:: নিউ ইয়র্ক (প্রথমার্ধ) :: নিউ ইয়র্ক (দ্বিতীয়ার্ধ) :: পোর্টল্যান্ড (ওরিগন) :: সিলিকন ভ্যালি (ক্যালিফোর্নিয়া) :: ডেট্রয়েট (মিশিগান) ::
পৃথিবীর দুইটা দেশের না-কি বাংলা নাম আছে, যা তাদের মূল নাম থেকে সম্পূর্ণ আলাদা। একটা হলো ইন্ডিয়া, যার বাংলা হচ্ছে ভারত। অন্যটাও খুব একটা অপরিচিত কোনো দেশ নয়। তবে সে না-হয় হলো। তাই বলে যদি বলি দেশের স্ত্রীলিংগ আছে, তাহলে জিনিসটা কি কিছুটা বাড়াবাড়িই হয়ে যায় না? আসলে কিন্তু না। রূপসী বাংলার রূপসী শব্দটাই তার প্রমাণ। বাংলাকে যদি আমরা একটু বেশি আগ্রহ দেখিয়ে রূপসী বাংলাই বলি, তাহলে অ্যামেরিকানরাও কি তাদের দেশকে সেরকম কিছু একটা বলে না? হ্যাঁ বলে, এরা বলে কলাম্বিয়া। অ্যামেরিকার অন্য আরেকটা কাব্যিক আদুরে নাম হলো কলাম্বিয়া। ১৪৯২ সালে স্পেনের বিখ্যাত কিংবা কুখ্যাত রাণী, ইসাবেলা, সাম্রাজ্য বিস্তারের লক্ষ্যে নিজের গয়না বিক্রি করে যে নাবিককে সমুদ্র পরিভ্রমণে পাঠিয়েছেন, সেই ক্রিস্টোফার কলাম্বাসের নামেই নামকরণ হয়েছে কলাম্বিয়া অর্থাৎ ল্যান্ড অব কলাম্বাস বা কলাম্বাসের ভূমি।
নাটোরের মুরগীর ফার্ম থেকে শুরু করে মুদির দোকান, ইট ভাটা থেকে শুরু করে মিষ্টির দোকান সবকিছুর নামই যেমন বনলতা, ইউএসএ’তেও ব্যক্তিপ্রতিষ্ঠান থেকে শুরু করে স্কুল-কলেজ, বিড়ালের নাম থেকে শুরু করে কুকুরের নাম, সবকিছুই আছে এই কলাম্বিয়া নাম দিয়ে। তবে সবকিছুকে পেছলে ফেলে এগিয়ে গেছে, ইউএসএ’র রাজধানীর নাম- ওয়াশিংটন, ডিসি। ডিস্ট্রিক্ট অব কলাম্বিয়া এর সংক্ষিপ্ত রূপ ডিসি। ইউএস কংগ্রেসের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ১৭৯০ সালে সংবিধানসন্মত উপায়ে ওয়াশিংটন ডিসিকে গোটা অ্যামেরিকার রাজধানী ঘোষণা করা হয়। ইউএসএ’র পঞ্চাশটি প্রদেশের মধ্যে ম্যারিল্যান্ড এবং ভার্জিনিয়া প্রদেশ থেকে অনুদান হিসেবে দেয়া ভূমিতে পোটোম্যাক নদীর তীরে মাত্র ১০০ বর্গমাইল এলাকাজুড়ে গড়ে তোলার পরিকল্পনা করা হয় স্বাধীন এক ওয়াশিংটন,ডিসির। বর্তামানে এটি কোনো প্রদেশের অংশ না হয়েও, সকল প্রদেশের তথা ইউএসএ’র রাজধানী।
মহামান্য রাজধানীতে নেমেই, বিমানবন্দর থেকে বাসে উঠে চলে এলাম মেট্রো (সিটি ট্রেন) স্টেশানে। চলন্ত সিঁড়ি দিয়ে নীচে তাকাতেই দেখি মাথা ঘুরে যাবার দশা। ইউএসএর অন্য কোনো শহরের মেট্রো স্টেশানে এত লম্বা সিঁড়ি দেখিনি। মনে হয়ে সিঁড়ি বেয়ে নেমে চলে যাচ্ছি কোনো এক আদিম গুহায়, পাতালপুরীতে। সমস্ত গুহা কাঁপিয়ে ট্রেন এসে থামে। এখানকার মেট্রোসিস্টেম ক্যালিফোর্নিয়ার মত; নিউইয়র্ক, শিকাগো থেকে একদমই আলাদা। মেট্রোতে চড়ার পর প্রথমেই যে স্টেশানে নামিয়ে দেয়া হলো তার নাম শুনেই গা ঠান্ডা হয়ে গেলো। দুর্বল চিত্তে স্টেশানের চার তলা সমান চলন্ত সিঁড়ি বেয়ে উপরে উঠে আসলাম। একি! কয়েক কদম পা বাড়াতেই সেই নাম-ডাকওয়ালা প্রতিষ্ঠান- পেন্টাগন। ঢাকা শহরে নতুন আসলে যেমনটা হয়, তেমন করে উঁকিজুঁকি মেরে দেখার চেষ্টা করছি, আসলেই পেন্টাগনতো? নাটোরের মুরগীফার্মের বনলতার মত এখানেও আবার সব কিছুর নাম পেন্টাগন নাকি! অবশেষে আমার দামী ক্যামেরাওয়ালা বউ যখন দেখলো ছবি তোলা নিষেধ, তখন বুঝা গেলো এটা আসল পেন্টাগনই। এই প্রথম ছবি না তুলতে পেরেও সে খুশি, কারণ ছবি না তুলতে পারার কারণেই বুঝা গেলো এটা আসল না-কি নকল। আমার ধারণা ছিলো পেন্টাগনের কয়েক কিলোমিটার দূর থেকে সিকিউরিটি চেক করে বাপ-দাদার নাম জিজ্ঞেস করা শুরু করবে; কিন্তু এখানে দেখি কয়েক কদমের দূরত্বে চলে আসলেও কোনো সাড়া শব্দ নেই।
ইউএসএ’র অন্যসব বড় বড় শহরে সব বিল্ডিংগুলো বেড়েছে উপরের দিকে। কিন্তু এই ওয়াশিংটন ডিসিতে সেটা বেড়েছে পাশের দিকে, প্রস্থের দিকে। কয়েকটা ব্লক নিয়ে একেকটা বিল্ডিং বা একেকটা অফিস। অত্যন্ত রুচিশীল আর আধুনিক নির্মাণশৈলীর দৃষ্টিনন্দন এই স্থাপনাগুলোই বলে দেয় এই শহর বিশেষ একটা কিছু। রাজকীয় ভঙ্গিমায় দাঁড়িয়ে থাকা একেকটা স্থাপনা যেন সদর্পে, ঔদ্ধত্য দেখিয়ে ঘোষণা করছে তাদের উচ্চমর্যাদা। ঘোষণা করছে তারা রাজাধিরাজ। রাজতন্ত্র থাকলে ইউএসএর রাজা থাকতো এই শহরে, রাজধানীতে। পেন্টাগনের কথাই ধরা যাক, ফ্লোর এর আয়তন বিবেচনা করলে(৫টি ফ্লোর) এটি পৃথিবীর সবচেয়ে বড় অফিস, প্রায় আশিটি ফুটবল মাঠের সমান এবং পঁচিশ হাজারের বেশি মানুষ এখানে কাজ করে। প্রতিদিন এখান থেকে করা হয়ে থাকে দুই লক্ষ ফোন কল, প্রতিমাসে চালাচালি হয় ১২ লক্ষ চিঠি। শুধু সময় দেখার জন্যই আছে ৪২০০ ঘড়ি, সবগুলো ফ্লোর মিলিয়ে করিডোর এর সর্বমোট দৈর্ঘ্য ১৭ মাইলের উপরে। আসলে পেন্টাগন নিজেই একটা ছোটো শহর।
পেন্টাগন পৃথিবীর সবচেয়ে বড় অফিস। সেটার কথা না হয় বাদই দিলাম। ওয়াশিংটন ডিসির একটা মাঝারি অফিসের ব্যাপারে আসা যাক। জাস্টিস বিল্ডিং এর কথাই ধরা যাক। সাতটা ফ্লোর মিলিয়ে সর্বমোট অফিসের জায়গা এক লক্ষ বর্গমিটারের বেশি। কম করে হলেও ১৫টা ফুটবল মাঠ। অন্যদিকে, অবধারিতভাবে এই বিল্ডিংগুলোর নাম ইউএসএর প্রেসিডেন্টদের নামে। যেমন, জন এফ কেনেডি জাস্টিস বিল্ডিং। রাম-সাম-যদু-মধু কত প্রেসিডেন্ট যে এদের ছিলো, এখানে আসলে টের পাওয়া যায়। শস্যের চেয়ে টুপি বেশি, ধর্মের আগাছা বেশি, মানুষের থেকে প্রেসিডেন্ট বেশি। মাদাম তুসোর মিউজিয়ামে গিয়ে জিজ্ঞেস করলাম, অন্য মাদাম তুসো মিউজিয়ামের সাথে এখানকার মাদাম তুসো মিউজিয়ামের পার্থক্য কি? রিসেপশানে বসে থাকা ভদ্রমহিলা গর্বিতভাবে উত্তর দিলো, আমাদের এই মিউজিয়ামেই আছে বিশ্বের সবচেয়ে বেশি প্রেসিডেন্ট। হায় দুনিয়া! কই একটু ঐশ্বিরিয়া রায়কে দেখতে যাবো, তা না হয়ে মোমের তৈরী আব্রাহাম লিঙ্কনকে দেখো। বাঙ্গালের দুঃখ প্রেসিডেন্ট-ভরা দেশের লোকজনকে কি করে বুঝাই!
একসময় স্বাধীনভাবে হাঁটতে হাঁটতে ফ্রিডম প্লাজার সামনে গিয়ে হাজির হই। এখানে দলে দলে শুয়ে আছে অনশন পার্টি। ওবামা ব্যাটা যে দেশকে রসাতলে নিয়ে যাচ্ছে, সেটা চোখে আঙ্গুল দিয়ে বুঝিয়ে দেয়ার জন্য এরা এখানে এসে তাঁবু টাঙ্গিয়ে আসন গেঁড়ে বসেছে। অনশনকারীর থেকে সাংবাদিক বেশি। এই চ্যানেল, সেই চ্যানেল, বিবিসি, সিএনএন, রয়টার্স, যেদিকে দুচোখ যায় শুধু বিখ্যাত কিছুর আনাগোনা। এত লোকের আস্তানা গেঁড়ে দেশ উদ্ধারের প্রচেষ্টা এদের সচেতনতাকে যেমন প্রমাণ করে, তেমনি আবার প্রমাণ করে ইউএসএ’ তে বেকার সমস্যা আর হোমলেস্ বেড়ে গেছে কি পরিমাণে। অবশ্য, কাজকর্ম নেই, গৃহহীণ হয়ে খোলা আকশের নীচে তাঁবু টাঙ্গিয়ে সিএনএন, বিবিসিতে ইন্টারভিউ দেয়া খুব একটা মন্দ কিছু নয়!
ওয়াশিংটন ডিসির হাইকোর্টের মত মাস্তুলওয়ালা(গম্বুজ) যে বিল্ডিংটা শহরের প্রতিনিধিত্ব করে সেই বিল্ডিং এর নাম ইউএস ক্যাপিটল । ঢাকা শহর বুঝানোর জন্য যেমন শাপলা চত্বর দেখানো হয়ে, ডিসি বুঝানোর জন্য এই ক্যাপিটল বিল্ডিংটা দেখানো হয়। ইউএস কংগ্রেসের অধিবেশন এখানেই হয়ে থাকে। ১৭৯২ সালে প্রেসিডেন্ট থমাস জেফারসন ক্যাপিটল হিলে গড়ে উঠা এই ইউএস ক্যাপিটল বিল্ডিং এর ডিজাইন করার জন্য এক প্রতিযোগিতার আয়োজন করেন এবং সেই সময়েই পাঁচশ ডলার পুরস্কার ঘোষণা করেন। এই ইউএস ক্যাপিটল এর পাশেই রয়েছে পৃথিবীর সবচেয়ে বড় লাইব্রেরী- লাইব্রেরী অব কংগ্রেস। এখানে রাখা আছে প্রায় আড়াই কোটি পুস্তক, যার মাধ্যে ছয় হাজারের মত আবার ১৫০০ শতকেরও আগের লেখা।
রাজধানীর বিল্ডিং এর দৈর্ঘ প্রস্থ নিয়ে এত কিছু বলা হলো, কিন্তু উচ্চতার কথা আসলেও সে হার মানবে কেন। রাজধানী বলে কথা। এবার একটা পাথরের মনুমেন্ট এর কথা বলি। এখানে যাই দেখি তাই বিশ্বের বৃহৎ, বিশ্বের সর্বপ্রথম, বিশ্বের প্রাচীন, বিশ্বের সুদীর্ঘ। অতএব, পাথরের তৈরী এই মনুমেন্ট (অবিলিস্ক) যে বিশ্বের সর্বোচ্চ হবে, সেটা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। অন্যদিকে, অলিতে-গলিতে প্রেসিডেন্টের আনাগোনা হবার কারণে এই মনুমেন্টের নামও যে প্রেসিডেন্টের নামেই হবে, সেটাই বা আর এমন কি। ওয়াশিংটন মনুমেন্ট। উচ্চতা ৫৫৫ ফুট। প্রেসিডেন্ট ওয়াশিংটন এর নামে। যাকে বলা হয়ে থাকে, সমরেও সবার আগে, শান্তিতেও সবার আগে। অবশ্য ইউএসএর কতিপয় বেজায় দুষ্টু লোক গোটা মনুমেন্টের ডিজাইনটাকে অশ্লীল হিসেবে গণ্য করে।
এবার আসি লিঙ্কন মেমোরিয়ালের কথায়। আব্রাহাম লিঙ্কন। ইউএসএর সবচেয়ে বেশি প্রভাব বিস্তারকারী এবং সন্মানিত প্রেসিডেন্টদের মধ্যে একজন। যত সংখ্যক বাংলা সিনেমায় দোয়েল চত্বর দেখানো হয়েছে, তার চেয়ে বেশি সংখ্যক হলিউডের ম্যুভিতে এই লিঙ্কন মেমরিয়াল এবং তার সামনের লম্বা লেকটা দেখানো হয়েছে। জনপ্রিয়তার বিচারে প্রায় ‘বেদের মেয়ে জোসনা’র সমকক্ষ হয়ে যাওয়া ‘ফরেস্ট গাম্প’ ম্যুভিতে ফরেস্ট যে লেকটার মধ্যে নেমে হাঁটতে শুরু করে সেটাই লিঙ্কন মেমরিয়ালের সামনের লেক। লিঙ্কন মেমরিয়ালের সিঁড়িতে দাঁড়ালেই চোখে পড়ে মনোরম সেই লেক (এখন সংস্কার কাজ চলছে) আর খানিকটা দূরে সুউচ্চ ওয়াশিংটন মনুমেন্ট।
১৯৬৩ সালের ২৮ শে অগাস্ট দুই লক্ষ লোকের সামনে মার্টিন লুথার কিং তার জগিদ্বিখ্যাত সতের মিনিটের ‘আই হ্যাভ এ ড্রিম’ বক্তৃতাটুকু এই লিঙ্কন মেমরিয়ালের সিঁড়িতে দাঁড়িয়েই দিয়েছিলেন।
ভিডিওঃ মার্টিন লুথার কিং এর বক্তৃতা
ডিসি থেকে ফিরে আসার আগের দিনে গিয়েছিলাম, হোয়াইট হাউজের কাছে। হোয়াইট হাউজের পিছনের রাস্তায় দাঁড়িয়ে দেখছি। হঠাৎ করে পুলিশ এসে অনুরোধ করলো রাস্তার অন্য পাশে চলে যেতে, রাস্তার এপাশে থাকা যাবে না। কিন্তু ঘটনা কি! একজন পুলিশকে গিয়ে জানতে চাইলাম, কেন ওদিকে চলে যেতে বলছে, ওবামা কি এ-পথেই আসবে না-কি। মুচকি হাসি দিয়ে বেচারা বলে, আসলেও আসতে পারে। আমাদের আর বুঝার বাকী থাকলো না। আমার বউ তার দামী ক্যামেরা নিয়ে প্রস্তুত। আমি আমার কমদামীটা নিয়েই প্রস্তুত। প্রেসিডেন্ট সাহেব আবার আসছেন কোরিয়ান প্রেসিডেন্টকে সঙ্গে নিয়ে। কিন্তু একি দেখলাম! বাংলাদেশের একটা প্রতিমন্ত্রী, উপমন্ত্রীও এর থেকে বেশি বহর নিয়ে চলাফেরা করেন। প্রেসিডেন্টের ছোট্ট বহরে ওবামাকে দেখলাম না, শুধু দেখলাম তার বুলেটপ্রুফ গাড়ী আর গাড়ীর মধ্যে কিছু ছায়া। অন্যদিকে, প্রেসিডেন্ট দেখুক আর না-দেখুক, ইউএসএ’র মানুষজন চলার পথে তাদের প্রিয় প্রেসিডেন্টকে রাস্তার পাশ থেকে হাত নেড়ে শুভেচ্ছা জানিয়েই যাচ্ছে।
লেখার শুরুতে বলেছিলাম, পৃথিবীর দুইটা দেশ আছে, যে-দেশগুলোর প্রকৃত নামের সাথে বাংলা নামের কোনো মিল নেই। তাদের একটা আগেই বলে দিয়েছি, ইন্ডিয়া(ভারত); অন্যটা ইজিপ্ট(মিশর)। কোনো এক আগামী দিনে ঠিকই লিখে ফেলবো মিশরের কোনো এক ছোট্ট শহরে ছোট্ট এক ভ্রমণকাহিনী।
:: পোর্টল্যান্ড (ওরিগন) :: সিলিকন ভ্যালি (ক্যালিফোর্নিয়া) :: ওয়াশিংটন ডিসি ::
মইনুল রাজু (ওয়েবসাইট)
অক্টোবার ২৬, ২০১১
চমৎকার বর্ননা।
@এ.প্রামানিক,
অনেক ধন্যবাদ 🙂 ।
ইন্টারনেট থেকে ছবি চুরি কইরা একখানা দারুণ ভ্রমণকাহিনি লিখা ফেললা দেখি রাজু মিয়া। 😛
@ফরিদ আহমেদ,
সন্দেহবাদীদের নিয়ে আর পারা গেলো না। আরো ছবি দেখতে চান বললেইতো হয় 😛 ।
নীচে লিঙ্ক দিলাম, এখন বলেন না যে, ফটোশপে এডিট করা। অবশ্য আপনার ঠিক নাই; আপনি বলতে পারেন- হোয়াইট হাউজ গেলো, কিন্তু ওবামার সাথে ছবি কই। :-s [এই লিঙ্ক এক সপ্তাহ পাবলিক থাকবে।]
https://plus.google.com/photos/115013281628544829797/albums/5668030326895512209
নাহ। মনে হচ্ছে তুমি সত্যি সত্যি গেছো। তয় বউয়ের বিষয়টা মনে হয় চাপাবাজি। বউ ফালাইয়া একা একা ঘুরো। পাবলিকে খারাপ ভাবতে পারে। তাই বউরে আমদানি করছো এই গল্পে। 🙂
@ফরিদ আহমেদ,
নাহ! আর লিঙ্ক পাচ্ছেন না। :))
লিঙ্কতো আর খুঁজতেছি না। খুঁজতেছি তোমার গায়েবি বউরে। 🙂
@ফরিদ আহমেদ,
🙂
আপনার লেখার বা উপস্থানার ভঙ্গি চমৎকার।
আর বেয়াড়া হাওয়ার্ড জিন কি-না সেই আদুরে নামটার ওপর হিসু করে দিলেন।
@স্বপন মাঝি,
আপনি কি কলাম্বিয়া ইউনিভার্সিটির হাওয়ার্ড জিন এর কথা বলছেন? উনি কি করেছেন সেটা আসলে জানা নেই আমার, লিঙ্ক থাকলে দিতে পারেন, ইন্টারেস্টিং মনে হচ্ছে।
ধন্যবাদ।
@মইনুল রাজু,
http://en.wikipedia.org/wiki/Howard_Zinn
এখানে পাবেন
তবে আমি পেয়েছি বাঙলায়। বইটার নামঃ ভাবনার ভাষান্তর, লেখকঃ শাহাদুজ্জামান, প্রকাশকঃ জনান্তিক, ৫০ আজিজ সুপার মার্কেট, শাহবাগ, ঢাকা ১০০০ প্রকাশকালঃ বইমেলা ২০০০। প্রথম প্রবন্ধটি হাওয়ার্ড জিনের “কলম্বাসঃ অন্য চোখে”
দু’একটা উদ্ধৃতিঃ কলম্বাস তার স্প্যানিশ পৃষ্ঠপোষকদের কাছে লিখেছেন –“ এই আদিবাসীরা খুবই সরল আর সৎ এবং নিজেদের সম্পত্তি অন্যদের দিয়ে দেবার ব্যাপারে এরা খুবই উদার”। এরপরই কলম্বাস লিখেছেন _” হ্যাঁ, এরা দাস হিসাবে হবে চমৎকার।“
কলম্বাস বিষয়ে প্রচলিত যেসব লেখাপত্র রয়েছে তাতে বিশেষভাবে জোর দেয়া হয়েছে কলম্বাসের ধর্ম বিশ্বাসের উপর। কিন্তু …… “সেখানে তারা ক্রস চিহ্ন বসিয়েছেন ঠিকই কিন্তু পাশাপাশি অগণিত ফাঁসির মঞ্চও বসিয়েছেন। ১৫০০ খ্রীস্টাব্দে ঐ দ্বীপগুলোতে সবমিলিয়ে কলম্বাসের বসানো ফাঁসির মঞ্চ ছিল তিনশ চল্লিশটি। একদিকে ক্রস চিহ্ন, অন্য দিকে ফাঁসির মঞ্চ, অদ্ভুত সেই ঐতিহাসিক সমাপতন।“ আরো আরো অনেক অনেক।
লেখাটা পড়ার পর আমার খুব কান্না পাচ্ছিল। অক্ষমের সহায় তো চোখ নামক নদী।
@স্বপন মাঝি,
সহজ সরল মানুষগুলোর সাথে কলাম্বাস তথা সাম্রাজ্যবাদীদের বিশ্বাসঘাতকতার অধ্যায় মানবজাতির এক কলঙ্কজনক অধ্যায়। আমি আপনার র্বণিত বইটার ইংলিশটা ভার্সনটা খুঁজে পাবো; পড়ার ইচ্ছা থাকলো।
অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।
আমি ক্যপিটল হিলের ঠিক ৩০ মাইল উত্তরে থাকি। রাতের বেলাতে ভীর না থাকলে ক্যাপিটল চত্তরে যেতে ৪০ মিনিট লাগে আমার বাড়ি থেকে। ওটা আমার ফেবারিট হটস্পট। তবে
ওয়াশিংটন ডিসিতে আসলে, স্মিথসোনিয়াম গুলো বা মিউজিয়ামগুলো সবার কাছে প্রথম আকর্ষন হওয়া উচিত। এরোস্পেস মিউজিয়াম, গ্যালারি অব আরটস, ন্যাচারাল হিস্ট্রি মিউজিয়াম অবশ্য দ্রষ্টব্য। পোটোম্যাকের উল্টোদিকে ন্যাশানাল হার্বারটাও দারুন হ্যাঙ্গ আউটের জন্যে।
@বিপ্লব পাল,
আপনি ডিসির পাশে আছেন জানলে অন্ততপক্ষে আপনাকে একটা ফোন কল করতাম। পোটোম্যাক রিভার ধরে হাঁটতে হাঁটতে ওয়াটার গেইট বিল্ডিং পর্যন্ত গিয়েছিলাম। ওয়াটার গেটের পাশ দিয়ে আসার সময় দেখি সৌদি দূতাবাস। মেজাজটাই খারাপ হয়ে গেলো। সাম্প্রতিক ঘটনাবলীতে এদের উপর এত বিরক্ত হয়েছি যে, কিছুতো করতে পারি নাই, কিছুক্ষণ দূতাবাসের সামনে বাংলায় চিৎকার করে এসেছি। অবশ্য কেউ কিছু বুঝে নাই। শুধু নিজের মনে নিজে একটু শান্তি পেয়েছি।
কেন জানি না, ডিসি আমার খুবই ভালো লেগেছে। মনে হয়েছে, গর্জিয়াস টাইপেরএকটা শহর। মিউজিয়ামের জন্য ডিসি খুব বিখ্যাত এটা জানতাম। কিন্তু ডিসিতে আমরা ছিলাম মাত্র দুই রাত। কোনোভাবে সময় ম্যানেজ করতে পারছিলাম না। শেষে চিন্তা করে বের করলাম, এমন কি মিউজিয়াম এখানে আছে, যেটা অন্য শহরে চাইলেও পাবো না। শেষপর্যন্ত তাই স্পাই মিউজিয়ামে গিয়েছিলাম।
আমাদের পরবর্তী গন্তব্য ছিলো নিউ ইয়র্ক। ন্যাচারাল হিস্ট্রি মিউজিয়াম নিউইয়র্কেও আছে, আবার ম্যানহাটনের মেট্রোপলিটান মিউজিয়াম অব আর্ট এ কিছু মাস্টার পিচ্ আছে। আর আমার শহর শিকাগোতো আর্ট মিউজিয়ামে ভর্তি। কিন্তু যত যাই বলি না কেন, শুধু স্মিথসোনিয়াম দেখতেই আবার ডিসি যাওয়া উচিৎ। দেখা যাক, সুযোগ করা যায় না-কি আবার।
অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।
ভ্রমন বৃত্তান্ত দারুন প্রমোদীয় এবং ছবি গুলি দেখার মত। (F)
@মাহবুব সাঈদ মামুন,
অনেক ধন্যবাদ মামুন ভাই। আপনি সুইডেন নিয়ে একটা লেখা দেন না কেন? 🙂
(F)
@প্রতিফলন,
🙂
সুন্দর একটি ভ্রমণবৃত্তান্ত। আমার যতদুর মনে পড়ে আমাদের গাইড বলেছিল ৬৯ বর্গমাইল।
@নৃপেন্দ্র সরকার,
অনলাইন লেখায় সবসময় বিস্তারিত লিখিতে পারিনা, কিছু তথ্য লেখা সংক্ষিপ্ত করার তাগিদে এড়িয়ে যাই। তবে, আগ্রহীরা ঠিকই একধাপ এগিয়ে আরো বেশি তথ্য বের করে আনতে পারেন, যেমনটা আপনার ক্ষেত্রে হয়েছে।
আপনি ঠিকই বলেছেন। এর বর্তমান আয়তন ৬৯ বর্গমাইলের কাছাকাছি। আমি লিখেছি, ১০০ বর্গমাইল এলাকাজুড়ে গড়ে তোলার পরিকল্পনা করা হয়। শুরুর দিকে, ১৭৯০ সালে, প্রস্তাবিত পরিকল্পনা তা-ই ছিলো। পরে ১৮৪৬ সালে ভার্জিনিয়া থেকে নেয়া আলেক্সান্দ্রিয়া অঞ্চলকে, সেখানকার অধিবাসীদের আপত্তির প্রেক্ষিতে মূল প্রদেশ ভার্জিনিয়ার নিয়ন্ত্রণে ফিরিয়ে দেয়া হয়। বাকী থাকে শুধু ম্যারিল্যান্ড এর দেয়া অংশ, যার বর্তমান আয়তন ৬৮.৩ বর্গমাইল। ডিসির দিনগুলোতে আমি ঐতিহাসিক আলেক্সান্দ্রিয়াতেই অবস্থান করি।
অনেক ধন্যবাদ আপনাকে । 🙂
ধর্মের কেচাল এর মধ্যে দী শুন্দর ইজ্ঞা লিখা মারি দী আরে খুব ভালা কইচ্ছেন।ঘরের লগের দী এই শহর,এক কানা ঘুরি আওনের লাই আরে মন চার অহইন্না।আন্নেরে ধইন্নবাদ
@সপ্তক,
হাহা, ধন্যবাদ। 🙂
ভাল লাগলো। (Y)
মনে হচ্ছিলো যেন চোখের সামনে দেখছি।
তবে, গুন কীর্তন করতে গিয়ে কিছু তথ্য বাগরম্বর হয়ে গেছে।
বিশ্বের প্রাচীন 😛
অভিজ্ঞতা গুলি শেয়ার করার জন্যে অনেক ধন্যবাদ!
@অরণ্য,
অনেক ধন্যবাদ। 🙂
বৃহৎ, প্রথম, প্রাচীন এই শব্দগুলো কিছুতা ব্যাঙ্গার্থে ব্যবহার করতে চেয়েছি। কারণ, সবকিছুর সাথে এত বিশেষণ যে, তথ্য পেতে পেতে ক্লান্ত হয়ে গেছি। অবশ্য লেখার সময় আমি এই বিশেষণগুলোই মনে করতে পেরেছিলাম, আরো মনে আসলে কিন্তু আরো দিতাম। :))
তবে ‘বিশ্বের প্রাচীন’ নিয়ে যেহেতু আলাদা করে বললেন, তাই এখানে একটু যোগ করি। সত্যি বলতে কি, বাগাড়ম্বর এর মত শুনালেও, যা লিখেছি সেটা কিন্ত সত্যি। যেমনঃ লাইব্রেরী অব কংগ্রেসে বিশ্বের প্রাচীনতম কিছু বইয়ের সংগ্রহ আছে। 🙂
@মইনুল রাজু,
আপনার ক্লান্তি আমি বুঝি। চোখ ঝলসানো নিদর্শন দেখে সবার ই এমনটা হয়। তবে নিজেকে সামলে নিয়ে লিখা উত্তম। ঝলসানো চোখে দেখা বিবরণ লিখলে বাগাড়ম্বর হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়।
আপনি যে ভাবে বিশেষণ দিয়েছেন, তাতে কিন্তু মনে হয় ওখানেই সভ্যতার শুরু। যে ভঙ্গিতে ‘বিশ্বের প্রাচীন’ বিশেষণ টা ব্যবহার করেছেন তাতে যেকেউ বিভ্রান্ত হতে পারে।
লাইব্রেরী অব কংগ্রেসে বিশ্বের প্রাচীনতম কিছু বইয়ের সংগ্রহ থাকার প্রাচীনত্ব টা এক, ‘বিশ্বের প্রাচীন’ বিশেষণ টা আরেক। লাইব্রেরী অব কংগ্রেস যদি পৃথিবীর প্রাচীনতম লাইব্রেরী হোতো, টা হলে হয়ত আপনার ‘বিশ্বের প্রাচীন’ বিশেষণ টা উপযুক্ত হোতো।
বিভ্রান্তি যেন যা ছড়ায় এ জন্যেই আপনার বিশেষণ ব্যাবহারে সতর্কতা প্রার্থনা করছি। আশা করি কটু দৃষ্টিতে নেবেন না! 😛
বেশ ভাল লাগল। ওয়াশিংটন ডিসি মনে হচ্ছে না দেখলেই নয়।
@পৃথিবী,
ধন্যবাদ আপনাকে। 🙂