কবির মৃত্যু
গ্রানাডা, স্পেন।
দূর উঁচু নীলাভ পর্বতমালা।
পর্বতমালার উপরে সারি সারি পাইন গাছে ছাওয়া ঘন নিবিড় অরণ্য। সেই অরণ্যের মাঝখানে ছায়াঢাকা মায়াময় এক গভীর উপতক্যা। আর, এর ঠিক কেন্দ্রবিন্দুতেই বর্ণময় ফুলে ফুলে ছাওয়া খুব আটপৌরে একটি সমাধি। পাইনের মাতাল করা গন্ধ গায়ে মেখে আন্দালুসীয় মৃদুমন্দ এলোমেলো হাওয়া উড়ে আসছে সেখানে। মমতা মাখানো আলতো কোমল পরশ বুলিয়ে দিয়ে যাচ্ছে সেই সমাধিক্ষেত্রে। গভীর ভালবাসায় রিনরিন শব্দে ঝরা পাতারা আবেশী প্রেমিকার মত লুটিয়ে পড়ছে সমাধিক্ষেত্রের বুকে।
এখানেই যে শুয়ে আছেন আন্দালুসিয়ার শ্রেষ্ঠতম কবি এবং নাট্যকার, কবি ফেদেরিকো গার্সিয়া লোরকা। অপূর্ব রূপবান এক মহতি কবি। ফ্যাসিস্ট ফ্রাংকোর ফ্যালাঞ্জিস্ট বাহিনী এখন থেকে চুয়াত্তর বছর আগে এই মানবতাবাদী কবিকে হত্যা করেছিল ভয়াবহ নৃশংসতায়। তারপর তার লাশ গায়েব করে দিয়েছিল কাপুরুষের মত।
লোরকা কি জানতেন যে তাকে এভাবে খুন করা হবে? কবিরা কি ভবিষ্যতদ্রষ্টা হন? কোন এক বিচিত্র উপায়ে দেখতে কি পান না ঘটা ঘটনাপঞ্জিকে? অনুভব কি করতে পারেন অনাগত সময়কে? নাহলে কী করে তিনি মৃত্যুর কয়েক বছর আগেই লিখে যান এমন কবিতা, যে কবিতার সাথে হুবহু মিলে যায় তার মৃত্যুকালীন ঘটনাসমূহ। লোরকার সেই কবিতার কয়েকটি পংক্তি এরকম-
আমি বুঝতে পারছি, খুন করা হয়েছে আমাকে।
তারা ক্যাফে, কবরখানা আর গীর্জাগুলো তন্ন তন্ন করে খুঁজছে।
তারা সমস্ত পিপে আর ক্যাবার্ডগুলো তছনছ করেছে।
তিনটে কংকালকে লুট করে খুলে নিয়ে গেছে সোনার দাঁত।
আমাকে তারা খুঁজে পায়নি।
কখনো-ই কি পায় নি তারা?
না, কখনোই নয়।
ডন কুইজোট এবং জিপসিদের বর্ণিল ফ্লামেনকো সঙ্গীত এবং নাচের প্রেমময় রোমাঞ্চকর স্পেন। তিরিশের দশকে সেই রোমাঞ্চকর প্রেমভূমি কেঁপে উঠেছিল রক্তক্ষয়ী গৃহযুদ্ধের দামামায়। ১৯৩৬ থেকে ১৯৩৯ সাল পর্যন্ত স্থায়ী এই গৃহযুদ্ধে অর্ধ মিলিওনেরও বেশি লোক প্রাণ হারিয়েছিল। ১৯৩৬ সালের ফেব্রুয়ারী থেকে জুন মাসের মধ্যে ২৩৯টি রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়। ন্যাশনালিস্টরা প্রতিমাসে গড়পড়তায় এক হাজার করে রিপাবলিক্যানদেরকে হত্যা করতো। শুধু হত্যা করেই বর্বরতার শেষ হতো না। এই সব হত্যাকাণ্ডের পরে মৃতদের আত্মীয়স্বজনদেরকে শোক করার স্বাধীনতাও দেওয়া হতো না।
এরকমই এক রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ডের শিকার হন লোরকা। মাত্র আটত্রিশ বছর বয়স তার তখন। ১৯৩৬ সালের অগাস্ট মাসের ১৮ তারিখে লোরকাকে গ্রানাডার জেল থেকে নিয়ে যাওয়া হয় পার্শ্ববর্তী পাহাড়ের পাদদেশে। একজন শিক্ষক এবং দু’জন ন্যাশনালিস্ট বিরোধী বামপন্থী বুলফাইটারের সাথে মৃত্যুদন্ড দেওয়া হয়। হত্যার পরে অবহেলায় অন্যদের সাথে মাটি চাপা দিয়ে দেওয়া হয় তাকে। ফ্যালাঞ্জিস্টরা বহুদিন ধরেই লোরকাকে পৃথিবী থেকে বিদায় জানানোর জন্য প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছিল। এর পিছনে কারণও ছিল। লোরকা প্রকাশ্যেই তার সমর্থন ঘোষণা করে দিয়েছিলেন। তিনি কোন পক্ষের লোক সেটা বুঝতে কারোরই সময় লাগেনি। তিনি বলেছিলেন, ‘আমি সবসময়ই তাদের সাথে থাকবো যাদের সহায়সম্পত্তি বলতে কিছুই নেই, এমনকি সেই কিছু না থাকাটাকেও যাদেরকে শান্তিতে উপভোগ করতে দেওয়া হয় না।‘
লোরকাকে বন্দী করা একজন ফ্যালাঞ্জিস্টকে যখন জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল যে লোরকার কী অপরাধ। সে তখন পরিষ্কারভাবেই বলেছিল যে, ‘তার লেখালেখি। অন্যেরা পিস্তল-বন্দুক হাতে নিয়েও যে ক্ষতি করতে পারেনি, সে কলম হাতে নিয়েই তার চেয়ে বেশি ক্ষতি করে ফেলেছিল।‘ তার হত্যাকারীরা অবশ্য প্রকাশ্যে একথা স্বীকার করেনি কখনো। বরং তার মৃত্যুর জন্য তার সমকামী হওয়ার অপরাধকে তুলে ধরেছে। তারা মনে করতো ঘৃণ্য এই অপরাধের জন্য তার মৃত্যুদণ্ড পাওয়াটা প্রাপ্যই ছিল।
ফ্রাংকোর স্বৈরাচারী সরকারতো লোরকাকে হত্যা করার কথা স্বীকারই করেনি। যুদ্ধে আহত হয়ে রাস্তার ধারে মরে পড়েছিল বলে ডেথ সার্টিফিকেট ইস্যু করেছিল তারা। জীবিত কবি ভীতিকর, কিন্তু মৃত কবি বড়ই ভয়ংকর।
কবি পাবলো নেরুদা লোরকার মৃত্যু সংবাদ শুনে বিপন্ন উচ্চারণে বলেছিলেন, ‘স্পেনের সেরা ফুল ঝরে গেল।‘ আসলেই তাই। স্পেন তার আর কোন কবি বা শিল্পীকে এত আবেগ আর ভালবাসা দিয়ে বুকে টেনে নেয়নি। রুশ কবি মায়াকোভস্কির মতই হাজার হাজার মানুষের সামনে দাঁড়িয়ে গলা খুলে কবিতা পড়তে ভালবাসতেন লোরকা। মানুষের প্রতি তার অপরিসীম ভালবাসায় মানুষ ফিরিয়ে দিয়েছিল শতগুনে তাকে।
সমসাময়িক কবিদের মত ভবিষ্যতবাদ এবং দাদাবাদে ভেসে না গিয়ে একবারে মাটির কাছাকাছি গিয়ে কবিতা লিখেছেন তিনি। স্পেনের জল মাটিতে শিকড় গেড়ে বসে ছিলেন লোরকা। স্বদেশের বিচিত্র রূপ-রস, গন্ধ, বর্ণ তাকে রেখেছিল আচ্ছন্ন করে। দেশের যা কিছু সম্পদ, যা কিছু বর্ণময়, যা কিছু উজ্জ্বল তাকেই ভালবাসার চাদর মুড়িয়ে পরম যত্নে তুলে এনেছিলেন তিনি। তার কবিতা হয়ে উঠেছিল দেশ আর দেশের মানুষের প্রতি ভালবাসার অফুরন্ত আধার।
আন্দালুসিয়ার জল, মাটি, নিসর্গ, লোকগাথা, উৎসব আয়োজন, কৃষকজীবন, দুরন্ত ষাড়ের লড়াই সবকিছু নতুন আদল পেয়ে উঠে এলো লোরকার কবিতায়। জিপসিদের বর্ণময় বাঁধনহীন মুক্তজীবনও মূর্ত হয়ে উঠলো নতুন স্বাদে, নতুন ঘ্রানে।
তার প্রথম কাব্যগ্রন্থ ‘রোমান্সেরো গিতানো’ প্রকাশ হবার সাথে সাথেই সারা স্পেনের নয়নের মণিতে পরিণত হন তিনি। এত গভীর ভালবাসা দিয়ে, এত মায়াময় দরদ দিয়ে, এত প্রবল প্রেম দিয়ে, এত তীব্র আবেগ দিয়ে আর কেউ যে স্বদেশের কথা বলেনি আগে। সেই যে স্বদেশ উঠে এলো লোরকার তুলিতে, আর কখনোই তা থামেনি। আজীবন দেশ, মানুষ আর মাটিকে সঙ্গে নিয়ে চলেছেন তিনি, বুকের মধ্যে আগলে রেখেছেন পরম মমতায়। শুধুমাত্র মৃত্যু এসেই বিরাম চিহ্ন টেনেছে সেখানে।
মৃত্যুর কিছুদিন আগে অসাধারণ কিছু সনেট লিখেছিলেন লোরকা। গৃহযুদ্ধের রক্তাক্ত ডামাডোলে হারিয়ে গিয়েছে সেই সব সনেটগুলো কোথায় কেউ জানে না। অসম্ভব ভালবাসা আর কষ্ট মাখানো সেইসব অমূল্য রত্নভাণ্ডার আর খুঁজে পাওয়া যায়নি কোথাও।
লোরকার উপস্থিতি এতই দ্যুতিময় ছিল যে তার পাশে সব কিছুকেই বড় বিবর্ণ বলে মনে হত। তার কবি বন্ধু জর্জ গুইলেন বলেছিলেন যে, ‘লোরকা আশেপাশে থাকলে গরম-ঠান্ডার কোন অনুভূতিই টের পাওয়া যেত না। তার উপস্থিতি এমনই মাদকপূর্ণ ছিল যে সবকিছু ভুলে তা হয়ে উঠতো লোরকাময়।‘
সময়ের চেয়েও এগিয়ে ছিলেন লোরকা। ফলে বহু লোকের চক্ষুশূল ছিলেন তিনি। তার মেধা, তার সাফল্য, তার চিন্তাভাবনার প্রাগসরতা, সমকামিতা তার মৃত্যুর কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছিল। ইয়ান গিবসন তার ‘পোয়েট’স ডেথ’ গ্রন্থে বলেছেন, ‘লোরকার মৃত্যুর ক্ষেত্রে ঈর্ষা এক বিশাল ভূমিকা পালন করেছে। তার মেধা, সাফল্য, মুক্তচিন্তা, বামপন্থী ধ্যানধারণায় ঈর্ষান্বিত হয়ে তৈরি হয়েছিল অসংখ্য শত্রু। তারাই তাকে বাঁচতে দেয়নি। সামরিক জান্তা স্পেনের ক্ষমতা দখলের পর তার মৃত্যু হয়ে উঠেছিল সময়ের ব্যাপার মাত্র।‘
লোরকার দৈহিক মৃত্যুকে নিশ্চিত করেছে তার শত্রুরা ঠিকই। কিন্তু মুছে ফেলতে পারেনি তার অস্তিত্বকে। আজো সারা পৃথিবীর সকল বিপন্ন কবির অস্তিত্বের প্রতীক হিসেবে লোরকার বেঁচে রয়েছেন আমাদের মাঝে।
সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় লোরকার স্মরণে অসাধারণ একটি কবিতা লিখেছিলেন ‘কবির মৃত্যু’ শিরোনামে। কবিতাটি আমার অসম্ভব প্রিয় একটি কবিতা। এই কবিতার শিরোনাম থেকেই প্রবন্ধের শিরোনামটি ধার করা। আপনাদের জন্য তুলে দিলাম কবিতাটা। এছাড়া লোরকার একটি কবিতাও আছে এই কবিতাটির পরপরই। আশা করি সেটিও ভাল লাগবে আপনাদের।
কবির মৃত্যু
সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়
দু’জন খসখসে সবুজ উর্দিপরা সিপাহী
কবিকে নিয়ে গেল টানতে টানতে
কবি প্রশ্ন করলেন : আমার হাতে শিকল বেঁধেছো কেন?
সিপাহী দু’জন উত্তর দিল না;
সিপাহী দু’জনেরই জিভ কাটা।
অস্পষ্ট গোধুলি আলোয় তাদের পায়ে ভারী বুটের শব্দ
তাদের মুখে কঠোর বিষন্নতা
তাদের চোখে বিজ্ঞাপনের আলোর লাল আভা।
মেটে রঙের রাস্তা চলে গেছে পুকুরের পার দিয়ে
ফ্লোরেসেন্ট বাঁশঝাড় ঘুরে-
ফসল কাটা মাঠে এখন
সদ্যকৃত বধ্যভূমি।
সেখানে আরও চারজন সিপাহী রাইফেল হাতে প্রস্তুত
তাদের ঘিরে হাজার হাজার নারী ও পুরুষ
কেউ এসেছে বহু দূরের অড়হর ক্ষেত থেকে পায়ে হেঁটে
কেউ এসেছে পাটকলের ছুটির বাঁশি আগে বাজিয়ে
কেউ এসেছে ঘড়ির দোকানে ঝাঁপ ফেলে
কেউ এসেছে ক্যামেরায় নতুন ফিল্ম ভরে
কেউ এসেছে অন্ধের লাঠি ছুঁয়ে ছুঁয়ে
জননী শিশুকে বাড়িতে রেখে আসেননি
যুবক এনেছে তার যুবতীকে
বৃদ্ধ ধরে আছে বৃদ্ধতরের কাঁধ
সবাই এসেছে একজন কবির
হত্যাদৃশ্য
প্রত্যক্ষ করতে।
খুঁটির সঙ্গে বাঁধা হলো কবিকে,
তিনি দেখতে লাগলেন
তাঁর ডান হাতের আঙুলগুলো-
কনিষ্ঠায় একটি তিল, অনামিকা অলঙ্কারহীন
মধ্যমায় ঈষৎ টনটনে ব্যথা, তর্জনী সংকেতময়
বৃদ্ধাঙ্গুলি বীভৎস, বিকৃত-
কবি সামান্য হাসলেন,
একজন সিপাহীকে বললেন,আঙুলে
রক্ত জমে যাচ্ছে হে,
হাতের শিকল খুলে দাও!
সহস্র জনতার চিৎকারে সিপাহীর কান
সেই মুহূর্তে বধির হয়ে গেল।
জনতার মধ্য থেকে একজন বৈজ্ঞানিক বললেন একজন কসাইকে,
পৃথিবীতে মানুষ যত বাড়ছে, ততই মুর্গী কমে যাচ্ছে।
একজন আদার ব্যাপারী জাহাজ মার্কা বিড়ি ধরিয়ে বললেন,
কাঁচা লঙ্কাতেও আজকাল তেমন ঝাল নেই!
একজন সংশয়বাদী উচ্চারণ করলেন আপন মনে,
বাপের জন্মেও এক সঙ্গে এত বেজম্মা দেখিনি, শালা!
পরাজিত এম এল এ বললেন একজন ব্যায়ামবীরকে,
কুঁচকিতে বড় আমবাত হচ্ছে হে আজকাল!
একজন ভিখিরি খুচরো পয়সা ভাঙিয়ে দেয় বাদামওয়ালাকে
একজন পকেটমারের হাত অকস্মাৎ অবশ হয়ে যায়
একজন ঘাটোয়াল বন্যার চিন্তায় আকুল হয়ে পড়ে
একজন প্রধানা শিক্ষয়িত্রী তাঁর ছাত্রীদের জানালেন
প্লেটো বলেছিলেন…
একজন ছাত্র একটি লম্বা লোককে বললো,
মাথাটা পকেটে পুরুন দাদা!
এক নারী অপর নারীকে বললো,
এখানে একটা গ্যালারি বানিয়ে দিলে পারতো…
একজন চাষী একজন জনমজুরকে পরামর্শ দেয়,
বৌটার মুখে ফোলিডল ঢেলে দিতে পারো না?
একজন মানুষ আর একজন মানুষকে বলে,
রক্তপাত ছাড়া পৃথিবী উর্বর হবে না।
তবু একজন যেন সমম্বরে চেঁচিয়ে উঠলো, এ তো ভুল লোককে
এনেছে। ভুল মানুষ, ভুল মানুষ।
রক্ত গোধূলির পশ্চিমে জ্যোৎস্না, দক্ষিণে মেঘ
বাঁশবনে ডেকে উঠলো বিপন্ন শেয়াল
নারীর অভিমানের মতন পাতলা ছায়া ভাসে
পুকুরের জলে
ঝমঝুমির মতন একটা বকুল গাছে কয়েকশো পাখির ডাক
কবি তাঁর হাতের আঙুল থেকে চোখ তুলে তাকালেন,
জনতার কেন্দ্রবিন্দুতে
রেখা ও অক্ষর থেকে রক্তমাংসের সমাহার
তাঁকে নিয়ে গেল অরণ্যের দিকে
ছেলেবেলার বাতাবি লেবু গাছের সঙ্গে মিশে গেল
হেমন্ত দিনের শেষ আলো
তিনি দেখলেন সেতুর নিচে ঘনায়মান অন্ধকারে
একগুচ্ছ জোনাকি
দমকা হাওয়ায় এলোমেলো হলো চুল, তিনি বুঝতে পারলেন
সমুদ্র থেকে আসছে বৃষ্টিময় মেঘ
তিনি বৃষ্টির জন্য চোখ তুলে আবার
দেখতে পেলেন অরণ্য
অরণের প্রতিটি বৃক্ষের স্বাধীনতা-
গাব গাছ বেয়ে মন্থরভাবে নেমে এলো একটি তক্ষক
ঠিক ঘড়ির মতন সে সাতবার ডাকলো :
সঙ্গে সঙ্গে ছয় রিপুর মতন ছ’জন
বোবা কালা সিপাহী
উঁচিয়ে ধরলো রাইফেল-
যেন মাঝখানে রয়েছে একজন ছেলেধরা
এমন ভাবে জনতা ক্রুদ্ধস্বরে চেঁচিয়ে উঠলো
ইনকিলাব জিন্দাবাদ!
কবির স্বতঃপ্রবৃত্ত ঠোঁট নড়ে উঠলো
তিনি অস্ফুট হৃষ্টতায় বললেন :
বিপ্লব দীর্ঘজীবী হোক!
মানুষের মুক্তি আসুক!
আমার শিকল খুলে দাও!
কবি অত মানুষের মুখের দিকে চেয়ে খুঁজলেন একটি মানুষ
নারীদের মুখের দিকে চেয়ে খুঁজলেন একটি নারী
তিনি দু’জনকেই পেয়ে গেলেন
কবি আবার তাদের উদ্দেশ্যে মনে মনে বললেন,
বিপ্লব দীর্ঘজীবী হোক! মিলিত মানুষ ও
প্রত্যেক মানুষের নিজস্ব বিপ্লব!
প্রথম গুলিটি তাঁর কানের পাশ দিয়ে বেরিয়ে গেল-
যেমন যায়,
কবি নিঃশব্দে হাসলেন
দ্বিতীয় গুলিতেই তাঁর বুক ফুটো হয়ে গেল
কবি তবু অপরাজিতের মতন হাসলেন হা-হা শব্দে
তৃতীয় গুলি ভেদ করে গেল তাঁর কন্ঠ
কবি শান্ত ভাবে বললেন,
আমি মরবো না!
মিথ্যে কথা, কবিরা সব সময় সত্যদ্রষ্টা হয় না।
চতুর্থ গুলিতে বিদীর্ণ হয়ে গেল তাঁর কপাল
পঞ্চম গুলিতে মড়মড় করে উঠলো কাঠের খুঁটি
ষষ্ঠ গুলিতে কবির বুকের ওপর রাখা ডান হাত
ছিন্নভিন্ন হয়ে উড়ে গেল
কবি হুমড়ি খেয়ে পড়তে লাগলেন মাটিতে
জনতা ছুটে এলো কবির রক্ত গায়ে মাথায় মাখতে-
কবি কোনো উল্লাস-ধ্বনি বা হাহাকার কিছুই শুনতে পেলেন না
কবির রক্ত ঘিলু মজ্জা মাটিতে ছিট্কে পড়া মাত্রই
আকাশ থেকে বৃষ্টি নামলো দারুণ তোড়ে
শেষ নিঃশ্বাস পড়ার আগে কবির ঠোঁট একবার
নড়ে উঠলো কি উঠলো না
কেউ সেদিকে ভ্রূক্ষেপ করেনি।
আসলে, কবির শেষ মুহূর্তটি মোটামুটি আনন্দেই কাটলো
মাটিতে পড়ে থাকা ছিন্ন হাতের দিকে তাকিয়ে তিনি বলতে চাইলেন,
বলেছিলুম কিনা, আমার হাত শিকলে বাঁধা থাকবে না!
গান
ফেদেরিকো গার্সিয়া লোরকা
চারুমুখী মেয়েটি জলপাই কুড়োয়।
দুর্গচূড়ার প্রেমিক বাতাস তার ক্ষীণ কোমর জড়িয়ে থাকে।
দীর্ঘ আঙরাখা আর নীল ও সবুজ পোশাকে
আন্দালুসীয় ঘোড়ার পিঠে চার আরোহী
চলে যেতে যেতে বলে,
‘ও মেয়ে, চলো করাডোবায় যাই।‘
মেয়েটি ফিরেও দেখে না।
নারেঙ রঙের পোশাকে, ঝকঝকে রূপোর তলোয়ার
সিংহ কটিতে এঁটে চলে যেতে যেতে
বলে ওঠে তিন তরুণ মাতাদোর,
‘ও মেয়ে, চলো, সেভিল ঘুরে আসি।‘
মেয়েটি তাকিয়েও দেখে না।
সন্ধ্যা যখন রক্তমুখী হয়ে ওঠে
শেষের আলোয়,
গোলাপগুচ্ছ আর চন্দ্রভুক ফুল হাতে
চলে যেতে যেতে বলে ওঠে একটি যুবক
‘ও মেয়ে, এসো গ্রানাদায় যাই।‘
মেয়েটি ভ্রূক্ষেপও করে না।
চারুমুখী মেয়েটি শুধু জলপাই কুড়িয়ে যায়
আর, তার কোমর ধরে
ঘুরপাক খেতে থাকে প্রেমিক হাওয়া।
Death Of the Poet
By Mikhail Yuryevich Lermontov
(1837)
The Bard is killed! The honor’s striver
Fell, slandered by a gossip’s dread,
With lead in breast and vengeful fire,
Drooped with his ever-proud head.
The Poet’s soul did not bear
The shameful hurts of low breed,
He fought against the worldly “faire,”
Alone as always, … and is killed!
He’s killed! What for are late orations
Of useless praise; and weeps and moans,
And gibberish of explanations? —
The fate had brought her verdict on!
Had not you first so hard maltreated
His free and brave poetic gift,
And, for your pleasure, fanned and fitted
The fire that in ashes drifts?
You may be happy … Those tortures
Had broken his strength, at last:
Like light, had failed the genius gorgeous;
The sumptuous wreath had weathered fast.
His murderer, without mercy,
Betook his aim and bloody chance,
His empty heart is calm and healthy,
The pistol did not tremble once.
And what is wonder? … From a distance,
By road of manifold exiles,
He came to us, by fatal instance,
To catch his fortune, rank and price.
Detested he the alien lands
Traditions, language and discussions;
He couldn’t spare The Fame of Russians
And fathom — till last instant rushes —
What a disaster grips his hand! …
And he is killed, and leaves from here,
As that young Bard, mysterious but dear,
The prey of vengeance, deaf and bland,
Who sang he of, so lyric and sincere,
Who too was put to death by similar a hand.
And why, from peaceful times and simple-hearted fellows,
He entered this high life, so stiff and so jealous
Of freedom-loving heart and passions full of flame?
Why did he give his hand to slanders, mean and worthless
Why trusted their words and their oaths, godless,
He, who from youth had caught the mankind’s frame?
And then his wreath, a crown of sloe,
Woven with bays, they put on Poet’s head;
The thorns, that secretly were grown,
Were stinging famous brow, yet.
His life’s fast end was poisoned with a gurgle
And faithless whisper of the mocking fops,
And died he with burning thrust for struggle,
With hid vexation for his cheated hopes.
The charming lyre is now silent,
It will be never heard by us:
The bard’s abode is grim and tightened,
And seal is placed on his mouth.
And you, oh, vainglory decedents
Of famous fathers, so mean and base,
Who’ve trod with ushers’ feet the remnants
Of clans, offended by the fortune’s plays!
In greedy crowd standing by the throne,
The foes of Freedom, Genius, and Repute —
You’re hid in shadow of a law-stone,
For you, and truth and justice must be mute! …
But there is Court of God, you, evil manifold! —
The terrible court: it waits;
It’s not reached by a ring of gold,
It knows, in advance, all thoughts’ and actions’ weights.
Then you, in vain, will try to bring your evil voice on:
It will not help you to be right,
And you will not wash of with all your bloody poison,
The Poet’s righteous blood!
আমারতো মনে হয়, সকল বিপন্ন কবির শুধু নয়, সকল বিপন্ন মানুষের অস্তিত্বের প্রতীক হিসেবে লোরকা বেঁচে আছেন।
একজন বিপ্লবী কবি শুধু কবিতা লেখেন না, স্বপ্ন দেখেন, স্বপ্ন দেখান। তাঁদের স্বপ্নও এইভাবে বেঁচে থাকে। লোরকার মতো আরো অনেকেই দেশে দেশে শোষক শ্রেণীর হাতে জীবন দিয়েছেন, কেউ কবিতা লিখতেন, কেউ শুধু স্বপ্ন দেখতেন সুন্দর সমাজ নির্মাণের। লোরকার সাথে সাথে তাঁদেরও স্মরণ করছি শ্রদ্ধাভরে।
ফরিদকে ধন্যবাদ এই হৃদয়ছোঁয়া লেখাটার জন্য।
পড়ে শিউরে উঠলাম। না জানি কি অপূর্ব সৃষ্টি তিনি রেখে গিয়েছিলেন!
@ইরতিশাদ ভাই,
অসাধারণ! :yes:
কবির মৃত্যু কবিতাটির আবৃত্তি দেবার ইচ্ছে ছিল মূল প্রবন্ধের সাথে। আবৃত্তিটি ইস্নিপ্সে আপলোড করতে গিয়ে দেখি কোনভাবেই করতে দিচ্ছে না। বলে যে কপিরাইটের সমস্যা কারণে আপলোড করবে না। পরে চোরাই বুদ্ধিতে চেষ্টা করলাম। প্রাইভেট ফোল্ডারে আপলোড করে স্থানান্তরিত করলাম পাবলিক ফোল্ডারে। কিন্তু ওই ব্যাটারাও পাক্কা ঘুঘু। সাথে সাথেই দেখি অদৃশ্য করে দিয়েছে ফাইল। কোনভাবেই আর খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।
আগে যে কোন এমপিথ্রি ফাইলকে আমি মুক্তমনার সার্ভারে রেখে লিংক করে দিতাম। মুক্তমনা হ্যাক হবার পর থেকে অভি কী জানি কি করেছে, এখন আর আমি মুক্তমনাতেও আপলোড করতে পারি না। ফলে, অগত্যার গতি হিসেবে ইউটিউবকে বেছে নিলাম। এরা ইস্নিপ্সের মত এত যন্ত্রণা দেয় না। যদিও এর জন্য কিছু ঝক্কি ঝামেলা সইতে হয়েছে। এমপিথ্রি ফাইলকে ফিল্মমেকার দিয়ে ভিডিও ফাইলে রূপান্তরিত করতে হয়েছে।
শুনুন তাহলে আবৃত্তিটি। যথারীতি আবৃত্তিকার শিমুল মুস্তাফা। মূল প্রবন্ধেও এটিকে সংযুক্ত করে দিলাম।
অপুর্ব । একদম মনকে ভরিয়ে দিলেন ,
বিশেষ করে ,
আরও চাই ।
@আফরোজা আলম,
আরো লিখতে হবে? 🙁
ভালো লাগলো!
হৃদয় ছুঁয়ে যাওয়া করুণ ছবির মত ঘটনা।
ধন্যবাদ!
@লাইজু নাহার,
পড়ার জন্যে আপনাকেও ধন্যবাদ।
আমার একটা প্রশ্ন আছে ফরিদ আহমেদের কাছে । ফেদেরিকোর যে গীতি কবিতাটির অনুবাদ এখানে দিয়েছেন , এ গীতি কবিতাটি ফেদেরিকোর কোন Canciónes অথবা Poemas সংকলন থেকে নেয়া ? মুল Castellano নামটি পেলে ভীষণ খুশী হতাম।
@বিজয়,
আমি নিজেও জানি না এটি কোন সংকলন থেকে নেয়া। Impresiones y paisajes এ থাকতে পারে। নিশ্চিত নই। তবে কবিতার নামটা জানি, Arbolé, arbolé seco y verde। William Logan এর করা ইংরেজী অনুবাদটি নিচে দিয়ে দিচ্ছি। বাংলা অনুবাদটি করেছেন অমিতাভ দাশগুপ্ত এবং কবিতা সিংহ। তবে, তাদের অনুবাদে আমি কিছু ছুরি কাঁচি চালিয়েছি। ভেবেছিলাম নিজেই অনুবাদটি করবো। কিন্তু সময়ের অভাবে আর করা হয়নি।
Arbolé, Arbolé
Tree, tree
dry and green.
The girl with the pretty face
is out picking olives.
The wind, playboy of towers,
grabs her around the waist.
Four riders passed by
on Andalusian ponies,
with blue and green jackets
and big, dark capes.
“Come to Cordoba, muchacha.”
The girl won’t listen to them.
Three young bullfighters passed,
slender in the waist,
with jackets the color of oranges
and swords of ancient silver.
“Come to Sevilla, muchacha.”
The girl won’t listen to them.
When the afternoon had turned
dark brown, with scattered light,
a young man passed by, wearing
roses and myrtle of the moon.
“Come to Granada, inuchacha.”
And the girl won’t listen to him.
The girl with the pretty face
keeps on picking olives
with the grey arm of the wind
wrapped around her waist.
Tree, tree
dry and green.
@ফরিদ আহমেদ,
ধন্যবাদ আপনাকে । আমি অবশেষে খুঁজে পেয়েছি । Arbolé, arbolé আসলে CANCIONES (১৯২৪) এর Andaluzas অধ্যায়ের অংশ । আমার সংগ্রহে মুল Castellano কপিটি আছে । এখানেও এটি পাবেন ।
@বিজয়,
লিংকটা তো দিলেন সত্য, তা আমরা বুঝবো কি ভাবে? একটু বাংলা তরজমা করে দেন না দাদা, প্লীজ।
@আকাশ মালিক,
কোন অংশটা অনুবাদ করতে হবে ? Castellano বা Spanish শেখা শুরু করে দিন না ! কঠিন কিছু নয় ।
@বিজয়,
Castellano বা Spanish শেখা শুরু করে দিন না ! কঠিন কিছু নয়।
আপনার আন্তরিকতাকে শ্রদ্ধা জানাই। আজই আমার মেয়েদের কাছে প্রথম পাঠ নেবো।
@আকাশ মালিক,
খুব সোজা ভাষা, বেশি কষ্ট হবে না আপনার। সকালে ওলা, আর বুয়েনোস দিয়াজ দিয়ে শুরু করুন। তারপর কমস্তা। পথে ঘাটে পরিচিত কাউকে দেখলে চেচিয়ে বলবেন কে পাসা, আমিগো। সুন্দরী সহকর্মী থাকলে নিয়মিত বলবেন, তে ভেস মুই হারমোসা। রাতে ঘুমোনোর আগে ভাবীকে সবসময় বলতে হবে, তে কুইয়েরো মুচো। তারপর বুয়েনোস নোচেস বলে শুয়ে পড়বেন। ব্যাস স্পানিশ শেখা শেষ আপনার।
মনে পড়ে নাজিম হেকমতকে নিয়ে লেখার সময় লোরকাকে নিয়ে লেখার অনুরোধ করেছিলাম। জানি না সে কথা মনে রেখেছিলেন কিনা। তবে লেখা পাওয়া গেল এটাই বড় কথা।
সংগ্রামী লোকদের জীবনি সবসময়ই আকর্ষনীয় লাগে, আরো ফরিদ ভাই এর হাতে।
অনেক আগে রহস্য পত্রিকায় রাজনৈতিক হত্যা নামে একটা সিরিজ হত। সেখানে ওনার কথা পড়েছিলাম। সেসময়ের ফ্যাশন ছিল কাউকে হত্যা করা হলে মৃতদেহ হতে বুলেট ছুরি দিয়ে খুচিয়ে সেই বুলেট মদে টোষ্ট করে সেই মদ পান করে ফূর্তি করা হত। লোরকার বেলাতেও তাই হয়েছিল
@আদিল মাহমুদ,
হ্যাঁ, জেলখানার কবি লেখাতে আপনি যে অনুরোধ করেছিলেন তারই প্রেক্ষিতেই এটি লেখা হয়েছে। প্রবন্ধের শুরুতেই সেই বিষয়টা উল্লেখ করবো বলে ভেবে রেখেছিলাম। কিন্তু গত কয়েকদিনে অনাহুত কিছু অনভিপ্রেত ঘটনায় মন-মেজাজ চরম তিক্ত হয়ে ছিল। কারো প্রতি স্বাভাবিক ভদ্রতা, সৌজন্যতা বা কৃতজ্ঞতা দেখানোর মত মানসিক পরিস্থিতি ছিল না। সে কারণেই বিষয়টি উল্লেখ করা হয়নি। এ সুযোগে স্বীকার করে গেলাম। সাথে সাথে ধন্যবাদও প্রাপ্য রইলো আপনার আমার তরফ থেকে।
@ফরিদ আহমেদ,
রীতিমত সম্মানিত বোধ করছি।
কবিতা তেমন না বুঝলেও কবির মানসিকতা বোঝার চেষ্টা করি। আর মানবিকতার ভাষা বুঝতে কবিতা বা কোন ভাষাও বোঝা লাগে না। সেজন্যই এমন লেখা ভাল লাগে।
আমাদের দেশেও সামরিক স্বৈরাচার, এমনকি গনতন্ত্রে উত্তরনের পরেও অনেককে সইতে হয়েছে নির্মম অত্যাচার, হয়ত কাউকে মেরে ফেলা হয়নি, বা অন্তত জীবন নিয়ে পালাতে পেরেছেন।
ফরিদ ভাই, একটা উপন্যাস লেখায় হাত দেন। এই অধমের কথা শোনেন। গল্প বলার এক অসাধারন ক্ষমতা আছে আপনার মধ্যে।
@আতিক রাঢ়ী,
উপন্যাস লিখতে কল্পনা শক্তি লাগে। সেটার যে নিদারুণ ঘাটতি রয়েছে রে ভাই। 🙁
কবিতাটি অসাধারণ। এধরনের কবিতা আমি বোধকরি প্রথম পড়লাম।
্ধন্যবাদ ফরিদ আহমেদকে এই সাবলীল লেখাটি্র জন্য।
@ ফরিদ আহমেদ।
লোরকা কি জানতেন যে তাকে এভাবে খুন করা হবে? কবিরা কি ভবিষ্যতদ্রষ্টা হন? কোন এক বিচিত্র উপায়ে দেখতে কি পান না ঘটা ঘটনাপঞ্জিকে? অনুভব কি করতে পারেন অনাগত সময়কে? নাহলে কী করে তিনি মৃত্যুর কয়েক বছর আগেই লিখে যান এমন কবিতা, যে কবিতার সাথে হুবহু মিলে যায় তার মৃত্যুকালীন ঘটনাসমূহ।]
এই প্রশ্ন আমার ভেতরেও দেখা দিয়েছিল। হুমায়ুন আজাদ স্যার কি জানতেন, তার শেষ পরিণতি কী হবে? এ প্রশ্নের জবাব নিজেই পেয়েছি, এভাবে:
আসলে যারা মুক্তবুদ্ধির চর্চা করেন, তারা সব সময়ই থাকেন প্রতিক্রিয়াশীলদের খড়গের নীচে। তারা বুঝেন, যে কোন মুহূর্তে আক্রমণ হবে তাদের উপর। এরা হচ্ছেন দূরদৃষ্টি সম্প্ন্ন ব্যক্তিত্ব।
ধন্যবাদ লোরকার উপরে একটা তথ্যবহুল প্রবন্ধ উপহার দেয়ার জন্য।
যখন কলেজে পড়তাম মানে নব্য যুবক ছিলাম, সাম্যবাদি কবিতা বিশেষ ভাবে আপ্লুত করত, যেমন সুকান্তের কবিতা। লোরকাও কবিতাও সেসময় পড়েছি কিছু, তারুন্যের উচ্ছাসকে আরও বেগবান করত তা। মাঝে মাঝে কবিতাও লিখতাম সেসময়। একবার তো নজরুলের বিদ্রোহি কবিতার ঢং- এ এক বিশাল কবিতা ফেদে বসলাম। এর পর কি যে হয়ে গেল। কবি হওয়া আর হলো না।সেই বাধনহারা দিনগুলো ভীষণ মিস করি মাঝে মাঝে।
@ভবঘুরে,
একবার যে কবি সে চিরকালেরই কবি। কবির মৃত্যু নেই। আবার বসে পড়ুন কাগজ, কলম নিয়ে। দেখবেন তরতর করে বেরিয়ে আসবে গুচ্ছ গুচ্ছ কবিতা।
দুর্দান্ত! কবিতাগুলোও এবং লেখাটি তো বটেই! :yes: