মেয়ে । তুমি আজ প্রাণ খুলে হাস,
উচ্চৈঃস্বরে কথা বল।
বিশ্ববাসীকে শুনিয়ে দাও
তোমার উচ্চহাসি,
তোমার তেজদীপ্ত-কণ্ঠস্বর।
শুনিয়ে দাও সবাইকে,
তুমিও হাসতে পার
কথা বলতে পার।
তুমি তো বধির নও,নও তো কালা।
নীরবে, নিঃশব্দে আর সয়ে যেওনা-
সমাজ, রাষ্ট্র,সংস্কৃতি আর পরিবারের অবহেলা।
এবার তুমি প্রতিবাদী হও
চুরমার করে দাও-
তোমাকে দমিয়ে রাখতে,
পুরুষের তৈরী যত একতরফা-কুসংস্কার।
প্রতিবাদী হলে সকলে তোমায়,
ব্যাঙ্গ-বিদ্রূপ করবে, অবাধ্য বলবে।
তুমি ভ্রূক্ষেপ করোনা।
এগিয়ে যাও সম্মুখ- পানে।
মিলাও সুর সমতার গানে।
তোমাকে অবদমিত করে রাখার-
শতাব্দী, সহস্রাব্দী ধরে প্রতিষ্ঠিত; অবদমন-নীতিগুলো
এক এক করে ভেঙে দাও।
তুমি তোমার বাবা মায়ের পূর্ণাঙ্গ-সন্তান,
তুমি কোন ক্রয়-বিক্রয় যোগ্য বস্তু নও।
তুমি একজন ব্যক্তি।
তুমি নও কোন ব্যবহার্য- জিনিস
তুমি একজন মানুষ।
তুমি আর কত সহ্য করবে
তোমার উপর অসহনীয় অত্যাচার?
আর কত সইবে সর্বক্ষেত্রে চরম- বৈষম্য?
তোমারও তো আছে অনুভূতি,
আছে মানবাধিকার!
এবার তুমি বিদ্রোহী হও, অবাধ্য হও।
নিজের অধিকার নিজে প্রতিষ্ঠিত কর,
নিজের পায়ে নিজে দাঁড়াও।
পরাশ্রয়ী হয়ে নয়, স্বাবলম্বী হয়ে বাঁচ।
অন্যের ইচ্ছার কলের পুতুল নয়
নিজের ইচ্ছার মানুষ হয়ে বাঁচ।
অন্ধকার-কুঠরীতে আর মুখ থুবড়ে পড়ে থেকোনা,
এগিয়ে যাও আলোকিত- দিগন্তে।
দাসত্বের শৃঙ্খল ছিঁড়ে ফেল, বীরদর্পে হাঁট।
অপমানের জাবাব দাও,
সম্মানের সাথে বাঁচ।
চমৎকার কবিতা, তামান্না। কোথায় যেন তসলিমার কবিতার ছায়া দেখতে পেলাম!
@অভিজিৎ,
অনেক ধন্যবাদ ।
:clap :thanks: (F) (Y)
@kobutor,
ধন্যবাদ ।
সাহিত্য মান বিচারের বাইরে কবিতার স্পিরিটটুকু ভালো লাগলো। চলুক।
(Y)
@বিপ্লব রহমান,
ধন্যবাদ।
আমার কাছে প্রথম আলোর ই-মেইল এডরেস আছে।ই-
মেইল :[email protected].
চাইলে প্রকাশ করতে পারেন।
@তটিনী,
আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
ভাল লাগল!
পারলে দেশের বহুল প্রচারিত পত্রিকায় প্রকাশের চেষ্টা করুন।
@লাইজু নাহার,
আপনার কাছে কি দেশের কোন পত্রিকার ইমেইল এড্রেস আছে? আমি ইন্টারনেটে খুঁজেছিলাম পাইনি। আপনার মন্তব্য ও সুপরামর্শের জন্য ধন্যবাদ।
অসাধারণ একটি কবিতা!!মুগ্ধ হলাম।অভিনন্দন রইলো
@তটিনী,
অনেক ধন্যবাদ।
আমি ছেলে, তাই আমি বুঝি।
জাগো গো ভগিনী লেখারস্থলে জাগো গো ভাইগণ লিখলে আরো ভালো হতো।
পুরুষদের নিয়ে নারীবাদিরা যেমন বলে শাষক…শোষক ইত্যাদি ঠিকই আছে তবে এর পিছনের বিজ্ঞানটা অন্যরকম। এর পিছনে আসল কারনটা হলো আমাদের পুরুষরা শিক্ষিত নয় (অধিকাংশ ক্ষেত্রে)।নিশ্চয়ই বুঝতে পারছেন আমি SSC, HSC পাশের কথা বলছি না।
আমার আসে পাশের মানুষগুলোকে দেখি এরা নিজেদের অজান্তেই পুরুষতন্ত্রের পোষক হয়ে বসে আছে। অজ্ঞতায় এখানে বড় পাপ। কেননা ইহা সবাই জানি একজন বিবেকবান মানুষ শোষক হতে পারে না। বিবেকবান হতে হলে শিক্ষিত হতে হবেই, জানতে হবেই আর তাই জানাতেও হবে কাউকে।
ভাল থাকবেন 🙂 কবিতাটির জন্য :thanks:
@টেকি সাফি,
মানুষকে অধিকার সচেতন হতে হবে। সেজন্যে প্রয়োজন শিক্ষা এবং বস্তুনিষ্ঠ, নিরোপেক্ষ চিন্তা চেতনা।
তুমি আর কত সহ্য করবে
তোমার উপর অসহনীয় অত্যাচার?
আর কত সইবে সর্বক্ষেত্রে চরম- বৈষম্য?
তোমারও তো আছে অনুভূতি,
আছে মানবাধিকার!
বেশ ভেল লাগল কথাগুলো। যদিও স্বীকার করছি পুরুষ কতৃক প্রচারিত ধর্ম গুলো মায়েদের স্বাধীনতা কে হরণ করেছে কিন্তু মেয়েরা কি তাদের এই দূর্দশার জন্য নিজেদের দায় এড়াতে পারে?
মেয়েরা ধর্মীয় সন্ত্রাসে খুব একটা জড়িত না থাকলেও ধর্মীয় মৌলবাদ রক্ষায় তাদের উৎসাহের কমতি দেখা যায় না। পশ্চিমে অবাধ নারী স্বাধীনতা ভোগ করা দেশ গুলোতে সরকার যেখানে নারীদের আরো অধিক স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে চায় সেখানে অনেক মেয়েরা বোরকা হিজাব পরার স্বাধীন তার জন্য লড়ে যাচ্ছে। :-Y
তারা এগুতে চায় না পিছাতে চায় তারাই ভালো বলতে পারবে। :-X
কবিতা লেখার চর্চা আমার খুব একাটা না থাকলেও মাঝে মাঝে দু’একাটা লিখে ফেলি শখের বশে। মেয়েদের অধীকার নিয়ে আমিও একটা কবিতা লিখেছিলাম অনেক আগে পড়ে দেখতে পারেন –
http://blog.mukto-mona.com/?p=9897
@রাজেশ তালুকদার,
খুবই সত্যি কথা। একমত।
@রাজেশ তালুকদার,
আপনার “সম অধিকার” কবতাটিও বেশ ভাল লেগেছে। নারীপুরুষে সমতার প্রধান অন্তরায় হচ্ছে ধর্ম আর দ্বিতীয়টি হচ্ছে যারা এখনো ধর্মকে আকড়ে ধারে আছে তারা।
@রাজেশ তালুকদার,
মনে হচ্ছে, তারা যেন পরাধীন হওয়ার স্বাধীনতা চাইছে। মানুষ নিজেকে তালাবদ্ধ করে রাখার স্বাধীনতা চাইলে রাষ্ট্রযন্ত্র কী করতে পারে? :-Y
তারপরও ফ্রান্সে প্রকাশ্যে বোরখা/হিজাব পড়া নিষিদ্ধ করেছে বলে পড়েছি। 🙂
@তুহিন তালুকদার,
(Y) (Y)
নিজের পৃথিবী নিজেই অন্ধকার করে রাখতে চাইলে সেখানে কার কী করার আছে?
তুমি তোমার বাবা মায়ের পূর্ণাঙ্গ-সন্তান,
তুমি কোন ক্রয়-বিক্রয় যোগ্য বস্তু নও।
তুমি একজন ব্যক্তি।
তুমি নও কোন ব্যবহার্য- জিনিস
তুমি একজন মানুষ।
বাহ, চমৎকার। :clap :clap :clap বেরিয়ে আসুন কেউ রোকেয়ার পথে আর কেউ তসলিমার পথে-
উপরের লাইনগুলোর একটি হাদিসের আরেকটি কোরানের সরাসরি উলটো। :-Y :-Y
@আকাশ মালিক,
সবচেয়ে বড় সমস্যা হচ্ছে অধিকাংশ মেয়েরাই তাদের নিজেদের অপমানজনক অবস্থানে বেশ সন্তুষ্ট। তাদের মাঝে সচেতনতা সৃষ্টি করা দুঃসাধ্য ব্যাপার।
@তামান্না ঝুমু,
বুঝছি, বিপ্লব দার চক্করে পড়েছেন। আমি বলি এ জন্যে মেয়েদের যত দোষ দেয়া হয় তার চেয়ে বেশী দোষ পুরুষের। এ জন্যেই সমান অধিকারের দাবীতে পুরুষকেও এগিয়ে আসতে হবে। পুরুষের দোষটা কী, তার শেখড় সন্ধান করতে হলে যেতে হবে অনেক পিছনে অনেক গভীরে। পরে কথা হবে এখন যাই, বউ ডাকছে। আমি আবার বউয়ের ফুটবল হতে চাইনা।
@আকাশ মালিক,
নারী-পুরুষে বৈষম্য সৃষ্টি করেছে পুরুষ, তাদের নিজেদের স্বার্থে। চিরদিন কর্তৃত্ব টিকিয়ে রাখার জন্য অত্যন্ত চালাকী করে অলৈকিকতার দোহায় দিয়েছে ,ঈশ্বরের দোহায় দিয়েছে। কিন্তু নারীরা তাদের জন্য অমর্যাদাকর বিধিগুলো মেনে চলছে কেন?
আমেরিকাতে বেশকিছু ইসলামিক সংগঠন রয়েছে। তার মধ্যে “মুসলিম উম্মাহ” অন্যতম। এর মাঝে অনেক গুলোর নেতৃত্ব দিচ্ছে নারীরা। পারিবারিক চাপে পড়ে আমাকে মুসলিম উম্মার নারী সভায় যেতে হয়েছিল। সেখানে বেশ উচ্চশিক্ষিত নারীরাও রয়েছে। কয়েক ঘন্টা ধরে তাদের মুখে ইসলামের গুণগান শুনলাম। ইসলাম নাকি নারীকে অনেক সম্মান দিয়েছে। প্রধান দুটি সম্মান হলো ১। সম্পদের অধিকার ২। দেন মোহর। তারা আরো কয়েকটি ধর্মের উদাহরন দিয়ে বলেন,”অন্য কোন ধর্মেই নারীকে সম্পদের অধিকার দেয়া হয়নি।দেন মোহরের ব্যবস্থা নেই কোথাও। দেখুন দীনী বোনেরা আল্লাহতালা আমাদের কতটুকু মর্যাদা দিয়েছেন।”
কিন্তু দুটো ব্যবস্থাই আমার কাছে নারীর জন্য চরম অসম্মানের মনে হয়। নারীকে পুরুষের অর্ধেক সম্পদের অধিকারী করে তাকে হেয় করা হয়েছে। আর দেনমোহরের মাধ্যমে তো সরাসরি তাকে চিরস্থায়ী ক্রীতদাসীতে পরিনত করা হয়েছে। অথচ এ দুটি বিষয়েই তারা বেশী আনন্দিত।
অনেক ধার্মিক পরিবারের মেয়ে আছে যারা বিয়ের আগে হিজাব পড়ে কিন্তু বিয়ের পরে ছেড়ে দেয়। কেউ জিজ্ঞেস করলে বলে, স্বামী পছন্দ করেনা হিজাব পড়া স্বামী যেভাবে চালায় সেভাবে চলি। তাদের নিজেদের কি কোন পছন্দ অপছন্দ নেই? পৃথিবীতে নারী-পুরুষের সম অধিকারার প্রতিষ্ঠার জন্য সাম্যবাদী নারী ও পুরুষ সকলকে একসাথে কাজ করতে হবে। অনেক পুরুষ এগিয়ে এসেছেনও।
@তামান্না ঝুমু,
ধরে নিন, সামাজিক বা রাজনৈতিক বিপ্লব সাধিত হলো, যাকে বলে গুণগত পরিবর্তন। আপনার কি মনে হয়, মানুষগুলো ( নর ও নারী ) তাদের হাজার বছরের পুরনো বিশ্বাস, অভ্যাস, ধ্যান-ধারণা থেকে সম্পূর্ণ বেরিয়ে আসতে পারবে?
আমার তো মনে হয়, এ এক নিরন্তর সংগ্রাম বা সাংস্কৃতিক আন্দোলন।
ভাল কথা, মানুষের মধ্যে পুরনো চিন্তার বাজারটা যে কত বড় তা ধর্মীয় সংগঠনগুলোর বাজারমুখী আন্দোলনের গতি দেখেই আমরা আগুনের আঁচ করতে পারি।
@স্বপন মাঝি,
একদম ঠিক (Y)
@স্বপন মাঝি,
আপনার সাথে একমত। মানুষ যাতে হাজার বছরের পুরনো কুসংসকার থেকে বেরিয়ে আসতে পারে সেটাই আমাদের চেষ্টা।
@স্বপন মাঝি,
মানুষ যদি তাদের হাজার বছরের পুরনো বিশ্বাস, অভ্যাস, ধ্যান-ধারণা থেকে সম্পূর্ণ বেরিয়ে আসতে না পারে, তাহলে তাকে আর সামাজিক বা রাজনৈতিক বিপ্লব বা গুণগত পরিবর্তন বলছেন কেন? আসলে আদৌ তেমন কোন সামাজিক বা রাজনৈতিক বিপ্লব হবে কি না তাই ভাবার বিষয়। যদি আক্ষরিক অর্থেই বিপ্লব হয়, তাহলে নিশ্চয় আর হাজার বছরের পুরনো বিশ্বাস, অভ্যাস, ধ্যান-ধারণা জনিত সমস্যাগুলো থাকবে না।