কোথায় স্বাধীনতা
সবাই একই কথা বলে। দোষ ধর্মের নয়, ধর্মীর।
রামের নামে উড়িষ্যার খৃষ্টান পাড়ায় আগুন জ্বালানো হয়। দোষ রামের নয়, রামভক্তের।
কালীমন্দিরে নরবলি হত একসময়। মা-কালীর দোষ নয়, দোষ কালীভক্তের।
আল্লার নামে যুবতীকে হত্যা করা হয় পৈশাচিক প্রস্তরাঘাতে, বিধর্মীর মুণ্ডচ্ছেদ হয় প্রকাশ্য দিবালোকে। দোষ আল্লার নয়, বান্দার।
ঈশ্বরের কল্পিত ইশারাতে ইজরায়েলের ইহুদীরা আরব চাষীদের জমি কেড়ে নেয়। দোষ ঈশ্বরের নয়, ইহুদীর।
আমেরিকার পরক্রান্ত গান লবিরও একই যুক্তি। মারণাস্ত্র মারে না, মানুষ মারে।
শাস্ত্রে বলে ইচ্ছাটা তাঁর, কাজটা মানুষের। ভালটা তাঁর গুণে, মন্দটা তার দোষে। মানুষের আসল নাম নন্দ ঘোষ। … ( এরপর পড়ুন এখানে )
ড. মীজান রহমান, কানাডার অটোয়ায় বসবাসরত গণিতের অধ্যাপক। পঞ্চাশের দশকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়েও শিক্ষকতা করেছেন বেশ ক’বছর। বিশ্লেষনধর্মী প্রবন্ধকার হিসেবেও সুপরিচিত। প্রকাশিত গ্রন্থ সাতটি, সর্বশেষ প্রকাশিত গ্রন্থ ‘দুর্যোগের পূর্বাভাস’ (২০০৭)।
মিজান রহমান এর প্রতি
আপনার লেখাটি এই মাত্র পড়লাম। মনে হয় একহাজার জন মিজান রহমানের খুবই জরুরী
প্রয়োজন আজ এই বিশ্বসংসারে। মসজিদের বাইরে নয়, মসজিদের ভিতরে, মিলাদ মেইফিলে দাঁড়িয়ে লড়ার মত মানুসের খুবই প্রয়োজন। আরেকজন ছিলেন অকুতোভয় ফতেমোল্লা।
তার কবিতা লেখনি পরলে মনে হত এ যুগের নজরুল। মনে হয় চারিদিক দেখেশুনে
তিনি হাল ছেরে দিয়েছেন। আজ সারা পৃথিবীজুড়ে যে বিপর্যয় নেমে আসছে মনে হয়
মিজান, ফতেমোল্লাদের প্রয়োজন সব থেকে বেশী এই বিশ্বসংসারকে অনিবারয্য ধংস থেকে
বাচানোর।
Thanks for the encouraging comments, my fellow humans. But this is all talk, nice talk, perhaps, from our point of view, but talk nonetheless. We need to spring into action. We have to save our little kids. We have to get to them before the sinister hands of the devil do. Let them not get programmed in their cradles as you and I were. They are the only hope for the human race. Let us start the task in our own homes. Otherwise it will be nothing more than vaporous talk.
Regards to you all, Mizan.
ডঃ মিজান রহমানের প্রতিটি লেখা আমি খুবই আগ্রহ নিয়ে পড়ে থাকি। ধন্যবাদ ওনাকে এমন একটি সাহসী লেখনী উপহার দেওয়ার জন্য।
sayed waliulla jemon onar ” kodorjo Asia-te” aaro anek jug aage amader bangalee matha bari oo shongkirno chintar buddijibi oo rajnitibid-der chokhe aangul diye dekhiyechilen dormio oo moddojugiyo borbor-der ekhon-i na rukhle bangalee-r jibone anek durvhug ache temni sei rokom e-juger amader prio dr.Mijan Rahman-er ei lekha-ti abaro amader shobi-ke ta shoron koriye dicche. ki durbhaggo jati amra anek shonar foshol ghore tule-o amra ta dore rakte pari ni.aar er jonne amader aaro anek anek kosto oo jontrona jibone boi-te hobe jotokhon porjonto na amra amader gono-manusher ghani,medhabi oo biggan monoshko rajnoitik neta na pabo.
Dr.Mijan ke amader prandhala suvessha rolo.Bhalo thakun.
ধন্যবাদ, ডঃ মীজান রহমান এমন নির্মেদ ভাষায় আমাদের মনের যন্ত্রনাগুলো প্রকাশ করার জন্য। যারা এ পর্যন্ত কমেন্ট করেছেন তারাও স্বনামখ্যাত, এবং তাদের কমেন্টে তাদের চিন্তাশীলতার প্রকাশ সুষ্পষ্ট। তবুও মনে প্রশ্ন আসে, কিছুই কি করার নেই আমাদের? যত ছোট হোক , যত সামান্য হোক- কিছুই কি আমরা করতে পারিনা? আমার কাছে মনে হয় আমরা হাতি ঘোড়া মারতে গিয়ে মূল কাজটাই করতে ভুলে গিয়েছিলাম। জামাত – শিবির যখন এদেশের গ্রামে গ্রামে- আনাচে- কানাচে তার শাখা প্রশাখা বাড়াচ্ছিল, সহজ সরল মানুষদের, শিশু দের ব্রেন ওয়াশ করছিল, আমরা তখন নিশ্চুপ বসে ছিলাম অথবা হালুয়া রুটি ভাগ করছিলাম। আমরা আশা করেছিলাম, ওই মানুষেরা, ওই শিশুরা নিজে থেকেই দেশের ইতিহাস জানতে পারবে, সারা বিশ্বের ধর্ম ব্যাবসায়ীদের অভিন্ন বৈশিষ্ট গুলো বুঝতে পারবে। বাস্তবে তা হয় নি। ১৯৭৫ থেকে ২০০৮, এই ৩৩ বছরে, সেই মানুষ টি এখন বৃদ্ধ,সেই শিশু এখন যুবা। তাদের সেই অশিক্ষা – কুশিক্ষার ফলাফল আমরা সারা দেশে, সারা সমাজে দেখতে পাব, এটাই তো স্বাভাবিক। জামাত শিবির যত অপকর্ম করুক, একটি কাজ তারা তো কঠোর পরিশ্রম, আর একাগ্রতায় করেছে।নিজেদের কর্মী, নিজেদের শুভাকাংখী তৈরীকরেছে এতগুলো বছর। এখন তো তারা এর ফল ভোগ করবেই।
আমরা কি এমন কিছু করতে পারিনা? আজ যে শিশু জন্ম নিলো তাকে মুক্ত পৃথিবীর জ্ঞান, বিজ্ঞান আলো দেবার চেষ্টা যদি আমরা করি তাহলে সে যখন যুবা হবে তখন্ তার কাজে, জীবন যাপনে আমরা সেই জ্ঞানের প্রভাব দেখতে পাব।
আমার বিশ্বাস – তত দিন ও লাগবে না। ক্ষমতার কাছাকাছি এসে জামাত তার প্রকৃত কুতসিত রুপ ইতোমধ্যেই বের করে ফেলেছে।যতই দিন যাবে, এই দানবের চেহারা ততই ষ্পষ্ট হবে। দেশের মানুষ ঠেকে শিখবে ধর্মীয় মুখোশের আড়ালে কি জানোয়ার লুকিয়ে আছে। চোখ টা সামান্য মেললেই মানুষ দেখতে পাবে তাদের স্বপ্নপুরী পাকিস্তান, আফগানিস্তান আসলে কতটা ব্যর্থ রাষ্ট্র, সেখানে মানুষ কত অমানবিক জীবন যাপন করে। ধর্মীয় উগ্রতা তাদের কোন জাহান্নামে টেনে নিয়ে গেছে – এই পৃথিবীতেই। তখন তারা মাথা থেকে এই জামাতী সিন্দাবাদের ভুত টেনে নামাবেই।
ডঃ রহমান, বিপ্লব, অভিজিত এবং সকল সচেতন লেখক- লেখিকা, পাঠক- পাঠি্কা, আপনারা কেউ কি একক বা সম্মিলিত ভাবে আমাদের কোন কর্মপরিকল্পনা দিতে পারেন? পারেন নেতৃত্ব দিতে? নীতিগত আলোচনা নয়, সুনির্দিষ্ট কর্মপরিকল্পনা। হোকনা তা একটি গ্রাম দিয়ে শুরু। হোকনা তা এমন যে আগামী পাচ বছরে, প্রতি বছর একটি করে গ্রামের শিশুদের শিক্ষা ও সচেতনতা বাড়ানোর জন্য, কুশিক্ষা থেকে বাচানোর জন্য আমরা একটা উদ্যোগ নেব।
আরবী তেলের টাকা হয়তো আমাদের নেই , কিন্তু আমাদের সদিচ্ছা আছে। মনের ভেতরে আছে লূকানো যন্ত্রনা, আছে ডুবন্ত দেশকে ছেড়ে এসে অন্য দেশে স্থায়ী শেকড় গাড়ার অপরাধবোধ। আছে পেছনে পড়েথাকা, মা বাবা – ভাই বোন, আত্তীয়, বন্ধুদের বর্তমান ও অনাগত দূর্ভোগ দেখার কষ্ট। এমন অজস্র প্রবাসী ও দেশী মানুষের অর্থনৈতিক, বুদ্ধিবৃত্তিক ও শারিরীক অবদানে এমন একটি প্রচেষ্টা নিশ্চয় ই সফল হতে পারে।
হ্যা,এয়ার্পোর্টে লালনের মূর্তি দেখলে পাপ হয়, আর হজে গিয়ে পাথরের চারিদিকে ঘুরলে বা পাত্থর চুমা দিলে তাদের কোন অপরাধ হয় না। হুমায়ুন আজাদ এজন্যই বলেছেন –
হিন্দুরা মুর্তিপুজারী, আর মুসলমানরা ভাবমূর্তি পুজারী। মুর্তিপুজা বোকামি, আর ভাবমূর্তিপূজা ভয়াবহ।
সবচেয়ে হাস্যকর লাগে যখন দেখি আমাদের প্রগতিশীল বুদ্ধিজীবিরা ‘ধর্ম’ কে জিইয়ে রাখতে যেনো বদ্ধ পরিকর । বিশেষ করে ‘বাম’রা কয়েক কাঠি সরেস এ ব্যাপারে । নানা কথার মালা গেঁথে ধর্মকে রক্ষার কি প্রাণান্তকর প্রয়াস । ‘ধর্ম’ যেনো অক্ষত থাকে, কেউ যেনো ‘উৎস’ এর দিকে আঙ্গুল না তুলে তা নিয়ে ভাবনার অন্ত নেই তাদের । কেউ কিছু বললেই রে রে করে এরা তেড়ে আসেন না হয়তো মোল্লাদের মতো – কিন্তু তাদের কথার প্যাচ দেখলে যে কোন মোল্লাও লজ্জা পাবে । আমার কাছে সব সময় মনে হয় এরা মোল্লা পুরোহিত দের থেকে কোন অংশে কম ক্ষতিকর নয় । কারণ মধ্যবিত্ত সমাজে এই সব বুদ্দিজীবিদের কথার মুল্য অনেক বেশী । কথায় কথায় মধ্যবিত্ত শিক্ষিত জনেরা এদেরকে ‘কোট’ করেন । মোল্লাদের কথা এই শ্রেণী তেমন পাত্তা দেয়না – কিন্তু এই সব ‘ধর্মে ও আছি জিরাফেও আছি’ গোছের বুদ্দিজীবিরা বড় বেশী বিভ্রান্ত করার ক্ষমতা রাখেন সমাজকে। এদেরকেই বরং আমার কাছে প্রগতির বুকে চেপে থাকা জগদ্দল এক পাথর মনে হয় । এদের ভূমিকা বদলালেই সমাজ অনেক এগিয়ে যেতো তাতে কোন সন্দেহ নেই । ড.মিজান রহমানের লেখা আমাদের কিছুটা হলেও আশা জোগায় ।
মীজান রহমান সত্য কথা বলেছেন। মুখে মুখে না বললেও ঠিকি ভিতরে ভিতরে বাংলাদেসশের অনেকেই মনে করেন একুশে ফেব্রুয়ারীতে পুজার বেদীতে ফুল দিয়ে না জানি কত পাপ করতেছি। লালনের মুর্তি তো ভাঙ্গার কথাই। আসলে সব বিশ্বাসীদের মনের ভিতর একজন তালিবান বাস করে – কারো কম কারো বেশি।
আমি ড. মীজান রহমানের লেখা সব সময়ই খুব আগ্রহ নিয়ে পড়ি। এই মৌলবাদের পাথর সময়ে ড. মীজান রহমানের লেখা যেন এক পশলা সুবাতাস। উনি আগাছার ঝোপ-ঝাড়ে কাঁচি চালান না, কোপ মারেন বিষবৃক্ষের একেবারে গোড়ায়। যেখানে তথাকথিত ‘মৌলবাদ-বিরোধী’ মগজ ব্যাচা বুদ্ধিজীবিরা ধর্ম গ্রন্থে কোন ভায়োলেন্স দেখেন না, দেখেন না কোন অসাম্য কিংবা নারী বিদ্বেষের আলামত, কেবল বিন লাদেন, গোলাম আজম কিংবা আদভানীদের ঘারে দোষ চাপিয়ে তাদের ‘বিশেষজ্ঞীয় বিশ্লেষণ’ হাজির করেই দায়িত্ব শেষ করেন, সেখানে ড মীজান এক উজ্জ্বল ব্যতিক্রম। তিনি প্রশ্নবিদ্ধ করেন অসাম্যের উৎস ওই সব তথাকথিত ঈশ্বর নির্দেশিত পবিত্র বাণিগুলোকেই। তার আগের লেখা ‘হতবুদ্ধি, হতবাক‘ কিংবা ‘আউট অব্ কন্টেক্সট’ প্রবন্ধগুলো তারই সম্যক প্রমাণ। এ প্রবন্ধটিও ব্যতিক্রম নয়। বাংলাদেশের যে ভদ্রলোক একুশে ফেব্রুয়ারীকে হিন্দুয়ানী পুজা অর্চনা মনে করেন, কিংবা লালনের মূর্তিকে অনৈসলামিক আখ্যা দিয়ে ভেঙ্গে ফেলতে চান, তাদের মৌলবাদী বিশ্বাসের উৎস ঠিক কোথা থেকে উঠে আসে, সেটা যে কোন চিন্তাশীল মানুষই বুঝবে। অথচ বোঝেন না আমাদের মগজ ব্যাচা বুদ্ধিজীবিরা।
আমাদের দরকার আছে মীজান রহমানের মত ‘পলিটিকালি ইনকারেক্ট’ লেখকদের – যারা সাদাকে সাদা আর কালোকে কালো বলার সাহস রাখেন।
দুই বাংলার বুদ্ধিজীবিদের একটা বিরাট দোষ হচ্ছে মৌলিকত্বের অভাব এবং বুদ্ধিজীবি হওয়া অপেক্ষা বুদ্ধিজীবির ঠাট এবং ডাঁট বজায় রাখা অনেক ক্ষেত্রেই বেশী দরকারী হয়ে দাঁড়ায়। এর সাথে ধর্মের ব্যাপারটা হচ্ছে -মানো কি না মানো ব্যাপার না-কিন্ত দেখাতে হবে আমি ‘তোমাদের সাথে” আছি–
চাষাদের সাথে বুদ্ধিজীবিদের পার্থক্য হচ্ছে -চাষিদের জীবনে হাওয়ার ওপরা বাঁচার কোন চান্স নেই-তাই লোকগুলো সলিড-কোনটা ধর্ম আর কোনটা অধর্ম ঠিক ই বোঝে। এদেরকে মোটেও কেও বোঝাতে পারবে না “লালনগীতি” বিধর্মীর গান-কারন এদের কাছে যা জীবনের গান-যা শান্তির পরিত্রান তাই ধর্ম। সমস্যাটা এই হাওয়া খেকো হাওয়াই ভেসে থাকা বুদ্ধিজীবিদের। এরা রামেও আছে, ছালাতেও আছে-একটু লিব্যারাল, একটু ধার্মিক , একটু নারীবাদি টাইপ না দেখাতে পারলে এদের মূল্যবৃদ্ধি হয় না। আর কাকে ছেড়ে কাকে ধরবেন? প্রথমেই তাহলে আমাদের সাহিত্যিকদের ধরতে হয়।