জেনেটিক যুদ্ধাস্ত্র : একটি ধারাবাহিক পর্যালোচনা (১)
জেনেটিক যুদ্ধাস্ত্র : একটি ধারাবাহিক পর্যালোচনা (২)
জৈব অস্ত্রে প্রধানত তিন রকমের উপাদান ব্যবহার করা হয় –প্যাথজেনিক অণুজীব , জৈব টক্সিন এবং বায়ো-রেগুলেটর( বিস্তারিত বিবরণ প্রথম পর্বে পাওয়া যাবে)। সুনির্দিষ্ট ভেক্টর ভেদে এসব অস্ত্র মানুষ এবং অন্যান্য পশুদের যে কেবল পঙ্গু কিংবা হত্যা করতে পারে তা নয় , খাদ্যশস্য বিনষ্ট করা সহ সম্পূর্ণ খাদ্য সরবরাহ ব্যবস্থা ধ্বংস করাতে সক্ষম। শুধু কি তাই ? কাঠ, বস্ত্র সহ নিত্য ব্যবহার্য পণ্য সামগ্রী ধ্বংস কিংবা বিনষ্ট করে দেয়ার কাজেও জৈব অস্ত্র সমানভাবে কার্যকর। কি ধরনের জৈব অস্ত্র ব্যবহার করা হবে সেটা সম্পূর্ণ নির্ভর করবে লক্ষ্যবস্তুর ধরণের উপর। এ ধরনের কোন আক্রমণের ঘটনা যদি সত্যিই ঘটে , প্রাথমিক পর্যায়ে যে সমস্যাগুলো সামনে আসবে তার অন্যতম এটা নির্ধারণ করা যে , ঘটনাটা প্রাকৃতিক না কি সত্যিই কোন জৈব অস্ত্র ব্যবহার করা হয়েছে ? প্রাথমিক পর্যায়ে জৈব অস্ত্রের উপাদান সনাক্ত করা যথেষ্ট কঠিন ; বিশেষ করে যখন ঐ উপাদানগুলো আক্রান্ত এলাকার দিকে ধাবমান থাকে। আক্রান্ত এলাকায় জৈব উপাদান সমূহের প্রকৃত নিঃসরণ হওয়ার পর কয়েক দিন পর্যন্ত যেসবের প্রমাণ নাও পাওয়া যেতে পারে। রাসায়নিক কিংবা পারমাণবিক অস্ত্রের তুলনায় জৈব অস্ত্রের উৎপাদন অপেক্ষাকৃত সস্তা ও সহজ এবং এর প্রযুক্তি ইন্টারনেট ঘাঁটলেই ভুরি ভরি পাওয়া যায়। যেসব দেশে মাঝারি মানের ঔষধ শিল্প রয়েছে , সেসব দেশ চাইলেই এ ধরনের উপাদান উৎপাদন করতে পারে। অন্যান্য গন-বিধ্বংসী অস্ত্র কিংবা উপাদানের সাথে তুলনামূলক বিচারে জৈব অস্ত্র যথেষ্ট মরণঘাতী হতে পারে। উদাহরণ হিসেবে , স্থিতিশীল এবং অনুকূল পরিবেশে ৫১২ কিলোগ্রাম রাসায়নিক উপাদান সারিণ ব্যবহার করে ১ বর্গ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে যে পরিমাণ ব্যাপক হতাহতের ঘটনা ঘটানো যায় , একই ফলাফল পাওয়া যাবে মাত্র কয়েক গ্রাম আন্থ্রাক্স ব্যবহার করে।
বহুল আলোচিত ৯/১১ এ নিউ ইয়র্কের বিশ্ব বাণিজ্য কেন্দ্র এবং পেন্টাগনে আত্মঘাতী বিমান হামলার পরপরই ঐ ২০০১ সালেই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে আন্থ্রাক্সের আক্রমণ এটাই নির্দেশ করে যে , কোন একটা চরমপন্হী গোষ্টী চাইলে যে কোন সময় জৈব অস্ত্রের আক্রমণ চালাতে সক্ষম।
চিত্র-২ : আন্থ্রাক্স আক্রমণের জন্য ব্যবহৃত খাম
যদিও প্রাথমিকভাবে সেই আন্থ্রাক্স আক্রমণের জন্য আল-কায়দা বা ইরাককে সন্দেহ করা হয়েছিল , এখন পর্যন্ত এমন কোন প্রমাণ মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর কাছে নেই যে, কোন পরিচিত সন্ত্রাসী গোষ্টী এ ঘটনার সাথে সম্পৃক্ত। বর্তমানে গোয়েন্দা সংস্থা সমূহ ধারণা করে যে , যুক্তরাষ্ট্রের আভ্যন্তরীণ কোন সন্ত্রাসী ব্যক্তি বা গোষ্ঠী হয়ত এই ঘটনা ঘটিয়েছে যাদের কাছে হয়ত এক সময় সামরিক মানের আন্থ্রাক্স জীবাণু ছিল। যদিও এই আক্রমণে হতাহতের সংখ্যা নগণ্য ছিল, এটা অন্তত বোঝা গেছে যে এই ধরনের আক্রমণে কি রকম মনস্তাত্ত্বিক প্রতিক্রিয়া এবং অর্থনৈতিক কার্যক্রমে ব্যাঘাত সৃষ্টি হতে পারে। ওয়াশিংটন ডিসি সহ পূর্বকুলের পার্শ্ববর্তী শহরগুলো সংকটময় মুহূর্ত অতিক্রম করছিল ; অর্থনৈতিক কার্যক্রম ব্যাহত হওয়ার পাশাপাশি স্বাভাবিক জনজীবন হয়ে পড়েছিল বিপর্যস্ত । মনস্তাত্ত্বিক প্রতিক্রিয়া বহাল ছিল আরও বেশ দিন। ট্যালকম পাউডার সহ অন্যান্য উপকরণ দিয়ে বেশ কিছু সংখ্যক গুজব বা হোক্সের ঘটনাও এ সময় ঘটে।
জৈব অস্ত্রের উপাদান সমূহ ( তালিকা প্রথম পর্বে) প্রকৃতি এবং গবেষণাগারসহ জৈব অস্ত্রের মজুদ থেকে থেকে সংগ্রহ করা যায় , অথবা কোন গবেষণাগারে কৃত্রিম সংশ্লেষণ কিংবা জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং মাধ্যমে উৎপন্ন করা সম্ভব। গত পর্বে আমি প্যাথোজ[নিক ভাইরাসের কৃত্রিম সংশ্লেষণ নিয়ে আলোচনা করছিলাম। সেখানে উল্লেখ করেছিলাম যে, নিউ ইয়র্ক ইউনিভার্সিটিতে ২০০২ সালে একদল গবেষক কৃত্রিম সংশ্লেষণের মাধ্যমে কৃত্রিম পোলিও ভাইরাস উৎপন্ন করেন। তারা পোলিও ভাইরাসের জেনেটিক সিকোয়েন্স অনলাইন থেকে ডাউন লোড করেন এবং সেই সাথে ৭,৫০০ বেইজ পেয়ারের ক্ষুদ্র ডিএনএ (cDNA) অনলাইনে ক্রয় করে মেইল অর্ডারে সংগ্রহ করেন এবং তারপর ধাপে ধাপে পোলিও ভাইরাসের সম্পূর্ণ জিনোম পুনর্নির্মাণ করেন। একই ভাবে ক্ষুদ্র ডিএনএ সিকোয়েন্সের নমুনা ব্যবহার করে অন্তত পাঁচ রকমের ভাইরাসের কৃত্রিম সংশ্লেষণ সম্ভব যেগুলো জৈব অস্ত্র হিসেবে ব্যবহারযোগ্য। এর মধ্যে রয়েছে , ইবোলা ভাইরাস, মারবুর্গ ভাইরাস এবং ভেনেজুয়েলান একিনা এনসেফালিতিস ভাইরাস (Equine Encephalitis) । শেষ পর্যায়ে আমি এটাও বলেছিলাম যে , গুটি বসন্তের ভারিওলা ভাইরাসের জিনোমে রয়েছে প্রায় দুই লক্ষাধিক (২০০,০০০+ ) বেজ পেয়ার যা সংশ্লেষণ করা বেশ সমস্যা সঙ্কুল হলেও এ সমস্যার সমাধান অন্যভাবে সম্ভব। কিন্তু সে প্রসঙ্গে যাওয়ার আগে সামরিক এবং কৌশলগত দৃষ্টিকোণ থেকে জৈব অস্ত্র হিসেবে গুটিবসন্ত কতটুকু গুরুত্ব বহন করে সে বিষয়ে কিছুটা আলোকপাত করা যাক।
চিত্র-২ :গুটিবসন্তে আক্রান্ত একটি শিশু
গুটিবসন্ত বিশেষ উদ্বেগের দাবী রাখে যদিও বিশ্বব্যাপী টিকাদান কর্মসূচীর মাধ্যমে ১৯৮০ সালে গুটি বসন্ত পৃথিবী হতে নির্মূল হয়েছে বলে ঘোষণা দেয়। এরপরও জৈব অস্ত্র হিসেবে এর ব্যবহার এখনও খুবই সম্ভব। যেহেতু গুটিবসন্তের রোগ দেহে সংক্রমিত হওয়ার পর থেকে রোগের লক্ষণ প্রথম প্রকাশিত হওয়ার সময়কাল প্রায় দুই সপ্তাহ পর্যন্ত স্থায়ী হতে পারে , গুটিবসন্তের ভাইরাস পরিকল্পিতভাবে ছেড়ে দেয়া হলে অতি অল্প সময়ের মধ্যে বিপুল সংখ্যক মানুষ আক্রান্ত হবে কোন সময়োচিত সনাক্তকরণের আগেই। নির্মূল হওয়ার ঘোষণার উপর নির্ভর করে বিশেষকরে সামরিক বাহিনীগুলোতে বর্তমানে কোন গুটিবসন্তের প্রতিরোধক টিকাদান কর্মসূচী নেই। বেসামরিক জনগণের ক্ষেত্রেও একই কথা প্রযোজ্য। গত পর্বে উল্লেখ করেছিলাম যে , সারা পৃথিবীতে কেবলমাত্র মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও রুশ প্রজাতন্ত্রের দুটি গবেষণাগারে ‘গবেষণার জন্য’ গুটিবসন্তের এই ভারিওলা ভাইরাস উচ্চ নিরাপত্তা ব্যবস্থায় সংরক্ষিত আছে। এ দুটি গবেষণাগার যথাক্রমে যুক্তরাষ্ট্রের ‘সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল (সিডিসি)’ এবং রুশ প্রজাতন্ত্রের ‘রাষ্টীয় ভাইরোলজী ও জৈব গবেষণা কেন্দ্র (ভেক্টর)’। ১৯৯২ পর্যন্ত রুশ বিজ্ঞানীরা জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং প্রযুক্তি ব্যবহার করে উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন ভারিওলা ভাইরাসের স্ট্রেইন তৈরির প্রকল্প পরিচালনা করেন যার বিপক্ষে প্রচলিত গুটিবসন্তের টীকা অকার্যকর। রুশরা ১৯৯২ সালে এই প্রকল্প বন্ধ করে দেয়ার দাবী করলেও তার সত্যতা যাচাই করা বর্তমানে সম্ভব নয়। অন্য কোন দেশে যে ভারিওলা মেজর ভাইরাস সংরক্ষণ করা হয় নি সেটাও শতভাগ নিশ্চিত করে বলা সম্ভব নয়।
যে পদ্ধতি অবলম্বন করে কৃত্রিম ভাবে পোলিও ভাইরাস সংশ্লেষণ করা গেছে , গুটিবসন্তের ভারিওলা মেজর ভাইরাসে ক্ষেত্রে তা সরাসরি প্রয়োগ করা যাবো না। ২০০,০০০ বেইজ পেয়ার থাকার কারনে গুটিবসন্তের ভারিওলা মেজর ভাইরাসের জিনোম পোলিও থেকে অনেক বড় এবং যদিও বা ভারিওলার সম্পূর্ণ সিকোয়েন্স পুনর্নির্মাণ করাও যায় , একে সহজে সংক্রামক ভাইরাসে পরিণত করা সহজ হবে না। তবে সমগোত্রীয় অন্য কোন বসন্ত ভাইরাসে সুনির্দিষ্ট পরিব্যক্তি ঘটিয়ে সেটাকে ভারিওলা মেজরে রূপান্তর করা হয়তো সম্ভব। ২০০২ সালে ডঃ রোজেনগার্ড এবং তার সহযোগীরা সমগেোত্রীয় ভাক্সিনিয়া ভাইরাসের ১৩ টি বেইজ পেয়ারে পরিব্যক্তি ঘটিয়ে জিনোমের সেই অংশটুকুকে ভারিওলায় রূপান্তর করেন। ভবিষ্যতে হয়তো একই পদ্ধতি প্রয়োগ করে সম্পূর্ণ জিনোমকে রূপান্তর করা সম্ভব হবে।
অনেকে তর্কের খাতিরে বলবেন যে, প্রাকৃতিক প্যাথোজেনসমূহ স্বাভাবিকভাবেই যথেষ্ট ভয়াবহ এবং মরণঘাতী হওয়ায় জেনেটিক ইন্জিরিয়ারিংয়ের মাধ্যমে তাদের আরও বেশী কার্যকর করার প্রয়োজন কোথায় ? এটা সত্যি যে জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং ছাড়াই জৈব অস্ত্র কার্যকরভাবে ব্যবহৃত হতে পারে যেখানে বিশেষ বৈজ্ঞানিক জ্ঞানের কোন প্রয়োজন পড়েনা , গত হাজার বছরে যেমনটা হয়েছে। প্রকৃতপক্ষে, যে কোন জৈব অস্ত্র প্রকল্পের প্রাথমিক পর্যায়ে জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং কোন ভূমিকা নেই। কার্যকর জৈব অস্ত্র প্রকল্প পরিচালনার জন্য প্রয়োজন ব্যয়বহুল গবেষণা প্রকল্প যেখানে ধাপে ধাপে বেশ কিছু ক্রমবর্ধমান সমস্যার সমাধান খোঁজা হয় যার মধ্যে রয়েছে কার্যকর অণুজীবের স্ট্রেইন সংগ্রহ, গন উৎপাদন এবং সেই অস্ত্র নিক্ষেপণ করার ব্যবস্থা। তৃতীয় পর্যায় অর্থাৎ অস্ত্র নিক্ষেপণ করার ব্যবস্থা খুবই গুরুত্বপূর্ণ এবং এর বাস্তবায়ন করা যে কারও জন্য একটা বড় চ্যলেন্জ। শুধুমাত্র মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং রুশ প্রজাতন্ত্র ( এবং সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়ন) ছাড়া এ ক্ষেত্রে সফলতার কথা শোনা যায় না। এমনকি সাদ্দাম হোসেনের ইরাক বহু বছর গবেষণা প্রকল্প চালানোর পরও খুবই সাধারণ মানের ডেলিভারি সিস্টেম তৈরি করতে সক্ষম হয়। জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং ভূমিকা শুরু হয় শুধুমাত্র উপরোল্লিখিত প্রাথমিক সমস্যাগুলো সমাধানের পর , তার আগে নয়। সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নের বিশাল সব জৈব যুদ্ধাস্ত্র প্রকল্পগুলো থেকে যতদূর জানা যায় যে, প্যাথোজেনিক অণুজীবদের জেনেটিক পর্যায়ে পরিবর্তন ঘটিয়ে তাদের জৈব অস্ত্র সমূহের কার্যকারিতা বৃদ্ধি করা হয়েছিলো। কিন্তু শুধু তারাই যে একাজে একমাত্র খেলোয়াড় ছিল , এটা ভাবা হবে বোকামি। এরকম আরও খেলোয়াড়ের পরিচয় যদিও এখনও আমাদের কাছে অজানা, কিন্তু তাদের অস্তিত্ব নিশ্চিতভাবেই কোথাও না কোথাও আছে। (চলবে)
তথ্যসূত্র :
*Steve Bowman, Weapons of Mass Destruction: The Terrorist Threat (Washington, D.C.: Congressional
Research Service Report for Congress, 7 March 2002),
*Encyclopedia of World Terrorism, 1997 ed., s.v. “Biological.”
*Rosengard, A.M., Liu, Y., Nie, Z. & Jimenez, R. (2002) Variola virus immune evasion design: expression of a highly efficient inhibitor of human complement.
অসংখ্য ধন্যবাদ পর্ব চালিয়ে যাবার জন্য । আশা করছি সামনে আর নতুন কিছু জানতে পারব ।
কোন একটি পর্বে প্রতিষেধক কিংবা আক্রান্ত হলে কি করা যাবে এ নিয়ে পথনির্দেশনা মূলক লেখা লিখবেন নাকি?
@কাজী রহমান,
অবশ্যই এবং সেটা এই লেখার অন্যতম গুরত্বপূর্ণ বিষয় যা পর্যায়ক্রমে এসে যাবে।
পৃথিবীতে মানুষ মানুষকেই মনে করে একমাত্র প্রতিদ্বন্দ্বী, একমাত্র শত্রু। এই শত্রুতা উদ্ধারে নিজেই নিজের স্বজাতির প্রতি বর্ষণ করে চলেছে বর্বরতার চরম প্রয়োগ। মানুষ মানুষকে মারার এই প্রতিযোগিতা কোথায় গিয়ে থামাবে বা আদৌ না থেমে এই প্রতিযোগিতা আরো নতুন নতুন যুদ্ধাস্ত্রের জন্ম দেবে সেই বিষয়ে নিশ্চিত বলা যায়।
মানব প্রজাতি ধ্বংসের মত মারাত্মক বিষয় নিয়ে আলোকপাত করার জন্য ধন্যবাদ। অপেক্ষায় আছি আরো নতুন কিছু জানার।
@রাজেশ তালুকদার,
এক সময় বর্বর মানুষেরা ছিল অক্ষরজ্ঞানহীন। তাই তাদের বর্বরতা ছিলো বৈচিত্র্যহীন। বর্বর মানুষ যখন বিজ্ঞানকে অপব্যবহার করতে শেখে তখন প্রতিনিয়ত তার বর্বরতায় নতুন নতুন মাত্রা যুক্ত হতে থাকে। পাঠের জন্য ধন্যবাদ।
আপনি বলছিলেন “আক্রান্ত এলাকায় জৈব উপাদান সমূহের প্রকৃত নিঃসরণ হওয়ার পর কয়েক দিন পর্যন্ত যেসবের প্রমাণ নাও পাওয়া যেতে পারে। “কতখানি সময়ের পর এর প্রমাণ পাওয়া যেতে পারে? আর তা কোন কোন নিয়ামক বা ফ্যাক্টারের ওপর নির্ভর করে, এ বিষয়ে কিছু লিখবেন?
ও ভালো কথা, প্রতিশ্রুতি রেখে এই পর্বটা অল্প দিনের ব্যাবধানে প্রকাশের জন্যে ধন্যবাদ।
@কেয়া রোজারিও,
সুন্দর একটা প্রশ্ন করেছেন এবং সেজন্য ধন্যবাদ ।আক্রান্ত এলাকায় জৈব উপাদান সমূহের প্রকৃত নিঃসরণ হওয়ার পর থেকে রোগের লক্ষণ প্রথম প্রকাশিত হওয়ার সময়কাল একটা গুরুত্বপূর্ণ ফ্যাক্টর যা ভেক্টরভেদে প্রায় ২ দিন থেকে ২ সপ্তাহ পর্যন্ত স্হায়ী হতে পারে। এরপর সেই রোগের কারণ নির্ণয় করার প্রাথমিক দায়িত্ব মাঠ পর্যায়ের স্থানীর স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মীদের। তারা যত দ্রুত বিষয়টি প্রতিরক্ষা দপ্তরের দৃষ্টিগোচরে আনতে পারবে , ততই মঙ্গল। সেনাবাহিনীর সিবিআর (কেমিক্যাল, বায়োলজীক্যাল এন্ড রেডিওলজিক্যাল) ওয়ারফেয়ার ইউনিট তখন মাঠ পর্যায়ে গিয়ে দেখবে যে , ঘটনাটা কি প্রাকৃতিক না কি সত্যিই কোন জৈব অস্ত্র ব্যবহার করা হয়েছে ? মাঠ পর্যায়ের স্থানীর স্বাস্থ্য বিভাগ কর্মীদের এ বিষয়ে (সিবিআর ওয়ারফেয়ার) প্রশিক্ষণ থাকাটা খুবই জরুরী।
মানুষ মরছে না-খেয়ে, মানুষ মরছে অপুষ্টিতে, মানুষ মরছে বিনা চিকিৎসায়, মানুষ মরছে যুদ্ধ করে। মৃত্যু-র মিছিলে যোগ হচ্ছে নিত্য নতুন ধারা।
আসুন – এখন থেকে মৃত্যুকেই প্রিয়সম ভেবে গেয়ে উঠিঃ
‘মরণ রে, তুঁহুঁ মম শ্যামসমান’
httpv://www.youtube.com/watch?v=begNHHs-lpc
@স্বপন মাঝি,
পাঠের জন্য ধন্যবাদ। বিজ্ঞানের অপব্যবহার এখন মৃত্যকে অপশিল্পের পর্যায়ে নিয়ে গেছে।
@সংশপ্তক,
অপব্যবহার? খুব সহজে কথাটা কেউ বলতে চায় না। ধর্মের মত আগলে রাখা আর কী!
তো এই অপব্যবহারের পেছনে কী কোন নিয়ামক শক্তি কাজ করে?
@স্বপন মাঝি,
সহিংস ভাবে অন্যকে ঘায়েল করে আধিপত্য প্রতিষ্ঠা করা মানুষের আদিম প্রবৃত্তিগুলোর অন্যতম।এই লক্ষ্য অর্জনে মানুষ তার সামর্থে যা যা সম্ভব সবই করে। বিজ্ঞানের অগ্রগতি এখন মানুষের সামর্থে নতুন মাত্রা যুক্ত করেছে।
ধর্ম ছিল আধিপত্য প্রতিষ্টার অন্যতম প্রাচীন অস্ত্র। এখন সেই ভোঁতা হয়ে যাওয়ায় ধার্মিক – অধার্মিক নির্বিশেষে বিজ্ঞানের দ্বারস্থ হতে শুরু করেছে। অর্থ যেমন ধার্মিক-অধার্মিক সকলেরই পছন্দ , যে কোন উপায়ে ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে আধিপত্যবাদ প্রতিষ্টাকারীদের কোন ধর্ম থাকা প্রয়োজনীয় নয়। ক্ষমতার মোহে বাঘ মোষ এক ঘাটে জল খায়।