ঈদের দিনটা খুবই বেকুব বেকুব লাগে নিজেকে। বাসার, পাড়ার, দেশের বিরাট সংখ্যক মানুষ যার যার সাধ্যমত নতুন পোষাক পড়ে, মজাদার খাবার খেয়ে ঘুরে বেড়ায় চারপাশে। আমি চেয়ে থাকি। বাচ্চা-কাচ্চারা টু-পাইছ কামানোর মতলবে ঝুপ-ঝাপ পায়ের উপর উপুর হয়ে পড়ে সালাম করে চেয়ে থাকে। আমি বলি বেঁচে থাক। হাঁড় কিপ্টে নামে বাচ্চা সমাজে পরিচিতি পাবার হাত থেকে পরিত্রান পেতে নববর্ষে সাধ্যের আতীত খরচ করি। ধর্মের প্রতি মোহ কেটে যাবার পর থেকে এভাবেই কেটে যাচ্ছিলো আমার ঈদ।কিন্তু এভাবে আর যেন চলছেনা। বিয়ের পর প্রথমবার শ্বশুরবাড়ীতে গেলাম ঈদের ছুটিতে। উদ্দেশ্য একটু গ্রামের তাজা হাওয়া খেয়ে আসা। কিসের কি? মামা শ্বশুর, চাচা শ্বশুরদের বাড়িতে ইফতারের দাওয়াত দিয়ে শুরু। তার পর আসে মাগরিবের নামাজের সময়। দাঁড়িয়ে পড়া ছাড়া কোন উপায় থাকলোনা। তারাবির আগে পেট খারাপের ভান ধরলাম। এতে সফলতা আসলো। ঈদের আগে আমাকে নিয়ে টানাটানি কমলো কিছুটা। আমার অবস্থা দেখে আপনাদের ভাবীর আনন্দ আর ধরেনা। তবে তার করুনাতেই অনেক উত্তাল সমুদ্র পাড়ি দেয়া গেছে। হুজুরে জোনপুরী আল্লামা আলা আলু বোখারা………(রাঃ)র সাথে সাক্ষাতের কবল থেকে তার আসীম কৃপায় রক্ষা পেয়েছি। ব্যাটা নাকি সুযোগ পেলেই নিজের পানের ছিবড়ে অন্যকে খাইয়ে দেয়। যাক সে কথা।
প্রতিবারি লক্ষ্য করছি নানা ওছিলায় ঈদের ছুটি ৩ দিনের পরিবর্তে ইনিয়ে বিনিয়ে কমপক্ষে ৭ দিন হয়ে যাচ্ছে। তিন দিনের ছুটি্তেই ঢাকা শহরের এক-চতুর্থাংশ খালি হয়ে যায় সেখানে ৭ দিনের ছুটিতে ঢাকার তিন-চতুর্থাংশ খালি হয়ে যাবে সেটাই স্বাভাবিক। বাড়ী ফেরা মার্কা গানে গানে প্রচারিত হচ্ছে নারির টান, সেই সাথে ঈদের মাহাত্ম্য মিলে মিশে একাকার। অন্যদিকে ঢাকা খালি করে জমে উঠে গ্রাম এই সময়ে। বহু মিসিং লিংক বাল্য- বন্ধুদের মিলন মেলা বসে। প্রচুর বিয়ের অনুষ্ঠান দেখলাম ঠিক ঈদের পর দিন থেকে একটানা। খবর নিয়ে জানলাম ছুটির কারনে সব আত্মীয়-বান্ধবের উপস্থিতী নিশ্চিৎ করতেই এই ব্যাবস্থা।
গেলাম মাছ বাজারে। সে এক এলাহি কান্ড। তিনশ টাকা দামের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে পনেরশ টাকায়। লন্ডন ফেরত, ইটালি ফেরতদের ইউরোর ঝংকারে বাজার মাতোয়ারা। আমিতো নতুন জামাই আমাকেকি দমে গেলে চলে ! ফলত পরের দিন ১২ কিলো মিটার দূরে জেলা শহরে গিয়ে মানি ব্যাগের স্বাস্থ পুনরূদ্ধার করতে ATM বুথের স্মরনাপন্ন হতে হলো।
টিভি চ্যানেল গুলি এক অলিখিত প্রতিযোগিতার মত একটানা বাজিয়ে যাচ্ছে- ওমোর রমজানের ঐ রোজার শেষে এল খুশির ঈদ-। এদিকে পুরোটা রোজার মাস জুড়ে কেনা-কাটার উপরে শপিং সেন্টার থেকে স্পট রিপর্টিং -” এবারে অন্যান্ন বারের চেয়ে দামটা একটু চড়া তবে বেচা-বিক্রিও ভালো।” মেয়েদের পোষাকের হিট আইটেমে এবারেও ছিলো যথারিতী হিন্দি সিরিয়ালের নাম আনুসারের পোষাক যেমন -ছোটি বহু, বেটিয়া আর সবাইকে টেক্কা দিয়েছে এবারে মাশাককালি। অভিজাত এলাকার শপিং সেন্টার গুলো থেকে রিপর্টিংএ থাকবে- “ওদের জিনিষগুলো এক্কেবারে ইউনিক, তাই দামটা একটু বেশি।” বদর উদ্দিন ওমরের চোখে যা কিনা চুড়ান্ত অশ্লীল কথাবার্তা।
আসলে আমি বলতে চাইছিলাম সরকারি পৃষ্ঠপোসকতার কথা। ঈদকে জাতীয় বৃহত্তর অনুষ্ঠানে পরিনত করার জন্য তার চেষ্টার অন্ত নেই। আর ব্যবসায়ীদের দরকার মওকা। ব্যাস দুয়ে মিলে দিনকে দিন কঠিন জমে উঠছে ঈদ। পূজোর জন্য কেনা-কাটা করতে এসে হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষের মাথায় হাত। দোকানিরা ঈদের জন্য সেবা দিতে দিতে এতটাই ক্লান্ত হয়ে পড়েছে যে এখনো দোকান খুলে উঠতে পারেনি। অথবা হতে পারে এত ভাল ব্যবসা হয়েছে যে পূজোতে বেচা-বিক্রি না করলেও তাদের চলবে। সেই সাথে পূজো মন্ডপ গুলোর নিচ্ছিদ্র নিরাপত্তা বলছে কি বিপন্ন এখানে আজ সংখ্যালঘুরা। যাই হোক, এই বৈষম্য আমার আজকের আলোচনার কেন্দ্রীয় বিষয় না। আমি মূলত বাংলা নববর্ষ উৎসবের প্রতি আমাদের সরকারের বিমাতা সুলভ আচরনের কথাই এখানে বলতে চেষ্টা করছি। কেবল মাত্র সুযোগ ও যথাযথ মনোযোগের অভাবে সব ধরনের সম্ভাবনা থাকা সত্ত্বেও এই জনপদের মানুষের প্রধান উৎসব হয়ে উঠতে পারছেনা বাংলা নববর্ষ। শুধু মাত্র, আমি আবার বলছি- শুধু মাত্র তিন দিনের সরকারি ছুটি নববর্ষের উৎসবকে কোন উচ্চতায় নিয়ে যেতে পারে তা কল্পনা করা অনেকের জন্যই বেশ কঠিন। এক দিনের জায়গায় তিন দিনের ছুটি হলে দেখবেন কোথায় থাকে ঈদ আর কোথায় থাকে দূর্গা পূজা। তিন দিনকে কিভাবে পাঁচ দিন আর পাঁচ কে সাতদিন বানাতে হয় তা বাঙ্গালী জানে। আসুন ভাই, সকলে মিলে একটু সোচ্চার হই। খালি দরকার একদফা এক দাবির ভিত্তিতে ছুটি বৃ্দ্ধির জন্য কলম সংগ্রাম শুরু করা। ধীরে ধীরে এর প্রতিধ্বনি আছড়ে পড়বে মিডিয়ার আন্যন্ন শাখায়, সংস্কৃতি পাড়ায়, বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিশ্ববিদ্যালয়। এখনি সময়, অসাম্প্রদায়িক চেতনার প্রতি সহানুভূতিশীল সরকার আছে ক্ষমতায়। চলুন ভাই্, যার কাছে যে কলম আছে তাই নিয়ে ঝাপিয়ে পড়ি। তিন দিন নববর্ষে্র ছুটির দাবি প্রতিষ্ঠা না হওয়া পর্যন্ত এই কলম চলবে।
নববর্ষে তিন দিনের ছুটি বদলে দিতে পারে আমাদের অনেক কিছু। অতর, টুপি, সেমাইএর চেয়ে পিঠা, লাঠি খেলা, পুতুল নাচ যে অনেক চেনা তা মনে পড়ে যেতে পারে এক নিমেষে। ধর্ম নাই, জাত-পাত নাই, মূল জাতি- উপজাতি নাই এমন উৎসবিতো আমরা চাই।
বর্তমান নববর্ষে দেশের চিত্র হলো, দেড় কোটি মানুষের ঢাকা শহরের এক-তৃ্তিয়াংশও যদি আনন্দের খোঁজে বাসার বাইরে বের হয় তবে যানজটের অবস্থা হবে ঠিক একটা স্থিরচিঁত্রের মত। হচ্ছেও তাই। ছুটি যেহেতু একদিনের তাই ঢাকার বাইরে যাবার সুযোগ নেই। গ্রামের বটতলার মেলা গুলো ভুগছে সঙ্গতির অভাবে।
তিনদিনের নববর্ষের ছুটি মঞ্জুর হলে পরে দেশের চিত্রঃ ছেলে-ছেলে বউ, নাতি-নাতনি বাড়ী আসবে তাই সাত দিন যাবৎ চলছে পিঠা-পুলি বানাবার ধুম। প্রিতি ফুটবল ম্যাচ হবে নববর্ষের পরের দিন। একপক্ষে বিবাহিতরা, অন্য পক্ষে অবিবাহিতরা। মেলা ফেরত বাচ্চাদের বাঁশির বেসুরো শব্দে আর ঢোলের বারিতে গ্রাম, পাড়া মুখোরিত। বাজারের দোকানে দকানে হালখাতা। এদিকে ঢাকাবাসী চওড়া রাস্তাগুলোর মোরে স্টেজ ফেলে সংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজনে ব্যাস্ত, এখন যেটা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকা ছাড়া বিরল দর্শন।
লাল-সাদার এই মিলন মেলার দরকার শুধু একটু খোলা জায়গার। গাছ যেমন খোলা আকাশের নিচে নির্বীঘ্নে বেড়ে উঠে, তেমনি ছায়াটুকু সরিয়ে দিতে পারলে কোনদিন হয়তো চাইনিজ New Year এর মত বিশ্ব থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে মাস ব্যাপি বর্ষবরন উৎসবে আমরাও মেতে উঠতে পারবো। আমরাও বিশ্ববাসীকে বলতে পারবো- আহ্- বিরক্ত কোরোনা, দেখছোনা আমরা উৎসবে ব্যাস্ত।।
লেখকের মাগরিবের নামাজ আল্লাহ নিশ্চই কবুল করবেন। আমিন
আমাদের প্রয়াত হেড মাওলানা (বায়তুল মোকাররম মসজিদের মরহুম ঈমাম) সাহেব একবার ঘোষনা দিয়েছিলেন যে মোসলমানদের জন্য দুই ঈদ বাদে আর কোন উৎসব থাকতে পারে না। এই ঘোষনা খুব একটা কেউ আমলে না নিলেও এর প্রতিবাদ করার মত মানুষও আবার খুব একটা পাওয়া যাবে না।
হাসিনা সরকার সেক্যুলার এমনধারা কথাবার্তা খুবই হাস্যকর। বলা যায় তূলনামূলক বিচারে কিছুটা সেক্যুলার। তারা বড়জোর জঙ্গীবাদ দমন জাতীয় ব্যাপার স্যাপারে হয়ত বড় কোন ছাড় দেবে না, কিন্তু তারা বা কোন বাবার ক্ষমতার আছে সংবিধান থেকে ধর্মের ছাপ মুছে ফেলার? জনপ্রিয় রাজনীতিক হবার প্রধান শর্তই হল পাবলিকের মন বুঝে কথা বলতে হয়।
থিয়োরিটিক্যালী আইডিয়াটা ভাল। বিশেষ করে হিন্দী সংস্কৃতি যেভাবে আমাদের কালচারকে গ্রাস করছে (করছে না বলে বরং বলা ভাল আমরাই গ্রাস হচ্ছি) তাতে আমাদের নিজস্ব কালচারকে উজ্জিবীত করা খুবই দরকার।
আমরা এমনিতেই খুব একটা কর্মমুখর জাতি না, মানে যারা রেগুলার অফিস আদালত জাতীয় কাজ করে তারা (কায়িক শ্রমিকদের কথা ভিন্ন)। তাই ঈদের টানা ছুটির পর আবার নববর্ষের জন্য ৩ দিন ছুটি ঘোষনা মনে হয় অবস্থা আরো খারাপই করবে।
ঈদ পালন করে আসছে মানুষ হাজার বছর ধরে, এটাকে কি রাতারাতি পাল্টে নববর্ষের ছুটিতে রুপান্ত্রিত করা যাবে বা করা ঠিক হবে? ঈদ ও তো আমাদের কালচারের অংগই।
আমি এখনো অভ্র দিয়ে সব শব্দ টাইপ করতে পারি না, তাই বানান ভুলের জন্য আশা করি কেউ আবার ঝাড়ি দেবেন না।
@আদিল মাহমুদ,
আমরা খুবই কর্ম মুখর এখন। ফিউডালিজমের ভুত এখনও অবশিষ্ট আছে কেবল পাবলিক সেক্টরে। প্রইভেট সেক্টরে কর্মবিমূখ কারো পক্ষে আজ আর টিকে থাকাই সম্ভব না। আপনিও বললেন আমাদের কায়িক শ্রমিকদের কথা। তাহলে শুধুমাত্র পাবলিক সেক্টরের দায় পুরো জাতি বহন করতে পারেনা।
রাতারাতি পাল্টানোর আশা আমিও করিনা। ঈদের ছুটি কমিয়ে নববর্ষের ছুটি বাড়ানোর প্রস্তাব আমি করিনি। ঈদ, পূজা এগুলো
আমাদের সাম্প্রদায়িক কালচারের অংশ। আমাদের জাতি সত্তার খন্ডিত প্রকাশের বেশী এর কোনটাই করতে পারেনা। আমাদের জাতি সত্তাকে পূর্নাঙ্গ ভাবে তুলে ধরতে পারে একমাত্র বাংলা নববর্ষ। অসাম্প্রদায়িক চেতনায় বিশ্বস করি, তাই এই চেতনার প্রসার হোক সেটাতো আমি চাইবোই। তবে একটা কাপকে ভেঙ্গে ছোট করার চাইতে তার পাশে একটি মগ রেখে কাপটিকে ছোট করার পক্ষে আমি।
আমি কেবল একটু খোলা জায়গার কথা বলেছি। ঈদ কে প্রনোদনা দিতে যে উৎসব ভাতা দেয়া হয় সেরকম কিছু ছাড়াই
নববর্ষ নিজের জায়গা করে নিতে পারবে বলে আমার বিশ্বাস।
@আতিক রাঢ়ী,
জানি প্রাইভেট সেক্টর গত ক বছরে বেশ উন্নতি করার পর অবস্থার অনেক পরিবর্তন হয়েছে। তবে পাবলিক সেক্টর কিভাবে উন্নতি করবে তা আমি জানি না, আমাদের দেশে পাবলিক সেক্টর নির্ভর মানুষের সংখ্যা অনেক। আপনি তো নিজেই বলেছেন যে কিভাবে ৩ দিনের ছুটিকে ৭ দিন বানাতে হয় তা আমরা ভালই জানি। এটা খুবই সত্য কথা। কর্মমুখর জাতির লক্ষন এটা নিশ্চয়ই না।
আপনি ঈদ/পূজার বদলে নববর্ষের ছুটি সরাসরি হয়ত প্রোপোজ করেননি, তবে কিছুটা হলেও ইংগিত দিয়েছেন বলে আমার মনে হয়েছে। ভুল হতে পারে। তবে সেক্ষেত্রে বলতে হয় যে দুই ঈদের লম্বা ছূটির পর আরো একটা লম্বা ছুটির ফাদে আমাদের পড়তে হবে।
ইদ/পূজা এগুলি ধর্ম ভিত্তিক উতসব হলেও এগুলি আমাদের কালচারের অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে গেছে, সে আরব দেশ থেকে আসুক আর ভারত থেকে আসুক। পাশ্চাত্য দেশেরো তেমনি বড়দিন, আমাদেরও বড়দিন থেকে নববর্ষ সময়টা খুবই ভাল কাটে, এর ভিত্তী কোন ধর্ম, সেই যীশুরই বা কোনটা আসল জন্মদিন সে গবেষনাতেই বা আমি যাই কেন। সমাজের মূল ধারা যেখানে ফুর্তি করছে আমিও তার ভাগ পাচ্ছি, তাই এদেশে আমার ঈদের সময় থেকে বড়দিন থেকে ইংরেজী নববর্ষ আরো ভাল কাটে। সুইডেনের মত নাস্তিক প্রধান দেশেও বড়দিন ভালই পালন করা হয়। আমি জানি আমাদের দেশেও তেমনি সব ধর্মের লোকেরই ঈদের আমেজ কিছুটা হলেও লাগে। ভারতেই নিশ্চয়ই পূজার আমেজ অন্য ধর্মের লোকের ও লাগে।
সতি কথা বলতে কি ভাষা আন্দোলন মুক্তিযুদ্ধের গৌরব গাথা নিয়ে যতই গর্ব করি না কেন আমার কাছে নিজেদের খুব একটা আত্মমর্যাদাশীল জাতি বলে কখোনই মনে হয়নি। ছোট ছোট উদাহরন দেই; বিদেশী জিনিসের প্রতি আমাদের দূর্ণিবার আকর্ষন, এর কারনে দেশে উতপাদিত অনেক পণ্যের গায়েও বিদেশের ছাপ লাগাতে হয়। বিদেশী কেউ আমাদের মডারেট মুসলিম সার্টিফিকেট দিলে আমরা বড় গলায় প্রচার করি। হিন্দী সিরিয়ালের ষ্টাইলের জামা (কি ছোট বহু না কি ক্কিসের নাকি এবার ঈদের বাজারে তুমুল জনপ্রিয়তা) আমাদের টপ লিষ্টে থাকে…আজকাল দেশের বিয়ে শাদীর ভিডীওতে দেখি হিন্দী কায়দায় হিন্দী সিনেমার শস্তা গানের তালে তালে লাঠি নৃত্য হচ্ছে। আমি নিজে হিন্দীর বিরুদ্ধে নই, আমি নিজেই পুরনো হিন্দী গান খুব পছন্দ করি। তাই বলে ৮ বছরের শিশু হিন্দী গান গাইবে নিজেদের অত সুন্দর ছড়াগান বাদ দিয়ে ( জাফর ইকবালের একটা কলামে পড়েছিলাম)? আরেক শ্রেনী আছে (হয়ত সংখ্যাই কম) যারা ইংলিশ মিডীয়ামে পড়ে তারা বাংলা বলতেই লজ্জা বোধ করে। কোনদিন বিদেশের মাটিতে না গিয়েও এরা কেমন জানি আধো বোলে বাংলা বলে।
আত্মমর্যাদা কিভাবে বাড়ানো যায় তা আমার জানা নেই। তবে জানা আছে সেটি করা না গেলে ৩ দিনের নববর্ষের ছুটি দিয়ে তেমন কিছু হবে না। মানুষে প্রথম সকালে পান্তাভাত খাবে তারপর বাকী ছুটিতে ঘরে বসে হিন্দী সিনেমা সিরিয়াল দেখবে। আপনার আইডিয়া ভাল, আমার কথায় হতাশ হবেন না, তবে আত্মমর্যাদা কিভাবে বাড়ানো যায় সেটাও সাথে সাথে ভাবুন।
@আদিল মাহমুদ,
আমার কাছে কিন্তু আমাদের ছুটিকে কমই মনে হয়।
ইউরোপের গৃস্মের ছুটি কিন্তু বেশ লম্বা। চাইনিজ New Year এর ছুটি প্রায় ১৫ দিনের একটানা। আমাদের সবচেয়ে লম্বা ছুটি ৩ দিনের। সাপ্তাহিক ছুটি যোগ হলে গিয়ে দাঁড়ায় ৫ দিন। কর্মমূখর হবার জন্যই আরো লম্বা ছুটির দরকার।
আত্ম মর্যাদা নিয়ে যা বললেন তার সাথে দূর্ভাগ্যজনক হলেও একমত না হয়ে কোন উপায় নেই। প্রচলিত রাজনিতীর পরিবর্তন না হওয়া পর্যন্ত সেটা সম্ভব না।
@আতিক,
আসলে সব ছুটি মিলানোর চুলচেরা হিসেব কষলে দেখা যাবে যে আপনার কথা অনেকটা ঠিক। তবে এখানে কিছু ফাক আছে, অফিসিয়ালি ছুটি শেষ হলেও আমাদের অনেক অফিসে দেখা যায় অফিস খোলার পরেও টেবিলের পর টেবিল খালি; প্রায় প্রতি ঈদের পরেই এমন কিছু ছবি পত্রিকায় আসে। হতে পাএ বেসরকারী প্রতিষ্ঠানে এমন হয় না, একেবারেই হয় না তাও না। কালচারাল কারনেই এ জাতীয় ব্যাপার স্যাপার আমাদের দেশে তেমন বড় করে দেখা হয় না। সমস্যাটা আসলে শৃংখলার, আমরা সুশৃংখলভাবে মনে হয় কিছুই পারি না। শৃংখলার চরম অভাবের জন্যই আমাদের জীবনে জটিলতা অনেক বেশী।
তবে আমাদের স্কুল কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ে আসলেই বিদেশের থেকে বেশী সময় ক্লাস হয় (হরতাল/আন্দোলন এসব বাদ দিলে)। বিদেশের এপ্রিলের মাঝ থেকে সেপ্টেমব্র পর্যন্ত সব বন্ধ, ডিসেম্বরে আবার সপ্তাহ দুয়েক ছুটি। সে তূলনায় আমাদের শুধু লম্বা ছুটি বলতে রোজা, গ্রীষ্ম/শীত। তাও এখন মনে হয় অনেক যায়গাতেই এসব ছুটিও নিয়মিত বা পুরো দেওয়া হয় না। তবে এত সময় বিদ্যালয়ে দিয়েও আমরা আসলে কতটূকূ শিখছি সে প্রসংগ ভিন্ন।
নাউজুবিল্লা.. নাউজুবিল্লা..
বাঁশির সুর, মিলন মেলা, আনন্দ, নির্বিঘ্ন, ঢোলের শব্দ, সংস্কৃতি…
ছি ছি ছি…
এইসব বে-ইসলামী শব্দে আপনার আগ্রহের ওপর আল্লার গজব পড়ুক.. 😉
আমিণ.. ছুম্মামিণ…
@আরিফুর রহমান,
আল্লাহ তায়ালা যাহাদের অন্তর সমূহে মহর মারিয়া দিয়াছেন তাহাদেরি কেবল এই আন্দলনে শরিক হইবার যোগ্যতা আছে।
😀
ধর্ম নিয়ে রাজনীতি দুদলই করছে তা নিয়ে সন্দেহ নেই | মন্দের ভাল নিয়েই আমরা চলছি বলা যায় ।একবার একে ভোট দিয়ে ভুল করে আফসোস করি আর পরের বার অন্যদলকে দিয়ে শুধরোতে চাই। নতুন ভুল দিয়ে পুরনো ভুল শুধরোনো আর কি…অসহায় আমরা !
কিন্তু পূজা বানানটি তে ‘উ’কার এর ব্যবহার কি শুদ্ধ হল?
বানানটি তাই একবার দেখেই নিলুম বাংলা অভিধান ঘেটে…উ কারের ব্যবহারটিও আরেকটি ভুল !
তবু মজা পেলুম লেখাটি পড়ে… 🙂
@নিবেদিতা আইচ,
আর পারাগেল না। দাড়ান এখনই ঠিক করে দিচ্ছি বানান।
@আতিক রাঢ়ী,
ধন্যবাদ ।ভুল বানানে চোখ ব্যথা করে। 🙂
যাই হোক,বানান নিয়ে আর কিছু বলা ঠিক হবে না বোধ করি…
শুধু বলতে চাই, আপনার দাঁড়ান বানানটিতে চন্দ্রবিন্দুটি খুঁজে পাচ্ছি না… 😀
@নিবেদিতা আইচ,
😀 😀 😀
করেন, করলে সরকার আর ও বিপদে পরবে । এই সরকার আপনেদের সেকুলারিস্ম দিতে চাইতেছে । এত সুযোগ সুবুধা দিতেছে । আপনাদের তাও কি ভাল লাগতেছে না !!! কখন ? আপনারা সরকারকে সাহায্য করেছিলেন । নাকি সব সময় বিরোধিতা করেন । সিরাজ থেকে মীর কাসেম, শেখ মুজিব থেকে শেখ হাসিনা , সবার বিরোধিতা করলে, দেশ এগুবে কিভাবে । ও আপনারা ত দেশের উন্নতি চান না, চান কেবল নাস্তিকতা ।
নিজেই নিজের বিরোধিতা করলেন, নাস্তিক যে দাড়িয়ে বলতে পারলেন না । আর আমাদের ভাবী ও তার পরিবার কে আগে জানিয়েছিলেন যে আপনি নাস্তিক । না জানিয়ে থাকলে, আপনি কি প্রতারনা করেন নি ?
@ফুয়াদ,
এই সরকার আমাদের কি কি সুযোগ সুবিধা দিতেছে, দয়াকরে যদি একটা তালিকাদেন তবে কৃ্তজ্ঞতা জানানোর পথ সুগম হতো। দেশ এগিয়ে যাওয়া আর পিছিয়ে যাওয়ার অর্থ সবার কাছে এক না।
আমার ফ্লাটের সামনে এক জামাত নেতার বাস ছিলো। তিনি দাওয়াতের কাজে আমার বাসায় এসেছিলেন। আমি জানতে চেয়েছেলাম তারা যা করতে চাচ্ছেন তার কোন নজির সমসাময়িক বিশ্বে আছে কিনা ? তিনি বলে ছিলেন না নেই।
নিকট অতীতে নজিরের জন্য আমাদেরকে ৭০০ বছর আগে ফিরে যেতে হবে। প্রশ্ন করেছিলাম- প্রগতির চাকাকি পেছনদিকে গড়ায় ? উত্তর পাইনি। ব্যাস্ততা দেখিয়ে চলে গেলেন।
এক ইসলামিক চিন্তাবিদকে নববর্ষে্র সুভেচ্ছা জানাতে উনি বলেছিলেন এটা নাজায়েজ। আমি তাকে হজরত ওমরের (রাঃ) এর করে যাওয়া একটা আইনের ব্যাখ্যা চেয়েছেলাম তার কাছে, যে আইনের মাধ্যমে আরবদের সাথে অনারবদের বিবাহ নিষিদ্ধ করা হয়েছে এবং যা এখনো বলবৎ আছে। আরব রক্ত সুদ্ধ রাখতেই তার এই আইন। তিনি বলেছিলেন যদি হযরত ওমর এটা করে থাকে তবে এটা সরাসরি রিসালাতের আংশ। আমি আপনাকে ব্যাখাটা জানাব। তিনি আজো তা জানাননি।
একন একজন আরব হিসাবে ওমর যদি তার জাতিসত্ত্বা রক্ষায় এমন কঠোর হতে পারেন তবে একজন বাঙ্গালী হিসাবে নিজের কৃষ্টি, কালচার রক্ষা করার চেষ্টাকে কেন অন্যায় মনে করবেন।
যতই লম্বা জামা আর লম্বা দাড়ি রাখেন কোন আরব রমনিকে আপনি বিয়ে করতে পারবেননা।
আপনি বললেন আর আমি দাঁড়িয়ে বলতে গেলাম যে আমি নাস্তিক। এটা কি মামাবাড়ী নাকি ? এটা হল গিয়ে শ্বশুরবাড়ী।
ভাই বেহেস্ত সাতটা কেন ? কারন সবার ঈমান-আমল সমান না। নাস্তিকেও বড়, ছোট আছে। আমি ছোট নাস্তিক তাই বলতে পারিনি। তবে চেষ্টা আছে বড় নাস্তিক হবার।
আপনাদের ভাবির সাথে আমার ইয়ে করে বিয়ে। তিনি খুব ভালভাবে আমার সম্পর্কে জানতেন। ওদের পরিবারো মোটামুটি জানতো তবে এসব কম বয়সের উত্তেজনা, উপযুক্ত বয়সে সব ঠিক হয়ে যাবে ভাব করে তেমন পাত্তা দেয়নি। কিন্তু ওদের জ্ঞাতী, গুষ্টির সবাইকে আগে চিনতামও না আর জনে জনে গিায়ে নিজের CV বিতরনের প্রয়োজনো মনে করিনি।
নাস্তিকদের পক্ষে যেহেতু লাল সালুর মজিদের মত আকাম শেষে উপরের দিকে তাকিয়ে তওবা করার সুযোগ নেই ফলে তাদেরকে নিজের বিবেকের কাছে পরিস্কার থাকতেই হয়। কারন সে নিজে ছাড়া তাকে আর কেউ ক্ষমা করতে পারেনা।
@আতিক রাঢ়ী,
আইনটা {হজরত ওমরের (রাঃ) } একটু প্রমান সহ দিবেন , তাহলে ব্যক্ষা খুজে বের করার চেষ্ঠা করতাম ।
এইটা কোন পয়েন্ট না । ইসলাম নিজের মতঈ চলে, কারো ধার ধারি না। প্রগতির চাকা পেছনে ঘুরার কারন নাই ।
সরকারের চেষ্টার কথা বলতে ছিলাম, সাহায্য না করেন , তাহলে তো আরো পারবে না । আমি ভাল করে লক্ষ করেছি, বাংলাদেশের মানুষ সব সময়, সব সরকারের বিরোধিতা করে । কখন সমরথন করে না , সে যেই হোক । একটা না একটা দোষ বের করবেই ।
@ফুয়াদ,
আইনটার জন্য বেশি দূর যেতে হবেনা। ইসলামের ইতিহাসের অনার্স কোর্সের Text Book এই পাবেন।
@ফুয়াদ,
অই বইগুলো তো আমার কাছে নাই, পাবো কোথায় লিংক থাকলে দেন , নয়তো ঊল্লেখ করেন । আর, আমি আনেক বাংগালি জানি যারা, আরবকে বিবাহ করেছে ।
@ফুয়াদ, আপনার আজাইরা প্যাচাল কখন বন্ধ হবে ভাই?
ভাইজান ,সুন্দর চিন্তা।আমি এখনো আশাহত হইনি পুরো,কিন্তু নিরেট বাস্তব হচ্ছে মানুষ ওই ধর্ম নামের আফিংটি পেলেই আর কিছু চায় না।দেখুন না ক্রিসমাসের বাহার!পুজোর আয়োজন,ঈদের জাঁক।আমার দুর্দিন ঘনালো বলে।গত বছর জোর করে অঞ্জলি দিতে নিয়ে যাওয়া হল।বলা হল লোকে নাকি আমায় খোঁজে।অবশ্য আমিও খেয়ে নিয়েছিলাম আগেই।এবার মাকে স্পষ্ট বলে দিয়েছি আমি এসবের মধ্যে নেই।বোল আমি এসব অর্থহীন আচারের কোন মানে দেখি না।
আসলেই কি তাই?বাংলাদেশের কোন সরকারকে অসাম্প্রদায়িক বলবেন?শেখ হাসিনা কি প্রকাশ্যে ইসলামকে ‘শ্রেষ্ঠ ধর্ম’ বলেন নি?অন্ধ ভক্তরা তাঁর সমর্থনে বলেছে যে ভোট নেয়ার জন্য ওটা বলতেই হয়।কিন্তু নৈতিকতার প্রশ্নে?এটা কোন ধরনের সেক্যুলারিজম ছিল?
রূঢ় বাস্তব হচ্ছে মুষ্টিমেয় মানুষ বাদে আসলে সবাই সাম্প্রদায়িক।হিন্দুদের কয়েকটি ধারায় সব ধর্মের স্বীকৃতি (যেমন অদ্বৈতবাদ,বৈষ্ণবতন্ত্র) থাকায় এরা যাও বা অপেক্ষাকৃত উদার হবার সুযোগ পায়(যদিও গোঁড়া হিন্দুরা অতি জঘন্যরকম সাম্প্রদায়িক!),জুডাইকদের মধ্যে সেটুকু আলোকও পৌঁছেনি।সুফিবাদ ছাড়া জুডাইক ধর্মগুলো শুধু পরধর্ম বিদ্বেষই ছড়িয়েছে।ব্রাহ্মণরা যেভাবে দমন করেছিল চার্বাকদের।কাজেই সমাজে একটা বড় রকম চিন্তাবিপ্লব ঘটে এই বানোয়াট শাস্ত্রগুলো আস্তাকুঁড়ে নিক্ষিপ্ত না হওয়া পর্যন্ত আপনার এই সুন্দর স্বপ্নটির বাস্তবায়ন সম্ভব নয়।
তবে হ্যাঁ ঈদ ও পুজোর সামাজিক ভূমিকাকে আমি পুরো অস্বীকার করতে পারি না।নববর্ষ বাঙালীর শ্রেষ্ঠ উৎসব এবং একই সাথে ব্রাত্য।আবার অনেকের কাছেই নববর্ষ একটা ফ্যাশন।কেউ কেউ এখানেও দেখতে পায় খোদার কুদরতী।আমরা যে বংশপরম্পরাগতভাবে আর মনস্তাত্বিক দিক থেকে বাঙালিই,আমেরিকান যে নই – এটা না বোঝা পর্যন্ত আসলে বাঙালি সংস্কৃতির ধারণ সম্ভব না।এই বিজ্ঞান-প্রযুক্তি ও বিশ্বায়নের যুগেও আমরা ভুলে যাই যে মানুষ চাইলেই তার জেনেটিক উত্তরাধিকারকে পুরো অস্বীকার করতে পারে না।যে নিজের সংস্কৃতি জানে সেই পারে কসমোপলিটান হতে।ফিউসনের নামে লালনের গানগুলোকে ধর্ষণ করে আর যাই হোক,বাঙালিত্ব ফলানো চলে না!(আমি যন্ত্রের ব্যবহারে দোষ পাই না।গানের একমাত্র দোষ বেসুরে গায়ন!)
পুজো বানানে চন্দ্রবিন্দুর আমদানী কেন?নাকি শিব্রামীয় কৌশলে বিনোদন দেবার চেষ্টা?বেড়ে লিখেছেন। :laugh:
@আগন্তুক,
ভাই প্রথমেই বলে নেই শিবরাম বাবু যেটা স্বজ্ঞানে করেছিলেন আমি সে্টা করেছি অজ্ঞান বসত। আমাকে ক্ষমা করুন। কোন বালক বানান ভুলের জন্য আমার মত এত বেশি ধোলাই খেয়েছ বলে মনে হয়না। কিন্ত কুকুরের লেজ কি আর সোজা হয়।
আওয়ামিলীগকে আমিও সেকুলার দল মনে করিনা। তবু মন স্ব্প্ন দেখতে চায়। তাই সামনে যা পাওয়া যায় তাকেই আঁকড়ে ধরতে ইচ্ছা করে।
এখন বি, এন,পির তো ধরেন একটা চরিত্র আছে যে তারা মডারেট মুসলিম কিন্তু আওয়ামিলীগের কোন চরিত্র নাই। ফতোয়া চুক্তির কথাই ধরুন। ফলে আমার বিশ্বাস ঠিক মত পাম-পট্টি দেওয়া গেলে আওয়ামিলীগকে দিয়েই কাজটা করান গেলেও যেতে পারে!!!!!!!!!!! 😀
আপনার দাবীর সাথে সহমত জানালাম । তবে আশা দেখিনা ।
@নন্দিনী,
সহমত জানানোর জন্য ধন্যবাদ। আন্দোলনে যত বেশি যোগ্য লোকের আমদানি হবে তত দ্রুত নিরাশার মেঘ কেটে যাবে।