বাঙালি বড় বিস্মৃতিপরায়ণ জাতি। নিজেদের ইতিহাস ভুলে বসে থাকে। কখনো বিকৃতও করে অহর্নিশি। বাঙালি বিতর্কে জড়িয়ে পড়ে মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের সংখ্যা নিয়ে, স্বাধীনতার ঘোষক নিয়ে, শেখ মুজিবের অবদান নিয়ে… এমন কোন বিষয় নেই যা নিয়ে বাঙালি বিতর্ক করে না। সেই বিস্মৃতিপরায়ণ জাতি হিসেবে আমরা একুশে ফেব্রুয়ারি পালন করি, উল্লাসে একে অভিহিত করি ‘আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস’ হিসেবে, কিন্তু আমরা সত্যই কি জানি একুশে ফেব্রুয়ারি দিনটির আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা হবার ইতিহাসটুকু?
ইন্টারনেটে সার্চ করুন। এ নিয়ে কোন তথ্যই আপনি পাবেন না। এমনকি আন্তজার্তিক ভাবে পালিত ইউনেস্কোর পোষ্টার লিফলেট কিংবা নিউজ লেটারে কোথাও বাংলাদেশের ১৯৫২ সনের এই আত্মত্যাগের সংবাদটি আপনার চোখে পড়বে না। আপনি জানবেন না কিভাবে ২১শে ফেব্রুয়ারির এই দিনটি কোন যাদুবলে হঠাৎ আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হয়ে গেল ২০০০ সাল থেকে। জানার কোন উপায় নেই – কারা ছিলো এর পেছনে। ব্যতিক্রম বোধ হয় শুধু মুক্তমনার এই লেখাটি। হাসান মাহমুদের (ফতেমোল্লার) The Makers of History: International Mother Language Day নামের এই লেখায় ধারাবাহিকভাবে তুলে ধরা হয়েছে কি অক্লান্ত পরিশ্রম করে দু’জন পরবাসী বাঙালি একুশে ফেব্রুয়ারিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে পরিণত করেছিলেন। ছোট্ট একটা লেখা ইংরেজীতে। কিন্তু অসামান্য দলিল। দলিলটি হারিয়ে যাবার আগেই আমার মনে হল একুশে ফেব্রুয়ারির এই দিনে সেই গৌরবময় উপাখ্যানটুকু বাংলায় বয়ান করা যাক।
বিগত নব্বই শতকের শেষ দিক। সবকিছুর পুরোধা ছিলেন রফিক (রফিকুল ইসলাম) নামের এক ক্যানাডা নিবাসী বাঙালি। চেহারা ছবিতে অসাধারাণ কিছু মনে হবে না দেখলে। চিরায়ত বাঙালি চেহারা, আলাদা কোন বিশেষত্ব চোখে মুখে নেই। কিন্তু যে কেউ একটু কথা বললেই বুঝবেন যে সাধারণ এই লোকটির মধ্যে লুকিয়ে আছে এক অমিত শক্তির স্ফুরণ। একসময় মুক্তিযুদ্ধ করেছেন, দেশ-মাতৃকাকে মুক্ত করেছেন না-পাক বাহিনীর হাত থেকে। তো এই লোকটি একুশে ফেব্রুয়ারিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে পরিণত করার সম্মুখ যোদ্ধা হবেন না তো কে হবেন?
১৯৫২ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ১৪৪ ধারা ভেঙ্গে এক রফিক পুলিশের গুলিতে প্রাণ দিয়ে একুশে ফেব্রুয়া্রিকে অমর করেছিলেন। তার ৪৬ বছর পরে আরেকজন রফিক সুদূর কানাডায় বসে আরেক দুঃসাহসী কাজ করে ফেললেন ।
১) ১৯৯৮ সালের ৯ই জানুয়ারী রফিক জাতিসংঘের তৎকালীন জেনারেল সেক্রেটারী কফি আনানকে একটি চিঠি লেখেন। সেই চিঠিতে রফিক ১৯৫২ সালে ভাষা শহীদদের অবদানের কথা উল্লেখ করে কফি আনানকে প্রস্তাব করেন ২১শে ফেব্রুয়ারিকে ‘মাতৃভাষা দিবস’হিসেবে যেন আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃতি দেয়া হয়।
২) সে সময় সেক্রেটারী জেনারেলের প্রধান তথ্য কর্মচারী হিসেবে কর্মরত হাসান ফেরদৌসের (যিনি একজন সাহিত্যিক হিসেবেও পরিচিত) নজরে এ চিঠিটি আসে। তিনি ১৯৯৮ সালের ২০ শে জানুয়ারী রফিককে অনুরোধ করেন তিনি যেন জাতিসংঘের অন্য কোন সদস্য রাষ্ট্রের কারো কাছ থেকে একই ধরনের প্রস্তাব আনার ব্যবস্থা করেন।
৩) সেই উপদেশ মোতাবেক রফিক তার সহযোদ্ধা আব্দুস সালামকে সাথে নিয়ে “এ গ্রুপ অব মাদার ল্যাংগুয়েজ অফ দ্যা ওর্য়াল্ড” নামে একটি সংগঠন দাঁড় করান। এতে একজন ইংরেজীভাষী, একজন জার্মানভাষী, একজন ক্যান্টোনিজভাষী, একজন কাচ্চিভাষী সদস্য ছিলেন। তারা আবারো কফি আনানকে “এ গ্রুপ অব মাদার ল্যাংগুয়েজ অফ দ্যা ওর্য়াল্ড”-এর পক্ষ থেকে একটি চিঠি লেখেন, এবং চিঠির একটি কপি ইউএনওর ক্যানাডিয়ান এম্বাসেডর ডেভিড ফাওলারের কাছেও প্রেরণ করেন।
৪) এর মধ্যে একটি বছর পার হয়ে গেলো। ১৯৯৯ সালের মাঝামাঝি সময়ে হাসান ফেরদৌস সাহেব রফিক এবং সালামকে উপদেশ দেন ইউনেস্কোর ভাষা বিভাগের জোশেফ পডের সাথে দেখা করতে। তারা জোশেফের সাথে দেখা করার পর জোশেফ তাদের উপদেশ দেন ইউনেস্কোর আনা মারিয়ার সাথে দেখা করতে। এই আনা মারিয়া নামের এই ভদ্রমহিলাকে আমরা কৃতজ্ঞতাভরে স্মরণ করবো, কারণ এই ভদ্রমহিলাই রফিক-সালামের কাজকে অনেক সহজ করে দেন। আনা মারিয়া রফিক-সালামের কথা মন দিয়ে শোনেন এবং তারপর পরামর্শ দেন তাদের প্রস্তাব ৫ টি সদস্য দেশ – ক্যানাডা, ভারত, হাঙ্গেরি, ফিনল্যান্ড এবং বাংলাদেশ দ্বারা আনীত হতে হবে।
৫) সে সময় বাংলাদেশের শিক্ষামন্ত্রী এম এ সাদেক এবং শিক্ষা সচিব কাজী রকিবুদ্দিন, অধ্যাপক কফিলউদ্দিন আহমেদ, মশিউর রহমান (প্রধানমন্ত্রীর সেক্রেটারিয়েটের তৎকালীন ডিরেক্টর), সৈয়দ মোজাম্মেল আলি (ফ্রান্সে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত), ইকতিয়ার চৌধুরী (কাউন্সিলর), তোজাম্মেল হক (ইউনেস্কোর সেক্রেটারি জেনেরালের শীর্ষ উপদেষ্টা) সহ অন্য অনেকেই জড়িত হয়ে পড়েন।তারা দিন রাত ধরে পরিশ্রম করেন আরো ২৯ টি দেশকে প্রস্তাবটির স্বপক্ষে সমর্থন আদায়ে। অন্যান্য বাংলাদেশী এবং প্রবাসীদের কাছে ব্যাপারটা অগোচরেই ছিল- পর্দার অন্তরালে কি দুঃসাহসিক নাটক চলছিলো সে সময়। এই উচ্চাভিলাসী প্রজেক্টের সাথে জড়িত ব্যক্তিরা এবং ক্যানাডার ভ্যাঙ্কুভার শহরের জনা কয়েক লোক কেবল ব্যাপারটা জানেন, এবং বুকে আশা নিয়ে তারা সেসময় স্বপ্নের জাল বুনে চলেছেন প্রতিদিন।
৬) ১৯৯৯ সালের ৯ ই সেপ্টেম্বর। ইউনেস্কোর প্রস্তাব উত্থাপনের শেষ দিন। এখনো প্রস্তাব এসে পৌঁছায়নি। ওদিকে রফিক সালামেরা ব্যাপারটি নিয়ে বিনিদ্র রজনী অতিক্রম করে চলেছেন। টেলিফোনের সামনে বসে আছেন, কখনো চোখ রাখছেন ইমেইলে। আসলে প্রস্তাবটির পেছনে প্রধাণমন্ত্রীর একটি সই বাকি ছিলো। আর প্রধানমন্ত্রী তখন পার্লামেন্টে। পার্লামেন্টের সময়সূচীর পরে সই করতে করতে প্রস্তাব উত্থাপনের সময়সীমা পার হয়ে যাবে। সেটা আর সময় মত ইউনেস্কো পৌঁছুবে না। সব পরিশ্রম জলেই যাবে বোধ হয়।
৭) প্রধানমন্ত্রীকে ফোন করে অনুরোধ করা হলো তিনি যেন প্রস্তাবটি সই করে ফ্যাক্স করে দেন ইউনেস্কোর দপ্তরে। অফিসের সময়সীমা শেষ হবার মাত্র একঘণ্টা আগে ফ্যাক্সবার্তা ইউনেস্কোর অফিসে এসে পৌঁছুলো।
৮) ১৬ই নভেম্বর কোন এক অজ্ঞাত কারণে (সময়াভাবে ?) বহুল প্রতাশিত প্রস্তাবটি ইউনেস্কোর সভায় উত্থাপন করা হলো না। রফিক সালামেরা আরো একটি হতাশ দিন পার করলেন।
৯) পর দিন – ১৭ই নভেম্বর, ১৯৯৯। এক ঐতিহাসিক দিন। প্রস্তাব উত্থাপন করা হলো সভার প্রথমেই। ১৮৮ টি দেশ এতে সাথে সাথেই সমর্থন জানালো। কোন দেশই এর বিরোধিতা করলোনা, এমনকি খোদ পাকিস্তানও নয়। সর্বসম্মতিক্রমে একুশে ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে গৃহীত হলো ইউনেস্কোর সভায়।
এভাবেই একুশে ফেব্রুয়ারি একটি আন্তর্জাতিক দিনে পরিণত হলো। কিন্তু এতো কিছুর পরেও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের মূল উদ্যোক্তা রফিক এবং সালাম সবার কাছে অচেনাই রয়ে গেলেন। তাদের ত্যাগ তিতিক্ষা আর পরিশ্রম অজ্ঞাতই থেকে গেল। কেউ জানলো না কি নিঃসীম উৎকন্ঠা আর আশায় পার করেছিলেন তারা ১৯৯৯ সালের নভেম্বর মাসের শেষ ক’টি বিনিদ্র রজনী। কেউ জানলো না, কিভাবে সমর্থন যুগে চলেছিলেন তাদের স্ত্রী, পরিবার, এবং কাছের বন্ধু বান্ধবেরা। কত অজ্ঞাতকূলশীলেরাই বাংলা একাডেমি পদক, একুশে পদক পেয়ে যান এই অভাগার দেশে আর রফিক সালামেরা উপেক্ষিতই থেকে যান।
আমি এই লেখার মাধ্যমে মুক্তমনার পক্ষ থেকে রফিক সালাম নামে কানাডা নিবাসী দুই ভাষা সৈনিকের একুশে পদক প্রস্তাব করছি।
বরাক উপত্যকায় ভাষা আন্দোলন
Language Movement Day – Wikipedia
https://en.wikipedia.org/wiki/Language_Movement_Day
Language Movement Day or Language Revolution Day or Bengali Language Movement Day … Official name, Bengali: ভাষা আন্দোলন দিবস (Bhasha Andolôn Dibôs) …. Bengalis in Assam and north-east India observe 19 May as Language …
https://m.youtube.com/watch?v=OuAE0oA-hz8
ভাষা আন্দোলন
১৯৫২ সালে, পূর্ব পাকিস্তানের বাঙালী ছাত্র জাতীয় ভাষা হিসেবে উর্দু ঘোষণা করার প্রতিবাদে পাকিস্তান সরকারের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়ে ওঠে। পাকিস্তানের সংখ্যাগরিষ্ঠ নাগরিক ছিল বাঙালী ,মোট নাগরিকের (১৯৫২ এর হিসাবে) প্রায় ৫৪%। এর প্রতিবাদে বিভিন্ন ছাত্র নিজেদের জন্য এবং ভবিষ্যত প্রজন্মের জন্য বাংলা ভাষা রক্ষার জন্য জীবন দান করেন। সকাল নয়টায়, ছাত্ররা ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গনে জড়ো হতে শুরু করে। সশস্ত্র পুলিশ বেষ্টিত ক্যাম্পাসে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য এবং অন্যান্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। সোয়া এগারোটার দিকে, ছাত্ররা বিশ্ববিদ্যালয় গেট জড়ো হয়ে প্রতিবন্ধকতা ভাঙার চেষ্টা করে। ছাত্রদের একটি দল ঢাকা মেডিকেল কলেজের দিকে দৌড় দেয় এবং বাকিরা পুলিশ পরিবেষ্টিত ক্যাম্পাসে মিছিল করে। উপাচার্য পুলিশকে গুলি চালানো বন্ধ এবং ছাত্রদেরকে এলাকা ছেড়ে চলে যাওয়ার আদেশ দেন। যাইহোক, ছাত্ররা চলে যাবার সময়, পুলিশ ১৪৪ ধারা লঙ্ঘনের জন্য কিছু ছাত্রকে গ্রেফতার করে। গ্রেফতারের সংবাদ পেয়ে বিক্ষুব্ধ ছাত্ররা পূর্ব বাংলা গণপরিষদ অবরোধ করে এবং গণপরিষদে তাদের প্রস্তাব উপস্থাপনের দাবি জানায়। ছাত্রদের একটি দল বিল্ডিং মধ্যে দ্রুত ঢোকার চেষ্টাকালে পুলিশ গুলি চালায় এবং তাতে সালাম, রফিক, বরকত, জব্বার সহ অনেক ছাত্র নিহত হয়। হত্যাকাণ্ডের সংবাদ ছড়িয়ে পড়লে, সারা শহর জুড়ে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। দোকানপাট, অফিস ও গনপরিবহন বন্ধ করে দেওয়া হয় এবং ধর্মঘট শুরু হয়। আইনসভায়, মনোরঞ্জন ধর, বসন্তকুমার দাস, শামসুদ্দিন আহমেদ এবং ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত সহ ছয় বিধায়ক মুখ্যমন্ত্রী নুরুল আমিনকে আহত ছাত্রদের দেখতে হাসপাতালে দেখতে যাওয়ার দাবি জানান এবং শোকের চিহ্ন হিসেবে গণপরিষদ মুলতবির দাবি করেন।মাওলানা আবদুর রশীদ তর্কবাগীশ, শরফুদ্দীন আহমেদ, শামসুদ্দীন আহমেদ খন্দকার এবং মশিউদ্দিন আহমেদ সহ সরকারি দলের কিছু সদস্য সমর্থন দেন।তবে নুরুল আমিন এ প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেন।
সংবিধান সংশোধন
৭ মে ১৯৫৪ সালে, গণপরিষদে মুসলিম লীগের সমর্থনে বাংলা আনুষ্ঠানিক রাষ্ট্রভাষার মর্যাদা লাভ করে। ২৯ ফেব্রুয়ারি ১৯৫৬ সালে বাংলা পাকিস্তানের দ্বিতীয় রাষ্ট্রভাষা হিসাবে স্বীকৃতি পায় এবং সংবিধানের অনুচ্ছেদ ২১৪ (১) পুর্নলিখিত হয় এভাবে “পাকিস্তানের রাষ্ট্র ভাষা হবে উর্দু এবং বাংলা”।
তবে, আইয়ুব খানের নেতৃত্বে গঠিত সামরিক সরকার একমাত্র জাতীয় ভাষা হিসেবে উর্দু পুনরায় স্থাপন করার চেষ্টা চালায়। ৬ জানুয়ারি ১৯৫৯ সালে, সামরিক সরকার একটি সরকারী বিবৃতি জারি করে এবং ১৯৫৬ সালের সংবিধানের নীতি ” দুই রাষ্ট্র ভাষা” সমর্থন সরকারি দৃষ্টিভঙ্গি পুনর্বহাল করে।
আমার হাজার সালাম সেই রফিক সালাম ভাইয়ের প্রতি @@@@
অভিজিৎ ভাইয়া,পোস্ট টা লেখার ঠিক ৫ বছর পর আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা সম্পর্কে জানে গুগলে সার্চ দিয়ে আপনার লেখাটা পাই। জানিনা এতদিনে রফিক সালাম তাদের অধিকার টুকু পাইছে কিনা। যদি না পায়,, তবে আমরা কি পারিনা তাদেরকে সবার সামনে উন্মোচন করতে? এটা তো আমাদের নতুন জেনারেশনের দায়িত্ব।
আমি এই লেখার মাধ্যমে মুক্তমনার পক্ষ থেকে রফিক সালাম নামে কানাডা নিবাসী দুই ভাষা সৈনিকের একুশে পদক প্রস্তাব করছি।
এ কর্মযজ্ঞে জড়িতদের স্যালুট জানাই। তাঁদের অবদানের রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি দাবি করি। ইতিহাসের পাঠ্যপুস্তকেও তাঁদের অন্তর্ভূক্তি দাবি করছি। ধন্যবাদ অভিজিৎ দা’কে ইস্যুটি উত্থানের জন্য।
“এ গ্রুপ অব মাদার ল্যাংগুয়েজ অফ দ্যা ওর্য়াল্ড” এর সৈনিক রফিক এবং আব্দুস সালামকে সেল্যুট। (Y)
গৌরবের দিনটি নতুন করে মহিমান্বিত করার জন্য অভি দা’কে ধন্যবাদ।
অভিজিৎ দা অসাধারন একটি লেখা। লেখা নিয়ে বলার কিছুই নাই। আমি এর আগে জানতাম আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা করার জন্য অনেকের অবদান আছে বিশেষ করে প্রবাসি বাঙ্গালিদের কিন্তু ঠিক কারা ছিলেন এর নেপথ্যে সেটা জানা ছিল না।আমার মনে হয় এই অথ্য সমৃদ্ধ লেখাটা অনেকে সামনে আনা প্রয়োজন।তাহলে আমাদের জানা অজানা অনেক কিছু জানতে পারবো। যেটা উপকারে আসবে সব সময়।
অভিজিৎ দা দুঃখিত আপনার অনুমতি না নিয়ে আমি আপনার লেখাটি একটি পেজে পেস্ট করেছি। বলা যায় অনেক টা উত্তেজনার বসে।
(F) (F) (F) (F) (F)
পূর্ণ সমর্থন জানাচ্ছি।
লেখাটি প্রথম পাতায় নিয়ে আসার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ। সেই দুই ভাষা সৈনিকের প্রতি জানাই বিনম্র শ্রদ্ধা ও কৃতজ্ঞতা।
অনেক ধন্যবাদ, অভিজিৎদা। এমন নয় লেখাটিতে যে ইতিহাস আছে, তা নিয়ে লেখা হয়নি আগে। তবু আত্মবিস্মৃত এই জাতিকে ফি বছর মনে করিয়ে দেয়া জরুরি!
এমন একটা অতি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় এতগুলো বছর পর আজ জানতে পারলাম। অসংখ্য ধন্যবাদ অভিদাকে। বিষয়টির গুরুত্ব বিবেচনায় ফেসবুকে শেয়ার করলাম জনমত সৃষ্টির লক্ষ্যে।
ধন্যবাদ অভিজিৎ স্যার কে সঠিক ইতিহাসটা তোলে ধরার জন্য।
(Y) 🙂
লেখাটা পড়ে কেমন বিচিত্র অনুভুতি হচ্ছে।কখনোই এ নিয়ে জানার কেন জানার আগ্রহ হয়নি?
সত্যই
ফেসবুকে আপনার শেয়ার করা লিংক থেকে লেখাটা পড়লাম।অসংখ্য ধন্যবাদ অভিজিত দা।রফিক সালাম নামে কানাডা নিবাসী দুই ভাষা সৈনিকের জন্য নত মস্তকে শ্রদ্ধা নিবেদন করছি।
লেখাটা প্রথম পেজে আনার জন্য ধন্যবাদ। আমারতো মনে হয় লেখাটার লিংক সাইডবারে ঝুলিয়ে দেয়া যায়, কি বলেন? তাহলে প্রতিদিন যত হাজার মানুষ মুক্তমনায় ঢুকে তাদের অনেকেই লিংকটা দেখে এই কৃতি মানুষদের কথা জানবে।
ফতেমোল্লার লেখাটি অনেক আগে পড়েছিলাম। এই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি আবার সামনে তুলে আনার জন্য ধন্যবাদ। আপনার প্রস্তাবে শতভাগ সমর্থন!!
হাসান ফেরদৌস নামে নিউইয়র্ক প্রবাসী একজন প্রাবন্ধিক ও কলাম লেখক প্রথম আলোয় ‘খোলা চোখে’ শিরোনামে উপসম্পাদকীয় লিখে থাকেন। আপনার উল্লেখিত হাসান ফেরদৌস আর ইনি কি একই ব্যক্তি? যদি তারা একই ব্যক্তি হন, তাহলে হয়তো এই সম্পর্কিত প্রচারে সাহায্য করতে পারেন।
অনেকেই হয়ত জানেন যে, আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের অন্যতম রূপকার – রফিকুল ইসলাম দীর্ঘদিন ক্যান্সারের সাথে লড়াই করে অবশেষে দেহান্তরিত হয়েছেন কিছুদিন আগে। তার স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা রইলো।
২১শে ফেব্রুয়ারি উপলক্ষে লেখাটিকে সামনে আনা হল।
@অভিদা,
আমাদের এলাকার এক বড়ভাইয়ের দুলাভাই ছিলেন রফিকুল ইসলাম। উনার কাছেই খবরাখবর পেতাম। কেমোর পরে মাঝেখানে প্রায় সুস্থই ছিলেন। হঠাৎ করেই আবার অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। কিন্তু এবারে আর ঘুরে দাঁড়াতে পারলেন না।
তার প্রতি শ্রদ্ধা জানাই।
দারুন ! এই তথ্য আগে জানা ছিল না, শুধু ২১-এ ফেব্রুয়ারী জানতাম , ১৯৫২ সালে কি হয়েছিল জানতাম
“আমার সোনার বাংলা আমি তোমায় ভালবাসি” এ কতাটি কি ভুলতে পারি,
আমি সংগঠন “A group of mother language of the world” কে ধন্যবাদ নাই, যারা এ টি গড়ে
তুলেন .
দাদা অেনক ধন্য্বাদ
আপনাকে অনেক ধন্যবাদ অভিজিৎ দা।
এ ব্যাপারে কিছুই জানা ছিলনা।
আমিও তাদের জন্য সম্মাননা কামনা করছি।
আহমদ ছফার একটি লেখায় আমি প্রথম তাদের দুজনের নাম জানতে পারি।
সরকারের কাছে যাওয়ার আগে মিডিয়াতে (পত্রিকা এবং ইলেক্ট্রনিক) এই বিষয় নিয়ে কিছুটা লেখালেখি ও আলোচনা করা দরকার। আগে দরকার সব মানুষের জানা। তখন সরকার এমনিতেই পদকের জন্য বিবেচনা করবে। মুল শ্লোগানের সাথে সহমত।
@স্বাধীন,
আপনার সাথে একমত। মিডিয়াতে এ নিয়ে লেখালিখি করা জরুরী। কিন্তু আমার খুব অবাক লাগছে যে, একুশে ফেব্রুয়ারিকে সেই ২০০০ সাল থেকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা হিসেবে পালন করা হলেও এর সঠিক ইতিহাসটি কোথাও লিপিবদ্ধ করার উদ্যোগ কেউ বোধ করেননি। এমনকি বাংলা ব্লগগুলোতেও এ নিয়ে কোন লেখা নেই। সেজন্যই হাসান মাহমুদের আগের ইংরেজী লেখাটিকে ভিত্তি ধরে একটা লেখা দাঁড় করানোর চেষ্টা করলাম। আমার আবছা ভাবে মনে পড়ছে দৈনিক সমকালে বছর কয়েক আগে এ বিষয়ে খুব ছোট করে আলোকপাত করা হয়েছিলো। কিন্তু বাংলাদেশের পত্রিকাগুলোর সমস্যা হল, বছর খানেক আগের কোন লেখা আর সার্চ করে পাওয়া যায় না, এমনকি লিঙ্কও কাজ করে না। কাজেই আমার লেখাটির বাইরে মূল মিডিয়া থেকে কোন লেখা পেলে এখানে আমাদের অবগত করার অনুরোধ জানানো হচ্ছে।
তবে মূল মিডিয়ায় এ নিয়ে লেখা না হলেও হতাশ হবার কিছু নেই। আস্তে আস্তে মানুষ ব্যাপারটি জানছে। আমি শুনেছি ইকতিয়ার চৌধুরী (তৎকালীন কাউন্সিলর, যার কথা আমি মূল লেখায় উল্লেখ করেছি) একটি বই সম্প্রতি লিখেছেন, আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের বাকি ইতিহাস (আগামী প্রকাশনী) নামে। সেটাতে শুনেছি ধারাবাহিক ইতিহাসগুলো বর্ণিত হয়েছে। বইটি কারো সংগ্রহে থাকলে ওটিকে রেফারেন্স হিসেবে ব্যবহার করতে পারেন। আর স্বাধীন তানভী সহ যারা উইকিযুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছেন, তারা অন্ততঃ উইকিতে এটার একটা ভুক্তি নিয়ে কাজ শুরু করতে পারেন। সেখানে এখনো কানাডার দুই প্রবাসী বাঙালি – রফিকুল ইসলাম এবং আব্দুস সালাম সহ মূল উদ্যোক্তাদের অবদানের কোন উল্লেখ নেই।
we can apply for these 2 great banhladeshi by using the apply form for ekushey podok which can download from the website of the Ministry of Information of Bangladesh.
@arefin,
গুরুত্বপূর্ণ এই তথ্যটি জানানোর জন্য ধন্যবাদ। আমি কিন্তু Ministry of Information of Bangladesh ওয়েব সাইট থেকে একুশে পদকের কোন ফর্ম খুঁজে পেলাম না। তবে ন্যাশনাল ফিল্ম এওয়ার্ডের এপ্লিকেশন ফর্ম আছে অবশ্য।
কারো কি একুশে পদকের ফর্ম ডাউনলোডের লিঙ্ক জানা আছে?
পূর্ণ সহমত।
বিষয়টা যে ইন্টারনেটে ছিলো না, তাইতো জানা ছিলো না ! সাংঘাতিক ব্যাপার ! অত্যন্ত ভালো কাজ হয়েছে অভিজিৎ দা। অনেক ধন্যবাদ। আর হাসান মাহমুদ ভাই’র প্রতি কৃতজ্ঞতা।
“আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস”কিভাবে সম্ভব হোল আসলেই জানতামনা।
বাঙ্গালী হিসেবে আমাদের অর্জনের খাতায় এ এক বিরাট পাওয়া!
কে বলে আমাদের গর্ব করার কিছু নেই।
এই দুই কানাডাবাসী আমাদের গৌরব!
তাদের জাতীয় মর্যাদা দেয়া হোক!
অভিজিতদা আন্তরিক ধন্যবাদ লেখাটার জন্য!
খুব দরকার ছিল লেখাটা বাংলা করা। অভিজিৎদাকে অনেক ধন্যবাদ।
“মুক্তমনার পক্ষ থেকে রফিক সালাম নামে কানাডা নিবাসী দুই ভাষা সৈনিকের একুশে পদক প্রস্তাব” কে সমর্থন করছি।
বিষয়টি এর গভীরে জানা ছিল না। আসলেই এই দুইজনের অবদানের জন্য আমরা কোন স্বীকৃতি দিতে পারিনি এটা জাতীয় লজ্জার বিষয়। স্বীকৃতি তো দূরে থাক নামটাও জানি না। মিডিয়ার উতসাহ কেবল কোথায় রাজনীতির গন্ধ আছে, কোন পক্ষকে ঘায়েল করা যায় আর কোন পক্ষকে তৈল মর্দন করা যায় এমন বিষয়ে।
যে জাতি নিজের গর্বের বিষয় কি তা ধরতে পারে না, কৃতি মানুষদের মান দিতে পারে না সে জাতি সম্পর্কে খুব উচ্চাশা করা যায় না।
তবে আমি ইউনেষ্কো জাতিসংঘ এদের ওয়েব সাইটে এই আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস সম্পর্কে আশা করেছিলাম সামান্য কিছু হলেও ইতিহাসটা থাকবে। ক’বছর আগে খুজে কিছুই পাইনি। কিভাবে এই দিবস হল, কারা কবে কোথায় কিভাবে নিজের মায়ের ভাষার মর্যাদা রক্ষা করতে বুকের রক্ত ঢেলে দিয়েছিলেন এসবেই কিছুই পাইনি। এই ইতিহাস সেখানে থাকা দরকার।
@আদিল মাহমুদ,
১২ শে ফেব্রুয়ারি, ২৬ শে মার্চ, ১৬ই ডিসেম্বর এই ঐতিহাসিক দিনগুলোতে মুক্তমনা আপনার কাছ থেকে সব সময়ই স্পেশাল লেখা আশা করে। আপনি তো মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে ভালই লেখালিখি শুরু করেছিলেন, হঠাৎ বন্ধ করে দিলেন কেন? লিখতে থাকুন। আপনাদের অবদানেই গড়ে উঠবে মুক্তিযুদ্ধের শক্তিশালী আর্কাইভ।
@অভিজিৎ,
একটা আশা ছিল এই ২১ শে ফেব্রুয়ারীতে একটা ভাল জিনিস দেব। ৫২র একুশে ফেব্রুয়ারী এবং তার আশে পাশের কদিনের আমার বাবার লেখা ডায়েরী ছিল, ছোটবেলায় পড়েছিলাম। ওনার বেশ কিছু লেখা আছে সে আমলের, তবে এই সিরিজটার ঐতিহাসিক মূল্য হত ভাল। বেশ প্রাঞ্জল ভাষায় ঘটনাগুলি লেখা ছিল। ওই ভল্যুমটা আপাতত হাতের কাছে পাওয়া যাছে না, তবে ভবিষ্যতে কখনো পাওয়া গেলে অবশ্যই ছাপিয়ে দেব।
সহমত। একটা স্লোগান খুব মনে পড়ছে!! ইকটু পরিবর্তন করে দিলাম,
এক রফিক লোকান্তরে; লক্ষ রফিক ঘরে ঘরে!!!
অভিদা,
বাঙালি হিসেবে আমাদের আত্মপরিচয়টুকুও আমরা মুছে ফেলতে চলেছি। এই ফেব্রুয়ারীতেই ফারুক হত্যার আগের দিন আমি রাজশাহীর কেন্দ্রীয় শহীদ মীনারে আল-বদর নিজামির ব্যানার দেখেছি। ফারুককে হত্যা করার কারণ -এই নিরীহ ছেলেটি যুদ্ধাপরাধের বিচার সংক্রান্ত একটা পোস্টার তার রুমে লাগিয়েছিল এবং এ নিয়ে শিবিরের হল শাখার বর্বর সভাপতির সাথে তার তর্ক হয়েছিল খুন হবার ২দিন আগে। এগুলো বিশ্ববিদ্যালয়ের এক বন্ধুর কাছে শোনা।
একুশের এই অবমাননার ফলে নিজের গায়ে থু থু ছিটিয়েছি। অপরাধীকে রক্ষা করা ছাড়া আইনের কোন কাজ নেই। আমরা পড়েছি প্যাঁচে। ওই ব্যানারটা পোড়ালে শিবির পরদিন আমাকে খুন করে রেখে যেত এবং কোন বিচারই হোত না! আবার এদের বিরুদ্ধে অস্ত্র ধরলেও শ্রীঘর! এভাবে একটা জাতি মৃত্যুর কাছে চলে যায়। সাংস্কৃতিক অঙ্গনে আমাদের চেয়ে নির্লজ্জ জাতি ক’টা আছে। রাজশাহীতে আমাদের কলেজের অনুষ্ঠানে এক বিশিষ্ট উচ্চাঙ্গসঙ্গীত সাধিকা তার ভ্রাতুষ্পুত্রীকে দিয়ে লারেলাপ্পা গান করালেন, যে কিনা আবার বিশ্বভারতীর ফার্স্টকেলাস! আমাদের প্রজন্মের প্রায় সবাই রবীন্দ্রনাথ ও রবীন্দ্রসঙ্গীত ঘৃণা করে। নজরুল শুনলে পালায়। হেমন্ত-কিশোরের গান শুনতে হয় হেডফোন দিয়ে! পল্লীগান ড্রামস ছাড়া আমাদের ভালো লাগে না, আখড়ার বাউলদের চেয়েও ভালো লাগে নকলনবীস শিল্পীদের! ফিউসনের নামে ইংরেজি সুরে ভুল উচ্চারণে বেংলিশ গানে বাজার সয়লাব! আমরা গাই
“দূড়ে তুমি দাঁড়িয়ে
সাগড়ের জলে পা ভিজিয়ে,
কাছে যেতে পাড়ি না,বলতে আজ পাড়ি না”… ইত্যাদি।
যতদিন না আমরা জাতি হিসেবে আত্মমর্যাদা ফিরে পাচ্ছি, যতদিন না আমরা সঠিক উচ্চারণে বাংলা গান গাইতে পারছি – ততদিন এ সবই ফক্কীকা,বেকার – ভণ্ডামি। মুক্তমনার তরুণদের বলি, চলো লড়ি মাতৃভাষার অপমানের বিরুদ্ধে। যারা ‘র’ এর জায়গায় ‘ড়’ উচ্চারণ করে তাদের ঠেঙিয়ে ঠিক করি! :guli:
@আগন্তুক,
বাঙালি ঠ্যকায় না পড়লে গা ঝাড়ে না (আমি নিজেও আমার গায়ে তেলাপোকা উঠলে, যতক্ষন বেশি ঝামেলা না পাকাচ্ছে ততক্ষন কিছুই করিনা!!) তবে তেলাপোকার গুষ্টি অতিরিক্ত বাড়লে তাদের বিষ দিতে বাঙালি কার্পন্য করেনি কখনো। শুধু ইকটু দেরী এই যা। তবে জামাতের সময় শেষ হয়ে আসছে, তারা বেশি লাফাচ্ছে (সমস্যা শুধু একটাই, তেলাপোকারা ডাইনোসরের যুগ থেকেই বেঁচে আছে, নিশ্চিহ্ন হয় নি, নিশ্চিহ্ন করা যায় নি। ক্ষনিকের জন্য দমন করা ছাড়া তাদের আর কিছুই হয়না।)
রবীন্দ্রনাথ ও নজরুল নতুন প্রজন্ম শোনেনা এটা পুরা ফালতু কথা। আমি নিজেও শুনি, আমার অনেক অনেক বন্ধু আছে তারাও শোনে। বন্ধুদিবসে বন্ধুকে ইংরেজি গান উৎসর্গ না করে “বন্ধু তোমার পথের সাথি কে চিনে নিও” গান উৎসর্গ করে(মোবাইল কোম্পানীর গান পাঠানোর সিস্টেমের কথা বললাম)। এরকম একটা গ্রুপ সবসময়ই থাকবে যারা আমাদের ঠিক বিপরিত। এটা অস্বাভাবিক না। এটা নিয়ে ভয় পাবার কিছু নেই, উলটো আমাদের ডিস্কো গায়করাই ধীরে ধীরে উচ্চারন বদলে নেবে(এরকম হচ্ছেও, তবে এখনো একটু ধীরে)।
আর পল্লী গান বা রবীন্দ্রসংগীত চিরকাল এক চেহারায় থেকে যাবে তা আশা করাটা বোধহয় বোকামী। পরিবর্তন আসবেই- ভালো খারাপ দু ভাবেই।
অর্নব যে গীটার আর স্যক্সোফোন ব্যবহার করে রবীন্দ্র গাইল, তাতে আমি রেজওয়ানা বন্যার বিরাট ফ্যান হওয়া সত্বেও ঐ গান পছন্দ করলাম।
বিশেষত অর্নবের “ডুব” অ্যালবামের শেষ গানটা ছিল খুবই অপ্রচলিত একটা রবীন্দ্র সংগীত (নয়ন তোমারে পায় না দেখিতে)। যেটার মিউজিক আর গাওয়া দুটোই আমাকে অনেক দিন আচ্ছন্ন করে রাখে। তারপর গ্রামীন ফোনের বন্ধু দিবসের বিজ্ঞাপনে অর্নবের করা “আয় আরেকটি বার আয়রে সখা” (চার লাইন শুধু) গানটাও খুবই দারুন হয়েছে। এবং সব শেষে তার শেষ অ্যালবামে করা রবীন্দ্র সংগীত (এটাও অপ্রচলিত) “মাঝে মাঝে তব দেখা পাই” গানটাও দারুন হয়েছে। অর্নবের কারনেই আমার মত আরো অনেকেই এই অপ্রচলিত গান দুটি শোনার সুযোগ পেল। এবং আমার বিচারে আমি বলব গানগুলো অসাধারন হয়েছে। সে ছাড়াও আরো অনেকে রবীন্দ্র সংগীত করার চেষ্টা করছে, এটা কে আমি ভালই বলব। কারন মাঝখানে একটা সময় গেছে যখন রবীন্দ্র সংগীতের শ্রোতা এত ভয়াবহ কমে গিয়েছিল যা রীতিমত ভয়ানক(বাংলা গানের শ্রোতাই ভয়াবহ কম ছিল!!!!)! এখন তো অবস্থার উন্নতি হচ্ছে। প্রচুর মানুষ, অনেক অনেক বাংলা গান শুনছে।
আর পল্লীগান যদি শহুরে শিল্পিরা করে তাতেও আমি সমস্যা দেখি না। ঢাকা ব্যন্ডের মাকসুদ অনেক গুলো পল্লীগান করেছেন (অ্যালবাম = মারফতের পতাকা। এটা ছাড়াও আগে আরেকটা= বাউলিয়ানা) শুনতে ভালই লাগে। বাংলা ব্যান্ডের আনুশেহ লালনের গান করছেন অসাধারনভাবে (তার ২য় অ্যালবাম= প্রত্যুৎপন্নমতিত্ব- শুনে দেইখেন)!
তাহসান, হাবিবের মত কিছু গর্দভ থাকবেই। ওদের উপেক্ষা করতে হবে (সমস্যা হচ্ছে মেয়েদের নিয়ে!! তাদের দুজনেরই মেয়ে ফ্যানের সংখ্যা বেশি!!) ।
অনে-এ-এ-ক বেশি বলে ফেলেছি। উদাহরন দিতে গেলে শেষ হবে না। তবে আমি এইসব ব্যপারে পজেটিভ । ধীরে ধীরে আমি আরো আশাবাদি হচ্ছি। প্রতি বছরই শহীদ মিনারে মানুষের ঢল নামে, আর আমার বুকের মধ্য নতুন করে আশার কাঁপন লাগে। বাঙালি এখনো মরেনি। :rose2:
@তানভী,
পড়লাম। আমি ইমেইলে এক নজর দেখে ভেবেছিলাম অভিজিৎদার জবাব।
দেখুন ফালতু কথা সচরাচর বলে আমি অভ্যস্ত নই। রবীন্দ্র-নজরুল আমিও শুনি এবং আমার গুটিকয় বন্ধুও শোনে। কিন্তু এর কোন তীব্র আবেদন নেই তরুণ প্রজন্মের মধ্যে। অনেকেই শুধু প্রেম নিবেদনের জন্য ভালোবাসি ভালোবাসি শুনে মুখস্থ করে!
তা জাহাঁপনা , এই গুস্তাখি আমি কোথায় করেছি? আমি বলেছি ফিউসনের নামে বিকৃতি বা বাংলাভাষার অবমাননা চলবে না। সবাই তো বিকৃত করছে না! আপনি পুরো ব্যাপারটা একটু ভুল বুঝেছেন। অর্ণবের কথা বললেন। অর্ণব একজন অসামান্য শিল্পী এবং গানের প্রথাগত শিক্ষা তার আছে। অর্ণব আর আমার প্রিয় শিল্পী এক – উস্তাদ রশীদ খান। অর্ণব প্রথা ভাঙে কিন্তু পরম্পরা ও ইতিহাস নয়। ইতিহাসের ভালো দিকগুলো ভাংলে মানুষের কিই বা থাকে। গানের মূল ক্রাইটেরিয়া সুর। সেই সুরই তো আজকাল উঠে যাচ্ছে। আচ্ছা সুরের খামতি যদি মেনেও নিই তারপরও বাংলার বিকৃতি মানা যায় না। যন্ত্রানুষঙ্গ বিষয়ে তো কিছু বলিনি। রবীন্দ্রনাথ নিজেও পাশ্চাত্য যন্ত্রে গেয়ে অভ্যস্ত ছিলেন- এ তথ্য কি আপনার জানা নেই?
অর্ণবের এই এলবামটা শুনিনি। অভিদা বা বন্যাদির থেকে গোপনে আমার ইমেইল আইডি নিয়ে একটু পাঠিয়ে দিন না। তবে যে গান দুটোর কথা বললেন সেগুলো মোটেই অপ্রচলিত না। ‘মাঝে মাঝে তব দেখা পাই”- তো বেশ পরিচিত গান এমনকি ঘুমপাড়ানী সাদীও গেয়েছে!
জ্বী জনাব, প্রতিটি এলবামই শুনেছি এবং এঁদের গানে বিকৃতি নেই। ম্যাকদা রবীন্দ্রনাথের না চাহিলে যারে পাওয়া যায় গাওয়ার পর বিতর্কের ঝড় উঠল। পার্থদা(বড়ুয়া) ইন্টারভিউয়ে আমাকে বললেন মাকসুদ ভাই সুরে গাননি তাই ঝামেলা হয়েছে। ম্যাকদা মোটামুটি সুরেই গেয়েছিলেন। পার্থদা আমাকে আনাড়ি ভেবে ভুজুং দেয়ার চেষ্টা করেছিলেন! ম্যাকদা এবং আনুশেহ বাউল সাধনা করেন। তাদের জীবনে বাউলিয়ানা আছে। আমি সেইসব শহুরেদের কথা বলছি যারা ষুধু ফ্যাসনের জন্য লালনের গান নিয়ে এর অপমান করে গানের মূলের বিকৃতি ঘটিয়ে। একজন আমেরিকান শখ করে বাংলা বলতেই পারে। কিন্তু সে যদি নিজের জাতীয়তা মুছে ফেলতে চায়- সেটা অস্বাভাবিক। আমি মাংস খেয়ে অভ্যস্থ। ভাব ধরার জন্য নিরামিষ খেলে সেটা হবে ভণ্ডামি! এটাই বলতে চাইছি। গানটা যেমনই হোক,তাতে যেন উচ্চারণটা সঠিক হয় আর সুরটা মূলানুগ হয়। যন্ত্রানুষঙ্গ গানের সাথে মানালেই হল।
ভাইরে আমি আশাবাদী নই। দেশ চালায় ভণ্ড আমলা আর কতিপয় দুর্বৃত্ত রাজনীতিবিদ। এদের গাল দিয়ে কিছুই হবে না। আমি সেদিন আশাবাদী হব যেদিন লেখার পাশাপাশি আপনারা রাজপথে নামবেন। সংগ্রাম করে ন্যায়ের শাসন গড়ে তুলবেন। নইলে সবই মরীচিকা! :rose2:
@আগন্তুক,
আমাকে আবার “আপনি” বলা শুরু করলেন ক্যান? আপনি আমার বস মানুষ!
নাকি আমার গুরুগম্ভীর মন্তব্যের উত্তর দিতে গিয়ে মুখে আপনি চলে এসেছে? 😛
যাই হোক আপনার মন্তব্য ভালো লাগলো। আর রাজপথে সময়ে অসময়ে অবশ্যই পাশে পাবেন। আমার সময় আসছে, আমি শুধু এখন সময়ের অপেক্ষায়। আমার সমস্যা শুধু এক জায়গায়, আমি আমার কথা দিয়ে মানুষকে উদ্বুদ্ধ করার ক্ষমতা রাখি না, আমি শুধু উদ্বুদ্ধ হবার ক্ষমতা রাখি!
আর আপনি কি অর্নবের “ডুব” অ্যালবামের কথা বলছেন? নাকি একদম নতুনটা?
দুটোরই ডাউনলোড লিঙ্ক দিয়ে দিচ্ছি। জিপ ফাইল করা আছে – পুরো অ্যালবাম একসাথে নামাতে পারবেন।
১- ডুব
২- অর্নব অ্যান্ড ফ্রেন্ডস লাইভ
মেইল করে পাঠানোর চেয়ে এটা সুবিধা জনক।
আর আমার মেইল অ্যাড্রেস- tanvy158 অ্যাট gmail.com
সুযোগ হলে মেইল করবেন।
এ প্রস্তাবের সাথে পূর্ন সহমত পোষন করছি। :yes: :yes: :yes: :yes: :yes: :yes: :yes: :yes: :yes: :yes:
বিনম্র শ্রদ্ধা দুই বীর সেনানির প্রতি। এ ধরনের মানুষ আমাদের আছে বলেই বাঙালী বলে পরিচয় দিতে আমরা গর্ব বোধ করি।
কোন প্রকার সংকোচ ছাড়াই এই শ্লোগানের সাথে একাত্বতা ঘোষনা করছি।
@সাইফুল ভাই,
আপনার সাথে একাত্মতা ঘোষনা করছি অসংকোচে!
তবে, আপনার নিকটও একখান দাবি আছে এই অধমের! দয়া করে আপনি ভাষা আন্দোলন নিয়ে লিখুন না! বিশেষ করে, সেই নায়ককে নিয়ে যিনি সর্বপ্রথম অবদান রেখেছিলেন ভাষা আন্দোলনে, কিন্তু পদক তো দূরের কথা, সামান্য শ্রদ্ধাও ভাগ্যে জুটেনি! বরং খলনায়ক হিসবে শুধু কলঙ্কিতই করে যাচ্ছি তাকে আমরা!
কিছু লিখুন না, সাইফুল ভাই, ঐ জ্ঞানতাপস ভাষানায়ককে নিয়ে!
উইকিতে মনে হয় এ নিয়ে কিছু নাই। আমরা এই ঘটনা নিয়ে বাংলা রচনা পড়তে পড়তে বুড়া হয়া গেলাম। কিন্তু নেটে নাই?!! এইটা ভালো কথা না।
অভিজিৎ ভাইয়া কে ধন্যবাদ এমন একটা বিষয় তুলে ধরার জন্য।
কিছু সোর্স খুজে দেন। লেখাটা উইকিতে তুলে দেব।
@তানভী,
আগেই বলেছি মূল মিডিয়ায় তারা উপেক্ষিত। তাই পেপারের কোন সোর্স আমি দিতে পারব না। তবে কয়েক বছর আগে সমকালে এ নিয়ে লেখা হয়েছিল ছোট করে। দিন তারিখ ভুলে গেছি। আপনি রাগিবের সাথে যোগাযোগ করে দেখুন মুক্তমনার ইংরেজী এবং এই বাংলা লেখাটা গ্রহনযোগ্য সোর্স হিসেবে বিবেচিত হতে পারেকিনা। উইকির কিছু প্রবন্ধে মুক্তমনার রেফারেন্স আছে অবশ্য।
হাসান মাহমুদও এ ব্যাপারে সাহাযয় করতে পারেন প্রসঙ্গিক দলিল তার কাছে থাকলে।
@অভিজিৎ ভাই,এ বিষয়ে প্রথম দিকে মিডিয়ায় লেখালেখি হয়েছিল।প্রথম আলোর ডাটাবেয দেখা যেতে পারে।
ডঃ অভিজিৎ রায়,
আমিও আপনার সাথে নির্দ্দিধায় একমত, আমি সদাশয় সরকারের সুমতি প্রত্যাশা করি। সেই সাথে হাসান মাহমুদ এবং আপনাকেও একুশের রক্তিম শুভেচ্ছা, বিষয়টি হৃদয়গ্রাহী এবং ঐতিহাসিক এক দলিল হিসেবে তুলে ধরার জন্যে। হয়তো আপনাদের সময়ানুগ সচেতনতায় ‘মুক্তমনা’ও এই ইতিহাসের পাদদেশে কোথাও এক প্রদীপ হয়ে থাকবে।
লেখাটির প্রায় পুরোটুকুই হাসান মাহমুদের ইংরেজী লেখাটির অনুলিখন। রফিক এবং সালাম নামের দুই শ্রদ্ধেয় মানুষের অবদানের কথা মূল মিডিয়ায় উপেক্ষিতই থেকে গেছে, আজো। আমার মনে হয় সাহসী এই দুই সৈনিকের কথা খুব স্পষ্ট করে জানানোর সময় এসেছে। অন্ততঃ আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের ইতিহাস নিয়ে যারা ভবিষ্যতে গবেষণা করবেন, যারা উইকিপিডিয়াতে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের ইতিহাসকে নিরপেক্ষ দৃষ্টিকোন থেকে সন্নিবেশিত করতে চান – তাদের কাছে এই দলিলটি একদিন গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠবে বলেই আমার বিশ্বাস।
@অভিজিৎ ভাই,সহমত।মুক্তমনার পক্ষ থেকে সরকারকে এ বিষয়ে চিঠি দেওয়া যেতে পারে।ব্লগে ব্লগে প্রচারণা করা যায়।আগামী একুশে পদককে সামনে রেখে এখন থেকেই প্রচারণা করলে কাজ হতে পারে।প্রধানমন্ত্রী কার্যালয় বরাবর ই-মেইল করতে পারেন।সবার মতামত আশা করছি।