তাসলিমা নাসরীন ও বাক স্বাধীনতা
অরুন্ধতী রায়
অনুবাদ জুরান কবির
আমি এ-ইস্যুটিকে – বিশেষতঃ তসলিমা নাসরীন ইস্যুটিকে – ধর্মীয় মৌলবাদ ও লোকায়ত উদার নৈতিকতাবাদের মধ্যকার লড়াইয়ের মতো একপেশে দৃষ্টিতে দেখার বিরুদ্ধে আমাদের সকলকে সতর্ক করতে চাচ্ছি। তসলিমা নাসরীন নিজেই কখনও কখনও এ-দৃষ্টিভঙ্গিকে পুষ্ট করেছেন। তাঁর ওয়েবসাইটে তিনি বলছেন, ‘মানব-জাতি একটা অনিশ্চিত ভবিষ্যতের মুখোমুখি। সুনির্দিষ্টভাবে যেখানে দুটি ভিন্ন ধারণার – ‘লোকায়তবাদ ও মৌলবাদের – মধ্যকার সংঘাত।‘ আমি একে মূলতঃ আধুনিক, সুবিবেচক ও যৌক্তিক চিন্তার সাথে অবিবেচক ও অন্ধ বিশ্বাসের সংঘাত বলে মনে করি। এ-সংঘাত ভবিষ্যত এবং অতীতের মধ্যকার, নবধারার সাথে সনাতনী ধারার, যারা বাক-স্বাধীনতাকে মূল্যায়ন করেন এবং যারা করেন না তাদের মধ্যকার।
অবাক ব্যাপার, ভারতের কমিউনিস্ট পার্টি (মার্কসবাদী) নেতৃত্বাধীন পশ্চিমবঙ্গ সরকার, যারা নিজেদের লোকায়তবাদী, আধুনিক, যৌক্তিক এবং সুবিবেচক চিন্তা-ধারার বলে মনে করেন, তারাই নাসরীনের আত্মজৈবনিক উপন্যাস ‘দ্বিখন্ডিত‘ একবার নয়, দু-দুবার নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছেন। দুবারই কলকাতা হাইকৌর্ট এ-নিষেধাজ্ঞা সফলভাবে চ্যালেইঞ্জ করেছে। বইটি প্রকাশিত হয়েছে এবং চার বছর ধরে কলকাতার মানুষ এটি পড়েছে। তসলিমা নাসরীনও কলকাতায় থাকলেন এবং কোনো ঘটনা ছাড়াই ব্যাপারটা এভাবেই চলছিলো। পরে নন্দীগ্রাম ঘটনাটি ঘটলো। মুসলমান এবং দলিতরা নিয়মিত সরকারী আক্রমণে ত্যক্ত বিরক্ত। সিপিআই (এম) মুসলমান ভৌট হারানোর ভয়ে উদ্বিগ্ন। সুতরাং তারা খেলায় তসলিমা তাসটি ছাড়ে। ইণ্ডিয়ান এক্সপ্রেসে মোহাম্মদ সফি শামসির প্রতিবেদনে বিষয়টি তুলে ধরা হলো।
সরকার ২০০৭-এর অক্টোবরের শেষদিকে নন্দিগ্রাম পুনরুদ্ধার তৎপরতা শুরু করেঃ ১ নভেম্বর, সিপিআই (এম) প্রকাশিত একটি পত্রিকা পথসংকেতে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক লেখকের একটা চিঠি ছাপা হয়, যাতে লেখক নবী মোহাম্মদের বিরুদ্ধে কিছু ভিত্তি–হীন অবমাননাকর মতামত (ব্যক্তিগত)-সহ তসলিমা নাসরীনকে সমর্থন করেন। ৮ নভেম্বর সরকার পত্রিকাটিকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করে এবং সম্পাদকীয় পর্ষদের একজন চিঠিটা ছাপানোর ঘটনাকে একটা ঐতিহাসিক ভুল হিসেবে বর্ণনা করেন। কিন্তু স্থানীয় পত্রিকাগুলো চিঠিটি ছাপে এবং চিঠির অনুলিপি মুসলিম অধ্যুষিত এলাকাগুলোতে বিতরণ করা হয়।
সপ্তাহ খানেক পর ২১ নভেম্বর সরকার কর্তৃক গৃহীত ব্যবস্থার প্রতিবাদে নন্দীগ্রামে ষাট হাজারেরও বেশি মানুষ রাস্তায় নেমে আসে। অল্প পরিচিত অল ইণ্ডিয়া মাইনরিটী ফৌরাম এর পাল্টা প্রতিবাদ আয়োজন করলে তা দাঙ্গায় রূপ নেয়। সেনাবাহিনী ডাকা হয় এবং সরকার তসলিমা নাসরীনকে পশ্চিমবঙ্গ থেকে বের করে দেয়।
আজ ১৩ ফেব্রুয়ারী আমরা ‘বাক-স্বাধীনতা’ নিয়ে আলোচনা করতে জড়ো হয়েছি। নন্দীগ্রাম পুনরুদ্ধার বা সেখানকার জনগণের উপর চলমান সন্ত্রাসী তৎপরতা, অবমাননা এবং ধর্ষণ নিয়ে নয়। এটা বেশ পরিস্কার মনে হচ্ছে, বাক–স্বাধীনতার দিকে কেমিক্যাল হাব ও লৌহ-আকর খনি এবং ভূমি অধিগ্রহণ, সীমানা এবং গণ-উচ্ছেদ থেকে যেরকম হুমকি আসছে, ধর্মীয় গোঁড়ামীবাদ থেকেও একইভাবে আসছে। এদিকে যাতে দৃষ্টি না যায়, সে-জন্য আমাদের সামনে চতুরতার সাথে এ-ফাঁদটি পাতা হয়েছে।
ধর্মীয় মৌলবাদীরা – বিশেষ-করে যারা সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের তারা – প্রায়শঃ তাদের জন্য প্রস্তুতকৃত ছকের মধ্যেই সক্রিয় থাকছেন। তাদের চরম ঔদ্ধত্য অকৃত্রিম। যদিও তা পরনির্ভরশীল এবং মারত্মক কার্যকর রাজনৈতিক কৌশল হিসেবে অন্যদের পরবর্তী কর্মসূচি হয়ে উঠতে পারে। প্রকাশ ও বাক-স্বাধীনতার অনেক ধরণের মৌলবাদের সাথে দর কষাকষি করতে হয়। ধর্মীয় মৌলবাদ, উগ্রজাতীয়তাবাদী মৌলবাদ ও বাজার মৌলবাদ – এরা কখনও কখনও আবার বিস্ময়করভাবে পরস্পর গ্রন্থিত।
বাক স্বাধীনতা মৌলিক অধিকার হিসেবে ভারতীয় সংবিধান আমাদের দান করেছে, এটা বিশ্বাস করে অনেক উদারপন্থী ভুল করেন। তারা মনে করেন, যখন হয় রাষ্ট্র বা ভিজিল্যান্ট মিলিশিয়া কিংবা খুনী জান্তা তা খর্ব করে, তখন সংবিধান পরাহত হয়ে পড়ে। এটা ঠিক নয়। বাক স্বাধীনতা আমাদের সাংবিধানিক অধিকার নয়। এটা নিয়ন্ত্রিত অধিকার, শর্তসমূহ দ্বারা আবদ্ধ। সে-সব শর্ত যা ক্ষমতাধারীরা ক্ষমতাহীনদের নিয়ন্ত্রণ ও শাসন করতে ব্যবহার করে। এখন আমরা ভারতে নতুন ধরণের কিছু আইন পেয়েছি, যা শুধু বাকস্বাধীনতাই নয়, খোদ অধিকারগুলোওনির্দিষ্ট করে দিচ্ছে। এ এক নির্মম পরিহাস ও দূরবর্তী স্বপ্ন| বেআইনী তৎপরতা প্রতিরোধ আইন (ইউএপিএ) যেখানে সন্ত্রাস প্রতিরোধ আইন এবং সন্ত্রাস ও ধংসাত্মক তৎপরতা (প্রতিরোধ) আইনের (টিএডিএ) মতো জঘন্য ধারাগুলো অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। সংঘবদ্ধ অপরাধ নিয়ন্ত্রণ আইন মহারাষ্ট্র, সংঘবদ্ধ অপরাধ নিয়ন্ত্রণ আইন মধ্যপ্রদেশ এবং বিশেষ সার্বজনীন নিরাপত্তা আইন ছত্তিশগড় (সিএসপিএসএ) রয়েছে। এগুলোর মধ্যে কিছু আইন আছে, যেখানে এমন কিছু ধারা সম্পৃক্ত করা হয়েছে যে, দেখে মনে হয় এর একমাত্র উদ্দেশ্য হচ্ছে সবাইকে অপরাধী বানানো এবং পরে সরকারকে সুযোগ করে দেয়া যেনো সে-অবসরে কাকে-কাকে কয়েদ করবে, তার সিদ্ধান্ত নিতে পারে। যেমন, সিএসপিএসএ এবং ইউএপিএর অধীনে সরকার কোনো ধরণের নির্দিষ্ট কারণ দর্শানো ছাড়াই এক-তরফাভাবে যে-কোনো সংগঠনকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করতে পারে।
অরুন্ধতি রায়, গিরিশ কার্নাদ, এবং মহাশ্বেতা দেবীকে মঞ্চে দেখা যাচ্ছে তসলিমা নাসরীনের বাক স্বাধীনতার ব্যাপারে সোচ্চার হতে
এখানে সিএসপিএ সংগঠনকে যেভাবে সংজ্ঞায়িত করেঃ সংগঠন মানে একটা দল বা গোষ্ঠীর ব্যক্তিদের সংযুক্তি যারা কোনো স্বতন্ত্র নামে পরিচিত হতেও পারে, বা নাও পারে এবং সংশ্লিষ্ট আইনের অধীনে নিবন্ধিত হতেও পারে নাও পারে এবং যা কোনো লিখিত সংবিধান দ্বারা পরিচালিত হতেও পারে বা নাও পারে।
মনে রাখবেন, আইনটির অনির্দিষ্ট শর্তগুলোঃ জালটার (আইন) বিস্তৃতি যতো বেশি হবে নাগরিক ও গণতান্ত্রিক অধিকারগুলোর প্রতি হুমকি ততো বাড়বে।
এবার সিএপিএসএ যেভাবে বেআইনী তৎপরতাকে সংজ্ঞায়িত করেঃ এমন (নিষিদ্ধ ঘোষিত) ব্যক্তি বা সংগঠন দ্বারা কাজে বা কথায় বা লেখনীতে, প্রতীকী কিংবা দৃশ্যমান উপস্থাপনার মাধ্যমে বা অন্য-কোনোভাবে পরিচালিত তৎপরতা। জালটা আরও কিছু উপধারা দ্বারা প্রশস্ত করা হয়েছেঃ
১) যা জনসাধারণের শান্তি শৃঙ্খলার জন্য বিপদজনক বা হুমকি স্বরূপ
২) যা জনগণের শৃঙ্খলা রক্ষণাবেক্ষণের ওপর হস্তক্ষেপ করে বা করতে চায় এবং লক্ষণীয়ভাবে
৩) প্রতিষ্ঠিত আইন ও এর প্রতিষ্ঠানগুলোকে অগ্রাহ্য করতে উদ্বুদ্ধ করা বা প্রচার করা। ৮ (৫) অনুচ্ছেদে বলা হচ্ছে কেউ যদি বেআইনী তৎপরতা চালায় বা সহযোগিতা করে বা চেষ্টা করে বা উৎসাহ দেয় তবে সে যেই হোক তাকে শাস্তি হিসেবে সাত বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড দেয়া হবে।
সুতরাং এখন তারা ছত্তিশগড় সরকারের মধ্যে একাধারে মর্মজ্ঞ এবং ভবিষ্যৎ দ্রস্টা পেয়েছেন।
এধরণের আইনের অধীনে কীভাবে বাক-স্বাধীনতা ev অধীকারের ভণ্ডামি থাকতে পারে? গোটা দেশ-জুড়ে শুধু সাংবাদিক বা লেখকরা নন, যে-কেউ – যিনি সরকারের পরিকল্পনার সাথে ভিন্নমত পোষণ করবেন তাকে – গ্রেফতার, নির্যাতন ও কারাবরণ করতে হবে। কখনও হত্যার শিকার হতে হবে।
মাওবাদী আদর্শের প্রতি সহানুভূতিশীল হবার কারণে পিপলস মার্চ নামের একটা পত্রিকাকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে এবং এর সম্পাদক গোবিন্দ কুট্টিকে গ্রেফতার করে কারারুদ্ধ করে রাখা হয়েছে। মাওবাদীদের মত-প্রকাশে যতোটা, ঠিক ততোটাই মতাদর্শ প্রতিষ্ঠিত করার অধিকার রয়েছে। যদিও সরকার বা অন্য যে-কেউ সস্তা জন-প্রিয়তার মধ্যে, তথাকথিত চিন্তার বাজারে একে ঘৃণ্য পন্থা বলে মনে করতেই পারেন।
আমি বিশ্বাস করি খুব দ্রুত পিপলস মার্চের উপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়া এবং এর সম্পাদক শর্তহীনভাবে মুক্তি দেয়া উচিত।
সবশেষে আমি বলব অবশ্যই বাক স্বাধীনতার জন্য লড়াই যেন কোনভাবেই শুধুমাত্র লেখক, সাংবাদিক ও শিল্পীদের অধিকারের মধ্যে সীমাবদ্ধ করা না হয়। আমরা এ-অধিকারের একমাত্র দাবীদার নই। সম্প্রতি ছত্তিশগড়ের এক বন্ধু আমাকে একজন ডাক্তারের কথা বললো, যাকে গ্রেফতার করা হয়েছে এ-কারণে যে-কোন এক নকশালপন্থীর ব্যাগে তার করা একটা প্রেসক্রিপশন পাওয়া গেছে।
ছত্তিশগড়ে ৬৪৪টি গ্রাম থেকে সেখানকার অধিবাসীদের সরিয়ে নেয়া হয়েছে। কর্পোরেইট খনি কার্যক্রমের জন্য প্রয়োজনীয় জায়গা খালি করার উদ্দেশ্যে তিন লক্ষাধিক মানুষকে অপসারণ করা হয়। ৫০ হাজার মানুষ পুলিস ক্যাম্পে বসবাস শুরু করছে এবং ভয়ঙ্কর সালওয়া জুডুমুর (ধারণা করা হয় রাজ্য সরকার দ্বারা সৃষ্ট এবং অর্থপুস্ট মাওবাদ বিরোধী গণ-মিলিশিয়া) অন্তর্ভুক্ত হচ্ছে। দশ সহস্রাধিক মানুষ এ-আতঙ্ক থেকে পালিয়ে পার্শ্ববর্তী রাজ্যে আশ্রয় নিয়েছে। কেউ তাদের গ্রামে ফিরতে বা ভূমিতে আবাদ করতে দিচ্ছে না। একজন কৃষকের জন্য প্রকাশের স্বাধীনতা কী? শহরে জোড় গুজব। একটা নতুন আইন আলোচনাধীন রয়েছে যেখানে বলা হচ্ছে যদি দু-বছর কোনো আবাদী জমিতে চাষ না হয় তবে তা অকৃষিখাতে ব্যবহার করা যাবে।
রাষ্ট্র সব-ধরণের প্রতিরোধ, শান্তিপূর্ণ বা অন্য যেকোন উপায় বন্ধ করে দিয়েছে। আলোচ্য সবক্ষেত্রেই, গৌল্ডফিশেরা আটকা পড়েছে, ডায়াররা আমাদের সকলকে শাসাচ্ছে এবং যারাই প্রতিষ্ঠিত আইন ও তার প্রতিষ্ঠানগুলোর বিরোধিতাকে উৎসাহ প্রদান ও প্রচারের ধারণাকে গ্রহণ করেছেন তাদেরকে ডঃ বিনায়েক সেনের মত মিথ্যা অভিযোগ, ভুয়া প্রমাণাদির হট্টগোলে কারা-বরণ করতে হচ্ছে।
ডঃ বিনায়ক সেন, যিনি পিপলস ইউনিয়ন ফর সিভিল লিবার্টীজের সাথে একজন নাগরিক অধিকার-কর্মী এবং এলাকায় ৩০ বছর ধরে চিকিৎসক হিসেবে কাজ করছেন, তাঁকে গত মে মাসে গ্রেফতার করা হয়। সিএসপিএসএ, ইউএপিএ এবং ভারতীয় ফৌজদারী দণ্ডবিধির অধীনে তাঁকে অভিযুক্ত করা হয়। এমনকি সুপ্রীমকৌর্টের জামিনাদেশ উপেক্ষা করে তাঁকে কারারুদ্ধ করে রাখা হয়েছে।
বিনায়েক সেনের মতো ব্যক্তিকে কারারুদ্ধ করে সরকার শান্তিপূর্ণ ও গণতান্ত্রিক উপায়ে প্রতিরোধের সমস্ত পথ বন্ধ করে দেবার চেষ্টা করছে। এটা বুশবাদী চিন্তাধারার মেরুকরণ সৃষ্টি করছে – তুমি আমাদের সাথী অথবা সন্ত্রাসীদের সঙ্গী – যেখানে জনগণের সামনে দুটি পথের যে-কোনো একটি বেছে নেয়ার সুযোগ আছে। দারিদ্র এবং মৃত্যু অথবা আত্ম-গোপনে যাওয়া এবং অস্ত্র-হাতে প্রতিরোধ করা। এটাই হয় গৃহ-যুদ্ধের অথবা গরীব নিধনের সূচনা। একবার বোতলের জ্বীন বেরিয়ে পড়লে তা আর ঢুকানো যাবে না। খবরে প্রকাশ ছত্তিশগড় রাজ্য সরকার সেখানে আরো ৭০ ব্যাটেলিয়ান প্যারামিলিশিয়া চেয়েছে যেখানে আগেই ১৭ ব্যাটেলিয়ান রয়েছে। চতূর্গুণ বৃদ্ধি! আমি খুব খারাপ কিছুর শঙ্কা করছি।
তাই আমি এ-মঞ্চ থেকে তসলিমা নাসরিনের নাগরিকত্ব অনুমোদনের দাবী জানাচ্ছি। বিনায়েক সেন, গোবিন্দ কুট্টি এবং অন্য সাংবাদিক যাদের নাম এ-সংবাদ সম্মেলনে উল্লেখ করা হয়েছে – অভিজ্ঞ সাংবাদিক এবং শান্তির কর্মীরা যারা মনে করেন, এ-পরিস্থিতিগুলোর বাস্তবতাসমূহ পরিবেশনের মধ্য দিয়ে ভয়ঙ্করভাবে টালমাটাল এবং ধ্বংসাত্মক জাহাজটা মেরামত করা সম্ভব – তাদের আশু এবং শর্ত-হীন মুক্তি দাবী করছি। আর যদি একবার পতন শুরু হয়, প্রত্যেকে ক্ষতিগ্রস্থ হবে। গরীবরাতো বটেই, ধনীরাও রেহাই পাবে না। লুকানোর কোনো জায়গা থাকবে না। আমাদের সামনে ভীতিকর-রূপে প্রতীয়মান অশরীরী মূর্তিটির দিকে উপস্থিত সকলের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। এ-সব ভীতিকর নব্য আইন, যা কেবল বাক স্বাধীনতা নয়, খোদ স্বাধীনতাকেই শাসাচ্ছে, সেগুলোকে রদ করার দাবীতে ঐক্যবদ্ধ লড়াই শুরু করার আহ্বান করছি।
অরুন্ধতী রায় বুকার পুরস্কার খ্যাত ভারতীয় লেখক এবং মানবাধিকার কর্মী। তার বিবৃতিটি ১৩ ফেব্রুয়ারী ২০০৮, নয়া দিল্লি, ভারতের বিভিন্ন পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছিলো। জুরান কবিরের অনুবাদটি নেওয়া হয়েছে ইউকেবেঙ্গলিডটকম পত্রিকা থেকে
:rotfl: