১.
In the name of God, Most Gracious, Most Merciful
1. Say: He is God, the One and Only;
2. God, the Eternal, Absolute;
3. He does not beget, nor is He begotten;
4. And there is none comparable to Him. (Al-Akhlas:112)
আব্রাহামিক ধর্মগুলির মধ্যে একেবারে আধুনিকতম হলো ইসলাম| উপরের ঘোষণা ইসলাম কে আলাদা করে দেয় তার অপরাপর পূর্বসুরী ধর্মগুলি থেকে, ইহুদি একেশ্বরবাদের বিশুদ্ধিকরণ ও খ্রিস্টীয় ট্রিনিট্রিয় গোঁজামিলকে অস্বীকার করে| তবে শুধু এই তাত্ত্বিক জায়গাতেই যদি ইসলামের মহত্ত্ব সীমিত ধরে নেই, ধরে নেই যে সুরা ইখলাসের সৌন্দর্য্যে বিমোহিত হয়েই সকলে ইসলাম গ্রহণ করেছে , তাহলে অন্তত বঙ্গদেশে ইসলামের প্রচার ও প্রসার কে ব্যাখ্যা করা যাবে না| কারণ হিন্দু রাজা কর্তৃক অত্যাচারিত, হিন্দু সমাজ কর্তৃক অস্পৃশ্য-অযোগ্য ঘোষিত শ্রেণীসমূহ, যারা বুঝেছিল স্বীয় বাহুবল/মস্তিষ্ক বলে তাদের অবস্থার পরিবর্তনের কোন সম্ভাবনাই নেই, সেই অংশটি ইসলামের Egalitarianism দ্বারা আকৃষ্ট হয়েই স্বধর্ম বিচ্যুত হয়েছিল বলে মনে হয় | এর আগেও তারা একই কারণে গৌতম বুদ্ধের প্রতি অনুরক্ত হয়েছিল| মুশকিল হলো রাজধর্মের সাথে প্রজাধর্মের মিল না হলে, কিছু ক্ষেত্রে রাজার রাজ্য শাসন মুশকিল হয়ে পড়ে, বিশেষত সনাতন ব্রাহ্মণ্যবাদের ক্ষেত্রে | তাই সর্বহারা প্রজার ধর্মের উপরও কর্তৃত্ব করা চাই তার| বৌদ্ধ ভিক্ষুরা বাংলা ছেড়ে পালালো, অস্পৃশ্য-অযোগ্য সেই আগের অবস্থানেই রয়ে গেল| অন্তত অশোকের পর থেকে ভারতের এই অংশটির এরকমই চলছিল| আবার যখন ইসলাম একই শ্লোগান নিয়ে সামনে আসলো, তখন লাভের মধ্যে লাভ হলো: রাজশক্তি থেকে ব্রাহ্মণ্যবাদ বিতারিত| রাজা মুসলমান, প্রজাও মুসলমান হবার সুযোগ পেল| সেই হলো বাংলার ইসলমী কৌমের(!) শুরু|
এইখানেই একটু বিবেচনার বিষয় আছে| আমি ইসলামের প্রথম কৌমকেই আদর্শ কৌম বলে ধরতে চাই | অনেকেই আমার সাথে হয়ত একমত হবেন| কেউ গুণগত সমীক্ষার পর, আর কেউ নিছক কৌম নেতা(মুহম্মদ স:)র প্রতি সম্মানের জায়গা থেকে| এর পর কি কি পরিবর্তন এসেছে? ইসলাম আরবের চৌহদ্দিতে আসতে না আসতেই, রাজনীতির কুটিল চক্রে জড়িয়ে গেল অভিজাত কুরাইশদের কল্যাণে, আততায়ীর হাতে খুন হলেন খলিফারা, পরিবারতন্ত্র শুরু হয়ে গেল | খলিফা আমলের গ্যারিসনভিত্তিক আগ্রাসনের জায়গায় সাংস্কৃতিক, ধর্মীয় আগ্রাসন শুরু হলো| এর পর ইসলাম ছড়ালো একদিকে ইরাক ও পারস্যে, অন্যদিকে আফ্রিকার উত্তর উপকূলে | এ পর্যন্ত আসতে না আসতেই কৌম আর একটি মাত্র ভিত্তি বিশ্বাসের জায়গা রইলো না, অনেকগুলি মতবাদ(school) তৈরী হলো| রাজধানী মক্কার জায়গায় এরই মধ্যে কখনো দামেস্ক, কখনো কুফা, কখনো বাগদাদ| আরেকটা ঐতিহাসিক ঘটনা এরই মধ্যে ঘটে গেল, মঙ্গোলিয়ান আক্রমণ, এটিকে অনেক ইসলামিক মনে করেন ইসলামের প্রথম বড় পরাজয়, আবার অনেকেই এটিকে দেখেন ইসলামের বিজয় হিসেবে, কেননা মঙ্গোলিয়ান খানদের অনেকেই পরাজিত ধর্মটিকে গ্রহণ করেছিল| আমি প্রথম দলে| ইসলামের সংকোচন বা কুন্ঠার শুরু হলো চেঙ্গিস খানের আক্রমণ থেকে| কৌমের বিভক্তির শুরুও সেখান থেকেই|
এর পর কৌমের সেনাপতিরা স্পেনে ঢুকছেন পশ্চিম দিকে, আর ভারতে ঢুকে যাচ্ছেন পূর্বদিক দিয়ে | আর কোন বিজিত জাতি যা পারে নি ভারতবর্ষে তাই করে দেখালো মুসলমান অধিগ্রহণকারী| হিমালয়ের বাধা যদি একমাত্র বড় কারণ হত তাহলে অনেক আগেই সেই বাধা অনেকে পার করেছিলেন, কিন্তু পারেন নি বাকি কাজ সমাধা করতে| মহামতি কার্ল মার্ক্সের মতে কারণ , “ইংরেজ আগমনের পূর্বের সবগুলি বিজয়ী জাতির সভ্যতার চেয়ে সিন্ধু সভ্যতা উন্নততর ছিল|” এইখানে মার্কস ভুল করে বসেছিলেন| কারণ তিনিও পশ্চিমের প্রভাব মুক্ত নন| ইউরোপের শৌর্যের উত্তরাধিকার তার মধ্যে ছিল| পূর্বের রীতিনীতি ভালো করে বোঝার মানসিকতা তথাকথিত রেনেঁসা থেকে পাওয়া যায় নি | রেনেঁসা দিয়ে ছিল লুথারিয় ধর্মীয় সংশোধনবাদ, উপনিবেশবাদ, বুর্জোয়া শিল্প বিপ্লব ইত্যাদি| মার্কস কে একটু শুধরে দেয়া যায় চাইলে| মার্কস ইংরেজের সাফল্যকে পশ্চিমা রং লাগাতে চেয়েছেন| তার দৃঢ় বিশ্বাস ছিল, ইংরেজ না হলে জার্মান(!) ইত্যাদি, না হোক অন্তত নিচুজাত স্লাভরা হয়ত জয় করতই ভারতকে| পশ্চিমাদের ভুল তো স্পষ্ট| ইংরেজ যেটা করেছে অস্ত্রবলে, বুদ্ধিবলে ধোঁকাদিয়ে, সেটা ইসলাম কিভাবে পেরেছিল? এটা কি সিন্ধু সভ্যতার উপর আরব সভ্যতার জয়? না| তাহলে আরব সভ্যতার পরাজয়? তাও না (এখানে কিন্তু মার্ক্স এর ব্যাখ্যা অধিবিদ্যক!!!)| তাহলে? মার্ক্সের/ডারউইনের তত্ত্বেই এর উত্তর মিলে, এবং সে ব্যখ্যা রীতিমত দ্বান্দ্বিক| সিন্ধু-গঙ্গা অববাহিকা যেমন করে আর্য-অনার্যের মিথিস্ক্রিয়ার স্থান করে দিয়েছিল, তৈরী হয়েছিল সনাতন ধর্ম(একটি ধর্ম নয়)| তেমনি আরব হয়ে পারস্যের ভিতর দিয়ে আসা বিজিতের সাথেও ঘটে গেল সম্মেলন, কিছুটা ধর্মের, বাকিটা সেই যে গ্যারিসন ভিত্তিক শাসন ব্যবস্থা ছিল, যা কিনা সামন্ত সমাজ ব্যবস্থার জন্য সবচেয়ে উপযোগী না হলেও, সনাতন ব্রাহ্মণ্যবাদ যে অবস্থা তৈরী করে রেখেছিল তার চেয়ে শ্রেয়তর, বিবর্তনের পথেই ছিল| আরো অধিক কাল পশ্চিম মুক্ত থাকলে অবস্থা কি হতো সেটা অন্য ভাবনার বিষয়|
আবার ফিরে যাই বঙ্গদেশে মুসলমান আগমনের সময়ে| যে ইসলামকে বাঙালি গ্রহণ করলো, সেটা যে প্রথম কৌমের ইসলাম নয় তা নিশ্চিত| সেটা আজ থেকে প্রায় হাজার(৯০০) বছর আগেকার কথা| আর প্রথম কৌম থেকে মাত্র পাঁচশ বছর পরের কথা| ততদিনে অনেকগুলি মতবাদ-মতভেদ তৈরী হয়ে গেছে এবং গ্রহণকারীর ধর্ম নির্ভর করছে প্রচারকারীর ধর্মের উপর| আহমাদিয়া/শিয়া/বাহাই কি মুসলমান? আমরা কি একে কোরানিক ধর্মসমূহ বলতে পারি? যে নামেই বলি না কেন, খলিফা উমর ফারুকের পর থেকে প্রত্যক্ষভাবে, এবং ইতিহাস বলে আবু সুফিয়ান ইত্যাদির ইসলাম গ্রহনের সাথে সাথে পরোক্ষভাবে রাজনীতি শুরু, এবং ইসলামের মতবাদগুলির মধ্যেও বিরোধের সূত্রপাত| আমরা অবশ্যই ভুল করব যদি বলি যে এই মতবাদ সমূহ শুধু রাজনৈতিক কারণে অর্থাৎ কৌমের নেতৃত্বের লড়াই থেকে শুরু| অনেকগুলি মতবাদের ভিত্তি একেবারে খাটি আধ্যাত্মিক, বিশ্বাসের সাথেও জড়িত, কিছু মতবাদ আবার একেবারে তত্ত্বীয় তারতম্যের কারনেও সূচিত হয়েছে| আমি নিজে ইসলাম বলতে শুধু প্রথম কৌমের ধর্মটিকেই মানতে চাই, কিন্তু সে কৌমের আকার ছোট, পরিধি শুধুই মক্কা-মদিনা ও তার আশপাশ এবং এর পরবর্তী বহু রাজনৈতিক-আধ্যাত্মিক সংশোধন/পরিবর্ধনের স্থান নেই| কিন্তু সেই সবের পথনির্দেশ রয়েছে| তবে আশার বিষয়টা এরকম যে, একই সাথে যখন অনেকগুলি মতবাদ উপস্থিত, তখন এগুলির সাথে তুলনার জন্য একটি আদর্শ(প্রথম কৌমের ধর্ম) বিদ্যমান, সেহেতু “ইসলাম” বললে তার রেফারেন্স প্রথম কৌম থেকেই শুরু করতে হবে, সেই অর্থে বর্তমান মতবাদগুলিকে ব্যক্তিগত বিবেচনা ও কিতাব সমূহের একান্ত বিষয়ীগত(subjective) অনুবাদের(interpretation not translation) , যতক্ষণ না পর্যন্ত পরবর্তী ঐশী চরিত্রের আবির্ভাব না হচ্ছে|
২.
এবার আসা যাক “নাস্তিক্যবাদ” ও “সেক্যুলার” প্রসঙ্গে| প্রথমেই নাস্তিক্যবাদ| নাস্তিকের সাথে আস্তিকের বিরোধের জায়গা কোথায়? ইশ্বরের অস্তিত্ব সংক্রান্ত যুক্তি তে, তর্কে| একমাত্র সম্পর্কের জায়গাটিতে এই নাস্তিক বেচারা ধার্মিকের চেয়েও অসহায়| সে নিজের অস্ত্র বলে দাবি করে কখনো মুক্ত চিন্তাকে, ব্যর্থ হলে দর্শনকে, সেখানেও ব্যর্থ হলে বিজ্ঞানকে| বিজ্ঞান ব্যর্থ না| তবে সে নাস্তিকের উদ্দেশ্য সমাধা(serve the purpose) করে না| বিজ্ঞান চলে নিজের পদ্ধতিতে| বিজ্ঞান ধার্মিকের উদ্দেশ্যও সাধন করে না| নাস্তিক এর ভাষা বিজ্ঞানের ভাষা থেকে আলাদা, কারণ বিজ্ঞানের ভাষা ধর্মের ভাষা-আস্তিকের ভাষা থেকে আলাদা| আস্তিক ও নাস্তিক উভয়েই বিজ্ঞানকে কাছে রাখতে চায়| বলা যায় ব্যবহার করতে চায়| কোন এক গোষ্ঠীর পার-নাস্তিক ড: অমুক তমুক এর সাথে ইসলাম প্রচারকারী ড: জাকির নায়েকের কিন্তু এখানে যথেষ্ট মিল রয়েছে| আমি জাকির নায়েক কে “ইসলাম” প্রচারকারী বলছি বটে, কিন্তু এখানে যথেষ্ট তর্কের সুযোগ রয়েছে| এর আগের অনুচ্ছেদ গুলিতে এটার কারণও কিন্তু ব্যাখ্যা(subjective reasoning) করার চেষ্টা করেছি| নাস্তিকের মতে আস্তিক যুক্তিবাদী না, আস্তিকের কাছে নাস্তিক অবিশ্বাসী| এই দুইটি ধারনাই প্রমাণ করে যুক্তি ও বিশ্বাস সম্পর্কে আস্তিক ও নাস্তিক উভয়ের ধারণার অসার জায়গা টি| বিশ্বাসের জায়গায় উভয়েই বিশ্বাসী, তবে ভিন্ন তাদের বিশ্বাস, আর যুক্তির জায়গায় উভয়ের তর্ক বিশ্বাসকেই অনুসরণ করে| এদের অস্ত্রগুলি কি? কখনো ভাষা, কখনো বিজ্ঞান, কখনো রাজনীতি, অর্থাৎ যেখানে যে পাথর কুড়িয়ে পাওয়া যায়, তাই ছুড়ে মারো| উভয়েই হয়ে যেতে পারে গোঁড়া ও মৌলবাদী| কারণ ঈশ্বরের অস্তিত্বের প্রমান/অপ্রমান তাদের সাধ্যের কর্ম নয়| আস্তিকের বোঝা দরকার এটা শুধু ঈশ্বর নিজেই পারেন| আর নাস্তিক ? তার জন্য অনেকগুলি পন্থা আছে| নিজের সাথে তর্ক চালিয়ে যাওয়া/অজ্ঞতাবাদী হয়ে যাওয়া/প্রচলিত ধর্মের বাইরে ঈশ্বরকে খোঁজা| পরেরটাতে সে ব্যক্তি আর নাস্তিক থাকে না | আস্তিক্যবাদের বিপরীতে এইগুলিকে দাড়া করলে আমরা যা পাই তা হলো, এগুলি একেক ধরনের পর্যবেক্ষণ, বিষয়ীগত| নৈর্ব্যক্তিক কোন সত্য এদের নেই(কোথাও কি আছে?), ফলে এরা অন্য কোন নৈর্ব্যক্তিক সত্য কে সত্য বলে মেনেও নিবে না| মজার ব্যাপারটি হলো এরাও দল বড় করে| কারণ এরা এক ধরনের শূণ্যতা তৈরী করে ফেলে এদের মনোজগতে, অথচ বিজ্ঞান এদেরকে বলে শূণ্যতা নেই. বাস্তবের বাইরে কোন কিছু থাকলে সেটার জন্য বাস্তবের যে সঠিক ব্যখ্যা বিজ্ঞান করতে চায়, সেটা যদি কোন ভাবে অবাস্তবের পক্ষে যায়, এরা আঁতকে উঠে স্বভাবজাত কারণেই| অথচ বিজ্ঞানের সে বিষয়ে মাথাব্যথা কিন্তু কমই| অজ্ঞতাবাদী যখনই দ্বন্দ্বকে অস্বীকার করতে চাইবে তখনই সে তার সংশয়ের উর্ধ্বে কোন এক বিশ্বাসকে স্থান দিবে, যা তাকে দাঁড়া করিয়ে দেবে অন্যদের সাথে একই কাতারে যার সাথে সে ভিন্নতা দাবি করে| অজ্ঞতাবাদীর সমালোচনা করা এইখানে বিষয়ের অনেক বাইরে চলে যাওয়া হবে|
এর পর আসা যাক “সেক্যুলার” বিষয়ে| এই টার্মটা ইউরোপীয়| আমরা ইউরোপের ভক্ত, কারণ দীর্ঘদিন আমাদের পূর্বপুরুষ হিন্দু-মুসলিম, ইত্যাদি ইংরেজের তথা ইউরোপের চাকর হয়েই ছিলেন| ফলে ইউরোপীয় প্রভুরা যখন আমাদের “সেক্যুলার” ইত্যাদি নানা ইউরোপীয় তকমার মর্ম শেখাতে আসে তখন আমরা হৃদয়/মস্তিস্ক কোনভাবেই না মানতে/বুঝতে পারলেও তার প্রতি সম্মান দেখাই| “সেক্যুলার” মানে ধর্মহীনতা/ধর্মনিরপেক্ষতা এটা নিয়ে তর্ক করার আগে, পশ্চিমের “religion” ও প্রাচ্যের “ধর্ম” এর সংজ্ঞা যে ভিন্ন এটা মনে রাখতে হবে, বুঝতে হবে| এখনো পর্যন্ত যেহেতু মুক্ত/একক বিশ্বের উদ্ভব ঘটেনি তাই এই পার্থক্য নিয়েই আগাতে হবে| যারা এই পার্থক্য মানেন না তার হয় সময়ের চেয়ে এগিয়ে গেছেন, অথবা পাশ্চাত্য মানবতার পক্ষে আছেন| ফলে ফরাসীবিপ্লব + শিল্পবিল্পব + ইউরোপীয় রেনেঁসা+… থেকে উদ্ভুত গোষ্ঠী যা পুঁজির উপর, বিশ্ববাজারের উপর, বৈশ্বিক সম্পদের উপর করায়ত্ত করতে চায় খুব স্বাভাবিক ভাবেই, সেই একই গোষ্ঠী ব্যবহার করতে চায় বিশ্ব সংস্কৃতি-ধর্ম-ভাষা ইত্যাদিকে| সেই আগের কার মতন| এই সেক্যুলার দাবিটি এক সময় রাজার সাথে চার্চের ও ঈশ্বরের সম্পর্ককে ছিন্ন করেছিল| সামন্ত সমাজের অবসান ঘটেছে, কিন্তু সেই সমাজের থেকে নিজের প্রয়োজনীয় টুকুকে রেখে অপ্রয়োজনীয়টুকু বাদ দেয়ার কাজটি সুবিধাবাদী/মালিকেরা ভালো মতই সমাধা করেছেন| এবং এখনো চালিয়ে যাচ্ছেন| রাশিয়ান সমাজতন্ত্রের যুগে এদের মন্ত্র ছিল “মুক্ত বাজার”, এবং এখন এদের মন্ত্র হয়ে দাঁড়িয়েছে, “ধর্মনিরপেক্ষতা/ধর্মহীনতা”, “সন্ত্রাস” ইত্যাদি, উদেশ্য একই: বৈশ্বিক পুঁজি-বাজার-সম্পদ এর উপর নিয়ন্ত্রণ হাসিল| নিউইউর্কের কোন এক গলিতে মসজিদ তৈরীতে বিরোধিতাও সেক্যুলারিসজম, ফ্রান্সে নারীর পর্দা তথা বোরকাকে নিষিদ্ধ করা বা সুইজর্ল্যন্ডে মসজিদের মিনার নির্মানের উপর নিষেধাজ্ঞা, সকলই বোধ করি সেক্যুলারিজম বা পশ্চিমী মানবতার পক্ষে| এমনকি ঐ বিশেষ সেক্যুলার-নাস্তিক গোষ্ঠীর ড: অমুক তমুক দেরকে এই যুক্তি দিতেও দেখা যায়, হিন্দুর সংস্কৃতি বাঙালি আর মুসলমানের সংস্কৃতি খুচুড়ি, আরবের হাতে পাকানো| সেকুলার মার্কিন মুলুকে মন্দির-গির্জা যার যার সংস্কৃতিকে বহন করে যায়, মসজিদ শুধুই সন্ত্রাস ছড়ায়| আরেকটা যুক্তি শুনি, যুক্তরাষ্ট্রের বাইরের মুসলমানেরা নাকি যুক্তরাষ্ট্রের ভিতরের মুসলমানদের কথা চিন্তা না করেই যুক্তরাষ্ট্রকে মুসলমানের শত্রু ঘোষণা করে| তাদের জন্য বলি, ইউরোপের-যুক্তরাষ্ট্রের উদার মানবতাবাদীরা এখন তার ভুখন্ডে মুসলমানের জনসংখ্যা বৃদ্ধিতে অসন্তুষ্টি প্রকাশ করছে প্রকাশ্যে| কিন্তু ইহুদি-মার্কিন লবি’র(!) লক্ষ্য শুধুই ইসলাম ও মুসলমানের ধ্বংস, এহেন কূপমন্ডুকীয় ধারণাতেও আমি বিশ্বাস করি না, এই ইহুদি-মার্কিন লবিও সাময়িক| ইউরোপীয় শক্তির ইহুদি নিধনের/বিনাশের ইতিহাস ভুলে যাবার নয়, এবং সেই কারণটিও শুধুই ধর্মীয় নয়, অর্থনৈতিকও বটে| ধর্মীয় বা অন্য কোন ধরনের জাতীয়তাবাদে তাই এর উত্তর পাওয়া যাবে না, যদিও লড়াই এর আপাত অস্ত্র হিসেবে জাতীয়তাবাদ ব্যবহৃত হতেই পারে| তাহলে মুখোশটা মানবতার, শ্লোগান সেক্যুলারিজমের কিন্তু আসল কথা যেন তেন উপায়ে উদ্দেশ্য হাসিল| উদ্দেশ্য আপনার মসজিদ দখল না, উদ্দেশ্য আপনার ঘর দখল করা| বিশ্বযুদ্ধের সময়টাকে ইহুদির (ধর্মের) বিরুদ্ধে যুদ্ধ হিসেবে নিলে ভুল করাই হত, যদিও তাতে জাতিগতভাবে তারাই সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল|
৩.
একটু আগের অংশে ফিরে যাওয়া দরকার| অর্থাৎ বঙ্গে ইসলাম প্রসঙ্গে| সোজা কোথায় আমার বাংলাদেশ| ইতিহাসকে ব্যখ্যা যেখানে না করলেই নয় সেই সব খানে করতেই হবে, অন্তত নিজের পক্ষটাকে, নিজের অবস্থানতাকে স্পষ্ট করে তলার জন্য| কোন এক অদ্ভুত উপায়ে পাকিস্তানের জন্ম হয়েছিল| ভেঙ্গে গেল| এর মধ্যে শুধু “বখতিয়ারের ঘোড়া” দেখলে আল মাহমুদের মতন জামায়াতে এছলামির প্রতি সহানুভুতিশীল হওয়া যায়, সেই ক্ষেত্রে অস্বীকার করা হয় বাংলাদেশের অভ্যুত্থানকে| যে ভাবে একজন হিন্দু সাতশ বছরের ইতিহাসকে অধীনতার ইতিহাস বলে দাবি দাবি করে(রবীন্দ্রনাথ) একই ভাবে একজন মুসলমান যদি “বখতিয়ারের ঘোড়া”র স্বপ্নে বিভোর হয়ে থাকে তাহলে সে নিজের জন্ম ইতিহাসকেই অস্বীকার করে| তার মানে খন্ডিত আকারে দেখার ও বোঝার কোন উপায় নেই| বাংলাদেশের ভুখন্ড আপাতত নির্দিষ্ট| পাকিস্তান আমলে, “বখতিয়ারের ঘোড়া” / “সিন্দাবাদের ঘোড়া” কোনো স্বপ্নই টিকে নি| জন্ম হয়েছে এক অভূতপূর্ব কিন্তু পূর্ব আঘ্রাত ভুখন্ডের| ইতিহাস বাংলার এই স্বাধীনচেতা, নিজের ধর্ম সংস্কৃতিকে টিকিয়ে রাখার কথা বলবে| মহাভারতে জরাসন্ধ্র আর মোগল আমলের প্রতাপাদিত্য/বারো ভুইঁয়ার কাহিনী সেই সাক্ষ্য দেয়| পদ্মা-মেঘনা বিধৌত মাটির তলায় পুরাতাত্ত্বিক নিদর্শন তেমন পাই না, তথাপি এই জাতির গর্বের কোন কমতি ঘটে কি? ঘটে তখনই যখন আমাদের মূলসুরটুকু আমরা বিস্মৃত হই| সেটা ঘটে এবং হরহামেশাই ঘটে| লুটপাট ঘটে ধর্মের নামে, আগুন লাগে| শুধুই কি ধর্মের জায়গাতেই আমাদের বিচ্যুতি? উহু|
৪.
ড: জাকির নায়েকের সাথে আমার প্রথম পরিচয় টিভিতে তার অনুষ্ঠান দেখে| আমি ঈশ্বরের যে সংজ্ঞার অনুসারী জাকির তার থেকে ভিন্ন| তাই জাকিরের ও তার বিরুদ্ধবাদীদের তর্কাতর্কির কোনকিছুই আমার অনুসন্ধানের অংশ হবার কথা না| কিন্তু হয়ে যায়| কারণ আমি বাংলাদেশের মানুষ| আমি জাকিরকে দেখি চায়ের স্টল, পুরীর দোকান, মধ্যবিত্তের ড্রয়িং রুম-বেড রুম, কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের(!) আড্ডা ইত্যাদি নানা জায়গায়| আমি কোনোভাবেই এই জায়গাগুলি থেকে নিজেকে সরিয়ে বাংলাদেশের কোথাও নিজেকে ভাবতে পারি না| কারণ এর বাইরে যে অল্প জায়গাগুলি আছে সেসব বদ্ধস্থানে আমি শান্তিও পাই না| তাহলে জাকিরকে আমার নিজের জন্যই দরকার| জাকির থেকে পালাতে হলে আমাকে বাংলাদেশ থেকেই পালাতে হবে, অথবা এর মধ্যে থেকে জাকিরের সাথে বোঝাপড়া করতে হবে| জাকির কি সর্বগ্রাসী? এই যে চায়ের দোকান-পুরীর দোকান বলতে বলতে বৃত্তটাকে প্রায় বাংলাদেশের সমান করে ফেললাম, এটা কি ঠিক হলো? না ঠিক হয় নি| পুরোপুরি ঠিক হয় নি| জাকির নাস্তিক্যবাদের চেয়ে যে সর্বগ্রাসী তাতে সন্দেহ নেই| নাস্তিক বিষ বই-পুস্তক, ওয়েব সাইট ছেড়ে পুরীর দোকানে যায় না| আর সেকুলার? সে তো বিশ্বব্যাপী ইসলামকে শত্রু বানিয়েই রেখেছে| আমি তো নাস্তিক না, সেকুলারও না| আমার বন্ধু যে কিনা ঈশ্বরে বিশ্বাসী এবং প্রথম কৌমের ইসলামকে আদর্শ ভাবে, তার কি দশা? অথবা যে লোকগুলি জাকির ভিন্ন অন্যান্য মতবাদগুলির বিশ্বাসী(এমন হতে পারে প্রত্যেকেই যার যার বিষয়ীগত পর্যবেক্ষণ ও বিবেচনা থেকে) অথবা আমার হিন্দু-খ্রিস্টান বন্ধুগনের কি দশা? এই সব বিশ্বাসের জায়গাতে জাকির কিছুনা কিছু উত্পাত করেই, সেই দোষে জাকিরকে আক্রমণ করে লাভ নেই, বিশ্বাসসমূহের মধ্যে তুলনার তো প্রশ্নই আসে না| আসছে মিথ্যা তথ্য ও কু-যুক্তি প্রদান| এ জায়গায় জাকির আসলে পারদর্শী নয়| আমার এক জ্ঞানী বন্ধু এই ভাবে জাকিরের প্রতি বিদ্বেষের বিরুদ্ধে, এমন কি দেলোয়ার হোসেন সাইদীকেও সে ছাড় দিতে চায়| তার অবস্থানের পুরোটা অংশ জুড়ে উদারনৈতিকতা-বাক স্বাধীনতা-ব্যক্তিস্বাতন্ত্র্যবাদ ইত্যাদি ইত্যাদি| আমি আরো একটা জুড়ে দিতে চাই, সেটা হলো সুবিধাবাদ| এর মধ্যে আছে মজা-দেখনে ওয়ালা লোকজন| আরো নানা ধরনের মতবাদের লোক| অনেকেই জাকির নায়েকের কথা শুনে, অনেকে না শুনে, কেউ ইসলাম, কেউ ইন্ডিয়া, কেউ চরমপন্থা, কেউ হিন্দু-কেউ খ্রিস্টান, কেউ ইহুদিপ্রেম/বিদ্বেষ, কেউ মার্কিন-পশ্চিম প্রেম-ঘৃনা থেকে নানা ভাবে জাকিরের সাথে জড়িয়ে পড়ছে| আর না হলে এই লেখা পড়ে, কিংবা জাকির সংক্রান্ত খবরাখবরেও আমরা জাকিরের সাথে জড়িয়ে পড়ছি| আরো আছে, এক দেশে জরিপ হচ্ছে কতলোক বউ কে ভয় পায় আর কত লোক পায় না, তা নিয়ে| এক লোক বুঝতে পারছে না কোন দিকে যাবে? শেষে ভাবে, বউ বলেছিল “যেদিকে লোক কম” সেদিকেই যাই|
জাকিরকে এখন আর “কোন খবর না”/”অপ্রয়োজনীয়” ঘোষণা করার উপায় নেই| পক্ষ-বিপক্ষ দুই ই প্রবল| আর তাই একে এড়িয়ে যাবার উপায় নেই| আমি হিন্দু হই আর নাস্তিক হই আর সংশয়বাদী হই! জাকির বাংলাদেশে আসছে| জাকিরের মুখোমুখি আমি হচ্ছি এক ভাবে না এক ভাবে| আমার প্রতিবেশী, আমার বন্ধু কেউ না কেউ যাচ্ছেন/যাবেন জাকিরের সমাবেশে, উপরের নানা কারণে| প্রভাব থাকছেই| তাহলে আমি কি করব?
জাকিরকে কানাডা আমেরিকা ভিসা দেয় না, আমরাও দিব না, এটা একটা কু-যুক্তি| কর্মপন্থা স্থির করা যায়, বিশেষ করে জাকিরে যাদের মাথাব্যথা খুব বেশি তারা বই পুস্তক আর ওয়েব সাইটের দুনিয়া ছাড়াও চায়ের স্টলের দুনিয়াতে গেলে কাজ আগাতে পারে| অন্তত পাবলিক টিভি-রেডিওর পথে| অনেকের মতে জাকির যে যুক্তিতে, যে মতে কথা বলে সেই ভাবে তার সাথে তর্ক করা যায় না| কিংবা তর্ক করে তার প্রয়োজনীয়তার জায়গা ধ্বংস করা যাবে না| নিষ্ক্রিয় থাকলে তার ভক্ত-কূলে ভাটাও আসবে না| আপনি শুধু একা হবেন| মেরুকরণের জগতে আপনি আরো অসহায় অনুভব করবেন, বৌয়ের কথায় ফাঁকা জায়গায় যাবেন, সেটিও নিরাপদ নয় আর|
৫.
জাকির আসছেন, জাকির হয়ত আসবেন, চলেও যাবেন| আমাদের সরকারের অবস্থাটি কি? কোনো ভাবে কি একে বাংলাদেশের বর্তমান বিরাজমান রাজনৈতিক অবস্থার সাথে মেলানো যায়? চাইলে যায় কিন্তু| ১৯৯৬ এর সাথে এই সরকার ও সরকারী দলের কিন্তু গুণগত পার্থক্য আছে| এবারে তার সাথে আছে অনেকেই স্বৈরাচারী, বাম, ডান, সুশীল ইত্যাদি ইত্যাদি| ফলে সে প্রতুলের ভিসাকে যেরকম অস্বীকার করছেনা, জাকিরের ভিসাতেও তার বেশি আপত্তি নেই| বিশেষ করে দেশদ্রোহী রাজাকারগুলির বিচার যখন ঘটছে, অযোধ্যার রায় হচ্ছে ঠিক সেই মুহুর্তে জাকিরের উপস্থিতির ফায়দা কিভাবে নিবে আওয়ামী লিগ? ভিসা প্রত্যাখ্যানের প্রশ্নই আসে না| কারণ এটি বিপদবাহী হতে পারে| আমি নিজেও সরকারের এহেন বিপদ চাই না| জাকির আসুক| এইখানে এই ভূমিতে জাকিরকে কিভাবে মোকাবেলা করবেন তাই ভাবুন|
পুনশ্চঃ জাকির নায়েক বা শাহরুখ খান বাংলাদেশ এ আসা বা না আসা কতোটা প্রভাব ফেলে জানি না । তবে স্যাটেলাইটের কল্যাণে তাদের আলোয় বহুকাল পূর্ব হতেই আমরা উদ্ভাসিত । নীলক্ষেতে কোনো কোনো বইয়ের দোকানে জাকির নায়েক সর্বাধিক বিক্রীত ।আলোচনা-সমালোচনায় মুখর আমাদের উলুবনের বাঘের মতোন দশা । প্রগতিশীলদের কাজ আসলে কি? অশ্লীলভাবে কাঁদা ছোড়া-ছুড়ি করা আর জাকির নায়েক দের প্রশস্ত পথ আরও মসৃণ করে তোলা । কারণ স্বঘোষিত কাগুজে প্রতিক্রিয়াশীল অংশটি না পারে আমজনতার উপর প্রভাব বিস্তার করতে, না পারে প্রকাশ্যে জাকির নায়েক দের চ্যালেঞ্জ জানাতে । জাকির নায়েক দের পাশাপাশি কখনও কখনও রাষ্ট্রযন্ত্রকে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দেবার মতোন ব্যাপার ঘটে । কাঁদাছোড়া খেলায় মত্ততার ফাঁক দিয়ে জাকির নায়েক রা বের হয়ে যায় রাষ্ট্রযন্ত্রের উপর ভর করে ।
প্রশ্নের তূণ কখনও ফাঁকা হয় না । ক্লাস্টার বোমা ছুটে আসে যেহেতু সকলেই নিজ নিজ দাবী অনুযায়ী যৌক্তিক । এই দাবী জাকির নায়েক দের আরো ভারী রক্ষাকবচ তৈরী করে দেয় আর তথাকথিত যুক্তিবাদী জ্ঞানীদের কাছে আসে বুমেরাং হয়ে ।
আবারও সবাইকে ধন্যবাদ ।
@ স্বাক্ষর,
আপনার সম্পূর্ণ লেখা এবং মন্তব্য সমুদয় পড়লাম ।রাজনীতি, ধর্ম ও আস্তিক-নাস্তিক সম্পর্কে এখানে যথেষ্ট বাক্যব্যয় হয়েছে ।তাই এ নিয়ে বাহুল্য নিষ্প্রয়োজন । মন্তব্যগুলো থেকে যে বিষয়টি স্পষ্ট তা হলো আপনার লেখার শিরোনাম আর উদ্দেশ্য যদি এক হয়ে থাকে তাহলে এখানে আপনি শতভাগ সফল ।আপনার লেখা পড়ে সকলের মনে যে ধোঁয়াশা তা থেকে বুঝা যায় পাঠকদের কাছে আপনার বক্তব্য পরিষ্কার নয় । কেউ কেউ আপনার রূঢ় আচরণ নিয়ে অভিযোগ করেছেন, কেউ বা নিজেই অত্যন্ত অমার্জিত রুচির পরিচয় দিয়েছেন । এর কারণ হিসেবে ঘুরে-ফিরে একটা কথাই আমার মাথায় আসে । আমরা সবাই কম-বেশি ‘কাল্ট অব পার্সোনালিটি’ দ্বারা আক্রান্ত নেতিবাচক দিক থেকে । তো যখন কাউকে বলা হয় মুক্তমনা অমুক বা তমুকের জায়গা না বা এখান থেকে বের হয়ে রাস্তায় যান, তখন প্রশ্ন জাগে, মুক্তমনা কাদের জায়গা ? প্রগতিবাদী প্রতিক্রিয়াশীলতার সার্বজনীন কোনো সংজ্ঞা আছে কি ? আমার জানা নেই । মুক্তমনা কে মুক্ত রাখার প্রয়াস প্রশংসনীয় সন্দেহ নেই । কিন্তু আমরা যারা রেগুলার পড়ি কিন্তু কখনও মন্তব্য হয়তো করা হয় না, তাদের ভুলে গেলে চলবে কেন ? বেগম রোকেয়া বিষয়ক লেখার সাথে এই লেখাটির গুণগত তুলনা প্রত্যাশিত । তবে পাঠকদের মনোরঞ্জনের উদ্দেশ্যে লেখা এবং লেখকের কাছ থেকে সেরকম লেখা প্রত্যাশা করা বোধকরি কিছুটা হলেও লেখা ও মুক্তমনার উদ্দেশ্যকে ব্যহত করতে পারে । বুদ্ধিদীপ্ত ও তীক্ষ্ণ, অথচ অশিষ্ট নয় এমন কিছুর প্রয়োজনীয়তা বরাবর-ই সময়কে অতিক্রম করে যায় । আলোচিত বিষয়বস্তুর বাইরে মন্তব্য করতে হলো বিধায় আমি ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি । লেখক ও পাঠক সবাইকে ধন্যবাদ ।
-পাপ্পু
আপনার লেখাটার মাথামুন্ডু কিছুই বুঝলাম না, কিন্তু সেটা না হয় ধরে নিলাম আমারই অক্ষমতা। তবে আপনি যেভাবে আস্তিক এবং নাস্তিক সবাইকে ধোলাই দিলেন, আবার তার কিছুক্ষণ পরেই দূর্গার পদতলে আশ্রয় চেয়ে বমি করতে করতে নাকি কান্না কেঁদে একটা আস্ত কবিতা নামিয়ে ফেললেন তাতে করে আপনার নিজের অবস্থানটা সম্পর্কে জানতে বড়ুই কৌতুহল হচ্ছে। আপনি নিজে কি আস্তিক নাকি নাস্তিক নাকি আকাশ আর পাতালের মধ্যে আটকে থাকা কোন পারগেটরি টাইপের কিছু একটা?
তবে আপনি আস্তিক, নাস্তিক, ভৌতিক যাই হোন না কেন, আপনার মন্তব্যের বাহার দেখে কিন্তু মনে হচ্ছে আপনার অবস্থা বড়ই বেসামাল, বড্ড রেগে আছেন কোন কিছুর উপর, আর উপচে পড়া রাগ ধরে রাখতে না পেরে অযথাই আমাদের মত অসহায় ব্লগারদের উপর অত্যচার করতে শুরু করেছেন। সবাইকে অযথাই গালাগালি করে, দাদাগিরি দেখিয়ে তো অনেক সময় নষ্ট করলেন এবার না হয় আমাদের মত তুচ্ছ মানুষদের একটা উপকার করেন। দেখেন তো অ্যঙ্গার ম্যনেজমেন্ট বা সাইকিয়াট্রিক কোন ট্রিটমেন্ট করানো যায় কিনা। তাতে করে আপনার এবং আমাদের সবারই কিঞ্চিৎ লাভ হলেও হতে পারে।
@ফাহিম রেজা, 🙂
লেখাটা অনেক পরে চোখে পড়ল। কিছু ইতিবাচক এবং বিশ্লেষণমুলক আলোচনা থাকলেও লেখাটির বেশ কিছু দুর্বলতা আছে। দুর্বলতাগুলো নিয়ে বিভিন্ন মন্তব্যকারীরাই লেখায় দীর্ঘ আলোচনা করেছেন। লেখাটির পক্ষে বিপক্ষে আলোচনা হোক, সেটা নিঃসন্দেহে কাংক্ষিত, কিন্তু মন্তব্যকারীদের মন্তব্যের প্রেক্ষিতে লেখকের আক্রমণাত্মক টোন আমার ভাল লাগলো না। ভাল লাগেনি কয়েকজন মন্তব্যকারীর টোনও। ভবঘুরে যেই দোষে দোষী, লেখকও সেই একই দোষে দোষী হবেন। পৃথিবী উপরে সুন্দর একটি মন্তব্য করেছিলেন। নিউইয়র্কের মসজিদটি কোন চিপায় করার চেষ্টা হচ্ছিলো না, হচ্ছিলো গ্রাউন্ড জিরোর মতো সংবেদনশীল জায়গায়। মসজিন নির্মাণে আইনগত কোন বাধা নেই, কেবল প্রশ্ন হচ্ছে নীতির। বাংলা একাডেমির পাশে উর্দু একাদেমি করতেও কারো হয়তো আইনগত বাধা নেই, কিন্তু করা হবে কিনা সেটা নীতির প্রশ্ন। কিন্তু সেটার উত্তর যদি হয় ‘জনৈক পৃথিবী উর্দুকে ইসলামের জায়গায় প্রতিস্থাপণ করেছেন’ , সেটা কোন ভাল উত্তর হলো না। ‘জনৈক পৃথিবীর’ উত্তরে ‘সর্বজনজ্ঞাত স্বাক্ষর’ কি প্রতিভার বিশেষ কোন স্বাক্ষর সত্যই রাখতে পেরেছেন?
আস্তিকদের পাশাপাশি নাস্তিকদেরও অঢেল গালি বর্ষণ করেছেন লেখক, এবং আমার মতে অযথাই। সাইফুল উত্তর দিয়েছেন কিছু, কিন্তু লাভ মনে হচ্ছে হয়নি। লেখক আস্তিকতার মতো নাস্তিকতাও আরেকটি বিশ্বাস মনে করলে কিছু করার নেই আমার। আমি আমার একটি লেখায় এই সমস্ত প্রলাপের উত্তর দিয়েছিলাম। বার বার একই কথা বলায় ক্লান্তি লাগে। নাস্তিকতা একটা বিশ্বাস হলে ভুতে অবিশ্বাসী হওয়াটাও একটা বিশ্বাস। নাস্তিক্যবাদ ধর্মবিশ্বাস হলে “অফ” বাটনকে টিভি চ্যানেল বলতে হয়, কিংবা টাককে বলতে হয় চুলের রং, কিংবা বোবা লোককে ‘ভাষাবিদ’ হিসেবে ডাকতে হয়। তাই না?
আর বিন লাদেন, বাংলা ভাই থেকে শুরু করে হারুন ইয়াহিয়া জাকির নায়েকেরা যা করছেন তার সাথে বার্ট্রান্ড রাসেল কিংবা ডকিন্সকেও একই পাল্লাপাথরে মেপে দুইটাকেই গালির তুবরি দিয়ে হুল ফোটানো সহজ, কিন্তু সেই বিশ্লেষণ মানোত্তীর্ণ হয় না। নাস্তিককদের কোন ধর্মগ্রন্থ নেই, যেটা তারা অক্ষরে অক্ষরে পালন করেন, তাই ধর্মগ্রন্থের প্রেরণায় বাংলাভাই লাদেন কিংবা বজরঙদলদের মতো নাস্তিকেরা মানুষ হত্যায় উজ্জীবিত হয়ে উঠবেন তা ঢালাওভাবে মনে করা ভুল । নাস্তিকদের ম্যানুয়ালে লেখা নাই ‘যেখানেই পাও ইহুদী লাসারাদের হত্যা কর’, কিন্তু বহু ধর্মের ম্যানুয়ালেই আছে। নাস্তিকেরা যে অপরাধ করে না তা নয়, কিন্তু সেগুলো নাস্তিকতার কারণে করেন না, হয়তো করেন কোন ব্যক্তিগত কারণে কিংবা ভিন্ন কোন রাজনৈতিক কারণে, নাস্তিকতার জন্য নয়। ব্যাপারটা হয় লেখক বোঝেননি, কিংবা বুঝেও জল ঘোলা করছেন।
জাকির নায়েকের ঝাল মুক্তমনার উপর ঝাড়তে হবে কেন সেটাও আমার বোধগম্য হলো না। মুক্তমনার বিভিন্ন লেখকেরা বৈজ্ঞানিকভাবেই জাকির নায়েকের অপবিজ্ঞানমূলক বিভিন্ন বিষয় অতীতে বৈজ্ঞানিকভাবেই রিফিউট করেছেন। যারা পড়ার পড়েছেন, যারা পড়েননি পড়েননি। এইটুকুই। আমাদের দায়িত্ব সঠিক তথ্য দিয়ে সাহায্য করা। মিটিং মিছিল করে আস্ফালন করার দায়িত্ব তো আমরা নেই নাই, তাই ঐ খিঁচুরী পাক না করার কৈফিয়ত কেন আমরা দিব? আর জাকিরের বিরুদ্ধে কিছু না করতে পারার ব্যর্থতা যদি মুক্তমনার হয়, তবে আস্তিক, নাস্তিক সবার গুষ্টিউদ্ধার করা আলোকিত স্বাক্ষর শতাব্দই বা কী এমন করতে পেরেছেন, তাও জানতে খুবই আগ্রহী। এখানকার লেখকদের তিনি যে অভিযোগে অভিযুক্ত করেছেন – তিনিও সেই ‘ ব্লগে এসে গলা কাঁপানোর’ একই অভিযোগেই অভিযুক্ত হবেন, এর বেশি কিছু নয়।
@অভিজিৎ,
শুধু সহমত জানিয়ে গেলাম সময়ের অভাবে। সুন্দর করেই বুঝিয়ে বলেছেন।
লেখায় যে কারোরই দুর্বলতা থাকতেই পারে, ধীরে ধীরে চিন্তা প্রস্ফুটিত হবে। কিন্তু লেখার সমালোচনাকে সহনশীলতার সাথে গ্রহন করার মানসিকতাও একজন লেখকের থাকতে হবে সর্বাগ্রে। নিজের লেখার প্রতিটি বাক্যকে ডিফেন্ড করতেই হবে সেই মানসিকতা ধর্মগ্রন্থকে ডিফেন্ড করার মানসিকতার সাথে এক হয়ে যায়। লেখকের প্রতি অনুরোধ রইল, এই বিষয়টি বিশেষ ভাবে মনে রাখার জন্য। আর এই লেখার প্রতিটি অংশ কয়েকটি আরেকটু বড় করে ভিন্ন ভিন্ন লেখা হিসেবে আসতে পারতো। সে ক্ষেত্রে লেখকের বক্তব্য পরিষ্কার হতো, আলোচনার সুযোগ হতো, এবং মন্তব্য ভিন্ন ঘাতে পরিবাহিত হতো না।
@অভিজিৎ, @স্বাধীন,
দু’জনের বক্তব্যের সাথে একমত। লেখক (স্বাক্ষর শতাব্দ) কথাগুলোকে গুরুত্বের সাথে গ্রহন করবেন এই আশা রাখছি।
@ইরতিশাদ, ধন্যবাদ। আমি গুরুত্ব সহকারেই নিচ্ছি ।
@স্বাধীন, আপনাকে অনেক ধন্যবাদ। আপনার কমেন্ট এ একটু আলো পেলাম।
@অভিজিৎ, আপনার কমেন্ট সুচিন্তিত হবে এটি প্রত্যাশিত ছিল। তাই হয়েছে। এটি বাকিদের থেকে আপনাকে আলাদা করে। ধন্যবাদ।
একটা জানা ত্রুটি যেটি আমি করেছি,তা হলো নাস্তিক ও আস্তিকের সারলীকরণ, আপনার চোখ যে সেটা এড়াবে না, এটা জানা ছিল। দ্বিরুক্তি করে সেইখানে সময় নষ্ট করবো না।
তবে আপনার কথার মধ্যে
এই টোনখানি চমকপ্রদ। অপ্রত্যাশিতও বটে। 🙂
রাসেলকে লাদেন-ডকিন্স-নায়েকের সাথে একই পাল্লায় আনার কুকাজখানি আমি করি নি বলেই মনে করি। আবারো ধন্যবাদ।
@স্বাক্ষর শতাব্দ, আবার একটু ভুল করলাম, রিচার্ড ডকিন্স কে হাইফেনে লাদেন ও নায়েকের মাঝখানে বসিয়ে, এখানে শুধু রাসেলের সাথে এদের পার্থক্য ধর্তব্য।
@অভিজিৎঃ
আবার একটু ভুল করলাম, রিচার্ড ডকিন্স কে হাইফেনে লাদেন ও নায়েকের মাঝখানে বসিয়ে, এখানে শুধু রাসেলের সাথে এদের পার্থক্য ধর্তব্য।
আকাশ মালিকের সাথে সুর মিলিয়েই বলি, আপনার রোকেয়া নিয়ে লেখা আর এই লেখার মধ্যে যথেষ্ট তফাৎ। আপনি অবশ্যই আপনার মতামত প্রকাশ করবেন, কিন্তু আপনার বিরুদ্ধে তা গেলে সেজন্যে আপনার নিজের লেখার দুর্বলতাগুলোর দিকে না তাকিয়ে অন্যের প্রতি ব্যঙ্গবাণ ছুঁড়ে দেওয়ার প্রবণতা অন্তত আপনার ব্লগার জীবনের যশ বা আয়ু কোনটাই বাড়াবে না। আপনার সৌভাগ্য যে আপনি মুক্তমনায় লিখছেন এবং এধরনের মন্তব্য করেও পার পেয়ে যাচ্ছেন। সামহোয়্যারেও একই লেখা আপনি পোস্ট করেছেন এবং সেখানেও আপনাকে প্রশ্ন করা হলে বা বোধগম্যতা নিয়ে কিছু বলা হলে আপনি পিছলানিমার্কা মন্তব্য দিয়েছেন। মজার ব্যাপার হলো সেখানে এক প্রতিষ্ঠিত চতুষ্পদী ব্লগারের উৎসাহ দেখলাম আপনার পোস্টে। তাই, সন্দেহ ঘনীভূত। যাক, আপনার ব্যক্তিগত ব্যাপার এগুলো, তবে পথ চলতে চলতেই মানুষ শেখে আর কি, অবশ্য যদি তার শেখার ইচ্ছে থাকে।
লেখায় আসি:
প্রথম বাক্যের ‘একেবারে আধুনিকতম’ শব্দবন্ধ ব্যাকরণগতভাবে ভুল এবং এর নাম ‘পুনর্কথনত্রুটি’ বা ‘রিডানডেন্সি’। ঐতিহাসিকভাবে কথাটা ঠিক, তবে এর প্রয়োজনীয়তাটা এখানে কী বা কেন? আধুনিকতায় বা প্রাক্তনতায় কোন ধর্মের কি-ই বা এসে যায়, যদি না কথকের তার পেছনে অন্য উদ্দেশ্য থাকে? দ্বিতীয় বাক্যের শেষেও অর্থের দুর্বোধ্যতা প্রতীয়মান। ‘ইহুদি একেশ্বরবাদের বিশুদ্ধিকরণ ও খ্রিস্টীয় ট্রিনিট্রিয় গোঁজামিলকে অস্বীকার করে’-এর প্রথমাংশের মানে কী? ইহুদি একেশ্বরবাদের বিশুদ্ধিকরণ কে করলো? একে অস্বীকার করলো কি ইসলাম? কী অস্বীকার করলো? ইহুদি একেশ্বরবাদ বা এর বিশুদ্ধিকরণ? দ্বিতীয় অংশে আপনি স্পষ্টতই ইস্লামিস্টদের সুরে কথা বললেন। ‘খ্রিস্টীয় ট্রিনিটি’ (ট্রিনিট্রি নয়) আপনার কাছে ‘গোঁজামিল’, সুতরাং প্রথমেই আপনি অকারণেই এবং অযৌক্তিকভাবেই ইসলাম ধর্মটির মাহাত্ম্য প্রতিপাদন করে ফেললেন। সাবাশ! কার সাথে যেন মিল পাচ্ছি। আপনি কি করে নিশ্চিত হলেন যে আপনার পেয়ারের ধর্মটি অন্যদের তুলনায় সেরা, শুধু আপনি বলছেন বলেই?
একটা সুরা দিয়েই ইসলামের তাত্ত্বিক মহত্ত্ব বুঝে গেলেন? বলিহারি! পরের অংশ নিয়ে বলি: rofl।
বখতিয়ার খিলজি নিশ্চয় হিন্দু ছিলেন, আজ দৃঢ়ভাবে প্রতীতি হয়। তিনি যেসব বৌদ্ধদের বিহারে পুড়িয়ে মেরেছিলেন, নিশ্চয় তারা ছদ্মবেশী মুসলিমবিরোধী হিন্দু ছিলো। মুসলমান হওয়ার ‘সুযোগটা’ না নেওয়াটা তাদের জন্যে বিশাল অপরাধ ছিলো নিশ্চয়। হায়, কোথায় আজ সেই ‘ইসলমী কৌম’।
এইখানে বিবেচনার তো কিছু দেখি না। আপনি সবখানেই শুধু ‘ধরছেন।’ এবং, সেই ছোটবেলার ‘মনে করি’ শব্দগুচ্ছ দিয়েই কিউ ই ডি করে দিচ্ছেন। আমরা সবাই আপনার সাথে একমত। সুতরাং, তালবাগান আপনার।
নাস্তিকেরা দারুণ অসহায়। দিকে দিকে আজ নাস্তিক্যবাদের পতন, ইসলামের জয়গান। সব ধর্ম ধূলিসাৎ, এগিয়ে চলে ইসলাম, হাতে জিহাদি ঝাণ্ডা! দর্শনে বা বিজ্ঞানে মুক্ত চিন্তার ঠাঁই নেই। মুক্তচিন্তা শুধু মুক্তমনা নামের নাস্তিক্যবাদী ওয়েবসাইটের ঘৃণ্য উপজাত! কিন্তু, হায়, তারপরও নাস্তিকের ঠাঁই কোথা? সবখান থেকেই সে বিতাড়িত, নির্বাসিত, বিস্মৃতিতে আত্মীকৃত। হে নাস্তিক, সাওধান! তুম্রা দরা কাইসো!
ঠিক। নাস্তিকেরাই ভুল। আস্তিকেরা অবশ্যই যুক্তিবাদী। আস্তিকেরাও ভুল। নাস্তিক অবশ্যই বিশ্বাসী। সবাই জুরে বলেন, নারায়ে তকবীর।
শেষ লাইনটাই তো আপনার ল্যাঞ্জা বাইর কৈরা দিলো রে ভাই। বিএনপি-আওয়ামী লীগ দুটারেই সব ব্যাপারে সমান করার এই সিস্টেম এখানে কাজ করবে না রে পাগলা! মনে পড়ে যায় মহাকবির সেই আর্ষবাণী: “পাগলা চুলকে নে, চুলকে নে, চুলকে, চুলকে, চুলকে…”
বোল্ড করা জায়গাটা দেখুন। আপনার মতে যদি নৈর্ব্যক্তিক সত্য কোথাও না থাকে, তাহলে নাস্তিকদের আর দোষই বা কোথায়? এর পরের লাইনগুলো পড়ে হা হা প গে। আসলেই, একবার ফরিদ ভাইরে বললাম, ভাই কোন এক ছাগলের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিন। ফরিদ ভাই বললেন, না না, থাকুক। এখন বিনোদনের বড়ই আকাল। বিনেপয়সায় এরকম বিনোদন আর কোথায় পাওয়া যাবে? আমি সেদিন বিরক্ত হয়েছিলাম, আজ বুঝিলাম ফরিদ ভাই আমার বহুদর্শী মানুষ। আপনিও থাকুন কিন্তু, রাগ করে চলে যাবেন না, আপনারে আমার পিলিজ লাগে।
মডারেটরদের কাছে অনুরোধ, আমার মন্তব্যের কোন বক্তব্য বা অংশ যদি ব্যক্তিগত আক্রমণে পর্যবসিত হয়ে মুক্তমনার ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করে (এই শব্দগুলো গত জোট সরকারের আমল থেকেই কেন যেন অপছন্দের, তারপরও ব্যবহার করতেই হয়), তাহলে তা বাতিল করার পূর্ণ অধিকার আপনারা প্রয়োগ করুন।
স্বাক্ষরের কাছে অনুরোধ, আপনি দয়া করে আরো পড়াশুনো করুন। আপনার লেখার দায় আপনারই। সুতরাং, আমার লেখা আপনি আবার পড়ে আসুন-এজাতীয় মন্তব্য বাংলা ব্লগজগতে একজাতীয় ব্লগারদের বোঝায়, যারা শ্রদ্ধেয় মোটেও নয়। নিজেদের তাদের দলে ফেলবেন কিনা, তা নির্ধারণের দায়িত্ব আপনার।
শারদ শুভেচ্ছা।
@ব্লাডি সিভিলিয়ান, পরামর্শগুলির ধন্যবাদ।
মূল প্রসঙ্গের সাথে কিছু সঙ্গীসাথীর দরকার ছিল, সেই কারণে লেখার দৈর্ঘ্য বেড়ে গেছে, বহুমাত্রায় অভ্যাসের অভাবে লেখক ও পাঠক দুইয়েরই ত্রুটি হতে পারে। আমার দায় আমি নিলাম।
ট্রিনিট্রি একটি গোঁজামিল। যিশুর উপর দৈব চরিত্র আরোপ ও ব্যখ্যার ইতিহাস দ্রষ্টব্য। “ইহুদী একেশ্বরবাদের বিশুদ্ধিকরণ” বলতে তার প্রক্রিয়াটির নির্দেশক। কতটা সফল সেইটার থিওলজির বিষয়।
এর পর আপনি কিছু ধরে নিয়েছেন, যেমন, “আপনার পেয়ারের ধর্মটি অন্যদের তুলনায় সেরা”। এটা রীতিমত অবিচার।
আমি বুঝি নাই। ঐ সুরা একেশ্বরবাদের ঘোষণার রেফারেন্স মাত্র। এর বেশি যা আপনার কল্পনা।
subjective সুরটুকু এখানে আপনি কিছুটা ধরতে পেরেছিলেন, পুরো লেখাতে সেইটুকু বজায় রাখলে আমার সুবিধা হতো। “তালবাগান” ও তার অধিকার কাল্পনিক ও কাব্যিক।
নাস্তিকের রাজনৈতিক অবস্থান টি কি? জাকির নায়েকের বাংলাদেশ আগমণ হেতু তার কর্মপন্থার কোন পরিবর্তন আছে কি? অপ্রয়োজনীয় ঘোষণা করলে, নাস্তিক নিজেকেই অপ্রয়োজনীয় ঘোষণা করে বসে। এই ব্লগেও জাকির নায়েক কে রিফিঊট করা হয়েছে। সেইটাতে কিছু কাজ হয়েছে। কিছু লোক এই ব্লগ নিয়মিত পড়ে। বাকিরা? তাদের জন্য নাস্তিক’রা কি করবে?
নাস্তিক সংক্রান্ত কিছু সারলীকরণের দায় আমি নিয়েছি, সেটার প্রকাশও করেছি বোধ করি। তথাপি,
পুরোমাত্রায় ভ্রান্তি!
ধরেই নিচ্ছি আমার অবস্থান আমি পরিষ্কার করতে পারি নাই। এই খানে আপনি আমাকে একটা সুযোগ করে দিলেন। আওয়ামীলীগ ও বি এন পি।
নাস্তিক ও আস্তিক। এইতো আপনার analogy? আমি দুইটার কোনটাকেই গ্রহণ করতে পারি নাই, তাই ঠিক-ভুল ও বলতে পারি না। স্বজাতি ভিন্ন আর কি ঠিক বলুন?
এর পরেও নুহের নৌকার ব্যাখ্যা, তাওহিদের ব্যাখ্যা আমাকেই দিতে হবে?
প্রতিক্রিয়াশীলতার উদাহরণ আপনি জানেন বোধ করি। লেখা যদি প্রতিক্রিয়াশীল হয়, তাহলে পাঠ ও প্রতিক্রিয়াশীল হবে, এরকমই বোধ করি আপনার যুক্তি!!
@ব্লাডি সিভিলিয়ান,
আপনি ভাই সিরিয়াস পাঠক। আমি লেখাটার আগা-গোড়া দুই-দুইবার পড়ার পরেও কেমন জানি ঝাপসা-ঝাপসা লাগলিছ। এখন বেশ পরিস্কার লাগছে।
লেখক যে ভাবে শুরু করলেন,
এগুলি কিভাবে আলাদা করলো ইসলাম কে ? তিনি কেন বাদ দিলেন,
* Muhammad is the messenger of God.
এটাই তো আলাদা হবার প্রধান কারন।
লেখক, প্রথম কৌমের প্রতি ভালবাসায় সিক্ত না হলে এভাবে বলতে পারতেন না যে,
মানে তার আগে কোন রাজনীতি ছিলো না। মানে আদর্শ কৌম হবার জন্য রাজনীতি থাকাটা বেমানান। 😀 অথচ প্রথম খলিফা নির্বাচন করতে গিয়ে সংঘাত প্রায় বধিয়েছিলেন হবু খলিফারা। এর শুরু অবশ্যই মোহাম্মাদের মৃত্যুর আগে থেকেই। ওমর যেহেতু উমাইয়া ছিল ফলে আলাভোলা আবু বকরকে সামনে ঠেলে দিয়ে নিজের পথ পরিস্কার করেছিলেন আগে থেকেই। বস্তুত আবু বকর ছিলেন প্রক্সি খলিফা। খেলাফত চালিয়েছিলেন ওমর।
এর পরে উসমান, সেও উমাইয়া। হাসেমিরা আলি কে নিয়ে ক্ষমতার ন্যায্য হিস্যা চেয়ে আন্দোলন শুরু করে । মাঠে আসে উমাইয়াদের যোগ্য উত্তরশুরি, মুয়াবিয়া। মূলত রাজনীতি একদিনের জন্যও বন্ধ ছিল না, সেটা সম্ভবও না।
জিবরাইলের গপ্পো অনেকের কাছেই পরিস্কার হয়ে গিয়েছিল। বেহেস্তের মোহর চাইতে খেলাফতের মোহ কোন অংশে কম কাজ করেনি।
কেন এরা কি পেগান? নাকি অনেকগুলি আল্লায় বিশ্বাস করে ? কেন এরা মুসলমান না? সাঈদ কুতুবতো তার মত যারাই ভাবতে পারে না, তাদেরকে নাস্তিক বলতেন। কিসের ভিত্তিতে এই ফতোয়া দিলেন ? আদর্শ কৌ্মের যে চারটা পয়েন্ট দিলেন, এর মধ্যে কোথায় এদের বিরোধ ? দয়াকরে পরিস্কার করবেন আপনার অবস্থান।
আহমাদিয়া/শিয়া/বাহাই কি মুসলমান? আমরা কি একে কোরানিক ধর্মসমূহ বলতে পারি?
এইদুই প্রশ্নের উত্তর কি লেখক কোথাও দিয়েছি?
তাইলে, নিজ গরজে এগুলি ভাবার অর্থ কি করা যাইতে পারে?
ইসলাম শুরু থেকেই রাজনীতি।
আপনি দেখেন আপনি কি যুক্তি দেখালেন,
প্রথম মানেটাও আপনার, দ্বিতীয়টাও আপনার, এই ইনফারেন্সগুলির দুর্বলতা নীতিশাস্ত্রএ দৈণ্য ছাড়া আর কিছু নির্দেশ করে না।
উমায়েদ আব্বাসিয়া ইত্যাদি হইলো রাজনীতির পাঁকচক্র, দয়া করে পাক-চক্র পড়ে বসবেন না নিজের ইচ্ছামতোন। প্রথম কৌমরে ইসলামের আদর্শ কৌম বলা হয়েছে, সারা বিশ্বের জন্য সার্বজনীন/সর্বশ্রেষ্ঠ কোন কিছু বলা হইছে কি? এগুলি সব হলো আপনার মস্তিষ্কে কোন বিশেষ ভূতের কাজ।
“নিজ গরজে নিচের এগুলি”
@স্বাক্ষর শতাব্দ,
প্রথম কৌমরে আদর্শ কৌম বলেছেন এবং ওমরের পর থেকে আদর্শ বিচ্যুতির কথা বলেছেন। এই বিচ্যুতির জন্য দায়ি করেছেন রাজনীতির শুরুকে।
এখন বলছেন, “রাজনীতি সব সময় ছিল। আমিতো বলিনাই আগে রাজনীতি ছিলো না।” নীতির দৈন্যতা কোথায় সেটা কিন্তু বেশ পরিস্কার এখন।
হ্যাঁ, দিয়েছেন এইখানে,
প্রথম কৌ্মের আদর্শ বিচ্যুৎ, রাজনীতি দ্বারা কলুষিত, প্রচারকারী দ্বারা বিকৃত,
এইসব মত -আহমাদিয়া/শিয়া/বাহাই কে কি মুসলমান বলা যায় ?
একজন খুনি, ডাকাত, লম্পটকে কি আমরা সুনাগরিক বলবো ? বক্তা এখানে কি উত্তর আশা করছেন, তা বুঝতে নীতি সাস্ত্র বা যুক্তি বোধের বেশী গভীরে যেতে হয়না।
কার ইচ্ছা মত পাক-চক্রে পড়তে হবে ? ইতিহাস জানার নতুন কোন পদ্ধতি সুপারিশ করছেন কি ? আদর্শ কৌ্মের ভুতটা মাথা থেকে না সরাতে পারলে,
ইতিহাসকেও ঐ আদর্শের ফিল্টারের মধ্যেদিয়ে গ্রহন করবেন। উমাইয়া-হাশেমি দ্বন্দ্বের ইতিহাস যেহেতু ঐ আদর্শকে ম্লান করে তাই ভাল লাগবে না শুনতে। এড়িয়ে যেতে চাইবেন, এখন যেমন চাচ্ছেন।
@আতিক রাঢ়ী, আপনার আগের মন্তব্যের জবাব দেয়া ছিল, সেটি পড়েন নাই বোধ করি।
দেখা যাচ্ছে কোনো পাঠকই বুঝতে পারছে না আপনি কী বলতে চাইছেন।
পৃথিবীর স্যাটায়ার করে বলা ‘খিচুড়ি খাওয়া’ কথাটা নিয়েই আটকে আছেন। তার মন্তব্যগুলোতে ‘খিচুড়ি’ শব্দটা ছাড়াও অনেক যুক্তি, প্রশ্ন, ব্যাখ্যা ছিলো। সেগুলো সম্পর্কে আপনার মতামতও বোঝা যাচ্ছে না।
আপনার মত যদি এটুকু হয় যে “জাকির নায়েক কে তার কথা বলতে দেওয়া হোক। ভিন্ন যার যা বলার আছে সে সেটা বলুক”। তাহলে এই লেখাটায় এটুকু বলতে প্রচুল বাহুল্য চলে এসেছে।
এবং সেসব বাহুল্যের মধ্যে অনেক কথা আছে যেগুলোর মাথামুন্ডু নেই।
আর আপনার আর্গুমেন্টে আপনি একটা ক্লাসিক ভুল করেছেন। সব কিছুরই রাজনীতিকিকরণ করে। এ ব্যাপারটাও ভাববেন। কোনো পার্টিকুলার গ্রুপ কোনো আইডিয়াকে কীভাবে ইম্পলিমেন্ট করে সেটা দিয়ে একটা জেনারেল আইডিয়াকে জাজ করা ভুল।
আপনার কথা থেকে জানা যাচ্ছে আপনি আস্তিক। আপনিকো প্রচলিত কোনো ধর্ম বা তার কোনো ফ্যাকশনে সাবস্ক্রাইব করেছেন? নাকি এটা আপনার স্রেফ নিজস্ববোধ যে আপনি সৃষ্টিকর্তার উপস্থিতি অনুভব করেন?
@তানভীরুল ইসলাম,
রাজনীতির বাইরে কিছু নেই, থাকলে উহা ব্যক্তিগত|
খিচুরীর জন্ম বৃত্তান্তটি এরকমঃ
এটি কোন ধরণের সমীক্ষা বা পরযবেক্ষণের ফল নয় বলেই মনে হয়, স্রেফ এক রৈখিকতার ফল।
আমার এই লেখা ত্রুটিমুক্ত এমন দাবি তো করি নাই, পৃথিবী/ অন্য কারো, যেসব কমেন্ট অপ্রয়োজনীয়/অপ্রাসঙ্গিক সেগুলিকে এড়িয়েছি।
আমি এইখান টাতে ভুল করেছি বটে। সেই গ্রুপটির থেকে আমার প্রত্যাশা একটু বেশি ই ছিল।
এই কথা আপনি বলছেন, কারণ আমি বলেছি, “আমি নাস্তিক না, সেকুলার না”, আপনার বিচার আধিবিদ্যক হলো কি?
আমার তো মনে হয় আমার গোটা রচনাটিকেও একইভাবে মূল্যায়িত করা হয়েছে। আফসোস।
@স্বাক্ষর শতাব্দ,
ধন্যবাদ। পরবর্তি লেখাগুলো আরো স্পষ্ট হবে, সে প্রত্যাশা রইলো।
কেন এই বাড়তি স্পষ্টতার প্রত্যাশা সেটা বলি। ধরেন আমি একটা অ্যালগরিদম টিউটোরিয়াল লিখলাম। যেটা বেশ স্পষ্ট। এতে যা হবে তা হলো, পাঠক ভালোমত বুঝবে না। আবার খুব স্মার্ট পাঠকরা হয়তো ঠিকই বুঝে ফেলবে। যে বুঝবেনা যে ভাববে হয়তো সে নিজে ততটা স্মার্ট না। অন্যরাতো বুঝছে ঠিকই।
কিন্তু মনে করেন আমি কিছু একটার সমালোচনা করে কিছু লিখলাম। এসময় স্বচ্ছতা এবং স্পষ্টতা খুবই জরুরী। কারণ হয়তো আপনার সমালোচনাটা ঠিক। হয়তো আপনার মতামত যদি ঐ ‘কিছু একটার’ মতাবলম্বিরা বুঝতে পারে তাহলে তারাও শুধরে নেবে। world will be a better place then. যেটা আপনার লাভ। তাদেরও লাভ, কারণ তাদের ভুল ভাঙলো। আর কোনো সমালোচনাতে যখন পাঠক যৌক্তিক পরাম্পরা ধরতে ব্যর্থহয়, তখন সেটাকে আর সমালোচনা মনে হয় না, মনে হয় নিন্দা। যেটা বিরক্তিকর। সেই বিরক্তি, এই লেখাটা উৎপাদন করতে পেরেছে।
তাই আপনি এখানে যেসব বিষয়ের দিকে সমালোচনার আঙুল তুলেছেন। পরবর্তি লেখাগুলোতে। সেই সমালোচনাটা আরো স্পষ্ট করে করবেন আশাকরি।
শুভেচ্ছা।
@তানভীরুল ইসলাম,
কারেকশন:- “যেটা বেশ স্পষ্ট” হবে “যেটা বেশ অস্পষ্ট”।
@তানভীরুল ইসলাম, ধন্যবাদ।
দুই বার পড়লামরে ভাই। মন্তব্যগুলিও পড়লাম। এখনো ঠিক বুঝতে পারছি না, আপনি কি বলতে চাচ্ছেন। মন্তব্য দেখে মনে হচ্ছে, আমার মত অবস্থা আরো অনেকের। বুদ্ধিবৃত্তিক উচ্চতার তারতম্যের জন্য এমনটা হতে পারে।
পরের বার আমাদের জন্য একটু সহজ করে লিখলে ভাল হয়।
যতটুকু বুঝলাম তাতে আপনি নাস্তিকদের কে ঘরে বসে ব্লগবাজি বাদ দিয়ে আরো কার্যকর কিছু করতে বলেছেন। জনগনের কাছে পৌছানোর জন্য আর কি করা যায় সে ব্যাপারে ভাবতে বলেছেন।
জাকিরের প্রভাব ঠেকানোর উপায় খুঁজতে বলেছেন।
কিন্তু কেন আপনি জাকিরকে ঠেকাতে চান বা কি দিয়ে সেটা করতে চান, সেটা বুঝিনি।
@আতিক রাঢ়ী,
রাঢ়ের অধিবাসীর প্রতি শুভেচ্ছা| আপনার নামটা আমার ভালো লেগেছে|
আমি কেন ঠেকাতে চাই সেটা স্পষ্ট। কুযুক্তি ও মিথ্যা তথ্য প্রদান কারী জাকিরকে আমি রোধ করতে চাই। কারণ তার পাল্লায় পড়ে অনেক হাড় হাভাইত্যা অনাতেঁলের আবেগীয় মাথা যুক্তির শিরোস্ত্রআণ পড়ে বসে আছে|
কিভাবে করতে চাই? সেটা সম্ভব, কিছু ইংগিত আমি দিয়েছি| তার গ্রাউন্ডে তাকে ধরা যায়। আরো পথ থাকতে পারে। আছে। কোনটাতে হুমায়ুন আজাদ হবার বিপদও আছে।
তবে বিষয়টি শুধু এখানেই সীমাবদ্ধ নয়। জাকির যাবার পরেও কাজ থাকবে।
দেখা যাক, খিচুরী পাকানো হয় কিনা। প্রসাদ তাহলে আমিও পাবো।
@স্বাক্ষর শতাব্দ,
আপনার কিছুটা পরিচয় জানি বলে একদিন আপনার প্রতি আমার দূর্বলতা বা একটা অন্ধ শ্রদ্ধাবোধ জন্মেছিল। আপনার পাঠকদের প্রতি এ আচরণ দেখে সত্যিই অবাক হলাম। বেগম রোকেয়া নিয়ে আপনার লেখা, আর এই লেখায় রাতদিন তফাৎ। অনুরোধ করছি এ মানসিকতা ত্যাগ করে পাঠকদেরকে আপন করে নেয়ার ভাষা শিখুন।
@আকাশ মালিক, ক্ষমা প্রার্থনা করছি উদ্ধত মনোভাবের জন্য|
তবে সেক্সপিয়ার বলেছেন, “I must be cruel only to be kind.
Thus bad begins and worse remains behind.”
এই লেখাটি আগের থেকে ভিন্ন। তবে আমি প্রত্যেকের অতি- আধিবিদ্যক মনোভাবে অবাক হয়েছি নিজেও, এইখানে আমি ইসলামের পক্ষে সাফাই গেয়েছি, এরকমটি মনে করার অর্থ ভাষার দুর্বোধ্যতা ছাড়া আর কিছু বলার নেই আপাতত। পাচকের দোষ দেয়াই যায়। আমি দায় নিচ্ছি। ফলে আক্রমণকারী প্রথমেই আমাকে ভুলবিচার করে বসলে পাল্টা আক্রমণের স্বীকার হতে হবেই।
এইখানে আমি ইসলামের পক্ষে সাফাই গেয়েছি, এরকমটি মনে করার মানে আমার লেখার ভাষা দুর্বোধ্য —–>হবে।
@আতিক রাঢ়ী,
আর এই জন্যই তো প্রবন্ধটির নাম হয়েছে: “কিংকতর্ব্যবিমূঢ়….” :-/ 😕
@মাহফুজ, আপ্নার কমেন্ট উচু পর্যায়ের কৌতুক রসের উদ্রেক করে! :-/
তাও ভালো একরৈখিকতার অভিযোগ করেন নি
আপনি তাহলে প্রথম কৌমের অনুসারী? হুমম।
নুহের নৌকা সম্পর্কে আপনার কী মত? মানে এ সব লজিক্যাল ফ্যালাসিগুলো আপনি পার করলেন কীভাবে? প্লিজ একটু শিখিয়ে দিন। পরকালে কয়েক লক্ষ হুর-পরী পাওয়ার সাধ আমার এখনো কিছুটা আছে। প্রথম কৌমের ধর্মটা আমাকে বুঝিয়ে দিলে খুবই উপকৃত হই। আপনারও অনেক নেকি হবে।
সত্যিই জানতে চাচ্ছি।
@তানভীরুল ইসলাম,
আমি প্রথম কৌমের অনুসারী কেন হতে যাবো? মাথা টা ঝাকি দেন। ভিন্নভাবেও একটা জিনিস কে দেখা যে যায় সেটা টের পাবেন।
নিবন্ধের লেখক খুবই সেয়ানা । ওনার উদ্দেশ্য হলো মানুষকে বিভ্রান্ত করা। সুন্দর সুন্দর কথা বলে মানুষকে বিভ্রান্ত করে মুক্তমনা সাইটের মানুষের দৃষ্টিকে অন্য দিকে সরিয়ে দিতে চান। বাংলাদেশে যতগুলো উগ্রপন্থি জিহাদি ধরা পড়েছে তারা বাহ্যত দারুন ভদ্র আচরন করত, আর মানুষের সাথে সুন্দর করে কথা বলত যা তার প্রতিবেশীরা সাক্ষ্য দিয়েছে। আর এটা হলো একটা কৌশল।
@ভবঘুরে,
প্রতিবাদ জানালাম। আপনি লেখার বিষয়বস্তু নিয়ে আলোচনা/সমালোচনা না করে লেখককে আক্রমণ করেছেন। (আর মন্তব্য বোল্ড করার কি প্রয়োজন বুঝলাম না।)
@ইরতিশাদ, আপনের প্রতিবাদ ক্রিয়ার জন্য আপনাকেও ধন্যবাদ
@ভবঘুরে,
এই টুকুরে আমি প্রশংসা হিসেবে গ্রহণ করলাম।
মুক্তমনা রেগুলার পাঠক এর দৃষ্টি আর কুথাও যাবে বলে মনে হয় না, নিতে পারলে নিজেরে সফল মনে করতাম, ঠেকান না আপনের দুইটা প্রতিবেশীরে/আপনের গেরামের চাচা/মামাদের জাকিরের ও তার দলবলের প্রকোপ থেকে, ইসলামকে/অন্য কোন ধর্মকে অপ্রয়োজনীয় ঘোষণা করার জন্য ওয়েব সাইট খোলা লাগে না, আমি আমার বাথরুমে বসে সাবান ঘষতে ঘষতেও করতে পারি, কিন্তু সেটাই কি আমার উদ্দেশ্য? খিচুরীর গন্ধ স্বপ্নেই পাইতে থাকবো। ওয়েবমন্ডুকং নাস্তিকং আস্তিকং।
@ভবঘুরে,
লেখাটা ইসলামি কমিউনিজম এর এক হজবরল উদাহরণ। সেতারা হাশেম (আফম মহিউদ্দিন) এ লেখাটা পড়ে নিশ্চয় আমিন বলছেন।
@যাযাবর,
সেই রকম জিনিস হবে ইসলামি কমিউনিজম! কোন বস্তু হজম না হতে চাইলেই উহা পাচকের দোষ।
জাকির নায়েক রে কনফ্রন্ট করেন গিয়া, ওয়েবে নাস্তিকতা প্রচারে ক্ষ্যামা দেন কিছু ক্ষণের জন্য, জাকির আর আমেরিকাতে যায় না, এখন সে বাংলাদেশে আইতেছে।
লেখাটিতে অনেক সুন্দর দিক উঠে এসেছে ঠিকই। কিন্তু লেখককে মনে হল কিছূটা ধরি মাছ না ছুঁই পানি টাইপের। 😎
@সুমিত দেবনাথ,
ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য। এবার বলেন কিভাবে মাছ ধরা যায়? আমি পানিতে নামবো আপনার সাথেই।
@স্বাক্ষর শতাব্দ,আপনি কোন জলে নামবেন এটা আপনার ব্যাপার। আমি কি বলে দেব? নোনা জলে কৈ মাছ ধরবেন? না মিঠা জলে ইলিশ ধরবেন……..
সুখপাঠ্য নিবন্ধ। সাথে সাথে যৌক্তিক গঠনমূলক মন্তব্যগুলোও চমৎকার।
ধন্যবাদ এমন সুন্দর একটি পোষ্টের জন্য।
@মাহফুজ, আপনেরেও ধন্যবাদ
সূক্ষ্ম, সংবেদনশীন বিশ্লেষণ আর বিস্ময়কর একরৈখিকতার সংমিশ্রণ। কোন কোন ক্ষেত্রে লেখক একরৈখিক আর কোন কোন ক্ষেত্রে সূক্ষ্ম তার একটা প্যাটার্ন ধরা দিয়েও যেন ধরা দিতে চাচ্ছে না।
একরৈখিকতা..
কারণ এর আর কোন কারণ কল্পনা করাই সম্ভব না।
এই মন্তব্য অর্থবহ, কারণ “প্রাচ্য” নিজে একটি বৈচিত্রহীন এনটিটি, “প্রাচ্যে”-র সবাই ধর্মের একই সংজ্ঞা মানে 😀
হ্যাঁ, ইতালীয় রেনেসাঁসের ফলে যদিও আধ্যাত্মিক টেলিপোর্টেশনের মাধ্যমে জার্মানীতে লুথারিয় ধর্মীয় সংশোধনবাদ ঘটে গেল, যদিও ইতালী যে ক্যাথলিক সেই ক্যাথলিকই রয়ে গেল :-X । এখানে “ক্লাসিকাল গ্রীস” শব্দটিও সম্পূর্ণ অবান্তর :-Y ।
সূক্ষতা…
কিন্তু পশ্চিমা ট্রাডিশনের প্রতি এধরণের “বিবেচনা” করার দরকার নেই, সবকিছুকে এক বাক্সে ফেললেই চলবে।
কিন্তু নাস্তিক্যবাদী ডঃ অমুক-তমুক যে সব্বাই আসল নাস্তিক্য তথা উপনিবেশবাদের চর, এবিষয়ে তর্কের কোন সুযোগ নেই।
কিন্তু পশ্চিমা বিশ্বের মতবাদগুলি, যেমন সেকুলারিজম, উপনিবেশবাদ এসব কিছুকে কিন্তু খবরদার আলাদা করে দেখা চলবে না, একই ষড়যন্ত্রময় phenomena-র অংশ হিসেবে দেখতে হবে।
বিনোদন :laugh: ।
@রৌরব,
এইটা কি মহাত্মন আপনার মশHতিস্ক থেকে পয়দা হইল নাকি? এইটাও কি একরৈখিকতার প্রামান্য নহে? অমুক-তমুক রে চর সন্দেহ করিতেছেন কে? আপনি কি ডঃঅমুক/তমুক? চোরের মন পুলিশ পুলিশ।
এটাও আপনের সু চিন্তিত মতবাদ অথবা জাবর কাইটা এইটা বাইর করছেন, আমি কই নাই, আপনের পাস্কস্থলীর পাচক রসের গুণাগুণ আমি নিয়ন্ত্রণ করি না। আপনাকেও ধন্যবাদ। পৃথিবীর সাথে যোগাযোগ করেন, খিচুরীর ব্যবস্থা করেন। বৃষ্টির দিন, জাকিরের বয়ানের লগে, আপ্নেগো খিচুরী খাইয়া দেখা যায় হজম করা যায় কি না।
@রৌরব,
:yes:
@রৌরব,
এই কথাটা আমার মনে ধরছে, সময় থাকলে একটু অতিরিক্ত ব্যাখ্যা করে যাবেন দয়া করে।
ইউরোকেন্দ্রিকতাকে ইংরেজের শিক্ষার প্রভাব বলেই মনে হয়েছে, তাই বলেছি। সংবাদ পত্রের স্বাধীনতা আর মুদ্রণ যন্ত্রের জন্য আমাদের গোটা সাহিত্য শিক্ষাই ইউরোপের দান ওরকম এক রৈখিক হতে পারবো না। বাংলা গদ্য সাহিত্য, ব্যাকরণ এগুলির জন্য আমি ইংরেজ কে ধন্যবাদ দেই না, কারোন অগুলি ইংরেজের দান না, বরং তার কিছু কু-প্রভাব আছে|
বহুর মাত্রাটি সঠিকভাবে ধরুন, তুলে ধরুন, আমিও কৃতার্থ হই।
@রৌরব,
হা হা হা
“টেলিপোর্টেশনের” সাথে লক্ষ্যনীয় “ইতালিয়”। হ্যা ইতালিয় বললে “টেলিপোর্টেশনের” সাহায্য নিতে হয় বই কি। আমি ইউরোপীয় এনলাইটেন্মেন্টের শুরুটা জার্মানির লুথার থেকে শুরু করেছি, ধর্মীয় সংস্কারবাদ থেকে। কেননা, এতে সেকুলার এর ই সুবিধা, কারণ যুক্তিটা হলো
এটা বহু ব্যবহৃত যুক্তি> আর এটার শুরু সেই লুথার থেকে।
অত্যন্ত সুলিখিত প্রবন্ধ, কিন্তু অন্তসারশুন্য। আমার মনে হয় আলোচনা যা হতে পারত তা ইতিমধ্যে পৃথিবীই করে ফেলেছে। আর আলোচনা বাহুল্য।
আলোচনা বাহুল্য বলছি এই কারনেও যে, যে সব অভিযোগ লেখক নিরীশ্বরবাদীদের বিরুদ্ধে করেছেন তার সবই অনেক আগেই এই ফোরামের সুলেখকেরা করে ফেলেছেন। যেমন অভিজিৎদা অনেক আগেই যুক্তি দিয়ে দেখিয়েছেন যে বিশ্বাস আর অবিশ্বাস একজিনিস নয়। আস্তিকরা বিশ্বাস করে আর নাস্তিকরা অবিশ্বাস করে। এই অবিশ্বাসকে বিশ্বাস বলাটা হবে ভুল। এই মূহুর্তে লিঙ্কটা হাতের কাছে নেই তাই দিতে পারছি না।
ধন্যবাদ।
আরেকটা ব্যাপার বলতে ভুলে গেছি, সম্পুর্ন বাংলা প্রবন্ধে Egalitarianism শব্দটা দৃষ্টিকটু লেগেছে। এমন হতে পারে লেখকের সঠিক বাংলাটা এই মূহুর্তে মনে পড়ছে না। অর্থটা হবে, সমানাধিকারবাদ
@সাইফুল ইসলাম,
হে মহাত্মন, আমিও তাই মনে করি, জাকির ভাই আসছেন, খিচুরী খাওয়াইতে চাইলে রাস্তায় নামেন, ওয়েবসাইটে লিখা প্রাণের দায় আপনার মিটিতে পারে, আমার মিটে না। নাস্তিক্যবাদের উপর কিঞ্ছিৎ সারলীকরণ করেছি, মেনে নিচ্ছি, তবে সকল প্রকার নাস্তিক এক প্রকার না, ফলে কিছু নাস্তিকের দোষে বাকি নাস্তিকেরা গালি খাবেই।
@স্বাক্ষর শতাব্দ,
তাইলে এইসব আবালীয় পোষ্ট না দিয়া গঞ্জিকা সেবন কইরা চৌরাস্তার মোড়ে খাড়াইয়া খিস্তি পাঠ করেন আর চিরা কাতা গায়ে দিয়া লাক টাকার স্বপ্ন দেহেন গিয়া। যত্তসব আবাল।
আফনের প্রানের দায় ওয়েবসাইটে লিখা না মিটলে এইখানে এই পোষ্ট দিছেন কার গুষ্ঠি উদ্ধার করতে? নিজেরটা নাকি?
আপনার কথা বলা ম্যানার অত্যন্ত অভদ্র ধরনের। মুক্তমনা আপনার জায়গা না। আরো অনেক ফালতু ব্লগ আছে যেখানে সারাদিন এই ধরনের অভদ্রদের মত কথা বলা যায়। সেখানে যান।
@সাইফুল ইসলাম, নিজেকে সামলাইতে পারেন নাই দেখিয়া আমারই দুঃখবোধ হইতেছে। আফসোস।
@স্বাক্ষর শতাব্দ,
আপনার সাথে সামলাইয়া কথা বলতে হবে কেন? আপনি কোন জায়গার কুতুব?
সামলাইয়া কথা বলব তার সাথেই যার সেটা প্রাপ্য। আপনার যা প্রাপ্য তাই আপনাকে দিয়েছি। আরও লাগলে বলবেন গুদামে অনেক আছে।
@সাইফুল ইসলাম,
হা হা হা হা
আরো দিতে পারেন, নেয়ার হাত বাড়ানো থাকলো, গুদাম দর্শনের লোভ হচ্ছে। দেয়ার কথা বলে চলে যাবেন না যেন আবার!
@স্বাক্ষর শতাব্দ,
আপনি রাস্তায় নামুন না, আপনাকে আটকাচ্ছে কে? আমরা সবাই জেনে ধন্য হলাম যে আপনার মত বিজ্ঞ ব্যক্তির ইন্টারনেটে লিখে ‘প্রাণের দায় মিটে না’, অথচ আপনিই এক ব্লগ থেকে আরেক ব্লগে একই লেখা পোষ্ট করে চলেছেন। বস্তাপঁচা, বহু আগে বাতিল হয়ে যাওয়া দর্শন এবং বিজ্ঞানের কতগুলো কুযুক্তি হাজির করেই ক্ষান্ত হননি, নিজের মহামূল্যবান সময় নষ্ট করে সমানে সবাইকে অত্যন্ত নীচুমানের আক্রমণাত্মক সব কথা বলে চলেছেন। ব্যাপারটা একটু হাস্যকর হয়ে যাচ্ছে না? নাকি ব্লগে ব্লগে ঘুরে ঘুরে অর্থহীন লাফালাফি করাটা কতটুকু হাস্যকর সেটা বোঝার মত ক্ষমতাও আপনার নেই?
এইটা কি কইলেন!! খ্রীষ্টানদের মত!!! ঐ খিচুরী তত্ত্ব?
@স্বাক্ষর শতাব্দ,
পৃথিবী হয়তো কিছুটাও না হয় ধরতে পেরেছেন, আমি সত্যিই তাও পারি নাই। বিশেষ করে বঙ্গে ইসলাম প্রসঙ্গ নিয়ে কী যে বললেন আর এই কথাগুলোর অর্থই বা কী- কোন এক অদ্ভুত উপায়ে পাকিস্তানের জন্ম, হয়েছিল | ভেঙ্গে গেল |
এই প্রথম কৌমের আদর্শ ধর্ম টা নিয়ে আরো কিছু জানতে চাই।
নাস্তিক্যবাদ প্রচারে নাস্তিকের কয়টা পাথর আস্তিকের মাথায় পড়েছে একটু উদাহরণ দিলে ভাল হয়।
@আকাশ মালিক, প্রথম কৌমের ধর্মের প্রতি আপ্নের আগ্রহ দেখে প্রীত হলাম।কিছু তাহলে বুঝতে পেরেছেন, কেন অযথা প্রথম লাইনেই বাগাড়ম্বড় করলেন?জনৈক পৃথিবী খিচুরীর জন্য অর্থ সংস্থান করতে গেছেন, আপনিও যোগ দিতে পারেন।
চলিত বাংলাতেই তো লেখা। পাকিস্তানের জন্মের প্রতি ইংগিত করা হইছে। আপনি কি মনে করেন? সকলেই আধিবিদ্যক?
@স্বাক্ষর শতাব্দ,
@Golap,
ইসলামের গর্ব থাকে কি না জানি না, আমি যা বুঝেছি তাই লিখেছি, আবু সুফিয়ানের সাথে এক দল অভিজাত কুরাইশ ইসলাম গ্রহণ করেছিল, তাদের ধর্ম গ্রহণ কে আমি কিছুটা রাজনৈতিক দৃশHটি ভঙ্গিতে দেখি। এবং আমার পক্ষের লোক কম নয়। কথা সত্য|
প্রথম কৌম বলতে কি বুঝাইছি ঐটা স্পশHট্ মুহম্মদের আমল্| যার পর থেকে ভাঙণ। ঐ বড়জোর আবু বকর পর্যন্ত> অনেকে আয়েশারে মুহম্মদের উত্তরাধিকার কইতে চান। আমি তাদেরকেও ফেলে দিতে চাই না। শুধু মূল রেফারেন্স রেখে দিতে চাই এজন্য প্রথম কৌমকে, এর পরেরগুলিও বাদ দেয়া যাবে না, এজন্যই বলেছি “কোরাণিক ধর্মসমূহ”
মনোযোগ দিয়া পড়ার জন্য ধইন্যবাদ।
@স্বাক্ষর শতাব্দ,
ইসলামের ইতিহাস সম্প্যর্কে আপনার জ্ঞ্যানের পরিধি বুঝে অবাক হচ্ছি!
আবু সুফিয়ান ইবনে হারব কবে, কিভাবে, কেন এবং কি পরিস্হিতে মুসলমান হয়েছিলেন এ ব্যাপারে আপনার সামান্যতম ধারনা আছে বলে মনে হচ্ছে না। আবু সুফিয়ান মুহাম্মাদকে নবী হিসাবে মেনে নিতে বাধ্য হয়েছিলেন, মক্কা বিজয়ের আগের রাত্রে।মুহাম্মাদের চাচা আল-আব্বাস ইবনে আব্দুল মুত্তালিব তাঁকে নিয়ে গিয়েছিলেন মুহাম্মাদের ক্যাম্পে, কুরায়েশদের সাথে রক্তাক্ত সংঘর্ষ এড়াতে; মক্কাবাসীদের মুসলিম ম্যাসাকারের হাত থেকে বাঁচাঁতে। অস্ত্রের মুখেও সে নতি স্বীকার করে নি, মুহাম্মাদের কাছ থেকে মক্কাবাসীদের নিরাপত্তার ‘এক রকম’ অংগীকারের পুর্ব মুহুর্তে। আল-আব্বাস তাকে এব্যাপারে সর্বাত্তক সাহায্য করেছিলেন। আব্বাসের হস্তক্ষেপেই তিনি ওমরের হাত থেকে সেদিন প্রানে রক্ষা পেয়েছিলেন। পুরো ঘটনার পুংখানোপুংখ বর্ননা “Early Muslim Historian” রা আমাদের জন্য লিপিবব্ধ করে গিয়েছেন।জানতে চাইলে পরবর্তিতে বলা যাবে with due references.
তা আমি অকপটে স্বীকার করছি। কারন ধর্ম নিয়ে খুবই নগন্য সংখক লোক পড়াশুনা করে (যার পরিধি মোল্লার অমিত বাণী আর মসজিদের ঘর), অধিক সংখক লোক কথা বলে, আর তার চেয়েও অধিক সংখক না জেনেই মন্তব্য করে। যে কারনেই ‘জাকির সাহেবরা’ রমরমা এক চাটিয়া ব্যাবসা চালাতে পারে। এ চিত্র সব ধর্মের জন্যই প্রযোয্য। ‘Bible is the most read and least tested book ever published in this world’.
তার সরল অর্থ করলে যা দাঁড়াচ্ছে, আপনি মুহাম্মদের আমল টাকেই অধিক শান্তি প্রিয় বলে মনে ভাবছেন। কারন, তার মৃত্যৃর কিছু দিন পরেই তার প্রান প্রিয় সাহাবারা ‘সত্য’ থেকে বিচ্যুত হয়ে ‘খুনা খুনিতে’ জড়িয়ে পরেছিলেন। মুহাম্মাদের ১০ বছরের মদীনা জীবনে (৬২২-৬৩২) মোট ৭০ থেকে একশত যুদ্ধ করেছিলেন। সবচেয়ে প্রাচীন মুসলীম ইতিহাসবিদদের (example: “Sirat Rasul Allah”- by Mohammad Ibne Isahq (704-768 CE), “Kitab Al Tabaqat al-Kabir” -by Muhammad Ibne Saad (714-845 CE), “Tarikh Rasul Wal Muluk’ -by Al Tabari (839-923 CE), Ketab Al-Maghazi” by Al-Waqidi (747-823 CE) -মতে ওহুদ এবং খন্দকের যুদ্ধ ছাড়া এর আর কোনটাই আত্মরক্ষা মুলকক ছিলো না, ছিলো ‘offensive/ preumptive”। ৬০ এর বেশি সংখক যুদ্ধের ( গড়ে আড়াই মাসে একটা) তালিকা নিচে উল্লেখ করলামঃ
GHAZWA (pl Ghazawat) or MAHAZI –meaning, raiding expedition where Muhammad himself participated are
(the authorities differ about sequences):
623 CE: 1. Al –Abwa, 2. Buwat, 3. Al-Ushayrah.
624 CE : 4. *Badr (first), 5. *Badr, 6. Banu Sulaym, 7. Al- Sawiq, 8 Ghatafan, 9. Bahran.
625 CE: 10. *Ohud, 11. Humra Al- Asad, 12. Banu Nadir, 13. Dhat –Al- Riqa of Nakhl, 14. Another Badr.
626 CE:
15. Dumat -Al- Jandal, 16. Banu Mustaliq of Khuzah
627 CE:
17. *Battle of Ditch (Trench /Khandaq), 18. *Banu Qurayza, 19. Banu Lihyan of Hudhayl, 20. Dhu Qarad
628 CE:
21. Campaign/Treaty of Hudaybiya, 22. * Khaybar,
628 CE:
21. Campaign/Treaty of Hudaybiya (March, 628 CE), 22. *Khaybar (May, 628 CE), 23. *Wadi Al-Qura
630 CE:
24. *Conquest of Mecca (January, 630 CE), 25. *Hunayun,
26. *Al Taif
631 CE:
27. Tabuk
SARIYAA (pl. Saraya) – means, the armies and raiding parties sent by Muhammad; but he did not take part physically are
(the authorities differ about sequences):
1. Thaniyyat Al-Murah, 2. Al Is, 3. Al Kharran, 4. Nakhala, 5. Al – Qardah,
6. Al-Raji, 7. Bir- Munah, 8. Dhu Al Qassah, 9.Turabah, Yemen, 10. Al-Kadid, 11. Fadak, 12. Banu Salaym, 13. Al Ghamrah, 14. Qatan, 15. Al-Qurata of Hawazin, 16. Banu Murrah in Fadak, 17. Yumn and Jinab, 18. Al Jamun,
19. Judham, 20. Wadi Al Qura, 21. Assasination of Yusayr bin Rizam in Khaybar, 22. Another attack in Khaybar, 23. Assassination of Abu Rafi in Khaybar,
24. Assassination of Kaab bin Al-Ashraf, 25.Assassination of Asma binte Marwan, 26. Attack and killing of Khalid bin Sufiyan, 27. Mutah, 28. Dhat Atlah, 29. Banu Al Anbar, 30. Banu Murrah, 31. DhatAtlah, 32 Al-Salasil, 33. Valley of Idam, 34. Al- Ghabah, 35. Al Khabat
প্রতিটি সাহাবাদের যুদ্ধে শরিক হওয়া ছিলো অবশ্য কর্তব্য। তারাও তা করতো “মরলে সোজা বেহেস্তের সুখ ও হুরী, আর বাঁচলে গাজী সংগে গণিমতের মালের ভাগ /দাস ও দাসী” -এ ব্রত নিয়ে। যুদ্ধ =শান্তি সমার্থক হলে মুহাম্মাদের সময় ছিলো নিঃসন্দেহে বেশি শান্তি প্রিয়। এবার নিজেই সিদ্ধান্ত নিন কোনটা বেছে নাবেন। সিদ্ধান্ত আপনার।
শুধু মূল রেফারেন্স রেখে দিতে চাই এজন্য প্রথম কৌমকে, এর পরেরগুলিও বাদ দেয়া যাবে না, এজন্যই বলেছি “কোরাণিক ধর্মসমূহ”
ধন্যবাদ এইটুকুর জন্য| সংখ্যাগরিষ্ঠ বাংলাদেশী মুসলমান এখনো জাকিরের বর্জ্য গিলে , এটাই বাস্তবতা।
হা হা, এক আক্রমণে এক দলের ঘর বাড়ি জ্বলে, আমি না হয় খড়ের মানুষই পুড়লাম।
বিষয়টা ভূগোলের নয়, ক্ষমতার। আপনি সেটাকে অস্বিকার করছেন না ত? ধর্ম, সেকুলারিজম এর মতই পশ্চিম/প্রাচ্য এগুলি শব্দ। এগুলির নানান অর্থ। আপনি কোনটাকে নিবেন সেটাই আপনার অবস্থান ঠিক করে দিবে।
হ্যা এই সব কুসংস্কারের দায় প্রাচ্যের আছে, অস্বীকারের কিছু নাই। ইউরোপেরও আছে। তাতেই বা কি প্রমানিত হয়? কোনভাবেই বৈশ্বিক মানবের কল্যাণজনক না এগুলি। তাই এগুলি এনে আপনি কি প্রমাণের চেষ্টা করেছেন তা নিস্চিত হতে চাইচি না আপাতত।আপনি ই করেন|
উর্দু সংস্কৃতির কথা কেন আনলেন সেটা ব্যাখ্যা করুন।
নিয়ে বসে আছে, ফরাসি দেশের সরকার ও তার বিরোধীদল।
@স্বাক্ষর শতাব্দ,
অনেকেই বলে যে পশ্চিমের প্রতি অন্ধ আনুগত্যের ধারাটা বজিয়ে রাখার উদ্দেশ্যেই আমরা ধর্ম নিরপেক্ষতার দাবি করছি, তারা বুঝতে চান না যে বিশ্বাসের উপর একটা রাষ্ট্রব্যবস্থাকে দাঁড়া করানোর চেষ্টাটা কতটা হাস্যকর এবং ভয়াবহ(অর্থাৎ বিষয়টা প্রকৃতিগতভাবে লজিকাল, পলিটিক্যাল না)। একইভাবে অনেকে পুরুষ-নারীর সমান অধিকারকেও পশ্চিমা সংস্কৃতি হিসেবে দেখে(কারণ আমাদের সমাজে এর নজির কখনও ছিল বলে মনে পড়ে না)। আমি এখানে নীতিকে ভূগোল থেকে আলাদা করার কথাই বলছি।
উর্দু এমন এক জাতির ভাষা যাদেরকে বাঙ্গালীরা ইহুদিদের চেয়ে হাজার গুণ বেশি ঘৃণা করে, এর সাথে বাংলা ভাষার একটা ইতিহাস আছে যা নিশ্চয়ই ব্যাখ্যা করা লাগবে না।
আমি এসবের উদাহরণ দিয়ে এটা প্রতিষ্ঠা করতে চাচ্ছি যে দর্শন নীতিশাস্ত্রের মত সেকুলারিজমও এমন একটি ব্যবস্থা যাকে “ইউরোপ”, “আমেরিকা” নামক গন্ডির ভেতরে বেঁধে রাখা যায় না। কেউ যদি মনে করে যে সেকুলারিজম একটি পশ্চিমা প্রথা এবং বাঙ্গালির স্বাতন্ত্র্য রক্ষার্থে তা বর্জন করা উচিত, তাহলে তো একই যুক্তিতে বলা যায় যে বাঙ্গালীর স্বাতন্ত্র্য রক্ষার্থে বাল্যবিবাহ আর পাগলাবাবাদের মাজারে ফিরে যাওয়াটাই উত্তম হবে। পশ্চিমারা যদি সেকুলারিজম প্রতিষ্ঠা করতে ব্যর্থ হয়, তবে আমাদেরকেই তা প্রতিষ্ঠা করে একটা দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে হবে। পশ্চিমারা পারেনি বলে আমরা করব না, এমন মনোভাব আপাতঃদৃষ্টিতে বিপ্লবী মনে হলেও আসলে এটি একপ্রকার ইনফেরিওরিটি।
সর্বজনীন একটি বিষয়কে লোকালাইজ করে কিভাবে মানুষ স্বার্থ হাসিল করতে পারে, তার উদাহরণ হল নারী অধিকার নিয়ে মোল্লাদের বিষোদগার।
সেটা তাদের ইসলামবিদ্বেষ অথবা জেনোফোবিয়া হতে পারে, কিন্তু মোটেই সেকুলারিজম না। সেকুলারিজম যদি ধর্মবিদ্বেষ হত, তবে ইসলামের পাশাপাশি খ্রীষ্টধর্মকেও ঝেটিয়ে বিদায় করার পায়তারা করত ফরাসীরা।
এখন কেউ যদি বলে সেকুলারিজম মানেই ইসলামবিদ্বেষ, তবে মন্তব্য নিষ্প্রয়োজন।
খিচুরী হজম হইলে খাইতে সমস্যা কোথায়? ধর্মগ্রন্থের ব্যাপারে লিটারেলিজম কখনওই উপকার করে না- খ্রীষ্টানরা এইটা অভিজ্ঞতা দিয়া বুঝছে, বর্তমানে শান্তিপ্রিয় বোমাবাজদের বদৌলতে মুসলমানরাও কিছুটা বুঝতাছে। তালেবান নাহয় আমেরিকা বানাইছে(তালেবানদের পাঠ্যতালিকা কিন্তু আমেরিকা বানায় নাই, এইটা আল্লাহর দান), বাংলা ভাইদের বানাইছে কেডা? জামায়াত ইসলাম কই থেইক্যা আইল? মওদুদি আর সৈয়দ কুতুবের মত চরিত্র ex nihilo সৃষ্টি হইছে, এমন দাবি পৃথিবীর সবচেয়ে বিশ্বাসপ্রবণ বিশ্বাসীও স্বীকার করবে না।
বিশ্বাস যখন করতেই হবে, তখন আধিপত্যবাদী আব্রাহামিক ঈশ্বরে বিশ্বাস করার চেয়ে পরোপকারী সান্তা ক্লজে বিশ্বাস করা ভাল। এরে যদি কয় খিচুরী খাওয়া, তয় আমি পাবলিকরে এইটা গাটের পয়সা খরচ করে খাওয়াইতে রাজি আছি।
@পৃথিবী,
গাটের পয়সা তাহলে ছাড়া শুরু করেন। আমি রাজি আছি আপনের ক্যাশিয়ার হইতে।
উর্দুর ইতিহাস আপনিও জানেন, আমিও জানি। বখতিয়ারের ঘোড়ার কথাটা সেজন্যই বলা হইছিল, আপনের চক্ষে পড়ে নাই। অথবা ফিল্টার কইরয়া এড়াই গেছেন। বাকি সব ক্ষেত্রেও তাই করেছেন। এই লেখাটির উদ্দেশ্য ও বক্তব্য আপনি ধরতেই পারেন নাই। উল্টা আপনি যাদের বাচাতে চেশHটা করছেন, তাতে লাগাম ধরে রাখতে পারছেন না। দায় আপাতত আমার।
আপনাকে ধন্যবাদ।
@স্বাক্ষর শতাব্দ,
‘উর্দু ব্যাপারটাতে’ আপনি ফোকাস হারাচ্ছেন।
আপনার কথা ছিলো
এটা যে স্রেফ ‘কোন এক গলি‘ না সেটা বুঝাতেই
এই কথাটি বলা হয়েছে।
@তানভীরুল ইসলাম,
এইটা একটার আরেকটার বিপরীত উদাহরণ হিসেবে গ্রহণ করতে পারছিনা। এখানে খেয়াল করলে দেখা যাবে, আপনার প্রশ্নটিও একটু দুষ্ট। “স্রেফ” ও “বুঝাতেই” এর “ই”। আমি এইখানে ধরেই নিব আপনি জোর প্রয়োগ করেছেন।
প্রথমেই ধরে নিতে হচ্ছে, বাংলার সাথে উর্দুর এক ধরণের শত্রুতা অনুমেয়, আমি ভেবেছিলাম বিদ্বেষ ভাষাসমূহের মধ্যে নয়, বিদ্বেষ জাতিসমূহের। যদি আমি এই প্রসঙ্গে ফোকাস না হারাই তাহলে আমাকে ধরে নিতে হচ্ছে, বাংলা একাডেমী-উরদু সংস্কৃতি কেন্দ্র এবং নিউইয়র্কের গলিতে মসজিদ ও তার বিরোধী এই দুইটার সম্পর্কস্বরূপ কাছাকাছি। দুইটাই বিরোধ বলতে পারেন, কিন্তু স্বরূপ এক না। আমার মনে হইল জনৈক পৃথিবী উর্দুকে ইসলামের জায়গায় প্রতিস্থাপণ করেছেন। এখন আপনার কথায় মনে হচ্ছে analogy ছিল এবং তার স্বরূপ যে এক হয় নাই, সেটার ব্যাখ্যা দিলাম। ভুল শুধরে দিবেন। কারণ সেই একই এনালজিতে এর পর ধরে নিতে হচ্ছে, ২০০১ সালের ১১ই সেপ্টেম্বরের জন্য “ইসলাম” দায়ী এবং মসজিদ সন্ত্রাস ছড়ায়।
মুক্ত চিন্তা একধরণের দার্শনিক টেনডেনসী, এটা দর্শন থেকে বিচ্ছিন্ন কিছু না। দর্শনে ব্যর্থ হয়ে কখন নাস্তিকরা বিজ্ঞানের শরণাপন্ন হচ্ছে তার একটা উদাহরণ দিলে ভাল হত। এখানে উল্লেখ্য যে দার্শনিক প্রশ্নগুলো ধীরে ধীরে বৈজ্ঞানিক প্রশ্নে রুপান্তরিত হচ্ছে(মানুষ ও বিশ্বব্রক্ষ্মান্ডের উৎপত্তি তার উদাহরণ), তাই একে নৌকা বদল বলা যায় না।
বৈজ্ঞানিক তথ্য কখনও “ব্যবহার” করা যায় না, বড়জোড় সেখান থেকে কিছু ইনফারেন্স টানা যায়। বিবর্তনের সত্যতা থেকে নাস্তিক সিদ্ধান্ত নিতে পারে যে ঈশ্বর বলে কিছু নেই, আবার আস্তিক সিদ্ধান্ত নিতে পারে যে ঈশ্বর বিবর্তনের এলগরিদম তৈরী করে দিয়ে দায়িত্ব শেষ করে দিয়েছেন। যে যাই বলুক, এতে কোন সন্দেহ নেই যে বিবর্তন ঘটছে এবং কোন প্রজাতিই বিবর্তনের এলগরিদমের বাইরে থাকে না। এই বৈজ্ঞানিক সত্য ঈশ্বরের অস্তিত্বকে নাকচ না করলেও আদম-হাওয়ার মত অনেক প্রচলিত পুরাণকে বাতিল করে দেয়। দেখতেই পাচ্ছেন এখানে “ব্যবহার” এর কোন বিষয় নেই।
যুক্তি জ্ঞানের একমাত্র উদ্দেশ্য দাবি করাই হল যুক্তিবাদ, এখানে “মতামত” এর কোন অবকাশ নেই। সেই অর্থে নাস্তিকরা অবশ্যই যুক্তিবাদী, আস্তিকরা যেহেতু যুক্তির উপর বিশ্বাসকে স্থান দেয় তাই তাদেরকে কোনভাবেই যুক্তিবাদী বলা যায় না। যুক্তিবাদ “ভাল” বা “খারাপ” এর মত কোন ধোঁয়াটে শব্দ না এবং যুক্তিবাদী হওয়াটা সৎ হওয়ার মত কোন “ভাল” গুণও না, এটি একটি দার্শনিক অবস্থান যা ভাল-খারাপ নির্বিশেষে সবাই লালন করতে পারে। একারণে আস্তিক/নাস্তিক যুক্তিবাদী কিনা সেই প্রশ্ন না করে প্রশ্ন করা উচিত যুক্তিবাদ ধর্মের চেয়ে বেশি কার্যকর কিনা। বিশ্বাস আর যুক্তিকে কোনভাবেই একাকার করে ফেলা যায় না। একটা উদাহরণ দিই,
এসব কথাবার্তা কারও কাছ থেকে শোনার পর স্বভাবতই তাকে প্রশ্ন করা যায়-আপনি কেমনে জানলেন? এর উত্তরে আস্তিক যুক্তি নিয়ে এসে জল প্রচুর ঘোলা করবে এবং অবশেষে বিশ্বাসের দ্বারপ্রান্ত হয়ে ঘোষণা করবে যে সবকিছু মানুষের পক্ষে জানা সম্ভব না। বলাই বাহুল্য, এটি শতভাগ যুক্তিবিবর্জিত একটি বক্তব্য।
নীতিকে ভূগল দিয়ে বিচার করাটা অনুচিত। সেকুলারিজমকে যে যুক্তিতে “ইউরোপীয়” বলা হয়, সেই একই যুক্তিতে বাল্যবিবাহ, পাগলাবাবাদের মাজারে ধরনা দেওয়া সহ আপাতঃদৃষ্টিতে অসীম সংখ্যাক কুসংস্কার লালন করাকে প্রাচ্যীয় বলা যায়। সেকুলারিজমের জন্ম যেখানেই হোক না কেন, এর ক্ষেত্র সর্বজনীন। প্রাচ্যের লোকজন গণিত আবিস্কার করেছে, তাই বলে কি গণিত প্রাচ্যের সম্পত্তি হয়ে যাবে?
খুব কি ভিন্ন? প্রাতিষ্ঠানিক ধর্মের উৎপত্তিস্থল তো ওই একই অঞ্চলে সীমাবদ্ধ। খুঁটিনাটি বিষয়ে পার্থক্য থাকলেও সব প্রাতিষ্ঠানিক ধর্মই বস্তুজগত ও মানুষের প্রকৃতি নিয়ে কিছু দাবি করে, সমাজের নীতি ও রাষ্ট্রের ক্ষমতার দিকে লোভাতুর দৃষ্টি নিক্ষেপ করেন।
আপনার উল্লেখিত মসজিদটি নিউ ইয়র্কের কোন চিপায় বানানোর জন্য প্রস্তাবিত হয়নি, খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি জায়গায় বানানোর প্রস্তাব করে হয়েছে। মসজিদটি নির্মাণের পক্ষে কিন্তু কোন আইনী বাধা নেই, সবাই নীতির তাড়নাতেই মসজিদের বিরোধীতা করছে। বাংলা একাডেমির আশেপাশে উর্দু সংস্কৃতি কেন্দ্র স্থাপনেরও কোন আইনী বাধা নেই, কিন্তু বাঙ্গালী এই আইনসিদ্ধ স্থাপনা মেনে নিবে কিনা সেটাই হল প্রশ্ন।
বোরকার উপর নিষেধাজ্ঞাটা অবশ্যই আপত্তিকর। আপাদমস্তক শরীর ঢেকে রাখার কিছু সমস্যা আছে, কিন্তু সেগুলো এমন কিছু না যার জন্য একজন মানুষের বস্ত্র পরিধানের স্বাধীনতা হরণ করতে হবে। মসজিদের মিনার নির্মাণের উপর নিষেধাজ্ঞাটা তো একদম হাস্যকর। কিন্তু এগুলোর দায় ধর্ম নিরপেক্ষতা কেন নিবে? ধর্ম নিরপেক্ষতা তো কোন বিশেষ ধর্মের প্রতি ইতিবাচক বা নেতিবাচক পক্ষপাত প্রদর্শন করে না। সেকুলারিজমের ডকট্রিনেও ধর্ম পালনের বাধা দানের ব্যাপারে কিছু নেই। আপনি এখানে একটা স্ট্র-ম্যান খাড়া করে তাকে আক্রমণ করছেন।
ডানপন্থীরা কবে থেকে “উদার মানবতাবাদী” হল? মুসলমানের সংখ্যাবৃদ্ধিতে কেউ আপত্তি করেনি, ইসলামী প্রতিক্রিয়াশীলতার বিরুদ্ধে কেউ কেউ আপত্তি করছে। মুসলমানরা যদি খ্রীষ্টানদের মত তাদের ধর্মচর্চাটা তুলনামূলকভাবে ব্যক্তিগত পর্যায়ে রাখতে পারত, তাহলে তারা এত বৈরীতার মুখোমুখি হত না। মুসলমানরা আমেরিকায় যাবে কিন্তু আমেরিকার সংবিধান মানবে না, তাদের জন্য আলাদা শরীয়া আইন অনুমোদন করতে হবে, এসব ন্যাকামীর বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়ার অধিকার পশ্চিমাদের আছে। বস্তুত, এক দেশে দুই আইন থাকার বিষয়টা নিয়ে আমাদেরও ভাবা উচিত।
জাকিরের ব্যাপারে কিছু বলার নাই। তাকে ভিসা না দেওয়ার কোন কারণ দেখি না, তবে তার বিরুদ্ধে মানববন্ধন না করে তার মত উত্তরাধুনিক মোল্লাদের মোকাবেলা করার মত একটা ইন্টেলেজেনশিয়া তৈরী করাটাই উত্তম হবে। বাংলাদেশের মানুষ এখনও জাকির নায়েকের বর্জ্য গিলে, এতে দেশের মানুষের মননের দৈন্যতাই প্রকাশ পায়। যে দেশের “মডারেট” মুসলমানরা জাকির নায়েকের মত চরমপন্থীদেরকে ডেমিগড বানিয়ে রাখে, সেই দেশের সমাজ-সংস্কৃতির প্রগতি নিয়ে আমি খুব একটা আশাবাদী হতে পারি না। সম্ভবত দায়টা আমদের শিক্ষা-ব্যবস্থা ও এক্সপোসারের অভাবের। বাংলাদেশে শুধু পশ্চিমের সংস্কৃতিই আমদানি হয়, পশ্চিমের বৌদ্ধিক কর্মগুলো এদেশে অজানাই রয়ে যায়।