্ডিয়ান, চাইনীজ সহ অনেককে দেখেছি নিজের নামকে সহজ রূপ দিতে নামের প্রথম দু এক শব্দ মিল রেখে নামকে ছোট , আকর্ষনীয় ও সহজে মনে রাখতে পারার উপায় খুজে নিতে।
যেমনঃ তাজুল হয়ে উঠে- মি. টি
রাজেশ হয়- রাজ :))
@রাজেশ তালুকদার,
অনেক ধন্যবাদ মন্তব্যের জন্য। আমার গল্পে বর্ণিত ‘তথাগত’-ও সবাইকে এখন নিজের নাম শুধু ‘টি’ বলে। চায়নিজরা সংক্ষিপ্ত করেও পেরে উঠে না। তাই তারা এখানে এসে ইংলিশ নাম রাখে একটা। এই ধরেন ডোনাল্ড, মাইক, ডেভিড টাইপ কিছু।
ভালো থাকবেন। 🙂
আপনার লেখা সবসময়েই চরম মজার হয়। এইটা নিয়া আর কিছু কওয়ার নাই। আমার এক ফ্রেন্ড আছে।ওর নাম মাইনুল, ওকে আমরা সবাই ডাকি manual!!! এইটাও মনে হয় পশ্চিমা প্রপাগান্ডার ফল!!!(আমাদের দেশে পশ্চিমা প্রপাগান্ডা কথাটা কেন জানি সবাই বড় ভালবাসে যদিও আমি খুব একটা ভাল পাইনা :D)
@লীনা রহমান,
ধন্যবাদ আপনাকে।
প্রপাগান্ডা না-কি স্বর্গ-নরকেও আছে। প্রপাগান্ডা বাস্তবায়নের সুযোগ আমরাই করে দিই। পশ্চিমাদের দোষ দিয়ে লাভ নেই। আমাদেরকে হয়তো বদলাতে হবে আগে। আর কিছু শব্দ বলতে সুন্দর, সে-জন্য সবাই সেটা বেশি বেশি ব্যবহার করে। প্রপাগান্ডা শব্দটাও ডিজিটাল শব্দের মত। এটাতে আরেকটু বেশি রাজনীতি রাজনীতি ভাব আছে।
ভালো থাকুন। 🙂
ভাই,
আপনার লেখাটা উচুমানের রম্য রচনা হয়েছে বলে আমার প্রতীতি ঘটেছে।সেকারনে তা পড়তে গিয়ে মোটেই বিরক্ত বোধ করিনি, বরং দারুনভাবে উপভোগ করেছি।
এ ব্যপারে আমার দ্বিমত আছে। আসলে এটা হবে – বাঙ্গালীরা ফ্রি পেলে আলকাতরা তার দামী সাদা জামাটা পেতে নিয়ে যাবে যদি নেয়ার পাত্র না পায়। তা সত্ত্বেও এ বক্তব্য আমার জাত্যাভিমানে আঘাত দেয়ার সামিল। কারন যে যাই বলুক বা ভাবুক , আমি মনে করি বাঙ্গালী জাতির চাইতে উন্নত মন মানসিকতার আর কোন জাতি নেই এ বিশ্বজগতে। যে কারনে আমি বাংলাদেশ ছাড়া দুনিয়ায় যত দেশ ঘুরেছি কোথাও শান্তি পাই নি। যখনই দেশের বাইরে গেছি, স্বদেশে ফেরার জন্য পাগল হয়ে গেছি।
তবে আপনার মত অনার্যকে কেন ওরা অমন একটু উচু মানের কনফারেন্সে ধরে নিয়ে গেল তা জানার অপেক্ষায় থাকলাম।
@ভবঘুরে,
স্বদেশ, মানে বাংলাদেশ আপনার মত আমারো ভালো লাগে। কিন্তু, বাঙ্গালি জাতির মত উন্নত মন মানসিকতার জাতি আর নেই, এরকম আপনি মনে করতেই পারেন, কিন্তু সেটা শুধু মনে করার মধ্যেই সীমাবদ্ধ। 🙂
ধন্যবাদ।
চমৎকার!
@স্বপন মাঝি,
ধন্যবাদ 🙂 ।
@মইনুল রাজু,
আরো তো অনেক কিছু বলেছিলাম, সেগুলো কোথায় গেল? এ-ও কি এক ডিজিটেল বা বেল যোদ্ধার আক্রমণ। আরে ভাই আমি তো দুর্যোধন নই।
@স্বপন মাঝি,
কোথায় কি বললেন আবার। অন্য আর কিছুইতো চোখে পড়লো না। আরেকবার বলেন না কেন কষ্ট করে? 😛
অপূর্ব লেখা।
এক নিঃশ্বাসে পড়ে নিলাম যদিও কম্পুটারে আমার জ্ঞান ঢাকার রিক্সাওয়ালার চাইতে বেশী নয়।
আপনার লেখার স্টাইল সত্যিই প্রশংসার দাবীদার।
@আবুল কাশেম,
@আবুল কাশেম,
বাঃ আপনি তো রিক্সাওয়ালা, আমি তো ঠেলাগাড়ি।
@আবুল কাশেম,
হয়তো বিশ্বাস করবেন না। ঢাকায় একদিন আমি আর আমার এক ফ্রেন্ড বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে রিক্সায় উঠেছি। দেখি রিক্সাচালক কিছু একটা কানে দিয়ে শুনছে। আমি আমার ফ্রেন্ডকে বলছি এম পি থ্রি মনে হয়, সে ঘাড় ঘুরিয়ে বলে ‘জ্বী না! এম পি ফোর’। তারপর আমি আর আমার ফ্রেন্ড চুপসে গেলাম।
ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য। 🙂
বেশ আগ্রহ নিয়ে পড়লাম। কিন্তু লেখাটি ভূমিকা দিয়েই শেষ হয়েছে। পরের পর্বে নিশ্চয় সাইবার ক্যাম্পের অভিজ্ঞতা নিয়ে লিখবেন।
”বলেই রাখি, আমার ‘mainul’ নামখানাও এদের কাছে এতই কঠিন যে, আমার এক প্রফেসর আমার কাছে ই-মেইল পাঠান ‘Dear Manual’ লিখে। ” এ প্রসঙ্গে হুমায়ুন আহমেদ এর একটি লেখায় পড়েছিলাম যে, আমেরিকানরা যে অন্য ভাষার শব্দ উচ্চারণ করতে পারে না, তা নয়। আসলে, তারা ইচ্ছে করেই এই বিকৃতিগুলো করে! পেছনে কোন প্রকার জাত্যভিমান থাকতে পারে!
”অবশেষে, আমরা দুই বাঙ্গাল- এক বাংলাদেশীয় বাঙ্গাল, আরেক পশ্চিমবঙ্গীয় বাঙ্গালকে কেন একান্তই আমেরিকানদের জন্য করা একটি ক্যাম্পে আমন্ত্রণ জানানো হলো, সে ব্যাপারে আমরা একটা সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে পারলাম।” বাংলাদেশীয় বাঙ্গাল ঠিক আছে, কিন্তু পশ্চিমবঙ্গীয়রা কি বাঙ্গাল? উনারা তো মনে হয় ‘ঘটি’! তবে উভয়েই যে বাঙ্গালি, এ বিষয়ে কিন্তু কোন সন্দেহ নেই।
পরিশেষে, লেখককে অনলাইন কম্পিটিশনে প্রথম দিকের অবস্থান অর্জন করার জন্য অভিনন্দন।
@কাজি মামুন,
পরের পর্ব লেখাই আছে, পুরোটাই ক্যাম্প আর হ্যাকারদের নিয়ে।
জাত্যাভিমান একেবারে যে নেই তা বলবো না, তবে এখনো পর্যন্ত আমার সাথে সেরকম হয়নি। আর সত্যি বলতে কি, জাত্যাভিমানের কথা যদি বলেনই তাহলে আমি বলবো, ছোট্ট এক ঢাকা শহরে কে কোন এলাকায় বসবাস করে, গুলশান না যাত্রাবাড়ী, মিরপুর না ধানমন্ডি তার উপরে নির্ভর করে কে কতটুকু ভাব ধরবে বা অহমিকা দেখাবে। সেখানে আমেরিকানরা জাত্যাভিমান দেখালেও খুব অবাক হবার কিছু নেই। আরেকটা জিনিস হচ্ছে আমেরিকা কেউ নিজের বলে দাবী করতে পারে না, সবাই এখানে ইমিগ্র্যান্ট। কেউ আগে এসেছে, কেউ পরে।
আর আরেকটা জিনিস হচ্ছে, আমার মনে হয়না ইচ্ছে করে এরা বিকৃতি করে। কারণ চায়নিজ কিছু নাম আমি অনেক কষ্ট করেও ঠিকমত বলতে পারিনি। কিছু কিছু ব্যতিক্রম ছাড়া আমেরিকানরা খুব হেল্পফুল এবং ভদ্র। জাত্যাভিমান ভিতরে থাকলেও উপর দিয়ে প্রকাশ করে না। এটা আমার অভজারভেশান। অনেকের ক্ষেত্রে পুরো উল্টো ঘটনা ঘটতে পারে।
অনেক ধন্যবাদ। 🙂
@মইনুল রাজু,
আরেক নোয়াখালিবাসী হিসেবে এটা পড়তে পেরে আমিও বড়ই আনন্দ পাচ্ছি।
অভিনন্দন আপনাদের দুজনকেই, ‘Manual & StarWar’ ! (Y)
@সফ্টডক,
আপনাকে এখানে দেখে আমিও আনন্দিত। ধন্যবাদ। 🙂
থ্রিলার!
@আতিকুর রহমান সুমন,
অনিচ্ছাকৃত :))।
মইনুল ভাই রক্স। বেশী জোশ লাগল। ম্যানুয়েল!! হাসতেই আছি। :hahahee:
পরের পর্বডা ভাই একটু তাড়াতাড়ি ছাড়েন তো।
@সাইফুল ইসলাম,
মুক্তমনার নীতিমালায় একই লেখকের দুইটা লেখা মূলপাতায় থাকতেই পারে… উনি ইচ্ছা কইর্যা থ্রিলারটার মজা চিইপ্যা চিইপ্যা দিতেছেন! উনি বলসেন লেখায় আছে… পোষ্ট করলেই হইলো (N) :guli: :guli: :guli:
@টেকি সাফি,
কি আছে জীবনে, একটু একটু করেই আসুক, আমাদের মত ঢিলা পাব্লিকের সুবিধা :))
@কাজী রহমান,
কি আছে জীবনে মানে?! ১৮ ছুঁই ছুঁই… জীবনতো কেবল শুরু। আপনি ঢিলা পাব্লিক দূরে গিয়া পিঠা ভাজেন… 😀
@টেকি সাফি,
ত হলে আজকের বিজ্ঞানের ভাগ কি নতুনরা পুরনোদের সাথে ভাগ করতে চাইবে না শুধূ গতির কারনে?
@টেকি সাফি,
মুক্তমনা লেখকদেরকে যথাসম্ভব সুবিধা দিতে চেষ্টা করে, তাই হয়তো দুটো পর্যন্ত সুযোগ রেখেছে। কিন্তু আমার মনে হয় একটা থাকলেই ভালো, সে-জন্য আমি একটাই রাখি সবসময়। 🙂
@টেকি সাফি, আসো আমরা সবাই মিলে পোস্ট দিতে থাকি যাতে এইটা তাড়াতাড়ি প্রথম পাতা থেকে সরে যায় 😛
@লীনা রহমান,
কী ছাড়ুম? কবিতা? নাকি একটা একটা ডকুমেন্টারির রিভিউ? 😀
@টেকি সাফি, যা ইচ্ছা তাই…আর কিছু না পারলে ছড়া তো লিখতে পারি 😛
@সাইফুল ইসলাম,
ধন্যবাদ। পরের পর্ব তাড়াতাড়ি-ই পাবেন। 🙂
@মইনুল মিয়া ভাই,
আন্নের লেহা মানেই টানটান উত্তেজনা। কেমনে কলম দিয়া এই লেহা বার অয় বুঝিনা।
আচ্ছা, সত্যিই কি ঐ ব্যাক্তির নাম তথাগত? আমার পরিচিত কোলকাতার এক আপার কাছে এ নামের কথা জিজ্ঞেস করাতে সে হাসতে হাসতে কুটিকুটি। সে আমাকে বলল- তুর মত এত আহাম্মক পুলা আর দেখিনি। একজন ফান করল আর তুই বিশ্বাস করে বসে আছিস। আমি তার চোখের দিকে তাকিয়ে হা করে থাকি। 🙁
ক্যারেন ইভান্স মেয়েটার সাথে কি কথা হল এবং ক্যাম্পিং এর আরো বিস্তারিত শুনার অপেক্ষায়।
@হেলাল,
‘tathagata’ লিখে গুগোল করে দেখেন। রায়, গুপ্ত অনেক কিছুই পাবেন। আপনার আপার আর কি দোষ, তথাগত নিজেই নিজের নাম শুনে হাসে। ও হচ্ছে আমার দেখা কলকাতার খুবই চমৎকার একটা ছেলে।
পরের পর্বে কিছুটা বিস্তারিত বর্ণনা পাবেন। ভালো থাকুন। 🙂
@মইনুল রাজু, নাম নিয়ে এমন সমস্যা হয় কেন,বুঝিনা। অলরেডি আমার কয়েক বান্ধবী বলতেছে আমার মেয়ের নাম হাইপেশিয়া রাখলে সে নাকি আমাকে ঘৃণা করবে কারণ কেউই তাকে ঠিকভাবে ডাকবেনা,বিকৃত করে ডাকবে।আমি যতই বলি আমি তাকে বুঝিয়ে দেব তার যে নাম তা কত বড় একজন মানুষের নাম। কিন্তু ওরা মানতে চায়না, আমি রীতিমত দুশ্চিন্তায় আছি এটা নিয়ে।অন্য নাম রাখতে মন সায় দেয়না (যদিও আমার বিবাহ কবে হবে সিটাই ঠিক নাই আর আমি রাতের ঘুম হারাম করে বসে থাকি পিচ্চিকে কেমনে বুঝাব হাইপেশিয়া কত ভাল নাম…পাগল আর কারে কয়?)
@লীনা রহমান,
আপনার পিচ্চি আপনার বান্ধবীদের থেকে অনেক এগিয়ে থাকবে, চিন্তার কোনো কারণ নেই। বান্ধবীদের বুঝাতে যত কষ্ট, পিচ্চিকে বুঝাতে অত কষ্ট হবে না। 🙂
দারুন মজাদার একটা লেখা!
আপনি সার্থক রম্য লেখায়!
@লাইজু নাহার,
অনেক ধন্যবাদ। 🙂
হে হে হে 🙂 মজা পেলাম।
পরের পর্বের জন্য অপেক্ষা করছি।
@নিটোল,
বাকী অর্ধেক পর্ব লেখাই আছে। এই লেখাটা প্রথম পেইজ থেকে চলে গেলেই আপলোড করে দেবো। ধন্যবাদ। 🙂
ডিজিটালাইজেশন দিয়ে শুরু করে ভ্রমনকাহিনি যে এতো মনোমুগ্ধ,প্রাঞ্জলময় স্বাসরুদ্ধকর কাহিনি হতে পারে তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না।এককথায় দারুন।
বাকী অধ্যায়ের জন্য অধীর আগ্রহে পড়ার জন্য বসে আছি।
:clap
@মাহবুব সাঈদ মামুন,
মামুন ভাই, অনেক ধন্যবাদ। 🙂
এক খান থ্রীলারই লেখসেন রে ভাই!! :lotpot: আমারতো দম বন্ধ হয়ে আসছিলো কী জানি কী করে আপনাদের 😛
@টেকি সাফি,
না বেশি কিছু করে নাই, লোকজন খুবই ভদ্র আর হেল্পফুল ছিলো। বারবার এসে জিজ্ঞেস করছিলো, সব ঠিক আছে কি-না। 🙂
আপনার অনলাইন প্রতিযোগীতায় অংশগ্রহন নিয়ে কিছু বলুন। কি রকম এসাইনমেন্ট নিয়ে কাজ করতে হয়েছে সেখানে ?
@সংশপ্তক,
অনলাইন প্রতিযোগিতায় কিছু নেটওয়ার্ক প্যাকেট ক্যাপচার করে আমাদেরকে অ্যানালাইজ করতে দেয়া হয়েছিলো। আপনি কখনো wireshirk ব্যবহার করেছেন কি-না জানিনা। wireshirk ব্যবহার করে প্যাকেট বা ড্যাটাগুলো বিশ্লেষণ করে ওদের দেয়া ত্রিশটা প্রশ্নের উত্তর দিতে হয়েছিলো।
@মইনুল রাজু,
হুম, আমার BSD বক্সটায় wireshirk এবং ettercap ব্যবহার করি। নেটওয়ার্ক প্যাকেট নিয়ে আমার আগ্রহের কমতি নেই। ভবিষ্যতে একটা সময় আসবে যখন প্যাকেট বলতে নেটওয়ার্ক প্যাকেটকেই বোঝাবে।
@সংশপ্তক,
আমি ettercap কখনো ব্যবহার করিনি। ইন্টারেস্টিং কিছু পেলে লিঙ্কগুলো ইমেইল করে দিতে পারেন। সিকিউরিটির জন্য সবাইকে backtrack4 ব্যবহার করতে দেখি। ভালোই কাজে দেয়।
আপনি কোথায় কাজ করছেন? কিসের জন্য ব্যবহার করছেন এগুলো?
@মইনুল রাজু,
Backtrack 5 -এ যা যা প্রয়োজন সব পাবেন।
আমার কাজ ব্যাকটেরিয়াদের নিয়ে হলেও নেটওয়ার্ক প্রটোকলস এবং কম্পিউটার ফরেনসিক আমার আগ্রহের এলাকাগুলোর অন্যতম যাকে অনেকটা শখ বলতে পারেন। আইটি ম্যানেজারদের উপর ইদানীং ভরসা করতে ভয় পাই।