১৯৯২ সালের ১৩ মার্চ। দিনটি ছিলো শুক্রবার। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় ঐ বছরের অন্যান্য শুক্রবারগুলোর মতই সাদাসিদে একটা দিন ছিলো ঐ দিনটি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মৃত্তিকা,পানি ও পরিবেশবিজ্ঞান বিভাগের কৃতি শিক্ষার্থী ছিলেন মঈন হোসেন রাজু। সেদিন মা রাজুকে সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ে নামিয়ে দিয়ে যান। দুপুরে বাসায় গিয়ে খাওয়ার কথা রাজু, খেতে যেতে পারেন নি। সেদিন একজন শিবির কর্মীর প্রহৃত হওয়ার ঘটনাকে কেন্দ্র করে পুলিশের সাথে বচসা হয় সাধারণ ছাত্রদের। ঐ সময়ে রাজুর কনুইতে আঘাত লাগে;তাই বাসায় না গিয়ে রাজু বিশ্রাম নিতে চলে যান তার হলের রুমে, শহীদুল্লাহ হলের ১২২ নং কক্ষ। অথচ বিকেল হতে না হতেই ছাত্রদল ও ছাত্রলীগের মধ্যে শুরু হয় গোলাগুলি, ক্যাম্পাসে দখলদারিত্বের রাজত্ব কায়েম করার অশুভ লক্ষ্যে। সেই সময়,আমাদের রাজু প্রতিবাদ জানাতে উন্মুখ হয়ে ওঠে-গণতান্ত্রিক ছাত্র ঐক্যের ব্যানারে সংগঠিত করে সন্ত্রাসবিরোধী মিছিল,গুলির মুখে দাঁড়িয়েও সন্ত্রাসের ভিত্তিমূলকে উপরে ফেলার প্রতিজ্ঞায় শক্ত হয়ে ওঠে রাজুর চোয়াল। সেই মিছিলে রাজুকে লক্ষ্য করে অকস্মাৎ ছুটে আসে ঘাতক বুলেট- বুলেটবিদ্ধ রাজুর রক্তে রঞ্জিত হয় টিএসসির সামনের রাজপথ। কবি শামসুর রাহমান তার “পুরাণের পাখি” কবিতায় এই ঘটনাটি তুলে ধরেন অসাধারণ দক্ষতায়-
দিনদুপুরে মানুষ শিকারীরা খুন করেছে তোমাকে।
টপকে-পড়া, ছিটকে-পড়া
তোমার রক্তের কন্ঠস্বরে ছিল
পৈশাচিকতা হরণকারী গান। ঘাতক নিয়ন্ত্রিত দেশে
হত্যাযজ্ঞের বিরুদ্ধে আওয়াজ তুলেছিলে তুমি,
মধ্যযুগের প্রেতনৃত্য স্তব্ধ করার শুভ শ্লোক
উচ্চারিত হয়েছিল তোমার কন্ঠে
তোমার হাতে ছিল নরপশুদের রুখে দাঁড়াবার
মানবতা-চিহ্নিত প্রগতির পতাকা …
প্রচন্ড ক্ষোভে ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে রাজুর রাজপথের সারথিরা, মিছিলের সাথীরা। রাজুকে নিয়ে যাওয়া হয় ঢাকা মেডিকেল কলেজে। রাত সাড়ে দশটার সময় সকলকে কাঁদিয়ে, প্রতিবাদের সাহসী ভাষা শিখিয়ে মঈন হোসেন রাজু আলিঙ্গন করেন মৃত্যুর হিমশীতল স্পর্শ।
“আমার জীবনের যত সাধনা, আকাঙ্খা ফানুসের মত চুপসে গেল শুধু মাত্র একটি টেলিফোনে ইমারজেন্সীতে। তখনও ভাবতে পারিনি আমার রাজু মারা গেছে! সৃষ্টিকর্তার কাছে ওর প্রাণ ভিক্ষে চাইতে চাইতে ছুটে গেছি মেডিকেলে। দেখতে দিল না আমকে। বাবু (বড় ছেলে) কাঁদছে আমাকে জড়িয়ে ধরে_রাজুর বন্ধুরাও কাঁদছে। ওরা আমাকে বাসায় চলে যেতে বলছে। ডাক্তার নাকি সুস্থ করার চেষ্ঠা চালাচ্ছে। রাজু একটু সুস্থ হলেই বাসায় নিয়ে আসবে ওরা। তখনও বুঝতে পারিনি তপ্ত বুলেট ওর মাথা ভেদ করে কপাল দিয়ে বেরিয়ে গেছে”।—খাদিজা বেগম (রাজু’র মা)।
কিন্তু ইতিহাস যেনো মুচকি হাসল! মৃত্যুর মধ্য দিয়ে রাজু হয়ে উঠলেন ইতিহাসের সন্তান, অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদের সর্বোচ্চ প্রেরণার উৎস! দুর্বার আন্দোলনের মধ্য দিয়ে রাজুর প্রতিবাদী ভূমিকা আর সংগ্রামী চেতনাকে অক্ষয় করে রাখার জন্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টি.এস.সি. এর সামনে তৈরি করা হলো বাংলাদেশের একমাত্র সন্ত্রাস বিরোধী ভাস্কর্য- “সন্ত্রাস বিরোধী রাজু স্মারক ভাস্কর্য”। মৃত্যুঞ্জয় রাজু হয়ে উঠল এদেশের মানুষের কাছে সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে প্রতিবাদের এক চিরন্তন প্রতীক। হাতে হাত ধরে, কিছু মানুষের প্রচন্ড উদ্ধত আর আত্মবিশ্বাসী প্রতিবাদের ভঙ্গি ফুটে উঠেছে এই ভাস্কর্যে। সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে মানুষের সত্যনিষ্ঠ সংগ্রামের আর প্রতিবাদের ভাষা যেনো এই টি.এস.সি.-র এই ‘রাজু ভাস্কর্য’। রাজুসহ সন্ত্রাস বিরোধী আন্দোলনের সকল শহীদের স্মরণে নির্মিত সন্ত্রাস বিরোধী রাজু ভাস্কর্য ১৭ সেপ্টেম্বর, ১৯৯৭ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন উপাচার্য এ.কে. আজাদ চৌধুরী উদ্বোধন করেন। এই ভাস্কর্য নিমার্ণে জড়িত শিল্পীরা হলেন ভাস্বর শ্যামল চৌধুরী ও তার সহযোগী গোপাল পাল। নির্মাণ ও স্থাপনের অর্থায়নে ছিলেন – ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষক আতাউদ্দিন খান (আতা খান) ও মুন্সিগঞ্জ-বিক্রমপুর সমিতির সভাপতি, লায়ন নজরুল ইসলাম খান বাদল। ভাস্কর্যটির সার্বিক তত্ত্বাবধানে রয়েছে বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন।ঐ ঘটনার পরবর্তী থেকে প্রতি বছর বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নসহ সকল প্রগতিশীল ছাত্র সংগঠন ও জাতীয় সংগঠনগুলো এই দিনটিকে ‘সন্ত্রাসবিরোধী রাজু দিবস’ হিসেবে উদযাপন করে আসছে।
মঈন হোসেন রাজু’র জন্ম ১৯৬৮ সালের ২৯ জুলাই। বরিশালের মেহেদীগঞ্জে। তবে রাজুর পরিবার প্রথমে চিটাগং ও পরে ঢাকাতে বসবাস শুরু করে। বাবা মোয়াজ্জেম হোসেন। মা খাদিজা বেগম। পড়াশুনার হাতেখড়ি পরিবারে। তারপর প্রাইমারী ও হাইস্কুল। ১৯৮৭ সালে তিনি উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। এরপর ভর্তি হন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে মৃত্তিকা বিজ্ঞানে।
ঢাকাতে বসবাস করার সময়ে রাজু শেরেবাংলা নগরে ছাত্র ইউনিয়ন গড়ে তোলার মধ্য দিয়ে যুক্ত হন লড়াই-সংগ্রামের ঐতিহ্যবাহী ছাত্র গণসংগঠন বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের সাথে। যুক্ত হয়ে প্রথমে শেরে বাংলা নগরে ছাত্র ইউনিয়ন গড়ে তোলার দায়িত্ব নেন। এরপর তেজগাঁও কলেজে গড়ে তোলেন ছাত্র ইউনিয়নের দূর্গ। ফলে তিনি তেজগাঁও থাকা কমিটির অন্যতম নেতা হয়ে ঊঠেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার পর যুক্ত হন ছাত্র ইউনিয়ন বিশ্ববিদ্যালয় সংসদের সাথে। এ সময় তিনি ৯০’র স্বৈরাচার এরশাদ বিরোধী আন্দোলনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। ঢাবি ছাত্র ইউনিয়নে যুক্ত থাকার সময় প্রথমে তিনি শহীদুল্লাহ হল কমিটির সদস্য,বিশ্ববিদ্যালয় কমিটির সমাজকল্যাণ সম্পাদক এবং ওই বছর ছাত্র ইউনিয়ন কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য নির্বাচিত হন (১৯৯১)। রাজু সংসদের সভাপতি,রাজুর বিভাগের অধ্যাপক সিরাজুল হক এখনো স্মরণ করেন রাজুর মেধার কথা,রাজনীতি ও পড়াশোনা কে সুন্দর করে সমন্বয় করার কথা।
রাজু যেখানে থাকতেন, শহীদুল্লাহ হলের সেই ১২২ নং কক্ষতে আমরা যখনই যাই, এক ধরনের শিহরণ কাজ করে। আমরা, রাজুর উত্তরসূরিরা যেন অনুভব করি- এই সেই কক্ষ, যেখানে ঘুমাতে যেতেন শহীদ রাজু; কখনো রাত জেগে পড়াশোনা করতেন কিংবা বন্ধুদের সাথে তর্কে মেতে উঠতেন দেশ-সমাজ-রাজনীতি-অর্থনীতি-দর্শন নিয়ে। হয়তো কখনো আবৃত্তি করতেন প্রিয় কবি জীবনানন্দ দাশের কোন পংক্তি, আবার কখনো এই কক্ষ থেকেই রাতদুপুরে রং-তুলি হাতে বের হয়ে যেতেন দেয়াললিখন করতে। সেই রং-তুলি অথবা জীবনানন্দ দাশের কবিতা; মৃত্যুও আগ মুহূর্তেও রাজু কাছ ছাড়া করেন নি। গুলিবিদ্ধ হওয়ার সময় স্লোগানরত রাজুর কাঁধে যে ব্যাগ ছিল, সেই ব্যাগে ছিল নোটখাতায় নিজ হাতে টুকে রাখা জীবনানন্দের কবিতা এবং রং করার ব্রাশ ও হকিয়ার। শহীদ রাজুর রক্তমাখা শার্ট ও ব্যাগ এখনো সংরক্ষিত আছে ডাকসুর সংগ্রহশালায়।
রাজু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রমিথিউস। ছাত্র আন্দোলনের একনিষ্ঠ কর্মী রাজু ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় ও নিরলস শ্রমে গড়ে তুলেছিলেন প্রজ্ঞা কোচিং সেন্টার; কোন বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যে নয়- বরং যারা সামর্থ্যের অভাবে কোচিং সেন্টারে ভর্তি হতে পারে না, তাদের শিক্ষাসহায়তা দেবার তাগিদ থেকে। মৃত্যু কমাস আগেও শীতার্ত বঞ্চিত শিশুদের জন্য শীতবস্ত্র সংগ্রহ করে বিতরণ করেছিলেন রাজু। এখানেই থামার কথা ছিল না রাজুর। মাকে বলতেন,দেখো,একদিন আমার পরিচয়ে তুমি পরিচিত হবে।’ রাজুর চোখে জোনাক পোকার মত জ্বলজ্বল করত স্বপ্ন। যে স্বপ্নের সলতে রাজু জ্বালিয়েছেন, তা আজো জ্বলছে আমাদের চেতনায়। রাজুর চেতনাদীপ্ত ‘সন্ত্রাসবিরোধী রাজু স্মারক ভাস্কর্য’ এখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের আপামর তরুণ ও প্রগতিশীল মানুষের কাছে প্রতিবাদের অন্যতম প্রধান উৎসমুখ।
মূলত, মঈন হোসেন রাজু একটি বিষয়কে এই ক্যাম্পাসের শিক্ষার্থীদের কাছে স্পষ্ট করে গিয়েছিলেন। সেটা হলো অন্যায় ও অসাম্যের বিরুদ্ধে প্রতিবাদের প্রয়োজনীয়তা। আজো ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের বিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ক্যাম্পাসে নানা রকম অন্যায়, দূর্নীতি ও সন্ত্রাসের কার্যক্রম চলে প্রায় নির্বিঘ্নে। ক্ষমতাসীন অথবা ক্ষমতাকেন্দ্রিক কাঠামোর লেজুরবৃত্তিকারী ছাত্র সংগঠনগুলো এই অন্যায় কার্যক্রমের মূল হোতা। সাধারন শিক্ষার্থীরা বিভিন্নভাবে এদের কাছে জিম্মি থাকে। অন্যায় প্রচন্ড আকার নিলেও মুখ বুজে তা সহ্য করতে চায় আত্মরক্ষার বোধ থেকে, কিন্তু এই প্রতিবাদহীনতা এক চরম নৈরাজ্যের দিকে ঠেলে দেয় আমাদের অস্তিত্বকে! ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের দু’গ্রুপের সংঘর্ষে নিহত হলো স্যার এ.এফ.রহমান হলের মেধাবী শিক্ষার্থী আবু বকর। বুয়েটে মারা যায় সাবেকুন নাহার সনি। অতি সম্প্রতি বুয়েটে সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্ট এর নেতা গৌতম ও মামুনকে প্রচন্ডভাবে আহত করে ছাত্রলীগের গুন্ডারা, কেননা ছাত্রফ্রন্ট তাদের দূর্নীতি, স্বেচ্ছাচারিতা, দখলদারিত্ব- এই সব বিষয় নিয়ে পোস্টারিং ও অন্যান্য প্রোগ্রাম হাতে নিয়েছিল। মেধাবী শিক্ষার্থী আবু বকর, মহিউদ্দিন বাঁচতে পারেনি, কোনো রকন ঝামেলায় ইচ্ছে তাদের ছিলো না। কিন্তু তারপরও তাদের মরতে হয়েছে। অপরদিকে সংগ্রামী চেতনায় রাজু আজো আমাদের কাছে ভাস্বর হয়ে আছে।
তাই, আজ অন্যের জন্য না হলেও, নিজের জন্য হলেও নিজেকে প্রশ্ন করা উচিৎ আমরা কোন পক্ষে যাবো? মুখ বুজে সকল অন্যায় মেনে নিবো, একদিন অযথা খুন হয়ে যাবো; নাকি অন্যায়ের প্রতিবাদ করতে শিখবো, তাতে প্রাণ গেলেও আপত্তি থাকবেনা। এই নষ্ট সময়ে আমাদের সকলের জেগে ওঠার, প্রতিবাদ করতে শেখার খুব প্রয়োজন, সময়ের দায় আমাদের এই প্রজন্মকে নিতেই হবে, তাহলেই শুধুমাত্র সুন্দর আগামীর স্বপ্ন দেখা সম্ভব হবে আমাদের পক্ষে। শামসুর রহমানের ভাষায় তাই আশাবাদ ব্যক্ত করে বলতেই হয়-
‘যে তোমাকে কবরে নামিয়েছি বিষন্নতায়, সে নও তুমি।
প্রকৃত তুমি ঐ মাথা উঁচু করে আজও নতুন সভ্যতার আকর্ষণে,
হেঁটে যাচ্ছ পুঁতিগন্ধময় গুহা-কাঁপানো মিছিলে,
তোমার অঙ্গীকার-খচিত হাত নীলিমাকে স্পর্শ করে নিঃশঙ্ক মুদ্রায়,
ওরা তোমাকে যতই পুড়িয়ে ভস্ম করুক হিংসার আগুনে,
তুমি বারবার আগুন থেকে বেড়িয়ে আসবে পুরাণের পাখি।’
শহীদ মঈন হোসেন রাজু
তোমার পায়ের ছাপ
এখনো দেখায় পথ
সূর্যের দিকে।
লেখাটির জন্য বায়সকে ধন্যবাদ।
রাজু এই একটি জায়গায় অসংখ্য বরণীয় ব্যক্তিকেও হার মানিয়েছেন। রাজুরা সত্যিই মৃত্যুঞ্জয়ী…..
লেখাটির জন্য আপনাকে অনেক অনেক অনেক ধন্যবাদ।
পোস্টটি দেওয়ার জন্য ধন্যবাদ!!!
:guru: রাজু আপনাকে আমার শতশত সেলাম।।। :guru:
শিক্ষাঙ্গনে সন্ত্রাস ও সহিংসতা বন্ধে ক্ষমতাসীন গোষ্ঠীর মনোভাব পরিবর্তন করতে আপনি মৃত্যু বরন করেছ ঠিকই।আপনার দেখানো পথে চলবে আজকের যুবসামাজ।দেশবাসীকে।
শিক্ষাঙ্গনে সন্ত্রাসবিরোধী দিবস হিসেবে পালন করে শিক্ষাঙ্গনের মধ্যে তাদের প্রতিবাদ সীমাবদ্ধ রাখলে চলবেনা।আমি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ছাত্রিদের তথা দেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোকে অনুরোধ করব নিজেদের সন্ত্রাসমুক্ত করে গণতান্ত্রিক সহাবস্থান নিশ্চিত করার আহ্বান জানাক বিভিন্ন সভা-সমিতির মাধ্যমে সমস্তদেশবাসীকে।
রাজু মারা গেছেন। কিন্তু রেখে গেছেন অসংখ্য উত্তরসূরী।যে সন্ত্রাসী-ছাত্র-রাজনীতিকে পরিশুদ্ধ করতে চেয়েছিলেন মঈন হোসেন রাজু, সেই সন্ত্রাসী-ছাত্র-রাজনীতি পরিশুদ্ধ হওয়ার বদলে দিনে দিনে থাবা বিস্তার করছে। মানুষ ছাত্ররাজনীতিকে ভয় পায়, রাজু চেয়েছিলো ছাত্ররাজনীতিকে ভয়ের জায়গা থেকে সরিয়ে শ্রদ্ধা ও ভালোবাসার জায়গায় প্রতিষ্ঠিত করতে।
রাজু আপনার অফুরন্ত স্বপ্ন সত্যি হয়ে উঠুক…
রফিক,বরকত,সালাম ও জব্বার সহ নাম না জানা ও অজানাদের রক্ত যেমন বৃথা যায় নি তেমনি মঈন হোসেন রাজু,মিলন বা নূর হোসনের রক্তও বৃথা যাবে না যতই নরখাদক, নরপিচাশ, ভন্ড,জালিয়ত,গডফাদার এবং যত ধরনের কুৎসিত শব্দ মানুষের জীবনে আমরা ব্যবহার করি সেসব বিশেষনে ভূষিত আমাদের জীবন নিয়ে হোলিখেলা,হত্যা করা,গুম করার মালিক তথাকথিত:guli: নষ্ট রাজনীতিবিদরা ও তাদের হোতারা কোথাও পালানোর জায়গা খুঁজে পাবে না একদিন।সময়ের কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে তাদের সে জবাব দিতেই হবে।
সকল আত্বত্যাগী,মহিমাম্বী মানুষ যারা আমাদের সুন্দর জীবনের জন্য নিজেদের জীবন উৎসর্গ করেছেন তাদের পাশে নিজেকে বিলীন করলাম।
নিঃসঙ্গ বায়সকে ধন্যবাদ।
ভাস্কর্যের ছবিগুলো দেখা যাচ্ছে না।
আশ্চর্য্য হলাম–বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয়ে এখনও খুন খারাবি, হানাহানি হয়। চল্লিশ বছর আগে আমরা যখন বুয়েটে ছিলাম তখনও মারামারি হত তবে কেঊ মর্মান্তিক ভাবে আহত অথবা খুন হত না। কারও হাতে বন্দুক অথবা পিস্তল থাকত না। মারামারিতে হকিস্টিক অথবা ইটপাটকেল ব্যবহার হত।
@আবুল কাশেম,
বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালিয়ে যে অস্ত্রের মহড়া চলে তা কিন্তু আমাদের দেশের পলিটিক্যাল লিডারদেরই উপহার (G) দেওয়া। বা আন্ডার গ্রাউন্ডের পলিটিক্যাল নেতাদের দেওয়া।
আর এখন বিশ্ব-বিদ্যালয় কেন, বুয়েটেও একই অবস্থা যার কিছু চিত্র তুলে দিয়েছেন বুয়েটেরই নব্য প্রকৌশলী স্বাক্ষর শতাব্দী। তার লেখাটাও পড়ে দেখতে পারেন।
খুবই সত্যি!
কিন্তু এ পথ থেকে বেরুবার রাস্তা কি?
সমাধান মনে হয় রাজনীতিবিদদের হাতে!
ওদের হাতই ছাত্রদের রক্তে রক্তাক্ত হয় বার বার!
ধন্যবাদ নিঃসঙ্গ বায়সকে,ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শতেক রাজুর একজনকে স্মরণ করার জন্য এবং করিয়ে দেওয়ার জন্য।
১৯৯২ সালের ১৩ মার্চ সন্ত্রাসীদের গুলিতে রাজু নিহত হওয়ার পর সাধারণ ছাত্রের বিক্ষোভ মিছিলে আমিও ছিলাম। আমি সেদিন মিছিলে গলা তুলেছি:
কিন্তু ইতিহাস স্বাক্ষী, শিক্ষাঙ্গনের খুনীরা বরাবরই পার পেয়ে যায়… (W)
ব্যাপারটা বুঝলাম না। শিবির কর্মীর মার খাওয়াতে সাধারণ ছাত্ররা ক্ষেপল কেন? তাদের তো খুশি হওয়ার কথা :-s
@পৃথিবী,
ওই সময় ক্ষমতায় বি.এন.পি. ছিলো, মার খেয়েছে শিবির কর্মী, দিয়েছে সাধারন ছাত্ররা মিলে, পুলিশের সাথে বাক বিতন্ডা হয়েছে সাধারন ছাত্র-ছাত্রীদের, এবার বিষয়গুলোকে একটু মেলানোর চেষ্টা করুন দেখি…