আমাদের মস্তিষ্ক হলো একটা জ্ঞানার্জনের মেশিন, একটা নিউরাল নেটওয়ার্ক যেটা কিনা প্রতিনিয়ত নতুন কিছু শেখার পর নিজে নিজেই মস্তিষ্কের বিভিন্ন অংশের সাথে নতুন নতুন সংযোগের (নিউরাল) সৃষ্টি করে। MRI গবেষণা থেকে বিজ্ঞানীরা নিশ্চিত হয়েছেন যে আমাদের চিন্তা-চেতনার কাজটা মস্তিষ্কের কোন একটা নির্দিষ্ট স্হানে সংঘটিত হয় না বরং পুরো মস্তিষ্কের বিভিন্ন অংশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে হয়ে থাকে। MRI স্ক্যান থেকে আমরা আরও জানতে পারি যে চিন্তা করার প্রক্রিয়াটি আসলে অনেকটা টেবিল-টেনিস (পিং পং) খেলার মত। মস্তিষ্কের বিভিন্ন অংশ একের পর এক জ্বলে উঠতে থাকে যেখানে ইলেক্ট্রিক্যাল কর্মকান্ড মস্তিষ্কের বিভিন্ন অংশে নেচে নেচে বেড়ায়।
বিজ্ঞানীরা অনেক আগেই আবিষ্কার করেছেন যে চৌম্বকীয় তরঙ্গের সাহায্যে মস্তিষ্কের কোন একটি নির্দিষ্ট অংশকে যদি উত্তেজিত করা যায় তবে মস্তিষ্কের কিছু কিছু কাজ নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। বিষয়টা নিয়ে পুরোদমে গবেষণা শুরু হয় ১৯৫০ এর দশকে যখন কানেডিয়ান নিউরো সার্জন ওয়াইল্ডার পেনফিল্ড মৃগী রোগীদের মস্তিষ্কে শৈল্য চিকিৎসা করতে শুরু করেন। তিনি আবিষ্কার করেন মস্তিষ্কের টেম্পোরাল লোবের কিছু নির্দিষ্ট অংশকে ইলেক্ট্রোডের সাহায্যে উত্তেজিত করলে রুগীরা বিভিন্ন রকম ভৌতিক কিংবা অশরীরি অবয়বের উপস্হিতি টের পায়।
মস্তিষ্কের বেশ কয়েকটি অস্বভাবিকতাকে সাধারণ অর্থে বোঝানোর জন্য এপিলেপ্সী বা মৃগীরোগ পরিভাষাটি ব্যবহার করা হয়ে থাকে। কম্পিউটারের মত আমাদের মস্তিষ্কও হলো একটি জটিল সিস্টেম যা কিনা প্রতি সেকেন্ডে প্রায় ৮০টির মত তড়িৎ স্পন্দন দ্বারা চালিত হয়। এই সমস্ত স্পন্দনগুলি বিভিন্ন স্নায়ুকোষের মধ্যে প্রবাহিত হয়ে মস্তিষ্কে চিন্তা-চেতনা, অনুভব, কিংবা স্মৃতির উদ্ভব ঘটায়। এপিলেপ্টিক আক্রমণ তখনই হয় যখন খুব কম সময়ের জন্য মস্তিষ্কে কোন একটি অস্বাভাবিকতার কারণে তড়িৎ স্পন্দনগুলি সেকেন্ডে প্রায় ৫০০ বারের মত প্রবাহিত হতে থাকে। এই স্বল্প সময়ের জন্য মস্তিষ্কে তড়িৎ শক্তির হঠাৎ বৃদ্ধি পাওয়াটা একটি ছোট্ট অংশে হতে পারে অথবা পুরো মস্তিষ্ক জুড়েই হতে পারে। মস্তিষ্কের যে অংশে এই বৃদ্ধি ঘটে তার উপর নির্ভর করে নিম্নোক্ত ঘটনাগুলো ঘটতে পারে।
১) আক্রান্ত মানুষটির সংবেদনশীলতা বা অনুভূতি এবং সচেতন অবস্হার পরিবর্তন সাধিত হতে পারে।
২) পুরো শরীর কিংবা শরীরের নির্দিষ্ট কোন অংগের অনিয়ন্ত্রিত সঞ্চালন শুরু হতে পারে, যেমন হাত-পায়ের খিচুনি।
মনোবিজ্ঞানীরা বলেন মৃগীরোগের কারণ মস্তিষ্কের একটি নির্দিষ্ট অংশ আক্রান্ত হলে রুগীরা অতিপ্রাকৃতিক শক্তি, যেমন ভূত, প্রেত, অপদেবতা, কিংবা ফেরেশতাদের উপস্হিতি টের পায় এবং ধারণা করে তাদের আশে পাশের সংঘটিত বিভিন্ন ঘটনাও সেই সব আত্মারা নিয়ন্ত্রণ করছে। মানুষের মস্তিষ্ককে ঠিক মাঝ বরাবর দুটি ভাগে ভাগ করে বিজ্ঞানীরা তাদের নাম দিয়েছেন বাম গোলার্ধ এবং ডান গোলার্ধ। দুটি গোলার্ধই মানুষের কিছু নির্দিষ্ট ব্যবহারের জন্য দায়ী থাকে। আর গোলার্ধ দুটি নিজেদের মধ্য যোগাযোগ রক্ষা করে ২০০ থেকে ২৫০ মিলিয়ন স্নায়ু তন্তুর সমন্ময়ে তৈরী পুরু একটি ব্যান্ডের সাহায্যে। এই ব্যান্ডটিকে বলা হয় কর্পাস কলোসাম (corpus callosum)।
নিউরো সাইন্টিস্টরা বলে থাকেন বাম টেম্পোরাল লোবের একটি নির্দিষ্ট অংশ যদি আক্রান্ত হয় তাহলে বাম টেম্পোরাল লোব খুব সহজেই বিভ্রান্ত হতে পারে। সেক্ষেত্রে ডান হেমিস্ফিয়ারের যেকোন কর্মকান্ড রুগীর মস্তিষ্ক অন্য আরেকজনের বলে ভাবতে পারে। এই আঘাতের ফলে এমন একটা ধারণা হতে পারে যে ঘরের ভিতরেই ভৌতিক কোন আত্মা আছে। এর কারণ হলো মস্তিষ্কের কোন ধারনাই নাই যে এই উপস্হতিটা আসলে সেটার নিজেরই অন্য অংশটি। সেক্ষেত্রে ব্যক্তির নিজস্ব বিশ্বাসের উপর ভিত্তি করে রুগীটি হয়ত ভাবতে পারে এই ‘অন্য ব্যক্তিটি’ হয়ত কোন অপদেবতা অথবা আলৌকিক কোন স্বত্বা যেমন ফেরেশতা, এমনকি সেটা ইশ্বরও হতে পারে।
উপরোক্ত বৈজ্ঞানিক ধারণাগুলোর উপর ভিত্তি করে কানেডিয়ান নিউরোসাইন্টিস্ট মাইকেল পারসিঙ্গার বৈদ্যুতিক তার সংযুক্ত একটি বিশেষ ধরণের হেলমেট তৈরী করেন যা মস্তিষ্কের বিশেষ অংশকে অনিয়মিতভাবে ওঠানামা করা চৌম্বকীয় তরঙ্গ দ্বারা উত্তেজিত করার মাধ্যমে নির্দিষ্ট কোন চিন্তা বা আবেগের, যেমন ধর্মীয় অনুভূতির, উদ্ভব ঘটাতে সক্ষম। এই হেলমেটের নাম হলো ‘The God Helmet’. The God Helmet আসলে গবেষনাগারে ব্যবহৃত “Koren Helmet” এর বহুল প্রচলিত জনপ্রিয় নাম। লরেন্টিয়ান বিশ্ববিদ্যালয়ের নিউরোসাইন্স ডিপার্টমেন্টের স্ট্যানলি কোরেন একই ডিপার্টমেন্টের ডিরেক্টর ডঃ এম. এ. পারসিঙ্গারের নির্দেশনা অনুযায়ী এই হেলমেট তৈরী করেন। গবেষণায় অংশগ্রহণকারী ব্যক্তিদের মধ্যে অনেকেই তাদের অভিজ্ঞতা বর্ণনা করেছেন এমনভাবে যাকে শুধু আধ্যাতিক অভিজ্ঞতা হিসাবেই আখ্যা করা যায়। ডঃ পারসিঙ্গারের রির্পোট অনুযায়ি অংশগ্রহনকারী ব্যক্তিদের মধ্যে ৮০% এর মত লোকই ঘরের মধ্যে তাদের নিজেদের উপস্হিতি ছাড়াও অন্য আরেকজনের উপস্হিতি টের পেয়েছেন বলে জানান। এদের মধ্যে কেউ কেউ স্বয়ং ইশ্বরের উপস্হিতি টের পেয়েছেন বলে ডঃ পারসিঙ্গারকে জানান।
নিচের ১ ঘন্টা ৪৫ মিনিটের ভিডিওটিতে মস্তিষ্ক বিশেষজ্ঞ টড মারফি পুরো ব্যাপরটি খুব সহজ ভাষায় ভেঙে ভেঙে বুঝিয়ে দিয়েছেন। আরও বিস্তারিত জানতে চাইলে আগ্রহীরা অবশ্যই ভিডিওটি দেখে নেবেন।
http://video.google.com/videoplay?docid=2184059515285733378#
সূত্রঃ
১) Physics of the impossible – Michio Kaku
২) অন্তর্জাল
৩) গুগুল ইমেজ আর্কাইভ
ভাইয়া আমরা কয়েকজন বন্ধু মিলে একটি অনলাইন ম্যাগাজিন প্রকাশ করে থাকি। নাম গ্যালাক্টিকা। আমরা সবাই অনার্স এ পড়ি নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে। যখনি সময় পাই ম্যাগাজিনটি বের করার ট্রাই করি। ম্যাগাজিনের প্রধান উদ্দেশ্য হল বিজ্ঞান বিষয়ক নানা বিষয় সহজ ভাষায় ফুটিয়ে তোলা। আপনার লিখা গুলো অনেক ভালো লাগে। তাই কিছু লিখা দিতে চাই ম্যাগাজিনে। বিশেষ করে এই লিখাটি অনেক ভালো লেগেছে। এটি প্রকাশ করতে চাই যদি আপনার কোন আপত্তি না থাকে।
আমাদের দেশের বেশিরভাগ স্কুল কলেজ পড়ুয়া ছাত্র-ছাত্রীদের বেসিক খুবই দুর্বল। সত্যি বলতে কি আমার নিজেরও। তাই এই ম্যাগাজিনটি করার ইচ্ছা। শুধুমাত্র সখের বসেই করা। খুব খুশি হব যদি আপনি সথে থাকেন। আপনার উত্তরের অপেক্ষায় রইলাম। ধন্যবাদ ভাইয়া ।
ওয়েব সাইট : http://mgalactica.blogspot.com/
ফেইসবুক পেইজ:http://www.facebook.com/mgalactica
চমতকার লাগলো!!
বিশ্বাস নির্ভর চিকিতসা সম্পর্কে কিছু জানতে চাই! :heart:
খুব ভালো লিখেছেন।
@তানভীর চৌধুরী পিয়েল, অনেক ধন্যবাদ। :rose2:
লেখাটি পড়ে অনেক উপকার হল, ধন্যবাদ লেখককে।
@মোজাফফর হোসেন, আপনার উপকারে লেগেছে জেনে ভাল লাগছে। ধন্যবাদ। :rose2:
এর সাথে আরো সম্পর্কিত হচ্ছে বিভিন্ন নেশা জাতীয় দ্রব্য নেওয়ার পরে মস্তিষ্কে যে অনুভূতি লাভ করা হয় তা। এগুলো নেওয়ার পর অনেকে নিজেকে হালকা হালকা অনুভব করে, মনে হয় উড়ে যাচ্ছে। আবার অনেক ক্ষেত্রে সময়-স্থান জ্ঞান লোপ পেয়ে যায়। আবার এই সময় অশরীরি আত্মা কিংবা ঈশ্বরের দেখা পাওয়ার অনুভূতিও সম্ভব। এ কারণেই, মনে হয়, মাজার বা পূঁজায় ঈশ্বরের দেখা পাওয়ার জন্য প্রার্থনার চেয়ে নেশা জাতীয় দ্রব্যের উপরই ভরসা করে বেশি :-Y ।
@স্বাধীন
মন্তব্য দু’বার হয়ে গেলো 😥 । প্রথমবার মনে হলো যায় নি, কিন্তু এখন দেখা যাচ্ছে গিয়েছিল 🙁 ।
@স্বাধীন,
একটি মুছে দিয়েছি। Internet Explorer ব্যবহার করছেন তাইনা? কমেন্ট ঠিকই পোস্ট হয় কিন্তু মাঝে মাঝে স্ক্রিণের নিচে চলে যায়,রিফ্রেশ করল আবার ঠিক আসে। এক্সপ্লোরার ছাড়া আর কোনো ব্রাউজারে এই সমস্যা হয় না(অন্য অনেক সমস্যার জন্য এই কথাটা সত্য)
@রামগড়ুড়ের ছানা,
ধন্যবাদ। হু, IE ব্যবহার করছি। এই সমস্যাটি জানি। কিন্তু আজ কেন যেন মনে হল আসলেই যায় নি। আমি সাধারণত মন্তব্য করার পর আবার রিফ্রেশ করে তারপর দেখে নেই। আজ রিফ্রেশ হতে অনেক সময় নিচ্ছিল তাই মনে হল যে যায়নি 🙁 ।
IE ব্যবহারে চোখ/মন অভ্যস্থ হয়ে গেছে, তাই অন্য ব্রাউজারে আর যাওয়া হয় না। এটাই মানুষের বিশ্বাসের সমস্যার মূলে। একটি বিষয়ে অভ্যস্থ হয়ে গেলে, সেটা বিশ্বাস হোক কিংবা ব্রাউজার হোক, নিতান্ত বাধ্য না হলে সে আরা সুইচ করতে চায় না। যদি অন্য নুতন ব্রাউজার বর্তমান ব্রাউজার হতে বৈপ্লবিক কোন সুবিধা প্রদান না করলে তার পুরোনোটা ছেড়ে যাওয়ার কোন কারণ নেই। এ কারণেই সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষ নিতান্ত বাধ্য না হলে তার প্রচলিত বিশ্বাসের পথ হতে সরে আসে না। তার বর্তমান বিশ্বাস ব্যবস্থায় ছোট/খাটো গলদ থাকলেও সে সেগুলোকে ইগনোর করে হলেও চেষ্টা করে বর্তমানটাকেই আকঁড়ে ধরে কোন ভাবে জীবনটাকে পার করে দিতে। এই সহজ কথাটাই সব সময় বলার চেষ্টা করি। নাস্তিকতা অবশ্যই উন্নতর যুক্তিবাদী পথ কিন্তু তা সাধারণ মানুষের জন্য কোন বৈপ্লবিক সমাধান দিচ্ছে না তার দৈনন্দিন জীবনে। তাই দলে দলে মানুষ বিশ্বাসের পথ হতে সরেও আসছে না।
@স্বাধীন ভাই,
গুগল ক্রোমটা ব্যবহার করে দেখতে পারেন। বেশ ভালো। 🙂
এক্সপ্লোরারের থেকে প্রায় সবই ভালো। এক্সপ্লোরার সবথেকে পেইন দেয় ওয়েব ডেভেলপারদের। ব্যবহারকারীরা কোনো সমস্যা হলেই আগে ভাবে ওয়েবসাইটে সমস্যা,সমস্যা যে ব্রাউজারে হতে পারে এটা বুঝেনা,তাই অনেকক্ষেত্রেই এক্সপ্লোরারের জন্য আলাদা ভাবে কোড লিখতে হয়। ৮ আসার পরেও সমস্যা তেমন কমেনি।
স্বাধীন ভাইয়ের কথাগুলোতে যুক্তি আছে। আমিও এরকম ভাবছিলাম কিছুদিন ধরে। আমরা যারা লিনাক্স ও ওপেন সোর্স প্রসারের চেষ্টা করছি তাদের জন্যও একটা বড় সমস্যা এই পরিবর্তনকে গ্রহণ না করার মানসিকতা।
অপ্রাসঙ্গিক কথা হয়ে যাচ্ছে,হোরাস ভাই ক্ষেপে যেতে পারে 😀 ।
@বাবা রামগড়ুড়ের ছানা,
এই সুযোগে জিজ্ঞাসা করি।
মুক্তমনায় কি প্রিয় বা ফেবারিট জাতীয় কিছু এড করা যায়, আমার ব্লগে যেমন আছে? তাহলে খুব সুবিধে হয়। নিজের পছন্দের আর্টিকেলগুলি অনেক দ্রুত পাওয়া যায়। এই ফিচারটা খুবই কাজের।
@আদিল মাহমুদ, ফেবারিট পোস্টের ব্যাপারটা আমার মাথায় আছে। আগেও কয়েকজন বলেছে এই কথা। চেষ্টা করব ফিচারটি যোগ করার।
@স্বাধীন, যাদের এ ধরণের ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা আছে তাদের কথা নিয়ে একটা সংকলন বের করলে ব্যাপারটা বেশ ভাল হবে বলেই মনে হয়।
@হোরাস,
নিজের একটি মারাত্মক অভিজ্ঞতা রয়েছে, বলতে পারি। নেশা বলতে মূলত সিগারেটেই সীমাবদ্ধ ছিল তবে সেটাও বেশি খেতে পারতাম না, বেশি খেলে মাথা ধরতো। আর এর চেয়ে বেশি বলতে বুয়েটের কনসার্টের সময় মাঝে মাঝে গাঁজা খাওয়ার সৌভাগ্য হয়েছিল, ঝিকাতলার কিছু দোস্তদের সাথে থেকে। কিন্তু সমস্যা হলো ঢাকার গাঁজাগুলো নাকি খাঁটি না, তাই খাওয়ার পর তেমন কোন পার্থক্য বুঝতাম না সিগারেটের অনুভূতির সাথে :-X ।
তো ময়মনসিংহেও আমার কিছু বন্ধু ছিল। একবার সেখানকার গাঁজা খাওয়ার সৌভাগ্য হয়েছিল এবং বলাই বাহুল্য সেই আমার শেষ গাঁজা খাওয়া। আর সিগারেটও ছেড়ে দিয়েছি বছর তিনেক হয়ে গেল 😛 । যা হোক, সেই গাঁজা যখন টানি তখন পট পট হয়ে গাঁজা ফোটার শব্দ পর্যন্ত পাওয়া যাচ্ছিল। ঘটনার সময়কাল শীতকাল এবং রাত দশটা হবে। আমি কয়েক টান দিয়ে আর দেইনি, তাতেই আমার মাথা কেমন করছিল। তারপর সবাই যখন আসর ভেঙ্গে উঠলো আমি দেখি আমার শরীর কেমন হালকা হালকা লাগছিল, পা সোজা করে ফেলতে পারছি না। আমার সাথের বন্ধু একটি রিক্সা ডাক দিল। আমরা তিনজনে একটী রিক্সায় উঠলাম। রিক্সায় উঠার সময় আমার পা হঠাৎ করে পিছলিয়ে গেল। সেই শুরু :-Y ।
সেই মুহুর্তের পর থেকে আমার সময়জ্ঞান হারিয়ে গেল। আমার বুকের মধ্য এমন যেন একটি হিম শীতল অনুভূতি হতে লাগলো। যেখনই সেই হিম শীতলতার ছোঁয়া পেতাম মনে হতো যে আমি মারা যাচ্ছি, চার পাশে সব কালো, আমি সেই কালোর মধ্যে পড়ে যাচ্ছি। তখন আমি বাবার কথা ভাবা শুরু করি। একটু পরেই আবার হিম শীতল ভাবটা চলে যায়। এভাবে কিছুক্ষন পর পর হিম শীতল ভাবটা আসে আর যায়।
এর মধ্য আমার যে বন্ধু, যারা বাসায় আমি অবস্থান করছি তার তো নেশা ছুটে গেছে আমার অবস্থা দেখে। তার দু’জন আমাকে বলার চেষ্টা করছে চোখ বন্ধ করে রাখা, সব ঠিক হয়ে যাবে। কেন যে আমাকে তারা এই জিনিস খেতে দিল ইত্যাদী। আমি তাঁদের কথা মত চোখ বন্ধ করার চেষ্টা করি। কিন্তু এখানে একটি সমস্যা দেখা দেয়। আমি যদি চোখ বন্ধ করি তবে রিক্সার দুলুনীতে আমার মনে হয় যে আমি আসলে বিছানায় শুয়ে এপাশ ওপাশ করছি। আমি মনে হয় মারা যাচ্ছি। সবাই আমাকে বলছে চোখ বন্ধ করতে। কিন্ত আমি চোখ বন্ধ করি না, ভয়ে। আমার মনে হচ্ছিল যে আমি রিক্সায় ছিলাম, কিন্তু তার পর আমার বন্ধুরা আমাকে বাসায় নিয়ে এসেছে, এবং এই মুহুর্তে আমি বিছানায় শুয়ে এই সব করছি। এ রকম একটি দোঁটনায় চলে বেশ কিছুক্ষন।
এর মাঝেও আমি চেষ্টা করছি, লজিকাল চিন্তা করার, যদিও খুব কঠিন ছিল সেটা। আমি এক পর্যায়ে শক্ত হলাম। ভাবলাম যেহেতু আমার নিজের উপর কন্ট্রোল নেই, তাই নিজে আর কিছু করবো না। বন্ধুদের উপর বিশ্বাস রাখতে পারি। তারা যা বলবে তাই আমি করবো। জিজ্ঞেস করলাম, আমি এই মুহুর্তে কোথায়, বাসায় নাকি রিক্সায়। তারা বললো তুই রিক্সায় আছিস এখনো। তোকে এই অবস্থায় কেমনে বাসায় নেই সেটাই চিন্তা করছি। আমি মনে মনে চিন্তা করলাম, ওকে, আমি এখন রিক্সায়। বন্ধুরা যা বলে সেভাবেই আমি চলবো। আমি আমার টাইমে ফিরে আসার কিছুক্ষন পরেই দেখলাম যে, আমার মাঝের অস্থিরতাটুকু চলে গিয়েছে। ভয়াবহ হিম শীতলতার ভাবটুকু আর নেই। মারা যাচ্ছি না সেটা বুঝলাম 😀 । এটা আমার মানসিক চিন্তার কারণেও হতে পারে, আবার গাঁজার প্রভাব কমে যাওয়ার কারণেও হতে পারে। তবে, অনেকেই নেশার সময় পাগলামো করলেও সেটা মনে রাখতে পারে না, কিন্তু আমার প্রতিটি অনুভূতি মনে রয়ে গিয়েছে। যদিও আমি আমার বন্ধুকে বলে রেখেছিলাম, কাল সকালে ঘুম থেকে উঠে যদি আমি সব ভুলে যাই, কি কি করেছি সব বলবি। সেটার আর দরকার পড়েনি 🙂 ।
আমি বুঝলাম সবার জন্য নেশা না। সেই শেষ। এর পর আমার সাহস হয়নি অন্য কোন নেশা জাতীয় দ্রব্য চেষ্টা করে দেখতে। তাই মস্তিষ্কের এরকম অবস্থায় মানুষ সেই কালোর মাঝে বা মৃত্যুর আগ মুহুর্তের অনুভুতির সময় ঈশ্বরের দেখা কিংবা কোন আলোর দেখা, কিংবা মৃত কারোর দেখা পেতে পারেন। অনেকে সেটাকে মাজেঝা ভেবে নিতে পারেন যে সেই ব্যক্তি বা অশরীরি আত্মা তাকে বাঁচানোর জন্যই এসেছিল।
সেপটেমবরের ২৩ তারিখে বিবিসিতে প্রচারিত “The End of God- A Horizon guide to Science and Religion” এ এই “গড হেলমেট” এর বিষয়টা দেখেছি। বেশ পোটেনশিয়াল একটা গবেষণা, সন্দেহ নাই।
@পৃথিবী, ডকুমেন্ট্রিটা দেখতে হবে। ধন্যবাদ। :rose2:
এই হল অাসল ঘটনা।
মনে হয় এ ব্যাপারে অারো বিস্তারিত লেখা অাপনার কাছে পাব। :yes:
@আসরাফ, ধন্যবাদ। চেষ্টা করব। :rose2:
ঠিক যখনই আমি প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম আমার মুক্তমনায় ২০০৪ সালে প্রকাশিত ইংরেজী “Religion and the Brain” পোস্টটির বাংলা অনুবাদ করে “ধর্ম বনাম মস্তিষ্ক” নামে ব্লগে এক পোস্ট পাঠাবার, তখনই হোরাসের এই চমৎকার লেখাটি ব্লগে দেখলাম। আমার লেখা পাঠাবার ইচ্ছায় গুড়ে বালি। 😥 কিন্তু কোন আফসোস নেই। কারণ হোরাসের এই লেখা আমার ঈপ্সিত লেখার চেয়ে প্রাঞ্জল ও সাবলীল হয়েছে। আর তাছাড়া আমার অনুবাদে এরকম সুন্দিওর চিত্রও থাকত না। আর অনুবাদ করার পরিশ্রম থেকেও বেঁচে গেলাম। :laugh: হোরাসকে অভিনন্দন সুন্দর সচিত্র লেখার জন্য।
@অপার্থিব, হায় হায় বলেন কি! আপনার লেখাটাও দিয়ে দিন। আমি নিশ্চিত সেটাও পড়তে ভিন্ন স্বাদের হবে। এরকম লেখা যত বেশী হবে ততই লাভ।
ইংরেজি লেখটা সময় করে পড়ে নেব। লিঙ্কের জন্য ধন্যবাদ।
মুহম্মদ থেকে রামকৃষ্ণ সবাই যে অপরাক্ষ ঈশ্বর দর্শনের দাবী করে গেছেন -সেটা যে মস্তিস্ক্বের হ্যালুশিনেশন সে ব্যাপারে ত সন্দেহ নেই। এই ব্যাপারে আরো অনেক গবেষনা লদ্ধ ফল আছে-কিভাবে মাথায় স্পেস টাইমের সেপারেশনের যে অনুভূতি সেটা লোপ পেতে পারে-লোকে এক অলীক ডাইমেনশনের মধ্যে ঢুকে ঈশ্বরের সাথে কথা বলিলাম বলে দাবী করতে পারে -যা যীশু মহম্মদ থেকে অসংখ্য ভারতীয় গুরু করেছে।
কিন্ত তারপরেও এদের ধাপ্পাবাজিতে লোকে বিশ্বাস করে কেন? সেই উত্তরটা কিন্ত নিউরোসায়েন্স দিয়ে আসবে না। শক্তিশালী সমাজের জন্ম দেওয়ার জন্যে সেই যুগের জন্যে ইসলামের বানী কিন্ত ঠিকই ছিল আজকে তা যতই হাস্যকর বা অমানবিক লাগুক না কেন। সেটাত মহম্মদের কোন হ্যালুশিনেশন থেকে আসে নি-এসেছে গভীর উপলদ্ধি বোধ থেকে। বা রামকৃষ্ণ কথামৃতও একটি আশ্চর্য দার্শনিক সৃষ্টী ( সবটা না, কিছু কিছু ক্ষেত্রে)-উপলদ্ধির বেশ গভীরে গেলে ওইসব গল্পগুলো উঠে আসে। তাহলে এই লোকগুলোর এই গভীর উপলদ্ধির উৎস কি?
আমার ত মনে হয় এরা অনেক বেশী ফোকাস করতে পারত-অনেক গভীরে গিয়ে ভাবতে পারত-যেটা মেডিটেশনের বাই প্রোডাক্ট।
@বিপ্লব পাল, আসলে আমার পোস্টের লক্ষ্য ইশ্বরের অস্তিত্ব আছে বা নেই কোনটাই প্রমাণ বা অপ্রমান করা না। কিংবা নবী, রাসুল, অবতারদের ধাপ্পাবাজী প্রমাণ করাও না। আমি শুধু এ ব্যাপারে বিজ্ঞানের কি বক্তব্য সেটাই তুলে ধরেছি। এখন এর থেকে কে কি সিদ্ধান্ত নেবে সেটা যার যার নিজস্ব ব্যাপার।
আর ঐ লোকগুলোর গভীর উপলদ্ধি করার ক্ষমতার ব্যাপারে যা বল্লেন সে ব্যাপারে একমত। গভীর চিন্তা-ভাবনা করার ক্ষমতা না থাকলে এত অসংখ্য লোককে বোকা বানানো সম্ভব ছিলো না।
@হোরাস,
তথ্যবহুল এমন একটি লিখার জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ। এ বিষয়ে অভিজিৎদার লিখা অনেক আগেই পড়েছি।
সহমত। ঐ লোকগুলোর জীবন ইতিহাস জানার পর যে জায়গাতে আমরা একমত হতে পারি তা হলো ” বহু সংখ্যক লোককে প্রভাবিত করার ক্ষমতা”। তাদের সবারই এ ক্ষমতা ছিলো পুরা দস্তর।
@Golap, ঠিক বলেছেন, চাপাবাজির ক্ষমতা না থকলে শুধু ট্যালেন্ট দিয়ে খুব বেশি দূর এগিয়ে যাওয়া সম্ভব না।
@বিপ্লব পাল,
এ ধরনের দাবী বেশীরভাগই ধাপ্পা ঠিক।
তবে হ্যালুসিনেশন মানেই যে অবশ্যই ধাপ্পাবাজি এমন কি বলা যায়? যিনি এই রোগের বশবর্তী হয়ে নানান গায়েবী আওয়াজ শোনার বা ফেরেশতা/দেবী দূর্গা দর্শনের দাবী করেন তার সেসব দাবী ভ্রান্ত সন্দেহ নেই, তবে তিনি তো এটা ইচ্ছাকৃতভাবে বানিয়ে বলেন না। তিনি মস্তিষ্কের কিছু অস্বাভাবিক ক্রিয়া কলাপের ফলেই তেমন দাবী করেন। তিনি নিজে অন্তত ১০০% নিশ্চিত যে তিনি সত্য বলছেন। কাজেই এদের তো ধাপ্পাবাজ বলা যায় না।
@আদিল মাহমুদ,
আমি ঠিক এতটা সহজ ভাবে নিতে পারলাম না। সদালাপে দেখুন বিতর্ক চলছে রাম বা কৃষ্ণ নবী না-কিন্ত মহম্মদ নবী-কারন মহম্মদ নিজেকে শেষ এবং শ্রেষ্ঠ নবী হিসাবে দাবী করেছেন!!!
এইসব দেখে আপনার কি মনে হয় না অধিকাংশ মুসলমান [ এবং হিন্দু বা খ্রীষ্ঠান দের ক্ষেত্রেও সত্য শুধু % টা কম হবে] দের মস্তিস্ক শিশু বয়সে ধর্মভীরুতা জনিত ড্যামেজ থেকে বেড়তে পারে না এবং সেই জন্যে এদের মনের বয়স কিন্ত বারে না। নাহলে কেও বাচ্চা ছেলেদের মতন ” আমার বাবাই শ্রেষ্ঠ বাবা কারন আমার বাবা তা দাবী করেছেন, তোমার বাবা তা দাবী করে নি-এই টাইপি ছেলেমানুষি নিয়ে ব্লগ লিখতে পারে না দাবী করতে পারে?”
জাকির নায়েক সেসব কথা বলে বেড়ায় যেকোন সুস্থ পরিণত মাথায় সেটা কিকরে কেও হজম করে? এটাত পরিস্কার ধর্মভীরুদের [ এবং এখানে মুসলমান কথাটা বেশী আসে যেহেতু এই ধর্মে সংস্কার বা আলো আসা বন্ধ হয়েছে বহুদিন] মস্তিস্ক শিশুসুলভ-নইলে ত্রিশ চল্লিশ বছর বয়স্ক কয়েকটা লোক কি করে নিজেদের মধ্যে সিরিয়াস আলোচনা করতে পারে আমার বাবাই আসল নবী কারন তিনি তা দাবী করেছেন-বাকীরা দাবি করে নি!!!
এদের কীর্তি এবং যুক্তি দেখে হাঁসাত অনেকই যায়-কিন্ত সমস্যা হচ্ছে শাসক শ্রেনী এই শিশুসুলভ সরল বিশ্বাসকে আশ্রয় করেই তাদের শোষন অব্যাহত রাখছে।
@বিপ্লব পাল, :laugh:
রাম লক্ষন নবী কিনা সেসব বিতর্কের ক্ষেত্রে আপনার কথাই সত্য। ধর্ম ভীরুতা বিষয়েও আপনার মতবাদ সঠিক। প্রথাগত ধর্মগুলির মূল ভীতই আছে সেখানে।
তবে আমি বলতে চেয়েছিলাম যে হ্যালুসিনেশন হল যেকোন শারীরিক রোগের মতই একটা রোগ, শুধু এটাকে রোগ হিসেবে জানতে পেরেছি বেশীদিন আগে নয় এই যা।
কাজেই এই রোগে ভুগে কেউ উদ্ভট কিছু দেখা বা শোনার দাবী করলে সেতাকে ধাপ্পাবাজি বলা যায় না। তাকে অসূস্থ হিসেবেই গন্য করে চিকিতসা করাতে হয়। আজকালকার দিনে কেউ গায়েবী আওয়াজ শুনলে তাকে মানসিক রোগী হিসেবেই চিকিতসা করা হয়। মুসলমান প্রধান দেশ বাংলাদেশেও করা হয়। জ্বীন ভূতের সাথে সাক্ষাতের বাস্তব অভিজ্ঞতাও আজকাল অনেক কম শোনা যায়। আমাদের ছোটবেলাতেও এ ধরনের গল্প মেলা শুনতাম।
জ্বীন ভূতেরাও আজকাল বিজ্ঞানের আবিষ্কারের সাথে কো-অপ করে করে আর কুলিয়ে উঠতে পারছে না, তাই দ্রুত পালিয়ে যাচ্ছে।
@বিপ্লব পাল,
:laugh:
@বিপ্লব পাল,
:lotpot:
বন্যা আহমেদ,
আপনার সাথে একমত। আমারো তা মনে হয়েছে। ঈশ্বরে বিশ্বাস আর ভুত-প্রেত এর উপস্থিতি টের পাওয়া মনে হয় এক নয়। প্রথমটি সম্ভবতঃ বিবর্তনীয় ধারায় সততঃ প্রবাহমান একটি ব্যাপার যা মানুষের যুগ যুগের অনুসন্ধানী মনোবৃত্তির প্রভাব আর দ্বিতীয়টি মানুষের মস্তষ্কের সার্বিক কর্মকান্ডের ত্রুটিজনিত ফলাফল। লেখাটি সত্যিই ভালো লেগেছে, তবে আরো বিস্তারিত হতে পারতো।
হোরাস, লেখাটা খুব গুরুত্বপূর্ণ, এ নিয়ে আজকাল অনেক গবেষনা হচ্ছে। প্রযুক্তিগতভাবে আমরা এতদিনে এই ধরণের গবেষনাগুলো থেকে অর্থপূর্ণ ফলাফল পাওয়ার মত অবস্থায় এসেছি। কিন্তু লেখাটা বড্ড ছোট হয়ে গেছে, মনে হল ঠাস করে কলমটা ( মানে কিবোর্ডটা ) বন্ধ করে দিলেন। এধরণের বেশ কিছু বিষয় একসাথে করে আরও কতগুলো পর্ব লিখে ফেলুন না!!
ভৌতিক কিংবা অশরীরি অবয়বের উপস্হিতি টের পাওয়া আর গডে বিশ্বাস করার মধ্যে বোধ হয় পার্থক্য আছে, প্রথমটার জন্য ( আপনি যেমন বলেছেন) মাথার দুই একটা তার ছিড়ে যেতে হয় বা ঢিলা থাকতে হয় :laugh: , কিন্তু সাধারণভাবে ধর্ম বা গডে বিশ্বাসটা আমাদের মস্তিষ্কে সাধারণভাবেই কাজ করতে পারে, এর কিছু চমৎকার বিবর্তনীয় ব্যাখ্যা আছে। কিছু মন্তব্য পড়ে মনে হল অনেকে এ দুটোকে মিলিয়ে ফেলছেন।
@বন্যা আহমেদ,
এব্যাপারে কোন দ্বিমত করছি না। তবে গবেষকরা যে ব্যাপারটা তাদের গবেষণা থেকে তুলে এনেছেন তা হলো স্বয়ং ইশ্বর কিংবা দেবদূত বা ফেরেশতাদের উপস্হিতি টের পাওয়াটা। তারা বলছে তারা যে ঘরে গবেষণায় অংশ নিচ্ছিলেন সেই ঘরে স্বয়ং ইশ্বর উপস্হিত ছিলেন। এখানেই পার্থক্যটা, এটা তখন আর শুধুমাত্র ইশ্বর বিশ্বাসে সীমাবদ্ধ ছিলোনা।
ধন্যবাদ। :rose2:
@বন্যা আপা,
আপনার সাথে একমত। তবে এইসব ঈশ্বর দর্শন বা অলীক অনুভুতি মনে হয় সেই বিশ্বাসে দৃঢ়তা দেয়। সেই জন্যেই ও কথা বলেছিলাম। 🙂
আরেকটা ব্যাপার একটু যোগ করতে চাচ্ছি আপনি কিছু মনে না করলে।
অনেকের মধ্যে পরীক্ষা চালিয়ে দেখা গেছে, তারা তাদের মেডিটেশনের যে পর্যায়ে কোন কিছুর(ঈশ্বর বা কোন অশরীরি কিছু) অস্তিত্ব অনুভব করে, তখনকার মস্তিষ্কের ইমেজ ধর্ম ব্যতিরেকে একই হয়। মানে হল, বৌদ্ধদের ক্ষেত্রে বা অন্যান্য যেকোন ধর্মের মানুষের ক্ষেত্রেই মস্তিষ্কের এই ইমেজ একই হয়।
এর থেকে বোঝা যায়, ঈশ্বর বা অশরীরি সব কিছুই ভুয়া।
ধন্যবাদ চমৎকার লেখাটার জন্য।
@সাইফুল ইসলাম, না না কিছু মনে করব কেন? লেখাটা আপনার ভালো লেগেছে জেনে খুশী হলাম। ধন্যবাদ। :rose2:
অনেক কিছু জানতে পারলাম লেখাটি পড়ে। ধন্যবাদ।
১ম প্যারাতে ফন্ট সমস্যা ছিল,ঠিক করে দিয়েছি।
@রামগড়ুড়ের ছানা, আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। :rose2:
অসাধারন তথ্যপূর্ন লেখা, তবে আমারও মনে হল যে লেখাটি বড় বেশী ছোট হয়েছে।
ভূত প্রেত আত্মা দর্শন বা প্যারানর্মাল বিষয়ে মস্তিষ্কের এই আচরন দিয়ে ভালভাবেই ব্যাখ্যা করা যেতে পারে। কোন কোন প্যারাসাইকোলজিষ্টের মতে মস্তিষ্কের স্বাভাবিক কর্মকান্ড কোন কারনে বাধাগ্রস্থ হলে এ ধরনের অভিজ্ঞতা হতে পারে। ভূ-পৃষ্ঠের ইলেক্ট্রো-ম্যাগ্নেটিক ফিল্ড এর বড় ধরনের তারতম্য নাকি এমন পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে পারে। আবার অনেকের মতে এই ধারনার কোন ভিত্তি নেই।
@আদিল মাহমুদ, আপনার সাথে একমত লেখাটা অবশ্যই আরও বড় হতে পারত। মস্তিষ্কের স্বাভাবিক কর্মকান্ড ব্যহত অনেক গুলো কারণেই হতে পারে। এর মধ্যে কয়েকটি খুব সাধারণ কারণ হলো স্ট্রেস, ঘুম না হওয়া, ফ্লাশিং লাইটস অথবা শব্দ যেমন টিভি বা ভিডিও গেমের শব্দ, রক্তে সুগারের পরিমাণ কমে যাওয়া.. ইত্যাদি ইত্যাদি ইত্যাদি….
লেখাটি ভাল লাগলো, কিন্তু লেখাটি আরো বড় হওয়ার দাবী রাখে। মস্তিষ্ক নিয়ে সাম্প্রতিক গবেষণাগুলোর একটি ভালো লিটেরাচার রিভিউ বাংলায় থাকা দরকার। ভালো কোন রেফারেন্স কি জানা আছে কারোর?
@স্বাধীন, আজকাল মস্তিষ্কের গবেষনা নিয়ে বইএ বাজার ছেয়ে গেছে, যে কোন বই এর দোকানের জীববিজ্ঞানের সেকশান দেখলেই বোঝা যায় নিউরলজিসহ মস্তিষ্কের বিভিন্ন গবেষনা এখন কতটুকু গুরুত্ব পাচ্ছে। মুশকিলটা হল এই গবেষনাগুলো এত নতুন এবং এত দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলেছে যে বইগুলো খুব তাড়াতাড়ি আউট ডেটেড হয়ে যায়। আমি এখন তাই বিভিন্ন বৈজ্ঞানিক ম্যাগাজিন পড়ার চেষ্টা করি। অপেক্ষাকৃত পপুলার বিজ্ঞানের ম্যাগাজিন হিসেবে সাইন্টিফিক আমেরিকান মাইন্ডটা বেশ ভালো, এটা নেড়েচেড়ে দেখলে মোটামুটিভাবে কি কি নিয়ে গবেষনা চলছে, প্রযুক্তিগতভাবে আমরা এক্ষেত্রে কতটুকু এগিয়েছি তা বোঝা যায়।
@বন্যা আহমেদ,
রেফারেন্স দেওয়ার জন্য অনেক ধন্যবাদ। :rose2:
@স্বাধীন, আপনার সাথে একমত। লেখাটি আরও অনেক বড় হতে পারত। তবে আমার কিছু সীমাবদ্ধতার কারণে আসলে লেখালেখির পিছনে খুব বেশি সময় দিতে পারি না। ধন্যবাদ। :rose2:
ভাল লাগল!
অনেক রহস্যের অবসান হতে পারে এ পথে!
আমি একবার আমার পরলোকগত মামাকে
কিছুটা আলো আধাঁরিতে হাটতে দেখেছিলাম!
এ বিষয়টা নিউরোসাইন্টিস্টা হয়ত ভবিষ্যতে ভালভাবে ব্যাখ্যা
করতে পারবে।
@লাইজু নাহার,
হু, এসব দেখা যায় আলো-আঁধারিতে। একবার ভাবেন , এই মৃত লোকের আত্মা, জ্বীন-ভুত-প্রেত এগুলো প্রখর আলোতে কেন দেখা যায় না? প্রখর আলোতে দেখতে সমস্যা কোথায়? এছাড়া আরেকটি বিষয় দেখেন- আমরা কোনো বস্তু দেখে থাকি তখনই যখন কোনো আলোক উৎস থেকে আলো ঐ বস্তুতে প্রতিফলিত হয়ে আমাদের চোখে পড়ে। তাই ঠিক অন্ধকারে কোনো কিছু আমাদের দেখার কথা নয়। আর দেখলেও ওটা ইল্যুসন ছাড়া আর কিছু নয়- আমরা কিন্তু স্বপ্নও দেখে থাকি, তাই না? আর আলো-আধারিতে এ ধরণের বিভ্রমের সম্ভাবনা একটু বেশি থাকে।
আমার মাঝে মাঝে মনে হয় ঐ অন্ধকারের অস্তিত্ব না থাকলে হয়ত ঈশ্বর-ফেরেশতা-জ্বীন-ভুত-প্রেত এগুলোর ধারণা মানুষের মধ্যে আসত না।
@সৈকত চৌধুরী,
আপনার ইতিবাচক এ্যাপ্রোচ নিয়ে দেয়া ব্যাখ্যাটা ভাল লাগল!
সবার মধ্যে এসব থাকেনা! 🙂
অনেক শুভেচ্ছা!
@লাইজু নাহার, আপনার মামকে দেখার ব্যাপারটার নিশ্চয়ই একটা যৌক্তিক ব্যাখ্যা আছে। আমরা আশাবাদি ভবিষ্যতে বিজ্ঞানীরা হয়ত আমাদের চিন্তা চেতনার সাথে মস্তিষ্কের বিভিন্ন অংশের এক্টিভিটির সম্পর্ক স্হাপন করে একটি পুর্নাঙ্গ ডিকশনারী পাব্লিশ করতে সক্ষম হবে।
আপনার লেখা পড়ে অনেক তথ্য জানলাম। ধন্যবাদ।
@সুমিত দেবনাথ, আপনাকেও অনেক ধন্যবাদ লেখাটি পড়ার এবং মন্তব্য করার জন্য। :rose2:
এই হেলমেট ডকিন্সের মাথায় ও লাগানো হয়েছিল। লাভ হয়নি। ডকিন্স কোনো ঐশ্বরিক অনুভূতি পাননি। পারসিঙ্গার এর কারণ হিসেবে আন্দাজ করেছিলেন যে ডকিন্সের টেম্পোরাল লোবের সেন্সিটিভিটি সাধারণের চাইতে অনেক কম।
@মিথুন,
ঠিক কথা! আমি আত্মা নিয়ে একটা সিরিজ লিখেছিলাম। সেখানে এই গড হেলমেট নিয়ে লিখেছিলাম। ডকিন্সের মাথায় কাজ না করার ব্যাপারটাও এসেছিলো। দেখুন – আত্মা নিয়ে ইতং-বিতং (শেষ পর্ব)
@অভিজিৎ, আপনার লেখার লিঙ্কটার জন্য ধন্যবাদ। এটা নিয়ে আপনার এরকম গবেষণাধর্মী একটা লেখা আছে জানলে কি আর এইরকম ফাঁকিবাজী একটা পোস্ট দেই। 🙁
@হোরাস,
হাসালেন! আপনার লেখা ফাঁকিবাজি???
তাহলে আরো বেশি করে এরকম ফাঁকিবাজি লেখা লিখুন। আমার সো-কল্ড ‘গবেষণাধর্মী’ লেখার চেয়ে অনেক ভাল!
বন্যার সাজেশন মেনে এ নিয়ে আরো কিছু পর্ব লিখুন।
@মিথুন, রিচার্ড ডকিন্স বাকী ২০% লোকের মধ্যে পরেছেন যারা এরকম অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হননি। আমার ব্যক্তিগত ভাবে মনে হয় এধরণের অভিজ্ঞতার জন্য মাইন্ডসেটটাও বোধহয় সেরকম হতে হয়। যার যত অতিপ্রাকৃতিক জিনিষে বিশ্বাস আছে তার অভিজ্ঞতাও মনে হয় তত বেশী সেরকম হবে।
@হোরাস,
হায়, হায়! বলেন কী? আমার শিগগিরই নিজ চোখে জ্বীনের উপস্থিতি দেখার জন্য নাটোরের জমিদার বাড়িতে যাওয়ার কথা। 🙁
—
লেখাটি খুব ভালো। 🙂
@বিপ্লব রহমান, সাথে করে ব্যাকাপ হিসাবে কিছু নিয়ে যায়েন। পাব্লিক কিসব নাকি খায় আর কি কি নাকি দেখে, ঐ জিনিষ। 😉
ফিরে এসে অবশ্য অবশই আপনার অভিজ্ঞতা শেয়ার করতে ভুলবেন না যেন।
@হোরাস,
এই পরীক্ষাটা মনে হয় ফলপ্রসূ হত আরেকভাবে।
যেসব লোকে কোনদিন জ্বীন ভূত, ঈশ্বর ফেরেশতা, দেব দেবী এদের কথা শুনেইনি তাদের এই হেলমেট লাগিয়ে পরীক্ষা করলে কি ফল হয় তা দেখা যেত। হয়ত দেখা যেত যে এরা হেলমেট লাগানোর ফলেও কোনরকম অস্বাভাবিক কিছুর দেখা পায়নি।
মুশকিল হল এই শ্রেনীর স্যাম্পল জোগাড় করা মনে হয় সম্ভব নয়
@আদিল মাহমুদ, আরেক ভাবে পরিক্ষাটা করা যায়। মনে করেন আইওয়ার গ্রামের জন ডো কোনদিন শ্যাওড়া গাছের উপর মামদো ভূত দেখবে না আবার উড়ির চরের রহিমুদ্দিন কোনদিন ভুট্টা ক্ষেতের ডিজাইন করা এলিয়েন দেখবে না। এটা মোটামুটি নিশ্চিত। 🙂
দুর্দান্ত!! যে কয়জনের লেখা আমি একাধিক বার পড়ি আপনি তাদের মধ্যে একজন।
মানুষ ঠিক কী কারণে ঈশ্বর, ফেরেশতা, জ্বীন-ভুত ইত্যাদি হাবিজাবিতে বিশ্বাস করে ও তাদের সাথে যোগাযোগ বা তাদের দর্শন পাবার অনুভূতি লাভ করে তা বিশদ ভাবে জানা জরুরী।
আশার কথা, এগুলো নিয়ে গবেষণা এগিয়ে যাচ্ছে।
@সৈকত চৌধুরী, আপনার প্রশংসা আমাকে আরও বেশী বেশী লেখার জন্য উৎসাহিত করে। ধন্যবাদ। :rose2:
নিচে স্বাধীনকে বলা বন্যা আহমেদের উত্তর দ্রষ্টব্য। এ ব্যাপারে গবেষণা প্রচুর হয়েছে এবং হচ্ছে কিন্তু আমরা আম জনতা সেসব সম্পর্কে খুব একটা খবর রাখি না।