‘মুক্তিযুদ্ধের চেতনা’ বেশ ভারী দুটি শব্দ। একটা সময় ছিল যখন শব্দ-যুগল বেশ আবেগ নিয়ে ব্যবহার করতাম। কিন্তু এখন ব্যবহার করার আগে একটু ভেবে নিতে হয়। মুক্তিযুদ্ধের চেতনার নামে আজকাল অনেক কিছুই চালানোর চেষ্টা করা হচ্ছে, যেমন, বলা হচ্ছে আওয়ামী লীগের ক্ষমতায় থাকা অপরিহার্য, নইলে এই চেতনার বিলুপ্তি ঘটবে। কেউ কেউ এও বলার চেষ্টা করছেন যে, এখন গণতন্ত্র রক্ষার চেয়ে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা রক্ষা করাই বেশী জরুরী, তাই আওয়ামী লীগের যেকোনো কর্মকাণ্ড সমর্থন করে যেতে হবে। যারা এসব বলছেন তারা জ্ঞাত বা অজ্ঞাত কারণে জেনেও না জানার ভান করেন যে, বাংলাদেশের মানুষ কোন বিশেষ ব্যক্তি বা গোষ্ঠীকে মহিমাহ্নিত করতে বা বাংলাদেশকে একটি চিরস্থায়ী বন্দোবস্তের মাধ্যমে কারো হাতে তুলে দেবার জন্য মুক্তিযুদ্ধ করেনি।
মুক্তিযুদ্ধ যারা করেছিলেন তাদের অনেকেরই স্বপ্ন ছিল এমন একটি দেশের, যেখানে মানুষ শান্তিপূর্ণভাবে খেয়ে-পরে বাঁচবে, স্বাধীনভাবে তাদের মত প্রকাশ করবে, বিদেশী প্রভুদের দিকে তাকিয়ে না থেকে নিজেদের ভাগ্য নিজেরাই নির্ধারণ করবে। অনেকেই স্বপ্ন দেখেছিলেন একটি দেশের যেখানে ন্যায়বিচার থাকবে; ধর্ম-, লিঙ্গ- বা মতাদর্শ-নিরপেক্ষভাবে যেকোনো দেশপ্রেমিক বাংলাদেশী কেবল তার মেধা আর সৎ পরিশ্রম দিয়ে তাদের জীবনকে উন্নত করতে পারবে। দেশের সাধারণ মানুষের এই ন্যায্য স্বপ্নগুলোর বাস্তবায়নের লক্ষ্যে কাজ করাকেই আমি মুক্তিযুদ্ধের চেতনার পক্ষে কাজ করা বলে মনে করি।
দুঃখজনক-ভাবে, একাত্তরে স্বাধীনতা পেলেও এই স্বপ্নগুলোর পূর্ণ বাস্তবায়ন ঘটেনি। বাংলাদেশের অদম্য প্রাণশক্তির সাধারণ মানুষ ক্ষেতে, কলে-কারখানায়, প্রবাসের বৈরী পরিবেশে রক্ত পানি করে দেশের উন্নতির চাকা ঘুরিয়ে চলেছেন, কিন্তু বার বার রাষ্ট্রক্ষমতার শীর্ষে থাকা কিছু মানুষ আর তাদের চাটুকারদের সীমাহীন লোভ সেই চাকার গতিরোধ করেছে; কখনোবা পেছন দিকে ঘুরিয়ে দিয়েছে। এই লোভী মানুষগুলোকে বুঝিয়ে দেবার সময় এসেছে যে ব্যক্তিপূজার দিন শেষ হয়ে আসছে। এমন লোকের সংখ্যা বেড়ে চলেছে, যারা ব্যক্তি বা দলের চেয়ে দেশ ও জনগণকে বেশী গুরুত্ব দেন, যারা মনে করেন ক্ষমতায় আসার জন্য কেবল বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান কিংবা শহীদ জিয়াউর রহমানের বংশধর বা আত্মীয় হওয়াই যথেষ্ট নয়, বরং যা অপরিহার্য তা হোল সততা, নিষ্ঠা আর যোগ্যতা। সৎ, দেশপ্রেমিক ও যোগ্য নেতৃত্বের হাত ধরেই কেবল মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বাস্তবায়ন হতে পারে।
বিগত নির্বাচনে আওয়ামী লীগ বিপুল জনসমর্থন নিয়ে নির্বাচিত হয়েছিল। বেশকিছু উন্নয়ন সূচকে দলটি দেশ ও জাতিকে এগিয়ে নিলেও বেশীরভাগ ক্ষেত্রে বিভিন্ন স্তরের নেতৃত্বের অযোগ্যতা, দুর্নীতি আর আইনের অপব্যবহারের কারণে দলটি আজ জনগণের বিরাগভাজন হয়ে পড়েছে। অবশ্য বাংলাদেশের রাজনীতিতে এই ঘটনা নতুন কিছু নয়; স্বৈরাচারী এরশাদের পতনের পর ক্ষমতায় আসা দুটি প্রধান রাজনৈতিক দলের ক্ষেত্রেই আমরা একই প্রবণতা লক্ষ্য করেছি। বিএনপি কিংবা আওয়ামী লীগ দু’দলই ক্ষমতার মেয়াদ-পূর্তির পর তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে অপেক্ষাকৃত নিরপেক্ষ নির্বাচনে অংশ নিতে অস্বস্তি বোধ করেছে। এর কারণ মূলত জনগণের আশা-আকাঙ্ক্ষা পূরণে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের সীমাহীন ব্যর্থতা। তাই এক মেয়াদ ক্ষমতায় থাকার পর অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনে জনগণের সামনাসামনি হবার বদলে দুটি দলই চেষ্টা করেছে কি করে বাঁকা পথে, ছলে, বলে কৌশলে রাষ্ট্র ক্ষমতার গদিটি আঁকড়ে ধরে থাকা যায়। আজ যদি আওয়ামী লীগ জনগণের আশা আকাঙ্ক্ষা পূরণে সমর্থ হত তাহলে তাদের ক্ষমতায় থাকার জন্য এই বাঁকা পথ ধরতে হত না।
বোঝাই যাচ্ছে আমাদের দেশের এই চলমান রাজনৈতিক সঙ্কটের জন্য দায়ী মূলত আমাদের অসৎ, অযোগ্য আর ক্ষমতা-লোভী রাজনীতিবিদরাই। আর তাদের লোভের যূপকাষ্ঠে বলি হচ্ছি আমরা সাধারণ জনগণ। এই অবস্থা দূর হবে তখনই, যখন একটি রাজনৈতিক দল রক্তধারা, অর্থ ও পেশীশক্তির তোয়াক্কা না করে গণতান্ত্রিক-ভাবে কেবল যোগ্যতার ভিত্তিতে তাদের দলীয়, আঞ্চলিক এবং জাতীয় পর্যায়ের নেতা নির্বাচন করবে। দেশের আজকের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে এই আশা দুরাশা মনে হলেও একটি কার্যকরী গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাসহ অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন পদ্ধতি চালু থাকলে সময়ের পরিক্রমণে বর্তমান অবস্থার পরিবর্তন হতে বাধ্য। এই ধারনার সমর্থন পাই আমরা প্রকৃতির কাছ থেকেই।
জীববিজ্ঞানের ছাত্র হিসেবে আমি ডারউইনিজমের ঘোর সমর্থক; আমার দৈনন্দিন গবেষণায় আমি প্রতিনিয়ত এর প্রয়োগ দেখতে পাই। ডারউইনের প্রাকৃতিক নির্বাচন তত্ত্বের একটি মূল নিয়ামক হচ্ছে ‘সিলেকশন প্রেশার’। একটি জীবের কোন গুনগত বৈশিষ্ট্য তখনই বংশপরম্পরায় সঞ্চালিত হবে, যখন তা ঐ জীবের টিকে থাকার জন্য সহায়ক হবে। অন্যদিকে টিকে থাকার জন্য ক্ষতিকর বিবেচিত হলে সিলেকশন প্রেশারের প্রভাবে কোন বৈশিষ্ট্যের বিলুপ্তি হতে পারে। ডারউইনিজম যে কেবল জীবজগতের জন্যই প্রযোজ্য তা নয়, জড়জগত বা একটি পদ্ধতি/ব্যবস্থার ক্ষেত্রেও এর প্রয়োগ হতে পারে।
আমাদের দেশের বেশীরভাগ রাজনৈতিক নেতাই দুর্নীতিপরায়ণ, অযোগ্য এবং জনগণের প্রত্যাশা পূরণে ব্যর্থ। দেশের রাজনীতির এই ‘গুনগত’বৈশিষ্ট্যটি দূর হচ্ছে না কারণ এর বিপরীতে কোন উপযুক্ত ‘সিলেকশন প্রেশার’ নেই। যোগ্য নেতা পেতে হলে আমাদের একটি চলমান ‘সিলেকশন প্রেশার’-র ব্যবস্থা রাখতে হবে; আর সেটি হল সুষ্ঠু নির্বাচন, যার মাধ্যমে জনগণ দেশপ্রেমিক, সৎ এবং যোগ্য নেতৃত্বকে নির্বাচিত করতে পারবে। এবারের অভিনব নির্বাচনের (?!!) মত গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাকে পাশ কাটিয়ে, জনমতের তোয়াক্কা না করে সংসদ গঠন করলে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়নের উপযুক্ত নেতৃত্ব আমরা কখনই পাব না। আর তাই আওয়ামী লীগ মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের শক্তি হলেও আমি এই নির্বাচন সমর্থন করি না।
(পাদটীকা: উপরে যা লিখেছি তা কোন নতুন কথা নয়। যদিও অরণ্যে রোদন মাত্র, তবুও জনমতের তোয়াক্কা না করে একটি অনৈতিক নির্বাচনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়ে রাখার জন্য লেখাটি পোষ্ট করছি)
সমস্যাগুলো আমরা মোটামূটি সবাই জানি ও বুঝি। এ নিয়ে আর নতুন নতুন আলোচনা ভাল লাগে না। আপনারা দয়া করে সমাধান(গুলো) এবং তার রুটম্যাপ নিয়ে আলোচনা করুন।
আমি নির্বাচনে ভোট দিয়েছি কারন আমার কাছে মনে হয়েছে জামাতের চক্রে পড়েই খালেদা জিয়া সমঝোতা থেকে দূরে ছিল। একতরফা নির্বাচনের জন্য তার ও দায় আছে। এর জন্য তার ভোট বর্জনের আহব্বান আমি প্রত্যাখান করেছি। তবে আমি আওয়ামী লীগ প্রার্থীকে ও বর্জন করেছি কারন বর্তমান পরিস্থিতির জন্য তাদের ও দায় আছে। কিন্তু এই নির্বাচনকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার লেভেল দেয়া একটা গুনাহের কাজ। অন্যদিকে যারা ভোট দেয় নি তাদের দৃষ্টিতে তারা ঠিক তাদের আমি ভূল বলতে পারব না। আপনার সাথে খুব বেশী দ্বিমত করতে পারছি না।
মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ঠিক কি তার ধরাবাঁধা সংজ্ঞা বার করা মুশকিল। বর্তমান দিনে সম্ভবত ‘৭১ সালের ক’জন চিহ্নিত রাজাকারের বিচার করাই এখন মুক্তিযুদ্ধের আদর্শ বা চেতনা হিসেবে বেশীরভাগ লোকে মনে করে, অন্তত কথাবার্তা কাজকর্মে তেমনই মনে হয়। কয়জনের ফাঁসীর বিনিময়ে সব কিছুই হালাল। এই চেতনা প্রতিষ্ঠায় হাইকোর্ট চত্বরে মহিলাকে প্রকাশ্যে যেভাবে পেটানো যায় সেভাবে সভ্য সমাজে পশুকেও পেটানোর কথা মানুষে চিন্তা করে না, শামীম ওসমানের মত লোককে এই চেতনার খাতিরে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বীতায় নির্বাচিত করে আসা সমর্থন করতে হয়। জামাত শিবির ঠেকানো দিয়ে কথা।
মুক্তিযুদ্ধের চেতনা প্রকৃত পক্ষে আজ কায়েম করা অসম্ভব। আওয়ামী লীগ রাজাকারদের বিচার করার সাহস করলেও ধর্মনিরপেক্ষতার কথা বলতে তারাও এখন ভয় পায়। ধর্মনিরপক্ষ নীতির কথা বাদ দিয়ে ঠিক কি মুক্তিযুদ্ধের চেতনা হয় আমি বুঝি না। আমার কাছে ৮/১০ জন রাজাকারের ফাঁসী দেওয়া চেতনার চাইতে ধর্মনিরপেক্ষতার চেতনা অনেক বড়।
দেশে মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষ শক্তি বলতে যাদের বোঝায় তাদের রাজনৈতিক প্রজ্ঞা চিরদিনই দেখেছি অপরিপক্ক। কেবল আবেগের জগতে বিচরন করে বাস্তব সম্পর্কে একেবারেই অজ্ঞ। এই এক দলীয় নির্বাচন যে কি ক্ষতিটা দেশের প্রগতিশীল অসাম্প্রদায়িক শক্তিকে করে গেল সেটা তাদের কে বোঝায়। নিয়ম রক্ষার নির্বাচন নিয়ে এত নাটক, হুববু জনবিচ্ছিন্ন স্বৈরশাসকদের মত নির্বাচনের মহাত্ম্য নিয়ে লেকচার এসবের কোন দরকার ছিল না। অবস্থা যেদিকে যাচ্ছে তাতে আওয়ামী লীগের এখন আর ক্ষমতা ছাড়ারও উপায় নেই, ‘৭৫ এর মত কোন ট্র্যাজেডি না আবার ঘটে এই আশংকায় থাকতে হচ্ছে।
@আদিল মাহমুদ,
নির্বাচন তো হয়েই গেল; এখন জানমালের লোকসান কিসে কমানো যায় সেদিকে নজর দিতে হবে। দরকার হলে জরুরী অবস্থা ঘোষণা করতে হবে। কোথায় যেন পড়লাম দক্ষিণ বঙ্গের দিকে সংখ্যালঘুদের উপর হামলা শুরু হয়েছে; এসব অবিলম্বে শক্ত হাতে দমন করা প্রয়োজন। আশা করি এখন আওয়ামী লীগ নেতৃত্ব প্রজ্ঞার পরিচয় দিয়ে এই সংকট থেকে উত্তরণের পথ খুঁজবে।
আপনার সম্ভবতঃ এটি মুক্তমনায় প্রথম লেখা। যদিও আপনার যৌক্তিক মন্তব্যের সাথে পরিচিত ছিলাম, কিন্তু লেখাটি লিখে আপনি প্রমাণ করলেন বিবেকের দায় কেউ এড়াতে পারে না।
অনেক অনেক ধন্যবাদ লেখাটির জন্য।
(Y)
@অভিজিৎ,
আপনাকেও অনেক ধন্যবাদ মুক্তমনার মত একটি উঁচু মানের যোগাযোগ মাধ্যমে মত প্রকাশের সুযোগ দেবার জন্য।
@মনজুর মুরশেদ,
আপনাকেও ধন্যবাদ। উপরে ফরিদ ভাইয়ের মতো আমিও ফেসবুকে সম্প্রতি একটা স্ট্যাটাস দিয়েছি, যেটা এখানে প্রাসঙ্গিক –
একজন উত্তরে বললেন – দাদা,বেবাকেই তো কইতাছে এইটা করা ঠিক হয় নাই,সেইটা করা ঠিক হয় নাই…কিন্তু কেউ তো কইতাছে না কোনটা করা ঠিক।লীগের বহু ভুল ত্রুটি আছে,কিন্তু অপেক্ষাকৃত তারাই তো মন্দের ভাল।লীগ ছাড়া ধর্ম নিরপেক্ষ অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গড়ার মানসিকতা তো আর কারো ভেতর দেখি না।তাই আওয়ামীলীগ কে বাচিয়ে রাখতে হবে,যদি ৭১ এর চেতনা কে বাচিয়ে রাখতে হয়।
আমি কইলাম – হুম্ম … মুহম্মদের অনুসারীরা করে ইসলাম টিকায় রাখনের জন্য, বজরং দলেরা করে হিন্দুত্ব টিকায়া রাখনের জন্য, স্ট্যালিন সাবে করছিল পুঁজিবাদ ঠেকানো আর সাম্যবাদ টিকায় রাখনের জন্য, আর হাসিনা করতাছে ‘একাত্তরের চেতনা’ বাঁচানো আর ‘আর অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ’ গড়ার মিশন নিয়া। সবাই নিজেগো কামরেই ঠিক বইলা জিকির পাড়ছে আর জাস্টিফাই করছে। অন্যদের ক্ষেত্রে ‘কোনটা করা ঠিক’ সেইটা বুজলেও নিজের ক্ষেত্রে সেইটা আবার বুঝন যায় না। কি করবাম।
@অভিজিৎ,
কথা সত্যি, সবাই যার যার পণ্য বিক্রীর ধান্দায়, মাঝখানে আমরা জনগন চিড়েচ্যাপ্টা… …
@অভিজিৎ,
একজন মানুষ স্বপ্ন দেখায়।বাকিরা সব সেই স্বপ্ন বাস্তবায়নে কায়িক শ্রম দেয়।মানব সভ্যতার ইতিহাস পর্যালোচনা করলে বারবার একই কাহিনী দেখি।গনতন্ত্র মানে নির্বাচিত স্বৈরতন্ত্র আর গনতান্ত্রিক কেন্দ্রীকতা মানে নিজের মতাদর্শ সবার উপর চাপিয়ে দেয়া!
১. একটা অত্যন্ত সস্তা এবং জনপ্রিয় কথা হচ্ছে “আমাদের বড় দুই দলের নেতারা দূর্নীতি গ্রস্থ অতএব আমরা এদের কাউকে চাই না”। এর পর নির্বাচন আসলে দলে দলে মানুষ গিয়ে এই বড় দুই দলের নেতাদের লক্ষ, লক্ষ ভোট দিয়ে আসি তার পর আবার গালি দেই শালারা সব ভণ্ড, সন্ত্রাসী দূূর্নীতিবাজ। আসলে শুধু নেতারা নন, আমরা সবাই ভণ্ড না হলে এই নেতারা লক্ষ,লক্ষ ভোট পায় কি করে? যদিও এই দূর্নীিতবাজদের ভােট দেয়াকে জাস্টি ফাই করার জন্য অনেক অজুহাত দাঁড় করাই। একটা কথা আছে, “যে দেশের জনগণ যেমন সে দেশ তেমন নেতাই গড়ে উঠে” এটা মোটমুটি সত্য।
২. যুদ্ধাপরাধীদের বিচার বিষয়টিকে আওয়ামীলীগ ক্ষমতায় টিকে থাকার একটা হাতিয়ার হিসাবে ব্যবহার করছে, আর বিএনপি, জামাতের কাছে ক্ষমতার যাওয়ার হাতিয়ার হচ্ছে ধর্ম। তবে এবারে যারা গণতন্ত্র, নিরপেক্ষ নির্বাচন আর যুদ্ধাপরাধিদের বিচার একসাথে চাচ্ছেন তারা শুধু, শুধু কাঁঠালের আমসত্ব বানাতে চাচ্ছেন।কারণ অবাধ নিরপেক্ষ নির্বাচন মানে বিএনপি, জামাতের বিজয় আর যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের পরিসমাপ্তি। এখন কোন ব্যক্তি গণতন্ত্র এবং মৌলবাদ চাইবেন না প্রহসনের নির্বাচন এবং অসাম্প্রদায়িক সমাজ চাইবেন সেটা তার নিজস্ব বিষয়। কারণ এখন গণতন্ত্র এবং মৌলবাদ এক সূত্রে আর প্রহসনের নির্বাচন এবং অসাম্প্রদায়িক চেতনা আরেক সুত্রে গাঁথা।
৩. যারা মনে করেন প্রধানমন্ত্রী পদত্যাগ করে নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন দিলেই দেশে শান্তি আসবে, রক্তাপাত বন্ধ হবে, তারাও ভূল করছেন। কারণ বর্তমান প্রধানমন্ত্রী পদত্যাগ করার সাথে, সাথে রক্তের গঙ্গা বয়ে যাবে আওয়মীলীগ নেতা, কর্মী আর সংখ্যা লঘু সম্প্রদায়ের।এর প্রথম কারণ যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করা এবং দ্বিতীয় কারণ হচ্ছে আওয়মীলীগের দু:শাসন।
@বিষন্নতা,
আপনার কথা মানি, কিন্তু জাতি গঠন একটি চলমান প্রক্রিয়া, এতে সময়ের প্রয়োজন হয়। বারবার জনগণের হাত থেকে সরকার নির্বাচনের ক্ষমতা কেড়ে নিলে এই প্রক্রিয়া বাধাগ্রস্ত হবে, যার পরিণতি হবে মারাত্মক। আজকের পাকিস্তানের মত রাজনৈতিক অবস্থা বা আমাদের অতীতের জলপাই শাসনের পুনরাবৃত্তি আমরা কখনই চাই না।
যুদ্ধাপরাধীদের বিচার বাঁধাগ্রস্ত হবে কেবল এই যুক্তিতেই যদি আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় রাখতে হয় তবে তা হতে পারে অনির্দিষ্ট কালের জন্য। যদি সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকে, তা নিয়ে বলার কিছু নেই। কিন্তু বর্তমান নির্বাচনের মত তা যদি হয় প্রহসনের নির্বাচন তা কি গ্রহণযোগ্য বলে মনে করেন?
আমার ব্যক্তিগত অভিমত, আমাদের যত তাড়াতাড়ি সম্ভব গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের মাধ্যমে আবার গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় ফিরে যেতে হবে, যুদ্ধাপরাধীদের বিচারকে অবশ্যই সেই নির্বাচনের একটি গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু হিসেবে জনগণের সামনে তুলে ধরতে হবে। এর আগে অন্য একটি লেখায় মুক্তমনার ব্লগার সফিক ও আদিল রহমান পরবর্তী নির্বাচনের আগে একটি ‘কুল-ডাউন পিরিয়ড’ নিয়ে আলোচনা করেছেন। আমিও মনে করি সহিংসতা রোধে এই ধরনের একটি ব্যবস্থা অপরিহার্য।
@মনজুর মুরশেদ,
উপরের বাক্যে ‘আদিল রহমান’ আসলে ‘আদিল মাহমুদ’ । এই অনিচ্ছাকৃত ভুলের জন্য আমি দুঃখিত।
@বিষন্নতা,
এটাই হল এই বাংলাস্তানের আসল কথা। গনতন্ত্র মানতে গেলে এইসব ভাব্লে চলে না, আবার মানবতার কথা টেনে আনলে গনতন্ত্র ত্যাগ করতে হয়।
প্রথমত যেহেতু সংখ্যালঘু সম্প্রদায় আদৌ মানুষ নয়, কাজেই এদের মারা আর পিঁপড়া মারা এক কথা বেশিরভাগ পাকিপন্থীদের কাছে। আর এসব অস্বীকার করাও পাকিপন্থিদের একটা সহজ অভ্যাস।
দ্বিতীয়ত, যেহেতু সংখ্যালঘু সম্প্রদায় লীগের ভোট ব্যাংক কাজেই লীগ ঠ্যাঙ্গানোর জন্য এদের মারধোর করা আর ঘরবাড়ি ছাড়া করা, সব জালিয়ে দেয়া সব বৈধ।
উপরের দুটি সেন্টিমেন্টই মানবতার জন্য সবচেয়ে মারাত্বক হুমকি। একটা প্রচন্ড রকমের জাতি বিদ্বেষ অপরটা স্রেফ রাজনীতির প্রতিপক্ষ নির্মুলের চিন্তা এবং যুক্তি দ্বারা এটাকে বৈধতা দানের চিন্তাভাবনা।
এসব থেকে মনে হয় যে এখন একজন যোগ্য একনায়ক দরকার বাংলাদেশে, কামাল পাশার মত। কিন্তু ব্যাপার একই থাকবে কারন কামালের মত একনায়ন মনে হয় না পাওয়া যাবে। আর বর্তমান রাজনৈতিক দলের কাউকে এই ক্ষমতা দেয়া যাবে না। বি এন পির কথা বাদ দিলাম, আওয়ামী লীগ কেই যদি লিখিত ভাবে আগামী ২০ বছরের ক্ষমতা দেয়া হয় আমি বাজি রাখতে পারি যে এই আওয়ামী লীগই রাজতন্ত্রের কায়দায় সব রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে একেবারে শেষ করে দেবে।
আসলে এদের সবার মানসিকতা এইরকম হয়ে গেছে, আর আমাদের মানে আম জনতার মানসিকতা হয়েছে সবকিছু খুব দ্রুত ভুলে যাওয়া। আমাদের এইসব নষ্টদের মধ্যে থেকে ভাল একনায়ক পাবেন না আপনি। কাজেই হুমায়ুন আজাদ যেমন বলে ছিলেন ঠিক তেমনি সবকিছু চলে যাবে নষ্টদের হাতে।
আওয়ামিলীগ নিজেদের মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষের দল হিসেবে দাবি করলেও তারা বারবার মুক্তিযুদ্ধের চেতনা থেকে বিচ্যুত হয়েছে।অতীতে ক্ষমতার লোভে জামাত শিবির এবং মৌলবদী চক্রের সাথে আঁতাত করেছে।মুক্তিযুদ্ধের চারটি মুল চেতনা তারা বাস্তবায়িত করতে পারেনি।তাই ‘মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ধারন করতে হলে
আওয়ামিলীগ ছাড়া বিকল্প নেই’ এ ধরনের চিন্তা দলীয় গোড়াামীর পরিচয় দেয়।
আপনার বিশ্লেষনে জামাত এবং জঙ্গি রাজনীতি কোন ফ্যাক্টর সেটা স্বীকৃতি পায় নি। বাংলাদেশ স্বাধীন হবার পর থেকেই দুর্নীতি ছাড়া কোন সরকার দেখিনি। সৎ মানুষেরা রাজনীতি করে এটা আজকাল বিশ্বাস হয় না। আওয়ামী লীগ এবং বি এন পি উভয়েই দুর্নীতিবাজ। প্রকারান্তে জামাতে ইসলামীতে সম্ভবত সৎ লোক বেশি। কিন্তু নিয়াজীর সেনা বাহিণী যদি সব সত মুসলমান হত, আমারা কি মুক্তি যুদ্ধ করতাম না? আজ যদি ইহুদীরা এসে সৎ স্বর্গরাজ্য বানানোর প্রতিস্রুতি দেয়, তাদের সমর্থন করবেন কি?
সত আর অসত নয়, আরো অনেক কিছু ভাববার আছে। আপনার বিশ্লেষনটি খুবই অগভীর মনে হয়েছে আমার কাছে। পরিস্থিতির জটিলতা বুঝতে চাইছেন না মনে হয়।
@শফি আমীন,
মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ। শুরুতেই বলি আমি কোন রাজনৈতিক বোদ্ধা বা বিশ্লেষক নই, নেহায়েতই সাধারণ একজন নাগরিক। এই ক্ষুদ্র লেখায় আমি বাংলাদেশের জটিল রাজনৈতিক সমস্যার সবদিক আলোচনায় অক্ষম, আর আমার উদ্দেশ্যও তা ছিল না। তবে আমি নিশ্চিত যে এই নির্বাচন কোন অবস্থাতেই দেশের জন্য মঙ্গল বয়ে আনবে না। এই নির্বাচনে দেশের প্রগতিশীল শক্তির নৈতিক পরাজয় হল; আওয়ামী লীগ ক্ষমতা দীর্ঘস্থায়ী করতে পারল ঠিকই কিন্তু যে মানের জনপ্রতিনিধিদের নিয়ে তারা সরকার গঠন করবে তা দেশ শাসনের নিম্নমানকে আরো নিম্নগামী করবে। বিগত নির্বাচনে যে উঁচু নৈতিক মনোবল নিয়ে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসেছিল তা এবার থাকবে না। তার সাথে দেশে বাড়তি যোগ ব্যাপক জনসমর্থন হ্রাস ও প্রভাবশালী বিদেশী শক্তিগুলোর বৈরী মনোভাব। আর এসবে পরোক্ষ লাভ জামায়াতের মত পরগাছা শক্তিরই।
জনপ্রতিনিধিদের সততা অবশ্যই একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়, কিন্তু আমি কোথাও বলি নি যে এটাই তাদের একমাত্র মাপকাঠি, আমি যোগ্য জনপ্রতিনিধিদের কথা বলেছি যারা বাংলাদেশের সংবিধান অনুযায়ী যোগ্য এবং আমাদের মুক্তিযুদ্ধের মূলভাবের পরিপন্থী নন।
আপনার প্রশ্নগুলোর উত্তর সহজেই অনুমেয়। সবিনয়ে বলি, যেহেতু এগুলো হাইপোথেটিক্যাল প্রশ্ন এবং বাস্তবতা বিবর্জিত আমি এর জবাব দিতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করছি না। আমার ধারনা আপনি জানতে চাইছেন সৎ স্বর্গরাজ্যই আমার একমাত্র কাম্য কিনা। বাংলাদেশ কেমন দেশ হবে তা বাংলাদেশের জনগনই ঠিক করবে, গণতন্ত্রের মূল সুরের সাথে আমার এই দৃষ্টিভঙ্গি সঙ্গতিপূর্ণ।
গনতন্ত্রকামী কেউ কখনো চাইবে না যে নিয়মতান্ত্রিক রাজনীতির একটি পক্ষ বেশী দূর্বল হয়ে পড়ুক। হাসিনা সরকার এই নির্বাচন করে বাংলাদেশের মতো অস্থির রাজনীতি-সমাজের দেশে ক্ষয়িষ্ণু ধর্মনিরপেক্ষতার শক্তিকে যে কতোটা ক্ষতি করে গেলো এটা মাসুল হয়তো দশক ধরে গুনতে হবে।
আশা করি, নির্বাচনের পরই আওয়ামী লীগ ড্যামেজ কন্ট্রোলে নামবে। নিজের ও দেশের আরো সর্বনাশ না করে বিএনপি’র সাথে নতুন ইলেকশনের জন্যে দ্রুত সমঝোতা করবে।
@সফিক,
আপনার মত আমারও একই আশা। তবে, দেশের রাজনীতির যা ধারা, সে অনুযায়ী আমাদের নেতাদের কাছে গদিতে বসাটাই মুখ্য, অন্য কিছু তত গুরুত্বপূর্ণ নয়।
আওয়ামী লীগ আর বি এন পি তে আর বিশেষ পার্থক্য থাকল না। এই একদলীয় ভোট করে আওয়ামী লীগ নিজেদের মান কে বি এন পির লেভেলে নামিয়ে আনল, আর নিজেদের ইমেজের কবর রচনা করল।
স্থায়ী একটি সমাধান হয়ত দুই দলের কোন দলই চায় না।
একটি শক্তিশালী নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশন নেই।নেই একটি যথাযথ শক্তিশালী বিচার বিভাগ। গনমাধ্যম স্বাধীন হলেও বিভক্ত।
এই অবস্থার জন্য দায়ী দুই দলই। তারা যে যখন ক্ষমতায় থেকেছে- দলীয় করনের মচ্ছব করেছে।
ভেবেছে- কোনদিন বুঝি আর যেতে হবে না বিরোধী শিবিরে। আজ আওয়ামী লীগ যা ভাবছে, সাত বছর আগে জাতীয়তাবাদী দল তাই-ই ভাবত।
পুরোপুরি জনগনের উপর আস্থা কেউ কখনো রাখেনি।
আন্দোলনেও না, নির্বাচনেও না।
@মুরশেদ,
একমত (Y)
@মুরশেদ,
আপনি শক্তিশালী নির্বাচন কমিশন আর বিচার বিভাগের কথা বলেছেন। এ দুটো যে কি ম্যাজিক দেখাতে পারে তা ভারতের দশম নির্বাচন কমিশনার টি এন সেশানের কাজ দেখলেই বোঝা যায়।
আশির দশকের শেষ, আমি তখন ভারতে পড়াশোনা করি। প্রায়ই মিঃ সেশান তাঁর যুগান্তকারী পদক্ষেপগুলোর জন্য প্রথম পাতার খবর হচ্ছেন। বারবার রাজনীতিবিদরা তাঁর ক্ষমতা খর্ব করার চেষ্টা করেছে, তাঁর কাজে প্রতিবন্ধকতা তৈরী করেছে, কিন্তু তিনি ছিলেন লক্ষ্যে অবিচল। সুপ্রীম কোর্টের সাহায্য নিয়ে তিনি ঠিকই নির্বাচন কমিশনের একাধিপত্য স্থাপন করছিলেন, পালটে দিয়েছিলেন ভারতের নির্বাচনী কর্মকান্ডের নকশাই। তাঁর সময়েই প্রথম প্রায় চৌদ্দ হাজার সম্ভাব্য প্রার্থী নির্বাচনী নীতিমালা না মানায় অযোগ্য ঘোষিত হন।
আমরা কি এমন একজন টি এন সেশান পেতে পারি না!
আত্মহত্যা করছে আওয়ামী লীগ। আর কিছু লোক এটাকেই গ্লোরিফাই করছে, প্রয়োজন বলে চালাচ্ছে। গণতন্ত্র মানলে এই কাজ করা কীভাবে সম্ভব?
এই প্রহসনের নির্বাচনের প্রতিবাদে আজ ফেসবুকে একটা স্ট্যাটাস দিয়েছিলাম । সেটা তুলে দিচ্ছি এখানে ।
যদি কখনো আত্মবিনাশী, আত্মধ্বংসী, আত্মহত্যাপ্রবন কোনো রাজনৈতিক দলকে দেখতে সাধ হয়, আওয়ামী লীগের মুখ তুমি দেখে নিও।
বিএনপির মতো একটি গার্বেজ সংগঠনকে বার বার বাংলার বুকে গর্জে উঠার সুযোগ করে দেবার জন্য আপনাকে লাল সালাম হের শেখ হাসিনা।
@ফরিদ ভাইয়া,
পুরোপুরি একমত আপনার কথার সাথে। এদেশের যেন নিজেদের নামাতে না পারলে কেউই স্বস্তি বোধ করে না। বি এন পি ১৯৯৬ এর ১৫ ফেব্রুয়ারীতে যে কান্ড করেছিল, আজ আওয়ামীলীগ সেটার পুর্নতা দান করল। প্রমান করল যে এই দেশে গণতন্ত্র নিরাপদ নয়।
শুধুই নিজের নামের প্রতি একধরনের কালিমা লেপে, অন্যদের লেভেলে নিজেকে নামিয়ে এনে লীগ কি পাবে? কিছুই না। মন্দের ভাল বুঝি আর থাকল না এরা। এদের সময়েই এদের হাত ধরেই সংখ্যালঘুরা নির্যাতিত হয়েছে, বি এন পি জামাত আমলের চেয়ে কম হয়ত, কিন্তু হয়েছে তো!। বাকি ছিল আওয়ামীলীগের গনতন্ত্র মনা ইমেজ।অন্ধের যষ্টি এই শেষ সুনামটাকেও এক কালের “মন্দের ভাল” লীগ বিসর্জন দিল।
@অর্ফিউস,
এই পতনে লীগ হয়তো অনেক কিছুই পাবে। হারাবো আসলে আমরা। বাংলাদেশের রাজনীতিতে আওয়ামী লীগের গুরুত্ব অন্য জায়গায়। আওয়ামী লীগ যখন ডোবে, তখন সে একা ডোবে না, পুরো বাংলাদেশকে সাথে নিয়েই ডোবে। আমরাও ডুবি সেই সাথে সাথে। সেই সুযোগে আমাদের ডুবন্ত শরীরের উপরে উল্লসিত উদ্বাহু নৃত্য জুড়ে দেয় পাকিস্তানি প্রেতাত্মারা। দুঃখ হচ্ছে যে, আওয়ামী লীগ এই বিষয়টা বোঝে না। বুঝলে এরকম করে বার বার আত্মঘাতী হয়ে বিএনপি-জামাতের জন্য খেলার মাঠ প্রস্তুত করে দিতো না তারা।
সঠিক কথা বলেছেন ভাইয়া। আওয়ামীলীগ এই বিষয়টা বোঝে না তার কারন হয়ত এটাই যে আওয়ামীলীগ তার পথ হারিয়েছে। আমি দেখতে পাচ্ছি নিকট ভবিষ্যতে পাকি প্রেতাত্মার আগ্রাসন, আর ধর্মীয় সংখ্যা লঘুদের কি হবে পরে এই পাকি প্রেতাত্মার হাতে সেটা ভেবে শিউরে উঠছি। ২০০১ এর কথা আমি কেন মনে হয় না কেউই ভুলতে পেরেছে।
জানিনা আবার এরছেয়েও কত ভয়ংকর কিছু অপেক্ষা করছে আমাদের জন্য। তবে এবার হয়ত পাকি প্রেতাত্মা হাতে না মেরে ভাতে মেরে প্রতিশোধ নেবে। আর তখন হয়ত এই কঙ্কালসার আওয়ামীলীগ ( মুক্তি যুদ্ধের সময়কার আওয়ামীলীগের কঙ্কাল যেটা) আবার একটা চান্স পাবে, আর তারপর আবার প্রহসন এবং আবার দূবে যাওয়া, সেই সাথে আমাদেরকে তথা বাংলাদেশকে নিয়ে ডোবা।
(Y)
@ফরিদ আহমেদ, একমত (Y)
মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষ লীগ? গত সপ্তাহে পত্রিকায় দেখলাম হানিফের নির্বাচনী প্রচারণায় অংশ নিতে আনুষ্ঠানিকভাবে এক জামাত নেতার আওয়ামী লীগে যোগদান। কুষ্টিয়ায় যাকে হানিফ হাসি মুখে গ্রহণ করলেন। এমন অনেক নমুনা অহরহ ঘটছে।
এত তুখোড় তুখোড় রাজনীতিবিদ আওয়ামীলিগে থাকতে বি এনপি এর তারেকের মত জয়ও শুরু করেছে নীতি নির্ধারনী কথা বলা। আওয়ামীলীগ তো পারিবারিক সম্পত্তি নয়।
সংবিধান ঠিক রেখেই নির্বাচন করা যেত। শুধু প্রধানমন্ত্রী নেমে গেলেই হত।
নির্বাচন কমিশন দিয়ে বলিয়েছে যে অবরোধ নির্বাচনে প্রভাব ফেলবে না। সাধারণ জনগণ কি এতই ঠেকেছে যে বোমা খেয়ে ভোট দিতে যাবে। আর যাবেই বা কেন? অবশ্য গেলে বিএনপি জামাতের বোমা আর না গেলে লীগদের ঠেলা।
আর ও বহু কিছু আছে উল্লেখ করার মত।
এদিকে বি এন পি তো মানুষ মারা ছাড়া আন্দোলনের কোন কৌশলই জানে না।
আমিও আপনার পাদটিকার ভাষ্যের কথাকে অনুসরণ করে আমার নৈতিক অবস্থান জানিয়ে গেলাম।
@গীতা দাস,
ধন্যবাদ গীতাদি! অবস্থান পরিষ্কার করাটা জরুরী। হয়তো আমাদের দু’চার জনের কথায় কিছু হবে না, কিন্তু তা বলে নীরব থাকাটাও কোন কাজের কথা নয়। সহমত বা ভিন্নমত যাই হোক না কেন এধরনের গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে আলোচনা হওয়া উচিত।
বাংলাদেশে যতদিন কোন তৃতীয় গ্রহনযোগ্য রাজনৈতিক শক্তি আসবে না, ততদিন এই সমস্যা রয়ে যাবে।
@রানা,
ভারতে আম-আদমি পার্টির উত্থান একটি পর্যবেক্ষণে রাখার মত বিষয়। দেখা যাক, ওনারা কতদূর যেতে পারেন। তবে এতদিনের জমে ওঠা সমস্যার সত্যি কোন ‘কুইক-ফিক্স’ সমাধান আছে কিনা আমি সন্দিহান।
@মনজুর মুরশেদ,
আপনার সাথে সহমত প্রকাশ করছি ।
যৌক্তিক লেখা।লেখার মূল আবেদনের সাথে কোন দ্বিমত নেই।আসলেই সময় এসেছে বর্তমান হাইব্রিড আ.লীগের বিকল্প তৈরি করার।হাইব্রিড আর কাকে বলে।আমাদের থানা শহরের ছাত্রলীগ সভাপতির কথা বলি।শিক্ষাগত যোগ্যতা, ফাইব পাস। সানগ্লাস চোখে দিয়ে,ধোয়া উড়িয়ে, পেছনে এক মাদকাসাক্তকে বসিয়ে নির্বিকার ভাবে বাইক চালিয়ে পুরো থানা শহরটা চষে বেড়ানোই তার কাজ।মারামারি মিমাংসা করা ছড়া কখনও কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে গেছে বলে মনে পড়ে না।কারণে অকারণে বারে বারে পোষ্টার ছাপায়।মানে বারে বারে জানান দেয় লোকাল থানার যাবতীয় চাদাবাজির টাকা যেন তার হাত দিয়েই যায়।জামাত শিবিরের ভয়ে এখন এলাকায় থাকে না,দল না জিতলে বোধহয় আসবে না।কোন রকম চেতনা তো দূরে থাক,মুক্তিযুদ্ধ,আ.লীগ এগুলোই ঠিকমত বোঝে কিনা সন্দেহ আছে।
ছাত্রদলের সভাপতিও আছেন।উনিও বাইক চালান,তবে উনি গাঞ্জা সেবন করেন।গাঞ্জা খাইতে খাইতে উনার শরীরটা সামনের দিকে ধনুকের মত বেঁকে গিয়েছে।এখন উনাকেও এলাকায় দেখি না,বোধহয় ধরপাকড়ের কারণে গা-ঢাকা দিয়েছেন।এই হল অবস্থা।
জনগণ কি আসলেই দেশপ্রেমিক কাউকে চায়? আমার তো মনেহয় জনগণ একজন সৎ,যোগ্য,আল্লাপ্রেমিককে চায়।
ভাই সৎ আর যোগ্য হইলেই হল এর মধ্যে আবার দেশপ্রেমিক আর আল্লাহ প্রেমিক বা লালন প্রেমিক শর্ত দিলে কিছুই খুঁজে পাবেন না