খুব সম্ভব এ সময়ের সবচেয়ে আলোচিত ওয়েব ভিত্তিক সংবাদ মাধ্যম উইকিলিকস। অলাভজনক এই ওয়েব সাইটটি সাংবাদিকদের তথ্য সূত্র যোগাতে সহায়ক– এমনটিই এর ঘোষণায় বলা হয়েছে। তথ্য সাংবাদিকতার জগতে উইকিলিকস-এর মতো ওয়েব আগে কখনো তৈরি হয়নি; এতোটা আলোচিতও হয়নি। তাদের মিশন হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রনীতিসহ গোটা বিশ্বের অন্তত আড়াই লাখ গোপন সরকারি নথি ফাঁস করা। আর এ কাজ করতে গিয়ে এরই মধ্যে তারা পরিনত হয়েছে পশ্চিমা প্রভূদের এক নম্বর শত্রুতে।
উইকিলিকস-এর মূল ওয়েব ঠিকানা উইকিলিকস ডটওর্গ পৃথিবীর সেরা হ্যাকারদের হামলায় বার বার বিপর্যস্ত হচ্ছে। এ কারণে এর মূল ইউআরএল ডোমেইন সংস্থা (এভরি ডিএনএস ডটনেট) বন্ধ করে দিয়েছে। এখন তারা একের পর এক ব্যাক-আপ ডোমেইন নিয়েই চলেছে। এর মুখপাত্র অ্যাসাঞ্জ এখন আমেরিকার মোস্ট ওয়ান্টেড ব্যক্তি। শুধু তাই নয়, পশ্চিমাদের চাপে বন্ধ হয়ে গেছে উইকিলিকস’কে অর্থ সাহায্য দেওয়ার পে-প্যাল পদ্ধতি। আমাজন ডটকম বন্ধ করে দিতে বাধ্য হয়েছে উইকিলিকস-এর সংবাদের লিংক।
বলা ভাল, তথ্য-সাংবাদিকতা অনুসন্ধানী সাংবাদিকতারই অংশ। এ জন্য সরকারি গোপন নথিপত্র সাংবাদিকের সংবাদের একটি নির্ভরযোগ্য সূত্র বৈকি। উইকিলিকস-এর শ্লোগান– সরকারের স্বচ্ছতার জন্য উইকিলিকস’কে শক্তিশালী করো! কিন্তু একটি দেশের পররাষ্ট্রনীতি সম্পর্কিত তথ্য আন্তর্জাতিক মহলে ফাঁস করাটা কতটুকু সাংবাদিকতার নীতিমালা সম্পর্কিত, সে প্রশ্ন উঠেছে।
মার্কিন মুলুকের মান-সন্মান হানিকর — এমন রাষ্ট্রীয় গোপন দলিল ফাঁস করাটা কথিত গণতন্ত্রের ধজ্বাধারী সিআইএ/এফবিআই বরদাশত করে না। উইকিলিকস তাই এখন পরিনত হয়েছে ওসি-ওয়ার্ল্ড আমেরিকার এক নম্বর শত্রুতে। তারা শুধু মার্কিন সরকারেরই আড়াই হাজার গোপন কূটনীতিক বার্তা ও টেলিগ্রাম ফাঁস করেছে। উইকিলিকস-এর প্রকাশিত ও প্রকাশিতব্য নথির মধ্যে আট হাজার ৩২০টি চীনবিষয়ক, সাত হাজার ৯৫টি আফগানিস্তানবিষয়ক, পাঁচ হাজার ৮৭টি ভারতবিষয়ক এবং চার হাজার ৭৭৫টি পাকিস্তানবিষয়ক। এমন কি তারা দুই হাজার ১৮২টি বাংলাদেশবিষয়ক নথিও ফাঁস করবে বলে ঘোষণা দিয়েছে। গত শনিবার বাংলাদেশ সময় বিকেল ৫টা পর্যন্ত উইকিলিকস তার ওয়েবসাইটে প্রকাশ করেছে এমন ৬৮৩টি নথি। ইসলামী জঙ্গিদের এক সময়ের ঘাঁটি বাংলাদেশের নানা অজানা তথ্য প্রকাশ হয়েছে এতে।
উইকিলিকস-এর বড় কৃতীত্বগুলোর একটি হচ্ছে, সরাসরি অসম্পাদিত গোপন ভিডিও ফুটেজ (রাশ প্রিন্ট) ফাঁস করে দেওয়া। তারা সরাসরি ইরাক ও আফগান যুদ্ধের গোপন ভিডিও ফুটেজে তুলে ধরেছে, আন্তর্জাতিক সন্ত্রাস ও আল কায়দা দমনের নামে কি নৃশংসভাবেই না মার্কিন সেনারা সাধারণ নিরস্ত্র নাগরিকের ওপর নির্যাতন চালিয়েছে!
শেষ পর্যন্ত উইকিলিকস থামবে কোথায়– সেটিই এখন দেখার বিষয়।
—
আরো দেখুন: উইকিলিকসে বাংলাদেশ বিষয়ে ২১৮২ নথি
উইকিলিকসে ইরাক যুদ্ধের বিশেষ ভিডিও ফুটেজ।
—
কার্টূন: অলভয়েস ডটকম
আপডেট :
অ্যাস্যাঞ্জ’কে নিয়ে টাইম ম্যাগাজিনের প্রচ্ছদ [লিংক]
আপেডট-২ :
[লিংক]
উইকিলিকস থেকে ফাঁস হওয়া তথ্য এখনও অবধি কোনো প্রাণহানি বা টেরর আক্রমণের কারণ হয়নি, তবে ভবিষ্যতে হতেই পারে। তবে তার দায় যে প্রকাশ করে সবসময় তার হয় না, বরং যে ব্যাপারটা গোপন রেখেছে তারও। ব্যতিক্রম আসে এক জায়গায় – যেটা বন্যাদি বলেছেন।
আমার মনে হয় নাম উল্লেখ না করেই ফাঁস করা হয়েছে সেগুলো এবং অধিকাংশ ক্ষেত্রেই এই নিরীহ ব্যক্তিদের আমেরিকায় সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে ইতিমধ্যে। আমাদের শহরে ক্রেগলিস্টে প্রায়ই দারি ভাষা জানা লোক ভলান্টিয়ারিং/চাকরির জন্য বিজ্ঞাপন আসে দেখি। অনেক আফগান আমেরিকায় এসেছে তাদের ইংরেজী শিক্ষিত করার জন্য এই উদ্যোগ।
বাকি উদ্যোগে সাধুবাদ। সব দেশের ডিপ্লোম্যাটদের এরকম তথ্য ফাঁস হতে দেখলে আমি আরও খুশী হতাম। রাষ্ট্র-পরিচালনা ব্যাপারটা কতটা সেক্রেট ডিল এর ওপর নির্ভরশীল সেটা জানা যেত।
আসাঞ্জের ব্যক্তিগত যে অপরাধের জন্য তাকে ধরা হয়েছে তার শাস্তি কিছু ডলার জরিমানা। বিচারের শেষে আসাঞ্জ আবার আত্মগোপন করতেই পারেন। সুতরাং এটা আমেরিকার চক্রান্ত বলে আমি মনে করছি না। বরং ওই দুই মহিলাই লাইমলাইটে আসার জন্য হয়ত অভিযোগটা এনেছেন। তাছাড়া আসাঞ্জ নিজের “অপরাধ” স্বীকার করেছেন।
লিঙ্ক ১
লিঙ্ক ২
লিঙ্ক ৩
“Assange’s London attorney, Mark Stephens, told AOL News today that Swedish prosecutors told him that Assange is wanted not for allegations of rape, as previously reported, but for something called “sex by surprise,” which he said involves a fine of 5,000 kronor or about $715. … “Whatever ‘sex by surprise’ is, it’s only a offense in Sweden — not in the U.K. or the U.S. or even Ibiza,” … But others say Assange, who denies any wrongdoing and says the sex was consensual, may have just run afoul of Sweden’s unusual rape laws, which are considered pro-feminist because of the consideration given issues of consent when it comes to sexual activity — including even the issue of whether a condom was used. … “
@দিগন্ত,
তথ্যবহুল মন্তব্য করা ধন্যবাদ। 🙂
অনেকদিন আপনার লেখা পড়ি না। 🙁 মুক্তমনায় নিয়মিত লেখার বিনীত অনুরোধ। :rose:
ওয়াকিলিকস নিয়ে আমি একটা রেডিও ডিবেট আয়োজন করছি। ৩ জন পক্ষে তিন জন বিপক্ষে। ডিবেট লাইভ শোনা যাবে, রেকর্ডিং ও শোনা যাবে।
মুক্তমনা থেকে কে কে ডিবেটে অংশ নিতে চাই? স্কাইপে রেকর্ড এবং ব্রডকাস্ট করা হবে ইউটি স্ট্রিম থেকে। এই উইকেন্ডেই করব।
@বিপ্লব পাল,
শুভ উদ্যোগ। জয় হোক। :clap2:
মজার ব্যাপার হলো আস্যাঞ্জেকে যে মামলায় গ্রেপ্তার করা হলো এবং যে কায়দায় জামিন না-মঞ্জুর করে সাত দিনের রিমান্ডে দেওয়া হলো, এটা দেখে বাংলাদেশের ম্যাজিস্ট্রেট আদালাতের সাথে কোন অমিল পাইলাম না 😛 । কে বলেছে বাংলাদেশ গণতন্ত্রের দিক দিয়ে পিছিয়ে রয়েছে, বরং এখন তো দেখা যাচ্ছে সব দিক দিয়ে এগিয়েই রয়েছে 😀 ।
@স্বাধীন,
সে সব দেশে যৌন হয়রানীর আইন বেশ কড়া। তবে গোপন রাজনৈতিক কূটচাল থাকতেই পারে। :yes:
আপডেট-১:
[লিংক]
আপডেট-২:
[লিংক]
আপেডট-৩:
[Link]
গণতন্ত্র এবং মানবাধিকারের মুখোশ খুলে পড়েছে। এ্যাসেঞ্জ আত্মসমর্পন করতে বাধ্য হয়েছে। সত্য তথ্য প্রকাশের জন্য তাকে যেখানে পুরস্কৃত করা দরকার সেখানে তাকে থাকতে হবে গারদে। প্রশ্ন উঠতেই পারে পশ্চিমারা যতটা সভ্য বলে দাবি করে তা তারা নয়।
@Mojib Rahman,
এ ক ম ত। :yes:
@রৌরব,
“এনলাইটেনমেন্ট বা জেফারসনিয়ান গণতন্ত্রে আপনার আস্থা না থাকতে পারে, কিন্তু গণতন্ত্রের আলোচনায় এগুলো “কম বা অনালোচিত ভাবনা” আপনার এই মন্তব্য অজ্ঞতার পরিচায়ক। সবকিছু কেউই জানেনা, সেটা সম্ভব নয়, বা সেটা সমস্যাও নয়, কিন্তু মনে হচ্ছে এগুলো জানবার আগ্রহও আপনার নেই।”—-
আগেই বলেছিলাম ‘Enlightenment tradition’, খায় কি মাথায় মাখে জানি না।সুতরাং আমার ‘অজ্ঞতা’ আমি নিজেই মেনেছি।তাতে, ‘ব্যক্তিস্বাধীনতা’ র প্রচারক হিসেবে আপনি শুধু আমাকে অজ্ঞ বলে অবজ্ঞা না করে আমার মনের গহণে ডুব দিয়েছেন এবং আমাকে আবিস্কারের যে কষ্ট করেছেন, তার জন্য আপনাকে পরম শ্রদ্ধা জানাই।সেই সঙ্গে আপনার পরামর্শ মেনে আপনার কাছ থেকে জেনে নেবার আগ্রহ প্রকাশ করে নিজেকে ছাত্র হিসেবে নিবেদন করলাম। আশাকরি নিজগুণে ক্ষমা করে, আমাকে শিখিয়ে, পড়িয়ে নেবেন।
তাহলে পাঠ লাভের জন্য আপনার সমীপে নিম্নোক্ত প্রশ্নগুলি নিবেদন করি।
১) ব্যক্তি হিসেবে কেউ যদি তথ্য ফাঁস করার অধিকার প্রাপ্তিকে তার ব্যক্তিস্বাধীনতা হিসেবে মনে করেন এবং যাঁর তথ্য ফাঁস হচ্ছে তিনি যদি তথ্য গোপনীয়তাকে তাঁর ব্যক্তিস্বাধীনতা বলে মনে করেন, তবে রাষ্ট্রের ভূমিকা কি হবে? {আমি বৃহত্তর সামাজিক কল্যান যা বেশিরভাগ মানুষের ন্যূনতম বাঁচার অধিকারকে সুনিশ্চিত করে, সেটাকে আইনের মাপকাঠি হওয়া উচিত মনে করি। }
২) আপনি বলেছেন, “আপনি (ভাস্কর) আসলেন ২৫০০ বছরের গভীর দার্শনিক-রাজনৈতিক প্রশ্নের পাটিগাণিতিক সমাধান নিয়ে” এবং সমাধানের নিদান দিলেন ”এখানে ঘৃণ্য মার্কিনীদেরই দ্বারস্থ হতে হবে, কারণ জেফারসনিয়ান গণতন্ত্র নিয়ে কথা বলতে গেলে জেফারসন লোকটিকে ছাড়া করা ভারি মুশকিল…”
আমার বিনীত নিবেদন, আমার পুনর্জিজ্ঞাসিত ২৫০০ বছরের পুরানো প্রশ্নের মুখোমুখি হতে জেফারসন “লোকটি ও তাঁর মতবাদ অবতারণা -আপনার পছন্দ।তাই ২৫০০ বছরের পুরানো প্রশ্নের জন্য জেফারসনের মতবাদ কেন সবথেকে প্রাসঙ্গিক বিবেচনা করছেন আপনি? {জানতে পারলে নিজেকে শুধরে নেবার শপথ করছি}
২ক) জেফারসন নিজে কি নিজের প্রচারিত মত মানতেন?
{শুনেছিলাম গণতন্ত্র শব্দটা এসেছে গ্রীক শব্দ δημοκρατία – (dēmokratía) মানে “rule of the people”। জনগণ বোঝাতে তে একাধিক মানুষ বলে জানতাম। এখন ২৫০০ বছরের মধ্যে ১৮০০-১৮২০ খ্রীষ্টাব্দে জেফারসন যদি ‘গণতন্ত্র’ বলতে ‘ব্যক্তিস্বাধীনতা’র সওয়ালকে জনপ্রিয় করে থাকেন তবে নিজের নানা মত যা প্রচার করতেন নিজে কতটা মেনেছেন তার দু একটা নমুনা-
তিনি নিজে আমেরিকার জনগণকে আমেরিকার সংবিধান অক্ষরে অক্ষরে মেনে চলার জন্য উদ্দীপিত ভাষণ দিতেন। অথচ নেপোলিয়ানের থেকে অর্লিয়েন্স বন্দরের অধিকার কেনার জন্য দেশের মধ্যেকার প্রবল প্রতিবাদ এড়াতে লিভিংষ্টোনকে পাঠালেন। বস্তুত লুইজিয়ানা ১৭৬২ পর্যন্ত স্পানীশ অধিকারে ছিল। নেপোলিয়ান ১৮০০ সালে লুইজিয়ানা নিজের দখলে আনলেও ১৮০৩ এর প্রায় নভেম্বর পর্যন্ত সে ভাবে জানতে দেননি। বর্তমান হাইতিতে বিষম ধাক্কা খেয়ে লুইজিয়ানা বিক্রি করার কথা ভাবেন।জেফারসন জানতেন আমেরিকা কিনতে চায় জানলে নেপোলিয়ান না বলতে পারেন। তাছাড়া স্পানীশ সীমান্ত চিহ্ন নিয়ে লুইজিয়ানার স্পষ্ট কিছু ছিল না। এমনকি দেশের সংবিধান জেফারসনের এই পদক্ষেপ যে অনুমোদন দেয় না, তাও তাঁর জানা ছিল। কিন্তু অর্লিয়েন্স তার চাই। প্রকাশ্যে বলতেন ফ্রান্স এবং স্পানীশ দখল থেকে নৌ-বাণিজ্যের জন্য অর্লিয়েন্স তার চাই। নিন্দুকেরা বলেন স্যালী হ্যামিল্টনের সঙ্গে তার ‘মনোরম’ সম্পর্ক নাকি অর্লিয়েন্স ইপ্সার নিহিত বীজ।যাক গে। দেশের সংবিধান মেনে চলার একনিষ্ঠ প্রচারক লুইজিয়ানা লাভের জন্য নিজের মত করে নীতিবোধ পাল্টে বল্লেন, ”the less we say about constitutional difficulties respecting Louisiana the better”
* নিজে প্রচার করতেন,ব্যক্তিস্বাধীনতা রক্ষায় রাষ্ট্র ক্ষমতার ন্যূনতম প্রয়োগ। অবাক ব্যাপার, বাস্তবে নিজের দেশের নৌ-ব্যবসায়ীদের বানিজ্য বিস্তারে নিজেই বেড়ি টেনে দিলেন Embargo Act 1807 জারি করে। এ নিয়ে নিজের দেশের ব্যবসায়ীদের আপত্তি দূরে থাক, নিজের অর্থ সচিবের আপত্তিকেও পাত্তা দেননি।
* বারে বারে তিনি নিজের দেশের জনগণকে আহবান করছেন রাজতন্ত্র এবং অভিজাতন্ত্র (Elitism) এর বিরুদ্ধে সরব হতে। আপনি লিখেছেন তার বহুল প্রচারিত বাণী- ”all men are created equal…” কিন্তু সেই মানুষটিই আবার বলেছেন – “The natural aristocracy I consider as the most precious gift of nature… Every one, by his property, or by his satisfactory situation, is interested in the support of law and order. And such men may safely and advantageously reserve to themselves a wholesome control over their public affairs, and a degree of freedom, which, in the hands of the canaille of the cities of Europe, would be instantly perverted to the demolition and destruction of everything public and private।” । একে ”ব্যক্তিস্বাধীনতা” য় বিশ্বাসী একজন মানুষের উক্তি বলে ধরতে হলে বলতে হয় তিনি কেবল অভিজাতের ব্যক্তিস্বাধীনতায় বিশ্বাস করেন।
জেফারসন সম্বন্ধে সমালোচকরা বলেন-
Kuehnelt Leddihn -“Jeffersonian democracy” is a misnomer, because Jefferson was not a democrat but in fact believed in rule by an elite: “Jefferson actually was an Agrarian Romantic who dreamt of a republic governed by an elite of character and intellect… the expressions ‘democrat’ and ‘democracy’ hardly occur in the Monticello edition of Jefferson’s works”.
আর জেফারসনকে দেখে Bailyn বলেছেন- simultaneously a radical utopian idealist and a hardheaded, adroit, at times cunning politician।
আমার উদ্দেশ্য জেফারসনকে কালিমালিপ্ত করা নয়। তাঁর প্রদত্ত বাণী আর তার নিজের আচরণ একটি বৈপরিত্তের জন্ম দেওয়ায় ১৮৬০ সালের পর থেকে তার দেশেই Jeffersonian Democracy এর থেকে Jacksonian Democracy চর্চ্চা হয়েছে বেশী করে। ফলে গণতন্ত্র ব্যাখ্যায় জেফারসনের প্রাসঙ্গিকতা আম জনতা বাস্তবতার কথা ভেবে করেছেন কম। তাই এই সময়ের প্রেক্ষাপটে এই ভাবালু (Utopian) মতবাদ কেউ আলোচনা করছেন এমন নজরে আসেনি। তাই বলেছি ‘অনালোচিত’ বা কম আলোচিত।এতে আমার মত প্রকাশের স্বাধীনতায় আপনি তীব্র প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে এটাই কি বলে দিলেন না যে ‘ব্যক্তিস্বাধীনতা’ আসলে ‘সোনার পাথরবাটি’ যা ততক্ষন পর্যন্ত অনুমোদনযোগ্য যতক্ষন না আমাকে আহত না করে।
আর এ হেন মতবাদ দিয়ে ২৫০০ বছরের সমস্যার নিদান হেঁকে বৃহত্তর কল্যানের ধারনা উপেক্ষা করা উচিত হবে? }
@ভাস্কর,
আপনি সম্ভবত মুক্তমনায় নতুন, তাই এডিটিং সম্বন্ধে একটি টিপ, আপনি কারো কথা উদ্ধৃত করতে চাইলে সিলেক্ট করে নিয়ে এডিটিং বক্সের উপরে “উদ্ধৃতি” বলে একটি বাটন আছে, ওটায় চাপ দিতে পারেন। তাতে নীল একটা বক্স পাবেন, এরকম
আপনার সুচিন্তিত মন্তব্য পেয়ে ভাল লাগল। আপনার তোলা কিছু ব্যাপারের সরাসরি জবাব দেয়ার আগে একটা সাধারণ মন্তব্য করি।
আপনার মন্তব্য থেকে বোঝা যাচ্ছে ব্যক্তি-স্বাধীনতা ভিত্তিক গণতন্ত্রে আপনার তেমন আস্থা নেই। আগেই বলেছি, আবারো বলছি, এটা কোন সমস্যাই না। কিন্তু আমার মতে আপনি characterization এবং value judgement, এদুটো বিষয়কে গুলিয়ে ফেলছেন:
আপনার যেহেতু ওই ধারণাটি অপছন্দ, আপনি স্বীকার করতে অসমর্থ হচ্ছেন যে ওটা গণতন্ত্রের প্রধান ধারণাগুলির মধ্যে পড়ে।
এই শাব্দিক চরদখলের প্রবণতা থেকে না বেরোতে হলে সত্যভিত্তিক আলোচনা সম্ভব নয়। ব্যক্তি-স্বাধীনতা ভিত্তিক গণতন্ত্র আপনার পছন্দ হোক বা না হোক, আপনাকে প্রথমে স্বীকার করতে হবে যে ওই ধারণা বহুল-প্রচারিত এবং দারুণ ভাবে প্রাসঙ্গিক। তারপরে যত খুশি নিন্দে করুন। ধরুন jacksonian গণতন্ত্র আমার দুচোখের বিষ। আমি কি তা বলে বলব, ওটা গণতন্ত্রের “কম আলোচিত” অংশ?
এখন আসছি আপনার তোলা বিশেষ প্রসঙ্গগুলিতে।
এটা নিয়েই এ পোস্টে আমরা আলোচনা করছি। আমার ছড়িয়ে থাকা মন্তব্য গুলি কষ্ট করে পড়লে এব্যাপারে আমার মত কিছুটা জানতে পারবেন। এক কথায়, অ্যাসাঞ্জের কাজে আমি খুশি, কিন্তু এই adhoc খুশি হওয়ার ব্যাপারটাকে তথ্য ফাঁসের একটি সাধারণ তত্বের কিভাবে রূপান্তরিত করা যায় নিশ্চিত নই।
কারণ আমার গণতন্ত্রে ব্যক্তিস্বাধীনতা নিয়ে আলাপ করছিলাম। ব্যক্তি-স্বাধীনতার দুর্দান্ত প্রকাশ ঘটেছে জেফারসনের লেখনীতে ও জেফারসনিয়ান গণতন্ত্রের মধ্যে। দুর্দান্ত, কিন্তু একমাত্র নয়। এটাকে এক ব্যক্তির বিষয় বলে যাতে ভুল করার অবকাশ না থাকে সেজন্যে কিন্তু enlightenment tradition বিশেষ ভাবে উল্লেখ করছি। অর্থাৎ যে ভূমির উপর আধুনিক লিবারাল গণতন্ত্রের পুরো ধারণা প্রোথিত। আমি ঠিক বুঝতে পারছিনা লিবারাল গণতন্ত্রের ইতিহাস পুরো ইতিহাস এখানে লিখব কিনা — টমাস পেইন, ভলতেয়ার, লক, Areopagitica, glorious revolution, জন স্টুয়ার্ট মিল, জেমস মেডিসন…
এর পরে আপনি কিছু ad hominem এর অবতারণা করলেন। কিন্তু কিছুটা বিস্মিত হয়ে লক্ষ্য করলাম, আসল কথাটাই তুললেন না (যদিও স্যালী হ্যামিল্টনের নাম উল্লেখ করেছেন)। All mens are created equal-ওয়ালার নিজের দাস ছিল বহু, এবং পেইন সহ বহু লোকের নিরতিশয় অনুরোধ সত্বেও নতুন প্রদেশগুলিতে দাসপ্রথা তিনি চালু করেছিলেন।
থোড়াই পরোয়া করি আমি। আমি বলেছি “জেফারসন” — শ্রীমদ্ভাগবৎ জেফারসন (সাঃ) বলেছি কি? জেফারসনিয়ান গণতন্ত্র একটি ধারণা, Declaration of independence একটি ধারণা, জেফারসন কি করল না করল তার সাথে ওই ধারণা বৈধতার সম্পর্ক কি? আপনি কৌতহলী হলে বলতে পারি, মোটের ওপর জেফারসনকে আমি শ্রদ্ধা করি, কিন্তু জেফারসনকে শ্রদ্ধা-অশ্রদ্ধার সাথে জেফারসনিয়ান গণতন্ত্রকে শ্রদ্ধা-অশ্রদ্ধাকে যদি গুলিয়ে ফেলতাম, তাহলে ব্যক্তি পূজার দায়ে আমাকে আপনি অভিযুক্ত করতে পারতেন।
জেফারনিয়ান গণতন্ত্র misnomer কিনা, উহা অবান্তর, ধারণাটা কি সেটাই আসল। Democracy উল্লেখ করা বিষয়ক মন্তব্য — Democracy শব্দটার connotation ও অর্থ ওই সময়ে ছিল সম্পূর্ণ ভিন্ন এবং নিন্দাজনক, আমরা যে অর্থে শব্দটিকে ব্যবহার করি সেটা আধুনিক। এখান থেকে যেটা জানা গেল, সেটা হল “গণতন্ত্র” (বা যে কোন শব্দ) কি অর্থ ধারণ করে সেটা তার সংস্কৃত বা গ্রীক বুৎপত্তি থেকে জানা যায় না, বা অন্তত পুরোপুরি জানা যায় না। শব্দের বা ধারণার একটা ইতিহাস থাকে।
ব্যক্তিস্বাধীনতা (যেটা কিনা ছিল প্রসঙ্গ), সেটা মার্কিন constituition এ আজ পর্যন্ত এমন ভাবে ছাপ ফেলে আছে সেটা করো পক্ষেই অপনোদন করা সম্ভব নয়। Jackson এর সাথে Jefferson এ পার্থক্য এ বিষয়টাতে উল্লেখযোগ্য নয়। আমি আসলে জেফারসনিয়ান গণতন্ত্র প্রথম বলে তার উল্লেখ করেছিলাম, ধারণাটির মৌলিক গুরুত্ব বোঝানোর জন্য। কিন্তু এখন বুঝতে পারছি ভুল করেছি, আলোচনা অপ্রাসঙ্গিক ভাবে ঘুরে গেছে জেফারসন ব্যক্তিটি এবং jackson/jefferson এর সূক্ষ পার্থক্যের দিকে। আমারই ভুল।
কেন বলুন তো? আমি ব্যক্ত করব তীব্র, আপনি করবেন সুতীব্র, আমি করব সুতীব্রতর, আপনি করবেন….
……একেই বলে বাকস্বাধীনতা :-)। আহত-টাহত গোল্লায় যাক, জেফারসনের দ্বিচারিতার সাথে।
@রৌরব,
সবসময় সাধারণ তত্ত্বের খোঁজে থাকতেই বা হবে কেন? 🙂
যাহোক, আমিও কিছুটা দ্বিধাগ্রস্থ ছিলাম প্রাথমিকভাবে উইকিলিকস-এর কাজকর্ম এবং এর নৈতিক ভিত্তি নিয়ে, কিন্তু শ্যাম চাচার ন্যাজে পাড়া পড়তেই যেভাবে হ্যাকাররা সাইট হাইজ্যাক করতে চাইলো, পে-প্যাল একাউন্ট বন্ধ করে দিলো, আমাজন সব সার্ভারে লেনদেন স্থগিত করে দিলো, সুইস পোস্ট অফিস উইকিলিকসের একাউন্ট ফ্রিজ করে দিলো, আর সর্বোপরি আস্যাঞ্জেকে গ্রেফতার করা হল, তারপরে আসলে খুব বেশি গণতন্ত্রের সাফাই গাওয়া যাচ্ছে না।
আমি বরং উইকিলিকসের প্রতি সহমর্মিতা দেখাতে চাই, আর সে হিসেবে “I Am Wikileaks” হিসেবে নিজেকে ঘোষণা করতে চাই-
[img]http://www.commondreams.org/files/article_images/iamwikileaks.jpg[/img]
@অভিজিৎ,
বুঝছি, মানুষের পাতলুন খোলার শখ হইছে তোমার। 🙂
@ফরিদ আহমেদ,
পাতলুন খোলাটা একটা বিবর্তনীয় প্রবণতা, উনার আর দোষ কি।
@রৌরব,
আপ্নের মন্তব্যখান তাঁরাইলাম! (*)
@অভিজিৎ,
:yes: এবং আমার মনোভাব পুরোপুরি (যদিও সুইডেনে অ্যাসাঞ্জে কি করেছেন সে ব্যাপারে না জেনে তাকে blank চেক দিতে আমি রাজি নই)।
@রৌরব, একটা অনুরোধ করি। আপনার ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা মন্তব্যগুলো থেকে পুরো আলোচনাটা ধরা একটু মুশকিল হয়ে যাচ্ছে, একটা লেখাই লিখে ফেলুন এ নিয়ে, খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটা বিষয় নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়েছে। ব্যক্তিস্বাধীনতা বনাম সংখ্যাগরিষ্ঠের স্বার্থের মধ্যে সংঘর্ষ আমেরিকার রাজনীতির অন্যতম প্রধান চালিকাশিক্তি, আভ্যন্তরীনভাবে লিবারটেরিয়ান, ফিসক্যাল এবং সোশ্যাল কন্সারভেটিভ, লিবারেল আর সেন্ট্রিস্টদের মধ্যে দ্বন্দ আর তার সাথে আমেরিকার আন্তর্জাতিক নীতি যোগ করল তো আর কথাই নেই। আমেরিকার ‘দ্বিচারিতার’ কথা তুললে তো কয়েকখানা মহাভারত লিখেও শেষ করা যাবে না। যে কোন পরাশক্তির ক্ষেত্রেই মনে হয় কথাটা প্রযোজ্য হতে পারে। গত ৪-৫ শ’ বছরের পুঁজিবাদের বিকাশ নিয়ে পড়াশোনা করার তাগিদ অনুভব করছি বহুদিন ধরে কিন্তু হয়ে উঠছে না। এ নিয়ে ‘আস্ত’ বা ‘খন্ডে খন্ডে লেখা আস্ত’ একখানা লেখা উপহার দিলে বড়ই কৃতার্থ হই।
@বন্যা আহমেদ,
দেখি কিছু অনুবাদ করা যায় কিনা। তাতে ভাবনা-চিন্তা একটু কম করা লাগে :p
বন্যা দি বলছেন:
@রৌরব, এ পর্যায়ে আপনি বরং একটি মৌলিক লেখাই লিখুন প্লিজ। অনুবাদ না হয় আরো পরে হোক। :rose:
@ফরিদ আহমেদ,
পশ্চিমাদের জন্য জুলিয়ান আসাঞ্জকে থামানো অনিবার্য ছিল। :deadrose:
ফরিদ ভাইয়ের মন্তব্য হাওয়া হলো কী করে? 😕
@বিপ্লব রহমান,
মুক্তমনাধারে মনে হয় কোনো লিক টিক দেখা দিয়েছে। ওদিক দিয়েই মন্তব্য টন্তব্য সব হাওয়া হয়ে যাচ্ছে। 😛
মন্তব্যটা আমি-ই মুছে দিয়েছি। জুলিয়ান আসাঞ্জের খবরটা যখন দেই। ঠিক একই সময়ে আপনিও খবরটা আপডেট করেছেন। মনে হলো যে, এই খবরটা দেওয়ার অধিকার আমার চেয়ে আপনারই বেশি। তাই, আমার মন্তব্যটাকে অপ্রয়োজনীয় বিবেচনা করে হাওয়া করে দিয়েছি।
@ফরিদ আহমেদ,
ওহ, এইবার বুঝেছি। কিন্তু অন্যের পোস্টে মন্তব্য মোছা বা সংশোধনের সুযোগ কী আছে? কোথায় যেনো অ্যাডমিনের ঘোষণায় দেখেছিলাম, এই সুযোগ বন্ধ করা হয়েছে। 🙁
অবশ্য আমার মতে, যে কোনো পোস্টে নিজের মন্তব্য অন্তত মিনিট দুয়েকের জন্য হলেও সংশোধন করার সুযোগ থাকা উচিৎ। এতে অনেক বানান বিভ্রাট/ টাইপো এড়ানো যায়। 🙂
আবারো আপনাকে ধন্যবাদ। :rose:
@বিপ্লব রহমান,
আমার দ্বৈতসত্তা, ফরিদ আহমেদ অংশটা ডঃ জেকিল, বড় ভাল মানুষ। কারো সাথে পাছে নেই। কিন্তু মডারেটর অংশটা মিস্টার হাইড, পাঁজির পা ঝাড়া। ওই হাইড ব্যাটাই এ কুকর্মটা করেছে। আমি দায়ী নই। 🙁
@ফরিদ আহমেদ,
ভাই, আপ্নেরে কানে কানে বলি, এট্টু দেখেন তো, হাউডকে সাবরে পটাইয়া মুক্তমনার কুনু গোপন দলিল পাওয়া যায় কি না? ভাবতেছি, ইউকিলিকস-এ সেসব পাঠামু… ব্লগ বারান্দা অনেকদিন তব্দা হৈয়া আছে…এরে এট্ট ঝাড়ি দেয়া দর্কার! 😉
আপডেট:
আপডেট :
WikiLeaks founder Assange arrested
LONDON, Dec 7 (bdnews24.com/Reuters) — WikiLeaks founder Julian Assange handed himself in to British police on Tuesday after Sweden issued a warrant for his arrest over allegations of sex crimes, London’s Metropolitan Police said.
Assange, whose WikiLeaks website is at the centre of a row over the release of secret U.S. diplomatic cables, was arrested under a European Arrest Warrant.
Swedish prosecutors want to question the 39-year-old Australian about allegations of rape, sexual molestation and unlawful coercion. He denies the allegations. [More]
শেষে কী না যৌন হয়রানীর অভিযোগ? 😛
[img]httpv://www.youtube.com/watch?v=tgj5KJreJ0k&feature=related[/img]
শ্যাম চাচাকে দিগম্বর করে ছাড়ছে উইকিলিকস।
@ফরিদ আহমেদ, :laugh: :yes:
@ফরিদ আহমেদ, :lotpot: :lotpot: :lotpot:
শ্যাম চাচার গামছাখানা কোন হাটে হারাইলো!
🙂
@অভিজিৎ দা,
:laugh: :laugh: :laugh:
এটা মনে হয় মুখপাত্র হওয়ার কথা ছিল, তাই কি? 😕
ইদানীং উইকিলিক্সের কাহিনি অনেক শুনছি। আমি আসলে বুঝতে পারছিনা এটার কি বিশ্বাস করব, কতটুকু বিশ্বাস করব এসব ব্যাপার আরকি। তাই আপাতত কোন মন্তব্য করতে চাচ্ছিনা। দেখি কোথাকার জল কোথায় গিয়ে দাড়ায়। আর লেখাটার জন্য ধন্যবাদ। আপনারা লিখেন, নইলে আমরা ভাবব কিভাবে?
@লীনা রহমান,
:laugh: :lotpot: @ “মূত্রপাত্র”
@লীনা রহমান,
আপনার সুক্ষদৃষ্টিকে জাঁঝা @ “মূত্রপাত্র” :laugh: :laugh: :laugh:
@বিপ্লব রহমান,
😀
তবে বুঝলাম আপনি মানুষ ভালা না। 😛 যেই আসাঞ্জের উইকিলিক্স এত বড় বড় মানুষের প্যান্ট খুইলা দিতেছে তারে আপনি মূত্রপাত্র বানায়া দিলেন?? :rotfl:
@লীনা রহমান,
আজকের তাজা খবর: অ্যাসাঞ্জের মূত্রপাত্র লিক করায় উইকিলিকস অফিসে বন্যা দেখা দিয়েছে।
@রৌরব, :hahahee: :hahahee: :hahahee:
আপডেট: আরো পড়ুন:
[লিংক]
যে গোপনীয়তা বৃহত্তর সমাজের ক্ষতি করে বা করার সম্ভাবনাকে আড়াল করে তাকে কেন আইনী রক্ষাকবচ দেওয়া হবে? আইন তো রচনা হয় বেশী সংখ্যক মানুষের কল্যাণের উদ্দেশ্য নিয়ে, অন্তত তাই হওয়া উচিত।
এটা ঠিক যে তথ্য প্রকাশের নামে বিকৃত তথ্য হাজির হতে পারে। কিন্তু সেটা যাচাই করার ভার, দ্রষ্টার। জল দেখলেই পান করতে ইচ্ছে হলে, জন্ডিসের দায় জলের নয়।
@ভাস্কর,
“বৃহত্তর সমাজের” ক্ষতি হচ্ছে কিনা, এটার বিচারক কে?
কোন সার্বিক অর্থে এটা সঠিক হতে পারে, কিন্তু ডিটেইলের পর্যায়ে নয়। গণতান্ত্রিক আইনের অন্যতম লক্ষ্য ব্যক্তিস্বাধীনতাকে রক্ষা করা, সেটা “বেশী সংখ্যক মানুষের কল্যাণ” করুক আর নাই করুক।
@রৌরব,
সাধারনভাবে আইনপ্রনয়ণকারীগণই বৃহত্তর সমাজের প্রতিনিধি হন। কাজেই তাঁদের তৈরী আইন বৃহত্তর সমাজের আশা-আকাঙ্খাকে প্রতিফলিত করবে-এটা গণতন্ত্রে প্রত্যাশিত। যদি তা না হয়, তবে সে আইনব্যবস্থা আর যাই হোক গণতন্ত্রের অনুসারী নয়।কাজেই বৃহত্তর সমাজের ক্ষতি হচ্ছে কি না- সে ভার শেষ বিচারে আইন ও বিচার বিভাগের।
“কোন সার্বিক অর্থে এটা সঠিক হতে পারে, কিন্তু ডিটেইলের পর্যায়ে নয়। গণতান্ত্রিক আইনের অন্যতম লক্ষ্য ব্যক্তিস্বাধীনতাকে রক্ষা করা, সেটা “বেশী সংখ্যক মানুষের কল্যাণ” করুক আর নাই করুক।”- এটা কি গণতন্ত্র বিষয়ে
আপনার নিজস্ব সংজ্ঞা ? গণতন্ত্র-এর মূল কথা হল-‘গণ’ । অর্থাৎ ব্যক্তি, নয় সমষ্টি-র দিকে লক্ষ্য রাখা এই মতবাদের উদ্দেশ্য। অকল্যাণকর ‘ব্যক্তিস্বাধীনতা’ কেবল ‘ নৈরাজ্যে সম্ভব।
@ভাস্কর,
ভাল কথা। মার্কিন আইনপ্রতিনিধিদের জিজ্ঞেস করে দেখুন, তারা অ্যাসাঞ্জেকে শুলে চড়াতে উদগ্রীব।
“গণতন্ত্র” এই সাধারণ টার্মের অধীনে অনেক কিছু পড়ে। কিন্তু যেহেতু মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র নিয়ে কথা হচ্ছে, স্বভাবতই জেফারসনিয়ান গণতন্ত্রের কথাই বলেছি। আপনার প্রস্তাব “বৃহত্তর স্বার্থে” সংখ্যাগরিষ্ঠের একনায়কতন্ত্রের মত শোনাচ্ছে, সেটা একদম, একদম ভিন্ন জিনিস। Enlightenment tradition এবং তা থেকে উদ্ভুত গণতন্ত্রের কেন্দ্রে ব্যক্তি অবস্থিত, সমষ্টি নয়।
@রৌরব,
ভাল কথা। মার্কিন আইনপ্রতিনিধিদের জিজ্ঞেস করে দেখুন, তারা অ্যাসাঞ্জেকে শুলে চড়াতে উদগ্রীব।—- আমেরিকায় গণতন্ত্রের চাষ হয়, আপনার কাছে প্রথম শুনলাম। মার্কিনীরা জানলে পরবর্তী নোবেল শান্তি আপনার। কারন ‘শান্তি’ কথার যথার্থ মানে তাঁরাই জানেন।
‘Enlightenment tradition’- খায় না মাথায় মাখে জানিনা। (মার্জনা করবেন)। এটা পুরানো কায়দা- যুক্তি না থাকলে কোন এক কম বা অনালোচিত ভাবনা এনে প্রসঙ্গ গুলিয়ে দেওয়া। অনুগ্রহ করে জানাবেন কি- ১০০ জন মানুষের ৫১ জনের একটি ভাবনা, নাকি বাকী ৪৯ জনের ভিন্ন ভিন্ন ভাবনা – গণতান্ত্রিক দেশ কোন ভাবে সিদ্ধান্ত নেবে? নাকি তার জন্য আবার নতুন মত নিতে হবে? ‘Enlightenment tradition’- কি বলে?
@ভাস্কর,
সাহায্য করতে পেরে খুশী।
এনলাইটেনমেন্ট বা জেফারসনিয়ান গণতন্ত্রে আপনার আস্থা না থাকতে পারে, কিন্তু গণতন্ত্রের আলোচনায় এগুলো “কম বা অনালোচিত ভাবনা” আপনার এই মন্তব্য অজ্ঞতার পরিচায়ক। সবকিছু কেউই জানেনা, সেটা সম্ভব নয়, বা সেটা সমস্যাও নয়, কিন্তু মনে হচ্ছে এগুলো জানবার আগ্রহও আপনার নেই।
এখন আপনি আসলেন ২৫০০ বছরের গভীর দার্শনিক-রাজনৈতিক প্রশ্নের পাটিগাণিতিক সমাধান নিয়ে। যাহোক, সংক্ষেপে উত্তর দেয়ার চেষ্টা করি। মুশকিল হল, এখানে ঘৃণ্য মার্কিনীদেরই দ্বারস্থ হতে হবে, কারণ জেফারসনিয়ান গণতন্ত্র নিয়ে কথা বলতে গেলে জেফারসন লোকটিকে ছাড়া করা ভারি মুশকিল….
এখানে unalienable কথাটা লক্ষ্য করুন। ৫১ ভোটে কেন, ১০০ ভোটেও unalienable।
@রৌরব,
গণতন্ত্রের ব্যাপারে স্পষ্ট ধারণা কিন্তু অনেকেরই নেই। অনেকেই এটাকে সংখ্যাগরিষ্ঠের একনায়কতন্ত্র টাইপ কিছু একটা মনে করে। কিন্তু খতিয়ে দেখে জেনে নিতে আগ্রহী নয়। এর জন্যে কিছু লিখবেন?
৫১ জন মানুষও ভোট দিয়ে একজন মানুষের unalienable রাইটগুলো কেড়ে নিতে পারবে না। সেই unalienable রাইট কাড়তে না পারার বদলে ৫১ জন মানুষের “বৃহত্তর স্বার্থের” ক্ষতি হয়, তারপরেও। অনেকে এই ধারণাটা বোঝে না। অনেকে এই ধারণাটা মানে না। দুইটা আবার সম্পর্কিত। “they are endowed by their Creator with certain unalienable Rights” এই মত নিয়ে ছোটবেলা থেকে যেসব গোষ্ঠীর মানুষ বড় হয় নি, তাদের জন্যে এটা মানা তো কঠিন হবেই। ফলে তারা বুঝে ওঠার চেষ্টাতেও অপারগতা প্রকাশ করে।
বাঙালি কি unalienable Rights এ বিশ্বাস করে বলুন, বা মুসলমান, বা তার সমাজ? তো তার একজন সদস্য এমন কি নাস্তিক হলেও সহসাই এই অপরিচিত ধারণাটা ধারণ করে উঠতে পারে না। আমার এই সরলীকরণের জন্যে ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি। তবে কাউকে ছোট করা উদ্দেশ্য নয়। এই ব্যাখ্যা যদি নতুন করে চিন্তা করতে কাউকে সাহায্য করে, তার জন্যেই এভাবে বলা।
@রৌরব,অধিকাংশের কথা শুনে মনে হ্য় তারা চান দেশপরিচালনা হওয়া উচিত জিম ক্যারি’র ‘Trumann Show’ এর মতো। পারফেক্ট স্বচ্ছতা-সবাই সবকিছু সবসময়ে জানবে। সেইসাথে আজকের ইন্টারনেটের সুবাদে পারফেক্ট ডেমোক্রসীও হবে। কোনো নেতা-নেত্রীর দরকার নেই। মুহুর্তে মুহুর্তে ভোট দিয়ে দেশ চালানো হবে। ৫ হাজার বছর ধরে রাষ্ট্রপরিচালনার যে মূলভিত্তিগুলি রয়েছে সেগুলিকে ছুড়ে ফেলতে দ্বিধা করলে চলবে না।
বর্তমান উইকিলিকসে যে কেবলগুলি আসছে সেগুলি বিভিন্ন ইউএস দূতাবাসের নিজস্ব কথপকথন। এইগুলি যতনা আমেরিকার গোপন তথ্য ফাশ করছে তার চেয়ে বেশি করছে অন্যান্য দেশের ভিতরে কি হচ্ছে সে সম্পর্কে স্টেট ডিপার্টমেন্টের নিজস্ব মতামত। এই তথ্যগুলি দশবিশ বছর পরে বিভিন্ন মেমোয়ার্স, বই ইত্যাদির মাধ্যমে বোদ্ধামহল এমনই জানতো। একটি দূর্বল মিডিয়া এবং ষড়যন্ত্রবিলাসী দেশের নাগরিক হিসেবে আমার জিহ্বায় জল চলে আসছে উইকিলিকসের মাধ্যমে দেশের বেশকিছু তথ্য জানতে পারবো বলে। তাইবলে, ইউএস সরকার যুক্তিন্সংগতভাবেই যে উইকিলিকসের কেবলগুলি প্রকাশিত হতে দিতে চাচ্ছে না, সেই পয়েন্ট ওফ ভিউ অস্বীকার করা যায় না। আশাকরি যারা রাষ্ট্রপরিচালনায় পূর্ন স্বচ্ছতা চান তারা নিজের ব্যাক্তিজীবনকেও ওপেন বুক ঘোষনা করবেন।
@Shafiq,
ছবিটি দেখিনি 🙂
আমি নিজে আছি দোটানায়। উইকিলিকসের কার্যকলাপে নিরাপত্তা বিঘ্নিত হচ্ছে, মানুষ মারা যাবে — এরকম কোন সুস্পষ্ট প্রমাণ পাওয়া যাচ্ছে না, এবং লিবারম্যান ধরণের কিছু লোকের এবিষয়ক কাঁদুনি আমার কাছে অস্বস্তিকর। বরং কিছু তথ্য জানা যাচ্ছে, যা থেকে কূটনৈতিক জগৎ সম্বন্ধে সাধারণ মানুষ কিছু তথ্য পাচ্ছে। আবার কোন তথ্যই কিন্তু খুব বিস্ময়কর কিছু না — কাজেই এমন নয় যে বিশাল এক conspiracy উদ্ঘাটিত হয়েছে।
আবার আপনার সাথে আমি একমত, পুরো open democracy সম্ভব বলে মনে হয় না। কিন্তু যতটা open করা সম্ভব, ততই ভাল, তাই না? একটা ভারসাম্যের ব্যাপার, সেটা কোথায় এখনও পরিষ্কার বুঝতে পারছি না।
@রৌরব,আপনি মানবসমাজ জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ন কথাটি বলেছেন, “একটা ভারসাম্যের ব্যাপার”, (Science ছাড়া)। এই উপলধ্বীটি অনেক মুক্তমনার মধ্যেই দেখা যায় না।
@Shafiq,
হঠাৎ করে এসে মুক্তমনাদের ‘জাতি’ ধরে ‘ভারসাম্যহীন’ বানিয়ে দেওয়ার কি দরকার ছিল কিন্তু বুঝতে পারলাম না। কেমন যেন অপ্রাসঙ্গিকভাবে ‘চিপ শট’ নেওয়ার মত লাগলো।
@ফাহিম রেজা,
জীবনানন্দ দাসের কবিতার দু’চরণ মনে পড়ে গেল মুক্তমনারা ‘ভারসাম্যহীন’ শুনে –
অদ্ভুত আঁধার এক এসেছে এ পৃথিবীতে আজ
যারা অন্ধ সবচেয়ে বেশি আজ চোখে দেখে তারা… 😀
@অভিজিৎ,
পুরো কবিতাটি কি আছে কারো কাছে, শিরোনাম সহ?
@স্বাধীন,
অদ্ভুত আঁধার এক
অদ্ভুত আঁধার এক এসেছে এ-পৃথিবীতে আজ,
যারা অন্ধ সবচেয়ে বেশি আজ চোখে দ্যাখে তারা;
যাদের হৃদয়ে কোনো প্রেম নেই- প্রীতি নাই- করুণার আলোড়ন নেই
পৃথিবী অচল আজ তাদের সুপরামর্শ ছাড়া।
যাদের গভীর আস্থা আছে আজো মানুষের প্রতি
এখনো যাদের কাছে স্বাভাবিক ব’লে মনে হয়
মহৎ সত্য বা রীতি, কিংবা শিল্প অথবা সাধনা
শকুন ও শেয়ালের খাদ্য আজ তাদের হৃদয়।
@ফরিদ আহমেদ,
ধন্যবাদ ফরিদ ভাই কবিতাটির জন্য। অসম্ভব সুন্দর কবিতাটি। কবিরাও এক প্রকার দার্শনিক শুধু তাঁদের প্রকাশ ভঙ্গিমাটি ভিন্ন।
@ফাহিম রেজা,
সহমত জানালাম মন্তব্যে।
@ফাহিম রেজা, sorry, দ্বীতিয় Reading এ কথাটি একটু চিপশটই মনে হচ্ছে। আমার অন্তত ‘মুক্তমনা’ কোট চিহ্ন দেয়া উচিত ছিল। অবশ্য আশাকরি একথাটি স্বীকার করবেন অনেক মুক্তমনার দাবীদার আরেক ধরনের extremism ভালোভাবেই ধারন করেন। আসলে যেকোনো ধরনের extremism আমার খুব খারাপ লাগে। বহু আগেই আমার এই উপলদ্ধী হয়েছে যে, এই মতবাদই দুনিয়ার সকল দুর্দশার কারন কিংবা এটি গ্রহন করলেই সকল মুশকিল আশান, এভাবে চিন্তা করা অপরিনততা। এজন্যেই আমি উল্লেখ করেছি যে, যেকোনো মতবাদ একাধারে assert করার আগে তার কোয়ালিফাইংগুলিও ভেবে দেখা উচিত।
অভিজিত, জীবনানন্দ বাংলায় আমার প্রিয়তম কবি। আপনি একদম বুলস আই তে হিট করেছেন প্রথম শটেই।
@Shafiq, ধন্যবাদ আপনাকে। হ্যা, ‘এক্সট্রিমিজম’ খারাপ তা স্বীকার করেই বলছি যে কোন কোন সময় এটা ‘সঠিক’ বা ওটা ‘ভুল’ বলা যেতেই পারে। কতটা করলে বা বললে ‘এক্সট্রিমিজম’ হবে সেটা বোধ হয় আপেক্ষিক। সময় কাল পাত্র ভেদে ‘এক্সট্রিমিজম’ এর সংগাও বদলে যেতে পারে।
@রৌরব,
এটা বোধ হয় কখনও পরিষ্কার বুঝতে পারা যাবেনা। কতটুকু তথ্য জনসমক্ষে প্রকাশ করা যাবে সেটার কি কোন ইউনিভার্সেল স্ট্যান্ডার্ড আছে? তথ্য সংরক্ষন করার আইন কানুন সব দেশে এক রকম নয়। ডকুমেন্ট কতটুকু ওপেন করলে ভারসাম্যটি যথাযথভাবে রক্ষিত হবে এটার নির্ধারক কে হবে?
@রৌরব,
একদম মনের কথা বলেছেন। আবার আপনাকে ধন্যবাদ। :yes:
@Shafiq,
আপনার কথা শুনে মনে হচ্ছে আপনি দ্রুত সিদ্ধান্তে পৌছতে সিদ্ধহস্ত। না হলে এতো মন্তব্যের মধ্যে পারফেক্ট ডেমোক্রেসীতে চলে যেতে হবে এরকম মন্তব্য কেউ করেছে বলে দেখতে পাচ্ছি নে। আর পাঁচ হাজার বছর ধরে টিকে থাকার যে যুক্তি দিয়েছেন সেটিও যুক্তি হিসেবে খুব দুর্বল যুক্তি। মানুষের ধর্মবিশ্বাসও বহু বছর ধরে টিকে আছে, তার মানে এই না যে সেগুলোকেও টিকিয়ে রাখতে হবে। তারপরেও আপনাকে বলতে পারি, জনপ্রতিনিধি মূলক গণতন্ত্রের যাত্রা খুব বেশিদিন পুরোনো নয়। মাত্র আড়াইশত বছরের পুরোনো। তারপরেও বলবো না যে সরাসরি গণতন্ত্র কার্যকর প্রতিনিধিমূলক গণতন্ত্রের তুলনায়। ঠিক এই বিষয়ে আমার একটি পুরো লেখা ছিল গণতন্ত্রের ইতিবৃত্তঃ গণতন্ত্রের ইতিহাস ও এর সমালোচনা। আশা করবো পড়ে দেখবেন, এবং দ্বিমত থাকলে জানাবেন নিঃসঙ্কোচে। উক্ত লেখাতেও বলেছি যে জনপ্রতিনিধিমূলক গণতন্ত্র দিয়ে রাষ্ট্র চলিলেও জনগণকেই রাখতে হবে ক্ষমতার কেন্দ্রে, এবং সেই ক্ষমতার কেন্দ্রে রাখার পূর্বশর্ত হিসেবেই জনগণকে সকল তথ্যের নিশ্চয়তা দিতে হবে। এখন জনগণকে তথ্য জানতে দিতে হলে ব্যক্তি মানুষের নিজের জীবনের সকল তথ্য খুলে দিতে হবে সেটি আরেকটি কুযুক্তি। ব্যক্তি মানুষ যখন জনপ্রতিনিধি হতে চাইবে তখন তাকে সকল তথ্য উম্মুক্ত করে দিতে হবে। কিন্তু যেই ব্যক্তির জনপ্রতিনিধি হবার ইচ্ছে নেই তার তথ্যের প্রয়োজন সাধারণ জনগনের নেই।
এখন কতটুকু প্রতিনিধি মূলক আর কতটুকু সরাসরি গণতন্ত্র প্র্যাকটিস হলে অথবা কতটুকু পূঁজিবাদ আর কতটুকু সমাজতন্ত্রবাদের মিশ্রণ হলে সেই ভারসাম্যটুকু আসবে সেটা যখন কেউই জানে না তখন অনেক মুক্তমনারাও যে সেটা জানবে না সেটাই তো স্বাভাবিক, তাই নয় কি? আপনার কথা শুনে মনে হচ্ছে আপনার কাছে সেই প্রশ্নের জবাব রয়েছে। তো আপনি বলুন, আমরা শুনছি।
@ভাস্কর,
বেশী সংখ্যক মানুষের কল্যাণের উদ্দেশ্য আছে কি না, তার চেয়ে বাস্তব বড় প্রশ্ন হচ্ছে, একটি দেশ তার স্পর্শকাতর গোপন পররাষ্ট্র নীতি, রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা ও স্বার্থ সংশ্লিষ্ট তথ্য কতটুকু প্রকাশ/ ফাঁস হওয়া বরদাশত করবে অথবা করবে না?
তাছাড়া আমি রৌরবের সঙ্গে একমত, “বৃহত্তর সমাজের” ক্ষতি হচ্ছে কিনা, তা বিচার করবেই বা কে? :-/
@বিপ্লব রহমান,
রাষ্ট্র তার সীমানার মধ্যে কি চাইল বা না চাইল- তাতে সেই রাষ্ট্রের বাইরের মানুষের কি যায় আসে? বৃহত্তর সমাজ বলতে আমি মানব সমাজ তথা সব মানুষের দারুণ না হোক, ন্যূনতম বেঁচে থাকার অধিকার বলতে চেয়েছি। কোন একটি দেশ তার নিজের সঙ্কীর্ণ স্বার্থরক্ষার জন্য বহু মানুষের অনায্য ক্ষতি করে গোপনীয়তাতে মুড়ে রাখলে ঠিক, আর সেই গোপনীয়তা সরালে দোষ? এতো শিব ঠাকুরের আপন দেশেও নেই।
বিচার করুক আঘাতকারী এবং আঘাতপ্রাপ্ত মানুষের বাইরে অগণিত মানুষের জাগ্রত বিবেক (আন্তর্জাতিক আদালত- না হয় বাইরে রইল)।
@ভাস্কর,
এক কথায়, উইকিলিকস বিশ্ব প্রভুদের ষড়যন্ত্রের মুখোশ উন্মোচন করছে, এটি করা দরকার ছিল। বিপ্লব পালকে উদ্ধৃত করে বলি:
:yes:
ফাঁস করা এইসব বোমার মতন তথ্যগুলির বিশ্বাসযোগ্যতা আসলেই কতটা তা বোঝার কি কোন উপায় আছে? কোন বড় ধরনের ব্যাবসায়িক চাল যে নয় তা কিভাবে বোঝা যেতে পারে?
যেমন ঈরান সৌদী আরব তাদেরকে হামলায় আমেরিকাকে উষ্কানি দিয়েছিল সংক্রান্ত খবর সরাসরি ষড়যন্ত্রমূলক বলে বাতিল করে দিয়েছে।
কার কথা ঠিক কে বলতে পারে।
@আদিল মাহমুদ,
সেটা একটা সমস্যা। নিজের পছন্দ মত কোনটা কোনটা কি বিশ্বাস করা উচিত হবে? আমেরিকা ইরাকে মৃতের সংখ্যা গোপন করেছে সেটা বিশ্বাস করব, কিন্তু সৌদি আরব (এবং মিশর) যে ইরান আক্রমণে উৎসাহ জুগিয়েছে সেটা অবিশ্বাস করব?
@রৌরব,
আজকাল আসলে ষড়যন্ত্র পালটা ষড়যন্ত্র এসব থিয়োরী এত বেরুচ্ছে যে চট করে বিশ্বাস করতেই ভয় লাগে।
গত কেয়ারটেকার আমলে শীর্ষ রাজাকাররা নিজেদের নামে নিজেদের লোক দিয়েই মামলা করাচ্ছিল বলে শুনেছিলাম।
এখানেও একই ব্যাপার নয়ত তাই মনে হচ্ছিল 🙂 ।
@আদিল মাহমুদ,
উইকিলিকসের তথ্য অস্বীকার করা হলেও তাদের ফাঁস করা দলিল যে ভূঁয়া– এ পর্যন্ত কোনো দেশ এমন চ্যালেঞ্জ করেনি। অবশ্য এরকম চ্যালেঞ্জ করলে তাদের আবার আসল দলিলটি ফাঁস করতে হয়। 😀
ব্যাপারটা বুঝার জন্য হয়তো আরো কিছু সময় অপেক্ষা করা লাগবে।
@আসরাফ,
ঠিক বলেছেন। অনেক ধন্যবাদ। :yes:
যে কোন তথ্য পাবার অধিকারই জনগণের থাকা উচিত জবাবদিহীতার জন্য। তাই আমি উইকিলিক্সের পাশেই আছি। গোপনীয় বলে জনগণকে তথ্য থেকে বঞ্চিত করার অধিকার কোন সরকারেরই থাকা উচিত নয়। এই সূযোগে ফ্রিডম অফ স্পিচ, গণতন্ত্রের ধ্বজাধারি আমেরিকার চেহারা বিশ্ব দেখার সূযোগ পাচ্ছে। সচলায়তনের একটি লেখা ভাগ করি এই সূযোগে। আদমচরিত। মজা পাবেন।
@স্বাধীন,
বলতে চাইছেন সরকারের গোপনীয় কোন তথ্য থাকা উচিত নয়?
@রৌরব, ইরাক-আফগানিস্তান যুদ্ধে অনেক মৃত্যুর হিসাব অপ্রকাশিত রাখা হয়েছিল যা বলে উইকিলিক্স লিক করে দিচ্ছে। যুদ্ধ শুরু করে আবার মৃত্যুর হিসাব লুকানোটা আমি কোনমতেই জাস্টিফাই করতে পারছি না।
তাছাড়া উইকিলিক্স এখন পর্যন্ত্য যেসব তথ্য লিক করেছে, সেগুলো কি এমন কিছু ছিল যা লুকিয়ে রাখার অধিকার সরকার বা কোন রাষ্ট্র সংরক্ষণ করে? আসলে আমি জানতে চাচ্ছি ঠিক কি ধরণের তথ্য সরকার গোপন রাখতে পারে, এবং উইকিলিক্স কর্তৃক প্রকাশিত তথ্যগুলো আদৌ এই ক্যাটাগরীতে পড়ে কিনা।
@পৃথিবী,
সেই প্রশ্ন আমারো।
@পৃথিবী,
আমিও। কোন রাষ্ট্রের নিরাপত্তা বা ইত্যাদির সাথে সরাসরি সম্পর্কিত হলে হয়তো কিছু তথ্য গোপন রাখার একটা জাস্টিফিকেশন তাও দাঁড় করানো যায়, কিন্তু ঐ একই যুক্তির শাখা প্রশাখা দিয়ে – ‘এই তথ্য ওইভাবে নিরাপত্তার জন্য হুমকিস্বরূপ হয়ে উঠতে পারে’ -ীরকম দেখিয়ে ইচ্ছেমতো পরিমাণে তথ্য গোপন করা যেতে পারে।
তাহলে??
@পৃথিবী,
বলেন কি! আপনি দেখছি উইকিলিকস-ঝড় সর্ম্পকেই ওয়াকিবহাল নন! :deadrose:
উইকিলিকস এ পর্যন্ত যে সব নথি প্রকাশ করেছে, তার অধিকাংশই বিভিন্ন দূতাবাসের পারস্পরিক নোট, বার্তা ও টেলিগ্রাম। এগুলোর ক্যাটাগরি হচ্ছে: টপ সিক্রেট, সিক্রেট, সরকারি, অতি জরুরি, সাধারণ, অন্যান্য — ইত্যাদি। এর মধ্যে ইরাক-আফগানিস্তান যুদ্ধ ও সামরিক অভিযান সম্পর্কিত বিভিন্ন নথি ছাড়াও কয়েকটি দেশের গোপন কূটনীতিক ও পররাষ্ট্রনীতি সম্পর্কিত নথিও আছে!
তবে একটু ঘুরিয়ে এমনটি প্রশ্ন করা যায়, কতটুকু সরকারি তথ্য প্রকাশ/ ফাঁস করা যায়? :-/
আপনাকে ধন্যবাদ। :rose:
@বিপ্লব রহমান,
দূতাবাসগুলোর নিজেদের মধ্যে আন্তঃযোগাযোগ হলেও আলোচনার বিষয় কিন্তু অন্য দেশের রাজনীতিই। পাকিস্তানে সন্ত্রাস নির্মূল করতে কয় বছর লাগবে, ইরান আক্রমণে কোন কোন দেশ উৎসাহ যুগিয়েছে-এসব তথ্য গোপন রাখার অধিকার কিন্তু কারও নাই। উইকিলিক্স আমেরিকার সমরশক্তি বিষয়ক গোপন তথ্য ফাস করে দিলেও আমি আপত্তি করব না, যেই দেশ কালকেই আমাকে হাওয়া করে দেওয়ার ক্ষমতা রাখে, সেই দেশের গোপন তথ্যগুলো জানতে চাওয়া দোষের কিছু না। তাছাড়া পররাষ্ট্রনীতি-কূটনীতি কি আদৌ গোপন রাখা উচিত? বাংলাদেশের কথাই না হয় ধরি। বাংলাদেশ সরকার কার কার সাথে গোপন সম্পর্ক রাখছে তা জানলে আমাদের রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা কিভাবে বিঘ্ন হবে তা আমি একদমই বুঝতে পারছি না। বরং রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তার ধোয়া তুলে আপত্তিকর তথ্য গোপন করে রাখা অসম্ভব কিছু না।
এই প্রশ্নটার কোন মিমাংসিত উত্তর আছে বলে মনে হয় না। এরকম একটা বড় পরিসরের প্রশ্ন নিয়ে কাজ করার চেয়ে বরং উইকিলিক্সের প্রকাশিত তথ্যগুলো আদৌ গোপন রাখার মত কিনা, সেটা নিয়ে আলোচনাটাই সবচেয়ে বেশি ফলপ্রসূ হবে।
@পৃথিবী,
প্রশ্ন আটকেছে শেষ বাক্যে। উইকিলিক্সের প্রকাশিত তথ্যগুলো আদৌ গোপন রাখার মত কিনা সেটি নির্ধারণ করবে কে? আর নির্ধারণের মাপকাঠিই বা কী হবে? :-/
@রৌরব,
এটা নিয়ে লম্বা বিতর্ক করা যাবে। যদি কোন একদিন সেরকম বিষয় নিয়ে লেখা আসে, বা লিখি আলোচনা করা যাবে। তবে আমার মতে যে কোন তথ্যই জনগণের জানার অধিকার থাকা উচিৎ। রাষ্ট্রের নিরপত্তার অজুহাত দিয়ে আসলে রাজনীতিবিদেরা জনগণকে অন্ধকারে রেখে তাঁদের নিজস্ব উদ্দেশ্যই বাস্তবায়ন করে। রাষ্ট্রের প্রকৃত ক্ষমতার উৎস যদি হয় জনগণ তবে কেন তারা রাষ্ট্রের কোন তথ্য হতে বঞ্চিত থাকবে। আদলত যদি সরকারের কাছে কোন তথ্য জানতে চায় তবে সরকার কি সেটা রাষ্ট্রের নিরপত্তার কথা বলে সে তথ্য দেওয়া হতে নিজেকে বিরত রাখতে পারে? রাষ্ট্রের প্রয়োজন নেই সকল তথ্য অবাধে উম্মুক্ত করে দেওয়া। কিন্তু সেই সাথে রাষ্ট্রের নিরপত্তা নামক অজুহাত দিয়ে সেই তথ্য প্রকাশ করবে না এমন ক্ষমতাও থাকা উচিত নয়। যদি মিডিয়া/আদালত/জনগণ যে কোন তথ্য জানতে চায় সেটা যেন রাষ্ট্র চাহিবা মাত্র দিতে বাধ্য থাকে সেরকম আইন থাকা উচিত। সে রকম আইন নেই বলেই রাজনীতিবিদেরা আজ আইনের জবাবদীহিতার উর্ধ্বে। পশ্চিমা বিশ্বের গণতন্ত্র, মিডিয়ার স্বাধীনতাও যে কতটা উন্নত উইকিলিক্সের ঘটনাই প্রমান করে। রাষ্ট্রের অধীনে বা কর্পোরেট ব্যবসায়ীর অধীনে মিডিয়া সলে কতটা স্বাধীন সেটা প্রথম আলো, কালের কন্ঠ কিংবা বিবিসি/সিএনেন এর মত মিডিয়া গুলো দেখলেই বোঝা যায়। যে কারণেই মানুষ এখন ব্লগ কিংবা উইকিলিক্সের মত মিডিয়াগুলোকেই বেছে নিচ্ছে তথ্য ও খবরের জন্য। এই পরিবর্তন চলতে থাকবে। এটা মাত্র শুরু আমার মতে।
@স্বাধীন, আমেরিকা বা সৌদি আরবের ( বা যে কোন দেশের) রাষ্ট্রীয় পর্যায়ের তথ্যগুলো ফাঁস হয়ে যাওয়া নিয়ে তেমন কোন আপত্তি নেই আমার। কিন্তু হিলারির দেওয়া বক্তব্যে শুনলাম ( নিজে পড়ে দেখিনি) নিরীহ ব্যক্তিরা সন্ত্রাসী বা অন্যান্য অপরাধে অপরাধীদের ধরিয়ে দেওয়ার জন্য সিক্রেট সার্ভিসেসকে যে সব টিপ দিয়েছে সেগুলোও ফাঁস হয়ে গেছে। নিজের আইডিন্টিটি গোপন রেখে এসব টিপ দেওয়ার নিশ্চয়তা না থাকলে সাধারণ জনগন কেন এই তথ্যগুলো সরকারের সাথে শেয়ার করবে? এ তে করে তাদের ব্যক্তিগত নিরাপত্তা হুমকির সম্মুখীন হতে পারে।
@স্বাধীন,
এ ক ম ত। কিন্তু এরপরেও কথা থাকে। একটি দেশ তার স্পর্শকাতর গোপন পররাষ্ট্র নীতি, রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা ও স্বার্থ সংশ্লিষ্ট তথ্য কতটুকু প্রকাশ/ ফাঁস হওয়া বরদাশত করবে? :-/
@বিপ্লব রহমান,
আমারো একই প্রশ্ন। আচ্ছা বলেনতো, আমাদের দেশের এমন কি কি তথ্য আছে যেটা বিদেশীরা বা শত্রু পক্ষের জানা উচিত নয়, অথবা জানে না। তথ্য যাদের কাছে গোপনীয় থাকার কথা সেগুলো কি তাঁদের কাছে আসলেই অজানা রয়েছে? তাঁদের নিজস্ব গোয়েন্দা বিভাগ কি আমাদের তথ্য জানে না? আর আমাদের কয়টা মিসাইল আছে, জাহাজ আছে, কোথায় কোথায় সেগুলো আছে এই সব তথ্য কি তাঁদের কাছে অজানা? কিনে তো তাঁদের কাছ থেকেই। যদিও জনগণের বিশেষ প্রয়োজন নেই এই সব তথ্যের, কিন্তু সামরিক খাতে কিভাবে করের টাকা খরচ হচ্ছে সেটার জবাবদীহিতা নিশ্চিত করার জন্যেই এই সব তথ্যও জনগণ জানতে পারে। প্রায় সব দেশেই দেখবেন সব চেয়ে বড় দুর্নীতিগুলো এই সামরিক খাতেই হচ্ছে।
তার পর আসে পররাষ্ট্রনীতি কিংবা দেশের স্বার্থ রক্ষা। নিজ নিজ দেশের স্বার্থ রক্ষার্থেই সকল দেশের পররাষ্ট্রনীতি হবে সেটাতে গোপনীয়ের কিছু নেই। বরং গোপনীয়তার আড়ালে আসলেই দেশের স্বার্থ রক্ষা করছে নাকি দেশের সর্বনাশ করছে সেটা সাধারণ জনগণ জানতে পারছি না। তথ্যের উৎস কি বিনএপির প্রেস নোট অথবা সরাকারি প্রেস নোট, এবং যা কখনই এক কথা বলে না। যেমন ট্রানজিট চুক্তিতে দেশের কতটুকু স্বার্থ আসলেই রক্ষা হয়েছে আমরা জানতে পারছি। বা পদ্মা সেতু থেকে শুরু করে যে কোন চুক্তিতে দেশের স্বারতথ আসলেই রক্ষা হচ্ছে কিনা আমরা কি জানতে পারছি। এই সব চুক্তির সকল তথ্য উম্মুক্ত রাখা উচিত আমার মতে। তখনই কেবল রাজনীতিবিদদের হতে আমরা সত্যিকার কাজ আদায় করতে পারবো। না হলে দেশ এভাবেই চলবে। তাই আমি মনে করি না, একটি দেশের এমন কোন স্পর্শকাতর তথ্য থাকতে পারে যেটা জনগণ জানার অধিকার রাখে না। যদি থাকে তবে সেইদিকে না যাওয়াটাই সরকারের কর্তব্য হওয়া উচিত। আমার মতে মিডিয়ারও এখন সোচ্চার হওয়া উচিত উইকিলিক্সের সাথে সাথে সকল প্রকার তথ্যের জন্যে।
@স্বাধীন,
পাঁচটি প্রভাবশালী পত্রিকা রয়েছে উইকিলিকসের সঙ্গে এই খবরটি সে কারণেই আমার কাছে আশাপ্রদ। এভাবে সকল দেশের মূল ধারার পত্রিকা ও মিডিয়ারই উচিত উইকিলিক্সের পাশে এসে দাঁড়ানো। না হলে একদিন তাদেরকেও নিরাপত্তার অজুহাতে তথ্য প্রকাশের দায়ে কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হবে 😉 ।
@স্বাধীন,
আপনি বোধহয় বুঝতে ভুল করেছেন।
স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা মানেই সরকারের পররাষ্ট্র, সামরিক বা নিজস্ব অভ্যন্তরীণ অন্য কোন অতি স্পর্শকাতর বিষয় প্রকাশ্য করা নয়। এর একটি সীমা রেখা অবশ্যই থাকবে।…তা অন্য দেশের গোয়েন্দাদের জ্ঞাত বা অজ্ঞাত কি না– সে প্রশ্ন অবান্তর।
একটি উদাহরণ দিয়ে বলি:
মনে করি, বাংলাদেশ এ মুহূর্তে পাকিস্তানের সঙ্গে কোন গোপন সমঝোতায় পোঁছালো যে, টিপাই বাধসহ আরো নানা ইস্যুতে ভারতকে চাপের মুখে রাখতে বাংলাদেশ সীমান্তের সমস্ত ভারতীয় গেরিলা গ্রুপগুলোর বিরুদ্ধে সরকার আর কোনো অভিযান চালাবে না, বরং বাংলাদেশ তাদের নিরব সমর্থন দেবে। বিনিময়ে পাকিস্তান এ দেশের মৌলবাদী জঙ্গীগোষ্ঠিগুলোকে আর আশ্রয়-প্রশ্রয় দেবে না, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নেবে।
বাংলাদেশের একজন শীর্ষ স্থানীয় সরকারি নীতি-নির্ধারক হিসেবে আমি কী চাইবো– দলিল-প্রমানসহ এই গোপন সমঝোতা অনলাইনে বিশ্ববাসীর কাছে ফাঁস হোক? (খুব খেয়াল করে।) 😛
@বিপ্লব রহমান,
দ্বিমত প্রকাশ করছি। স্পর্শকাতরতা খুব স্পর্শকাতর শব্দ। কে কিসে স্পর্শকাতর হয়ে উঠে বলা মুশকিল। যেমন ধর্ম বিশ্বাসীরা ধর্মের সমালোচনায় কাতর হয়ে উঠে।
এবার আমাকে আপনি বলুন তাহলে উইকিলিক্স প্রকাশিত তথ্য হতে আমরা যেটা জানতে পারি যে ডিজিআইফ যে হুজিকে প্রতিষ্ঠিত করতে চেয়েছিল সেই তথ্য জানার অধিকার তাহলে জনগণের নেই? কিংবা দশ ট্রাক অস্ত্রের চালানও তাহলে গোপনই রাখা উচিত ছিল। এগুলোও তো দেশের শীর্ষস্থানীয় নীতি নির্ধারকদের কোন গোপনীয় চাল ছিল প্রতিবেশি দেশকে চাপে রাখার জন্য।যদি আপনি গোপন রাখতে চান তাহলে কোন দিন জানতেও পারছেন না নীতিনির্ধারকেরা স্পর্শকাতর আর গোপনীয়তার আড়ালে আসলে কি করছে। বুশ যেমন কোন প্রমান ছাড়াই মাস ডেস্ট্রাকশনের অজুহাতে ইরাক আক্রমন করে বসলো। এগুলো সম্ভব হয়েছে ওই গোপনীওয়তার কারণেই। আমি বার বারই বলবো জনগণকে প্রকৃত ক্ষমতার কেন্দ্রবিন্দুতে রাখতে হলে জনগণকে সব তথ্য পাবার অধিকার রাখতে হবে। আবারো খেয়াল করুন, আমি বলছি না, যে সবই উম্মুক্ত করে রেখে দেওয়া হোক। কিন্তু এটা বলছি যদি মিডিয়া/আদালত/জনগণ যে কোন তথ্য দাবী করে তবে সরকার যেন স্পর্শকাতর বলে সেই তথ্য না দেওয়ার অধিকার না রাখে। সরকারের স্বৈরতন্ত্র হতে জনগণকে মুক্ত রাখার জন্য এটার প্রয়োজন আছে। সরকার যে কোন চুক্তিতে যাবার আগে তাহলে মাথায় রাখবে যে এটা যে কেউ চাইতে পারে। আমরা এমন কিছু বরং না করি যেটা জনগণকে বুঝাতে ব্যর্থ হবো। তবেই সরকার স্বৈরতান্ত্রিক কোন সিদ্ধান্ত নিবে না। যদি তাঁদের সেই জবাবদীহিতা না থাকে তবে তারা যে কোন সিদ্ধান্ত নিতে দ্বিধা করবে না।
@স্বাধীন,
আসলে এই বিতর্কটি শেষ পর্যন্ত বোধহয় অমিমাংসিতই থেকে যাবে। তথ্য গোপন রাখার প্রশ্নে একেকটি রাষ্ট্রের দৃষ্টিভঙ্গী একেকরকম।
বরং আম-জনতার দৃষ্টি থেকে রৌরব’কে উদ্ধৃত করে বলি:
:yes:
মার্কিন পরিভাষায় যাকে বলে “ফার্স্
@রৌরব,
বার বার এই সমস্যাটা হচ্ছে, শুধু বিপ্লব রহমানের এই পোস্টেই। বিপ্লব রহমানের বিরূদ্ধে মুক্তমনার ন্যক্কারজনক ষড়যন্ত্রকে ধিক্কার জানাই। বিপ্লব রহমানকে বিপ্লবী সালাম।
আমি বলতে চেয়েছিলাম:
মার্কিন পরিভাষায় যাকে বলে “ফার্স্ট অ্যামেন্ডমেন্ট মৌলবাদী”, আমি ঠিক তাই। অর্থাৎ চরম বাক-স্বাধীনতার পক্ষপাতী। কিন্তু উইকিলিকের ব্যাপারে আমি একটু বিভ্রান্ত। সরকারি তথ্য চুরি করাটা কি বাক-স্বাধীনতার মধ্যে পড়ে কিনা নিশ্চিত নই। পক্ষে-বিপক্ষে তেমন ভাল কোন যুক্তিও দেখিনি।
@রৌরব,
যদি তথ্য ‘চুরি’ করা উইকিলিকসের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য বলে মনে করা হয় তবে এটা বাক-স্বাধীনতা না হয়ে বাক-স্বাধীনতার অপব্যবহার হয়ে যায়।
@ব্রাইট স্মাইল্,
“চুরি”-টা অবশ্য উইকিলিকস করেনি, তারা স্রেফ প্রচার করেছে। কাজেই আইনী প্রশ্নটা আরোই জটিল।
@রৌরব,
তা ঠিক, সরাসরি চুরি করা আর চুরি করাতে উৎসাহ ও সুবিধা দেয়ার মধ্যে আইনগত পার্থক্য আছে নিশ্চয়ই।
@রৌরব,
আমি মনে করি নিশ্চিত মৃত্যুর হাত থেকে কোন নিরীহ বা নিরপরাধ কোন মানুষকে রক্ষা করতে যেমন মিথ্যা বলা তেমন দোষের নয় তেমনই শয়তানের খোলস উন্মোচন করতে তথ্য চুরি করাতেও দোষ দেখিনা।
@বোকা বলাকা,
আমার প্রশ্নটা ঠিক “দোষ-গুণ” নিয়ে ছিলনা। এটা বাক-স্বাধীনতার আওতায় পড়ে কিনা তা নিয়ে ছিল। এদুটো ভিন্ন প্রশ্ন।
@রৌরব,
বাক্ স্বাধীনতার কথা আসলে আমার মনে হয় তথ্য চুরি করে প্রকাশ করাটা বাক্ স্বাধীনতার অপব্যবহারই হয়। সেটা প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবেই চুরি করা হোক না কেন।
@বোকা বলাকা,
প্রচণ্ড দ্বিমত। :deadrose:
বাংলাদেশের মতো একটি দেশে যেখানে ব্রিটিশ আমলের ‘অফিসিয়াল সিক্রেসি অ্যাক্ট’ দিয়ে সমস্ত সরকারি নথি অপ্রকাশ্য ও দুর্লভ করে রাখা হয়, সেখানে একজন সৎ সাংবাদিকের পক্ষে অনুসন্ধানী সংবাদ প্রকাশের স্বার্থেই প্রায়ই নথি চুরি বা নানান ছল-চাতুরির আশ্রয় নিতে হয়। …মোনাজাত উদ্দীন থেকে শুরু করে এদেশের বিখ্যাত সাংবাদিকরা বিভিন্ন সময় নানা জনগুরুত্বপূর্ণ তথ্য সরকারি নথি চুরি করেই ফাঁস করেছেন বলে স্বীকার করেছেন। এমন কি গোপন দলিল হাতাতে তাদের সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারিদের ঘুষও দিতে হয়েছে।
হালে ‘তথ্য অধিকার আইন’ হয়েছে ঠিকই; কিন্তু এর সুফল এখনো সাংবাদিকসহ সাধারণ মানুষ পেতে শুরু করেননি।
এ পর্যায়ে আবার নৈতিকতার সেই পুরনো বিতর্কটি এসে যায়। রবিন হুডের দস্যুবৃত্তি কী সমর্থনযোগ্য? 😕
@বিপ্লব রহমান,
আইন ও নৈতিকতার চিরন্তন দ্বন্দ্ব। দুটি প্রশ্ন খুব গুলিয়ে যাচ্ছে। বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ “আইন-সম্মত” ছিলনা, কিন্তু নৈতিক ছিলনা, রাজাকার ছাড়া কেউ বলবেনা। আমার মতে repressive আইন অমান্য করা নৈতিক ভাবে সমর্থনযোগ্য, এবং প্রচণ্ড ভাবে প্রয়োজনীয়। অ্যাসাঞ্জের কার্যকলাপে মোটের ওপর তাই আমি খুশি।
কিন্তু পাশাপাশি প্রশ্ন হলঃ আইন কতটুকু উদার হলে সেটি আর অনৈতিক থাকবে না? যারা আইন পরিবর্তনের দাবি করবে তাদের তো এই প্রশ্নটির উত্তর দিতে হবে। স্বাধীন যেমন বলছেন, শতভাগ তথ্য অধিকারের কথা। এটি একটি চিন্তা-জাগানিয়া প্রস্তাব।
@বিপ্লব রহমান,
নৈতিকতার দোহাই দিয়ে আইন নিজের হাতে তুলে নেয়াটা কতটা যুক্তিসঙ্গত হতে পারে?
বেআইনীভাবে সরকারের গুরুত্বপূর্ণ তথ্য চুরি করে ফাঁস করলে জনগনের উপকার হয় ঠিকই কিন্তু আইন নিজের হাতে তুলে নিয়ে একজন চোরকে যখন জনগন পিটিয়ে হত্যা করে তখন একজন চোরের উপদ্রব থেকে লোকজনের রেহাই হয় ঠিকই কিন্তু সেটা সামগ্রিকভাবে বা ভবিষ্যতের জন্য একটি দেশের বা সমাজের জন্য কতটা মংগলজনক?
এখন একটি কার্য্যকলাপ কি উপায়ে কোনভাবে জাস্টিফাইড করা যাবে? দেশের জন্য যা কাংক্ষিত বা প্রয়োজন তা আইন করে ইমপ্লেমেন্ট করাই বাঞ্চনীয় নয় কি?
@রৌরব,
আপনার ধীক্কার ও সালাম বহাল রইল। 😀
অবাধ তথ্য প্রবাহের যুগে যেখানে বলা হচ্ছে, তথ্য পাওয়ার অধিকার মানুষের জন্মগত অধিকার, সেখানে ‘সরকারি তথ্য চুরি করাটা বাক-স্বাধীনতার মধ্যে পড়ে কি না’ — এ প্রশ্ন অবান্তর। আমাদের মতো একটি পিছিয়ে পড়া দেশেও এখন তথ্য অধিকার আইন পর্যন্ত হয়েছে। …
তবে এমনটি প্রশ্ন করা যায়, কতটুকু সরকারি তথ্য প্রকাশ/ ফাঁস করা যায়? :-/
আবারো আপনাকে ধন্যবাদ। :yes:
আমি এটা নিয়ে লিখবো ভাবছিলাম। হয়ত লিখব।
একটা প্রশ্ন আছে। এই সব লিকের জন্যে কোন সাইটের দরকার নেই।
গুগল, মাইক্রোসফটের লাইভ বা বিঙ্গো-অনেক স্পেস দিচ্ছে ফিতে-সেখানে পাবলিশ করে সোশ্যাল নেটোওয়ার্কে ছেরে দিলেই হল-তারপর আর কেও ঠেকাতে পারবে না। হাজার হাজার সোশাল নেটোওয়ারকে তা উঠে যাবে।
এইসব আজকাল কেও ঠেকাতে পারে না।
@বিপ্লব পাল,
উইকিলিকস লিক-কারীর পরিচয় গোপন রাখার কাজটি করছে। নিজে নিজে গুগলে ছেড়ে দিলে সেটি কঠিনতর হত।
@রৌরব,
যথার্থই বলেছেন, সূত্রর পরিচয় গোপন রাখা সাংবাদিকতার একটি প্রধান শর্ত। অবশ্য সূত্র নিজে পরিচয় প্রকাশে ইচ্ছুক হলে ভিন্ন কথা। এছাড়া গুগলের ভূঁইফোঁড় সূত্রর চেয়ে উইকিলিকস অনেক বেশী বিশ্বাসযোগ্য। :yes:
@বিপ্লব পাল,
হয়তো কেনো? আপনি লিখলে তা আরো তথ্য সমৃদ্ধ হবে বলেই আমি মনে করি। ওই লেখাটি পড়ার অপেক্ষায়। :rose:
কার্টুনটাই পুরো ঘটনা বলে দেয়। এদেশের নিয়মে বলা হয় যে এখানে রাইট টু ইনফরমেশন আছে কিন্তু এখানে স্বাধীনতার স্বাদ পাচ্ছি না। কোথায় কি আছে? যখন ডেমক্রেসি নিয়ে তারা অন্য দেশের ব্যপারে নাক গলায় তখন তাদের অনেক খুশি লাগে অন্য দেশে সমস্যা লাগানো হলে।
@তমাল,
এ ক ম ত। :yes:
ভাল কাজই তো করেছে ওরা। ওদের জন্য আমার তরফ থেকে একটা :rose2: আর তথ্যটি জনানোর জন্য আপনাকে আরেকটা :rose2:
@সুমিত দেবনাথ, :yes:
ফালুজার ভিডিওটি দেখলাম। মোটেও অ
@রৌরব,
বুঝলাম না কমেন্ট এভাবে কেটে গেল কেন। বলতে চাইছিলাম যে, ফালুজায় যে মার্কিনীরা কেমিক্যাল অস্ত্র ব্যবহার করেছে এটা ওপেন সিক্রেট, কাজেই আমি অবাক হইনি ভিডিওটি দেখে।
@রৌরব,
কিপিটাপ। অনেক ধন্যবাদ।
ইউকিলিকস না উইকিলিকস?
@রৌরব,
মোবাইল থেকেই সংশোধনী দিয়েছি! :rotfl:
আমেরিকার ভাবসাব দেখে জর্জ ওরওয়েলের বিগ ব্রাদার চরিত্রটির কথা মনে পড়ছে। আচ্ছা উইকিলিকসের কাছে এসব নথিপত্র যাচ্ছে কেমনে? প্রসাশনের ভেতরের লোকজনই কি তথ্য পাচার করছে?
@পৃথিবী,
প্রশাসনের ভেতরের লোক-জনেরই গোপন নথি ফাঁস করার সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশী। আবার সাংবাদিকরাও এ কাজটি করতে পারেন। এ ক্ষেত্রে আবারো দায় প্রশাসনের ওপরেই বর্তায়। …ওদের ওয়েব সাইটে গোপন নথি/ ভিডিও ফুটেজ পাঠানোর আহ্বানও আছে দেখলাম।
আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।
@পৃথিবী,
প্রথম আলোতে একটি নিবন্ধ পড়লাম যেখানে ঠিক একই রেফারেন্স (অরওয়েল) দেয়া হয়েছে। কিন্তু তুলনাটি আমার কাছে স্পষ্ট নয়। 1984 এর বিগ ব্রাদারের সাথে কি অর্থে উইকিলিকস-এর প্রতি মার্কিন সরকারের আচরণ তুলনীয়?
@রৌরব, :-/ :-/ :-/
@রৌরব, 1984 পুরো পড়ে শেষ করিনি, কিন্তু যতদূর মনে পড়ে, বিগ ব্রাদার মনভুলানো কাজকর্মে ভয়াবহ পারদর্শী ছিলেন। রাষ্ট্রের নাগরিকদের তিনি মিষ্টি মিষ্টি কথা বলে ঘুম পাড়িয়ে রাখতেন, বিদ্রোহীদের চোখের পলকে নিঃশেষ করে দিতেন। গনতন্ত্র ও মানবাধিকার নিয়ে আমেরিকার চেয়ে আর কেউ প্রগলভ বলে মনে হয় না, অথচ সেই আমেরিকাই এখন সবকিছু ভুলে জুলিয়ানের উপর নগ্নভাবে হামলে পড়ছে। এখানেই আমেরিকার মধ্যে বিগ ব্রাদারের প্রতিবিম্ব পরিলক্ষিত হচ্ছে।