গত দুমাসে ভারতীয় রাজনীতির বৃহত্তম খাশ খবর আগামী প্রধানমন্ত্রী পদের দাবীদার হিসাবে মোদির উত্থান। শুধু তাই না -শাইনিং ইন্ডিয়ানদের মধ্যে তার এপ্রুভাল রেটিং ৮৫% ! আর বাংলাদেশের মিউনিসিপাল ইলেকশনে বিএনপি এবং তার মৌলবাদি দোশরদের বিজয়রথ অব্যাহত। ইসলাম বিপন্ন এই আওয়াজ তুলেই তারা সফল!
মৌলবাদ ভারত পাকিস্তান এবং বাংলাদেশের সব থেকে বড় শত্রু। রাজনৈতিক কারনে ভারতে কংগ্রেস জনসংঘ এবং কমিনিউস্ট দলগুলিও মৌলবাদি শক্তিকে প্রশ্র্য় দিয়েছে। পাকিস্তান এবং বাংলাদেশ মৌলবাদের জন্য দ্রুত গোল্লায় গেছে-ভারতে এই শক্তি দানা বাঁধছে গত দুই তিন দশক জুরে। মৌলবাদ রুখতে সব ধর্মের মৌলবাদি শক্তির বিরুদ্ধেই গোলা দাগতে হবে। সিপিএম বিজেপির বিরুদ্ধে গোলা দেগেছে ঠিক- আবার ইসলামিক মৌলবাদিদের উস্কে দিতে মাদ্রাসার সংখ্যাও বৃদ্ধি করেছে। সিপিএমের আরো গর্হিত কাজ হল, প্রকৃত সেকুলার মুসলিম কমরেডদের সাইডলাইন করে দেওয়া। সিপিএম দলের প্রতিষ্ঠা লগ্নে যেসব মুসলিম কমরেডরা ছিলেন, তারা ছিলেন হিন্দু কমরেডদের থেকেও বেশি সেকুলার। ন্যারেটিভটা এই অর্থে-বর্তমানে এই পতিত কমিনিউস্ট দলের নেতাদের মধ্যে কালীভক্ত এবং হাজি গাজি নেতারদের ভীর বেশি। তাদের সবাইকে বসিয়ে আজকে সিপিএমের নেতা হয়েছে হাজি রেজ্জাক মোল্লা। যিনি জলেও আছেন, তেলেও আছেন। মহম্মদের প্রতিক্রিয়শীলতা আর মার্ক্সের প্রগতিশীলতা -মুদ্রার দুই পিঠ যার কাছে সমান সত্য! এইসব নিয়ে কিছু বলার নেই। কংগ্রেস যেভাবে মৌলবাদি শক্তিকে মদত দিয়ে থাকে-ওরাও তাই করছে। অর্থাৎ সমস্যা হচ্ছে ভারতের রাজনীতিতে সেকুলার আব ধর্মনিরেপেক্ষ অবস্থান বলতে কিছু নেই।
কারন ও স্বাভাবিক-ধর্মের সুরসুরি দিয়ে সহজে ভোট পেলে কে আর তার বিরুদ্ধে যাবে। এই করুন অবস্থাটা আমি ছোটবেলায় শিখেছিলেম কমরেড আবদুল বারির কাছ থেকে। উনি মুর্শিবাদ জেলাতে সিপিএমের প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক এবং ওর মতন সাচ্চা সেকুলার লোক জীবনে দেখি নি। মুর্শিদাবাদের মতন ৮০% মুসলিম প্রধান জেলাতে ওরমতন সাচ্চা কমরেড চলবেনা বলে উনাকে দ্রুত সরিয়ে মৃগাঙ্ক বাবুকে পরে আনা হয় যার পেছনে ছিল মুর্শিবাদের বারি বিরোধি সিপিএম কমরেডরা যারা আধাসাম্প্রদায়িক। বারিচাচা পারিবারিক বন্ধু হওয়াতে খুব ভাল ভাবে বুঝেছিলাম ভারতে সেকুলার নেতাদের ভবিষ্যত নেই-আর যদি মুসলিম নেতা হয়, তার সেকুলার থাকা আরো কঠিন।
এটাত গেল হতাশার কথা। পরিত্রানের উপায় কি? ভারতে বাম, ডান মধ্যম রাজনীতি- সবাই সাম্প্রদায়িতা উস্কানি দেয়। না হলে ভোট পাবে না। উপায় খুঁজতে হবে না হলে ভারতের রাজনীতির হাল পাকিস্তান এবং বাংলাদেশের দিকেই যাবে-ইউরোপের উন্নত দেশের দিকে যাবে না। বিজ্ঞান এবং প্রযুক্তি চিন্তার প্রসার ঘটানো একটা কাজ হতে পারে -কিন্ত করবে কে? ইউটিউবে এসব যুক্তিবাদি বিজ্ঞানবাদি আলোচনা অনেক আছে কিন্ত সেগুলি যদি ৫০০০ হিট পায়, জাকির নায়েকের অর্ধশিক্ষিত লেকচার পায় ৩০০০,০০০ হিট। নাম্বারের নিরিখে এই ত অবস্থা যুক্তিবাদের।
আমি মনে করি সমাধান ভারতের উৎপাদন ব্যবস্থাতেই লুকিয়ে আছে। গ্লোবাল ওয়ার্মিং এর জন্য ভারতের গাঙ্গেয় উপত্যকা আর ২০ বছরে শুকিয়ে যাবে যেহেতু হিমালয়ান গ্লাসিয়ার আস্তে আস্তে ফিকে হচ্ছে। বিজ্ঞানীদের অনুমান ২০৩৫ সালের মধ্যে গঙ্গা নদীটা পুরোটাই শুকিয়ে যাবে হয়ত। ১৯৫০ সালের পর থেকে ভারতের নদীগুলির জল কমেছে ৬০%।
এর পেছনে গ্লোবাল ওয়ামিং ও যেমন কার্যকর, তেমন উচ্চফলনশীল চাষের জন্য জলের চাহিদা বৃদ্ধিও সমান ভাবে দায়ী। জলের স্তর মেট্রোগুলিতে এত নেমেছে, দিল্লী মুম্বাই শহর গুলি জল রেশন করবে আর দুদিন বাদে। মাদ্রাস বা দিল্লীতে এখনই তা হচ্ছে। একটা বিরাট প্রাকৃতিক বিপর্য্য় ভারতের ঘারে গ্লোবাল ওয়ারর্মিং এর হাত ধরে আস্তে আস্তে আসছে। গ্লোবাল ওয়ামিং,জনসংখ্যা বৃদ্ধি এবং আনসাসটেনেবল উচ্চফলনশীল কৃষির যৌথ চাপে, ২০২০ সাল থেকে ভারতে খাদ্য উৎপাদন আস্তে আস্তে কমবে।
বাংলাদেশ অবশ্য এখনি বিপর্যস্ত। ভারত থেকে জলের অসম বন্টনে বাংলাদেশে নদীগুলি মৃত বা রুগ্ন। ফলে বাংলাদেশের বৃহৎ অঞ্চল জুরে দেখা দিয়েছে পরিবেশ বিপর্যয়। যার সাথে আর্সেনিকের সমস্যা থেকে লাগাতার বন্যা এবং খরা বাংলাদেশের বিস্তীর্ন অঞ্চলকে গ্রাস করেছে।
পরিবেগত কারনে ভারত এবং বাংলাদেশের ভবিষ্যত খুব অন্ধকার। এর থেকে উদ্ধার পেতে, বা লোককে বাঁচাতে বিজ্ঞান এবং উন্নত রিনিউয়েবল প্রযুক্তির কাছে আশ্রয় নেওয়া ছাড়া উপায় নেই। সরকার এই কাজ একা পারবে না। লাখে লাখে এন জি ও চাই। প্রতিটা গ্রাম এবং শহরে সবুজ প্রযুক্তির ব্যাপক প্রসারের জন্য মনের মধ্যেও বিজ্ঞান মনস্কতার প্রচারের একটা সুযোগ আসবে। এক্ষেত্রে এই এন জি ও গুলি জনগনের মধ্যে বিজ্ঞানের প্রচার করতে পারে । এই সুযোগ আসছে এবং বিজ্ঞান আন্দোলনের শরিকদের তা হারালে চলবে না।
মৌলবাদের সাথে পরিবেশ বিপর্যয়ের সম্পর্কটা বা মিসিং লিংকটা একটু বোঝা শক্ত হতে পারে। এর কারন আমাদের অধিকাংশ পাঠক, মৌলবাদকে বস্তুবাদি সমস্যা হিসাবে ভাবে না। বাংলাদেশ থেকে হিন্দু বিতারন মৌলবাদি বা সাম্প্রদায়িক কারনে না । বাংলাদেশের হিন্দুরা ভিখিরি হলে ওদের পেছনে কেও লাগত না, আবার বাংলাদেশে তেল থাকলে, পশ্চিম বঙ্গ থেকে হিন্দুরা বাংলাদেশে যেত। আসল সমস্যা বাংলাদেশের প্রাকৃতিক সম্পদ এত কম, লোকেরা প্রায় খেতেই পাচ্ছে না -এই অবস্থায় হিন্দুদের সম্পতি দখল করে কেও যদি খেতে পায় ত খাবে। সেটা সাম্প্রদায়িক না -বস্তুবাদি কারন। সব জাতিদাঙ্গার পেছনে বস্তুবাদি কারনটাই মুখ্য-আর সেটা হচ্ছে সম্পদ এবং খাদ্যের অপ্রতুলতা। এই যে আজ মিশরের আন্দোলন এবং তার থেকে মুসলিম ব্রাদারহুডের উত্থান আমরা দেখলাম বা দেখছি এর পেছনে মূল কারন মিশরের হাঙ্গার ইন্ডেক্স বা পেটের জ্বালা গত ৫ বছরে লাফিয়ে লাফিতে বেড়েছে। মিশরে দাঙ্গা এবং রাজনৈতিক পরিবর্তনের মূল কারন পেটের জ্বালা।
কালকে লেনিনগ্রাড সিনেমাটা দেখছিলাম। জার্মানি তখন লেনিনগ্রাদ ঘিরে ফেলেছে। ডিসেম্বরে লেনিনগ্রাদে একফোঁটা খাবার নেই। পেটের ক্ষিদেয় লেনিনগ্রাডের নাগরিকরা তখন ক্যানিবাল। মৃতদেহের হাত পা কেটে খাচ্ছে। একটা এয়ার রেড হল। কিছু লোক মৃতদেহের হাত পা কেটে মাংস তুলতে ঘোটলা করছে রাজপথে। হঠাৎ একজন দেখল একটা বোমা ফাটে নি। বোমাটা চিনির প্যাকেটের মতন দেখতে। হঠাৎ গুজব উঠল ওটা বোম না – চিনির প্যাকেট। সোভিয়েত প্লেন ফুড ড্রপ করেছে কাল রাতে। ওখানে আসলে চিনি আছে। লোকে তখন খিদেতে এত কাতর বোমাটাকে চিনির বস্তা ড্রপ করা হয়েছে ভেবে বোমাটা খুলতে দৌড়ল। হাত দিতেই, বোমটা ফেটে ওদের সবার বোমসমাধি।
মৌলবাদ হচ্ছে সেই বোমা-যখন লোকে খেতে পাবে না -ওটাকেই চিনির বস্তা বলে খেতে যাবে এবং সেটা ওদের মধ্যে ফাটবে। পাকিস্তানে এটাই হয়েছে। বাংলাদেশে এটা ক্রমবর্ধমান পরিণতি। ভারতে প্রাকৃতিক বিপর্যয় এড়াতে না পারলে বিরাট খাদ্য সংকট এগিয়ে আসছে। খাদ্য এবং পানীয় হবে অপ্রতুল। এগুলি যখন হবে-মৌলবাদি বোমাটা বলবে আসলে আমরাই তোমাদের জল আর খাবার দেব- লোকে সেটা বিশ্বাস করবে এবং বোমাটা ফাটবে।
একটি প্রকৃত বিজ্ঞান মনস্ক মনই বুঝতে সক্ষম, আমরা কেও হিন্দু মুসলমান বা কমিনিউস্ট নই । যখন আমরা নিজেকে হিন্দু, মুসলমান বা কমিনিউস্ট ভাবছি, আসলে নিজেদের অজান্তে আমরা শাসক শ্রেনীর বোরেতে পরিণত হচ্ছি। যদি আমাদের জীবনে সাধনাটা মানুষের জন্য,সমাজের উপকারের জন্য হত-এই ধরনের বিভাজনের রাজনীতির বিষ ভারতের রক্তকে নীল করতে পারত না।
আপনার লেখাটা পড়ে কিছু কথা মনে পড়ে গেল-
কিছুদিন আগে বিটিভি দেখছিলাম। ডকুমেন্টারি একটা অনুষ্ঠানে দেখাচ্ছিল বাংলাদেশের দুটো প্রাথমিক বিদ্যালয়ে একটা প্রকল্প চালু হয়েছে। প্রকল্পটা হচ্ছে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গমনকারী শিশুদের খুব সম্ভব একবেলা খাবারের ব্যবস্থা করা হয়েছে। বাচ্চারা যাতে পর্যাপ্ত পরিমাণ পুষ্টি পেয়ে বড় হতে পারে তার নিশ্চয়তা নাকি করা হচ্ছে। প্রকল্পটি এখনও প্রাথমিক পর্যায়ে আছে। অনুষ্ঠানসূত্রে জানতে পারলাম ভারতেও নাকি অনেক প্রদেশে এ ধরনের প্রকল্প আছে। তবে এ প্রকল্প দিয়ে পুরো জাতিকে টিকিয়ে রাখা অসম্ভব।
যে দেশে বেসিক সায়েন্সের থেকে মানুষ অ্যাপ্লাইডে মানুষ বেশি আগ্রহী এবং সরকারও তার শিক্ষানীতিকে ‘কারিগরি’ ট্যাগায়িত করতে আগ্রহী সেখানে কিভাবে পরিবেশ সচেতনতা বৃদ্ধি পাবে?
আপনার মিশরের উদাহরণের সাথে আমি একমত। একই কারণে আমরাও পাঁচবছর পর পর ক্ষমতায় পরিবর্তন দেখতে চাই। কিন্তু আদতেই তা সম্ভব না।আবার এখন ‘জনগণের সহনশীলতা’ নামক ব্যাপারটা ৫ বছরে থেমে নেই। ধীরে ধীরে সময় কমে আসছে। সরকারের মেয়াদ সাড়ে তিন পেরোলেই ‘সরকার উৎখাত’ শব্দটি সংবাদপত্রের শিরোনামে স্থান করে নেয়। ধীরে ধীরে ‘সহনশীলতা’ আরও কমবে। এর সাথে যোগ হবে বৈদেশিক স্বার্থ। তখন আমরা হয়তো আবার ‘জেনারেল শাসকের’ কাছে ফিরে যাবো।
আমি দুবছর আগে মুক্তমনাই খুব আসতাম । আবার এতদিন পর এলাম । কাল অভিজিত দার ” “আইনস্টাইন কি তবে ভুল ছিলেন ” পড়েছিলাম । যেটা অনেকদিন আগের লেখা ।আমি আপডেটেড নয়, স্বীকার করে নিচ্ছি । আজ তোমার লেখাটা পড়লাম । ভাললাগলো । আর একবার পড়ব ।
“বিজ্ঞানীদের অনুমান ২০৩৫ সালের মধ্যে গঙ্গা নদীটা পুরোটাই শুকিয়ে যাবে হয়ত।”
— এইকথাটা আমার কাছে সব থেকে ভয়ংকর লেগেছে । মানুষকে গ্লোবাল ওয়ার্মিং সম্পর্কে আরও সচেতন করতে হবে ।
বাঙ্গালী হিসেবে আমরা শুধু দেখেই যাই, কিছু করি না। দেয়ালে পিঠ না ঠেকে গেলে আমরা জবাব দিতে পারি না। মনে হয় এটা আমাদের রক্তের দোষ :-s
সব কিছু থেকে দূরে থাকার নাম শান্তিকামিতা নয় কাপুরুষতা। কিন্তু আমরা তাতেই অভ্যস্ত।
সবই কানার হাটবাজার।
লেখাটি যথার্থ হয়েছে; কিছুক্ষন চিন্তা করতে অন্যমনস্ক হয়ে গিয়েছিলাম :clap
আমার মনে হয় বিষয়টিকে oversimplify করে খুব দ্রুত একটা straight line relation-এ চলে গিয়েছে। বস্তুবাদী কারণটা যদি সাম্প্রদায়িকতাবিহীনই হত তাহলে শুধু সংখ্যালঘুদের সম্পদ কেন আত্মসাৎ করা হচ্ছে? কেন সংখ্যাগুরুদেরটা করা হচ্ছে না? কারণ বস্তুবাদী হিসাবমতে সংখ্যাগুরুদের সংখ্যা এবং কালেকটিভ সম্পদের পরিমাণ বেশি,সুতরাং সেখান থেকে আত্মসাৎ করতেও তো বস্তবাদের হিসাবে আখের গুছানো বেশি সুবিধাজনক!!!!!!
বাংলাদেশের তুলনায় তো পাকিস্তানে প্রাকৃতিক সম্পদ বেশি। বস্তুবাদের হিসাব মতে তো বাংলাদেশের সংখ্যালঘু অপেক্ষা পাকিস্তানের সংখ্যালঘুদের কম অত্যাচারিত হওয়ার কথা ছিল। হচ্ছে তো তার উল্টোটা!!!!!!!! আপনি যে বিষয়ের অবতারণা করেছেন সেখানে এই বস্তুবাদ একটা ফ্যাক্টর স্বীকার করছি,কিন্তু সেটি অবশ্যই সাম্প্রদায়িকতার সাথে মিউচুয়ালি ইনক্লুসিভ।এক্সক্লুসিভ হওয়া সম্ভব না।হলে তো পৃথিবীর সবচেয়ে উদার দেশ হত ইরান কিংবা সৌদি আরব!!!!!!!!!!
@আমি কোন অভ্যাগত নই,
হবে এবং হচ্ছেও। প্রথমে হিন্দুদের, তারপরে আহমেদিয়াদের, তারপরে মৌলবাদিরা মডারেটদের সম্পতি দখল করবে। পাকিস্তানে এখন সেটাই চলছে।
পাকিস্তান হাঙ্গার ইন্ডেক্সে বাংলাদেশের পেছনে। সুতরাং পাকিস্তান বাংলাদেশের থেকে ভাল অবস্থায় আছে এর তথ্যসূত্র কি? পাকিস্তানের জিডিপি বাংলাদেশের থেকে সামান্য বেশী। তাতে কিছু যায় আসে না। তুলনাটা টার্কি বা মিশরের সাথে হলে ঠিক ছিল। তাছারা পাকিস্তানে হিন্দু বিরোধি প্রোইসলামিক এই ব্যাপারটা জেনারেল জিয়া উল হক, আমেরিকার মদতে চালু করে। যেমন বিএন পি বাংলাদেশে চালু করেছে। এবং সেটা হয়েছে জেনারেলের ক্ষমতা দখলের লোভে।
বাংলাদেশের একটি গ্রামের রাস্তার পাশেই আমার বাড়ি।কিছুক্ষণ আগে মাইকে একটা প্রচরণা শুনলাম এরকম “আগামীকাল থেকে পবিত্র রমজান মাস শুরু হওয়ায় সকলকে চায়ের দোকান এবং প্রকাশ্যে সিগারেট খাওয়া বন্ধ করতে বলা হচ্ছে,এবং খাবারের দোকানগুলো যথাযথ ভাবে পর্দা দিয়ে ঢ়েকে রমজানের পবিত্রতা রক্ষার জন্য বলা হচ্ছে,আদেশক্রমে.. চ্যেয়ারম্যান …. নং ইউনিয়ন পরিষদ”চায়ের দোকান বা সিগারেট ব্যাবসায়ীরা ক্ষতিগ্রস্থ হলেও নিশ্চতভাবেই কেউ এটার প্রতিবাদ করবে না বরং আপরেশিয়েট করবে।তলেতলে না হলেও প্রকাশ্যে এটা অনেকেই মানবে।এসমস্ত ছোট ছোট ব্যাপারে হয়ত পেটের জ্বালার চেয়ে মুখোশ(ভাল মানুষ সেজে থাকার ইচ্ছা) পরে থাকার প্রবণতা বেশী।
@অতীত,
এটা খুব গুরুত্বপূর্ন পর্যবেক্ষন। একে সমাজ বিজ্ঞানে বলে স্যোশাল ইউটিলিটি ফয়াক্টর বা সামাজিক গ্রহণযোগ্যতা। অর্থাৎ ব্যবসা করতে গেলে সামাজিক গ্রহণযোগ্যতা না থাকলে চলে না। সুতরাং এক্ষেত্রে কোন ক্ষেত্রে কম ক্ষতি হচ্ছে এটা ভেবে কোন ব্যবসায়ি সিদ্ধান্ত নেবে। দোকান খোলা রাখলে দুপয়সা বেশী লাভ হবে- কিন্ত সেই জন্য যদি হেফাজত বা অন্যকোন মৌলবাদি তার দোকানে বোমা ফেলে বা লুঠ করে, তার ক্ষতি অনেক বেশী।
সার্বিক ভাবে ধর্ম ব্যবসার জন্য ক্ষতিকর যেহেতু ব্যবসার ভিত্তি ভোগ ,আর ধর্মের ত্যাগ। তবে ব্যতিক্রম আছে-হিন্দু দের পূজা পার্বনে ত্যাগের থেকে ভোগ বেশী-ফলে নানান পার্বনে ব্যবসায়ীদের লাভ হয়। সেটা মুসলমানদের মধ্যেও ইদের জন্য হয়-রামাদানের মাসেও ইফতার পার্টির জন্য কালোবাজারে খাবারের দাম ওঠে।
কিন্ত ধর্ম ব্যবসার এই জন্য ক্ষতি করে যে তা ক্রেতা বি বিক্রেতার মধ্যে কৃত্রিম বিভাজন আনে। এছারা জাতি দাঙ্গা মৌলবাদের জন্য বৈষম্য চলেই।
আমার একটা ঘটনা মনে পড়ল। আমি দিল্লীতে একটে চকে দাঁড়িয়ে আছি। হঠাৎ দেখি একট হট্টোগোল। একটা আধভিখির ছেলেকে ধরে একটা রেস্টুরেন্টের মালিক পেটাচ্ছে। ছেলেটা তন্দুর থেকে রুটি চুরি করে পালানোর চেষ্ট করছিল। শেষ এক শিখ ভদ্রলোক এসে মালিককে ১০০ টাকার নোট দিয়ে বলল ভাই তুই ওকে ছেড়ে দে।
খাবার চুরি করতে গিয়ে পেটানোর ঘটনা আমি শুধু দিল্লীতে দেখছি তা না-এটা আমি দেখেছি ভারতের সর্বত্র। ভারতে আমার ২৮ বছর প্রথম জীবনে কবার এর সাক্ষী হয়েছি তার ইয়ত্তা নেই।
যে খাবার চুরি করছে, সে কি জানে না সে পিটুনি খাবে? ওই ভাবে একটা প্রকাশ্য বাজারে কখন একটা লোক রুটি চুরি করার চেষ্টা করে? এটা পরিস্কার তার পেটের জ্বালা এতটাই, সে যে মার খেতে মারা যেতে পারে সেটা ভাবার ক্ষমতাও তার নেই। তার কি ধর্ম? কি চেতনা? কি এথিক্স?
এই ব্যাপারটাই কিন্ত এগিয়ে আসছে। বাংলাদেশের ৪০$ জলমগ্ন হতে আর খুব বেশী হলে ৩০-৪০ বছর। ভারতের গাঙ্গেয় উপত্যকা অনুর্বর বালুকাভূমি হতে আর খুব বেশী হলে ২০-৩০ বছর। আমি আগে একটা প্রবন্ধে দেখালাম, খাবারের দাম বাৎসরিক ১০% বারলে রাজনীনৈতিক অস্থিরতা বারে ১০০%।
http://www.financialsense.com/contributors/russ-winter/food-prices-riots-civil-wars
এবার খাবারের দাম বাৎসরিক ১০০% ২০০% বাড়লে কি হবে? এই গণতন্ত্র টিকবে? মোটেও টিকবে না। মিলিটারী বা মৌলবাদি এই দুদিকের যেকোন দিকে রাজনীতি ঝুঁকে যাবে।
খাবারের দাম ১০০-২০০% বৃদ্ধি পাওয়া কোন অলীক কল্পনা না। পরিবেশের জন্য এটা হতে পারে যেকোন দিন। তখন কোথায় থাকবে এই চেতনা, এই ধর্ম?
সুতরাং গণতন্ত্রকে এই সমস্যার সমাধান করতেই হবে। নইলে হাসিনা, খালেদা বা গান্ধী ফামিলির কেও টিকবে না- হয় দেশ ছেরে পালাবে নইলে ওদের ফাঁসিতে ঝোলাবে লোকে।
যেহেতু সমাধান একমাত্র বিজ্ঞান আর প্রযুক্তির পথে-সেহেতু এটাই প্রগতিশীলতার উত্থানের সময়। গরীব মানুষ যদ্দিন না দেখছে বিজ্ঞান এবং প্রযুক্তি কিভাবে তাদের প্রতিদিন খেতে দিচ্ছে, বিদ্যত দিচ্ছে, তারা হেফাজতের ক্যাম্পেই থাকবে।
“মৌলবাদ হচ্ছে সেই বোমা-যখন লোকে খেতে পাবে না -ওটাকেই চিনির বস্তা বলে খেতে যাবে এবং সেটা ওদের মধ্যে ফাটবে। পাকিস্তানে এটাই হয়েছে। বাংলাদেশে এটা ক্রমবর্ধমান পরিণতি। ভারতে প্রাকৃতিক বিপর্যয় এড়াতে না পারলে বিরাট খাদ্য সংকট এগিয়ে আসছে। খাদ্য এবং পানীয় হবে অপ্রতুল। এগুলি যখন হবে-মৌলবাদি বোমাটা বলবে আসলে আমরাই তোমাদের জল আর খাবার দেব- লোকে সেটা বিশ্বাস করবে এবং বোমাটা ফাটবে।”
উপমহাদেশে জনসংখ্যা কত? ১৬০-১৭০ কোটির কাছাকাছি? বৈশ্বিক উষ্ণায়নের সাথে লড়াই করে এতগুলো মুখে ভাত আর পরনে কাপড় জোগান দেয়া আদৌ সম্ভব? মানুষ এখন আর স্রেফ ভাত কাপড়ে সন্তুষ্ট নয়! খাবার না পেলে কি হবে ভবিষ্যতে? আদি মানবেরা যেমন আফ্রিকা থেকে পাসপোর্ট, ভিসা ছাড়াই সারা দুনিয়ায় ছড়িয়েছিল, সেটা তো এখন সম্ভব নয়।
মনে হয় এই মৌলবাদের উত্থানটা প্রকৃতির সাম্যাবস্থা রাখার একটা উপায়। রাষ্ট্র খাওয়াতে পারছেনা দেশের জনগণকে, কিন্তু অপ্রয়োজনীয় কিছু মানুষকে চাইলেই রাষ্ট্র নিধন করে দিতে পারবেননা, যেমনটা করা হয় অস্ট্রেলিয়ায় ক্যাঙ্গারু সংখ্যা নিয়ন্ত্রনে রাখতে।
মৌলবাদই এখানে খেলাটা খেলবে। এইসব হতাশ মানুষকে খুব সহজেই দলে দলে টানবে।মেরে কেটে যখন নির্মূল করার মত প্রতিপক্ষকে আর থাকবেনা, তখন তাদের মধ্যে দল, উপদলে ভাগ হয়ে, মেরে কমিয়ে দেবে কিছু অপ্রয়োজনীয় মানুষ।ধর্মগুলোর ইতিহাস তো
সেটাই বলে! কথিত মহাপুরুষগুলো তাদের মৌলবাদী যাত্রা শুরু করেছিল গুটিকয়েক মানুষ নিয়ে, আজ কয়েক প্রজন্ম পড়ে সেটা কত শত ভাগে বিভক্ত এবং হানাহানিতে লিপ্ত।
মৌলবাদের এই বিষ চক্র মনে হয় নিয়তি। হয়ত আজ থেকে শত প্রজন্ম পরে আবার বহনযোগ্য সংখ্যায় চলে আসবে মানুষ, অসম্ভবের প্রতিযোগিতা কমে যাবে, আবার শান্তি ফিরে আসবে।
পুনশ্চঃ শান্তি চিরস্থায়ী নয়!
@অন্ময়,
পাকিস্তানে এখন সেটাই হচ্ছে। প্রথমে হিন্দুদের তাড়াল। এখন শিয়া, আহমেদিয়াদের মারছে। এরপরে সুন্নীরা নিজেদের মারবে। আসল কারন ত সেই খাদ্যের সংকট।
লেখাটিতে মৌলবাদ, মার্ক্সবাদ, সাম্প্রদায়িকতা, পশ্চিমবঙ্গের বাম রাজনীতি, পাকিস্থান ও বাংলাদেশের রাজনীতি, গ্লোবাল ওয়ার্মিং তথা পরিবেশ, খাদ্যব্যবস্থা এবং তার সংকট এমন অসংখ্য বিষয়কে যেভাবে স্পর্শ করেছে তাতে লেখাটির মূল উপপাদ্য সুপষ্ট নয়। তবে শিরোনাম দেখে মনে হচ্ছে বিপ্লব পাল মৌলবাদের উত্থানের পেছনে পরিবেশ বিপর্যয়কে অন্যতম প্রধান কারণ হিসেবে দেখাতে চেয়েছেন।
সাধারণ মানুষ মৌলবাদী নয়, কোনো সমাজেই। সাধারণ মানুষ পেটের ক্ষুধা নিবারণের চিন্তায় তার মস্তিষ্কের অধিকাংশ স্থান ব্যবহার করে। মৌলবাদকে সবসময়ই রাজনৈতিকভাবে পৃষ্ঠপোষকতা করা হয় এবং সেটা করে ধনিক শ্রেণী।অশিক্ষা এবং কুশিক্ষার মাধ্যমে সাধারণ মানুষের মাঝে মৌলবাদকে inject করা হয়। মানুষের অর্থনৈতিক দুর্বলতা’র সুযোগ নিয়েই সেটা করা হয়।বাংলাদেশে মাদ্রাসা শিক্ষার বিস্তার ঘটেছে মধ্য প্রাচ্যের টাকায় এবং জামাতে ইসলামী ও অন্যান্য সংগঠন যারা ধর্মকে পুঁজি করে রাজনীতি করছে তারা আর্থিকভাবে সচ্ছল রাজনৈতিক দল।
পরিবেশ বিপর্যয় বিশ্বব্যাপী এক প্রকট সমস্যা এবং তার কারণে বাংলাদেশের ভবিষ্যত মোটামুটি সংকটাপন্ন তা নিশ্চিত। তবে মৌলবাদী দলগুলো বোধহয় পরিবেশের এই সংকট না থাকলেও বেশ সুবিধা করে উঠত যেমনটি তারা করছে বর্তমানে, কেননা মৌলবাদকে সার্বিকভাবে পৃষ্ঠপোষকতা করছে সমৃদ্ধ অর্থনীতি। অর্থনীতি মানুষের অন্যান্য কর্মকান্ডের প্রধান নিয়ামক।
@রুদ্রাভ,
সমৃদ্ধ অর্থনীতিতে মৌলবাদ থাকে-কিন্ত তা জাতিদাঙ্গায় রূপ নেয় না। জাতিদাঙ্গা এবং মৌলবাদ এক জিনিস না – মৌলবাদ যদি জাতিদাঙ্গায় রূপ না নেয়-তাহলে তা অতঁ ভয়ংকর না । জাতিদাঙ্গায় এটা তখন রূপ নেবে যখন, রিসোর্স নিয়ে জাতির মধ্যে মারামারি হবে। সেখানে মৌলবাদ ভয়ংকর হয়ে ওঠে।
রুয়ান্ডার হুটু আর টুটসি রা কিন্তু একই ধর্মের ছিলো , একই ভাষারও ছিলো, একই গাত্রবর্ণেরও ছিলো, সংষ্কৃতির দিক দিয়েও খুব একটা পার্থক্য ছিলো না। রুয়ান্ডা এমনকি আশে পাশের দেশগুলো থেকে অধিক শিক্ষিতও ছিলো। এতো কিছুর পরও সেখানে বিংশ শতাব্দীর দ্রুততম, ব্যাপক গনহত্যা ঘটেছে। এর বড়ো কারনই হলো যে হুটুরা মনে করতো যে টুটসিরা অন্যায্যভাবে দেশের বেশী সম্পদ করায়ত্ব করে রেখেছে।
বা,
যখন এমন অসাধারণ সব বাক্যের অস্তিত্ব রয়েছে লেখাটিতে এবং যা বিপ্লবদার কাছে খুবই প্রত্যাশিত, ঠিক তখুনি নীচের উদ্ধৃতিটির মত চরম একপেশে ও স্থূল কিছু বাক্য লেখাটিকে নামিয়ে আনে নিতান্তই সাধারণ মানেঃ
এমন নয় যে, ‘সংখ্যালঘু’ হিন্দু সম্প্রদায়ের সম্পত্তির প্রতি ‘সংখ্যাগরিষ্ঠ’ অনেক মুসলিমের বদনজর নেই; কিন্তু আপনার কি মনে হয় না, বিপ্লবদা, খুবই দৃষ্টিকটু একটা সাধারণীকরণ/সরলীকরণ আপনার কলম গলে বেরিয়ে পড়েছে?? বাংলাদেশের শান্তিপ্রিয় এবং অসাম্প্রদায়িক মুসলিম (যারা মুসলিম সমাজে সংখ্যাগরিষ্ঠ) এ কথাতে অপমান বোধ করতেই পারে।
দেখা যাচ্ছে, বাংলাদেশ এ ব্যাপারে ভারত থেকে এগিয়ে আছে। আমাদের দেশের বেশিরভাগ হিন্দু ধর্মাবলম্বী নেতা এখনো সেকুলার আদর্শ ধরে রাখতে সক্ষম হয়েছে। তবে গুরুত্বপূর্ণ হল, আপনি সেকুলারিজম বলতে কি বোঝাতে চাইছেন, তা জানা।
এদিকেও এগিয়ে আছে বাংলাদেশ। অন্তত আমাদের বাম এখন পর্যন্ত সাম্প্রদায়িকতার উস্কানিদাতা হিসেবে তেমন নজর কাড়তে পারেনি। সাম্প্রদায়িক বটিকা গিলে ইলেকশনে জেতার মরিয়া চেষ্টা দেখা যায়নি এখন পর্যন্ত তাদের মধ্যে।
বিষয়টি জানিনা বলেই জানতে চাইছি। বাংলাদেশের ‘গ্লোবাল ওয়ারর্মিং’ রিস্ক ভারতের থেকে কম না বেশী?
অনেক ধন্যবাদ, বিপ্লবদা। যতদূর মনে পড়ে, একবার আপনার ঘাড়ে দোষ পড়েছিল যে, আপনি পানি নিয়ে বাংলাদেশের প্রতি যে বৈষম্য হয়, তাকে স্বীকার করতে চান না। আশা করি, আপনার উপরের কথায় সবার ভুল ভাঙবে। আমি কিন্তু সবসময় আপনাকে বাংলাদেশের প্রতি ভারতের যেকোন অবিচারেরই নিন্দা করতে দেখেছি। একজন ভারতীয় হয়েও বাংলাদেশের পক্ষে কলম ধরার জন্য আপনার প্রতি কৃতজ্ঞতাই জানাতে পারি শুধু।
শেষ কথাঃ বিপ্লবদা আপনার লেখা আরো বেশি করে চাই।
বিঃ দ্রঃ (মন্তব্যটি ঠিকমত আসেনি বলে পুনরায় পোস্ট করা হল। ভুলের জন্য দুঃখিত।)
@কাজি মামুন,
আমি এর উত্তরে এর একটা অভিজ্ঞতার গল্প শোনাবো। আমার ঠাকুর্দা দেশভাগের ঠিক পরে বাংলাদেশের কুষ্টিয়া থেকে মুর্শিদাবাদে আসেন। সেও এমন এক গ্রাম যেখানে ৬/৭ ঘর হিন্দুর আশে পাশে ছিল হাজার হাজার গরীব মুসলিম চাষী। আস্তে আস্তে কোন হিন্দুই সেখানে সম্পতি টেকাতে পারে নি। পুকুরের মাছে বিষ, বাগানের ফল চুরি, গাছ কাটা এগুলো চলত। এবং ধারাবাহিক অচ্যাচারে আস্তে আস্তে সবকটা হিন্দু পরিবার ওখানে বাড়ি জমি জলের দামে বিক্রি করে দিয়ে পাশের হিন্দু প্রধান শহর গুলিতে উঠে আসে। বাংলাদেশেও অধিকাংশ হিন্দুদের অভিজ্ঞতা এক।
আমার কখনো মনে হয় নি, এটা সাম্প্রদায়িকতার কারনে হয়েছে। আশে পাশের গ্রামের মুসলমানরা প্রচন্ড গরীব-তাদের যদি কেও বলে হিন্দুদের মাছ ফল চুরি করে খা, তারা সেটাই করবে কারন পেটের জ্বালা। ওদের অধিকাংশই একবেলার বেশী খেতে পেত না।
শুধু এই ঘটনা কেন। আর্মেনিয়াম হলোকাস্ট থেকে ইহুদি নিধন সব কিছুর পেছনে বস্তুবাদি কারন ই তাড়া করেছে।
এই ধরনের রিসোর্স ক্রাঞ্ছ ( বা সরবরাহের অপ্রতুলতা) থাকলে বাংলাদেশের ৯৫% মুসলিম যদি হিন্দুদের পক্ষেও থাকে, বাকী ৫% মুসলিম হিন্দুদের সম্পতি দখল করবেই। এর কারন অবশ্য ই অধি জনবসতির কারনে রিসোর্স ক্রাঞ্ছ । বাংলাদেশে হিন্দুদের সম্পতি দখল কি মডারেট মুসলমানরা আটকাতে পেরেছে? না মুর্শিবাদা জেলাতে যে রাজ্য হিন্দু প্রধান সেখানে এটা আটকানো গেছে? এই ধরনের ধনের অসাম্যে, প্রচন্ড দারিদ্রে এটাই নিয়তি।
আমি সেই অবধ্য নিয়তির কথা লিখেছি।
@বিপ্লবদা,
এমন কোন গ্রামের কি অস্তিত্ব ভূ-ভারতে কভু ছিল, যেথায় আশে-পাশের গ্রামে অনেক অনেক দরিদ্র হিন্দু ছিলেন? যারা প্রতিবেশি মুসলিম ধনীদের বাড়ির ধন্দৌলতের দিকে হাভাতের মত হা করে তাকিয়ে থাকতেন? আপনার তত্ত্বকে প্রতিষ্ঠিত করতে তেমন কিছু উদাহরণ কিন্তু ভীষন প্রয়োজন।
আমার কিন্তু মনে হয়, এ ঘটনা সাম্প্রদায়িকতার কারণেই ঘটেছে। এবং তা আপনার ”সব জাতিদাঙ্গার পেছনে বস্তুবাদি কারনটাই মুখ্য-আর সেটা হচ্ছে সম্পদ এবং খাদ্যের অপ্রতুলতা।” তত্ত্বকে স্বীকার করেই। আমার মতে, সম্পদ ও খাদ্যের অভাব মানুষকে শিক্ষার (স্ব-শিক্ষা) আলো থেকে দূরে সরিয়ে রাখে, ফলে সাম্প্রদায়িকতার অপ্রতিরোধ্য আবাদ ঘটে, আর তার অমোঘ পরিণতিতেই, প্রতিবেশি ভিন্নধর্মাবলম্বীর সম্পদের দিকে শকুনদৃষ্টির প্রাদুর্ভাব ঘটতে দেখা যায়।
@কাজি মামুন,
গুজরাতে মুসলিম বিরোধি দাঙ্গার মূল কারন এটাই ছিল মুসলিমরা আমেদাবাদ এবং সুরাট শহরের অনেক খানদানি জায়গা সেই মুঘল আমল থেকে অধিকারে রেখেছিল। ওই জাতি দাঙ্গা ছিল আমেদাবাদ থেকে মুসলিম ব্যবসায়িদের সরানোর জন্য।
@বিপ্লব পাল,
এই দেশভাগ বলতে কোন সময়কে বুঝানো হচ্ছে? ৪৭ নাকি ৭১? কুষ্টিয়ার কোন গ্রামে অবস্থান করতেন আপনার ঠাকুর্দা? বর্তমানে কোন আত্মীয় স্বজন সেখানে রয়েছে কি-না? আপনার ঠাকর্দা চলে যাওয়ার পেছনে কারণ কী ছিল?
এখনও কুষ্টিয়া জেলার বিভিন্ন স্থানে মুসলিমদের চেয়ে হিন্দুদের আধিপত্য প্রবল। তাই আপনার দেয়া তথ্য আমাকে কিছুটা সন্দিহান করে তুলছে।
@মাহফুজ,
‘এটা ‘৪৭ এর সময়। কুষ্টিয়াতে আমার ঠাকুরদা পাট ব্যবসায়ী ছিলেন চেতলা বলে একটা গ্রামে। ওখনে এখন কেও নেই। কুষ্টিয়া থেকে তারাই এদিকে এসেছিল যাদের নদীয়া বা মুর্শিদাবাদেও ব্যবসা ছিল। ঠাকুর্দা দেশভাগের পর এদিকে চলে এসেছিলেন, কারন তার এই দিকেও ব্যবসা ছিল।
বা,
বিপ্লব দা,
চমৎকার একটা লেখা, বিশেষ করে আমাদের এই ধরনের পরিস্থিতির একটা নির্ভরযোগ্য কারণ অনুসন্ধানের চেষ্টা। চেষ্টা বললাম এই জন্যে যে, আমাদের অঞ্চলের সাম্প্রদায়িক আবহ কিন্তু আজকের নয়, সম্ভবতঃ ষোড়শ শতকের পর থেকেই ভয়াবহ রূপ নিতে থাকে যদিও বৌদ্ধের উত্থানপর্ব থেকেই এর অস্তিত্ত্ব ছিলো। কাজেই এই বিশাল কাল পর্বের সাম্প্রদায়িকতাকে কিভাবে বস্তুগত (বিশেষ করে খাদ্যাভাব) অপ্রতুলতা দিয়ে ব্যাখ্যা করা সম্ভব? কাজেই মৌলবাদকে সোজাসাপ্টা বস্তুবাদী সমস্যা হিসেবে ভাবাটা কিছুটা কঠিন বৈকি। একটা ব্যাপার বোধ হয় এখানে প্রাসঙ্গিক হবে এই যে, বাংলাদেশে শত্রুসম্পত্তি আইন বলে একটি কালো আইন আছে, সেই আইনের মারপ্যাচে এদেশের সংখ্যালঘুদের সম্পত্তি গ্রাসের হোতারা মূলতঃ রয়েছে প্রভাব ও ক্ষমতা বলয়ের মাঝে, আদৌ এরা দরীদ্র শ্রেণীভূক্ত নয় অথবা সেইসব জনগোষ্ঠীর সদস্য নয় যারা হেফাজতের ডাকে কোচে দুমুঠো চিড়ে আর গুড় নিয়ে মতিঝিলে এসে বসেছিলো। সেই জন্যে মৌলবাদ জিনিসটি যে বৃহত্তর জনপূঞ্জে একেবারেই বস্তুগত বা অর্থনৈতিক প্রাপ্তির কেন্দ্রবিন্দু, তা কিন্তু আমার মনে হয়না। বরং চেতনা গত বৈকল্যতা তথা হীন শিক্ষা, কু-শিক্ষা বা কুসংস্কারের প্রভাব বলেই প্রতীয়মান হয়।
@কেশব অধিকারী,
আপনি যেটা বলছেন, সেটা আমি অস্বীকার করছি না-কিন্ত সেগুলো বস্তবাদের প্রমান ভাববাদের না। যেমন ধরুন হিন্দুদের সম্পতি অধিকাংশ ক্ষেত্রেই আওয়ামীলিগ এবং বিএনপির গুন্ডারা গায়েব করেছে। গুন্ডারা গুন্ডামো কি সাম্প্রদায়িক কারনে করে না মালামালের লোভে করে? আর এদের শক্তির উৎস কি? এদের শক্তির উৎস এদের সাগরেদরা যাদের দারিদ্র এদেরকে সস্তায় গুন্ডারাজ গড়েতুলতে সাহায্য করে।
হেফাজতের শক্তিও সেই গরীব মুসলমানরা যাদের একটাই আশ্বাস আল্লা খাওয়াবে, আল্লা রাখবে। যখন বি এন পি, আওয়ামি লিগ খাওয়াতে পারছে না, গরীব মানুষের আল্লা ছারা ভরসা করার উপায় কি? আমি কিন্ত ঠিক এটাই লিখেছি। যদি হেফাজতে সমর্থকদের ব্যবসা বাণিজ্য থাকত, তাদের সংসার মেয়েদের ইনকামের ওপর নির্ভর করত, তারা কি আল্লামা সফির মতন চূরান্ত এক নারীবিরোধি শক্তির কাছে যেত?
বাংলাদেশে রাজনীতির মোরটাই ত উন্নয়নের দিকে ঘুরছে না। ২০০১ সালে মোদি সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা লাগিয়েছিলেন-কিন্ত তারপরে ভারতের রাজনীতি কিন্ত উন্নয়নের দিকেই ঘুরেছে-ফলে তাকেও উন্নয়নের রাজনীতি করতে হয়েছে ধর্ম ছেরে। গত দশবছরে মোদি উন্নয়নের রাজনীতি করতে বাধ্য হয়েছেন।
সুতরাং বাংলাদেশের দারিদ্র এবং তাদের পেটের আগুন ই আল্লা মা সফির শক্তির উৎস। নইলে এই ধরনের চূড়ান্ত নারীবিরোধি নেতার কথা এরা শুনছে কেন?
@বিপ্লব পাল,
হ্যাঁ, যুক্তি কিন্তু মন্দ নয়। কিন্তু আমি যা আসলে ইঙ্গিত করেছি, তা হলো সাম্প্রদায়িক চেতনাটা রয়েছে মূলে। এদেশের হিন্দুরাও কি অসাম্প্রদায়িক বলে মনে করেন? কিংবা ভারতের মুসলমানরা? নিশ্চয়ই নয়। আমি কিন্তু সমগ্র জনগোষ্ঠীর কথাই বলছি, দু-দেশের। এটা ঠিক যে কিছু মানুষ (সংখ্যায় নগন্য) যে এর মধ্যে সত্যিই অসাম্প্রদায়িক, এতে কিন্তু সন্দেহ নেই মোটেই। এইখানেই আমি নীচে কাজি মামুনের সাথে দ্বিমত পোষন করি। যেমন,
কাজি মামুনের উপরের ব্রাকেট বন্দী কথাটিতেই আমার আপত্তির কারন। ঠিক একই কারনে এদেশের হিন্দুরাও সাম্প্রদায়িক, চেতনার নিগঢ়ে! তাই যদি না হবে তবে দলে দলে লোকে মতিঝিলে যাবে কেনো? গনজাগরণ মঞ্চের ডাক তো হিন্দুরা দেয়নি, এদেশেরই উঠতি শিক্ষিত শানিত চেতনার তরুণেরাই দিয়েছিলো। ‘৭১-এ যারা আমাদের সাথে বেঈমানী করেছিলো তাদের কঠোরতম শাস্তির দাবীতে। সরকার শুরুতে তাতে বাধাও দেয়নি। কিন্তু সাম্প্রদায়িকতাকে উস্কেদিয়েছিলো এক পক্ষ। সাম্প্রদায়িক জনগোষ্ঠির মনের গভীরের লালিত চেতনার তখনি স্ফূরণ ঘটে। আর তাই আমরা ফলশ্রুতিতে হেফাজতের উত্থান দেখতে পাই নিমেষে! অথচ দেখুন দেশের দুই রাজনৈতিক দিকপালকে, এতোবড় সমাবেশের ক্ষমতা দেখাতে ইদানিং কালে কেউ দেখেছেন? না, দেখেন নি। এই ক্ষেত্রে হফাজতের দাবীগুলোও স্মরণ যোগ্য! আমার কাছে কাজি মামুনের এই কথাটিও কিন্তু সাম্প্রদায়িক চেতনার বহিঃপ্রকাশ বলে মনে হয়।
চেতনা গত বৈকল্যতা যদি নাই থাকবে এবং ব্যপারটি যদি মূলতঃ সম্পদের অভাব, আসম বন্টন, খাদ্যাভাব, কিংবা অর্থনৈতিক আসাম্যতাই তথা বস্তুগত তাৎপর্যই শুধু হবে তবে এদেশে সংখ্যালঘুদের ক্রমশঃক্ষীয়মান পরিনতি কেনো হবে? কারো বাড়িতে ডাকাত পড়লে আশেপাশের সবাই এমনকি প্রশাসন পর্যন্ত ঝাপিয়ে পরে, সেখানে এমনকি দরীদ্র সংখ্যালঘুর (ব্যক্তিগত ভাবে এই শব্দটি আমার অপছন্দনীয়) সহায় সম্পত্তি বেদখল হয়ে যাচ্ছে একরকম নীরবে নিঃশব্দে (আপনার, কাজি মামুনের মন্তব্যান্তরে দেওয়া উদাহরণ প্রযোজ্য)! শুধু মাত্র বস্তুগত প্রাপ্তিটাকেই (অভাব জনিত কারনে) এখানে প্রধান করে দেখার সুযোগ নেই। প্রথমেই চেতনা গত বৈকল্যতা, পরে চেতনার সেই বৈকল্যকে কাজে লাগিয়ে অপরাধকে জায়েজ করা। সেটিই হচ্ছে বাংলাদেশে এবং ভারতে উভয় সম্প্রদায়ের মধ্যে। যেখানে বৃহত্তর সাম্প্রদায়িক সমাজ এবং তাদের সহায়ক রাষ্ট্রশক্তি প্রণোদনা হিসেবে কাজ করছে।
@কেশব অধিকারী,
আপনি আপনার অবস্থান থেকে উপমহাদেশকে দেখছেন। সেই সেকসেন যাদের পেটে খিদে নেই। যাদের পেটে খিদে আছে, তাদের কাছে এইসব ধর্ম চেতনা ধর্ম নিরেপেক্ষতা মানবিকতা কোন কিছুর ভ্যালু নেই। যা খেতে পড়তে দিচ্ছে তাই তাদের ধর্ম, তাই তাদের চেতনা। এই উপমহাদেশের লোকজন রিসোর্সের অভাবে ভীষন ভাবেই অস্তিত্ববাদি বা এক্সিটেন্টালিস্ট।
@বিপ্লব পাল,
বিপ্লবদা, আপনার সাথে দ্বিমত আমি করছি না, কিন্তু যে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর কথা আসলে আপনি বলছেন, এরা একটি দেশের রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের নিয়ামক হিসেবে আদৌ ঠিক কতোটা গুরুত্ত্ববহ সে বিষয়ে আমার সন্দেহ আছে। তবে আমাদের উপমহাদেশে যেহেতু এই শ্রেণীর মানুষের সংখ্যা বেশী, তাই যারা এদের সফল ভাবে ব্যবহার করতে পারবে পাল্লা তাদের দিকে ঝুঁকবে সন্দেহ নেই। এখন প্রশ্ন হচ্ছে ভারতের হিন্দুত্ত্ববাদীরা আর বাংলাদেশের হেফাজতীরা কি এদের সেই খাদ্য সংস্থানের নিশ্চয়তা দিয়েছে? উত্তর যদি হয় হ্যাঁ তাহলে আমি আর এগুবো না, যদি হয় না, তাহলে কিছু অতিরিক্ত বিশ্লেষন বা নিয়ামক নিতান্তই দরকার এই উপমহাদেশে মৌলবাদের বাড়-বাড়ন্তের যৌক্তিকতার অন্বেষনে। আর সেই বস্তুগত সম্পদ আহরণের বিষয়টি যদি অলীকও হয় তাহলে কেনো যেনো আমার মনে হয় এই শ্রেণীর মানুষগুলো কমিউনিজমের পতাকা তলেই সমবেত হবার কথা, কারন কমিউনিষ্টদের মতে ‘যন্ত্র যার আয়ও তার’! অর্থাৎ উৎপাদন যন্ত্রের উপরে এই শ্রেণীর অধিকার প্রতিষ্ঠার কথাই বলে, হোক সে বায়বীয় তত্ত্ব। যেমন আলোচনান্তে আপনি বলেছেন,
অথবা,
অথবা সুষুপ্ত পাঠকের সাথে কথা প্রসঙ্গে,
তাহলে কমিউনিজম যে আশ্বাস দেয়, বা রাজনৈতিক দলগুলো যে আশ্বাস দেয় সেগুলো বৃথা যাবে কেনো? মৌলবাদীদের দেয় আশ্বাসটাই বা এতো গুরুত্ত্ববহ হবে কেনো? সেই জন্যেই আমি সুষুপ্ত পাঠকের বর্ননার অনুরূপ বলেছি, এ উপমহাদেশের জনপূঞ্জের ভেতরে সাম্প্রদায়িকতা অতি প্রাচীন কাল থেকেই সুপ্ত বীজের মতোই বাসা বেধে আছে। একটু জল-বাতাস পেলেই শেকড় গেড়ে বসে! আর এর থেকে মুক্তির উপায় নতুন পরিবেশ আর নতুন চেতনার বীজ। বিজ্ঞান মনষ্কতা আর যুক্তির প্রবাহ। পরিনতদের দিয়ে হবেনা, আগামীকে বদলাতে হবে।
@কেশব অধিকারী,
কমিনিউজম ও একধরনের ধর্ম এবং মৌলবাদ। আপনি সঠিক প্রশ্ন করেছেন। এর উত্তরে স্যার কার্ল পপার বলেছিলেন যারা স্বর্গের ফেরিয়াওয়ালা, তারাই জনগনকে নরকের দিকে নিয়ে যায়। পৃথিবীতে সব নরকের সৃষ্টি হয়েছে এইসব স্বর্গের ব্যাপারীদের জন্য। এখানে স্বর্গ বলতে বুঝতে হবে যারা বা যে রাজনৈতিক দলগুলি সব সমস্যা সমাধান বেদে আছে, বা কোরানে আছে বা দাস ক্যাপিটালে আছে বলে ঘোষনা দিয়েছে।
ইসলামকে রাজনৈতিক সিস্টেম হিসাবে একজন মুসলিম লোক কেন বিশ্বাস করে?
সে কেন বিশ্বাস করে শরিয়া আনলেই সব সমস্যার সমাধান হবে? হিন্দুত্ববাদের ক্ষেত্রে ওরা আদিম ভারতীয় সমাজ ব্যবস্থায় ফিরে যেতে চায় কেন? কেন স্বপ্ন দেখায় অলীক প্রাচীন ভারতের? কেন বিশ্বাস করে লোকে ওদের?
ওরা কি কমিনিউস্টদের থেকে আলাদা যার শোষন মুক্ত শ্রেনী মুক্ত সমাজের স্বপ্ন দেখাচ্ছে?
এদের কেও আলাদা না।
প্রশ্ন হচ্ছে জনগন কেন বিশ্বাস করছে হেফাজতকে বা মাওবাদিদের?
কারন আমাদের বর্তমান গণতান্ত্রিক সিস্টেমের সীমাবদ্ধতা। এটা একটা প্রক্সি গণতন্ত্রে আমরা থাকি। ভোটে যাকেই আপনি দেন না কেন, রাজনীতি নিয়ন্ত্রন করে মুস্টিমেয় বৃহৎ ব্যবসায়ী। অধিকাংশ এই সর্বহারার দল ভাবে এমনিতেও আমি খেতে পাচ্ছি না, রাজনৈতিক সিস্টেমেও আমার ভ্যালু নেই-তাহলে যদি অন্য ধরনের সিস্টেম এসে আমাকে খাওয়াতে পড়াতে পারে খারাপ কি? আমার ত হারানোর কিছু নেই। দেওয়ালে পিঠ থেকেই আছে। যদি হারানোর কিছু থাকে তবেই না আমি ভাবব মৌলবাদি রাজনৈতিক সিস্টেমকে ডেকে আমি “কি” হারাব?
@কেশব অধিকারী,
দেখুন, আমার কাছে বিপ্লবদার চরম একপেশে কথাটি (আসল সমস্যা বাংলাদেশের প্রাকৃতিক সম্পদ এত কম, লোকেরা প্রায় খেতেই পাচ্ছে না -এই অবস্থায় হিন্দুদের সম্পত্তি দখল করে কেও যদি খেতে পায় ত খাবে) বা তাতে আপনার নিঃশর্ত সমর্থন কিন্তু সাম্প্রদায়িকতার বহিঃপ্রকাশ মনে হয়নি। অথচ আপনি কত সহজে একজন মানুষকে সাম্প্রদায়িক ব্রাকেটে বন্দী করে ফেললেন! সত্যি আপনার সুচিন্তাগ্রস্ত ভাবনার প্রশংসা না করে পারা যায় না!
আপনার কি মনে হয়, মতিঝিলে যায় কেন? বা, হিসেব করে দেখেছেন, কয়জন মতিঝিলে গিয়েছে? তারা জনসংখ্যার কত শতাংশ? যারা মতিঝিলে যায়, তারা যে গোটা বাড়িটা সঙ্গে করে নিয়ে যায়, তা জানেন?
যারা মতিঝিলে যায়, তাদেরকে যে ‘যারা মতিঝিলে যায় না’ – এই সেটের একটি বড় অংশ সমর্থন করে না, তা কিন্তু না। কিন্তু এরপরও ‘যারা মতিঝিলে যায়’ এবং ‘মতিঝিলে যায় না কিন্তু সমর্থন করে’ – এই দুইটি সেট কতটুকু ধারণ করে পুরো মুসলিম পপুলেশনকে? হয়ে যায় কি অর্ধেকের বেশী?
এবার আসুন ‘যারা মতিঝিলে যায় না, কিন্তু সমর্থন করে’- এই সেটটির ব্যাপারে কথা বলি। এই লোকগুলোকে কোন স্বতঃসিদ্ধ রুলের আওতায় আপনি ‘সাম্প্রদায়িক’ বলতে পারেন? ‘সাম্প্রদায়িকতা’ কাকে বলে? কি কি কাজ করলে সাম্প্রদায়িক হয়?
বাংলাদেশের সাম্প্রতিক সিটিক নির্বাচনে বিএনপির বিপুল বিজয় কোন স্বতঃসিদ্ধ রুলের আওতায় প্রমাণ করে যে, তা সাম্প্রদায়িকতারই বিজয়???? সরকারের আন্ডার পারফরমেন্স, থার্ড ওয়ার্ল্ডে সাধারণ নিয়মে পরিণত হওয়া অ্যান্টি-ইনকাম্বেন্সি ফ্যাক্টর এগুলি সব হাওয়ায় উবে যাবে নাকি?
‘যারা মতিঝিলে যায় না, কিন্তু সমর্থন করে’ – তারা, আমার মতে, সাম্প্রদায়িক নয়। এদের সঙ্গে সঙ্গে যদি যোগ হয় ‘যারা মতিঝিলে যায় না এবং সমর্থনও করে না’ তারাও, তাহলে বাংলাদেশের শান্তিপ্রিয় ও অসাম্প্রদায়িক মানুষের ব্রাকেটে কেন লেখা যাবে না ‘সংখ্যাগরিষ্ঠ’, বলতে পারেন?
বাংলাদেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলিম অসাম্প্রদায়িক। আর ৫১% মুসলিম অসাম্প্রদায়িক হলেও তো তা সংখ্যাগরিষ্ঠ, তাই না?
বাংলাদেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলিম ধার্মিক। একই সাথে, তারা সহজ ও সরল। কেউ যদি তাদের ধর্মপ্রবক্তার অসন্মানের সূত্র দেখিয়ে উত্তেজিত করে তোলে, সেজন্য সে লোকগুলোর জানার অভাবকেই দায়ী করা যায়, লোকগুলিকে সরাসরি সাম্প্রদায়িকতার ব্রাকেটে বন্দী করা যায় কি? মাহমুদুরদের প্ররোচনার শিকার মানুষগুলোকে গণহারে সাম্প্রদায়িক বললে ভীষণ অন্যায় করা হবে আসলে।
সেক্ষেত্রে ধরে নেয়া যাবে, আপনি সাম্প্রদায়িক লোক দেখেননি। অন্য ধর্মের প্রতি নাক সিটকানো/ভিতরে ঘৃণা পুষে রাখা লোকগুলির সাথে মাহমুদর প্ররোচনার শিকার সব মানুষকে এক করে দেখা যেতে পারে না।
অন্য ধর্মের প্রতি নাক সিটকানো/ ঘৃণা পুষে রাখা মুসলিম = সাম্প্রদায়িক মুসলিম
কিন্তু নিজ ধর্মকে শ্রেষ্ঠ মনে করা মুসলিম অবধারিতভাবেই সাম্প্রদায়িক নয়, যদি তারা অন্য ধর্মের প্রতি ঘৃণা পোষণ না করে বা পারস্পরিক শ্রদ্ধা ও শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানে বিশ্বাস করে।
@কাজি মামুন,
প্রথমেই বলে নেই, আমি কিন্তু ওখানে ব্যক্তি কাজি মামুনকে বুঝাইনি, বুঝিয়েছি ব্রাকেট বন্দী পঙ্তিটিকে। এবার আসুন আর একটু কথা বলি, প্রথমতঃ বাংলাদেশের সর্ব্বোচ্চ ৪৯ ভাগ সাম্প্রদায়িক আর ৫১ ভাগ অসাম্প্রদায়িক (অর্থাৎ বলতে চাইছেন, অসাম্প্রদায়িক জনগোষ্ঠী দেশে বেশী), এটি সম্ভবতঃ কোন নির্ভরযোগ্য তথ্য নয় মামুন ভাই। আর না, আমি বিপ্লব দার ঐ কথিত কথাকে সমর্থন করিনি বলেই কিন্তু এখনো ত্যাঁদোরের মতো বকবকিয়েই চলেছি! দেশে সাম্প্রদায়িক আর অসাম্প্রদায়িক ক’জন আছেন সে নিয়ে চুল চেড়া বিশ্লেষনে না গিয়েও একটা ছোট্ট উদাহরণ দিলেই বিষয়টা পরিষ্কার হয়ে যাবে। আমি বেশ কয়েক বছর কোরিয়াতে আছি, এখানে আজই বাংলাদেশ থেকে আসা একজন মেজর জেনারেল এর সাথে আমার কথা হয়েছে তাঁর হোটেল স্যুটে। যে তথ্য তিনি আমাকে দিয়েছেন তা আমার আগেই জানা। তিনি বললেন, “দেখুন তো এখান থেকেই বুঝা যায় আমরা কেনো শান্তিতে নেই। এদেশে খৃষ্টান জনগোষ্ঠীর সংখ্যা ২৭% (আসলে নব্য খৃষ্টান!), বৌদ্ধ ২২% আর মুক্তচিন্তক বা ধর্ম-বিশ্বাসহীন ৫১%। অথচ এখানে কেউ সংখ্যালঘু নয়! এরা কে কি বিশ্বাস করেন, তা নিয়ে মোটেও চিন্তিত নন! এরা শুধু শিক্ষা, গবেষনা আর উন্নয়ন বোঝে!” আমি অবাক হই নি কারন যা তিনি তাঁর এদেশীয় সহকর্মীদের কাছে শুনেছেন তা সর্ব্বৈব সত্যি। এখানে খৃষ্টান মনে করেনা তার মতদিয়েই রাষ্ট্র যন্ত্রকে চলতে হবে, বৌদ্ধও তা মনে করেনা, মুক্তচিন্তকরা তো করেইনা বরং ধর্মীয় বোঝা ঘাড়ে নেই বলে অনেকটা হালকা বোধ করে। পুরো সমাজটাই চালিত হচ্ছে যুক্তি আর যৌক্তিকতার বিচারে। ধর্ম যার যার ব্যক্তিগত বিষয়, সমাজ এবং সরকারী সংস্থা গুলো যেমন জনহিতৈশী তেমন চার্চ বা বৌদ্ধ মন্দীর গুলোও। যার যেখানে ভালো লাগে সে সেখানে যাতায়াত করে। এখানে কেউ কাউকে নাস্তিক বলে না, আর ধর্ম অবমাননার জন্যে কোন আইন নেই! খৃষ্টান জনসংখ্যা বেড়েছে, সামান্য কিছু বৌদ্ধ জনসংখ্যা কমেছে। ২০০০ সালে মুক্তচিন্তকের শতকরা হার গত এক দশকে একই আছে! ১৯৭৭ সালে দেশটির অর্থনৈতিক অবস্থা বাংলাদেশের চাইতে অনেক খারাপ ছিলো, আজ জাপানের সাথে তুলনা করে! আর আশা করে পরিকল্পনা মাফিক এগুলে আগামী এক দশকের মধ্যে নাকি বিশ্বের প্রথম পাঁচটি অর্থনৈতিক শক্তির একটিতে নিজেদের স্থান করে নিতে পারবে।
১৯৭৭ এ এদেশেও ব্যাপক আকারে দুর্ভিক্ষ ছিলো। তাতে করে কিন্তু মৌলবাদ মাথা চাড়া দিয়ে উঠে নাই! ১৯৯৭ সালে এরা বিয়ের আংটি সরকারের খাতে জমা দিয়ে আই এম এফ এর কথিত ঋণ শোধ করেছিলো গোটা জাতি এক হয়ে। আজ দুর্ভিক্ষ নেই, তাই বলে কোন মৌলবাদী তৎপড়তাও নেই। অর্থাৎ কোন ধরনের ধর্মীয় সাম্প্রদায়িকতা এখানে দৃশ্যমান নয়। রাজনীতিতেতো নেই-ই, এমনকি সামাজিক ভাবেও নেই। আলোচ্য প্রবন্ধ থেকে কি করে একে ব্যাখ্যা করা যাবে? আমি তাই মনে করি আমাদের ভূভারতীয় অঞ্চলে সাম্প্রদায়িকতা প্রাচীন কাল থেকেই রক্তে মিশে আছে। সামগ্রীক ভাবেই এতদ্ অঞ্চলের মানুষ জন সাম্প্রদায়িক। অধুনা অনেকেই স্বশিক্ষার সুযোগে সেই গন্ডী থেকে বেড়িয়েছেন। বা বেড়িয়ে যাবার তাড়না অনুভব করছেন। আর সে জন্যে যা দরকার সবাই আমরা তা বুঝি।
এ পরিসংখ্যান কিন্তু আনুমানিক, কাজেই নির্ভর যোগ্য বলা যাবে না।
আমি মনে করি যে তার নিজস্ব ধর্ম বিশ্বাস কে দিয়ে অন্যকে নিয়ন্ত্রন করতে চায় এবং নিজস্ব বিশ্বাসের ভিত্তিতে অন্যের ধর্মবিশ্বাস কে পরিমাপ করার চেষ্টা করে, সেই সাম্প্রদায়িক। এটি শুধু ধর্মীয় সাম্প্রদায়িকতার বেলায় প্রযোজ্য। আমাদের দেশে এছাড়াও আরো সাম্প্রদায়িকতা রয়েছে, যেমন আঞ্চলিকতা, প্রান্তিক জাতি সত্ত্বাগত, হিন্দুদের মধ্যে জাত প্রথা (যা এখন কিছুটা কমেছে!) এমনকি বর্ণবাদী প্রবনতা (বিশেষ করে বিয়ের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য, উচ্চতাও কখনো কখনো….), এমনকি পূর্বপুরুষের পেশাগত সাম্প্রদায়িকতা, আর নারী-পুরুষ তো আছেই।
আমি মনে করি এই বিজয়টি বড় মাপের সাম্প্রদায়িকতারই বিজয়! সরকারের আন্ডার পারফর্মেন্স কি শুধু এই সরকারের বেলাতেই প্রযোজ্য? বরং বিগত বি এনপি সরকারের সাথে তুলনা করলে কি দাঁড়ায় একটু ভাবুন। আন্ডার পারফর্মেন্স টা সব সরকারের ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য। বাকী থাকলো সামপ্রদায়িক ইস্যূ। বি এন পি আর আওয়ামীলীগ দু পক্ষই সাম্প্রদায়িকতাকে কাজে লাগাতে চেষ্টা করেছে, বোধগম্য কারণে ফল উঠেছে বি এন পি-র ঘরে, এই যা তফাৎ। নইলে যে সব শহরে সরকারের ইতিবাচক কর্মকান্ড ছিলো সেখানে সংশ্লিষ্ট নেতারাই উঠে আসতেন, জানি এখানে জাতীয় রাজনীতির কথা বলবেন। এবার দেখুন, জাতীয় রাজনীতিটাই এসময় ঘুরপাক খেয়েছিলো আস্তিক-নাস্তিক সহ সাম্প্রদায়িক ইস্যু গুলোকে কেন্দ্র করে। এমনকি যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের ইস্যুটাই এখানে গৌন হয়ে পড়েছে। আমার একটা ধারনা, ঠিক এখন যদি যুদ্ধাপরাধীদের বিচার প্রসঙ্গে একটি হ্যাঁ/না ভেটের আয়োজন করা হয় “না” জয়ী হবে। আর এর কারণ আর কিছুই নয় সেটি সাম্প্রদায়িক কারনে। কারন এ জাতির কাছে প্রত্যেকটা যুদ্ধাপরাধীকে এক একটা আস্ত ‘আল্লামা’ করে তৈরী করে নেওয়া হয়েছে!
আমার সাথে আপনার মতপার্তক্যটা এখানেই। আমার সঙ্গানুযায়ী প্রথমোক্তরা অসাম্প্রদায়িক হতেই পারেনা। কারন হেফাজতিরা তাদের ধর্মবোধ দিয়ে সামগ্রীক ভাবে গোটা জাতিকে নিয়ন্ত্রন করতে চেয়েছে, যা সাম্প্রদায়িক চেতনার বহিঃপ্রকাশ। আর এরা তাদের সমর্থক। অতএব…….!
তাহলেতো অন্ধ আওয়ামীলীগারকেও সঠিক ও সুবিবেচক বলে বিবেচনা করা যায়, কি বলেন? এতদ্ অঞ্চলের মানুষ ঐতিহাসিক ভাবেই সাম্প্রদায়িক, সাম্প্রদায়িক বীজ গভীরে রোপিত ছিলো, সময় মতো জল বাতাস আর আলো পেয়েছে, তাই জেগেও উঠেছে!
বাপ্পাদিত্যের ছবি বলে আমি ‘কাগজের বউ’ ছবিটা দেখেছিলাম বেশ কিছু দিন আগে। ছবির প্রটাগোনিশট দুইজন ,দুইভাবে–একজন,সুবিমল,প্রচুর টাকাওয়ালা,টাকা দিয়েই সে সব কিছু করে;আরেকজন,উপল,টাকার অভাব,টাকা দিলে সে সব কিছু করে।সুবিমল উপলকে টাকা দেওয়ার সময় এই বস্তবাদি ডায়ালগটিই বলে…”বুঝলে উপল মানুষের সম্পর্কগুলা একটা খাদ্যচক্র–”যেখানে একজন খাদ্য,আরেক জন খাদক”!
এই ছবিতে, সুবিমল কিছু ‘খাওয়ার’ জন্যই তার বউকে কাগজ বানায়া ফেলে,বাগায়া দিতে চায়;আর ‘টাকার-কাগজের’ কাছে বিক্রি হওয়া উপল,তার মালিকের,সুবিমলের, ‘খাওয়াটাতেই’ হাত বসায়।কাহিনিটাহচ্ছে সুবিমল তার বউকে ডিভোর্স দিয়ে প্রিতিকে পেতে চায়,আর এইওজন্যই সে উপলকে ভাড়া করে,উপলকে দিয়ে সে প্রিতিকে তার তার সাবেক-প্রেমিক থেকেও আলাদা করে।প্রিতি এইবিষয়টা জেনে গিয়ে ঊল্টো টাকার লোভ দেখিয়ে উপলকেই তার সাথে বিয়েতে রাজি করায়,এবং বিয়ে করে,যাতে সুবিমলকে উল্টোএকটা শিক্ষা দেওয়া যায়।শেষে ঘটনাটা এইভাবে দাড়ায় যে সুবিমল আর প্রিতিকে পায় না,প্রীতিও আর উপলের থাকে না–কারন প্রিতি ছিল উপলের কাগজেরই বউ।কিন্তু আবারনাথিং এক্সেক্টি দা সেম এগাএইন।সুবিমল তার প্রাণের বউ হারায়,উপলও তার অনেক কষ্টে পাওয়া চাকরিটা হারায়
ছবিটা এইজন্যই বলা যে,বস্তবাদের প্রধান বস্তু টাকা দিয়ে কি আসলে সবকিছু পাওয়া যায়?আর এই বস্তুটি কোথাও ঢুকলে সেটা কি আর বিশুধ্ব থাকে ?
তিওনেশিয়ার সাথে সাথেই, ২০১১ সাল থেকে আজ পর্যন্ত –মাঝখানের মুরসি ‘ভুল’ টা বাদ দিয়ে– মিশরে জেগে ঊঠা বিপ্লবের কারন কি ঐ হাংগার ইনডেক্সই?সেখানে কি কিছু মানুষের ,সেকুলারদের– মুক্তচিন্তাবোধ,মুক্তচিন্তক বিশ্ব গড়ার স্বপ্ন,স্বাধিনভাবে বেছে থাকার ইচ্ছা,মানবাধিকার কি কাজ করেনি?
আমার কাছে মনে হয় অন্তত কি ‘কিছু’ মানুষের আন্তরিক জানাশোনা ,মুক্তপৃথিবীগড়ার স্বপ্নই এগিয়ে নিয়ে গেছে কিছু অভুক্ত লোকের পেট ভরে খাওয়ার স্বপ্নও।আর যাদের জানাশোনাও একটা খাদ্য,এই স্বপ্নময় খাদ্যে যাদের লোভ, তাদের বস্তুবাদি খাদ্যের খুব্বেশি দরকার হয় না।
the less a man knows the bigger the noise he makes and the higher the salary he commands–mark twain
@নাফিজ ইন্ডিকাজ,
আপনি সঠিক হলে ইসলামিক ব্রাদারহুড ক্ষমতায় আসত না । লিবিয়া এবং সিরিয়াতেও লড়ছে সেই ইসলামিস্টরা। রোমান্টিকতা ছাড়ুন। পরিসংখ্যান দেখুন মিশরে খাদ্যাভাব কি ভয়ংকর । কিছু কিছু সেকুলারিস্ট আধুনিক বিশ্বের স্বপ্ন দেখা তঁরুনরা নিশ্চয় ওদের মধ্যে ছিল। আপনাদের শাহবাগের মতন । কিন্ত সমাজ এবং রাজনৈতিক পরিবর্তনের ক্রিটিক্যাল শক্তি তারা না । আশাকরি শাহবাগের ব্যার্থতা থেকে এটা বোঝার ক্ষমতা এখন আপনাদের হয়েছে, রোম্যান্টিক আন্দোলনের মূল্য রাজনীতিতে নেই।
মুসলিম ব্রাদারহুড সমর্থিত মোর্সী ক্ষমতায় এলেও সেক্যুলার এবং পশ্চিয়া প্রভাবমুক্ত সমাজের যে প্রতিশ্রুতি সে রাখতে পারেনি তারই ফলশ্রুতিতে এবারের দ্বিতীয় বিপ্লব মিশরে। পশ্চিয়া মাধ্যমগুলিতে প্রচুর শিরোনাম তৈরী করলেও মিশরীয় সাধারণ মানুষের এই আকাঙ্খার কথা উল্লেখ করার ব্যাপারে অদ্ভুত নীরবতা পালন করছে।
মিশরের আরব স্প্রিং এর অনেকগুলো কারণের মাঝে অর্থনৈতিক ব্যর্থতা অবশ্যই অন্যতম তবে এবারের ব্যাপারটা একটু ভিন্ন।
মিশরীয়দের জন্য ট্রাজেডি’র ব্যাপার হলো জেনারেল সিসি যে কিনা মানবসমাজের ইতিহাসে অভূতপূর্ব জনসমুদ্রকে পথভ্রষ্ট করে দিল, সে কিন্তু তার সেই পশ্চিয়া হুজুরদেরই আজ্ঞাবহ।
@রুদ্রাভ,
আমি এই বিশ্লেষনের সাথে সহমত না। কারন এটা ঠিক হলে মর্সি ক্ষমতা দখল করতেই পারত না। মিশরের বিপ্লবের মূল কারন হাঙ্গার ইন্ডেক্স এবং এখনো তাই। এই বিশ্লেষন টা দেখুন। খাদ্যর দাম ১০% বাড়লে, সিভিল আনরেস্ট বাড়ে ১০০%।
http://www.financialsense.com/contributors/russ-winter/food-prices-riots-civil-wars
@বিপ্লব পাল,
মোর্সী ক্ষমতায় যাবার এক বছরের মধ্যে হাঙ্গার ইনডেক্স এর পরিবর্তন নিশ্চয় মিসরীয়রা করেনি যে সেই কারণেই দ্বিতীয় গণআন্দোলন শুরু করে দিল।হাঙ্গার ইনডেক্স এর ভূত পশ্চিমা মাধ্যমগুলির অপপ্রচার। নিচের আর্টিকেলটা পড়ে দেখতে পারেন:
http://www.globalresearch.ca/americas-plan-b-in-egypt-bring-back-the-old-regime/5341826
@রুদ্রাভ,
এটি অতিবামেদের ম্যাগাজিন যাদের ইসলামিক মৌলবাদের প্রতি প্রেম সুবিদিত। লেখাটি প্রথমেই এত অপরিনত এই নিয়ে মন্তব্য করাও হাস্যকর-আমি তুলে দিচ্ছি
লেখককি টিভিতে দেখেন নি মিশরে কি হচ্ছিল। মিশরে আজ যা হয়েছে ২০০৭ সালে বাংলাদেশে তাই হয়েছে। গণতন্ত্রের হত্যাকারি বি এন পিকে সরাতে বাধ্য হয়েছে মিলিটারি তদারকি সরকার বাংলাদেশে গণতন্ত্রের প্রতিষ্ঠার জন্য।
গণতন্ত্রের পথে যদি জামাত ক্ষমতা আসে তাহলে বাংলাদেশে কিভাবে তারা এক নায়কতন্ত্র স্থাপনের চেষ্ট করে সেটা কি লেখক ভুলে গেছেন?
মর্সির ইসলামিক ব্রাদারহুড মোটেও গণতন্ত্রের বিশ্বাসি না-যেমন না, মিশরের মোল্লাতন্ত্র বা জামাত। গণতন্ত্র তাদের কাছে ক্ষমতা দখলের সিড়ি -যেমনটা হিটলার বা মুসোলিনী করেছে। বা ইরানে মোল্লারা করেছে। একবার জনবিপ্লবের পর ক্ষমতা দখল করে এক নায়কতন্ত্র হাঁসিল করেছে।
মার্সি সেটাই করার চেষ্টা করছিল। গণতন্ত্রকে ধ্বংস করে, ব্রাদারহুড আর ইসলামের একনায়কতন্ত্র। তাতেও কিছু যায় আসত না যদি না সে সফল হতে খেতে দিতে। সেটাও পারে নি। তাহলে আর লোকে সহ্য করবে কেন?
যায়হোক যে লেখাটা লিখেছে তার ইতিহাস এবং রাজনীতিতে জ্ঞান এত সামান্য, ওই অতিবাম লেখার ওপর মন্তব্য করাও হাস্যকর।
@বিপ্লব পাল,
globalresearch.com সম্পর্কে আপনার এমন উচ্চ ধারণা এবং অন্যান্য লেখকের লেখা বা মন্তব্যকারীর মন্তব্যকে আক্রমন করার এমন চল সত্যিই অত্যন্ত উন্নত মার্গের।
বাংলাদেশের ২০০৭ এর ঘটনার সাথে মিশরের ঘটনার তুলনা কিভাবে করলেন বোঝা মুশকিল।
সত্যি কথা বলতে কি, কিছু তাত্ত্বিক শব্দ দিয়ে আপনার লেখায় আপনি কি বোঝাতে চান একমাত্র আপনি ছাড়া আর কেউ বোঝে বলে মনে হয় না।
@রুদ্রাভ,
পাল বাবুর বালছালে মনোকষ্ট পাবেন না। উনি একটু অমনই। হাঙ্গার ইন্ডেক্স নামক হাস্যকর একটা জিনিস দিয়ে যে জিও-পলিটিক্স ব্যাখ্যা করা যায় না সেটা উনি ভালোভাবেই জানেন, কারন উনি ততটা মূর্খ নন। তাহলে তারপরেও করে যান কেন? কারন কাঠবলদ পাবলিকরা এই জিনিস খায়। যেহেতু এইভাবে হিসাব করলে ঘটনার সহজ বর্ননা পাওয়া সম্ভব। তাতে করে বেশি চিন্তা করতে হয় না। আর বেশি চিন্তা করতে গেলেই সমস্যা। তাতে যে দেশে বসে করে কেটে খাচ্ছে সেই দেশের সরকারের বিরুদ্ধে কথা বলতে হয়। এই দিক থেকে তারা চ্রম মাপের সৎ।
উনি বাঙলাদেশের ১/১১ সরকারকে ব্যাখ্যা করছেন সেনাবাহিনীর গণতন্ত্র রক্ষা করার মিশন হিসেবে। এটা দুটো কারনে ঘটতে পারে।
এক, উনি যেহেতু ভারতীয়, ভারতের শুয়োরের বাচ্চাগিরী করে এই দেশের রাজনীতির পট পরিবর্তন উনি দেখেও দেখছেন না, যেটা অধিকাংশ মধ্যবিত্ত ভারতীয়রা করে থাকে।
দুই, পাল সাহেবকে নূন্যতম চিন্তা করার যোগ্যতা করার যোগ্যতা সম্পন্ন একজন হিসেবে যেটা আমি ভেবেছিলাম সেই যোগ্যতা তার নেই।
গনতন্ত্র আর পেটে ভাতের হিসাব দিয়ে যদি জিও-পলিটিক্স ব্যাখ্যা করা যেত, দুনিয়াতে আজকে রাস্তা ঘাটে গনতন্ত্র আর ভাত পাওয়া যেত। পাবলিক ভাত পায় নি সেজন্য মিশরে রাস্তায় নেমে এসেছে। বাহ! বিপ্লব কি মিশরে বাঙলালিঙ্ক দামে বিক্রি হচ্ছে নাকি ভাই রুদ্রাভ? আমাকে একটু তথ্য দিতে পারবেন?
সো, বিপ্লব পালের বৈপ্লবিক ব্যাখ্যা দেখে যান। মাথা গরম হলে কী আর করবেন। কিছু করার নাই।
@সাইফুল ইসলাম,
যারা পড়াশোনা না করে বাম লিফলেটের মাধ্যমে রাজনীতি শেখে, দুই বাংলাতে তাদের ভাষা এবং চিন্তার হাল এর থেকে বেশী কিছু হবে না। আমি কোন দুর্গন্ধপূর্ন মন্তব্যে লিখতে রাজী না। হাঙ্গার উন্ডেক্স কি করে রাজনৈতিক অস্থিরতার কারন হয়, সেই ব্যপারে এই প্রবন্ধে সবিস্তারে লেখা আছে
-এটা আমি পড়তে দিয়েছিলাম। পরিস্কার ভাবে প্রবন্ধ না পড়েই কমেন্ট করা হয়েছেঃ
http://www.financialsense.com/contributors/russ-winter/food-prices-riots-civil-wars
এই গবেষনা পত্রে মিডল ইস্টে আনরেস্টএর সাথে খাদ্যদ্রব্যের দাম এবং অপ্রতুলতার পরিস্কার সম্পর্ক দেখানো হয়েছেঃ
http://necsi.edu/research/social/food_crises.pdf
স্যোশাল সায়েন্সে কোন তত্ত্বই শেষ কথা বলে না। অনেক ফাক্টর এক সাথে কাজ করতে পারে। মিশরেও গণতন্ত্রের জন্য আকাঙ্খা, মুবারকের দুর্নীতি নিশ্চয় ফাক্টর ছিল। গবেষনাপত্র দেখে এটাই আমার কনক্লুশন যে এখানে ক্ষুদার ভূমিকা ছিল সর্বাধিক। অধিকাংশ সমাজবিজ্ঞানীরা সেই ব্যাপারে একমত হবেন সেটা ওপরের গবেষনাপত্র পড়লেই বোঝা যাবে। অবশ্যই একটি অতিবাম এবং ইসলামিস্ট সেকশন থাকবে যারা সব কিছুতেই আমেরিকার ভূত দেখবে।
আরেকটা কথা, ওপরে সইফুলের মন্তব্যে ভারত এবং ভারতীয়দের সম্মন্ধে যে বিদ্বেশ প্রকাশ পেয়েছে তা নিন্দানীয়-এই ধরনের জাতিবিদ্বেশ চূরান্ত প্রতিক্রিয়শীলতার পরিচয়। সব কিছুতে এইভাবে গায়ে পড়ে ঝগড়া করা-তাও যুক্তিতর্ক ছারা কোন মুক্তমনার পরিচয় না। মুক্তমনার মড়ারেটরগণ কেন এই রত্মটিকে আদর করে পোষেন তাও আমার কাছে পরিস্কার না। কারন এই ধরনের জাতিবিদ্বেশী মন্তব্য কোন যুক্তি না দক্ষিনপন্থী ঘৃণাকেই উস্কে দিয়ে থাকে।
@বিপ্লব পাল,
ভারতীয়দের বিরুদ্ধে বিদ্বেষের প্রশ্নই আসে না। ইনফ্যাক্ট কারো সম্পর্কেই আমার কোন বিদ্বেষ নাই।
আপনার এই অন্তসারশুণ্য লেখায় মন্তব্য করে সময় নষ্ট করার ইচ্ছা আমার দুঃস্বপ্নেও ছিল না। করতামও না। যখন আপনি আপনার উদরশুণ্য থিওরি দিয়ে বাঙলাদেশের ফকরু-মইনুদ্দিনের ১/১১ সরকারের ব্যাখ্যা দিতে এলেন তখন একজন বাঙলাদেশি হিসেবে আপনার ভারতমাতার করা আকামটা আপনার ঠুলি পড়া চোখে দেখিয়ে দিতে হল। ভারতীয় মধ্যবিত্ত শ্রেনীর একজন প্রতীনিধি হিসেবে আপনি যখন ব্যাপারটা জানেন না বা জেনেও না জানার ভান করে যাচ্ছেন তখন দেশের ভুক্তভোগী হিসেবে আপনাকে জানানোটা আমার নৈতিক দায়িত্বের মধ্যে পড়ে। নইলে আপনার এই হাস্যকর পেটে ভাতের থিওরি দিয়ে আপনি পদার্থবিজ্ঞানের ব্যাখ্যা দিতে এলেও আমার কিছু আসে যায় না। না জেনে সারা দুনিয়া সম্পর্কে আলোচনা করুন কোন সমস্যা নেই। বাঙলাদেশ সম্পর্কে কোন আলোচনা করতে হলে হোমওয়ার্কটা করে আসবেন। এটাই আমার বক্তব্য।
@রুদ্রাভ,
উভয়ক্ষেত্রেই মিলিটারির ভূমিকা তদারকি সরকার সৃষ্টি করে ইলেকশনের পথ প্রশস্ত করা। আপনার কি মনে হয় ২০০৭ সালে ইলেকশন হলে হাসিনার ল্যান্ডস্লাইড বিজয় হত? বা জামাতিদের সরানো যেত?
মিশরে বর্তমান মিলিটারি কাউন্সিল গণতান্ত্রিক সরকার আনতে বাধ্য কেননা সেই হাঙ্গার ইন্ডেক্স। আমেরিকা এবং ইউরোপ তাদের বয়কট করলে, মিশরের খাদ্যাভাব আরো বাজে দিকে যাবে। এই মুহুর্তে সেই রিস্ক মিলিটারি নেবে না।
@বিপ্লব পাল,
হাঙ্গার ইনডেক্স এর যে গান আপনি গুনগুন করছেন তা যে ওই financiasense.com থেকে ধার করা তা বুঝলাম, তবে এর সহজ বাংলা করলে কি ‘অর্থনীতি’ কে বোঝানো হয় না?
আর অর্থনীতিই কি মানুষের সকল কর্মকান্ডের মূল চালিকা সে কথা কি আজ আপনার কাছে নতুন?
বিশ্বের দেশে দেশে আজ যে জনসন্তোষ তার পেছনে নিশ্চয় অর্থনৈতিক সামর্থ্যের বিশাল বৈষম্যের ভুমিকা আছে।কিন্তু মিশরের ক্ষেত্রে আপনি যে প্রশ্নটা অবলীলায় এড়িয়ে গেলেন তা হলো এই দ্বিতীয় বিপ্লব কি হাঙ্গার ইনডেক্স দিয়ে ব্যাখ্যা করা যায়???
আরব বিশ্বের খাদ্যদ্রব্যের দামের যে উদাহরণ দিলেন সেটা বিশ্বের কোন দেশে অনুপস্থিত বলে আপনি মনে করেন? এমনকি USA তেও মানুষের ক্রয়ক্ষমতা দিনে দিনে হ্রাস পাচ্ছে।
লিবিয়ার সমৃদ্ধ অর্থনীতিতে গাদ্দাফিকে এভাবে ভুলুন্ঠিত করার ব্যাপারটা আপনি কিভাবে ব্যাখ্যা করবেন? সৌভাগ্য যে আপনি বলেননি ইরাক এ সাদ্দাম এর পতনের পেছনে হাঙ্গার ইনডেক্স কাজ করেছে।বিশ্বব্যাপী USA এবং NATOর সাম্রাজ্যবাদী আগ্রাসন দৃষ্টি এড়িয়ে যেতে হলে আপনার মত বদ্ধ পাগল হওয়া ছাড়া উপায় নেই। এই আগ্রাসনের রুপটাও যেকোনো সুস্থ মানুষের দৃষ্টি এড়াতে পারেনা।আফগানিস্থানে তালেবান এর ভুতের অজুহাত দেওয়াটা বিশ্ববাসীর কাছে গ্রহনযোগ্য করে তুলতে পেরেছিল ওরা কিন্তু বর্তমানে সেরকম কোনো কারণ দেখানোরও প্রয়োজন মনে করছেনা। যেমন ধরুন, সিরিয়াতে NATO সমর্থিত তথাকথিত বিপ্লবীরা সুবিধা করতে পারছেনা কিন্তু মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বেহায়া’র মত রাসায়নিক অস্ত্রের অজুহাত দিয়ে বিপ্লবীদের অস্ত্রীকরণ করছে।ইরানের দিকে তাকিয়ে দেখুন বানিজ্যিক নিষেধাজ্ঞার বেড়াজালে দেশটাকে আস্থেপৃষ্ঠে যেভাবে বেধে ফেলা হয়েছে সেখানে কি দ্রব্যমূল্য উর্ধ্বগতি না হবার কোনো কারণ আছে? সেক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক সাম্রাজ্যবাদী রাজনীতি কি মূল কারণ নয়? এসব দেশে রাজনৈতিক এই অস্থিরতার পেছনে আপনি কি মৌলবাদ আর হাঙ্গার ইনডেক্সকে দায়ী করবেন?
আপনি বোধহয় গণতন্ত্রবিহীন পৃথিবীতে বাস করে ব্যক্তিস্বাধীনতার স্বপ্নে বিভোর মাতাল।বিশ্বের 0.00১% মানুষ কিভাবে বাকি সবার স্বাধীনতা হরণ করে নিচ্ছে তা একমাত্র আপনারই দৃষ্টি এড়িয়ে যেতে পারে।
আরব বিশ্বের যে গণজাগরণ তার মূল কারনটা রাজনৈতিক। উত্পাটিত শাসকশ্রেণী হলো পশ্চিয়া বিশ্বের ব্যবহৃত অস্ত্র যার কোনো মূল্য আর তাদের কাছে নেই।
সাইফুল এর জবাবে আপনি যে জাতিবিদ্বেষ খুঁজে পেয়েছেন তা অস্বাভাবিক কিছু নয় আপনার জন্যে। বস্তুত, ব্যাপারটা চরম কৌতুককর। বাংলাদেশের রাজনীতিতে ভারতের যে প্রভাব তাকে এড়িয়ে যাওয়া আপনার পক্ষেই সম্ভব।
মূল কথায় যদি ফিরে যাই তবে সাইফুল এর কথার পুনরাবৃত্তি করতে হয়। আপনার লেখা এমনি খাপছাড়া যে এতে মন্তব্য করা অপ্রয়োজন।
@রুদ্রাভ,
আবাহমানকাল থেকে কোন দেশের সরকার পরিবর্তনের পেছনে বা রাজনৈতিক বিপ্লবের পেছনে অন্যদেশের ফরেন ইন্টালিজেন্সের হাত থাকে। বলশেভিক বিপ্লব কাদের টাকায় চলেছিল? লেনিনকে কে অর্থ দিত? লেনিন জার্মানি থেকে অর্থ পেতেন, যাতে বলশেভিকরা জারের শাসন দুর্বল করতে পারে।
কিন্ত তার মানে কি বলশেভিক বিপ্লবের কারন জার্মান ইন্টেলিজেন্সেরটাকা? রাশিয়ানদের দুর্গতি কোন কারন না?
সেই জন্যই বলছি অধিকাংশ বামেদের সমস্যা হচ্ছে তারা ইতিহাসটা ভাল করে না পড়ে, আগেই দুমদাম করে বুলিভিত্তিক বিশ্লেষনের হাড়িকাঠে মাথা দেন।
দারুণ চিন্তাশীল লেখা! একটা জায়গায় খটকা লাগছে, আপনি বললেন
আমি যতটুকু দেখেছি, হিন্দুদের কোন গরিব আক্রমণ করে না। আক্রমণ করে স্বচ্ছল রাজনৈতিক চামচা বা নেতা। তারা শুধু লোভেই করে, পেটের প্রয়োজনে না।
আমি অনেক ধনী মৌলবাদী দেখেছি, যাদের পেটের জ্বালা নেই। আমার ধারনা শুধু পেটের জ্বালা তেই মানুষ মৌলবাদী হয় না এর পেছনে পারলৌকিক মুলা ও কাজ করে। হুজুর রাও বেহেস্তের লোভ দেখায় ফলে সন্তান কে হাফেজ বানিয়ে সাত পুরুষ বেহেস্তে যেতে চায়। ‘চিন্তা করা ও যুক্তি দেয়া শয়তানের কাজ’ এই হাদিস দিয়ে মানুষ কে স্থায়ী ভাবে অন্ধ বানান হয় আর এই সুযোগে নিজেদের স্বার্থ হাসিল করার জন্য মৌলবাদ ছড়িয়ে দেয়।
@আম্মানসুরা,
ভারতে হিন্দু মুসলমান দাঙ্গায় হিন্দুরা গরীব মুসলমানদে র ওপর আক্রমন করে-সুতরাং এই
ধারনাটা ঠিক নয়া।
রাজনৈতিক মূলটা ঠিক। কিন্ত সেই জন্যেই আমি মৌলবাদকে বস্তুবাদি সমস্যা হিসাবেই দেখতে চাইছি।
সত্যি তাই। তবে পাকিস্তানকে দেখলে মনে হয়, একটা মাথা মোটা দেশ কারণ ভারতের মত দেশ যেখানে ২৩ টির মত রাজ্য (সংখ্যাটা নিশ্চিত না) এক সাথে ধরে রেখেছে, সেখানে পাকিস্তান বাংলাদেশকে ধরে রাখতে পারল না। এমন কি দেশের সার্বভৌমত্ব ধরে রাখতে পারে নি।
বাংলাদেশ এখনো সরিয়া আইন চালু হয় নাই, অথচ বাংলাদেশের ধর্মীয় গুরু আকামা শফি সাব তার ওয়াজে নারীদের নিয়ে যেসব চটি গল্প শুনাচ্ছেন, আবাক করার মত বিষয়। আর ক্ষমতা পেলে না জানি কি করবে??
আপনার লেখাটার বেশ ভাল লাগল। নতুন একটা আইডিয়া পেলাম।
ধন্যবাদ।
লেখক ‘বোরে’ বলতে দাবার বোড়ে বোঝাতে চেয়েছেন|
লেখকের বাংলা বানানের প্রতি নির্মমতা সর্বজনবিদিত|
বিপ্লব-দা এই যে আপনি দমাদম বোমা ফাটান যেমন আগামী কুড়ি বছরে গাঙ্গেয উপত্যকা শুকিয়ে যাবে, অথবা বিজ্ঞানিরা অমুক আর তমুক বলেছেন, এইগুলো একটু রেফারেন্স দিয়ে দেবেন- জনসাধরণ তাহলে উপকৃত হয় এবং আপনার লেখার মান উন্নততর হিসেবে স্বীকৃত হবে!
@অনামী,প্রাকৃতিক বিপর্যয় যে কি অমোঘভাবে উপমহাদেশের দিকে ধেয়ে আসছে এ সম্পর্কে এখানকার লোকজন খুব কমই ওয়াকিবহাল। ইন্টারনেটে একটু উপমহাদেশে গ্লোবাল ওয়ার্মিং এর সম্ভাব্য প্রতিক্রিয়া নিয়ে পড়াশোনা করলেই অনেক কিছু জানতে পারবেন।
একটি ছোট্ট তথ্য শুধু দেই। দুমাস আগে বাংলাদেশে একটা খবরে বেশ আশ্চর্য হয়েছিলাম। খবরটা ছিলো যে বাংলাদেশে ২০০০ সাল এবং ২০১০ সালের জনসংখ্যা জরীপে দেখা গিয়েছে যে সারা বাংলাদেশে একমাত্র বৃহত্তর বরিশাল জেলাতেই লোকসংখ্যা কমেছে দশ বছরে। খবরে বলা হয় যে গত দশ বছরে বরিশাল থেকে বিপুল পরিমানে লোক দেশে বিদেশ ছড়িয়ে পরেছে। বলা হলো যে ঢাকা শহরে বস্তিবাসী জনসংখ্যার প্রায় ৪০% ই বৃহত্তর বরিশাল এলাকার। এমনিতে বাংলার দক্ষিন বংগ অপেক্ষাকৃত বেশী জন্মহারের জন্যে পরিচিত। সেখানেই জনসংখ্যার এই বিরাট পরিবর্তনের কারন কি?
এর কারন হলো সমুদ্র লেভেল বেড়ে আর আর জোয়ারের ফলে বরিশালের জমিতে দিনে দিনে লবনাক্ততা মারাত্মক ভাবে বাড়ছে। এটা এতোই ভয়াবহ পর্যায়ে গেছে যে, বরিশাল জেলা, যেটি একসময় অবিভক্ত বাংলার শস্যভান্ডার বলে বিখ্যাত ছিলো, সেই বরিশাল জেলাতেই এখন খাদ্য ঘাটতি। বরিশালের বিখ্যাত চালের আড়তগুলি, যেখান থেকে একসময়ে হাজারে হাজারে নৌকায় করে সারা বাংলায় লক্ষ লক্ষ মন চাল যেতো, সেখানে নাকি এখন শুধু মাছি তাড়ানোর অবস্থা। আরো দশবছর পরে দক্ষিন বংগের অবস্থা আরো খারাপ হবে। কয়েক কোটি লোক উদ্বাস্তু হবে আগামী কয়েক দশকের মধ্যেই। বাংলাদেশ ছাড়াও এই সব লোকেরা আশ্রয় নেবে ভারতে বা অন্য যেখানে যাওয়া যায়।
@সফিক,
এটা খুব ভাল ইনফর্মেশন । একটা তথ্যচিত্র ওয়াটার ওয়ার থেকে প্রথম এই ব্যাপারে আমি জানতে পারি। এটাও সেই তথ্যচিত্র থেকে জেনেছিলাম, বাংলাদেশ সরকার হল্যান্ডের কাছ থেকে প্রযুক্তি কোলাবরেশন করছে বরিশালকে [ এবং দক্ষিনের আরো জেলাগুলি] বাঁচাতে। কিন্ত কাজ কিছু এগোয় নি। যেকটা টাকা এসেছিল সব দুর্নীতির কারনে উড়ে গেছে। ফলে বরিশালে পরিবেশ রিফিউজির সৃষ্টি হয়েছে-তারা ঢাকার ট্রেইনলাইনের ধারে এসে বসছে। এটা ওই তথ্যচিত্রেই দেখিয়েছিল।
আওয়ামিলীগ বা বি এন পি এগুলি থামাতে না পারলে, বাংলাদেশ আরো মৌলবাদি শক্তির হাতে চলে যাবে।
@সফিক,
কোনো সন্দেহ নেই যে এক মারাত্মক বিপর্যয়ের মুখে দাঁড়িয়ে আছে সমগ্র মানব জাতি! খুব সম্ভবত আধুনিক মানুষের ক্ষুদ্র ইতিহাসে এত বড় দুর্যোগ আগে আসেনি| পৃথিবীর আবহাওয়া পরিবর্তনের কারণে অসংখ্য প্রজাতির গণবিলুপ্তি খুবই স্বাভাবিক ঘটনা| এইবারেও বোধয় তা হতে চলেছে| এতদিন হয়েছে প্রাকৃতিক কারণে| এইবার প্রথমবার(ও খুব সম্ভবত শেষ) তা মানুষের ক্যাদরানিতে ঘটতে চলেছে| মাথা চাপরাবো নাকি নিজেদের বাহবা দেব, তাই ভাবি মাঝে মাঝে!
এই দুর্যোগ আসবেই এবং তীব্র গতিতেই আসবে, কারণ কোথাও পর্যাপ্ত পরিশোধনের পদক্ষেপ দেখা যাচ্ছেনা|এবং কোনো দেশ বা কোনো গোষ্ঠিরই এর থেকে নিস্তার নেই| দাড়িপাল্লায় রাখা একদিকে একটা গোটা গ্রহ- অনন্ত মহাবিশ্বে আমাদের একমাত্র বাসস্থান|অন্যদিকে কিছু সোনার বাঁট আর তেলের ডাব্বা| অনেক অনেক অনেক বুদ্ধি মাথায় থাকলে তবেই না দ্বিতীয়টা বেছে নেওয়া যায়!
@অনামী,
সময়ের অভাবে সব লিংক দিতে পারি নি। এখানে দিচ্ছি
[১] ২০৩৫ সালের মধ্যে গাঙ্গেয় উপত্যকা শুকিয়ে যাবে ( যদিও সালটা নিয়ে অনেকেই
প্রশ্ন করেছেন-কিন্ত তাতে ২০৩৫ টা বড় জোর ২০৬০ সাল হবে।
http://www.washingtonpost.com/wp-dyn/content/article/2007/06/16/AR2007061600461.html
[২] ভারতে জলের সংকট
http://www.arlingtoninstitute.org/wbp/global-water-crisis/606
এই সংকট মেটাতে ভারত রিভার ইন্টারলিংকিং প্রজেক্ট নিয়েছে। যাতে ব্রহ্মপুত্রের জল, কাবে্রি নদী পর্যন্ত টানা যাবে। এতে বাংলাদেশের বিপুল ক্ষতি। বাংলাদেশের ৩০-৪০% জল আসে ব্রহ্মপুত্র ধরে। বাংলাদেশের উত্তর ভাগ শুকিয়ে যাবে। এই ঘটনা আরো বেশি ভারত বিরোধিতা এবং তার জন্য বাংলাদেশে মৌলবাদের জন্ম দেবে।
@বিপ্লব-দা,
তথ্যসূত্র দিয়ে দেওয়ার জন্যে ধন্যবাদ| কোনো সন্দেহ নেই যে মানুষ কর্তৃক যথেচ্ছ CO2 নির্গমন পৃথিবীর পরিবেশের ভয়ানক ক্ষতি করেছে| আমরা সম্ভবত এক অপরিবর্তনশীল আবহাওয়া বিপর্যয় ও পরিবেশ ধবংসের দিকে শনৈ শনৈ গতিতে এগিয়ে চলেছি| এইটা কতটা ত্বরান্নিত হবে ও এর প্রভাব কতখানি সুদূরপ্রসারী হবে তা নিয়ে নানা বিজ্ঞানি নানা মত পোষণ করলেও, এর প্রভাব যে কম বেশি ভয়ঙ্কর হবেই তা আজকের তথ্য উপাত্ত থেকে বলে দেওয়া যায়| এত কিছু সত্ত্বেও পৃথিবীর রাষ্ট্রপ্রধানদের আশ্চর্য নিস্পৃহতা এবং জনমানসে এই রকম গুরুতর বিষয় নিয়ে অজ্ঞতা দুশ্চিন্তা উদ্রেক করে বইকি! আপনার লেখা খুবই উপযুক্ত এবং সময়োপযোগী হয়েছে| এই কারণেই তথ্যসূত্র দিতে অনুরোধ করলাম| (বোমা ফাটানো কথাটা ইয়ার্কি মেরে বলা| আশা করি বুঝতে পেরেছেন| :)) )
বিপ্লব পাল, আমরা এই অঞ্চলের মানুষরা নিজেদের সম্বন্ধে হয় মিথ্যে বলি না হয় নিজেদের সঙ্গে প্রতারণা করি এই বলে যে, আমরা খুব অসাম্প্রদায়িক । ভাবখানা এমন যেন এখন নতুন করে খুব সাম্প্রদায়িক হয়েছি। আদতে আমরা কখনই অসাম্প্রদায়িক ছিলাম না। সাম্প্রতিক ইতিহাসে তো নয়ই। অবশ্য এ নিয়ে আমি বিতর্কে যাবো না। আমার মূল বক্তব্য আপনার মৌলবাদী সমাধান নিয়ে । আমি অবাক হয়েছি প্রাকৃতিক বিপর্যয়কে অবলম্বন করে আপনি সমাধান খুঁজেছেন:
যারা কম্পিউটার ব্যবহার করে ইন্টারনেটে রাত-দিন পড়ে থাকে, বুয়েটসহ বিজ্ঞান ও ধর্মনিরপেক্ষ শিক্ষায় শিক্ষিত তারাই বাংলাদেশে সবচেয়ে বড় মৌলবাদী। হিজবুর তাহরির যারা করে তারা ধনী ও বিজ্ঞান শিক্ষায় শিক্ষিত। দেশের আপারময় জনসাধারণকে এনজিওর মাধ্যমে কৌশলে বিজ্ঞান শিক্ষা দিয়ে আপনি কি তাদের মুসলিম এই কথা ভুলিয়ে দিতে পারবেন? কোন মুসলিমের কি ইসলামী শাসন তথা আল্লার শাসন ও আল্লার আইনের প্রতিষ্ঠার ব্যাপারে আপত্তি থাকতে পারে? আল্লাই কি সর্বশ্রেস্ঠ নন? যেখানে আল্লা এই আইন তৈরি করেছেন দুনিয়ায় যাতে তা প্রতিষ্ঠা করা হয় সেখানে বিকল্পের কোন স্থানই নেই। ধর্মীয় নেতা যখন এসব বলবে তখন কি দ্বিমত করা যাবে? এসবের মধ্যে আমরা খুব ধনী বা দরিদ্র তাতে কি আসে যায়? বিজ্ঞান শিক্ষায়ই বা কি হেরফের হবে? বিজ্ঞান তো আল্লারই সৃষ্টি! অন্য ধর্মের কথা জানি না। মুসলিমরা কখনও তাদের খেলাফতের বিশ্বাস বা দাবী থেকে সরে আসবে না। তাহলে তাদের ধর্মই থাকে না। তাই বিজ্ঞান পড়ান আর না পড়ান কিছুই যায় আসে না। খোদ ইউরোপের মানুষও কুসংস্কারগ্রস্ত হয়। চরম ধার্মীক আর মৌলবাদী হয়। পার্থক্য তারা তাদের বাইবেলীয় রাষ্ট্র বা শাসন নিয়ে মাথা ঘামায় না। কারণ তার কোন বাধ্যবাধকতা নেই তাদের ধর্মে। ইসলাম কোন ধর্ম নয়। ইসলাম একটা রাজনৈতিক মতবাদ। এর মূল লক্ষই হচ্ছে মুসলিম পরিচয়ে বৃহৎ এক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করা। আল্লার আইনই সর্ব উৎকৃষ্ট। এর প্রতিষ্ঠা দুনিয়ায় মুসলিমরা করে ছাড়বেই। নবী মুহাম্মদ রাজনীতি করেছেন। ধর্ম আর রাজনীতি পাশাপাশি চালিয়ে গেছেন। রাজনীতি থেকে ধর্মকে পৃথক করা মুসলমানদের কাজ নয়। এদেশের মানুষ বিজ্ঞানের আধুনিক সব উপকরণ ব্যবহার করেও বিজ্ঞানের বিরোধীতা করে। বিজ্ঞানের ছাত্রই বিজ্ঞানকে ভুল প্রমাণ করে। কাজেই বাংলাদেশে (এখানে মুসলমানরা সংখ্যাগরিষ্ট) আপনার সমাধান কাজ করবে না। ভারতে যতদিন অমুসলিমরা সংখ্যাগরিষ্ঠ থাকবে ততদিন কোন বিপদ নেই। হিন্দু মৌলবাদীরা কখনই ভারতের হিন্দু অনুভূতিকে কাজে লাগিয়ে রামরাজ্য প্রতিষ্ঠা করতে পারবে না। কারণ হিন্দুরা কাজ ফেলে ভগবানের জন্য রাস্তায় নামবে না। ভগবানও যেহেতু বলে নাই আমার রাজ্য বা আমার আইন প্রতিষ্ঠা করো তাই তিনি এই বিষয়ে কোন পুরুষ্কারের ব্যবস্থা রাখেন নাই। শহীদ হওয়ার কোনই চান্স নাই। ইউরোপে মুসলমানরা এক সময় জনসংখ্যার দিক দিয়ে সংখ্যাগরিষ্ঠ হয়ে যেতে পারে। কারণ ওইসব দেশে অভিবাসী মুসলিমরা সন্তান পয়দা করতে খুব ওস্তাদ। পক্ষান্তরে অমুসলিম ইহুদী-খ্রিস্টানরা প্রায় সন্তান নেয়ই না। তাই একদিন শরিয়া আইনের দাবী ইউরোপে মুসলিমরা সংখ্যাগরিষ্টের জোরে তুলবেই। আপাতত আমাদের কাছে তেমন শক্তিশালী কোন সমাধান নেই। আপনার সমাধানগুলো তো খুবই দুর্বল। মৌলবাদ স্তিমিত হবে কেবল পাবলিক যখন হোঁচট খাবে। যেমন পাকিস্তান করে এই দেশের পাবলিক হোঁচট খেয়েছিল। আবার একটা হোঁচট খেতে হবে। এর মানে হচ্ছে ফের মৌলবাদ ক্ষমতায় আসবে। আর এভাবেই যা ক্ষতি হবার তা আমাদের হয়ে যাবে…
@সুষুপ্ত পাঠক,
আমি খুব সংক্ষেপে এর উত্তর দেব
(১) মিশরে ব্রাদারহুড কি ক্ষমতায় ১ বছরের বেশি থাকতে পারল? সেই ইসলামিস্ট শক্তি পারল না -কারন তারাও মিশরের খিদের আগুন মেটাতে ব্যর্থ।
(২) পেটের আগুনে আমি অনেক মুসলমানকে হিন্দু বা খ্রীষ্টান হিসাবে সমাজে চলাফেরা করতে। দক্ষিন ক্যালিফোর্নিয়াতে এক পাকিস্তানি মালকিন প্রথমে তার রেস্টুরেন্টে মক্কার ছবি ভর্তি করে রেখেছিল। দেখল রেস্টুরেন্ট চলছে নয়া। দুবছরের মধ্যে সেখানে সব হিন্দু দেবদেবীর ফটো ঝুলে গেল। তার রেস্টুরেন্ট এখন ভাল চলে।
(৩) কোন সামাজিক মিথ বা মেমেটিক্স-সেটা লিবারালিজম বা যাইহোক না কেন তা যদি সমাজের রিপ্রোডাক্তিভ ফিটনেস না বাড়াতে পারে সেই মেমেটিক্স বিবর্তনের কারনেই মারা যাবে। ইউরোপিয়া লিবারালিজমের জন্য যদি দম্পতিরা সন্তান না নেয়- সেই লিবার্যালিজমের মৃত্যু হবেই। এটাই বিবর্তনের নিয়ম।
তবে এর উলটো দিক ও আছে। ইউরোপে মুসলমানরা বেশি সন্তান নেই বেশি স্যোশাল বেনিফিট টানার জন্য। আমেরিকাতে তা নেই। ফলে এখানে মুসলমানদের অধিকাংশ আমাদের মতন ছোট ফ্যামিলি নিয়েই বাঁচে।
রাশিয়াতে জনসংখ্যা কমে যাচ্ছিল বলে, ওখানের সরকার ৪ সন্তানের মাকে ফ্ল্যাট আর তিন সন্তানের মাকে গাড়ি দিচ্ছে। ফলে রাশিয়াতে গ্রোথ এখন পজিটিভ।
আরো আছে। ইংল্যান্ড বাদ দিলে অন্যত্র মুসলমানদয়ের শিক্ষিত দ্বিতীয় প্রজন্ম, ইউরোপের মূল শ্রোতেই মিশতে চাইছে।
আর শিক্ষিত লোকেরা ধর্ম কেন করে? কারন তাদের ক্ষুদার চিন্তা নেই। অশিক্ষিত গরীবরা ধর্ম পালন করে না -তাদের কাছে আল্লা, ইসলাম এসব ভাল, কারন যার কিছু নেই তার কাছে এসব ভাল ভাল কথা মনে আশ্বাস দেয়।
@বিপ্লব পাল,মৌলবাদ ঠেকাতে প্রাকৃতিক বিপর্যয়কে কাজে লাগানোর যে ফর্মূলা আপনি দেখালেন তার সঙ্গে কিন্তু এগুলোর কোন যোগ নেই। মক্কার ছবির বদলে দেব-দেবীর ছবি লাগানো কিংবা মুসলমানের খ্রিস্টান সাজা এগুলো মানুষের সাধারণ ধর্মীয়বোধের শিকার। এগুলো চিরকাল ছিল আরো বহুকাল পৃথিবীতে থাকবে। মানুষ নিজে থেকে যতদিন আধুনিক হতে পারবে না ততদিন এগুলো সে পুষে রাখবে নিজের মধ্যে। কিন্তু এগুলো আমাদের জন্য কোন সমস্যা কি? ধরুন, একজন গোঁড়া হিন্দু আমার ছোঁয়ায় যার আপত্তি আছে, সেটা তার ব্যাপার আমার কিছু যায় আসে না। আজকের যুগে কেউ দাগ দিয়ে আমাকে পথ আটকে দিতে পারবে না। সরকারী পানির কলে অমুক-তমুক মুখ দিতে পারবে না এটা আজ আর সম্ভব নয়। আমার রেষ্টুরেন্টে যদি দেব-দেবীর ছবি লাগালে বেশি চলে তার জন্য মৌলবাদকে দায়ী করা যায় না। এসব সাধারণ মানুষের ধর্মের সাধারণ ঢেকুর। এসব চিরকাল ছিল। স্বগোত্রের প্রতি সাধারণ টান।… আমাদের মূল বিপদ হচ্ছে রাজনৈতিক ইসলাম। বাংলাদেশে এই বিষ দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে। যেহেতু আমরা জাতি হিসেবে আগে থেকেই সাম্প্রদায়িক তাই আমরা দ্রুত রাজনৈতিক ইসলামের সমর্থক হয়ে পড়ছি। প্রাকৃতিক বিপর্যয়কে অবলম্বণ করে এই দানবের হাত থেকে রেহাই পাবার কোন সুযোগ আমাদের নেই। ধর্মের প্রতি মানুষের স্বাভাবিক অনুরাগ থাকবেই। বাংলাদেশে আমরা ৯০ ভাগ খ্রিস্টান হলেও সেই স্বাভাবিক অনুরাগটা থাকত। কিন্তু বাইবেলীয় আইন প্রণয়ের জন্য কেউ শক্ত যুক্তি দেখাতে পারতো না। কারণ কোথাও দেখাতে পারতো না এটা ঈশ্বরের নির্দেশ। যীশু রাজনীতি করেননি। শরীয়া আইন চালু করেননি। কাজেই কোন খ্রিস্টান মৌলবাদী খ্রিস্টান রাষ্ট্রের দাবী বা বাইবেলীয় আইন প্রণয়নে চেষ্টা করলে তাকে খুব সহেজই মোকাবিলা করা যেতো। বাংলাদেশে এটা সম্ভব নয়। ইসলাম নবী মুহাম্মদের আল্লার ইচ্ছা অনুযায়ী আল্লার আইন ও রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করতে বদ্ধ পরিকর। একজন নামাযীকে জিজ্ঞস করুন, তিনি আল্লার আইন পাশ হোক চান কিনা, ইসলামী রাষ্ট্র চান কিনা, তার না বলার কোন কারণ নেই। প্রাকৃতিক বিপর্যয় দিয়ে কি করে মৌলবাদ রোখা সম্ভব আমি বুঝতে পারছি না বিপ্লব?
আমাদের অবস্থা পাকিস্তানের চেয়ে ভাল। স্বাধীনতার ৪২ বছরে আমাদের অগ্রগতি বিস্ময়কর। চিনির ব্যাগ মনে করে বোমা গেলার মত অবস্থা আমাদের নেই। সমাধান বলতে একটা আছে বলে আমি মনে করি। ইসলামের মূল স্পিটের বিপরীত মতবাদ প্রচার করা। রাষ্ট্র তথা খেলাফতের দাবী বাদ দিয়ে স্রেফ ব্যক্তি আধ্যাত্বিকতাবাদ। কোরআনীক আইনের দাবী বাদ দিয়ে কেবল মানুষের মৃত্যুকালীন নিয়ম-কানুনের মধ্যে ধর্মকে রাখা। এসব করতে পারবে কেবল আলেম-ওলামাগণ। কিন্তু তারা এসব করবে কেন? বাংলাদেশসহ অন্যসব মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশগুলোর তাই কোন মুক্তি নেই। তাদের দু’বেলা বিজ্ঞানের বটিকা গেলালেও ধর্মের ঢেকুরই দিবে।
@সুষুপ্ত পাঠক,
সমস্যা হচ্ছে আপনি তাদের দৃষ্টিকোন থেকে সমস্যাটা দেখছেন যাদের পেটে রেগুলার ভাত জোটে। আমি এব্যাপারে নিশ্চিত, যে সমস্ত মুসলমানরা দুবেলা পেট পুরে খেতে পায় না, তাদের যদি বলেন ইস্কনের মন্দিরে এসে কীর্তন করলে দুবেলা খেতে পাবি, তাদের ৯৯% কীর্তনে যোগ দেবে।
এই ৯৫% লোকের ওপর ধর্মটা পরিবার, সমাজ, রাজনীতি থেকে চাপানো বোঝা। যদি ইসলাম ছারা ওদের ভালোভাবে বেঁচে থাকার পথটা দেখানো সম্ভব হয় যেখানে ওরা খেতে পাবে, শিক্ষা পাবে, তাহলে ওরা সেটাই করবে। কিন্ত সেটা ত হচ্ছে না। পশ্চিম বঙ্গে গত ত্রিশ বছরে যত স্কুল খোলা হয়েছে তার থেকে বেশী মাদ্রাসাকে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে। অর্থাৎ রাষ্ট্র, অর্থ সব কিছুই ইসলামকে টেকাতে চাইছে তাদের ভোটের জন্য-এবং সমস্ত ব্যাপারটা একটা দুষ্টচক্ত্রের মধ্যে চলে যাচ্ছে।
রাষ্ট্র কোন ধর্ম নিরেপেক্ষনীতি নিতে পারছে না যেহেতু ইসলামের হেফাজত করা লোকেদের একটা বড় ভোট ব্যাঙ্ক আছে। বাংলাদেশের মিউনিসিপাল ইলেকশনে সেটা দেখলেন ত। কিন্ত এউ হেফাজতে উৎপত্তিটাই ত দরিদ্রের দুষ্টচক্র থেকে/
@বিপ্লব পাল,
বাং লাদেশের খুব কম মানুষ আছে যারা দুবেলা খেতে পায়না। ছোট শহরেও রিকশাওয়ালারা ৪০০।- ৫০০/- টাকা আয় করে। আর ক্ষুধাটা সহ্যের বাইরে না গেলে একজন সাধারণ মানুষ নিজের ধর্ম লুকায় না। কটি মানুষ দেখেছেন যারা খাবারের লোভে ধর্ম গোপন করে। বাংলাদেশ সম্পর্কে আপনার ধারণা বাস্তবতার সাথে সঙ্গতিপূর্ণ নয়। বাংলাদেশের মানুষ পাকিস্তান কেন ভারতের চাইতে অনেক বেশী অসাম্প্রদায়ীক। ভারতের সাম্প্রদায়ীকতা এবং স্বার্থপরতা দেখলে আমাদের লজ্জা লাগে। তারপরও আপনাকে অনেক ধন্যবাদ লেখাটির জন্য কারণ সমস্যা আছে এটা সত্যি এবং সমস্যাটা বেশ জটিল।
@বাসার,
আপনার এই মন্তব্যটি রত্মখচিত। আমার জানতে ইচ্ছে করে কোন নবাবি খানদানে আপনার জন্ম?
ভারতে এবং বাংলাদেশে ক্ষুদার জ্বালা কতটা তার সংখ্যাতত্ত্ব আমার দেওয়আ উচিত ছিল। ভেবে ছিলাম এটা স্বতসিদ্ধ হিসাবে সবাই মেনে নেবে কারন বাস্তব অভিজ্ঞতা অল্প বিস্তর সবার আছে।
বাংলাদেশে লোকেদের পেটের আগুনের হিসাব দিই আগেঃ
http://tazakhobor.com/bangladeshi-news-views/1-
https://en.wikipedia.org/wiki/Global_Hunger_Indexbangladeshi-news-views/760-bangladesh-global-hunger-index
এটা ঠিক বাংলাদেশের ক্ষুদা ইন্ডেক্স ১৯৯১ সালে ছিল ৩৭ -বর্তমানে তা ২৪।
২০১৩ সালে এটি ভারতের থেকে সামান্য ভাল অবস্থায়। কিন্ত হাঙ্গার ইনডেক্স ২৪ বেশ ভয়বহ অবস্থার মধ্যেই গণ্য।
হাঙ্গার ইন্ডেক্স ০-৫ এর মধ্যে মানে দেশের লোক মোটামুটি ভাল খেয়ে দেয়ে থাকে।
৫-১০ মানে দেশে ক্ষুদার অস্তিত্ব আছে একটা সাইজেবল জনগোষ্ঠির মধ্যে।
১০-২০ মানে সেই দেশ বেশ ভাল ক্ষুদার্থ।
আর ২০ এর ওপরে মানে, সেই দেশে প্রায় দুর্ভিক্ষ চলছে।
বাংলাদেশে প্রায় না খেয়ে থাকে এমন লোকের সংখ্যা ২৭%-ভারতের প্রায় সমান।
শিশুদের মধ্যে ভুখা থাকে ৪১%।
তবে সেটাও বাংলাদেশের জন্য সব থেকে ভয়ংকর সংবাদ না। বাংলাদেশের সব থেকে খারাপ অবস্থান হচ্ছে ফুড সিকিউরিটিতে। অর্থাৎ জমা খাদ্যভান্ডার খুব কম। বিরাট বন্যা বা খরা হলে- বা বাজে চাষাবাদ হলে, হঠাৎ করে বাংলাদেশে খাদ্যাভাব এবং খারারের দাম খুব বেড়ে যাবে-সরকারের খুব বেশী কিছু করার নেই।
“মৌলবাদ হচ্ছে সেই বোমা-যখন লোকে খেতে পাবে না -ওটাকেই চিনির বস্তা বলে খেতে যাবে এবং সেটা ওদের মধ্যে ফাটবে”
মৌলবাদির শক্তির উত্থান দেখে আসলেই শংকিত। 🙁 🙁
ধন্যবাদ বিপ্লব দা! চিন্তার একটা খোড়াক দেবার জন্য। (Y) “শাসক শ্রেনীর বোরেতে”… এখানে বোরেতে শব্দটার অর্থ বুঝলাম না…