(ফুন্দুরী রাঙ্গা ঝুরবো ফেগ, তম্মা মইলে মুইদো এজ…চাকমা ছড়াগান…রাঙালেজের কান্ত পাখি, তোমার মা মারা গেলে আমার কাছে এসো…)
১। কোনো পেশাগত কারণে নয়, স্রেফ বেড়াতে যাওয়ার জন্যই সেবার পাহাড়ে যাই চাকমা আদিবাসীদের সবচেয়ে বড় উৎসব বিঝুর আমন্ত্রণে। ১৯৯২ সালের ১১ এপ্রিল সকালে কলাবাগান থেকে বিশাল দলবলসহ লক্কড়-ঝক্কড় বাস ‘ডলফিন’ ছাড়ে পার্বত্য জেলা খাগড়াছড়ির উদ্দেশ্যে। সেটা শান্তিচুক্তি স্বাক্ষরেরও বছর পাঁচেক আগের ঘটনা [লিংক]। পাহাড় তখন দারুন অশান্ত, যুদ্ধ — বিক্ষুব্ধ। জনসংহতি সমিতির সাবেক গেরিলা গ্রুপ শান্তিবাহিনীর সঙ্গে সেনাবাহিনীর রক্তক্ষয়ী বন্দুক যুদ্ধ লেগেই আছে [লিংক]।
বাসে আমার সহযাত্রী প্রধীরদা (প্রধীর তালুকদার, অখণ্ড পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের সাবেক নেতা, পরে তিনি শান্তিবাহিনীতে যোগ দেন) পাহাড়ের রাজনৈতিক পরিস্থিতি সম্পর্কে বর্ণনা করছিলেন। বলছিলেন জলপাই শাসনের ভয়াল রূপ। আশৈশব থেকে দেখা তার চিরচেনা পাহাড় দিনের পর দিন বহিরাগত বাঙালি সেটেলারদের দখলে চলে যাওয়ার বেদনাদায়ক ইতিহাস।
কুমিল্লা সেনানিবাস পার হওয়ার পথেই বুঝতে পারি আতংকিত জনপদে প্রবেশের যন্ত্রণা। বেশ কয়েক জায়গায় বাঁশ-কল দিয়ে গাড়ি আটকে নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা যাত্রীদের নাম-ধাম ইত্যাদির তালিকা তৈরী করেন। লাগেজ-ব্যাগেজও তল্লাসী হয় কয়েকবার। চেকপোস্টগুলোতে তখন এমন সাইনবোর্ড দেখি: থামুন। আপনার পরিচয় দিন। পাহাড়ি-বাঙালি দুই লাইনে দাঁড়ান। নিরাপত্তা তল্লাসীতে সহায়তা করুন– ইত্যাদি।
সফরসঙ্গী ইলিয়াস ভাই (প্রয়াত লেখক আখতারুজ্জামন ইলিয়াস), আনু ভাই (অর্থনীতিবিদ ও লেখক আনু মুহাম্মদ), শাজাহান ভাই (প্রয়াত ব্যারিস্টার লুৎফর রহমান শাজাহান), সারা আপা (ব্যারিস্টার সারা হোসেন), আহাদ ভাই (আহাদ আহমেদ খন্দকার, তৎকালীন অখন্ড ছাত্র ফেডারেশন সভাপতি) — তারাই নিরাপত্তা বাহিনীর বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন।
বাস রামগড় প্রবেশের সময় চোখে পড়ে পথের দুপাশের উঁচু উঁচু পাহাড়ে ও টিলায় এক কিলোমিটার অন্তর অন্তর সেনাবাহিনীর ওয়াচ-পোস্ট।
বাস খাগড়াছড়ি পৌঁছানোর আগেই পথের মধ্যে দু-এক জায়াগায় কয়েকজন পাহাড়ি বাস থামিয়ে সঙ্গী অপরাপর পাহাড়ি বন্ধুদের সঙ্গে কথোপকথন সেরে নেন। এভাবে বাসের মধ্যেই লোকমুখে জানতে পারি, রোমহর্ষক এক গণহত্যার কাহিনী।
আগের দিনই (১০ এপ্রিল, ১৯৯২) তুচ্ছ এক গ্রাম্য বিরোধকে কেন্দ্র করে খাগড়াছড়ির পানছড়ি উপজেলার লোগাং নামক একটি পাহাড়ি গ্রামে সেনাবাহিনী, আনসার, ভিডিপি ও সেটেলাররা একযোগে আক্রমণ চালায়। ওরা নিরস্ত্র, হত-দরিদ্র সাধারণ পাহাড়িদের বাড়ি-ঘর জ্বালিয়ে-পুড়িয়ে নির্বিচারে গুলি করে। সেটেলারদের দায়ের আঘাতে প্রাণ যায় অনেকের। হতাহতের সংখ্যা কত হবে, কেউ তাৎক্ষণিকভাবে কিছু বলতে পারছেন না। পুরো এলাকায় নাকি কারফিউ জারি করা হয়েছে।…
খাগড়াছড়ি পৌঁছানোর পর পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের ছেলে-মেয়েরা ফুল দিয়ে আমাদের স্বাগতঃ জানায়। তবে লোগাঙের কথা শুনে সবারই চোখ-মুখ কেমন যেনো শুকনো বলে মনে হয়। শান্তিবাহিনীর প্রতিশোধমূলক পাল্টা আক্রমণ, আর নিরাপত্তা বাহিনীর পাল্টা আক্রমণের আশংকায় ছোট্ট পাহাড়ি শহর খাগড়াছড়ি একেবারেই শুনশান হয়ে পড়ে। ঝপ করে সন্ধ্যা নামে কালা পাহাড়ের দেশে।
২। জেলা সার্কিট হাউজে অতিথিদের থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে। সাড়ে সাতটার বিবিসির রেডিওতে খাগড়াছড়ি সংবাদদাতার বরাত দিয়ে প্রচার করা উল্টো খবর। লোগাঙে নাকি শান্তিবাহিনীর আক্রমণে মাত্র ১০ জন পাহাড়ি ও তিনজন বাঙালিসহ মোট ১৩ জন মারা গেছেন!
পাহাড়ের তথ্য-সাংবাদিকতার সুবাদে আমার জানা ছিলো, খাগড়াছড়ি, রাঙামাটি ও বান্দরবান — এই তিন পার্বত্য জেলার সাংবাদিকদের তখন আসলে নিয়ন্ত্রণ করতো নিরাপত্তাবাহিনী। সেনা নিয়ন্ত্রণের বাইরে তথ্য-সংবাদ পরিবেশনের উপায় ছিলো না। তিন জেলার তিনটি প্রেসক্লাবও উদ্বোধন করেছেন তিন জন মেজর জেনারেল। আমার পাহাড়ি বন্ধুদের ভাষায়, প্রেসক্লাবগুলো হচ্ছে সাংবাদিকদের কবরখানা!
তো সব মিলিয়ে বিবিসির ওই খবর বিশ্বাস করতে ইচ্ছে করে না।…
সার্কিট হাউজে যখন অতিথিদের রাতের খাবার হিসেবে পাহাড়ি ছেলে-মেয়েরা যখন প্লেটে পোলাও-মাংস তুলে দিচ্ছিলেন, তখন বাইরের বারান্দায় দেখি একজন পাহাড়ি লোককে এক গামলা মুড়ি খেতে দরিদ্র। তার কোলে একরত্তি একটি দুধের শিশু। লোকটিকে কান্তি আর অজানা এক অনুভূতি ঘিরে রাখে। সে যত না মুড়ি খায়, তার চেয়েও বেশী পানি খায় ঢক ঢক করে। কোলের শিশুটিকেও পানি খাওয়ায় কয়েকবার।
তার পরিচর্যা করছিলেন যে সব ছেলে-মেয়েরা তাদের কাছ থেকে জানতে পাই, এই ভাগ্যহতের ইতিকথা। দ্রুত নোট প্যাড বের করে টুকে নিতে থাকি নাম বিস্তৃত পাহাড়ি লোকটির চাকমা ভাষার ভাষ্য। এনালগ ইয়াশিকা ক্যামেরায় তার দু-একটি সাদাকালো ছবিও তুলি। লোকটি হচ্ছেন লোগাং গণহত্যার প্রত্যক্ষদর্শি; প্রাণে বেঁচে যাওয়া সৌভাগ্যবানদের একজন।
তাদের গ্রামে আক্রমণ হতেই শিশুটিকে কোলে করে দুর্গম পাহাড়-জঙ্গল ভেঙে প্রায় ৩০ কিলিমিটার পথ পাড়ি দিয়ে তিনি প্রথমে পৌঁছান জেলা সদরে। পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ নেতারা সার্কিট হাউজে আছেন — এই খবর শুনে তিনি আসেন সেখানে। অনর্গল চাকমা ভাষায় শুধু একটা কথাই বলেন তিনি, বাবারা আমাকে একটু আশ্রয় দাও! চিদরেরা (সেনা বাহিনী) আমার কথা জানতে পারলে হয়তো আমাকেও মেরে ফেলবে!
ছাত্র নেতারা নিজেদের মধ্যে আলাপ করে সিদ্ধান্ত নেন, পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের কাছে ভাষ্য দেওয়ার ’অপরাধে’ লোকটিকে নিরাপত্তা বাহিনী হয়তো ছেড়ে কথা বলবে না। তাই দ্রুত তাকে পাঠিয়ে দেওয়া হয় কোনো একটি নিরাপদ আশ্রয়ে।
সেদিন আমার রাত কাটে বর্ষিয়ান পাহাড়ি নেতা অনন্ত মাস্টার তথা রামগড়ের স্কুল শিক্ষক অনন্ত বিহারী খীসার (অখন্ড পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের সাবেক নেতা, বর্তমানে শান্তিচুক্তি বিরোধী ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট– ইউপিডিএফের সভাপতি প্রসিত বিকাশ খীসার বাবা) নারানখাইয়ার বাসায় [লিংক]।
৩। পরদিন ১২ এপ্রিল ছিলো ফুল বিঝু। খুব ভোরে নাস্তার টেবিলে অনন্ত মাস্টার সুন্দর করে বুঝিয়ে বলছিলেন চাকমাদের চৈত্র সংক্রান্তির তিন দিনের বিঝু উৎসব–ফুল বিঝু, মূল বিঝু ও গইজ্যাপইজ্যা বিঝুর কথা।
এমন সময় কোথা থেকে যেনো একদল পাহাড়ি শিশু-কিশোর কিচির-মিচির করতে করতে হাজির হয় সেখানে। ঝুপ ঝুপ করে তারা অনন্ত মাস্টারকে ফুল বিঝুর প্রণাম করে। ‘বাঙাল’ অতিথির দিকে ওরা ফিরেও তাকায় না। …
সার্কিট হাউজে এসে শুনতে পাই, ইলিয়াস ভাই, আনু ভাই, শাজাহান ভাই — সকলে পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ নেতাদের সঙ্গে কথা বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, ওই সকালেই লোগাং যাওয়া হবে। সরেজমিনে দেখা হবে আসলে কী ঘটেছে সেখানে। আমাদের সঙ্গে যোগ দেন পাহাড়ি গজদন্ত-কারুশিল্পী বিজয় কেতন চাকমা।
কয়েকটি ভাঙাচোরা জিপ (স্থানীয় নাম– চাঁদের গাড়ি) ভাড়া করে আমরা রওনা দেই লোগাঙের উদ্দেশ্যে।
আবারও পথে পথে চলে নিরাপত্তা তল্লাসী, জেরা, তালিকা নির্মাণ– ইত্যাদি। লোগাঙের আগেই চাঁদের গাড়িগুলোকে আটকে দেওয়া হয় পানছড়ি বাজার সংলগ্ন সেনা চেকপোস্টে।
সেখানে হাজির হন ৩৩ নম্বর ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের জোন কমান্ডার মেজর খালিদ রেজা। তিনি তখন পানছড়ির ক্যাম্পের দায়িত্বে। লোগাং যাওয়া না যাওয়ার প্রশ্নে তুমুল তর্কাতর্কি বাধে দুপক্ষের মধ্যে।
মেজর খালিদের কথা একটাই, লোগাঙে যাওয়া নাকি নিরাপদ নয়। যে কোনো মুহূর্তে সেখানে নাকি শান্তিবাহিনী আবারও পাল্টা হামলা করতে পারে। তাছাড়া তার সন্দেহ, আমারাই হয়তো শান্তিবাহিনীর আমন্ত্রণে লোগাং যাওয়ার জন্য ঢাকা থেকে খাগড়াছড়ি এসেছি। তাই লোগাং ‘অঘটনের’ জন্য পরোক্ষভাবে আমরাও হয়তো জড়িত। নইলে ঘটনার পর পরই আমরা সেখানে হাজির হবো কী ভাবে? বিঝু-টিঝু আসলে নাকি ফালতু অজুহাত!
তর্কাতর্কির সময় পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ নেতা (বর্তমানে ইউপিডিএফের দলছুট নেতা) সঞ্চয় চাকমাকে দেখতে পাই চেক পোস্টের কাছেই একজন পাহাড়ি লোকের সঙ্গে কথা বলতে। লোকটির পিঠে এক টুকরো কাপড়ে বাধা ছোট্ট একটি শিশু। তার হাত ধরে আছে একটু বড় আরেকটি শিশু। তার সর্বাঙ্গে শুকিয়ে যাওয়া রক্তের ছোপ ছোপ ছিট!
লোকটি কথা বলছিলেন ফিসফিসিয়ে। সেখানে উপস্থিত হতেই তার কথাবার্তা বন্ধ হয়ে যায়। পরিস্থিতি বুঝে সঞ্চয়কে ক্যামেরা দিয়ে বলি, তার একটি ফটো তুলে রাখতে। আর তার ভাষ্য সবই যেনো সঞ্চয় নোট করে রাখে।
পরে জানতে পাই, তিনিও লোগাং গণহত্যার আরেক প্রত্যদর্শি। সামান্য এক গ্রাম্য কোন্দালকে উপলক্ষ করে সেটেলার ও নিরাপত্তা বাহিনীর লোকজন একসঙ্গে কেরোসিন দিয়ে আগুন ধরায় লোগাং গ্রামে। নিরাপত্তা বাহিনীর লোকজন গুলি চালায়, আর সেটেলাররা কসাইয়ের মতো কুপিয়ে কাটে নিরাপরাধ পাহাড়িদের। প্রাণে বেঁচে যাওয়া লোকটির চোখের সামনেই কুপিয়ে খুন করা হয় তার স্ত্রী ও এক শিশুকে। কোনো রকমে গহিন জঙ্গলে শিশু দুটিকে নিয়ে লুকিয়ে থেকে প্রাণে রক্ষা পান তিনি। জঙ্গলে পালানোর সময়ে বুনো কাঁটার আঘাতে তার ছড়ে যায় সর্বাঙ্গ। গত দুদিন তাদের দানা-পানি কিছুই জোটেনি।
সঞ্চয় তাকে সামান্য কিছু টাকা দিয়ে খাবার কিনে বাচ্চাদের খাওয়াতে বলেন। তাকে পরামর্শ দেন, অন্য কোনো পাহাড়ি গ্রামে আপাতত লুকিয়ে থাকতে।…
সেনা বাধার মুখে সেদিন লোগাং যাওয়া সম্ভব হয়নি। তবে খবংপুইজ্জা নামক পাহাড়ি গ্রামে রাতে আমাদের দেখা হয় লোগাং গণহত্যার প্রত্যক্ষদর্শি আরো কয়েকজনের সঙ্গে।
এদের মধ্যে এক চন্দ্র সাগর চাকমা নামে এক কিশোর রয়েছে; তার মা-বাবা, ভাই -বোন সবাইকে কুপিয়ে হত্যা করেছে সেটেলার বাঙালিরা। কিশোরটি জঙ্গলের ভেতর লুকিয়ে থেকে দূর থেকে প্রত্যক্ষ করে এই বেদনাদায়ক নৃশংস দৃশ্য।…
রাতে ‘ইয়ং স্টার’ ক্লাবে ছাত্র নেতা প্রধীরদা কাপড়ে মুড়িয়ে নিয়ে আসেন আগুনে পুড়ে কালো হয়ে যাওয়া এক শিশুর কংকাল। লোগাং হত্যাযজ্ঞ এই নাম না জানা অবোধ শিশুটিকেও রেহাই দেয়নি।…
৪। পরে ঢাকায় ফিরে আরো এক সহকর্মী প্রিসিলা রাজের সঙ্গে ‘পাহাড়ে বিপন্ন জনপদ: শোকার্ত লোগাং’ শীর্ষক দুই পর্বের সচিত্র প্রতিবেদন লিখি সাপ্তাহিক ‘প্রিয় প্রজন্মে’ (তখন এর সম্পাদক ছিলেন ফজলুল বারী, বর্তমানে প্রবাসী)।
ওই প্রতিবেদনটিতে হামলার শিকার লোগাং গ্রামবাসী, স্থানীয় একজন স্কুল শিক্ষিকা, পানছড়ি হেলথ কমপ্লেক্সের সরকারি চিকিৎসক, খাগড়াছড়ি সদর হাসপাতালে ভর্তি আহত কয়েকজনসহ অন্তত ১০ জন প্রত্যদর্শিকে উদ্ধৃত করে আমরা জানাই, লোগাং গণহত্যার লোমহর্ষক সব তথ্য। এতে বলা হয়, পাহাড়ের অসুস্থ রাজনীতি এই একটি গণহত্যাতেই কেড়ে নিয়েছে অন্তত ২০০ জন নিরপরাধ পাহাড়ির জীবন। নিখোঁজ ও আহতদের একটি আনুমানিক সংখ্যাও উল্লেখ করা হয় প্রতিবেদনটিতে। পাশাপাশি দেওয়া হয় স্থানীয় প্রশাসন পুলিশ ও নিরাপত্তা বাহিনীর ভাষ্য।
প্রতিবেদনটি প্রকাশের পরই পরেই সে সময় ফজলুল বারী ভাইয়ের ওপর উর্দ্ধতন মহলের চাপ আসে। জানতে পারি, সেনা সদস্যরা সে সময় পার্বত্য চট্টগ্রামের সব কয়েকটি ‘প্রিয় প্রজন্মের’ কপি কিনে ফেলেছিলো, যেনো এর কোনো সংখ্যাই আর সাধারণ পাঠকের হাতে না পৌঁছে।
তবে পাহাড়ি বন্ধুরা প্রতিবেদনটি ফটোকপি করে নিজস্ব উদ্যোগে পাহাড়ে বিলি করেন; এভাবে তারা প্রচার করেন ওই প্রতিবেদনটি। এই কাজ করতে গিয়ে সে সময় পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ নেতা সঞ্চয় চাকমা ‘শান্তিবাহিনী’ অভিযোগে প্রথমবারের মতো গ্রেফতারও হন। তিনি তখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অনার্সের ছাত্র।
বলা বাহুল্য, সেবার আর বিঝু উৎসব দেখা হয়নি। লোগাঙের শোকে পাহাড়িরা বিঝু বর্জন করেন সেবার।
(পুনর্লিখিত)
—
ছবি: ১। পার্বত্য চট্টগ্রামের মানচিত্র, লেখক। ২। প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে লোগাং গণহত্যার প্রতিবাদ জানাচ্ছেন পাহাড়ি জনতা, ১৩ মে ১৯৯২, খাগড়াছড়ি, সংগৃহিত।
ভিডিও ক্লিপিং: লোগং অভিমুখে শোক মিছিল, ২৮ এপ্রিল ১৯৯২, প্রত্যক্ষদর্শির বর্ণনা, ইউটিউব [লিংক]।
—
আরো পড়ুন: ম্যাসাকার ইন দা সিএইচটি [লিংক]।
আসলেই বাঙালীদের সময় হয়েছে আয়নায় নিজেদের চেহারা দেখার। চরম লজ্জাজনক!
@স্বাধীন, (Y)
মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীন হওয়া একটা জাতি হিসাবে এটা আমাদের জন্য খুবই লজ্জার। আমাদের বাহিনী গুলির খুনের লাইসেন্স আছে। একবার ভাবি বঙ্গবন্ধুর খুনের বিচার হয়তো ওদেরকে ভাবাবে আবার দেখি আওয়ামিলীগের আমলেও বিনা বিচারে হত্যা চলছে। সরকারের এমন দ্বিচারিতে কারো জন্য কোন সুফল বয়ে আনবে না। হত্যা করে পার পেয়ে যাওয়ার ঘটনা অন্যদের জন্য খারাপ উদাহরন। হয়তো ২১শে আগাষ্টে শেখ হাসিনা মারা গেলে তার বিচারের জন্যও আজকে তার ওয়ারিসদের পথে পথে ঘুরতে হত।
তাই দাবি একটাই, সকল প্রকার বিনা বিচার হত্যা বন্ধ হোক। পূর্বের সকল হত্যা কান্ডের বিচার হোক।
আয়নায় নিজের চেহারা দেখানোর জন্য বিপ্লব রহমানকে অনেক শুভ কামনা।(F)
@আতিক রাঢ়ী,
এই মৃত্যু উপতক্যায়ই আমার দেশ!
আমাদের সংখ্যাগুরু বাঙালি শাসক গোষ্ঠির সময় এসেছে হাত জোড় করে আদিবাসী পাহাড়িদের কাছে এই সব চরমতম মানবাধিকার লংঘনের ঘটনায় মাফ চাওয়া, পাহাড়িদের জায়গা-জমি ফেরত দেওয়া এবং পাহাড় থেকে সেনা-সেটেলার প্রত্যাহার করা। নইলে পাহাড়ে এমন নৃশংস ঘটনা চলতেই থাকবে।
সঙ্গে থাকার জন্য অনেক ধন্যবাদ। (Y)
আপনার লেখার জন্য অনেক ধন্যবাদ বিপ্লব ভাই। (Y)
খালি একটা কথাই বলব, পাহাড়ে বাঙ্গালির পাকিপনা বন্ধ হোক।
@অর্ক,
(Y)
লোগাং, লংগদু, বানিয়ারচর গণহত্যার রক্ত অমোচনীয়ভাবে লেগে গেছে বাঙালিদের হাতে। হাজার ধুলেও এ রক্ত মুছবে না আর কোনোদিন।
লংগদু গণহত্যা নিয়ে চিত্তি চাকমার একটা লেখা আছে এখানে। পড়ে দেখতে পারেন আগ্রহী পাঠকেরা। এর ভিত্তিতেই আমি একটা গল্প লিখেছিলাম মুক্তমনায় নীল পাহাড়ের চূড়ায় নামে।
বিপ্লব রহমানকে অসংখ্য ধন্যবাদ এই লেখাটির জন্য। তাঁর লেখা মানেই হেঁচকা এক টানে আমাদেরকে আয়নার মুখোমুখি দাঁড় করিয়ে দেয়া। আর তখনই আমরা চমকে উঠে দেখতে পাই আমাদের লুকিয়ে রাখা রক্তলোলুপ নিজস্ব ড্রাকুলারূপটাকে।
@ফরিদ ভাই,
আবারো আপনার উপস্থিতি ভালো লাগলো। ওই লেখা দুটি আগেই পড়েছি এবং মন্তব্যও করেছি। আপনার গল্পটি খুবই হৃদয়স্পর্শী। তবে এতে ছোটখাটো কিছু সংশোধনীর প্রয়োজন। অনেক ধন্যবাদ। (Y)
ফজলুল বারীর সাথে ৮৯ – ৯১ সাল পর্যন্ত একটি ভালো সম্পর্ক ছিল।আমি দেশ ত্যাগ করি ৯২ সালে।পরে আবার ২০০৪ থেকে ০৬ সালে মেইলে যোগাযোগ হয়। ২০০৭ সালে দেশে গেলে তখন ওনার “জনকন্ঠের” অফিসে শেষবারের মতো দেখা হয়। জলপাই সরকার দেশের ক্ষমতায় এলে পরে শুনি ওনি নাকি অস্ট্রেলিয়ায় সাংবাদিকতার উপর ডিগ্রি নেওয়ার জন্য পড়তে গেছেন।
আপনার সাথে যোগাযোগ থাকলে আমার শুভেচ্ছা দিবেন।
@মাহবুব সাঈদ মামুন,
বারী ভাইয়ের সঙ্গে মাঝে মাঝে টেলিফোনে কথা হয়। ফেসবুকে ওনার সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগও আছে। এখনই আপনার শুভেচ্ছা বার্তা ওনাকে পৌঁছে দিচ্ছি। অনেক ধন্যবাদ। (Y)
আমার পরিচিত এক রাখাইন পরিবারও সেই হত্যাকাণ্ডে প্রাণ হারিয়েছিল।
প্রিয় প্রজন্ম-এ প্রকাশিত আপনাদের যৌথ প্রতিবেদনটিও আমি পড়েছি। (Y) (Y) (Y)
@মং হ্লা প্রু পিন্টু,
দাদা, আপনাকে এখানে দেখে ভালো লাগলো। আপনি ওই প্রতিবেদনটি মনে রেখেছেন দেখে কৃতজ্ঞতা। সাংগ্রাইয়ের শুভেচ্ছা। (Y)
@বিপ্লব রহমান, আপনাকেও রাখাইন সাংগ্রেং এর শুভেচ্ছা। অস্ট্রেলিয়া প্রবাসী আ উ মং (ঢাবি’র জগন্নাথ হলের আবাসিক ছাত্র ছিলেন) আপনার কথা প্রায় সময় জিজ্ঞেস করেন।
@মং হ্লা প্রু পিন্টু,
দাদা, আ উ মং / তা তু উ’কে আমি খুব মিস করি। ফেসবুকে আমাদের যোগাযোগ আছে। পারলে ওকে আমার সাংগ্রেং-এর শুভেচ্ছা জানিয়ে দেবেন। অনেক ধন্যবাদ। (Y)
@বিপ্লব রহমান
সাধারন মানুষেরা পাহাড়ী মানুষের কষ্টের কথা জানতে পায়না মোটে।
ক্ষমতালিপ্সু স্বার্থবাদী লুটেরাদের মুখোশ বার বার খুলে দিতে হবে। আপনি ও মানবতাবাদি আর কিছু মানুষ প্রতিবাদ করছেন, লিখছেন, জানাচ্ছেন, জনমত তৈরি করে চলেছেন তাই অন্তত জানতে তো পারা যাচ্ছে।
পাহাড়ের মানুষদের সাহায্যর জন্য কিভাবে আমরা কি কি করতে পারি জানতে পারলে ভালো লাগত। আমি প্রায় নিশ্চিত নতুন প্রজন্ম ব্যাপারে রীতিমত নেতৃত্ব দিতে পারবে।
@কাজী রহমান,
ভ্রাতা, আমার মনে হয়, আদিবাসীর অধিকার রক্ষায় আমরা সংখ্যাগুরু বাঙালিরা তাদের পাশে দাঁড়িয়ে নিজ নিজ নৈতিক দায়ীত্ব পালন করতে পারি। আপনি যে জনসচেতনতা সৃষ্টির কথা বলছেন, এটি খুব বেশী জরুরী।
আপনাকে আমাদের ফেসবুক গ্রুপ ‘পাহাড়ের রূদ্ধকণ্ঠ CHT Voice’ [লিংক] এ স্বাগতম। ধন্যবাদ। (Y)
এই বাংগালীর মনই আবার কাশ্মীর-প্যালেস্টাইনের জন্যে কেদে ওঠে। নিজের ঘরে কি করছে সেদিকে কোনো খেয়াল নেই। আমি গরীব সেটলারদের দোষ দেই না। প্রান্তিক জীবনযাপন কারীদের যেভাবেই হোক নিজের জন্যে একটুকরা জমি বা সম্পদ নিশ্চিত করতে চাওয়া স্বাভাবিক। কিন্তু দলমত নির্বিশেষে, জাতীয় জীবনের মূলধারার সবার মধ্যেই যে একটা কট্টর মেজরিটারিয়ান দৃষ্টিভংগী রয়েছে তা অস্বীকার করার উপায় নেই।
@সফিক,
বেশ খানিকটা একমত। আসলে পাহাড়ে চরম মানবাধিকার লংঘনের ঘটনাসমূহ বহু বছর প্রকাশ করতে দেওয়া হয়নি। অনেক ধন্যবাদ। (Y)
পাহাড়ি জনগোষ্ঠিদের নিয়ে বিপ্লবের পোস্টগুলো সব সময়ই আলাদা গুরুত্ব নিয়ে আসে। পোস্টটির জন্য অনেক ধন্যবাদ।
@অভিজিৎ দা,
সঙ্গে থাকার জন্য আবারো ধন্যবাদ, কৃতজ্ঞতা। (Y)
@বিপ্লব রহমান,
লেখাটি মুক্তমনায় আগেই পড়েছি। আগের লেখাটিই কি আবার পোষ্ট দিয়েছেন?
আপনার পাহাড়িদের নিয়ে সব লেখাই অসম্ভব মন ছোয়ে যায়। আপনার লেখার মাধ্যমেই যেন আমাদের জলপাইরা দানব থেকে মানবে পরিনত হতে পারে।
আচ্ছা বিপ্লবদা, জলপাইদের এই নিষ্টুরতা কি সরকারি নির্দেশে ঘটে নাকি তারাই অতি উৎসাহে এ অপকর্ম গুলো করে?
@হেলাল,
নিবিড় পাঠের জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।
আসলে এই লেখাটি একই শিরোনামে বছর চারেক আগে অন্য একটি ব্লগে লিখেছিলাম। মুক্তমনায় প্রকাশিত ‘রিপোর্টারের ডায়েরি: পাহাড়ের পথে পথে’ নামক আমার ই-বুক এ-ও লেখাটি আছে। এখন আরো কিছু বাড়তি তথ্যসহ লেখাটি পুনর্লিখন করেছি। ইচ্ছে আছে পুনর্লিখিত এই লেখাটিই পাহাড়ের ওপর আমার পরবর্তী বইয়ে সংযোজিত করার। (Y)
পাহাড়ের জাতিগত সংখ্যালঘুদের নিয়ে বিপ্লব রহমানের অভিজ্ঞতা, তাদের প্রতি সহমর্মিতা, একনিষ্ঠতা এবং এ ইস্যু নিয়ে তার সাহসিকতার তুলনা নেই।পাহাড়ের না লেখা ইতিহাসের অন্ধকারাচ্ছন্ন গুহায় আলো ফেলেন তিনি। (I)
এবারের বিজুর প্রাক্কালে লেখাটির জন্য ধন্যবাদ।
এ ইস্যু নিয়ে লেখা অব্যাহত থাকুক, কারণ বাংলাদেশে এমন বাঙালী হাতে গোনা।
@গীতা দাস,
(Y)
গত ডিসেম্বরে খাগড়াছড়ি গিয়েছিলাম। পাহাড়ীদের রাস্তায় দেখেছি ভিনদেশীর মত। পাহাড়িদের দোকানপাটের সংখ্যা আরও কম মনে হয়েছে। কিছু নিম্নপদস্থ কর্মচারীর সাথে আলাপে বুঝা গেছে – ওদেরকে পূনর্বাসন করা হয়েছে। একসময় শান্তিবাহিনী্র সদস্য ছিল। এক ব্যাংকে দেখলাম ম্যানেজার বাদে সবাই পাহাড়ী কর্মচারী।
শহরে রাস্তাঘাট নতুন মনে হল। আরও একটা জিনিষ লক্ষ্য করলাম – গনপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার ইসলাম প্রচারের জন্য বাড়তি পয়সা ঢালছে।
@নৃপেন্দ্র সরকার,
চমৎকার পর্যবেক্ষণের জন্য আপনাকেও অনেক ধন্যবাদ। চলুক। (Y)
@গীতা দি,
সঙ্গে থাকার জন্য অনেক ধন্যবাদ। (Y)
যে জাতি হানাদার মিলিটারীর সাথে যুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন করেছে, সেই জাতিই কিভাবে হানাদার হয়ে উঠতে পারে ভাবতে লজ্জা লাগে।
বিপ্লবী জাতিকে প্রতিক্রিয়াশীল হয়ে উঠতে দেখে খুব হতাশ বোধ হচ্ছে। আরও একটি কথার সত্যতা আজ উপলব্ধি করছি।
সুন্দর লেখাটির জন্য ধন্যবাদ। নিজেদেরকে চেনার সুযোগ পাওয়াও কম প্রাপ্তি নয়।
@তুহিন তালুকদার,
আপনাকেও অনেক ধন্যবাদ। (Y)
আসলে আমাদের অনেক আগের একটা স্বভাব আছে, “আমরা না দেখে, না বুঝে নিজেদের পক্ষ নেই, হোক তা ধর্ম, পরিবার, দেশ। যা ঠিক না।
আপনাকে ধন্যবাদ এই সুন্দর লেখাটার জন্য।
@kobutor,
আপনাকেও অনেক ধন্যবাদ। (Y)
বিচার চাই। আর, বাঙালীদের সময় হয়েছে আয়নায় নিজেদের চেহারা দেখার। (F)
@রৌরব,
এ ক ম ত। (Y)
৮০র দশকের শেষ দিকের কথা। হাইস্কুলে পড়ি। এক মেজরের সাথে পরিচয় ছিলো। মেজর শহীদুল্লাহ। পার্বত্য চট্টগ্রামে যখন তার পোস্টিং ছিলো তখনকার কথা খুব গর্ব করে গল্প করত। বলত সে এত শান্তি বাহিনী মেরেছে যে শান্তি বাহিনী তার মাথার দাম ঘোষনা করেছে।
when he spoke he used to gloat. He was such a smug…….
এখন সেই কথা মনে হলে রাগে, ঘৃনায় গা রি রি করে। :guli: :guli: :guli:
@হোরাস,
[img]http://www.islam-watch.org/Assets/bangladesh-1971-hindu-circumcised.jpg[/img]
পাহাড়ে দমন-পীড়নের জন্য সেনাবাহিনীকে এমন ছবক দেওয়া হয় যেনো প্রত্যেকে ওই অফিসারের মতো গর্ব করতে পারে! বীরত্বপূর্ণ ‘লড়াইয়ের’ জন্য পদোন্নতি তো আছেই।…
এই দেখুন না, ১৯৭১ সালেও পাকিস্তান সেনাবাহিনীকে বোঝানো হয়েছিলো, তারা ভারত তথা হিন্দুদের বিরুদ্ধে ইসলামী রাষ্ট্র রক্ষায় পবিত্র দায়িত্ব পালন করছে…ইটস আ হোলি ওয়্যার…আর ভারতের সঙ্গে ‘মুক্তিবাহিনী’ নামে কিছু কাফের, সন্ত্রাসী যোগ দিয়েছে। …এ ভাবে পাক সেনাদের কথিত বিদ্রোহ দমনে হত্যা, ধর্ষন, রাহাজানি, অগ্নিসংযোগ সবই কোনো না কোনোভাবে বৈধতা পেয়ে যায়, এমন কি ‘গনিমত কা মাল’ও।…
আপনাকে অনেক ধন্যবাদ। আগামীতেও সঙ্গে থাকার বিনীত অনুরোধ। (Y)
নিরপেক্ষ সংবাদ সরবরাহকারী বিবিসি-র নিরপেক্ষ সংবাদের নমুনা যদি এরকম হয়, তবে দেশের প্রধান ধারার সংবাদের নমুনা কি রকম হতে পারে, আমরা তা অনুমান করতে পারি। আর এ-ও অনুমান করতে পারি দেশের মানুষ, যারা সংবাদ সংস্থাগুলোর ওপর নির্ভরশীল, তারা পাহাড়ীদের কোন চোখে দেখবে।
এ লেখাটা পড়ে আমরা অনুমান করতে পারি, স্থান ও কাল ভেদে সমাজের ক্ষুদ্র একটি অংশ সব সময় সত্যকে উন্মোচন করতে চায়, কিন্তু সেই উন্মোচিত সত্যটুকু সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছে দে’য়ার মত উপায় তাদের থাকে না।
যাদের এ ক্ষমতা আছে, তারা খুবই সংগঠিত। তাদের শক্তিশালী সংগঠনটির নাম রাষ্ট্র।
লেখাটা পড়ে এ রকমই তো মনে হচ্ছে আমার।
রাষ্ট্র তার নাগরিকদের রক্ষক না হয়ে ভক্ষক হয়ে ওঠে কখন? লেখাটা পড়তে পড়তে এখন এ প্রশ্নের উত্তরটা খুঁজে বেড়াচ্ছি।
@স্বপন দা,
চমৎকার বলেছেন। চলুক। (Y)
আমার বাড়ির দু’মাইলের মধ্যে পাহাড়ী মারমাদের বসবাস। সেখানে সেটেলার বাঙ্গালীরা এসে কিভাবে তাদের জায়গা জমি দখল করেছে, তাদের ক্ষেত ফসল চুরি করেছে এবং পরবর্তিতে এই সেটেলারদের থেকেই মেম্বার চেয়ারম্যান নিযুক্ত হয়েছে তার অনেকটাই প্রত্যক্ষদর্শী। এত সব অপকর্মের নিয়মিত প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ সহযোগীতা করে যাচ্ছে এক বিশেষ বাহিনী। :-Y
এমন একটি দেশে আমাদের জন্ম যেখানে সংখ্যা লঘুদের “অধীকার” মানে “অনধীকার” চর্চা।
@রাজেশ তালুকদার,
আপনার নিজস্ব অভিজ্ঞতাসমূহ বিস্তারিত জানতে ইচ্ছে করছে। এসব নিয়ে কী মুক্তমনায় আলাদা পোস্ট লেখা সম্ভব? ইচ্ছে করলে নিরাপত্তার খাতিরে ছদ্মনামে লিখতে পারেন। অনেক ধন্যবাদ। (Y)
@রাজেশ তালুকদার,
প্রবাসে সংখ্যালঘু হয়ে অনেকটা বুঝতে পারি সংখ্যালঘু হওয়ার মর্ম!
আসলে আমাদের সবারই দেশের সব সংখ্যালঘুদের সাথে
সহমর্মীতা ও সংহতি প্রকাশ করা উচিত।
@লাইজু নাহার,
প্রবাসে সংখ্যালঘু হয়ে অনেকটা বুঝতে পারি সংখ্যালঘু হওয়ার মর্ম!
আমাদের দেশে বাস করা সংখ্যা লঘুদের কষ্ট আর প্রবাসে বাস করা সংখ্যলঘু হওয়ার কষ্টের মধ্যে বিস্তর ফারাক।
প্রবাসে সংখ্যা লঘুরা উপযুক্ত প্রসাশনিক সাহায্য সহযোগীতা পায়।যা আমাদের দেশে কল্পনাও করা যায় না। আমি যুক্তরাজ্যে আছি অনেক বছর। প্রায় নানা প্রতিকূল অবস্থার মুখোমুখি হতে হলেও এ কথা বলতে দ্বিধা নেই সংখ্য লঘু হলেও আমাদের দেশের তুলনায় এদেশে অনেক স্বাচ্ছন্দে আছি।কিছু মনে না করলে জানতে পারি কি আপনি কোন দেশে আছেন?
লেখাটি সকালে একবার পড়েছিলাম, কিছু বলতে পারিনি। যে দেশের সেনাবাহিনী এমন করে আমি সে দেশেরই নাগরিক।
গনতন্ত্র এলো, নির্বাচিত সরকার এলো, তবুও এদের দাপট গেল না, কোনদিন যাবে বলেও মনে হয় না। সরকারের ভেতরেই নাকি সরকার আছে। যার জন্য আওয়ামী লীগও ক্ষমতায় এসে র্যাবের হয়ে সাফাই গায়।
সম্প্রতি লিমন নামের ছেলেটিকে গুলি করে খোঁড়া করা হল, শুধু তাই নয় কি আরামে পুরো এলাকার মানুষকে ভয় ভীতি দেখিয়ে চুপ করানো হচ্ছে। মানুষ অসহায়, অসহায় সরকারও?
@আদিল মাহমুদ,
আপনার মতো আমারো বিস্ময় জাগে, পাহাড়ে অসংখ্য গণহত্যাকারী তথা সব ধরণের মানবাধিকার লঙ্ঘনকারী এই সেনা বাহিনীই কি না আবার ইউএন মিশনে যোগ দিয়ে বিশ্বশান্তি রক্ষায় সুনাম কুড়ায়! 😛
সঙ্গে থাকার জন্য অনেক ধন্যবাদ। (Y)
পাহাড়ীদের জীবনযুদ্ধের বাস্তবচিত্র আমাদের সামনে তুলে ধরার জন্য ধন্যবাদ। খুবই করুন!
@তামান্না ঝুমু,
(Y)
@ বিপ্লব রহমান,
আমার প্রশ্নগুলো খুব-ই প্রাথমিক স্তরের। অন্যদের সময় না নেওয়াই ভালো। আমি আপনার উদ্দেশ্যে আরো একটি এ-মেইল ছেড়েছি।
ধন্যবাদ।
@আদনান,
আপনার আগ্রহের জন্য ধন্যবাদ। ইমেইলের জবাব দেওয়া হয়েছে। 🙂
পুনশ্চ: আপাতত এই প্রামাণ্যচিত্রটি দেখুন। অনেক প্রশ্নের জবাবই হয়তো মিলবে। ধন্যবাদ।
httpv://www.youtube.com/watch?v=m8mhw3GX0fc
@বিপ্লব রহমান,
খুব ভাল লাগল ভিডিওটা।
অনেক শুভেচ্ছা!
@বিপ্লব রহমান,
কি করুন অমানবিক যাপিত জীবন। কোথায় মানবতা ? শুধু ক্ষমতা আর ক্ষমতা,কে এই ক্ষমতাধর ক্ষমতা ?সরকারের ভিতর সরকার,কে এই সরকার ?
নিজের ভিতর অন্যজন, সে শুধু হিংস্র এক দাবানল,কে এই অন্যজন?
মানুষ মানুষের জন্য
জীবন জীবনের জন্য
একটু সহানুভূতি কি পেতে পারে না ……… ভূপেনহাজারিকার গান আজ বনবাসে গেছে।
সহানুভূতি কি কোথাও আছে?????? শুধু শোষন আর শোষন এবং যুদ্ধ আর যুদ্ধ চারিদিকে, আর তা ব্যক্তি থেকে শুরু করে পরিবার,সমাজ ও রাষ্ট্র থেকে রাষ্ট্রে,গোত্র থেকে গোত্রে,এক জাতি থেকে অন্য জাতিতে,এক দেশ থেকে অন্য দেশে।কি বিভীষিকাময় অন্ধকার আমাদের মানবজাতির জীবনে।
আমরা বাঙালীরা পাকিস্থানের শোষনের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে কতো গর্ব করি,আবার সেই বাঙালীরাই আমাদেরই দেশভূক্ত লোকজনের বিরুদ্ধে শোষন-শাসন ও গেরিলা কায়দায় একপাক্ষিক পাহাড়ীদের উপর জোর-জুলুম,অত্যাচার-অনাচার,গুম,হত্যা,আগুন লাগিয়ে তাদের ঘর-দুয়ার জালিয়ে দেওয়া ( যা নর-পিশাচ পাকিস্থানীরা বাঙালীদের উপর করেছিল ) থেকে শুরু করে হেন অন্যায় ও দূষ্কাম নেই যা করি নি এবং তা শুধু ( যুদ্ধ ) বছরের পর বছর চালিয়ে যাচ্ছি।আজ সময় হয়েছে আমাদের জাতির তথা সবার বিবেকের উপর নিজের প্রশ্ন করার আমরা কি পাকিস্থানি হানাদার বাহিনীর মতো হবো নাকি পাহাড়ীদের অধিকার মেনে নিয়ে তাদের মতো করে তাদের থাকতে দিবো :-s ।
আপনার পাহাড়ী সংগ্রামী জনতার পাশে থেকে তাদের উপর বাঙালীদের জুলুম ও অত্যাচারের বিভৎস চিত্র আমাদের চোখের সামনে ও বিবেকের উপর প্রশ্ন রাখার জন্য সেল্যুট।
ভালো থাকবেন।
@মাহবুব সাঈদ মামুন,
আপনাকেও অনেক ধন্যবাদ। আগামীতেও সঙ্গে থাকার বিনীত অনুরোধ। (Y)
ধন্যবাদ বিপ্লব রহমান।
@স্বাক্ষর শতাব্দ,
(Y)
আমি কোন দিন পার্বত্য অঞ্চল গুলোতে যাই নি। খুব কাছ থেকে দেখা হয়নি তাদের জীবনযাত্রা। কিন্তু তাদের উপর যে পাশবিক আক্রমন করা হয়েছে এবং হচ্ছে তা যেন চোখের সামনেই দেখতে পাই।
@আসরাফ,
আপনার আগ্রহকে স্বাগত জানাই। আশাকরি, পযর্টনের সাধারণ দৃষ্টিসুখের মোহের বাইরে রূঢ় বাস্তব পাহাড়ের রূপ আপনি ভেতর থেকে তলিয়ে দেখবেন। চলুক। (Y)
ভাইজান,
আপনার উদ্দেশ্যে একটা ই-মেইল ছেড়েছিলাম। কিন্তু তার কোনো উত্তর মেলেনি এখনো। কিছু প্রশ্ন ছিলো, যা আমি ই-মেইল মাধ্যমে করতে চাই।
আমার ই-মেইলঃ [email protected]
@আদনান,
দুঃখিত ভ্রাতা। হয়তো না বুঝে জাঙ্ক ইমেইল ভেবে সেটি আমি ডেলিট করে থাকতে পারি। আপনি ইচ্ছে করলে, মুক্তমনার ই-বার্তায় আপনার প্রশ্নগুলো আবার পাঠাতে পারেন। অথবা বিষয়ের ঘরে ‘প্রশ্ন’ লিখে আবার ইমেইল দিন। আমি চেষ্টা করবো, সাধ্যমতো জবাব দিতে। …
—
লেখার বিষয়ে দু-এক লাইন মন্তব্য পেলে আরো ভালো হতো। 😉
ধন্যবাদ।