খুরশীদ এ. চৌধুরী
কিছু রক্ষণশীল সমাজে অতীতকাল থেকেই যৌনতা সম্পর্কে ভুল ধারণা প্রচলিত আছে যে প্রাণিযৌনতা শুধু বংশবৃদ্ধির জন্য । বাস্তবে বায়োলজিক্যাল শ্রমবিভাজনে প্রাণিপ্রত্তঙ্গ শুধুমাত্র একটি কাজের উদ্দেশ্যে সৃষ্টি হয় না । যেমন হাত-পা শুধু চলাফেরার জন্য নয়, আত্মরক্ষাসহ বিভিন্ন কাজের হাতিয়ার হিসেবেও এর ব্যবহার, তেমনি খাদ্য শুধু শারীরিক জ্বালানীর প্রয়োজনে নয়, মস্তিষ্কের রিফ্রেশমেণ্ট (‘তৃপ্তি’) হিসেবেও প্রয়োজন । প্রাণিপ্রত্তঙ্গ এবং প্রাণীর নেচারাল ইন্স্টিংক্ট ন্যূনতম জ্বালানী (যেমন খাদ্য, শ্বসনক্রিয়া) এবং ন্যূনতম প্রত্তঙ্গের দ্বারা সর্বোচ্চ কর্ম সম্পাদনের জন্য বিবর্তিত হয় । প্রতিটি প্রাণীই একটি একক প্রত্তঙ্গ এবং একক ইন্স্টিংক্ট দ্বারা একাধিক কর্ম এবং একাধিক শারীরবৃত্তিয় প্রয়োজন সম্পাদন করে । প্রাণীর বংশবৃদ্ধির জন্য যৌনতা আবশ্যিক নয় । প্রাকৃতিকভাবে অযৌন প্রজনন যেমন একাধিক প্রাণীতে রয়েছে তেমনি যৌন প্রজননে অভস্ত্য প্রাণীর বংশবৃদ্ধি অযৌন প্রক্রিয়ায় করা সম্ভব । ‘ঘুম’-এর মতো যৌনতা স্নায়ু ও মস্তিষ্কের কর্ম, হরমোন সেক্রেশনের স্বাভাবিতার এবং এসবের কর্মকাণ্ড বৃদ্ধির জন্য প্রয়োজন। সমকামিতা এবং স্বমেহন সহ যেকোন যৌন অভ্যাসই যৌনকর্ম ।
বাংলাদেশের মতো রক্ষণশীল সমাজলোতে পুরুষদের অনেক বয়স পর্যন্ত স্বমেহনে অভ্যস্ত থাকার প্রবণতা রয়েছে । এখানকার সমাজে নারী-পুরুষ যৌনতার ব্যক্তিস্বাধিনতা নেই, বিবাহপ্রথা তরুণদের নাগালের বাইরে, স্বমেহনে অভ্যস্ত একজন পুরুষ প্রায়-মধ্য বয়সে উপনীত হবার পর একজন নারীর সারাজীবনের ব্যয়বহন করার সামাজিক প্রতিশ্র“তির মাধ্যমে পৈতৃকসম্পত্তি রক্ষার্থে কিংবা ধর্মবিশ্বাসী মানুষের সংখ্যাবৃদ্ধির জন্য বংশধর জন্মদেবার মানসে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হচ্ছে এবং নারী এই প্রথার মাধ্যমে বিকৃত পুরুষদের অধীনস্ত থাকছে, এই উদ্ভট জীবনাচরণ আমাদের বংশধরদের জিনগত বৈশিষ্ট্যে খারাপ প্রভাব ফেলতে সক্ষম । উপমহাদেশের প্রচলিত বিবাহ প্রথা নারীকে অর্থনৈতিক ও সামাজিকভাবে পুরুষনির্ভর করে দিচ্ছে । সন্তানরা জন্ম নিচ্ছে ব্যক্তিত্ববিহীন নারীর কোঁখে ।
মানুষ বায়োলজিক্যালি সিমেট্রিক প্রাণী, নারী এবং পুরুষ ‘বিপরীত’ লিঙ্গ নয়, বরং পরষ্পরের ‘আইডেণ্টিক্যাল’ (যেমন বেশিরভাগ আর্থ্রোপোডা প্রাণীগুলো অ্যাসিমেট্রিক) । সত্যিকার পুরুষতন্ত্র কিংবা নারীতন্ত্র কখনোই সম্ভব নয় কারণ সত্যিকার ‘নেচারাল পুরুষ’ ‘সুনারী’র প্রতি আকৃষ্ট এবং শ্রদ্ধাশীল হবে, এটাই স্বাভাবিক (এমনকি সমকামী হলেও) । তথাকথিত ‘পুরুষতান্ত্রিক’ কিংবা ‘নারীতান্ত্রিক’ সমাজব্যবস্থা বাস্তবে ‘বিকৃতপুরুষতান্ত্রিক’ এবং ‘বিকৃতনারীতান্ত্রিক’ । বিকৃতপুরুষতান্ত্রিক ও বিকৃতনারীতান্ত্রিক সমাজে অল্প বয়েস থেকেই ‘নেচারাল নারীত্ব’ এবং ‘নেচারাল পৌরুষ’ উভয়কেই অবদমনের ভেতর দিয়ে গড়ে তোলা হয় । বায়োলজিক্যালি সব পুরুষ সব নারীর চেয়ে বুদ্ধিমান বা শক্তিশালী হবে তা কখনোই নয় । অথচ বিকৃতপুরুষতান্ত্রিক ধর্মগুলো বিকৃত সমাজব্যবস্থার মাধ্যমে কুনারী এবং কুপুরুষ সৃষ্টি করে যাচ্ছে । অলঙ্কার ও সাজগোজ বিহীন প্রতীকী ‘পুরুষ’ এবং অতি-অলঙ্কার ও অতিসাজগোজের প্রতীকী ‘নারী’ -দের ‘ডেমো’-রা সমাজ ও রাষ্ট্র চালাচ্ছে কিংবা সে’নিয়মে চলছে আর অন্যদেরকে বাধ্য করছে এই সমাজ ও রাষ্ট্রের নিয়মে চলতে । অবদমন সবচেয়ে বড় অপসংস্কৃতি । এখানে ‘নারী’ ও ‘পুরুষ’ হচ্ছে ‘প্রতীক’-ধারী ‘নারী’ ও ‘পুরুষ’ । বায়োলজিক্যাল বাস্তবতার বিকৃত ব্যখ্যা এবং অতিপ্রাকৃতিক বিশ্বাস – এ দু’টোর সমন্বয় আমাদের উপমহাদেশের সমাজকাঠামোর মূল/অন্যতম মূল ভিত্তি, আর এ অঞ্চলের রাষ্ট্রগুলোর উদ্ভব হয়েছে এই সমাজের সংরক্ষক শক্তি হিসেবে ।
একটি গণতান্ত্রিক দেশে ধর্মীয়/সামাজিক-দৃষ্টিভঙ্গীমূলক শাসন কিংবা রাষ্ট্র কর্তৃক ধর্মীয় সামাজিক দৃষ্টিভঙ্গী সংরক্ষণ কোন ক্রমেই কাম্য নয় । যে বিষয়ের মূল উত্স্য হচ্ছে অতিপ্রাকৃতিক বিশ্বাস কিংবা বিকৃত ধারণা তা আধুনিক কোন গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের আইন ও বিধানের উত্স্য হতে পারে না, কারণ গণতন্ত্র স্রেফ সংখ্যাগরিষ্ঠের শাসন নয়, প্রতিটি মানুষের স্বাধিনতার অধিকার । সত্যিকার গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র ব্যক্তিজীবনে হস্তক্ষেপের অধিকার রাখে না । মানুষ জন্ম নেবার সময়ে পৃথিবীর বুকে জন্ম নেয়, কোন রাষ্ট্রের প্রয়োজনে নয়, রাষ্ট্র মানুষের জন্ম দেয় না । গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র হচ্ছে তাই যা মানুষের নিরাপত্তা, যোগাযোগ, অর্থনৈতিক অধিকার নিশ্চিতকরণের পাশাপাশি মানুষের ব্যক্তিস্বাধিনতার প্রতি শ্রদ্ধাশীল । ধর্মরাষ্ট্র, মার্ক্সবাদী রাষ্ট্র, নাত্সীবাদী (সামাজিক জাতীয়তাবাদী), ফাসীবাদী রাষ্ট্রগুলো ব্যক্তিস্বাধিনতার সবচেয়ে বড় শত্র“ ।
আমাদের বংশধরদের জন্য আমরা কেমন সমাজ ও রাষ্ট্র দিয়ে যাবো? – মুক্তমনা-পাঠকদের মন্তব্য চাইছি।
(লেখাটির মৌলিকতা রক্ষার জন্য আমি রেফারেন্স এবং উদ্ধৃতি এড়িয়ে চলছি। শুধু কিছু হিণ্টস্ দিচ্ছি। বাংলা লিখনে (এবং বাংলা টাইপিংয়ে) আমার কিছু দুর্বলতা রয়েছে, আবার কিছু বিষয় এখনই ব্লগপোস্টে অনাগ্রহী।)
‘সব মানুষ সমান’ – কথাটি বিজ্ঞান-এর মাধ্যমে কখনো প্রমাণ করা সম্ভব ? ‘সব মানুষ সমান’ – কথাটির ক্ষেত্রে একটি কথা চলে আসে – দুজন মানুষ পরষ্পরের ‘আইডেণ্টিক্যাল’ – অন্য প্রাণীর তুলনায়। এখানে ‘সব মানুষ সমান’ বিষয়টি দর্শনগত। বিজ্ঞান যেভাবে কাজ করে তাতে ‘সব মানুষ সমান’ বিষয়টির চেয়ে ‘অন্য প্রাণীর তুলনায় সব মানুষ পরষ্পরের আইডেণ্টিক্যাল’ বিষয়টি প্রমাণ সম্ভব। এখানেই দর্শনের অনুপ্রবেশ – বিজ্ঞানকে অস্বীকার করে নয়, তার সীমাবদ্ধতাকে মনে রেখে। দার্শনিকদের দৃষ্টিতে বিজ্ঞানের একটি সীমাবদ্ধতা আছে। তেমনিভাবে ‘বায়োলজি অব জেণ্ডার’-এর সৃষ্টি। জেণ্ডার স্টাডিজ, জেণ্ডার সোশিওলজি, ফেমিনিস্ট ভিউজ, প্রভৃতি বিষয়গুলো ‘বায়োলজি অব জেণ্ডার’-এর বিষয়বস্তু। বিষয়টি বিজ্ঞান এবং তার সীমাবদ্ধতা – উভয়কেই কাজে লাগিয়ে। এখানে আমার অবস্থান ফিলসফার হিসেবে নয়, ফিলোসফিস্ট হিসেবে। ‘বায়োলজি অব জেণ্ডার’ একটি বিষয় বিজ্ঞানের দৃষ্টিতে প্রমাণ করে – ‘অন্য অনেক প্রাণীর তুলনায় মানুষের লিঙ্গভেদ পরষ্পরের আইডেণ্টিক্যাল’। আমি চাচ্ছি মুক্তমনার লেখক-পাঠকরা বিষয়গুলো নিয়ে নিজেরাই খুঁজুন, পড়–ন, রেফারেন্স নিয়ে পড়ার চেয়ে একটি বিষয় নিয়ে খোঁজ করা চিন্তা-ভাবনার জগতের জন্য বেশি উপযোগী। ‘বায়োলজি অব জেণ্ডার’ নিয়ে যাঁরা কাজ করেন তাঁরা ব্যক্তিগতভাবে আমার সাথে যোগাযোগ করতে পারেন। উদ্দেশ্য হচ্ছে এ বিষয়ে কিছু শক্তিশালী বাংলা লেখক আবির্ভূত হোন। (পেশায় ব্যবসায়ী হওয়ায় আমার সময়স্বল্পতা রয়েছে)।
পুনশ্চ:
বিভিন্ন সভ্যতার তারতম্যে মানুষের জাতিগত জেনেটিক বৈশিষ্ট্যেও পার্থক্য রযে়ছে। শুধু স্বভাব কিংবা রোগ নয়, সভ্যতা নির্মাণ, জাতিগত বুদ্ধিমত্তা, যুক্তিবোধের ক্ষেত্রে জাতিগত জেনেটিক চরিত্র বিদ্যমান। প্রাণিঅভ্যাস, জীবনাচরণ, মস্তিষ্কেও ব্যবহার ও প্রজনন চরিত্র, প্রজনন সম্পর্ক জাতিগত জেনেটিক বৈশিষ্ট্যের প্রভাবক। প্রজনন বৈচিত্র্য জেনেটিক বৈশিষ্ট্যে ভালো প্রভাব আনতে পারে। অল্প বযে়সী পুরুষের সন্তানের বুদ্ধিমত্তা বেশি হওয়ার সম্ভাবনা অপেক্ষাকৃত বেশি থাকে । তেমনি পিতা-মাতার ডেমোগ্রাফি বৈচিত্র্যময় হওয়া ভালো। উপমহাদেশে বিবাহিত দম্পতিদের বেশিরভাগই একইরকম – স্ত্রী বযে়সে ছোট, ব্যক্তিত্বহীন, পরাধীন, পুরুষ অপেক্ষাকৃত বযে়সী, পোশাক-বেশভূষায় বৈচিত্রহীন। একজন পুরুষের টেস্টোস্টেরন হরমোনের সেক্রেশন সবচেযে় বেশি হয় গড়পরতা ২০ বছর বযে়সে।
@খুরশীদ এ, চৌধুরী, এইটা খুবই সত্য যে একটি জীব কর্তৃক প্রদর্শিত প্রায় সকল ফিনোটাইপের পেছনেই পরিপুর্ণ বা আংশিকভাবে এক বা একাধিক জিনকে দায়ী করা যায়। এবং টেস্টোস্টেরন কি এবং কিভাবে এটা কাজ করে সেটাও আমি জানি। এই কথাটার মানে কি এবং সুত্র কি?
টেস্টোস্টেরন হচ্ছে একটি স্টেরয়েড আন্ড্রোজেন যার কাজ শরীরের স্কেলিটাল মাসল টু এডিপোস টিস্যু মাসের অনুপাত বৃদ্ধি এবং হেয়ার ফলিকল সেল কার্যকর করে চুল গজানো। শুধু পুরুষই কি টেস্টোস্টেরন নিষ্কৃত করে, নারী করে না? বয়সন্ধিকালে পুরুষ নারী উভয়েই সবচেয়ে দ্রুত বৃদ্ধির ভেতর দিয়ে যায় বলে এ সময়ই তাদের টেস্টোস্টেরন সবচেয়ে বেশী নিষ্কৃত হবার কথা। যদি ২০ বছরে পুরুষ সবচেয়ে বেশী টেস্টোস্টেরন ছাড়ে আপনার কথা সত্যই ধরে নেই তারপরও প্রশ্ন থেকে যায় তাতে কি? এর উপর ভিত্তি করে আপনি ঠিক কি বলতে চাচ্ছেন?
@ সুপ্রিয় মডারেটরবৃন্দ,
লেখক যে এখানে বারংবার একের পর এক ভূল এবং প্রতিষ্ঠিত জীব বিজ্ঞানের সাথে অসংগতিপূর্ণ বক্তব্য পরিবেশন করে চলছেন তা কোন মুক্তমনা সদস্যের নজরে তো আসছেই না বরং তারা বাহবা দিয়ে চলেছেন। প্রথমে তিনি দাবী করলেন যে,
এবং পরে,
এখনে লক্ষণীয় যে লেখক দেহের সিমেট্রি এবং অ্যাসিমেট্রিকে প্রাণীর লিঙ্গের সাথে সম্পৃক্ত করছেন যা কোন জীব বিজ্ঞানে কথা নয়। জীব বিজ্ঞান সম্পর্কে যারা ন্যূনতম জ্ঞান রাখেন তারা জানেন যে জীবের সিমেট্রি এবং অ্যাসিমেট্রি দেহশৈলীর ওপর নির্ভর করে তার প্রজননগত ভৌত গুনাগুনের ওপর নয়। প্রতিটা মেরুদণ্ডী প্রাণীই সিমেট্রিক এবং পুং লিঙ্গ ও স্ত্রী লিঙ্গের অস্তিত্ব মানুষসহ প্রতিটা মেরুদণ্ডী প্রাণীতে বিরাজমান। আরও জানতে হলে দেখুন এখানে
লেখকের কাছে রেফারেন্স চাওয়া হলেও লেখক আমার প্রশ্নের কোন উত্তর দেন নি।
এধরনের বিজ্ঞান বিরোধী মারাত্মক ভুলে ভরা লেখা কি করে মুক্তমনার প্রথম পাতায় বাহবা কুরাচ্ছে সে প্রশ্ন আমি সকলকে করছি। ধন্যবাদ।
@সংশপ্তক, আমি লেখাটা দেখার পরই ভেবেছিলাম প্রশ্নগুলো করবো, কিন্তু সময়াভাবে এ কয়দিন মুক্তমনায় লগইনই করতে পারিনি দেখে আর করা হয়নি। শুধু সিমেট্রি এবং অ্যাসিমেট্রিকে প্রাণী প্রসঙ্গেই নয় লেখক এখানে যৌনতারও বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা এনেছেন, বিবর্তনের প্রক্রিয়ার কথাও উল্লেখ করেছেন। যৌনতা এবং বংশবৃদ্ধির ব্যাপারটা তিনি যেভাবে ব্যখ্যা করেছেন সেটাও বোধ হয় ঠিক বৈজ্ঞানিকভাবে এখনও সম্পূর্ণভাবে সমর্থিত নয়, আমি যতদূর বুঝি বিজ্ঞানীরা এখনও যৌনতা নিয়ে শেষ কোন সিদ্ধান্তে আসতে পারেননি।
লেখায় বৈজ্ঞানিক কোন প্রসংগ টানলে সেটা বৈজ্ঞানিক তথ্যের ভিত্তিতেই লেখা উচিত। যেমন ধরুন মানুষের মধ্যে যৌনতা এখন আর বংশবৃদ্ধির মধ্যে সীমিত না থাকলেও বেশীরভাগ যৌনপ্রজ প্রাণিতেই কিন্তু বংশবৃদ্ধি করাটাই যৌনকর্মের মূল লক্ষ্য হিসেবে কাজ করে। সমকামিতা বা স্বমেহনের মত ব্যাপারগুলো কিছু কিছু প্রাণীতে দেখা গেলেও সেটা মনে হয় বেসিক ট্রেন্ড নয়। অনেক জীববিজ্ঞানীই এই প্রশ্নটি করেছেন এবং এ নিয়ে গবেষণাও করছেন। লেখক এভাবে সিদ্ধান্ত না টেনে যদি উল্লেখ করতেন যে যৌনতার মূল লক্ষ্য এখনও আমাদের কাছে সম্পূর্ণভাবে বা বৈজ্ঞানিকভাবে পরিষ্কার নয় তাহলে অবশ্য কিছু বলার থাকতো না। বৈজ্ঞানিকভাবে যে ব্যাপারগুলোতে এখনো অন্তিম সিদ্ধান্তে পৌঁছানো যায়নি সেগুলোকে এভাবে উপস্থাপন করলে পাঠকদের মধ্যে বিভ্রান্তির জন্ম দিতে পারে। লেখককে অনুরোধ করবো ভবিষ্যতে তার লেখায় বিজ্ঞানভিত্তিক কোন প্রসংগ টানলে সেটার সাথে যেন সঠিক রেফারন্সগুলোও যোগ করে দেন। এই লেখাটি সম্পূর্ণভাবে সামজিক দৃষ্টিকোণ থেকে লিখলে অবশ্য আমার তেমন বেশী কিছু বলার থাকতো না।
@বন্যা আহমেদ,
একটু চিন্তা করে দেখুন যে , কিছু বিজ্ঞানী দিনের পর দিন না ঘুমিয়ে , সাব-জিরো তাপমাত্রায় শুধু কৌটার খাবার আর বাসি স্যান্ডউইচ খেয়ে জীবদেহের আদি রহস্য উদঘাটনে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। সেখানে এরকম ‘ এক খোঁচায় সব সমাধান’ পোস্ট পড়লে মনে কি রকম অনুভুতি জাগা স্বাভাবিক ? আরও দূঃখ লাগে যখন এর সাথে ফুলের বাহার আর হাত তালি যুক্ত হয়। রিচার্ড ডকিন্স এ ধরনের আচরন প্রসঙ্গে বাধ্য হয়ে বলেছিলেন :
“Perhaps he is genuine when he speaks of non-scientific subjects? But a philosopher who is caught equating the erectile organ to the square root of minus one has, for my money, blown his credentials when it comes to things that I don’t know anything about.”
[Postmodernism disrobed , Nature, 9 July 1998, vol. 394, pp. 141-143.]
@সংশপ্তক,
কিছুদিন আগে ইউনিভার্সিটি কলেজ লন্ডনের ডিবেইটিং সোসাইটির একটি কেইস ছিলো ‘সরকারের কি আর্টস ফান্ড করা উচিত কিনা?’ তাদের ওয়েবসাইটে দেখলাম। আমার মত হচ্ছে অবশ্যই না, যেই পৃথিবীতে প্রতিবছর দুই মিলিয়ন মানুষ মারা যায় শুধু ম্যালেরিয়াতেই, সেই পৃথিবী এখনও এতোটা বিলাসবহুল নয় যে একে আর্টস ফান্ড করতে হবে।অবশ্যই আমি আর্টস এর বিরোধিতা কোনোভাবেই করছি না, তবে আর্টস করতে ফান্ডিং লাগে না। আর্টিস্ট কাজ ভালো জানলে খাটতে জানলে নিজেই বেরিয়ে আসবে জনারণ্য থেকে। ফান্ড করে বিশাল টাকা ঢেলে তাদের অক্সফোর্ড কেইমব্রিজে বসিয় রাখাটা অর্থহীন। অপরপক্ষে বিজ্ঞান করতে টাকা লাগে, টাকা ছাড়া আধুনিক বিজ্ঞান সম্পুর্ণই অচল, একটা মামুলী ফ্লো সাইটোমেট্রি FACS মেশিনের দামই যেখানে $৩০০,০০০, সেখানে এই টাকা অবশ্যই ব্যয় করা উচিত এই খাতেই কনোনা এই খাতের ট্রাকরেকর্ড বলছে এটা অপেক্ষাকৃত বেশী জীবন বাঁচায়, জীবনকে সহজ করে এবং বেশী কিছু উতপাদন করে।
এই জিনিষটা দেখলে তাদের জন্য মনে করুণাই জাগে যে কিছু কিছু মানুষ শুধুমাত্র নিজের অলস বিলাসে ফুলে ফেঁপে বোগাসভাবে এটা ধারণা করে বসে থাকে যে জগতে বিজ্ঞানের চেয়েও নোবেল, সেক্সিয়ার এবং এলিগেন্ট আরও কোনো কিছুর অস্তিত্ব থাকতে পারে!
@সংশপ্তক, লেখাটি তাত্ত্বিক নয় তাথ্যিক। বৈজ্ঞানিক নয়, দার্শনিক। এখানে একটি বিষয় পরিষ্কার করছি। নারী-পুরুষের লিঙ্গ পার্থক্যের সংগায়ন এখনও বিতর্কিত।
Sexual dimorphism in humans is the subject of much controversy, especially when extended beyond physical differences to mental ability and psychological gender. (For a discussion, see biology of gender, sex and intelligence, gender, and transgender.) Obvious differences between males and females include all the features related to reproductive role, notably the endocrine (hormonal) systems and their physiological and behavioural effects. Such undisputed sexual dimorphism include gonadal differentiation, internal genital differentiation, external genital differentiation, breast differentiation, muscle mass differentiation, height differentiation, and hair differentiation… advocates a deeper analysis of how interactions between the biological being and the social environment influence individuals’ capacities. The philosopher and feminist Simone de Beauvoir applied existentialism to women’s experience of life: “One is not born a woman, one becomes one.” In context, this is a philosophical statement. However, it may be analyzed in terms of biology… …focuses on quantitative differences which are based on a gradient and involve different averages. For example, males are taller than females on average, but an individual female may be taller than an individual male. … Some biologists theorise that a species’ degree of sexual dimorphism is inversely related to the degree of paternal investment in parenting. Species with the highest sexual dimorphism, such as the pheasant, tend to be those species in which the care and raising of offspring is done only by the mother, with no involvement of the father (low degree of paternal investment). This would also explain the moderate degree of sexual dimorphism in humans, who have a moderate degree of paternal investment compared to most other mammals. (Wikipedia)
জেণ্ডার সিমেট্রি টার্মটি ইউনিভার্সাল নয়, কিন্তু কিছু বাযে়ালজিস্ট এবং জেণ্ডার দার্শনিক ব্যবহার করেন, তেমনি ‘আইডেণ্টিক্যাল’ শব্দটিও। মনে রাখবেন এই বিষয় গুলোর গ্রহণযোগ্যতা নিউটনের গতিসূত্রের মতো ইউনিভার্সাল নয়। লেখাটি লিখতে গিযে় আমি আমার দর্শনের পক্ষের মতগুলো নিযে়ছি, বিপক্ষের নয়। এক প্রফেসরের লেখা পডে়ছিলাম তিনি বিবর্তনবাদে বিশ্বাসী নন, পাঠকদের বিবর্তনবাদ ভুলে যেতে বলেছিলেন।
In social sciences, gender studies, and in some feminist approaches to biology and sociobiology, particularly that of Anne Fausto-Sterling, gender is understood as the social construct (gender role) and types of behavior associated with that, rather than sex.
একটি জিনিস আমি স্বীকার করছি আমি জেণ্ডার সোশিওলজির দ্বারা ইন্ফ্লুযে়ন্স্ড, কিন্তু প্রাণিবিজ্ঞানীরা যে যায়গায় নিশ্চুপ কিংবা বিতর্কিত জেণ্ডার সোশিওলজির সেখানে শুরু। আসলে লেখাটিতে পর্যাপ্ততা এবং রিভিশনের অভাব আছে। জেণ্ডার সোশিওলজি, বাযে়া-ফিলসফির কিছু বিষয়কে আমি ভুলক্রমে বাযে়ালজি বলে উল্লেখ করেছি। বিষয়টির কারণ বাযে়ালজিস্টদের পরষ্পরবিরোধী বক্তব্য এবং ঠিক এ যায়গাটিতে বাযে়া-ফিলসফিস্টদের অবস্থান। আামি বিজ্ঞানে যতটা বিশ্বাসী ফিলোসফিতে তার একটু বেশি।
লেখাটি সংশ্লিষ্ট কিছু তথ্য এবং উত্স্য আমি ক্রমাণ্বযে় জানাচ্ছি। অপেক্ষা করুন।
@খুরশীদ এ, চৌধুরী, আপনি এমন কিছু তথ্য এখানে উপস্থাপিত করলেন যেগুলো কিনা এক একথায় বললে অসত্য বা ভুয়া তথ্য। এগুলোর উপর দর্শন সোসিওলজি ইত্যাদির রঙ মাখিয়ে এটাকে আপনি প্লজিবল সাউন্ডিঙ্গও করে ফেললেন। কিন্তু বিরোধীতা আসার সাথে সাথে বলছেন এগুলো কোন বৈজ্ঞানিক তথ্য না এগুলো আসলে সমাজবৈজ্ঞানিক তথ্য, দার্শনিক তথ্য। কেনো আপনার মনে হলো মুক্তমনায় সমাজবিজ্ঞান ও দর্শনকে বিজ্ঞানের চেয়ে বেশী গুরুত্ব সহকারে নেওয়া হয় এখানে? কিংবা বিজ্ঞানের সাথে রিকনসাইল করে না এমন তহ্য না তত্ব সমাজ বিজ্ঞান কিংবা দর্শন বলতে পারে এটাই বা কেমন করে ধারণা হলো?
এক প্রফেসর কেনো পৃথিবীর সমস্ত সমাজবিজ্ঞান আর দর্শনের প্রফেসরও যদি বিবর্তন তত্বকে রিজেক্ট করা শুরু করে, বৈজ্ঞানিক সমাজের তাতে কিছু যায়ও না কিছু আসেও না। বিজ্ঞান যার কাজ হচ্ছে কিনা উপকারী জিনিষপত্র উতপাদন যেমন- রকেট বানানো, পোলিও ভ্যাক্সিন বানানো, প্যারাসিটামল বানানো ইত্যাদি আপনার কি মনে হয় সেই বিজ্ঞানের সেক্সি সেক্সি কথা বেচে জীবিকা নির্বাহ করে জ্ঞানের এমন বোগাস কিংবা অপেক্ষাকৃত কম গুরুত্বপূর্ণ শাখা যেমন দর্শন ইত্যাদির বক্তব্য শোনার কোনো সময় রয়েছে?
এটার কারণ হচ্ছে গিয়ে দর্শন আপনার জন্য সোজা, যে কেউই দর্শন বোঝার ক্ষমতা ও ঘিলু ধারণ করে। অপরপক্ষে বিজ্ঞান বুঝতে হলে বা বুঝতে হলে কেনো E=MC^2 বা E=hV বা কেনো প্যারাসিটামল খেলে জ্বর সারে ইত্যাদি আপনার দর্শন বোঝার চেয়ে একটু বেশী খাটাখাটোনি, একটু বেশী পড়াশুনা আরেকটু বেশী বুদ্ধিমান হওয়া ইত্যাদি প্রয়োজন। আপনি ফিলসফিতে বিশ্বাসী হন কিংবা ভুডোম্যাজিকে বিশ্বাসী হন সেটা আপনার ব্যাপার তবে যার অবদানে এই মুহুর্তে বনে জঙ্গলে বল্লম দিয়ে পশু শিকার করা আর কলেরা টাইফয়েডে পতঙ্গের মতো মারা পড়ার বিপরীতে আপনি এখন সুসজ্জিত কামড়ায় কম্পিউটারে বসে ব্লগিং করছেন সেই বিজ্ঞানের প্রতি কিছুটা আস্থা স্থাপন করলে খারাপ হয় না। বিজ্ঞান কঠিন বলে অপেক্ষাকৃত সহজ একটা কোনোকিছুতে নিজের প্যাশন ডিভোটেড করে আপনি যদি একজন বিজ্ঞান শিক্ষিতের সমান স্কলারি অর্জন করতে কোনোকালে পারবেন বলে মনে করেন, তাহলে একটা কথাই বলতে হবে- আপনি শোচনীয় শোচনীয়ভাবে ভুল!
@খুরশীদ এ, চৌধুরী,
আচ্ছা, বিবর্তন তত্ত্ব কি বিশ্বাসের ব্যাপার? কেন সেই প্রফেসর পাঠকদের বিবর্তনবাদ ভুলে যেতে বলেছিলেন, সে বিষয়ে কিছু জানেন কি? যারা বিবর্তনকে বিশ্বাসের সাথে তুলনা করে তারা তো এমন কথা বলতেই পারেন। তাতে বিবর্তন মিথ্যা হয়ে যাবে না। দয়া করে বন্যা আহমেদের “বিবর্তনের পথ ধরে” বইটি পড়ুন। বইটি মুক্তমনায় ই-বুক আকারে দেয়া আছে। দর্শনের চেয়েও মজাও পাবেন।
@সংশপ্তক,
একই জিনিষটা আমিও অনুভব করেছি, আপনার সাথে ১০০০% সহমত। কিছুদিন আগেতো দেখেছেন এন্টিসায়েন্স আন্ডারটোনে এবং আবছা-ঝাপসা হোকাসপোকাস কথায় পরিপুর্ন বিপ্লব পালের একটি শোচণীয় এবং নিন্মমানের ভুতখেদানো পোস্টে দুই একটা ছেলেপেলে হাততালি বাহবা আর পিঠচাপড় দিয়ে কিভাবে গরম করে রেখেছিলো। মুক্তমনা সদস্যদের এহেনো নির্লিপ্ততা দেখে dont feel prud at all! আমেরিকান নিল ডি গ্রাসা টাইসন রিচার্ড ডকিন্সকে জিজ্ঞেস করেছিলো ‘তুমি এতো রূঢ় এবং পলিটিকালি ইনকারেক্ট কেনো?’ ডকিন্স বললো- ‘আসলে আমার চেয়েও রূঢ় মানুষ কিন্তু রয়েছে, নিউ সায়েন্টিস্টের (যেটিকে কিনা বিজ্ঞান উতসাহীদের ‘প্লেবয়’ ম্যাগাজিন হিসেবে গন্য করা চলে) সম্পাদককে প্রশ্ন করা হয়েছিলো ‘নিউ সায়েন্টিস্টের দর্শন কি?’ সম্পাদক বলেছিলো- ‘আমাদের দর্শন হচ্ছে “science is interesting, if you don’t like it you may f**k off!” :laugh: :laugh: :laugh:
httpv://www.youtube.com/watch?v=LEl4QfcAK2o
@আল্লাচালাইনা,
আপনাকে এখানে পেয়ে এখন অনেকটাই স্বস্তিবোধ করছি। জেনেটিক্যালি ভাগ্যবান হওয়ায় হয়তো আমার কখনও মাথা ব্যথা হয় না যার কল্যানে পেইন কিলারের পয়সা বাঁচাতে পারছি। তা না হলে , মেড ইন্সুরেন্সওয়ালারা আমা কতৃক পরিশোধযোগ্য প্রিমিয়াম অনেক আগেই কয়েক গুন বাড়িয়ে দিতো। তবে, ইদানিং কিছু বিরিন্চিবাবাগিরি পোস্ট পড়ার পরে আমার টেস্টোসটেরন লেভেল আশংকাজনকভাবে হ্রাস পেয়েছে যার সমানুপাতিক প্রভাব অ্যাড্রেনালিনে গিয়ে আছর করেছে।
@সংশপ্তক, আমার অবস্থাতো আরও খারাপ, নারী-পুরুষ এন্ডোক্রিনালি একইরকম জেনে আপাতত প্রল্যাক্টিন ব্যাবস্থা সক্রিয় হয়ে I feel like breastfeeding some people :laugh: :laugh: :laugh: ! এবং সাম্প্রতিক কালে বেশ কিছু বাণী-বার্তা দেখে ভীত হয়ে পড়েছি গর্ভবতী কোনো মহিলা এইসব পড়লে রক্তে অক্সিটোসিন লেভেল বেড়ে গিয়ে হয়তো ওভারিয়ান কন্ট্রাকশন সূচীত হয়ে প্রিম্যাচিওর্ড বার্থ কিংবা স্পন্টেনিয়াস মিসক্যারেজ হয়ে যেতে পারে। :brokenheart:
আপনার এই লেখাটি জনৈক সত্যজিৎ ভৌমিক পুরোপুরি মেরে দিয়ে সোনারবাংলাদেশ নামের একটি জামাতী ব্লগে পোস্ট করেছে।
http://sonarbangladesh.com/blog/voumik/20170
@রাগিব,
সত্যজিৎ ভৌমিক আর খুরশীদ এ. চৌধুরী এক ব্যক্তিও তো হতে পারে?
আবার ঐ ব্লগে আমার নামও দেখলাম। আমি আর সেই মাহফুজ কিন্তু এক ব্যক্তি না।
@মাহফুজ,
জামাতী ব্লগে মুক্তমনার কেউ লিখবেন, এটা আসলে আশা করি না। তা ছাড়া নানা ব্লগের লেখা চুরি করে কপি পেস্ট করার ব্যাপারটা বিডিনিউজের ব্লগ, সোনারবাংলাদেশ সহ নানা জায়গায় হতে দেখেছি। তাই ধরে নিচ্ছি খুরশীদ এ চৌধুরী এবং সত্যজিৎ ভৌমিক এক ব্যক্তি নন। (আর জামাতী ঘরানার অনেক ব্লগারের পুরানো টেকনিক হলো সংখ্যালঘুদের নামে নিক খুলে বসা)।
অবশ্য আমার ভুল হয়ে থাকতেও পারে, মানে ওটা খুরশীদ এ চৌধুরীর ছদ্মনামও হতে পারে। তবে তার সম্ভাবনা কম।
@রাগিব,
খুরশিদ চৌধুরী যদি এ ব্যাপারে একটু খোলাসা করেন তাহলে ভাল হয়।
এর আগেও মুক্তমনার লেখা চুরি হয়েছে। আর তা দৈনিক পত্রিকায় (দুই টাকা দামের পত্রিকা) ছাপিয়েছেও। ধরা পড়াতে ব্লগে প্রতিবাদ জানানো হয়েছে।
খুরশিদ চৌধুরীরর ক্ষেত্রেও যদি ঐ ঘটনা ঘটে তাহলে অবশ্যই প্রতিবাদ জানানো হবে। আর যদি খুরশিদ চৌধুরীই যদি সত্যজিৎ ভৌমিক হয়ে থাকেন তাহলে কী আর বলার আছে বলুন।
এই লেখাটি আসরাফ অন্য কোথাও পড়েছেন বলে জানাচ্ছেন। মুক্তমনাতেও হতে পারে, বলছেন। মুক্তমনাতে কি এই লেখা ডবল পোষ্ট হয়েছে? নাকি জামাতি ব্লগে পড়েছেন? কিম্বা অন্য কোন ব্লগে? জামাতি ব্লগে তো মুক্তমনায় পোষ্ট করার একদিন পর পোষ্ট করা হয়েছে।
ব্যাপারটা কেমন যেন ধোয়াসা ঠেকছে।
@মাহফুজ, আসলে লেখাটি আমারই লেখা। আমি সত্যজিত্ ভৌমিক নই। অন্যকোন ব্লগেও পোস্ট করিনি। আশরাফ বলেছেন আমার লেখা পডে়ছেন, এই লেখাটিই আগে পডে়ছেন তা বলেননি। কেউ যদি লেখা চুরি করে থাকে তবে তা নিন্দনীয়। লেখাটি আমি ১/১/১১ তারিখে [email protected] মেইলএড্রেস থেকে মুক্তমনায় পাঠিযে়ছি। খুরশিদ এ, চৌধুরী।
@মাহফুজ, দুঃখিত এড্রেসটি [email protected]। পাঠানোর তারিখ ঠিকই আছে।
আমার লেখা বেশ প্যাঁচালো, অনেকের কাছে দুর্বোধ্য এমনকি চিন্তাভাবনার বিচ্ছিন্নতা মনে হবে । তাই সহজ কিছু পযে়ণ্ট তুলে ধরছি (উপমহাদেশীয় বাস্তবতায়) ঃ
১) রাষ্ট্র কেনো সমকামী-অসমকামী নির্বিশেষে মানুষের যৌন পরিচযে় নাক গলাবে ? রাষ্ট্র কি কথিত ঈশ্বর-সৃষ্ট ?
২) নারী-মাত্রই কেনো বিবাহ পদ্ধতিতে পুরুষ নির্ভরশীল হবে ? নারী কি পূর্ণ মানুষ নয় ?
৩) এত বয়স পর্যন্ত কেনো পৈতৃক উপার্জনে তরুণ সমাজ শুধুই ‘ছাত্র-ছাত্রী’ তকমা নিযে় ঘুডে় বেড়াবে ? যে চাকুরী ছাত্র অবস্থায় করা সম্ভব তার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় ডিগ্রী চাওয়া হবে ? বিনা কর্মের তরুণসমাজ কি একটি বার্ডেন নয় ? স্রেফ ‘ছাত্র’ পরিচযে়র তরুণদের কি স্বাবলম্বিতা অভ্যাস থেকে দূরে রাখছি না ?
৪) তরুণদেরকে বিপজ্জনক বয়সে অবদমন দ্বারা গডে় তুলছি – কতটা স্বাভাবিক ?
৫) রাষ্ট্র কেনো ‘সমাজ’ সংরক্ষক, নারী-পুরুষ নির্বিশেষে ‘ব্যক্তি’ অধিকারের সংরক্ষক নয় কেনো ? ব্যক্তির জন্য রাষ্ট্র নাকি রাষ্ট্রের জন্য ব্যক্তি ?
৬) ‘সমাজ’ কি ব্যক্তিস্বাতন্ত্র্যের সচেযে় বড় লঙ্ঘনকারী নয় ? রাষ্ট্র কেনো সমাজ সংরক্ষক ?
৭) সাধারণ চাকুরীর জন্য একজন তরুণ ছাত্র-ছাত্রীর কতটুকু কোয়ালিফিকেশন থাকা জরুরী ?
৮) নারীর ওপর পুরুষের কর্তৃত্ব কে দিলো ? কথিত ঈশ্বর ? সেমেটিক ধর্মগ্রন্থগুলোতে ঈশ্বর পুরুষবাচক । ইসলাম ধর্মে তার কোন ‘স্ত্রী’নেই । অথচ তাকে তৃতীয় লিঙ্গ হিসেবেও বর্ণনা করা হয়নি । তার মানে ঈশ্বর পুরুষ । পুরুষ কাকে বলে ? যে প্রজাতিতে স্ত্রী নেই তার পুরুষ আসলো কি ভাবে ? বিজ্ঞানে অসীমের অস্তিত্ব নেই । ঈশ্বর যদি অন্য কোন জগতের ক্ষমতাশালী সম্রাট হযে় থাকেন পৃথিবীর মানুষ ও রাষ্ট্র কেনো তার দাসত্ব করবে ? ঈশ্বরের স্ত্রী নেই ঈশ্বরের সমস্যা, সমকামী বিযে়র বৈধতা নেই কেনো ? নারীর প্রতিই বা তার আক্রোশ কেনো ? সমাজ ও রাষ্ট্র কেনো ভিন গ্রহের ঈশ্বরের দাসত্ব করবে ? সমাজ ও রাষ্ট্র কি মানুষের সৃষ্ট নয় ?
@খুরশীদ এ, চৌধুরী,
মুক্তমনায় স্বাগতম।
—
ওপরের প্রশ্নগুলো প্রশ্ন আকারে নয়, ভাবনা আকারে মূল লেখায় যোগ করতে পারেন। এতে লেখাটি আরো শক্তিশালী হবে। চলুক। :yes:
খুরশীদ এ. চৌধুরী,@
আপনার লেখা আগেও কোথাও পেড়ছি।
মুক্ত-মনা তে ও হতে পারে।
তবু:rose2:
কিন্তু প্রাণী জগতে তো এরকমই দেখা যাচ্ছে।
সামাজিক কিম্বা ধর্মীয় দৃষ্টিতে বিয়ের উদ্দেশ্য হচ্ছে- যৌন তৃপ্তি লাভ, সন্তানপ্রাপ্তি, বন্ধুত্ব আর সাহচর্য। বাস্তবে এই উদ্দেশ্যের মিল পাওয়া কঠিন। আমাদের সমাজে যৌনতৃপ্তি লাভ পুরুষই করে। যৌনতৃপ্তি লাভ কথাটি পুরুষের ক্ষেত্রেই সত্য, নারীর জন্য সম্ভাবনা মাত্র। অসংখ্য নারী সন্তান লাভ করে যৌনতৃপ্তি ছাড়াই। বন্ধুত্ব আর সাহচার্য, ওটা তো প্রভু-দাসী সম্পর্ক। প্রকৃতপক্ষে মানবিক সম্পর্ক বিকশিত হয় উন্নত সাংস্কৃতিক প্রশিক্ষণ তথা স্ফূর্ত মনুষ্যত্বের ভেতর দিয়ে। প্রথাসিদ্ধ বিয়ে মধ্য দিয়ে তা পাওয়া সম্ভব নয়। মানুষের যৌন সম্পর্কে সত্যিকার সখ্য স্থাপনের জন্যে সম্পূর্ণ ইহজাগতিক ও বিজ্ঞানমনস্ক চেতনার মাধ্যমে নিয়ন্ত্রিত হওয়া ছাড়া স্বতস্ফূর্ত যৌথ অগ্রসরতা সম্ভব নয়।
জ্ঞানের অভাবহেতু বিষয়টি আমার কাছে স্পষ্ট নয়। এ ব্যাপারে সাহায্য চাই। জিন কি প্রকৃতিগতভাবে বৈশিষ্ট্যের অধিকারী নয়? সামাজিক নানা কারণে কি জিন-এর বৈশিষ্ট্য পাল্টায়? আমরা জিন দ্বারা প্রভাবিত নাকি জিনই সমাজ দ্বারা প্রভাবিত? একটু খোলাসা করে বলবেন কি?
@মাহফুজ, (পূর্বের লেখাটির শুদ্ধরূপ)
মনে করুন ডমেস্টিক কুকুরের (Canis lupus familiaris) উ ত্পত্তি বন্য গ্রে নেকডে় (Canis lupus) থেকে । গ্রে নেকডে় থেকে ডমেস্টিক কুকুর প্রজাতি উদ্ভবে এর জীবনাচরণ-অভ্যাস পরিবর্তন গত ১০০০০ থেকে ১৫০০০ বছরে তার প্রজাতিগত বৈশিষ্ট্যে প্রভাব ফেলেছে । তেমনি আরও বিভিন্ন জিনাস-ভুক্ত প্রাণীর বিভিন্ন স্পেসিস ও সাব-স্পেসিস জেনেটিক পরিবর্তনের মাধ্যমে বিকশিত হযে়ছে । দীর্ঘদিনের প্রজাতিগত আচরণ, অভ্যাস ও প্রজনন জিনগত বৈশিষ্ট্যে প্রভাব ফেলে । নতুবা পৃথিবীতে প্রাণী বিবর্তন এবং প্রজাতি ভেরিযে়শন সম্ভব হতো না । আমার লেখার এই অনুষঙ্গ গুলো এসেছে তাথ্যিক ভাবে, তাত্ত্বিক ভাবে নয় ।
@মাহফুজ, পিতামাতার আচরণ, বয়স, বয়সের পার্থক্য, বিভিন্ন পূর্বঅভ্যাস পরবর্তীতে সন্তানে বিভিন্ন বৈশিষ্ট্যে প্রভাব ফেলে । অটিজম, শিদ্জোফ্রেণিয়া এরকম কিছু বৈশিষ্ট্য । সন্তানের বুদ্ধিমত্তা, আচরণে সূক্ষভাবে কিছু প্রভাব থাকেই ।
এতো শুধু ভূমিকা, বাকিটুকু কোথায়? 🙂
সিরিয়াসলী বলছি- খুব বড়সড় একটা প্রবন্ধ পড়ার মেন্টালিটি নিয়েই এখানে ঢুকেছিলাম।
যাহোক, যে প্রশ্ন দিয়ে উপসংহার টেনেছেন- আমার মনে হয় উত্তরটা আপনার প্রবন্ধের প্রথমেই নিহিত আছে- “যৌনতার ব্যক্তিস্বাধীনতা”। বিষয়টা আরো অনেক ব্যাপারের উপর নির্ভরশীল বলেই মনে হয়। তবে সবার আগে আমি বলব অর্থনৈতিক মুক্তির কথা। ঐ টা না হলে বাকী কিছু অনেক দূরের পথ।
@শ্রাবণ আকাশ,
আমিও তাই। প্রাণীযৌনতা ও নারী পুরুষের অবস্থানের ভুল ধারণা নিয়ে আরও কিছু উদাহরণে প্রত্যাশা করছি। সবে তো প্রথম লেখা। আশা করি শীঘ্রই পাব।
খুরশীদ এ. চৌধুরী,
একমত। আমরা বাংলাদেশে কিন্তু সে শত্রুতার মধ্যেই বসবাস করছি।
মুক্তমনায় স্বাগতম।
উপরের অংশটুকুর জৈব বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা (রেফারেন্স সহ) আপনার কাছ থেকে আশা করছি ।
একটি রাষ্ট্র অর্থনীতিক-সামাজিকভাবে শক্তিশালী হতে হলে সেখানে রিপ্লেসমেন্ট লেভেল জনসংখ্যা থাকতে হবে, শিক্ষিত সুনাগরিক গড়ে তোলার সাসটেইনেবল সিস্টেম থাকতে হবে। এখন পর্যন্ত পরিবারের চেয়ে ভাল কোনো সুনাগরিকের সুতিকাগার পাওয়া যায় নি। ধর্মীয় ও সামাজিক অনুশাসনের একটা বড় অংশই নিবেদিত পারিবারিক মূল্যবোধ ধরে রাখার জন্যে। ধর্ম ও সমাজের প্যাথলজিকাল দিকগুলোর অজুহাতে সবকিছু ছুড়ে ফেলে নতুন করে গড়ে তোলার চিন্তা করলে সেটা মানবজাতির কয়েকশত জেনারেশনের বিবর্তনলদ্ধ সাংষ্কৃতিক উত্তরাধিকারকেই অস্বীকার করা হয়।
শুধু ব্যাক্তিস্বাধীনতা আর যুক্তির উপরে প্রতিষ্ঠিত সমাজ সাসটেইনেবল হয় কিনা এটা পৃথিবীতে এখনও প্রমানসাপেক্ষ। The philosophers have only interpreted the world, in various ways; the point is to change it (মার্ক্স). সমাজকে ভালোভাবে বোঝার আগেই সমাজের আমূল পরিবর্তনে একটু কশাস হওয়া উচিত।
খুব ভাল লাগলো এই লাইনটা।
জাতিরাষ্ট্র বিহীন একটি বিশ্ব সমাজ কাম্য। কোন রাষ্ট্রই নাগরিক চাহিদার অর্ধেক ও পুরন করতে পারছে না বরং নাগরিকদের ছোট বা বড় একটি অংশকে উপর্যুপরি শোষন ও অবিচার করে যাচ্ছে।এবং বিশ্বব্যাপি মানবাধিকার লঙ্ঘনের দায় অধিকাংশে বর্তমান রাষ্ট্রব্যাবস্থার উপর বর্তায়। ক্ষমতার বিকেন্দ্রীকৃত একটি সমাজ বংশধরদের দিয়ে যেতে চাই।
মুক্তমনায় স্বাগতম। ভাল একটি বিষয় নিয়ে লিখেছেন।
এই ক্যাটাগাইরেজন গুলো পরিষ্কার করবেন? কোন ক্ষেত্রে “বিপরীত লিঙ্গ” বলা চলবে?
@রৌরব, বিপরীত লিঙ্গ শব্দটি ব্যাকরণশাস্ত্রীয় – শব্দের লিঙ্গভেদ । শারীরিক বৈশিষ্ট্য, হরমোনের উপস্থিতি প্রভৃতির দিক দিযে় মানুষ লিঙ্গ-প্রতিরূপী, মৌমাছি যেমন লিঙ্গ-অপ্রতিরূপী । নারী-পুরুষের অতি পার্থক্য সমাজসৃষ্ট ।