কোরবানীর সময় সারা দুনিয়ার মুসলমানদের মধ্যে পশু হত্যার ধুম পড়ে। আর কয়দিন বাদেই কোরবানী , মুমিন বান্দারা এখন ব্যস্ত কোরবানীর পশু যোগাড়ে- সৎ বা অসৎ যে কোন ভাবে উপার্জিত পয়সায়।কোরবানীর রক্ত নাকি আল্লাহকে সন্তুষ্ট করে, আর আল্লার সন্তুষ্টির জন্য মুমিন বান্দারা সব পশু হত্যা করে কোরবানী দেয়। আল্লাহ সন্তুষ্ট হলে মরার পর বেহেস্তে যাওয়া যাবে যেখানে আছে অসংখ্য চির যৌবনা হুর, যাদের সাথে অনন্তকাল আনন্দ করা যাবে। দুনিয়ার জীবন ও আনন্দ অতি সাময়িক, অনন্ত কালের তুলনায় তা নিতান্তই একটা মুহুর্ত মাত্র। তাই অনন্তকাল ধরে চির যৌবনা হুরদের সাথে ফুর্তি করার মানসে মুমিন বান্দারা তাদের সাধ্য মতো কোরবানী দেয়। শুধু মুসলমানরা নয়, হিন্দুরাও তাদের দেবী কালী বা মনসার উদ্দেশ্যে ছাগল বলী দেয়, উদ্দেশ্য কি তা অজানা। হয়ত ইহকাল বা পরকাল উভয় কালেই মজা ফুর্তির কামনা বাসনা। বাইবেলের ওল্ড টেষ্টামেন্টে দেখেছি মুসার অনুসারী তথা ইহুদীরাও কোরবানী দিত। যাহোক, ধর্মের নামে , আল্লাহ বা দেবতাকে সন্তুষ্ট করতে গিয়ে একটা পশুকে নির্মমভাবে হত্যা করলে সত্যিকার অর্থে আল্লাহ বা দেবতা কতটা সন্তুষ্ট হয় তা কিন্তু সব সময়ই প্রশ্ন সাপেক্ষ থেকেছে। একটা পশুকে নির্মম ভাবে আস্তে আস্তে ( যা মুসলমানরা করে) পোচ দিয়ে বা এক কোপে ( যা হিন্দুরা করে) হত্যা করলে চারদিকে ফিনকি দিয়ে রক্ত ঝরতে থাকলে , আর নিহত পশুটি ছট ফট করতে থাকলে আল্লাহ বা ঈশ্বর বা দেবতা বা দেবী যদি সত্যিকার অর্থেই সন্তুষ্ট হয় তাহলে বলতে হবে এ আল্লাহ বা দেব দেবী দারুন রকম নিষ্ঠুর।এ নিয়ে পক্ষে বিপক্ষে অনেক আলোচনাই হতে পারে। তবে এখানের আলোচ্য বিষয় সেটা নয় বরং সেটা হলো- কোরবানী বিষয়টা যে ঘটনা থেকে উদ্ভুত সেটা কতটা সত্য।
ইসলাম ধর্মের কিচ্ছা অনুযায়ী- নবী ইব্রাহীম আল্লাহকে কতটা ভালবাসে তার একটা পরীক্ষা নেয়ার সিদ্ধান্ত নেয় আল্লাহ। এটা একটা ভাল দিক। কারন পরীক্ষা ছাড়া কোন বিষয়কে স্বীকার করে নেয়া মূর্খতা বা অজ্ঞতা। আল্লাহ স্বপ্নে ইব্রাহীমকে বলল- তোমার সবচাইতে প্রিয় জিনিসটি আমাকে উৎসর্গ কর। পর পর তিন রাত ইব্রাহীম একই স্বপ্ন দেখল। এ স্বপ্ন দেখার পর ইব্রাহীম চিন্তা করল এটা একটা পরীক্ষা। একই সাথে চিন্তা করতে লাগল তার সবচাইতে প্রিয় জিনিস কি। আর বলা বাহুল্য, তার সবচাইতে প্রিয় জিনিস ছিল তার একমাত্র পূত্র ইসমাইল কারন তাকে সে তার অতি বৃদ্ধ বয়েসে আল্লাহর অনুগ্রহে প্রাপ্ত হয়েছে। একই কিচ্ছা অনুযায়ী – ইব্রাহীমের বয়স যখন ৮৫, তখনও তার কোন সন্তান জন্ম গ্রহন করেনি। এর জন্য সে আল্লাহর কাছে কম কান্না কাটি করে নি। অবশেষে আল্লাহর করুণা হলো-সেই ৮৫ বছর বয়েসেই তার স্ত্রী হাজেরা তার জন্য একটা পূত্র সন্তান প্রসব করল যা ছিল ইব্রাহীমের সবচাইতে প্রিয় জিনিস। তো এবার ইব্রাহীম তার একমাত্র সন্তান ইসমাইলকে আল্লাহর নামে কোরবানী দিতে উদ্যত হলো। আল্লাহর কি অপার মহিমা! কোরবানী দেয়ার পর দেখা গেল ইসমাইলের যায়গায় একটা দুম্বা (মতান্তরে ছাগল) কোরবানী হয়ে পড়ে আছে। এর পর থেকে ইব্রাহীমের অনুসারীরা এ ঘটনার স্মরনে আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের জন্য চান্দ্র বছরের উক্ত দিনে পশু কোরবানী দেয়া চালু করে আর যার জের ধরে মুসলমানরাও সেটা পালন করে আসছে।
কিন্তু গোল বাধাল মোহাম্মদের প্রথম যুগের ইহুদীরা, একই সাথে খৃষ্টানরাও। তাদের দাবী- ইব্রাহীম ইসমাইলকে কোরবানী দেয় নি , দিয়েছিল তার বৈধ পূত্র বিবি সারাহ থেকে জাত ইসহাক কে। তারা আরও দাবী করল- হাজেরার গর্ভে ইসমাইল জন্মেছিল ঠিকই তবে হাজেরা ছিল দাসী, আর ইসমাইল সেকারনে কোন বৈধ পূত্র নয়। তারা ব্যখ্যা দিল- ইব্রাহীমের থেকে আল্লাহ এমন একটা জাতি সৃষ্টি করবে যারা হবে আল্লাহর পছন্দনীয় জাতি । অত:পর সে পছন্দনীয় জাতি থেকে এমন একজন নবী সৃষ্টি করবে যে সমগ্র দুনিয়ায় রাজত্ব করবে, সে হবে দুনিয়ার সমস্ত রাজার রাজা। আর আল্লাহ কখনই একজন দাসীর গর্ভজাত অবৈধ সন্তান থেকে সে পছন্দনীয় জাতি করতে পারেন না। আর বলা বাহুল্য, বাইবেলের পূরাতণ নিয়মে হাজেরাকে বিবাহিত স্ত্রী নয়, একজন দাসী হিসাবেই বলা হয়েছে আর বৈধ স্ত্রী হিসাবে সারাহকেই বলা হয়েছে। এখানে আর একটা ঘটনা ঘটে। হাজেরা ইসমাইলকে জন্মদান করার পর নানা কারনে সারাহ তার প্রতি অসন্তুষ্ট হয় ও তার স্বামী ইব্রাহীমকে চাপ দিতে থাকে তাদেরকে পরিত্যাগ করতে। অত:পর নানা ঘটনার পর, ইব্রাহীম হাজেরা ও শিশুপূত্র ইসমাইলকে তার নিজ বাসস্থান থেকে অনেক দুরে আজকের মক্কায় নির্জনে ফেলে রেখে যায়। অত:পর সেখানেই ইসমাইল বড় হয়, বিয়ে করে ঘর সংসার করে। আর তার থেকেই মূলত সৃষ্টি হয় আরব জাতির। অন্য দিকে হাজেরাকে নির্বাসন দেয়ার পর সারাহ ও গর্ভবতী হয়ে একটা পূত্র সন্তানের জন্ম দেয় যার নাম ইসহাক। ইসহাকের পূত্র ইয়াকুব যাকে বাইবেলে ইসরাইলও বলা হয় আর তার থেকেই পত্তন ঘটে ইসরাইল তথা ইহুদী জাতির। সুতরাং ইহুদীদের দাবী অনুযায়ী- আরবরা হলো ইব্রাহীমের অবৈধ সন্তান ইসমাইলের বংশধর আর ইসহাক হলো বৈধ সন্তান যার বংশধর থেকে সৃষ্টি হয়েছে ইসরাইলি বা ইহুদীরা ও পরবর্তীতে তাদের এক অংশ যীশু খৃষ্টের অনুসারী হয়ে খৃষ্টান নামে অভিহিত হয়েছে। তাই ইহুদী ও খৃষ্টান উভয় ধর্মাবলম্বীদের বক্তব্য হলো- অবৈধ সন্তান ইসমাইলের বংশধর থেকে আল্লাহ তার পছন্দনীয় জাতি সৃষ্টি করতে পারে না আর সে কারনে তাদের মধ্যে কোন নবীর আগমনও ঘটবে না। ঠিক এই পয়েন্টে এসে ইহুদী ও খৃষ্টান উভয়ই মোহাম্মদকে নবী হিসাবে বিশ্বাস করে না, তারা মোহাম্মদকে একজন ভন্ড নবী বা ভূয়া নবী হিসাবে গণ্য করে। এমন কি অনেক সময় তারা তাকে শয়তানের মানব রূপ হিসাবেও প্রচার করে থাকে।মক্কা মদীনাতে যখন মোহাম্মদ নিজেকে নবী দাবী ক’রে ইসলাম প্রচার শুরু করে, ঠিক পূর্বে উল্লেখিত কারনেই ইহুদীরা এর ঘোর আপত্তি করে এবং তাকে একজন ভন্ড হিসাবে অভিহিত করে ও নানা ভাবে অপমান করতে থাকে। আর খৃষ্টানরাও তাদের সাথে তাল মিলায়। অন্য দিকে- খৃষ্টাণদের দাবী বাইবেলের পুরাতন নিয়মে ইসরাইলি জাতির মধ্য হতে যে নবীর আগমনের কথা বলা হয়েছে তা হলো যীশু খৃষ্ট এবং যীশু খৃষ্ট ইসরাইলের বংশধর তথা ইহুদী জাতির মধ্য থেকেই আগমন করেছে যে ইসরাইল ছিল ইব্রাহীমের বৈধ স্ত্রীর গর্ভজাত সন্তান ইসহাকের পূত্র। কিন্তু অধিকাংশ ইহুদীরা নানা কারনে তা মানতে অস্বীকার করে, যদিও যীশু খৃষ্টের প্রাথমিক অনুসারীর সবাই ইহুদিই ছিল। সে যাহোক, ইহুদী ও খৃষ্টানরা উভয়ই বাইবেলের পুরাতণ নিয়মের ধারা অনুযায়ী মোহাম্মদকে নবী মানতে অস্বীকার করে। মোহাম্মদের সময়কার ইতিহাস থেকে দেখা যায়, খৃষ্টানরা কেউ কেউ মোহাম্মদ প্রচারিত ধর্মের প্রতি সহানুভুতিশীল ছিল, কিন্তু ইহুদীরা মোটেও তা ছিল না আর তারা সেই প্রাথমিক যুগ থেকেই মোহাম্মদ ও তার প্রচারিত ইসলামের বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে এসেছে। এর অন্যতম কারন ছিল তারা বিশ্বাস করত – তারাই হলো ঈশ্বরের সেই পছন্দনীয় জাতি যারা একদিন সারা দুনিয়ায় রাজত্ব করবে, আরবরা নয়। ঠিক একারনেই দেখা যায়- মোহাম্মদ কখনও কখনও খৃষ্টানদের প্রতি সহানুভুতিশীল হলেও ইহুদীদের প্রতি ছিল প্রচন্ড নির্মম ও নিষ্ঠুর। সেই নিষ্ঠুরতা , নির্মমতা মোহাম্মদ মক্কায় থাকতে দেখাতে পারেনি কারন তখন সে ছিল ভীষণ দুর্বল , নিজের জীবন বাঁচানোতেই ছিল ব্যস্ত। মোহাম্মদ যখন মদীনায় শক্তিশালী শাসক হয়ে ওঠে- তখন সে তার সমস্ত শক্তি প্রয়োগ করে ইহুদী নিধনে, যাতে তাদেরকে চিরতরে স্তব্ধ করে দেয়া যায়। এর পর মক্কা বিজয়ের পর ইহুদী নিধন কার্য আরেও বেগবান হয়। ইহুদীদের বনু কুরাইজা গোত্রের মানুষদেরকে নিরস্ত্র অবস্থায় হত্যা , খায়বারে নিরস্ত্র ইহুদীদের হত্যা এসবের অন্যতম নিদর্শন। এত নির্যাতন অত্যাচার সহ্য করার পরও কেন ইহুদীরা মোহাম্মদের ইসলাম গ্রহন করে নি , সামান্য কিছু ব্যতিক্রম ছাড়া ? তার একটাই মাত্র কারন- মোহাম্মদ দাবী করছে ইব্রাহীম, মূসা, ইসা এদের ধারাবাহিকতায় সে শেষ নবী, অথচ বাইবেলে ভবিষ্যদ্বানী করা আছে মূসার পর মাত্র একজন নবীর আগমন ঘটবে আর সে আবির্ভুত হবে ইসরাইলি তথা ইহুদীদের মধ্যে। অথচ মোহাম্মদের জন্ম অইহুদি আরব দেশে। তাই তাদের কিতাব মতে মোহাম্মদ নবী হতেই পারে না। ধর্মভীরু ইহুদীরা তাই মোহাম্মদকে নবী মানা তো দুরের কথা তাকে ভন্ড নবী বলে নানা ভাবে তুচ্ছ তাচ্ছিল্য, ব্যঙ্গ বিদ্রুপ করত। তারা মোহাম্মদকে ভন্ড বলত একারনে যে- মোহাম্মদ তৌরাত কে আল্লাহর কিতাব হিসাবে স্বীকার করছে যা মুসা নবীর নিকট অবতীর্ণ হয়েছিল অথচ একই সাথে জোর করে বানিয়ে বানিয়ে অভিযোগ করছে ইহুদী ও খৃষ্টানরা নাকি তা বিকৃত করে ফেলেছে। অথচ তারা তা করেনি। আর সেকারনেই তারা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করতে থাকে যে মোহাম্মদ সত্যি সত্যি একজন ভন্ড বা ভূয়া নবী।
এবারে আসা যাক, কাদের দাবী সত্য সেটার বিশ্লেষণে। এ ব্যপারে নিচের হাদিসটি দেখা যেতে পারে-
ইবনে আব্বাস বর্নিত: তিনি বলেন যখন ইব্রাহীম ও তাঁহার স্ত্রী( সারাহ) এর যা হইবার তা হইয়া গেল অর্থাৎ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হইল, তখন ইব্রাহীম শিশুপূত্র ইসমাইল ও ইসমাইলের মাতা হাজেরাকে লইয়া বাহির হইয়া গেলেন। তাহাদের সাথে একটি মশক ছিল আর তাতে পানি ছিল। ইসমাইলের মাতা মশক হইতে পানি পান করিতেন আর শিশুপূত্রের জন্য তাহার দুগ্ধে প্রাচুর্য আসিত। শেষ পর্যন্ত ইব্রাহীম মক্কায় আসিয়া গেলেন এবং হাজেরাকে তার শিশুপূত্র সহ একটি বৃক্ষমূলে বসাইয়া রাখিলেন। তারপর তিনি তার নিজ স্ত্রী সারাহ এর নিকট ফিরিয়া চলিলেন। তখন ইসমাইলের মাতা তাহাকে অনুসরণ করিয়া কিছুদুর গেলেন ও ইব্রাহীমকে জিজ্ঞাসা করিলেন- হে ইব্রাহীম আমাদিগকে কাহার নিকট রাখিয়া যাইতেছেন? ইব্রাহীম বলিলেন- আল্লাহর নিকট। হাজেরা বলিলেন- আমি আল্লাহর নিকট থাকিতেই রাজি। ——————————————————————————————————————————–
ইবনে আব্বাস বলেন, জুরহুম গোত্রের একদল লোক প্রান্তরের মধ্য দিয়া পথ অতিক্রম করিতেছিল, হঠাৎ তাহারা দেখিল, একদল পাখী উড়িতেছে। তাহারা যেন তাহা বিশ্বাসই করিতে পারিতেছিল না।তাহারা বলিল, যেখানে পানি থাকে সেখানেই তো এইসব পাখি উড়িতে দেখা যায়। তখন তাহারা পাখী উড়িবার স্থলে তাহাদের একজন লোক পাঠাইল। সে তথায় গিয়া দেখিল সেখানে পানি মৌজুদ আছে। তখন সে দলের লোকদের নিকট ফিরিয়া আসিয়া তাহাদিগকে পানির খবর দিল। তারপর তহারা সকলেই হাজেরার নিকট আসিল এবং তাহাকে বলিল, হে ইসমাইল জননী! আপনি কি আমাদিগকে আপনার প্রতিবেশী হওয়ার বা আপনার সাথে বসবাস করিবার অনুমতি দিবেন ?হাজেরা তাহাদিগকে বসবাসের অনুমতি দিলেন এবং এইভাবে অনেক দিন চলিয়া গেল। তারপর হাজেরার শিশুপূত্র প্রাপ্ত বয়স্ক হইলেন, তখন তিনি জুরহুম গোত্রেরই এক কন্যাকে বিবাহ করিলেন। ইবনে আব্বাস বলেন, অত:পর নির্বাসিত পরিজনের কথা ইব্রাহীম এর মনে উদয় হইল। তিনি তাহার স্ত্রী সারাহ কে বলিলেন, আমি আমার নির্বাসিত পরিজনের কথা জানিতে চাই। ইবনে আব্বাস বলেন, অত:পর ইব্রাহীম তাহাদের নিকট আসিলেন এবং সালাম দিলেন। তারপর জিজ্ঞাসা করিলেন- ইসমাইল কোথায় ?ইসমাইলের স্ত্রী বলিল- তিনি শিকারে গিয়াছেন।————— সহী বুখারী, বই-৫৫, হাদিস নং-৫৮৪
উপরোক্ত হাদিসে পরিস্কার দেখা যাচ্ছে- ইব্রাহীম হাজেরা ও ইসমাইলকে নির্বাসনে দেয়ার পর দীর্ঘদিন আর তাদের সাথে দেখা করেনি। দেখা করেছে তখন যখন ইসমাইল প্রাপ্ত বয়স্ক হয়ে বিয়ে করে সংসার শুরু করে দিয়েছে। আরও উল্লেখ্য, উক্ত হাদিসে দেখা যাচ্ছে- বর্ননাকারী বার বার সারাহ কে ইব্রাহীমের স্ত্রী বলছে, কিন্তু হাজেরাকে শুধুমাত্র ইসমাইলের মাতা বলছে। একবারও কিন্তু দেখা যাচ্ছে না যে হাজেরাকে ইব্রাহীমের স্ত্রী বলা হচ্ছে। ইব্রাহীমের সময়ে যে কেউ দাসীদের গর্ভে সন্তান জন্ম দিতে পারত , এটা দোষণীয় কিছু ছিল না। এমনকি মোহাম্মদের সময়েও এটা দোষণীয় ছিল না। খোদ মোহাম্মদের নিজের এক পূত্র ইব্রাহিমও ছিল তার দাসী মারিয়ার(মিশরের সম্রাট থেকে উপহার পাওয়া) সন্তান। পরে অবশ্য মোহাম্মদ তাকে বিয়ে করে তবে যখন ইব্রাহীম মারিয়ার পেটে আসে তখন তাদের বিয়ে হয়নি।বিষয়টাও আসলে তাই। হাজেরা ছিল ইব্রাহীমের দাসী। বিবাহিতা স্ত্রী নয়। বাইবেলের পুরাতন নিয়মে সেরকমই বলা আছে। ইব্রাহিম এক সময় মিশর গমন করে, তখন তার সাথে তার স্ত্রী সারাহ ছিল। নানা ঘটনার পর সারাহ সেখানকার বাদশার রাজপ্রাসাদে স্থান পায়, পরে যখন সেখান থেকে চলে আসে তখন বাদশাহ তাকে একটা দাসী উপহার দেয় আর সেই দাসীই হলো হাজেরা। বাইবেলে আরও বর্ননা করা আছে-ইব্রাহীম ও সারাহ যখন অতিশয় বৃদ্ধ হয়ে গেছিল কিন্তু সন্তান জন্ম নিচ্ছিল না , তখন সারাহই ইব্রাহীমকে তার দাসী হাজেরার সাথে সহবাস করতে বলে ও সন্তান উৎপাদনের জন্য অনুরোধ করে। সেখানেও বিয়ের কথা নেই। কিন্তু যখন হাজেরা ইসমাইলকে প্রসব করে তখন সারাহও আল্লাহর কাছ থেকে অবগত হয় যে সে নিজেও মা হতে চলেছে বা হবে। তখন সারাহ আর হাজেরাকে সহ্য করতে পারে না। কারন দাসীর গর্ভের এক অবৈধ সন্তান তার স্বামীর সম্পত্তির উত্তরাধিকারী হবে বা অন্য সব কিছুতে ভাগ বসাবে তা সারাহ মানতে রাজী হয়নি। সেকারনে সে হাজেরাকে বাড়ী থেকে নির্বাসন দেয়ার জন্য ইব্রাহীমের ওপর চাপ সৃষ্টি করে। ঠিক এ প্রচলিত ঘটনাটাকেই ( যা মোহাম্মদের আমলে বাইবেলে লিখিত ও প্রচলিত ছিল) হাদিসে এভাবে প্রকাশ করা হয়েছে- তিনি বলেন যখন ইব্রাহীম ও তাঁহার স্ত্রী( সারাহ) এর যা হইবার তা হইয়া গেল অর্থাৎ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হইল । অর্থাৎ সারাহ ও ইব্রাহীমের মধ্যে ব্যপক মনোমালিন্যের উদ্ভব ঘটে হাজেরা ও তার সন্তান ইসমাইলকে নিয়ে। উল্লেখ্য, হাজেরা ইব্রাহীমের বৈধ স্ত্রী হলে সারাহ কখনই এ ধরনের আচরন করতে পারত না , বা হাজেরা ও ইসমাইলকে নির্বাসন দিতে ইব্রাহীমকে বাধ্য করাতে পারত না।
তাহলে উপরোক্ত হাদিস যে বিষয়গুলি পরিস্কার তা হলো- ইসমাইল প্রাপ্ত বয়স্ক হওয়ার পর বিয়ে করে সংসার করার আগ পর্যন্ত তার সাথে ইব্রাহীমের দেখা হয় নি। হাজেরা ইব্রাহীমের দাসী ছিল, বিবাহিতা স্ত্রী ছিল না।
এবার দেখা যাক, এ বিষয়ে কোরান কি বলছে-
হে আমার পরওয়ারদেগার! আমাকে এক সৎপুত্র দান কর। সুতরাং আমি তাকে এক সহনশীল পুত্রের সুসংবাদ দান করলাম। অতঃপর সে যখন পিতার সাথে চলাফেরা করার বয়সে উপনীত হল, তখন ইব্রাহীম তাকে বললঃ বৎস! আমি স্বপ্নে দেখিযে, তোমাকে যবেহ করছি; এখন তোমার অভিমত কি দেখ। সে বললঃ পিতাঃ! আপনাকে যা আদেশ করা হয়েছে, তাই করুন। আল্লাহ চাহে তো আপনি আমাকে সবরকারী পাবেন। যখন পিতা-পুত্র উভয়েই আনুগত্য প্রকাশ করল এবং ইব্রাহীম তাকে যবেহ করার জন্যে শায়িত করল। তখন আমি তাকে ডেকে বললামঃ হে ইব্রাহীম, তুমি তো স্বপ্নকে সত্যে পরিণত করে দেখালে! আমি এভাবেই সৎকর্মীদেরকে প্রতিদান দিয়ে থাকি। নিশ্চয় এটা এক সুস্পষ্ট পরীক্ষা। আমি তার পরিবর্তে দিলাম যবেহ করার জন্যে এক মহান জন্তু। আমি তার জন্যে এ বিষয়টি পরবর্তীদের মধ্যে রেখে দিয়েছি যে, ইব্রাহীমের প্রতি সালাম বর্ষিত হোক। এমনিভাবে আমি সৎকর্মীদেরকে প্রতিদান দিয়ে থাকি। সে ছিল আমার বিশ্বাসী বান্দাদের একজন। কোরান, সূরা আস সাফাত-৩৭:আয়াত ৯৯-১১১
উপরোক্ত আয়াতে ইব্রাহীম আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করছে একজন সৎপূত্র দান করার জন্য। অত:পর ৯৯ থেকে ১১১ পর্যন্ত আয়াতে দেখা যাচ্ছে সে পূত্র যখন চলাফেরার বয়সে উপনীত হলো তখনই ইব্রাহীম তাকে কোরবানী করতে নিয়ে যায়। এ চলাফেরা করার বয়স মানে বিয়ে করার মত প্রাপ্ত বয়স্ক না নিশ্চয়ই। বড়জোর শৈশব অতিক্রম করে কৈশোরে পদার্পন পর্যন্ত বুঝানো যেতে পারে। এছাড়াও এ আয়াত গুলোর কোথাও ইসমাইলের নাম গন্ধও নেই। আর পূর্বোক্ত হাদিস থেকে পরিস্কার বোঝা যাচ্ছে- ইব্রাহীম যখন ইসমাইলের সাথে নির্বাসনের পর প্রথম দেখা করে তখন সে কৈশোর উত্তীর্ন হয়ে যৌবনে পদার্পন করেছে এবং বিয়ে করে সংসার করছে। সহী বোখারী, বই-৫৫ এর ৫৮৩ নং হাদিসও হুবহু একই কথা বলে। এছাড়াও ইসমাইল কিভাবে ইব্রাহীমের সব চাইতে প্রিয় কিভাবে হয় সেটাও প্রনিধানযোগ্য। কারন জন্মের কিছুদিন পরই হাজেরা সহ তাকে ইব্রাহীম ত্যাগ করে চলে গেছে। এর পর সারাহ এর গর্ভে ইসহাক এর জন্ম হয়েছে। সারাহ এর গর্ভে সন্তান এসেছিল বলেই তো সারাহ হাজেরা ও তার সন্তানকে আর ইব্রাহীমের সাথে থাকতে দিতে রাজী হয়নি। হাজেরা যদি সত্যি সত্যি ইব্রাহীমের বিয়ে করা বউ হতো, তাহলে কি সারাহ ইব্রাহীমকে বাধ্য করাতে পারত নির্বাসন দিতে? তখন দুইটা কেন শতটা বিয়ে করলেও কোন স্ত্রীর কিছু করার ছিল না, সেটাই ছিল প্রচলিত রীতি। তাই সেক্ষেত্রে ইসহাকই হবে ইব্রাহীমের সবচাইতে প্রিয় পাত্র কারন সেই সব সময় তার সাথে থাকত। একজন পিতার কাছে কোন সন্তান বেশী প্রিয় হয়? যে সন্তানকে পিতা জন্মের কিছুদিন পর থেকে দীর্ঘদিন দেখতে পারে না সে , নাকি যে সন্তান পিতার সাথে সব সময় থাকে সে ? সুতরাং ইসমাইলকে কোরবানী দেয়ার যে কাহিনী আমরা এতকাল শুনে এসেছি, তার ভিত্তি খুব দুর্বল। বরং ইসহাককেই কোরবানী দেয়ার বিষয়টিই উক্ত কিচ্ছা কাহিনী অনুযায়ী সঠিক হওয়াই বেশী যুক্তি সঙ্গত।
আমি দেখেছি ইসলামী চিন্তাবিদরা নানা ভাবে এর একটা ব্যখ্যা দেয়ার চেষ্টা করে। বলে যে ইসমাইল যখন জন্মায় তখন ইব্রাহীমের বয়স ছিল ৮৬ আর ইসহাক যখন জন্মায় তখন তার বয়স ছিল ৯৯। কিন্তু এসব কথা না আছে কোরানে, না আছে হাদিসে। এ সময় তারা বাইবেলের রেফারেন্স দেয়। বাইবেলে নাকি সেরকম বলা আছে। আমি জানিনা আসলে তা আছে কি না। কিন্তু আমার প্রশ্ন অন্য। বাইবেলে বলা হচ্ছে- ইসহাককে কোরবানী দেয়া হয়েছিল, সেটা তারা গ্রহন করছে না , বলছে বিকৃত। আবার বাইবেলে বলা আছে ইসরাইলি জাতি থেকে নবী আগমন করবে, সেটাও তাদের মনপূত: না তখনও বলছে বাইবেল বিকৃত। অথচ এসব কথা বাইবেলে লেখা আছে মোহাম্মদের জন্মানোরও শত শত বছর পূর্বে। কি অদ্ভুত আব্দার, যে বাইবেলকে বলছে বিকৃত অথচ সেই বাইবেলের তথ্যকে তারা ব্যবহার করছে প্রামান্য হিসাবে। ইদানিং ইসলামী পন্ডিতরা এ ধরনের উদ্ভট যুক্তি হর হামেশাই প্রয়োগ করে থাকে।তারা বলে ইসলাম হলো একমাত্র সত্য ধর্ম, অন্য সব ধর্ম বিকৃত বা মিথ্যা আর তাদের কিতাব সমূহও সব বিকৃত, অথচ একই সাথে তারা সেসব কিতাবে কোথায় মোহাম্মদ আসবে লেখা আছে তা বের করে উল্লসিত হচ্ছে ছাগলের তিন নম্বর বাচ্চার মত। তার মানে খৃষ্টান আর ইহুদীরা মোহাম্মদের আবির্ভাবের খবর শত শত বছর আগেই পেয়ে তারা বাইবেল বিকৃত করেছিল? মোহাম্মদ যখন আরব দেশে ছিল সেই ৭ম শতাব্দীতে, তখন বাইবেলের শত শত কপি গোটা ইউরোপ জুড়ে ছড়িয়েছিল,কারন তখনই ইউরোপের অধিকাংশ মানুষ খৃষ্টান ধর্মকে গ্রহন করে ফেলেছিল। যদি বিকৃত করতে হয়, তাহলে সেসব গুলিকে জড় করে ধ্বংস করে তারপর নতুন করে একটা সংকলন বের করে সেটা করতে হবে। যেমনটা করেছিল খলিফা ওসমান তার শাসনামলে কোরান সংকলন করার জন্য। কিন্তু এমন কোন নজীর পাওয়া যায়নি মোহাম্মদের পর ইহুদী ও খৃষ্টানরা এ কাজটি করেছে। পরিশেষে, যদি মোহাম্মদকে নবী মানতে অস্বীকার করার জন্যই তারা বাইবেলকে বিকৃত করে থাকে তাহলে তারা সেই বাইবেলে ইসমাইল ও ইসহাকের জন্মের সময় ইব্রাহীমের বয়স কত ছিল সেটা লিখতে যাবে কোন আহাম্মকিতে ? সেটাও তো তারা বিকৃত করে রাখবে যাতে ভবিষ্যতে কোনদিন কেউ ধরতে না পারে। ইসলামী পন্ডিতরা আরও নানা ভাবে বের করার চেষ্টা করে বাইবেলে নাকি মোহাম্মদ সম্পর্কে ভবিষ্যদ্বানী করা আছে।
আর ইসমাইল তত্ত্বটিকে প্রতিষ্ঠিত করার জন্য মুমিন বান্দারা আর তাদের পন্ডিতরা তারস্বরে প্রচার করে যে বাইবেল বিকৃত করা হয়েছে। কারন বাইবেলের পুরাতন নিয়মে পরিস্কার বলা আছে যে ইসহাককেই কোরবানী দিয়েছিল ইব্রাহীম। অথচ বিকৃতির স্বপক্ষে কোন প্রমান তারা দাখিল করতে পারে না। কেউ যদি বলে যে বাইবেল বিকৃত হয়েছে, তাহলে তাকেই আসল একটা বাইবেল হাজির করে প্রমান করতে হবে যে বর্তমানে যে বাইবেল তা বিকৃত। এখন আসল বাইবেলও হাজির করতে পারবে না , আবার বলবে বাইবেল বিকৃত হয়েছে- এ ধরনের যুক্তি যারা প্রচার করে বেড়ায় তারা মানসিকভাবে সুস্থ কিনা তা ভাববার যথেষ্ট কারন আছে। তবে বাইবেলের কিছু ভার্শন আছে যাদের মধ্যে সামান্য তারতম্য দেখা যায়। কিন্তু সে তারতম্যটা কেমন? সেটা প্রকাশ ভঙ্গীর তারতম্য। এটা অনেকটা একই বিষয়ে বিভিন্ন হাদিস বয়ানকারীদের বর্ননার ভিন্নতা যা খুবই নগন্য অথচ মূল বিষয়বস্তু এক। উদাহরন- উপরোক্ত হাদিস ৫৮৪, ঠিক একই ঘটনার বর্ননা দেয়া আছে হাদিস ৫৮৩ তেও। এখানে মূল ঘটনা হুবহু একই , শুধুমাত্র বর্ননা সামান্য ভিন্ন। বাইবেলের বিভিন্ন ভার্শনের পার্থক্য ঠিক এরকমই। আর এই যে পার্থক্য এটা মূলত: বাইবেলের নূতন নিয়মে যাকে গসপেলও বলা হয়। বাইবেলের পূরাতন নিয়ম যাকে তৌরাতও বলা হয় তার সংরক্ষন নিয়ে কোন সমস্যা নেই। বাইবেল যে বিকৃত তা দেখা যায় কোরানের নীচের আয়াতে-
অতএব তাদের জন্যে আফসোস! যারা নিজ হাতে গ্রন্থ লেখে এবং বলে, এটা আল্লাহর পক্ষ থেকে অবতীর্ণ-যাতে এর বিনিময়ে সামান্য অর্থ গ্রহণ করতে পারে। অতএব তাদের প্রতি আক্ষেপ, তাদের হাতের লেখার জন্য এবং তাদের প্রতি আক্ষেপ, তাদের উপার্জনের জন্যে।সূরা বাকারা ২: ৭৯
খেয়াল করতে হবে , মোহাম্মদ যতদিন মক্কাতে ইসলাম প্রচার করত ততদিন কিন্তু বলে নি যে বাইবেল বিকৃত। মদিনায় গিয়ে ক্ষমতা লাভ করে যখন সে ইহুদীদেরকে কচুকাটা করার মত ক্ষমতা অর্জন করেছে তখনই কোরানের মাধ্যমে বলা শুরু করেছে যে বাইবেল মনুষ্যরচিত বা বিকৃত। প্রসঙ্গত: সূরা বাকারা মদীনায় অবতীর্ণ।
বিষয়টা আরও বিশেষ প্রনিধানযোগ্য। ইসহাকের জন্ম বন্ধ্যা সারাহ এর বৃদ্ধাবস্থায় যা একটা অলৌকিক ঘটনা, কিন্তু ইসমাইলের জন্ম স্বাভাবিক ঘটনা প্রায় যুবতী দাসী হাজেরার গর্ভে। বাইবেলে তো বটেই কোরানে বার বার ইসহাককে আল্লাহর বিশেষ সম্মানিত ব্যাক্তি ও নবী হিসাবে বর্ননা করা হয়েছে। অথচ ইসমাইলকে তা করা হয় নি।কেন করা হয় নি ? কারন যখন মক্কায় বসে মোহাম্মদ এসব কোরানের সূরা তৈরী করত, তখন তার অত মনে হয়নি যে ভবিষ্যতে এটা একটা বড় ইস্যূ হয়ে দাড়াবে। অথচ তখন অনেক সূরা সে তৈরী করে ফেলেছে যা অনেক সাহাবী মুখস্তও করে ফেলেছে, তাই তা আর পাল্টানও সম্ভব না, পালটালে তো মিথ্যাবাদী সাজতে হবে। যাহোক, একারনে ইসহাকের বংশজাত ইহুদীরা নিজেদেরকে মহান জাতি মনে করে অথচ সে তুলনায় অবৈধ সন্তান ইসমাইলের বংশধরগন তেমন কোন মর্যাদা দাবী করতে পারে না বা তা নেই ও । মুসলমানরা ঠিক এটাকেই বরদাস্ত করতে পারে না। যেকারনে ইসমাইলকে কোরবানী করা হয়েছিল বলে প্রচার করে তার বংশধর ও ইসলামের অনুসারীদেরকে মর্যাদাবান করতে চায়। দেখা যাক কেমন ভাবে কোরানে ইসহাককে মর্যাদাশীল করা হয়েছে।
তাকে এবং ইসহাককে আমি বরকত দান করেছি। তাদের বংশধরদের মধ্যে কতক সৎকর্মী এবং কতক নিজেদের উপর স্পষ্ট জুলুমকারী। মক্কায় অবতীর্ন, সূরা- আস সাফফাত ৩৭: ১১২
অতঃপর তাদের সম্পর্কে সে মনে মনে ভীত হলঃ তারা বললঃ ভীত হবেন না। তারা তাঁকে একট জ্ঞানীগুণী পুত্র সন্তানের সুসংবাদ দিল অতঃপর তাঁর স্ত্রী চীৎকার করতে করতে সামনে এল এবং মুখ চাপড়িয়ে বললঃ আমি তো বৃদ্ধা, বন্ধ্যা।। মক্কায় অবতীর্ণ, সূরা আয যাযিরাত ৫১: ২৮-২৯
তাঁর স্ত্রীও নিকটেই দাড়িয়েছিল, সে হেসে ফেলল। অতঃপর আমি তাকে ইসহাকের জন্মের সুখবর দিলাম এবং ইসহাকের পরের ইয়াকুবেরও।। মক্কায় অবতীর্ণ, সূরা-হুদ ১১; ৭১
এখন প্রশ্ন হলো-ইসমাইলকে এত মর্যাদাশীল না দেখিয়ে কোরানে ইসহাককে কেন দেখানো হলো ? একটু খেয়াল করলেই দেখা যাবে উপরোক্ত প্রতিটি সূরাই মক্কায় অবতীর্ণ যেখানে মোহাম্মদ ছিল ভীষণ রকম দুর্বল। ইসহাককে এত মর্যাদাপূর্ণ দেখানোর একটাই উদ্দেশ্য ছিল , তা হলো খৃষ্টান ও ইহুদিদেরকে আকৃষ্ট করা যাতে তারা তার কাছে আত্মসমর্পন করে ও তাকে নবী হিসাবে মেনে নেয়। মদীনায় রচিত কোন সূরাতে ইসহাককে এত মর্যাদাশীল হিসাবে দেখা যাবে না। এটা ছিল মোহাম্মদের অত্যন্ত দুরদর্শী একটা কৌশল মাত্র। এ কৌশলে সম্পূর্ন কাজ না হলেও মোটামুটি বেশ কাজ হয়েছিল। মক্কায় তার ইসলাম প্রচারের জন্য অন্তত ইহুদি খৃষ্টানদের কাছ থেকে কিছু ঠাট্টা ও উপহাস ছাড়া আর তেমন কোন বাধার সম্মুখীন হতে হয় নি। তাকে মূলত: কুরাইশদের কাছ থেকেই প্রবল বাধার সম্মুখীন হতে হয়। ইসহাককে মর্যাদাশীল দেখিয়ে মোহাম্মদ যুদ্ধ ক্ষেত্রের দুইটা ফ্রন্টকে ( ইহুদি ও খৃষ্টান) প্রায় নিরপেক্ষ করে রাখতে পেরেছিল। কিন্তু মদিনায় যাওয়ার পর যখন সে শক্তিশালী হয়ে গেল তখন আর এসবের বালাই থাকল না। তখন থেকে শুরু হলো মার মার কাট কাট, ধর মার , হত্যা কর, ইহুদী খৃষ্টানদের বসতি আক্রমন কর, তাদের সম্পদ লুঠ কর, লোকজনদেরকে বন্দী করে দাস দাসী বানাও।তখন বানী হলো- মোহাম্মদ ছাড়া আর কেউ নেই, থাকবে না। সুতরাং এখন গলায় জোর দিয়ে বলা যেতে লাগল যে – ইহদী ও খৃষ্টানরা তাদের কিতাবকে বিকৃত করেছে হাতে কোন প্রমান না থাকা সত্ত্বেও। কারন সেটা না করলে মোহাম্মদের মর্যাদা বাড়ে না, তার নবুয়ত্ব টেকে না, টেকে না তার ইসলাম। আর তাই শুরু হলো ইসমাইলের কোরবানী তত্ত্ব। এটা সেই প্রক্রিয়া যা হিটলার জার্মানীতে শুরু করেছিল তার প্রচার মন্ত্রী গোয়েবলসের মাধ্যমে। সত্যকে মিথ্যা , মিথ্যাকে সত্য শত বার প্রচার করে তারা তাদের ইচ্ছামত সত্য তৈরী করে জার্মান জাতিকে উগ্র জাতীয়তাবাদী করে তুলে অত:পর প্রলয়ংকরী বিশ্বযুদ্ধ শুরু করেছিল। হিটলার যেন মোহাম্মদের কাছ থেকেই টেকনিক টা রপ্ত করেছিল। কেউ কেউ প্রশ্ন করতে পারে, নিরক্ষর মোহাম্মদ বাইবেলের এত সব কাহিনী জানল কেমনে ? উত্তর অত্যন্ত সোজা। ৪০ বছর বয়েসের আগে সে ইসলাম প্রচার শুরু করে নি। আর তীক্ষ্ম বুদ্ধি ও স্মরনশক্তির অধিকারী মোহাম্মদ দীর্ঘ সময় ধরে আশপাশে থাকা ইহুদী ও খৃষ্টানদের কাছ থেকে তাদের কিতাবের কাহিনী শুনেছে আর মুখস্ত করেছে আর সিদ্ধান্ত নিয়েছে কিভাবে তার নিজের কিতাব রচনা শুরু করবে।
আসলে বিষয়টা হলো অন্যত্র। বাইবেলকে বিশ্বাস করলে ইসলাম এর কোন ভিত্তি থাকে না। কারন বাইবেল অনুযায়ী, নবী আসার কথা ইসরাইলি বংশধর থেকে যা বার বার তাতে বলা আছে। কিন্তু মোহাম্মদ এসেছে ইসমাইলের বংশধর থেকে যারা ইসরাইলিয় নয়, বরং আরবীয়। সুতরাং বাইবেল অনুযায়ী, মোহাম্মদ অবশ্যই ভূয়া নবী ও তার ইসলামও ভূয়া। ঠিক এ বিষয়টি ইসলামী পন্ডিতরা খুব ভালভাবেই জানে বলে- জোর করে প্রচার করতে হবে বাইবেল বিকৃত। অথচ খৃষ্টীয় প্রথম শতাব্দীতে সংকলিত বাইবেলের পান্ডুলিপি এখনও যাদুঘরে সংরক্ষিত আছে। বিশেষ করে বাইবেলের পুরাতন নিয়ম নবী সম্পর্কে ভবিষ্যদ্বানীর বিষয়টি যাতে আছে, তা যীশুর জন্মেরও আগে সংকলন করা হয় আর যা তখন থেকেই হুবহু এক আছে আর তা ইহুদীদের জন্য খুব গুরুত্বপূর্ন গ্রন্থ। একে তৌরাতও বলা হয়। ইহুদীরা ভালমতোই জানে যে মোহাম্মদ আসার আগেই তাদের তৌরাত সংরক্ষিত করা হয়েছিল যা মোহাম্মদের সময় সেই মক্কা বা মদিনার ইহুদীদের কাছেও ছিল, এমন কি ইহুদীদের কোন কোন বিবাদ মোহাম্মদ তৌরাতের পাতা খুলে সমাধানও দিয়েছে, সে কারনে ইহুদীরা খুব ভালভাবেই বুঝতে পেরেছিল যে তাদের কিতাব অনুযায়ী মোহাম্মদ কোন ক্রমেই নবী হতে পারে না। অথচ মোহাম্মদ দাবী করছে সে নবী। মোহাম্মদও বিষয়টির গুরুত্ব অনুধাবন করতে পেরে ইহুদীদেরকেই প্রধান শত্রু হিসাবে চিহ্নিত করে আর সেকারনেই কোরান ও হাদিসের পাতায় পাতায় ইহুদীদেরকে ধ্বংস করে দেয়ার কথা বলা হয়েছে, খোদ মোহাম্মদ ক্ষমতা হাতে পেয়ে নিজ হাতেই তা সমাধা করার চেষ্টা করেছে, তারপর তার অনুসারীরাও তা চালিয়ে গেছে তার মৃত্যুর পর। কিন্তু ইহুদীরা শেষ হয়ে যায় নি, ধ্বংস হয়নি তাদের তৌরাত। আর তাই তো সত্য প্রকাশ হয়ে পড়ছে ক্রমশ:।
“সহী বুখারী, বই-৫৫, হাদিস নং-৫৮৪” এই রেফারেন্স টা দিয়ে কি এই হাদিস টা খুজে পাওয়া সম্ভব? আর হিদিস টা কি আদৌ এখনও আছে নাকি আর্কাইভ থেকে মুছে ফেলেছে ? আমিতো খুজে পাইনি। যদি কেউ খুজে পান আমাকে পদ্দতিটা জানাবেন দয়া করে।
তখন অনেক সূরা সে তৈরী করে ফেলেছে যা অনেক সাহাবী মুখস্তও করে ফেলেছে, তাই তা আর পাল্টানও সম্ভব না, পালটালে তো মিথ্যাবাদী সাজতে হবে।
– আল্লাহ আয়াত বাতিল করতে পারেন – আর তার থেকে ভালো আয়াত নাজিল করাতে পারেন
সদালাপ নামক এক ব্লগে দেখি জনৈক শাহবাজ নজরুল আমার ” কে কোরবানী হয়েছিল, ইসমাইল নাকি ইসহাক?” এ নিবন্ধের বিরুদ্ধে সিরিজ লেখা উপহার দিচ্ছেন অতি কষ্ট করে। উনি যে এ বিষয়টিকে এত সিরিয়াসলি নিয়ে তা রিফিউট করার চেষ্টা করছেন তার জন্য তাকে সাধুবাদ জানাচ্ছি। কারন এটুকু করতে গেলেও তাদের মত লোককে একটু পড়াশোনা করতে হয়। এমনিতে তো তারা মহাবিশ্বাসী, পড়া শুনার ধার ধারেন না। যাহোক এবার আসল কথায় আসি- ওখানে তার ব্লগে দেখলাম উনি নিজের মনেই আনন্দিত ও উৎফুল্ল এই ভেবে যে আমার সকল যুক্তি গুলোকে উনি এক ফুৎকারে উড়িয়ে দিয়েছেন। আর দেখলাম কিছু পাঠক বুঝে না বুঝে তাকে তালি দিচ্ছে। বিষয়টা বেশ মজা দিল আমাকে।
কিন্তু আপনি ভাই শাহবাজ নজরুল , যুক্তি তর্ক করতে এসে আপনি প্রথমেই যে ভুলটি করেছেন তা হলো- আপনি কোন একটি বিষয়কে সত্য ধরে তারপর তা প্রমান করার জন্য চেষ্টা চালিয়েছেন, যে কারনে যাকে সত্য ধরেছেন তার বিরুদ্ধে যত রকমই যুক্তি ও তথ্য উপস্থাপন করা হোক না কেন আপনি তা তুড়ি মেরে উড়িয়ে দিয়েছেন।আবার আপনার বিশ্বাসের স্বপক্ষে তুলে ধরা যুক্তির ভিত্তি যতই দুর্বল হোক না কেন তা গ্রহণ করতে আপনাকে অতি মাত্রায় আগ্রহী দেখা যায়। আপনার বিশ্বাস কোরান ও মোহাম্মদ যা বলেছে তা সবই সত্যি বাকি সব মিথ্যা। এভাবে একটা পয়েন্টের ওপর স্থির থাকলে তো আপনার যুক্তি তর্ক চলবে না। আপনার বক্তব্য মোতাবেক কোরান ও হাদিসের যে বিষয় তৌরাত ও বাইবেলে উল্লেখিত আছে তা সত্য ও তাকে আপনি রেফারেন্স হিসাবে ব্যবহার করতে পারেন। পক্ষান্তরে আমার বক্তব্য ছিল- আপনি তৌরাত ও বাইবেলকে বিকৃত বলছেন, কিন্তু আপনার কাছে কোন আসল তৌরাত ও বাইবেল কিতাব নেই যার দ্বারা আপনি তা প্রমান করতে পারেন। আমার আরও বক্তব্য- তৌরাত ও বাইবেল উভয়ই খৃষ্টীয় প্রথম শতাব্দীতে মোহাম্মদেরও জন্মের ৫০০ বছর আগে সংকলিত হয় যা আজকের আকারে দেখা যায়। অথচ আপনি তা মানতে নারাজ কেননা মোহাম্মদ তা স্বীকার করেন নি। এক্ষেত্রে আপনি যে ভুলটি করছেন তা হলো – ঐতিহাসিক ধারাবাহিকতা ও পরীক্ষা নিরীক্ষা কে আপনি তুড়ি মেরে উড়িয়ে দিচ্ছেন। আপনি মোহাম্মদের কথাকেই ঐতিহাসিক তথ্যের উৎস হিসাবে বিনা প্রশ্নে মেনে নিচ্ছেন। কিন্তু পরিতাপের বিষয় মোহাম্মদ কোন ঐতিহাসিক ছিলেন না, উনি ছিলেন একজন স্বঘোষিত নবী। মোহাম্মদকে আপনি বা আপনার মত বিশ্বাসী মানুষরাই প্রয়োজনে ঐতিহাসিক এর ভূমিকায় মাঝে মাঝে অভিনয় করান।অর্থাৎ আপনার সমস্ত যুক্তির উৎস হলো অন্ধ বিশ্বাস। অন্ধ বিশ্বাস থেকে ভাই কোন যুক্তি তর্ক চলে না। আর আপনি সেটা করতে চাইলেও যুক্তিবাদীরা সেটা মেনে নেবে না, হয়ত অন্ধ বিশ্বাসীরা তা মানতে পারে।
তার পরেও , আমি আমার নিবন্ধে যে যুক্তিগুলো দেখিয়েছি তার মূল ভিত্তি কোরান হাদিস , বাইবেল নয়, বাইবেল মাত্র প্রাসঙ্গিক কারনেই একটু এসেছে। আমি দেখিয়েছি আপনার বিশ্বাস করা কোরান হাদিস মোতাবেকই ইসমাইলকে কোরবানী বিষয়টা সন্দেহজনক, সন্দেহাতীত ভাবে প্রমানিত নয়। আপনি নিজেও তার প্রমান করতে ব্যর্থ হয়েছেন অথচ তর্ক যুদ্ধে জয়ী হওয়ার ভাণ করে নৃত্য করছেন। বুখারী শরিফের যে হাদিস নিবন্ধে উদ্ধৃত করা আছে তা যে কোন পাঠক মাত্র পড়লেই বুঝতে পারবে যে ইব্রাহীম ইসমাইলের বিয়ের আগে কখনই তার সাথে দেখা করে নি, অন্তত উক্ত হাদিস মোতাবেক, এর পরে কে বা কাহারা এসে জোর করে বলল – দেখা করেছিল , সেটা বিশ্বাস করার কোন হেতু নেই আমার কাছে কারণ, কোরান হাদিসের চাইতে অন্য কোন কিতাবকে আমি বেশী গুরুত্ব দিতে নারাজ। পরিশেষে আপনার কাছে কয়েকটি প্রশ্ন রাখি-
১। হাজেরা যদি ইব্রাহীমের বিয়ে করা স্ত্রী হয়, তাহলে অন্য স্ত্রী সাহারার সমান তার অধিকার থাকা উচিত, তাই না ? এমতাবস্থায়, সাহারা আব্দার করল আর সাথে সাথে ইব্রাহীম হাজেরা কে পূত্রসহ নির্বাসন দিয়ে দিল, এটা কি অবাস্তব ও উদ্ভট মনে হয় না ?
২। ইব্রাহীমের বিচরণের অঞ্চল ছিল- মিশর , প্যলেষ্টাইন, জর্ডন, লেবানন এসব দেশ,সেখানকার যে কোন জায়গা থেকে মক্কার স্থল পথের দুরত্ব কম পক্ষে ১২০০ কিলো মিটার। এত দুরে রুক্ষ, শুষ্ক ও কঠিন মরুভূমি পাড়ি দিয়ে ইব্রাহীম হাজেরাকে নির্বাসন দিয়েছেল সেই ৪০০০ বছর আগে, এটাও কি শুনতে উদ্ভট লাগে না ?
৩। মক্কার কাবা ঘর যদি আদমের দ্বারা তৈরী হয় ও ইব্রাহীম কর্তৃক পূন: নির্মিত হয়, তাহলে তা ইসলামের আগেই ধারাবাহিকতার সূত্রে ইহুদী ও খৃষ্টানদেরও পবিত্র ও এক নম্বর উপাসণালয় হওয়ার কথা। ইসলামের আগে পৌত্তলিক ছাড়া ইহুদী ও খৃস্টানদের কাছে কি তা পরিত্র উপাসণালয় ছিল ?
দয়া করে আগডুম বাগডুম বক্তব্য না দিয়ে টু দি পয়েন্টে যদি উত্তর দেন তাহলে বাধিত হব।
@ভবঘুরে,
এটা একটা ভালো পয়েন্ট, কোরান হাদিস ডিফেন্ডকারী বক্তব্যকে রিফিউট করার অতি উত্তম উপায় হলো কোরান হাদিসের রেফারেন্স প্রয়োগ করা। এটাই হবে মোক্ষম অস্ত্র।
বানানো গল্প অবাস্তবও হতে পারে আবার কখনো উদ্ভটও হতে পারে, এতে আর আশ্চর্য্যের কি আছে?
এটা কখনো আগে চিন্তা করিনি। এটার জবাব কি হতে পারে আমিতো ভেবে পাচ্ছিনা। :-X
@ভবঘুরে,
ছোট্ট একটা অনুরোধ করছি। দয়া করে সদালাপকে মুক্তমনায় টেনে আনবেন না। এতে করে ওই ওয়েবসাইটটিকে অহেতুক গুরুত্ব দেওয়া হয়। দীর্ঘদিন ধরে আমরা সদালাপকে উপেক্ষা করে আসছি। মুক্তমনা বনাম সদালাপ জাতীয় কোনো বিতর্কে আমরা একেবারেই আগ্রহী নই। এই বিতর্কে নামা মানে মুক্তমনাকে প্রকারন্তরে হাঁটু ভাজ করিয়ে সদালাপের স্তরে নামিয়ে আনা। আপনি যদি শাহবাজ নজরুলকে রিফিউট করতে চান, তবে সদালাপে গিয়ে করতে পারেন। তবে, আমি আসলে তার কোনো প্রয়োজনই দেখি না। আপনি যেভাবে যুক্তি সাজিয়ে যাচ্ছেন, তাতে করে ওই ভদ্রলোক হালে পানি পাবার কথা নয়। বিশ্বাস দিয়ে বিষনিঃশ্বাস ছাড়া যায়, বিতর্ক করা যায় না।
@ভবঘুরে,
আপনি তো ভাই যুক্তি দিয়া ফাটায়া ফেলতেছেন। ঐ সব আলতু ফালতু সদালাপ এইখানে না আনলে ভালো হইত রে ভাই।
আবার আমাকে অন্য ব্লগের একটা মন্তব্যের উত্তর এখানে দিতে হচ্ছে কারন এ নিবন্ধটি নিয়ে এক মহা বিশাল প্রতি নিবন্ধ ফেদেছে জনৈক শাহবাজ নজরুল। আমার আগের করা মন্তব্যে উনি বলেছেন উনি নাকি আমার মূল বিষয় বস্তুর এখনও কোন উত্তর দেন নি। আপনার উত্তরের অপেক্ষায় থাকলাম ভাইজান। আচ্ছা ভাইজান, কোরান হাদিস পড়ে সাচ্চা মুমিন বান্দা হওয়ার লক্ষণ কি খিস্তি খেউড় করা নাকি? কারন দেখলাম আপনার ব্লগে সেটাই আপনি সচ্ছন্দে করে যাচ্ছেন। আর ভাইজান ঢালাও ভাবে বলে যাচ্ছেন বাইবেল বিকৃত , আপনারা প্রায় সবাই এ কাজটা করেন যদি মোহাম্মদের বানান কথা বাইবেলের সাথে না মেলে, তো কথা হলো- আপনার কাছে কি আসল বাইবেল আছে নাকি ? না থাকলে এত জোর গলায় বলেন কি করে বাইবেল বিকৃত ? খোদ মোহাম্মদও তো দেখলাম ইহুদীদের সমস্যা তাদের তৌরাত খুলেই সমাধান দিচ্ছেন তখন তো বলেন নি যে বাইবেল বিকৃত । যখন ইহুদীরা কোনমতেই মোহাম্মদের ধর্ম অনুসরণ করে নি তখনই তিনি বলা শুরু করেন বাইবেল বিকৃত। তো কথা হলো- কেউ যদি কোন দাবী করে, তাহলে তা প্রমানের দায়ীত্ব তার। তাই মোহাম্মদের উচিত ছিল আসল বাইবেল বের করে দেখিয়ে দেয়া যে বাইবেল বিকৃত। মোহাম্মদ তো এখন নেই , আছেন আপনারা, এক কাজ করুন , বেরিয়ে পড়ুন, দেখুন কোথা থেকে আসল বাইবেল আবিষ্কার করতে পারেন কি না। আর একটা কথা ভাইজান,ইসমাইলকেই যদি ইব্রাহীম কোরবানী দিয়ে থাকে ,তার নামটা কোরানে বলে দিলেই তো ল্যাঠা চুকে যেত। কোরানই তো বলছে- আমি কোরানকে অবতীর্ণ করেছি সহজ সরল ভাষায় যাতে তোমরা বুঝতে পারো। তো এখন তো বোঝা যাচ্ছে না কাকে কোরবানী দেয়া হয়েছিল। তাহলে? আপনারা বলছেন বাইবেল অনুযায়ী ইব্রাহীমের বয়স বিবেচনা করলেই দেখা যাবে ইসমাঈলকে কোরবানী দেয়া হয়েছিল। ভাইজানের বুদ্ধি শুদ্ধি কি একেবারে লোপ পেয়েছে ? আপনি বলছেন বাইবেল বিকৃত, তাহলে তার তথ্যও বিকৃত। আর সেই বিকৃত তথ্য দিয়ে আপনি যা প্রমান করবেন তাও হবে বিকৃত। তাই না ? তার মানে আপনার এতরকম গবেষণা সবই বৃথা। বাকী থাকে কোরান। কিন্তু কোরানেও বলে নি ইসমাইলকে কোরবানী দেয়া হয়েছিল। তাহলে? এছাড়া আমার নিবন্ধে আমি সবচাইতে জোর দিয়েছি একটি হাদিসে। ঠিক একই রকম হাদিস বোখারী ও মুসলিম শরিফে আরও আছে। তার মানে এটা ১০০ ভাগ সহী হাদিস। দুর্বল হাদিস বলে অস্বীকার করার উপায় নেই। উক্ত হাদিস অনুযায়ী তো দেখা যায় না ইসমাইলের চলা ফেরা করার মত বয়সের সময় ইব্রাহীম তার সাথে দেখা করে। কখন প্রথম দেখা করে ? যখন ইসমাইল প্রাপ্ত বয়স্ক ও বিয়ে শাদী করে ঘর সংসার করছে। অথচ কোরান বলছে ইব্রাহিম ইসমাইলকে সে যখন চলা ফেরা করার মত বয়সে উপনীত হয় তখন তাকে কোরবানী দিতে যায়। এখানে বাইবেলের কোন দরকারই নেই অহেতুক কোন কিছু প্রমান করতে। খোদ কোরান ও হাদিস থেকেই বোঝা যাচ্ছে এ ঘটনার মধ্যে বিশাল গড়মিল। আপনি বাইবেল থেকে কাসুন্দি না ঘেটে কোরান হাদিস থেকে বিষয়টা পরিষ্কার করে দিন , সেটা যদি যুক্তি যুক্ত হয় আমরা সবাই আপনার কাছে বায়াত নিয়ে তওবা করি। আর আপনি সেটা এ ব্লগেও করতে পারেন যদি সেটা যুক্তি যুক্ত হয়। আমার বিশ্বাস এ ব্লগের মডেরেটররা খুশী মনেই সেটা প্রকাশ করবেন। নিজের ব্লগে কয়টা চামচার সামনে যেমন খুশী লিখে বাহবা নেয়ার চাইতে সেটা বেশী কাজের হবে বলে আমার মনে হয়।
@ভবঘুরে,
মোসনাদে আহমেদ থেকে আপনার জন্যে একটি হাদিস তুলে দিলাম- (হাদিস নং ২৬৫৮)
جبير عن ابن عباس
أن رسول الله صلى الله عليه وسلم قال إن جبريل ذهب بإبراهيم إلى جمرة العقبة فعرض له الشيطان فرماه بسبع حصيات فساخ ثم أتى الجمرة الوسطى فعرض له الشيطان فرماه بسبع حصيات
فساخ ثم أتى الجمرة القصوى فعرض له الشيطان فرماه بسبع حصيات فساخ فلما أراد إبراهيم أن يذبح ابنه إسحاق قال لأبيه يا أبت أوثقني لا أضطرب فينتضح عليك من دمي إذا ذبحتني فشده
فلما أخذ الشفرة فأراد أن يذبحه نودي من خلفه
أن يا إبراهيم قد صدقت الرؤيا
The messenger of God said that Gabriel took Abraham to Jamra al-Aqabah and then Satan appeared to him. Then he stoned Satan with seven stones so he fainted him to faint. Then he came to the middle Jamrah, and Satan again appeared to him. He again stoned him with seven stones causing Satan to faint. He then came to the lower Jamrah, and Satan again appeared to him. Again he stoned Satan, causing him to faint once again. Now when Abraham wanted to slaughter his son Isaac, he said his father, “Father, tie me so I don’t get afraid and my blood splash all over you when you slaughter me.”
আমি সাধারনত: পিছনের কোন আর্টিকেল নিয়ে মাথা ঘামাই না। কিন্ত আজকে ঘামাতে হল। মুক্তমনা ছাড়া অন্য কোন বাংলা ব্লগে ঢু মারি না, কিন্তু আজকে কৌতুহল বশত: সদালাপ নামক এক ব্লগে ঢুকে পড়লাম। জনৈক শাহবাজ নজরুল দেখলাম আমার এ নিবন্ধের ওপরে এক বিরাট নিবন্ধ ফেঁদেছেন। আমার নিবন্ধের ওপর যে কেউ এরকম নিবন্ধ ফাঁদতে পারে তা আমার ধারনাতেই ছিল না। কিন্ত অতীব দু:খের বিষয় তিনি আমার নিবন্ধের মূল বিষয়কে অবজ্ঞা করে একটি অনুল্লেখযোগ্য বিষয়কে রিফিউট করেছেন। তিনি তার মূল বিষয়টি নিবদ্ধ রেখেছেন- বাইবেল মোতাবেক হাজেরা ইব্রাহীমের সাথে বিবাহিতা ছিলেন কি না। অথচ মূল আলোচ্য বিষয় সেটা ছিল না। মূল বিষয় ছিল কোরান হাদিস মোতাবেক ইব্রাহীম কাকে কোরবানী দিয়েছিল কি না। বাইবেলের কোন রেফারেন্সই আমি ব্যবহার করিনি। কারন আমি জানি মুমিন বান্দারা বিশ্বাস করে- বাইবেল বিকৃত, আর তাই বাইবেলের রেফারেন্সও হবে বিকৃত ও বলাবাহুল্য পরিত্যজ্য। অথচ লেখক দেখলাম মহা সাড়ম্বরে তাদের কাছে বিকৃত বাইবেলের বিকৃত রেফারেন্স ব্যবহার করে বহু কথা লিখেছেন।
লেখক দেখলাম আমার উপরেরর বিষয়টির ওপরই একমাত্র আলোকপাত করেছেন। আসলে ওটা মূল বিষয়ই ছিল না। আমি বাইবেল খুলে তাই এ বিষয়ে প্রকৃত ঘটনা কি তা রেফারেন্স হিসাবে ব্যবহার করার দরকার মনে করিনি। প্রাসঙ্গিক কারনেই উপরোক্ত কথাগুলি লিখেছিলাম যা সম্পূর্ন সত্য নাও হতে পারে , কিন্তু তাতে কিছুই যায় আসে না কারন কোরান হাদিস থেকে উদ্ধৃত করেই আমি প্রমান করতে চেয়েছিলাম আসলে ইব্রাহীম কাকে কোরবানী দিয়েছিল। আশ্চর্য ব্যপার, লেখক সে বিষয়ে একদম চুপ। এই হলো আমাদের মুমিন বান্দাদের যুক্তিতর্কের দৌড়।
লেখকের প্রতি আমার প্রশ্ন- আপনাদের মতে বিকৃত কিতাবের রেফারেন্স কি বিকৃত হবে না ? তা যদি হয় , তাহলে আপনার গোটা নিবন্ধের যুক্তিটাও কি বিকৃত নয় ?পারলে আমি কোরান হাদিসের যে রেফারেন্স ব্যবহার করেছি সেটাকে আপনি খন্ডন করুন আর প্রমান করুন আমি অসত্য । যদি তা না পারেন তাহলে আপনার ব্লগে নাকে খত দিয়ে বলুন আপনি যা লিখেছেন তার জন্য ক্ষমাপ্রার্থী।
আপনিতো মশাই এখন সেলিব্রিটি। সবাইকে দাওয়াত দিয়ে খাওয়ানো আপনার জন্য ফরজ কাজ। 🙂
সদালাপে নাম উঠাটা সত্যিই সৌভাগ্যের বিষয়। এর মানে হচ্ছে যে আপনি সঠিক পথেই আছেন। :))
@ফরিদ আহমেদ,
এই প্রশ্নটা আমার মাথায় উঠেছে বহুবার যে, ফরিদ ভাই কি ছায়াহীন কায়া, যার ছবি ক্যামেরায় ধরেনা, যার লেখার স্ক্রীনশট নেয়া যায়না? অভিজিৎ দা, আবুল কাশেম, বিপ্লব পাল, হোরাস, রুশদি, আল্লাচালাইনা, রফিক, কামরান মির্জা, ভবঘুরে, আদিল মাহমুদ, নন্দিনী, আকাশ মালিক কেউ বাকি নেই যার উপর সদালাপের খড়গ উঠেনি। আশ্চর্য ফরিদ ভাইয়ের নাম নেই। কেন? অথচ এই লেখা অথবা এই লেখাটায় লেখকের নাম যদি ফরিদ ভাইয়ের যায়গায় আকাশ মালিক হতো, ১০০% গ্যারান্টি লেখার স্ক্রীনশট দিয়ে সদালাপে আরো কয়েকটা পাতা ভরে উঠতো। বিষয়টা কী, কোন গোপন চুক্তি-টুক্তি, নাকি আল্লাহর আশির্বাদ?
@আকাশ মালিক,
আরে গোপন চুক্তি-টুক্তি বা আল্লাহর আশীর্বাদ না। সমস্যা হচ্ছে ওদের সোর্স আমার বিষয়ে সামান্য একটু সংশয়ে আছে। আমি আস্তিক না নাস্তিক এই বিষয়টার ঠিক মীমাংসা করতে পারতেছে না। কারণ, প্রায়শই দেখে যে আমি হোরাস, ভবঘুরে, আবুল কাশেম, বিপ্ল্ব, রুশদি বা আপনার বিরুদ্ধে কোমর বেধে কাইজ্জাকাট্টিতে মেতে উঠি। বুঝেন সমস্যাটা কত গুরুতর। প্রথম কথা হলো, এই লোক নাস্তিক না হলে নাস্তিকদের আড্ডাখানার পাহারাদার হয় কীভাবে? তাও আবার একদিন দুইদিন না। দীর্ঘকাল ধরে পাহারাদারি করছে। অন্যদিকে নাস্তিকই যদি হয়, তবে অন্য নাস্তিকদের সাথে নিয়মিত ঝগড়াঝাটি করে ক্যান? ঘটনাটা কী?
এখন তাদের সংশয় আরো সমৃদ্ধতর হয়েছে। আমার সম্পর্কে নতুন তথ্য এসেছে বাজারে। এক রবীন্দ্রপ্রেমী ঠাকুর দেবতার কসম খেয়ে বলে দিয়েছে যে, আমি বিশ্ববিদ্যালয়ে জামাতপন্থী শিক্ষক ছিলাম। ছাত্রজীবনে সাইমুম শিল্পীগোষ্ঠীর স্বনামধন্য শিল্পী ছিলাম। এই ঘটনার পরে ওই পবিত্রভূমিতে আমার নাম উচ্চারিত হবার সামান্য যেটুকু আশা ছিলো তাও দূরীভূত হয়ে গিয়েছে।
@ফরিদ আহমেদ,
হাসতে হাসতে আমি শ্যা—-ষ। এটা নতুন ব্লগিয় বানান। আরেকটা কী যেন বলে, হা হা প গে নাকি সামস্থিং? হোয়াটএভার, আমার স্মাইলিই ভাল- 😀 😀 😀 😀 :lotpot: :lotpot: :lotpot: :lotpot:
@ফরিদ আহমেদ,
এধরনের কথায় আমি দোষের কিছু দেখি না। একসময় কেউ যদি মৌলবাদী রাজনীতির সাথে জড়িত থাকে, পরে সব কিছু জানা শোনার পর সে তা ত্যাগ করতেই পারে। আমরা যারা এখানে লেখালেখি করি, তারা জীবনের প্রথমে তো পাঁড় আস্তিক ছিলাম। আস্তে আস্তে জানার চেষ্টা করলাম , সব কিছু মিলাতে চেষ্টা করলাম, কিন্তু মিলল না। কেমন যেন সবকিছু গোজামিল দিয়ে ভরা। জ্ঞান সাধনা তো গোজামিল কোন কিছুকে গ্রহন করতে বলে না। এখনও যে ঠিক নাস্তিক তা নয়, আসলে সত্য জানার চেষ্টা করছি। বিভিন্ন ধর্মের কিতাবগুলি পড়ে বোঝার চেষ্টা করছি ওগুলো সত্যি সত্যি আল্লাহ বা ঈশ্বর কর্তৃক প্রেরিত কি না। আর পড়ে শুনে একটাই সত্য ধরা পড়ছে- আর যাই হোক এ ধরনের গোজামিল ও ভুলে ভরা কিতাব সর্বজ্ঞানী আল্লাহ পাঠাতে পারে না। তাই অপেক্ষায় আছি আল্লাহ কে আবিষ্কার করার।
@ভবঘুরে,
সুন্দর বলেছেন । সবকিছু জানা বা বোঝার পর সে ত্যাগ করতেই পারে । আমার এই কথাটা খুব ভাল লাগলো ।
@ভবঘুরে, মজার বিষয় হচ্ছে আমি আমার পরিচিত যত জনকে এই লেখাটা পড়তে দিয়েছি তাদের কেউ ই মূল বিষয়ে আলোচনা করেনি ৷ ব্লগ এ তেনা পেচানো আর ছাগু শব্দ ২ টা পড়লে ও বাস্তবে দেখি নাই ৷ আপনার লেখাটা কিছু পরিচিতদের পড়তে দিয়ে বাস্তব অভিজ্ঞতা হয়েছে৷
যীশু বলে পৃথিবীতে কেউ এলেই তো মানা না মানার প্রশ্ন উঠবে। যীশু বলে আসলে কেউ জন্ম নেয়নি পৃথিবীতে। যীশু একটি কাল্পনিক চরিত্র মাত্র।
@রাজেশ তালুকদার,
বুঝলাম না দাদা। ঈশ্বরত্ব আরোপ টা কাল্পনিক না হয় হল কিন্তু এই নামেই কেউ আসেনি? একটু পরিষ্কার করে বুঝিয়ে বললে উপকৃত হতাম। আমি কিন্তু আপনার এই মন্তব্য পড়ে বিভ্রান্ত হয়েছি।
@অচেনা,
বিভ্রান্ত হওয়ার কিছু নেই। এটা আসলেই চরম সত্য। যীশু জন্ম সম্পর্কে মোটামুটি ধারনা নিতে আমার ১ম পর্ব ও ২য় পর্ব লেখা দুটিতে কিছুক্ষণ চোখ বুলাতে পারেন। কুড়েমির নেশায় বুদ হয়ে শেষ পর্ব লেখা হয়ে উঠেনি। আরো বিস্তারিত জানতে মন চাইলে গুগল মহাশয়কে হুকুম করুন।
@রাজেশ তালুকদার, আচ্ছা দাদা অবশ্যই দেখব লেখা ২টা।তবে এটা অসমাপ্ত হলে দয়া করে শেশ করার চেষ্টা করবেন!ব্যাপারটা খুব চাঞ্চল্যকর তথ্য। আর হাঁ গুগল দেখব অবশ্যই! ধন্যবাদ দাদা।
যিশুকে কেন ইহুদইরা মেনে নেয় নি ?এটাকি শুধুই হিংসার জন্য নাকি অন্য কোন কারন আছে? জানতে ইচ্ছে হয়।
তাই তো বলি ইহুদিদের প্রতি কিসের এত ঘৃনা, এই লেখাটা না পড়লে হয়ত অনেক কিছুই অজানা থেকে যেত,লেখককে শুভেচ্ছা ও অনেক অনেক ধন্যবাদ। (Y) (F)
@আস্তরিন,
হুম , তা তো হবেনই । খামোখা কি আর মুসলমানরা ইহুদিদের নিপাত চায়? ইসলামের পুরো ইতিহাস ও মোহাম্মদের পুরো কার্যকলাপ পড়লে আপনার মনে হবে বর্তমানে ফিলিস্তিনীরাই ইসরায়েলের সাথে খারাপ ব্যবহার করছে।কারন ঐতিহাসিক ভাবে ঐ ভূখন্ডটা ইহুদিদেরই। প্রথমে রোমানরা ও পরে মুসলমানরাই ওখান থেকে ওদেরকে উচ্ছেদ করে দেশান্তরী করেছিল।না জেনে না শুনে আমরা মুসলমানরা ওদের সম্পর্কে খারাপ ধারনা করি।অথচ ওরা ইসলামের কোন ক্ষতি করেনি। পক্ষান্তরে মোহাম্মদ নিজে তাদেরকে খুন করেছে, ইহুদি জনপদ ধ্বংস করেছে আর আজও দুনিয়ার সমস্ত মুসলমানরা পারলে ওদেরকে শেষ করে দিতে চায়।অথচ এসব মানুষ জানে না আসল রহস্য কোথায়। ওদের একমাত্র অপরাধ ওরা মোহাম্মদের কথা শোনেনি, তাকে নবী মানে নি। আর মানবেই বা কিভাবে? ওদের কিতাব তো মোহাম্মদ কে নবী মানতে বলে না। আর ওরাও তো একেশ্বরবাদী। সেকারনে মোহাম্মদের ইসলাম তারা গ্রহন করবেই বা কেন ?
@ভবঘুরে,
তোমার নবীও আমার, তোমার পবিত্র বইও আমার, তোমার জমিও আমার, তোমার ঈশ্বরও আমার, তোমার উপাসনালয়ও আমার, তোমার মেয়ে-বিবিও আমার, তোমার পিতৃপ্রদত্ত জানও আমার, তোমার তৈরী করা নিয়ম-কানুন সবি আমার। তাল গাছের ছায়া থেকেও দূরে থাকেন কইলাম কারণ তাল গাছটাও আমার।
হে…… হে… পরের ধনে পোদ্দারীটাও কি……………ন্তু আমা………র।
(Y)
ভবঘুরের লেখা সব সময়ই জোরালো এবং সূপাঠ্য।
এটাও তার ব্যতিক্রম নয়।
ভূল সংশোধন
জনাব ভবঘুরে
আপনার প্রোফাইলে গিয়ে এই নিবন্ধটি পাঠ করিলাম। অতিব সময়োপযোগি প্রয়োজনীয় লেখাটা হয়েছে ,মনে হয় রাজনৈতিক দল সমুহের এ ব্যাপারে তেমন একটা লক্ষ নাই। অথচ আমরা অনবরত খাদ্যদ্রব্য মূল্য নিয়ন্ত্রনের জন্য সংগ্রাম, হরতাল করে যাচ্ছি।
খাদ্য দ্রব্য যে কোন সরকারের পক্ষে ততদিন পর্যন্ত নিয়ন্ত্রনের বাহিরে থাকিবে যত দিন পর্যন্ত গন বিষ্ফোরন ও নিয়ন্ত্রনের বাহিরে থাকিবে।
এই গুরুত্বপুর্ন বিষয়টির প্রতিকারের উপর আপনি একটি নিবন্ধ লিখিতে পারেন?
ধন্যবাদান্তে,
আঃ হাকিম চাকলাদার
নিউ ইয়র্ক
@ জনাব ভবঘুরে
আপনার প্রোফাইলে গিয়ে এই নিবন্ধটি পাঠ করিলাম। অতিব সময়োপযোগি প্রয়োজনীয় লেখাটা হয়েছে ,মনে হয় রাজনৈতিক দল সমুহের এ ব্যাপারে তেমন একটা লক্ষ নাই। অথচ আমরা অনবরত খাদ্যদ্রব্য মূল্য নিয়ন্ত্রনের জন্য সংগ্রাম, হরতাল করে যাচ্ছি।
খাদ্য দ্রব্য যে কোন সরকারের পক্ষে ততদিন পর্যন্ত নিয়ন্ত্রনের বাহিরে থাকিবে যত দিন পর্যন্ত গন বিষ্ফোরন ও নিয়ন্ত্রনের বাহিরে থাকিবে।
এই গুরুত্বপুর্ন বিষয়টির উপর আপনি একটি নিবন্ধ লিখিতে পারেন?
ধন্যবাদান্তে,
আঃ হাকিম চাকলাদার
নিউ ইয়র্ক
@আঃ হাকিম চাকলাদার,
আমিও আপনার মতো নুতন করে নিবন্ধটি পড়লাম। ভবঘুরে সাহেবের নিচের কথাটার প্রতি দৃষ্টি আকর্ষন করছি।
হ্যা, আপনার কথা ঠিক, এটা সময়োপযোগি প্রয়োজনীয় একটি লেখা। সত্য জনসমক্ষে প্রকাশ হওয়া দরকার আছে। ভবঘুরেকে লেখাটির জন্য ধন্যবাদ।
@ব্রাইট স্মাইল্,
হ্যাঁ ভাই, ভবঘুরের লেখা বক্তব্য টি বিশেষ তাৎপর্য বহন করে।ধর্মিয় বিশ্বাষ ও শিক্ষ্যার অভাব জন বিষ্ফোরনের মস্তবড় সহায়ক।
ধন্যবাদান্তে,
আঃ হাকিম চাকলাদার
নিউ ইয়র্ক
অসাধারণ বিশ্লেষণ! একটা বাংলা প্রবাদের কথা মনে পরে গেল-শাক দিয়ে মাছ ঢাকার চেষ্টা।
কোরবান উপলক্ষে যথোপযুক্ত পোষ্ট।
জনাব ভবঘুরে,
আমি একজন নিয়মিত মসজিদে যাতায়াত কারি ও ধর্মিয় অনূষ্ঠানাদি পালন কারি। এর পরেও বেশ কিছুদিন যাবৎ মক্তমনা তে আপনার লেখা দেখতে না পেয়ে বেশ অস্থিরতা বোধ করতেছিলাম। অনেক দিন পরে আপনার অসাধারন যুক্তিপূর্ন ইসমাইলের কোরবানীর উপর লেখাটা পাওয়ার সাথে সাথে কয়েক বার ই গোগ্রাসে উদরস্থ করিয়া ফেলিলাম।
ছোটবলার পড়া ইসমাইলের কোরবানির গলপ এখন তো দেখছি সঠিক নয়।
আপনি কি আর একটি বিষয়ের উপর এরুপ সঠিক ইতিহাস তথ্য ও ধর্মিয় পুস্তকাদি দিয়ে সঠিক স্বরুপটা তুলে রতে পারেন?
এটা হল “হজ” ইসলামের ৫ম ভিত্তি স্তম্ভ। যার জন্য প্রতিবৎসর সারা বিশ্বের লক্ষ লক্ষ মুসলমানেরা সউদিকে বিলয়ন বিলিয়ন ডলার আয়ের ব্যবস্থা করিয়া দিয়া সারাজীবনের অপকর্ম মোচন করিয়া বেহেশত যাইবার পথ উন্মোচন করিয়া থাকে।
আমি একবার একজন হজ করে আসা একজন চেয়াম্যান কে বলতে শুনেছিলাম “হজটা এবার সম্পন্ন করে এলাম। কারন ৩০ টা বছর ধরে যে কত অন্যায় করেছি তার তো ইয়ত্তা নাই।“
সারাটা জীবন অন্যায় করে,অন্যের সম্পদ লুন্ঠন করে ধর্মিয় অনুষ্ঠানেকে উপলক্ষ করে কিছু ঘুস হিসাবে ব্যয় করে রেহাই পাওয়ার ব্যবস্থা। কত সুন্দর ব্যবস্থাই না!!
ধন্যবাদান্তে,
আঃ হাকিম চাকলাদার
নিউ ইয়র্ক
@আঃ হাকিম চাকলাদার,
ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য। হজ্জ, যাকাত ও আরবী কোরান নিয়ে একটা পোষ্ট আছে এখানে নীচে-
হজ্জ, যাকাত ও আরবী কোরান সমাচার
পড়ে দেখতে পারেন।
@ভবঘুরে,
হ্যাঁ, আপনার এই পোষ্ট টিও পড়লাম। চমৎকার। তবে এগুলি আন্তর্জালের বাইরেও যেমন পত্রিকা,সাময়িকি,বা পুস্তিকা আকারে সাধারন জন সম্মুখেও প্রচারনার প্রয়োজন ছিল। এখানে তো সবই কোরান হাদিছ হতেই উল্লেখ করা হয়েছে। অসুবিধা কোথায়?এতটা আমাদের আলেমরা ও জানেন না।
ধন্যবাদান্তে,
আঃ হাকিম চাকলাদার
নিউ ইয়র্ক
@মুক্তমনার বিজ্ঞ লেখক বর্গ,
আমি ডঃ বিপ্লব পালের প্রবন্ধ “ইসলাম ও একটি কচলানো লেবুর গল্প” প্রবন্ধে একটি মন্তব্যে বিস্তারিত লিখেছিলাম ,কি ভাবে আমি জনাব শৈকত চৌধুরী ও জনাব অনন্ত বিজয় দাসের প্রবন্ধ “কোরানের মিরাকল ১৯ এর উনিস বিশ” প্রবপ্ন্ধটি আমাকে সাহায্য করেছিল।
গত কাল আর একটি সাবির আলি কর্তৃক কোরানের mathemetical মিরাকল পাইলাম। নিচে সেটা দেওয়া হইল।
কোন বিজ্ঞ লেখক এর উপর ও যুক্তিপুর্ন একটি প্রবন্ধ লিখিয়া মুক্তমনায় প্রকাশ করিলে কৃতজ্ঞ হইব
লিংক গুলি দেখুন:
Shabir Ally – Math Miracles of The Holy Qur’an 1http://www.youtube.com/watch?v=NuQD41eX4s8
Shabir Ally – Math Miracles of The Holy Qur’an 2http://www.youtube.com/watch?v=DA1qqQyzWFY Shabir Ally –
Math Miracles of The Holy Qur’an 3http://www.youtube.com/watch?v=eK7RGITTQZY
ধন্যবাদান্তে
আঃ হাকিম চাকলাদার
নিউ ইয়র্ক
মানব সমাজের বিবর্তনে বাজার তত্ত্ব ছাড়াও আরও অনেক উপাদান কাজ করে। আপনি যে পয়েন্ট উল্লেখ করেছেন তা সামাজিক বিবর্তনের একটা ভগ্নাংশ মাত্র। আমি নিজে ব্যাক্তিগত জীবনে সেটা হাড়ে হাড়ে টের পাই। এক সময় খুব ধার্মিক ছিলাম। তখন মনে একটা প্রশান্তি বিরাজ করত। কোন ভয় বা বিপদে পড়লে তথাকথিত সৃষ্টিকর্তার কাছে আর্জি জানিয়ে মনে কিছুটা বল পাওয়া যেত। এখন খানিকটা অসহায় মনে হয়। বিষয়টা হলো- বিশ্বজগত সৃষ্টি হয়েছে একটা চান্সের মাধ্যমে আর মানুষের সৃষ্টিও অনেকটা চান্সের ব্যপার। ৬ কোটি বছর আগে সারা দুনিয়া থেকে কোন এক অজানা কারনে ( যদিও উল্কা তত্ত্ব একটা আছে) যদি সব ডাইনোসর বিনাশ না হয়ে যেত তাহলে দুনিয়াতে এখন আমরা থাকতাম না এটা প্রায় নিশ্চিত। তার মানে হলো- চান্সের মাধ্যমে সৃষ্টি হয়ে আমরা দুনিয়াতে ঘুরে বেড়াচ্ছি। এ থেকে একটা হতাশাবোধ সৃষ্টি হতে পারে, তা হলো- জীবনের কি কোন উদ্দেশ্য নেই? নিতান্তই উদ্দেশ্যহীন সৃষ্টির এত সম্ভার ? ঠিক এরকম ভাবালুতার কারনেও বহু মানুষ ধর্মীয় রীতি নীতিতে বিশ্বাসী হয়ে পড়ে।এখানে বাজার তত্ত্ব একেবারেই কাজ করে না। জরিপ চালিয়ে দেখা গেছে আমেরিকার অর্ধেকেরও বেশী মানুষ ধর্ম ও সৃষ্টিকর্তায় বিশ্বাসী।কেন সেটা ? সেখানকার বাজার অর্থনীতি হয়ত তাদেরকে ধর্ম নিয়ে বাড়াবাড়ি করাকে নিয়ন্ত্রিত করেছে কিন্তু সময় সুযোগ পেলে তার বহি:প্রকাশ ঘটতে বিন্দু মাত্র দেরী হবে না। যার প্রমান- ২০০১ সালে টুইন টাওয়ার ধ্বংস হওয়ার পর বুশের হুংকার- নতুন করে জিহাদ শুরু হলো।পরে এ বাক্যকে সংশোধন করা হয়। বর্তমানে ইসলামের উগ্রতা বৃদ্ধির কারনে বহু নাস্তিক বা উদারভাবাপন্ন যারা নন মুসলিম তারাও তাদের স্বধর্মীদের প্রতি সহানুভুতিশীল হয়ে সাম্প্রদায়ীক হয়ে পড়ছে আর ইসলাম বা মুসলিমদের প্রতি মনে মনে হুংকার ছাড়ছে।আমার আশে পাশেই আমি অনেক দেখি।
৪র্থ শ্রেনী পাশ যে মুসলমানটির কথা বলা হয়েছে, সোজা কথায় তা বিশ্বাসযোগ্য না। এটা সম্পূর্ন বানান গল্প। আমি চ্যলেঞ্জ দিতে পারি। দারিদ্র যেখানে বেশী ধর্মীয় কুসংস্কার শিকড় গাড়ে সেখানেই বেশী- এটা সর্বজন বিদিত একটা পরিক্ষীত বাস্তব তত্ত্ব।তার জলজ্যান্ত উদাহরন তো সবাই জানে। যেসব মুসলমানরা দরিদ্র তাদের জন্য এটা আরও সত্য। কারন কোরান হাদিসে বলা আছে- যারা দরিদ্র পরকালে তাদের বিচার সহজ করা হবে। তার মানে তারা প্রায় বিনা আয়াসে বেহেস্তে প্রবেশ করবে, আর সেখানে অনন্তকাল ধরে সুখভোগ করবে। অনেকের কাছেই বিষয়টি পাগলামো মনে হতে পারে, কিন্তু একজন নিরক্ষর ও দরিদ্র মুসলমানের জন্য এটা একটা বিশাল স্বান্তনার ব্যপার। যে কারনে দরিদ্র ও নিরক্ষর একজনও মুসলমান পাওয়া যাবে না যে প্রচন্ড ধর্মভীরু না। শুধু মুসলমান নয়, এটা হিন্দু খৃষ্টান বৌদ্ধ সবার ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য। শুধু নিরক্ষর ও দরিদ্রদের কথা বলি কেন? বহু শিক্ষিত ব্যাক্তিরাও শুধুমাত্র বেহেস্তে যাওয়ার আশায় প্রচন্ড ধর্মভীরু। এদেরকে সচেতন করে তুলতে গেলে অর্থনৈতিক উন্নতি যেমন দরকার একই সাথে খোদ ধর্মীয় কিতাব ও রীতিনীতি যে নিতান্তই অসার ও অযৌক্তিক এসবগুলোও যৌক্তিক ভাবে বুঝানো দরকার। ইউরোপে যে মানুষ উদার তার কারন কি খালি বাজার তন্ত্র ও উৎপাদন ব্যবস্থা ? মোটেও না। সেই মধ্যযুগে যখন পাদ্রীরা স্বর্গের টিকেট বিক্রি করত তখন একদল দার্শনিক ও চিন্তাবিদরা অত্যন্ত সাহসিকতার সাথে তাদের অসারতা প্রকাশ করতে থাকে। যে কারনেই ইউরোপে ধর্মীয় সংস্কারবাদী আন্দোলন বেগবান হয়। শুধুমাত্র বাজার ও উৎপাদন ব্যবস্থার পরিবর্তনে আজকের এ পরিবর্তন আসত না।একজন গ্যলিলিওর ৪০ বছর কারাবাস বা একজন ব্রুনোকে পুড়িয়ে হত্যা বাজার ও উৎপাদন ব্যবস্থার চেয়ে অনেক দ্রুত ফলদায়ক হয়। সোজা কথা হলো – ধর্মের অসারতা তুলে ধরতে হবে সেই সাথে অর্থনৈতিক উন্নয়ন ঘটাতে হবে। ধর্মের অসারতা তুলে ধরতে গেলেই লেবুকে একটু চটকাতেই হবে। মাছ ধরতে চাইব আর গায়ে পানি লাগাব না – এমন আব্দার চলে না।মুশকিল হলো- যারা ধর্মের প্রচার করে তারা আসলে বুঝতে পারে না তারা সমাজের কি পরিমান ক্ষতি করছে,তারা যে সব সময় নিজের ব্যবসার ধান্ধায় তা করে তা নয়, অধিকাংশ সময়ই সে হয়ত নিজের প্রচন্ড বিশ্বাস থেকেই কাজটা করে। এ প্রসঙ্গে তাবলিগী জামাতের কথা বলা যেতে পারে।
কোরবানী নিয়ে আপনার আরেকটি লেখা দেখলাম-
কুরবানী ও পশুবলি
একটি প্রাসঙ্গিক নোট লেখেছিলাম। সামনে কোরবানী আসছে তাই তা এখানে দিলাম-
উৎসব করে বর্বর উপায়ে পশু হত্যা এবং মনের পশুকে কোরবানী
ঘরে বসে টিভি দেখছিলাম। সামনে কোরবানীর ঈদ, তাই স্বাভাবিকভাবেই কোরবানী নিয়ে মাতামাতি। এক চ্যানেলে দেখলাম, হুজুর বলছেন, কোরবানীর মাধ্যমে আমরা মনের পশুকে কোরবানী দেব- আর এটাই কোরবানীর আসল তাৎপর্য।
আচ্ছা, পশুদের মধ্যে খারাপ কি আছে? নির্মম অপরাধগুলোকে আমরা সাধারণত পাশবিক বলে থাকি। কিন্তু পশুরা কি ইচ্ছে করলেও আমাদের মত নির্মম হতে পারবে? আমরা নিজেই নিজেদের সৃষ্টির সেরা ঘোষণা দিয়েছি। পশুদের সাথে আমাদের দূরত্ব বৃদ্ধি পেয়েছে বিগত মাত্র কয়েক হাজার বছরে। মানুষ একসময় পশুদের মতই গর্তে বসবাস করত, মাছ-মাংস যা পেত তা কাঁচা খেত, আগুন জ্বালাতে পারত না ।( শিকারী মানুষ পশুদের সাথে সংগ্রাম করেই জীবন কাটাত যেখানে প্রায়ই তারা পশুদের সাথে হার মানতে বাধ্য হত। এখনো আমরা যদি সুন্দর বন বা গহীন কোনো বনাঞ্চলের মানুষের দিকে তাকাই তবে দেখতে পাই পশুদের সাথে মানুষের সংগ্রামের চিত্র।) অর্থাৎ আমরা নিজেরাও পশু অবস্থা থেকেই মানুষ অবস্থায় এসেছি যদিও উচু দালানে বসে তা কল্পনা করা বেশ দূরহ। কিন্তু আমরা যদি দুর্দশাগ্রস্থ উপজাতিদের অবস্থা দেখি, বনে জংগলে বসবাস করা মানুষদের দিকে তাকাই, অন্যান্য প্রাণিদের সাথে আমাদের জেনেটিক ব্যবধান বিবেচনায় আনি তবে তা মেনে নিতে কারো সমস্যা হওয়ার কথা না।
যাই হোক, মূল প্রসঙ্গে ফিরে আসি। আসুন আমরা কতটা খারাপ আর পশুরা কতটা খারাপ তার একটা তুলনা করি এবং মনের পশুকে কোরবানী দেওয়ার আবশ্যিকতা বিবেচনায় আনি-
১। মানুষ কারণে-অকারণে নির্মম উপায়ে যত পশু হত্যা করেছে, কোনো পশু কি সেরকম করেছে? অন্য পশুরা নিজের খাদ্যের ও নিরাপত্তার প্রয়োজনে অন্য পশুকে হত্যা করে। কিন্তু আমরা মানুষেরা অত্যন্ত উদ্ভট ধর্মীয় বিশ্বাসের জন্য লক্ষ-লক্ষ পশুকে হত্যা করছি( কোরবানী, দেবতার উদ্দেশ্যে বলি ইত্যাদি)।
২। মানুষ কর্তৃক কত মানুষ এ পর্যন্ত নিহত হয়েছে , আর আন্যান্য পশু কর্তৃক কত মানুষ নিহত হয়েছে?
৩। মানুষ কর্তৃক যে হারে মানুষ নিহত হয় সে হারে অন্য কোনো প্রাণী কি স্ব-প্রজাতীর কারো কর্তৃক নিহত হয়? গণহত্যা নামক ব্যাপারটা অন্য কোন প্রাণীর মাঝে আছে?
৪। কোনো পশু কি মানুষের মত শৃখলা ভংগ করেছে বা স্ব-প্রজাতীর কারো সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করেছে?
এভাবে তালিকা করলে বিশাল হয়ে যাবে। মূল প্রশ্নটা হল, পশু জিনিসটার মধ্যে এমন কি খারাপ গুণ আছে যে উৎসব করে বর্বর উপায়ে পশু হত্যার মাধ্যমেই “মনের পশুকে” দূর করতে হবে?
@সৈকত চৌধুরী,
লেখাটা আরেকবার পড়া যাক-
বিষয়টি নিয়ে বেনজিন খান একবার লেখেছিলেন যার ফলে উন্মাদ মৌলবাদিরা তাকে তো মেরে ফেলার জোগাড় করেছিল। সে কী হৈচৈ!
‘সব’ শব্দটি বাদ যাবে।
সমগ্র জাতির নয়। এ ইতিহাস নিয়ে বেশ সংশয় আছে।
হুম, এখনো ইহুদিদের সাথে বিতর্ক করতে গেলে তারা সর্বাগ্রেই এ যুক্তি দেখায়।
ঠিক এভাবে না। তীব্র প্রতিবাদ আর তুচ্ছ তাচ্ছিল্য, ব্যঙ্গ বিদ্রুপ করার সুযোগ পেল কোথায়? মদিনায় গিয়েই তো মুহাম্মদ…….
এই কথাটি সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। বার বার এ প্রশ্নটি আমার মনে এসেছে। ইব্রাহিম যে ইসমাইলের সাথে ছোটবেলায় একদম কম (কেউ কেউ বলেন মাত্র একবার) সময় দেখা করতে এসেছেন সে বিষয়ে ইসলামি লেখকরাও একমত। বিখ্যাত সিরাতগ্রন্থ আর রাহীকুল মাকতুম পড়ে দেখুন। নাম বাংলায় লেখে সার্চ দিলে ডাউনলোড লিংক পেয়ে যাবেন।
খাদ্য হিসাবে ঠিক আছে তবে এক্ষেত্রেও প্রাণিদের কষ্ট না দিয়ে হত্যা করা যেহেতু মানুষের পক্ষে সম্ভব তাই এভাবেই তা করা উচিত। আর ধর্মের নামে গণহারে পশুবলি, কোরবানি এগুলো বর্জনের কোনো বিকল্প নেই। আর ধর্মগুলোর আরেকটা সমস্যা মারাত্মক। নৃশংস উপায়ে যদি রক্তপাত না হয় তবে নাকি পশুবলি/কোরবানি হয় না, অর্থাৎ মানুষ যদি কোনো ব্যথাহীন পদ্ধতিতে পশু জবাই আয়ত্ত করে ফেলে তবে ধর্ম তার অনুমোদন দিবে না, ধর্মের চাই রক্ত আর নৃশংসতা।
গিয়েছিলাম আসামে। দেখতে গেলাম কামরূপ কামাখ্যা। বর্বর হিন্দুরা সেখানে একসময় দিত নরবলি। অত্যন্ত আশ্চর্য হয়েছিলাম শোনে, অনেকে নাকি স্বপ্নে দেবির নির্দেশ পেয়ে বলি হওয়ার জন্য মন্দিরে এসে বসবাস করত। কী আজব!
যাই হোক, মূল কথা হল, এই যে ইব্রাহিমের নরবলি বলেন আর কোরবানি যাই বলেন এগুলো মূলত এসেছে পৌত্তলিকদের কাছ থেকে। আর ইতিহাসে দেখা যায় ইব্রাহিম আসলে পুরোপুরি একেশ্বরবাদি ছিলেন না, তার মধ্যে পৌত্তলিকতার সমস্যা ছিল।
ইব্রাহিম, যিসাস, মোজেস সকলকে ইসলামের নবি দেখানোর জন্য মুসলমানরা ব্যগ্র। কিন্তু এরা যে ইসলামের আল্লায় বিশ্বাসী ছিলেন না তা দিবালোকের মতই স্পষ্ট। তাদের ইশ্বরের ধারণা এমনকি নামটাও ভিন্ন ছিল। কিন্তু এগুলো কে বুঝবে? ইমান থাকলে আর ঘিলুর প্রয়োজন কি?
@সৈকত চৌধুরী,
সেইজন্যই তো অন্তর্জালে আসা। কে চায় বেঘোরে প্রাণ হারাতে ? মৌলবাদীদের কাছে তাদের জীবনের মূল্য না থাকতে পারে , কিন্তু আমার কাছে আমারটা অমূল্য।
আমি ইতিহাসের কথা বলিনি। বলেছি মুমিন বান্দাদের বিশ্বাসের কথা। তারা তো বিশ্বাস করে ইসমাইলের মাধ্যমেই মক্কার আরব গোষ্ঠির পত্তন ঘটে। অনেকে সব আরবদের কথাও বলে থাকে।
হু
তারা তো দেখাবেই, কারন এটার পক্ষে যে তাদের প্রমান আছে। তাদের বাইবেল তো বটেই এমনকি কোরানও।
মদিনায় যাওয়ার আগে কুরাইসদের সাথে তাল দিয়ে কিছু তুচ্ছ তাচ্ছিল্য আর ব্যঙ্গ তো করতই।
@সৈকত চৌধুরী,
আপনি ঠিক বলেছেন। “আল্লাহ হচ্ছে প্যাগান গড।” তাদের গড কেই মুহাম্মাদ নিজের মনের মাধুরী মিশায়ে “মুসলমান” বানিয়েছে। মুহাম্মাদের বাবার নাম আবদ-আল্লাহ (আল্লাহর দাস- প্যাগান নাম) ছাড়াও কুরানের নিম্নলিখিত আয়াত গুলো তার সাক্ষ্য বহন করে আছেঃ
31:25
39:38
43:9
43:87</a>
ইয়াকুবকে বাইবেলে ইসরাইল বলা হয় নাকি যেকব?
যে সন্তানটি কাছে আছে তার চেয়ে যে সন্তানটি দূরে আছে তার জন্যে ভালবাসা বেশি হতে পারে। কারণ সে আদর স্নেহ থেকে বঞ্চিত আছে ভেবে তার প্রতি স্নেহের মাত্রা আরো বেড়ে যাবার ও নিজেকে অপরাধী মনে করার মত অবস্থার সৃষ্টি হতে পারে।
মুহাম্মদের পুত্র সন্তান শুধু একটি জন্মেছিল নাকি দুটি? শুনেছিলাম খাদিজার গর্ভেও নাকি একটি পুত্র জন্মেছিল। তার নাম ছিল কাশেম। সেজন্য মুহাম্মদকে আবুল কাশেমও ডাকা হত। সে পুত্রটিও অকালমৃত ছিল। আসলে আল্লার রহমতে মুহাম্মদের পুত্রভাগ্য বড়ই খারাপ। নাহলে পুত্রেরাও বড় হয়ে একেক জন নবী হতে পারতো।
আল্লাহ বা সৃষ্টিকর্তা যে নাই তার বড় প্রমাণ হচ্ছে পশুবলী প্রথা। আল্লাহ থাকলে তিনি নিজে এসেই এই নৃশংসতা বন্ধ করতেন। চমৎকার লেখা বরাবরের মত। ধন্যবাদ।
@তামান্না ঝুমু,
হ্যা ইয়াকুবকেই ইংরেজীতে ওরা যেকব বলে ডাকে।
আসলেই পূত্রভাগ্য খারাপ। তার পূত্ররা নবী হবে এ রকম বাসনা তার মনে বোধ হয় ছিলো। না হলে ইব্রাহীম মারা যাওয়ার পর মোহাম্মদ এতটাই ব্যথিত হয়েছিল যে সে নাকি আত্মহত্যা করতে গেছিল আর তখন জিব্রাইল তাকে ফিরায়।
@তামান্না ঝুমু,
হ্যা ইয়াকুবই যেকব যাকে ইসরাইল বলা হয়েছে বাইবেলে।
কম্পিউটারে ডিস্টার্ব করাতে পোষ্ট দিতে সমস্যা হচ্ছিল। পরে আরও কিছু পয়েন্ট যোগ করেছি , খেয়াল করলে দেখতে পাবেন।
@ভবঘুরে,
কোরানে বলা হয়েছে ইব্রাহিম বার্ধক্যে সন্তান লাভ করেছিল আল্লাহর কুদরতে। তাহলে ইব্রাহীমের পত্নী সারাহ ও উপপত্নী হাজেরার বয়স কত ছিল যখন তারা মা হয়? বৃদ্ধের পত্নীও নিশ্চই বৃদ্ধাই ছিল! কুদরতের বলে সারাহ তাহলে মেনোপজের পরেই মা হয়েছিল!
@তামান্না ঝুমু,
সে আর বলতে !
ইসহাকের জন্ম ছিল এক অলৌকিক ঘটনা।
তবে হাজেরা প্রায় যুবতী ছিল কারন সে তো দাসী ছিল। যুবতী ছিল বলেই ইব্রাহীমের স্ত্রী সারাহ তার স্বামীকে তার সাথে মিলিত হয়ে সন্তান উৎপাদন করতে বলে যার ফলে ইসমাইলের জন্ম হয়।
@তামান্না ঝুমু,
জ্যাকব বলে থাকে। কিন্তু ইসরায়েলও বলা হয়ে থাকে। যখন The Angel Of The Lord (ঈশ্বরের বিশেষ রূপ;যে রূপে সে মানুষের সাথে কথা বলত। যেমন সিনাই পর্বতে মোজেস এর সাথে)এর সাথে জ্যাকব কুস্তি লড়ে, তখন ঈশ্বর তার নতুন নাম করন করেন ইসরায়েল নামে।
25 And Jacob was left alone; and there wrestled a man with him until the breaking of the day.
26 And when he saw that he prevailed not against him, he touched the hollow of his thigh; and the hollow of Jacob’s thigh was strained, as he wrestled with him.
27 And he said: ‘Let me go, for the day breaketh.’ And he said: ‘I will not let thee go, except thou bless me.’
28 And he said unto him: ‘What is thy name?’ And he said: ‘Jacob.’
29 And he said: ‘Thy name shall be called no more Jacob, but Israel; for thou hast striven with God and with men, and hast prevailed.’
30 And Jacob asked him, and said: ‘Tell me, I pray thee, thy name.’ And he said: ‘Wherefore is it that thou dost ask after my name?’ And he blessed him there.
31 And Jacob called the name of the place Peniel: ‘for I have seen God face to face, and my life is preserved.
32 And the sun rose upon him as he passed over Peniel, and he limped upon his thigh
আগের জবাবের সবগুলো ভার্স জেনেসিস এর।