বিশ্বাসের ভাইরাস এবং আনুষঙ্গিক
অভিজিতদার বিশ্বাসের ভাইরাস লেখাটা মন দিয়ে পড়লাম। লেখার শেষে আলোচনাও পড়লাম। মূল দুটো পয়েন্ট উঠে আসে, একটা সামাজিক অবিচারের কথা – আরেকটা ধর্মান্ধতার কথা। আমার মনে পড়ে গেল, অনেককাল আগে আমি ভারত-পাকিস্তান ফ্রেন্ডশিপ ফোরামে অনেক কাল ধরে আমি হিংসার কারণ খুঁজেছি। অনেক খুঁজে আমি কিছুটা হলেও নিজের মত একটা তত্ত্ব দাঁড় করিয়েছি। সেই তত্ত্ব নিয়েই লেখা।
শুরু করা যাক ভারতীয় হিন্দু দক্ষিণপন্থার উত্থান দিয়েই। হিন্দু দক্ষিণপন্থীরা সবসময়েই ভারতে একটা বড় শক্তি হিসাবে ছিল, কিন্তু বামপন্থী আর দেশপ্রেমিক ধর্মনিরপেক্ষদের সংখ্যাও কম ছিল না। তাই ১৯৯১ এর ভোটের আগে পর্যন্ত রাজনৈতিকভাবে এদের ততটা অস্তিত্ব ছিলই না। কিন্তু গত কুড়ি বছরে এরা দ্রুত সারা ভারতে এদের দক্ষিণপন্থী মতবাদ ছড়িয়ে দিতে সক্ষম হয়েছে। কি ছিল সেই অস্ত্র যা দিয়ে এরা এদের এজেন্ডা সবার কাছে পৌঁছে দিয়েছে? এরাও কিন্তু সেই সামাজিক অবিচারের কথা শুনিয়েই মতবাদ প্রতিষ্ঠা করে।
এই অবিচারের প্রচারের নিদর্শন পাওয়া যায় ভারতে আর এস এস পরিচালিত স্কুলগুলোতে। বিদ্যা ভারতী নামের এই স্কুল সারাদেশের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে আছে – সংখ্যায় প্রায় ২০,০০০। প্রায় ২৫ লাখ শিক্ষার্থী এতে পড়াশোনা করে – যাদের অধিকাংশই গরিব বা নিম্নমধ্যবিত্ত ঘরের। পড়াশোনা চলে প্রথম থেকে দ্বাদশ শ্রেণী অবধি। তিস্তা সেতালবাদের লেখায় পাওয়া যায় কিভাবে এদের মগজ ধোলাই করা হয়। সংস্কৃত পাঠে পাওয়া যায় –
“হোমার বাল্মীকির রামায়ণের একটা ভাবানুবাদ করেছিলেন – যার নাম ইলিয়াড।”
“প্লেটো ও হেরোডোটাসের মতে প্রাচীন মিশরীয় সভ্যতা ভারতীয় ভাবধারার ওপর ভিত্তি করে গড়ে উঠেছিল।”
“গরু আমাদের সকলের মাতৃস্থানীয়, গরুর শরীরে ভগবান বিরাজ করেন।”
একই স্কুলের ভারতের ম্যাপে ভারতকে দেখানো হয় বাংলাদেশ, পাকিস্তান, নেপাল, ভুটান, তিব্বত এমনকি মায়ানমারের কিছু অংশ নিয়ে। বলা হয় অশোকের অহিংস নীতির ফলে তার সেনাবাহিনী যুদ্ধে উৎসাহ হারিয়েছিল। আলেক্সান্ডার পুরুর কাছে যুদ্ধে হেরে গিয়ে ক্ষমাপ্রার্থনা করেছিলেন।
মধ্যযুগের ইতিহাস আসতেই আসল রূপ বেরিয়ে আসে। সমগ্র ইতিহাস শিক্ষায় মুসলিমদের বিদেশী শক্তি হিসাবে দেখানো হয়েছে।
“ভারতে বিদেশী মুসলিম শাসন …”
“ভারতে তরোয়াল ধরে ইসলামের প্রচার হয়েছিল। মুসলিমেরা এক হাতে কোরাণ আরেক হাতে তরবারি নিয়েই এসেছিল এদেশে … আমরা তাদের পরে তাড়িয়ে দিতে সক্ষম হয়েছি, কিন্তু আমাদের যে ভাইয়েরা ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেছিল, তাদের হিন্দুধর্মে ধর্মান্তরিত করতে ব্যর্থ হয়েছি।”
“হিন্দুরা চরম অপমানের সাথে তুর্কী শাসন মেনে নিয়েছিল।”
“বাল্যবিবাহ, সতীদাহ, পর্দাপ্রথা সহ আরো অনেক কুসংষ্কার মুসলিম রাজত্বের প্রতিক্রিয়া হিসাবে হিন্দুসমাজে স্থান করে নিয়েছে।”
“শিবাজী আর রাণা প্রতাপ ছিলেন প্রকৃত স্বাধীনতা সংগ্রামী। তারা মুসলিমদের দেশ থেকে বিতাড়িত করার জন্যই লড়াই করেছিলেন।”
এছাড়াও আছে বিন কাসিম, ঘৌরী বা গজনীর মামুদ বা তৈমুল লঙ্গ কিভাবে হিন্দুদের হত্যা করেছিলেন তার বিস্তারিত বর্ণনা। মধ্যযুগ থেকে আধুনিক যুগে এলেও অবস্থার কোনো উন্নতি ঘটে না। খ্রীষ্টানদের এবার বিদেশী শক্তি হিসাবে দেখানো শুরু হয় – ব্রিটিশদের নয়। দেশ বিভাগের জন্য একতরফা ভাবে মুসলিমদের দায়ী দেখানো হয়। আর এস এস-কে প্রকৃত স্বাধীনতাকামী একটি সংগঠন হিসাবে তুলে ধরা হয়। সবথেকে মজার কথা, মহাত্মা গান্ধী যে এই সংগঠনের একজনের হাতেই মারা গিয়েছিলেন, সেকথাও বেমালুম চেপে যাওয়া হয়।
সামগ্রিকভাবে, পাঠক্রম এমনভাবে সাজানো যাতে সবার মধ্যে ভাব সৃষ্টি হয় যে তাদের পূর্বপুরুষেরা মুসলিম ও খ্রীষ্টানদের হাতে অত্যাচারিত। তাদের ঘাড়ে দায়িত্ব বর্তায় তার প্রতিশোধ নেবার। নিউ ইয়র্ক টাইমস রিপোর্টার কাই ফ্রাইস এরকম একটি স্কুলে গিয়েছিলেন। ওনার বক্তব্য –
“৮ থেকে ১১ বছর বয়সী কিছু ছাত্রের সাথে দেখা করলাম। তারা সবাই ডাক্তার বা পাইলট হতে চায়। … তোমরা ধর্ম সম্বন্ধে কি শেখ? হিন্দু বা খ্রীষ্টান ধর্ম সম্পর্কে? … একজন বাচ্চা উঠে দাঁড়িয়ে বলে – ‘খ্রীষ্টানরা হিন্দুদের ঘরদোর ভেঙে ঢুকে তাদের হয় ভয় দেখিয়ে নাহলে লভ দেখিয়ে ধর্মান্তরিত করে’। … হয়ত এরা এই শেখে তাদের সমাজবিজ্ঞান ক্লাসে।”
যাদের পাঠক্রমই এরকম, তাদের ছোটোবেলা থেকেই কি শিক্ষায় খিক্ষিত করা হচ্ছে সে নিয়ে কোন সন্দেহ নেই। মজার কথা, এই সামাজিক অবিচারের ছবিই কিন্তু তুলে ধরা হচ্ছে এদের সামনে।
সমস্যার ব্যাপার এখন এই বই কিছু কিছু রাজ্য শিক্ষা পর্ষদও অনুমোদন করতে শুরু করেছে। রাজস্থানে ও গুজরাটে এ নিয়ে এর মধ্যেই বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে – এর শেষ কোথায় তা কেউ জানে না।
ভারতে যা কিছু হিন্দু উগ্রবাদী স্কুলের মধ্যে সীমাবদ্ধ আছে, পাকিস্তানে তা ছড়িয়ে পড়েছে রাষ্ট্রায়ত্ত শিক্ষাব্যবস্থার মাধ্যমেই। জাতিসংঘ পরিচালিত সাস্টেইনেবল পলিসি ডেভেলপমেন্ট ইন্সটিটিউট একটি রিপোর্ট প্রকাশ করেছিল পাকিস্তানের জাতীয় ও রাজ্য বোর্ডগুলোর পাঠক্রমের সমালোচনা করে। তাদের আলোচনায় চার ধরনের মূল সমস্যা তারা তুলে ধরেন –
১) পাকিস্তান শুধুমাত্র মুসলিমদের জন্য
২) সব ধর্মের ছাত্রদের জন্য কোরাণ ও ইসলামিয়ত শিক্ষা
৩) হিন্দু ও ভারতের প্রতি ঘৃণা
৪) ছাত্রদের জেহাদ ও শাহাদাতের পথে উদ্বুদ্ধ করা
একে একে সবগুলোর কিছু কিছু উদাহরণ দেখে নেওয়া যাক।
১) পাকিস্তান শুধুমাত্র মুসলিমদের জন্য
চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণীর ছাত্রছাত্রীদের উর্দু শিক্ষার পাঠক্রমে বলা হয়েছে
“ছাত্রদের মধ্যে মুসলিম রাষ্ট্রের বোধ আনতে হবে। ইসলামি শিক্ষার সাথে সঙ্গতিপূর্ণভাবে সবাইকে সৎ, দেশপ্রেমিক ও মুজাহিদ হতে হবে।”
একইভাবে পাঠ্যবইও লেখে –
“আমাদের দেশ হল পাকিস্তান। …পাকিস্তান একটি ইসলামি দেশ। এখানে মুসলিমেরা বাস করে। মুসলিমেরা এক আল্লহ-এ বিশ্বাসী।”
সরাসরিভাবে এ যেন জানিয়ে দেওয়া হয় যে পাকিস্তানী মাত্রেই মুসলিম, দেশের সংখ্যালঘুদের নিয়ে কোনো মাথাব্যাথাই রাখা উচিত নয়।
২) সব ধর্মের ছাত্রদের জন্য কোরাণ ও ইসলামিয়ত শিক্ষা
১৯৯৫ সালের প্রাথমিক শিক্ষার পাঠক্রম থেকে দেখা যায় যে সকলের মধ্যেই ইসলামের শিক্ষা দেওয়ার নির্দেশ। পাঠ্যক্রমের নির্দেশ –
“সবার ইসলামিক জীবনযাপনের পথ বেছে নিতে উদ্বুদ্ধ করতে হবে।”
“ইসলাম নিয়ে আলোচনার আয়োজন করতে হবে।”
“ইসলামের ভাবধারাকে শ্রদ্ধা করা শিখতে হবে।”
শুধু তাই নয়, উর্দু ও সমাজবিজ্ঞানের ২৫-৩০% শিক্ষাক্রম শুধু ইসলামের আলোচনা করেই কাটিয়ে দেওয়া হয়েছে। মজার কথা, পাকিস্তানের সংবিধান অনুসারে শুধুমাত্র মুসলিমদের জন্য বাধ্যতামূলক কোরাণ শিক্ষার নির্দেশ আছে, অমুসলিমদের ইসলামি শিক্ষায় বাধ্য করা সংবিধান-বিরোধীও বটে।
৩) হিন্দু ও ভারতের প্রতি ঘৃণা
প্রাথমিক শিক্ষার পাঠক্রম অনুসারে ছাত্রদের বোঝাতে হবে –
“হিন্দু-মুসলিম সংষ্কৃতির পার্থক্য ও পাকিস্তানের প্রয়োজন।”
এ বিষয়ে স্বাভাবিকভাবেই পাঠ্যবইও কড়া ভাষা ব্যবহার করে। পাঞ্জাব বোর্ডের উর্দু ও সমাজবিজ্ঞানের পাঠ্যবই অনুসারে –
“হিন্দুরা সবসময়েই ইসলামের শত্রু।”
“হিন্দুধর্ম ভাল কিছু শেখায় না, হিন্দুরা মেয়েদের সম্মান দেয় না।”
“হিন্দুরা ভাবত ভারত ছাড়া আর কোনো দেশের লোকেরা কিছু জানে না।”
“হিন্দুরা সবসময়েই সুযোগসন্ধানী ছিল আর ইংরেজদের সাথে সহযোগিতাও করেছিল।”
“মুসলিম সংষ্কৃতি ধ্বংসের অনেক প্রচেষ্টাই হিন্দুরা চালিয়েছে।”
“দেশভাগের পরে পাকিস্তানের হিন্দুদের দেশ ছেড়ে চলে যেতে সব সহযোগিতা করা হয়েছিল, কিন্তু ভারতীয়রা মুসলিমদের ওপর আক্রমণ চালায়।”
“১৯৬৫-র যুদ্ধের পরে ভারতীয়রা পূর্ব পাকিস্তানের হিন্দুদের সাথে ষড়যন্ত্র করে পূর্বের মুসলিমদের মধ্যে পশ্চিম সস্পর্কে ঘৃণা সঞ্চার করে। সবশেষে ভারত ১৯৭১ সালে পূর্ব পাকিস্তান আক্রমণ করে পাকিস্তানকে দুভাগে ভেঙে দেয়।”
অন্যান্য পাঠ্যবই থেকেও পাই –
“ব্রিটিশরা মুসলিমদের কাছ থেকে সব জমিজমা কেড়ে নিয়ে হিন্দুদের মধ্যে বিতরণ করেছিল।”
“ব্রিটিশদের রাজনৈতিক ব্যবস্থায় হিন্দুরা ভোট দিতে পারত, মুসলিমেরা পারত না।”
“ব্রিটিশেরা মুসলিমদের ওপর গণহত্যা চালিয়েছিল – হিন্দুদের সাহায্যে।”
“কুইট ইন্ডিয়া আন্দোলনের উদ্দেশ্য ছিল ব্রিটিশদের হাত থেকে হিন্দুদের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর।”
এভাবে সব ইতিহাস ও সমাজবিজ্ঞানই ধর্মের মারফৎ শেখানো হয়েছে – এর মধ্যে কোনো সাংষ্কৃতিক বা অর্থনৈতিক প্রভাব পরিবর্তনের চিহ্নমাত্র নেই।
৪) ছাত্রদের জেহাদ ও শাহাদাতের পথে উদ্বুদ্ধ করা
পাঠ্যবইতে অসংখ্য স্থানে জেহাদ ও শাহাদাতের গুরুত্বের কথা বলা আছে। জেহাদের জন্য বক্তৃতা দেওয়া অভ্যাস করার কথাও ছাত্রদের পাঠক্রমে আছে। কিছু বক্তৃতার নমুনাও দেওয়া আছে, যার কিছু আছে বিন কাশিম বা গজনীর মাহমুদের প্রশস্তি আর কিছু আছে ভারতবিরোধী।
সবমিলে, জেনারেল জিয়ার আমলে পাকিস্তানী পাঠ্যবই-এর যে ইসলামীকরণ শুরু হয়েছিল, তা আজও বহাল তবিয়তে পাকিস্তানের শিক্ষাব্যবস্থায় অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ হিসাবে জড়িয়ে আছে। ভারত ও হিন্দুবিরোধী পাঠক্রমের ধারাও সেই একই রকম – সামাজিক অবিচারের কথা শোনানো। ভাবখানা এই, হিন্দুদের অবিচারের বিরুদ্ধে লড়াই করাই হল পাকিস্তানের মুসলিমদের একমাত্র জীবনের লক্ষ্য।
পৃথিবীতে সামাজিক অবিচার যেমন আছে, তেমন আছে সামাজিক অবিচারের প্রচার। সাধারণভাবে, অবিচারমুক্ত সমাজ গঠন সম্ভব নয়, কারণ সাম্য বা সুবিচার – সবই এক একটি ধারণার ওপর বশবর্তী হয়েই তৈরী। সাম্প্রতিককালে একটা ঘটনা পড়লাম ইন্দোনেশিয়ায় তিন জঙ্গীর মৃত্যুদণ্ড হওয়া নিয়ে। এদের মৃত্যুদণ্ড ঘোষণা হবার পরে একজনের মায়ের সাথে সাক্ষাৎকারও দেখলাম। সেই জঙ্গীর মা দাবী জানালেন যে তার ছেলে কিছু ভুল কাজ করে নি। পশ্চিমা নাইটক্লাবের বাঁধনছাড়া উদ্দামতা একটা সামাজিক ব্যাধি যা গোটা সমাজে ছড়িয়ে পড়তে পারে। তাই তা রুখতে সবার সংঘবদ্ধ হওয়া দরকার। ধর্মই যদি দৃষ্টিভঙ্গীকে নিয়ন্ত্রণ করে তাহলে তাদের দৃষ্টিতে সামাজিক সুবিচারের এই রূপ কি কোনোদিনও প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব?
দিগন্ত সরকার, কম্পিউটার প্রকৌশলী এবং বিজ্ঞান লেখক। ইনেইল – [email protected]
অভিজিতদা,
আমি আপনাদের লেখা বছর দেড়েক ধরে পড়ি। প্রথমে আমার অবস্থা ছিল অবিশ্বাস…সব কাফের নাসারাদের চাল…ভাড়াটিয়া কলমবাজ…
প্রাথমিক ধাক্কা কাটার পর কৌতূহলী হয়ে নিজে একটু খোলামনে চিন্তাভাবনা করে বোঝার চেষ্টা করলাম…বেশ কিছু তথ্য যাচাই ও করলাম। বিশেষ করে যেসব হাদীসের নামে আমাদের জীবন নিয়ন্ত্রন করার চেষ্টা করা হয় তার অন্য চেহারা দেখলাম।
বুঝলাম যে আমি ইসলামের যতটুকু জেনে বিশ্বাসী, আপনারা তার অনেক গুন বেশী জেনে অবিশ্বাসী।
আপনি ঠিক ই বলেছেন, আপনাদের লক্ষ্য হওয়া উচিত সংশয় তৈরী করা। কে আস্তিক বা কে নাস্তিক তা বড় কথা নয়। আপানেদের সফলতা মানব জাতীর স্বার্থেই কামনা করি।
sunny এবং আদিল মাহমুদ,
আপনাদের মন্তব্য পড়ে ভাল লাগছে। মুক্তমন নিয়ে থাকুন আমাদের সাথে। দরকার হলে আমাদেরও সমালোচনা করুন। আমরা ধর্মগুরু তৈরি করতে চাইনা, চাই সংশয়ী এবং মানবতাবাদী মন তৈরি করতে। গঠনমূলক সমালোচনা সবময়ই সমাজকে প্রগতির দিকে নিয়ে গেছে।
আরো লিখুন। নির্ভয়ে মন্তব্য করুন।
অভিজিতদা ১০০% সঠিক।
সম্ভবত ধর্মের নামে মানুষ্কে যেভাবে অন্ধ করা যায় আর কোনভাবে তা কআ যায় না। শিক্ষিত অশিক্ষিত সবাইকেই এই আফিম খাওয়ানো যায়। মুশকিল সেখানেই যেখানে মানুষ নিজের সাধারণ বুদ্ধি হারায়। অথচ কাজটা খুবই সহজ।
মুক্তমণাদের থেকে কোরানের নানা উত্তেজক আয়াত শুনেছি। অস্বীকার করার উপায় নাই যে ১০০% কোরান মানতে গেলে বেশ মুশকিলের ব্যাপার হবে। অথচ একই কোরানে বহূ চমতকার শান্তির আয়াত আছে। আজো এক ভদ্রলোক প্রথম আলোয় এ বিষয়ে লিখেছেন। http://www.prothom-alo.com/mcat.news.details.php?nid=MTMwMjQx&mid=Mw==
মানুষ কেন উত্তেজক আয়াতগুলি এড়িয়ে শান্তির আয়াত গুলি বেশী প্রচার করে না? কেন নিজের মগজ একটু খাটায় না কিসে মানুষের ভাল আর কিসে ধংস তা বুঝতে? জানি আমার কথাগুলি একটু বেশীই সরল হচ্ছে। তবে অন্য ধর্মের লোকেরা বহু আগেই এটা বুঝেছে। তাই কোন খৃষ্টান পাদ্রী আজ ধর্ম ত্যাগের শাস্তি হত্যা জাতীয় কথা বলবে না যা তাদের বাইবেলে আছে।
ধর্মহীন সমাজ খুব একটা ভাল কিছু হবে কি? মুক্তমনাদের কথায় আপাতত মনে হয় হবে। কিন্তু সে সমাজ যে আরো ভয়াবহ হবে না তার গ্যারান্টী ক দেওয়া যায়? হয়ত ধর্মের নামে মানুষ মারা বন্ধ হবে। এবার অন্যদিকে, পৃথিবীতে ব্যার্থ মানুষের সংখ্যাই কিন্তু বেশী, আর তাদের বেশিরভাগ ই ধর্ম থেকে মনের সান্ত্বনা খুজে। তাদের তখন সান্ত্বনা খোজার উপায় কি? সেই ব্যার্থ মানুষেরা একই বা আরো ভয়াবহ অবস্থা কি তৈরী করতে পারে না? এটা আমার নিজের ভাবনা, কোন জ্ঞানগর্ভ গবেষনার ফলাফল না।
মন্তব্য করার ক্ষমতা এখন ও হয়নি। তবে প্রতিদিন নতুন নতুন শিখতেছি আর জানতেছি।
আমার পুরনো বিশাসের ভীত ভেঙ্গে যাচ্ছে~~~। প্রতিদিন ই একাবার আসি মুক্তমনায়।
Yes…the thing is commonsense is not commonly available to the common people
Rafik is 100% correct.
Religion wise Islam is the most progressive ones (of course comparatively with it’s popular competitors). However, most religious based terrorism are associated with the muslims. It is not that only Islam has the seed of terror, seed of terror is hidden in all religious books if they are to be followed words by words.
Problem of the muslims is they don’t want to compromise from following word by word. Quran is as is from it’s birth and it is a serious crime among the muslim believers to disobey the Quran or even shade any doubt or debate on it. This is the result. Also, this tendency was accelerated many times by their poverty and the foreign policy of the affluent western world. How many 911 or Mumbai incident we witnessed in the 50s, 60s or 70s? Wasn’t Quran there at that time too? Of course the Quran was there with the same verses, and yes, some extremists were there as well trying there best. But, at that time there ideology wasn’t able to sneak into the commoner’s mind and that’s why the world didn’t witness so much islamic terrorism before.
If any country like Pakistan officially brain washes their kids since their childhood then it is more surprising that they aren’t producing more terrorists.
Root is, following religion word by word foregting natural human feelings or simple common sense.
আমার মনে হয় মূল বিষয় থেকে আলোচনাটা একটু দূরে সরে গেছে। আমার বক্তব্য ছিল, সামাজিক অবিচার ব্যাপারটা আপেক্ষিক আর এটা অনেকভাবে একজন মানুষের কাছে তুলে ধরা যায়। শুধু তাই নয়, কোনটা অবিচার আর কোনটা বিচার সেটাও অনেকটাই নিজনিজ দৃষ্টিভঙ্গীর ওপর নির্ভরশীল। তাই সামাজিক অবিচার প্রতি-আক্রমণের যথেষ্ট কারণ হতে পারে না।
আর সম্প্রীতির উদাহরণ এখনও আছে অনেক, পাওয়াই যেতে পারে। আমি শুধু একটাই দিক তুলে ধরেছি।
সম্প্রতি পেট এবং লোভ না থাকলে থাকে। এই যে বাংলাদেশ থেকে হিন্দুদের তাড়ানো হয়। আসল উদ্দেশ্যটাত বাড়ি জমি দখল। সেটা কি ধর্মীয় নাকি? ধর্মের পরিচয়টাকে কাজে লাগানো মাত্র। ইসলামের প্রতিষ্ঠাও ত এই ভাবেই হয়েছে। মক্কার সেসব গরীব প্যাগানগুলো খেতে পারছিল না, সন্মানের সাথে বাঁচতে পারছিল না, তারাই প্রথম আল ইসলামের সেনাতে যোগ দেয়। মুসলমানদের প্রতি ভারতে হিন্দুদের রাগের পেছনে কিছু হিন্দু নেতার ভবিষ্যত গোছানোর ব্যাপার আছেই।
আসল ব্যাপারটা হচ্ছে ক্ষমতা। কম্যুনিজম, ধর্ম, ধর্ম্ননিরেপেক্ষতা-যেভাবেই সে ক্ষমতা দখল করুক না কেন–ক্ষমতা দখল এবং টিকিয়ে রাখার পদ্ধতিতে ঘৃণা আসবেই। ঘৃণা রাজনৈতিক ক্ষমতায়নের একটি শক্তিশালী অস্ত্র। যা দেশ, জাতি এবং ধর্মীয় গোষ্ঠির বিরুদ্ধে ব্যাবহার করা হয়।
This has happened in ’91 Loksava election. I referred to ’89 election when BJP increased their power from 2 to 89. That was it. In ’89 election, BJP was riding on falacies of Rajiv more than Rama. Had Indira Gandhi been living today, BJP would not have found this ground.
আমার মনে হয় হিংসা বিদ্বেষ ছড়ানোতে ধর্ম এবং ধর্মীয় বইগুলোর কোন বিকল্প নেই। ধর্মীয় বইগুলো ঠিকমত পড়লেই আর সেগুলো আক্ষরিক অর্থে গ্রহণ করলেই মানুষ হিংসুক হয়ে উঠবে। যারা অক্ষরে অক্ষরে ধর্মের বানী মানেন না, তারাই হিংসা আর ঘৃণা থেকে মুক্ত থাকতে পারেন।
দিগন্তের প্রবন্ধের মধ্যে একটা জিনিস আমাকে কিন্তু ভাবিয়েছে। ইতিহাসে ভায়োলেন্স যেমন আছে হিন্দু-মুসলিম সম্প্রীতিরও কিন্তু অনেক উদাহরণ আছে। যেমন, কুতুবুদ্দিন আইবেক নাকি ব্রাহ্মণদের পরামর্শ নিতেন। আলাউদ্দিন খিলিজী ইসলামী অনুশাসন নাকি তেমন মানতেন না, বরং অনেক হিন্দু রীতির প্রতি আকৃষ্ট হয়েছিলেন। তার আমলে ধর্মনিরপেক্ষ শিক্ষারও প্রবর্তন করা হয়েছিলো। ভারতীয় হিন্দুরা সম্রাট আকবরের প্রতি বিশ্বস্ত ছিলেন। তার রাজপুত কন্য বিবাহ, টেডরমল আর মানসিংহকে রাজসভায় উচ্চপদে বসানো – এগুলো তার উদারমনের পরিচয় বহন করে। তার নেতৃত্বে ধর্মালোচনায় সুন্নি, উলেম, সুফি, পন্ডিত, জৈন, ক্যাথলিক ধর্মগুরু, জরথ্রুস্টপন্থী সবাই আসতেন। তার সভাসদ আবুল ফজল সংস্কৃতে পন্ডিত ছিলেন। আর আকবরের ‘দীন-ই-এলাহি’র কথা তো সবাই জানে। মনসামঙ্গল কাব্যে বর্ণিত আছে যে, লখিন্দরের বাসরঘরে নাকি অন্য ধর্মগ্রন্থের সাথে কোরানও রাখা ছিলো।
কিন্তু কথা হচ্ছে আমরা সম্প্রীতির ধারনাগুলো মানুষের মধ্যে ব্যাপক আকারে সঞ্চারিত করতে পারিনি কেন? কেন জিহাদী এবং হিংসাত্মক বিশ্বাসগুলোই ব্যাপক আকারে ছড়িয়ে পড়ল ?
আসলে আমি সরলীকরণ মনে করি না। রামায়ন মহাভারতের সিরিয়ালের পর ভোটের রাজনীতিতেও এর প্রভাব পড়েছিলো। কাউকে দ্রৌপদী, কাউকে সীতা সাজয়ে রথে চড়িয়ে ঘোরানো হয়েছে বলিউডের অভিনেত্রী ভাড়া করে। মানুষের অজ্ঞানতা আর কুসংস্কারকে উস্কে দেয়া হয়েছে। তবে হ্যা, সাম্প্রদায়িকতার উত্থানে শাহবানু মামলা এবং সর্বোপরি রাজীব গান্ধীর অদূরদর্শী নীতিও অনেক দায়ী। কোনটাকেই আসলে বাদ দেওয়ার জো নেই।
আমার মনে হয় এটা অতিসরলীকরন। বাচ্চাদের গল্পকে কেন্দ্র করে রাজণীতি আবর্তিত হতে পারে এটা ভাবা ঠিক নয়। এর পেছনে বস্তুবাদি শ্রেনীচরিত্রটা জানা উচিত। আসলে রাজীব গান্ধীর অর্থনৈতিক সংস্কারের ফলে, ভারতে মধ্যবিত্ত শ্রেনী ফুলে উঠতে থাকে। কিন্তু ভারতীয় হিন্দু উচ্চবর্ণ মধ্যবিত্তদের স্বার্থ রক্ষা করার কোন রাজনৈতিক দল ভারতে ছিল না। ফলে ক্ষমতার নতুন কেন্দ্র গড়ে উঠতই-এবং সেটা হিন্দুত্বকে দিয়েই হল-কারন, এটাকে ব্যাবহার করা সবথেকে সহজ এবং কার্যকরী ছিল। জিয়াউল হক এবং জিয়াউর রহমান একই ভাবে ইসলামকে ক্ষমতার কেন্দ্র তৈরীতে ব্যাবহার করেছিলেন। জিয়াউর রহমান মোটেও বাঙালী জাতিয়তাবাদের ভিত্তিতে তার ক্ষমতা বাড়াতে পারতেন না-কারন ওটা আওয়ামীলীগের ক্ষমতার উৎস। ফলে তাকে বাজারে ইসলামিক জাতিয়তাবাদ নামাতে হল-কারন সেটাই সহজলভ্য উৎস-যেহেতু ওই শ্রেনীটি বাংলাদেশের ধর্ম নিরেপেক্ষ শক্তির বিরুদ্ধে স্বাধীনতার যুদ্ধে পরাজিত হয়েও অবশিষ্ট ছিল।
ভারতেও ঠিক একই ভাবে হিন্দু জাতীয়তাবাদের উত্থান হয়েছে। গ্রাসরুট লেভেলে আর এস এস ছিলই-কিন্তু ভোট পাচ্ছিল না। রাজীব গান্ধী শাহবানু মামলায় সুপ্রীমকোর্টের রায় বাতিল করে সংবিধান পরিবর্ত্তন করতেই হিন্দুত্ববাদিরা প্রথম দেখানোর সুযোগ পায় কংগ্রেসের ধর্মনিরেপেক্ষতার দেউলিয়াপনা। এতে বামপন্থীরাও যোগদিয়েছিল-কারন এই ইস্যুতে আদর্শে কোন পার্থক্য ছিল না। বামপন্থীরা চাইছিল কংগ্রেসের ধর্মনিরেপেক্ষ ভোট ব্যাঙ্কে ফাটল ধরাতে-আর বিজেপি চাইছিল অসন্তুষ্ঠ হিন্দু কংগ্রেসী। ফলে ১৯৮৪ সালে বিজেপি পেয়েছিল ২টি আসন-আর ১৯৮৯ সালে সিপিএম-জনতার সাথে জোট বেঁধে পেল ৯০টা। রামমন্দির ইস্যু এসেছে এরও দুবছর বাদে। ২ থেকে ৯০ টার রকেট উত্থানে রামমন্দির লাগে নি-লেগেছে ক্ষমতার জোটবন্ধন-শাহবানু মামলা যাতে ইন্ধন জুগিয়েছিল।
হিন্দু এবং ইসলামিক রাজনৈতিক আদর্শাবাদকে এত হালকা ভাবে নেওয়া ঠিক না। এদের নেতারা কেও ই দুগ্ধপোষ্য শিশু না। হিন্দুত্ববাদি নেতাদের অনেকেই নাস্তিক ছিলেন এবং তারা হিন্দুত্ব আইডেন্টিটি ব্যাবহার করেছেন ইসলামের বিরুদ্ধে ঘৃণা ছড়িয়ে। জিন্নার ক্ষেত্রেও সেই একি কথা খাটে-উনি ত শুয়ারের মাংসও খেতেন। মুসলীম লীগ একইভাবে হিন্দুদের বিরুদ্ধে ঘৃণা ছড়িয়েছে। আসল ব্যাপারটা সেই ক্ষমতার। সময়ের সাথে সাথে রাষ্ট্রীয় সমাজ সেবক সংঘ, নিজেদের মতাদর্শও বদলেছে। এখন তারা ইন্ট্রীগ্রাল হিউম্যানিজমের কথা বলে-জাতের বিরুদ্ধে কথা বলে-যদিও একজন হিন্দু নেতাও পাওয়া যাবে না-যিনি নিজের ছেলে বা মেয়ের বিয়ে আদিবাদিদের সাথে দিয়েছেন। ইসলামের রাজনৈতিক নেতারাও যেমন ইসলামের সাম্য অর্থাৎ এটা দরিদ্রশ্রেণীর ধর্ম বলে প্রচার চালিয়ে শ্রেণীদ্বন্দটা হাইজ্যাক করে। ভারতে অবশ্য হিন্দুত্ববাদিরা স্বচ্ছল শ্রেণীটির প্রতিনিধি। সামনে আদর্শবাদ-এবং তার পেছনে থাকা বস্তুবাদ-এবং আদর্শবাদে প্রভাবিত লোকেদের শ্রেণীচরিত্র এবং শ্রেণিঅবস্থান এই দুটিকে এক সাথে না ধরতে পারলে আমরা অনেক সরলীকরন করে ফেলব। পাশাপাশি এদের রাজনৈতিক শক্তির উৎস নিয়ে আরো বস্তুবাদি বিশ্লেষন দরকার।
মানুষের ওপর আদর্শবাদের প্রভাব নিয়ে অনেকেই কাজ করেছেন-তবে কুর্ট লুভিনের নাম এর মধ্যে সবার প্রথমে আসবে সামাজিক ক্ষেত্রতত্ত্বের জনক হিসাবে। যারা শুধু আর্থসামাজিক প্রশ্নটাই তুলছেন-তাদের প্রথমেই এই প্রশ্ন তোলা উচিত-আর্থসামাজিক বিশ্লেষন করে একটা রাষ্ট্রের জন্মের ব্যাখ্যা দিতে পারবেন? সন্ত্রাসবাদ অনেক দূরের ব্যাপার। বাংলাদেশের জন্মের কি আর্থসামাজিক ব্যাখ্যা আছে? প্রথমে পাকিস্থান ভাগ হল-দ্বিজাতি তত্ত্ব যার ভিত্তিই ইসলামিক আদর্শবাদ। ‘৭১ সালের যুদ্ধ হল বাঙালী জাতিয়তাবাদকে কেন্দ্র করে। এখন বলতেই পারেন দ্বিজাতি তত্ত্বের পেছনে ছিল হিন্দুজমিদার দের শোষন। এবং প্রজা-কৃষ্ক হওয়ার কারনে মুসলমানদের বিদ্রোহ ছিল অবশ্যম্ভাবী। আবার ‘৭১ এর পেছনেও ছিল বাংলাদেশের প্রতি অর্থনৈতিক অবহেলা। কিন্তু বাংলাদেশের জন্মের দুটি গুরুত্বপূর্ন কারন হিসাবে সেই আদর্শবাদকে কেন্দ্র করেই কিন্ত রাজনীতি দানা বেঁধেছে। উভয় ক্ষেত্রেই বস্তুবাদি দ্বন্দ আদর্শবাদি দন্দের রূপ নিয়েছে। ইসলামিক সন্ত্রাসবাদটাও ঠিক সেই রকম।
মুজফর আহমেদ, বাংলার কমিনিউস্ট পার্টির প্রতিষ্ঠাতা-এই বাণী কিন্তু করে গিয়েছিলেন। যে কৃষক প্রজাদের ভেতর মার্ক্সীয় রাজনীতি-অর্থাৎ তাদের দ্বন্দকে বস্তুবাদের রাজনীতি দিয়ে না পরিচালনা করলে-তা হিন্দু-মুসলমানের দ্বন্দে পরিণত হবে। বাস্তবে হয়েওছে তাই। পাকিস্থানে জেনারেল জিয়া উল হক – এরিস্ট্রোকাট ফামিলির লোক ছিলেন না। চাষির সন্তান ছিলেন। ফলে ক্ষমতার কেন্দ্র তৈরী করতে,
ইসলামকে বাজারে নামালেন-কারন গরীব পাকিস্থানিদের ক্ষোভ তখন এলিটদের বিরুদ্ধে জেগে উঠেছে। সেই দ্বন্দটাকেই ইসলাম দিয়ে খেলালেন জেনারেল। নিজের ক্ষমতাকে এরিস্ট্রোকাটদের কাছ থেকে সুরক্ষিত করতে। এবং কি সৌভাগ্য সোভিয়েত আফগানিস্থান আক্রমন করল। ফলে জেনেরেলের পাকিস্থানের ইসলামীকরনে হর্সপাওয়ার জোগালো আমেরিকা। ধর্মের রাজনৈতিক অস্তিত্ব ত ঘৃণাতে। সুতরাং হিন্দুবাদিরা বা ইসলামিস্টরা শুধু ঘৃণা ছড়াবেই। ওটাই ত ওদের ক্যাপিটাল।
শুধু এটাই বলি-ঘৃণা হচ্ছে সবথেকে বড় ফ্রাঙ্কেস্টাইন। যে ঘৃণা করে, তাকে খাবে আগে।
দিগন্তকে ধন্যবাদ সুন্দর একটি আলোচনার সূত্রপাত ঘটানোর জন্য। সন্ত্রাসবাদকে বুঝতে হলে এধরনের আলোচনার সত্যই দরকার আছে বলে আমি মনে করি।
আমি আমার কিছু মন্তব্য দেই। দিগন্ত খুব সঠিকভাবেই বলেছেন,
আমি মনে করি দিগন্তের বিশ্লেষণ খুবই সঠিক। কিন্তু তার পাশাপাশি আমি আরেকটা উদাহরণও হাজির করব। বিগত নব্বইয়ের দশকে যেভাবে সরকারী পৃষ্ঠপোষকতায় দুরদর্শনে ধর্মীয় অবয়বে রামায়ন আর মহাভারত প্রদর্শিত হয়ছিলো, তাতে ভারতের জনগনের মধ্যে ধর্মীয় সুড়সুড়ি নতুন করে জাগ্রত করা হয়েছিল বলে আমি মনে করি। সে সময়ই আসলে নতুন ভাবে রোপন করা হয়েছিল এক বিষবৃক্ষের চারা। দূরদর্শনের পর্দায় প্রথমবার রামায়ন চলাকালে কল্পিত রামজন্মভূমি নিয়ে মৌলবাদী আন্দোলনের জোয়ার এবং পরবর্তীকালে বাবড়ি মসজিদ ধ্ববংসের মাধ্যমে প্রতিক্রিয়াশীল শক্তিগুলোর উত্থান সে প্রক্রিয়ারই অংশ (মনে রাখবেন, নব্বইয়ের দশকের আগে বিজেপি এবং সমমনা হিন্দুবাদী দলগুলোর মোটেই জনসমর্থন ছিলো না, রামজন্মভুমিকে পুঁজি করেই সূচিত হয়েছিলো তাদের উত্থান)। এ নিয়ে জয়ন্তানুজ বন্দোপাধ্যায় তার ‘মহাকাব্য ও মোউলবাদ’ গ্রন্থে অনেক কিছু আলোচনা করেছেন। আমাদের প্রকাশিত ‘স্বতন্ত্র ভাবনা’তেও অননন্ত বিজয় দাশের একটি সুন্দর লেখা আছে। এই দূরদর্শনের মাধ্যমে কল্পিত রামজন্মভূমি রক্ষার এক মৌলবাদী আবহ তৈরি কিন্তু ‘বিশ্বাসের ভাইরাস’ প্রসারের একটি সার্থক উদাহরণ। সেই সাথে দিগন্তের অন্য উদাহরণগুলো তো আছেই।