ডাকাডাকি
বাবা যারে বাবা ডাকে, সেই তো আমার দাদা,
ব্যবহারটি খুবই ভাল, অন্তর ছিল সাদা।
দাদা যারে গিন্নি ডাকে, সেই তো আমার দাদী
জনম ধরে নাহি দেখি, তাই তো আমি কাঁদি।
দাদী যারে ছেলে ডাকে, তাকে বলি চাচা,
চুল পাকা, দাঁড়ি পাকা, গোঁফ তার কাঁচা।
বাবা যারে ভাবি ডাকে, সেই হয় চাচী,
নিদ্রায় চলে গেলে, হাফ ছেড়ে বাঁচি।
বাবা-চাচা বোন ডাকে, আমি ডাকি ফুপু,
আপা, বোন একই কথা, হয় বাবার বুবু।
মা যারে বাবা ডাকে, সেই তো আমার নানা,
দেশে তার নাম ডাক, কার নেই তা জানা?
মা যারে মা ডাকে, সেই তো আমার নানী,
দেখে এলাম জনম ধরে, চোখে যে তার পানি।
মা যারে বোন ডাকে, সে হয় খালা,
ব্যবহার নাহি পাই, অন্তরে জ্বালা।
খালা যারে পতি বলে, তাকে বলি খালু,
রাগ আছে, জিদ আছে, চোখে তার বালু।
মা যাকে ভাই ডাকে, ভাই হয় মামা,
ছোটবেলায় ভালোবেসে দিতেন কত জামা।
মায়ের ভাই বউ আনে, তারে ডাকি মামী,
চাল নেই, চুলো নেই, খাবার খায় দামী।
জন্ম নিলাম যারই ঘরে, তিনি আমার বাবা,
অনেক কথার শেষে বলেন, সময় মত খাবা।
বেহেস্ত আছে যারই তলে, সে-ই জননী মা,
হাজার বারও ডাকলে তারে প্রাণতো জুড়ায় না।
মায়ের ছেলে বড় ছেলে, সেই তো বড় ভাই,
গর্ব করে বলতে পারি, কোন চিন্তা নাই।
ভাইয়ের ছেলে আম্মা ডাকে, সেই হল মোর ভাবী,
সবাই তাকে মান্য করি, এই আমাদের দাবী।
মা ডাকেন মেয়ে বলে, সেই তো আমার বোন,
আদর করে বলব তারে, একটু কথা শোন।
বোনের স্বামী কি যে দামী, ডাকবো দুলা বলে,
ভাগনীরা সব লাফিয়ে উঠে কাফী মামার কোলে।
হিন্দুরা সব জ্যাঠা, পিসি, ডাকে দিদি মাসি,
কেমন ডাকা ডাকলি তোরা আমার আসে কাশি।
গায়ক ডাকে গান শুনতে, আদর ভরা চোখে,
কবি ডাকে কবির সুরে, হৃদয় জুড়ায় সুখে।
মাষ্টার ডাকে ক্লাসেতে, সংখ্যা গুনে গুনে,
ছাত্ররা সব জবাব দেয়, কানে শুনে শুনে।
পুলিশ ডাকে বাঁশি দিয়ে, ঐ দেখা যায় চোর,
হাতকড়া তাই পরিয়ে দিতাম, শক্তি কোথায় তোর?
নদীর ধারে হাঁসকে ডাকে, ঐ দেখা যায় তীরে,
মানুষ ডাকে আজান দিয়ে, নামাজ পড় ধীরে।
বিপদ ডাকে হঠাৎ করে, মরণ খেলা খেলে,
মাওলানারা আল্লাহ ডাকে, যদি কোথাও মেলে।
পিয়ন ডাকে চিঠি দিতে, হরেক রকম লেখা,
আজকে তুমি বিদায় দাও, আবার হবে দেখা।
প্রেমিক ডাকে হাতছানিতে, মিষ্টি হাসি দিয়ে,
নাচবো এবার, গাইবো আমি, সেই মেয়েটির বিয়ে।
বনের রানী সিংহী ডাকে, ডাকে ভালুক ভাই,
বোবারা সব ভেবেই মরে কথা কোথায় পাই।
ডাক যে আছে হরেক রকম, শেয়াল ডাকে হুঁয়া,
টিয়া ডাকে ময়না ডাকে, ডাকে কাকাতোয়া।
মোরগ ডাকে ভোর বেলাতে, পাখি ডাকে সাঁঝে,
ঝিঝি পোকার ডাক যেন তাই, বাঁশির সুরে বাজে।
মশা ডাকে, মাছি ডাকে, গদায় ডাকে নাক,
ছারপোকারাও ঘুমিয়ে পড়ে, আজকে না হয় থাক।
হাতি ডাকে সুঁড় উচিয়ে ডাকার মত ডাক,
নাচের তালে ময়ুর ডাকে, খাচ্ছে যে ঘুরপাক।
বিড়াল ডাকে ঘরের কোণে, খাদ্য পাবার আশায়,
ইঁদুর বেটা ভয়ে বলে, ফিরে যাই মোর বাসায়।
বিশ্রী স্বরে বেজায় জোরে, ডাকলো বেটা গাধা,
মাঘ মাসের ঐ শীতে মরি, জল খেয়ে নিই আদা।
বৈশাখেতে কোকিল ডাকে, এ ডাল ও ডাল ঘুরে,
বর্ষাকালে ব্যাঙরা ডাকে, হাজার মধুর সুরে।
আষাঢ় মাসে মেঘের ডাকে, কৃষক পেল ভয়,
মরণ এবার হবেই তাহার, আর কি বাকি রয়?
শ্বশান ঘাটে ভুতের ডাকে, ভয় পেয়েছে যারা,
গোরস্থানের সামনে দিয়ে, আর যাবে না তারা।
বাঘের ডাকে বন যে কাঁপে, কাঁপে নদীর পানি,
বানর ডাকে হরিণ আসে, সেই কথা কি জানি?
ঘড়ি ডাকে ঘন্টা দিয়ে, গীটার বাজে তারে,
লাঠি দিয়ে ঢোলক ডাকে, তাইতো ধরে মারে।
হাতের তালে তবলা ডাকে, ফুঁয়ে ডাকে বাঁশি,
ফাঁকা মাঠে ডাকতে গেলে, গলায় আসে কাঁশি।
ডাকাডাকি করছো কেন? ডাক দিয়েছে মরণ,
পাপের কাজটি ছেড়ে দিয়ে, তাঁকেই কর স্মরণ।
আমি মাহফুজ ভাইয়ের ছড়াতে মোটেই উদ্বিগ্ন নই। কিন্তু দুঃখের সাথে বলছি , বর্তমানে মুক্তমনার বিভিন্ন সদস্যের কথাবার্তার ব্যবহার নিয়ে খুবই উদ্বিগ্ন। 🙂
@সাইফুল ইসলাম,
আমি আর উদ্বিগ্ন হই না। এগুলো দেখতে দেখতে, শুনতে শুনতে- চোখ সহা কান সহা হয়ে গেছে।
আবু জাফর ওবায়দুল্লাহ ‘ আমি কিংবদন্তীর কথা বলছি’ কবিতা থেকে কয়েকটি চরণ তুলে দিচ্ছি।
যে অসুখী সে কবিতা লিখতে পারে না।
যে উদগত অঙ্কুরের মতো আনন্দিত
সে কবি
যে সত্যের মতো স্বপ্নভাষী
সে কবি
যখন মানুষ মানুষকে ভালবাসবে
তখন প্রত্যেকে কবি।
@মাহফুজ,
কবি তুমি পটিয়াছো আমারই মনের ছবি।
আমি হব ভালোবাসার কবি।
দারিদ্র, মৃত্যু, ক্ষুধার বাজনা তুলে
দেখাইব মুক্তির দিগন্ত রবি।
মাহফুজ সাহেবের একটা পরিচয় আমাকে খুবই পুলকিত করে আর তা হল তিনি মুক্তমনার পারিসংখানিক গবেষক। মুক্তমনার প্রতি তার অনেক ভালবাসা। এজন্য তাকে আমার ভাল লাগে।
তবে তার প্রতি একটা ছোট উপদেশ থাকবে, কবিতা যদি বেরোয় তা মন থেকে বের হয় অন্য কবির কাছে হাত পাতা লাগে না। অন্য বিভিন্ন কবির কবিতা থেকে অনুপ্রেরণা নেওয়ার চেষ্টা না করে তাদের রীতি অনুকরনের চেষ্টা না করে নিজের মনের ভেতর প্রবেশ করুন। ভেতরের সত্যের সাথে খেলা শুরু করুন , একেবারে মূল থেকে উৎসারিত করুন শব্দগুচ্ছ তাহলে
নিজস্ব, রাজস্ব, অপূর্ব, স্বগর্ভ কিছু অবশ্যই বেরুবে।
ধন্যবাদ।
@মুহাইমীন,
কবিতা লেখার চর্চা করতে হলে প্রথমে প্রচুর কবিতা পড়তে হয়। আমি তো কবিতার রাজ্যে ‘ডিজিটাল শিশু’র ন্যায়। অনুসরণ বা অনুকরণ করতে না চাইলেও প্রকৃতগতভাবেই সেটা হয়ে যায়। কবিতা আসে তো ভাব থেকেই, চাইলেই কবিতা লেখা যায় না।
তাছাড়া আপনি তো ‘পণ্ডিত আমি’ কবিতায় আপনি নিজেই আপনার পিছু পিছু যাবার আহ্বান করেছেন। তাই আপনার পিছে পিছে চলা এই আর কি?
শোন্, এসব রেখে আমায় ধর্
পাবি অনেক কিছু
গুরু আমায় স্বীকার কর্
মিলবে জগত যিশু।
আর তাই শুধু এভাবে বলি:
তোমাকে বলছি শোনো-
হৃদয়ে কোন অনুভবের জন্ম দেয় না?
ভাল অথবা হৃদয় নিংড়ানো ব্যাথা?
তুমি নিশ্চয়ই বুঝেছ আমি কি ইঙ্গিত
করছি?
@মাহফুজ,
আমার এই অকাব্যগুলো পড়েছেন তাতেই আমি মহা পুলকিত। আপনি এগিয়ে যান, সুন্দর, তাৎপর্যপূর্ণ কবিতা আপনি আমাদের উপহার দেবেন আশা করি। তবে আমার ক্ষেত্রে বলে রাখি, আমি কিন্তু আমার অকাব্য লেখার আগে কবিতা সম্পর্কে খুব কম জানতাম। মন থেকেই অগুলো বের করার চেষ্টা করেছি। সফল হয়েছি কিনা পাঠক বলবে। তবে ‘ডিজিটাল শিশু’ লিখেছিলাম সুকান্তের কবিতা পড়ে অনুপ্রেরণা পেয়ে।
একটা কথাই জানি, জগতের বড় বড় যারা কবি তারা সুন্দর সুন্দর কবিতা , অসাধারণ বানীর আসর সাজাতে পেরেছিলেন কারণ তাদের মন ছিল অনেক পবিত্র। মনকে যত কলুষমুক্ত করা যায়, জানি, সৃষ্টিশীলতা তত বৃদ্ধি পায়।
ধন্যবাদ। :rose2:
@মুহাইমীন,
দোয়া কইরেন মন কলুষমুক্ত হবার জন্য, যাতে সৃষ্টিশীল কিছু প্রসব করতে পারি। সত্যি কথা বলতে কি, আমার ভেতর কিছুই; আছে শুধু শব্দকারক পিত্তল ও ঝমঝমকারী করতল। দরকার প্রেম, যে প্রেম কখনও শেষ হয় না। যে প্রেমে থাকবে মানবতার সুর। শত্রুকেও ভালোবাসার ক্ষমতা। যে প্রেমে থাকবে বিবর্তনকে আত্মস্থ করার মনোভাব।
ধন্যবাদ, উৎসাহমূলক মন্তব্যের জন্য।
😥
আমার তো মনে হয় কবিতাটি( নাকি ছড়া ?) বিবর্তনীয় ধারায় ফেলা যেতে পারে। অতীতে কবিরা কবিতা লিখত ছন্দে ছন্দে। এর পর বিবর্তনীয় ধারায় অমিত্রাক্ষর ছন্দের প্রবর্তন হয়। কারন তাতে নাকি কবির মনের ভাব প্রকাশে বেশী সুবিধা ও স্বাধীনতা( নাকি মিত্রাক্ষর ছন্দে কবিতা লেখার ক্ষমতার অভাব ?)। এর পর দেখা গেল যা ইচ্ছে খুশী ছোট বড় লাইন আকারে লিখে ফেলাটাও নাকি কবিতা। পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে গেল যে গদ্য আর পদ্যে তফাৎ খুজে পাওয়াই মুস্কিল হয়ে পড়ল । যাই লেখা হোক না কেন তা কবিতা বা পদ্য। এভাবে চলল কিছু দিন । এখন বিবর্তনীয় ধারায় পূনরায় মিত্রাক্ষর ছন্দের আগমন। তাই আমার মনে হয় মাহফুজকে কবিতায় নতুন করে রেনেসাঁ আন্দোলনের পথিকৃত হিসাবে ঘোষণা সহ একটা পুরস্কার দেয়া যেতে পারে মুক্তমনা ফোরাম থেকে। 🙂
@ভবঘুরে,
আপনার মন্তব্যের জবাব সুকান্তের ‘হে মহাজীবন’ কবিতা দিয়েই দিলাম।
হে মহাজীবন, আর এ কাব্য নয়
এবার কঠিন, কঠোর গদ্যে আনো,
পদ-লালিত্য-ঝঙ্কার মুছে যাক
গদ্যের কড়া হাতুড়িকে আজ হানো!
প্রয়োজন নেই, কবিতার স্নিগ্ধতা-
কবিতা তোমায় দিলাম আজকে ছুটি,
ক্ষুদার রাজ্যে পৃথিবী-গদ্যময়ঃ
পূর্ণিমা-চাঁদ যেন ঝল্সানো রুটি।।
খাইসে এ আমি কি দেখলাম?!
:-X :-X ।
@রামগড়ুড়ের ছানা,
কী খাইছে ভাই? ডাকাডাকি তো সবে শুরু, আরো কত ডাক যে আছে সেগুলো তো তুলে ধরিনি।
এখন সময় এসেছে- কবিতা দিয়ে মুক্তমনাকে ঘিরে ফেলবার একান্ত দরকার।
আপনার উদ্দেশ্যে আব্দুল মান্নান সৈয়দ-এর “কবিতা কোম্পানি প্রাইভেট লিমিটেড” কবিতা তুলে দিলাম-
এখানে কবিতা বানানো হয়।
সব ধরনের কবিতা।
রাজনীতিক কবিতা, পার্থিব কবিতা।
আধ্যাত্মিক কবিতা, গ্রামীণ কবিতা।
নাগরিক কবিতা, শরীরের কবিতা।
স্বপ্নের কবিতা, বাস্তবের কবিতা।
চল্লিশের কবিতা, পঞ্চাশের কবিতা।
ষাটের কবিতা, সত্তরের কবিতা।
আশির কবিতাও আমরা বাজারে ছাড়ছি শিগগিরই।
কবিতার হাত, পা, মাথা, ধড়,
শিশ্ন, যোনি, চুল, নখ,
চোখ, মুখ, নাক, কান,
হাতের আঙুল, পায়ের আঙুল-
সব-কিছু মওজুদ আছে আমাদের এখানে।
স্বদেশি, ও বিদেশি উপমা ও চিত্রকল্প,
শব্দ ও ছন্দ,
অন্ত্যমিল ও মধ্যমিল
লক্ষ-লক্ষ জমা আছে আমাদের ষ্টকে।
ব্যাঙের ছাতার মতো আরো অনেক কবিতার কোম্পানি
গজিয়েছে বটে আজকাল। কিন্তু
আপনি তো জানেনই,
আমাদের কোম্পানি ইতিমধ্যেই বেশ নাম করেছে।
আর ফাঁকি দিয়ে কি খ্যাতি অর্জন করা সম্ভব,
বলুন?
হ্যাঁ, আপনার অর্ডার-দেওয়া কবিতাটি এই-তো
তৈরি হয়ে এলো।
চমৎকার হয়েছে।
ফিনিশিং টাচ শুধু বাকি।
একটু বসুন স্যার, চা খান,
কবিতার কয়েকটা ইস্ক্রুপ কম প’ড়ে গেছে আমাদের,
পাশের কারখানা থেকে একছুটে নিয়ে আসবার জন্যে
এখখুনি পাঠিয়ে দিচ্ছি লতিফকে।।
মাহফুজ , ভাইজান, এই এইটা কি প্রসব করলেন? আপনাকে না একবার হাইবারনেশনে পাঠানো হয়েছিল, আপনি আবার জেগে উঠলেন কবে?
দাদা, সাদা, দাদী, কাঁদি
নানা, জানা, নানি, পানি
বাবা, খাবা, হাবা, ছাবা……
ভাইরে, মাফ করেন, নিজেরেও, আমাদেরকেও, আপনি কি মাঝে মাঝেই এই ব্লগের সবার ধৈর্য পরীক্ষা করেন?
মুক্তমনা এডমিন,
খ্যামটা নাচের মত তাল-লয়হীন কতগুলো শব্দের বেহুদ্দা স্ক্র্যম্বলিং এই ছবিতাটাকে প্রথম পাতা থেকে সরিয়ে দেওয়া যায়না? এ ধরণের ফাজলামো বন্ধ করার জন্য দরকার হয় একটা নতুন নীতি প্রণয়ন করুন :-X :-Y :-Y :-Y
@ফাহিম রেজা,
ভাইরে,
এই দুনিয়াতে গর্ভবতী মা কখনো কখনো কানা, খোড়া, নুলাও প্রসব করে। আর এই প্রসব ইচ্ছাকৃত নয়। প্রকৃতিই ঘটায়।
আমার বেলাতেও তদ্রুপ ঘটেছে।
এখন মা কি তার সেই সন্তানকে গলাটিপে হত্যা করবে? নাকি পরম আদর যত্ন দিয়ে বড় কোরে তুলবে?
আগে আমাকে হাইবারনেশনে পাঠানো হয়েছিল কী কারণে, তাকি আপনি জানেন? আপনার যদি কারণটি জানা থাকে দয়া করে জানাবেন কি?
এত কষ্ট ক’রো শব্দ খুঁজে খুঁজে অন্ত্যমিল দিয়ে ‘ডাকাডাকি’ তৈরি করলাম, ভেবেছিলাম, মুক্তমনার কবিরা আমাকে কবিতা চর্চার পথে উৎসাহিত করবেন। আমার ভুল-ভালগুলো একটু দেখিয়ে দিবেন, শিখিয়ে দেবেন কিছু রীতি, ছন্দ। ছড়া কবিতা, ওগুলো হচ্ছে শব্দের খেলা। সেই খেলা খেলতে গিয়ে দেখছি ঠ্যাং ভেঙ্গে যাচ্ছে।
কী আর করা, প্রিয় এডমিনকে অনুরোধ করেছেন সরিয়ে ফেলতে। কিন্তু আমি অনুরোধ করবো এটা রাখতে। কারণ, আমি আরো দেখতে চাই, এই কবিতাটি আর কী কী দোষে দুষ্ট হয়েছে।
আপনার দৃষ্টিতে- “এই ডাকাডাকিটা খ্যামটা নাচের মত তাল-লয়হীন কতগুলো শব্দের বেহুদ্দা স্ক্র্যম্বলিং হয়েছে।”
এই তো সুন্দর মন্তব্য পেলাম। তবে খ্যামটা নাচেও কিন্তু অনেকে মজা পায়। ওগুলোর দিকেই বেশি নজর যায় মানুষের। আমি ইতোপূর্বে তিনটি কবিতা পোষ্ট করেছি। সাময়িক অনুভূতি, স্তুতি, তুমি। ঐসব কবিতায় মন্তব্য এসেছে খুবই কম। তেমন কোন বিরোধীতাও করা হয় নি।
মুক্তমনায় এ পর্যন্ত ৩৩ জন কবিতা ছড়া লিখেছেন। সকলকেই উৎসাহিত করা হয়েছে। তাহলে আমাকে কেন উৎসাহিত না করে নিরুৎসাহিত করা হচ্ছে। কেন এত কঠিন কঠিন কথা বলা হচ্ছে?
@ফাহিম রেজা,
ধর্মীয় নিয়ম নীতি আর ফতুয়ার যাতাকলে পিষ্ট হয় মাঝে মাঝে দেশবাসী। মুক্তমনা যদি নতুন নতুন ফতুয়া উৎপাদন করে তাহলে মুক্তমনারাই এর বিরোধিতা করবে।
ভাই আপনাকে কিছু আরবী কবিতা শোনাই, এই আরবী কবিতাগুলো পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ কবিতা হিসেবে স্বীকৃত মুসলিম জাহানে। ওগুলোকে কী আপনি ফাজলামো বলতে পারবেন?
১) কুল আউজুবিরাব্বিন্নাস, মালিকিন্নাস, ইলাহিন্নাস, মিন শাররিল ওয়াস ওয়াসিল খান্নাস।
২) কুলহু আল্লাহু আহাদ, আল্লাহুস সামাদ, লাম ইয়ালিদ, ওয়া লাম ইউলাদ, ওয়ালাম ইয়া কূল্লাহু কুফুয়ান আহাদ।
@মাহফুজ,
ফতুয়া? ফতুয়া তো ভাল জিনিস। ছেলেরা বিভিন্ন উৎসবে স্টাইল করে ফতুয়া পড়ে ইদানিং! মুক্তমনা না, বরং আড়ং কিংবা ইউনুস সাহেবের গ্রামীনে চেকে খুঁজলে ভাল ফতুয়া পাওয়া যাবে !
আর আপনার অসামান্য কবিতাটা পড়ে সুকুমার রায়ের আশ্চর্য কবিতার কথা মনে পড়ে গেলো (বিশেষতঃ শেষ প্যারাটা!)।
@অভিজিৎ দা,
জ্ঞানী ব্যক্তির উক্তি: “যেভাবে তুমি অন্যের দোষ ধরবে, সেভাবে তোমারও দোষ ধরা হবে।”
জ্ঞনোক্তি বিফল হয় না, ফতুয়াটা তার প্রমাণ। আমার লেখা উচিত ছিল- ফতওয়া।
এটা নিয়ে হাস্যরসাত্মকের আগমণ ঘটালেন, সেজন্য ধন্যবাদ।
সুকুমার রায়ের “আশ্চর্য কবিতা” গল্পটি আগেও পড়েছি, কিন্তু আজকে পড়ে নতুন ভাবনা এলো- হরে রাম, শ্যামলাল, গোপাল; এই তিনজনের কোন জন আমি?
আপনি গল্পের লিংক দিলেন, আমি সুকুমারের “আশ্চর্য” নামে একটি আস্ত কবিতাই তুলে দিচ্ছি:
নিরীহ কলম, নিরীহ কালি,
নিরীহ কাগজে লিখিল গালি –
“বাঁদর বেকুব আজব হাঁদা
বকাট্ ফাজিল অকাট্ গাধা।”
আবার লিখিল কলম ধরি
বচন মিষ্টি, যতন করি –
“শান্ত মানিক শিষ্ট সাধু
বাছারে, ধনরে, লক্ষ্মী যাদু।”
মনের কথাটি ছিল যে মনে,
রটিয়া উঠিল খাতার কোণে,
আঁচড়ে আঁকিতে আখর ক’টি
কেহ খুশী, কেহ উঠিল চটি!
রকম রকম কালির টানে
কারো হাসি কারো অশ্রু আনে,
মারে না, ধরে না, হাঁকে না বুলি
লোক হাসে কাঁদে কি দেখি ভুলি?
সাদায় কালোয়া কি খেলা জানে?
ভাবিয়া ভাবিয়া না পাই মানে।
@মাহফুজ,
আপনার এ ডাকাডাকি সুকান্ত ভট্টাচার্যের মিঠেকড়া বইয়ের ছড়ার কথা মনে করিয়ে দিল। যেমনঃ বিয়েবাড়ির মজা, ভেজাল, মেয়েদের পদবী ইত্যাদি। লেখালেখি অব্যহত রাখুন।
@গীতা দাস,
সুকান্তের কথা মনে করিয়ে দিলেন। মনে পড়ে যাচ্ছে তার রক্ত গরম করা ‘লেনিন’ কবিতাটি।
আমি নিজের সাথে চুক্তি করেছি এই বছরের বাকি সময়টুকু কবিতা পড়ে কাটাবো। যদি আবেগ আসে তবে দু একটি শব্দ দিয়ে মালা গাথবো। লিখবো বৈজ্ঞানিক কবিতা।
ভেজাল কবিতা তুলে দিলাম এখানে-
ভেজাল, ভেজাল, ভেজাল রে ভাই, ভেজাল সারা দেশটায়,
ভেজাল ছাড়া খাঁটি জিনিস মিলবে নাকো চেষ্টায়!
ভেজাল তেল আর ভেজাল চাল, ভেজাল ঘি আর ময়দা,
‘কৌন ছোড়ে গা ভেজাল ভেইয়া, ভেজালসে হায় ফয়দা।’
ভেজাল পোষাক, ভেজাল খাবার, ভেজাল লোকের ভাবনা,
ভেজালেরই রাজত্ব এ পাটনা থেকে পাবনা
ভেজাল কথা- বাংলাতে ইংরেজী ভেজাল চলছে,
ভেজাল দেওয়া সত্যি কথা লোকেরা আজ বলছে।
‘খাঁটি জিনিস’ এই কথাটা রেখো না আর চিত্তে,
‘ভেজাল’ নামটা খাটি কেবল আর সকলই মিথ্যে।
কলিতে ভাই ‘ভেজাল’ সত্য ভেজাল ছাড়া গতি নেই,
ছড়াটাতেও ভেজাল দিলাম, ভেজাল দিলে ক্ষতি নেই।।
এইসব কাব্যাচার হইতে মুক্তমনাকে রক্ষা করা হউক। কবিতা মডারেশন ছারা যেন প্রকাশিত না হয়।
@বিপ্লব পাল,
আমিও আপনার সাথে একমত। তবে কবিতার বৈজ্ঞানিক বিবর্তন ঘটবেই একদিন। বিজ্ঞানের বিষয়, বিবর্তনের বিষয় নিয়ে কবিতা লেখা উচিত। ডারউইন দিবসে চক্রবাকের একটি সুন্দর কবিতা আবৃতি হয়েছিল। কবিতার নাম ছিল বানরনামা। কবিতাটি এখানে তুলে দিলাম-
শুনিয়া রাখ দু’কান খুলে
ওহে নারী-নর
ডারউইন কিন্তু বলেননি হে-
মানুষ ছিল বানর।
একই রকম আদি কোষ
হইতে উদ্ভব
জীবজগতে বিরাজ করি
আমরা যত সব।
বহু মিলিয়ন বছর ধরে
পরিবেশের হয় বদল
কেউ বা হয় বিলুপ্ত
কেউ থেকে যায় সচল।
পরিবেশে তাল মিলাতে
কেউ বা পালটে আকার,
এক দু-দিনে ঘটেনি
এ সব বিবর্তনের ব্যাপার।
বানরের যে আদি পুরুষ
মানুষের ও তা
মানুষ তবে ছিল বানর
এ ডাহা মিথ্যা।
না পড়িয়া, না জানিয়া
ডারউইনকে দেয় গালি,
এরাই যদি বানর না হয়
বানর কাদের বলি!
আশা করছি- ভবিষ্যতে আবর্জনার বদলে এ ধরনের চমৎকার কবিতা উপহার দিতে পারবো। সবে তো হাটি হাটি পা পা করে এগুচ্ছি। ছন্দরীতি শিখছি। সমালোচনাই তো আমাকে এগিয়ে নিয়ে যাবে।
@মাহফুজ,
গুরু মানলে, কোনকিছু করার আগে তাঁর ইযাজত আর দোয়া নেয়া ভাল।
@আকাশ মালিক,
অতি উত্তম কথা কইছেন। দোয়া আর ইযাজত না নেয়ার কারণে ইজ্জত পাঞ্চার হতে চলেছে। থামস ডাউন শুরু হয়েছে। ভবিষ্যতে আপনার এই হুজুরী কালাম আমার পথের পাথেয় হোক।
ধন্যবাদ যথা সময়ে যথার্থ কালাম নাজিলের জন্য।
@বিপ্লব পাল,
একটা হাস্য রসাত্মক কবিতা নিয়ে অনর্থক নেতিবাচকই মন্তব্য শুরু না করলেই কি নয়?
অন্ত্যমিলের আবর্জনা প্রসব করলেই কবিতা হয় না।
মুক্তমনার মান নিয়ন্ত্রণটা মনে হয় জরুরী হয়ে পড়েছে।
@ফরিদ আহমেদ,
নির্ভেজাল সত্য কথনের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করছি। আসলেই অন্ত্যমিলের আবর্জনা প্রসব করলেই কবিতা হয় না। কবিতা হতে হবে এরূপ:
কখনো আমি স্বপ্ন যদি দেখি
স্বপ্ন দেখবো একটি বিশাল নদী।
নদীর ওপর আকাশ ঘন নীল
নীলের ভেতর উড়ছে গাঙচিল।
আকাশ ছুঁয়ে উঠছে কেবল ঢেউ
আমি ছাড়া চারদিকে নেই কেউ।
কখনো আমি কাউকে যদি ডাকি
ডাকবো একটি কোমল সুদূর পাখি।
পাখির ডানায় আঁকা বনের ছবি
চোখের তারায় জ্বলে ভোরের রবি।
আকাশ কাঁপে পাখির গলার সুরে
বৃষ্টি নামে সব পৃথিবী জুড়ে।
এই মান নিয়নন্ত্রণের মানদণ্ডটা কী হবে?
ছড়া বা কবিতার অঙ্গনে আপনাকে স্বাগতম! :rose2:
আগামীতে আশা করি একটু ছোট কবিতা বা ছড়া পাব!
এত বড়তে ছন্দ হারিয়ে যাবার সম্ভাবনা থাকে।
@লাইজু নাহার,
স্বাগতম জানাবেন না। এগুলো কবিতা বা ছড়া কিছুই হয়নি। এগুলো হয়েছে আবর্জনা।
তবে আবর্জনা পচে পচে এক সময় সার হয়।
@লাইজু নাহার,
আমি আপনার সাথে সহমত। তবে প্রথম দিকে ভালোই এগূচ্ছিল। আরো লিখুন।