সুদীর্ঘ সময় ধরে অনেক ঘাত-প্রতিঘাতের ভেতর দিয়ে বাংলা ব্লগমণ্ডল শত ফুল ফুটিয়েছে। বহু মত, বহু ভাবনা আমাদের অনলাইন জগতকে মুখর করে রেখেছে। কিন্তু সম্প্রতি বাংলাব্লগ যে আন্দোলনের সূতিকাগার সেই, শাহবাগ আন্দোলনের সূত্র ধরেই বাংলা ব্লগ আক্রান্ত হয়েছে তার নেমেসিস, রুদ্ধচিন্তা ও মৌলবাদের নখরের নিচে। রাজনৈতিক প্রজ্ঞাহীন শক্তি, নির্লিপ্ত সামাজিক গোষ্ঠী, চিন্তারহিত বুদ্ধিজীবী, স্বার্থসন্ধানী মিডিয়া, সকলেরই চক্ষুশূল হয়ে দাঁড়িয়েছে আমাদের ভাবনার খেরোখাতা।
এই আক্রমণকে একা রুখবার দিন ফুরিয়েছে। এখন সময় কাঁধে কাঁধ মেলাবার। তাই আসুন, লেখার খাতাকে রক্ষা করি। রক্ষা করি হাতের কলমকে। আমাদের কণ্ঠ, আমাদের চিন্তা আমরা অন্ধকারের শক্তির পায়ে সমর্পণ করবো না।
গত ৪ এপ্রিল,২০১৩ তারিখে, আমাদের সহব্লগারদের অবান্তর অভিযোগে গ্রেফতারের প্রতিবাদে, বাংলা কমিউনিটি ব্লগের সম্মিলিত ব্ল্যাকআউটের অভূতপূর্ব ঘটনাটি আমাদের মধ্যে জোটবদ্ধতার একটি ধারণার জন্ম দিয়েছে। আমাদের এই বিশ্বাস জন্মেছে যে, এই ঐক্য আক্রমণের মুখে আমাদের কৌশলগত অবস্থানকে দৃঢ়ই করবে। তাই ভবিষ্যতে যেসব সম্ভাব্য আক্রমণ বাংলা ব্লগকে দুর্বল বা নিশ্চিহ্ন করে দিতে পারে, তার মুখোমুখি হওয়ার জন্যে একটি অভিন্ন কৌশল আমাদের অবলম্বন করতে হবে। জোটবদ্ধ না হয়ে সে কৌশল আমরা কাজে লাগাতে পারবো না।
তাই সকল দিক বিবেচনা করে এই যুদ্ধে আমরা, বাংলা কমিউনিটি ব্লগগুলোকে জোটবদ্ধ করবার প্রক্রিয়া শুরু করেছি। প্রাথমিক পর্যায়ে ব্ল্যাক-আউটে অংশগ্রহণকারী পরীক্ষিত ব্লগগুলোকে নিয়েই সুচনা হচ্ছে “বাংলা কমিউনিটি ব্লগ এলায়েন্স (BCBA)” এর। তবে পর্যায়ক্রমে আমাদের চেষ্টা থাকবে নির্দিষ্ট প্রক্রিয়ার মাধ্যমে অন্য সকল মুক্তচিন্তার কমিউনিটি ব্লগগুলোকেও অন্তর্ভুক্ত করবার।
এই জোটের সক্রিয় ও ফলপ্রসূ পরিচালনার জন্যে অত্যন্ত মৌলিক কিছু নীতিমালা ও কর্মপন্থা গৃহীত হয়েছে যেগুলোর ভিত্তিতে এই জোট শক্তিবৃদ্ধি করবে এবং তার কার্যাবলি চালিয়ে যাবে। যে সকল বৃহত্তর নীতি, লক্ষ্য ও কর্মপন্থা নিয়ে “বাংলা কমিউনিটি ব্লগ এলায়েন্স (BCBA)” যাত্রা শুরু করছে, সেগুলো হলোঃ
চিন্তা ও মত প্রকাশের অধিকারকে সমুন্নত রাখার উদ্দেশ্যে ব্লগ প্লাটফর্মগুলোকে নিয়ে সম্মিলিত প্রেশার গ্রুপ হিসেবে কাজ করার লক্ষ্যে গঠিত বাংলা কমিউনিটি ব্লগ এলায়েন্স (BCBA)
১) ব্লগারদের ব্যক্তিগত তথ্যের গোপনীয়তা রক্ষার্থে-
১ক) একজন ব্লগারের কী কী তথ্য সংরক্ষণ করা হচ্ছে সেটা পরিষ্কারভাবে জানিয়ে দেবে,
১খ) তথ্য প্রকাশে কোনো তৃতীয় পক্ষ থেকে অনুরোধ বা চাপ এলে তা নিয়ে আলোচ্য ব্লগারের সাথে আলোচনা করবে,
১গ) এককভাবে চাপ প্রতিহত না করা গেলে এলায়েন্সের সাথে আলোচনা করবে। এলায়েন্স এসব ক্ষেত্রে সাহায্য করতে প্রস্তুত থাকবে; প্রয়োজনে নীতিগত, কৌশলগত এবং আইনগত সাহায্য দেবে।
২) ধর্মীয় মৌলবাদ ও সাম্প্রদায়িকতা বিরোধী অবস্থান নিশ্চিতকল্পে-
২ক) জোটভুক্ত কোনো প্লাটফর্মে কোনো ধর্মীয় মৌলবাদতোষী ও সাম্প্রদায়িক লেখা প্রকাশিত হলে সেগুলো নিজ নিজ নীতিমালা অনুসারে মডারেট করবে,
২খ) দেশে কোনো ধর্মীয় মৌলবাদ বা সাম্প্রদায়িক ঘটনা ঘটলে সে বিষয়ে এককভাবে দ্রুত জনসচেতনতামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ এবং এলায়েন্সের মাধ্যমে একটি সম্মিলিত প্রতিবাদের ব্যবস্থা করবে,
২গ) প্রয়োজনে ক্ষতিগ্রস্ত পক্ষকে এলায়েন্সের মাধ্যমে সহায়তা প্রদানের (অর্থনৈতিক, আইনগত, ইত্যাদি) ব্যবস্থা নেবে।
৩) মুক্তিযুদ্ধের চেতনার পক্ষে অবস্থান চির অটুট রাখতে-
৩ক) মুক্তিযুদ্ধের চেতনাবিরোধী লেখা সদস্য কমিউনিটি ব্লগে প্রকাশিত হলে সেগুলো নিজ নিজ নীতিমালা অনুসারে মডারেট করবে,
৩খ) পৃথিবীর কোনো প্রান্তে সংঘটিত মুক্তিযুদ্ধের চেতনাবিরোধী ঘটনার ক্ষেত্রে এককভাবে দ্রুত জনসচেতনতা মূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করবে এবং এলায়েন্স মাধ্যমে একটি সম্মিলিত প্রতিবাদের ব্যবস্থা করবে,
৩গ) প্রয়োজনে এলায়েন্সের পক্ষ থেকে বৃহত্তর প্রতিবাদ, প্রতিরোধ আয়োজন করবে।
৪) অপরাধমূলক ও সহিংস কার্যক্রমের উস্কানি বা প্রচার শক্তহাতে দমনের লক্ষ্যে-
ধর্মীয় মৌলবাদ, সাম্প্রদায়িকতা ও স্বাধীনতাবিরোধী অপতৎপরতার বিরূদ্ধে গৃহীত ব্যবস্থাসমূহের অনুরূপ জনসচেনতা মূলক পোস্ট, ব্যানার, জনসংযোগ এবং অন্যান্য সাহায্যের যথাসাধ্য ব্যবস্থা করবে।
৫) কপিরাইট বিষয়ক জটিলতা নিরসনে-
৫ক) আন্তঃব্লগ লেখা চুরি হলে ব্লগগুলো একে অপরকে বিষয়টি নিরসনে সাহায্য করবে,
৫খ) ব্লগগুলোর কোনো সদস্য অন্য ব্লগের কোনো লেখা চুরি করে এলায়েন্সের বাইরে প্রকাশ করলে ব্লগগুলো প্রতিকারের ব্যবস্থা করবে,
৫গ) ব্লগের লেখা বাইরে চুরি হলে ব্লগগুলো একযোগে এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নেবে। কী ব্যবস্থা নেয়া যায় সেটা সংশ্লিষ্ট ব্লগ এবং সংশ্লিষ্ট লেখাচোর প্রতিষ্ঠানের ওপর ভিত্তি করে এলায়েন্স সিদ্ধান্ত নিবে।
৬) ব্লগারের আইডি চুরি করে অপমানসূচক বা ধোঁকার উদ্দেশ্যে একাউন্ট তৈরী করলে জোটভুক্ত ব্লগগুলো এব্যাপারে সহায়তা করবে। প্রয়োজনে এলায়েন্স এব্যাপারে ব্যবস্থা নিবে।
৭) BCBA-তে যোগদানের আবেদনের ক্ষেত্রে, কোনো ব্লগ যদি একটি নির্দিষ্ট সময় (অন্তত এক বছর) যাবত বাংলা ব্লগস্ফিয়ারে উপস্থিত থেকে নিজেদের একটি জোরালো প্রগতিশীল অবস্থান সৃষ্টি করতে না পারে সেক্ষেত্রে তাদেরকে জোটভুক্ত করবার ব্যাপারে জোটের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত বলে বিবেচনা করতে হবে। এক্ষেত্রে যদি জোটভুক্ত হবার জন্য সংশ্লিষ্ট ব্লগের ওপর কোনো শর্তাবলী আরোপ করা হয়, তা মেনে চলতে তারা বাধ্য থাকবে। অন্যথায় BCBA’র সদস্যপদের জন্য সে অযোগ্য বলে বিবেচিত হবে।
৮) ভবিষ্যত কার্যক্রম যেগুলো এই মুহুর্তে অনুমান করা সম্ভব হচ্ছে না, সেগুলো এই নীতিমালায় অন্যান্য ধারাগুলোর সাথে সাংঘর্ষিক না হলে সেসব কাজে ব্লগগুলোর সাথে আলোচনার ভিত্তিতে এলায়েন্স অংশগ্রহন করবে।
আমরা আশা করি, আমাদের সম্মিলিত ভাবনা বাংলা ব্লগকে এই দুর্যোগের দিনে আশার বাতিঘর হিসেবে টিকিয়ে রাখবে।
জয় বাংলা।
এ যাত্রা অব্যাহত থাকবে আশা করি।
বুঝলাম না। ‘নিজ নিজ নীতিমালা’ বলতে কি বোঝানো হচ্ছে?? সাম্প্রদায়িক শক্তিরও কিন্তু একটা মুক্তিযুদ্ধের চেতনা আছে! তারাও সেই চেতনাকে লালন করার জন্য একটা নীতিমালা অনুসরণ করে কিন্তু!
‘নিজ নিজ নীতিমালা’ -এর পরিবর্তে ‘সাধারণ একটি নীতিমালা’ হলে কি এমন ক্ষতি ছিল? অন্তত মুক্তিযুদ্ধের ক্ষেত্রে?
সবশেষে, উদ্যোক্তাদের জানাই ধন্যবাদ। এই জোটবদ্ধতা বাংলার মুক্ত ব্লগগুলিকে শক্তিশালী করবে নিঃসন্দেহে!
@কাজি মামুন,
সহমত।
ব্ল্যাকআউট এক ধরণের প্রতিবাদ মেনে নিয়েই বলছি আমার তা ভাল লাগেনি। মনে হয়েছে আমার ভাইদেরকে কেউ অন্যায়ভাবে মারছে আর আমি তার প্রতিবাদ করতে মৌনব্রত নিয়েছি।কাজেই ব্ল্যাকআউট উঠিয়ে নেওয়াতে ভাল লাগল।
তবে ব্ল্যাকআউটের একটা সুফল পেলাম জোটবদ্ধতা।
বাংলা কমিউনিটি ব্লগ এলায়েন্সের যাত্রা প্রতিবাদী হোক,প্রতিরোধমূলক হোক এ প্রত্যাশা করি।
@গীতা দাস,
স্বাগতম। আমিও একও প্রথমে হকচকিয়ে গিয়েছিলাম ব্ল্যাক আউট দেখে। মনে হয়েছিল,
-এ তো মৌলবাদীদের একরকম জয়। ইতোমধ্যে মুক্তমনার অভিজিতের সাথেও যোগাযোগ করেছিলাম।
হয়তো ব্যস্ততার কারনে জবাব পাইনি। সমস্যা নাই। ৬ তারিখ আসলে আমি আবেগপ্রবণ হয়ে রিতীমত কান্না শুরু করেছিলাম।
মনে হচ্ছিল, এই বুঝি আর একটা ৭১ এলো। সেই সময় সবাই এক হয়ে গিয়েছিল। এখন কী হবে?
যদিও সেই ভয় আজো কাটেনি।
মন হতাশায় ক্রমশঃ ডুবে যাচ্ছে।
মুক্তমনা’কে অভিনন্দন। (F) আবার খুলে দেবার জন্যে।
–
সংগঠিত হয়ে মৌলবাদী আগ্রাসনের বিরুদ্ধে রুখে দাড়াতে হবেl
আটককৃত ব্লগারদের মুক্তির দাবিতে সোচ্চার হবার জন্য ব্ল্যাক আউট কর্মসূচি প্রত্যাহার করা খুবই ভাল পদক্ষেপ ।
(Y) স্বাগতম , ফিরে আসায় খুশি হলাম ।
ধন্যবাদ।
মুক্তমনা ফিরে আসায় খুবই আনন্দিত ।
আটককৃত ব্লগারদের মুক্তির দাবীতে , বাংলাদেশে উগ্র সাম্প্রদায়িক ও ধর্মান্ধ শক্তির সম্ভাব্য উত্থান ও মুক্ত স্বাধীন মত প্রকাশে বাঁধা দানের প্রতিবাদে জাতিসংঘ, হিউম্যান রাইটস ওয়াচ বা অ্যামনেস্টির সদর দপ্তরের সামনে সমাবেশ করা যায় কি ?
ব্লগ আ্যলায়েন্সকে সুস্বাগতম! তবে আমাদের আটককৃত ব্লগারদের অবিলম্বে মুক্ত করতে হবে।
অভিজিৎ দাদা, আপনাকে ফেইসবুকে ম্যাসেজ করতে চাচ্ছিলাম ঠিক এই কথাটির জন্যই যে সবার একাত্ম হয়ে ব্ল্যাক আউট করার প্রাথমিক উদ্দেশ্য সফল হয়েছে।মুক্তচিন্তার ব্লগ গুলো একাত্মটা ঘোষণা করেছে।কিন্তু এখন স্বাধীনভাবে মত প্রকাশের মাধ্যম এই ব্লগ সাইট গুলো বন্ধ থাকায় একটু চিন্তায় পরেছিলাম।তার উপর নানা লোকের নানান কথা।আপনি নাকি নাস্তিক দের বাচানোর জন্য ব্লগ বন্ধ করে রেখেছেন যাতে করে পুলিশ নাস্তিকদের লিখাগুলো তথ্য ও উপাত্ত হিসেবে ব্যবহার করতে না পারে।(নাম প্রকাশ করলাম না,কিন্তু কথাটা একজন ব্যারিস্টার এর)।।আপনাকে অনেক ধন্যবাদ ফিরে আসার জন্য।BCBA কে অনেক অভিনন্দন।
@সাব্বির শওকত,
না রে ভাই। নাস্তিক আস্তিক কাউরে ফেভার করার জন্য বন্ধ রাখা হয়নি। এটা ব্লগজগতের সম্মিলিত সিদ্ধান্ত ছিল। মুক্তমনা কেবল তাদের সাথে ঐক্যমত পোষণ করে কর্মমূচীতে অংশ নিয়েছে। এইটুকুই।
এর বাইরে কে কি বলল, আর কে কি ছড়াচ্ছে তা নিয়ে আমি ভাবিত নই। যে চারজন ব্লগার কারাগারে আটকে রয়েছেন রাষ্ট্রীয় পীড়নের শিকার হয়ে, তাদের জন্যই আমি ভাবছি বেশি, নিজের বা অন্য কোন লাভে নয়। ব্যারিস্টার সাহেবরে সেটা বলে দিতে পারেন।
ব্লগ চালু হওয়ায় প্রাণ ফিরে এসেছে। পশ্চিম বঙ্গ থেকে অনেকে জিজ্ঞেস করছিলেন মুক্তমনা কবে খোলা হবে? তাতে বোঝলাম ভারতীয়দের কাছেও যথেষ্ট জনপ্রিয়তা আছে মুক্তমনার।
ব্লগ এলায়েন্সকে স্বাগতম। এমন সংঘবন্ধ হওয়ার প্রয়োজন ছিল।
@সুমিত দেবনাথ, পশ্চিম বাংলার মানুষের ‘মুক্তমনা’, যুদ্ধপরাধী, শাহবাগ ইত্যাদি নিয়ে মাথা ঘামানো প্রয়োজন বোধ করেনা। অশোক মিত্র নামক জনৈক বুদ্ধিজীবী আনন্দবাজারে ফতোয়া দিয়েছেন এর সমরথনে। তারা দাদা-দিদির তরজা, হুগো শাভেজ, আইপিএল নিয়ে সুখে আছে। অবশ্য ছাগুদের পশ্চিম বঙ্গীয় বিরাদরিরা বসে নেই। তারা যুদ্ধপরাধীদের সমর্থনে কলিকাতায় দুইবার বিশাল জনসভা করেছেন। এদের মুখপত্র দৈনিক ‘কলম’ পত্রিকা ভারতে ‘মুক্তমনা’, ধরমকারি ইত্যাদি ব্লগ বে-আইনি করার দাবি চালিয়ে জাচ্ছে।
@মিয়া সাহেব,@সুমিত দেবনাথ,
মুক্ত চিন্তার পক্ষ বিপক্ষ সবখানেই আছে। কাজেই পশ্চিমবঙ্গও এর ব্যতিক্রম নয়। উনাদের কলম পত্রিকা আর আমাদের আমার দেশ। উনাদের অশোক মিত্র আরা আমাদের ফরহাদ মাজাহার। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীও কম যাননি।ওখানে বিশাল সমাবেশ হয়েছে।আমাদের হেফাজতকারীদের সমাবেশের লোক সমাগম নিয়ে কিন্তু আমি চিন্তিত।
যাহোক, পৃথিবীর সব প্রান্তের মুক্তবুদ্ধি মুক্তচিন্তা মুক্তমন মুক্তচেতনা এক হোক।
@মিয়া সাহেব, দেখুন সবাইকে এত কাতারে ফেলা ঠিক নয়। আপনারা তো এক ইসলামিক ছাগু নিয়ে ব্যস্ত। আর আমরা ইসলামিক ছাগু, হিন্দু ছাগু নিয়ে ব্যাস্ত।
@মিয়া সাহেব,
এটা কি কথা? আমিই তো পশ্চিম বঙ্গ থেকে! সীমান্তের এপারে একাত্তরের চেতনা আমাদের স্বপ্নেও জাগে সাথী ।
প্রগতিশীল বাংলা ব্লগগুলোর ব্ল্যাক আউট কর্মসূচির একটা বড় সফলতা এই যে মৌলবাদ ও অপসাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে মানুষের ঘৃণা ও ক্ষোভ একটা সামষ্টিক রুপ পেয়েছে।এখন প্রতিবাদ আরো জোরালো রুপ পাবে।
BCBA কে স্বাগতম।
‘আলসে কুড়ে’ তার কমেন্টে যে অনুরোধটি করেছে সেটা মেনে নেওয়া হোক!
মুক্তমনা নোটিশ দিয়ে যদি বলতো আজ থেকে দিনে এক বেলা খেতে হবে, কিংবা সারা দিন উপবাসী থাকতে হবে, তাও কম কষ্টের হতো, ব্লাক আউটের চেয়ে। বাপরে বাপ, দম বন্ধ হয়ে মারা যাওয়ার উপক্রম। যাক আল্লাহর শুকরিয়া মুক্তমনা ফিরে পেয়েছি।
বাংলা কমিউনিটি ব্লগ এলায়েন্স (BCBA) কে অভিনন্দন। দোয়া করি এই জোট যেন সকল মিথ্যে-অসত্য, সাম্প্রদায়ীক-মৌলবাদী অপশক্তির বিরুদ্ধে সংগ্রামে বিজয়ী হয়।
জয় বাংলা।
@আকাশ মালিক,
আপনি মনের কথাগুলিই বল্লেন। খুব দম বন্ধ লাগছিল।
এলায়েন্সকে স্বাগত। শুধু এক হলেই হবেনা শক্তভাবে সরকারকে ধরতে হবে, লবিং করতে হবে। রিমান্ডে ব্লগার বন্ধুদেরযে কি অবস্থা করলো কে জানে!
@সুমন,
দিন মজুর নামে একজন ব্লগার সামুতে ব্লগারদেরও ঐক্যবদ্ধ হয়ে পাল্টা প্রতিরোধে নামা জরুরী শিরোনামে একটি লেখা লিখেছেন। ব্লগ কর্তৃপক্ষ লেখাটি ষ্টিকি করে রেখেছেন বেশ কয়েকদিন হলো। সেখানে মন্তব্যগুলো পড়লে বুঝা যায়, বিশ্বাসের ভাইরাস কেমন জিনিস। ইসলাম আর মুহাম্মদ নাকি তাদের মা-বাবা এমন কি নিজের জানের চেয়েও প্রীয়। ব্লগে অবিরত নাস্তিকদের দ্বারা তাদের ধর্মানুভুতি আঘাতপ্রাপ্ত হয়, তাই বেশীরভাগ বিশ্বাসীরাই বলেছে নাস্তিকদের সাথে ঐক্যবদ্ধ হওয়া সম্ভব নয়। আওয়ামী লীগের নেতাদের মধ্যেও বেশীরভাগই এই মানসিকতার তাই পরিবেশ ও বনমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেন- “এ সরকার কোনো দিনও ইসলাম বা নবীর অবমাননা সহ্য করবে না। প্রচলিত আইনে সম্ভব না হলে আইন আরো উন্নত করা হবে।” হাসিনা সহ আওয়ামী সরকারের মাঝে কয়েকটা ইসলাম পাগল, মুহাম্মদপ্রেমী ধর্মোম্মাদ আছে যারা আজকের বাংলাদেশের এই দূরবস্থার জন্যে দায়ী।
ইসলামানুভুতি, মুহাম্মাদানুভুতি যাদের কলিজায় আগুন ধরায় তাদেরকে Stephen Fry এর ভাষায় একটা কথাই বলার আছে- “So, you’re offended? So fucking what?”
ঐক্যবদ্ধ হয়ে ফিরে আসার জন্য ধন্যবাদ । আটককৃত ব্লগারদের মুক্তির ব্যাপারে আরো কঠর হবার প্রয়োজন অনুভব করছি। নমনীয় প্রতিবাদ কেউ কানে তুলছে না :-Y
নতুন কোন ব্লগ (যার বয়স হয়ত মাসখানেক বা তার কিছু বেশি হবে) যদি BCBA এর নীতিমালার সাথে একমত পোষণ করে এর সাথে যুক্ত হতে চায়, সেক্ষেত্রে কী করবে?
বাংলা কমিউনিটি ব্লগ এলায়েন্সের (BCBA) কর্মযাত্রায় শুভকামনা।
বাংলা কমিউনিটি ব্লগ এলায়েন্স (BCBA) কে অভিনন্দন।
সম্মিলিত শক্তি যে একা শক্তির চেয়ে অনেক বেশি ভালো সেটা তো আর বলবার অপেক্ষা রাখে না। মুক্তচিন্তা ও মত প্রকাশের ক্ষেত্রে জোটের ঐক্যে ফাটল যেন কখনো না ধরে সেটাই আশা করি।
বন্ধু ব্লগাররা মুক্তি পাক।
সবাই ভালো এবং নিরাপদ থাকুন।
দরকার ছিল (Y)
“বাংলা কমিউনিটি ব্লগ এলায়েন্স (BCBA)”-কে স্বাগতম
ধারাটি ২ নম্বরে এনে
ধারাটি ৩ নম্বরে নেওয়ার প্রস্তাব করছি।
মুক্তিযুদ্ধের চেতনা সেক্যুলার তথা অসাম্প্রদায়িক, এই চেতনা চির অটুট রাখাই আমাদের লক্ষ্য। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা যত বেশি সমাজ অভ্যন্তরে স্তরে স্তরে প্রতিষ্ঠিত হবে ধর্মীয় মৌলবাদ ও সাম্প্রদায়িকতা ততই দুর্বল হয়ে পড়বে। তাই মুক্তিযুদ্ধের চেতনার পক্ষে অবস্থানকে ধর্মীয় মৌলবাদ ও সাম্প্রদায়িকতা বিরোধী অবস্থানের পূর্বে বিবেচনা করা দরকার।
সকল ব্লগের ঐক্যবদ্ধ প্রয়াসকে স্বাগত জানাই।
নামটা বাংলায় হলে আরো ভাল লাগতো।
@প্রতিফলন,
(Y)
ফেসবুক যে ব্লগের বিকল্প নয় তা এই কদিনে আরো ভালভাবে টের পেলাম।
আমাদের প্রতিবাদী কন্ঠের জন্যই খোলা ব্লগ দরকার ঠিক আছে। কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতিতে খোলা ব্লগ পেলেও মুক্তকন্ঠ কতটা কার্যকরী হয় সেটা হল কথা। বিশেষ করে দেশের ব্লগারদের জন্য পরিস্থিতিটা বেশ ঝুঁকিপূর্ন।
ব্লগ খুলে মর মর ভাবে চললে মৌলবাদী চক্র আরো বেশী আমোদ পাবে।
মুক্তমনাকে স্বাগতম।
ব্লগগুলির নিজস্ব সংহতিকে পরীক্ষা করার জন্যে এবং মুক্তচিন্তার পক্ষে কারা কারা আছে এটা আইডেন্টিফাই করার জন্যে ব্ল্যাক আউটের দরকার ছিলো। এখন দরকার আটককৃত ব্লগারদের মুক্তি ও নিরাপত্তার জন্যে এবং আগামী বিপদ মোকাবেলার জন্যে কর্মপন্থার কোঅর্ডিনেশন। একারনে এখন ব্লগসমূহ খোলা রাখা একান্ত দরকার। এসময়ে মুক্তচিন্তার ফোরাম বন্ধ রাখলে মুক্তচিন্তার শত্রুরাই খুশী হবে।
আমি জানি এ কয় দিনে অনেকেরই জমা হয়ে আছে দুর্নিবার ক্ষোভ। আসুন লেখার মাধ্যমে আমাদের জমা ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ ঘটাই।
ব্ল্যাক আউটের ফলে আমরা বুঝতে পেরেছি ব্লগ জিনিসটা পাঠকদের জন্য কতটা আপন। শুধু পাঠকজগতেই নয়, ব্লগ এখন সব জায়গাতেই একটা ফ্যাকটর। মৌলবাদীদের দ্বারা ব্লগাররা যে আক্রান্ত হয়েছেন, কিংবা সরকারীভাবে ব্লগাররা যে হেনস্থা হচ্ছেন, তাতে বোঝা যায় যে প্রিন্ট মিডিয়ার চেয়ে ব্লগই একখন বেশি শক্তিশালী হয়ে উঠছে। আসুন সেই শক্তির পুনর্জাগরণ ঘটাই লেখার মাধ্যমে।
@অভি দা,
মুক্তমনার সিদ্ধান্তটি মানছি। কিন্তু ব্লগার গ্রেফতার, বাংলা ব্লগের ওপর সরকারের খবরদারি — ইত্যাদি যে পরিস্থিতিতে ব্লগ ব্ল্যাক আউট কর্মসূচি শুরু হয়েছিলো, সে পরিস্থিতির একটুও বদল হয়নি। তাই হঠাৎ করে ব্ল্যাক আউট কর্মসূচি প্রত্যাহার করার সিদ্ধান্ত কি ঠিক হলো?
এখন যদি সরকার ২৪ ব্লগারের তালিকা ধরে আরো গোটা চারেক ব্লগারকে ধরে চোরের মতো ল্যাপটপ, নেটবুকসহ গণমাধ্যমে হাজির করে, তাহলে কি আবার ব্ল্যাক আউট? 😕
@বিপ্লব রহমান,
এটা ব্লগজগতের সমষ্টিক সিদ্ধান্ত, কেবল আমার নিজের সিদ্ধান্ত নয়।
আর তাছাড়া অনেকেই বলছিলেন, দেশের এই সংকটাপন্ন পরিস্থিতিতে প্রগতিশীল ব্লগগুলো দিনের পর দিন বন্ধ থাকতে পারে না। এতে প্রকারান্তরে মৌলবাদীদের হাতকেই শক্তিশালী করা হয়।
এতদিন ব্ল্যাক আউটে থেকে না লিখে প্রতিবাদ করেছেন, এবারে লিখে করুন।
@অভি দা,
সম্মিলিত সিদ্ধান্তটি দ্বিমতসহই মেনেছি। আপনাকে ধন্যবাদ। (Y)
@বিপ্লব রহমান,
আমি মনে করি এটা যৌক্তিক সিদ্ধান্ত হয়েছে। দীর্ঘদিন ব্লগ আউটের চেয়ে বরং লেখালেখির মাধ্যমে জনমত তৈরী করে সরকারের বোধদয় ঘটিয়ে ব্লগাদের মুক্তি আদায় হবে উত্তম পন্থা।
@রাজেশ তালুকদার,
ভ্রাতা,
আপনার উদ্ধৃত ওই বাক্যটুকুর আগের বাক্যটিতে কি একবার চোখ রাখবেন? খুব খেয়াল করে।
যা হোক। অভিদা জানিয়েছেন, ব্লগ ব্ল্যাক আউট কর্মসূচিটি প্রত্যাহার করা একটি সম্মিলিত সিদ্ধান্ত। ব্যক্তিগত দ্বিমতসহ সিদ্ধান্তটি মানছি। ধন্যবাদ। (Y)
@বিপ্লব রহমান,
আমার তো মনে হয় না লিখে প্রতিবাদ করার চেয়ে লিখে প্রতিবাদ করা বেশী কার্যকর। বাংলা ব্লগ লেখা না হলে সরকার কি খুব অখুশী হবে? সরকারের কাজকারবারে (ইউ-টিউব বন্ধ করা ইত্যাদি) বরং মনে হয় তারা ইণ্টারনেটে স্বাধীন মতামতের প্রকাশ বা আলোচনা না হলেই স্বস্তিতে থাকবে। আর হেফাজতের ভাঁড়গুলোও তো এটাই চায়।