সেকুলারিজম রিটার্নের নমুনায় আমরা শংকিত
আতিক রাঢ়ী
গতকাল ফার্মগেট হয়ে যাচ্ছিলাম। আমার মত যারা ওখানে গেছেন তারা সবাই দেখেছেন। কি দেখছেন ? দেখেছেন সুবিশাল তোরন নির্মানের কাজ চলছে। গম্বুজ ও মিনারের বাঁশের কংকালে ছেয়ে যাচ্ছে পুরো পার্কটি। ঘীরেফেলা হচ্ছে পার্কটিকে। খোঁজ নিয়ে জানতে পারলাম, জনৈক মহান সুফী-সাধক ওখানে মাহফিল করবেন। তারই প্রস্তুতি চলছে পুরোদমে। পার্কের মাঝখানে প্যান্ডেল করা হয়ে গেছে। মাইক তাক করা চলছে।দু-এক দিনের মধ্যেই হয়তো গর্জে উঠবে মাইক গুলো।আসেকানদের প্রেম সংগীতে, চিৎকারে, কোরাসে ভারী হয়ে উঠবে বাতাস।
খুবই কষ্ট লাগলো পার্কের গাছ গুলোর কথা ভেবে। সব গাছের নাম আমি জানিনা। কিন্তু সমবেত আসেকানদের পদভারে ক্ষুদ্র পাতাবাহারগুলোর পরিনতি সহজেই অনুমেয়। আর সেটাই আমাকে কষ্ট দিচ্ছে।
আমি জানিনা, এই মহামান্য পীর সাহেবের দোয়ার ফজিলতেই মহাজোট ক্ষমতায় গেছে কিনা ? অথবা এরশাদ সাহেবের পুরাতন রোগ মাথাচারা দিলো কিনা ? তবে এটা বুঝতে কষ্ট হবার কোন কারন নাই যে, উপর মহলের অনুমতি ছাড়া এই স্বযত্নে লালিত বাগানটির এমনতর ব্যাবহার সম্ভব।
সেকুলারিজম রিটার্নের নমুনায় আমরা শংকিত। পীর সাহেবের ভক্তকুল ইতিমধ্যে বেশ কিছু গাছ কেটেও ফেলেছে দেখলাম। পার্কটার Permanent বরাদ্দ হলোকিনা জানা দরকার। অথবা ওয়াজ- মাহফিলের জন্য নির্ধারিতও হতে পারে। পল্টন ময়দান যেমন রাজনৈ্তিক সভার জন্য বরাদ্দ তেমন আর কি।
গতকাল যুগান্তরে বদরউদ্দিন ওমরের লেখাটির কথা মনে পড়ছে। তিনি বলেছেন, শেখ হাছিনা চীন-বাংলাদেশ মৈত্রী সম্মেলন কক্ষে নির্বাচন উত্তর সাংবাদিক সম্মেলনে বলেছেন-১৯৯৬ থেকে ২০০১ ছিলো বাংলাদেশের ইতিহাসের স্বর্নযুগ।মানেটা হচ্ছে আওয়ামিলীগ কোন শিক্ষাই গ্রহন করেনি। তাদের স্বর্নযুগের পরিসমাপ্তি ৬২টি আসন প্রাপ্তির মধ্যে দিয়ে হয়েছিলো কেন তা ক্ষতিয়ে দেখার প্রয়োজন তারা বোধ করেননি। আসলে বিগত বছর গুলোতে আওয়ামিলীগ এমন কিছুই করেনি যে জন্য জনগেনর তাদেরকে কোলে তুলে নিতে হয়েছে। উপযুক্ত বিকল্পের অভাবে বাধ্য হয়েই জনগন এটা করেছে। আর এখন নির্বাচন শেষে তিন-চতুর্থাংশ আসনের মালিক মহাজোট যাতে দুই-তৃ্তীয়াংশ আসনের সাবেক মালিক, চার দলীয় জোট সরকারকে অপশাসনের দিক দিয়ে ছাড়িয়ে না যায় সেজন্য উপরওয়ালার কাছে প্রার্থনা করা ছাড়া তাদের এখন আর কিছুই করার নেই।
এখন রাজনিতীবিদগন তাদের সীমাহীন প্রজ্ঞাদিয়ে বিষয়টা যদি আঁচ করে ফেলেন যে তারা পালাক্রমে ৫ বছর অন্তর ক্ষমতার অমীয় স্বাদ পাবেন যেহেতু জনগনের তেমনটাই ইচ্ছা।তাহলে একটু ধৈর্য ধারন করলে হানাহানি ছাড়াই ৫ বছরের হরিলুটের সুযোগকে ধীরে-সুস্থে, আরো শৈ্ল্পিক ভাবে কাজে লাগাতে পারবেন। এতে করে অযথা প্রানক্ষয় অন্তত রোধ করা যাবে।
ফিরে আসি পার্কটির প্রসংগে।
এই ন্যাড়া শহরে যে কটা পার্ক এখনও অবশিষ্ট আছে তার মধ্যে ফার্মগেটের এই পার্কটা অন্যতম। গৃস্মমন্ডলীয় এই ঘনবসতির শহরে একটা পার্ক যেন একটা মরুদ্যান। বহু পার্ক, খেলার মাঠ বেদখল হয়েগেছে আমার চোখের সামনে। শৈশব থেকে দেখতে দেখতে এই বেদখলের পুরো প্রক্রিয়াটির একজন বিশেষজ্ঞ পর্যবেক্ষক হয়ে গেছি আমি। খুব সংক্ষেপে এব্যাপারে আমার অভিজ্ঞতা তুলে ধরার চেষ্টা করছি এখানে।
একটা সুন্দর পার্ক। কোন এক সুন্দর সকালে দেখবেন কে বা কারা যেন এর অপেক্ষাকৃ্ত নির্জন কোনে মল-মূত্র ত্যাগ করে রেখেগেছে। কিছুদিন পরে দেখবেন সেই বিশেষ কোনটা জনগন এড়িয়ে চলছে। দিন দিন আবর্যনা স্তুপ হতে থাকবে ঐ কোনায় আর তার বিস্তার ক্রমশ বাড়তে থাকবে। কিছু দিনের মধ্যে ঐ নোংরা অংশের রেলিং অদৃশ্য হতে দেখবেন।সেই সাথে দেখবেন কিছু ভবঘুরে মাদকাশক্ত ঐ বিশেষ কোনটি তাদের অধিকারে নিয়ে গেছে।আস্তে আস্তে পুরো পার্কটি একদিন রেলিং শুন্য হয়ে যাবে। এবারে মল-মূত্রের বিস্তার দেখা যাবে পার্কটির যত্রতত্র।জনগনের মুখরতা কমতে থাকবে আর বাড়তে থাকবে মাদকাশক্তদের ভীড়। এরপর পার্কটি একদিন পুরোপুরি চলেযাবে মাদকাশক্তদের অধিকারে।দূর্গন্ধ এড়াতে জনগন তখন ঐ পার্ক সংশ্লিষ্ট পথগুলো এড়িয়ে চলতে শুরু করবে।নতুন উপস্বর্গ হিসাবে উক্ত এলাকায় ছিনতাই রাহাজানির ঘটনা বাড়তে থাকবে। এরপরে জনগন একদিন বুঝতে পারবেন, তাদের সকল দুঃখের কারন ঐ নোংরা পার্কটি। ঠিক এই সময় একজন বা একদল ত্রাতার আবির্ভাব হবে দৃশ্যপটে। প্রতিরোধ কমিটির নামে কখনও স্কুল কমিটি, কখনও মসজিদ কমিটি আবার কখনও সচেতন এলাকাবাসির ব্যানারে জড়োহবে কিছু ভূমিদস্যু। পার্কটির দূরবস্থা দূর করতে একদিন দেখবেন ইট, বালূ আসছে আর আপনার হতবিহবলতা কাটতে না কাটতেই দেখবেন একটি মার্কেট গড়ে উঠছে সেখানে। এভাবেই আমার শৈশবের সব পার্কের চীর বন্ধন মুক্তি হয়েছে।
তাইতো নচিকেতাকে যখন গাইতে শুনি-
“ তৈ্রী করে ইমারত আকাশটা ঢেকে দিয়ে
চুরি করে নিয়ে যায় বিকেলের সোনা রোদ।
ছোট ছোট শিশুদের শৈশব চুরি করে
গ্রন্থ কিটের দল বানায় নির্বো্ধ।
তখন এক গভীর একাত্ততা বোধ করি। আর ভাবি দাদা তোমাদেরও ? আমিতো ভেবেছিলাম কেবল আমাদেরি হয়েছে এমন। আমার বাচ্চাকে দেখলে খুব কষ্ট হয়। ও ঘাস দেখে না। ওর পৃ্থিবী ঘাস শূন্য। ইট, কাঠের জজ্ঞালে বন্ধী ওর শৈশব। ভয় হয়, সে যদি আমাকে তার পঙ্গু শৈশবের জন্য দায়ী করে, আমি কি জবাব দেব ?
সেই দায়বদ্ধতা থেকেই আজকে লিখতে বসেছি। আমি প্রতিবাদ জানাচ্ছি এই অনাচারের। সচেতন সবাইকে অনুরোধ জানাচ্ছি প্রতিবাদ করার জন্য। আমরা আন্তরিক ভাবে চাই সবকিছু বদলে যাক। এই চাওয়াটাই জনমত। যেটা উপেক্ষা করা কারো পক্ষেই সম্ভব না। আমাদেরকে সকল অনিয়ম, সকল অযৌক্তিক কাজের প্রতিবাদ করতে হবে।
মাহফিল করার জন্য পার্কের ব্যাবহার কেন ? অনেক মাঠ রয়েছে, যেখানে কিছুদিন পূর্বেও গরুর হাট বসেছিল। ঐ সকল উপযুক্ত স্থানগুলোকে বাদ দিয়ে পার্কে মাহফিল করতে হবে কেন? এই আবদারই বা কেন আর এই অযৌক্তিক আবদার রক্ষা করাই বা কেন ? তবে আমাদেরকে কি ধরে নিতে হবে যে পীর সাহেব এতই শক্তিশালীযে তার ইচ্ছার বিরূদ্ধে যাওয়া আমাদের সরকার বাহাদুরের পক্ষে সম্ভব না বা উনাকে রাগালে তাদের ভাগ্যাকাশে সরাসরি গজব নেমে আসবে? জানিনা কার কাছে উত্তর খুঁজব। তবে আমার প্রশ্নগুলো জনগনের কাছে। আমি মনে করি উত্তর জনগনকেই খুঁজে বের করতে হবে। কারন আমি বিশ্বাস করি- জনগনই সকল ক্ষমতার উৎস।
It’s a disgrace to destroy the beautiful park land.
I love that country so much that when I see all these abuses I can’t stay quite. What can we expect from Hashina, who initiated election campaign with Mazar Ziarot? I do not see any revolutionary or visionary ability in her. She is insecure and appears to be dependent on her religious faiths for making major decisions. We needed a strong pragmatic leader, not a religious house-wife, to run this country.
Who will suffer, as a result? The country, I love so much. This incompetent so called leader will make one after another wrong decisions, based on faith, not on the basis of any national interest or progress. Destruction of a beautiful park land and surrounding beautiful shrubs for temporary religious rituals is one of them. So many other vacant lands were available to them, yet they choose this beautiful park. As I recall, flower garden is not a very favorite thing for religious people. They could even destroy them on purpose when they congregate.
As far as secularism is concerned, I am not sure how much her faith will allow. We have to wait and see. It is unfortunate that, even after acquiring absolute majority, she is unable to use her political capital for the good of the country. Instead, she is clinging to her religious belief to lead this beautiful country to the ruin. Weather pattern already has changed in Bangladesh; water level is going down and receding fast. Yet, we see such an abuse on the nature. Although, it has been only a few days, I am already tired of her stupid comments, whatever she has said so far (the most famous one is about the golden years of her last administration). Give me a break! Can she fire her speech writer, if there is any?
If Awami League cannot revive secularism and Bangalee-Nationalism even after land-slide victory, the country is going to be doomed. The religious zealots will bring another mayhem and massacre and turn this country into a desert land of their dreams.
Jiten Roy
What can I say?
One of my family friend said the other day, “Americans went to the outer space by thinking a lot; and Mohammed went just by believing in Allah.”
Lao and kodu is the same thing.
I saw this peer shahib start arranging for his mahfil, much before the election. So no way we blame this govt for this. but we can wait to see weather govt keep this order or scrap it.
But my concern in another topic. During oath taking
ceremony only recite from quran was ther, no geeta, no tripitok. As i can remember during 1996-2001 term all govet ceremony start with recite from all religious scripture..Pls keep an eye on this matter. there may be a wrong signal to other believers. thank you
জাহেদ ভাইয়ের সাথে আমি একমত। it’s too early to assess। একি সাথে আতিক সাহেবের আশঙ্কাও অমুলক কিছু না। বর্তমান প্রধানমন্ত্রীর অতিতের কথাবার্তা এবং কাজকর্ম দেখার পর, নির্বাচনে পাস করার পর তার স্বর্নযুগ এর উল্লেখ করার পর আশঙ্কা জাগতেই পারে। ৯৬ এর হিজাব পরা, এই নির্বাচনের আগে ওলামাদের সাথে চুক্তি, মাজার জিয়ারত করে নির্বাচন শুরু; শংকিত না হয়ে উপায় কি ভাই।
একিসাথে আশার আলোও আছে। আগের বি.এন.পি সরকার বা আগের টার্মের আ.লীগ সরকারের তুলনায় এবারের মন্ত্রীসভা অনেক পরির্ছন্ন। দলের কোন বিতর্কিত নেতারই এবার মন্ত্রীসভায় ঠাই হয় নাই। একান্ত অনুগত তরুন এবং পরিচ্ছন্ন ইমেজের এই মন্ত্রীসভা, দেশ পরিচালনায় শেখ হাছিনারর নীতি এবং আদর্শের প্রয়োগ সহজ করে দেবে।
i think it’s too early to assess, to what extent, the newly elected government is secular. let more time pass.
আমাদের রাজনৈতিক সংস্কৃতি সম্পর্কে আমার যতটুকু জ্ঞান তাতে নির্বাচনের ফল জেনে জাবার পরক্ষন থেকেই বিজয়ী পক্ষের জন্য পার্ক বরাদ্ধ জাতীয় ব্যাপারে সিটি কর্পো্রেশন বা সংশ্লিষ্ট মন্তনালয়কে প্রভাবিত করার জন্য একটা ফোনই যথেষ্ট।
আমি আমার আশংকার কথাই বলেছি। আমি সর্বান্তকরনে চাই আমার আশংকা ভুল প্রমানিত হোক।
পার্কটির জন্য আপনার মত আমারও খারাপ লাগছে। এমনিতেই দম ফেলার মত জায়গা ঢাকা শহরে নেই বললেই চলে। তার উপর যদি এই রকম পীর সাহেবদের মত বেয়াক্কেল লোকজনদের অত্যাচারে সামান্য যেটুকু আছে সেটুকুও ধ্বংস হয়ে যায় তাহলে সেটা মেনে নেয়াটা কষ্টকরই বটে। কিন্তু যে জিনিষটা আমি বুঝলাম না তা হচ্ছে এর সাথে আপনার সেকুলারিজম রিটার্নের নমুনায় শংকিত হওয়ার কারণটা। মহাজোট সরকারের মন্ত্রীসভা মাত্র গতকাল শপথ নিয়েছে, আনুষ্ঠানিকভাবে কাজকর্মও মনে হয় শুরু করেনি তারা এখনো। পার্কে সম্মেলন করার জন্য পীর সাহেব যে তাদের কাছ থেকে অনুমতি নেয়নি সেটাতো পরিষ্কার বোঝা যাওয়ার কথা।