ব্যাঘ্র শিকারি সারমেয়
মাত্র একশ বছর আগেও এই পৃথিবীতে বাঘের সংখ্যা ছিল এক লক্ষেরও উপরে। এখন এই সংখ্যা এসে দাঁড়িয়েছে মাত্র হাজার পাঁচে। মানুষের সর্বগ্রাসী আগ্রাসনে অন্যান্য অনেক প্রাণীর মত বাঘও হয়ে পড়েছে কোনঠাসা। আবাসস্থল গোটাতে গোটাতে সামান্য কিছু অঞ্চলে এখন বিচরণ তাদের।
বাঘ নিঃসঙ্গতাপ্রিয় প্রাণী। বিশাল এলাকা জুড়ে একা থাকাটাই তাদের খুব পছন্দের। বিচরণক্ষেত্র বিপুলভাবে কমে যাবার কারণে বাঘের সংখ্যাও কমে গেছে আশংকাজনকহারে। বর্তমানে এটি বিলুপ্তপ্রায় প্রজাতিতে পরিণত হয়েছে। যে হারে এর সংখ্যা কমে যাচ্ছে তাতে অদূর ভবিষ্যতে এই প্রজাতিটি পৃথিবী থেকে সম্পূর্ণ বিলুপ্ত হয়ে যাওয়াটাও বিচিত্র কিছুই নয়। এর আগেও এরকম ঘটেছে। পঙ্গপালের মত মানুষের সংখ্যাবৃদ্ধিতে এর মধ্যেই দুনিয়া থেকে চির বিদায় নিয়েছে অসংখ্য প্রজাতির প্রাণী।
যে পাঁচ হাজার বাঘ এখনো মানুষের হিংস্রতাকে উপেক্ষা করেও কোন রকমের টিকে আছে তাদের তিন চতুর্থাংশই বসবাস করে ভারতে। বাকি এক ভাগের বসবাস বাংলাদেশ, ভুটান, চায়না, নেপাল এবং মায়ানমারে। ক্রমবর্ধমান মানুষ শুধু যে বাঘের বসবাসের এলাকা দখল করেই তাদেরকে কোনঠাসা করছে তা নয়। চোরাগুপ্তা শিকারও বাঘের সংখ্যা কমে যাবার অন্যতম কারণ। চোরাশিকারিরা বাঘকে ফাঁদে ফেলে, বিষ খাইয়ে গুলি করে অকাতরে হত্যা করছে। বাঘের চামড়ার চড়ামূল্য এবং এর হাড়গোড় নানান ধরনের টোটকা চিকিৎসার ওষুধ হিসেবে ব্যবহৃত হওয়াটাই এর মূল কারণ। ১৯৯৯ থেকে ২০০৩ সাল পর্যন্ত চোরাশিকারিরা শুধুমাত্র ভারতেই একশোর বেশি বাঘকে হত্যা করেছিল। ২০০৫ সালের মধ্যে ভারতের সারিস্কা ব্যাঘ্র প্রকল্পের আটাশটি বাঘের সবগুলিকেই এরা নির্মূল করে ফেলে।
বিপন্নপ্রায় এই প্রজাতিটিকে রক্ষা করার জন্য এগিয়ে এসেছে বিভিন্ন দেশের সরকার। বাঘ সংরক্ষণের জন্য সবচেয়ে বেশি কাজ করে যাচ্ছে ভারত সরকার। বাংলা উইকিপিডিয়া অনুযায়ী,
ব্যাঘ্র প্রকল্প ১৯৭২ সালে বেঙ্গল টাইগার সংরক্ষণের উদ্দেশ্যে ভারতে গৃহীত একটি বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ প্রকল্প। ১৯৭৩ সালের ১ এপ্রিল থেকে এই প্রকল্প কার্যকর করা হয় এবং পরবর্তীকালে সর্বাপেক্ষা সফল বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ উদ্যোগে পরিণত হয়। সারা দেশে ছড়িয়ে থাকা বিভিন্ন জৈবভৌগোলিক ক্ষেত্রে স্থাপিত বিভিন্ন ব্যাঘ্র সংরক্ষণাগারে (টাইগার রিজার্ভ) বাঘ সংরক্ষণ করাই ছিল এই প্রকল্পের লক্ষ্য। দেশে প্রাকৃতিক পরিমণ্ডলে সংরক্ষিত বাঘের সংখ্যাবৃদ্ধিতে এই প্রকল্প গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা গ্রহণ করে।
২০০৭ সালের হিসেব অনুযায়ী, দেশের ৩১,৭৬১ বর্গকিলোমিটার এলাকা জুড়ে ৪০টি ব্যাঘ্র প্রকল্প বন্যপ্রাণী সংরক্ষণাগার রয়েছে। ১৯৭০-এর দশকে যেখানে বাঘের সংখ্যা ছিল ১,২০০টি সেখানে ব্যাঘ্র প্রকল্পের ফলে ১৯৯০-এর দশকে এই সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় ৩,৫০০টিতে। অবশ্য ২০০৮ সালের ব্যাঘ্রগণনা থেকে জানা যায়, এই সংখ্যা বর্তমানে কমে দাঁড়িয়েছে ১,৪১১টিতে। তখনই সরকার প্রকল্পটিকে আরও ১৫৩ মিলিয়ন মার্কিন ডলার অর্থসাহায্য দানের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় টাইগার প্রোটেকশন ফোর্স গঠন ও মানব-ব্যাঘ্র সংঘাত এড়ানোর উদ্দেশ্যে ২০০,০০০ জন গ্রামবাসীর পুনর্বাসন দেওয়ার জন্য অর্থসাহায্যেরও।
২০০৫ সালে সারিস্কা ব্যাঘ্র প্রকল্প থেকে বাঘ সম্পূর্ণ নির্মূল হয়ে যাওয়ার পর যখন ২০০৮ সালের জুলাই মাসে সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত স্থানান্তরণ স্কিমে দুটি বাঘ আবার এখানে নিয়ে আসা হয়, তখনই এই প্রচেষ্টা কার্যকর করার সূচনা ঘটে।
ভারতের এই প্রচেষ্টাও যথেষ্ট নয় বাঘকে টিকিয়ে রাখার জন্য। আর এ কারণেই বাঘ রক্ষার জন্যে এগিয়ে আসছে জাতিসংঘ এবং বিশ্বব্যাংক। রয়্যাল বেঙ্গল টাইগারের সবচেয়ে বড় আবাসস্থল হচ্ছে সুন্দরবনের ম্যানগ্রোভ ফরেস্ট। ইউনেস্কো ১৯৯৭ সালে এটাকে ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সেন্টার হিসেবে ঘোষণা দিয়েছে। ইউএনডিপি এর জৈববৈচিত্র্য রক্ষা করার জন্যে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। অতি সম্প্রতি বিশ্বব্যাংক এগিয়ে এসেছে ব্যাঘ্র সংরক্ষণের ভারত-বাংলাদেশ যৌথ প্রকল্পের। আর এতেই গাত্রদাহ শুরু হয়েছে আওয়ামী লীগের এক পান্ডা জয়নাল হাজারীর। সমস্ত বাঘকে হত্যা করার দৃপ্ত শপথ নিয়েছে তিনি। এই লোককে পরিচয় করিয়ে দেবার কিছু নেই। স্বনামেই তিনি বিখ্যাত অথবা কুখ্যাত। আমাদের সময় পত্রিকায় গতকাল তিনি লিখেছেনঃ
খবরে প্রকাশ, সুন্দরবনের উভয় অংশে বাঘ রক্ষায় বাংলাদেশ ও ভারত একটি যৌথ প্রকল্প হাতে নিচ্ছে। বিশ্বব্যাংক নাকি এই প্রকল্পের অর্থ জোগান দেবে। যে বাঘ মানুষ হত্যা করে মানুষের মাংস খায়, সেই মানুষরাই মানুষখেকো বাঘকে রক্ষা করবে কেন? আমি বুঝতে পারি না। বাঘের দুধ কিংবা মাংস মানুষ খায় না, বাঘের হাড় কিংবা দাঁত, রক্ত মানুষের কোনো কাজে আসে না। শুধুমাত্র দেখতে সুন্দর সে কারণে শত শত কোটি টাকা ব্যয় করে বাঘ রক্ষার যুক্তি আমি খুঁজে পাই না।
বাঘ সবচেয়ে সুন্দর প্রাণী হরিণ খায়, মানুষের সবচেয়ে প্রয়োজনীয় প্রাণী গরু, মহিষ, ছাগলসহ সবই মেরে খেয়ে ফেলে। এই হিংস্র ঘাতক প্রাণীটিকে পৃথিবী থেকে বিলুপ্ত করে দেয়া উচিত। ডিসকভারি চ্যানেলে যখন দেখা যায়, একটি হিংস্র বাঘ একটি সুন্দর নিরীহ হরিণকে মেরে ফেলছে, তখন গা শিউরে উঠে। বাঁচিয়ে রেখে নয়, বরং সব বাঘ মেরে ফেলে ওদের চামড়া দিয়ে জুতা তৈরি করা হোক। ওদের চামড়া ড্রয়িং রুমে সাজিয়ে রাখা হোক।
সুন্দরের জন্য বাঘ নয়, প্রজাপতি রক্ষা করা হোক। মশা মানুষের ক্ষতি করে, সেজন্য মশাকে মেরে ফেলা হয়, তাহলে যে বাঘ মানুষ খুন করে তাকে রক্ষা করা হবে কেন?
খবরে প্রকাশ, আইলা-বিধ্বস্ত এলাকায় এক বছরে বাঘের পেটে গেছে ৭২ জন মানুষ। আর প্রতিনিয়ত খবরে প্রকাশ হয় নৌকা থেকে হঠাৎ মানুষকে নিয়ে গিয়ে বাঘেরা খেয়ে ফেলে। মোট কথা, যে বাঘ মানুষ হত্যা করে মানুষকে খেয়ে ফেলে আমি সেই বাঘের অস্তিত্ব রাখতে চাই না।
একদিন যখন আমি বাঁধনের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছিলাম, তখন এদেশের প্রথম শ্রেণীর জাতীয় দৈনিকেও আমার বিরুদ্ধে সম্পাদকীয় লিখেছিল। আজ গণরোষের ভয়ে শুধু দেশ ছেড়ে নয়, বাঁধন বিদেশেও বঙ্গবন্ধুর খুনিদের মতো পালিয়ে বেড়াচ্ছে। আমি জানি একদিন অনেক মানুষই বাঘ রক্ষা নয় বরং বাঘ নিধন করতে চাইবে। আমি বাঘ রক্ষার বিরুদ্ধে শুধু সাধারণ অবস্থান নয়, এর বিরুদ্ধে সর্বত্র আন্দোলন গড়ে তুলব।
এই ভদ্রলোকের যে বড় ধরনের কোন সমস্যা আছে সেটা বলাই বাহুল্য। কেন যেন সব অশুভ জিনিসের প্রতিই তার প্রগাঢ় পক্ষপাত। গত আওয়ামী লীগ সরকারের সময় থার্টি ফার্স্ট নাইটে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের ছেলেরা বাঁধন নামে এক তরুণীর শাড়ী খুলে নগ্ন করে দেয়। সেই ঘটনাতেও এই ভদ্রলোক বাঁধনের বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছিলেন। ‘বাঁধনের বিচার’ চাই নামে একটি গ্রন্থও রচণা করে ফেলেছিলেন তিনি সেই সময়। সেটা নিয়ে আবার ফেনিতে নাটকও করেছিলেন তিনি।
বাঘ মানুষ খায় বলে তিনি বাঘকে হত্যা করতে চেয়েছেন। আমরা জানি বাঘ সাধারণত মানুষকে এড়িয়েই চলে। মানুষখেকো হয় খুব কম বাঘই। বুড়ো হয়ে গেলে বা কোন কারণে আহত হয়ে স্বাভাবিকভাবে শিকারে ব্যর্থ হলে কেবল বাঘ বাধ্য হয়ে মানুষ শিকার করে। কিন্তু কিছু মানুষ যারা মানুষ হয়েও অকারণেই মানুষখেকো হন তাদেরকে তাহলে কী করা উচিত? হাজারী সাহেবের মত জনগণও যদি মানুষখেকোদের অস্তিত্ব ধংসের একই ধরণের কঠিন শপথ নেয়, তবেতো কিছু লোকের বাঘ শিকারের স্বপ্ন বাদ দিয়ে সারমেয়-র মত পিছনের দুই পায়ের মাঝে লেজ গুটিয়ে পালানো ছাড়া আর গতি থাকবে না।
হাজারী আর গাফফার চৌধুরী দুটোকেই বাঘের পেটে যেতে দেখলে বড়ই শান্তি পেতাম।
@মিঠুন,
বাঘের পেটেরও অত শক্তি নেই, বদহজম হয়ে যাবে। শেষে বেচারাকে মিনমিন করে এক চিমটি লবন, আধা সের পানি, আর আক মুঠো গুড়ের সন্ধানে বেরোতে হবে।
@আদিল মাহমুদ, 🙁
লেখাটা কাল দেখেও পড়িনি, সময় নিয়ে মনোযোগ দিয়ে পড়ব ভেবেছিলাম। এ ধরনের লেখা মুক্তমনায় বিশেষ আসছে না। বন্য প্রানী সংরক্ষন, পরিবেশ বিষয়ক লেখা আরো বেশী বেশী আসা দরকার।
বিপ্লব রহমানকে কিছুদিন আগে অনুরোধ করেছিলাম। দিগন্ত এককালে ভাল ভাল লিখতেন, আজকাল কেন যেন তিনি মুক্তমনায় বেশী আসেন না।
জয়নাল হাজারীর মত লোকে কি বলল তার চেয়ে আমার কাছে বাঘ বিষয়ক মূল লেখাই বেশী আকর্ষনীয়। এ শ্রেনী রাজনীতিকদের সম্পর্কে আমার সিরিয়াসলিই মনে হয় যে এদের বন্য প্রানীর মত খাঁচায় আটকে পাব্লিক ডিসপ্লে করা গেলে দুটো পয়সা উপার্জন হত। খাঁচার বাইরে যেমন প্রানীর বর্ননা থাকে এদের বেলায় থাকবে তার কীর্তিময় জীবন কাহিনী।
বাঘ তো হুমকির মুখে, কিন্তু আরো কত প্রানী দেশ ও দুনিয়া থেকেই চিরতরে গায়েব হয়ে গেছে কে তার খবর রাখে? ভারতের মধ্যপ্রদেশের পান্না রিজার্ভ থেকেও ২০০৯ সালে বাঘ চিরতরে নির্মুল হয়েছে মানুষের সীমাহীন লোভের কাছে হার মেনে।
অর্থ উপার্জন ছাড়াও আমাদের অঞ্চলের মানুষ স্রেফ বিনোদনের কারনেও পশুপাখী মেরে সাফ করে (বিদেশীরাও এ কাজ করে, তবে তা যেহেতু নিয়ম মেনে তাই কোন প্রজাতি ধ্বংস করে ফেলে না)। আমাদের ছোটবেলাতে ঢাকা শহরেও মাঝে মাঝে হঠাত হঠাত কিছু অদ্ভুত প্রানী কিভাবে যেন চলে আসত। তাদের খোঁজ পেলে রীতিমত উতসবের মত আমেজে এলাকাবাসী হত্যাযজ্ঞে যোগ দিত, এ কাজে শিক্ষিত অশিক্ষিত কারোই উতসাহ কম দেখতাম না। ৮৪ সালের দিকে একবার এক বাঘডাস জাতীয় প্রানীকে এক গ্যারাজের ভেতর কয়েক ঘণ্টা ধাওয়া করে কোনঠাসা করা হল, তারপর মুলি বাঁশ দিয়ে খুচিয়ে হত্যা করা হল। নেতৃত্ব দিয়েছিলেন একজন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র। কাকের বাচ্চা বাসা থেকে নামিয়ে ডানা কেটে ফেলা, কুকুর বেড়ালের ছানার গলায় রশি লাগিয়ে পানিতে চোবানো এসব তো অজস্র দেখেছি।
কিছুদিন আগে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের এক অধ্যাপক সাহেব তার বেড়ায় আটকে পড়া এক হরিন ছানাকে জবাই করে উদর পূর্তি করেছিলেন।
জয়নাল হাজারী:
আব্দুল গাফ্ফার চৌধুরী:
দেলোয়ার হোসেন সাঈদী, ক্যাসেটবন্দী ওয়াজ:
মন্তব্য: মাইরের উপ্রে অষুধ নাই। 😀
@বিপ্লব রহমান,
আপনি কি “পালকি যার বৌ তার” বলতে চাচ্ছেন?
আব্দুল গাফফার চৌধূরী প্রসংগ –>
আব্দুল গাফফার চৌধুরীকে গোঁড়া আওয়ামী লীগার বলেই মনে হয় তাঁর সাম্প্রতিক অনেক লেখা থেকে। শুনেছি তিনি একজন অত্যন্ত বড় মাপের সাংবাদিক (“আমার একুশে ফেব্রুয়ারী…” লিখে সারাজীবনের জন্য কামিয়ে নিয়েছেন)
আমি তাঁর লেখা নিশ্চয় বুঝতে পারি না! তাই যেমন শুনি তেমন মূল্যবান মনে হয় না। পক্ষপাত দোষে দূষ্ট মনে হয়। আওয়ামী লীগ করে করে ভদ্রলোক জান দিয়ে দিলেন। মাঝে মধ্যে বরাক (বারাক বলতেই এঁরা বেশী ভাল বাসেন) ওবামা করে করেও একই অবস্থা। (‘ওবামা কি পারবেন যায়ানিস্টদের হাত থেকে উদ্দার করতে’ ইত্যাদি) সাংবাদিক হলে কি হবে ধর্মের প্রভাব মুক্ত হওয়া মুস্কিল আছে।
@নৃপেন্দ্র সরকার,
এ ক ম ত । :rose:
এ জন্যই বোধ হয় সব কিছু সম্পর্কেই বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিভঙ্গি অর্জন করা এত প্রয়োজন :-Y । অবশ্য আমাদের দেশের রাজনীতিবিদদের কাছ থেকে সেটা আশা করা বোধ হয় একটা অবাস্তব ব্যাপার।
আচ্ছা ফরিদ ভাই, আপনি কি ইচ্ছা করেই ‘বায়োডাইভারসিটি’ কথাটার বাংলা করলেন না?
@বন্যা আহমেদ,
না, ইচ্ছা করে না। সকালবেলা খুব স্বল্প সময়ে লিখেছি আমি এই লেখাটা। বাংলাটা মাথাতেই আসেনি তখন। এর বাংলা কী হবে? জীববৈচিত্র্য না জৈববৈচিত্র্য?
@ফরিদ ভাই, পত্রিকায় তো ‘জৈববৈচিত্র্য’ই দেখছি। সমকালে আসিফ কিছুদিন আগে একটা ফিচার পাতা করেছিল এ নিয়ে, সেখানেও মনে হয় ‘জৈববৈচিত্র্য’ই দেখেছিলাম।
@বন্যা আহমেদ,
দিলাম পাল্টায়া। আপ্নে লুক ভালু। ধন্যুবাদ। 😀
@ফরিদ আহমেদ,
জীব – বিশেষ্য
জৈব – বিশেষণ
জীববৈচিত্র্য, জীববিজ্ঞান (জৈববিজ্ঞান ?), জীবরসায়ন (নাকি জৈবরসায়ন?)
জৈবসার (জীবসার?)
বৈচিত্র্য – নিজেই বিশেষণ (বিশেষণের বিশেষণও হতে পারে adverb)
তালগোল পাকাইয়া যাইতাচে।
@নৃপেন্দ্র সরকার,
আপনিতো ভাল প্যাঁচ লাগায় দিলেন। এখনতো মনে হচ্ছে বায়োডাইভারসিটির বাংলা হবে জীববৈচিত্র্য বা প্রাণবৈচিত্র্য। বন্যা আসিফের রেফারেন্স দেওয়ায় জৈববৈচিত্র্য করলাম, কিন্তু আন্তর্জালে খোঁজ দিয়ে দেখলাম যে, সমকাল নিজেই জীববৈচিত্র্য লিখেছে। শুধু সমকাল নয়, জনকণ্ঠ এবং কালের কণ্ঠও জীববৈচিত্র্যই লিখেছে। বাংলা একাডেমী থেকে প্রকাশিত একটা বইতেও জীববৈচিত্র্যই দেখলাম।
এটা কি খবর দিলেন। মনটা খারাপ হয়ে গেল। আমি আজকাল আপনাদের এখানে লগ ইন করি না, শুধু লেখাগুলি পড়ি, কিন্তু এই খবর দেখে কমেন্ট না করে থাকতে পারলাম না। ছোট বেলায়, এখন-ও , আমি ভাবতাম সিংহ কেন বনের রাজা, বাঘা আর সিংহ লড়াই হলে কে জিতবে ইত্যাদি। বাঘ যেহেতু বাংলাদেশে পাওয়া যায় সেহেতু আমি বরাবরই বাঘের পক্ষে। পরে কোথায় জানি পড়েছিলাম বাঘের ই জিতার সম্ভাবনা। যাইহোক, আমি যতদূর জানি, সুন্দরবনে বাঘের সংখ্যা বাড়ার দিকে, (না ও হতে পারে)। যদিও তা প্রয়োজনের চেয়ে অনেক অনেক কম।
বাঘ মানুষখেকো কেন হচ্ছে সেটা বুঝতে হবে আগে। বর্ধিত জনসংখ্যার চাপে, মানুষ বাঘের বসতিতে ঢুকে পড়ছে। তা বাঘ কি ছেড়ে কথা বলবে?
তবে সুন্দরবনে বাঘের সংখ্যা গত ২০ বছরে দ্বিগুন হয়েছে। এবং সুন্দর বনে বিরাট টুরিস্ট আসতে পারে শুধু বাঘ দেখার জন্যে। সেই প্রকল্পও শুরু হয়েছে। বাংলাদেশকেও এই সুযোগ নিতে হবে।
আরেকটা কথা, মুক্তমোনা খুব স্লো হয়ে গেছে। কনটেন্টগুলো মিরর সার্ভার বা CDN এ হোস্ট করলে ভাল হয়।