ক্ষমতায় গেলে এ সরকারের সকল কাজ কর্ম অবৈধ ঘোষণা করে দেব। কথাগুলো বলেছেন বাংলাদেশের বিরোধী দলীয় নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া যিনি দুই বার পূর্ন মেয়াদে ক্ষমতায় ছিলেন ও একবার কয়েকদিনের জন্য ছিলেন। তিনি এ বক্তব্য দিয়েছেন সম্প্রতি ছাত্র দলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালন অনুষ্ঠানে। এখন প্রশ্ন হলো তার মত একজন দায়িত্বপূর্ন ব্যাক্তির পক্ষে এ ধরনের লাগামছাড়া , অনৈতিক, অসাংবিধানিক বক্তব্য দেয়া সমীচিন কিনা। আমরা বাক স্বাধীনতায় বিশ্বাস করি। কিন্ত বাক স্বাধীনতার অর্থ কি লাগাম ছাড়া দায়িত্বহীন কথাবার্তা? তাও আবার বিরোধী দলের প্রধান নেত্রীর মত একটা অতীব গুরুত্বপূর্ন দায়িত্বে থেকে ? সুতরাং তার কথাকে স্রেফ ব্যাক্তিগত কথা বলে ধরা যায় না। ধরতে হবে তার দলের আদর্শিক দৃষ্টি ভঙ্গি হিসাবে। তাই বিষয়টি অতীব গুরুত্বপূর্ন।
এখন প্রশ্ন হলো – কেন তিনি এ সরকারের সকল কাজ কর্ম অবৈধ ঘোষণা করবেন ? এ সরকার কি এমন কাজ কর্ম করছে যে সেসবকে অবৈধ ঘোষণা করতে হবে ? বোঝাই যাচ্ছে- বর্তমান সরকার যুদ্ধাপরাধীর যে বিচার কাজ শুরু করেছে তা বিরোধী দলের পছন্দ হচ্ছে না। বিশেষ করে তাদের দলের একজন সাংসদ সাকা চৌধুরীকে আটকের পর।অথচ এই সাকা চৌধুরী একজন স্বঘোষিত যুদ্ধাপরাধী্ ও রাজাকার। তার নিজ এলাকা রাউজানের আপামর জনগোষ্ঠি জানে সে কি ধরনের অপকর্ম ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় করেছিল। কুন্ডেশ্বরী ঔষধালয়ের মালিক নুতন চন্দ্র সিংহকে সে নিজ হাতে খুন করেছিল বলে সবাই জানে ও এ ছাড়া আরও বহু খুন খারাবির সাথে সে সরাসরি জড়িত। এখন সে একজন সাংসদ হয়েছে বলে তার অতীতের সব অপকর্ম মাফ হয়ে যাবে নাকি ? সে কি সকল আইন কানুনের উর্ধ্বে? আর তার মত একজন স্বঘোষিত অপরাধীকে যখন সুষ্পষ্ট অভিযোগের ভিত্তিকে আটক করা হয়েছে তখন বেগম খালেদা জিয়া হুংকার ছাড়লেন তিনি ক্ষমতায় গেলে তিনি এ সরকারের সকল গৃহীত কর্মকান্ডকে অবৈধ ঘোষণা করে দেবেন। তার অর্থ হলো – এ সরকার যদি যুদ্ধাপরাধীদেরকে বিচারে সাজা দেয়, বেগম জিয়া তাদের সাজা অবৈধ ঘোষণা করে দিয়ে তাদেরকে সসম্মানে মুক্তি দেবেন। এত দিন পর থলের বিড়াল বের হয়ে পড়ল। এতদিন ধরে বি এন পি , যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের ব্যপারে যে একটা ধরি মাছ না ছুই পানি জাতীয় খেলা খেলছিল অবশেষে তা প্রকাশ্য রূপ পেল আর সেটা হলো – তারা চায় না যে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার আচার হোক।
অথচ এ বিএনপি সব সময় দাবি করে তারা মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষ শক্তি আর তাদের প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান একজন মুক্তিযোদ্ধা। তো এ হেন মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষশক্তি কেন যুদ্ধাপরাধীদের বিচার চায় না ? উত্তরটা খুব জটিল। আমরা জানি জিয়াউর রহমান একজন মুক্তিযোদ্ধা হওয়ার পরেও স্বাধীনতার পর মাত্র পাঁচ বছর পরেই নানা কায়দায় ক্ষমতায় এসে যাকে তার প্রধানমন্ত্রী করেন তিনি হলেন রাজাকার শিরোমনি মশিউর রহমান। অথচ তখনও দেশের সর্বত্র স্বাধীনতা যুদ্ধের নানা চিহ্ন পড়ে ছিল, সর্বত্র যুদ্ধের ক্ষত বিরাজমান ছিল আর সে সময়েই মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমান দেশে প্রধানমন্ত্রী করলেন একজন স্বাধীনতা বিরোধী রাজাকারকে। সারা দুনিয়ার ইতিহাসে এর চাইতে বড় প্রহসনের ঘটনা আর কোথাও দেখা গেছে বলে অন্তত: আমার জানা নেই। আমার বিশ্বাস খোদ যুদ্ধ বিরোধী চক্রও এ ঘটনার জন্য প্রস্তুত ছিল না ও তারা বিস্ময়ে হতবাক হয়ে গেছিল। শুধু এটুকু করলেও কথা ছিল। এর পর যে ভয়ংকর কাজটি জিয়াউর রহমান করলেন তা হলো- খন্দকার মোস্তাকের জারি করা ইন্ডেমিনিটি বিলকে তার সংসদে পাশ করানো। একজন মুক্তিযোদ্ধা কি আইন পাশ করছেন ? স্বাধীনতার মূল স্থপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে তার পরিবার সহ নির্মমভাবে খুন করা হলো, চার জাতীয় নেতাকে জেলের মধ্যে নির্মমভাবে হত্যা করা হলো আর তাদের এ হত্যাযজ্ঞের কোন বিচার করা যাবে না বলে জিয়াউর রহমান তার সরকারের সংসদে আইন পাশ করালেন। পৃথিবীর আর কোন সভ্য দেশে গনতন্ত্রের নামে কোন দেশের আইন প্রনয়ন কক্ষে এ ধরনের কোন অসভ্য আর বর্বর কান্ড ঘটেছে বলে আমার জানা নেই। এ হেন একটা রাজনৈতিক দল আদর্শিক কারনেই যুদ্ধাপরাধীদের বিচার চাইতে পারে না বিশেষ করে তারা যখন জোট বেধেছে খোদ স্বাধীনতার বিরোধী চক্র জামাত শিবিরের সাথে। অথচ বি এন পি এর অনেক নেতা দাবী করেন তারা মুক্তিযোদ্ধা। কোথায় তাদর মুক্তি যুদ্ধের আদর্শ? কোথায় সেসব মুক্তি যোদ্ধা এখন? তারা কি সব এখন নাকে তেল দিয়ে ঘুমাচ্ছে?
যে সমাজ ন্যয় বিচার, বাক স্বাধীনতা, গনতন্ত্রের ওপর প্রতিষ্ঠিত নয়, সে সমাজ কোন দিন সামনে এগুতে পারে না। বাংলাদেশ যে তার কাংক্ষিত লক্ষ্যের দিকে কার্যকর ভাবে এগুতে পারছে না তার কারনও সেটাই। বি এন পি ও তাদের জোট সম্পুর্ন এর বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে অথচ এর চ্যলা চামুন্ডারা সব সময় দাবী করে যে বি এন পি বাকশালীদের একনায়কত্বকে হটিয়ে দিয়ে গনতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছে। দেখা যাচ্ছে গনতন্ত্র তারা প্রতিষ্টা করেছে গনতন্ত্রের যাবতীয় মূল্যবোধকে দুরে রেখে। নইলে কোন্ গনতান্ত্রিক রাজনৈতিক দল যুদ্ধাপরাধীদের বিচার চাইতে না পারে? অন্য কথায় তারা ন্যয় বিচার প্রতিষ্ঠা করতে চায় না ?
কেন স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় যারা মানবতা বিরোধী অপরাধ করেছে তাদের বিচার করতে হবে? তাদের বিচার করতে হবে কারন তা না হলে দেশটা ন্যয় বিচার ব্যবস্থার ওপর প্রতিষ্ঠিত হবে না। যারা মুক্তিযুদ্ধের সময় গণহত্যা করেছিল বা গণহ্ত্যায় সাহায্য করেছিল, মা বোনদের ইজ্জত লুঠ করেছিল, ঘর বাড়ী জ্বালিয়ে পুড়িয়ে ছারখার করেছিল, তাদের যদি বিচার না হয়, তারা যদি প্রকাশ্য দিবালোকে বুক ফুলিয়ে হাটে, তাহলে তা হবে স্বাধীনতার প্রতি ব্যঙ্গ স্বরূপ, অপমান স্বরূপ। তা হবে যে ৩০ লক্ষ লোক মারা গেছে, ২ লক্ষ মা বোন ইজ্জত দিয়েছে তাদের প্রতি বিদ্রুপ স্বরূপ। এরকম অবস্থায় দেশকে ন্যয় বিচারের ওপর ভিত্তি করে চালানো যায় না। তাদের বিচার না করলে স্বাধীনতার পর যারা নানা রকম অপকর্ম করেছে বা করছে তাদের বিচার করার কোন নৈতিক এক্তিয়ার সরকারের বা জনগনের থাকে না। এর ফলাফল দেশে কোন সভ্য রীতি প্রতিষ্ঠিত হতে পারে না। সমাজ হবে একটা অসভ্য সমাজ আর যার নমুনা আমরা দেখতেও পাই। তাই সুসভ্য সমাজ প্রতিষ্ঠার স্বার্থেই যুদ্ধাপরাধীদের বিচার অত্যাবশ্যক। আমাদের দুর্ভাগ্য যে স্বাধীনতার পর ৩৮ বছর চলে গেছে আমরা তাদের বিচার করতে পারিনি।এটা জাতির জন্য প্রচন্ড লজ্জার , অপমানের। জাতি আর সে অপমান বয়ে বেড়াতে চায় না , এ লজ্জা থেকে জাতি মুক্তি পেতে চায়। কিছু লোক আছে যারা প্রকারান্তরে বলতে চায়, স্বাধীনতার পর পরই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান রাজাকারদেরকে সাধারন ক্ষমা করে দিয়েছেন। কিন্তু বিষয়টি কি তাই ? বিষয়টি আসলে হলো- স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় যারা রাজাকার ছিল অথচ কোন রকম অপরাধমূলক কাজের সাথে জড়িত ছিল না, তাদেরকে মাফ করে দেয়া হয়েছিল। যারা অপকর্মের সাথে জড়িত ছিল তাদের মাফ করা হয় নি। বঙ্গবন্ধুর মৃত্যুর সময়ও অনেক যুদ্ধাপরাধী জেলে ছিল, তারা বিচারাধীন ছিল। বরং জিয়াউর রহমান ক্ষমতায় এসে তাদেরকে গণহারে মুক্তি দেন। এর পর বাংলাদেশ আর কখনই মানবতাবিরোধী কর্মকান্ডের জন্য এসব নরপিশাচদেরকে বিচার করার সুযোগ পায় নি। কারন রাষ্ট্র ক্ষমতায় তখন আসীন ছিল প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে স্বাধীনতা বিরোধী চক্র। তারা দীর্ঘ মেয়াদে ক্ষমতায় থেকে অর্থ বিত্ত ও প্রভাবে ততদিন গোটা বাংলাদেশে একটা প্রভাব বলয় তৈরী করে ফেলেছে। ক্রমাগত অপপ্রচারনা ও মিথ্যা কথা দিয়ে জনগনের একটা অংশকে ততদিনে আকৃষ্ট করে ফেলেছে ও তাদের মাথা থেকে স্বাধীনতার চেতনাকে দুর করে ফেলেছে। তাই ১৯৯৬ সালে যখন জাতীয় পার্টির সমর্থনে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসে তখন তারা সাহস পায় নি এদের বিচার করতে। কিন্তু একটা কাজের কাজ তখন তারা করে গেছিল। তা হলো স্বাধীনতার প্রকৃত ইতিহাসকে তখন তারা তুলে ধরতে পেরেছিল। নতুন প্রজন্ম জানতে পেরেছিল তাদের জাতীয় গৌরবময় ইতিহাস। তারা অনুধাবন করতে পেরেছিল যে কোন এক অখ্যাত মেজরের রেডিও ঘোষণায় দেশের মানুষ স্বাধীনতা যুদ্ধে ঝাপিয়ে পড়েনি। বরং স্বাধীনতা যুদ্ধের ছিল একটা ধারাবাহিক ইতিহাস, যেখানে মুল নায়ক ছিলেন বঙ্গবন্ধু সেখ মুজিবুর রহমান, কোন এক মেজর জিয়াউর রহমান নয়। ঘটনা চক্রে জিয়াউর রহমানেরও সামান্য একটু ভুমিকা ছিল কিন্তু নতুন প্রজন্ম জানতে পেরেছিল মূল ভূমিকাটি ছিল একজন শেখ মুজিবুর রহমানের যিনি না থাকলে জিয়াউর রহমান রেডিও ঘোষণা তো দুরের কথা , পাকিস্তানের একজন সামান্য সামরিক অফিসার হিসাবেই কর্ম জীবন শেষ করতেন। বিষয়টির গুরুত্ব স্বাধীনতা বিরোধীচক্র খুব ভালভাবে অনুধাবন করতে পেরেই ২০০১ সালে তারা সর্বাত্মক প্রচেষ্টা (প্রকাশ্য ও গোপন ষড়যন্ত্র) চালিয়ে আপাত: দৃশ্যমান একটা নিরপেক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমে পুনরায় ক্ষমতা দখল করে ও এবার সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালায় দেশ থেকে মুক্তি সংগ্রামের যাবতীয় স্মৃতি, ইতিহাস ও চিহ্ন মুছে দিতে। আর তা করতে গিয়ে তারা এত বেপরোয়া হয়ে ওঠে যে এক পর্যায়ে তারা স্বাধীনতার পক্ষের শক্তির সকল নেতাকে এক সাথে হত্যা করার ষড়যন্ত্র আটে ও ২০০৪ সালের ২১ আগষ্ট এক ভয়াবহ গ্রেনেড হামলার মাধ্যমে তা বাস্তবায়ন করতে যায়। বাঙালী জাতির অসীম সৌভাগ্য যে সেদিন একজন মাত্র নেত্রী ছাড়া সবাই প্রানে বেঁচে যান। অত:পর সে হত্যাযজ্ঞের বিচারের নামে প্রহসন সারা দেশের মানুষ অবলোকন করেছে আর দেখতে পেয়েছে স্বাধীনতা বিরোধী চক্রের বেপরোয়া হীন চক্রান্ত, ষড়যন্ত্রমূলক মনোভাব। একই সাথে তারা দেশকে একটা মগের মুল্লুকের রাজত্বে পরিনত করে ও লুটে পাট করে খাওয়ার প্রতিযোগীতায় নামে। ভাবটা যেন- গোটা বাংলাদেশ তাদের জমিদারী। দেশের মানুষ অবাক বিস্ময়ে তাদের এসব অপকর্মকে দীর্ঘ ৫ বছর ধরে অবলোকন করে। অত:পর ২০০৮ সালের নির্বাচনে জনগন যার একটা বড় অংশই ছিল তরুন প্রজন্ম যারা ভিতরে ভিতরে যুদ্ধাপরাধী চক্র ও তাদের দোসরদের ভালভাবেই চিনে ফেলেছিল, তারা তাদের ঐতিহাসিক রায় প্রদান করে। তারা যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের প্রত্যাশায় মুক্তি যুদ্ধের পক্ষের শক্তিকে ব্যপকভাবে ভোট প্রদান করে এক যুগান্তকারী ঘটনা ঘটায়, যার ফলে ক্ষমতায় আসে চিন্তাতীত সংখ্যা গরিষ্ঠতা নিয়ে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তি। দেশের মানুষ আশায় বুক বাধে এবার জাতি কলংক মুক্ত হবে, স্বাধীনতা বিরোধী ও অপরাধীদের বিচার হবে। দীর্ঘ জল্পনা কল্পনার পর সে বিচার শুরুও হয়। জনগনের মতিগতি বুঝে বি এন পি এতদিন চুপচাপ ছিল, বিচারের পক্ষে বা বিপক্ষে কোনদিকেই তাদের অবস্থান পরিষ্কার ছিল না। কিন্তু এরকম অবস্থান তারা আর বেশীদিন ধরে রাখতে পারে নি। যতদিন জামাতী নেতাদের ধরে হাজতে পুরছিল ততদিন তারা তেমন সোচ্চার ছিল না, কিন্তু যখনই তাদের ঘরের লোককে ধরেছে অর্থাৎ সাকা চৌধুরীকে ধরেছে তখনই তারা প্রকাশ্যে চলে এসেছে আর তাদের প্রকৃত স্বরূপ উন্মোচন হয়ে পড়েছে। এখন তারা প্রকাশ্যে ঘোষণা দিয়েছে- এ সরকারের যাবতীয় কাজ কর্মকে তারা অবৈধ ঘোষণা করবে যদি তারা ক্ষমতায় যেতে পারে। সুতরাং তাদের এ প্রকাশ্য বক্তব্যে দেশের মানুষ সিদ্ধান্ত নেবে যে তারা যুদ্ধাপরাধীদেরকে বিচার করার প্রক্রিয়াকে সমর্থন করে একটা ন্যয় বিচার ভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠা করতে চায় নাকি ন্যয় বিচারকে জলাঞ্জলী দিয়ে বাংলাদেশকে একটা বর্বর ও জঙ্গলী দেশে পরিনত করতে চায়। তারা আরও সিদ্ধান্ত নেবে স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় যারা মানবতা বিরোধী অপরাধ করেছিল তাদের বিচার কাজে সমর্থন করে বিশ্বের বুকে বাংলাদেশকে একটা সভ্য দেশ হিসাবে তুলে ধরতে চায় কিনা।
:deadrose:
লেখাটা ভালই। কিন্তু প্লাটফর্মটা মুক্ত-মনা।
@আসরাফ,
আপনার কথার মানেটা ঠিকমতো বোধগম্য হলো না ভাইজান। একটু ঝেড়ে কাশবেন দয়া করে ?
@ভবঘুরে,
আমি কথাটা খুব সহজ করে বলেছি তাই বুঝতে পারছেন না।
উপরের মন্তব্য গুলো দেখে কমেন্টটা করা। এই লেখাটাই যে কোন ব্লগে যথেষ্ট হিট করতো বলেই আমার বিশ্বাস।
@আসরাফ, :yes:
@আসরাফ,
লেখাটা ভালই। কিন্তু প্লাটফর্মটা মুক্ত-মনা।
সেটা তো আরো ভাল। গালাগালি-মুক্ত আলোচনা করা যাবে।
খালেদার এই উক্তিটি-
আগামী নির্বাচনে আওয়ামী লীগের জন্যে একটা প্লাস-পয়েন্ট হয়ে থাকবে। খালেদার কথা যদি সত্যি হয়, তাহলে আমরা কি ধরে নেবো যে, এ সরকার যদি যুদ্ধাপরাধীর বিচার করে তাদেরকে জেলে ঢুকায়, বিএনপি ক্ষমতায় গেলে সেই বিচারের রায়কে অবৈধ ঘোষণা করে তাদেরকে মুক্তি দিয়ে দিবে? এ সরকারের গৃহীত জাতীয় শিক্ষানীতি, নারী-উন্নয়ণ নীতি অবৈধ ঘোষনা করবে? জাতিকে নিয়ে এহেন হীন তামাশার জবাব খালেদা অবশ্যই পাবেন।
খালেদা জিয়ার উক্তি: ক্ষমতায় গেলে এ সরকারের সকল কাজ কর্ম অবৈধ ঘোষণা করে দেব।
আর শেখ হাসিনার উক্তি (তত্বাবধায়ক সরকারের আমলে): ক্ষমতায় গেলে তত্বাবধায়কের সব কর্মের বৈধতা দেবো।
এগুলো সবই নষ্ট রাজনীতির খেল। হুমায়ুন আজাদের ‘রাজনীতিবিদগণ’ পড়ে দেখার অনুরোধ রইলো।
ভবঘুরে ভাই, আপনার অন্য একটি লেখা থেকে উদ্ধৃতি দেই: “যত বেশী জানবেন ততই আপনার মাথার মধ্যে নানারকম চিন্তা ভাবনার উদয় হবে। ততই নানারকম প্রশ্ন আপনার মন ও মানস কে আন্দোলিত করবে। আপনি তার উত্তর খুজে না পেলে মানসিক অশান্তিতে ভুগবেন। জানার কোন শেষ নাই, জানার চেষ্টা বৃথা তাই। এ তত্ত্বে আস্থাবান হোন, বোকা থাকুন ও সুখী জীবন যাপন করুন।” 😉 :laugh:
আর হ্যা, যুদ্ধাপরাধীদের বিচার চাই, বিচার চাই।
@মাহফুজ,
এ দাবী হওয়া উচিত আপামর জনসাধরনের সবার। না হলে আমার সভ্য জাতি হিসাবে বিশ্ব সমাজে পরিচয় দিতে পারি না। সেটাই একটা মৌলিক সমস্যা।
আপনার সমর্থনের জন্য সাধুবাদ জানাই।
@ভবঘুরে,
কবি শামসুর রাহমান-এর ‘অভিশাপ দিচ্ছি’ কবিতাটি পড়ুন।
আজ এখানে দাড়িয়ে এই রক্ত গোধূলিতে
অভিশাপ দিচ্ছি।
আমাদের বুকের ভেতর যারা ভয়ানক কৃষ্ণপক্ষ
দিয়েছিলো সেঁটে,
মগজের কোষে কোষে যারা
পুঁতেছিলো আমাদেরই আপনজনের লাশ
দগ্ধ, রক্তাপ্লুত,
যারা গনহত্যা
করেছে শহরে গ্রামে টিলায় নদীতে ক্ষেত ও খামারে
আমি অভিশাপ দিচ্ছি নেকড়ের চেয়েও অধিক
পশু সেই সব পশুদের।
ফায়ারিং স্কোয়াডে ওদের
সারিবদ্ধ দাঁড়
করিয়ে নিমিষে ঝা ঝা বুলেটের বৃষ্টি
ঝরালেই সব চুকে বুকে যাবে তা আমি মানি না।
হত্যাকে উতসব ভেবে যারা পার্কে মাঠে
ক্যাম্পাসে বাজারে
বিষাক্ত গ্যাসের মতো মৃত্যুর বীভৎস গন্ধ দিয়েছে ছড়িয়ে,
আমি তো তাদের জন্য অমন সহজ মৃত্যু করি না
কামনা।
আমাকে করেছে বাধ্য যারা
আমার জনক জননীর রক্তে পা ডুবিয়ে দ্রুত
সিড়ি ভেঙ্গে যেতে
ভাসতে নদীতে আর বনবাদাড়ে শয্যা পেতে নিতে
অভিশাপ দিচ্ছি আজ সেই খানে দজ্জালদের।
=============
অভিজিৎ রায়ের যুদ্ধাপরাধীদের বিচার চাই পড়ুন।
১৯৯২ সালে গণ আদালত করায় শহীদ জননী জাহানারা ইমামের বিরুদ্ধে বিএনপি সরকার রাষ্ট্রদ্রোহীতার মামলা দিয়েছিল। পরে জামাতের সঙ্গে জোট করে তারা ক্ষমতায়ও গিয়েছে। কাজেই যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের প্রশ্নে বিএনপি বরাবরই বিরোধীতা করবে– এ আর নতুন কী?
—
লেখাটি একদম সরকারি প্রেসনোটের মতো লাগলো। :deadrose:
@বিপ্লব রহমান,
এর পর বললেন-
স্ববিরোধীতার মত হয়ে গেল না ?
@বিপ্লব রহমান, এখন যাদের কে অভিযুক্ত করা হয়েছে শেখ মুজিব তাদের কে অভিযুক্ত করলো না ?
এবং শেখ হাছিনাও ১৯৯৬ থেকে ২০০১ পর্যন্ত অভিযুক্ত করলো না, কারন সেই সময় জামাত তাদের সাথে ছিল, এখন জামাত বি এন পির সাথে থাকাতে ওরা যুদ্ধ অপরাধির নাম দিয়ে জামাত কে রাজনৈতিক ভাবে পঙ্গু করতে চাই, বি এন পি এর বিরোধিতা করবে কারন আওয়ামীলিগের উদ্দেশ্য সঠিক নয় সেই জন্য।
@jahedullah,
শেখ মুজিব, হাছিনা তাদের কে অভিযুক্ত করেন নাই বলে কি ওরা যুদ্ধাপরাধী নয়?
ভয়ানক একপেশে লেখা।মনে হল মায়া চৌধুরী লিখেছে।
বি,এন,পি’র স্বাধীনতা বিরোধী চরিত্র প্রকাশ করতে গেলে আওয়ামী লীগের একনিষ্ঠ সমর্থক হওয়া একজন বাধ্যতামুলক নয়।
@অসামাজিক,
কথাটা সত্য, তবে লেখাটা ভয়ানক একপেশে মায়া চৌধুরীর লেখা কেন মনে হল?
@আকাশ মালিক,আসলে লেখাটি পড়ে, প্রতিষ্ঠিত আওয়ামী লীগ নেতার লেখা বলে মনে হয়েছিল তাই মায়া চৌধুরী’র উপমা। আর সঠিক ইতিহাসের রচনা আওয়ামী লীগ করেছে পড়ে একপেশে লাগলো।
@আকাশ মালিক,
মায়া চৌধুরী কি না বুঝি না, তবে লেখক যেভাবে বর্তমান সরকারকে স্বাধীনতার পক্ষের কান্ডারী, ধোয়া তুলসী পাতা বানালেন তাতে বোঝা গেল তিনি ভেতরের লোক। কারণ,
নিশ্চয়ই কিছু কাজ অবশ্যই আছে যা বৈধ নয় যেমন গার্মেন্টস শ্রমিকদের কে হত্যা এবং তাতে সহযোগিতা দান। এই সকল কাজ অবশ্যই অবৈধ। তাই এ রকম কথা সমাজকে অন্ধ বিশ্লেষণ।
স্বাধীনতা ছিল আপামর জনসাধারণের। বঙ্গবন্ধু শুধু তা ঘটতে সহযোগিতা করেছিলেন মাত্র। এ দেশের কৃষক, শ্রমিক নিপীড়িত মানুষ যারা মুক্তিযুদ্ধ করেছিল তারাই স্বাধীনতার স্থপতি, আর স্বাধীনতার স্থপতি তৎকালীন অত্যাচারী পাক সরকার, কারণ তাদের সীমাহীন অত্যাচারেই স্বাধীনতার স্বপ্ন এদেশবাসীর হৃদয়ে উদিত হয়েছিল। বঙ্গবন্ধু না থাকলে এ দেশের মানুষ যুদ্ধে যেতেন না, দেশকে স্বাধীন করতে এগিয়ে আসতেন না? তবে অবশ্যই স্বীকার করতে হবে যে দেশের মানুষকে সংগঠিত করতে বঙ্গবন্ধু ছিলেন কান্ডারী, এক মহান নেতা, যার তুলনায় আর কেও তৎকালে ছিল কিনা জানা নেই।
জানি না কথাটা কতটা সত্য তবে আমার প্রশ্ন ২০০৮ এর নির্বাচন কতটা নিরপেক্ষ, এর পেছনে কি কোন ষড়যন্ত্র নেই? বা, সেনা বাহিনী অথবা অন্য কোন হাত নেই?
তাই নাকি? ঐ সমাবেশেই স্বাধীনতার পক্ষের সকল ন্যাতা একত্রিত হয়েছিল তাই না? জানতাম না। বাহ তাহলে এই বিশেষ রাজনৈতিক দলের সকলেই স্বাধীনতার স্বপক্ষের মনে হয়। ভেতরে কোনো বিপক্ষের লোক নেই, নেই কোন যুদ্ধাপরাধী। ভালই হল তা হলে।
কথাটা ঠিক। তবে বর্তমানে কি সরকার এর ব্যাতিক্রম? তাহলে কতটুকু?
আমি লেখকের লেখার বিরোধিতায় নামি নাই। লেখাটা সময়োপযোগী এবং তার উত্থাপিত অভিযোগ গুলো অত্যন্ত যৌক্তিক, তবে লেখাটা বড় একপেশে; লেখকের কিছু বিতর্কিত মন্তব্যের আলোকে আমার প্রশ্ন, নিশ্চয়ই লেখক আমার প্রশ্নের উত্তর দিতে এগিয়ে আসবেন।
ধন্যবাদ লেখক কে বিষয়টি উত্থাপনের জন্য।
@মুহাইমীন,
বর্তমান সরকার যেহেতু যুদ্ধাপরাধীদের বিচারে নেমেছে তখন একে স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি ছাড়া কি মনে করতে পারি? আর যদি এরা স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি না হয় আপনার মতে কারা স্বাধীনতার পক্ষের দয়া করে জানাবেন।
আপনার সাথে একমত, তবে বক্তব্যটা হলো চরম ভাবে ধোয়াশা পূর্ণ। অবশ্যই জনসাধারনের সাহায্য সহযোগীতা ছাড়া কোন দেশকে স্বাধীন করা যায় না। তবে সেই জনসাধারনকে উদ্বুদ্ধ করতে দরকার পড়ে একজন ক্যারিশম্যাটিক নেতার। এরকম নেতা ছাড়া কোন দেশ স্বাধীন হয়েছে বলে আজও শোনা যায় নি। আর সে কাজটাই করেছিলেন বঙ্গবন্ধু সেখ মুজিবুর রহমান। ঠিক এভাবেই আমেরিকার স্থপতি জর্জ ওয়াশিংটন, ভারতের গান্ধি, পাকিস্তানের জিন্নাহ এবং এরকম আরও অনেকে। এদেরকে বাদ দিয়ে শুধু জনসাধারনের কথা বলার মানে হলো এদের কৃতিত্বকে অস্বীকার করা ও তাদের প্রতি চরম অকৃজ্ঞতা প্রকাশ করা।
২০০৮ এর নির্বাচন নিরপেক্ষ হয়েছিল কি না তা জানতে আপনি মাঠ পর্যায়ের যে কোন নির্বাচনী এজেন্টের সাথে কথা বলে দেখতে পারেন। কোন কেন্দ্রে রিগিং বা জাল ভোটের নজির নেই। থাকলেও তা এত সামান্য যে ধরার মধ্যে পড়ে না। সকল আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষক সহ অন্যান্যরা এ নির্বাচনের ভূয়সী প্রশংসা করেছিল। কারন ভোটার আই ডি কার্ড ছাড়া কেউ ভোট দিতে পারেনি। যে কোন উন্নত দেশের সম পর্যায়ের নির্বাচন ছিল এটা।
তা ভাইজান, ওখানে কারা একত্রিত হয়েছিল , দয়া করে বলবেন কি ? ওখানে যারা ছিলেন তারা কি সব রাজাকার ?
এ সরকারের আমলে এখনও কোন হাওয়া ভবনের মত কোন কিছুর নাম এখনও শোনা যায় নি, যদিও এরা সব ধোয়া তুলশী পাতা নয়। তবে মাত্রাগত ও পরিমানগত একটা তফাত তো আছেই। ২০০১ থেকে ২০০৬ পর্যন্ত কোন মাত্রা ছিল না, পরিমানের কোন সীমা ছিল না তা দেশের যে কাউকে জিজ্ঞেস করলেই অকাতরে বলে দেবে।
সেটা কিরকম বুঝলাম না ভাইজান। দয়া করে একটু ব্যখ্যা দেবেন।
যাহোক, আমার নিবন্ধের মূল বিষয় ছিল যুদ্ধাপরাধীর বিচার প্রসঙ্গ। অন্য বিষয় না টানাই ভাল। এ বিষয়ে কোন কথা থাকলে দয়া করে বলবেন।
ভাল থাকবেন।
@ভবঘুরে,
ভাই, ঐ খানে এক বিশেষদলের নেতারা একত্রিত হয়েছিল, ঐ দলে কেউ রাজাকার নেই তা বলতে পারব না, না থাকার নিশ্চয়তা কোথায়?
আমি বিজয় দেখি নি
ধন্যবাদ আপনাকে।
@অসামাজিক,
আকাশ মালিক ভাই য়ের মত আমারও একই প্রশ্ন। যুদ্ধাপরাধীদের বিচার চাইতে গেলে একনিষ্ট আওয়ামী সমর্থক হয় কেমনে? দয়া করে একটু পরিষ্কার করবেন ?
@ভবঘুরে,লেখাটি যে একপেশে এবং আওয়ামী পন্থি সেটা কি পরিষ্কার করে(উদাহরন দেখিয়ে) বলার প্রয়োজন আছে বলে আপনি মনে করেন? :lotpot: