কার্বন, হাইড্রোজেন, নাইট্রোজেন, অক্সিজেন, ফসফরাস এবং সালফার এই ছয়টি উপাদান হচ্ছে আমাদের সকল প্রাণের মূলে। ফসফরাস আমাদের ডিএনএ এবং আরএনএ এর রাসায়নিক গঠনের কেন্দ্রীয় উপাদান, যেগুলোকে আমাদের জিনের মূল হিসেবে আমরা চিহ্নিত করে থাকি। আমাদের প্রাণকে আবার কার্বন ভিক্তিক প্রাণও বলা হয়, কারণ কার্বনের রয়েছে নিজের সাথে নিজেকে যুক্ত করে যৌগিক অনু তৈরী করার ধর্ম। হকিং তার গ্রান্ড ডিজাইন বইয়ে কার্বন ভিক্তিক ব্যতীত প্রাণের কথা বলেছেন। কার্বনের মতই ধর্ম দেখা যায় সিলিকনের মাঝে। তাই হকিং তার বইয়ে বলেছেন বহিঃবিশ্বে আমরা হয়তো কার্বন ভিক্তিক প্রাণ পেলাম না, কিন্তু কে বলতে পারে, সিলিকন ভিক্তিক প্রাণ পেতে পারি। তারপরেও এটি কেবল তাঁর একটি অনুমান ছিল। তাই বহিঃবিশ্বে আমরা শুধু আমাদের মত প্রাণের কথাই চিন্তাই করেছি এবং আমাদের পৃথিবীর পরিবেশের মত আরেকটি পরিবেশই খুঁজছি।
কিন্তু আমরা যে আমাদের নিজেদের বাড়ির সীমানাই ভাল করে জানিনি তার একটি প্রমাণ পাওয়া গেল সাম্প্রতিক নাসার এস্ট্রোবায়োলজি গ্রুপের গবেষণায়। এবার নাসার গবেষকেরা গবেষণায় পেয়েছেন এমন একটি প্রাণ যার গঠন আমাদের প্রাণের গঠন থেকে ভিন্ন। এই গবেষণা আমাদের প্রাণের সংজ্ঞাকে আরো বৃহৎ ব্যাপ্তিতে নিয়ে যাবে, এবং পাঠ্য বইয়ের প্রাণের সংজ্ঞাকে বদলে দিবে। এর ফলে মহাবিশ্বে এখন আমরা শুধু আমাদের পৃথিবীর মতই পরিবেশ খুঁজবো না, কিংবা আমাদের মতই প্রাণ খুঁজবো না। আমরা এখন যে কোন বিরূপ পরিবেশেও প্রাণের সম্ভাবনাকে উড়িয়ে দিবো না। এই গবেষণা মহাবিশ্বে প্রাণ খুঁজে পাওয়ার সম্ভাবনাকে আরো অনেক গুণে বাড়িয়ে দিল।
আর্সেনিক আমাদের মত ফসফরাস ভিক্তিক প্রাণের জন্য ক্ষতিকারক। কিন্তু আর্সেনিক এবং ফসফরাসের ধর্ম অনেক কাছাকাছি। বিজ্ঞানীরা ধারণা করেছিল যে যদি ফসফরাসকে আর্সেনিক দ্বারা প্রতিস্থাপিত করা সম্ভবপর হয় তবে ভিন্ন প্রাণ সম্ভব হলেও হতে পারে। তাই গবেষকেরা যেটা করেছিলো ক্যালিফোর্নিয়ার মুনু লেক, যেখানকার পানি প্রচুর আর্সেনিকযুক্ত, লবনাক্ত, সেখানে হতে কিছু মাইক্রোব সংগ্রহ করেছেন। এই মাইক্রোবগুলো অনেক ক্ষুদ্র আকারের ব্যাকটেরিয়া সদৃশ প্রাণী। বিজ্ঞানীরা এরকম মাইক্রোবকে খুব অল্প ফসফরাস কিন্তু বেশি আর্সেনিক এর মত পরিবেশে রেখে দেখতে পেল যে মাইক্রোবগুলো সেই পরিবেশেও টিকে আছে এবং সংখ্যায় বৃদ্ধি করছে নিজেদেরকে। এর পর গবেষকেরা ফসফরাস সম্পূর্ণ সরিয়ে শুধু আর্সেনিক পূর্ণ পরিবেশে এই মাইক্রোবদেরকে পরীক্ষা করে দেখতে পেল যে সেই পরিবেশেও মাইক্রোবগুলো টিকে থাকছে এবং সংখ্যায় বৃদ্ধি করছে।
এটি একটি সম্পূর্ণ নুতন বিষয় বিজ্ঞানীদের জন্য। কারণ ফসফরাস ভিন্ন প্রাণের সম্ভাবনা বিজ্ঞানীরা কখনো ভাবেননি। দেখা যাচ্ছে যে এই মাইক্রোবগুলোর প্রাণের গঠন এখন সম্পূর্ণ আর্সেনিক ভিক্তিক এবং বিজ্ঞানীরা এই আর্সেনিক কোথায় যুক্ত হয়েছেন সেটাও জানতে পারছেন। এই নুতন মাইক্রোবগুলোর ডিএনএ তে ফসফরাসের বদলে এখন আর্সেনিক যুক্ত হয়েছে। আগের প্রাণের সংজ্ঞায় এদেরকে জীবিত বলা সম্ভবপর ছিল না। কিন্তু এই নুতন মাইক্রোবগুলো জীবিত এবং বংশবৃদ্ধি করছে। অর্থাৎ এদেরকেও এখন আমাদের পাশাপাশি নুতন প্রাণ হিসেবেই চিহ্নিত করতে হবে। এখন আমরা আশা করতে পারি যে অন্য কোন গ্রহেও প্রাণের অস্তিত্ব থাকতে পারে, কিন্তু তারা হতে পারে ভিন্ন রাসায়নিক গঠনের।
বিবর্তন বিদ্যাকেও এখন আবার নুতন ভাবে চিন্তা করতে হবে। শুধু মাত্র একটি ট্রি অফ লাইফ হিসেবে চিন্তা না করে একাধিক ট্রি অফ লাইফকে সম্ভাবনায় রাখতে হবে। কে বলতে পারে হয়তো বিলিয়ন বছর পরে এই আর্সেনিক যুক্ত প্রাণ থেকেও উন্নতর বুদ্ধিমত্তা বিশিষ্ট প্রাণ তৈরী হতে পারে। ততদিন এই মানুষ টিকে থাকবে না কিনা সেটা তারচেয়েও বড় প্রশ্ন। আমরা পরিবেশ বিপর্যয় নিয়ে বেশ উদ্বিগ্ন, ওজোন স্তর নিয়ে চিন্তিত। কিন্তু দেখা যাচ্ছে যে পরিবেশের বিপর্যয় ঘটলেও, মানুষ বা কার্বন/ফসফরাস ভিক্তিক প্রাণ ধ্বংস হয়ে গেলেও, এই আর্সেনিক ভিক্তিক প্রাণ হয়তো টিকে থাকতে পারে এবং কিংবা নুতন প্রাণের উদ্ভব হতে পারে এবং প্রাণের বিকাশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারে। কে জানে?
নোটঃ মূল খবরটি নাসার ওয়েবসাইট হতে পাবেন। এবং আরো বিস্তারিত জানতে মূল লিঙ্কটি ঘুরে দেখার অনুরোধ রইল। খবরটি দেখার পর থেকে অভিজিৎ ও বন্যা উনাদের কারোর লেখার জন্যে অপেক্ষা করে, এখনো কোন লেখা না দেখে, আমিই দিয়ে দিলাম। এমন চমকপ্রদ খবর মুক্তমনার পাঠকদের সাথে ভাগ করার লোভ সামলাতে পারলাম না। এই বিষয়ে লেখার জন্য যে পরিমান জ্ঞান থাকা দরকার তার চেয়ে জ্ঞান অনেকটা কম আছে। লেখায় কোন ভুল তথ্য চোখে পড়লে জানাবেন, ঠিক করে দিবো।
দারুন সংবাদ! (Y)
সম্প্রতি খুঁজে পেলাম যে আমার এই লেখাটি সামুতে “মূলহীন” নামের এক ব্লগার তার নিজের নামে সুন্দর প্রকাশ করে দিয়েছেন। লেখার কোথাও লেখাটি আমার এই মর্মে কিছু বলা নেই। চৌর্যবৃত্তি এখন মহামারী আকার ধারণ করছে দেখা যাচ্ছে। :-Y । এর প্রতিবাদ ছাড়া আর কি করতে পারি ;-( ।
সম্প্রতি সচলায়তন কিছু পদক্ষেপ নিয়েছে এই ধরণের চুরি রোধে। কোন লেখা যেন কপি বা প্রিন্ট না করতে পারে সে জন্যে সচলায়তন কিছু কোড ইমপ্লিমেন্ট করেছে। এমন কিছু মুক্তমনায় করা যায় কিনা রামগড়ুড়ের ছানাকে ভেবে দেখার অনুরোধ করছি।
@স্বাধীন,
আমার আবার সামুতে কোন একাউন্ট নেই। তাই ওই ব্যক্তির ব্লগে যেয়ে যে আপত্তি জানিয়ে আসবো তারও কোন উপায় দেখছি না। কারোর যদি সামুতে একাউন্ট থাকে তবে দয়া করে আমার মূল লেখার লিঙ্কটি দিয়ে আসবেন । অগ্রীম ধন্যবাদ রইল।
@স্বাধীন,
চৌর্যবৃত্তি সত্যই মহামারী আকার ধারণ করেছে দেখছি। তানভীরুল তার বই নিয়ে সামুতে আপত্তি জানানোর পর তারা এন সি দাসের লেখাটা সরিয়ে নিয়েছিল। আপনিও করে দেখতে পারেন।
তাদের ফিড ব্যাক দেয়ার একটা সিস্টেম আছে দেখলাম –
http://www.somewhereinblog.net/feedback
সেখান থেকে নাম, ইমেইল আর দরণের জায়গায় ‘কমপ্লেইন এবাউট ইউজার’ সিলেকট করে প্রেরণ করে দেখতে পারেন।
আর সচলায়তনে চুরি রোধে কি ধরনের কোড তারা ইম্পলিমেন্ট করেছে তার একটা ধারণা পেলে ভাল লাগত।
@অভিজিৎ,
কি কোড ইম্পলিমেন্ট করেছে ধারণা নেই। আপনি মুর্শেদের সাথে যোগাযোগ করে দেখুন। লেখা সিলেক্ট করার অপশন এবং প্রিন্ট করার অপশন মনে হয় বন্ধ করেছে কোন ভাবে। লেখা কপি করার অপশনটি বন্ধ করা গেলে অনেক চুরি বন্ধ করা সম্ভব। টাইপ করে কেউ লেখা বিশেষ চুরি করবে না।
সামুতে আপত্তি জানানোর ব্যাপারে তথ্য দেওয়ার জন্যে ধন্যবাদ। আপত্তি জানাবো। তবে আমার লেখা তো আব-জাব তাই আপত্তি জানানোর চেয়ে চোর চেনা মনে হয় আরো উত্তম। লেখা মুছে দিলে তো আর প্রমান থাকছে না চুরির :)) , আমি অবশ্য স্ক্রিন শট নিয়ে রেখেছি :))
@অভিজিৎ,
জাভাস্ক্রিপ্ট এর মাধ্যমে মূল লেখার উপর রাইট বাটন ক্লিক এবং সিলেক্ট করা ডিজ্যাবল করা যায়। তবে মজার কথা হলো যারা চোর তারা এই নুন্যতম জ্ঞ্যান রাখে বলেই আমার ধারণা যে ব্রাউজারে জাভাস্ক্রিপ্ট ডিজ্যাবল করে দিলেই আপনার প্রোটেকশন আর কাজ করবে না। আমি মনে করিনা এইটা খুব কার্যকারী উপরন্তু পাঠকদের হ্যাশল বাড়বে।
আমি একটু খোজ নিয়ে জানাচ্ছি আরো ভালো কোন পদ্ধতি খুজে পাই কিনা। তবে নিরাশাবাদী 😛
ধুর মিয়া, এইটা নিয়া লিখবো ভাবছিলাম। আপনি তো দেখি আমার ভাত মাইরা দিলেন। আপনাগো নিয়া সমস্যা …
@আরাফাত,
এই সব গরম গরম খবর বের হওয়ার পর এত দেরী করলে তো কেউ লিখে ফেলবেই 😀 । তবে আপনার ব্লগ ঘুরে দেখলাম যে বিজ্ঞানের বিষয়ে আপনার ভালো ধারনা এবং আগ্রহ রয়েছে। বিজ্ঞান বিষয়ক বা প্রোগ্রামিং বিষয়ক নুতন লেখাগুলো এখন থেকে এখানে দিতে পারেন। এখানে আপনার লেখাগুলোর ভালো পাঠক পাবেন আশা করি। প্রোগ্রামিং ভালু পায় এমন মানুষও এই ব্লগে আছে। আর আমার মত, অনেকেই সামু ব্লগে যায় না বলেই ধারনা করি। লিখুন। মুক্তমনায় স্বাগতম জানিয়ে রাখলাম।
@স্বাধীন,
সামু ব্লগ ঘুরে আসার জন্য ধন্যবাদ।
বিজ্ঞান নিয়ে ব্লগিং একটি নিচ্ ব্লগিং। জীববিজ্ঞান তো আরো নিচ্ ব্লগিং। এই জীববিজ্ঞান নিয়ে লেখালেখিতেই দেখি প্রতিযোগিতা শুরু হয়ে যাচ্ছে। আর তো মনে হয় না শান্তিতে থাকা যাবে। আপনারা সমস্যা করে ফেলছেন … এইটা ঠিক না :guli: ।
আমি আসলে প্রিন্ট মিডিয়াতে লেখা দিতে চাচ্ছি। কারণ প্রিন্ট মিডিয়াতে বেশি পাঠক। আর ব্লগে লেখা ভালো লাগে কারণ সহজে পাঠকদের সাথে ইন্টারঅ্যাক্ট করা যায়। কিন্তু এইখানে পাঠক খুব একটা বেশি না।
আর সবাই বিজ্ঞান নিয়ে মুক্তমনাতে লিখলে অন্য ব্লগের কি হবে। স্বীকার করি, মুক্তমনাতে বিজ্ঞান-বোদ্ধারা ঘোরাফেরা করেন। কিন্তু অন্যান্য প্লাটফর্মেও বিজ্ঞান ছড়ানোর দরকার আছে।
এই মুহুর্তে ইন্টারনেটে কেবল বিজ্ঞান নিয়ে একটা গ্রুপ ব্লগের অভাব বোধ করছি।
লিঙ্কটা এখানে।
আপনার দেওয়া আবিষ্কার তো ভয়াবহ কাণ্ড ঘটাতে পারে দেখি। খোদ নাসাই সন্দ’ করছে ভিনগ্রহের প্রাণীরা যে দুনিয়ায় আছে, এ নাকি তারই ইঙ্গিত/প্রমাণ।
পেপারটির (কঠোর) সমালোচনা
@রৌরব,
লিঙ্কটির জন্য ধন্যবাদ। সময় নিয়ে পড়বো। হালকার উপর চোখ বুলালাম। আমার কাছে মূল গবেষণা পেপারের সিনিয়র লেখকের বক্তব্যটি খারাপ লাগে নি।
বিজ্ঞানের মধ্যে তো যাচাই করার ব্যবস্থা রয়েছেই। তারা একটি গবেষণা করে সেটার প্রাপ্ত ফলাফল দেখিয়েছে। এখন যারা বলবেন যে সেখানে ভুল আছে বা হয়েছে সেটা তখন তাঁদের দায়িত্বে পড়বে আরেকটি গবেষণা হতে সেটি প্রমান করা। হয়তো সেই গবেষণা থেকেই আরো কিছু বের হবে। এভাবেই তো বিজ্ঞান এগোয়। আমরা আমজনতা অপেক্ষা করি পরবর্তী গবেষণার ফলাফলে।
আমার মনে হয় না যে এটি শুধুমাত্র কিছু বিজ্ঞানী এবং বাজে রিভিউয়ারের দোষ। এভাবে সমালোচনা কোন সাইন্টিফিক সমালোচনা নয়। কারণ যে গবেষোকেরা কাজ করেছে এবং যে রিভিউররা কাজ করছে তার খুব ভালো করেই জানে যে এই গবেষণার সিগনিফিকেন্স এবং এর ফলে কি কি বিতর্ক হতে পারে। তাই এ ধরণের সমালোচনাকে আমি মূল্য কমই দিবো। বরং কেউ যদি আরেকটি গবেষণা করে, পেপার বের করে আগের গবেষণার ফলাফলকে ভুল প্রমান করতে পারে আমি সেই সমালোচনাকে সাদরে গ্রহন করবো। কারণ সেটি তখন শুধু সমালোচনাতে না থেকে একটি সমাধানও দিবে।
লিঙ্কটির জন্যে আবারো ধন্যবাদ।
:rose2: :rose2: :rose2:
নাসরিন সুলতানা পেপারটা আমাকে পাঠানোয় আপাতত অনেক কিছু পরিস্কার হল। আমি এই ব্যাপারে বিশেষজ্ঞ না তবু সায়েন্সের পেপারটা পড়ে যা বুঝলাম
(১) ডি এন এ তে ফসফেটের স্থলে আর্সেনেটের অস্তিত্বের জন্যে দুটি পরীক্ষা করা হয়েছে- এক্সরে ক্রিস্টালোগ্রাফি এবং রেডিও একটিভ আর্সেনেট। দুটি পরীক্ষা থেকেই জানা যাচ্ছে ডি এন এতে ফসফেটের স্থলে অনেক যায়গাতেই আর্সেনেট এসেছে। অনবিক ভরের তারতম্যেও বোঝা যাচ্ছে আর্সেনেট আছে ডি এন এতে।
(২) এটিপি অনুতেও ফসফেটের স্থলে আর্সেনেট এসেছে-এবং তারা শক্তি উৎপাদন করছে কি না সেই ব্যাপারটা নিশ্চিত না।
ফসফেটের স্থলে আর্সেনেট ডিফিউশন পক্রিয়াতেই প্রতিস্থাপিত হচ্ছে। অর্থাৎ এই পরিবর্তন মিউটেশন থেকে আসছে না। এটি শরীরবিতৃয় কেমিক্যাল বিক্রিয়ার একটি কারনে হচ্ছে-যেটির কারন আর্সেনেট এবং ফসফেট
র্যাডিকয়ালের মধ্যে বায়োকেমিক্যাল বিক্রিয়া গুলি পার্থক্য করতে অক্ষম, তাই অতি অনাযাসেই সঠিক পি এই চ থাকলে, ফসফেটকে আর্সেনেট দিয়ে প্রতি স্থাপন করা যায়। এবং তারপরে তারা বংশ বৃদ্ধি করলে, ডি এন এ তে ফসফেটের স্থলে আর্সেনেট চলে আসছে। অর্থাৎ এটির সাথে বিবর্তনের কোন যোগ নেই। বিবর্তনে পরিবর্তন হয় মিউটেশন থেকে।
@বিপ্লব পাল, :yes:
মুক্তমনার উপযোগী লেখা। কিন্তু শুধু প্রাণের সন্ধান করবেন?
প্রাণের অনুশীলন যাঁরা করেন এবার তাদের কথা একটু লেখা হোক না ! এই পাতা ঝরার সময়ে বাংলাদেশের কবিদের কথা জানতে চাই। আমাদের একজন সমাজসচেতন কবির কথা রইল http://www.abcica.blogspot.com তে। সময় পেলে পড়ে দেখবেন।
@স্বাধীন,
কি সাংঘাতিক ব্যাপার। মুক্তমনার মানুষজনের তো দেখি লয়ালটি বলে কিচ্ছু নাই। প্রথমে চুলায় গেল বাপ দাদার ধর্ম, তারপর গেল ট্রেডিশানাল সাইকোলজি, এখন আবার কন বাপ দাদা চোদ্দশ’গুষ্টি যেই ম্যটেরিয়াল দিয়ে বানানো সেইটারেও বাদ দিতে। এই হারে বাদ দিতে থাকলে তো নিজের বলে আর কিছুই অবশিষ্ট থাকবে না। কার্বন বিনে জীবন কেমন জানি ফাঁকা ফাঁকা লাগতেছে, বেশীদিন মুক্তমনায় ঘোরাঘুরি করলে মনে হয় চ্রম আইডিন্টিটি ক্রাইসিস শুরু হয়ে যাবে। আমি কার্বনরে খুবই ভালু পাই, আর্সেনিকের সাথে আবার নতুন কইরা ভাব জমাইতে পারুম না, কার্বনের বিরুদ্ধে এই শড়যন্তের তীব্র প্রতিবাদ জানাই। যাই কন ভাই, কৃতজ্ঞতা বলে যে একটা ব্যাপার আছে সেইটা তো দেখি মুক্তমনাদের মধ্যে এক্কেবারেই কিছুই অবশিষ্ট নাই। অভিজিত রায় না বলেছিলেন এইগুলা গুণাবলী বিবর্তনীয় গুণাবলী, এখন তো দেখি সবই মিছা কথা।
আপনার লেখাটা কেমন ভার্সাটাইল খ্যাল কইরা দেখছেন? লিখলেন আর্সেনিকভিত্তিক প্রাণ নিয়ে, কিন্তু নারী জাতিরে ইলেক্ট্রিফাইড করা থেকে শুরু করে, তাহিতি ভ্রমন, বিজ্ঞানীদের ধর্ষন পর্যন্ত কিছুই বাদ থাকলো না, যাই কই।
বুঝলাম। জানলাম।
তা হলে এখন নতুন অনুজীবটিতে কার্বন, হাইড্রোজেন, নাইট্রোজেন, অক্সিজেন, অার্সেনিক ও সালফার।
লেখা ভাল হয়েছে, যদিও বড় বেশী সংক্ষিপ্ত। অনেকের মত আমারো মনে হচ্ছে যে প্রানের সনাতন সংজ্ঞা বা ধারনা কি ছিল তা খোলাসা করে বললে ভাল হত। না হলে বদলালো কেমন করে আমার মত সাধারন পাঠকে ঠিক ধরতে পারবে না।
সিলিকন বেজড প্রান প্রাপ্তির কি কোন সম্ভাবনা দেখা গেছে?
ছোটবেলাতেই যখন বিভোর হয়ে এলিয়েন কাহিনী পড়তাম তখনই যখন শুনতাম যে অমূক গ্রহে অক্সিজেন/পানি নেই তাই প্রান থাকা সম্ভব না এমন ধরনের যুক্তি কতটা খাঁটি? প্রানের কি অন্য ধরনের প্রকার থাকতে পারে না? কেন তাকে অবধারিতভাবেই অক্সিজেন/পানির উপর নির্ভর করতেই হবে?
@আদিল মাহমুদ,
উপরে সংশপ্তকের মন্তব্যে কিছুটা বলেছি। শুরুতে যে মূল ছয়টি উপাদান দিয়েছি এই ছয়টির বাহিরে কোন প্রাণ সম্ভবপর হতো এটাই হচ্ছে আগের সংজ্ঞা। এই পর্যন্ত আমরা যত প্রাণ জানতাম, মানুষ থেকে শুরু করে সকল এক কোষী প্রাণী পর্যন্ত সকল প্রাণের পেছনে সেই ছয়টি উপাদান রয়েছে, এর বাহিরে কিছু নেই। এই প্রথম বিজ্ঞানীরা পেল যে সেই ছয়টি উপাদান ব্যতীত নুতন ছয়টি উপাদান দিয়েও প্রাণ সম্ভব। এর ফলে দ্বারাচ্ছে ভিন্ন পরিবেশে ভিন্ন উপাদান বিশিষ্ট প্রাণও সম্ভব। এতো দিন মহাবিশ্বে শুধু আমদের মত প্রাণই খুঁজতাম, কিন্তু বিজ্ঞানীরা এখন যে কোন সম্ভাবনাময় প্রাণই খুঁজবে।
@স্বাধীন,
এ আর নুতন কি???
প্রখ্যাত দার্শনিক আদিল মাহমুদ বাল্যকালেই তেমন বলে গেছেন। সহি আদিল নামা ঘাটলেই দেখতে পেতে।
৬ টি মূল উপাদান জানতাম। তবে এটা জানতাম না যে এই ছয়টির বাইরে অন্য কোন উপাদান প্রানের গঠনে কোন ভূমিকা রাখতে পারে না এমন কোন ধারনা প্রচলিত আছে।
@আদিল মাহমুদ, সংসপ্তককে দেওয়া আমার উপরের লিঙ্ক দেখুন। এই লেখাটি পাবমেডে জমা পড়ে ২ তারিখে এবং আমি এটা পত্রিকায়ও দেখি ২ তারিখেই। আমি বেশ ভ্রু ট্রু কুচকে বলেছিলাম এটাতো সম্ভব না! ডিএনএ এর মতো বিশাল বড় একটা অনুর ফসফরাস সরিয়ে সেখানে আর্সেনিক যদি বসানো যায়ই, তবে আমাদের রসায়ন শিক্ষায় খুব বিশাল বিশাল বড় গলদ রয়েছে। আর্সেনিকের পারমানবিক সংখ্যা ৩৩, এইটা বিশাল বিশাল বড় একটা পরমানু। একটা পরমানু দেখবেন সাধারণভাবে যতো বড় হতে থাকে ততো বিরল হতে থাকে (সাধারণত), যেমন মহাবিশ্বের ৯৯%ই হাইড্রোজেন কেননা এইটা সবচেয়ে ছোট পরমানু, মানবদেহ বস্তুত একস্তুপ হাইড্রোজেন বৈ কিছু নয়। আর একটা পরমানু যতো বড় হয় ততো সহজে আয়োনাইজড হয়, অক্সিডাইজড হয়ে যায়, শুধুমাত্র এই একটা কারণেই এইটাকে অসম্ভব বলা যায়। ঐদিনই আমার একজন রিসার্চারের সাথে কথা হয়েছিলো যার পাবলিকেশন অন্তত এই গবেষণার পাবলিশারের চেয়ে চারগুন বেশী। সেও বলেছে যে- এই প্রকাশনাটা একটা খুবই খুবই অস্বস্তিকর প্রকাশনা হয়েছে। এনেকডোটাল গল্পটা বললাম কারণে, আসলেই যদি দেখা যায় যে এই প্রকাশকের দাবী সত্য তাহলে যাতে আমি একা শুধু জার্ক প্রমানিত না হই :laugh: ।
@আদিল মাহমুদ,
একই কারণে সিলিকন ভিত্তিক লাইফও সম্ভব না। সিলিকন একটা সেমিমেটাল যেটা কিনা তাপ পেলে বিদ্যুত পরিবাহিত করে। সিলিকনভিত্তিক রমণী দেখা যাবে যে হেয়ারড্রায়ার দিয়ে চুল শুকাতে গিয়ে ইলেক্ট্রোকিউটেড হয়ে পটল তুলেছে :laugh: । অল্পসল্প দুই একটা মিল ছাড়া সিলিকনের রসায়নের কোনই সাদৃশ্য নাই কার্বনের রসায়নের সাথে।
@আল্লাচালাইনা,
কিন্তু ‘সিলিকোন’ ভিত্তিক রমনী আছে। 😛
আর আপনি লাইফ বলতে ‘পৃথিবীর মত’ ধরে নিচ্ছেন মনে হচ্ছে। একদম ভিন্ন পরিবেশে ভিন্ন ধরণের লাইফফর্ম কি হতে পারে না; যারা কার্বন বেজড নয়?
@তানভীরুল ইসলাম, আমি আসলে ঠিক কল্পনা করতে পারি না কিভাবে সেটা সম্ভব। কার্বন ভিত্তিক লাইফ যদি না হয় সেটাকে তবে রসায়ন ভিত্তিক লাইফই বলা যাবে না। কেমিস্ট্রি একটি সীমিত জিনিষ, আনস্টেবল তেজস্ক্রিয় পরমানুকেও যদি আপনি কেমিস্ট্রির ভেতরে ধরেন তারপরও একটি নির্দৃষ্ট আকারের পর পরমানু আর বড় হতে পারবে না, স্ট্রং ফোর্স নিউক্লিয়াই ধরে রাখতে পারবে না আর। লাইফকে হতে হবে ননমেটাল বেইজড, পর্যায় সারণীর প্রায় সবটুকুই কিন্তু আপনি ইফেক্টিভলি বাদ দিয়ে দিচ্ছেন। এখন কার্বন ছাড়া আর থাকেটা কি? ওয়েল সিলিকন। সিলিকন দিয়ে কতো বড় পলিমার আপনি বানাতে পারেন? কতোটা কমপ্লেক্স হতে পারে সিলিকন কেমিস্ট্রি? অপরপক্ষে এই পর্যন্ত যতোশত যৌগ আমরা সংশ্লেষিত করেছি তার ৯৯%ই কার্বন বেইজড।
@আল্লাচালাইনা,
লাইফের সবচেয়ে ‘অক্সিওমেটিক্যালি স্টেবল’ যে সংজ্ঞাটা জানি,
কোনো এন্টিটি মাল্টীপ্লাই হতে পারলে, যে মাল্টিপ্লিকেশন ‘হেরিডিটারি’ নেচারের, এবং কপিইং ‘মিস্টেক’গুলো প্যারেন্ট থেকে চাইল্ডে প্রবাহিত হলে সেটা ‘জীব’।
এই বৈশিষ্ট্য ধারণকারী যে স্ট্রাকচার আমরা পৃথিবীতে দেখি সেটা কার্বন বেজড। কিন্তু এ বৈশিষ্ট্য ধারণকারী কিছু যে ‘অণু-পরমাণু’র এই কঠিন তরল বায়বীয় দশাতেই ইম্পলিমেণ্ট হতে হবে সেটা কেন ধরে নিচ্ছি? ‘এর বাইরেও’ বিপুল সম্ভাবনা রয়ে গিয়েছে। আমি মূলত সেদিকেই পয়েন্ট করতে চাচ্ছি।
@তানভীরুল ইসলাম, আপনি দেখছি পুরাই ভাসিয়ে দিলেন। দৃশ্যমান না হলেই যে সেখানে কোন অবজেক্ট নেই, তা নাও হতে পারে। পদার্থ, রয়ায়ন বা জীব, সব জায়গায় এইবার মানবীয় সীমানা বা সীমাবদ্ধতা ভেঙ্গে চিন্তা করতে হবে। এই কথা তো কত্ত আগে থেকেই ভাবতাম, কেবল ভাবনাটাই অবাস্তব লাগতো এতোদিন। এখন থেকে গোল্ডফিসের মত আরো অসংখ্য বাস্তবতার কথা চিন্তা করতে হবে।
মাথাটা ছোট্ট, এইটাই হল ঝালেমা। :-Y
মিডিয়ার দাবী নিয়ে বর্তমান বিজ্ঞান মহলে যথেষ্ট সমস্যা আছে ।প্রথমেই বলতে হয় যে, সায়েন্স ম্যাগাজিনে প্রকাশিত আলোচ্য রিসার্চ পেপার “A Bacterium That Can Grow by Using Arsenic Instead of Phosphorus ” – এ আসলে প্রানের সংজ্ঞা নিয়ে নতুন কিছু দাবী করা হয়নি। দেখা যাক তারা কি বলছেন :
এবার দেখা যাক তাঁরা আসলে কি পদ্ধতি গবেষণাটায় প্রয়োগ করেছেন। গবেষণাটির কেন্দ্রবিন্দু Halomonadacea গোত্রের GFAJ-1 নামের একটা extremophile ব্যকটেরিউম যা উচ্চক্ষারযুক্ত (pH ১০) ক্যালিফোর্নিয়ার মনো লেইক থেকে সংগ্রহ করা হয়। মোনো লেইকে আর্সেনিকের মাত্রা খুবই উচ্চ ২০০ µM। বলে রাখা ভালো যে, GFAJ-1 ব্যকটেরিউম এমনিতেই আর্সেনিক সহ্য করার ক্ষমতা রাখে যার মূল রহস্য এই গবেষণায় ব্যাখ্যা করা হয় নি।
এবার আসা যাক ফসফরাস (P) এবং আর্সেনিকের (As) মধ্যকার সম্পর্ক নিয়ে। আপনারা যারা কিছুটা সাধারণ রসায়ন জানেন , তারা জানেন যে , পিরিয়ডিক টেইবলে ফসফরাস (P) এবং আর্সেনিকের (As) অবস্থান খুবই কাছাকাছি । তাদের পারমানবিক সংখ্যা যথাক্রমে ১৫ এবং ৩৩ এবং অনেক রাসায়নিক বিক্রিয়ায় আর্সেনিক ফসফরাসের জায়গায় কাজ করতে পারে এবং আর্সেনিক ফসফরাসের মত পানিতে স্থিতিশীল নয়। নিচে দেখুন :
[img]http://img191.imageshack.us/img191/6913/screenshotasi.png[/img]
এ কারনেই আর্সেনিক বিষাক্ত বলে বিবেচিত যখন শরীর ভুলক্রমে ফসফরাসের জায়গায় আর্সেনিক নেই এবং যার ফলে Adenosine-5′-triphosphate (ATP) কে বাধাগ্রস্হ করে কোষে রাসায়নিক শক্তি সন্চয় বন্ধ করে দেয় যার ফলে কোষ মরে যায়।
গবেষকরা ল্যাবে GFAJ-1 নিয়ে এসে কৃত্রিম উপায়ে আর্সেনিকের পরিমান বারিয়ে ফসফেটের জায়গায় (PO43-) আরসেনেট (AsO43-) প্রতিস্থাপন করেন। দেখা গেল যে , এদের বৃদ্ধি অনেক ধীর এবং এদের আকারও বৃদ্ধি পেয়েছে যার কারণ কিছু তরলী পার্টিশন যা আর্সেনিকের অস্থিতিশীলতার বিরুদ্ধে ব্যবস্হা বলেই অনুমিত হয়।নতুন ব্যকটেরিউমের ডিএনএ দেয়ালের কিছু ফসফেট আর্সেনিক দ্বারা প্রতিস্থাপিত হয়েছে কিন্তু তারপরেও পুরোপুরি বিলীন হয় নি।
এতে এটাই প্রমানিত হয় যে , GFAJ-1 কৃত্রিমভাবে পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে adaptation এর সাহায্যে আর্সেনিক সহ্য করার ক্ষমতা রাখে যা এটাকে extremophile ব্যকটেরিউম হিসেবেই পরিচিত করে । এটার সাথে বিবর্তনের সম্পর্ক পরিস্কার নয় । মনো লেইক এমন কোন পুরোনো লেইক নয় এবং এর অবস্থান এই পৃথিবীতেই। গবেষকদের এই গবেষনা প্রকাশের আগে আরও কিছু গুরুত্বপূর্ন পরীক্ষা চালানোর প্রয়োজন ছিলো এরকম শোরগোল তোলার বদলে।
@সংশপ্তক,
চমৎকার ব্যাখ্যার জন্য ধন্যবাদ। পিরিয়ড লেভেলে ফসফরাস এবং আর্সেনিক একই কলামে হওয়াতেই কিন্তু ফসফরাসকে যে আর্সেনিক দ্বারা প্রতিস্থাপিত হতে পারে সেটার ধারণা মাথায় আসে বিজ্ঞানীদের। একই কথা প্রযোজ্য কার্বন এবং সিলিকনের জন্য। অর্থাৎ উপযুক্ত পরিবেশে কার্বনের অনুকে সিলিকনের দ্বারা প্রতিস্থাপিত করা সম্ভব। এখন এই বিষয়গুলো আমরা প্রথমিক রসায়নবিজ্ঞানের জ্ঞান হতে জানি। কিন্তু সেটা যে জীববিজ্ঞান বা ডিএনএ এর ক্ষেত্রেও সম্ভবপর হবে সেটা বিজ্ঞানীরা যাচাইয়ের উদ্দেশ্যেই আমার মনে এই গবেষণার লক্ষ্য ছিল। এখন তারা সেটাই দেখিয়েছেন যে সেটা সম্ভব এবং সেই নুতন প্রতিস্থাপিত ডিএনএ বংশবৃদ্ধি করছে। এটাকে আরেকটি চরমজীবি থেকে ভিন্ন ভাবেই দেখতে হবে। আগের চরমজীবিগুলো যদি একই ছয়টি উপাদানেই গঠিত থাকতো তবে তারা পুরোনো প্রাণই। কিন্তু এখানে যেহেতু একটি উপাদান প্রতিস্থাপিত হয়েছে সম্পূর্ণ ভিন্ন একটি উপাদান দিয়ে তাই এটাকে নুতন প্রাণই বলছে বিজ্ঞানীরা। অন্তত আমি সেরকমই বুঝেছি।
@স্বাধীন,
এটা কিন্তু এখন পর্যন্ত কোন বিজ্ঞানী বলেননি , এমনকি আলোচ্য গবেষকরাও। এই ব্যকটেরিউমের রাসায়নিক শক্তি পরিবহনের ফাংশন যে ফসফরাস ছাড়া কাজ করছিলো এবং করলে কিভাবে করছিলো তা কিন্তু গবেষনায় দেখানো হয়নি অর্থাং Adenosine-5′-triphosphate (ATP) এর কাজটা কে করছিলো ? ডিএনএ – তে ফসফরাসের অনু এমনি বসে থাকে না । থাকে কিছু কাজ করতে হয়। পরীক্ষায় এটা দেখানো হয় নি আর্সেনিক ডিএনএ তে ফসফেটের ভুমিকা পালন করছিলো কি না। এ ছাড়া ফসফেট পুরোপুরি ওখানে হাওয়া হয়ে যায়নি যা সংশ্লিষ্ট গবেষকরাও স্বীকার করেছেন। পরীক্ষায় এটাই দেখানো হয়েছে যে , একটা ব্যকটেরিউম ডিএনএ পার্টিশন করে আর্সেনিক সহ্য করতে পারে , মরে যাওয়ার বদলে। এর বেশী কিছু নয়।
@সংশপ্তক,
একটা মজার কার্টুন শেয়ার করার লোভ সামলাতে পারছি না। সূত্র http://www.smbc-comics.com/?db=comics&id=1623#comic
[img]http://www.smbc-comics.com/comics/20090830.gif[/img]
@তানভীরুল ইসলাম,
অনেকদিন পরে প্রান খুলে একটু হাসলাম।
@সংশপ্তক,
তার আগে ভাবি আমি কি করতাম? ২০০৬ সালে ইন্ডাস্ট্রিতে ঢুকে, ছয়টি গবেষণা প্রকাশ করে (যার মধ্যে চারটিই আস্ট্রোবায়োলজি, জিওবায়োলজির মতো চতুর্থ শ্রেণীর জার্নালে, ফার্স্ট অথার হিসেবে প্রকাশনা মাত্র দুটি), সাত-সাতটি সাইটেশন লাভ করতাম হু! (যেই সাইটেশনগুলোও কিনা এসেছে একই শ্রেণীর গবেষকদের একই শ্রেণীর জার্নালে প্রকাশিত প্রবন্ধ হতে) এবং চার বছর ক্যারিয়ারের মাথাতেই একটি লেখা প্রকাশ করিয়ে ফেলতাম সায়েন্সে, তাহলে সম্ভবত আমিও আরও গুরুত্বপূর্ণ কিছু গবেষণা চালানোর বদলে সোরগোল তুলতেই বেশী ব্যস্ত থাকতাম!
@আল্লাচালাইনা,
এর পাশাপাশি ট্যাক্স দাতাদের পয়সায় তাহিতিতে নিরামিষ পিকনিকে যেতাম।
@সংশপ্তক,
এইটা এক্কেবারে একটা কাজের কথা বলছেন :lotpot: :lotpot: । অবশ্যই নিরামিষ পিকনিকে যেতাম, এবং যেতাম র্যাক্সিনের জ্যাকেট পড়ে, বডিশপের পাউডার মেখে আর পামেলা এন্ডারসন ও বিল মারের মতো দুই একটা জার্কের কোলে চড়ে।
বেশ চিন্তা জাগানিয়া ব্যাপার।
স্বাধীন ভাইকে অনেক ধন্যবাদ ব্যাপারটি গোচরে আনার জন্য। :deadrose:
@সৈকত চৌধুরী, আপনার গোলাপতো দেখা যাচ্ছে হেলে পড়েছে 😀
@আল্লাচালাইনা,
মানে ফুলটা দিতে দেরী হওয়ায় এই অবস্থা। তবে আমাদের বাগানে যেহেতু সতেজ ফুলের কোনো অভাব নেই তাই আপনাকে :rose2: :rose2:
স্বাধীন ভাইকে :rose2: :rose2:
আপনাকে একটা মেইল করতে চাই, কিভাবে করব?
@সৈকত চৌধুরী, ব্যক্তিগত বার্তা চেক করুন।
ধন্যবাদ স্বাধীনকে এই বিষয়টা নিয়ে লেখার জন্যে। মুক্তমনায় বিজ্ঞানের নতুন কোনো অগ্রগতি জানার জন্যে অভি বা বন্যার আশায় বসে থাকার দিনের অবসান ঘটাতে হবে।
সত্যি সত্যি যদি এই মাইক্রোবগুলো সম্পূর্ণ ফসফরাসকে প্রতিস্থাপন করে থাকে আর্সেনিক দিয়ে, তবে এটা নিঃসন্দেহে দারুণ খবর। অকার্বন ভিত্তিক জীবনের যে ধারণাসমূহ রয়েছে সেগুলো আরো জোরদার হবে। হয়তো এই পৃথিবীতে নয়, কিন্তু মহাবিশ্বের অন্য কোনো প্রান্তে সেরকম কিছুর সম্ভাবনাকে উড়িয়ে দেওয়া যাবে না একেবারে। আর যদি হয় যে, শুধুমাত্র পরিবেশের কারণে এই মাইক্রোবগুলো বাধ্য হয়ে ফসফরাসের পরিবর্তে আর্সেনিককে ব্যবহার করেছে, তবে এটা চরমজীবির উদাহরণ হিসাবেই থেকে যাবে, জীবনের নতুন কোনো ভিত্তি হিসাবে নয়। তবে নাসা যেভাবে বলছে, তাতে মনে হচ্ছে প্রথমটাই সত্যি।
@ফরিদ আহমেদ,
একটি কল্পকাহিনীর রূপরেখা দেখতে পাচ্ছি। ভিনগ্রহের আর্সেনিক-ভিত্তিক এলিয়েনরা পৃথিবী আক্রমণ করেছে, তাদের গা থেকে অনবরত বিষাক্ত আর্সেনিক ধোঁয়া বেরিয়ে ধ্বংস করে দিচ্ছে সব। সারা পৃথিবীর সেনাবাহিনীগুলি যখন বিপর্যস্ত, তখন শেষ ভরসা হিসেবে উত্তর বাংলা থেকেই জন কনর ধরণের কোন আর্সেনিকীয় নেতার জন্ম, তার কোড নেইম হবে আর্সেনাল। অতঃপর….
মুক্তমনার কোন প্রতিভাবান গল্পকার এই কাহিনীকে ফেনিয়ে তুলতে পারলে কি চমৎকারই না হত। ভাবছি কে থাকতে পারে এরকম… :-/
@ফরিদ আহমেদ,
শুরু করে দিলাম। মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।
আর্সেনিক বেইসড বাংগালীর জন্ম দিয়ে আর্সেনিক সমস্যার সমাধান করে ফেললেই হয় এখন।
@রৌরব,
উত্তরবঙ্গে বাঙালি যে হারে প্রতিদিন আর্সেনিক গিলছে তাতে এই বিবর্তন হতে খুব বেশি সময় লাগবে না বলেই মনে হয়।
@ফরিদ আহমেদ, :laugh:
@রৌরব,
:lotpot: :lotpot: :lotpot: আপনার এতো হিউমার সেন্স সেটাতো জানা ছিলো না। আপনার রসবোধসম্পন্ন মন্তব্যের পেছনে একটা সিরিয়াস মন্তব্য করি, হঠাত মনে পড়লো বলে। মানব-সভ্যতার প্রথম আবিষ্কৃত ড্রাগ সালভার্সান ও নিওসালভার্সান http://en.wikipedia.org/wiki/Arsphenamine কিন্তু ছিলো আর্সেনিক ভিত্তিক কেননা আর্সেনিক নাইট্রোজেন মিমিক, উভয়েই গ্রুপ ৫ এর মৌল পর্যায় সারণীতে। এটা ছিলো সিফিলিস বিরোধী ঔষধ। এই যুগে আমাদের মনে হতে পারে এতোটা বিষাক্ত একটা অনুর পক্ষে কি করে ঔষধ হওয়া সম্ভব, কিন্তু হয়েছিলো সেই যুগে ১৯১৫ সালে। বলাই বাহুল্য এই যুগে এটি এখন আর বাজারে নেই, একটি আর্সেনিক কম্পাউন্ডের জন্য কেউ লাইসেন্স চাইতে আসলে বিষ্ময়ে রেগুলেটরি বডির আমলার চোখ কপাল থেকে নামতে লাগবে তিন দিন! তো এটা কিন্তু একটা চমতকার উদাহারণ কি করে ইভল ইভল কর্পোরেট ড্রাগ বেকায়দায় পড়ে মার্কেট থেকে উধাউ হয়ে যায়। আমার ছোটবেলায় মনে আছে ঢাকার রাস্তায় কাঠের গাড়ি চলতো, এই কাঠের গাড়িগুলো এখন কোথায়? I wonder :lotpot:
@আল্লাচালাইনা,
স্টুপিডের মত প্রশ্ন করব এখন একটা:
“কেননা” টা বুঝলাম না। নাইট্রোজেনের সাথে এই সারণীতে থাকায় কি সুবিধা?
@রৌরব, গ্রাউন্ড অক্সিডেশন স্টেইটে দুইজনেরই যোজনী ৩।
আর তিনটা ইলেক্ট্রন শেয়ার করতে পারলেই ভ্যালেন্স শেলে ৮টি ইলেক্ট্রন হবে। নিষ্ক্রিয় গ্যাসের কনফিগারেশনে পৌছবে তখন।
আপনার লেখাটা ভালো হয়েছে ,
through the wormhole নামে একটি documentary রয়েছে ওই documentary এর ৮ টি খন্ড আছে তার মাঝে ৫ম খন্ডে আপনি আপনার আলোচিত বিষয়টি সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পারবেন…
লেখাটা বেশী ছোট হয়ে যাওয়াতে পুরো মজাটা উসুল করা গেল না। তারপরও লেখককে ধন্যবাদ। তবে জীবনের সংজ্ঞা পাল্টে যাওয়ার প্রসংঙ্গ যখন এসেছে তখন প্রথমেই জীবনের প্রচলিত সংজ্ঞাটা কি আছে সেটা উল্লেখ করা জরুরী ছিল। তারপর বোঝা যেতো আসলেই আর্সেনিক ভিত্তিক জীবকনা গঠনের ফলে জীবনের সংজ্ঞাতে ত্রুটি কি ছিল।অথবা বোঝা যাবে নতুন সংজ্ঞাতে কি বিষয় অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। এটা খুবই সম্ভব যে কার্বন বা ফসফরাস ভিত্তিক জীবকনা এর পরিবর্তে ভিন্ন গ্রহ সিস্টেমে কার্বন বা ফসফরাস সদৃশ অন্য মৌলিক পদার্থ ভিত্তিক জীবকনা সৃষ্টির সমূহ সম্ভাবনা রয়েছে। কার্বন বা ফসফরাসের সাথে অন্য কোন্ মৌলের রাসায়নিক ক্রিয়াগত সাদৃশ্য বিদ্যমান সেটা ভাল মতো জানা গেলে জীবন সৃষ্টি বিষয়ক এ গবেষণা আরও বেগবান হবে।
:yes:
:coffee:
ধন্যবাদ ভাইয়া, এই লেখাটার জন্য। :rose2:
আপনার লেখা গুলো একটু বেশী ছোট ছোট লাগে। আরেকটু গভীরে গিয়ে, আরেকটু বড় করে লিখলে আসলেই খুশি হতাম। আপনার মোটামুটি সব লেখাতেই সোর্স বা লিঙ্ক দেয়া থাকে ঠিক। আরেকটু বেশী জানতে চাইলে সেখানে গিয়ে পড়ে আসা যায়। কিন্তু সমস্যাটা মনে হয় অন্য জায়গায়। আমরা যারা লিখছি, মোটামুটি সবাই অন্য কোন জায়গা থেকে পড়েই। তারপরেও লিখছি আমরা আমাদের মত করে এবং সেটা বাংলায়। একটা সায়েন্টিফিক আর্টিকেল বাংলায় পড়া যে আমাদের জন্য কতটা আনন্দদায়ক একটা ব্যাপার! তাই বাংলাতেই আরেকটু গভীর করে পড়ব বলে আশা জাগে। আপনার সব লেখাই পড়ি, ভালো লাগে, আপনি ইন্টারেস্টিং বিষয়গুলোকে তুলে আনছেন। আনছেন বলেই হয়ত প্রত্যাশাও বেড়ে গেছে। আর বন্যাপু বা অভিজিৎ দা লিখবে বলে অপেক্ষা করার কিছুই নেই। বন্যা আহমেদ, অভিজিৎ রায়, স্বাধীন সবাই ব্লগার। কেবল তাদের লেখার স্টাইল, আগ্রহের বিষয় এবং গভীরতায় নিজের মত করে ভিন্নতা আছে। 🙂
@নীল রোদ্দুর,
ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য। আসলে সময় একটি বড় সমস্যা। বিষয়টির গভীরে যাওয়ার জন্য যে আরো দু’একটি প্রবন্ধ ঘাটতে হবে সে সময়টা বের করা কষ্টকর। সংসার, নিজের গবেষণার ফাঁকে লেখার জন্যেই সময় বের করা হয়ে উঠেনা। সেই সাথে বাড়তি পড়ার জন্য সময় একেবারেই পাইনা। এই সমস্যা সবারই কম বেশি আছে জানি। এ কারণেই লেখাগুলো ছোট হয়। আমার লেখার মূল প্রেরণা শুধু বিষয়গুলো উপাস্থপনের জন্য। খুব ইচ্ছে হয় যে পুরো অনুবাদ করি, কিন্তু সে সময় কোনদিন পাবো কিনা জানি না। এটুকু বিশ্বাস করি নিজের সামর্থ্য ও সূযোগের মধ্যে যতটুকু করা সম্ভব ততটুকু করার চেষ্টা করছি। মন্তব্যের জন্য আবারো ধন্যবাদ।
:yes:
ছোট্ট একটা প্রশ্ন। আর্সেনিক ভিক্তিক মাইক্রোবগুলো বিজ্ঞানীরা গবেষণাগারে ফসফরাস থেকে আলাদা করার আগে থেকেই কি আর্সেনিক ভিক্তিক ছিলো নাকি গবেষণাগারে ফসফরাস থেকে আলাদা করার পর মিউটেশনের ফলে পুরোপরি আর্সেনিক ভিত্তিক হয়েছে?
একটা মানুষের দেহ তৈরী করতে যে পরিমাণ রাসায়নিক উপাদান দরকার হয় তা খোলা বাজারে কিনতে গেলে ১৮০ ডলারের মত খরচ হবে। 😀
আর বাংলাদেশে নিশ্চয়ই আরও সস্তায় কেনা যাবে। তাই ভাবছি এখন থেকেই বাংলাদেশে আউট সোর্সিংয়ের লাইসেন্সটা নিয়ে রাখব নাকি!!! 🙂
@হোরাস,
জ্বীন তৈরীতে পার হেড কত খরচ লাগবে?
@আদিল মাহমুদ,
জ্বীন তৈরীতে কত খরচ হবে , সেটা জানার আগে জ্বীন তৈরীর মাল মশলাগুলো কি সেটা আগে জানা দরকার। জ্বীন কি কার্বন বেইজড, নাকি ফসফরাস বেইজ ? নাকি শূন্য বেইজড?
@হোরাস,
এটি একটি ভালো প্রশ্ন করেছেন। না মাইক্রোবগুলো আর্সেনিক ভিক্তিক ছিল না, কিংবা কৃত্রিম ভাবে ডিনএ হতে ফসফরাসকে সরিয়ে নেয়নি। যেটি করেছে যে পরিবেশে রাখা হয়েছিল সেখানে ফসফরাসের পরিমান শূণ্য করে দেওয়া হয়েছে। এমন পরিবেশে মাইক্রোবগুলো মারা যাবার কথা ছিল। কিন্তু মূলত এডাপ্টেশান হতে মাইক্রোবগুলোর ডিএনএ তে ফসফরাস আর্সেনিক দ্বারা প্রতিস্থাপিত হয়, সেটা হবে বিজ্ঞানীরা ধারণা করেছিল, কিন্তু তারা যে জীবিত থাকবে এবং বংশবৃদ্ধি করবে সেটা আশা করেনি। এটাই নুতনত্ব। আশা করি আমি ভুল ব্যাখ্যা দিচ্ছি না।
আগের প্রাণের সংজ্ঞাটা কি ছিল? তার সাথে এখনকার প্রাণের সংজ্ঞার পার্থক্যটা কি?
nature doesn’t evolve around …………..
@মিথুন,
আগে প্রাণের সংজ্ঞা ছিলো একটা মেমব্রেইন লাগবে (মোটামুটি নিয়ন্ত্রিত ক্লোজড সিস্টেম হতে হবে), মেটাবলিজম লাগবে বা খাদ্য গ্রহন করে শক্তি ও বর্জ্য উতপাদন করতে পারতে হবে, এবং জেনেটিক্স লাগবে বা তথ্য ধারণ ও ধারণকৃত তথ্য রেপ্লিকেট করতে পারতে হবে। নতুন সংজ্ঞায় সম্ভবত এই তিনটা না থাকলেও চলবে। আমার আইডিয়া। 🙂
দারুন একটি আবিস্কার নিয়ে দারুন একটি লিখার জন্য অনেক ধন্যবাদ. ভিডিও লিঙ্কটি খুবই কাজের. সুন্দরভাবে ব্যাখ্যা করেছেন নাসা’র বিজ্ঞানীরা…
কৌতূহলোদ্দীপক তথ্য :-/ এদের ডিএনএ সম্পর্কে আরও বিস্তারিত তথ্য কি কোথাও পাওয়া যেতে পারে?
@পৃথিবী,
ভিডিওটা দেখতে পারো, সেখানে ছবি/এনিমেশন সহকারে কিছু বিবরণ রয়েছে।
খুবই ভাল সংবাদ! :yes:
কাটিং এজ বিষয়টি নিয়ে লেখার জন্য অনেক ধন্যবাদ।
আমার মনে পড়ছে, প্রাণের উৎপত্তি নিয়ে বছর খানেক আগে ফরিদ ভাই আর আমি ‘মহাবিশ্বে প্রাণ ও বুদ্ধিমত্তার খোঁজে’ নামে যে বইটি লিখছিলাম তাতে বেশ কিছু চরমজীবীর উদাহরণ হাজির করেছিলাম। যেমন, জীববিজ্ঞানী টমাস ব্রক এবং তার সহকর্মীরা ওয়াইওমিং এর ইয়েলোস্টোন ন্যাশনাল পার্কের ১৬০ ডিগ্রি ফারেনহাইট বা ৭০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রার উষ্ণ প্রস্রবনে এক ধরনের সরলাকৃতির অণুজীব আবিষ্কার করেছিলেন। বেশীর ভাগ জটিল কোষী প্রাণীই এই তাপমাত্রায় টিকে থাকতে পারে না। যে সমস্ত ‘প্রাণ’ এই ধরনের ভয়ংকর বৈরি পরিবেশে টিকে থাকতে পারে তাদেরকে বলা হয় চরমজীবী (Extremophile)। পৃথিবীতে বেশ কয়েক ডজন চরমজীবীর অস্তিত্ব রয়েছে। কিছু কিছু চরমজীবী আছে যারা পৃথিবীর যে কোন পরিবেশে টিকে থাকতে সক্ষম। জীববিজ্ঞানীরা এন্টার্কটিকার লেক ভোস্টক এবং সাইবেরিয়ার জমাট বরফের মধ্যেও অণুজীব খুঁজে পেয়েছেন। কিছু অণুজীব আবার স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি এসিডিক বা বেশি ক্ষারীয় পরিবেশেও টিকে থাকতে পারে। অতিরিক্ত লবনাক্ততা যে কোন প্রাণীর জন্যেই ক্ষতিকর, অথচ কিছু অণুজীব আছে যারা তেল খনির বা লবনের খনির মধ্যেও বসবাস করে। চিলির আটাকামা মরুভমি যেখানে গত ১০০ বছরেও বৃষ্টি হয়নি সেখানেও বহাল তবিয়তে বেঁচে বর্তে আছে কিছু কিছু অণুজীব। কাজেই আর্সেনিকের ভিতর প্রাণের বিকাশে আমি খুব একটা অবাক হইনি। তবে এটি যদি সত্যি হয়ে থাকে যে, মাইক্রোবগুলোর প্রাণের গঠন সম্পূর্ণ আর্সেনিক ভিক্তিক এবং মাইক্রোবগুলোর ডিএনএ তে ফসফরাসের বদলে এখন আর্সেনিক যুক্ত হয়েছে, তবে এটা নতুন ঘটনাই।
আমরা আমাদের বইয়ে ভিন্ন ধরণের প্রাণ সৃষ্টির সম্ভাবনাও গোনায় রেখেছিলাম এই বলে –
আমরা সম্ভবতঃ ক্রমশঃ প্রাণের সেই বৃহৎ পরিসরের সংজ্ঞায় ফিরে যেতে চলেছি।
স্বাধীনকে ধন্যবাদ এই চমৎকার বিষয়টি নিয়ে লিখবার জন্য।
@অভিজিৎ,
জ্বি, এ কারণেই বিজ্ঞানীরা এত উচ্ছাসিত এই গবেষণা হতে প্রাপ্ত ফলাফলে। যে ভিডিওটা দিয়েছি সেটাতে এই গবেষণার লিড বিজ্ঞানীর চমকপ্রদ লেকচার রয়েছে। সেখানে একটি এনিমেশনও রয়েছে কিভাবে এই ফসফরাস গুলোকে আর্সেনিক গুলো প্রতিস্থাপিত করে নুতন ডিনএ তৈরী করছে।
@অভিজিৎ,
চরমজীবির সাথে এই আবিস্কারকে গোলালে মুশকিল আছে।
চরমজীবির ব্যাপারটা এতদিন ছিল এই রকম-মোটা মুটি যেহেতু প্রজনন পক্রিয়াতে ১-১০ মিলিয়ান মিউটেশন হতে পারে, চরম পরিবেশের জন্যে স্থিতিশীল এবং নির্বাচিত মিউটেশনগুলো টিকে যেত। এটা বিবর্তনের ধারাপাত থেকেই আসে-কোন এক্সটেনশ না। ডি এন এর মৌলগুলির গঠন বদলাচ্ছে না-সেই ফসফরাসই থাকছে।
এই আবিস্কারটা তার থেকেও অনেক মৌলিক। প্রশ্ন হচ্ছে এই ক্ষেত্রে সুইটেবল মিউটেশন গুলো আসছে কি করে কারন বেস এলিমেন্টই বদলে গেছে। আমি এটা বোঝার চেষ্টা করছিলাম-এখনো কোন পেপার পায় নি।
চরমজীবিগুলো, ফসফরাস কার্বন অক্সিজনে আর হাইড্রোজেনের নানান কম্বিনেশন থেকে আসতেই পারে-সেটাই বিবর্তন। কিন্ত কিভাবে হতে পারে নতুন মিউটেশন যাতে ফসফরাসই প্রতিস্থাপিত হয়ে গেল???
@বিপ্লব পাল,
চরমজীবীর সাথে গোলাইনি। কিন্তু দাবীকৃত ব্যবাপারটি ঠিক কতটুকু মৌলিক, তা নিয়ে আমার দ্বিধা কাটেনি। তুমি চরমজীবিকে উড়িয়ে দিতে চাইলেও এই গবেষণার কেন্দ্রবিন্দু Halomonadacea গোত্রের একটা চরমজীবী ব্যাকটেরিয়াই ছিলো যা উচ্চ আর্সেনিক আধিক্যবিশিষ্ট ক্যালিফোর্নিয়ার মনো হ্রদ থেকে সংগ্রহ করা হয়েছিল। আর আর্সেনিক দিয়ে পুরোপুরিভাবে প্রতিস্থাপন করা গেছে – এই দাবীও সম্ভবতঃ সঠিক নয়। ঘুরে ফিরে এটা সেই চরমজীবীই, যা অধিক আর্সেনিক সহ্য করার ক্ষমতা রাখে। নীচে সংশপ্তকের মন্তব্য দেখলেও ব্যাপারটা পরিস্কার হবে।
@অভিজিৎ,
এটা কেন বলছেন ব্যাখ্যা করতে পারেন কি? ভিডিওতে স্পষ্টতই বিজ্ঞানীরা দেখিয়েছেন কিভাবে ডিএনএতে আর্সেনিক ফসফরাসকে প্রতিস্থাপিত করছে, তারপরেও এরকম সন্দেহ কি যুক্তি সঙ্গত? চরমজীবির সাথে পার্থক্য যে এটাতে নুতন ছয়টি উপাদান রয়েছে, যেখানে চরমজীবিগুলো ফসফরস ভিক্তিকই ছিল। আপনার ধারণার পেছনের চিন্তাগুলো যদি একটি খোলাসা করতেন তবে আমরা হয়তো কিছু ধারণা পেতাম।
@স্বাধীন,
হ্যা ভিডিও দেখেছি, কিন্তু আমি ভিডিও দেখেই সিদ্ধান্তে আসতে রাজী নই এই মূহূর্তে। কিছু ক্রিটিকাল সমস্যা রয়ে গেছে, এটিপির ব্যাপারটা একটা। এটিপির কাজ আর্সেনিক দিয়ে করা সম্ভব না। ওটা কি করে সম্ভব হল জানা চাই। এ ছাড়া আরো একটি ব্যাপার চিন্তা করুন। আর্সেনিক খুবই পুরাতন মৌল। আদিতে প্রাণের উন্মেষের সময় থেকেই আর্সেনিক ছিল। আদি পৃথিবীতে বিষাক্ত আর্সেনিককে কাজে লাগিয়ে প্রাণের উন্মেষ ঘটে থাকলে পরে সেটা কীভাবে বদলে গেল? কেনই বা জীবজগতের বিবর্তন আর্সেনিককে বাদ দিয়ে ঘটল? বুঝলাম কৃত্রিমভাবে ফসফরাস সরিয়ে (পুরোপুরি সরানো হয়েছে কিনা আমি নিশ্চিত নই, তারপরেও তর্কের খাতিরে ধরে নিচ্ছি এ মূহূর্তে) আর্সেনিক যোগ করায় ব্যাকটেরিয়াটি মরেনি, কিন্তু ‘প্রাণের সংজ্ঞা বদলে দেবার জন্য’ যথেষ্ট কোন কিছু কি? আমি নিশ্চিত নই। আমাদের এখনই কোন সিদ্ধান্তে না এসে আসলে পরবর্তী গবেষণার দিকে তাকিয়ে থাকতে হবে। দেখি কোথাকার জল কোথায় গড়ায় … 🙂
@বিপ্লব পাল,
এই হচ্ছে তার পেপারের এবস্ট্রাক্ট
Abstract
Life is mostly composed of the elements carbon, hydrogen, nitrogen, oxygen, sulfur, and phosphorus. Although these six elements make up nucleic acids, proteins, and lipids and thus the bulk of living matter, it is theoretically possible that some other elements in the periodic table could serve the same functions. Here, we describe a bacterium, strain GFAJ-1 of the Halomonadaceae, isolated from Mono Lake, California, which substitutes arsenic for phosphorus to sustain its growth. Our data show evidence for arsenate in macromolecules that normally contain phosphate, most notably nucleic acids and proteins. Exchange of one of the major bioelements may have profound evolutionary and geochemical significance.
এই ভিডিওটা দেখতে পারেন আগ্রহীরা।
httpv://www.youtube.com/watch?v=YFO21VxfdEg&feature=related