আমার অভিজ্ঞতা মনে হয় এখানে নিতান্তই অপ্রাসঙ্গিক। কারন আমি জ্ঞানত নাস্তিক হইনি। তবে আস্তিক হলেও প্রথাগত ধর্মগুলির অন্ধভক্তির জগত থেকে বেরিয়ে আসতে পেরেছি। এটা নি:সন্দেহে নাস্তিকতার পক্ষে বা আস্তিকতা চ্যালেঞ্জ করা কোন লেখা নয়। অবিশ্বাসের জবানবন্দী বিভাগটা লেখার জন্য নির্বাচিত করলেও তাই এই রুপান্তরের অভিজ্ঞতা মনে হয় এই বিভাগে বেশ কিছুটা ব্যাতিক্রম।
আমার জন্ম বাংলাদেশের আর ১০ টা পরিবারের মতই, ধর্মীয় তবে গোঁড়া না। মা সাধারনভাবে চরম ধার্মিক। তাকে জীবনে কখনো কোন নামাজ জ্ঞানতঃ ক্বাজা করতে দেখেছি বলে মনে পড়ে না। যদিও গানবাজনা, নাটক সিনেমা এসবেও তাঁর সারা জীবনই খুবই উৎসাহ। ধর্মের কথা বললে জবাব দিতেন যে ধর্মের কিছু কিছু রীতিনীতি যুগের সাথে বদলে যায়, আর নামাজ রোজা ঠিকমত করলে কোন সমস্যা নেই।
বাবা ধর্ম নিয়ে তেমন মাথা ঘামাতেন না, জীবনের শেষ দিকে এসে হজ্ব করেন, তবে তারপরেও নিয়মিত নামাজ রোযা ছাড়া আর তেমন কিছু বাহ্যত করতেন না। তিনি যে আমলে হজ্জ্ব করেন তখনো হজ্জ্ব করাটা পাবলিক ফ্যাশনের মত হয়ে দাড়ায়নি। মনে পড়ে না তাকে কখনো কাউকে ধর্ম নিয়ে ওয়াজ নসিহত বা কোন দোয়া দরুদ পাঠে কত সোয়াব এ জাতীয় আলাপ করতে শুনেছি, যে ধরনের কথাবার্তা সাধারনত ধর্ম কর্ম নিয়ে যারা থাকেন তারা বেশ উৎসাহের সাথেই নিত্যই করেন। ধর্ম নিয়ে পড়াশুনা করতে দেখেছি, কারন পাঠ্যাভাস ছিল তার মজ্জাগত, মরিস বুকাইলের সেই কোরান বাইবেল বিজ্ঞান বহু বছর আগে থেকেই আমাদের বাড়িতে ছিল। তিনি মনে হয় ধর্মকর্ম কে একান্ত ব্যাক্তিগত ব্যাপার বলেই মনে করতেন। পীরের দরগায় যাওয়া বা দ্বীন দুনিয়া ভুলে অহঃনিশি আল্লাহকে হাক ডাক করে ডাকাডাকি এসব একেবারেই পছন্দ করতেন না। এখানে আমার মা এর সাথে তার বিরাট তফাত। তবে আমাদের বাড়িতে ছোটবেলা থেকেই আর দশটা মুসলমান পরিবারের মতই হুজুর এসে আরবী কায়দা পড়াতেন। বড় বোনেরা কোরান খতম স্কুলের নীচের ক্লাসেই দেন, যদিও তারা সবাই সে আমলের ইংরেজী মিডিয়ামে পড়া। আমরা দুভাই কেন যেন শুরু করেও বেশীদূর আগাইনি। বাবাও গা ছাড়া ভাব দেখান, আমাদের অনুৎসাহী ভাব দেখে মার পীড়াপিড়ি তেমন আমল দেননি।
পারিবারিক ধর্মীয় শিক্ষা আর তেমন আগায়নি। স্কুলে শুধু চলত। সেও অনেকটা জোড়াতালি দেওয়া। তাতে ছোটবেলায় বেশ উৎসাহ পেলেও বয়স বাড়ার সাথে সাথে উৎসাহ চলে যায়। ক্লাস টুতে পড়াকালীন বাবা আরব দেশ থেকে হজ্ব করে ফেরার পর কিছুদিন বেশ গভীর ইসলামী চেতনায় উদ্ধুদ্ধ হই। এমনকি আরবী আলখাল্লা ও মাথার ব্যান্ডেরও জোর দাবী তুলি। তখন কিভাবে যেন ধারনা হয়েছিল সৌদী আরবই জগতের শ্রেষ্ঠ দেশ। ইহকাল পরকাল সব সেখানেই আছে। আরবী পড়তে কোনদিনই পারতাম না। কোরান কেন আরবীতে পড়তেই হবে অনেককে জিজ্ঞাসা করেও সদুত্তর পাইনি। বুঝলাম মুসলমান হিসেবে কোরান পড়তে হবে, তবে নিজে ভাষায় পড়তে সমস্যা কি? কেন আমাকে বিজাতীয় আরবীতেই পড়তে হবে? কাছাকাছি জবাব পেতাম যে যেকোন ভাষাতেই পড়া যায়, তবে আরবীতে পড়লে অনেক বেশী সোয়াব। ধীরে ধীরে বুঝেছি যে আমাদের ধর্ম জগতের বেশীরভাগ মোটিভেশনই গুনাহ এবং সোয়াবে নিহিত। ক্লাস সেভেন থেকে আমাদের ধর্ম পরীক্ষায় বেশ কিছু নম্বর থাকত নানা রকমের আরবী শব্দের উচ্চারন ও অর্থ লেখা। অত্যন্ত বিপদে পড়লাম। প্রথমে ফটোগ্রাফিক মেমোরির সাহায্য নিলাম। মানে আরবী শব্দ দেখেই তা হায়াগ্রোলিফিকক লিপি পড়ার কায়দায় মনে রাখার চেষ্টা। এই পদ্ধুতি তেমন ভাল কাজ দিল না। এরপর আরো সহজ ও অনেক কার্যকরি পদ্ধুতি নিলাম। আরবী জানা এক বন্ধুর সাথে মৌখিক চুক্তি করলাম। বিনিময় পদ্ধুতি যাকে বলা যায়। সে ছিল অংক, বিজ্ঞান, ও ইংরেজীতে মারাত্মক কাচা। তাকে আমি পরীক্ষায় ওইগুলিতে সাহায্য করতাম বিনিময়ে তার থেকে আরবী শব্দের উচ্চারন টুকলিফাই করতাম। ক্লাস নাইনে পদার্পন করে ঐচ্ছিক হিসেবে ইসলামিয়াত না নেওয়ায় এই যন্ত্রনা থেকে চিরমুক্তি পেলাম, কি যে শান্তি লেগেছিল। বলে রাখা ভাল যে সে সময় পর্যন্ত স্কুলে আরবী বিরক্তিকর লাগলেও ধর্ম শিক্ষা খারাপ লাগত না। নিজেদের এমন একটা ঐতিহ্যবাহী আইডেন্টিটি আছে এটা বোধ করতে খুবই ভাল লাগত।
এমনি করেই দিন যাচ্ছিল। ধর্ম কর্মের ধার তেমন ধারি না। মা মাঝে মাঝে নামাজ পড়তে বলেন, এক কানে ঢুকাই আরেক কানে বের করে দেই। শুধু জুমা/ঈদের নামাজে যাই। বাসার বাকী সবাই অবশ্য নিয়মিত নামাজ পড়ে। রোযা অবশ্য নিয়মিত রাখতাম খুব ছোটবেলা থেকেই। সে সময় বন্ধুবান্ধবের সাথে এসব নিয়ে আলাপ হত, কে কয়টা রোজা রাখল এ ব্যাপারটা ষ্ট্যাটাস ইস্যূ ছিল। আর ইফতারের সময় বেরোজদার বলে ভাগে কম পড়ার সম্ভাবনা থাকে না দেখে। মুরুব্বীরাও খুশী হতেন। সাথে সাথে বেরোজদারদের ফুটন্ত পুজের সাগরে সাতার কাটার মত ভয়াবহ শাস্তির ভয় তো ছিলই।
বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের মাঝামাঝি থেকে অবস্থার আমূল পরিবর্তন ঘটল। ভয়াবহ ধরনের ধার্মিকে পরিণত হলাম। ৫ ওয়াক্ত নামাজ নিয়মিত মসজিদে গিয়ে পড়ি, সে শীত গ্রীষ্ম বর্ষা যাই হোক না কেন। ক্লাসের ফাকেও চলে যাই নামাজের যায়গায়। কিছুটা গোড়ামিও ভর করল। গুনাহর ভয়ে ছবি তুলতে চাই না, সিনেমা টিভি দেখিনা। বন্ধুবান্ধবেও বলে, কি ভাল ছেলে। সেসময় আসলেই মানসিকভাবে খুবই শান্তি পেতাম। দিন দুনিয়ার সুখ দূঃখ তেমন ষ্পর্শ করত না। এ অবস্থায় বেশ কিছু দিন গেল। এরপর বিদেশে আগমন, যদিও প্রথাগত ধর্ম পালনে ছেদ পড়ল না। মহা সমারোহেই চলল। কারন যে শহরে পড়তে এসেছিলাম সে শহরের বাংগালী এবং মুসলমান কমিউনিটি খুব ছোট এবং সবাই বেশ ধার্মিক। এ সময় এমনকি এক তবলীগের দলে ভিড়ে অন্য শহরেও ধর্মপ্রচারে বের হলাম। ধর্ম পালনে সংশয়ের ছাপ পড়ল আরো কবছর পর। মাত্র এই সেদিন।
এবার আমার মনে কিভাবে প্রথাগত ধর্মগুলির ব্যাপারে সন্দেহ বা অনীহা এল সেটা বলি। বলে রাখা ভাল যে আমার সন্দেহের বীজ বলতে আল্লাহর অস্তিত্ত্ব বোঝাচ্ছি না। সে ব্যাপারে আমার তেমন বড় ধরনের সন্দেহ এখনো হয়নি। বিবর্তনবাদ বা বিজ্ঞানের অন্য কোন মতবাদ পড়ে আমার অবিশ্বাস আসেনি। যুক্তি তর্ক বা কারো নাস্তিক্যবাদের লেখা পড়েও আমার অবিশ্বাসের সূত্রপাত হয়নি। সূত্রপাত হয়েছে বলা যায় নিজেরই ধর্মের নানান দর্শন, রীতিনীতি নিরপেক্ষ দৃষ্টিতে চিন্তা করতে যেয়ে। এই ধরনের সন্দেহের বীজ মনে হয় সব ধার্মিকের মনেই থাকে বা থাকার কথা। আমার মত বেকুব বা কম ঈমানের হলে অনেকে মনে হয় প্রকাশ করে ফেলেন, আর বেশীরভাগ প্রকাশ করেন না বা নিজের মনকে স্বান্তনা দিতে নানান রকমের বুঝ দেন। এককালে তেমন আমিও করতাম। প্রশ্ন আসত, কাউকে জিজ্ঞাসা করতাম, উত্তর মনপূতঃ না হলেও কিছু কথা চালাচালির পর ভান করতাম যে মোক্ষম ব্যাখ্যা পেয়ে গেছি। খামোখা বেয়াড়া প্রশ্ন চালিয়ে গুনাহের ভাগীদার হতে চাই কোন আক্কেলে। এ জাতীয় আলাপে অবধারিতভাবেই এক পর্যায়ে মোড় নিত যে এসব নিয়ে বেশী চিন্তা করা নিষেধ আছে, ঈমান হালকা হয়ে যায়, কিংবা আমরা সামান্য মানুষ ভাল মন্দ কি বুঝি, আল্লাহই ভাল বোঝেন এ জাতীয় দিকে। এরপর আর কথা বাড়ানো ধার্মিক হিসেবে অসম্ভবের মত।
আমার মৃদু ধার্মিক, চরম ধার্মিক, বর্তমান সন্দেহে ভোগা ধার্মিক এই সব জীবনেই কিছু প্রশ্ন বার বার মনে এসে উকি দিত এবং দেয়, যেগুলির যুক্তিসংগত ব্যাখ্যা আজো খুজে পাইনি। এককালে আশা ছিল পাওয়া যাবে, এখন বুঝতে পারছি যে আসলে পাওয়া যাবে না। ছোটবেলা থেকেই আশে পাশের ইসলামী পন্ডিতদের কাছ থেকে শুনে এসেছি যে মুসলমান বাদে আর বাকি সবাই জাহান্নামের আগুনে চিরকাল পুড়বে। মুসলমানেরা যাই হোক, কিছুটা গড়াই পেটাই এর পর একদিন না একদিন বেহেশত এ যাবেই। বিধর্মী, বিশেষ করে হিন্দুদের প্রতি বিদ্বেষের বীজ অনেকের মত খুব ছোটবেলা থেকে আমার মাঝেও ছিল। এই দর্শন মুসলমান হিসেবে ভালই লাগত, নিশ্চিত স্বর্গপ্রাপ্তির এহেন নিশ্চয়তায় কেই বা আপত্তি করে বা বেয়াড়া প্রশ্ন তোলে?
হিন্দুদের কেমন জব্দ হতে হবে ভাবলেও মনে বেশ প্রশান্তির ভাব আসত। মাত্র কিছুদিন আগেও কোন হিন্দু ধর্মাবলম্বী লোকের সাথে পরিচয় হলেই মনে হত, আহা রে, বেচারার কপালে পরকালে অন্তত আগুনে পোড়াই লেখা আছে। ব্যাটা এমনই গাধা যে আমি বললেও বিশ্বাস করবে না। তবে গোল বাধল অন্য যায়গায়।
ছোটবেলা থেকেই ঘরে গৃহশিক্ষক আসতেন। সে আমলে তারা কেন যেন বেশীরভাগই ছিলেন হিন্দু সম্প্রদায়ের। মুসলমান নাকি ভাল শিক্ষক হয় না এমন কথা অনেকের কাছেই শুনেছি। মুশকিল হত যে হিন্দুদের ঘৃণা করার শিক্ষা ধর্মীয় দর্শন থেকে পেয়েছি সেই হিন্দু সম্প্রদায়ের লোক যারা শিক্ষক হয়ে জীবনে এসেছেন তাদেরকে মনে হত দেবতূল্য মানুষ। বাসুদেব নামের একজন বৃদ্ধ শিক্ষক আমাদের কলোনীর অনেক বাসায় পড়াতেন, যেমন ছিলেন রসিক, তেমনি নীতিবান ও ভাল শিক্ষক। তার ভাই ফনীভূষন মজুমদার ছিলেন বংগবন্ধুর আমলের মন্ত্রী। ওনার কাছে আমি ক্লাস টু থেকে ফাইভ পর্যন্ত পড়ি। এনার মতন ভালমানুষ মনে হয় না আশেপাশে খুব বেশী দেখতাম। আমার জীবনের একটি বড় টার্নিং পয়েন্টও ক্লাস সেভেনে হৃষিকেশ নামের আরেকজন হিন্দু শিক্ষকের থেকেই আসে। যে কারনেই আজ মনে হয় আমি পেশাগত জীবনে মোটামুটিভাবে প্রতিষ্ঠিত, এতে আমার কোনই সন্দেহ নেই। আমি তার আগ পর্যন্ত ছিলাম অত্যন্ত সাধারন মানের ছাত্র, পড়াশুনা করতে হয় বলেই করি, পরীক্ষায় ফেলনা করলেও অবস্থান থাকে মাঝামাঝি, অংকে ছিলাম খুবই সাধারন। মাটির মানুষ এই লোকটি এসে কোনরকম মারধর বা ধমকাধমকি ছাড়াই আমাকে কিভাবে যেন অংক বিজ্ঞানে চরমভাবে উতসাহী করে তোলেন। তারই ধারাবাহিকতায় আমার আজকের অবস্থান। টেন এ উঠেও নিত্যানন্দ কুন্ড নামের আরেক শিক্ষক পাই যাকেও সহজে ভোলা যায় না। এরা সবাই যেমন ছিলেন ভাল শিক্ষক তেমনি মানুষ হিসেবে দেবতূল্য। ওনাদের মত ভালমানুষেরা মৃত্যুর পর অনন্তকাল আগুনে পুড়বেন এমন ধারনা আমার কচিমন কখনোই মেনে নিতে পারত না।
এসব দেবতূল্য লোকদের দেখতাম আর মার কাছে জিজ্ঞাসা করতাম; মা অমুক স্যারও তো হিন্দু, উনি কত ভাল মানুষ, উনিও কি সারা জীবন দো্যখে পুড়বেন? মা সরাসরি উত্তর দিতেন না, শুধু ঘুরিয়ে মনে হয় আমাকে স্বান্তনা দিতেই বলতেন যে হিন্দুরাও ভাল কাজের পুরষ্কার পাবেন। যদিও অনন্তকাল দো্যখে পুড়েও কিভাবে পুরষ্কার পাওয়া যায় এ প্রশ্নের যুক্তিসংগত ব্যাখ্যা কখনোই দিতে পারেননি। আজ পর্যন্ত অন্য কেউই দিতে পারেননি।
এ প্রশ্নের যুক্তিসংগত উত্তর কখনোই পাইনি। অনেকেই বলেন যে তাদের সুযোগ দেওয়া হয়েছিল ইসলাম গ্রহন করার, তারা করেনি, কাজেই অমন পরিনতি তাদের প্রাপ্য। বলাই বাহুল্য, ধর্মীয় পরিচয় যখন অধিকাংশ ক্ষেত্রেই জন্মগত বা পারিবারিকভাবেই স্থির হয়ে যায় সেক্ষেত্রে তাদের দায় কিভাবে দেওয়া যায় এমন কুযুক্তিরও যুক্তিসংগত উত্তর কোথাও পাইনি। আমি নিজে বা এমন ব্যাখ্যা যারা দেন তারাও অন্য সব ধর্মের গ্রন্থ পাঠ করে এ সত্য বুঝেছেন তেমন কোন আলামতও পাইনি।
বিশ্ববিদ্যালয়ে আমাদের ক্লাসে একজন ছাত্র ছিল যে দ্বিতীয় বর্ষের শুরু থেকে কঠিন তবলিগী হয়ে যায়। সে সময় তার কাছে আমরা নানান রকমের ইসলামী জ্ঞান নিতাম। এই প্রশ্নও একদিন তাকে করেছিলাম। উদাহরন হিসেবে বলেছিলাম যে মাদার টেরেসা এত জনকল্যানমূলক কাজ করেন, কিছুই কাজে আসবে না? তার কপালেও অনন্তকাল জ্বলে পুড়াই লেখা আছে? এত মানবতাবাদী কাজকর্ম সব বৃথা যাবে, এর ব্যাখ্যা কি? এ ধরনের প্রশ্নের উত্তর বেশীরভাগই কেন যেন পালটা প্রশ্ন বা উদাহরন হয়ে থাকে। সেও বেহেশতি হাসি হেসে ব্যাখ্যা করেছিল; তোমরা তো কত কষ্ট করে পরীক্ষার জন্য পড়াশুনা কর, সবসময় কি ভাল ফল লাভ কর? অনেক সময় এমন হয় না যে অনেক ভাল প্রিপারেশন নেবার পরেও পরীক্ষায় খারাপ করলে? এ ব্যাপারটাও তেমন। এহেন ব্যাখ্যায় সন্তুষ্ট না হলেও আর কথা বাড়াইনি। এর কিছুদিন পরে কোরানের বাংলা পড়ে অবশ্য আবিষ্কার করেছি যে আহলে কিতাবধারীরাও বেহেশতে যেতেই পারেন (অনেকের মতে অন্য কোন আয়াতে এর উলটা ধারনাও আছে)। মাদার টেরেসার ব্যাপারে মোটামুটিভাবে আশ্বস্ত হলেও হিন্দু বা নাস্তিকদের যে কোনই রেহাই নেই এতে কোন সন্দেহ নেই।
এই নিয়ে মনের মধ্যে তীব্র দ্বন্দ্ব কাজ করলেও তা খুব বেশী ডালপালা মেলতে পারেনি বা বলা ভাল যে মেলতে দেইনি। আল্লাহ নিশ্চয়ই সব বিষয় ভাল বোঝেন, কারো উপর অবিচার হবে না এমন ধারনা বিশ্বাস করতে চেষ্টা করতাম, আজো করি। মুশকিল বাধত কোরান শরীফ সহ নানান ধর্মীয় পুস্তকে এমন ধারনার পরিষ্কার বিরোধীতা আবিষ্কার করে। নানা বিশেষজ্ঞের এ সম্পর্কিত কথাবার্তা, সাম্প্রদায়িক মতবাদ যত শুনতাম ততই মনের একটা দিক প্রথাগত ধর্মের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করে বসত। এ হতে পারে না। যে জন্মের উপর মানুষের কোনই হাত নেই সে জন্মের কারনেই কেউ অনন্তকাল বেহেশতের ফল ফ্রুটস হুরী ভোগ করবেন আবার কেউ বেগুনপোড়া হবেন, সৎকর্মের কোনই প্রতিফল থাকবে না এটা কোন সূস্থ যুক্তিতে ব্যাখ্যা করা যায় আজো জানি না। কেউ কেউ আরো সোজা বুদ্ধি দিতেন, এসব নিয়ে মাথা না ঘামিয়ে নিজে ধর্মকর্ম করে যাও। কেমন যেন গা এড়ানো বলে মনে হয়।
প্রথাগত ধর্মের আরেকটি দিক আমার কাছে চিরকালই বাড়াবাড়ি রকমের হাস্যকর লাগত। তা হল ইসলামী মতে আমি যা বুঝেছি তা হল যাবতীয় সোয়াব নেকি কামানোর সবচেয়ে বড় উপায় হল নানান উপায়ে আল্লাহর আরাধনা করা। নামাজ, রোযা, নিয়মিত কোরান পড়া, কোন সূরা বা দরূদ পাঠে কত ফযিলত এসব হল উল্লেখযোগ্য। যেটা আমার কাছে খুবই আশ্চর্যের মনে হয় যে প্রথাগত ইসলামে সেভাবে মানব উপকার বা জনকল্যানমূলক কাজের উপর গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে বলে কোনদিন মনে হয় নি (হতে পারে আমি ভুল? তবে যারা জোরে শোরে ইসলাম পালন করেন ও গবেষনা করেন তাদের তাত্ত্বিক লেখালেখি, বয়ান, ও জীবন পদ্ধুতি দেখে এমন মনে হওয়া খুবই স্বাভাবিক)। সুন্নী ইসলামের ৫ প্রধান স্তম্ভের যাকাত বাদে আর কোনটাকেই আমার কাছে এখন আর রিচূয়াল বাদে তেমন কিছু মনে হয় না। ভাল কাজের জন্য সোয়াব বা মন্দ কাজের জন্য গুনাহ বা শাস্তির ভয় আছে, তবে নানান উপায়ে আল্লাহর গুনগান গাওয়ার উপর যতটা গুরুত্ত্ব দেওয়া হয়েছে সেভাবে এসবের জন্য গুরুত্ত্ব নেই। মোল্লা আলেমে এনারা যেভাবে এক ওয়াক্ত নামাজ না পড়লে কত কোটি বছর দোযখ বাস তার হিসেব দিতে পছন্দ করেন তেমনি ভাবে ১ টাকা ঘুষ খেলে কত বছর দোযখ তার হিসেব নিয়ে তেমন চিন্তিত হতে আমি অন্তত দেখিনি। ছেলেবেলা থেকেই দেখেছি কোন নামাজে কত সোয়াব, নফলের সোয়াব, সুন্নতের ফজিলত এসব নিয়ে মানুষ যেভাবে চিন্তা করে সেভাবে দুনিয়াদারির জনকল্যানমূলক কার্যাবলী নিয়ে কেউ তেমন করে ভাবে না। এটাও আমার মনের যৌক্তিক অংশকে প্রায়ই জ্বালায়; যে আল্লাহ এত ক্ষমতাবান, যার ক্ষমতা বর্ণনা বা বোঝার মত ক্ষমতাও আমি সামান্য মানুষের নেই সেই আল্লাহ কেন অফিসের বড় সাহেবের মত তার গুনগান গাওয়া সোজা বাংলায় তেলানো এত পছন্দ করেন? তিনি আছেন, মানি। কিন্তু দিবা রাত্র অষ্টপ্রহর তার গুনাগুন বিজাতীয় ভাষায় তারই কাছে বর্ননা করে যাওয়ার মাঝে কি কল্যান নিহিত থাকতে পারে? আত্মমহিমা তার মত মহান অতিপ্রাকৃত স্বত্ত্বার এত পছন্দ বা দরকার কেন?
এক ওয়াক্ত নামাজ বাদ পড়া তো বহু দুরের কথা, ইচ্ছাকৃতভাবে কাজ্বা করলেও নাকি ভয়াবহ শাস্তি। একদিন রোযা না রাখার শাস্তি যেন কত বছর ফুটন্ত পূঁজের সাগরে হাবুডুবু খাওয়া, আর খাদ্য হিসেবে কাঁটা। অথচ এগুলির তূলনায় পার্থিব অপরাধগুলির শাস্তির ব্যাপারে ইসলাম যেন অনেকটাই নিশ্চুপ। ঘুষ খাওয়া বা দেওয়ার শাস্তি কত বছর, ক্ষুধার্ত মানুষকে খাদ্য না দেবার শাস্তি ঠিক কত বছর দোজখ বাস কিংবা অন্যায়ভাবে কারো সম্পত্তি মেরে খেলে তার শাস্তি কত বছর বা কোন প্রকারের দোজখ সেসব নিয়ে মোল্লা আলেমদের তেমন কথাবার্তা বলতে কোনদিন শুনিনা। ভাসা ভাসা ভাবে বলেন মহাপাপ, ঠিক, তবে গুরুত্ব তেমন দেন বলে কোনদিন মনে হয়নি। সাধারনভাবে ইসলাম ধর্ম পালন বলতে নামাজ রোযা কোরান পাঠ, সাথে হয়ত হজ্জ্ব বা যাকাত ছাড়া তেমন কিছুই বাহ্যিক বিশেষত্ব দেখি না। এগুলি পালন করার সাথে (আমার কাছে নিছকই কিছু রিচূয়াল) মানুষের নৈতিক সততার কি সম্পর্কে এই প্রশ্ন সবসময়ই মনে হয়েছে।
এই নিয়ে ইসলাম জানা ব্যাক্তিদের প্রশ্নও করেছি। পন্ডিতদের মতে মন থেকে নামাজ রোযা করলে, বুঝে আমলের সাথে কোরান পাঠ করলে নাকি মানুষ এমনিতেই ভাল হয়ে যাবে। কাজেই, নামাজ রোযা এ জাতীয় আল্লাহর ইবাদতই মূল। যদি উদাহরন দেখাতাম যে অমুকে তো দিনরাত মসজিদে পড়ে থাকে কিন্তু বদের ধাড়ি, ব্যাপার কি? সোজা জবাব, সে লোক দেখানো ইবাদত করে, মন থেকে করে না। বলাই বাহুল্য এমন জবাব কখনোই খুব একটা সন্তোষজনক মনে হয়নি। ইসলামের পূর্নাংগ জীবন বিধানের জোর দাবী দিনে দিনে আরো বেশী হাস্যকর ঠেকেছে। আশে পাশে যারা জোরে শোরে ইসলাম পালন করেন তাদের সবসময়ই দেখি মানব কল্যানমূলক কাজকর্মের প্রতি তেমন মনোযোগ নেই। তাদের দেখলে কখনোই ইসলামের আওতা বেশী করে নামাজ পড়া বা নানান রকমের ইবাদতের বেশী কিছু মনে হয়নি। ব্লগেও ইসলাম বিষয়ক অসংখ্য লেখাই আসে, সেগুলির সামগ্রিক মানও মোটামুটি একই।
এরপর কোরানের বিভিন্ন আয়াতের অনুবাদ একটু নিরপেক্ষ ও সংশয়বাদী চোখে পড়তে গিয়ে বুঝতে পারলাম যে কোরান আল্লাহর বানী কিনা সে বিতর্কে না গিয়েও বলা যায় যে এর কোরানের বেশ কিছু আয়াতই এই যুগে শুধু অচলই নয়, রীতিমত অমান। কোরানের প্রতিটা অক্ষর সব যুগের সব মানুষের জন্য অবশ্য পালনীয় এহেন দাবী শুধু অযৌক্তিকই নয়, রীতিমত হাস্যকরই ঠেকে। এমন দাবী যারা করেন তারা নিজেরাও পালন করেন না। যদিও মুখে স্বীকার করেন না, নানান রকমের ওজর দেখান। আর হাদীসের তো কথাই নেই। বিভিন্ন বাংলা ব্লগের ধর্ম বিষয়ক বিতর্কগুলিও এ ব্যাপারে বেশ সাহায্য করল। অবাক হয়ে দেখতাম উচ্চশিক্ষিত মানুষেও কিরকম অবলীলাক্রমে কি অন্ধভাবে প্রাচীনপন্থী অমানবিক রীতিনীতি ডিফেন্ড করে চলেছেন। যদিও সেসব রীতিনীতির বেশীরভাগই নিঃসন্দেহে নিজেরাই পালন করেন না, কেউ পালন করেন শুনলে মনের অজান্তেই হয়ত নাক সিটকাবেন।
বাংলা ব্লগগুলো থেকে প্রথম জানতে পারলাম ইসলামের ইতিহাসের আরেক দিক যা আমাদের দেশের ধর্মীয় শিক্ষার সিলেবাস এবং যাবতীয় ধর্মীয় প্রচারনা থেকে যত্নের সাথে আড়াল করে রাখা হয়। বলতেই হয় যে সত্য গোপন করার এই টেকনিক ইন্টারনেটের যুগের আগে পর্যন্ত খুবই সফলভাবে কাজে দিয়ে এসেছে। প্রথম প্রথম এসব বিশ্বাস করতাম না, মনে হত সবই বুঝি বিধর্মীদের বানানো গালগল্প। নিজে কিছু যাচাই করতে বুঝলাম যে কিছু কিছু ইতিহাসে বিতর্ক থাকলেও বেশীরভাগেরই মূল উৎস স্বীকৃত ইসলামী সূত্রেই আছে। হতে পারে এসবের অনেক কিছুই ভুল বা সঠিকভাবে ইতিহাসবদ্ধ হয়নি। সেটা সত্য হলে বলতে হয় যে হাজার বছরেরও উপর ধরে কেউ এসব পারিষ্কার করার দায় নেননি। আর নানান বড় বড় অতি পরিচিত আলেম স্কলারের ধর্ম বিষয়ক বইপত্র পড়লে উল্টাটাই মনে হয়। যেই ইসলাম বা ইসলামী ইতিহাসের হিরো বলে যাদের শিখে এসেছি তাদের অন্যরকম চেহারা নানান সহি ইসলামী সোর্স থেকেই আবিষ্কার মানসিকভাবে বেশ আঘাত দিল। নিজেকে সাথে সাথে বেশ প্রতারিতও মনে হল। বেছে বেছে কোরানের কিছু ভাল ভাল আয়াত শুনিয়ে বা কিছু বাছা বাছা হাদীস পাঠ করা যে সত্য পথের দিশারী হতে পারে না বুঝলাম। বুঝতে পারলাম যে অধিকাংশ ধার্মিকের ঈমান আনয়নের বুনিয়াদ তৈরীর সময়টায় বেশ লুকোচুরির আশ্রয় নিয়ে যথেষ্ট যত্নের সাথে কচি মন গড়াই পেটাই করা হয়। আর এই গড়াই পেটাই এর কাজে দোযখের ভীতি প্রদর্শন হল অন্যতম বড় অস্ত্র।
কোরান আল্লাহ হেফাজত করে আসছেন, যার একটি অক্ষরও বদল করার সাধ্য কারো নেই। হতে পারে। কিন্তু তাতে কি লাভ হয়েছে বা হচ্ছে এই নিয়ে মনে ঘোর সংশয় আছে। কোরানের অনুবাদ দেখি যে যার মত করছেন। একজনের সাথে আরেকজনের অনুবাদ, তাফসীরের আকাশ পাতাল পার্থক্যও ঘটে। আল্লাহর কোরান হেফাজত করার সুফল তেমন পাওয়া যাচ্ছে বলি কিভাবে? বুঝতে পারলাম যে কোরান পড়ে হয়ত মনের শান্তি পাওয়া যেতে পারে, তেমনি আবার ঘোর সাম্প্রদায়িক এমনকি জেহাদী বোমারু হবার অনুপ্রেরনাও পাওয়া যেতে পারে। কারো মতে এই আয়াতের অর্থ এমন, কারো মতে এমন, কন্টেক্সট বুঝতে হবে। আবার কারো মতে অমুক আয়াত মানসুখ হয়ে গেছে। অন্য কেউ আবার প্রতিবাদে তেড়ে আসছেন। অনেক ইসলাম ডিফেন্ডার আবার অতি পরিচিত নামাজ, রোজা, হজ্বের মত ইসলামিক রিচুয়ালগুলি চ্যালেঞ্জ করে বসছেন। তাদের মতে আসল ইসলাম হাজার বছর আগেই হাইজ্যাক হয়ে গেছে। কোরানের বেশ কিছু আয়াত পড়ে বিধর্মীদের প্রতি আল্লাহর অসীম জাতিগত ক্রোধের পরিচয় পেয়ে খুবই বিস্মিত হলাম। খুবই গোলমেলে ব্যাপার। মোট কথা, ইসলামের ভিত্তি কোরানের নানান দর্শন সম্পর্কে মনে গভীর সংশয় জাগল। যদিও পরকালের মত ইসলামের কিছু মূল দর্শন এখনো ভালই লাগে।
সংশয়বাদ খুব সুখকর কোন অভিজ্ঞতা নয়। হয়ত আত্মপ্রতারনা করে গেলে এই জ্বালা থেকে নিষ্কৃতি পাওয়া যেত। এটাও করতে পারি না। যা সত্য মনে হয় বলি। ধর্মের মূল বানী অবশ্যই সত্য পথে থাকা, সেটা করার জন্য অতি অবশ্যই কোন প্রাচীন ঐশীগ্রন্থ চোখ কান বুঁজে পালন করতে হবে বা পালন করার দাবী করে যেতে হবে এই ধারনা এখন খুবই অদ্ভূত লাগে। ঈশ্বর বিশ্বাসের মত একটি ব্যাপার যা যুক্তি প্রমান দিয়ে কোনদিন প্রমানের উপায় নেই তা নিয়ে মাতামাতি করাও সময়ের অপচয় মাত্র বলেই মনে করি।
——————————————————————————–
The New Busy is not the old busy. Search, chat and e-mail from your inbox. Get started.
আসসালামুয়ালাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহ, লেখক, আপনার লেখা পরলাম, যদিও পুরো শেষ করতে পারলাম না সঙ্গত কারনেই। আপনার পুরো লিখাই জগাখিচুরি ছাড়া আরকিছুই মনে হল না। কমেন্টেও কোন মুসলমানের ভাই বা বোনের দেখা পেলাম না। যাই হোক, যদিও জানি কোন লাভ নেই বুঝিয়ে তারপরও কিছু বিষয় না বললেই নয়।
আপনি বলেছেন, ইসলামে নাকি সুদ ঘুষ ইত্যাদির কোন শাস্তি উল্লেখ নেই যাকিনা সম্পুরনই অবান্তর একটি কথা।
সূদের ক্ষেত্রে এর হার কম হোক বেশী হোক সবই সমান। সূদ প্রসঙ্গে ইসলামের অবস্থান অত্যন্ত কঠোর। এ ব্যাপারে আল্লাহ তা‘আলা বলেন, ‘হে মুমিনগণ! তোমরা আল্লাহকে ভয় করো এবং সূদের যে অংশ বাকী আছে তা ছেড়ে দাও, যদি তোমরা প্রকৃত মুমিন হও। যদি তোমরা তা না করো তাহ’লে আল্লাহ ও তাঁর রাসূল (ছাঃ)-এর পক্ষ হ’তে যুদ্ধের ঘোষণা শুনে রাখ (বাক্বারাহ ২/২৭৮-৭৯)। সূদের লেনদেন ও সূদের সাথে সংশ্রব রাখা প্রসঙ্গে প্রখ্যাত ছাহাবী আব্দুল্লাহ ইবনু মাস‘ঊদ (রাঃ) বলেন, যারা সূদ খায়, সূদ দেয়, সূদের হিসাব লেখে এবং সূদের সাক্ষ্য দেয়, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) তাদের উপর লা‘নত করেছেন এবং অপরাধের ক্ষেত্রে এরা সকলেই সমান’ (মুসলিম, মিশকাত হা/২৮০৭)। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) আরো বলেন, ‘সূদের (পাপের) সত্তুরটি স্তর রয়েছে। যার নিম্নতম স্তর হ’ল মায়ের সাথে যেনা করার পাপ’ (ইবনু মাজাহ, হা/২২৭৪, সনদ ছহীহ; মিশকাত হা/২৮২৬)। আব্দুল্লাহ ইবনে হানযালা (রাঃ) বর্ণনা করেছেন, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন, ‘কোন ব্যক্তি যদি এক দিরহাম (রৌপ্যমুদ্রা) রিবা বা সূদ জ্ঞাতসারে গ্রহণ করে, তাতে তার পাপ ছত্রিশ বার ব্যভিচার করার চেয়েও অনেক বেশী হয়’ (আহমাদ, মিশকাত হা/২৮২৫, সনদ ছহীহ)।
আব্দুল্লাহ বিন মাস‘ঊদ (রাঃ) বলেন, রাসূল (ছাঃ) বলেছেন, ‘সূদের দ্বারা সম্পদ যতই বৃদ্ধি পাক না কেন তার শেষ পরিণতি হ’ল নিঃস্বতা’ (ইবনু মাজাহ, মিশকাত হা/২৮২৭, সনদ ছহীহ)। উক্ত হাদীছ সমূহ থেকে স্পষ্টভাবে বুঝা যায় সূদ ইসলামে সম্পুর্ণরূপে হারাম এবং এর শেষ পরিণতি নিঃস্বতা।
এভাবে সকল বিষয়ে ইসলাম এর বিধান রয়েছে। পবিত্র কোরআন এ সকল বিষয় সম্পর্কেই উল্লেখ রয়েছে। আপনি আবার বললেন কোরআন এর কথা গুলো নাকি এই যুগের উপযুক্ত না বরং হাস্যকর। নাউযুবিল্লাহ। জেনে রাখুন, কোরআন শুধু এই যুগেরই সমাধান নয় বরং কিয়ামত এর আগ পর্যন্ত আগত সকল যুগের সমাধান রয়েছে। এবার আপনি কুরআন পড়ে তার অর্থ বুঝতে না পারা সম্পর্কে বলি। ইবনে জাবির বলেছেন, “আমি কুরআন এর একটি মাত্র আয়াতের ১৩০০ অর্থ পেয়েছি।” আর আপনি একটি অর্থ বের করে তাকে ভুল পথে নিয়ে ভুল ব্যাখ্যা করলেন কমেন্টে।
পরিশেষে বলব আপনাদের মত লোকেদের জন্যই পরম করুনাময় আল্লাহ্ তায়ালা বলেছেন কোরআনে, “এই সেই কুরআন যা পড়ে কেউ আসবে সুপথে আর কেউ হবে পথভ্রষ্ট।” আপনি ভেবে দেখুন আপনার কোনটা হয়েছে?
আপনাকে কুরআন নিয়ে আরও বিস্তর অনুসন্ধানের আহ্বান জানাই। আশাকরি অন্ধকার হতে পূর্বের আলোর পথে আবার ফিরে আসবেন। আল্লাহ্ হাফেয।
মন্তব্যসহ লেখাটি খুব ভালো লাগলো। বাংলাদেশের অনেকের অভিজ্ঞতাই আপনার সাথে মিলবে।
আদিল ভাই, খুব খুব খুব ভালো লাগলো।
আপনার মত সংশয়বাদী মানুষের ব্যাপারে এটুকু বলতে পারি, আপনারা আস্তিক নাস্তিকের মাঝামাঝি অবস্থানে- অর্থাৎ না ঘরকা না ঘাটকা।
ইসলামে কোরানের বাণী নিয়ে সংশয়ের অর্থ মুসলমানের খাতা থেকে নাম কাটা যাওয়া। আর ঈশ্বরে অবিশ্বাসী না হবার জন্য নাস্তিক ও না।
@নামহীনা,
কিন্তু এখানেই তো দেখলাম একজন ফতোয়া দিয়েছেন- আদিল মাহমুদ এখনও একজন মুসলমান। কার ফতোয়া বিশ্বাস করবো?
এর ব্যাখ্যা কী?
@ আদিল মাহমুদ,
মুক্তমনায় যেসব বিভাগ রয়েছে আমার নিকট ‘অবিশ্বাসীর জবানবন্দী’টি প্রিয়। এই আত্মসাক্ষ্য পড়ে অনেকেই যুক্তিবাদী হয়ে ওঠে। আপনার অকপট সংশয়ের স্বীকারোক্তি ভালো লেগেছে। এমন কিছু মানুষ দেখেছি- জোর গলায় নিজেকে নাস্তিক বলে জাহির করেছে, কিন্তু শেষ পর্যন্ত ঠিক থাকতে পারে নাই। কোনো ঘটনা বা বিশেষ কারণে আস্তিকতায় ফিরে গিয়ে ধর্মের নানাবিধ কর্মের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে এবং অন্যকেও ধর্মের দিকে আহবান করা পবিত্র দায়িত্ব বলে মনে করে। মানুষের এরূপ বিচিত্র মনের রং পড়তে আমি খুব ইন্টারেস্ট ফিল করি।
আপনার লেখাটি পড়ার পর মন্তব্যগুলোও পড়লাম। অনেকে তাদের ব্যক্তিগত পরিবর্তনও শেয়ার করেছেন। সেগুলোও ভালো লাগলো।
এই পরিবর্তনটাই ক্রমান্বয়ে আপনাকে নাস্তিকতার পথে নিয়ে যাবে। ড. আহমদ শরীফ নিজে নাস্তিক হওয়া সত্বেও বলেছেন- ‘স্রষ্টা থাকলেই যে শাস্ত্র থাকতে হবে বা বানাতে হবে এমনটি নয়। শাস্ত্রমানা আস্তিকের রয়েছে পরধর্মে অবজ্ঞা ও বিধর্মীর প্রতি সুপ্ত বিদ্বেষ।’
এক সময় আপনার ভেতর অন্য ধর্মের মানুষের প্রতি বিতৃষ্ণার মনোভাব ছিল। সেটা এখন কাটিয়ে উঠতে পেরেছেন। এর কারণ আপনি শাস্ত্র থেকে বেরিয়ে এসেছেন বলে। এমন এক সময় আসবে যখন আপনি স্রষ্টা থেকেও বের হয়ে আসতে পারবেন। সেই অপেক্ষায় থাকবো এবং তখন আবার একটি নতুন জবানবন্দী পাবো। এই ব্যাপারে আমি ভীষণ আশাবাদী।
@মাহফুজ,
তুমি যে undergraound থেকে আবার বেড়িয়ে এসেছ, সে জন্য খুবই আল লাগছে।
কুথায় যাও, কয়া যাবানা?
@নৃপেন্দ্র সরকার,
দাদা,
আমি তো আপনারে কইছিলাম যে কিছুদিন গ্রামে থাকবো। গ্রামের মাটির সঙ্গে মিশেছি। মানুষের সঙ্গে মিশেছি। এই মাটির মানুষগুলোর মধ্যে ধর্মের প্রতি আসক্তি এবং কারো কারো নিরাসক্তিও লক্ষ্য করেছি।
তবে আপনি যে অর্থে আন্ডার গ্রাউন্ড শব্দ ব্যবহার করেছেন, আমার কাছে মনে হলো, আমি বুঝি মারা গেছি। আমি বুঝি গ্রেভ ইয়ার্ড থেকে বের হয়ে এলাম। যাহোক, আছি কিছুদিন। আবার হয়তো এক সময় হাওয়া হয়ে যাবো।
@মাহফুজ,
আপনার আশাবাদে তো আমার কলিজায় পানি এসে গেছে। আস্তিক নাস্তিক নিয়ে এখন আর কোন বায়ুতে না ভুগলেও নাস্তিক হয়ে যাওয়ার মত মানসিন অবস্থা এখনো হয়নি।
শাস্ত্র মানা আস্তিক হতে গেলে মুখে যতই উদারতার কথা বলি না কেন অন্য ধর্ম, সাথে সাথে সেই ধর্মের অনুসারীদের প্রতি নীচ ভাব পোষন করতেই হবে। এটা ভালভাবেই বুঝতে পেরেছি, এর জন্য যে আমাকে ইন্টারনেতের জ্ঞান ভান্ডার বা নাস্তিকদের লেখা পড়তে হয়েছে তা নয়। খুব স্বাভাবিক উপলব্ধি।
ভয় পাওয়ানো হলেও ভাল লাগল আপনার মন্তব্য।
@আদিল মাহমুদ,
সকলের উপলব্ধি জ্ঞানও সমান থাকে না। আমার ভেতর কোনো প্রকার স্বাভাবিক উপলব্ধি জ্ঞান ছিল না। ‘দুনিয়ার একমাত্র মুসলমান ছাড়া আর কেউ বেহেস্ত যেতে পারবে না।’ -এই ধরনের বিশ্বাসে অন্ধ ছিলাম। এটাকে কি স্বাভাবিক উপলব্ধি জ্ঞান বলে?
মন্তব্যের জবাব দেয়ায় ধন্যবাদ আপনাকে।
@মাহফুজ,
এটা আমাকে স্কুলের নীচের ক্লাস থেকেই আসলে ভাবাতো। কোন সমাধানে কোনদিন আসতে পারিনি, বা কেউ কোনরকম যুক্তিসংগত ব্যাখ্যা দিতে পারেননি। এই মৌলিক সমস্যায় না পড়লে মনে হয় না আমার মানসিকতার কোন বৈপ্লবিক পরিবর্তন কখনো ঘটত কিনা।
@মাহফুজ,
স্রষ্টা থেকে বের হওয়ার চেয়ে শাস্ত্র থেকে বের হয়ে আসা সমাজের জন্য অনেক জরুরী এবং বিরাট প্রাপ্তি।
@ব্রাইট স্মাইল্,
একথা ঠিক, কিন্তু কেউ যখন স্রষ্টায় আস্থা রাখে তখন তার মধ্যে নানা ধরনের প্রশ্ন জাগে। যেমন স্রষ্টা কি একলা, নাকি অনেক। স্রষ্টার বয়স কেমন, দেখতে কেমন, পুরুষ নাকি নারী, তার কাজ কি? তিনি কি সবকিছু নিয়ন্ত্রণ করেন? স্রষ্টার সৃষ্টিকর্তাই বা কে? ইত্যাদি নানা কিসিমের প্রশ্ন এসে মনকে আরো বিভ্রান্তি করে তোলে। মানসিক পীড়ার সৃষ্টি করে। তার চেয়ে স্রষ্টার অস্তিত্বকেই অস্বীকার করা ভালো বলেই বোধ হয়।
আমার মন্তব্যের বাকী অংশ কোথায় পালালো ??!!
@মোজাফফর হোসেন,
– আপনার এই কথাটি দেখেই মডারেটররা মন্তব্য মুছে দিয়েছে! তীব্র প্রতিবাদ জানাই।
@আদিল মাহমুদ,
হেঃ হেঃ , কিন্তু ধর্মের প্রয়োজনীয়তা চিরন্তন টাতো মুছে নাই, মুছছে প্রয়োজনীয়তা ক্রমেই কমে আসার জায়গাটা। খুবই অদ্ভুত! আপনেই আবার মুছেন নাই তো? আপনার তো সব দিকেই হট কানেকশন, কিছুই বলা যায় না। 🙂
@মোজাফফর হোসেন, সম্ভবতঃ তাড়াহুড়া করে বাটন টেপায় বা অন্য কোন কারণে আপনার মন্তব্যের পুরোটুকু আসেনি। আবার দিয়ে দিন।
@অভিজিৎ,
রাখেন মিয়া, আবার শিনা জোরি!
@অভিজিৎ,
আমি এখানে একটা চাচা-ভাতিজা ষড়যন্ত্রের গন্ধ পাচ্ছি!
দ্র: অগ্নিমূর্তি ধারণের ইমোটিকন কই? এটা দরকার।
@রৌরব,
ঠিক! চাচা ভাতিজা দুর্নীতি এবং স্বজনপ্রীতি নিপাত যাক।
ভাতিজা ঘুমের থেইক্যা উইঠা এই কমেন্ট দেখলে খবর আছে 😉
জীবনের ধাপে ধাপে আপনার ধর্মের প্রতি দৃষ্টিভঙ্গির যে পরিবর্তন এসেছে তা অনেকের জীবনে আসে। আমরা জীবনের বিভিন্ন সময় ধর্মকে বিভিন্নভাবে পারসেপশন করি এবং, আমি মনে করি, এর কোনটাই ভুল নই।
ধর্মের প্রয়োজনীয়তা চিরন্তন যদিও প্রয়োজনীয়তা ক্রমেই কমে
আদিল ভাইয়ের লেখার হাত অসাধারন। আমি একটু ব্যস্ত থাকায় মুক্ত-মনায় ঢুকতে পারিনি গত দুদিন ঠিক ভাবে। এসে দেখি মারাত্বক কিছু লেখা এসেছে।
যাই হোক, আমি মনে করি নাস্তিকতার থেকে মানুষের বেশি দরকার উদারতা। যেটা আদিল ভাইয়ের মধ্যে যথেষ্ট পরিমানেই আছে। আদিল ভাইয়ের মত মানুষ আস্তিক হলেই কি আর না হলেই কি। তারা সব সময়েই প্রগতির সাথে থাকবেন বলেই আমি মনে করি। ধন্যবাদ আদিল ভাইকে তার গল্প আমাদের সাথে এত সুন্দর লেখনীর মাধ্যমে আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য।
আর একটা কথা আপনি এত কম লেখেন কেন বলেন তো?
মজা লন, না??
@সাইফুল ইসলাম,
খুবই সত্য কথা, আমার মনের কথাই। আস্তিকতা নাস্তিকতা এসবে বড় একটা কিছু যায় আসে না, কিছু তাত্ত্বিক বিতর্কে বেহুদা সময় নষ্ট। যুক্তিবাদ ও মানবতাবাদই হল আসল কথা। এ দুয়ের মিলিত ফসলই হল উদারতা।
আমি এত কম লিখি কেন তার জবাব কিন্তু এই লেখার মাঝেই আছে দেখেন।
আল্লাহর ভাষা শিক্ষা করতে গিয়ে পর্যন্ত বালক বয়সে নকলবাজির আশ্রয় নিয়েছি,বোজেন না? আলসেমী হল মজ্জাগত।
@আদিল মাহমুদ,
বড়ই পীড়াদায়ক। 😀
আদিল মাহমুদের এই অকপট আর আন্তরিক লেখাটি ধর্মীয় কুপমুন্ডক লোকদের মনে ধর্মীয় সংশয়বাদীতা তৈরী করতে অনেকখানি সহায়ক হবে বলে আমার বিশ্বাস। প্রারম্ভিক এই সুচনাটাও সমাজের জন্য অনেক কল্যানকর।
@ব্রাইট স্মাইল্,
তার মানে তো চক্রবৃদ্ধি হারে আমার উপর গূনাহর বোঝা চেপে বসবে! এমন জানলে কি আর এই লেখা বাজারে ছাড়ি!
@আদিল মাহমুদ,
আরো কিছু অগ্রসর হন, সময় সুযোগে গোনাহর খাতায় কি পরিমান গোনাহ জমা হয়েছে তা স্ক্রীন শট নিয়ে সারা দুনিয়াকে দেখানো হবে ইনশাল্লাহ।
@আকাশ মালিক, :hahahee:
দেখতে কিন্তু মন্দ লাগে না।
আমার পুরনো কোন কমেন্ট দেখতে হলে চট করে ওখান থেকেই পেয়ে যেতে পারি 🙂 ।
আদিল,
আপনি যখন মুক্তমনা ব্লগে প্রথম মন্তব্য করা শুরু করেছিলেন তখন সম্ভবত আপনার বিশ্বাসের শিকড় আরো অনেক বেশি ছিলো। আমার মনে আছে আপনি এমনকি রাশাদ খলিফার ১৯ মিরাকেলও ডিফেণ্ড করেছিলেন। বেশিদিন আগের কথা তো নয়। সেখানকার স্তরের সাথে আজকের আপনার স্তরের অনেক পার্থক্য দেখি। মুক্তমনা সহ অন্যান্য ব্লগের লেখাগুলো কি আপনার বিশ্বাসে প্রভাব ফেলেছে খুব তাড়াতাড়ি? আজকে আপনি ব্লগিং না করলে কি আরো অনেক বেশি বিশ্বাসী থাকতেন বলে মনে করেন? আপনি প্রায়ই বলেন, আপনি নিজে নাস্তিক নন, কিন্তু বিভিন্ন ব্লগে ধার্মিক ব্লগারদের ‘ছাগুগিরি’ যতই দেখেন ততই আপনি নাস্তিকদের কাছাকাছি চলে আসেন 🙂 । ধার্মিকদের চেয়ে নাস্তিকদের সাথে আলোচনা করতেই কমফর্টেবল ফিল করেন(আস্তিক নাস্তিক শব্দগুলো স্রেফ বলার জন্যই বলা, জানি আপনার আমার বা অনেকের জন্যই সেগুলোর আলাদা কোন তাৎপর্য নেই)। এগুলো নিয়ে কিছু বলুন। আমি ভেবেছিলাম সাম্প্রতিক ইন্টারনেট এক্টিভিটি যখন আপনার বিশ্বাস জীবনে এতবেশি মোড় ঘুরিয়েছে (যদি সেটা সত্যি হয়ে থাকে), তবে সেটা আরেকটু বেশি ফোকাসড হবে।
@অভিজিৎ,
এই পার্ট খুব বেশী লিখিনি ইচ্ছা করেই, আপনাদের খুব বেশী পাপের ভাগিদার বানাতে মন চায়নি। আপনি সেধে সেধে বিপদ আনতে চাইলে আর কি করা।
কথা খুবই সত্য। আমি মুক্তমনা প্রথম দেখি বছর চারেক আগে। পাত্তাই দেইনি। কোথাকার কোন অভিজিত নামের এক ব্যাটা মালু আরো কিছু সমমনা চ্যালাচামুন্ডা নিয়ে সার্কাস পার্টি খুলে বসেছে! কয়েকটা আবার দেখি মুসলমান নাম নিয়ে দালালী করে। ধর্ম বিষয়ক লেখাগুলি পড়তাম আর হাসতাম, কারন আমি তো জানি এইগুলা সবই চাপাবাজি। সাথে সাথে সরাসরি ধর্ম বা নবীকে গালি দিয়ে নয়, কিন্তু ধর্মীয় গোঁড়ামীর বিরুদ্ধে লেখা সেসব লেখা খুব উপভোগ করতাম সেটাও সত্য।
এরপর যখন এসব লেখার রিবুটাল ইসলাম ডিফেন্ডারদের পালটা জবাব থেকে পড়া শুরু করলাম তখন একটু গভীরে সিরিয়াসলি যাওয়া শুরু করলাম। বিশেষ করে ওনাদের যুক্তিগুলির খুত যখন পরিষ্কার হতে শুরু করল তখন নিজে নিজে কিছু অথেন্টিক সোর্স বলে পরিচিত সোর্স পড়া শুরু করলাম। এই অবস্থাতেই মনে হয় প্রথম মুক্তমনায় সুপ্ত অবস্থা থেকে সক্রিয় হই। এই অবস্থায় যারা মুসলমান, কিন্তু ইসলাম বা মুসলমানদের মৌলিক ত্রুটিগুলি স্বীকার করেন তাদের লেখা মনে গভীরভাবে রেখাপাত করে। নাস্তিক কুলের কথায় বেশী পাত্তা দেই নি, কারন তারা তো ধর্মকে বাঁশ মেরে লিখবেই। মনোযোগ দিতাম বেশী জামিলুল বাশার, রায়হান সাহেব এ জাতীয় লেখকদের লেখায়। সদালাপ, ভিন্নমত, সাতরং এ ওনাদের যত পুরনো লেখা পাওয়া যায় সব পড়েছিলাম। সাথে আপনাদের তো আছেই। ওনারা যেরকম আত্মবিশ্বাসের সাথে প্রচলিত ইসলামের যাবতীয় রিচূয়াল চ্যালেঞ্জ করতেন তা খুবই ভাল লাগত। রায়হান সাহেবের পুরনো সেসব লেখা এখনো মুক্তমনায় আছে। কারন আমার কাছেও সবসময়ই মনে হয়েছে যে ইসলামও যতই পূর্নাংগ জীবন বিধানের দাবী করা হয় এটা আসলে কিছু রিচূয়াল পালন ছাড়া বেশী কিছু নয়। ওনাদের মনে হত খুবই প্রগ্রেসিভ মুসলমান, যারা ধর্মের প্রকৃত সংস্কার চান। এই পর্যায়ে আমিও অনেকটা কোরান অনলী টাইপ ছিলাম। হাদীস যে ভিত্তিহীন তা এনাদের লেখা থেকেই সামান্য চিন্তা করে বুঝতে পারি। ধর্মের রিচূয়াল মানার প্রতি আগ্রহ পুরোই মরে যায়।
এরপর কোরান বিষয়ক আরো লেখা পড়ে ও নানান রকমের ব্যাখ্যা পড়ে আজকের এই অবস্থানে আসি। এখনো মনে হয় যে হাদীস ছেটে ফেলতে পারলে মনে হয় সনাতন ইসলামের অনেক বাজে দিকই নিয়ন্ত্রন করা যেত।
আপনাদের সাথে যখন প্রথম ১৯ মিরাকল নিয়ে আলাপ হয় তখন আমি কোন চ্যালেঞ্জ করিনি। আপনাদের মত জানতে চাচ্ছিলাম, এই আর কি। এ কথা সত্য যে আমি এই মিরাকল প্রথম রাশাদ খলিফার সাইটে পড়ে অত্যন্ত আনন্দিত হয়েছিলাম। এরপর কোরানে বিজ্ঞান প্রাপ্তি দাবীর ফাকি ঝুকিগুলি বুঝতে পারি।
কাজেই, সংক্ষেপে ইন্টারনেটে আপনাদের এবং আপনাদের প্রতিপক্ষ লেখা না পড়লে আমার এই রূপান্তর ঘটত না এটা নিঃসন্দেহে বলা যায়। আমি যুক্তি পছন্দ করি, তাই বাধ্য হয়েই নাস্তিক কূলের আশেপাশে থাকতে হয়, গতি নেই।
@আদিল মাহমুদ,
আপনার এই মানসিক উত্তরনের জন্য আন্তরিক ধন্যবাদ এবং গোলাফ শুভেচ্ছা :rose2: :rose2: :rose2: :rose2: :rose2: থাকল।আসলে যারা চিন্তাশীল ও যুক্তি পছন্দ করে তারা একটা না একটা সময় সত্যের স্বন্ধান খুঁজে নিতে সক্ষম হয়।শুধু গতানুগতিক হাজার হাজার বা শত শত বছরের ভাবধারায় বেশি দিন জীবন চালাতে পারে না।এই না পারার-ই একজন হলেন আপনি।
ভালো ও সুস্থ্য থাকুন।
@মাহবুব সাঈদ মামুন,
আমিও তাই মনে করি। মানুষকে দীর্ঘ সময় ধরে বোকা বানিয়ে রাখা যায় না। সত্য যাই হোক তার স্পর্শ মানুষে পেয়ে যাবেই। হয়ত সময় লাগবে এই যা।
অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।
@আদিল মাহমুদ,
আপনার এই উক্তিতে আবেগাপ্লুত হয়ে গিয়েছি তাই কিছু কথা বলতে বাধ্য হলাম। কোন ধন্যবাদ পাওয়া বা কৃতিত্বের জন্যে বলছিনা, আর আমি যে ওসব কিছুর কাঙ্গাল মোটেই না, তা আশা করি আপনিও জানেন। মনে পড়ে সেই ফারাক্কা বাঁধ নিয়ে আপনার প্রথম লেখাটির কথা। আমি পারসোন্যেল ই-মেইলে অনুরোধ করেছিলাম- যে মানুষ ফারাক্কা বাঁধ নিয়ে এমন তত্ত্ব-তথ্যবহুল লেখা লিখতে পারেন, তার লেখা থেকে ‘মুক্তমনা’ র পাঠকগণ বঞ্ছিত হবেন কেন? তারপর গঙ্গা-যমুনায় অনেক জল গড়িয়ে গেছে। এক পর্যায়ে আবার লিখেছিলাম- আদিল ভাই, মানসিকভাবে ক্ষত-বিক্ষত, চুড়ান্ত পর্যুদস্ত হওয়ার আগে সেখান থেকে বেরিয়ে আসুন। এর পরে অনেক ঝড়-ঝঞ্জাট, আঁকা-বাঁকা দূর্গম পথ অতিক্রম করে আপনি এই পর্যায়ে এসেছেন, এবার আমাদের জন্যে নয়, নতুন প্রজন্মের জন্যে লিখুন। আপনার আমার সন্তান যেন ওদের মত না হয় যারা ধর্মের নামে মানুষ খুন করতে পারে, মানুষের মনে দুঃখ দিতে পারে, যারা মানুষকে মানুষ হিসেবে গণ্য করেনা। আমাদের লেখা যদি এই পৃথিবীকে, মানব সভ্যতাকে সামনের দিকে এক পা অগ্রসর হতে সাহায্য করে, সেটাই হবে আমাদের জন্মের স্বার্থকতা।
@আকাশ মালিক,
আমি যা বলেছি তা হয়ত নিছক নিজের ভাষায় প্রকাশ, একটু হয়ত সরলীকরন আছে। কিন্তু যিনি ঘোর ধার্মিক এই নীতি তো তিনিও নিশ্চয়ই কিছু না কিছু মাত্রায় পালন করেন। শুধু হয়ত আমার মত সরল স্বীকারোক্তি দেন না এই আর কি।
যেমন, কয়জন নাস্তিক ঘৃণাকারী ঈমানদার ভাইকে পাওয়া যাবে কোন নাস্তিক বিজ্ঞানীর আবিষ্কারকে ঘৃনা ভরে ঠেলে দিতে? তখন তো তিনি কার ধর্ম বিশ্বাস কি সে নিয়ে মাথা ঘামান না নিশ্চয়ই। তিনি স্বাভাবিক যুক্তিবোধ তখন অন্তত নিজের স্বার্থেই কাজে লাগান। কাজেই, চূড়ান্তভাবে জয় হচ্ছে যুক্তিবোধের। নাস্তিক বিজ্ঞানী নিশ্চয়ই ধার্মিক সাহেবের ধর্মগ্রন্থ ঘেটে আবিষ্কার করেননি।
মানুষ মুখে যাই বলুক, প্রাচীন কাল থেকেই সত্যর পথেই ধীরে ধীরে যায়, উতস যাই হোক সে দিয়ে কি তেমন যায় আসে? যুক্তি আস্তিকে দিলে কি আর নাস্তিকে দিলে কি? কার কথাট কতটা বস্তুনিষ্ঠ বা সত্য আছে সেটা দেখতে হবে।
আমি আসলেই লোক খুবই অলস ধরনের। ফোরামে কথাবার্তা দেখলে হয়ত অন্যরকম মনে হতে পারে। ফোরামে ঢুকে চট করে কিছু মন্তব্য করা যত সোজা তেমনি একটু মান সম্পন্ন লেখা বের করা ততটাই কঠিন এটা লিখতে গেলেই হাঁড়ে হাঁড়ে টের পাই। তার উপর আছে বানাতংক। আরো দুটো লেখা চূরান্ত পর্যায়ে আছে, সহসাই আশা করি নামাবো।
ফারাক্কা/টিপাইমুখ নিয়ে লেখাটা অনেকটা জেদের বশে শুরু করেছিলাম। এক তরফা বিকৃত তথ্য ক উপস্থাপন কেন যেন সহ্য করতে পারিনি, আর বিষয়টা যেহেতু আমার পড়াশুনার সাথে কিঞ্চিত সম্পর্কিত ছিল তাই আরেকটু উতসাহ বোধ করেছিলাম।
আপনার পরের উপদেশ মনে পড়ে, তখন খুব রিরিয়াসলি নেইনি। লেখালেখির জন্য যে কেউ কারো ব্যাক্তিগত জানি দুষমনে পরিনত হতে পারে, বিশেষ করে উচ্চ শিক্ষিত লোকের সেটা তখনো ধারনায় আনতে পারিনি। তবে তার ভাল দিকও কিছু আছে। বিনে পয়সায় মজা দেখা যাচ্ছে। কোন কোন দুষ্ট লোকের মতে গুপী গাইন বাঘা বাইনের শো 🙂 ।
@আদিল মাহমুদ
আপনার জীবনের কাহিনীটা বেশ কৌতুহলোদ্দীপক। তবে নাস্তিকদের পাল্লায় পড়ে জাহান্নামে আপনার জন্যে একটা সীট যে কনফার্ম হয়ে গেছে তা বেশ বুঝতে পারি। যাহোক, আপনার বিষয়ে একটা মন্তব্য ছেপেছিলাম কোথায় জানি কিন্তু আপনার কোন প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায় নি। বিষয়টা হলো- সদালাপ নামক সাইটে কিছুদিন আগে দেখলাম শুধু আপনাকে নিয়েই একটা মজার ব্লগ ওপেন করেছে আর সেখানে আপনার সব মন্তব্য ওরা মহা উল্লাসে ছাপাচ্ছে। আপনার কি সেটা নজরে পড়েছে ? পড়ে থাকলে সে বিষয়ে আপনার প্রতিক্রিয়া জানার প্রতিক্ষায় থাকলাম।
@ভবঘুরে,
সীট স্বাভাবিক উপায়ে কনফার্ম না হয়ে থাকলেও সদালাপী ভাইয়েরা সদয় হয়ে মনে হয় দায়িত্ব নিয়েছেন কনফার্ম করাতে। কাজেই পরকালে নরকবাসের ব্যাপারে এবারে কনফার্ম থাকতে পারেন।
আপনার জবাব কিন্তু সেখানেই দিয়েছিলাম, আপনি হয়ত দেখেননি, তবে যাদের দেখার তারা ঠিকই দেখেছেন।
এসব আবর্জনা ঘাটার ইচ্ছা সময় আমার বেশী নেই, নইলে মজার উপাদান কি কম? আমার ব্লগেও বিস্তর মজা হয়েছে।
আদিল চাচা আসলেই খুব ভালো লিখেন। দেখতে হবেনা কার চাচা? 😀
সামনে রমজান মাস। এ সময় মুসলমানদের মধ্যে একধরণের ঝিমানি ব্যারাম তৈরি হয়, বন্ধুদের দেখি রোযা রেখে সন্ধ্যার পর থেকে ঝিমাতে থাকে,কাজ-কর্ম সব বন্ধ। আরে রোযা রেখে যখন কাজ করতে পারবিই না তাহলে রোযা রাখিস কেন? উত্তর আসে, “না রাখলেতো গুনাহ হবে”। কাজ-কর্ম মাথায় তুলে এ ধরনের রিচুয়াল পালন আধুনিক মানুষ কেন করে করে মাথায় ঢুকেনা আমার। যে ধর্ম কাজ-কর্মকে উতসাহিত না করে অপ্রয়োজনীয় রিচুয়াল কে করে সে ধর্ম কখনোই মানুষের কল্যাণ আনতে পারেনা। যাই হোক সবাই ঝিমাতে থাকুক,আমি ঠিকই ডালপুরি খ
@রামগড়ুড়ের ছানা,
এর আগে দেখলাম উনি তানভীর মামা! মুক্তমনায় তো দেখি রীতিমত স্বজনপ্রীতি চলছে 😉 । দেখি কুষ্ঠি-পত্র ঘেঁটে আমার সাথে আদিল মাহমুদের একটা সম্পর্ক বের করা যায় কিনা :rotfl:
@রৌরব,
খালু ফুপা এইগুলা এখনো খালি আছে।
কপালে অনেক খারাপি থাকলে এই কিসিমের ভাগ্না ভাতিজা জুটে। লিখলাম আমি, কৃতিত্ব দাবী করে সে।
আর আল্লাহ (কিংবা মুহাম্মদ) বলেন- ‘জা-লিকাল কিতাবু লা-রাইবাফিহ’।
কোরানের দিকে সংশয়বাদী চোখে তাকানোর অনুমতি কোরানের লেখক দেন নাই।
পরকালে ক্ষণিকের বিশ্বাস, মৃত্যু ভয় ও মৃত্যুপরবর্তি অজানা অনিশ্চিত অবস্থার কারণ। মানুষ তার চিন্তা শক্তির দ্বারা মৃত্যুপরবর্তি অবস্থা জানতে চায়। এখানে সে বিপদে পড়েছে তার দেহের ভিতর আত্মা নামের একটি বস্তু কল্পনা করে। ঠিক যেমন আমরা ভুত কল্পনা করে রাতের অন্ধকারে কলা পাতা দেখেও ভয় পাই। সংশয়বাদী মানুষের কাছে পাপের শাস্তির ভয় থাকে কিন্তু পূণ্যের অস্বাভাবিক কাল্পনিক পুরুষ্কার, নারী ভোগ সুস্বাদু ফল ভক্ষণ হাস্যকর।
সংশয়বাদী মানুষের আল্লাহ কোন নির্দিষ্ট ধর্মের আল্লাহ হতে পারেন না। সেই পরম স্বত্ত্বার কাছে ধর্ম বর্ণ জাত পাত নির্বিশেষে সকল মানুষ সমান। বিপদে অসহায় অবস্থায় যে নাম ধরে একজন মুসলমান শান্তি পান সেই নাম ধরে একজন হিন্দু, ইহুদী, খৃষ্টান একই শান্তি পান। তিনি শুধুই মানুষের মনে মানুষের কল্পরাজ্যে বাস করেন। তিনি কোন নির্দিষ্ট ধর্মের বা মানুষের হতে পারেন না। তাহলে এই স্বত্ত্বার বিভিন্ন নাম বিভিন্ন রূপ কে দিল, কে রচনা করলো একই স্বত্ত্বার নামে বিভিন্ন প্রকার গ্রন্থ? আদিল মাহমুদ তার সংশয়বাদী চোখে, সত্যানুসন্ধানী পথে এ প্রশ্নগুলোর উত্তরও খুঁজে পাবেন এবং পরবর্তিতে এ নিয়ে আরো জ্ঞানগর্ভ লেখা আমাদেরকে উপহার দিবেন সেই প্রত্যশায় রইলাম।
@আকাশ মালিক,
আমি বিশ্বাস করতে চাই আল্লাহ শুধুই কোন নির্দিষ্ট ধর্মের নন। তিনি শ্বাসত, সব ধর্মে এমনকি নাস্তিক সবার জন্যই। কেউ যুক্তিগ্রাহ্য কারনে তার অস্তিত্বে সংশয় প্রকাশ করলে তাতে তিনি বিরক্ত হবেন মনে করি না।
মানুষই আল্লাহকে নিজ নিজে সম্প্রদায়ের গন্ডিতে আবদ্ধ করেছে। আল্লাহকে কেন্দ্র করেই গড়েছে ভেদাভেদের কঠিন প্রাচীর। আপাতত এটাই বুঝতে পেরেছি।
আসলে এই সংশয়বাদীতা একটা সুবিধাবাদীতা ছাড়া আর কিছু নয়। অনুকূল পরিবেশ পেলে যে কোন সময়ে সংশয়বাদী প্রজাতির মানুষ আস্তিকতার দিকে প্রবল বেগে ধাবিত হতে পারে যা আমি নিজেই দেখেছি।
@ভবঘুরে,
দুটো দিকেই ঘটতে পারে, শুধু আস্তিকত্বের দিকেই কেন হতে যাবে? আমি ব্যাক্তিগতভাবে যদিও আস্তিক/নাস্তিক নিয়ে সংশয়ে ভুগি না।
@আদিল মাহমুদ,
সংশয় ছাড়া আমাদের আছে কি? চলমান সংশয় ছাড়া কিছু জানাও তো সম্ভব না।
@রৌরব,
খুবই সত্য কথা।
বিজ্ঞান মানে তো এক ধরনের সংশয়বাদই, তাই না? মুক্তিমনা যুক্তিবাদী এসবের মানে তো দ্বার খোলা রাখা।
@ভবঘুরে,
যারা আস্তিকতার দিকে ধাবিত হয় বুঝতে হবে তারা আদৌ সংশয়বাদী ছিলনা।
সংশয়বাদী দাবী করা ছিল তাদের ভন্ডামী।
@আকাশ মালিক,
আচ্ছা এই বাদীতা বা বাদী শব্দটা কোনমতে বাদ দিয়ে অন্য কোন শব্দ ব্যবহার করা যায় না ? আমার ধারনা এ শব্দগুলো সংকীর্নতা প্রকাশক মানে মানুষকে একটা গোষ্ঠিতে বিভক্ত করে আর তার ফলে এক পর্যায়ে তাদেরকে একটা সংকীর্ন গ্রুপ হিসাবে চিহ্নিত করা হয়। যেমন- আস্তিক্যবাদী, নাস্তিক্যবাদী, সংশয়বাদী ইত্যাদি।
আদিল মাহমুদের ধর্মে সংশয়ের সাথে আমার কি অপূর্ব মিল লক্ষ্য করলাম।
আমি ছিলাম সাধারণ ধার্মিক–তারপর সংশয়ী–তারপর দ্বিধা–তারপর ক্ষুব্ধ–তারপর বিদ্রোহ–তার পর –ধর্মের বিরুদ্ধে যুদ্ধ।
শুধু পার্থক্য হল—আমার সংশয় শুরু হয়েছিল ইন্টারনেটের অনেক আগে। আদিল মাহমুদের মতই আমি কোরান তন্ন তন্ন করে পড়েছি, ছয়টা সাহি হাদিস ঘেঁটে ঘেঁটে, শরিয়া আইন রপ্ত করে আর সিরাহকে মুখস্ত করে তবেই ইসলামের প্রাণের সন্ধান পেয়েছি। দেখলাম ইসলাম সম্পূর্ন মিথ্যা, বর্বর এবং সাম্রাজ্যবাদী।
ইন্টারনেট এখন খুবি শক্তিশালী অস্ত্র হয়ে দাঁড়িয়েছে। তবে ইন্টারনেট আবার ধার্মিদের ও অস্ত্র হয়েছে। তেলের পয়সার জোরে আজ ইসলামি ওয়েব সাইটে ইন্টেরনেট সয়লাব। এই তেলের জোয়ারে আমরা কয়েকটি প্রাণ যে ইসলামের সমলোচনায় টিকে আছি সেটাই তো আশ্চর্য্য।
আদিল মাহমুদের লেখা খুবই সাবলীল এবং এক নিঃস্বাসে পড়ার মত। আমি আদিল মাহমুদকে অনুরোধ করব উনার পরের পর্যায় কি হবে মনে করছেন তা জানাবার জন্য—যেমন আমার হয়েছিল সংশয় থেকে দ্বিধা।
নানা কারণে মুক্তমনা ভালোমত দেখা হয় না। দেখলেও মন্তব্য করার সময় পাই না। তবে আদিল মাহমুদের লেখা পড়ে ্মন্তব্য না করে পারলাম না। এই দেখুন কয়েক লাইনের অভ্র লিখতে প্রায় আধা ঘ্ন্টা লেগে গেল।
@আবুল কাশেম,
আপনাদের সময় কাজটা অনেক কঠিন ছিল জানি। আমি অবাক হয়ে ভাবি সে আমলে প্রতিকুল পরিবেশে কিভাবে গবেষনার এত মাল মশল্লা জোগাড় করলেন।
অবশ্য কেউ নিরপেক্ষ মনে পুরো কোরান আর হাদীস বাংলায় পড়লে এই অবস্থায় না পৌছালে অবাকই হতে হবে।
অক্কামের খুরের তত্ত্বের মত মানুষ মনে হয় সত্য ও মিথ্যা এই দুইয়ের ভেতর থেকে সত্যকে এক সময় না এক সময় বেছে নিতে পারে। হয়ত কিছুটা সময় লাগে, এই যা।
পরের পর্ব কি হতে পারে এখনো নিজেই জানি না। যদিও আপাতত মনে হয় না খুব তেমন পরিবর্তন কোনদিকেই ঘটবে বলে।
অনেক ধন্যবাদ আপনার সময় নিয়ে মন্তব্যের জন্য।
আদিল ভাই
আপনার জবানবন্দী ভাল লাগলো। আমার মনে হয় বাংলাদেশের অনেকেরই এরকম কাহিনী। আমার নিজেরটাও এর কাছাকাছি, শুধু পুরোপুরি ধার্মিকতার বিয়টি ছাড়া। আমি বরাবরই মিনিমাম লেভেলে (জুম্মা/ঈদের নামাজ) ছিলাম। কিন্তু বাবা/মা দুজনেই চরমভাবে প্র্যাকটেসিং মুসলিম। দুজনেই হজ্জ্ব করে এসেছেন।
তবে আপনি আসল বাধাটি পেরিয়ে এসেছেন, বাকিটা এখন সময়ের ব্যাপার। আমি আপনার এই বাক্যের কথা বলছি।
। ইসলাম ধর্মের বড় সত্য হল কোরান, যেটি সয়ং আল্লাহর সৃষ্টি। যদি কোনভাবে প্রমান পাই যে কোরান আল্লাহর সৃষ্টি নয় তবে সবই মিথ্যে হয়ে যায়। আপনি যে রকম লিখেছেন একটি ঈশ্বরের সৃষ্টির মাঝে কিভাবে এই হিংসে/বিদ্বেসের বানী থাকে ভেবে পাইনি। একটি সূরা দিয়ে নিয়মিত নামাজ পড়তাম, সূরা আবু লাহাব, মনে হয় নাম। তার অনুবাদ পড়ে আমি তাজ্জব। এরকম একটি সূরা পড়ে প্রতিনিয়ত কোটি কোটি মুসলিম নামাজ পড়ে, মানুষের জন্য দোয়া করে অথচ জানে না কি পড়ছে। নিরপেক্ষ ভাবে কোরান পড়লে বোঝা যায় যে এটি কোন ঈশ্বরের বানী নয়, কতিপয় স্বার্থান্বেসী মানুষের মিলিত ফসল। এখানে ঈশ্বর থাকা বা না থাকার দরকার নেই। এটা বোঝার পর কাজ অনেক সহজ হয়ে গিয়েছে।
যাহোক, আপনার লেখার হাত বেশ ভাল। নিয়মিত লিখবেন এই প্রত্যাশা করি। ভাল থাকুন, সব সময়।
@স্বাধীন,
আমার বাবা মা প্র্যাক্টিসিং মুসলিম হলেও ধর্ম নিয়ে তেমন জোর জবরদস্তি কোনদিন করেননি। বাবা আমাদের পড়াশুনা ধর্মকর্ম এসব কিছু নিয়েই মাথা ঘামাতেন না। মা মাথা ঘামালেও কিছু কথা আর ফাকা হুমকি ধমকি দেওয়ার থেকে বেশী কিছু করতেন না। নামাজ না পড়লে পেটানো জায়েয আছে এ কথা স্কুলে পড়াকালীন মাঝে মাঝে বলতেন। এইই শেষ। আমার বড় দুই ভাই বোন মা গত বছর হজ্ব করে এসেছেন।
কোরান নিয়ে বড় ধরনের সমস্যা আছে পরিষ্কার হয়েছে। আল্লাহর বানীতে মানুষের জন্মের ভিত্তিতে কাউকে অনন্তকাল পোড়ানো হবে কোন সূস্থ যুক্তিতে ব্যাখ্যা মেলে না। তেমনি ব্যাখ্যা মেলে বা বিধর্মীদের প্রতি তার অকৃত্রিম ঘৃণার সরাসরি বহিঃপ্রকাশে। এর প্রতিফলন সাধারন মুসলমানদের চিন্তাধারাতেও বেশ ফুটে ওঠে। আজকাল বিভিন্ন ব্লগেই উল্লসিত পোষ্ট দেখা যায়, অমুক কাফের দেশে প্রাকৃতিক বিপর্যয়- কারন আল্লাহর গজব। মুসলমানদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের খোদাই শাস্তি। এনাদেরকে মুসলমান দেশের গজবের ব্যাখ্যা কি জানতে চাইলে অবশ্য পাওয়া যায় না, বা সরাসরি তুই তোকারি শুরু করে দেন।
আপনার মত আমারও নাযেজের সুরা পড়ার কথা মনে হয়। কোরানের সব আয়াত বাংলায় বুঝে পড়ার পর মনে হয় যে, তাদের হত্যা কর যেখানেই পাও (হতে পারে শুধু যুদ্ধকালীন), কিংবা কাউকে জোড়ায় জোড়ায় কাটো, স্ত্রী হল শস্য ক্ষেত্র যেভাবে খুশী গমন কর, অবাধ্য হলে মার ধর কর এ জাতীয় আয়াত বুঝে বুঝে পাঠ করে মনে কিভাবে খোদাই শান্তি আসতে পারে তা আমার এই পাপ মনে আর ঢুকে না। আমার হৃদয়ে সীল গালা মনে হয় ভালভাবেই লেগেছে।
@ফারুক,
কোনো এক বিশেষ কারণে “মন্তব্যটির জবাব দিন” কাজ করছে না(দুঃখিত)। তাই এখানেই বললাম।
আপনি বলেছেন-
>> কথাটি বুঝি নাই, একটু পরিষ্কার করেন।
আবার বলেছেন-
কোরান নিজেই নিজের প্রমান কথাটির মানে কি? যেটার কোনো প্রমাণ নেই সেটাকে সরলভাবে “কোনো প্রমাণ নেই” বলে সরে পড়লেই তো হত। আবার কেন বলছেন, কোরান নিজেই নিজের প্রমান? যেটার কোনো প্রমাণ নেই তা আবার মহা আড়ম্বরে আল্যা পাঠিয়েছেন মানব জাতির জন্য, তিনি নাকি আবার মানুষকে তার ইবাদতের জন্যই তৈরী করেছেন। হাঃ হা।
আচ্ছা, কাফেররা কেন বুঝে নাই কোরান আল্যার বাণী? অথচ, আপনার কথিত কাফেরদের ভাষায়ই তো কোরান এসেছে। তাহলে বুঝা যায় কোরানে এমন কিছু নাই যাতে কোরানকে নিঃসন্দেহে আল্যার বাণী বলে ধরে নেয়া যায়। অথচ কোরানেই তো চ্যালেঞ্জ দেয়া হয়েছে মানুষ আর জ্বীন জাতি(!!) মিলেও নাকি কোরানের মতো(!) একখানি কিতাব রচনা করতে পারবেনা। দেখেন-
“তারা যদি (তাদের দাবিতে) সত্যবাদী হয়ে থাকে তবে কোরানের মত কোনো গ্রন্থ তারা রচনা করুক”(সূরা তূরঃ ৩৪)
“আপনি বলে দিন, “কোরানের অনুরূপ কোন কিছু রচনা করার জন্য যদি সকল মানুষ ও জিন একত্রিত হয় ও তারা পরস্পর সহযোগিতা করে, তবুও তারা এর অনুরূপ কোন কিছু রচনা করতে পারবে না”(সূরা বনি ইসরাঈলঃ৮৮)
“আমি আমার বান্দার প্রতি যা অবতীর্ণ করেছি তাতে তোমাদের কোন সন্দেহ থাকলে তার অনূরুপ কোন সূরা আনয়ন কর এবং তোমরা যদি সত্যবাদী হও তবে আল্লাহ ব্যতীত তোমাদের সকল সাহায্যকারীকে আহবান কর। যদি তোমরা আনয়ন না কর এবং কখনই পারবে না, তবে ভয় কর সেই আগুন-মানুষ ও পাথর হবে যার ইন্ধন, কাফিরদের জন্য যা প্রস্তুত রয়েছে”(সূরা বাকারাঃ ২৩, ২৪)
আমি শুধুই হাসছি।
আদিল ভাই সহ সবার কাছে দুঃখ প্রকাশ করছি এখানে অনাহুতভাবে এসে এসব বলার জন্য।
@সৈকত চৌধুরী,
কাজ করছে না?? কি বলেন! এই যে করছে!
মানুষের মনের বিবর্তন ভীষন ভাবেই দরকার। নইলে তার পরিণতি মৌলবাদের হাতে। জিডু কৃষ্ণমূর্তি বলেছিলেন এই দ্বন্দটা সব সময় আমাদের মনে চলছে-অভিজ্ঞতার সাথে অর্জিত বিশ্বাসের সংঘাত। সেই সংঘাতই মনের পরিবর্তন ঘটিয়ে থাকে।
একজন সংশয়বাদি বা নাস্তিক হিসাবে ইসলামে বা ইসলামিক পরিবেশে থাকা মুশকিল-হিন্দুদের বোধ হয় অতটা অসুবিধা নেই-হাজার দর্শনের এই মিউজিয়ামে আস্তিক নাস্তিক সবার জন্যেই পথ খোলা। অদ্বৈতবাদি দর্শনে ঈশ্বর নাই-মানুষই ঈশ্বর-সৃষ্টিকর্তা নেই-সৃষ্টি স্বয়ম্ভূ।
স্কুলে আমাদের অদ্বৈত দর্শন পড়াতেন স্বামী সূপর্ণানন্দ। আমার মনে আছে সেদিন প্রথম জেনেছিলাম, অ দ্বৈতবাদে ঈশ্বর মায়া-মানুষের সৃষ্ট মায়া।
তা আমি ভাবলাম তাহলে মিশন এত ঘটা করে পূজা করে কেন? মিশন যেভাবে ঘটা করে দূর্গা আর কালীপূজো করে, তাতে আদৌ কেও এসব বোঝে কি না সন্দেহ আছে-তবে ব্যাক্তিগত ভাবে আমি মনে করি, পড়াশোনা করে এসব দ্বন্দ আসে না। অভিজ্ঞতার সাথে বিশ্বাসের দ্বন্দই মানুষকে চিন্তার জগতে এগিয়ে দেয়।
ঈশ্বর আছে কি নেই-এই চিন্তা করাটাই ভুল-কারন থাকলেও একটা ব্যাপারে ১০০% নিশ্চিত হওয়া যায়, তিনি সৃষ্টিকর্তাও না-শাস্তি ও দেন না।
সিস্টেম আমাদের শাস্তি দিয়ে থাকে। তাই তিনি আছেন কি নেই-সেই নিয়ে সময় নষ্ট করাই উচিত না।
@বিপ্লব পাল,
মনের বিবর্তন বড়ই দরকার। মুসলমান সমাজে ধীরে হলেও তা হচ্ছে বলেই আমার মনে হয়। সাথে সাথে কট্টরপন্থীরা চেষ্টা করবে গোঁড়ামী জিইয়ে রাখতে, সেটাও স্বাভাবিক।
সংশয়বাদী হিসেবে ইসলামী পরিবেশে টেকা আসলেই অনেক কঠিন, নাস্তিক হিসেবে তো আরো মুশকিল। হিন্দু সমাজে,বিশেষ করে শিক্ষিত হিন্দু সমাজে আজকাল ধর্ম মনে হয় অনেকটা রিচূয়াল, বাপ দাদা পালন করে গেছে তাই কিছু করা অনেকটা এই ধরনের। মুসলমান সমাজে তো তা নয়। সেখানে ধর্মের উপর যে কোন হুমকি অত্যন্ত কঠোর চোখে দেখা হয়। ধর্ম বিষয়ে যে কোন ভিন্ন চিন্তা, অপ্রীতিকর প্রশ্নকেও ধরে নেওয়া হয় হুমকি হিসেবে।
আদিল ভাই যা লেখেন তা ই পড়তে ভাল লাগে(সত্যিই বলছি)- অকৃত্রিম অনুভূতির সরল প্রকাশ বলেই হয়ত। এটা এক বিশেষ গুণ। আপনার চিন্তার সাথে আমার চিন্তার একটা গভীর মিল খুঁজে পাওয়ায় কয়েক বছর আগে লেখা একটি প্রবন্ধ পোস্ট করতে ইচ্ছে করছে। অবশ্য এটা “যুক্তি ম্যাগাজিন, সংখ্যা ২” এ প্রকাশিত হয়েছে এবং আপনি তা হয়ত পড়ে থাকবেন। লেখাটা খুব একটা ভাল না হওয়ায় আগে পোস্ট করি নি। দাঁড়ান দেখি পোস্ট হয় কি না।
@সৈকত চৌধুরী,
এত বড় সার্টিফিকেট দিলে তো দিন দুনিয়া ভুলে লেখালেখি করে যেতে হবে। আত্মকথা জাতীয় কিছু লিখতে গেলে যথা সম্ভব সত্য কথনই কাম্য। নইলে নিজের প্রকৃত ভাব প্রকাশ হবে কেমন করে?
আপনার কোন লেখার কথা বলছেন? দিন আবার প্রকাশ করে। আপনিও তো আমার মত ফাঁকিবাজ টাইপের।
@আদিল মাহমুদ,
আপনার চিন্তা চেতনার সাথে আমার পরিচয় দীর্ঘদিনের । তাই আপনি যে সংশয়বাদী – এটা মানতে সমস্যা আছে বৈ কি । আপনি ঈমান-এ- মুফাস্সিল (The Detailed Declaration of Faith) এ বিশ্বাস করেন বলেই আমি জানি । ইসলামী Revisionist বা একধরনের সংস্কারপন্থী মুসলিম হিসেবে আপনাকে মানতে আমার আপত্তি নেই যদিও ।
@সংশপ্তক,
আমি ধার্মিকত্বের স্কেলে কি তা নিজেই নিশ্চিত নই, এগুলিও নিয়ে ভাবিতও হই না আর। মানুষে মানুষে হীন ভেদাভেদ ছাড়া এসব ধর্মীয় পরিচয় আর কি দিতে পেরেছে সভ্যতাকে? এই ব্যাপারগুলি বড়ই গোলমেলে। ফারুক ভাই এর মতে আমি এখনো মুসলমান, আবার ঐ বেচারার মুসলমানিত্বও বিনা দ্বিধায় অনেকে বাতিল করে দিয়েছেন 🙂 । ভাল ধার্মিক হবার চাইতে ভাল মানুষ হওয়া অনেক বেশী গুরুত্বপূর্ন। আমার মতে ভাল ধার্মিক মানেই ভাল মানুষ অবশ্যই নয়, তবে ভাল মানুষ মানেই ভাল ধার্মিক। ধার্মিকের মানে আমার কাছে সত্য পথে থাকা।
কোরান বা ইসলামের মৌলিক বেশ কিছু দর্শনে সংশয় আসলেও কোরান পুরো গার্বেজ বা ইসলামে ভাল কিছুই নেই এমন ধ্যান ধারনাও চরমপন্থীই লাগে।
@আদিল মাহমুদ, বিভিন্ন সময়ে আপনার বিভিন্ন মন্তব্য পড়ে কিন্তু আমারও সংসপ্তকের মতই ধারণা হয়েছিল। আপনার এবারের লেখা এবং মন্তব্যগুলো পড়েও কিন্তু সেরকমই মনে হচ্ছে। প্লিজ মনে করবেন না আমি সমালোচনা করে বা খারাপভাবে কথাগুলো বলছি। আপনার সাথে বিতর্ক করাটাও আমার উদ্দেশ্য নয়, ধর্ম নিয়ে তর্কবিতর্ক করতে আমি কত পছন্দ করি তা তো জানেনই 🙂 । তবে বোঝা যাচ্ছে আপনি বেশ ‘গুরুতর’ সংশয়ের মধ্যেই আছেন। আপনার বিশ্বাস আপনার একান্তই নিজের ব্যাপার, কিন্তু আপনি যেহেতু এ নিয়ে ব্লগ দিয়েছেন (এবং আমি তা পড়েও ফেলেছি) তাই পাঠক হিসেবে কথাগুলো বলছি। আপনি প্রায়শঃই একথাটা বলেন যে ইসলামে সব কিছুই গার্বেজ সেটা আপনি মেনে নিতে পারেন না। আসলে ধর্মের উৎপত্তি, বিকাশ এবং প্রয়োজনীয়তাটাকে একটু ঐতিহাসিক ( শুধু ঐতিহাসিকই বললাম, বৈজ্ঞানিকভাবে বোঝার কথা না হয় নাই বললাম) বুঝলেই বোধ হয় বুঝতে পারবেন সেটা কোন ধর্মের ক্ষেত্রেই ঠিক নয়। যে যুগে এই ধর্মগুলোর উৎপত্তি হয়েছিল সে যুগে এদের যথেষ্ট উপযোগিতা ছিল। তাই তাদেরকে ‘ইভিল’ বলে চিল্লানোরও যেমন কোন কারণ নেই, তাদের মধ্যে এখন কত ভালো ভালো দিক আছে সেটা নিয়ে তর্ক বিতর্ক করাটাও বোধ হয় সময়ের অপচয়। পরকাল নিয়ে আপনার উইশফুল থিঙ্কিংটাও বেশ ভালো লাগলো, আসলেই এমন কিছু একটা থাকলে খারাপ হত না।
ভালো থাকেবন।
@বন্যা আহমেদ,
উঁহু, পাঠক প্রতিক্রিয়ায় বিরক্ত হতে যাব কেন? ঢিল ছুড়েছি স্বেচ্ছায় আমি নিজেই। এখন ঢেউ উঠলে তা কেন সামাল দেব না 🙂 ?
প্রশ্নের জবাব প্রশ্ন দিয়ে হয় না, তবুও শুরু করি; আপনার কি মনে হয় যে কোরান সহ সবগুলি ধর্মগ্রন্থই পুরোপুরি গার্বেজ, এতে একটি কিছু শিক্ষনীয় নেই ? আমি তা মনে করি না। সার্বিকভাবে এসবের প্রয়োযনীয়তা আজকের দিনে নেই, সন্দেহ নেই। তার মানেই অবধারিতভাবে বলা যায় না যে এসবে ভাল বলতে কিছুই নেই, সম্পূর্নই মন্দ। যায় কি? উদাহরন সূলভ বলছি, কোরানিক যাকাত প্রথা খারাপ বা এই যুগেও অচল আমি কিভাবে বলি? এটা মানি যে বর্তমানে যে উপায়ে গরীব দূঃখী মানুষকে একটা লুংগি বা ছাপা শাড়ী দিয়ে যাকাতের দায় সারা হয় সেটায় আসলেই তেমন সুফল আনে না। তবে এই প্রসেসটাকে আধুনিক কায়দায় ইনভেষ্টমেন্ট হিসেবে দেখে যায়গামত খাটালে কি সমাজের কল্যান বয়ে আনতে পারে না? অবশ্যই পারে। এই কন্সেপ্ট অন্যভাবে বেশ কিছু দেশে আছে, যদিও সরাসরি যাকাত জাতীয় কিছু নেই। উন্নত দেশগুলিতে বর্ধিত ট্যাক্স থেকে লো-ইঙ্কাম গ্রুপের জন্য কিছু করা হয়।
কোরানের কতভাগ গ্রহন করা যায়, কত ভাগ বর্জন করা যায় তেমন সূক্ষ্ম হিসেব আমি করিনি। এটা হবে খুবই বিতর্কিত। তবে কোনভাবেই মনে হয় না এক্ট্রীমে যাওয়া যায়। হাদীস আসলেই কে বা কারা লিখেছিল আমি জানি না, এগুলো আসলেই ধর্মের বা আল্লাহর সাথে সম্পর্কিত কিনা জানি না। তবে কোন হাদীস যদি মনে হয় যে ভাল তা কেন স্বীকার করব না?
হিন্দু ধর্ম অত্যন্ত জগা খিচূড়ী ব্যাপার, মাথা মুন্ডু কিছুই বুঝি না। তাই বলে সেখানেও কি শিক্ষনীয় কিছু একদমই নেই? হতে পারে এগুলোর জন্য আজকাল আর মানুষের এসব গ্রন্থের দ্বারস্থ হতে হয় না।
আমি ব্যাপারটাকে এভাবে দেখি। ধর্মগ্রন্থ্বের ভাল দিকগুলি যুগ অনুযায়ী বিবেচনা করে প্রয়োগ করলে সুফল আনত বলেই মনে করি।
@আদিল মাহমুদ,
ইউরোপে চাকরি না থাকলে ট্যাক্সের টাকা থেকেই তাদের ভাতা দেয়া হয় তা
মিনিমাম ওয়েজের সমান, সাথে সব ধরনের ট্যাক্স মাপ! খৃষ্টান ধর্মে ওরা গরীব,অসহায়দের জন্য নিজেদের দেশে তো বটেই সারা পৃথিবীতেই করে।
একবার ক্লাশে তূলনামূলক ধর্মের আলোচনায় আমাদের নবীর জীবনী এসে পরল।তিনি ব্যবসায়ী! এই নিয়ে কেউ একজন মন্তব্য করলঃ প্রফেট ব্যবসায়ী হয় কিভাবে? ওদের প্রফেট তা নয় বলেই হয়ত!উত্তর দেয়ার মত ভাষা সত্যিই ছিলনা! ওদের প্রফেট তো শুধু ওদের জন্যই সব কিছু করেছেন!
আজ সারা পৃথিবীতেই মুসলমানরা ভোগবাদীতায় মেতেছে!
সেটাও কি আদর্শের অভাব থেকে!
এই প্রশ্নও মনে জাগে!
@লাইজু নাহার,
এটা অবশ্য কোন বৈধ সমালোচনা নয়। সমালোচনার কারণটি অবশ্য ঠিকই ধরেছেন। যীশু ব্যবসায়ীদের মন্দিরে ঢোকা নিষেধ করেছিলেন, অতএব বাকি সবাইকেও তাই করতে হবে। সবাই নিজের রঙিন চশমা পরে বসে আছে।
@রৌরব,
এসবই হল অতিরিক্ত প্রতিক্রিয়া দেখানোর ফল। ব্যাবসা করার মাঝে আপত্তিকর কি থাকতে পারে তা কে জানে? ধর্ম ব্যাবসা হলে এক কথা।
@ আদিল, আপনার লেখাটা পরে মজা লাগলো, আপনার করা কিছু প্রশ্নের সাথে আমার ছোট বেলার করা কিছু প্রশ্ন একেবারেই মিলে যায়। আমি খুব লিবারেল পরিবারে বড় হয়েছি, নানি ছাড়া কাউকে নিয়মিত নামাজ পড়তে দেখিনি। পীর ফকিরের কাছে কেউ গেলে তাদের নিয়ে রীতিমত হাসাহাসি করা হত আমাদের বাসায়। আমার বাবা মা নাস্তিক নয় কিন্তু ধর্মের তেমন কোন চর্চাই ছিল না বাসায়, ঈদ হত, শবেবরাতে দুই একবার নামাজ পড়া হত, কিন্তু এর বেশী কিছু নয়। ও হ্যা, খুব বেমানানভাবেই আমার মা আমাদের দুই বোনের জন্য হুজুর রেখেছিলেন কোরান শরীফ পড়া শেখার জন্য। মজার ব্যাপার হল সেই হুজুরও ছিলেন আবার খুবই আধুনিক মনের মানুষ। উনি বলতেন কোরান শরীফ পড়ার সময় আমাদের মত ছোট মানুষের ( ১০-১১ বছর বয়সে) মাথায় ওড়না না দিলেও হবে!! সেই ১২-১৩ বছর বয়সে বাবাকে প্রশ্ন করেছিলাম সব ধর্মই তো নিজেকে ঠিক বলে তাহলে কোনটা আসলে ঠিক? যে যার নিজের ধর্মকেই তো ঠিক মনে করবে এটাই তো স্বাভাবিক, তার জন্য তাদের শাস্তি হবে কেন? বাবা বলেছিলান সব ধর্মগ্রন্থগুলো পড়ে দেখ তোমার কি মনে হয়, তুমি নিজেই না হয় ঠিক কর তুমি কি মানতে চাও। আর সেই হল কাল, আমার মা এখনও বলে যে আমার নাস্তিক হওয়ার পিছনে নাকি আমার বাবা দায়ী।
সবগুলো ধর্মগ্রন্থ মোটামুটিভাবে পড়ে তখনই মনে হতে থাকে এগুলো সবই তো রূপকথা, এগুলোর কোনটাই আসলে আমার পক্ষে সঠিক বলে মেনে নেওয়া সম্ভব নয়। তারপর যতই ধর্মের নৃতাত্ত্বিক,সামাজিক প্রেক্ষাপট আর ইতিহাস পড়েছি ততই বুঝতে পেরেছি আজকের জীবনে ধর্মের অসাড়তা। এর সাথে আবার বিজ্ঞান এবং মার্ক্সবাদ যোগ হওয়ায় আমার জীবনে ধর্মের ইতি ঘটেছিল সেই ছোট্টবেলায়ই। মজার ব্যাপার হচ্ছে আমার চারপাশে (বন্ধু বান্ধব, আমার এক বোনসহ অনেকেই) নাস্তিক এবং সংশয়বাদীর সংখ্যা এত্ত বেশী ছিল যে আমি কখনও আমাদের দেশে ধর্মের এইরকম প্রভাব বুঝতেই পারিনি, স্কুল কলেজে প্রকাশ্যেই বলে বেড়াতাম আমি নাস্তিক, কেউ কখনও আক্রমণ করেনি। আমাকে কেউ কোনদিন নামাজ পড়তে জোড় করেনি, ধর্ম নিয়ে হাসাহাসি করলে মা মাঝে মাঝে বিরক্ত হয়ে বাড়াবাড়ি করতে নিষেধ করতেন… এই পর্যন্তই। আমার ফ্যামিলিতে যারা ধার্মিক তারাও আমার বা আমার মত নাস্তিকদের বেশ উদারতার সাথেই সহ্য করতেন। এছাড়া নব্বই দশকের আগেই দেশ ছাড়ায় দেশে ধর্মের উন্মাদনাটাও সেভাবে দেখতে হয়নি। সব মিলিয়ে প্রতারিত মনে হওয়া তো দূরের কথা, ধর্ম সম্পর্ক আমার কখনই তেমন কোন রাগ বা বিতৃষ্ণা কাজ করেনি। আমার নিজের জীবনে ধর্মটা একান্তই অপ্রাসঙ্গিক, তবে মাঝে মাঝেই অবাক হয়ে ভেবেছি মানুষ কেন এখনও ধর্ম মানে! তবে বৈজ্ঞানিকভাবে চিন্তা করলে সেটার উত্তর পাওয়াও আসলে খুব কঠিন কিছু নয়। আজকে দেশের অনেক ঘটনা শুনলে অবাক হই, মাঝে মাঝে মনে হয় একজন মেয়ে এবং নাস্তিক হয়েও আমি দেশে যে স্বাধীনতা ভোগ করে এসেছি সেটা বোধ হয় এখন আর সম্ভব হবে না। তবে দেশে গেলে এটাও মনে হয়, এখনও অনেক কিছুই সম্ভব দেশে! কেমন যেন দুই ভয়াবহ বিপরীত স্রোত একই সাথে তীব্র বেগে এগিয়ে চলেছে, কোনটা কখন কাকে ভাসিয়ে নিয়ে যাবে তার অবশ্য কোন নিশ্চয়তা নেই।
ধর্ম, নিজের ব্যাক্তিগত বিশ্বাস অবিশ্বাস নিয়ে কথা বলতে এক্কেবারেই ভালো লাগে না আমার, কিন্তু আপনার লেখাটা দেখে বেশ মজা লাগলো। তাই অঙ্কে কথা বলে ফেললাম। আচ্ছা, একটা প্রশ্ন করি, ‘
এটা দিয়ে কি বুঝিয়েছেন? সব আব্রাহামিক ধর্মেই তো কম বেশী একই কথা বলে। কোন দর্শনটা আপনার পছন্দ? মরে যাওয়ার পরেও একটা কিছু আছে, এইটা, নাকি মরে যাওয়ার পর এত পুরষ্কারের আশা আছে, সেইটা 🙂 ।
@বন্যা আহমেদ,
হিন্দুরাও পাল্লা দিয়ে চলছে। ঢাকাতে নতুন সব মন্দির উঠছে। গ্রামে গঞ্জে মাইক ফাটিয়ে কীর্তনের মহা সমারোহ।
তাও চাইতেও বেশী স্রোত বইছে এদেশে। ৯/১১এর আগে বোরখা বা হিজাব পরা মহিলা দেখেছি কিনা মনে নেই। ৯/১১এর মাত্র ছয় সপ্তাহ পরে আমার বাসায় হাজির এক PhD ছাত্র। কোন তব্লীগ হূজুর নয়। একেবারে কেতাদুরস্ত সাহাবী পোষাকে। আমাকে খেয়াল করেছে – স্বধর্ম বিমুখ। কাজেই দ্বীনের দাওয়াতটা দেওয়া শুধু বাকী।
@নৃপেন্দ্র সরকার,
আপনার সাথে সম্পূর্ণ একমত। ধর্মীয় উন্মাদনার যুগ মনে হয় এটা, ইউরোপ ছাড়া পৃথিবীর বেশীরভাগ জায়গার জন্যই বোধ হয় কথাটা সত্যি। কথা প্রসঙ্গে বাংলাদেশ এসেছিল বলে ওভাবে বলেছি। চারপাশে ধর্মীয় কুসংস্কার, চর্চা আর মৌলবাদী বিকাশ দেখে তো রীতিমত আঁতকে উঠি। আমেরিকার সাউথের বাইবেল বেল্টে বাস করি দেখে এখানকার খৃষ্টানদের খুব কাছে থেকে দেখার সৌভাগ্য হয়, আর আইটি ফিল্ডটা ইন্ডিয়ানে ভরা বলে কাজে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের সাথেও অনেক উঠাবসা করতে হয়। আমাদের দেশে মসজিদের সংখ্যা নিয়ে যারা চিন্তিত হন তাদের এখানে এসে চার্চের সংখ্যা গুনে বের করা উচিত। চারপাশের একেকজন মানুষ যেন হেটে চলে ফিরে বেড়ানো জলজ্যান্ত ফক্স নিউজ!! আর কাজে ইন্ডিয়ান কলিগদের তিলকের বাহার, মন্দিরের খবর, কোন বারে কি কি খাওয়া যাবে বা যাবে না, আর কোন ঋষির হাত দেখার ক্ষমতা কত ভালো এগুলো শুনে হাসবো না কাঁদবো বুঝতে পারি না।
গত কয়েক দশকের রাজনৈতিক এবং অর্থনৈতিক বিভিন্ন ঘটনাবলী বিচার করলে সারা পৃথিবী জুড়ে বিভিন্ন ডায়মেনশনে মৌলবাদের উত্থানের কারণটা বোঝা বোধ হয় খুব কঠিন ব্যাপার নয়। তবে সে অনেক বড় আলোচনা এবং বিতর্কিত টপিকও বটে, এখন না হয় থাক।
@বন্যা আহমেদ,
এই বিতর্কিত টপিকটি নিয়ে লেখা মুক্তমনায় আশা করছি।
@বন্যা আহমেদ,
আপনার অভিজ্ঞতা আসলেই ব্যাতিক্রম। আমার দেখা মতে মানুষের ধর্মবিশ্বাসের ভিত গড়া হয় ছোটবেলায়, এতে সবচেয়ে বেশী ভূমিকা থাকে পরিবারের। তাই পরিবারের ব্যাকগ্রাউন্ড খুব ইম্পর্টেন্ট। সাধারনত গোঁড়া পরিবার থেকে গোঁড়া, মডারেট থেকে মডারেট, নাস্তিক থেকে নাস্তিকই বের হবার প্রবনতা দেখা যায়।
আপনার ছোটবেলাতেই মার্ক্সবাদের প্রভাব বেশ ইন্টারেষ্টিং। আপত্তি না থাকলে এ বিষয়ে পুরো একটা লেখা লিখে ফেলেন। আমার ছেলেবেলায় মনে পড়ে না অন্তত স্কুল লেভেলে কেউ নিজেকে নাস্তিক বলে বেড়াতো বলে। মনে হয় নাস্তিক বলে কোন বস্তু আছে তাই সেসময় আমরা ব্যাবহারিক অর্থে জানতাম না।
আমারও পর্যবেক্ষন অনুযায়ী দুই বিপরীতমূখী স্রোত এগিয়ে চলেছে। দুটোই চরমপন্থার স্রোত। এই দুই ধারার সংঘর্ষ হতে পারে অনিবার্য। আমাদের ছেলেবেলায় ব্যাপারটা ছিল অনেকটা ব্যালেন্সড। মধ্য ৭০ থেকে যখন আমার স্মৃতি আছে মনে করতে পারি যে তখন একই ব্যাক্তি গানবাজনা, আর্ট, ধর্ম চর্চা সবই করতেন। কোনটারই তেমন বাহুল্য ছিল না। ধর্ম নিয়ে লোক দেখানেপনা ছিল অনেক কম। মধ্য ৮০ এর পর থেকে মনে হয় ধীরে ধীরে অবস্থার পরিবর্তন হতে থাকে। ৯১১ এর পর থেকে এর ছাপ পড়তে থাকে বিশ্বময়ই। আজকাল আমার চেনা পরিচিত বেশীরভাগ বাড়িতেই হালাকা হয় (ব্যাপারটা কি আমিও জানি না, ধর্মীয় জিকিরের মত কিছু যা মনে হয়), অনেকেই ঢাকা শহরেই নানান পীর ফকিরের মুরিদ।
পরকালে বিশ্বাস কাছে ভালই মনে হয় কিছুটা যৌক্তিক কারনেই। পরকাল হবেই অবশ্যই যৌক্তিক কোন কারন দর্শাতে পারব না। বলা ভাল যে আমার মনে পরকাল বা শেষ বিচার থাকা উচিত। পৃথিবীতে ভাল কাজ মন্দ কাজের মূল্যায়ন বেশীরভাগ ক্ষেত্রেই হয় না। বড় ধরনের অবিচারই দেখা যায়। এই অবিচারগুলির যথাযথ বিচারের জন্যই পরকাল থাকা উচিত। পুরষ্কার পেতে কার না ভাল লাগে? এই ধারনার খারাপ দিকও কিছু আছে তাও মানতে হবে। তারপরেও মনে হয় যে পরকালের কনসেপ্ট সত্য হওয়া উচিত।
আপনার অভিজ্ঞতাও ফাঁকতালে শোনা হয়ে গেল, ধন্যবাদ।
@আদিল মাহমুদ,
আমার কাছেও পরকাল একি কারনে প্রয়োজন বলে মনে হয়। চারিদিকে এত বেশী অনিয়ম যে মনে হয় এর যথাযথ বিচার হওয়া প্রয়োজন। তখনি আবার মনে হয় পশুর জগতে কি ঘটে? একটা সিংহ ওৎ পেতে সদ্য ভূমিষ্ট হরিণ ছানা শিকার করে, আর মা হরিণটি ফেলফেল করে চেয়ে থাকে। শিকারটি সিংহ আবার তার শাবককে খাওয়ায়। তখন প্রশ্ন জাগে এখানে কে কাকে বিচার করবে! মানুষ প্রকৃতির অংশ। প্রকৃতিতে যা ঘটে তার সবটুকু মানুষ এখন ছাড়তে পারেনি। তবে আমাদের চেষ্টা করতে হবে যে মানবীয় গুণগুল আমরা অর্জন করেছি। দাস প্রথা দূর হয়েছে, নারী-পুরুষের প্রতি দৃষ্টিভঙ্গির পার্থক্য এসেছে। রোমের গ্লাডিয়েটরের বদলে ফুটবলের মত খেলায় আজ সবাই পাগল হয়ে থাকে। এ অর্জনগুলই আসল। এতে আমাদের পূর্বপুরুষদের যেমন অবদান ছিল। আমাদেরও সেটা ধরে রাখার চেষ্টা করে যেতে হবে। এভাবেই নিজের সাথে নিজেকে খন্ডন করি। পরকালের বিপক্ষে যুক্তি খুজে পাই। তবুও ভালই লাগে ভাবতে।
@আনাস,
একটু সূক্ষ্মভাবে ভাবতে গেলে পরলাকের ধারনাতেও কিছু খুত ধরা পড়ে। যেমন ধরা পড়ে আল্লাহ দুনিয়ায় মানুষকে পরীক্ষা করতেও কষ্ট দেন এমন ধারনার।
তারপরেও মনে হয় দুনিয়ায় ইমব্যালেন্স এত বেশী যে পরকাল না থাকলে হিসেব কোনদিন মিলবে না।
@আদিল মাহমুদ, @আদিল মাহমুদ, আপনি বোধ হয় আমার কথাটা ভুল বুঝেছেন, অথবা বলা উচিত আমি ঠিকমত লিখতে পারিনি। আমি বলেছিলাম যে যে যুগে ধর্মগুলো প্রচার করা হয়েছিল সে যুগে এদের উপযোগিতা অবশ্যই ছিল, এবং সে কারণেই আপনি যে কথাটা বলেন যে সব ধর্মেই কিছু ভালো দিক আছে সেটা নিয়ে বিতর্কের তেমন কোন অবকাশ নেই। আপনার সাথে কোন দ্বিমত নেই এব্যাপারে। আমার কাছে মনে হয়, ধর্মগ্রন্থে যতটুকু শিক্ষণীয় জিনিস আছে ততটুকু আরও অনেক সাহিত্য কর্ম বা ঐতিহাসিক দলিলেও পাওয়া সম্ভব। তবে এগুলো থেকে কিছু শিখতে হবে কিনা, বা এগুলোর ইম্পলিমেন্টশন দরকার কিনা এবং আজকের যুগে এরা কতটুকু প্রযোজ্য – এ সব নিয়ে মনে হয় আপনার সাথে আমার মত মিলবে না। যেমন ধরুন ওয়েলফেয়ার স্টেটগুলোর বিভিন্ন সুযোগ সুবিধার কথা বলেছেন, তাদের তো কোন ধর্মগ্রন্থের সাহায্য নিয়ে এগুলো তৈরি করতে হয়নি। এগুলো আমার কাছে কমন সেন্স জিনিস, মানুষ হিসেবে আমাদের বুদ্ধিমত্তার যে লেভেল তাতে করে এগুলো নিজের থেকেই আসা উচিত। কোন পুরষ্কারের আশায় বা গরম তেলে ভাজা ভাজা ( 🙂 )হওয়ার ভয়ে করা উচিত নয়।
আমার মতে মানুষ হিসেবে আমাদের কিছু গুণাবলী বা বৈশিষ্ট্য আছে যেগুলোর চর্চা করার জন্য কোন প্রাচীন ধর্মগ্রন্থের আশ্রয় নেওয়ার দরকার নেই, বহু যুগের অভিজ্ঞতা এবং আধুনিক জ্ঞানবিজ্ঞানের জ্ঞানই যথেষ্ট। তবে অন্যান্য অনেক গ্রন্থের মতই তারা ঐতিহাসিক রেফারেন্স বা দলিল হিসেবে কাজ করতেই পারে। এর সবটুকুই আসলে আমার একান্ত ব্যাক্তিগত মতামত, এ নিয়ে তর্কবিতর্ক করে আসলে লাভ নেই, আপনার ব্লগটাতে ধর্ম নিয়ে যতটুকু কথাবার্তা বললাম তা মনে হয় আগে আর কোনদিন করিনি, ওভারডোজ হয়ে যাচ্ছে নিজের কাছেই 🙂 , সেজন্য আপাতত বিদায় নিচ্ছি। ভালো থাকবেন।
@বন্যা আহমেদ,
গতবার লেখার সময়ই মনে হচ্ছিল যে বিষয়টা পরিষ্কার করা দরকার। কেন যেন করিনি, তাই দুজনেরই বোঝার ভূল হচ্ছে।
এখানে ইস্যূ আসলে একটি নয়, দুটি।
১। ধর্মগ্রন্থগুলিতে কি ভাল বলতে একদমই কিছু নেই? (যেমনটা অনেকে দাবী করেন)।
২। ধর্মগ্রন্থগুলিতে কিছু না কিছু ভাল দিক আছে, মানি। তারমানেই কি এই যে ধর্মগ্রন্থ ছাড়া সেসব ভাল দিক আমরা পেতাম না? বা পাবার আর কোনই পথ ছিল না?
এই দুটো প্রশ্ন অনেকটা একই রকম হলেও এক নয়। তফাত আছে।
আমি আপনাকে আগে জবাব দিয়েছিলাম অনেকটা ১নং পয়েন্টের পরিপ্রেক্ষিতে। ধর্মগ্রন্থগুলি এবসোলিউট গার্বেজ কিনা এই প্রশ্নের জবাব দেবার চেষ্টা করেছিলাম।
ধর্মগ্রন্থের কিছু ভাল দিক থাকলেও সেগুলির জন্য বিশেষ করে আজকের দিনে অতি অবশ্যই ধর্মগ্রন্থের দ্বারস্থ হতে হবে এমন কথা আমিও বিশ্বাস করি না।
আমি শুধু এটাই বলতে চাই যে আজকের দিনে নৈতিকতা বা সমাজ ব্যাবস্থা; মোটকথা জাগতিক যেকোন প্রয়োযনের জন্য ধর্মগ্রন্থের দ্বারস্থ হবার প্রয়োযন ফুরিয়েছে সন্দেহ নেই। তবে এতে করে বোঝায় না যে ধর্মগ্রন্থগুলিতে মন্দ ছাড়া ভাল একেবারে কিছুই নেই। ভাল কিছু দিক অবশ্যই আছে, যদিও তার জন্য বিকল্প উতসও আজকের দিনে আছে।
আমিও এই সংশয়বাদী স্তরে ছিলাম অনেকদিন,বছর দুয়েক আগ পর্যন্তও। আপনি ঠিকই বলেছেন, সংশয়বাদী থাকা আসলেই কষ্টের। তবে আমি এই স্তর পেরিয়ে এসেছি। এখন আমি নিজেকে একজন নাস্তিক দাবী করতে পারি এবং নিজের নাস্তিকতার পেছনে কিছু ভালো যুক্তিও দেখাতে পারি। রূপান্তরটা আসলে হয়েছে কিছু ঘটনা আর আমার এই বিষয়ে পড়াশোনার কারণে।
এখানে অপ্রাসংগিকভাবে একটা কথা বলি। আপনি আপনার লেখায় লিখেছেন যে ধর্ম পালন করলে মানসিক শান্তি পাওয়া যায়। এটা আমি অনেক ধার্মিক বন্ধুবান্ধবের কাছ থেকে ধর্ম পালনের পেছনের যুক্তি হিসেবে শুনেছি। তবে আমি এখন বলি- আমি যখন ধার্মিক ছিলাম তখনকার সময়ের চেয়ে এখন বেশি মানসিকভাবে শান্তিতে আছি। কারণ তখন আমার কল্পনায় ছিলেন এক মহাশক্তিধর সৃষ্টিকর্তা যিনি আমাকে শাস্তি দেবার জন্য নানা আয়োজন করে বসে আছেন। কিন্তু এখন? তিনি নেই! সবসময়কার মতোই!
ও হ্যা, আপনার লেখা ভালো লাগলো। :yes:
@নিটোল,
ধন্যবাদ আপনার ভাল বিশ্লেষনের জন্য।
হ্যা,আমি এখনো দৃঢ়ভাবেই বিশ্বাস করি যে ধর্ম পালন করলে শান্তি পাওয়া যেতেই পারে। পাওয়া যাবেই এমন কোন কথা অবশ্যই নেই। আর ধর্ম পালন না করলেই যে শান্তি পাওয়া যাবে না এমন কোন কথাও বলা যায় না।
ধর্মপালন না করার ফলেও আমি এখন বেশ কিছু দিকে বেশ শান্তিতে আছি। আগে সর্বক্ষন একটা অজানা পাপবোধের ভয়ের মাঝে থাকতে হত; কি জানি, নিজের অজান্তেই কি করে ফেলি আর আল্লাহ গুনাহ দেন, ইচ্ছে থাক আর না থাক নিয়ম করে সময় মত নামাজ পড়া অনেক সময় অত্যাচারের মতই লাগত। যতই ভক্তিভাব দেখাই না কেন।
এরকম দুতরফেই কিছু কিছু পয়েন্ট বের করা যায়।
জনাব আদিল মাহমুদ,
বেশ বিপদেই আছেন দেখছি! পরিত্রানের সহজ কোন রাস্তা তো দেখছি না। আমার ছোটবেলার এক টুকরো কাহিনী বলি। বোধ হয় ৮ম বা ৯ম শ্রেণীতে পড়ি। দরজার পেছনে লুকিয়ে ভগবানকে চাটি মেরেছিলাম! কেনো জানেন? আমদের বাসার কাজের মেয়েটাকে বোন সেদিন মেরেছিলো। ওরা গরীব তাই এতো অবহেলিত? রাগটা গিয়ে পরেছিলো ওই বেটা ভগবানের উপর। চাটি মারার পরে একটু ভয় ভয় লেগেছিলো ঠিকই, কিন্তু কেটেও গিয়েছিলো। কারন কিছুক্ষনের মধ্যে আমাকে কেউ চাটি মারেনি! আমি তখন বললাম, আমাকে করুনা দেখানো হচ্ছে? ঠিক আছে আমি আরো দুটো চাটি মারবো, এর মধ্যে যদি চমকে উঠার মতো কিছু নাঘটে তো যা বোঝার আমি বুঝে নেবো। দরজার উপরে চাটি মারি, আর আমার চাটির শব্দে আমি নিজেই কেঁপে উঠি! নাহ্, কই? কিছুতো হলো না! মনে মনে ভাবলাম বুঝেছি, হয় তুমি নির্বোধ নতুবা ঠুটো! সে ধারনা আমার এখনো অটুট। আপনার এতোসব কিতাব ঘাটার আর শ্রমসাধ্য অধ্যাবসায়ে আমার ভেতরে যে একটু আধটু সংকোচ কাজ করতো তা তিরোহিত হয়ে যেনো বেশ একটা ফুরফুরে অনুভূতি টের পাচ্ছি। ধন্যবাদ, ভালো থাকুন।
@কেশব অধিকারী,
আপনার মত এত সহজে জুতো পদ্ধুতিতে এই মহা সমস্যার সমাধান করতে পারলে তো কাজই হয়েছিল। এত সহজ সমাধান আছে কে জানত!
দেখি, ঈশ্বর বলে কথা, তাই পুরনো জুতোয় সংকোচ হচ্ছে; এরপর নুতন জুতো জোড়া কিনলে চেষ্টা করে দেখব 🙂 । উনি ক্ষেপে উঠলে আপনার রেফারেন্স দিয়ে দেব।
@আদিল মাহমুদ,
একদম ঠিক, দিয়ে দেবেন। ছোটবেলায় বাবাকে জিজ্ঞেস করা এক প্রশ্নের জবাবে বলেছিলেন যেটুকু বুঝবে সেটুকু পালন করলেই হবে। বাবা ধর্মের ব্যাপারে খুবই লিবারেল ছিলেন। একটু বয়েস বাড়ার পরে দেখেছি আসলে এর মধ্যে অনুসরণীয় তেমন কিছু নেই। অহেতুক মনটাকে এক ভীতিকর কলসীর ভেতরে আটকে রাখা!
আমি যেখানে এখন আছি সেখানে বাংলাদেশী আর পাকিস্তানীদের দেখি হারাম আর হালাল খাবার নিয়ে অতিশয় সচেতন। আমার কাছে ব্যপারটা আত্মপ্রতারণার মতো মনে হয়। কিছুদিন আগে এক জায়গায় বেড়াতে গিয়েছিলাম। হোটেলে খাবার সময় অধিকাংশ সদস্যই কিছু খেলোনা খাবার হালাল নয় সন্দেহে। অথচ কয়েক ঘন্টার ব্যবধানে খুঁজে খুঁজে পাহাড়ী জঙ্গলে একটা জলজ্যান্ত সাপ মেরে নিয়ে এলো স-উল্লাসে! জিজ্ঞেস করলাম ওতো কারো ক্ষতি করেনি, মারলে কেনো? উত্তর, সাপ মারা নাকি জায়েজ! হায় বিবেচনা! কি আর বলবো, এসবই ধর্মগ্রন্হ থেকে পাওয়া বিদ্যে!
@কেশব অধিকারী,
সাপ মারার মানে কি? খাদ্য হিসেবে গ্রহন???
সাপ জীবটা অত্যন্ত অপছন্দের, তবে বেহুদা বেহুদা প্রান হরনের কোন কারন দেখি না। হালাল হারাম খাওয়ার বাই নিয়ে এই জীবনে বহু নাটক দেখেছি।
@আদিল মাহমুদ,
নাহ্, শুধুই খেলাচ্ছলে! বাংলার দামাল ছেলেদের কাজ! এইসব দেখি, আর ভাবি বেটা কুম্ভকর্ণ ভগবানের ঘুমটা আর না ভাঙলেই বাঁচি! ভালো থাকুন।
@কেশব অধিকারী,
খুবই অন্যায়। খেলাচ্ছলে কোন প্রানীর (ক্ষতিকর হলেও) প্রান হরনের অধিকার কোন ধর্ম দিয়েছে বলে জানি না।
এদের জেলে পোরা উচিত।
কোরান অন্ধ বিশ্বাস বা না বুঝে বিশ্বাসকে সমর্থন করে না বলেই আমার ধারনা। আত্মপ্রতারনা করে কোন জ্বালা থেকেই নিষ্কৃতি পাওয়া সম্ভব নয়। মানসিক শান্তি না পেলে কোন ধর্ম পালন-ই উচিৎ নয়।
১৭:৩৬ যে বিষয়ে তোমার কোন জ্ঞান নেই, তার পিছনে পড়ো না। নিশ্চয় কান, চক্ষু ও অন্তঃকরণ এদের প্রত্যেকটিই জিজ্ঞাসিত হবে।
17:36 Do not uphold what you have no knowledge of. For the hearing, eyesight, and mind, all these are held responsible for that.
This verse instructs us to use both our reason and senses to examine all the information we receive. It warns us against blindly following a religious teaching or political ideology and asks as to be iconoclasts. It warns us not to be hypnotized by the charisma of leaders nor by the social conventions. A society comprised of individuals that value rational and empirical inquiry will never become the victim of religious fanaticism, tragedies brought by charismatic politicians. A religion or sect that glorifies ignorance and gullibility can be very dangerous for its followers and others.
As the Physicist Steven Weinberg once put profoundly, “With or without religion, you would have good people doing good things, and evil people doing evil things. But for good people to do evil things, that takes religion.” See 6:74-83.
The following advice is attributed to Buddha.
“Do not put faith in traditions, even though they have been accepted for long generations and in many countries. Do not believe a thing because many repeat it. Do not accept a thing on the authority of one or another of the sages of old, nor on the ground of statements as found in the books. Never believe anything because probability is in its favor. Do not believe in that which you yourselves have imagined, thinking that a god has inspired it. Believe nothing merely on the authority of the teachers or the priests. After examination, believe that which you have tested for yourself and found reasonable, which is in conformity with your well being and that of others’.”
The Biblical, “Know the truth, and the truth will set you free!” (John 3:24),
The Quran repeatedly advises us to use our intellect, to reason, to be open-minded, to be the seekers of truth, to be philosophers, to be critical thinkers, and not to be the followers of our wishful thinking or a particular crowd. For instance, see 2:170, 171, 269; 3:118, 190; 6:74-83; 7:169; 8:22; 10:42, 100; 11:51; 12:2, 111; 13:4, 19; 16:67; 21:10, 67; 23:80; 24:61; 29:63; 30:28; 38:29; 39:9, 18, 21; 40:54; 59:14. See also 6:110.
@ফারুক,
আপনার কথা সম্পূর্নই স্ববিরোধী সেই কোরানের আলোকেই।
আমাদের মূল্যায়ন হলো- ইসলাম জ্ঞানচর্চাকে অনুপ্রেরনা যোগায় না। তখন আপনাদের মত লোকেরা
এটা উল্লেখ করে বলেন যে- এর অর্থ আল্লাহ জ্ঞানচর্চাকে অনুপ্রেরনা দিচ্ছেন। এখন জ্ঞান চর্চার উপায়টা কি ? উপায় টা হলো- প্রশ্ন করা বা সংশয় প্রকাশ করা। তাহলেই উত্তর পাওয়া যাবে যা মূলত জ্ঞান। কিন্তু কোরান বলছে- মোহাম্মদ আল্লাহর নবী তা প্রশ্ন ছাড়াই বিশ্বাস করতে হবে। আবার মোহাম্মদ বলছে কোরান আল্লাহর বানী যা প্রশ্ন ছাড়াই বিশ্বাস করতে হবে। এটা যুক্তি বিদ্যায় একটা ফ্যালাসী হিসাবে পরিগনিত হয়। কারন কোরান এনেছে মোহাম্মদ যা তিনি আল্লাহর কিতাব বলছেন, আবার কোরান বলছে মোহাম্মদ আল্লাহর নবী। এখন আমাদের প্রশ্ন জাগতেই পারে , মোহাম্মদ আল্লাহর নবী কিনা, বা কোরান আল্লাহর বানী কিনা। কিন্তু সে কোরানই আবার বলছে এ দুটি জিনিসকে প্রশ্ন ছাড়াই বিশ্বাস করতে হবে ,যাতে অন্ধবিশ্বাস বলা হয়। অথচ আপনি বলছেন –
তো তাহলে কোরানে যে বার বার ইমান বা বিশ্বাসের কথা বলছে সেটা কি ? কোরানে বার বার বলছে- আল্লাহ ও তার রসুলের ওপর বিশ্বাস করতে হবে, আল্লাহর কিতাব কোরানকে বিশ্বাস করতে হবে । এগুলো তাহলে কি ?
জ্ঞান অর্জনের পক্ষে সাফাই গাওয়া জন্য সুরা আলাকের ইকরা শব্দটিকে মহাসমারোহে ব্যবহার আপনারাই করছেন অথচ একটু পরেই কোরান বলছে অন্ধ বিশ্বাস বা ইমান আনতে হবে। তাহলে কোরান কিভাবে অন্ধ বিশ্বাসকে সমর্থন করল না ? অন্য কথায় কোরান বা ইসলাম কিভাবে জ্ঞান অর্জনকে সমর্থন করল ?
।
পরিশেষে, কোরান আসমানী কিতাব কি না তা বোঝার একটাই উপায় তার চুল চেরা বিশ্লেষন। যদি সে বিশ্লেষনে কোরান কৃতিত্বের সাথে উত্তীর্ন হয় তখন তাকে আসমানী কিতাব হিসাবে স্বীকার করা যাবে। কিন্তু কোরানের প্রথম কথাই হলো ইমান আনতে হবে আগে , তার মানে কোরানকে কোন ভাবেই বিশ্লেষন করা যাবে না । তার পরেও বিশ্লেষন করতে গিয়ে দেখা যাচ্ছে- তাতে অসংখ্য ব্যকরনগত ভুল, কাহিনীর বর্ননা গত ভুল, ইতিহাসগত ভূল, বিজ্ঞানগত ভুল, ভাষাগত ভুল, দুর্বল বাক্যবিন্যাস, দুর্বল ছন্দ বিন্যাস, অসংখ্য অষ্পষ্ট বক্তব্য, মানবতা বর্জিত হিংসাত্মক কথাবার্তা ইত্যাদি যা এ মুক্তমনা সাইটে ব্যপকভাবে আগে লেখা হয়েছে। অথচ কোরানে একটি মাত্র দাড়ি কমারও ভূল থাকার কথা না, কারন তা সবর্বজ্ঞানী আল্লাহর বানী। তাই যেখানে একটি মাত্র দাড়ি কমার ভূলই যথেষ্ট তা আসমানী কিতাব নয় প্রমান করতে, সেখানে কোরানে আছে শত শত ভূল ও হিংসাত্মক ও সার্বজনীন মানবতা বর্জিত কথা বার্তা। অধিকাংশ সাধারন মানুষ মাতৃভাষায় এটা পড়ে না বলে জানতে পারে না। আর যা তাদের ছোট বেলা থেকে পড়ানো হয় তা হলো বেছে বেছে কতকগুলি আপাত ভাল সূরা বা কথা। ফলে ছোটবেলা থেকেই তাদের ব্রেন ওয়াশড হয়ে যায়, এর পর যতই কোরান হাদিসের ভূল ধরিয়ে দেয়া হোক না কেন তারা আর অবচেতন মন থেকে তা আর গ্রহন করতে চায় না , তার বাস্তব প্রমান হলো আপনি। কোরানের এত শত ভূল ধরিয়ে দেয়ার পরও আপনি অকাতরে ডিফেন্ড করে যাচ্ছেন নিজের মনগড়া বানী দিয়ে। দয়া করে আল্লাহর দেয়া চোখ কান আর ব্রেনটাকে একটু পরিষ্কার করে কোরান হাদিস পাঠ করুন , আপনি নিজেই বুঝতে পারবেন তা আল্লাহর বানী কি না ।
@ভবঘুরে,
কবে কোথায় বা কোন মন্তব্যের মাধ্যমে আমাকে এত শত ভূল ধরিয়ে দিয়েছেন? এই মিথ্যার কি কোন দরকার ছিল?
@ফারুক,
খুবই ভাল লাগে শুনতে। যে কোন সূস্থ সাধারন বিবেকে তেমনই বলবে। কোন একটা গ্রন্থ নিজে পড়ে কিছু বোঝার আগেই পূর্ন বিশ্বাস এনে ফেলা কোন স্বাভাবিক বিচারে পড়ে না।
মুশকিল হল মুসলমান হবার অতি আবশ্যিক প্রি-রিকুইজিট হল কোরানে পূর্ন বিশ্বাস আনা। আপনার তত্ত্বের সাথে এই তত্বের সহাবস্থান কিভাবে সম্ভব?
আপনি যে বলেছেন তার সাথে এই শর্ত যোগ করলে সেটা মনে হয় অনেকটা এরকম দাড়ায়; প্রশ্ন করাই যেতে পারে, প্রশ্ন করতে মানা নেই। তবে তারপরেও চূড়ান্ত কথা হল বিশ্বাস আনতেই হবে। তাই না?
@আদিল মাহমুদ,
এখানেই আপনি ভুল করছেন। মুসলমান ও বিশ্বাসী দুটি ভিন্ন জিনিষ। মুসলমান হলো সেই , যে সৃষ্টিকর্তার (আল্লাহ’র) কাছে বশ্যতা স্বীকার করে। বিশ্বাস(faith) পরের ধাপ।
(যেহেতু আপনি নিজেকে আস্তিক দাবী করছেন , আমার মতে আপনি মুসলমান)
কোরান আল্লাহর বানী , কিভাবে বুঝবেন?
কাফেররা ও বলতো এগুলো আল্লাহর কালাম নয় , মুহম্মদের কালাম।
রসূল কি কোন প্রমান দেখিয়েছিলেন যে এগুলো আল্লাহ’র কালাম? না , তার কাছেও কোন প্রমান ছিল না। যারা বিশ্বাস করেছিল , তারা এই কোরানের আয়াত শুনেই বিশ্বাস করেছিল। এখন এই কোরান পড়ে যদি আপনার মনে হয় এগুলো আল্লাহর কালাম না এই গুলা মুহম্মদের কালাম , তাহলে সেটা আপনার অভিরুচি। কোন প্রমান আমার হাতে নেই , এই কোরান ছাড়া। কারন কোরান নিজেই নিজের প্রমান।
এখানেই আপনি আপনার জ্ঞান বিবেচনা ব্যাবহার করতে পারেন বা ব্যাবহার করা উচিৎও।
@ফারুক,
তাহলে আপনার মতে মুসলমান এবং বিশ্বাসী দুটো ভিন্ন ব্যাপার? তার মানে যারা ডিঈষ্ট (কোন প্রথাগত ধর্ম মানেন না, তবে এক আল্লাহ বা ইশ্বর মানেন) তারাও মুসলমান?
তাহলে সেই পরের ব্যাপার বিশ্বাসী কারা? আমি হয়ত নবীজির সময় জন্ম নিলে কোরান অক্ষরে অক্ষরে মেনে নিতাম। কারন সে আমলের পরিপ্রেক্ষিতে নিশ্চিতভাবেই কোরানের বলা নানান বানী যেগুলি আজকের জমানায় আমার কাছে বড্ড বেখাপ্পা ঠেকে তেমন বেখাপ্পা লাগত না। যদিও কূট প্রশ্ন থাকে যে কোরান পূর্নাংগ গ্রন্থ আকারে খোদ নবীজিও দেখে যাননি। তিনি নিজে কোরানে হাফেজ ছিলেন বলে শুনিনি। কোরান এতই গুরুত্বপূর্ন হলে এই অতি গুরুত্বপূর্ন দলিল তিনি নিজে কেন কম্পাইল করে যাননি এই প্রশ্ন ওঠা কি খুব স্বাভাবিক নয়?
ওনার কথা শুনে অনেকেই বিনা প্রমানেই সেগুলি আল্লাহর বানী মেনে নিয়েছিল, ঠিক। কি মেনে নিয়েছিল তার পটভূমি দেখতে হবে। যেমন, আজকে আমার কাছে স্ত্রী পেটানোর তরিকা বেখাপ্পা লাগে, সে আমলের লোকের কাছে নিশ্চয়ই লাগত না। উলটা যুগের সাপেক্ষে মানবতাবাদী বলেই হয়ত মনে হত। তেমনি আমার জন্ম ২ হাজার বছর আগের প্রাচীন ভারতের কোন নমঃশুদ্র পরিবারে জন্ম হলে মেনে নিতাম যে জন্মই আমার আজন্ম পাপ, উচ্চবর্নের ব্রাক্ষ্মনের সেবা করাই আমার পরম ধর্ম,তাতেই কল্যান নিহিত। এতে সংশয় প্রকাশও মহাপাপ।
বিনা প্রমানে ওহি হিসেবে মেনে নেবার নজির কিন্তু এই আনবিক আমলেও ঘটে। পশ্চীমের অতি উন্নত দেশেও কিছুদিন পর পর কোন উন্মাদের লোক ভূলানো কথায় কিছু লোকে তাকে আল্লাহর প্রেরিত পুরুষ ধরে নিয়ে তার কথায় সৃষ্টিছারা কান্ডকীর্তন করে। কাজেই এটা যুক্তি হিসেবে খুব শক্ত নয়।
@আদিল মাহমুদ,
এটা আমার মত না। কোরানের ৪৯:১৪ আয়াত পড়ে তো সেটাই মনে হয়।
আপনি একি ধরনের মন্তব্য বহু দিন ধরে করে যাচ্ছেন। গৌতম বুদ্ধের বানীটি মনযোগ দিয়ে পড়ুন। হাজার বছর ধরে প্রচলিত বলেই ট্রাডিশন সত্য , তা কিন্তু নয়।
“Do not put faith in traditions, even though they have been accepted for long generations and in many countries. Do not believe a thing because many repeat it. Do not accept a thing on the authority of one or another of the sages of old, nor on the ground of statements as found in the books. Never believe anything because probability is in its favor. Do not believe in that which you yourselves have imagined, thinking that a god has inspired it. Believe nothing merely on the authority of the teachers or the priests. After examination, believe that which you have tested for yourself and found reasonable, which is in conformity with your well being and that of others’.”
অবশেষে কমেন্ট করতেই হলো।
মনে করছিলাম শুধু দেখেই যাব,কিন্তু আর থাকা গেল না। আদিল ভাই,আপনার লেখার হাত আসলেই খুবই ভাল। সবটুকু এক নিঃশ্বাসে পড়লাম। আমার কিছু মতামত দিলাম। দেখেন কেমন মনে হয়।
প্রথমত, আমি পুরোপুরি নাস্তিক হতে পারি নি। ধর্মগ্রন্থে আমার বিশ্বাস নেই,আবার ঈশ্বরেও বিশ্বাস করি না। তবু কেন পুরোপুরি নাস্তিক নই?
কারন, আমার কিছু বাস্তব অভিজ্ঞতা। আমার মনে হয়,মানুষ খুবই নিঃসঙ্গ প্রাণী। কিছু কিছু খারাপ সময় তাকে একাই পাড়ি দিতে হয়। আর,দুঃখের দিনে মানুষ একজন সমব্যাথী যে চায়,এটা নিশ্চয় যুক্তি দিয়ে বোঝাতে হবে না। সেই ভয়ংকর সময়গুলোতে একজন অসীম ক্ষমতার সুপারম্যানকে সে মনে মনে কামনা করে। তার অদৃশ্য উপস্থিতি তাকে তার ক্ষমতার বাইরে যেতে সাহায্য করে।এটা কখনো যুক্তি দিয়ে খন্ডন করা যাবে না। একজন মা’র সন্তান যখন মৃত্যুপথযাত্রী,ডাক্তার যখন তার অসহায়ত্ব প্রকাশ করেছেন,তখন তিনি যদি সেই সুপারম্যানের শরনাপন্ন হন,তাকে আমরা কি বলতে পারি? যুক্তি দিয়ে বোঝাব যে ঈশ্বর নেই? তেমনি আমার মনে হয় ঈশ্বরের অবস্থান পার্টটাইম।যখনই কেউ অসহায় বোধ করে,সে আস্তিক হতেই পারে। এটা পুরোপুরি মানসিক ব্যাপার। তবে,এটা আমার মনে হয়না যুক্তি দিয়ে দুর করা যাবে। আমরা বরং ঈশ্বরের ক্ষতিকর অবস্থানের বিরুদ্ধে কলম ধরতে পারি। মানুষ যদি প্রচলিত ধর্মমতকে অভ্রান্ত মনে না করে,তাহলেই সব সমস্যার ৯০ ভাগ সমাধান হয়ে যাবে। আমার কাছে যা ভাল মনে হয়,আমি তা করব। তাতে পরকালে আগুন না কি শুল,তা আমার কাছে বিবেচ্য নয়। ঈশ্বর থাকলেও আমার খুব লাভ হবে না,আবার তিনি উধাও হয়ে গেলেও আমি একা হয়ে যাব। এই দ্বন্দ্ব মনে হয় মানুষের মনে চিরকালীন থাকবে।
@রুশদি,
আপনিও অবশেষে সিরিয়াস কথাবার্তা শুরু করলেন 🙂 ।
ধার্মিক স্কেলে আপনার এই অবস্থানকে মনে হয় অজ্ঞেয়বাদী বলা যায়। ঠিক নিশ্চিত নই যদিও। শুনেছিলাম আব্দুল্লাহ আবু সাঈদ স্যার অনেকটা এই শ্রেনীর।
ঈশ্বর মানুষের বিপদের বা দূঃখের দিনের খুব ভাল সাথী হতে পারেন। এতে ভাল মন্দ দুইই হতে পারে। শুনতে কটূ লাগবে, তবুও বাস্তব হল বাংলাদেশে কোন নাস্তিক ভিক্ষুক মনে হয় না আছে বলে। যার কিছু নেই সে ইশ্বর বিশ্বাস আঁকড়ে ধরে বাঁচতে চাইবে। আমার নিজের জীবনেও অতটা সিরিয়াস না হলেও তেমন নজির আছে।
এরকম নজির বহু আছে। আবার কেউ কেউ অলৌকিকভাবে বিপদ থেকে রক্ষা পেয়েও ঈশ্বরের নিশ্চিত প্রমান পেয়ে আস্তিক হয়ে যেতে পারে।
এগুলো আমার কাছে আর তেমন গুরুত্বপূর্ন ব্যাপার মনে হয় না। কারো ঈশ্বরে বিশ্বাস বা অবিশ্বাসে আমার আপনার কিছু এসে যায় না। তবে কেউ ইশ্বর বিশ্বাসের নামে যুক্তিহীন অমানবিক কাজকারবার চালাতে গেলে তাতে অবশ্যই যায় আসে। ধর্মগ্রন্থকে বিশুদ্ধ যুক্তির চোখে দেখতে গেলে ততটা অভ্রান্ত লাগার কোন সংগত কারন নেই।
আজকাল কিন্তু ধার্মিক মুসলমানদেরও চিন্তা চেতনে পরিবর্তন ধীরে হলেও আসছে টের পাই। ব্লগে ব্লগে ধর্মের গোঁড়ামী বিরোধী পোষ্ট দিলে সাধারন মুসলমানেরা কিন্তু অনেক সময় তেমন কিছু বলে না, সমর্থনই করে। এর আওতায় অনেক মৌলিক বিষয়েও আছে যা মনে হয় না ১০ বছর আগেও চিন্তা করা যেত।
@আদিল মাহমুদ,
আসতেই হবে। অন্ধকার দিকগুলি চোখের সামনে ঝুলিয়ে দিলে মুখে স্বীকার না করুক,মনে একটা আলোড়ন তুলবেই।সেজন্যই এধরনের লেখা আমাদের থামালে হবে না।তবে লেখাগুলো বিদ্বেষের দিকে না গেলেই ভালো হয়। কিন্তু কি করি বলুন, এত শত বছরের অন্যায়কে যখন প্রশংসায় ভরিয়ে দেওয়া হয়,তখন মনের অজান্তেই কলমে ক্ষোভ এর জন্ম নেয়।
এতদিন কি তরল কথাবার্তা বললাম? :-*
@রুশদি,
মানুষের সত্য ও মিথ্যা দুয়ের ভেতর থেকে সত্য বেছে নেবার সহজাত প্রবনতা থাকে বলেই আমার মনে হয়। হয়ত কখনো কখনো সময় লাগে। তবে দীর্ঘকাল ধরে কোন বিশাল জাতি গোষ্ঠির কাছে থেকে সত্য গোপন করা যায় না।
লেখালেখি চালাতেই হবে, অন্য পক্ষের বক্তব্যও শুনতে হবে। এরপর ছেড়ে দিতে হবে পাঠকের উপর।
আপনি তরল কথাবার্তা বলেন নাই? আমার ব্লগে আপনেরে পারলে তো অনেকে ছিড়া ফালাবে।
@আদিল মাহমুদ, আমি তো ধর্মের মত রীতিমত কঠিন বিষয় নিয়ে কথাবার্তা বলি। এইটা তরল হয় কি করে?
@রুশদি,
আপনি বাংলা শিখলেন কবে?
@রৌরব, আত্মগোপনের দিনগুলিতে শিখে নিয়েছি। :laugh: :laugh:
ঠিক যেন আমার অনুভুতির কথা বলেছেন। আসলেই এটি সুখকর কোন অভিজ্ঞতা নয়। আপনার অনেকগুল কথাই ভাল লেগেছে। বসে বসে সেগুল আবার উদ্ধৃতি করতে ইচ্ছাও করছে! সেকেন্ড লাস্ট প্যারাটায় যে বক্তব্য। তার প্র্যাক্টিক্যাল আমার উপর দিয়ে গিয়েছে! ভাল লাগল অনুভুতিগুল জেনে।
@আনাস,
হতে পারে,মনে হয় আপনিও কঠিন ধার্মিক ছিলেন দেখেই অনুভূতিগত মিল বেশী 🙂 ।
@আদিল মাহমুদ,
লেখাটি খুবই ভাল এবিষয়ে দ্বিমত নেই। আমার একটা প্রশ্ন আছে যা সবাইকে করতে চাই না।
কোরান পড়ে আমার নিম্নরূপ ধারণা হয়েছেঃ
১) কোরানে এমন কোন বাক্য আমি পাইনি যা মানুষের পক্ষে লিখতে বা চিন্তা করতে সম্ভব নয়,
২) সমস্ত কোরানটাই রাজ্য/সম্পদ বিস্তার আর প্রভাব বিস্তারের প্রেক্ষিতে রচিত,
৩) ভয় ও পুরস্কার সার্বক্ষনিক এসেছে।
আমার মনে হয়েছে কোরানটা একটি জাগতিক বস্তুবাদের তাগিদে রচিত। আপনাকে একটা প্রশ্ন করার ইচ্ছে করছে। কী ভাবে করব ভেবে পাচ্ছি না। কখনও দেখা সাক্ষাত হলে সামনা-সামনি আলাপ করা যেতে পারে। সেই অপেক্ষাতে থাকি বরং।
@নৃপেন্দ্র সরকার,
আপনার প্রশ্নগুলি খুবই মৌলিক, এই ধরনের প্রশ্ন মাথায় ঘোরার ফলেই কোরানকে আমি নিরপেক্ষ দৃষ্টিতে দেখতে চেষ্টা করেছি।
১ এবং ৩ এ মোটামুটি একমত। ২ এর কিছু ব্যাতিক্রম মনে হয় আছে। এর সাথে সাথে আমার মনে হয়েছে যে এর অনেকগুলি আয়াত আল্লাহর নিজের গুনগান নিজেই গাইছেন।
জাগতিক বস্তুবাদের তাগিদে রচিত এটাও বেশ কিছু ক্ষেত্রেই বলা যায়, বিশেষ করে আয়াতগুলি নাজিলের ঐতিহাসিক পটভুমির পরিপ্রেক্ষিতে। এটা অতি অবশ্যই খারাপ তা বলা যায় না। জাগতিক সমস্যা সমাধানের উপায় থাকলে মন্দ কি? কিছু সমাধান অবশ্যই আছে, সে আমলের পরিপ্রেক্ষিতে চিন্তা করলে মন্দ নয়, বরং যুগের তূলনায় সে সমাজে বেশ অগ্রসর বলতে হবে। যদিও আজকের দিনে ইতিহাসের অংশ।
ধন্যবাদ আপনাকে প্রশ্নগুলি করায়। আমি এককালে আপনার শহরে অনেক যেতাম, ৮/৯ বছর আগেকার কথা অবশ্য। আবার কখনো গেলে অবশ্যই দেখা হবে।
@আদিল মাহমুদ,
আমাকে প্লিজ জানবেন যদি কখনও আসেন।
আদিল মাহমুদ,
অনেক যুক্তিসঙ্গত ব্যাখ্যা দিয়ে পারপার্শ্বিক অবস্থা বিশ্লেষণ করে নিজের মনোভাব ও মনের উত্থান, উথাল পাথাল ভাবকে প্রকাশ করেছেন। ভাল লেগেছে। আপনার অনুভূতির সাথে বাংলাদেশের অনেকেরই মত মিলবে বলে আমার বিশ্বাস। মা বাবার যে চরিত্র চিত্রণ করেছেন তা-ও আমার অভিজ্ঞতায় আশেপাশে দেখি। তবে এখন বাবারাও পাল্টাচ্ছে। সংস্কারাচ্ছন্ন হচ্ছে।
@গীতা দাস,
ধন্যবাদ।
আমিও আজকাল দেশের অবস্থা যা শুনি তেমনই দেখি। আজকাল ধর্মকর্ম যা মনে হয় রীতিমত সোশাল ষ্ট্যাটাসে পরিনত হয়েছে।
নৈতিকতার উন্নতি কতটা হয়েছে এর জবাব কে দেবে?
:rose2:
ভাল লাগল!
আমারও মনে হয় কেন অন্য ধর্মের ভাল লোকেরা বেহেশ্তে যাবেনা!
মুসলমানরা কেন এত অতি মাত্রায় ভোগবাদী আর স্বার্থপর।
ধর্মে অপরের প্রতি কল্যাণমুখী কাজকর্মের দিকনির্দেশনা নাই,
যেমন আছে নামাজ আর রোজার জন্য।
ইসলাম আজ লোক দেখানো ব্যাপার,মনে হয় সবখানেই।
মিথ্যা,চুরি,ঘুষ প্রতারনা সমান তালে নামাজ,রোজা ফলাফল কি ভেবে পাইনা!
অনেক সময় মনে হয় এইসব অবৈধ কাজ করে লোকজন
ধর্মকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার কর।
মানুষের কাছে ধার্মিক উপাধির জন্য সমাজে সুবিধার জন্য।
ধর্মটা একটা বাহ্যিক খোলস!
আমাদের অন্তরের আর বাহিরের বৈপরীত্য অবাক করার মত!
@লাইজু নাহার,
ধন্যবাদ, আমার চিন্তা সূত্র সঠিক ভাবেই ধরতে পেরেছেন। এসব কথা ভেবেছিলাম আমিও লিখব। খুব বড় করতে চাইনি, আর এখনো কিছু প্রকৃত ধার্মিক যারা মন থেকে ধর্ম পালন করেন তাদের কথা মনেই করেই লিখিনি।
আজকালকার দিনে ধর্ম পালন অনেকের কাছে হয়েছে ভন্ডামীর ঢাল। যাবতীয় আকাজ কুকাজ করার পর ধর্মের কাছে আশ্রয়। সমাজে দূর্নীতি আনাচার যত বেড়েছে ধর্মের বাহ্যিক রমরমাও ততই বেড়েছে। এমন ধারা প্রচলনের জন্য আমার মতে ধর্মের মৌলিক সেই দর্শনই দায়ী; বেশী করে এবাদন বন্দেগী হজ্ব ইত্যাদী পালন করলেই আর চিন্তা নেই।
বাহ! আপনার বিশ্বাস/অবিশ্বাস নিয়ে কোন মন্তব্য না করলেও এটুকু বলব – আপনার লেখার হাত অসম্ভব রকমের ভাল। আপনি আরো লিখবেন এই প্রত্যাশা করি।
@অভিজিৎ,
সবই আপনাদের দোয়া।
আমার বিশ্বাস অবিশ্বাস নিয়ে মন্তব্য করলে তো গতি ছিল না, বিশ্বাসের মান রাখতে নাংগা তলোয়ার হাতে আপনার খোঁযে বের হয়ে যেতে হত 😀 ।
আপনার মতো এ অভিজ্ঞতা মনে হয় বাংলাদেশের শিক্ষিত নেট ব্যবহার করতে পারে এরকম মধ্যবিত্ত মুসলমান ফ্যামিলির সন্তানই অতিবাহিত হয়েছে আজকাল আপনার ভার্সিটি লাইফে হঠাৎ ধর্মের দিকের ঝুঁকে পড়বার কারণ কি ছিল
@কালো ওঝা,
ভার্সিটি লাইফে ব্যাক্তিগত কিছু কারনে ধর্মের প্রতি খুব আকৃষ্ট হয়ে গেছিলাম, অমন অনেকেরই হয়। জীবনে ঘাত প্রতিঘাত বা প্রত্যাশিত প্রাপ্তিতে এমন হতেই পারে।