সম্প্রতি জাতিসংঘও বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে নারীর সমঅধিকার ঘোষণা করলেও বর্তমানে বিজ্ঞানের ক্ষেত্রে তাদের বিচরণ একেবারেই কম। বিখ্যাত নারী বিজ্ঞানীর সংখ্যা হাতেগোনা কয়েকজন মাত্র। উত্তর-আধুনিক এই যুগে সারাবিশ্ব যেখানে প্রযুক্তির জোয়ারে ভাসছে সেখানে নারীদের এই বিজ্ঞান বিচ্ছিন্নতা কেবল অস্বাভাবিক নয়, বেমানানও বটে। বস্তুত নারী-পুরুষের এ অসম অনুপাত বিজ্ঞানের ভবিষ্যৎকে অনিশ্চিত ও সংকটাপন্ন করে তুলতে পারে। ডিসকাশন প্রজেক্ট এর পক্ষ থেকে স্কুল কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ের নারীদের মতামত নেওয়া হচ্ছে। সেগুলোও প্রকাশ করা হবে
আধুনিক বিজ্ঞানের সফল পথচলায় নারীদের নগণ্য উপস্থিতিকে বিজ্ঞানের একটা বড় পরাজয় হিসেবেই দেখা হচ্ছে। কিন্তু কেন পিছিয়ে পড়ছেন নারী বিজ্ঞানীরা। তার কারণ বিশ্লেষণ করতে গিয়ে দেখা গেছে, বিজ্ঞান চর্চার বিভিন্ন পর্যায়ে নানা প্রতিকূলতা ও প্রতিবন্ধকতা নারীদের বিজ্ঞানবিমুখ করে তুলছে। যে কারণে বিজ্ঞানের সুদীর্ঘ পথ পাড়ি দিতে তারা ব্যর্থ হচ্ছেন। এ প্রসঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের কয়েকজন গবেষকের মতামত হলো, বড় ধরনের সুযোগ-সুবিধা থাকা সত্ত্বেও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো নারী বিজ্ঞানীদের সংখ্যা বাড়ানোর জন্য সেগুলোকে সঠিকভাবে কাজে লাগাতে পারছে না। ফলে বিজ্ঞানভিত্তিক প্রতিষ্ঠানগুলোতে নারীরা সচেতন অথবা অসচেতনভাবে বৈষম্যমূলক আচরণের শিকার হচ্ছেন। আবার একই সঙ্গে তাদের নিজের ঘর ও পারিবারিক জীবন সামলানোর অতিরিক্ত ঝামেলাও পোহাতে হচ্ছে। আর এসব প্রতিকূলতাই নারীদের বিজ্ঞান থেকে বিচ্ছিন্ন করে ফেলছে। যুক্তরাষ্ট্রের উইসকিনসন মেডিসিন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান কর্মকর্তা জো হ্যান্ডেলসম্যান ও তার কয়েকজন সহকর্র্মী মিলে গবেষণা করে দেখেছেন, বিজ্ঞান চর্চা করতে গিয়ে মূলত চারটি ক্ষেত্রে নারীরা প্রতিবন্ধকতার সম্মুখীন হচ্ছেন_
এগিয়ে যাওয়ার পথে বাধা : বিজ্ঞানের প্রাতিষ্ঠানিক ক্যারিয়ার গড়ে তুলতে গিয়ে অনেক ক্ষেত্রেই সুবিধাবঞ্চিত হচ্ছেন নারীরা। যুক্তরাষ্ট্রের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে দেখা গেছে, বিজ্ঞান চর্চার ক্ষেত্রে নারীদের নানা ধরনের অপ্রত্যাশিত সমস্যার মুখোমুখি হতে হচ্ছে। কারণ এসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কখনও কখনও প্রকাশ্যেই নারীদের সঙ্গে অনৈতিক আচরণ করা হয়। আবার লোকচক্ষুর আড়ালেও তাদের প্রতি নানাভাবে বৈষম্য সৃষ্টি করা হয়। যেমন_ বিজ্ঞানের বেশ কয়েকটি উল্লেখযোগ্য বিষয়ে বিশেষত প্রকৌশলবিদ্যা ও শরীর বিজ্ঞানে খুব কমসংখ্যক নারীকে পিএইচডি লেভেল পর্যন্ত শিক্ষাগ্রহণের সুযোগ দেওয়া হয়। আর এ ধরনের অবমূল্যায়ন ও অশ্রদ্ধাজনিত আচরণের কারণে হীনমন্যতায় ভোগেন নারী বিজ্ঞানীরা। ফলে বিজ্ঞানে উচ্চশিক্ষা অর্জন করার উৎসাহটাও তারা হারিয়ে ফেলেন।
কর্মক্ষেত্রের প্রতিকূল পরিবেশ
কর্মস্থলের প্রতিকূল পরিবেশ নারীদের বিজ্ঞান শিক্ষার ক্ষেত্রে একটা বড় বাধা। কারণ কর্মক্ষেত্রে পুরুষ সহকর্মীরা তাদের কাজের বিরোধিতা করে ও তাদের বিভিন্ন সময় হেয়প্রতিপন্ন করে। সহকর্মীদের এই অসহযোগিতাপূর্ণ মনোভাব ও অবহেলার কারণে অনেক নারী তাদের পেশা বিজ্ঞান চর্চার ক্ষেত্র থেকে সরে আসতে বাধ্য হন।
অসচেতন পক্ষপাতিত্ব
বিজ্ঞানভিত্তিক প্রতিষ্ঠানগুলোতে যেমন সচেতনভাবে নারীদের অবমূল্যায়ন করা হয়, তেমনি অসচেতনভাবেও অনেক সময় তাদের প্রতি বৈষম্যমূলক আচরণ করা হয়। এ ক্ষেত্রে দেখা যায়, যারা বিজ্ঞানীদের কাজের মূল্যায়ন করেন তারা যদি আগে থেকেই জানেন, কাজটি কোন নারী করেছেন তাহলে স্বভাবগত কারণেই তারা সেই কাজের নিম্ন স্কোরিং করেন।
পরিবার এবং কাজের ক্ষেত্র সামলানোর জটিলতা পারিবারিক দায়-দায়িত্বের বেশিরভাগই মেয়েদের বহন করতে হয়। যে কারণে একাডেমিক ক্যারিয়ারের প্রতি তারা খুব বেশি মনোযোগী হতে পারেন না। বিশেষ করে বাচ্চা জন্মদানের সময় তারা দীর্ঘদিন কাজ থেকে বিচ্ছিন্ন থাকেন। কিন্তু পরে যখন আবার কাজে ফিরে আসেন তখন দেখা যায়, কর্মস্থলের সঙ্গে তাদের একটা ব্যবধান সৃষ্টি হয়ে গেছে। যে কারণে পরবর্তী সময়ে বিজ্ঞান, প্রকৌশলগত কিংবা প্রযুক্তিগত কোনো কাজ করতে গিয়ে তারা সমস্যায় পড়েন। পাশাপাশি পারিবারিক বিভিন্ন ঝামেলাও তাদের কাজের ক্ষেত্রকে বাধাগ্রস্ত করে। আর এর ফলে কর্মক্ষেত্রে নারী বিজ্ঞানীদের আনুপাতিক হার ক্রমে হ্রাস পাচ্ছে।
তবে কেবল যুক্তরাষ্ট্রেই নয়, নারী বিজ্ঞানীদের অবস্থানগত বৈষম্যের ক্ষেত্রে যুক্তরাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতেও কোনো ব্যতিক্রমী ধারা লক্ষ্য করা যায় না। পূর্ব অ্যাংলিয়ার একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের ওপর গবেষণায় দেখা গেছে, যুক্তরাজ্যে প্রাতিষ্ঠানিক বিজ্ঞান চর্চার বিভিন্ন পর্যায়ে মূল অবস্থানগুলোতেই রয়েছেন পুরুষরা। সে কারণে কর্মক্ষেত্রে নারীরা উচ্চপদস্থ পুরুষ কর্মকর্তাদের অবহেলার কারণে ক্যারিয়ারের উন্নতি ঘটাতে ব্যর্থ হচ্ছেন। সম্প্রতি আরও একটি গবেষণায় দেখা গেছে, যুক্তরাজ্যের প্রায় ৫০ হাজার নারী তাদের অর্জিত জ্ঞান ও প্রকৌশলগত দক্ষতাকে কোনো কাজেই লাগাচ্ছেন না। যদিও দেশের অর্থনীতির জন্য এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়।
বিজ্ঞানে নারীদের জন্য গৃহীত কিছু পদক্ষেপ
নিরবচ্ছিন্ন ও সফল বিজ্ঞান চর্চার স্বার্থেই নারীদের কর্মক্ষেত্রে ফিরিয়ে আনার প্রয়োজন বোধ করছে বিজ্ঞানভিত্তিক প্রতিষ্ঠানগুলো। যুক্তরাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো ইতিমধ্যেই নারী-পুরুষের অসমতা কমাতে বিজ্ঞান, প্রযুক্তিগত ও প্রকৌশলগত ক্ষেত্রে সম্ভাবনাময় নারী বিজ্ঞানীদের জন্য বিশেষ কিছু সুযোগ-সুবিধা প্রদানের কর্মসূচি হাতে নিয়েছে। বিজ্ঞান চর্চায় সংস্কৃতিগত পরিবর্তন আনতে যুক্তরাজ্যের ব্রিস্টল, ক্যামব্রিজ, হেরিয়ট ওয়াট ও অক্সফোর্ডসহ মোট দশটি বিশ্ববিদ্যালয় এই কর্মসূচি পালনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। বিজ্ঞান চর্চা থেকে নারী বিজ্ঞানীদের ঝরে পড়া রোধে অ্যাথেনা প্রজেক্ট এবং সায়েন্টিফিক উইমেন্স নেটওয়ার্ক (ঝডঅঘ) যে ছয়টি বিষয় সুবিধা-কর্মসূচির আওতাভুক্ত করেছে
তা হলো_
১. প্রাতিষ্ঠানিকভাবে সব পর্যায় থেকে লিঙ্গ বৈষম্য দূর করার জন্য গৃহীত উদ্যোগ ও কার্যক্রম তুলে ধরা।
২. বিজ্ঞানভিত্তিক প্রতিষ্ঠানগুলোতে নারীদের অসম উপস্থিতিকে ভারসাম্য অবস্থায় আনতে সাংস্কৃতিক ও মনোভাবগত পরিবর্তন ঘটানো।
৩. বিজ্ঞান চর্চা থেকে উচ্চহারে নারীদের ঝরে পড়ার বিষয়টিকে গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করা।
৪. বিজ্ঞানভিত্তিক পেশায় নারীদের স্থিতিশীল করার ক্ষেত্রে স্বল্পমেয়াদি চুক্তিগুলোর একটা নেতিবাচক প্রভাব রয়েছে। সে কারণে এসব চুক্তি সংশোধনের পরিকল্পনা নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো।
৫. বিজ্ঞানে পিএইচডি করার পর একটা স্থায়ী একাডেমিক ক্যারিয়ার গড়ে তোলা নারীদের জন্য অনেকটাই কঠিন হয়ে দাঁড়ায়। তাই এ ক্ষেত্রে সংস্থাটি কতগুলো কার্যকরী বিষয় বিবেচনাধীন রেখেছে।
৬. বিজ্ঞানভিত্তিক প্রতিষ্ঠানগুলোতে ব্যবস্থাপনা এবং নীতি-নির্ধারণের ক্ষেত্রে বৈচিত্র্যের অভাব নারী বিজ্ঞানীদের পিছিয়ে পড়াকে ব্যাপকভাবে প্রভাবিত করছে। আর এ বিষয়টিই যাচাইয়ের চেষ্টা করছে সোয়ান প্রজেক্ট।
আরও যা করণীয়
উলি্লখিত ছয়টি কর্মসূচির পাশাপাশি আরও কতগুলো বিষয়ে পরিবর্তন আনার প্রস্তাব করেছেন নারী বিজ্ঞানীরা, যা তাদের কর্মক্ষেত্র এবং পরিবারের মধ্যে ভারসাম্য রক্ষায় সাহায্য করবে। যেমন_ কর্মস্থলে বাচ্চাকে দুধ খাওয়ানোর জন্য আলাদা রুমের ব্যবস্থা করা এবং শিশুর যত্নের জন্য অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা প্রদান করা। পাশাপাশি নারী বিজ্ঞানীদের জন্য সুবিধাজনক কাজের সময়ও নির্ধারণ করতে হবে। নারী বিজ্ঞানীদের চাহিদা অনুযায়ী এসব ব্যবস্থা গ্রহণ এবং ‘সোয়ান’ কর্তৃক গৃহীত পদক্ষেপের সফল বাস্তবায়ন সম্ভব হলে তা বিজ্ঞানের অগ্রগতিতে একটা বিরাট ভূমিকা রাখবে বলে আশা করা হচ্ছে।
বাংলাদেশ প্রেক্ষাপট
মেয়েদের ক্ষেত্রে দেখা যায়, প্রথাগত কিছু ধারণা তাদের বিজ্ঞান চর্চার ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করছে। বাংলাদেশের অনেক আধুনিক চিন্তাশীল মানুষও মনে করেন, মেয়েরা ছেলেদের তুলনায় জন্মগতভাবে কম মেধাবী, যে কারণে এটা নিশ্চিতভাবেই ধরে নেওয়া হয়, বিজ্ঞান নিয়ে পড়লে মেয়েরা খারাপ ফল করবে। আর এ আশঙ্কা থেকে বাবা-মাও তাদের মেয়েসন্তানকে বিজ্ঞান পড়াতে উৎসাহী হন না। এ সম্পর্কে ঢাবির চতুর্থ বর্ষের ছাত্রী শান্তা বলেন, ‘ক্লাসে সবসময় মধ্যম শ্রেণীর ছাত্রী ছিলাম বলে ভয় ছিল হয়তো বিজ্ঞান বিভাগে পড়লে ভালো করতে পারব না। তাছাড়া বাবা-মাও চাননি আমি বিজ্ঞানে পড়ি। যে কারণে এখনও আমার মধ্যে বিজ্ঞানভীতি কাজ করে। এমনকি পাঠ্যপুস্তকবহির্ভূত বিজ্ঞানবিষয়ক কোনো বই পড়তেও তেমন আগ্রহ বোধ করি না।’ টঙ্গি ক্রিস্ট্যাল কলেজ একাদশ শ্রেণী ব্যবসায় শাখার ছাত্রী তানিয়া আক্তার বলেন, আমার বিজ্ঞান বিষয়ক পড়ার আগ্রহ থাকলেও প্রয়োজনীয় সূযোগ সুবিধার অভাবে আর তা হয়ে ওঠেনি। আমার মনে হয় এ ব্যাপারে পারিবারিকভাবে অভিভাবকদের সহযোগিতা জরুরি। একই অভিমত ব্যাক্ত করেন একই কলেজের সাবেকুন নাহার।
কৃতজ্ঞতা: ডিসকাশন প্রজেক্ট
আমাদের জ্যোতিঃপদার্থবিজ্ঞান ইনস্টিটিউটে বিভাগীয় প্রধান থেকে শুরু করে প্রথম দিককার অনেক অধ্যাপকই নারী।
আমাকে বুঝান তো- দেশে নাকি সম্পত্তির সমান ভাগ নিয়ে আইন হচ্ছে; আর শুনতে পাচ্ছি বেশির ভাগ মেয়েরাই নাকি এর বিরোধিতা করছে! কেন?
@শ্রাবণ আকাশ,
বেশির ভাগ মেয়েরা নয় বলুন ইসলামে নিবেদিত প্রান মহিলারাই এর বিরোধিতা করতে পারে। ইহকালের সম্পত্তির সমান ভাগ নিয়ে পরকালের ভোগ (?) হারাতে চায়না এইসব মহিলাগন। ধর্ম মানুষকে কত অজ্ঞতার দিকে ঠেলে দিতে পারে এটা হলো তার উদাহরন। দুর্ভাগ্য আর কাকে বলে। 🙁
@আসিফ,
নারী পুরুষ সমদর্শিতা নিয়ে চমৎকার একটি লেখা লিখেছেন। সাথে সায়েন্টিফিক উইমেন্স নেটওয়ার্ক সহ আপনার সুপারিশও বাস্তব সম্মত।
ধন্যবাদ এ জেন্ডার ইস্যু নিয়ে লেখার জন্য ।
জেন্ডার ইস্যু নিয়ে বিতর্ক? সে তো হবেই। তবুও এ ইস্যু নিয়ে লেখা অব্যাহত রাখার অনুরোধ রইল।
নারীরা এতো বিজ্ঞানবিচ্ছিন্ন কেনো এটাতো জিজ্ঞেস করার মতো একটি প্রশ্ন বটেই, আরও গুরুত্বপুর্ণ প্রশ্ন হচ্ছে সুন্দরী নারীরা এতো বিজ্ঞানবিচ্ছিন্ন কেনো! 😀 😀 😀
@আল্লাচালাইনা,
😀 😀
@আল্লাচালাইনা,
মার্ফির সূত্র মতে :
বুদ্ধি x রূপ x লভ্যতা = ধ্রুব ( এখানে ধ্রুবর মান শুন্য) (@)
@সংশপ্তক,
একটু আগেই না বললেন
যে কোন সুত্রেই ধ্রুবর মান শুন্যতা মেনে নেওয়া কঠিন। :))
@কাজী রহমান,
আমার টীমের কথা যেহেতু তুললেন , সেখানেও এই সূত্র ঠিক আছে।
বুদ্ধি x রূপ x লভ্যতা = ধ্রুব
সেখানে অবশ্যই বুদ্ধি > 0 , কিন্তু লভ্যতা কিংবা রূপের যে কোন একটার কিংবা উভয়ের মান শূন্য।তার ফলে , ধ্রুবের মান ঠিকই শেষ পর্যন্ত শুন্য থাকছে। বিজ্ঞানীদের মাঝে মধ্যে ধ্রুব মেনে নিয়েই ক্ষেত্র বিশেষে বিক্ষিপ্ত পরিসংখ্যানিক বিচ্যুতির জন্য অপেক্ষা করতে হয়। (@)
@সংশপ্তক,
এই ব্লগে অন্তত দুজন বাঘা ব্লগার আছেন যারা কিন্তু লভ্যতায় ঘামসুত্র আর রূপে গাবদাগাবুস সুত্র দাঁড় করিয়েছেন। পরম শূন্যতার খবর না পাওয়া পর্যন্ত শুধু শুধু শুন্যতায় বসবাস; এ কেমন কথা। 🙂
@সংশপ্তক, হে হে।
আমার অভিজ্ঞতা বলে, সুন্দরী ছেলেদের রূপগর্ব এমনি যে বুদ্ধিকে ঋণাত্মক করে দেয়। শুণ্য মনে হয় সে তুলনায় খারাপ না।
আমি অন্তত একজন সুন্দরীর সন্ধান দিতে পারি, যার বুদ্ধি, রূপ, লভ্যতা এবং সাথে ব্যক্তিত্ব সবকটার গুনফল, আমার চেনা ৯৫ ভাগ পুরুষের জন্য ঈর্ষার কারণ। 😀
বাদ দেই প্রসঙ্গ, বুদ্ধির মুক্তি আসুক, বিজ্ঞানেও আসবে। আমি প্রকৌশল বিদ্যা পড়তে চাই নি, পড়তে হয়েছে। কিন্তু শেষটাই প্রকৌশলকে ছেড়ে বিজ্ঞানকে মাথায় নিয়েই চলার বাসনা। ডিজাইন সেন্সটা খুব ভালো ভাবে কাজে লাগে, দরকারও মনে হয়, কিন্তু ডিজাইনের মূল সূত্র কিন্তু হিট ট্রান্সফার বা স্ট্রেস অ্যানালাইসিসেই। এগুলো কি?
বাংলাদেশের বাইরের কথা ভুলে যান। বাংলাদেশে রসায়নে পড়া কোন বালক কিংবা বালিকা রসায়নবিদ হয়ে ওঠে? সে কি সুযোগটুকু পায়। বাংলাদেশে বিজ্ঞান এখনো বিলাসিতার পর্যায়েই আছে। পদার্থবিজ্ঞানে মাস্টার্স শেষ করে পথ খোলা থাকে দুটো, হয় বাইরে চলে যাও পড়তে নাহয় স্কুল বা কলেজে শিক্ষকতা কর। বড়জোর বিশ্ববিদ্যালয়ে। এইজন্যই কি আমাদের পদার্থবিজ্ঞানে পড়ালেখা করা দরকার?
ব্যবস্থা তো অবস্থা বুঝেই নিতে হয়, নইলে কি কাজে লাগে? যেকোন সূত্র দাঁড় করাবার আগে এটা যাচাই করে নিতে হবে, সূত্রটা কাজে লাগাবার জায়গা আছে কিনা। আমি যদি মহাকাশ বিদ্যার জ্ঞান মাথায় নিয়ে রাসায়নিক বিক্রিয়া ঘটাতে যায়, তাহলে কি কাজের কথা হবে?
@নীল রোদ্দুর,
ধন্যবাদ।
‘শক ফ্যাকটর’ নিয়ে আমার এক্সপেরিমেন্টটা দেখা যাচ্ছে সফল । (@)
এই এক্সপেরিমেন্টটা এ্যাকশনের বদলে সম্পুর্ন রিএ্যাকশন নির্ভর , কারন এ্যাকশনে প্লানিংয়ের যে সূযোগ থাকে রিএ্যাকশনে সেই উইন্ডোটা অনেক সীমিত।
মার্ফির সূত্রটা কিন্তু নারী পুরুষ সবার ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য। সূত্রটা যত সহজ মনে হয় বোঝার জন্য আসলে কিন্তু তা নয়। এটা তৈরী হয়েছে কয়েকশ বছরে।
এবার দেখা যাক ,
আমি সেরকম অন্তত দুজনকে চিনি। তাদের একজন বর্তমানে জীবিত এবং অন্যজন মৃত।
তবে , মার্ফির সূত্র আরো বলছে যে , ”লভ্যতা (availability) সময়ের একটা ফাংশন। সুখের ৯৮% পূর্বাভাস দিয়ে গড়া । কেউ সুন্দরী কিনা তা নিশ্চিত করার জন্য কাউকে না পাওয়া গেলেও তার বয়ফ্রেন্ডকে সবসময় পাওয়া যাবে।
সৌন্দর্য = ৫০% ব্যক্তির যা আছে + ৫০% ব্যক্তির যা আছে বলে অন্যরা যা ধারণা করে। (@)
@আল্লাচালাইনা, দুঃখজনক হলেও সত্যি যে , সংশপ্তকের দেওয়া মার্ফির সূত্রটা কিন্তু ছেলে এবং মেয়ে দুদলের ক্ষেত্রেই সমানভাবে প্রযোজ্য! আমি যে কত মিটিং এ বসে হাই তুলতে তুলতে ভেবেছি একটা স্মার্ট ছেলেও কেন দেখতে ভালো হয় না, আল্লাহ, আমাকে শক্তি দাও যেন এক ঘন্টা চোখ খুলে এর দিকে তাকিয়ে থাকতে পারি :)) ।
@বন্যা আহমেদ,
:lotpot:
@বন্যা আহমেদ,
আচ্ছা একটা জায়গাতেই আপনি সুপারিশ করেছেন। :lotpot:
চোখ নষ্ট হয়ে যাওয়ার আগেই চলুন তউবা করি…বলুন লা ইলাহা ইল্লা আন্তা সুবহানাকা ইন্নি কুওমতু মিনাজ জোয়ালে মিন।
ভুল দুয়া বললাম নাকি? সারাজীবন আরবীতে ফাঁকি…আফসুস! 🙁
@আল্লাচালাইনা, 😀 এটা আসলেই চিন্তার বিষয়, আমার বোন বান্ধবীদের দেখে বুঝতেছি
যুক্তরাষ্ট্রতে বাঙালি বংশউদ্ভুত যেসব ছাত্রী পি এইচ ডি করছে, এই প্রজেক্ট গুলো তাদেরকে আর্থিক বা অন্য কোন সাহায্য করতে পারে কি? কাজ হয়েছে এমন কিছু লিঙ্ক জানা থাকলে অনুগ্রহ করে জানান।
অভিজিৎদা’র কোনো এক লেখায় (মনে হয় বিবর্তনীয় মনোবিদ্যা সিরিজে) পড়েছিলাম যে নারীরা কোন নির্দিষ্ট একটি কাজে ‘এক্সপার্ট’ হয়ার চেয়ে বরং ‘বহু কাজ একসাথে করায়’ এক্সপার্ট হয় অর্থাৎ গবেষণার চেয়ে মেনেজমেন্টে নারীরা ভালো। জানিনা এই বৈজ্ঞানিক তথ্যটি কতোটুকু বাস্তবসম্মত তবে এতে বাস্তবের ছোঁয়াও যে আছে তা অস্বীকার করার উপায় নেই। তবে আমার নিজস্ব মত হলো-উচ্চতর গবেষণায় নারীদের কম অংশগ্রহণের পেছনে মনোবৈজ্ঞানিক কারণ অপেক্ষা সাংস্কৃতিক কারণ বেশি দায়ী। কারণ পুরুষেরা যে উন্মুক্ত পরিবেশটুকু পেয়ে থাকে নারীরা তা থেকে বহুলাংশে বঞ্চিত। অন্য সব চিন্তা বাদ দিয়ে শুধু গবেষণায় লেগে থাকা-এই জাতীয় পরিবেশ নারীরা পায় না বললেই চলে। যদি গবেষণার জন্য উপযুক্ত পরিবেশ দেয়া যায় তখন হত নারীদের সত্যিকারের সামর্থ্য এবং পারফর্মেন্স দেখা যাবে।
@নিটোল,
সাধে কি আর ছেলেরা মেয়েদের হাতে সংসারের সমস্ত ম্যানেজমেন্টের ভার মেয়েদের হাতে ছেড়ে দেয়! 🙂
একমত না। হার্ডকোর বিজ্ঞানে ( তাত্ত্বিক পদার্থবিদ্যা , আনবিক জীব বিজ্ঞান ইত্যাদি) পুরুষদের সংখ্যাও নিতান্ত কম। নারী পুরুষ সবাই বিজ্ঞানের চাইতে প্রয়ুক্তিতে বেশী আগ্রহী। সবাই ইন্জিনিয়ার হতে চায়। বিজ্ঞানী হতে চায় না। বাংলাদেশী শ্বশুরেরা উপরির আশায় বিজ্ঞানীর চাইতে ইন্জিনিয়ার পাত্র-পাত্রীদের বেশী দাম দেন। বেশীরভাগ বাংলাদেশী একজন বিজ্ঞানী আর প্রকৌশলীর মধ্যে পার্থক্য বোঝে না। যার আগ্রহ মহাকাশ বিজ্ঞানে , সে স্হাপত্য কৌশলে ভর্তি হয়। বিজ্ঞান যে কাকে বলে সেটাই তাদের শেখা হয় না।
এবার আমার নিজের এলাকা আনবিক জীব বিজ্ঞানের কথা বলি। আমার টীমে আমি ছাড়া সবাই নারী। এখানে আমি একমাত্র পুরুষ গবেষক। বর্তমানে আনবিক জীব বিজ্ঞানে বিপুল সংখ্যক ইউরোপীয় নারী আসছেন। সাম্প্রতিক বাংলাদেশের এক মেধাবীকে অনেক হাত পা ধরেও ইউরোপে আমার গবেষণা প্রতিষ্ঠানে আসতে রাজী করাতে পারলাম না।
@সংশপ্তক, আমার যতদূর মনে পড়ে কর্পোরেট ওয়ার্ল্ডে এবং কর্মক্ষেত্রে নারী পুরুষের মধ্যে বৈষম্যের ব্যাপকতা নিয়ে আপনার সাথে আমার একবার বিতর্ক হয়েছিল। আমি এই বৈষম্য কমতে শুরু করেছে বলেছিলাম আর আপনি সেটার সাথে দ্বিমত পোষণ করেছিলেন।
সে যাক, এখন এই লেখাটি প্রসঙ্গে আসি। আপনি এখানে যেটা বলেছেন তার সাথে আমি অনেকংশেই একমত। আমি নিজেই ইমিগ্রেশন এবং ভালো চাকরির পাওয়ার জন্য ফোর্থ ইয়ারে হার্ডকোর বিজ্ঞান (আনবিক জীববিজ্ঞান) ছেড়ে কম্পিউটার সাইন্সে মেজর করেছিলাম। আর কর্মক্ষেত্রে আমার অভিজ্ঞতা থেকে যা দেখেছি তা হল, মেয়েদের পিছিয়ে পড়ার পিছনে কর্মক্ষেত্রে নারী পুরুষের মধ্যে সরাসরি বৈষম্যের চেয়ে বরং নারীরা সংসার, সন্তান লালন পালন এবং পারিবারিক দায়িত্বের প্রতি অগ্রাধিকার দেয় দেখে অনেক সময় তারা পিছিয়ে পড়ে। শারীরিক, বিবর্তনীয় এবং সামাজিক কারনেই ছেলেদের চেয়ে মেয়েদের এই ব্যাপারগুলোতে অনেক বেশী ব্যালেন্স করে চলতে বাধ্য হয়, এই সুক্ষ্ম ব্যালন্সটা করতে গিয়ে তারা অনেক সময় পিছিয়ে পড়ে। এটার মীমাংসা করা খুব সহজ নয়, তবে ধীরে ধীরে যে অগ্রগতি হবে এবং হচ্ছে এ নিয়ে খুব বেশী সন্দেহ নেই আমার। যে কোন সামাজিক ট্যাবু ভাঙ্গতে সময় লাগে আর সেখানে যদি তার সাথে আরও কিছু বাড়তি কারন যুক্ত থাকে তাহলে তো কথাই নেই। মাত্র কয়েক দশক হল মেয়েরা এভাবে কর্মক্ষেত্রে বেড়িয়ে আসতে শুরু করেছে ( আমার মাও একজন অত্যন্ত সক্রিয় পেশাদার কর্মজীবি মহিলা) । মাঝে মাঝে নিজেকে বেশ ভাগ্যবান মনে হয় যে, আমি বিংশ শতাব্দীর শুরুতে না জন্মে শেষের দিকে জন্মেছি, আশা করি আমাদের পরের প্রজন্মের নারীরা এ নিয়ে আরও অনেক বেশী সন্তুষ্টি বা গর্ব প্রকাশ করতে সক্ষম হবে।
@বন্যা আহমেদ,
একমত। তবে বেশীরভাগ ক্ষেত্রে দেখেছি নারীরা সংসার ও সন্তান পালনের প্রতি অগ্রাধিকার দেয় বাধ্য হয়ে মুলত সামাজিক চাপে অথবা সংসার ও সন্তান পালনে নারীকে পুরুষের সহযোগীতার অভাবে।
@ব্রাইট স্মাইল্, নাহ আমেরিকায় আমি ঠিক এর বিপরীতটাও দেখেছি। আমি নিজেই একসময় কর্পোরেট সিড়ি বেয়ে ওঠার গতি কমিয়ে দিয়েছিলাম এবং সেটা করেছিলাম কোন চাপে পড়ে নয়, বরং আমার মেয়েকে আরেকটু বেশী সময় দেওয়ার প্রবল ইচ্ছা থেকে। এই তো কয়দিন আগেই আমার সাথে খুব ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করা একজন মেয়ে ভিপি চাকরিই ছেড়ে দিলেন কয়েক বছর তার সদ্যজাত সন্তানকে সময় দিবেন বলে। তবে আপনি যেটা বলছেন সেটাও ভুল নয়, এখনো নারীরা সামাজিক চাপের স্বীকার হয়ে অনেক কিছুই করতে বাধ্য হন, বিশেষ করে আমাদের মত পশ্চাদপদ দেশগুলোতে সে ধরণের উদাহরণই বেশী দেখা যায়। এখানে বোধ হয় বলে নেওয়া ভালো, আমি কোনভাবেই বলতে চাচ্ছি না যে পাশ্চাত্যেও এই বৈষম্য সম্পূর্ণভাবে দূর হয়ে গেছে, তবে বৈষম্যের পাশাপাশি এর পিছনে যে কয়েকটা প্র্যকটিকাল কারনও যুক্ত আছে সেটাও আমাদের মনে রাখা দরকার, তাহলেই সামগ্রিকভাবে সমস্যাটা সমাধানের পথ খুঁজে পাওয়া সম্ভব হবে।
@বন্যা আহমেদ,
আমার প্রশ্ন হচ্ছে সন্তানকে বেশী সময় দেয়ার ইচ্ছেটা শুধু মেয়েদের মনেই জাগে কেন অথবা মেয়েদের উপরই শুধু বর্তায় কেন? সন্তানকে বেশী সময় দেয়ার ইচ্ছে ছেলেদের মনেও জাগা উচিত নয় কি? বাবার সঙও সন্তানের কাম্য এবং দরকারও।
সংসার বা বাচ্চা সামলাবার দায়ীত্ব অবধারিতভাবে মেয়েদের উপর ন্যাস্ত হয় বলে দেখা যায় ছেলেদের বদলে মেয়েদেরকেই এই উদ্ধুধ পরিস্থিতির শিকার হতে হয়। আর সে ক্ষেত্রে চাকুরী ছেড়ে দেয়ার বাধ্য বাধকত্টা মেয়েদের উপর বেশী কাজ করে।
তবে ব্যতিক্রম যে নাই এ কথা বলা যাবেনা। চাকুরী ছেড়ে দিয়ে ছেলেরাও সংসার বা বাচ্চা-কাচ্চা লালন পালন করার উদাহরন আমেরিকাতেও দেখা যায়। তবে ছেলেদের বেলায় সেটা ঘটে একান্ত নিজস্ব ব্যক্তিগত ইচ্ছায় বা আনন্দে, কোন চাপে পড়ে নয়।
@বন্যা আহমেদ,
একটা সময় কাটাবার পর কর্পোরেট মোহ ভাঙ্গতে আমার বেশী সময় লাগে নি। তাই সময় থাকতেই আবার একাডেমিয়ায় ফিরে এসেছি। এটা সম্ভব হয়েছে স্ট্রাটেজিক আর ট্যাকটিকাল দৃষ্টিভঙ্গীর মধ্যকার পার্থক্য বোঝার কারনে। স্বল্পমেয়াদী লাভের মোহ ছেড়ে দিয়ে দীর্ঘমেয়াদী লাভের জন্য যে দূরদৃষ্টি দরকার তা সবার মধ্যে দুর্ভাগ্যক্রমে কাজ করে না।
@সংশপ্তক,
একটা গবেষনায় দেখেছিলাম যে কানাডায় এখনো (সে রিপোর্টে খুব সম্ভবর বলেছিল আমেরিকায় এই প্রবনতা আরো বেশী) ইঞ্জিনিয়ারিং এ মেয়েরা আসছে অনেক অনেক কম হারে। এখনো মেয়েরা ব্যাপক মাত্রায় মূলত নির্দিষ্ট কতগুলি পেশাতেই বেশী যায়। সেই পুরনো ধারনা মেয়েরা অমুক কাজ করতে পারে না, তমুক কাজ করতে পারবে না সেই ধারনা পশ্চীমেও এখনো বেশ কিছু মাত্রাতেই আছে।
যার কারনে মেয়েরা মানসিকভাবেই এ জাতীয় বেশ কিছু পেশা সম্পর্কে ভ্রান্ত ধারনা করে রাখতে বাধ্য হয়। চাকুরি ক্ষেত্রেও মেয়েরা এখানেও বৈষম্যের স্বীকার এখনো হয়। যদিও সন্তান বড় করার জন্য অনেক মহিলাই চাকরি ছেড়ে দিতে বাধ্য হয় এমন অনেক হয়। আমার অনেক পুরুষ সহকর্মীর স্ত্রীরা এই দলের, যারা সন্তান মানুষ করার খাতিরে অন্তত ৩/৪ বছর বাড়িতে আছে।
@আদিল মাহমুদ,
অনেকদিন বাদে আপনাকে এখানে পাওয়া গেল। কারনটা অবশ্য কিছুটা আন্দাজ করতি পারি (&)
হ্যা , ইউরোপে ইমানসিপেশন শুরু হয়েছে নতুন পৃথিবীর বেশ আগে। বিশেষ করে বিজ্ঞান পরাশক্তি জার্মানী এবং ফ্রান্সে অন্তত বিজ্ঞান শিক্ষাক্ষেত্রে এ ধরনের সমস্যা অনেক কম। এখানে সাংসারিক সস্তা আবেগ নিয়ে মাতামাতি তেমনটা নেই বললেই চলে। কর্মক্ষেত্র বলতে যদি শুধু কর্পোরেট জগৎ বোঝায় সেখানে পুরুষরাও সুখে নেই। অামি যখন কর্পোরেট চাকুরি করতাম তখন আমাকে এক সময় টানা ৪ বছর একজন সিনিয়র ম্যানেজারের অধীনে কাজ করতে হয়েছিল যিনি এই ৪ বছর ‘ফুল টাইম প্রেগনেন্ট’ ছিলেন। কাজের অবস্থা দাড়িয়েছিলেন নরকের মত । সেই তুলানায় এখন রিসার্চ সেক্টরে নারী পুরুষ সবাই অনেক ভালো আছে। এখন কথা হচ্ছে যে , সাইন্টিফিক রিসার্চ করতে যোগ্যতা লাগে যেখানে কাগুজে সার্টিফিকেটের সাথে সম্পৃক্ত জ্ঞানও হাতে নাতে যাচাই করা হয়।
@সংশপ্তক,
😀 😀 😀 আমিও পারি!
@সংশপ্তক,
দূঃখের কথা তো ঠিকই জানেন দেখি, দূঃসংবাদ বাতাসের আগে ধায় ঠিকই আছে।
ইউরোপ আর উত্তর আমেরিকার পশ্চীমা জগতের মাঝেও বেশ তফাত আছে জানি। নিজে ইউরোপ যাইনি তাই বিস্তারিত জানি না, তবে আছে জানি।
ঠিকই বলেছেন, ইউরোপে যে আমলে মাদাম কুরির আবির্ভাব হয়েছে আমেরিকায় মনে হয় না তেমন মাদাম কুরি আজকের দিনেও আসছে বলে।
@সংশপ্তক,
নাহ এই বক্তব্যের সাথে আমি দ্বিমত করছি। নির্বিচারে বাছাইকৃত একটি ল্যাবের কতো শতাংশ গ্রুপলিডার মেয়ে হয়? এই ল্যাবে কতোশতাংশ গ্রুপলিডার মেয়ে? এখন সায়েন্টিস্ট বলতে আমার মতে গ্রুপলিডারদেরকেই বোঝানো উচিত যাদের কিনা ক্ষমতা রয়েছে ইউনিক প্রশ্ন জিজ্ঞেস করার এবং ক্ষমতা রয়েছে কারো না কারো পকেট থেকে সেই প্রশ্নের উত্তর বের করার জন্য প্রয়োজনীয় টাকা বের করে নেওয়ার। তারপরও আন্ডারগ্র্যাড, পোস্টগ্রাড ও পোস্টডক ছাত্রদেরকেও যদি একএকজন পাতি বিজ্ঞানী হিসেবে ধরে নেই, তাহলেও কিন্তু ছেলে সায়েন্টিস্টঃ মেয়ে সায়েন্টিস্ট এমনকি ৫:১ ও হয়না, আমার দেয়া লিঙ্কে প্রতিটি গ্রুপে গ্রুপ মেম্বারদের তালিকা আছে, দেখে নিশ্চিত হয়ে নেওয়া যেতে পারে! অথচ, মেয়েদের বিজ্ঞানে আসা সরাসরি ইন্সটিটিউশনালি প্রমোট করা হয় অমুক স্কলারশিপ ফর আফ্রিকান ওম্যান, তমুক স্কলারশিপ ফর ওম্যান ইন সায়েন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং ইত্যাদির মধ্য দিয়ে। এখন আপনার ল্যাবে সকল সদস্য মেয়ে হওয়াটা খুব সম্ভবত একটি ব্যতিক্রম, যেমন একটি ব্যতিক্রম এ, এ সুন্দরী! 😛 অথবা হতে পারে যে, জার্মানীতে মেয়েরা বিজ্ঞানের প্রয়োজনীয়তা খানিকটা বেশী উপলব্ধি করে, বস্তুত ছেলে মেয়ে নির্বিশেষে উভয়েই করে ঐতিহাসিকভাবে! এই ল্যাবের মেয়ে গ্রুপলিডার এবং মেয়ে গ্রুপমেম্বারদেরও একটা উল্লেখযোগ্য অংশই কিন্তু জার্মানীর পয়দা (ছেলেদেরও একটা উল্লেখযোগ্য অংশ যে জার্মানীর পয়দা নোয় তা নয়)। এটা নাম দেখেই বোঝা যায়! 🙂
@আল্লাচালাইনা,
তাইয়া (Taija ) মেয়েটা সুন্দরী সন্দেহ নেই, আপনার যে ব্লন্ড পছন্দ সেটা আমি জানি। সিডিউস করার মত টুকটাক ফিনিশ ভাষা বলতে পারি , আর কি!
আমার ল্যাবের সবাই প্রায় ছয় ফিট ব্রুনেট , সবাই জার্মান এবং সেটা আবার আমার পছন্দ। তবে , প্রজেক্ট লীডার জার্মানীতে যে কেউ হতে পারে না। যারা হয় তারা বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই যোগ্য ।
আপনার লেখাটা পড়তে পড়তে ভাবছিলাম, বিজ্ঞান তো দূরের কথা, সামান্য ছুঁতায় নারীরা যেভাবে ফতোয়ার শিকার হচ্ছে, আর ফতোয়াবাজরা যেভাবে সভা-সমাবেশ করে হুমকি দিচ্ছে, ফতোয়া বন্ধ করলে দেশে আগুন জ্বলবে, তাতে মনে হচ্ছে সেদিন আর বেশি দূরে নয়…..।
লেখা-লেখির এই এক ব্যাপার, চিন্তার দোয়ারগুলো খুলে যেতে থাকে।
@স্বপন মাঝি, এটা আপনার কথার উত্তর নয়। হঠাত করেই মনে হলো যেমন বিখ্যাত প্রত্নতত্ত্ববিদ ও সাহিত্যিক ইয়েফ্রেমভ বলেছেন যে, সমাজের উন্নতি নির্ভর করে মূলত বিজ্ঞান ও প্রাযুক্তিক উন্নতির উপর ভিত্তি করে কিন্তু সেই সমাজ কতটা সুষম, সুবিন্যস্ত, সুরময় ও মানবিক তা নির্ভর করে সাংস্কৃতিক অবস্থানের উপর। এরকম একটি সমাজে নারী পুরুষের সম্পর্ক কেমন হতে পারে? এ প্রসঙ্গে বিখ্যাত প্রাণ উৎপত্তির গবেষক জেবিএস হ্যালডেন বলেছিলেন, ‘আদর্শ সমাজ প্রতিটি নারী ও পুরুষকে তাদের অন্তগর্তভাবনা মূর্ত করে তোলার সুযোগ দেবে। তাই এর থাকতে হবে দুটি বৈশিষ্ট্য। প্রথমত, স্বাধীনতা, যা মানুষকে তার নিজস্ব ধারায় বিকশিত হতে দেবে এবং সবাইকে এক ছাঁচে ফেলতে চেষ্টা করবে না, সেটা যতোই প্রশাংসারযোগ্য হোক। দ্বিতীয়ত, সুযোগের সমতা থাকবে, যার অর্থ হলো যে, মানুষের পক্ষে যতোটা সম্ভব, প্রত্যেক নারী-পুরুষ সমাজে সেই স্থান পাবেন যেজন্য প্রকৃতিগতভাবে তারা সবচেয়ে বেশি উপযোগী