ডেনিয়েল ডেনেটের Breaking the spell বইটা পড়ে Lancet liver fluke পরজীবির কথা জানতে পারি যেটার কথা আমার এলোমেলো চিন্তাঃ বিবর্তনময় জীবন এই লেখাটিতে উল্লেখ করেছিলাম। এই পরজীবি তার জৈবিক চক্রের একটি ধাপে যখন পিঁপড়ের মাঝে বংশবৃদ্ধি করে তখন এক পর্যায়ে পিঁপড়ের মস্তিষ্কের দখল নিয়ে ফেলে এবং পিঁপড়েটিকে এক প্রকার সুখানুভুতি প্রদানের মাধ্যমে বাধ্য করে পরজীবিটির নিজ উদ্দেশ্য সাধনে কাজ করার জন্য। ডেনেট মানুষের বিশ্বাস ব্যবস্থাকে সেরকম কিছু পরজীবির সাথে তুলনা করেছেন। মানুষ নিজের বিশ্বাসকে রক্ষার্থে নিজের জীবন পর্যন্ত দিতে পারে, টুইন টাওয়ারে বিমান নিয়ে ঝাপিয়ে পড়তে পারে।
কিন্তু বিশ্বাস একটি এবস্ট্রাক্ট কিছু। তাহলে বিশ্বাস কিভাবে মানুষকে উদ্বুদ্ধ করে আত্মহননের মত কাজে। নিশ্চয়ই মানুষের মস্তিষ্কেও সেরকম কোন একটি পোকার অবস্থান রয়েছে যেটি উক্ত কাজ করার জন্য উদ্বুদ্ধ করে। হয়তো সেই পোকাও আমাদেরকে এক প্রকার সুখানুভুতি প্রদান করে। যে কারণে কোন কাজ করলে ভাল লাগে, অথবা কোন কাজ করতে ইচ্ছে করে না। নিজের মাঝে এই পোকার অবস্থান সব সময় টের পাই। এই পোকাই বাধ্য করে নিজের আসল গবেষণা ফেলে বনের মোষ তাড়ানোর গবেষণা করতে, ব্লগে লেখা দিতে। এই পোকাই বাধ্য করে সমাজ, বিশ্ব জগৎ ইত্যাদী নিয়ে চিন্তা করতে। আমার বিশ্বাস এ রকম পোকার অস্তিত্ব কম বেশি সবার মাঝেই রয়েছে।
বহুদিন পোকাটির অস্তিত্বটি টের পেলেও, তার পরিচয় জানার সুযোগ হয়নি। সম্প্রতি পোকাটির নাম জানতে পারলাম। এর নাম নাকি ডোপামিন (উচ্চারণটি কি ডোপামাইন হবে?) মস্তিষ্কের বিভিন্ন অংশে এই ডোপামিনের তারতম্যের ফলেই নাকি মানুষের চরিত্র, ব্যক্তিত্ব, বুদ্ধিমত্তা, চেতনা, অনুভূতি, কার্মদক্ষতা , কর্মস্পৃহা ইত্যাদীর তারতম্য দেখা যায়। এই ডোপামিনের অভাবেই পারকিনসসের মত রোগ হয় যার এক মাত্র চিকিৎসা হচ্ছে ডোপামিন সাপ্লিমেন্ট দেওয়া। আবার এর অত্যাধিকতার জন্য অটিজম, সিজ্রোফেনিয়া, হাইপার একটিভিটি, ম্যানিয়া এর মত মানসিক রোগগুলো দেখা যায়। এর প্রভাবেই নাকি মানুষের মাঝে অত্যাধিক বুদ্ধিমত্তা কিংবা ধর্ম/বিশ্ব নিয়ে বেশি চিন্তা করার প্রবনতা, তীব্র প্রতিযোগিতা মনোভাবাপন্নতা দেখা যায়। এর আধিক্যের ফলে অতিপ্রাকৃতিক অনুভূতি লাভ হয়, যার ফলে স্বর্গ/নরক কিংবা ঈশ্বরের দেখা পাওয়ার মত অনুভূতি হতে পারে। এরই ফলে মানুষের মাঝে দূর ভবিষ্যৎ কিংবা মহা বিশ্বের মত বৃহৎ আকার নিয়ে চিন্তা করার ক্ষমতা হয়। আজ পর্যন্ত যত সমর নায়ক, ধর্ম অবতার, কিংবা দার্শনিক, বিজ্ঞানী এসেছেন তাঁদের মাঝে এই ডোপামিনের আধিক্য ছিল বলে ধারনা করা হয়।
এটি মানুষের সকল কর্মস্পৃহার মূলে। এটি কাজ করে পূরষ্কারের ভিক্তিতে। অর্থাৎ কোন কাজ ভাল লাগলে পুরষ্কার হিসেবে মস্তিষ্কে এই বস্তু কিছুটা নিঃসৃত হলে আপনার মনে এক ধরণের ভাল লাগা অনুভুত হবে যার ফলে আপনি আবার সেই কাজটি করার জন্য উদ্বুদ্ধ হবেন। কোন ভাল খাবার খেলে বা সেক্সের ফলে, বা কোন ভাল কাজের ফলে এই বস্তুর নিঃসরণ ঘটে যার কারণে আমরা তৃপ্তিলাভ করি। একই রকমের অনুভুতি কোকেন বা উদ্দিপক নানান ড্রাগের মাধ্যমেও পাওয়া যায়। শুধু ভাল কাজেই যে তা নয়, আক্রমনাত্মক কাজেও এই বস্তুর নিঃসরণ যুক্ত। মোটকথা এই বস্তুই আমাদের মাথার সেই পোকা যে কিনা আমাদেরকে তার পথে চালায়।
মানুষের আজকের এই আধুনিক বুদ্ধিমত্তার মানুষ হয়ে উঠার পেছনেও নাকি মস্তিষ্কের আকারের তুলনায় এই ডোপামিনের প্রভাবই বেশি বলে এক পক্ষের ধারনা। আমি নিশ্চিত এই লেখাটি আমাদের সেই “নেচার ভার্সেস নেচার” বিতর্ককে আবার উসকে দিবে। এই পক্ষের ধারনা যে মানুষের মস্তিষ্কের আকার বৃদ্ধি হলেও মানুষের বুদ্ধিমত্তা সেভাবে বাড়েনি বরং ২ লক্ষ বছর আগে আধুনিক মানুষের উৎপত্তি হলেও তখনকার তুলনায় মানুষের মস্তিষ্কের আকার বেশি পরিবর্তন হয়নি, বরং কিছুটা কমেছে। কিন্তু আমরা দেখি যে জেনেটিকালি খুব বেশি পরিবর্তন না হলেও মানুষের বুদ্ধিমত্তার বেশ উন্নতি হয় এবং সেই উন্নতির পেছনে এই ডোপামিনের অবদানকেই ধরা হচ্ছে। আধুনিক মানুষের আগেও আমাদের যে পূর্বপুরুষেরা ছিল তাঁদের মাঝেও এই ডোপামিন ছিল কিন্তু তার পরিমান আজকের মানুষদের তুলনায় প্রায় অর্ধেক ছিল। এই পক্ষের ধারনা মানুষের আদি পূর্বপুরষদের মস্তিষ্কে ডোপামিনের যাত্রা শুরু হয় মূলত মাংসাশী প্রাণী হিসেবে আত্মপ্রকাশ করার পর থেকে এবং গায়ের লোম কমা শুরুর পর থেকে। ডোপামিন মানুষের দেহ হতে তাপ দ্রুত কমাতে সাহায্য করে। তাই গায়ের লোম কমার পাশাপাশি সে সময় ডোপামিনের পরিমানও বৃদ্ধি পায়। কিন্তু শুধু মাংসাশী প্রাণী এবং তাপ ঝরানোর কারণেই ডোপামিনের পরিমান অনেক বেশি হয়ে যায় না। তাই পরবর্তী ১০০,০০০ বছরে মানুষের বুদ্ধিমত্তায় তেমন বৈপ্লবিক পরিবর্তন লক্ষ্য করা যায় না। সেই সময়কার তাঁদের ব্যবহৃত যন্ত্রপাতি সেই ধারনাই দেয়।
প্রায় ১৫০,০০০ থেকে ১০০,০০০ হাজার বছরের দিকে কিছু আধুনিক মানুষ পূর্ব আফ্রিকা হতে দক্ষিণের দিকে মাইগ্রেট করে এবং এই সময় সমুদ্র উপকূলের কাছাকাছি থাকার কারণে এবং বড় বড় মাংসাশী প্রাণীর অভাবের কারণে তাঁদের খাদ্যাভাসে সামুদ্রিক প্রাণী/মাছ নিয়ে আসে। সামুদ্রিক মাছ খাদ্য তালিকায় প্রবেশের কারণে তাঁদের শরীরে আয়োডিনের পরিমান বৃদ্ধি পায়। এই আয়োডিনের ফলে, থাইরয়েড প্রন্থির প্রভাবে সেই মানুষের মাঝে ডোপামিনের মাত্রা আরেক দফা বৃদ্ধি পায়। যার কারণে এই সময়কার মানুষের পাথরের যন্ত্রপাতিগুলো উন্নত হয়। যন্ত্রপাতিগুলো আগের চেয়ে ধারালো, এবং কার্যকর হয়। এই সময় মানুষের মাঝে বিভিন্ন সংস্কৃতি, আর্ট এগুলোও দেখা যায়। কিন্তু শুধু্মাত্র মাংসভোজ কিংবা আয়োডিনের প্রভাবেই আজকের এই ডোপামিনের সভ্যতা নয়।
এই সময়টাতেও মানুষ মূলত শিকারী এবং সংগ্রাহক হিসেবে জীবিকা নির্বাহ করতো। মানুষ তখনো পুরোপুরি কৃষিনির্ভর হয়ে উঠেনি, যে কারণে তখনো জনসংখ্যার পরিমান বেশি হয়নি এবং এর ঘনত্ব অনেক কম ছিল। নিজেদের মধ্যে প্রতিযোগিতা সেভাবে প্রবল হয়ে দেখা দেয়নি। কিন্তু প্রায় ৮০০০ বছর আগে এই শিকারী গোত্রের বেশির ভাগ মানুষই পাকাপাকি ভাবে কৃষিকাজ শুরু করে এবং যার ফলে সমাজের চরিত্র দ্রুত বদলাতে থাকে। জনসংখ্যার বিষ্ফোরণ ঘটে, জনসংখ্যার ঘনত্ব বৃদ্ধি পায়, বৃহৎ আকারে সমাজ, রাষ্ট্রের মত সংস্থা তৈরী হয়। মানুষের মাঝে প্রতিযোগিতা বৃদ্ধি পায়। এই চরম প্রতিযোগিতাই মানুষের মাঝে ডোপামিনের পরিমান বৃদ্ধি করে এবং যার ফলে আমরা আজকের এই ডোপামিনিক সভ্যতা দেখতে পাচ্ছি।
ডোপামিনের বৃদ্ধির ফলে মানুষের মাঝে চরম প্রতিযোগিতা মনোভাব লক্ষ্য করা যায়। লেখকের মতে আমরা এখন হাইপার ডোপামিনিক সময়ের মাঝে আছি। এর শুরু হয়েছে ইন্ড্রাসটিয়াল রেভুলেশানর পর থেকে বা আরো সুনির্দিষ্ট করে বললে সর্বক্ষেত্রে প্রযুক্তির ব্যবহার শুরুর পর থেকে। মানুষ এখন আগেরকার যে কোন সময়ের তুলনায় বেঁচে থাকার জন্য সর্বোচ্চ প্রতিযোগীতার মধ্যে দিয়ে যায়। লেখক এই পর্যায়ে এসে অনেকটা দার্শনিক হয়ে যান। তিনি কামনা করেন এই হাইপার ডোপামিনিক সভ্যতা হতে রিভার্স প্রক্রিয়ায় আমরা আরেকটু কম ডোপামিন মাত্রার সভ্যতায় যেতে পারি কিনা সেই প্রশ্ন রেখে। ডোপামিন নিয়ে গবেষণা এখনো শুরুর দিকে। আশা করা যায় ভবিষ্যতে এই বস্তুর প্রভাব আরো ভাল করে বুঝা যাবে। বুঝা যাচ্ছে এর মাধ্যমেই মস্তিষ্কের আচরণকে আরো ভাল করে জানা সম্ভব হবে।
নোটঃ এই লেখাটি Fred H. Previc এর The Dopaminergic Mind in Human Evolution and History বই অবলম্বনে লেখা হয়েছে। আরো বিস্তারিত জানতে চাইলে আগ্রহীদেরকে উক্ত বইটি পড়ে দেখতে বলবো। সময়ের অভাবে পুরো বইটি অনুবাদ করা অসম্ভব আমার পক্ষে। এই লেখাটিকে সারমর্ম হিসেবে নেওয়া যেতে পারে। তারপরেও মনে করি লেখাটি আরো ভাল হতে পারতো। আরো কিছু বিষয়ে বিস্তারিত লেখা যেতে পারতো। কিছু ছবি যুক্ত করা যেতে পারতো। কিন্তু সেগুলো সব করতে গেলে হয়তো লেখাটিই আর আত্মপ্রকাশ করতো না। কিন্তু আমার মনে হয়েছে গুরুত্বপূর্ণ এই বিষয়টি নিয়ে অন্তত কিছু হলেও লেখা উচিৎ মুক্তমনার পাঠক/লেখকদের জন্য। আমি মনে করি মানব মস্তিষ্কের আচরণ সুনির্দিষ্ট ভাবে বুঝার মাঝেই নীহিত রয়েছে মানব সভ্যতার ভবিষ্যত। সবশেষে মুক্তমনা ও সচলায়তনের সদস্য সিরাতকে বিশেষ ধন্যবাদ জানাই বইটির খোঁজ দেওয়ার জন্য। সিরাতের এই লেখাটির মাধ্যমেই প্রথম বইটির কথা জানতে পারি।
স্বাধীন ভাই জিন্দাবাদ! 🙂
@মনওয়ার হোসেন (সিরাত),
তোমাকে আবারো ধন্যবাদ বইটার খোঁজ দেওয়ার জন্য।
ভাল লাগল। চমৎকার একটা বিষয় জানলাম।
চিন্তা করার মতো ও বটে। কিন্তু আমার মতে জেনে রাখা ভালো যে, মনস্তত্বের দিকে ও আমাদের খেয়াল রাখা উচিত। পরিবেশ -সামাজব্যবস্থা কিংবা জিওগ্রাফিক্যাল যে প্রভাব আমাদের দৈনন্দিক জীবনে অবচেতন মনে আসর বেধেঁ যাচ্ছে, যাতে করে সুচিন্তিত মতামতের মধ্যেও আমরা দ্বিধাদন্ডে থাকি। এসব অনেকটা নির্ভর করে বেড়ে উঠা পরিবেশের ভিত্তিতে। অবচেতনভাবে যা আমাদেরকে এক অভ্যাসে দাঁড় করিয়ে যায়, যার থেকে বেড়িয়ে আসা প্রায়ই অসম্ভব ও বটে। মানসিক চিন্তা-চেতনার উপর ভিত্তি করে কিন্তু আমাদের শারিরীক কোষগুলো স্বাভাবিক কিংবা অস্বাভাবিক আকারে গতিবিধি ধারণ করে থাকে। যারপ্রভাব নিউরনের উপর ও পড়ে। মানুষ মনগত যে সমস্তরোগে ভোগেণ, মূলতঃ অতিমাত্রায় আকাংখাজনিত কারণে। কোনোকিছু পাওয়ার আকাংখা যখন তীব্র আকার ধারণ করে তখনিই মানুষের মস্তিত্বের বিকৃত ঘটে। আসতে আসতে সবকিছু জানতে চেষ্টা করছি।
ধন্যবাদ আপনাকে -বইটি পড়ে নেবো নে।
চমৎকার লেখা, কিন্তু বিরাট ছুডু। আগে বইটা পড়ে নেই, তারপরে চিন্তা করব। বেশ ঘোলাটে লাগছে। :-/
ধন্যবাদ স্বাধীন ভাইকে নতুন একটা বিষয় নিয়ে লেখার জন্য।
ভালো লিখেছেন। ডোপামিন কি আসলে আনন্দের কাজ করার সময় নিঃসরণ হয় নাকি আনন্দের anticipation এর সময় নিঃসরণ হয়?
আরেকটি ব্যাপার, বাঘ যখন হরিণ শিকার করে, তখনও কি তার ভেতরে ডোপামিন নিঃসরণ ঘটে তাকে শিকারে মোটিভেট করার জন্য?
এই ডোপামিন-এর ব্যাপারটার সরাসরি এনালজি আছে আমাদের গণনা মডেলে: ওটাকে রিওয়ার্ড বলি আমরা। এখানে কিছুটা পাওয়া যেতে পারে।
আমার জীবনের অর্থ লেখার পুলক-বর্ধন সেকশানে কিছুটা বলেছিলাম এই নিয়ে।
@ধ্রুব,
লাইব্রেরী থেকে বইটা সংগ্রহ করে পড়তে পারো। অথবা উপরে লিঙ্ক দিয়েছি। হু, ডোপামিনকেও দেখলাম এই রিওয়ার্ডের সাথেই বেশি সম্পর্কিত করেছে।
আমার জীবনের অর্থ লেখাতে ব্লগার শিক্ষানবিশ ডোপামিন নিয়ে কিছু সুন্দর মন্তব্য ও প্রশ্ন করেছিলেন। এর কিছু অংশ এখানে তুলে দিলাম:
(উল্লেখ্য। এখানে পুলক বলতে আর্টিফিশাল রিওয়ার্ড বা বুঝিয়েছি যা এক অর্থে গণনাগতভাবে ডোপামিন সিগনাল এর সমতুল্য।)
সূত্র: http://blog.mukto-mona.com/?p=5219#comment-14286
সবাইকে মন্তব্য করার জন্য এবং পড়ার জন্য ধন্যবাদ জানাচ্ছি। সময় বাঁচানোর জন্য এক সাথেই সবাইকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি। প্রথম অভিযোগ মাথা পেতে নিচ্ছি। লেখাটির আকার ছোট হয়েছে আমিও জানি। পুরো বইটি যদি অনুবাদ করা যেত আমার চেয়ে খুশি আর কেউ হতো না। মুক্তমনায় পাইরেটেড কপির লিঙ্ক দেওয়া নিষিদ্ধ কিন্ত জানি না। তারপরেও বইটির পিডিফ লিঙ্ক দিচ্ছি। লিঙ্কটির খোঁজ আজই পেলাম অন্য একটি ব্লগে। এখান হতে আগ্রহীগণ বইটি ডাউনলোড করতে পারবেন। বইটি খুব বেশি বড় নয়, কিন্তু প্রচুর তথ্যে ঢাসা। তবে সহজেই পড়া যায়, ভাষা বেশ সহজ।
@স্বাধীন,
ইয়ে মানে “ঢাসা” নয় এটা “ঠাসা” হবে :-X :-Y
লেখাটা ভাল লাগল!
অনেক তথ্য জানতে পারলাম!
শিখলাম অনেক কিছু :-)। পোকা বানান ভুল করেছেন।
বলেন কি বলেন কি…এটাই তাহলে…এই সেই…ইয়ে মানে…বী…আচ্ছা আচ্ছা।
@রৌরব,
বানান আরো ভুল আছে নিশ্চিত। তবে এই বানানটি নিয়ে বেশি দ্বিধায় ছিলাম। কিন্তু অভ্রের নুতন ভার্সানে বানান চেকার আছে সেখানে দু’টো বানানই ছিল। তাই চন্দ্রবিন্দু দেওয়াটাই বেছে নিয়েছিলাম 😥 । ঠিক করে দিব লেখায়। ধন্যবাদ জানিয়ে আর ছোট করতে চাই না।
@রৌরব,
এক্কেরে ভিজুয়াল দিয়া ফালাইলেন। এতক্ষণে বুঝলাম ডপুরে ফরিদ ভাইয়ের কেন এত পছন্দ 😉 । ডপু আমাদের বিবর্তনে আর কোন ভূমিকা রাখুক বা না রাখুক, শুধু এই কারণেই তো এরে বস মানা যায়।
@ফাহিম রেজা,
আপ্নেরে এতো ভালু পাই আমি, আর সেই আপ্নে কি না আমারে আলুর দোষ দিলেন। 🙁
চমৎকার একটি লেখা, তবে অত্যন্ত সংক্ষিপ্ত। আর সংক্ষিপ্ত হবার কারণে পাঠকের বিভ্রান্ত হবার সুযোগ রয়ে গিয়েছে। যেমন, এই লেখা পড়লে ধারণা জন্মাতে পারে যে, ডোপামিন বোধ হয় শুধু মানব মস্তিষ্কেই বিদ্যমান, অন্য কোনো প্রাণীর মস্তিষ্কে নেই। এর প্রভাবেই মানুষের বুদ্ধিমত্তা, চেতনা, ব্যক্তিত্ব, কর্মদক্ষতা ইত্যাদি গড়ে উঠেছে, সে হয়ে উঠেছে স্বতন্ত্র অন্য প্রাণীদের তুলনায়। কিন্তু আসল ঘটনা তা নয়, ডোপামিন মূলত সব বুদ্ধিমান প্রাণীর মস্তিষ্কেই রয়েছে। প্যারট, ডলফিন এবং অন্যান্য প্রাইমেটদের মস্তিষ্কে ডোপামিনের পরিমাণ তুলনামূলকভাবে অন্যান্য প্রাণীদের তুলনায় বেশি-ই রয়েছে। মস্তিষ্কের বিভিন্ন অংশে ডোপামিনের ডিস্ট্রিবিউশনই মূলত বুদ্ধিমত্তার বিভিন্ন অংশকে জাগ্রত করেছে। মানব মস্তিষ্কের বাম দিক এবং প্রিফ্রন্টাল করটেক্স এ ডোপামিনের আধিক্যই একে অন্যান্য প্রাইমেটদের চেয়ে বুদ্ধিমত্তায় এগিয়ে নিয়ে গেছে।
মস্তিষ্কের আকার বুদ্ধিমত্তার জন্য দায়ী নয়, সেক্ষেত্রে সবচেয়ে বুদ্ধিমান প্রাণী হত হাতি। কিন্তু আশ্চর্যের সাথে দেখা গেছে যে, কিছু পক্ষী প্রজাতি ক্ষুদ্র মস্তিষ্ক থাকা সত্ত্বেও অনেক বেশি বুদ্ধিমত্তার অধিকারী। তাদের রয়েছে ভাষাগত দক্ষতা, পাটিগণিতে দক্ষতা এবং লজিক্যাল রিজনং। কাজেই, মস্তিষ্কের আকার নয়, বরং দেহ এবং মস্তিষ্কের অনুপাতই বেশি গুরুত্বপূর্ণ। এই অনুপাতে মানুষ, শিম্পাঞ্জি, ডলফিন বা প্যারটের তুলনায় এগিয়ে আছে বহুগুণ। তবে এতেও সমস্যা রয়েছে। ট্রি শ্রু নামের এক গুরুত্বহীন বোকাসোকা প্রাণী, যাকে ধারণা করা হয়, প্রাইমেট বা বানরদের অনেক আগের এক পূর্বপুরুষ হিসাবে, দেহ ও মস্তিষ্কের অনুপাতে তালিকার শীর্ষে বসে রয়েছে। ক্যামনে কী? 🙂
বন্যার কোনো এক লেখায় আমি জিজ্ঞেস করেছিলাম যে, শিম্পাঞ্জি এবং মানুষের কমন পূর্বপুরুষ থেকে পৃথক হবার পরে কী এমন ঘটেছিল যে মানুষ এত দ্রুতগতিতে একটা বিশাল লাফ দিয়ে এর কাজিনকে ছাড়িয়ে গেলো। বন্যা তার কোনো উত্তর আমাকে দেয় নি। ওর লেখাতে শুধু HAR এর কথা উল্লেখ ছিল। প্রেভিক সাহেব বন্যার মত ফাঁকি দেন নি। তিনি এর উত্তর দিয়েছেন। তাঁর মতে, যেহেতু শিম্পাঞ্জির সাথে মানুষের জেনেটিক ডিফারেন্স মাত্র এক দশমিক বিশ শতাংশ সেহেতু মানুষের সাথে শিম্পাঞ্জি তথা অন্যান্য প্রাইমেটদের বুদ্ধিমত্তার অসমতার কারণ হিসাবে কিছু জেনেটিক পরিবর্তনকে ইনডাইরেক্ট প্রভাব হিসাবে কাজ করেছে, তবে বেশিরভাগ অসমতাই এসেছে মূলত হোমো হাবিলিসদের সাইকোলোজিক্যাল এডাপ্ট্যাশেন থেকে। আর এই এডাপ্ট্যাশন ঘটেছে মূলত মস্তিষ্কের বিভিন্ন অংশে ডোপামিনের ডিস্ট্রিবিউশন থেকে।
আরেকটা বিষয় নিয়ে আমার কৌতুহল রয়েছে। দেখা যাক স্বাধীন কোনো ব্যাখ্যা দিতে পারে কি না। প্রেভিক উল্লেখ করেছেন যে, গত চারহাজার বছরে মানব সভ্যতাকে নেতৃত্ব দিয়েছে সামান্য কিছু হাইপারডোপামিনার্জিক লোক। বিংশ শতাব্দীর আগে এরা সবাই-ই পুরুষ। কোনো নারীকে দেখা যায় নি দৃশ্যপটে। এর কারণটা কী? কোনো সামাজিক ব্যাখ্যা শুনতে চাইছি না আমি। পুরোপুরি বিবর্তনের দৃষ্টিকোণ থেকে একটা ব্যাখ্যা আশা করছি আমি বিবর্তনবাদীদের কাছ থেকে।
আজ এই পর্যন্তই। বহুত রাত এখন। যাই ঘুমাইতে যাই গিয়া। ক্যান যে পাবলিক এই সব ভারি ভারি লেখা লেখে সেইটাই বুঝি না আমি। সবাই কেন ফাহিম রেজা হয় না? 🙁
@ফরিদ আহমেদ,
বুদ্ধিমত্তা এভাবে আপেক্ষিক হবে কেন? নাকি হাতির মস্তিষ্কের গঠনগত জটিলতা কম, সাইজে হস্তিসদৃশ হলেও?
@রৌরব,
তো আর কোনভাবে হবে? ডোপামিন দিয়ে? 🙂 এভাবেইতো আপেক্ষিক বুদ্ধিমত্তা নির্ণয় করা হচ্ছে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে। বুদ্ধিমত্তার জন্য প্রয়োজন নিউরন। তথ্য ধরে রাখা এবং প্রসেস করার জন্য। মস্তিষ্কের আকার যত বড় হবে নিউরনের সংখ্যা তত বেশি হবে এটা হচ্ছে সহজ হিসাব। তবে, শুধু নিউরনের সংখ্যা বেশি হলেই চলবে না, এদের মধ্যে সংযোগের পরিমাণের বিষয়টাও জরুরী। হাতি হয়তো ওখানেই পিছিয়ে আছে মানুষের তুলনায়। তার নিউরনগুলোর মধ্যে আন্তঃসংযোগ হয়তো কম মানুষের মস্তিষ্কের চেয়ে।
@ফরিদ আহমেদ,
হয়ত না। নিউরনের ঘনত্ব একই হলে এটা সত্য হত। বুদ্ধিমত্তার ব্যাপারে মস্তিষ্কের কর্টেক্স নামক অংশের এর নিউরনের সঙ্খ্যা (Cortical Neurons) বিবেচ্য। মানুষের কর্টিকাল নিউরনের সঙ্খ্যা অন্য সব স্তন্যপায়ী প্রাণীর চেয়ে বেশী, কিন্তু মানুষের মস্তিষ্ক বা কর্টেক্স কোনটাই আকারে সবচেয়ে বড় নয়।
@ফরিদ আহমেদ,
আপনার বিশাল মন্তব্যটির জন্য অনেক ধন্যবাদ। সেই সাথে ধন্যবাদ ডোপামিন নিয়ে আরো কিছু তথ্য যুক্ত করার জন্য। লেখাটি আসলেই ছোট হয়ে গিয়েছে এবং কথা সত্য যে বিভ্রান্তির অনেক সূযোগ ছিল। এ কারণেই লেখাটি এই অবস্থায় দিব কিনা চিন্তায় ছিলাম। মানুষজন মাইর দেয় কিনা সেই দূঃশ্চিন্তা নিয়ে ঘুমাতে গিয়েছিলাম 🙁 । নোট দিয়েও শান্তিতে ছিলাম না। আজকে ঘুম থেকে উঠে লেখাটির একটি পিডিফ পেয়ে কিছুটা শান্তি পেলাম। অন্তত মূল লেখাটা এখন পাঠকদের হাতে দিতে পেরেছি, যে কেউ চাইলে পড়ে নিতে পারবে। আমার আসলে থিসিস লেখা চলছে। গত দু’সপ্তাহে পড়ায় মনযোগ দিতে পারিনি এই ডোপামিনের জ্বালায়। বইটি পড়ার পর থেকেই অতিষ্ঠ করে ফেলেছে কিছু একটি লেখা দিতেই হবে এই বলে :-Y ।
আপনি বেশ ভালভাবেই আসল কথাটি তুলে ধরেছেন। এরেই বলে লেখার ক্ষমতা। আমি দু’দিন ধরে ঠিক করতে পারিনি কোন তথ্যগুলো বেশি প্রয়োজনীয়। আপনি ঠিকই দিয়েছেন।
বিংশ শতাব্দীর আগে ইপারডোপামিনার্জিক নারী নিয়ে যে প্রশ্নটি করেছেন, সেটা নিয়ে আমার অভিমত এভাবে হতে পারে। যদি প্রেভিক সাহেবের কথা মত চরম প্রতিযোগিতা ডোপামিন বৃদ্ধির কারণ হয়ে এবং ডোপামিন আবার সেই প্রতিযোগিতা এবং পুরুষালী মনোভাবকেও বৃদ্ধি করে (অনেকটা নন-লিনিয়র এফেক্ট – একটির কারণে অন্যটি আবার সেই আউটপুট আবার ইনপুটকেও প্রভাবিত করে) সেই ক্ষেত্রে এটাই স্বাভাবিক নয় কি যে আদিম সমাজে এবং আধ্নুনিক সভ্যতায় পদার্পনের আগ পর্যন্ত পুরুষদেরকেই মূলত প্রতিযোগিতার মধ্য দিয়ে যেতে হয়েছে নারীদের তুলনায় অনেক বেশি। সেটা ভাল সঙ্গীর জন্য হতে পারে, পরিবারের খাদ্য সংগ্রহের জন্য হতে পারে, বেঁচে থাকার জন্য হতে পারে। এ কারণেই হয়তো পুরুষদের মাঝেই ইপারডোপামিনার্জিক বেশি চোখে পড়ে আগে। এ কারণেই হয়তো বা সকল ধর্ম অবতার পুরুষ।
সমস্যা হলো পুরো জিনিসটাই যখন এক অপরের সাথে সম্পর্কিত, তখন পুরুষ রচিত ধর্মগ্রন্থ আবার নারীদেরকে আরো দাবিয়ে রেখেছে যার ফলে এতদিন সেভাবে ইপারডোপামিনার্জিক নারী দেখতে পাওয়া যায়নি। এখন যখন সেই বাঁধা ধীরে ধীরে কমে যাচ্ছে। তাই এখন নারীরাও পুরুষের সাথে সমান তালেই এগিয়ে যাচ্ছে। আমি বলবো না যে নারীদের ডোপামিন কম কিংবা তাঁদের বুদ্ধিমত্তা কম ছিল এবং সে কারণে তারা পিছিয়ে ছিল। বরং এভাবে বলবো তাঁদের প্রয়োজন পড়েনি বিধায় এবং পুরুষরচিত সামাজিক নৈতিকতা তাঁদের দাঁড়াতে দেয়নি বিধায় তাঁরা পিছিয়ে ছিল। আজ যখন সেই বাঁধা নেই বা কম তখন ঠিকই তাঁরা এগিয়ে গিয়েছে। আপাত এটাই মনে হচ্ছে। দেখি অন্যরা কি বলে।
@ফরিদ আহমেদ,
আপ্নে না বলে বিজ্ঞানের লেখা পড়েন না, তাইলে ডোপামিনের জ্ঞানের ফুলঝুড়ি ছুটাইলেন কেমনে? আর কত গুল মারবেন? আর অযথাই আমারে ফাসাইলেন :-X । আমি আপ্নেরে ঠিক উত্তরই দিসিলাম, একটু বেশী গভীরে গিয়া দিসিলাম এই যা। আপ্নি যে শুধু সারফেসেই ঘুরঘুর করতে চান সেইটা তো তখন বুঝি নাই :hahahee: ।
শিম্পাঞ্জির সাথে আমাদের এত পার্থক্য হলো সেই ‘ক্যামনে কী’ র উত্তর এখনো কেউ এক কথায় দিতে পারে না। এ নিয়ে হাজার হাজার গবেষণা হচ্ছে জীববিজ্ঞানের বিভিন্ন ফিল্ডে। প্রেভিক সাহেব কিভাবে বইটা লিখেছেন জানি না, তবে স্বাধীনের লেখা থেকে যেভাবে মনে হচ্ছে যে ডোপামিন দিয়েই সব কিছু ঘটে গেছে তা যদি বলে থাকেন তাহলে সেটা কোনভাবেই পূর্ণ একটা ব্যাখ্যা হতে পারে না। বইটা আমি পড়িনি, তাই উনি কিভাবে লিখেছেন, কি বলতে চেয়েছেন সেটা সম্পর্কে কোন ধারণা করা আমার জন্য কঠিন। তবে ইন্টারনেটে রিভিউ থেকে বুঝলাম, এটা একটা প্রভোকেটিভ অনুকল্প, এবং সে কারণেই এটাকেই ঠিক বা চূড়ান্ত ব্যাখ্যা মনে করে নেওয়ার কোন কারণ নেই।
যারা বইটা বের করেছে (ক্যাম্ব্রিজ ইউনিভার্সিটি প্রেস) তাদের রিভিউ দেখুনঃ
What does it mean to be human? There are many theories of the evolution of human behavior which seek to explain how our brains evolved to support our unique abilities and personalities. Most of these have focused on the role of brain size or specific genetic adaptations of the brain. In contrast, Fred Previc presents a provocative theory that high levels of dopamine, the most widely studied neurotransmitter, account for all major aspects of modern human behavior. He further emphasizes the role of epigenetic rather than genetic factors in the rise of dopamine. Previc contrasts the great achievements of the dopaminergic mind with the harmful effects of rising dopamine levels in modern societies and concludes with a critical examination of whether the dopaminergic mind that has evolved in humans is still adaptive to the health of humans and to the planet in general.
নিউরন কিভাবে কাজ করে এবং কিভাবে মানুষের চিন্তা এবং আচার আচরণে তা রিফ্লেক্টেড হয় তা এখনো জীববিজ্ঞানীদের জন্য একটা অত্যন্ত জটিল প্রশ্ন, বেশীরভাগ ক্ষেত্রেই এগুলোর উত্তর আমরা জানি না । আমি মনে করিনা ডোপামিনের মত এক নিউরো ট্র্যান্সমিটার দিয়েই এমন একটা জটিল বিষয়ের উত্তর দিয়ে দেওয়া সম্ভব।এখানে লেখক এপিজেনেটিক্সের কথাও নিয়ে এসেছেন যেটা এখনো বেশ বিতর্কিত একটা বিষয়।
এখন ধরেন, তর্কের খাতিরে যদি মেনেও নেই যে ডোপামিন আমাদের বিবর্তনে এক বিশাল ভূমিকা রেখেছে তাহলে তার জন্য প্রয়োজনীয় জেনেটিক পরিবর্তনটা কোথায় ঘটেছিল সেটা বের করতে হবে। কারণ ডোপামিনের মত একটা নিউরো ট্রান্সমিটারকে ফায়ার করার জন্য যে নিউরনগুলো দায়ী তাদের পিছনে একটা এনজাইমেটিক মেশিনারির প্রয়োজন হবে। এখন ভেবে দেখুন, এর পিছনে কি কাজ করছে? এক বা একাধিক জিন, যারা এই মেশিনারির জন্য প্র্য়োজনীয় প্রোটিনগুলো এনকোড করবে যাতে করে ডোপামিন তৈরিকারি নিউরনগুলো এ্যক্টিভেটেড হতে পারে। তাহলে ঘুরে ফিরে আপনার সেই হার (Human accelerated region) এই যেতে হচ্ছে, কারণ আমাদের বুঝতে হবে যে, অন্যান্য ভারটিব্রেটদের তুলনায় আমাদের জিনোমে কি এমন পরিবর্তন (অর্থাৎ, মিউটেশন) ঘটেছে যার ফলে ডোপামিনের পরিমাণ বেড়ে গেছে।
হার এর বিরুদ্ধে আপনি যতই আন্দোলনে নামেন না কেন মানুষের কোন জিনগুলোতে গত ৬ মিলিয়ন বছরে কি কি পরিবর্তন ঘটেছে এবং তাদের কাজ কি, সেটা বের করতে না পারলে আমাদের বিবর্তনের রহস্য বের করা সম্ভব হবে না :-/
@বন্যা আহমেদ,
ভীষণ সহমত। উনার মন্তব্যটা পড়ে আমি বেশ অবাক হয়েছিলাম। বইটা পড়া না থাকলে এই মন্তব্য লেখা হতো না 😀 । উনার গূল এখন ধরা পড়ে গেছে :lotpot: ।
এই বিষয়েও আপনার সাথে ভীষণভাবে সহমত। তবে বইটা ইন্টেরেস্টিং, অন্তত পড়ে রাখা দরকার। উপরে ফাহিম রেজার মন্তব্যে বলেছি, পারকিন্সস বা অন্যান্য মানসিক রোগের সাথে এটা সম্পর্কিত সেটা সম্ভব হতে পারে। কিন্তু একই বস্তু ব্যক্তিত্ব, বুদ্ধিমত্তা সব কিছুর সাথে সম্পর্কিত সেটাকে প্রমান করা কষ্টসাধ্য হবে। তবে রিওয়ার্ড মেকানিজমের ব্যাখ্যাগুলো আমার পছন্দ হয়েছে। অন্য অনুকল্প না আসা পর্যন্ত এই অনুকল্প গুলো নিয়ে নাড়াচাড়া করতে রাজী আছি।
@বন্যা আহমেদ,
সেটা হয়তো সত্যি। ডোপামিন বস্তুত আমাদের পুরষ্কার ব্যাবস্থার অনুঘটক, এটা আমাদের পুরষ্কৃত করে। যেমন- সিগেরেট থেকে শুরু করে হিরোইন পর্যন্ত প্রত্যেকটি নার্কটিকই ব্লাড ব্রেইন ব্যারিয়ার অতিক্রম করে আমাদের এই পুরষ্কার ব্যাবস্থা সক্রিয় করতে সমর্থ, বস্তুত এই কারণেই নার্কটিক নির্ভরতা বা ডিপেন্ডেন্স তৈরী করে। দেখা যায় যে মানুষ অনেক কিছুতেই পুরষ্কৃত হয়, একটা অঙ্ক করলে পুরষ্কৃত হয়, একটা রহস্য সমাধান করলে পুরষ্কৃত হয়, ফুটবল খেলে একটা গোল করতে পারলে পুরষ্কৃত হয় ইত্যাদি ইত্যাদি। যেমন- খুব অল্প প্রাণীই যেই খাদ্য দেখা যায় না সেই খাদ্যের কথা কল্পনা করে পুরষ্কৃত হয়, কিন্তু মানুষ এই কাজটা খুবই ভালো পারে, কল্পনা করে পুরষ্কৃত হতে পারে মানুষ। মানুষ হাইপারডোপামিনার্জিক। এইজন্যই আমি মনে করি মানুষের বুদ্ধিমত্তাগত উন্নতির পেছনে আসলেই ডোপামিন ব্যাবস্থার কিছু। সুন্দর পোস্টের জন্য স্বাধীনকে ধন্যবাদ।
@বন্যা আহমেদ,
গুল কই মারলাম। আসলেইতো পড়ি না। বিজ্ঞান আর বিবর্তন বর্জনের বজ্রকঠিন শপথ নিছি আমি।
স্বাধীন যা লিখছে ওইগুলারেই পারমুটেশন আর কম্বিনেশন কইরা দিয়া দিছি আমি। লোকজনে ধরতে পারে নাই। ভাবছে মন্তব্যের নতুন প্রজাতি তৈরি হইছে। 😀
তোমারে কই ফাসাইলাম। প্রশ্ন করলে উত্তর দাও না সেইডা খালি কইলাম। 🙂
হারের বিরুদ্ধে আমার আন্দোলন না। আমি যেটা জানতে চাই সেটা খুব পরিষ্কার। মানুষ তার প্রাইমেট কাজিনের সাথে একসাথে দৌঁড় শুরু করলো, একই রকমের দৈহিক এবং বুদ্ধিবৃত্তিক যোগ্যতা নিয়ে। কিন্তু দৌঁড় শুরু হবার পরে দেখা গেলো মানুষ দৌঁড়াচ্ছে উসাইন বোল্টের মতন, আর তার কাজিন ভূড়িওয়ালা বাঙালির মত খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে হাটছে। এর কারণ হার, এটা আমি মেনে নিয়েছি। কিন্তু প্রশ্নটা হচ্ছে এই স্বর্ণহারটা কেন মানুষের ভাগ্যে জুটলো? কেন জুটলো না তার কাজিনের ভাগ্যে। তার কেন হার হলো? কী এমন পূণ্য কাজ মানুষ করেছিল যে সে সবাইকে টপকে একেবারে ধরা ছোঁয়ার বাইরের শীর্ষদেশে চলে গেলো? উল্টোটাই বা কেন ঘটলো না? কেন শিম্পাঞ্জি বাবাজি পৃথিবীতে রাজত্ব করলো না, আর আমরা চিড়িয়াখানার খাঁচার মধ্যে বসে দাঁত কেলিয়ে আর বিচিত্র সব অঙ্গভঙ্গি করে তাদেরকে মজা বিলোলাম না?
গভীরে যেতে চাই না, সুপারফিসিয়ালি কেউ বুঝায় দিলেই চলবে। 🙂
@ফরিদ আহমেদ,
এক কথায় বলা যায় , সঠিক সময়ে সঠিক জায়গায় সঠিক মিউটেশন। এখন প্রশ্ন আসে এটা by chance ঘটেছিল কিনা? একটি দুটি বা শতখানেক বেজ পেয়ারে মিউটেশন ঘটে থাকলে by chance মেনে নিতে কারো দ্বিধা থাকার কথা নয়। সঠিক সময়ে সঠিক জায়গায় সঠিক মিউটেশনের সংখ্যা প্রায় ৬ কোটি।
@ফারুক,
দশটি ছক্কার গুটি একইসাথে ফেললে যে দশটা সংখ্যাই আসুক না কেন সেটা হবার সম্ভাব্যতা প্রায় ছয় কোটিতে একবার। তাহলে সেটা ঘটে কি করে?
@অপার্থিব,দশটা ছক্কার গুটি একইসাথে ফেললে একটা সংখ্যা তো আসবেই। যেকোন সংখ্যা হলে তো আপত্তি করার কিছু ছিল না। বিবর্তনের জন্য চাই নির্দিষ্ট একটি সংখ্যা। তাও আবার দান দান একদান ফেলে পাওয়া গেলে তো কথা ছিল না। ৩০০ কোটি ছক্কার গুটির (বেইজ পেয়ার) থেকে কয়েক শত/হাজার বছর পর পর একেকবারে কয়েকটি নির্দিষ্ট গুটি পরিবর্তনের মাধ্যমে প্রায় ৬ কোটি গুটির সঠিক পরিবর্তন করে বর্তমানের হিউম্যান গেনোমের ক্রমবিন্যাসে আসার সম্ভাব্যতা কতটুকু জানাবেন কি?
@ফারুক,
“নির্দিষ্ট একটি সংখ্যা” কি “যে কোন সংখ্যা” নয়? ঘুরিয়ে বলি, দশটি দাবার গুটি একই সাথে ফেলে যদি ফল দেখা যায় ৬৬৬৬৬৬৬৬৬৬ তাহলে কি সেটা কি দৈব ব্যাপার হবে? ৬৬৬৬৬৬৬৬৬৬ কি একটা বিশেষ সংখ্যা নয় কি?। অথচ ৬৬৬৬৬৬৬৬৬৬ হবার সম্ভাবনা আর “যে কোন সংখ্যা” (যেমন ৪৩২২৫৬১১৫৫) হবার সম্ভাবনা সমান।
এই উক্তির বৈজ্ঞানিক ভ্রান্তি বা নির্ভুলতার প্রশ্নে না গিয়েও এটা বলা যায় যে সম্ভাব্যতা কতটুকু তা আমি বলতে না পারলেও এটা যে শুন্য নয় সেটাই যথেষ্ট। দশটা দাবার গুটির পরিবর্তে একশ কোটি দাবার গুটি একসাথে ফেললেও ৬৬৬৬৬৬৬৬৬ ………… (একশ কোটিটা ছয়) হবার সম্ভাবনা শুন্য নয় এবং সেটা হলেও হবাক হবার কিছু নেই, কারণ সেটা হবার সম্ভাবনা অন্য যে কোন সংখ্যা হবার সম্ভাব্যনার সমান। আর ডি.এন.এ এর বিবর্তন শত/হাজার বছর নয়, লক্ষ কোটি বছর ধরে ঘটছে।
@অপার্থিব,আপনি মনে হয় ঠিকমতো বোঝেন নি “তাও আবার দান দান একদান ফেলে পাওয়া গেলে তো কথা ছিল না” এই কথাটার মানে।
এটা লাগ ভেল্কি লাগের ব্যাপার নয় , যে যে সংখ্যাটা আসুক সেটাই বিশেষ সংখ্যা। ১০ টা গুটি একবার ফেল্লে ৬৬৬৬৬৬৬৬৬৬ আসতেই পারে , কিন্তু আপনি যদি ১০টা গুটি ১০ বার ফেলেন এবং প্রতিবারেই কোন রকম ভুল চুক ছাড়া ৬৬৬৬৬৬৬৬৬৬ আসে , এটাকে কি বলবেন? ১০০কোটি সংখ্যার কথা না হয় বাদ-ই দিলাম!!
@ফারুক,
দশবারই যদি ৬৬৬৬৬৬৬৬৬৬ আসে তাহলে তার সম্ভাবনাও দশবার যে কোন সংখ্যা আসার যেমন ৪৩২২৫৬১১৫৫, ৩২৬৫৪৪৩৪২১, ৩৪৫৬৪৩২১, ৫৪৩২১২৩৪৫৬, ৪৫৩৬৬২১৩২, ৩৪৫৬১২৩৪২৩, ৬১৪৩২৫৪৪৩২,৩৩৪৪৫৫৬৬১১, ৪৪৫৫২২৩৩১১, ১১২২৩৩৪৪৫৫ এর সমান। এই সংখ্যাগুলি যদি আসে তাহলে এটাকে আপনি কি বলবেন?
@অপার্থিব,এটাকে বলব , by chance. ১০ বারের ১০ বারি ৬৬৬৬৬৬৬৬৬৬ আসাকে by chance হিসাবে ভাবাটা অসম্ভব মনে হয়।
@ফারুক,
কারও কাছে যদি ৪৩২২৫৬১১৫৫, ৩২৬৫৪৪৩৪২১, ৩৪৫৬৪৩২১, ৫৪৩২১২৩৪৫৬, ৪৫৩৬৬২১৩২, ৩৪৫৬১২৩৪২৩, ৬১৪৩২৫৪৪৩২,৩৩৪৪৫৫৬৬১১, ৪৪৫৫২২৩৩১১, ১১২২৩৩৪৪৫৫ এটাই খুব বিশেষ ঘটনা মনে হয় এবং দশটা গুটি দশবার ছোঁড়ার আগে এটাই আশা করে ঘটবে তাহলে এটা ঘটলে তার কাছে তা by chance হিসাবে ভাবাটা অসম্ভব মনে হবে, সে দশবার ৬৬৬৬৬৬৬৬৬৬ হওয়াটাকেই বরং by chance বলবে। কাজেই by chance মনে করা বা অসম্ভব মনে করাটা ব্যক্তিগত অনুভূতি/রুচির ব্যাপার। বাস্তবতা ব্যক্তিগত রুচি/অনুভূতির উপর নির্ভর করে না।
@অপার্থিব,
সেটাই। chance ও ব্যক্তিগত রুচি/অনুভূতির উপর নির্ভর করে না।
@অপার্থিব,
শুধু ফারুক সাহেব নন এমনকি অসংখ্য যুক্তিবাদীরা শুধুমাত্র একটা ভুল পদ্ধতি অনুসরন করার কারনে অনেক ভুল সিদ্ধান্তে পৌছান। এই ভুল পদ্ধতিকে বলা হয় Bounded rationality বা “satisficing” যার জন্য আমি আমার এনালিস্টদের সবসময় সাবধান করি। তারা প্রতিটা সম্ভাব্য হাইপোথিসিস পর্যালোচনা না করে প্রথমেই যে হাইপোথিসিসটা তাদের কাছে শক্তিশালী মনে হয় সেটাই নির্বাচন করেন। তারা তুলনামূলক বিচার করে দেখেন না যে কোন হাইপোথিসিসটা তথ্য প্রমানের সাথে সবচেয়ে সঙ্গতিপূর্ণ। কিভাবে তারা একটা সিদ্ধান্ত অথবা উপসংহারে উপনীত হচ্ছেন তা ঐ সিদ্ধান্ত অথবা উপসংহারের চেয়েও বেশী গুরুত্বপূর্ন।
@ফরিদ আহমেদ,
এর উল্টোটা ঘটলেও শিম্পাজিরা বলত তারা এমন কি পুণ্য করল যে মানুষেরা খাঁচায় বন্দী হয়ে দাঁত কেলিয়ে তাদেরকে মজা বিলোচ্ছে? এটা অনেকটা কোটি কোটি গ্রহ থাকতে শুধু পৃথিবীতে কেন প্রাণের সৃষ্টি হল? এই প্রশ্নের মত। আসলে পরিব্যাক্তি আর প্রাকৃতিক নির্বাচন এবং অন্যান্য প্রাকৃতিক ফ্যাক্টর এক এক প্রজাতিকে এক রকম উদ্বর্তনীয় কৌশলে বাধ্য করে যার ফলে সেই প্রজাতির নিজস্ব বৈশিষ্ট্যগুলি তৈরী হয়। সেই বৈশিষ্ট্যের জন্য এক প্রজাতি আরেক প্রজাতির চেয়ে অনেক ব্যাপারে উন্নততর হয়। সব ব্যাপারেই সর্বশ্রেষ্ঠ এরকম কোন প্রাণী নেই।
@অপার্থিব,
অনেকটা বন্যাকে ঝামেলায় ফেলার জন্য মজা করার উদ্দেশ্যে মন্তব্যটা লিখেছিলাম। আপনার এই মন্তব্য আর পরবর্তীতে ফারুক সাহেবের সাথে দৈবতা নিয়ে বিতর্ক দেখে বুঝতে পারলাম যে সিরিয়াস দিকে চলে গেছে বিষয়টা।
বিবর্তনের পথে মানুষের অন্যান্য প্রাইমেটদের থেকে হঠাৎ করে আলাদা হয়ে যাওয়াটা শুধু আমার একার কাছেই যে বিস্ময়কর তা নয়, বিজ্ঞানীদের কাছেও তা অপার এক বিস্ময়। গত পয়ষট্টি মিলিওন বছরে ওরাংওটাং বা শিম্পাঞ্জি বিবর্তনে জিনের মিউটেশন ঘটেছে খুবই সামান্য। সেই তুলনায় গত পাঁচ মিলিওন বছরে হিউম্যান লিনিয়েজে রেগুলেটরি জিনে মিউটেশন ঘটেছে অবিশ্বাস্য দ্রুতগতিতে। ফলে, স্বাভাবিকভাবে প্রশ্ন জাগে যে কেন এটা ঘটেছে? নিশ্চয়ই সুনির্দিষ্ট কোনো কারণ রয়েছে। কিন্তু এই প্রশ্ন করার সবচেয়ে বড় বিপদ হচ্ছে যে, সৃষ্টিবাদীরা এটাকে লুফে নেয়, ঈশ্বরকে এই অজানা গর্তের ফাঁকে ফুঁকে ঢোকানোর চেষ্টা করে। ফারুক সাহেবের মন্তব্যগুলোই তার প্রমাণ। মানব বিবর্তন যে ঈশ্বরের কোনোরকম ভূমিকা নাও থাকতে পারে সেটা অনুধাবন করা তাঁদের পক্ষে সম্ভবপর নয়।
মানুষের জিন এক্সপ্রেশনে এই অবিশ্বাস্য পরিবর্তনের পিছনের সুস্পষ্ট প্রাকৃতিক ফ্যাক্টরগুলো এবং সেই সাথে মানব প্রজাতির ঘন ঘন খাদ্যাভাস পরিবর্তন কতখানি প্রভাব বিস্তার করেছিল সেটা জানাটাই আমার মূল উদ্দেশ্য, মনুষ্যপ্রজাতির সর্বশ্রেষ্ঠতা প্রমাণ করা নয়।
@ফরিদ আহমেদ,
তাহলে এখন বন্যা আর অভির কোর্টে বলটা পাঠিয়ে দেয়া হোক। এটা তাদের টেরিটরী। তাদের জন্য চ্যালেঞ্জ হল সঠিক বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা হাজির করা এবং তা রসাল ভাবে উপস্থাপন করা (আপনার মনোযোগ আকর্ষণের পূর্বশর্ত)। শিশুদের যেমন খেলার মাধ্যমে অংক শেখান বা মিষ্টি পানিতে তেতো ওষুধ গেলান তেমন আর কি :laugh:
@অপার্থিব,
হা হা হা। আমাদের মত বিজ্ঞানমূর্খ এবং বিজ্ঞানবিরোধী লোকদের বিজ্ঞান গেলাতে গেলে সুগারকোটিং করা ছাড়া আর কোনো উপায় আসলেই নেই।
@ফরিদ আহমেদ,
সাবধান কিন্তু ফরিদভাই। স্ত্রিনশট ওয়ালারা লাল লাল গুল্লা গুল্লা স্ক্রিনশট দিয়ে এবার ‘প্রমান করিয়া দিবে’ যে মুক্তমনার মডারেটর নিজেই স্বীকার করেছেন যে তিনি বিজ্ঞান বিরোধী। 🙂 উনাদের আইকিউ লেভেল এত কম যে, কোনটা ঠাট্টা আর কোনটা সিরিয়াস সেটা বোঝার মতো বুদ্ধিও তাদের নেই। একবার নাকি আদিল মাহমুদ ঠাট্টা করে বলেছিলেন যে আমাদের পাল্লায় পড়ে নাস্তিক হয়ে যাবেন, ব্যাস রক্তিম বৃত্তরঞ্জিত ‘স্ক্রিনশটের প্রমাণ’ চলে আসছিলো, হেঃ হেঃ।
@অভিজিৎ,
আরে দিলে দিক। ওইটা করেইতো খাচ্ছে কেউ কেউ। আর আমি অতো ডরাই না এই লাল স্ক্রিনশটে। আমি যে বিজ্ঞানবিরোধী এইডাতো হাচা কথাই। ওই লোকতো আবার হাচা কথায় বিশ্বাস করে না, খালি মিছা কথা কয়। 😀
তয় ওই সাইটটা আমার দিলে খুব দাগা দিছে। ওগো পক্ষ নিয়া কি একখান ফাইটটাই না দিলাম আমি। কোথায় বন্ধু মনে কইরা বুকে জড়ায় ধরবো তা না এখন দেখি আমারে গালমন্দ করা শুরু করছে বাকিগোরে বাদ দিয়া। এইগুলারে যে সাইকো কই, সে কি আর সাধে কই! 🙂
@অপার্থিব,
বিবর্তন আমার টেরিটরি না মোটেই। বিবর্তনের উপর যিনি বই লিখেছেন বল তার কোর্টে। 😀 , আর সংশপ্তক সাহেবেরও কোর্টেও বলা যায়, তিনি মনে হচ্ছে এখনও আনুসঙ্গিক বিষয়ে একাডেমিয়ার সাথে যুক্ত। আমি একাডেমিয়া ছেড়েছি বহু বছর হল, কাজেই বলা মার কোর্টে না। তবে যাই ছাড়ি, রসালো উত্তর দিতে তো সমস্যা নেই। যেমন –
ফরিদ ভাইয়ের প্রশ্নটার – ‘কেন আমরা এতো পৃথক, কেন একসাথে দৌড় শুরু করার পরও আমাদের বুদ্ধি শিম্পাঞ্জিদের থেকে বেশি’ এটা শুনে আমার তৎক্ষণাৎ মনে আসছিলো – একই সাথে কিংবা আরো আগে দৌড় শুরু করার পরও কারো নখর গজিয়েছে (বাঘ / সিংহের), কারো পেটে থলি (যেমন ক্যাঙ্গারুর), কিংবা কারো পিঠে পাখা (কোকিল কিংবা দোয়েলের)। মানুষের তো এগুলো কিছুই হয়নি। নিঃসন্দেহে পিঠে পাখা থাকলে সেটা অনেকবেশি সৌভাগ্যময় ব্যাপার হত আমাদের জন্য। তা হয়নি। আসলে বিবর্তনের ছাপ (বৈজ্ঞানিক ভাষায় এডাপ্টেড ট্রেইট) একেক প্রজাতিতে একেক রকমভাবে পড়েছে। কারো বুদ্ধি বেশি হয়েছে (যেমন মানুষের), কারো পিঠে ঘন লোম গজিয়েছে (যেমন পোলার বিয়ারের), কারো বা শদন্ত এবং নখর হয়েছে তীক্ষ্ণ, কেউ রয়ে গেছে রাতকানা, কিন্তু আবার কেউ হয়ে উঠেছে নাশাচরী। ব্যাপারগুলো এভাবে দেখলে খুব বেশি অবাক লাগবে না। তবে ঠিক কোন মিউটেশনের কারণে ঠিক কোন পর্যায়ে এই পরিবর্তনগুলো কোন প্রজাতিতে কীরকমভাবে ঘটেছে তা জানতে স্ব স্ব বিষয়ে যারা গবেষণা করছেন তাদের শরণাপন্ন হওয়া ছাড়া গতি নেই আমাদের।
@অভিজিৎ,
বুদ্ধিমত্তার বিষয়টাতেই আমার আগ্রহ। অন্য প্রাণীদের চেয়ে মানব বুদ্ধিমত্তা অবিশ্বাস্য রকমের বেশি। এই বিষয়টা ঠিক কোন কোন কারণে ঘটেছে সেটাই জানতে চাইছি। প্রেভিক যেমন বলেছেন যদিও আমাদের লোমহীন চর্ম এবং ঋজু শারীরিক বৈশিষ্ট্য আমাদের অন্য প্রাইমেট কাজিনদের থেকে আলাদা করেছে, কিন্তু মূল পার্থক্যটা আসলে গড়ে উঠেছে আমাদের বুদ্ধিমত্তা এবং আচরনগত বিশিষ্টতা থেকে।
@ফরিদ আহমেদ,
সহমত। আমারও বুদ্ধিমত্তা/মস্তিষ্ক নিয়েই বেশি আগ্রহ। কেন আমাদের বুদ্ধিমত্তা অন্যান্য প্রাইমেটদের চেয়ে অত্যাধিক বেশি সেটা পরিষ্কার থাকাটা জরুরী যেখানে শিম্পাঞ্জির সাথে আমাদের জেনেটিক পার্থক্য খুব বেশি নয়। এমনকি মানুষের নিজেদের মধ্যেও জেনেটিক পার্থক্য আরো কম। তাহলে এই কম পার্থক্যই কি এনাফ দু’টি মানুষের মাঝে পার্থক্যের জন্য? নাকি আরো কিছু আছে? এই বিষয়গুলো নিয়ে বিবর্তন বিশারদরা কিছু লিখলে আমরা উপকৃত হই 😀 ।
@ফরিদ আহমেদ,
ফরিদ ভাই, আমাকে আর ঝামেলায় ফেলবেন কি? আপনি এখানে যা জিজ্ঞেস করছেন সেটা ক্লাসিক আইডির প্রশ্ন, নতুন কিছুই না। মাঝখান থেকে আমার অনেকখানি সময় নষ্ট করালেন এই যা। আপনি যে সিরিয়াসলি এই প্রশ্ন করছেন সেটাই এতদিন বুঝতে পারি নাই, এতদিন ভেবেছি ফাজলামি করছেন। যাক, এবার তাহলে সিরিয়াসলি প্রশ্নটার উত্তর দেই, সময় কম বলে কিছু জিনিস আপনাকে পড়ে নিতে বলবো, এখানে আর নতুন করে আগের লেখা থেকে কাট এন্ড পেস্ট এবং বর্ণসফট থেকে কনভার্ট করে সময় নষ্ট করবো না।
আপনার প্রশ্নটা খেয়াল করে দেখুন, প্রথমত আপনি নিজের অজান্তেই ধরেই নিচ্ছেন (বা অসাবধানতাবশতঃ লিখছেন) কোন একটা কারণে আমাদের বুদ্ধিমত্তার বিকাশ ঘটতে হবে। কিন্তু বিবর্তন কি সেভাবে কাজ করে? মিউটেশন সব প্রাণীতে সব সময়েই ঘটছে, অনেক কিছুর উপর ভিত্তি করে মিউটেশনের হার কম বা বেশী হতে পারে। কিন্তু বেশীর ভাগ মিউটেশনই নির্বাচিত হয় না, কারণ তারা হয়তো টিকে থাকার জন্য তেমন কোন বাড়তি সুবিধা দেয় না। কিন্তু মানুষের ক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে গত ৬ মিলিয়ন বছরে বেশ কিছু মিউটেশন সিলেক্টেড হয়েছে অত্যন্ত দ্রুতগতিতে।এখন এটা কেন ঘটেছে সে প্রশ্নের জবাব নিশ্চিতভাবে এক কথায় দেওয়ার মত তথ্য আমাদের হাতে হয়তো এখনও নেই, কিন্তু বিজ্ঞানীরা এ ব্যাপারে বহুদূর এগিয়ে গেছেন গত কয়েক দশকে, হাজার হাজার গবেষনা চলছে এ নিয়ে। আপনি সৃষ্টিবাদীদের ঝাপিয়ে পড়ার কথা বলেছেন, আসলে আপনি যে অ্য্যঙ্গেল থেকে যেভাবে প্রশ্নটা করেছেন তা তে করে এটা হওয়াটাই বোধ হয় স্বাভাবিক। এখানে ‘স্বর্ণহার, পূণ্য, ভাগ্যের’ কোন ব্যাপার নেই, র্যান্ডম মিউটেশন এবং নন-র্যন্ডম প্রাকৃতিক নির্বাচনের এক অভিনব ফলাফল আমরা। হাজার হাজার ফ্যাক্টর কাজ করেছে এই প্রাকৃতিকভাবে ঘটা পরিবর্তনের পিছনে, এর যে কোন একটা অন্যরকম হলেই আমাদের পরিবর্তনগুলোও অন্যরকম হতে পারতো। আজকে আপনি যে প্রশ্ন করছেন, ঠিক সেভাবে পাখিরাও জিজ্ঞেস করতে পারে যে তারা কেন এত ‘ভাগ্যবান’ হয়ে জন্মালো যে তাদের পূর্বপুরুষ ডায়নোসরের কাঁধে কিউপিডের মতো ফকফকা দুটো পাখা গজিয়ে গেল বা তিমিরা বলতে পারে
[img]http://chambers2012.files.wordpress.com/2010/03/cupid5af.jpg[/img]
তারা জন্ম জন্মান্তর ধরে এমন কি ‘পূণ্য’ করেছিল যে হিপোর মত একটা পূর্বপুরুষ থেকে সমুদ্রের রাজায় পরিণত হয়ে গেল। অভিজিত এবং অপার্থিব এ বিষয়ে বেশ কিছু কথা ইতোমধ্যেই বলেছেন, তাই আমি আর এ নিয়ে কথা বাড়াচ্ছি না।
এই ছয় মিলয়ন বছরে কতগুলো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং জটিল পরিবর্তন ঘটেছে, দুই পায়ে খাড়া হয়ে দাঁড়াতে পারা, কব্জি এবং অপোজেবল থাম্বের পরিবর্তন, মস্তিষ্কের আকার বৃদ্ধি, বড় মাথাসহ শিশুর জন্ম, জন্মানোর পর বর্ধিত সময় ধরে মস্তিষ্কের খুলির বড় হতে পারার ফ্লেক্সিবিলিটি, ইত্যাদি, ইত্যাদি, ইত্যাদি। এর সাথে আবার অনেকে প্রযুক্তির ব্যবহার, ভাষার ব্যবহার, সংস্কৃতির বিকাশ(যার জন্য আবার আন্ডারলায়িং জেনেটিক পরিবর্তনগুলোও অপরিহার্য ভূমিকা পালন করেছে) ইত্যাদিকেও আমাদের বুদ্ধিমত্তার বিকাশের ক্ষেত্রে বড় ভূমিকা রেখেছে বলে মনে করেন। আমাদের বুদ্ধিমত্তার বিকাশটা কোন একটা লিনিয়ার পরিবর্তনের ফলে ঘটেনি, দীর্ঘ সময় ধরে বহু মোজাইক পরিবর্তনের মাধ্যমে ঘটেছে, আমি আমার এভো ডেভো লেখাতে এ নিয়ে কিছু আলোচনা করেছিলাম।
ব্যাপারটা এরকম নয় যে, আমাদেরকে এখানে এই অবস্থায় এনে দেওয়ার জন্য কোন ‘বিশেষ’ কারণে এই মিউটেশনগুলো ঘটেছে, বরং আমরা আজকে এখানে এসে পৌঁছেছি কারণ প্রাকৃতিকভাবে এই পরিবর্তনগুলো ঘটে গেছে। আপনাকে উলটো করে চিন্তা করতে হবে আর সেখানেই বৈজ্ঞানিকভাবে চিন্তা করার সাথে নিয়তিবাদী চিন্তার পার্থক্য। এই ধরণের ফাইন টিউনিং এর বক্তব্যগুলো আইডিওয়ালাদের খুব প্রিয়। তারা বলার চেষ্টা করেন আমাদের পৃথিবীকে এত পারফেক্টভাবে তৈরি না করা হলে নাকি এখানে আমাদের বিবর্তন ঘটতে পারতো না। কিন্তু এভাবে ভেবে দেখুন তো, গ্যালাক্সির পর গ্যালাক্সি ধরে কোটি কোটি গ্রহ উপগ্রহের মধ্যে গুটিকয়েক জায়গায় (চান্সের পারমুটেশন কম্বিনেশন করলে যা ঘটতেই পারে)প্রাণ তৈরির মত অবস্থা তৈরি হয়েছে বলেই আমাদের উৎপত্তি ঘটতে পেরেছে, অথবা হয়তো অন্য কোনভাবে প্রাণ তৈরি হয়েছে যার সন্ধান এখনো আমরা পাইনি! আপনি হয়তো ঠিক এভাবে প্রশ্নগুলো করেন নি, কিন্তু সুরটা কেন যেন ওদিকেই চলে যাচ্ছিল, তাই এত্তগুলা লেকচার দিলাম তবে আপনাকে অনুরোধ করবো বিবর্তনের পথ ধরে বইটার দশম অধ্যায়ে আইডি নিয়ে যে আলোচনা করেছি ওইটা আরেকবার পড়ে দেখতে (ইন্টারনেট ভার্সানটা সম্ভবত আনএডিটেড এবং অসম্পূর্ণ), তাহলে ওভারঅল একটা উত্তর পাবেন।
(ওহ হ্যা, মরা কিউপিডের ছবিটা কেমন লাগলো জানাবেন। অপার্থিবের পরামর্শ মাথায় রেখে ছবি জুড়ে দিলাম যাতে করে আপনি আগ্রহ হারিয়ে না ফেলেন)।
@বন্যা আহমেদ,
নিজের তীরে কুপোকাত কিউপিডের ছবিতে হা হা প গে :laugh:
@রৌরব, মনে হয় বুমেরাং তীর ছিল ওইটা!
@বন্যা আহমেদ,
বিজ্ঞানের কোনো ব্যাকগ্রাউন্ড না থাকার কারণে বিজ্ঞান বা বিবর্তন নিয়ে আমার আগ্রহ এমনিতেই খুব সামান্য। মুক্তমনার কারণেই সামান্য যেটুকু পড়াশোনা করা হয়। তা না হলে হয়তো কখনোই বিজ্ঞানের কিছু ধরেও দেখা হতো না। এখন তোমার এই উত্তরের পরে সামান্য সেই আগ্রহটুকুও আর যে অবশিষ্ট নেই সেটা বলাই বাহুল্য।
আমার প্রশ্নের মধ্যে যে আইডির সুর বাজতে পারে সেটাই আমার কাছে এক বিস্ময়কর ব্যাপার বলে মনে হয়েছে। আমি ঈশ্বরে অবিশ্বাসী হয়েছি পড়াশোনা করে নয় বা কারো প্রভাবে নয়। জন্মগতভাবেই ঈশ্বরে অবিশ্বাস নিয়ে জন্মেছি আমি। কাজেই কোনো ধরনের ফাইন টিউন ফিউনের মধ্যে আমি নেই। কিন্তু, তুমি যে কোনো কারণেই হোক না কেন ধরে নিয়েছো যে আমার প্রশ্নটা ক্লাসিক আইডি ওয়ালাদের প্রশ্ন। আমার মন্তব্যের কিছু আলংকরিক শব্দকে ইনভার্টেড কমার মধ্যে ঢোকানো দেখেই সেটা বুঝতে পারছি। আইডিওয়ালারাও হয়তো একই ধরনের প্রশ্ন করে, সেটা তারা করতেই পারে। কিন্তু, তাদের সঙ্গে আমার উদ্দেশ্যের পার্থক্য রয়েছে। তাদের ঝোলার ভিতরে যেখানে লুকোনো থাকে গোপন ঈশ্বর, সেখানে আমার ঝোলার ভিতরে লুকোনো থাকে সত্যকে জানার নির্মল কৌতুহল। বুদ্ধিমত্তায় মানুষ কেন শ্রেষ্ঠত্ব পেলো এই প্রশ্ন করলেই যদি আইডিওয়ালা হতে হয়, তবে বহু বহু বিজ্ঞানীদের পিঠেই বড়সড় সিল মেরে দেওয়া যাবে আইডিওয়ালা বলে। এমনকি এই যে দেখো, স্বাধীন যে ভদ্রলোকের বইয়ের উপর ভিত্তি করে এই লেখাটা লিখেছে তাকেতো বিরাট আইডিওয়ালাই মনে হবে পুরো বইটা পড়লে। কারণ, পুরো বইটাই ভদ্রলোক ব্যয় করেছেন মানুষের অবিশ্বাস্য বুদ্ধিমত্তা কেন হলো সেটা ব্যাখ্যা করতে গিয়েই। আর সে কারণে ডোপামিনের ভূমিকাকে হাইলাইট করেছেন তিনি।
উঁহু। আমি মোটেও ধরে নেই নি যে কোনো একটা কারণে মানুষের বুদ্ধিমত্তার বিকাশ ঘটতেই হবে। তুমি ধরে নিচ্ছো যে আমি এটা ধরে নিয়েছি। মানুষের বদলে যদি ছাগলেরও অন্যদের তুলনায় অবিশ্বাস্য রকমের বেশি বুদ্ধিমত্তা বিকশিত হতো, সেক্ষেত্রেও আমি প্রশ্ন করতাম যে এর পিছনের কারণটা কী? মিউটেশেন যে কারণ ছাড়া ঘটে না, সেটাতো তোমার এই লাইনগুলোর মধ্যেই রয়েছে। এই বিষয়টাইতো জানতে চেয়েছি আমি যে, কোন কোন কারণে কখন কখন মানুষের বুদ্ধিমত্তার এরকম উর্ধ্বলম্ফন হলো? শুধু এভাবে মিউটেশন ঘটেছে বলেই মানুষ বুদ্ধিমান হয়েছে, না হলে অন্য কিছু হতো সেটাতো শুনতে চাচ্ছি না আমি। আমার প্রশ্ন হচ্ছে মিটেশনগুলো কেন এমনভাবে হলো? কেনই বা এটা হলো শুধু মানুষের ক্ষেত্রে? কেন হলো না অন্য কোনো প্রাণীর ক্ষেত্রে? এই প্রশ্ন যে কোনো আইডিওয়ালার নয়, সেটা বুঝতে হবে তোমাকে। বিজ্ঞানীরা এখনো এগুলোর সব কারণ খুঁজে পায় নি, কিন্তু একদিন ঠিকই প্রাকৃতিক সব কারণগুলোকেই পাবে। তখন আর এই প্রশ্ন করলে আইডিওয়ালার বাঁশির সুর শোনা যাবে না।
এইতো দেখো বুদ্ধিমত্তার বিকাশের কারণগুলো কত সুন্দরভাবে ব্যাখ্যা করছো তুমি। এই ধাপের ঠিক আগের ধাপটাই হচ্ছে আমার আগ্রহের জায়গা। গত ছয় মিলিওন বছরে যে গুরুত্বপূর্ণ এবং জটিল পরিবর্তন ঘটেছে মানুষের, সেটার পিছনের কারণটা কী? কী ঘটেছিল যে মানুষের ক্ষেত্রে এই সব কিছু ঘটলো, অন্য কোনো প্রাণীর ঘটলো না। ঈশ্বরকে মাথা থেকে বের করে দাও। নিছক বৈজ্ঞানিকভাবেই এই কৌতুহলের উত্তরটা ভেবে দেখো। কোনো একটা জিনের মিউটেশন কী কারণ ছাড়া, প্রভাব ছাড়া এমনি এমনি-ই ঘটে যায়? নিশ্চয়ই যায় না, তাই না? তো সেই কারণটা খুঁজতে যাওয়াটা কী অন্যায়? এই যে, আমি গতকাল যেমন আল্লাচালাইনাকে জিজ্ঞেস করেছি যে, নীল চোখ তৈরি হবার যে মিউটেশনটা ঘটেছে সেটার পিছনের কারণ কী? এটা কী আইডি প্রশ্ন? তাহলে বৈজ্ঞানিকরা কেন এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজছেন? নীল চোখের পিছনের জেনেটিক্যাল ব্যাখ্যা নিয়ে হাজার হাজার গবেষণা কাজ কেন হচ্ছে? বলে দিলেইতো হয় যে প্রাকৃতিক কারণে ঘটেছে এটা। নীলের বদলে গোলাপি হলেও হতে পারতো। এর আবার কারণ খুঁজে কী হবে?
‘বিশেষ’ কারণে এই মিউটেশনগুলো যে ঘটে নি সেটা আমি জানি, কিন্তু কোনো কারণে যে ঘটেছে সেটাকে নিশ্চয়ই অস্বীকার করা যায় না। প্রাকৃতিকভাবে পরিবর্তনগুলো ঘটতে গেলেও তার কিছু অনুঘটক লাগে, এমনি এমনি প্রকৃতিও কোনো কিছুকে পরিবর্তন করার সাধ্য রাখে না।
অসুবিধা নাই। তোমার বিষয় এইটা, লেকচারতো তুমি দিতেই পারো। লেকচারটাতে উত্তর জানা হয়ে গেছে আমার, বইটা আর পড়তে পারবো না। বই পড়া বড়ই নিরানন্দময় কাজ। এর থেকে কার্টুন সিনেমা দেখা অনেক বেশি আনন্দের এবং মজাদার।
বিবর্তন নিয়ে আমার এই ক্ষুদ্র জ্ঞান (আইডি জ্ঞান) দিয়ে তোমার সাথে বিতর্কে বেশিক্ষণ টিকতে পারবো না জানি। কাজেই রণে ভঙ্গ দিলাম। তোমার উপরে শান্তি বর্ষিত হোক।
@ফরিদ আহমেদ,
হুম বুঝলাম, চ্যাতসেন। কিন্তু এতে করে যে আপনার আরেকটা গুল ধরা পড়ে গেল সেইটা কি বুঝতে পারলেন? বলেন তো কারা আইডির কথা শুনলে ক্ষেপে? শুধুমাত্র বৈজ্ঞানিকভাবে সচেতন মানুষদেরই এই আইডির ব্যাপার স্যাপারে এর আপত্তি আছে। এমনিতেই কি মক্সুদুল মোমেনিন মার্কা সাইটগুলা আপনেরে গাইলায়? যতই গুলা-গুলি করেন না কেন, ওরা আপেনেরে ঠিকই চিনসে!
আরেকটা জিনিস বুঝতে পারলাম আজকে, মুক্তমনার নাস্তিক পাব্লিকদের গালি দিতে হলে শুধু আইডির সমর্থক বললেই হবে, এর চেয়ে বেশী কিছু বলার দরকার নেই। মনে হচ্ছে এটা তে যতটূকু কাজ হবে অন্য আর কোন গালিতেই তা হবে না।
হ্যা , ফরিদ ভাই সেইটা জানি দেখেই আপনাকে উত্তরটা দিয়েছি না হলে উত্তরই দিতাম না। আইডিওয়ালাদের সাথে বিতর্ক করার ধৈর্য এবং স্ময় আমার নেই। আমি আপনাকে আইডিওয়ালা বলি নাই, যেটা বোঝাতে চেয়েছি তা হল একটু অসাবধান হলেই কিন্তু প্রশ্নের ধরণধারণ ওইদিকে চলে যেতে পারে। আমার যে এখানে অনেক সময়েই সারকাস্টিকালি অনেক কিছু বলি সেটা অনেকেই বুঝতে নাও পারেন।
আমি ঠিক নিশ্চিত না মিউটেশনের পিছনের নির্দিষ্ট কোন কারণ আছে কিনা এবং থাকলেও সেটা সম্পর্কে আমরা এখনো নিশ্চিতভাবে কিছু জানি কিনা। কিছু ফিজিক্যাল ইভেন্টের ফলশ্রুতিতে নিশ্চয়ই মিউটেশন ঘটে, তবে বাবা মার জিন থেকে সন্তানের জিনে কপি করার সময় ভুল হওয়ার ফলেই সব জীবে মিউটেশন ঘটে থাকে। সূর্যালোক, রেডিয়েশন বা এরকম কিছু বাহ্যিক কারণে মিউটেশন ঘটলেও তা সাধারণতঃ এক প্রজন্ম থেকে আরেক প্রজন্মে পরিচালিত হতে পারে। এখন মিউটেশনগুলো (মিউটেশন দুরকম, জার্ম্ লাইন বা হেরিডিটারি মিউটেশন এবং সোমাটিক মিউটেশন, এখানে দেখুন) কেন ঘটে তার কারণগুলো আমরা কি জানি? কপি করার সময় ভুল করাটা একটা র্যন্ডম প্রক্রিয়া এটার পিছনে নির্দিষ্ট কোন কারণ বা ডিরেকশান কাজ করে না। সব জীবে বিরামহীনভাবে নিত্য নতুন মিউটেশন ঘটে চলেছে কিন্তু কোন মিউটেশনগূল প্রাকৃতিক নির্বাচনের প্রক্রিয়ায় (প্রাকৃতিক নির্বাচন কিন্তু র্যন্ডম নয় )নির্বাচিত হয়ে পরের প্রজন্মে সঞ্চালিত হওয়ার মাধ্যমে বিবর্তনের উপর প্রভাব ফেলবে সেটার পিছনে অনেকগুলো কারণ বা ফ্যাক্টর কাজ করতে পারে। এখানে আরো বিস্তারিত দেখতে পারেন।
এখন মিউটেশন র্যন্ডম বলতে ঠিক কি বোঝানো হচ্ছে সেটাও বোধ হয় বোঝা দরকার। এখানে যে সেন্সে বিজ্ঞানীরা মিউটেশনকে র্যন্ডম বলেন তা হচ্ছে কোন ডিরেক্টেড সেন্সে মিউটেশন ঘটে না, অর্থাৎ, জীবের কোন প্রয়োজনের কথা মাথায় রেখে মিউটেশন ঘটে না। কোন কোন সময় হয়তো মিউটেশনের হারের উপর পরিবেশের প্রভাব পরতে পারে কিন্তু এমন অনেক মিউটেশনই আছে যাদের হার হয়তোকোন কিছুর উপরেই নির্ভর করে ঘটে না। । যেমন এই লিঙ্কে দেখানো হয়েছে যে কোন ব্যাক্টিরিয়াকে অ্যন্টেবায়োটিকের সামনে এক্সপোজ করলেও তাদের মধ্যে প্রতিরোধক শক্তি বাড়ার জন্য প্রয়োজনীয় মিউটেশনের কিন্তু হেরফের হয় না। এ নিয়েও অনেক গবেষণাই হচ্ছে।
এখন বোধ হয় বুঝেছি কনফিউশনটা কোথায় হচ্ছে। মিউটেশনটা কেন ঘটলো তা নয় বরং আপনার প্রশ্নটা বোধ হয় হওয়া উচিত, কোন মিউটেশন কখন এবং কেন নির্বাচিত হল, অথবা আমাদের বিবর্তনে এতগুলো মিউটেশন এত দ্রুত নির্বাচিত হল কেন?কোন জনপুঞ্জে মিউটেশন কোন নির্দিষ্ট কারণে ঘটে না, বরং সব সময়েই কোন না কোন মিউটেশন ঘটতেই থাকে। যেহেতু ডিরেক্টেড সেন্সে মিউটেশন ঘটে না সেহেতু আমাদের কোন প্রয়োজনের কথা মনে রেখে মিউটেশন ঘটেনি, কোন ফিজিওলজিকাল প্রভাব যদি থেকেও থাকে সেটা বোধ হয় আপনার প্রশ্নের উত্তরের ক্ষেত্রে বিবেচ্য বিষয় নয়। আপনার নীল চোখের মিউটেশন নিয়ে প্রশ্নটায় আসি। উলটো করে ভাবুনঃ নীল চোখের পিছনে মিউটেশন কেন ঘটলো প্রশ্নটা বোধ হয় ঠিক নয়, দেখুন আল্লাচালাইনা এবং আমি কিভাবে উত্তরটা দিয়েছি। আমরা আপনাকে উত্তরে বলেছি কেন এই মিউটেশনটা নির্বাচিত হল বা টিকে গেল, আমরা আপনাকে কেন মিউটেশনটা ঘটেছে তা নিয়ে কিন্তু কিছু বলিনি। নাহ, গোলাপী রঙ এর চোখ হতে পারতো না একারণে যে এর জন্য প্রয়োজনীয় যে মিউটেশনটা দরকার তা হয়তো কখনও ঘটেইনি। একই কথা বলা যায় পাখি বা বাদুরের পাখা সম্পর্কে এবং কেন আমাদের পাখা নেই ওদের আছে। আমাদের মধ্যে পাখা তৈরির জন্য মিউটেশনটাই হয়তো কখনো ঘটেনি, এখন যদি কেউ প্রশ্ন করে কেন আমাদের মধ্যে এই মিউটেশন ঘটেনি তার উত্তর কি হবে? প্রাকৃতিক নির্বাচন শুধু কাজ করতে পারে র্যন্ডমভাবে ঘটা মিউটেশন থেকে তৈরি হওয়া প্রকারণের উপর ভিত্তি করে, র্যন্ডমভাবে মিউটেশন না ঘটলে কোন বৈশিষ্ট্যের বিবর্তন ঘটা সম্ভব নয়। এখন, দেখাই যাচ্ছে যে আমাদের প্রজাতিতে বড় মস্তিষ্ক এবং বুদ্ধিমত্তার বিকাশের জন্য প্রয়োজনীয় মিউটেশনগুলো ঘটেছে এবং প্রাকৃতিক নির্বাচনের প্রক্রিয়ায় তারা নির্বাচিত হয়েছে। কেন গত ছয় মিলিয়ন বছরে আমাদের জনপুঞ্জে এত দ্রুত এতগুলো মিউটেশন নির্বাচিত হল বা কোন কোন মিউটেশনের কারণে আমার বুদ্ধিমত্তার বিকাশ ঘটতে পারলো, সেটাই মনে হয় এখানে আলোচনার বিষয় বস্তু হওয়া উচিত, এবং সেই প্রশ্নগুলোর উত্তরই বিজ্ঞানীরা খোঁজার চেষ্টা করে চলেছেন।
নাহ এই প্রশ্ন করলেই আপনি আইডিওয়ালা হয়ে যাবেন না। তবে প্রশ্নের ধরণটা কি সেটা গুরুত্বপূর্ণ, মনে হয় উপরে সেটা ব্যাখ্যা করতে পেরেছি। এই ভদ্রলোককেও বোধ হয় আমি আইডিওয়ালা বলব না ( ওনার বইটা আমি পড়িনি) কারণ আমি মোটামুটিভাবে নিশ্চিত যে উনি প্রশ্ন করেননি ডোপামিনের আধিক্য ঘটার জন্য মিউটেশনটা প্রকৃতিতে কেন ঘটলো,, সম্ভবত উনি ব্যাখ্যা করার চেষ্টা করেছেন এই পরিবর্তনটা কেন আমাদের মধ্যে নির্বাচিত হল এবং বুদ্ধিমত্তার বিকাশের ক্ষেত্রে সে কিভাবে ভূমিকা রেখে চলেছে।
উফফফ, ফরিদ ভাই আর কত গুলাইবেন? আপনি মুক্তমনায় লেখা শুরু করার অনেক আগে থেকেই বিভিন্ন পত্রিকায় মহাবিশ্বে প্রাণের উৎপত্তি নিয়ে লিখছিলেন, আর তারই সূত্র ধরে আপনার সাথে আমার পরিচয়। নিজেকে আর কত আজাইরা ‘পুরুষবাদী’ আর ‘অবিজ্ঞান্মনষ্ক’ বলে বলে গুল মারবেন? মহাবিশ্বে প্রাণ ও বুদ্ধিমত্তার খোঁজের মত ‘অবৈজ্ঞানিক’ বইটার লেখক যেন কে?
আইডির সমর্থক কোনো ইমো তৈরি করা যায় না? কাউরে গালি দেবার ইচ্ছা হলে ওই ইমোটা দিয়ে দিলেই চলবে। আমি অবশ্য গালি দেই অন্যভাবে। কারো উপরে বেশি মেজাজ খারাপ হলে তারে বিবর্তনের সমর্থক না হয় বিবর্তনিয়া বলে দেই। 🙂
গুল আমি মারি না। গুল মারতাছো তুমি। আজাইরা পুরুষবাদীও আমি না। আমি হচ্ছি টোয়েন্টিফোর ক্যারটের খাঁটি পুরুষবাদী। বিশ্বাস না হইলে আমার ট্রাক রেকর্ড দেখো মুক্তমনায়। মুক্তমনার মোটামুটি সব নারী সদস্যের সাথেই মুক্তকণ্ঠে ঝগড়াঝাটি, মারামারি হয়ে গেছে আমার।
মহাবিশ্বে প্রাণ ও বুদ্ধিমত্তার খোঁজে গ্রন্থের লেখকটা কে, তা অভিরেই জিগায়া দ্যাখো। সেই সবচেয়ে ভালো জানে। বই লেখার মত অবৈজ্ঞানিক কাজকর্মের মধ্যে আমি নাই। 🙂
@ফরিদ আহমেদ,
মস্তিষ্ক নিয়ে আমার যেটা মনে হয়, মস্তিষ্কের এডাপ্টেশান ক্ষমতা অনেক। এখন এটা কিভাবে হয় সেটা আমি বলতে পারবো না। সেটা নিয়ে জেনেটিক্স, নিউরোলজি যারা জানন তারা কিছু বলুক। সাধারণ ভাবে আমি যা দেখি তাতে মস্তিষ্কের এই এডাপ্টেশানই আমার চোখে পড়ে। যখনই মানুষের পিঠ দেয়ালে ঠেকে গিয়েছে মানুষ তার ইনোভেটিভ আইডিয়া নিয়ে এসেছে এবং আজো সেটা করে যাচ্ছে। আমার মতে মস্তিষ্ক পুরোপুরি ব্লাঙ্ক স্লেট না হলেও খুব অল্প কিছু বেসিক অপারেটিং সিস্টেম নিয়ে আসে। তারপর সেটি ধীরে ধীরে তার জ্ঞান বৃদ্ধি করে। আমি আমার দু’বাচ্চাকে দেখেই বুঝি কিভাবে মানুষের মস্তিষ্ক পর্যায়ক্রমিক ভাবে অভিজ্ঞতা অর্জন করে।
আদিম মানুষের বুদ্ধিমত্তা কম ছিল সেটাও কিন্তু নিশ্চিত হতে পারি না। তাঁদেরকেও যদি একটি কম্পিউটার ধরিয়ে দেওয়া হয়, তারাও কয়েক ঘন্টার মধ্যে বেসিক কিছু কাজ করতে পারবে বলে আমার ধারনা। এরকম একটি কাজ করা হয়েছিল ইন্ডিয়ার কোন এক বস্তিতে। সেখানে একটি বিল্ডিঙ্গের দেয়ালে শুধু মনিটর এবং মাউস প্যাড দিয়ে একটি কম্পিউটার দেওয়া হয়। দেখা যায় কয়েক ঘন্টার মাঝেই, ইংরেজী না বুঝেও, কয়েকজন ঠিকই বেসিক কাজ করতে পারে। তারা নিজেরাই বিভিন্ন জিনিসের নানান নাম দিয়ে ফেলে।
মস্তিষ্ক কিভাবে কাজ করে এটা জানতে পারলে কিন্তু কাজ অনেক সহজই হয়ে যায়। এই বিষয়গুলো নিয়ে মুক্তমনায় আরো লেখা আসুক, আরো আলোচনা হোক, এই আশা করি।
@স্বাধীন,
এই পর্যায়ে এসে মনে হচ্ছে মেমেটিক্স নিয়ে কিছু আলোচনা হলে ভাল হতো। মিম কি জীববিজ্ঞানীদের কাছে গ্রহনযোগ্য কোন তত্ব/অনুকল্প? এটা নিয়ে অনেক গবেষণা হচ্ছে দেখলাম, যদিও জানি না তেমন কিছু। মিম যদি থাকে তবে সেটা কিভাবে ছড়ায়? জিনের সাথে এর সম্পর্ক কি অথবা পার্থক্যই বা কি? কেউ প্রশ্নগুলোর জবাব জানলে দিতে পারেন। আমি লিখে রাখলাম আপাতত। ধীরে ধীরে প্রশ্নগুলোর জবাব খুঁজবো। এই প্রশ্নগুলোর জবাব জরুরী বিশ্বাসের ভাইরাস কিভাবে ছড়ায় সেটা বুঝার জন্য। এটা কি শুধু মাত্র একটি অনুকল্প নাকি এটা জীববিজ্ঞানী মহলে স্বীকৃত?
@ফরিদ আহমেদ,
আপনি তো দেখি ভালই সাকো নাড়া দিতে পারেন।
মানব প্রজাতির খাদ্যাভ্যাস নিয়ে আমার কিছু প্রশ্ন অনেকদিন ধরেই মাথায় ঘুরপাক খাচ্ছে। কেউ খাদ্যাভ্যাস নিয়ে লিখলে সেখানেই নাহয় প্রশ্নগুলো করব।
তাহলে এ্যড্রেনাইলের কাজ কি? এত দিন তো জানতাম যে রক্তে এ্যড্রেনাইলের আধিক্যই উত্তেজনার সৃষ্টি করে। ডোপামিনের কথাও শুনেছিলাম, কিন্তু এ্যড্রেনাইলের কথাই বেশি শুনেছি। এ্যড্রেনাইল কি কোন গ্রন্থি যেটা থেকে ডোপামিন নিঃসরন ঘটে? পিটুইটারি থেকেই বা তাইলে কি নিঃসরন ঘটে!?
এডমিন ভাই
আমার কবিতাটা রিভিউতে দিয়েছিলাম গতকাল।এটা এখনো ছাপা হল না।খুব কষ্টে আছি।
@ইমরান মাহমুদ ডালিম,
এডমিন ভাইদেরকে ইমেইল করুন দয়া করে। এভাবে ব্লগে এসে প্রশ্ন করলে উনাদের চোখে নাও পড়তে পারে ।
‘ডোপামিন’ নিয়ে বেশ কিছু তথ্য জানতে পেরে ভালো লাগছে। এর ফলে আমি নিজের মধ্যে ডোপামিনের নিঃসরণ অনুভব করছি- এটা নিয়ে আরো জানতে ইচ্ছে করছে!
খুবই ইন্টারেস্টিং লাগল লেখাটা।ডোপামিনের ব্যাপারটা এই প্রথম জানলাম।আমার কিছু প্রশ্ন আছে সময় করে উত্তর দেবেন প্লিজ।
১। পারকিনসস রোগটা কি রকম?
২।আপনি লিখেছেন
আচ্ছা মানুষের মাঝে প্রতিযোগিতার বৃদ্ধি কি ডোপামিনের পরিমাণ বাড়িয়েছে নাকি ডোপামিনের পরিমাণ বৃদ্ধি মানুষের মাঝে প্রতিযোগিতামূলক মনোভাব বাড়িয়েছে?
আরো বিস্তারিত পড়ার ইচ্ছে হচ্ছে এ ব্যাপারে। আশা করি সময় করে আমাদেরকে আরো লেখা উপহার দেবেন এ বিষয়ে 🙂
@লীনা রহমান,
অন্ধ প্রেম (Obsessive love), অর্থাৎ কোন একবিশেষ জনের জনের প্রতি নেশার মত তীব্র আকর্ষণ বোধ করা, তার কারণ এই ডোপামিন। ডোপামিনের এই ভূমিকার কথা আমি আমার “ভালবাসা ও বিবর্তন” এ উল্লেখ করেছিলাম গত ভ্যালেন্টাইন/ডারুইন দিবস উপলক্ষ্যে। আর আমার জানা মতে প্রতি্যোগিতার ব্যাপারে (এবং আগ্রাসনে) ডোপামিন নয়, বরং টেস্টোস্টেরনের ভূমিকাই মুখ্য। আর এই হর্মোনের কারণে প্রতিযোগিতার বৃদ্ধি হয়েছে নাকি প্রতিযোগিতা বৃদ্ধির কারণে হর্মোন বৃদ্ধি পেয়েছে এর উত্তর হবে হর্মোনটাই মূল কারণ। বিবর্তনে পরিব্যাক্তির কারণে (Mutation) অনেক বৈশিষ্ট্যই তৈরী হতে পারে। এমন এক বৈশিষ্ট্য অধিক টেস্টোস্টেরন হতে পারে (অর্থাৎ অধিক প্রতিযোগিতার মনোভাব)। আর সেই বৈশিষ্ট্য যদি কাউকে উদ্বর্তনীয় সুবিধা (বা প্রজননগত সুবিধা) দেয় তাহলে সেই বৈশিষ্ট্যটা নির্বাচিত হয়ে টিকে থাকবে, যেমন প্রতিযোগিতার প্রবৃত্তি।
@লীনা রহমান,
উইকিতে আরো বেশি ভাল জানতে পারবেন। tobসহজ করে বললে এই রোগের প্রভাবে মানুষের চিন্তা করার ক্ষমতা কমে যায়, মোটর স্কিল (মানে হাটা চলা, কথা বলা, দৈনন্দিন কাজ করা) ধীর গতির হয়ে যায়। গুছিয়ে চিন্তা করা, পর্যায়ক্রমিক কাজ করা এগুলো কমে যায়। বাংলাদেশে অনেকেরই এখন বয়স কালে এই রোগ হয়। মুষ্টিযোদ্ধা মোহাম্মদ আলীর এই রোগ আছে গত ২৬ বছর ধরে।
বইটির একটি লিঙ্ক দিয়েছি। অনুরোধ থাকবে মূল বইটি পড়ার। আমি শুধু আপনাদের মাঝে আগ্রহটুকু জাগিয়ে দিলাম।
@স্বাধীন, ধন্যবাদ।
খুব ভাল লাগলো। ৫ বছর আগে ডোপামাইন নিয়ে একটা রম্য রচনা লিখেছিলাম।
এখানে দিলাম।
@স্বাধীন, আমাদের সাথে ডোপামিনের পরিচয় করিয়ে দেওয়ার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ। তবে লেখাটা খুব ছোট হয়ে গেছে, অনেক প্রশ্ন কিলবিল করছে মাথায়। লেখক তো দেখি ডোপামিনকে সর্বরোগের ওষুধ বানিয়ে ছেড়েছেন 🙂 । আসলেই কি ব্যপারটা এরকম? মস্তিষ্ক, বুদ্ধিমত্তা, নিউরোলিজিকাল বিবর্তন এই সব জটিল জিনিসের পিছনে এরকম একটা ট্রিভিয়াল ব্যাপার কাজ করছে মেনে নিতে একটু কষ্ট হচ্ছে। এই পুরা ব্যপারটা কি ইতিমধ্যেই বৈজ্ঞানিক কমিউনিটিতে প্রতিষ্ঠিত নাকি হাইপোথিসিসের পর্যায়ে আছে?
@ফাহিম রেজা,
ভাল প্রশ্ন করেছেন। অনেক কিছুই হয়তো হাইপোথিসিস পর্যায়ে (আমার মত)। তবে পারকিনসস রোগের সাথে এর সম্পর্ক এবং অটিজম, ম্যানিয়া, মেন্টাল ডিজঅর্ডার এই সব রোগের সাথে এর সম্পর্ক মনে হয় এখন চিকিৎসা বিজ্ঞানে বেশ প্রতিষ্ঠিত, অন্তত লেখকের মতে। বাকি মানুষের বুদ্ধিমত্তা এবং ব্যক্তিত্ব, চরিত্র এগুলো মনে হয় এখনো হাইপোথিসিস, এটা আমার মতে 😀 ।
চমৎকার লেখা।পড়ে অনেক কিছুই জানতে পারলাম মানব মস্তিষ্কের ক্রিয়া কলাপ সম্পর্কে।
অবশ্য আপনার লেখা পড়তে সব সময়ই ভাল লাগে।