আমার ইচ্ছেগুলো কখনোই
শারীরিকভাবে তেমন সুস্থসবল ছিল না
অনাহারী পোয়াতি মায়ের প্রসব করা
রুগ্ন নবজাতকের সাথে আমার ইচ্ছেগুলোর
তুলনা খুব সহজেই করা যায়,
বলা যায় জন্মমূহুর্তেই নীরব মৃত্যুবরণ।

একবার ভেবেছিলাম,
চলমান অসভ্য সভ্যতার শেকর ধরে
হ্যাচকা টান দেব, সমূলে উৎপাটন করব
সমস্ত মিথ্যের গোড়া।
সত্যি বলছি, ইচ্ছেটা মারা গিয়েছিল
সকরুন মুমূর্ষভাবে, তীব্র যন্ত্রনায়
যেমন করে মারা যায় সারা গায়
পঁচনধরা স্যাতস্যাতে কুষ্টরোগী।

একসময় খুব বাঁচতে ইচ্ছে করত
বুক ভরে নিতে চাইতাম মাটির গন্ধ
শ্রবন ইন্দ্রিয় সর্বদা উৎসুক থাকত
ছোট্ট চড়ুই পাখিটার গান শোনার জন্য
দেখতে চাইতাম এক আকাশ নীল
আর সমস্ত রঙ্গের প্রচন্ড বিস্ফোরন।

আমার সেই ইচ্ছেগুলোর ফুসফুসে
দূষিত সভ্যতার আরও দূষিত বাতাস
ভয়াবহ ক্যান্সার সৃষ্টি করেছিল, এবং
অত্যন্ত স্বাভাবিক পরিণতি হিসেবে
তারা তাৎপর্যহীনভাবে, মাথা নিচু করে
নীরবে প্রস্থান করেছে।

আর সেই যে আমার, বুনোপাখি হয়ে
লুপ্ত সভ্যতার থেকে দূরে বহুদূরে
এক অন্যমাত্রায়, অন্যসৌরলোকে যাওয়ার ইচ্ছেটা
গলাকাটা লাশের মত তড়পাতে তড়পাতে মারা গেছে।

একান্ত ব্যক্তিগত আমার সমস্ত ইচ্ছেরা
আজ ভবঘুরে, নিরুদ্দেশ
আপাদমস্তক ব্যার্থতার মলাটে ঢাকা আমি
বিবর্জিত স্মৃতির শহরে সম্পুর্ন একা।

যুক্তিবিদ্যায় আস্থাবান আমি তাই এখন,
আর কোন ইচ্ছে করি না, কারন জানি
যুক্তিবিদ্যার সহজ নিয়মে অতীতের মত
আমার বর্তমান ইচ্ছেগুলোরও বিভৎস
পরিণতি হবে। তারা অত্যন্ত অসহায়ভাবে
ব্যর্থতার সাথে নিঃশেষ হবে, আর
বেঁচে থাকবে শুধুমাত্র,
যান্ত্রিক সভ্যতার দাম্ভিক উল্লাস।।