ছোট বেলায় পড়েছি – জাপানীরা কাগজের ঘরে বাস করে। এত হাল্কা যে ভূমিকম্পে কিছুই হয়না। জাপানে ভূমিকম্প ব্যাপারটি নিত্তনৈমিতিকই বটে। এলিভেটরে লেখা থাকে – ভূমিকম্প হলে এলিভেটরটি কাছের তলে থেমে যাবে, তখন যেন সিঁড়ি ব্যবহার করা হয়। আমি একবার ল্যাবে একা ছিলাম। প্রচুর ভয় পেয়েছিলাম। আমার সহকর্মী পরে বলল – ভয় পাওয়ার কিছু নেই। অবশ্য তাক থেকে কিছু মাথায় পড়ল কিনা সেজন্য সাবধান থাকা দরকার। ভয় হল হঠাৎ আগুন-টাগুন লেগে গেলে।
রেক্টর স্কেলে ৮ দশমিক ৯। বিরাট ভূমিকম্প। ভূমিকম্পকে প্রতিহত করার প্রযুক্তি ওদের দালানকোঠা সহ সমস্ত যোগাযোগ ব্যবস্থায়। কিন্তু ভূমিকম্প থেকে যে সুনামী সৃষ্টি হয় তার রাহুগ্রাস থেকে বাঁচার পদ্ধতি ওরা এখনও উদ্ভাবন করতে পারেনি। সুনামীর জলোচ্ছ্বাসের থাবা যে কী হিংস্র তা না দেখলে বিশ্বাস করার উপায় নেই। এপর্যন্ত ২৯০০ জাপানীর প্রানহানী সুনিশ্চিত করা গেছে। উন্নত প্রযুক্তি এবং জনমানুষকে নিরাপদ জায়গায় স্থানান্তর করার জন্য প্রাননাশ কমিয়ে রাখা সম্ভব হয়েছে। কিন্তু মৃত্যু মৃত্যুই। যদি একজনেরও মৃত্যু হয় তা যে কী অসহনীর তা তার আপনজনেরাই উপলব্ধি করে।
১৯৮৩ সালে জাপানে বাংলাদেশ দূতাবাসের এক কর্তাব্যক্তির বন্ধুর মুখ থেকে শুনা দয়ালু জাপানীদের কথা। ঘুর্নীঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত বাংলাদেশীদের দুরাবস্থার চিত্র টেলিভিশনে দেখে জাপানীদের হৃদয় বিগলিত হয়। ওরা গাড়ী থামিয়ে দূতাবাসের মেইল বক্সে ইয়েনের বিল ঢুকিয়ে চলে যায়। ভাবে কোন বিপন্নের যদি কাজে লাগে। ওরা স্বপ্নেও ভাবে না ওই ক্যাশ বাংলাদেশে কখনই পৌছে না। সেই জাপানীরা আজ বিপন্ন। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরে এত বড় বিপর্যয় ঘটে নি। এই বিপদের মূহুর্তে কষ্টবোধ ছাড়া কিছুই করতে পারছি না।
প্রকৃতির এরকম ভয়ংকর রূপ আর দেখতে চাইনা।সবাই ভাল ভাবে বেঁচে থাকুক এই কামনাই করি।
আমার খালা খালু তাদের ছেলেকে নিয়ে আছেন জাপানে, আছেন এক বন্ধুর বোনও তার পরিবার নিয়ে। সুখজের বিষয় হল তারা ভাল আছেন, আর দুঃখের বিষয় হল অনেকে মারা গেছেন, কষ্টে আছেন।
আমার খুব ভয় লাগছে জাপানের মত একটা ভূমিকম্প বাংলাদেশে হলে তো এর চেয়ে কয়েকগুন বেশি ক্ষতি হবে, সবাই ভয় পাচ্ছি, মাঝে মাঝে বিপর্যয়ের ভয়ে রাত জেগে বসে থাকি ঘুম আসেনা
কয়েক দিন আগে এক জায়গায় বললাম ভাল মানুশদের সব সময় বিপদে পডতে হয়।হায়রে মানুষ ওদের পাল্টা মন্তব্য চিল,ওইখানে আল্লার গজব নামছে কারণ ওরা ধম্র পালন করেনা(যারা বলেছিল তারা চিল মুচল্মান,তার মানে বোজাতে চাইল মুসলিম দরম পালন করলে বেচে যেত)। আমি আর কিছু বললাম না,এসব বলে এমনিতেই বন্দুদের আপ্রিয় হয়েচি,জামেলা এডানর চেয়ে এই মূর্খ গুলার সামনে চুপ থাকাই ভাল…
জাপান বাংলাদেশের বন্ধুপ্রতিম দেশ। এ পর্যন্ত বাংলাদেশের দূর্যোগ বা অন্যান্য সঙ্কট বা উন্নয়নমূলক কাজে জাপানই সবচেয়ে উদার হস্ত প্রসারিত করেছে।
একটি উৎস থেকে জেনেছিলাম, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ক্ষতিগ্রস্ত জাপানের উন্নতির জন্য সেখানকার ইঞ্জিনিয়াররা প্রতিদিন অতিরিক্ত ২ ঘন্টার বিনাবেতন সেচ্ছ্বাশ্রম দিতেন। এভাবেই তারা উন্নতির পথে এসেছে। আশা করা যায়, বর্তমান সঙ্কট তারা আবার কাটিয়ে উঠতে পারবে।
সৎ, পরিশ্রমী আর নিয়মের প্রতি শ্রদ্ধাশীল জাতি হিসেবে জাপানের সুনাম আছে। আজকের সঙ্কটের দিনেও তারা তাদের এই বিশেষত্ব গুলো ধরে রাখতে পেরেছে। বিভিন্ন দেশ তাদের সহায়তায় ইতোমধ্যেই এগিয়ে এসেছে (বাংলাদেশও আছে এর মধ্যে)।
কলেজে কিছু ক্লাসমেট ছিল। অন্যান্যদের চেয়ে এদেরকেই সবচেয়ে সৎ, ভদ্র আর বিনয়ী বলে মনে হয়েছে। কোনো সন্দেহ নেই এরা আবার ঘুরে দাঁড়াবে। এই ঝাকুনির ফলে এরাই হয়তো নতুন কিছু উদ্ভাবন করে ফেলবে!
(W)
জাপানীদের জন্য শুভকামনা করছি ।
ওদের বিষয়ে মুক্তমনা লেখকদের নিকট হতে আরও লেখা আশা করছি
২০০৬ সালে অফিসের কাজে জাপান গিয়ে তিন মাস থাক তে হয়েছিল।
তখন নিজের চোখে দেখেছিলাম জাপানিদের ভদ্রতা। আমরা জানি জাপানিরা যে কোন রকম দুর্যোগে জাতি ধর্ম বর্ন নির্বিশেসে পৃথিবীর সকল মানুসের পাশে দাঁড়ায়।
এক জাপানি বন্ধুকে জিজ্ঞাসা করেছিলাম ঈশ্বর সম্বন্ধে তাঁর কি ধারনা। ঈশ্বরের অস্ততিতে বিশ্বাস করে না। বলেছিল সজ্ঞানে কারুর ক্ষতি করবনা উপকার করতে না পারলেও। দেশের উন্নতির কথা ভাবব। এটাই আমার বিশ্বাস ও এটাই আমার ঈশ্বর।
আজ তাঁদের এই দুর্দিনে আমারা কি ভাবে তাঁদের পাশে থাকব জানিনা।
আমি তাঁর অবস্তা জানার জন্যে মেইল করেছিলাম। ঊত্তর পেয়েছি দুদিন পরে। তাঁর সেই উত্তর এখানে শেয়ার করতে চাইছি।
Dear Sentu
Hi☆
Thank you for worrying.
I’m fine,and my family are good,too.
My house is not broken.
But Japan is the serious situation as you know .
Water and food, electricity are short.
There are few foods and life articles in supermarket.
And,there is a blackout in turn every day to suppress the consumption of the electricity.
I must endure inconvenient life for a while.
But the area where I live in is still better.
I do my best.
Please take care.
yumiko
চারিদিকে শুধু দুঃসংবাদ। যেকোন দুঃসংবাদ শুনলে মনটা খারাপ হয়ে যায়। তবুও শুনতে হয়। জাপানীদের জন্য গভীর সমবেদনা রইলো।
নৃপেনদা, সময়োপযোগি পোস্টটির জন্য অনেক ধন্যবাদ। সত্যই খুব খারাপ লাগছে। আশা করি দুঃসহ সময় তারা পেরিয়ে উঠে দাঁড়াবে আবার, যা আগেও করে দেখিয়েছিল।
জাপানের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে শুক্রবার ৮.৯ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্প ও সুনামির পর একাধিক অঞ্চলে অসংখ্য মৃতদেহ পাওয়া যাচ্ছে৷যুক্তরাষ্ট্র এবং জাপান বলছে, এটি ছিল ১৯০০ সালের পর বিশ্বের পঞ্চম বৃহত্তম এবং ইতিহাসের সপ্তম শক্তিশালী ভূমিকম্প৷ ১৪০ বছরের মধ্যে এটিই দেশটির সবচেয়ে ভয়াবহ ভূমিকম্প৷ তীব্র মাত্রার ঐ ভূমিকম্পের পরে আরো কয়েকটি শক্তিশালী কম্পন অনুভূত হয়েছে৷
জাপানের এই দূর্যোগের সময় সত্যিই আমাদের সহানুভুতি ছাড়া দেওয়ার কিছুই নেই।তারা খুব শীঘ্র নিজেদের গুছিয়ে নিক এই শুভকামনাই করি।বিভিন্ন উপমহাদেশ গুলি এগিয়ে এসেছে সাহায্যের জন্য নিসচয় তারা পুরবের অবস্থায় ফিরে আসবে তাড়াতাড়ি।
[img]http://media.voanews.com/images/480*300/Japan_tsunami_whirpool_Reuters_480x300.jpg[/img][img]http://www.dw-world.de/image/0,,6466523_1,00.jpg[/img]
পৃথিবী মধ্যে ভূমিকম্প,সুনামী,টর্নাডো,ঘুর্নিঝড়,প্রবল বন্যা,বুল্কান ইত্যাদি প্রাকৃতিক পরিবেশের যে ধ্বংস এবং ভারসামহীনতার প্রভাব উত্তারাত্তর হাজার হাজার গুনে বৃদ্ধি পাচ্ছে তা জাপানের উপর সম্প্রতি ঘটে যাওয়া সুনামী এক জলন্ত উদাহরন।
৯ রিখটার স্কেলের ভূমিকম্প যদি বাংলাদেশে ঘটে তা হলে কি দশা বাংলাদেশ নামের ভূখন্ডের মানুষের জীবনে ঘটবে তা কি কেউ আমরা অনুমান করতে পারছি ? :-s
খবরে দেখলাম শুধুমাত্র জাপান ও ক্যালিফোর্নিয়া এতোবড় স্কেলে ভূমিকম্প হলে তাদের ঐপরিমান প্রযুক্তি আছে যা দিয়ে তারা তা সামলানোর ক্ষমতা রাখে।জাপানিজদের প্রতি দারুন সহমর্মিতা প্রকাশ করছি যাদের প্রকৃতির কাছে এমনভাবে বহু জীবনের বলি দিতে হলো। :candle:
টিভির নিউজে যখন সুনামীর ভয়াবয়তা দেখছি তখন “২০১২” নামের ছবির কথাটি মনে পড়ে গেল।
http://blog.mukto-mona.com/?p=3292
Shobchaye boro voy akhon oder nuclear reactor niye, jevabe aker por ak explosion hocche tate cheronobiler moto accident na hoye jai….. nuclear reactor shomporke ak ak somoy ak ak news pawa jacche.. exact khobor pawa jacchena.. keu bolche voyer kono karon nai… radioactivity choriye porar ashonka nai… abar keu bolche cheronobiler moto arekta accident akhon shomoyer bapar…
@তৃতীয় নয়ন,
অনুগ্রহ করে বাংলা ফন্টে মন্তব্য করুন,মন্তব্য ঘরের উপরেই লেখা আছে:
এই বিপর্যয় সত্যি দুঃখজনক।
যা ভাষায় প্রকাশ করার না। কিন্তু, পরবর্তি অবস্থা কী হবে সেইটাও একটা কথা। পারমানবিক বিষ্ফোরনে এশিয়া কেন অনেক মহাদেশেরই ১২ বাজবে।
ওদের জন্য কিছু একটা করা উচিৎ আমাদের।
এর জন্য মুক্ত-মনা কি কিছু করতে পারে ? আমার মনে হয় মুক্ত-মনা এব্যপারটা নিয়ে ভাবতে পারে।
নৃপেন্দ্র সরকারকে ধন্যবাদ
এই দুর্দিনেও ওরা লাল বাতিতে দাঁড়াচ্ছে আর সবুজ বাতিতে চলছে। শিশু সন্তানদের নিয়ে সাহায্যের আশায় প্রায় নীরবে লাইনে দাঁড়িয়ে আছে। মহা বিপদে এই অপূর্ব শৃঙ্খলা থেকে বিশ্ববাসী শিখছে। বাঙ্গালি, যারা অতি ঘনবসতি পূর্ণ বাংলায় বাস করে, তারাও যেন শেখে। বাংলাদেশে আর পুরো বাংলায় যখন বড় কোন প্রাকৃতিক দুর্যোগ আঘাত করবে তখন কি হবে কল্পনা করলেও ভয়ে শিউরে উঠছি।
খারাপ লাগছে খুবই।
এমন বিপর্যয়ের মাঝেও জাপানী প্রকৌশলীদের প্রশংসা না করে পারছি না।
টোকিওর প্রায় সব বহুতলা দালান গুলো বেঁচে গেল।
জাপানীদের এই দুর্দিনে আমাদের উচিৎ যৎপরিমাণ পারি সাহায্য করতে।
@আবুল কাশেম,
আমার তো মনে সেন্ডাইয়েরও কোন দালানের ক্ষতি হয়নি। ওদের ডিজাইন এবং প্রযুক্তিও ওরকম করে করা। কিন্তু সুনামী? অতি দ্রুত জলের প্রাচীর সিংহের মত গর্জে আসে সব কিছুকে গ্রাস করতে। এখানে ওদের হাতেও কোন প্রযুক্তি নেই। জলের তুরে সব ডুবে যায়, ভেসে যায়। এর পরেও ওদের মেধা এবং ক্ষীপ্রতার কারণে প্রানহানির পরিমান সীমিত করে রাখতে পেরেছে।
@নৃপেন্দ্র সরকার,
আমি চিন্তাই করতে পারিনা বাংলাদেশে এই বিপর্যয় হলে কী হত। আমি ১৯৬৯-এর মহাপ্রলয় দেখেছি। যা আমাকে আশ্চর্য্য করেছে তা প্রলয়ের ধ্বংসলীলা নয়–তা হচ্ছে লুটপাট এবং দুর্নীতি। আমরা যখন মানচরে ্রিলিফ নিয়া গেলাম তখন বুঝলাম কি অপরিসীম দুর্ণীতিই না চলছে ঐ মহাপ্রলয় ঘিরে।
জাপানীদের ধৈর্য্য, সতাত, এবং বিপদে শান্ত থাকা এক অপূর্ব গুন। এখন পর্য্যন্ত লুটতরাজের খবর পেলাম না।
এদিকে এই কিছুদিন আগে আস্ট্রেলিয়ার ব্রিসবেন এবং আরও কিছু জায়গায় প্রবল বণ্যা হয়ে গেল—সেখানেও ঐ এক অবস্থা–প্রচুর লুটতরাজ। সেই লুটতরাজের দৃশ্য টেলিভিসনে দেখে প্রত্যেক আস্ট্রেলিয়ানকে লজ্জা পেতে হয়েছে।
@আবুল কাশেম এবং @কাজী রহমান
এই জাতিটাকে কাছে থেকে দেখার সৌভাগ্য হয়েছিল। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের ধংশস্তুপ থেকে দেশটি গড়ে উঠেছে প্রথম সাঁড়ির অর্থনৈতিকে শক্তিতে। মেধা, একাত্মতা, ধৈর্য, শ্রম এবং দেশপ্রেম নিয়ে আবারও দাঁড়িয়ে উঠবে।
@নৃপেন্দ্র সরকার,
আমারও সুযোগ হয়েছিল ২০০৭ সালে জাপানে একটা Women’s Leadership Dvelopment Training এ অংশগ্রহণের সুবাদে ১০ দিন থাকা। সংগঠকদের সাংগঠনিক দক্ষতা ও আতিথেয়তা আমাকে মু্গ্ধ করেছিল।
আমিও এ প্রত্যাশা করি।
জাপানীরা এত উন্নত!
ওরাই এখন প্রকৃতির নির্মম শিকার!
ঠিক কথা। যে কোন মৃত্যুই কষ্টের। প্রাকৃতিক দূর্যোগের পরে যারা বেচে থাকে , তাদের দ্বিগুন কষ্ট। স্বজন হারানোর কষ্টের সাথে আরো থাকে বেচে থাকার কষ্ট। গত চার দিন ফ্রিজিং তাপমাত্রায় আশ্রয়হীন , খাদ্য ও পানি বিহীন জীবণ কাটছে এদের।