১৫-ই ডিসেম্বর, ২০০৮। সূর্য অস্ত যায় প্রায়; ভেতর থেকে ছেলেমেয়েদের কণ্ঠস্বর ভেসে আসছে, ‘‘পাকিস্তান…পাকিস্তান…এইবার ছক্কা…ওহ্ মাই ডিয়ার আফ্রিডি…!’’ বারান্দার গ্রি্লটা শক্ত করে ধরেন হামিদা বেগম, দম বন্ধ হয়ে যাওয়ার উপক্রম; বুকের ওপর খামচানো ক্ষতটা একবার দেখে নেন তিনি। পশ্চিমাকাশে রক্ত ঝরছে; রক্তে রক্তে লাল হয়ে গেছে শিলা দিঘির পানি, সামনের শাল বাগান। রক্ত ঝরছে হামিদা বেগমের অসুস্থ জরায়ু থেকেও।
সন্তানেরা বড় হয়েছে। আর কত বড় হবার স্বপ্ন দেখেছিল ওদের বাবা জানেন না হামিদা বেগম। বয়সের ভারে হয়ত অনেক কিছুই ভুলে গেছেন তিনি আবার অনেক কিছুই তীব্রভাবে গেঁথে আছে স্মৃতির ধ্বংসপ্রায় দেয়ালে। ৩৭ বছর অনেক সময়, অনেক কিছুই বদলানোর জন্য যথেষ্ট- কোন সন্দেহ নেই তাতে। কিন্তু হামিদা বেগমের ক্ষত বিগত হয়নি এখনো, তবে ৩০ লক্ষ শহীদের রক্ত শুকাতে ঠিক কতটা সময় প্রয়োজন জানেন না হামিদা বেগম। বিবেকের বিগলিত আত্মজিজ্ঞাসা আর সময়ের সুস্থতার সন্ধিক্ষণে অনেক হিসাবই তিনি মেলাতে পারেন না আদৌ। তবে পাকিস্তান যে শেষ পর্যন্ত জিতেই যাবে সন্তানদের বাড়াবাড়ি রকমের উল্লাসে এই হিসাবটা পাকাপক্ক করে ফেলেন তিনি।
রাত ১১:৩০ মি.। ‘‘শোয়েব আক্তার, মাই সুপার হিরো, আর দুইটা উইকেট প্লিজ! …ওহ্ পাকিস্তান আমার জান্…তোমাকে জিততেই হবে! ‘‘হায়রে বীরশ্রেষ্ট হামিদুর রহমান, হায়রে রুহুল আমিন…! কোথায় গেলো তোমাদের শ্রেষ্ঠতা!’’ হামিদা বেগম ভাবতে থাকেন- ‘‘যেদিন ওদের বাবা যুদ্ধে গেলেন, আমি এবং তাঁর বারো বছরের কলিজার টুকরা যমুনা ও সদ্য আগত মানিক জোড়া- সফিক আর রফিককে রেখে, আমার আতঙ্কিত চেহারা দেখে বলেছিলেন, ‘ওদের জন্য মানচিত্র আনতে হবে না?’ আমি ঠেকাতে পারিনি তাঁকে। ঠেকাতে পারিনি ওদের কেউও; যে দিন ওরা আমাকে এবং আমার বারো বছরের শিশুকে টেনে-হিঁচড়ে নিয়ে গেল ওদের ভোজালয়ে, কেটে ছিঁড়ে আমাদের রক্তে জন্মের পিপাসা মেটালো পালাক্রমে। আহা, আমার ছোট সোনামনি কী কষ্টটাই না সইলো সেদিন! মরনের তীব্র্ স্বাদে মিটে গেল জীবনের সমস্ত পিপাসা। ওদের বাবা যেদিন বুকের রক্তে মানচিত্র এঁকে দিয়ে বললেন, ‘এই যে আমার সফিক-রফিকের বাংলাদেশ।’ আমি ঠেকাতে পারিনি তাঁকেও। পিতার মৃত্যু দিয়ে দিয়ে রচিত হল সফিক-রফিকের এই স্বাধীনতা? ‘সফিক আর রফিক’- কত সাধ করে সে রেখেছিল নাম দুটি !’’
হামিদা বেগম অন্ধকারে মুখোমুখি অন্ধকারের। ‘‘আজ ওরা বড় হয়েছে, আধুনিক শিক্ষাই শিক্ষিত,’’ ভাবেন হামিদা বেগম, ‘‘আমার মত করে ওরা ভাববে কেনো! আর ওদের বাবা?’’ টানা নিঃশ্বাস ছাড়েন তিনি, ‘‘কী বিস্তর ব্যবধান! যে কি-না পাকিস্তানকে কোনদিনও মেনে নিতে পারেনি। আজ তাঁর সন্তানেরা পাকিস্তান পাকিস্তান করে পাগলপ্রায়। যে পতাকা সরাতে তাদের বাবা প্রাণ দিলেন সেই পতাকা তারা এখন গভীর মমতায় লালন করছে তাদের বুকে। ওরা তো আমারও সন্তান! একদিন পাকিস্তানী হায়েনারা একবারও ‘পাকিস্তান জিন্দাবাদ’ বলিনি বলে আমার দেহের প্রতিটা কোষে খোদাই করে দিয়েছিল অপমানের চিহ্ন; আজ আমারই সন্তানেরা ‘পাকিস্তান…পাকিস্তান জিতবেই…পাকিস্তান…পাকিস্তান…!’ শোরগলে আকাশ বাতাস ভারি করে তুলেছে। ভাবতে অবাক লাগে, এটা একটা শহীদ মুক্তিযোদ্ধার বাড়ী। প্রথম বিশ্বকাপে যখন বাংলাদেশ পাকিস্তানকে হারিয়ে দিল, আমার ছোটছেলে খুব কষ্ট পেয়েছিল তার আত্মার পাকিস্তান অপরাজিত চ্যাম্পিয়ন হয়ে দ্বিতীয় রাউন্ডে যেতে পারলো না বলে; আর বড় ছেলে নিজেকে শান্তনা দিয়েছিল এই ভেবে, তার পাকিস্তান ইচ্ছে করেই বাংলাদেশের কাছে হেরেছে! হায়রে বাংলাদেশ- জিতেও জিততে পারলো না! ওগো, তুমি দেখে যাও তোমার সফিক আর রফিকের স্বাধীনতা! ৩০ লক্ষ শহীদ এ-কাদের জন্য জীবন দিল? কেন আমার ফুলের মত মেয়াটা অকালে ঝলসে গেল? এ কোন স্বপ্নের বীজ বুনেছিলাম আমার ধর্ষীত দেহে? ওগো, আমি চাই না এমন স্বাধীনতা। আমাকে ঐ নয়টি মাস ফিরিয়ে দাও, আমার মেয়েকে ফিরিয়ে দাও, আমি তোমাকে চাই…!’’
খুব কষ্ট করে শ্বাস নেন হামিদা বেগম। ক্রিকেট খেলা তিনি বোঝেন না, তবে না বুঝলেও এটুকু বোঝেন জীবনে যত ভালো সময়ই আসুক না কেন ঐ নয়টি মাস কিছুতেই ছাড়বেনা তাঁকে, সে চাইলেও পারবেনা ছাড়তে। হামিদা বেগম জানেন, রক্ত কখনো যুক্তির কথা মানে না, উৎফুল্ল মনে সে স্বাধীনতা চায়। তিনি এও মানেন, রক্ত কখনো বিকৃত হয় না। ‘‘কিন্তু’’ ভাবেন তিনি, ‘‘আমার সন্তানেরা ওদের বাবার সন্তান- যেমনি গতরে তেমনি চেহারায়, অথচ কোথায় যেন একটা স্পষ্ট ব্যবধান থেকে গেছে। ওরা জারজ সন্তান নয় তো!’’ নিজের অজান্তেই তাঁর সন্তানদের পরিচয় নিয়ে সন্দেহ জাগে। ভয়ে আৎকে ওঠে তাঁর মন।
রাত ১২টা, ১৬ই ডিসেম্বর। ফায়ারিং স্কোয়ার্ড থেকে গুলির আওয়াজ ভেসে আসছে। ‘‘ওদের বাবার স্বপ্নের আজ ৩৯ বছর পূর্তি হলো। ভেতরে আমার সন্তানেরা, হাততালি আর আনন্দে ফেটে পড়ছে, পাকিস্তান বোধহয় এতক্ষণে বিশ্বকাপ জিতে নিলো।’’ ‘‘পাকিস্তান…পাকিস্তান…ওহ্ মাই পাকিস্তান…!’’
…হামিদা বেগম বুকের ক্ষতটা ঢাকবার চেষ্টা করেন।
মন্তব্য… এই লেখা অামাদের প্রেরনা জোগাবে
ভাই আপনি মনে হয় ভারতের দালাল ___ভারত যে ৪০ বছর ধরে আমাদের মারতাছে সেগুলো দেখেন না ___মুজিব বলছিল আমরা পাকিস্তানকে ভাতে মারব পানিতে মারব কিন্তু সেই মারাটা মারটাছে ভারত___দেখেন আপনি ৫৩ নদীর মাজে ৫৪ বাধ দিছে ভারত ___বর্তমানে পাকিস্তান বাংলাদেশে এর কোন ক্ষতি করবে না এবং তারা চায় না___ সব যায়গায় কিছু খারাপ লোক থাকে ওই সময় খারাপ লোক গুলো ছিল পাকিস্তান সরকারের মালিক_
খুব ভাল লাগলো পড়ে।
স্কুলে থাকতে একবার ছেলে মেয়েরা হুজুর স্যারকে জিজ্ঞেস করেছিল, স্যার পাকিস্তানকে ঐ বিশ্বকাপে সমর্থন করে কিনা। স্যার বলেছিলেন, “‘৭১ সালে পাকিস্তান বাংলাদেশের সাথে যা করসে, তাতে কোনদিক দিয়েই তাদের সমর্থন করা উচিৎ না।”
:coffee:
মোজাফফরকে শাবাশ দেওয়া হয় নি। :yes:
গল্প কি এটাই আপনার প্রথম? গাঁথুনি একটু দুর্বল মনে হয়েছে। কিন্তু সেটুকু রিকাভার্যাবল। ফিকশন নিয়মিত লিখলেই ঠিক হয়ে যাবে। আর বিশেষ করে ইমোশন -নির্ভর লেখাতে তো এমনিতেই সতর্ক থাকতে হয়।
নামকরণে যে-আঘাত দিতে দিতে চেয়েছেন, ততটা জোরালো হয় নি। “পাক সার জমিন সাদ বাদ” বাঙলায় লেখা হলে নামটা এতটা ব্যাঙ্গাত্ম চেহারা নিতে পারতো না। সুতরাং সেটার সাথে তুলনা না করাই ভালো। নামটা আসলেই অড লেগেছে।
কিন্তু অনুভূতিটা ঠিক ছুঁয়েছে।
যাহোক, আরো গল্প চাই। :yes:
একটা কথা জানতে চাচ্ছি, অপরাধ মার্জনা করবেন।
পাকিস্তান, বিশেষতঃ সামরিক বাহিনী ও সরকার অকারণে আমাদের অপরিমেয় ক্ষতি করেছিলো।
যদিও তারা অন্যায্যভাবে দাবি করেছিলো (এবং আমার ভূল না হলে এখনো দাবি করে থাকে) সেটা ধর্মরক্ষা ও দেশরক্ষায়।
তবে আমার মনে হয় না, রাজাকাররা কোনো হাস্যকর যুক্তিও দেখাতে পারবে।
সে যাক গে, আমার প্রশ্নঃ কাদের অপরাধ আমাদের কাছে মুখ্য হওয়া উচিত? যুদ্ধাপরাধীদের নাকী পাকিস্তানীদের? পাকিস্তানের সমগ্র জনগণ নিশ্চয়ই একাত্তরে আমাদের বিরোধিতা করেনি, দুয়েকজন মুক্তিযুদ্ধে আমাদের পক্ষে যুদ্ধও করেছে। তাছাড়া পাকিস্তানীদেরকে আমরা সাধারণ ক্ষমা চাওয়ার জন্য চাপ প্রয়োগ করতে পারি। বিচার ত করতে পারি না।
কিন্তু যুদ্ধাপরাধী তথাকথিত বাঙালীগুলোকে? এরাই কী আমাদের বড় শত্রু নয় যারা স্বাধীনতার এত বছর পরও আমাদের জাতিগত পরিচয়কে নস্যাত্ করতে চায়? এদের বিচারেই কী সর্বোচ্চ ফোকাস দেয়া উচিত নয়?
@মীমু, পাকিস্তানীদের বিচারের প্রশ্ন এখানে আসে না। বিচার করতে হলে অবশ্যই যুদ্ধাপরাধীদের করতে হবে। এবং এটা অতীব জরুরী। তবে এই বিচারের ক্ষেত্রে যেন নিরপেক্ষতা বজায় থাকে। ক্ষমতাসীন দলের সাথে সম্পর্ক স্থাপন করে কোন রাজাকার যেন প্রিন্স মুসার(!!) মত মুক্তিযোদ্ধাদের কাতারে এসে না দাড়ায়। ধন্যবাদ।
আমার ধারণা, এখানে ফারুকভাইকে একটু ভুল বোঝা হচ্ছে। ফারুকভাই যেভাবে ইসলামকে চিন্তা করেন, তাতে পাকিস্তানেরও অধিকাংশ মুসলমান প্রকৃত মুসলমান নন [সেই হিসেবে, আমিও ঠিক প্রকৃত মুসলমান নই]। সুতরাং, মুসলমান হিসেবে ফারুকভাই ভ্রাতৃত্ববোধ অনুভব করবেন পাকিস্তানের প্রতি, এইকথাটা আমার ভুল মন হয়েছে। ফারুকভাইয়ের কথাগুলো সাপোর্ট না করলেও, তার অনুভূতি আমার কাছে দামি মনে হয়েছে। বিপ্লব পাল, আপনি আর ফারুকভাই-এর চিন্তা, এই ক্ষেত্রে আসলে খুব একটা দূরের না।
কিন্তু এইখানে কোনো একজনের এই রকম একটা মন্তব্যে আমি পূর্ণভাবে সমর্থন দেই যে, এই ঘৃণার অরিজিন এমন একটা অনুভূতি, যার ভেতর দিয়ে যদি কেউ/কারো নিকটাত্মীয়/কাছের লোক কেউ না যায়, তবে বোঝা সম্ভব না। এই কথাটাকে প্লিজ নেগেটিভলি নেবেন না। বিশ্বমানবতা অবশ্যই অনেক বড় কথা, এবং এইটার স্বপক্ষে আপনার দেওয়া যুক্তির গভীরতা অস্বীকার করা কোনোভাবেই সম্ভব না। কিন্তু সত্যি কথা হলো একজন পাকিস্তানি লোক আমার সামনে আসলে প্রথমে তাকে মানুষ বলার চেয়ে পাকিস্তানীই মনে হবে। যে-লোকের ছোট বোন ধর্ষিতা হয়েছে, সে কি সারাজীবন ধর্ষক কিঙবা ধর্ষকের সাপোর্টারদেরকে কোনো অবস্থাতেই ক্ষমা করতে পারবে? এইবার চিন্তা করেন সেই লোককে যারা আপন মনে করে, তাদের কথা। তারাও পারবে না। এবং ধর্ষক যদি হয় গোটা একটা দেশের সৈন্য, তখন বিষয়টা এইরকম থাকে না। থাকাটা ঠিক সম্ভব হয় না।
হতে পারে এটা সময়ের ব্যাপার। হয়তো সময় গেলে একসময় এই অনুভূতি এরকম থাকবে না। তখন হয়তো আপনার মতন এইরকমভাবে আরো অনেকে চিন্তা করবে। এইসবই হয়তো’র কথা। কিন্তু মনে রাখবেন, এমন হয়তো’ও কিন্তু হতে পারে যে এই অনুভূতি, এই ক্ষত আমাদের হৃদয়ের এতই গভীরের, যে, আমরা সবসময়ই একটা প্রজন্ম জন্ম দিয়ে যেতে থাকবো, যারা সবসময়ই এই স্মৃতিকে তরতাজা হিসেবেই সংরক্ষণ করে রাখতে শিখবে।
@এন্টাইভণ্ড,আমার সাপোর্টে দুটো কথা বলেছেন (কার না সাপোর্ট পেতে ভাল লাগে 🙂 )সেকারনে নয় , আসলেই আপনার পুরো মন্তব্যে চিন্তা করার নহু উপাদান আছে। :yes:
একটা কথা না বল্লেই নয় , ঘৃনা কখনো মনে শান্তি আনতে পারে না , যেটা ক্ষমা সহজেই আনতে পারে। একারনেই মনে হয় ক্ষমা করা এত দুরূহ।
@ফারুক,
জ্বী, ঠিক কথা বলেছেন, যে ‘ক্ষমা’ খাল কেটে কুমির আনে সে ‘ক্ষমা’ দুরূহ ব্যাপারই হওয়া উচিৎ।
@ব্রাইট স্মাইল্,
ঠিক কথা।
@এন্টাইভণ্ড,ভবিষ্যত জানা থাকলে কত সুবিধাই না হতো। কোন ক্ষমা খাল কেটে কুমির আনবে আর কোন ক্ষমা উপকারে আসবে সেটা আগেভাগে জানা সম্ভব নয়। ‘ক্ষমা’- রাগ , প্রতিহিংসা , ঘৃনা দমন ও নিজ স্বার্থ ত্যাগ করে এবং ভবিষ্যতে ক্ষমাপ্রাপকের কাছ থেকে প্রতিদানের আশা না করে নিঃশর্তভাবেই করতে হয় , নইলে ক্ষমার মূল্য কোথায়?
@ফারুক,
যদি আগেভাগে জানা সম্ভব না হয় তা হলে বুঝতে হবে দুরদর্শিতার অভাব রয়েছে। আর সে অপরিনামদর্শিতার জন্য নিজের পায়ে নিজে কুড়াল মারলে তার ফলাফল নিজকেই ভোগ করতে হয়। তখন
ইত্যাদি দার্শনিক কথাবার্তা খুব কাজে আসে বলে মনে হয়না।
আর ক্ষমাপ্রাপকের কাছ থেকে কেউ প্রতিদান আশা করেনা, করাটা অবান্তর, কিন্ত অকৃতজ্ঞ ক্ষমাপ্রাপক যখন উল্টা ক্ষমাকারকের ক্ষতি সাধনের উদ্দেশ্যে দুষ্ট কাজে লিপ্ত হয় তখন ‘ঢিলটি মারিলে পাটকেলটি খাওয়া’ উত্তম বলেই বিবেচিত হয়।
ফারুক ভাই এর হাততালিতে আমি এই থ্রেডে আর লিখছি না। শুধু এটুকুই জানাচ্ছি, আমি বিশ্ব ভাতৃত্বের জন্যে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ঘৃণার পরিপন্থি, আর ফারুক ভাই ইসলামিক ভাতৃত্বের জন্যে পাকিস্তানের পক্ষে। তবে সমস্যা হল, পাকিস্তানের লোকেরা আবার বাংলাদেশীদের সম্পূর্ন মুসলমান মনে করত না-যদিও বাংলাদেশের ইসলামিস্টরা পাকি ভাতৃত্বের জন্যে পাগল ছিল। ইসলামিক ভাভৃত্বের এটাই সমস্যা যে, তা মানব জাতিকে বিভক্ত করে। এক করে না।
@বিপ্লব পাল,
ফারুক ভাই মরুভুমির মরিচিকা আর কতদূর? গেলেন কই, দেখেন বিপ্লব দা কী বলছেন, একটা হাততালি দেন প্লিজ।
@বিপ্লব পাল,
এতদিন জানতাম বিশ্ব ভ্রাতৃত্ব জাত পাত ধর্ম নির্ভর নয়। সে কারনেই আপনার এই থ্রেড বা অন্য থ্রেডে করা মন্তব্যে স্বতস্ফুর্তভাবে হাততালি দিয়েছি। আজ ভুল ভাঙ্গল। আপনি ও যে জাত পাত ধর্মের উর্ধে উঠতে পারেন নি , তা আপনার নিম্নের কোট করা মন্তব্যে পরিস্কার। শুধু দাবী করলেই যেমন মুসলমান হওয়া যায় না , তেমনি মুখে বা লিখে বিশ্ব ভ্রাতৃত্বের পক্ষে বল্লেই বিশ্ব ভ্রাতৃত্ব প্রতিষ্ঠা হয় না। পরবাসী দেশপ্রেমীর মুখোশ উম্মোচনে করা আপনার মন্তব্যের কথা স্মরন করুন।
যদি ধরেও নেই , আপনার দাবী অনুযায়ী আমি ইসলামিক ভাতৃত্বের জন্যে পাকিস্তানের পক্ষে (শুধু হাততালি থেকে এটা কেমন করে বুঝলেন?) , তাতে আমার (ইস্লামিস্ট)হাততালি গ্রহনে বা স্বীকারে তো বিশ্ব ভ্রাতার সঙ্কুচিত হওয়া উচিৎ ছিল না। আমার হাততালি কি এই পোস্টকে অশূচি করে দিয়েছে , যে আপনি এই থ্রেডে আর লিখবেন না বলে ঘোষনা দিয়েছেন। আপনার বিশ্ব ভ্রাতৃত্বে কি মুসলমানদের জায়গা নেই? মুখে বিশ্বভ্রাতৃত্ব জপে লাভ নেই ভায়া , নিজের মনকে আগে বিশ্বভ্রাতৃত্বের জন্য প্রস্তুত করুন।
@ফারুক,
একই সাথে কেও মুসলমান আর বিশ্ব ভাতৃত্বের অংশীদার হতে পারে না। কারন ইসলাম মুসলমান এবং অমুসলমানে বিরাট পার্থক্য করে। আপনি একই সাথে নাজিদের সমর্থন আর বিশ্বভাতৃত্বের কথা বলতে পারে্ন না।
এটা শুধু ইসলামের প্রশ্ন না। বিশ্বভাতৃত্বের জন্যে সবাইকে জাতীয়তাবাদ এবং ধর্মীয় পরিচয় ছাড়তেই হবে। বিশ্ব ভাতৃত্বে ইসলাম কেন কোন ধর্ম বা জাতীয়তাবাদের স্থান নেই। এটা সার্বিক প্রশ্ন, এখানে ইসলামকে আলাদা করা হয় নি।
@বিপ্লব পাল,
তার মানে আপনি বলতে চাচ্ছেন , বিশ্বভ্রাতৃত্বের জন্যে নাস্তিক হতে হবে। তাহলেতো আপনার আশা দূরাশাই থেকে যাবে। আমি তো জানতাম সকল ধর্মই মানুষকে ভালবাসার কথাই বলে , ইসলাম ও এর ব্যাতিক্রম নয়।
আর জাতীয়তাবাদের কথাই যদি বলেন , তাহলে সম্ভবত লেনিনের একটি উক্তির কথা বলা যায় – nationalist না হলে internationalist হওয়া যায় না।
@ফারুক,
ফারুক ভাই, ধর্মে বিশ্বাস আর আস্তিকতাকে গুলিয়ে ফেলেছেন। প্রচলিত ধর্মে বিশ্বাস না রেখেও আস্তিক হওয়া যায়। আস্তিক হতে গেলে যে প্রচলিত কোন না কোন ধর্মে বিশ্বাস রাখতেই হবে এই ধারনা হাস্যকর।
@ফারুক,
আমি যাদের বিশ্বমানব বলে চিনি-তারা কেও ্ধার্মিক বা নাস্তিক নন। নজরুল, লালন, রবীন্দ্রনাথের ধর্ম কি? ঈশ্বর যদিও থেকেও থাকেন, ্তিনি কি প্রতিটা ধর্মের জন্যে আলাদা হবেন? যদি না হোন-তাহলে তাকে পেতে গেলে বা ডাকতে ধর্মীয় পরিচয়ের প্রয়োজন কি? আপনি কি দেখতে পাননা বিশ্বের তাবৎ ধর্মীয় নেতারা বিশ্ব ভাতৃত্বের অন্তরায় এবং শাসক শ্রেনীর আরেকটা উইং?
লেনিনের ঢ্যামনামো বুঝতে গেলে আপনাকে আরো জানতে হবে। উনি ১৯১৮ সাল থেকে সোশ্যালিজম ইন ওয়ান কান্ট্রই বলে ন্যাশালিস্টিক স্যোশালিজম প্রচার করতে থাকেন। তার অনেক কারন আছে। উনি যখন জর্জিয়া দখল করেন, রাশিয়ান ন্যাশালিজমের সাহায্য তার দরকার ছিল। কারন তখন তিনি ইউরোপের কমিনিউস্টরা যার সত্যিকারের আন্তর্জাতিকতায় বিশ্বাস করত যেমন রোজা লুক্সেমবার্গ-তাদের দ্বারা লেনিন পরিতক্ত। এসব লিখতে গেলে একটা বই লিখতে হয়।
আন্তর্জাতিকতা বা কোন দার্শনিক ব্যাপারে লেনিনের লেখাকে সিরিয়াসলি নেওয়ার মতন কিছু নেই। হজরত মহম্মদ যেমন নিজের অপরাধ ঢাকতে, তার সব অপরাধ মূ্লক কর্মকে কোরানে আল্লা দিয়ে নাজিল করেছেন, লেনিন ও তার অপরাধ ঢাকতে ( এক্ষেত্রে ঘটনা ছিল রেড আর্মির জর্জিয়া অধিকার), হাজার তাত্ত্বিক ঢ্যামনামো করেছেন। এসব বোঝার মতন বু্দ্ধি বা পড়াশোনা থাকলে, আপনাকে মহম্মদের ডায়াপার পরিস্কার করতে হত না।
@বিপ্লব পাল,
হজরত মহম্মদের অপরাধ সম্পর্কে অনেক কিছুই জানতে পারছি। তবে যেটা সবচেয়ে ভয়ঙ্কর লাগে উনি নাকি paedophile ছিলেন এবং একটি ছয় বছরের বাচ্চা মেয়েকেও নাকি বিয়ে করেছিলেন।ভাবতেও অবাক লাগে যার চরিত্রের অবস্থা তিনি কি করে একটা এতবড় ধর্মের স্রষ্টা হতে পারেন।
পারিবারিক কারণে ব্যস্ত থাকায় গত কয়েকদিন মুক্তমনায় আসা হয়নি। এখন এতো মন্তব্য প্রতিমন্তব্যের পর কিছু বলার খুজে পাচ্ছি না। বিজাতির প্রতি আমাদের এই মোহ চরম হতাশার। কিছুদিন আগে শাহরুখের প্রোগ্রামে কিছু বঙ্গসন্তানের হিন্দির বাহার দেখে থুথু ছাড়া কিছু আসে না তাঁদের জন্য। তেমনি বঙ্গসন্তান আছে যারা উঠতে বসতে পাশ্চাত্য সংস্কৃতি ছাড়া কিছু চোখে দেখে না। এই রকম কিছু থাকবেই। তাঁদের জন্য থু থু বরাদ্দ থাকবেই। আর উর্দু অথবা পাকি প্রেমীদের জন্য থুথুও নষ্ট করতে আমি রাজী নই।
তবে গল্পটি নিয়ে আমার কিছু বলার আছে। গল্পটি আমার কাছে দুর্বল একটি গল্প মনে হয়েছে। কলুদা রায়ের একটি লেখা নিয়ে মনে আছে আমরা তর্ক করেছিলাম। সেখানেও বলেছিলাম এখানেও বলি, মুক্তিযুদ্ধ বা এর চেতনা নিয়ে গল্প/কবিতার প্রয়োজন রয়েছে। এর চেতনাকে ছড়িয়ে দিতে এরকম লেখা আরো বেশি বেশি করে আসা প্রয়োজন। কিন্তু আমি মনে করি মুক্তিযুদ্ধ বা এর চেতনাকে নিয়ে লেখা সবচেয়ে কঠিন। শুধু মানুষের সেন্টিমেন্টকে সম্বল করে একটি লেখা দাঁড় করিয়ে দিলে সেটি দিয়ে ভালো সিনেমা হতে পারে, ভালো সাহিত্য নয়। যে কাজটিই করেছিলেন কুলদা রায় এবং করেছেন এই লেখক।
এই লেখার সবচেয়ে বড় দুর্বলতা হচ্ছে লেখক কল্পনা করতে গিয়ে বেশি কল্পনা করে ফেলেছেন। পাকি প্রেম দেখাতে গিয়ে সেটাকে টেনে এনেছেন মুক্তিযুদ্ধে বাবা হারানো এক পরিবারে। এটি একটি এক্সট্রীম কেইস। আমার মনে হয় না মুক্তিযুদ্ধে স্বজন হারানো, আপনজন হারানো কেউ এরকম ভাবে পাকিস্থানকে সমর্থন করতে পারে। সেখানে নিজের বাবা হারানো সন্তানদের ক্ষেত্রে আরো অসম্ভব। যদি করে সেটা সেই সন্তানের মার দোষ, তিনি প্রকৃত শিক্ষা দিতে পারেননি তার সন্তানদের। পাকি প্রেম রয়েছে, কিন্তু সেগুলো ভিন্ন পরিবারে, ভিন্ন কারণে। একজন মুক্তিযোদ্ধা পরবর্তীতে দেশবিরোধী কাজ করেছেন সেটা আমরা দেখি, কিন্তু সেটি ভিন্ন প্রসঙ্গ। কিন্তু স্বজন/আপনজন হারানো মানুষ পাকিপ্রেমী হতে পারে না। তাই গল্পটির বুনন বাস্তবতার কাছাকাছি হলে আরো ভালো হতো। সমালোচনায় থেমে যাবেন না এটাই কামনা করি। মুক্তিযুদ্ধের চেতনাবোধ থাকলে সমালোচনা থেকে আশা করি পজিটিভ দিকগুলোই গ্রহন করবেন। ভবিষ্যতে লেখক হতে মুক্তিযুদ্ধের উপর আরো ভালো ভালো লেখা উপহার পাবো এই প্রত্যাশা রেখে গেলাম।
@স্বাধীন,
:laugh: :laugh:
দুঃখিত, দুঃখিত 😛 । :laugh: ।
@রৌরব,
আমি এরকম একটি মারাত্মক টাইপোর জন্য কুলদা রায়ের কাছে আন্তরিক ভাবে ক্ষমাপ্রার্থী :-X । আপনার চোখ আছে। আমি হাজার বার পড়ে গেলেও কুলদাই পড়তাম।
@স্বাধীন,
রৌরব বলে কথা, নামের অর্থ জানেন তো? এরকম ছিদ্রান্বেষী মানুষের কারণে কিছু লিখতে ভয় লাগে।
@স্বাধীন, আমি আপনার কথা সম্পূর্ণ মেনে নিচ্ছি। দেখুন, ভালো সাহিত্য লেখা আমার ক্ষমতার বাইরে। ওটা বড় বড় লেখকদের কাজ। আমি লেখক না, আমি মনের কথাগুলো বলার জন্য ভাষাকে ব্যবহার করি মাত্র।
আর আমি খুব সাধারণভাবে বিষয়টিকে দেখাতে চেয়েছি। আমি জানি মুক্তিযোদ্ধার বাড়িতে পাকিস্তানকে নিয়ে উল্লাস হওয়াটা অবাস্তব ঠেকে। কিন্তু আমার বক্তব্য হচ্ছে, সকল মুক্তিযোদ্ধা সকল সন্তানের বাবা, সকল ধর্ষিতা জননীও সকল সন্তানের মা। এটা অনুভূতির ব্যপার, এখানে রক্তের যুক্তি লাগে না। ব্যপকঅর্থে, হামিদা বেগম ঐ সময়ে ধর্ষিত জননীর প্রতিনিধি, আর সফিক আর রফিক হচ্ছে আমাদের প্রতিনিধি।
আমার বাবা মুক্তিযুদ্ধে যায় নি, তাই বলে যুদ্ধ সম্পর্কে আমার অনুভূতি মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদের থেকে ভিন্ন হবে কেন? সমস্ত দেশটাকে যদি আমরা পরিবার হিসাবে দেখি তাহলে কিন্তু ব্যপাটা সরল হয়ে যায়! আমি গল্পে তাই করেছি, কিন্তু এটা যেহেতু প্রবন্ধ না, তাই মেটাফোরটা সকলে সহজে বুঝতে পারবে না হয়ত। ধন্যবাদ।
আমি মুক্ত মনার সকল সদস্য কে অনুরোধ করবো “ফারুক” কে তার মন্তব্য নিয়ে থাকতে দেন । উনার মন্তব্যের জবাবের প্রয়োজন আছে বলে মনে করি না। উনি বিষয় টির গভীরে না গিয়ে মনে মনে কলা খাছছে । বিপ্লব পাল যা বলছে উনি (ফারুক) ঐটার পক্ষে কনো কিছু না লিখে তালি বাজায়। সুতরাং তালি দেয়া লোকদের উদেদশ্যে কনো মন্তব্য করা বুদ্ধিমানের কাজ না।
মোজাফফর,
আপনাকে ভাই কী বলে ধন্যবাদ জানাই চমৎকার লেখাটার জন্য।
কয়েকজনের মন্তব্য শুনে আমার কাছে শুধু গোবরের গন্ধ আসতেছে।
এরা রাজনীতির সাথে খেলাকে মেলাতে নারাজ। কিন্তু তারা একটু বলবেন কি খেলার সময় তারা কেন পতাকা নিয়ে যান মাঠে? তাদের বিষ্ঠা পরিষ্কার করার জন্য? হয়ত সব ক্ষেত্রে না, কিন্তু খেলার সাথে কিছু ক্ষেত্রে অন্তত রাজনীতির যোগাযোগ আছে। আমি বাংলাদেশকে কে সাপোর্ট করব? কারন বাংলাদেশ আমার দেশ। এটা রাজনীতি না তো কী?
ভারত খেলার সময় ভারতকে সাপোর্ট করবে। এটাকে রাজনীতি না বলে আর কি বলা যায়? দেশাত্ববোধ। দেশাত্ববোধ যদি রাজনীতি না হয় তাহলে রাজনীতির সংজ্ঞাটা দয়া করে দিয়ে যাবেন।
পাকিস্তানকে ঘৃণা করা মানে বর্তমানে ঐ দেশের জনগনকে ঘৃণা করা নয়, যদিও ৭১এ তাই ছিল। এখন পাকিস্তানকে ঘৃনা করা মানে পাকিস্তান শব্দটাকে ঘৃনা করা। এই শব্দটা এমনই একটা শব্দ যা শুনলে “ফারুক” টাইপ অতি উদার জনগন ছাড়া সব বাঙালীর মনেই প্রবল ঘৃণার উদ্রেক হবে। বাংলাদেশে “রাজনীতি” শব্দটা শুনলে আমাদের মনে যেমন বিরক্তি আসে, ঠিক তেমনিভাবে ঐ পাকিস্তান শব্দটা শুনলেও ঘৃনা আসে। এখন এই আবেগের ব্যাপারটা নিয়ে যারা অতিযুক্তিবাদী কথাবার্তা বলে তাদের স্থান মনে হয় মুক্তমনা নয়। কারন এখানে বেশীর ভাগ সদস্যই এই ধরনের মনভাব পোষন করেন। তারা বোধ করি সোনার বাংলা ব্লগে গেলেই ভালো করবেন। আর সাথে করে হাতের গ্লাভস নিয়ে গেলেই মনে হয় ভালো হয়, কারন হাততালি দিতে দিতে আবার হাতই না ছিড়ে যায় বলা যায় না।
@সাইফুল ইসলাম, আপনি আমার মনের কথা বলেছেন। আমি এই বিষয়টা সরলভাবে বলতে চেয়েছি। আপনি আরো সহজ করে দিলেন। অসংখ্য ধন্যবাদ ভাই।
এক্ষণে পোস্টের উদ্দেশ্য কি স্বার্থক হইয়াছে বলা চলে?
@ধ্রুব, হ্যাঁ। বলা চলে। আমি বেশকিছুদিন মুক্তমনায় আনাগোনা করি। এই প্রথম চরমভাবে নাড়া খেলাম। কিছুটা বিভ্রান্ত।
সবার সব কথা , কানার দুই চোখের ক্থা। ঘৃনায় (লোক দেখানো উদ্দেশ্য প্রনোদিত নয় তো !) এতই অন্ধ হয়ে গেছেন , যে পাকিপ্রেম ছাড়া আর কিছুই আপনার কল্পনায় আসে না। আপনাকে আরো বুদ্ধিমান ভেবেছিলাম। আপনার চোখ খোলার জন্য কিছু উদ্ধৃতি দিলাম। পড়ুন ও চিন্তা করুন।
~ The price of hating other human beings is loving oneself less. ~ Eldridge Cleaver অন্য মানুষকে ঘৃনা করা মানেই নিজেকে একটু কম ভালোবাসা।
~ We hate some persons because we do not know them; and will not know them because we hate them. ~ Charles Caleb Colton আমরা তাদেরকেই ঘৃনা করি , যাদেরকে চিনি না। ঘৃনার কারনেই ওদেরকে কখনো চিনব না।
~ If you hate a person, you hate something in him that is part of yourself. What isn’t part of ourselves doesn’t disturb us. ~ Herman Hesse যখন কোন মানুষকে ঘৃনা করি , তখন ঐ মানুষটার ভিতরে নিজের যে অংশ (কুপ্রবৃত্তি) আছে , তাকে ঘৃনা করি। যেটা নিজের নয় তা কখনো আমাদের নাড়া দেয় না।
~ I will permit no man to narrow and degrade my soul by making me hate him. ~ Booker T. Washington আমি কোন মানুষকে ঘৃনা করার মাধ্যমে নিজেকে ছোট ও অধঃপতিত করতে দেব না।
~ Few people can be happy unless they hate some other person, nation, or creed ~ Bertrand Russel অন্য মানুষ , অন্যজাতি বা ভিন্ন ধর্মবিশ্বাস-মতবাদকে ঘৃনা করতে না দিলে, কম মানুষ-ই পাওয়া যাবে , যারা সুখী।
@ফারুক,
আমার বুদ্ধিশুদ্ধি নিয়ে আপনি কী ভেবেছেন সেটা আপনার বিষয়। তবে আমার স্ট্যান্ডার্ড এটাই।
বাণীগুলো ভুল সময়ে ভুল জায়গায় বিতরন করছেন আপনি। আপনার এই মহানবাণীগুলো একাত্তর সালে পাকি জেনারেলদের দিলেই বেশি ভাল হতো। তাতে অন্তত ত্রিশ লাখ মানুষ বাঁচতো, দুই লাখ নারী ধর্ষণের হাত থেকে রক্ষা পেতো।
@ফরিদ আহমেদ, তুমি অধম , তাই বলিয়া আমি উত্তম হইব না কেন? চোরে না শোনে ধর্মের বাণী।
@ফারুক,
আপনাকে এতদিন আমি একজন ভদ্রলোক বলেই মনে করতাম।
@ফরিদ আহমেদ, আপনাকও এতদিন আমি একজন মুক্তমনা বলেই মনে করতাম।
দুই বার্লিন একাকার হল। দুই বাংলা কি মিলতে পারে?
@ভাস্কর, মানে দুই জার্মানী র কথা বলতে চাইলাম।
ঘৃণার বিরুদ্ধে আরো ঘৃণা ছড়িয়ে, কি লাভ?
পাকিস্তান মানে কি শুধু আয়ুব খান না তার ৯০% জনগন যার ৫০% খেতে পায় না??
লড়াইটা ইসলাম, না পাকিস্তান, না আয়ুবখান, না— ঠিক কার বিরুদ্ধে???
রাষ্ট্র মাত্রই একটা পচন শীল অস্তিত্ব-বাংলাদেশ, ভারত বা পাকিস্তান এই নামগুলির বা রাষ্ট্রগুলির প্রতি ভালবাসা বা ঘৃণা কোনটাই কাম্য না-কারন ভবিষয়তে এসব কিছুই থাকবে না। থাকবে অখন্ড মানব জাতির অস্তিত্ব।
লড়াই যার বিরুদ্ধেই হোক আমি মনে করি ঘৃণা দিয়ে কোন চেতনা বৃদ্ধির আন্দোলণ হয় না।
অতীত থেকে শিক্ষা নিতে হয়-তাকে ঘৃণার জন্যে ব্যাবহার করলে একজন মৌলবাদির সাথে মুক্তমনার পার্থক্য কি থাকবে?
@বিপ্লব পাল, হাততালি দিতে দিতে হাত ব্যাথা হয়ে গেল। :clap2:
ভাল বলেছেন।
@বিপ্লব পাল,’ – কারন ভবিষয়তে এসব কিছুই থাকবে না। থাকবে অখন্ড মানব জাতির অস্তিত্ব।’- নতুন বিশ্ব-ব্যবস্থার গোপন খবর আগাম জানেন মনে হচ্ছে ।
@বিপ্লব পাল,
এখানে ঘৃণার কথা আসছে কেন? তুমি শুধু ওই দিকে টেনে নিয়ে যাচ্ছো আর আমাদের পাকিপ্রেমের প্রতিভূ হয়ে আসা ফারুক হাততালি দিতে দিতে তার হাতে ব্যথা করে ফেলছে। আমরা বলছি আমাদের কষ্টের কথা, আনন্দের কথা, ভালবাসার কথা, লজ্জার কথা, অতীত গৌরবের কথা। এতে যদি ঘৃণা প্রকাশ হয় তবে এটা ঘৃণাই। এর জন্য বিন্দুমাত্রও লজ্জিত নই আমি। স্বজাত্যবোধ আমার কাছে অনেক বড় বিষয়, দেশপ্রেম আমার কাছে মণিমুক্তোর চেয়েও দামী। একজন দেশপ্রেমিকের জন্য ভালবাসার ভাণ্ডার নিয়ে বসে থাকি আমি, অন্যদিকে নিজের দেশের সম্মানের প্রতি যাদের কোনো দরদ নেই, বিশ্ব মানবতার কথা বলে অন্য দেশ বা জাতি নিয়ে লাফালাফি করে তাদের জন্য অপরিসীম ঘৃণা জমিয়ে রাখি এই বুকে।
সন্তানহারা কোনো মাকে বা কোনো ধর্ষিতাকে তোমার এই ক্ষমার মহান বাণী শুনিও পারলে। আমরা অত মহৎ নই। আমাদের যেমন পাকিপ্রেমে হাতাতালি দিয়ে হাত ব্যথা করার লোকের অভাব নেই, ঠিক সেরকম গগনের মত দেশের সম্মান রক্ষার জন্য জান দিয়ে দেবার ছেলেরও অভাব নেই।
একটা জিনিস মনে রাখবা, নিজের দেশকে, স্বজাতিকে যে ভালবাসে না, সে অন্য দেশ বা অন্য দেশের মানুষকেও সম্মান দিতে পারে না।
ভবিষ্যতে যেহেতু রাষ্ট্র থাকবে না বলছো, এই যুক্তিতে তোমার ভারতবাসীদের একটু বলোতো ভারত বাংলাদেশের আগামী ফেব্রুয়ারী মাসের বিশ্বকাপের খেলায় বাংলাদেশের পতাকা নিয়ে লাফালাফি করতে। দেখি তারা করে কি না?
@ফরিদ আহমেদ,- ”একটা জিনিস মনে রাখবা, নিজের দেশকে, স্বজাতিকে যে ভালবাসে না, সে অন্য দেশ বা অন্য দেশের মানুষকেও সম্মান দিতে পারে না।”
– খুব খাঁটি কথা।তাই তো ব্রিটেন ইউরোপীয় ইউনিয়নের অন্যতম সদস্য হয়েও এবং জার্মানীর সাথে মধুর সম্পর্ক থাকা সত্বেও বিবিসি’র একটি চ্যানেলে প্রতিদিন দু তিনটি করে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের ফিল্ম দেখানো হয় অর্ধশতাব্দী পরের প্রজন্মের কাছে স্বজাতির ইতিহাস তুলে ধরার জন্য।এছাড়া প্রতি বছর ঘটা করে পালন করা হয় D-Day দিবস এবং সৈনিকদের স্মরণে পরা হয় পপি ফুলের ব্যাজ।
@মোহিত,
এই প্রসঙ্গে আর একটি কথা মনে পড়ল। আমেরিকার সিটিজেনশীপ পরীক্ষার সময় একটা কমন প্রশ্ন ছিল এরকম যে আমেরিকা স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় কাদের সাথে যুদ্ধ করে স্বাধীনতা লাভ করেছে।
কিছুই ভোলা হয় না!
@ফরিদ আহমেদ,-”সন্তানহারা কোনো মাকে বা কোনো ধর্ষিতাকে তোমার এই ক্ষমার মহান বাণী শুনিও পারলে।” -এই হচ্ছে কথা।সেই জন্যে বললাম যে যেই অভিজ্ঞতার ভেতর দিয়ে যায় নি তার পক্ষে তা বোঝা সম্ভব নয়।
@ফরিদ আহমেদ,
আরেকটি বিষয় যোগ করি। স্বাধীনতা যুদ্ধ বলে মুক্তিযুদ্ধকে অনেক সময় পেছনে ফেলে দেয়া হয়।অনেকে একে নিছক একটা যুদ্ধ বলে এড়িয়ে যেতে চান। ১৯৭১ সালে এটা কোনো গতানুগতিক যুদ্ধ ছিল না। একদল হায়েনা এদেশের নিরস্ত্র সাধারণ মানুষদের সমূলে ধ্বংস করার শপথ নিয়ে হামলে পড়েছিল। তাদের কণ্ঠে ধ্বনিত হয়েছিল, “এ দেশের মাটি চাই, মানুষ নয়”। নিঃসন্দেহে যা ছিল ইতিহাসের বর্বরতম ঘটনা। এদেশের মানুষগুলোর দোষ কি ছিল?
১। তারা তদের ন্যায্য অধিকার চেয়েছিল।
২। তারা নাকি ভাল মুসলমান ছিল না। তাই লুঙ্গি খুলে মুসলমানি পরীক্ষা করা হত।
যখন পাকিস্তানীরা আজো তাদের কর্মকাণ্ডের জন্য লজ্জিত নয় ও যে চেতনার কারণে একাত্তরে বর্বরতা চালিয়েছিল সেই চেতনা আজো ধারণ করে তখন তাদের সাথে আমার কোনো বনিবনা সম্ভব নয়, হুমায়ুন আজাদের মত করে বলছি -এমনকি তারা যদি আমার জন্য ফুল নিয়ে আসে তবুও। আমি রক্ত-মাংসের মানুষ। ফেরেসতা হওয়ার কোনো অভিলাষ বা তাড়না আমি অনুভব করি না। আমি পারি না সব দেশের সীমানা মুছে যাবে নামক উদ্ভট-অজগুবী ইউটোপিয়ার স্রোতে গা ভাসিয়ে সব ভুলে যেতে।
আমি ভারতের সাথে পাকিস্তানের তুলনাতেও আপত্তি দেখি। ভারতের উপর নানা কারণে আমি প্রচণ্ড বিরক্ত। কিন্তু যাই হোক, ভারত আমাদেরকে স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় সাহায্য করেছে । আর, যেহেতু পৃথিবীর মোটামুটি এক পঞ্চমাংশ মানুষ ভারতে বাস করে তাই মানুষের প্রতি যার ভালবাসা আছে সে ভারতের প্রতি ইতিবাচক দৃষ্টিতে তাকাতে বাধ্য। এছাড়া তাদের সাথে সাংস্কৃতিক মিল, ভারতের সাথে হাজার বছর ধরে একসাথে থাকা ইত্যাদি কারণে একজন বাংলাদেশীর ভারতের প্রতি দুর্বলতা থাকতেই পারে। আবার একজন হিন্দুর ধর্মীয় কারণে ভারতের প্রতি আলাদা আকর্ষণ থাকতে পারে যেমন পারে একজন মুসলমানের সৌদি আরবের প্রতি, তবে তা অবশ্যই আপন সত্ত্বাকে বিকিয়ে দিয়ে নয়।
@ফরিদ আহমেদ,বিপ্লব পাল মন্তব্য করার পরেও ওকে কেউ পাকিপ্রেমি বলছে না , কারন ওনার নাম বিপ্লব পাল। আমার নাম যে ফারুক , তাই নিঃসন্দেহে আমাকে পাকিপ্রেমি বলা যায় , বিপ্লব পালের মন্তব্যে সমর্থন জানিয়ে হাত তালি দেয়ার অপরাধে। বাঃ , কি সুন্দর মুক্তমনা!!
@ফারুক,
বিপ্লব পাল আর আপনাকে এককাতারে নিয়ে খুব একটা লাভ হবে না। আপনাকে এবং বিপ্লবকে ভিন্নভাবেই ট্রিট করা হবে। তবে সেটা নামের বা ধর্মের কারণে নয়, জাতীয়তার কারণে। আমরা কাদেরকে পাকিপ্রেমী বলি সেটা নিশ্চয়ই আপনার অজানা নয়। বাংলাদেশ নিয়ে ভারতীয়দের সাথে আমার এক হিসাব, বাংলাদেশিদের সাথে আরেক হিসাব। ভারতীয়রা আমাদের মুক্তিযুদ্ধ বা দেশ নিয়ে দায়িত্বজ্ঞানহীন মন্তব্য করে অহমিকা আর অজ্ঞতা থেকে, আর বাংলাদেশিরা করে মনের মধ্যে গোপন পাকিপ্রেম নিয়ে। আপনি যদি বাংলাদেশি না হন, তবে পাকিপ্রেমের ট্যাগটা উঠিয়ে নেব আপনার গা থেকে।
হ্যাঁ, সুন্দরই।
@ফরিদ আহমেদ,গ্রাম বাংলায় একটি প্রবাদ আছে – “গাঁয়ে মানে না আপনি মোড়ল।” আপনি পাকিপ্রেমের ট্যাগ দিলেন কি উঠিয়ে নিলেন , তা নিয়ে চিন্তিত নই। আপনার ট্যাগ দেয়ার ক্ষমতা আছে , এমনটি ভেবে আপনি সুখ পেলেও , আমি একে তারিফ করতে পারলাম না বলে দুঃখিত।
একটু আগেতোতো বেশ চিন্তিতই মনে হলো আপনাকে। আপনাকে একা কেন পাকিপ্রেমী বলা হচ্ছে, বিপ্লবকে কেন বলা হচ্ছে না, এই নিয়ে না বিরাট অনুযোগ করলেন?
@ফরিদ আহমেদ,অনুযোগ! নৈব নৈব চ। আপনার তথা মুক্তমনার(?) যুক্তির দুর্বলতাকে তুলে ধরেছিলাম।
@ফরিদ আহমেদ,
পরবর্ত্তী কথাগুলো আমার বলার ইচ্ছা ছিল না-কিন্ত না বলে পারছি না।
ফরিদভাই
আপনার মতন জ্ঞানী গুণী মানুষ বাংলাদেশ ছাড়ল কেন যদি দেশপ্রেম এতই প্রবল ছিল?
আপনি নিশ্চয় একথা বলবেন না বাংলাদেশে আপনার জন্যে কিছুই ছিল না।
আর একথাও মানবেন, আপনার মতন একজন কৃতী সন্তান বাংলাদেশ ছাড়াতে বাংলাদেশের অনেক ক্ষতি হয়েছে।
আশা করি এটাও মানবেন, দেশে থাকলেই বাংলাদেশের সেবা আপনি বেশী করতে পারতেন। এটাও মানবেন, ওইটুকু স্বার্থ ত্যাগও দেশের জন্যে করতে পারেন নি। এই প্রবাসে আপনি উত্তর আমেরিকার সেবা করছেন বাংলাদেশের না।
এর উত্তর ত একটাই ফরিদ ভাই। সেটা হচ্ছে দেশপ্রেম বা ধর্ম সব কিছু একটা ভাববাদি নির্মান। তাই সেটা যখন বস্তবাদি প্রয়োজনের সামনে আসে, লোকে যৌত্বিক সিদ্ধান্ত নেয়। যেমন আপনি নিয়েছেন বা অন্য একজন ধর্ম প্রান মুসলিম আমেরিকাতেই থাকার সিদ্ধান্ত নেয় আরব ছেরে।
নিজেই যখন “দেশে থেকে যাবার জন্যে” নুন্যতম ত্যাগটুকু করতে পারেন নি-এবং যুক্তিবাদ দিয়েই নিজেকে চালনা করেছেন-নিজের সেই বস্তুবাদি যুক্তিবাদ ছড়াতে কেন লজ্জা পাচ্ছেন? বাস্তব ত এটাই কাজের এবং ব্যাবসার প্রয়োজনে দেশের সীমানা থাকবে না। আস্তে আস্তে দেশের সীমানা সফট হচ্ছে। আগামী একশো দুশো বছরের মধ্যে ঊঠে যাবে।
পাকিস্তান দেশটা কি? ইসলাম ধর্মকে কাজে লাগিয়ে কিভাবে অন্য একটা দেশ [ আমেরিকা] , একটা মুসলিম রাষ্ট্রকে উচ্ছন্নে পাঠাতে পারে তার উজ্জ্বল উদাহরন। ইসলাম রাষ্ট্রের মধ্যে ঢুকলে কত ভয়ংকর হতে পারে, পাকিস্তান তার উদাহরন। ওই দেশের ৫০% লোক অভুক্ত। ২% মিলিটারী দেশটাকে লুটেপুটে খায়। পাকিস্তানকে ঘৃণা করলে ওই ৫০% অভুক্ত পাকিস্তানীকেও ঘৃণা করতে হয়। তাদের দোষটা কি আমাকে বোঝান ত ফরিদ ভাই? তারা ভারত বা বাংলাদেশের দরিদ্র অভুক্ত লোকেদের থেকে কিভাবে আলাদা?
একজন অ-মুক্তমনা মানব জাতিকে বাংলাদেশ, পাকিস্তান বা ভারতে ভাংতে পারে। আপনি কেন ভাংবেন? বাস্তবত এটাই প্রতিটা দেশেই শাসক শ্রেনীর চরিত্র প্রায় এক-অধিকাংশ লোক এই তিনটি দেশেই শোষিত। ধর্ম, জাতিয়তাবাদ শোষন চালিয়ে যাওয়ার, সেই শোষক শ্রেনীর হাতিয়ার। পাকিস্তানের শাসক শ্রেনী বাজে, আর ভারতের বা বাংলাদেশের শাসকরা ধোয়া তুলসিপাতা এমন ত না।
শাসক শ্রেনীর বিরুদ্ধে, ধান্দাবাজদের বিরুদ্ধে যদি সব দেশের শোষিত এবং নিপীড়িত জনগনের চেতনা বৃদ্ধি করতে না পারেন-তাহলে চেতনা বৃদ্ধির আন্দোলনটা কি? সেটা কি পাকিদের ঘৃণা করে হবে-না পাকিস্তানের গরীবদের সাথে বাংলাদেশের শোষিতদের মেলবন্ধনে হবে? এই উত্তরটা দিন।
আমি নিজেকে দেশপ্রেমী হিসাবে দাবী করি না-যদিও ভারত বর্ষ বললেই আমার মনে অনেক মহান ভাববাদি কল্পনার জন্ম হয়। দেশে থাকার মতন স্বার্থত্যাগটুকুও করতে পারি নি-ত এই সব আবেগের কথা বলে কি হবে? যেদিন থেকে দেশে থাকব-হয়ত আর এক দুবছরের মধ্যে, তবে প্রথম বলতে পারব, হ্যা আমি দেশ প্রেমিক। তবুও আমি চাইব, ভারতে পাকিস্তান এবং বাংলাদেশ বিরোধি যে জনমত আছে, তাদের চেতনা বৃদ্ধি হোক।
আজ মুক্তমনাযে যা লিখলাম, ভারতের নানান ফোরামেও সেটাই লিখি। বাংলাদেশ বলতে বা পাকিস্তান বলতে তাদের শাসক এবং শোষিত শ্রেনীকে আলাদা করুন। মিডিয়া শাসকদের হাতে। তারাই এই ধরনের ভ্রান্ত জাতিয়তাবাদ ছড়ায়। আমরা কেন সেই ফাঁদে পা দেব? এত জ্ঞানার্জনের পরেও শামুকে পা কাটবে কেন?
তাই যদি হয় কালকে যদি ভারত এবং বাংলাদেশের শাসকরা নিজেদের শোষন চালিয়ে যেতে , অভ্যন্তরীন সমস্যা ঢাকা দিতে, যুদ্ধ বাধায়-আমরা কি একে ওপরের বিরুদ্ধে কলম ধরব?
@বিপ্লব পাল,
আমার সত্যিই মনে হয়না পাকিস্তানের শোষিত জনগোষ্ঠীর প্রতি গুচ্ছের ঘৃণা নিয়ে ফরিদ আহমেদ ঘুরে বেড়াচ্ছেন। পাকিস্তান একটা ধারণা, একটা সর্বনাশা আইডিয়া, শুধু কিছু মানুষের সংগ্রহ নয়। বাংলাদেশীদের জন্য এই ধারণাটি আজ পর্যন্ত আত্মপরিচয়ের সংকট তৈরি করে চলেছে, যার বিরূদ্ধে চলমান যুদ্ধ করেও নাভিশ্বাস অবস্থা। পাকিস্তান ক্রিকেট দলের প্রতি প্রীতি যদি ফুটবলে ব্রাজিল-আর্জেন্টিনা প্রীতির মত naive আন্তর্জাতিকতাবাদ হত, তাহলে কোন সমস্যা ছিল না। কিন্তু তা যে নয়, এই পোস্টের মন্তব্যগুলো পড়েই তো আপনার সেটা বোঝার কথা। পাকিস্তান প্রীতির পরিমাণ ধর্ম ও ধার্মিকতার সাথে correlate করে, রাজনৈতিক পরিচয়ের সাথে correlate করে। যে লোক বাংলাদেশের বিরূদ্ধে পাকিস্তানকে সমর্থন করে (আপনি আশ্চর্য হবেন এদের সংখ্যা দেখে) সে কালকে ভারত ভাল খেললেই ভারতকে সমর্থন করবে না। আন্তর্জাতিকতাবাদ আমাদের উদ্দেশ্য হতে পারে, কিন্তু তার মানে এই নয় যে ধর্মীয় সাম্রাজ্যবাদকে এড়িয়ে যেতে হবে।
@রৌরব,
ঘৃণা তো নয়ই, এই সেদিনও বন্যা কবলিত পাকিস্তানি জনগনের জন্যে বাড়িবাড়ি, স্কুলেস্কুলে গিয়ে চাঁদা সংগ্রহ করেছি, আমার সন্তানেরাও এতে অংশগ্রহন করেছে, প্রয়োজনে আগামীতেও করবো। এই প্রবন্ধের মূল সুর ধরে এখন পর্যন্ত ফরিদ আহমেদ এর করা সবগুলো মন্তব্যের সাথে পুরোপুরি সহমত জ্ঞাপন করলাম।
বিপ্লব, তুমি হচ্ছো মুক্তমনার সবচেয়ে অধারাবাহিক একজন লোক। আজকে একটা অসাধারণ লেখা লিখছোতো পরের দিনই একটা সাধারণ মানের লেখা দিচ্ছো। আজকে দারুণ একটা মন্তব্য করলেতো পরের দিন যাচ্ছেতাই একটা মন্তব্য করে বসলে। তবে, আজ পর্যন্ত যত যাচ্ছেতাই মন্তব্য করেছো তার মধ্যে এটা হচ্ছে সেরা যাচ্ছেতাই। এই মন্তব্যের কোনো পালটা যুক্তি আমি দিচ্ছি না। দেওয়ার মত কোনো রুচিই আসলে খুঁজে পাচ্ছি না।
@ফরিদ আহমেদ,
আমি আত্ম বিশ্লেষনে বিশ্বাসী। আমার কমেন্টটা আপনার পছন্দ হবে না জানি। কিন্ত আমার যে গুলোকে ভাল লেখা বলছেন, সেগুলো অধিকাংশ বা মুসলমান বা হিন্দুদের কাছে পছন্দের না। আমার চ্যানেল বা ইমেল ইসলামিস্ট বা হিন্দুত্ববাদিদের গালাগালিতে ভর্তি থাকে।
কিন্ত কি করা যাবে ফরিদ ভাই। সত্য বলে যেটা মনে করি, সেটাই ত লিখব না কি? আমি বা আপনি কেওই পেশাদার লেখক না। আপনিও লিখতে ভালবাসেন , আমিও তাই করি। আপনি আপনার উপলদ্ধিকে কলমে ধরেন, আমিও তাই করি। আমাদের উপলদ্ধি যে এক হবে, সেটা ঠিক না। হয়ত আপনিই ঠিক, বাংলাদেশের সার্বিক পরিস্থিতিতে পাকপ্রেমীদের টাইট দেওয়া দরকার। আপনার অভিজ্ঞতা আপনাকে সেটা বলে দিচ্ছে।
আমার অভিজ্ঞতা হচ্ছে, বিরোধিতা থেকে ঘৃণাকে বিশেষত মানুষের প্রতি ঘৃণাকে বর্জন করলেই অর্জন অধিক হয়। গান্ধীর শিক্ষা। একটু চেষ্টা করে দেখুন।
এটা হতেই পারে আপনিই ঠিক-আমি ভুল। আমার উপলদ্ধিও ভুল। তবে আশাকরি আপনি একমত হবেন, আমি যদি নিজেকে দেশপ্রেমী বলে দাবী করি-দেশে থাকার মতন নুন্যতম “স্বার্থত্যাগ” আমার করা উচিত। আমি জানি আপনি বাংলাদেশকে ভালোবাসেন। আমিও আমার দেশকে ভালবাসি। কিন্ত বাস্তবতা এটাই আমরা নিজেদের বস্তুবাদি উন্নতির জন্যে দেশ ছেড়েছি।
এটাও ঠিক, আমাদের দেহটা থাকে এই আমেরিকাতে, আর মাথাটা দেশে। পশ্চিম বঙ্গ বা ভারতের রাজনীতি নিয়ে গত তিন বছরে আমার থেকে বেশী কেও লেখে নি বাংলাতে। এই টান, এই প্রেম আপনার ও আছে।
কিন্ত…।
যদি ফিরতে পারি, তবেই ওই দাবিটা করা উচিত আমরা নিজেদের দেশকে ভালবাসি।
অধমের অপরাধ মার্জনা করবেম রুঢ় একটা সত্যকে সামনে নিয়ে আসার জন্যে।
@বিপ্লব পাল, “আমি যদি নিজেকে দেশপ্রেমী বলে দাবী করি-দেশে থাকার মতন নুন্যতম “স্বার্থত্যাগ” আমার করা উচিত। আমি জানি আপনি বাংলাদেশকে ভালোবাসেন। আমিও আমার দেশকে ভালবাসি। কিন্ত বাস্তবতা এটাই আমরা নিজেদের বস্তুবাদি উন্নতির জন্যে দেশ ছেড়েছি।”-দেশপ্রেমী দাবী করলে দেশেই থাকতে হবে এবং বস্তুবাদি উন্নতির জন্য বিদেশে এলে তার দেশ- প্রেম নেই বা কম আছে, এটা একটা তৃতীয় শ্রেণীর যুক্তি নয় কি ? অর্থনৈতিক উন্নতি বা উচ্চ শিক্ষা ইত্যাদি কারণে বিদেশে এসে অনেক আগে হতেই বাংগালীরা ব্রিটেন,আমেরিকা,জার্মানি,মধ্যপ্রাচ্য ইত্যাদি নানান দেশে স্থায়ী হয়ে গেছে।প্রায় সকলের মনের মধ্যে একটা আশা থাকে সে একদিন দেশে ফিরে যাবে।আবার অনেকে বিদেশে থেকেই দেশের জন্য নানান কিছু করছে।বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে বিশ্ব-জনমত গড়ে তোলার জন্য ব্রিটেন প্রবাসী বাংগালীদের কী ভূমিকা ছিল তা অভিজ্ঞ মহল মাত্র ই জানেন।আর এখন অনেক প্রবাসী বাংলাদেশি দেশে বিভিন্ন ধরণের বিনিয়োগ করে বা ইন্ডাস্ট্রি করে বাংলাদেশের উন্নতিতে অবদান রাখার চেষ্টা করছে।এই লন্ডনে গুরুত্বপূর্ণ স্থানে একটি পাকাপোক্ত শহীদ মিনার আছে।সেখানে প্রতি ২১শে ফেব্রুয়ারি রাতে প্রবাসী বাংগালিরা জমায়েত হয়।সে তুলনায় ভারতীয় বাংগালিদের ব্রিটেনে তৎপরতা প্রায় অদৃশ্য।আসলে বাংলাদেশে মুল জাতি একটি-তা হলো বাংগালি ।আর বাংগালিরা হচ্ছে ভারতের অনেক জাতি সত্বার মধ্যে একটি, তাই তাদের পক্ষে আমাদের আবেগ,অনুভূতি বোঝা সম্ভব নয়।
@মোহিত,
ফিরতে ত সবাই চাই। আমি ত সেসব লিখেছি। আপনি বোঝেন নি। আর আপনার জানা না থাকলে রেমিটান্স সব থেকে বেশী দেশে পাঠায় ভারতীয়রা। দেশের প্রতি টানে বাংলাদেশী, ভারতীয়, কিউবান, বলকান, রাশিয়ান-সবাই প্রায় সমান। এক্ষেত্রে ভারতীয় বাঙালীদের প্রতি কটাক্ষ আপনাদের ভ্রান্ত কূপমন্ডুক জাতিয়তাবাদের প্র্মান, যার বিরুদ্ধে আমি বলার চেষ্টা করছি। আমি বলার চেষ্টা করছি, ্মানুষ পাকিস্তানি ভারতীয় বাংলাদেশী হলে আলাদা হয় না। দেশের প্রতি সমান উদ্বেগ পাকিস্তানিদের ও দেখেছি-আমার মুদি, ডেনটিস্ট এবং কলিগদের মধ্যে পাকিস্তানি আছে-আমার কোনদিনই তাদের আলাদা ্মনে হয় নি।
কিন্ত দেশে না ফিরে, দেশের জন্যে বিশেষ কিছু করা যায় না।
‘৭১ সব বাংলাদেশীদের কাছে না হলেও অনেকের কাছেই অনেক ইমোশনাল একটা ব্যাপার। আর এই আবেগটা নিয়ে খেলা খুব বেশী যুক্তিযুক্ত নয় বলেই মনে হয়।
অফটপিকঃ
আর এদেশীরা এই কাতারে আমাকেও ফেলে দিয়ে ফিরে তাকায় না! ভাবে পকেট ফাঁকা… কি মুশকিলে পড়লাম বলেন তো! 🙂
@বিপ্লব পাল, ” কিন্ত দেশে না ফিরে, দেশের জন্যে বিশেষ কিছু করা যায় না।”-
এই বিশেষ কিছু কি রাজনীতি?
@বিপ্লব পাল,
যেহেতু কেউ বিদেশে বসে দাবী করতে পারেন না যে তিনি দেশকে ভালবাসেন অর্থ হলো বিদেশে বসে দেশকে ভালোবাসা যায়না তাই ‘দেশকে ভালোবাসি’ এই কথা বলাটা তাদের মানায়না বা তাদের সে অধিকার নেই।
তা হলে বলা যায়, দেশে থাকতে দেশের প্রতি আপনার ভালবাসা ছিল, ঠিক যে মুহুর্তে দেশ থেকে বের হয়ে বিদেশে আস্তানা নিলেন তখন থেকেই হঠাৎ করে দেশের প্রতি ভালবাসা আপনার মন থেকে মুছে গেল। আবার যখন আপনি কোন এক সময় দেশে ফিরবেন তখন ঠিক সেই মুহুর্ত থেকেই দেশের প্রতি ভালবাসায় মন আপনার পুর্ন হয়ে যাবে। মনের সুইচ হঠাৎ হঠাৎ পরিবর্তন করার দারুন ক্ষমতা আপনার!
@বিপ্লব পাল, :yes: :rose2: :clap2:
@বিপ্লব পাল,
আচ্ছা মুক্তমনা হতে হলে কি লোভ-লালসা, ঘৃনা-বিদ্বেষ, হাসি-কান্না ইত্যাদি মানুষের ষঢ়রিপুগুলোকে জয় করেই মুক্তমনা হতে হবে? মুক্তমনারাতো কোন দেবতা বা ফেরেশতা না, তারা সাধারন মানুষ।
@বিপ্লব পাল,
“ভারত বা পাকিস্তান এই নামগুলির বা রাষ্ট্রগুলির প্রতি ভালবাসা বা ঘৃণা কোনটাই কাম্য না-কারন ভবিষয়তে এসব কিছুই থাকবে না”। :yes:
পাচশ বছরের আগের পৃথিবী আর আজকের পৃথিবীর তুলনা করে আর আজকের মানব সমাজের দ্রুত বিবর্তনের কথা মাথায় রেখে যারা ভাবে আজকের মানচিত্র, আজকের সংষ্কৃতি, আজকের লয়ালিটি চিরদিন থাকবে, তারা খুব ভালই আছেন।
তবু পাকিস্থানকে মনে হয় ঘৃনা করা খুব একটা দোষের নয়। বিশেষ করে সেটা যখন পাকিস্থানের মতো অনুতাপ হীন, নির্লজ্জ রাষ্ট্র হয়। একটা রাষ্ট্রের পলিসি খুব বেশীদিন জনগনের ইচ্ছার বিরুদ্ধে চলে না। এখনকার পাকিস্থানের জনমত যে সরকারী পলিসির বিপরীতে, সেরকম আলামত কম। উপমহাদেশের কথা তো ছেড়েই দিলাম, সারা পৃথিবীর মুসলিমদেরই বর্তমান দূর্দশার প্রধান কারন পাকি মাসল – সৌদি মানি।
@বিপ্লব পাল,
বিপ্লব, ভবিষ্যতে কী থাকবে বা কী থাকবে না তা দিয়ে তো বর্তমানের অনুভূতিগুলো নির্ধারিত হয় না। তাত্ত্বিকভাবে বিমূর্ত অনেক কিছুই বলে দেওয়া যায় কিন্তু আজকের চিন্তা ভাবনা অনুভূতিগুলো বর্তমান আর অতীতের অভিজ্ঞতার ফসল। ৭১ এর যুদ্ধে পাকিস্তানীদের সাথে আমাদের রক্তাক্ত অভিজ্ঞতাগুলো এখনো বেশ তরতাজা, এ নিয়ে উটকো কিছু উপদেশ দেওয়া হয়তো সহজ, কিন্তু যারা এর মধ্যে দিয়ে গেছে তাদের অনুভূতিগুলো বদলানো এত সহজ নয়। ৫০০ বা এক হাজার বছর পর রাষ্ট্র থাকবে কী থাকবে না তার উপর ভিত্তি করে এসব কথা বলা কেমন যেন অর্থহীন শোনায়। ‘ফারুক’রা যখন এরকম মন্তব্যে হাততালি দিতে দিতে হাত ব্যাথা করে ফেলে তখন তাদের জন্য কেমন যেন করুণা হয়। তবে দুঃখজনক ব্যাপার হচ্ছে আমাদের দেশে এদের সংখ্যাটা খুব কম নয়।
@বন্যা আহমেদ,
ধন্যবাদ আপনার করুনার জন্য। তবে কিছু করুনা নিজের জন্যেও রাখুন। বলা তো যায় না কার কখন করুনার দরকার পড়ে।
@ফারুক, রেখেছি রেখেছি, যত্ন করেই তুলে রেখেছি, একটুও পেরেশান হবেন না এ বিষয়ে, এসব জিনিষ জমিয়ে রাখতে আমি বিন্দুমাত্র কার্পণ্য করিনা 🙂 । এতদিনে আপনার সাথে যে একটা বিষয়ে একমত হওয়া গেল তাতেই আমি খুশী। যখন যেটা যার প্রাপ্য সঠিক সময়ে তাকে সেটা দিতে পারাটাই আসলে বুদ্ধিমানের কাজ।
@বন্যা আহমেদ,পেরেশান মুক্ত করার জন্য ধন্যবাদ জানিয়ে আপনাকে ছোট করতে চাই না :-)। আমি ও খুশী। কখনো আপনারি জমানো করুনা আপনার নিজের কাজে লাগলে জানাতে ভুলবেন না। ভাল থাকুন , সুস্থ থাকুন , শান্তিতে থাকুন।
জানিনা কে কিভাবে নিবেন-যদিও ইহা একটি গল্প তবুও এখানে কিছু একটা ইঙ্গিত দেয়া হচ্ছে-তবে খেলা বা খেলয়াড় এইসবের কোন দেশ জাতি না থাকাই ভাল। একজন ভাল খেলে, একটি দল ভাল খেলে- সেই দলের পক্ষে থাকাটার মানে এইরুপ না যে নিজের জাত, অস্তিত্ব বিষর্জন হচ্ছে।
বেশ কয়েকদিন ধরে একটা বিষয় মাথা নাড়া দিচ্ছে- দেশ স্বাধীন হয়েছে, আগে পাক লুটে খেত, এখন আমরা নিজেরাই লুটে খাই। সেই সময় রাজাকার নামক দেশের জানোয়ারগুলো যা করেছে-এখন ঠিক একই কাজ হচ্ছে শুধু নাম, লেবাস আর সময় বদলেছে-রাজনৈতিক দল এসেছে (কেউ পিতা দোহাই দিয়ে লুটে খাচ্ছে, কেউ স্বামীর দোহাই দিয়ে লুটে খাচ্ছে, কেউবা বলছে আমিত এমনি এমনি খাই)। এরাও কি ঐ একই কাজ করছেনা? এরাও কি বর্তমান রাজাকার না? সেই ৭১ শুধু রাজাকার ছিল? এরা কি বর্তমান রাজাকার না? আমরা এক রাজাকার মারার জন্য আর এক রাজাকারের সাথে গলায় গলা মিলাচ্ছি। আমরা সাধারন জনতা তখনও গাধা ছিলাম, এখনও তাই আছি। আমাদের নাকের ডগায় তখনও মুলা ঝুলত, এখনও তাই ঝুলছে। দোষ পাকের থেকে আমাদের মাঝেই বেশি। আমি বলছিনা আমি স্বাধীনতা বিরোধী, বা এই জাতীয় কিছু। কেউ অন্য দিকে নিবেন না। ইতিহাস বার বার ঘুরে আসে বিভিন্ন রঙ্গে, বিভিন্ন চেহারায়। একই জিনিস বারবার পূনরাবৃত্তি হয় (আমার ধারনা)। তখন যুদ্ধ হয়েছিল-তাই ঐ পরিস্থিতি এসেছিল, নারী ধর্ষন, হত্যা…ইত্যাদি। এখন কিসের যুদ্ধ? এখনত যুদ্ধ ব্যতীতই আমরা যুদ্ধের সিচুয়েসন বানিয়ে রেখেছি। এখন নাম দিয়েছি অন্য কিছু। স্বাধীনতা, হায়রে স্বাধীনতা। পিছনকে টেনে না এনে সবার সামনে আগানো উচিত।অনেকেই বলেন, বলবেন পিছন থেকে শিক্ষা নিতে হয়/হবে; আমি বলতে চাই পিছনকে আপাতত ভুলে গিয়ে সুন্দর ভাবে আপাতত গড়ি। পিছনে অনেক দাগ, পিছনের নাম ভাঙ্গিয়ে আমরা সেই পিছনেই পড়ে আছি।
যাইহোক হামিদা বেগমকে বুঝানোর কিছু নেই। কেননা তার দুঃখ এক জায়গায় স্থির হয়ে জমাট বেধে আছে, নতুন আসবে, তারা বদলাবে, এটাই স্বাভাবিক। আজ আমি যেখানে কাজ করি সেখানে আরও ৩জন পাকিস্তানী কাজ করে। আমি কি করব? তাদের সাথে গল্প আড্ডা সবই করি। যেমন যদি বলি পাকিস্তানের নুসরাত ফাতেহ আলী, রাহাত আলী, আরও কত গায়ক গায়িকার গান আমার কানে বাজে, তো এখানেও দেশ কি? আমরাত স্বাধীন হয়েছিই, আমরাত জিতেছিই…কত গান, বাজনা…
যাইহোক ফাক তালে আমি আমার কথাই বললাম। হামিদা বেগম এর কষ্ট বোঝা যাচ্ছে, কিন্তু তার কষ্ট নিয়ে বেচে থাকতে হবে বলে মনে হয়।
@Russell,
বাংলাদেশের মাটিতে আমেরিকার সৈন্যের হাতে খুন হওয়া আর একটা স্বদেশী ছিনতাইকারীর হাতে খুন হওয়ার মাঝে যেমন পার্থক্য আছে, তেমনি ভিনদেশীদের সাথে হাত মিলিয়ে ডাকাতি করা আর নিজের ক্ষুদ্র ব্যক্তিগত স্বার্থে চুরি করার মাঝেও কিছুটা পার্থক্য আছে। এই দু’টোর মাঝে কোন মতেই তুলনা করা সম্ভব না। রাজাকাররা বিদেশীদের সাথে হাত মিলিয়ে দেশের সাথে প্রতারণা করেছে, এ নিয়ে তারা কখনও দুঃখ প্রকাশ করেনি। একটা জাতির উপর হত্যাযজ্ঞ চালানো আর নিছক দুর্নীতি করাকে আমি একদমই এক পাল্লায় ফেলতে পারছি না। আর সবকিছু বাদ দিয়ে যদি শুধু হত্যার নৃশংসতার উপরই আলোকপাত করি, তবুও খুব সহজেই এটা পরিলক্ষিত হয় যে পাশবিকতার দিক দিয়ে ছাত্রলীগ-ছাত্রদল রাজাকাদের ধারে কাছেও যেতে পারবে না।
মনে করে ইসরাইলের খুব ভাল একটা ফুটবল দল আছে, তাদের ফুটবলারদের খেলা দেখলে মন জুড়ায় যায়। ইসরাইল আর ফিলিস্তিনের মাঝে ফুটবল ম্যাচ হলে কাকে সমর্থন করবেন?
@পৃথিবী,
যদিও ইহা সম্পুর্ন ব্যক্তি বিশেষ চিন্তা-ফেরাক থাকবেই। যাইহোক হত্যা, সে স্বল্প পরিসরেই হোক বা ব্যপক পরিসরেই হোক হত্যা, সেটা হত্যাই। ইহা জঘন্য অপরাধ। ২০০৭ এর থেকে রাজনৈতিক যে চিত্র, ভয়াবহতা দেখা যাচ্ছে, দেশের এখন যে পরিস্থিতি, এতে ঐ রাজাকারের সময়ের সাথেই তুলনা করা যায়। এখানে ছিন্তাইকারীর হাতে হত্যা বলা হচ্ছেনা। রাজনৈতিক পৈশাচিকতা, ক্ষমতা দখলের যে পশুত্ব, একজন আর একজনকে ধরছে, মারছে, যে বর্বরতা, হরতাল, (কোন কিছুই কিন্তু দেশীয় স্বার্থে নয়, সকল কিছুই দলীয় স্বার্থ) আপনে যুদ্ধের থেকে বাইরে আর কি বলবেন? যদিও যুদ্ধ না, তবুও কোন মানুষ সাধারন স্বস্তিতে বাস করে আমাদের দেশে? এইসব বললে বলতেই থাকা যাবে। আমার কথা ছিল, রাজাকার সে শুধু সেই সময় নয়, বরং এখন যারা আছে তারাও ঐ একই চরিত্রের, শুধু নামটাই আলাদা। চিটাগং-এ এইযে গারমেন্টস সমস্যা -দেখুন মানুষগুলোর চেহারা; বলছিনা ইহা রাজনৈতিক( যদিও আমি এখনও পুরোটা জানিনা), আমাদের সামগ্রিক নৈতিকতা এখনও ঐ রাজাকারের মতই আছে সর্বত্র। ঐ হায়েনা রক্ত যেন বাংগালীর প্রতিটি রক্তে প্রবাহীত হচ্ছে।আর এই সকল কিছুই ঐ রাজনৈতিক দলগুলোর চরিত্রে দেখা যায়। যাইহোক এই নিয়ে না আগাই, কেননা ইহা আলোচ্য বিষয় নয়।
আমাদের মুক্তি যুদ্ধের চেতনা, স্বাধীনতার পরিপূর্ন স্বাদ পাওয়ার পূর্বেই আমরা ক্ষমতা দখলের দিকে ঝুকে পড়েছিলাম। মুক্তি হয়েছি শুধু ক্ষমতা দখলের জন্যে। তাই আজ হাজার ডংকা বাজাযনোর পরেও প্রকৃত চেতনা আমরা পাইনা। যেন গাধার কানে তবলা বাজানো ছাড়া কিছুই না। তাই হামিদা বেগমকে এইভাবে কষ্ট পেয়ে যেতে হবে।
আবার খেলার বিষয় যা বলেছেন সেটা একজন খেলোয়াড় বা এক খেলা প্রেমিকের কাছে যদি জিজ্ঞাসা করেন, তাহলে সে ইস্রাইল, বা ফিলিস্তিন যাইহোক,যে ভাল খেলবে তার দিকেই যাবে। হয়ত সে তার সমর্থনে থাকবেনা, কিন্তু সে মানতে বাধ্য হবে সে ভাল।
খেলা বাদ দিলাম, আপনার কারও সাথে শত্রুতা, তার ভিতর যদি একটা গুন ভাল থাকে, যা আপনার প্রিয় কারও মাঝে নাই, আপনে কি তার ভাল গুনকে খারাপ করে দেখবেন?
যাইহোক ভালথাকবেন।
খেলার সাথে রাজনীতির সম্পর্ক থাকাটা অনুচিত হলেও এটা একটা নির্মম বাস্তবতা। ভারত আর বাংলাদেশের খেলা হলে আমরা ভারতকেই সমর্থন করি, ভারত বাংলাদেশের চেয়ে ভাল দল হওয়া সত্তেও আমরা তাকে সমর্থন করি না। খেলাও এখন একটা আইডেন্টিটির মতই হয়ে গিয়েছে মনে হয়। কেউ কেউ হয়ত শুধু স্পোর্টসম্যানশীপের জন্য পাকিস্তানকে সমর্থন করেন, কিন্তু এও ঠিক যে অনেকেই স্রেফ ভ্রাতৃত্ববোধের ফলে পাকিস্তানকে সমর্থন করে। আমার পরিবারেও এটা আমি খেয়াল করেছি, তবে এর সাথে পরিবারের জামায়াতপ্রীতির একটা সম্পর্ক থাকতে পারে।
গল্পটা খুবই ভাল লেগেছে, আমার তো মনে হয় শিরোনামটা যথার্থই হয়েছে। তবে ঐতিহাসিক তথ্যগুলো গল্পে সমূহীভূত করতে পারলে ভাল হত। আমি মনে করি সাহিত্য যত বাস্তবতার কাছাকাছি যাবে, ততই সেটা উৎকৃষ্ট হবে।
পাকিস্তানের যে কোনো ক্রিকেট ম্যাচের লাইভ ফলাফল জানার জন্য টিভি দেখতে হয় না, পাড়ার লোকজনই আপনাকে জানিয়ে দিবে, এইমাত্র পাকিস্তান একটা উইকেট পেল কি একটি ছক্কা মারল। খেলা শেষ হলেও বুঝা যায় পাকিস্তান জিতল না হারল।পুরো পাড়া আপনাকে খেলার রেজাল্ট জানিয়ে দেবে। কিন্তু বাংলাদেশের খেলার ফলাফলের জন্য এখনো টিভি দেখতে হয়। 🙁
‘৭১ এর পূর্বে দেশের মানুষ যতটা বাঙ্গালী হয়ে ওঠেছিলো, ‘৭১ এর পর তারা (সাধারণভাবে) আবার ততটা মুসলমান হয়ে ওঠলো। এ হয়ে ওঠার প্রক্রিয়া এখনো চলছে।( এ নিয়ে মুক্ত-মনার কেউ কলম ধরলে ভাল হয়)
এ লেখার সাথে প্রাসংগিক বলে ছোট্ট একটা ঘটনা বলিঃ
সময় ‘৮২-‘৮৩ হবে। গলির মোড়ে একটা টেইলার্স ছিল। সময় পেলেই কয়েক বন্ধু মিলে গান শুনতে সেখানে মিলিত হতাম। ( আমার কোন ক্যাসেট প্লেয়ার ছিল না, কিত্নু সংগ্রহে কিছু ক্যাসেট ছিল।) মাঝে-মধ্যে পাড়ার কেউ কেউ এসে যোগ দিত। একদিন একি মহল্লার পরিচিত একজন বললো, ” তুই ত সব সময় রবীন্দ্র সঙ্গীত শুনিস, নজরুল গীতি শুনতে দেহি না।”
আমার মাথায় দুষ্ট বুদ্ধি এসে হাজির। বললাম, “আমি প্রায় সব গান শুনি। কাল আসিস, শুনাবো।”
যথা সময়ে সে এসে হাজির। ক্যাসেট প্লেয়ারে বেজে ওঠলো, ” এল নন্দের নন্দন কৃষ্ণজী, কৃষ্ণজী।”
গান থামাতে বললো, আমি তাই করে তার মুখের দিকে তাকালাম।
“এইটা বুঝি নজরুল গীতি? এইটা ত হিন্দুগো-র গান।”
আপাত দৃষ্টিতে হ’তে পারে এটি একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা। কিন্তু জাতীয় পর্যায়ে চোখ রাখলে আমরা কি দেখতে পাই? দেখতে পাই, রবীন্দ্র সঙ্গীতের ওপর আঘাত এখনো অব্যাহত আর নজরুলকে বানানো হচ্ছে শুধু হাম-নাদের কবি, ইসলামের কবি।
রাজনৈতিক-সাংস্কৃতিক-অর্থনৈতিক অঙ্গনে এদের নানামুখী তৎপরতা এখনো অব্যাহত। প্রগতিশীল আন্দোলনের অনুপস্থিতিতে মাঠ তো আর শূন্য থাকবে না।
@স্বপন মাঝি,
উফফ কি ক্লান্তিকর। এই অভিজ্ঞতা আমারো আছে, সাধারণ এমন লোকের কাছ থেকে যে কোন সংগীতই শুনতে ইচ্ছুক না।
@স্বপন মাঝি,
পারলে নজরুলের শ্যামাসংগীত গুলি শোনান সেগুলি মনে হয় অস্বীকার করতে পারবে না। নজরুলের হিন্দু দেবদেবী প্রীতির কারণে মোল্লারা ওনাকে কাফের পর্যন্ত ঘোষণা করেছিলেন!
১৫ ডিসেম্বর ২০০৮ এ বিশ্বকাপ ক্রীকেট তারিখটা ভুল।
@আকাশ মালিক, আমি তারিখটা কল্পনা করে নিয়েছি। এেক্ষত্রে অবশ্য সাল উল্লেখ না করলেই ভালো হতো। আমি বরং সেটাই করবো। কেউ তো আর বলতে পারবে না যে আগামীতে কোন ১৫ই ডিসেম্বর খেলা হবে না।
তবে তারিখটা এখানে খুবই গৌন বিষয়। এমন তো নয় যে ডিসেম্বর মাস ছাড়া বছরের আর সমস্ত সময় পাকিস্তান নিয়ে মাতামাতি করা যাবে !
ধন্যবাদ।
@মোজাফফর হোসেন,
আপনার গল্পটিকে ঐতিহাসিক গল্প হিসেবে দেখাতে পারলে জাতি হিসেবে লাভবান হব। কাজেই ফিডব্যাকগুলো নিয়ে সংশোধন করতে বাধা কোথায়? তারিকটি উহ্য থাকলে ক্ষতি কি! কারণ আপনিই তো বলছেন —-
ফরিদ আহমেদের সাথে একমত। পাকিস্তানকে কোন উদ্দেশ্যেই আমি জিন্দাবাদ দেওয়াকে সমর্থন করতে পারছি না। বিপ্লব পালের ভাষায় এটাকে অন্ধত্ব বুঝালেও না।
অভিজিৎ রায়ের উত্তরে বলছি, তারিখটি আমি নোট করে লিখেছি। বাংলাদেশ বিশ্বকাপে ভারতকে হারানোর পর আমার খুশি দেখে একজন আমার দেশপ্রেমে সন্দেহ আমাকে কাঁদিয়েছিল। ইঙ্গিত ছিল আমি নাকি মনে মনে কষ্ট পাচ্ছি ভারত বাংলাদেশের কাছে হারাতে। বিষয়টি নিয়ে সংখালঘুর মানচিত্রে লেখার জন্য খসড়া হয়ে আছে।
বিপ্লব পালের সাথে দ্বিমত পোষণ করছি। এর পরও আমি দেখেছি। মেহের নিগার নামে একটি মেয়ে South Asian Human Rights Forum (SAHRF) চাকরি করত। তার সাথে দিল্লীতে SAHRF এর একটি কর্মশালায় ভারতীয় মুসলিমদের পাকিস্তান ক্রিকেটের সমর্থনের বেশ কয়টি গল্প শুনেছি।
যাহোক,মোজাফফর হোসেনকে ধন্যবাদ এ ইস্যুটি নিয়ে গল্প লেখার জন্য।
@গীতা দাস,
আমাদের দেশের হিন্দু সম্প্রদায়ের দেশপ্রেম নিয়ে সন্দেহ করাটা অনেক সাম্প্রদায়িক লোকের বাতিকের পর্যায়ে চলে গিয়েছে। এই বিদেশে এরকম অদ্ভুত এক কল্পকাহিনি ফেঁদেছিল আমার পরিচিত এক লোক। তার বক্তব্য ছিল যে ভারত বাংলাদেশ খেলার সময় নাকি জগন্নাথ হলের ছাত্ররা ভারতকে সমর্থন করে। এর পরে আমাদের দুজনের মধ্যে যে ঝগড়াটা হয়েছিল সেটা সুখকর কিছু ছিল না। আমার ছাত্রজীবনের বেশিরভাগ সময়টাই আমি কাটিয়েছি জগন্নাথ হলে আড্ডা মেরে। মার কাছে মাসির গল্প করে উল্লুকটা।
আমাদের দেশের লোকজনের সহজ হিসাব নিকাশ। কেউ যদি পাকিস্তানপ্রেমী না হয়, তাহলে সে নিশ্চয়ই ভারতপ্রেমী। এর বাইরে কিছু নেই। দেশে থাকতে আমার পাকিস্তান ক্রিকেট টিমের প্রতি প্রবল বৈরীতা দেখে অনেক লোকই ধরে নিত যে আমি বোধ হয় ভারতের সমর্থক। এর বাইরে যে, আমার বাংলাদেশ নামের একটা প্রিয়তম দল থাকতে পারে সেই ধারণাটাই বুদ্ধুরা করতে পারতো না।
@মোজাফফর হোসেন,
অবশেষে আমি আমার ‘তখন ও এখন’ এর পর্ব – ৯ থেকে উদ্ধৃতি দেওয়ার লোভ সামলাতে পারলাম না।
@গীতা দাস, খুব ভালো বলেছেন। ধন্যবাদ।
শিরোনাম নিয়ে মাথা ব্যাথা কেন? এটাও এক ধরনের অন্ধতা নয় কি?
নব্বই এর দশকে ইমরাণ খান , আকরাম মিয়াদাদ মালিকের জমানায় ভারতেও প্রচুর পাকিস্তানের সমর্থক ছিল। মুসলিমরা ত ছিলই। সৌরভের নেতৃত্বে ভারত ক্রমশ পারফর্ম করতে থাকে, এবং তারপর থেকে, ভারতে পাকিস্থানি সমর্থক আর দেখি না। এখনত প্রশ্নই নেই। তবুও শোয়েব আখতার নাইট রাইডারসের হয়ে খেললে কোলকাতা মাঠেই সমর্থন পান। ইশান্তের চেয়ে বেশীই পান। সুতরাং এটার সাথে খেলার সম্পর্কই বেশী গভীর বলে আমার মনে হয়। আমারত ভারতের যেকোন বোলারের চেয়ে ইমরান এবং আক্রা মকে বেশী পছন্দ ছিল। আবার পাকিস্তানেও শচীনের বিরাট ফ্যান বেস আছে। এগুলো খেলোয়ার নির্ভর।
একজন ক্রিকেট প্রেমী হিসাবে এই ধরনের গল্পকে সমর্থন করতে পারলাম না।
@বিপ্লব পাল, আপনি বাংলাদেশী নন বলে এটা বোঝা আপনার পক্ষে সম্ভব নয়।
@মোহিত,
আমি এটার ঘুর বিরোধিতা করছি।
বাংলাদেশি হলেই যদি পাকিস্থান বিরোধী হবে তা হলে এই গল্প লেখার কি প্রয়োজন।
ড.জাফল ইকবালের একটা লেখা পড়েছিলাম। ” ইতিহাস জানলেই মুক্তি যুদ্ধ জানা যায় না, এটা ফিল করতে হয়”
স্বাধীনতার সময় বাংলাদেশী ছাড়াও অনেক লোক মুক্তিযুদ্ধে সহযোগিতা করেছে। এসব নিশ্চয় আপনার জানা কথা। এগুলোর কি ব্যাখ্যা আপনি দেবেন?
@আসরাফ,আমি এটা বোঝাতে চেয়েছি যে বাংলাদেশের অধিবাসী এবং ৭১ -এ যারা দেশে অবস্থান করেছিলেন তারা এ গল্পটির অন্তর্নিহিত ফিলিংস যেভাবে উপলব্ধি করতে পারবেন একজন বিদেশীর পক্ষে তা অনুভব করা সম্ভব নয় তার রাজনৈতিক অবস্থান এবং মতামত যা ই হোক না কেন।
@বিপ্লব পাল, খেলোয়ার নির্ভর হলে যারা ওয়াকার, ইমরান, ওয়াশিমের কারণে পাকটিম পছন্দ করতো তারা কেন এখনো পাক-টিমের সমর্থক? আমাদের এখানে পাকিস্তানের ক্ষেত্রে ব্যপারটা হয়ে গেছে দেশ নির্ভর। পাকটিমে যেই খেলুক সেই ওদের প্রিয় খেলোয়ার। এক্ষেত্রে আপনার অভিমত কি ?
ধন্যবাদ স্যার।
@বিপ্লব পাল,
শিরোনামে যে কুৎসিত শ্লোগানটা ব্যবহার করা হয়েছে, সেটাকে যাতে আর কখনই না বলতে হয় সে কারণে তিরিশ লাখ মানুষ প্রাণ দিয়েছে একাত্তরে।
পাকিস্তানের বিষয়ে কোনো খেলাই আর খেলা থাকে না। সামান্যতম দেশপ্রেম, স্বজাতির প্রতি মমত্ব আর যারা আমাদেরকে একটা দেশ দেবার জন্য প্রাণ দিয়েছেন তাঁদের প্রতি বিন্দুমাত্র শ্রদ্ধাবোধ ও কৃতজ্ঞতা থাকলে, ওই দলে এগারোজন ওয়াসিম আকরাম থাকলেও সেটাকে সমর্থন করা যায় না।
যে সমস্ত বাংলাদেশি কুলাঙ্গার এই সামান্য বিষয়টুকু বোঝে না, তাদেরকে করুণা করা ছাড়া আর কোনো বিকল্প দেখি না আমি।
@ফরিদ আহমেদ,
তবুও একমত না।
উচ্চ সাহিত্যের বিচার হবে বাস্তবতার নিরিখে, তার ওপর কাঁচি চালানো ঠিক না।
অতীত থেকে শিক্ষা যেমন নিতে হয়-তেমন অতীতকে ক্ষমা করতেও শিখতে হয়। বাংলাদেশের নতুন প্রজন্ম যেমন পাকিস্তানের হাতে মার খায় নি-তেমন পাকিস্তানের নতুন প্রজন্মও এই অত্যচার করেনি। তারা কেন ইতিহাসের অশরীরীকে বয়ে বেড়াবে? তারা নতুন করেই শুরু করলে ক্ষতি কি?
হিটলারের মেইন ক্যাম্পের প্রথম মুখবন্ধই হচ্ছে জার্মানির প্রতি ফ্রান্সের যুগে যুগে চলে আসা অত্যাচার। অতীতের ভুত দিয়ে জাতিয়তাবাদকে প্রজ্জ্বলিত করা কোথাও সুফল আনে নি। বরং চেতনামুক্তির আন্দোলনের মধ্যে দিয়ে জাতিয়তাবাদ আসুক।
@বিপ্লব পাল,
শোনো বিপ্লব। মোজাফফরের এই গল্প এমন কোনো উচ্চমানের সাহিত্য হয় নি যে এটাতে কাঁটাছেড়া করা যাবে না। (মোজাফফর এতে মাইন্ড করলে কিছু করার নেই, কিন্তু এটাই সত্যি কথা)। মোজাফফরের উদ্দেশ্যও মনে হয় না উচ্চমানের সাহিত্য রচনা করা, বরং রাজনৈতিক আঘাত হানাটাই লক্ষ্য। কিন্তু সেই আঘাত প্রতিপক্ষের গায়ে লাগার আগে আমাদের গায়ে আঁচড় কেটে যাচ্ছে। সে কারণেই এই পরিবর্তনের অনুরোধ। রাখা না রাখা তাঁর নিজস্ব ইচ্ছা। আর তুমি বোধহয় খুব একটা অবগত নও। আমাদের জাতীয় জীবনে তিনটা মাস খুবই স্পর্শকাতর। ফেব্রুয়ারী, মার্চ এবং ডিসেম্বর। এই তিনমাসে আমাদের আবেগ ভিন্নতর জায়গায় থাকে। সেই ডিসেম্বর মাসে পাকিস্তান জিন্দাবাদ দেখতে হলে স্নায়ুকে অনেক বেশি শক্ত হতে হয়। কিন্তু দুর্ভাগ্য যে আমাদের স্নায়ু অত কঠিন করে তৈরি হয় নি।
একটা জাতির রক্তক্ষয়ী সশস্ত্র স্বাধীনতার সংগ্রাম কখনই অতীতের ভুত হয় না বিপ্লব। তা যদি হতো, তাহলে আর ইতিহাস কোনো দেশে পড়ানো হতো না।
@ফরিদ আহমেদ, না স্যার, আমি মাইন্ড করি নি। প্রকৃতঅর্থে আমি আমার অনুভূতির কথা বলতে চেয়েছি। উচ্চমানের সাহিত্য রচনা করার সাধ্য বা মেধা কোনটাই আমার নেই সুতরাং এই লেখাটিকে কোন প্রকার পরিবর্তনে আমার আপত্তি থাকার প্রশ্নই আসে না। তবে স্যাটায়ার হিসাবে নামটিকে দেখলে কোন সমস্যা থাকবার কথা না। যেমন সুইফট-এর ‘এ মডেস্ট প্রপোজাল’। ধন্যবাদ।
@ফরিদ আহমেদ, আপনার আবেগটা বুঝতে পারছি, কিন্তু এই স্লোগানটা কি অর্থে ব্যবহার করা হয়েছে সেটাও তো দেখতে হবে। একটা বইয়ের নাম যদি বিদ্রুপাত্মক অর্থে “পাক সার জমিন সাদবাদ” হতে পারে, তবে একটা গল্পের নাম “পাকিস্তান জিন্দাবাদ” হতে ক্ষতি কি?
@পৃথিবী,
এটা আমারই সীমাবদ্ধতা যে আমি আসল জিনিসটা বোঝাতে ব্যর্থ হয়েছি। একটা গল্পের যে কোনো ধরনের নামই থাকতে পারে, তাতে আপত্তির কিছু নেই। বিশেষ করে এই গল্পে যে কারণে নামকরণ করা হয়েছে সেটা বরং আমার আবেগের পক্ষেই যায়। মূল সমস্যাটা হচ্ছে আসলে মুক্তমনায় প্রকাশের কারণে। আর তিনদিন বাদে বিজয় দিবস। অথচ, যতবারই মুক্তমনা খুলছি, ততবারই সবচেয়ে আগে চোখে পড়ছে এই কদাকার অশ্লীল শ্লোগানটা।
@ফরিদ আহমেদ,
এই অশ্লীল শ্লোগানটা আমাদের স্বাধিনতার আগে বেশ কয়েক জুগ ধরে জালিয়ে পুড়িয়ে মেরেছে। আমিও বাধ্য হয়ে এই শ্লোগান গেয়েছি আমার ছোট বেলায়। এই শ্লোগানটাকে মন প্রাণ হতে চিরতরে জলাঞ্জলী দিতে কত শত মা হয়েছেন সন্তান হারা।
পাকিস্তানের পয়দা হয়োটা ছিল উপমহাদেশের কাছে এক দুঃসন্তান পয়দা হওয়ার সামিল। না একে ফেলে দেয়া যাচ্ছে না একে নিয়ে থাকা যচ্ছে। যে দিন থেকে এর জন্ম সেই দিন থেকেই দুনিয়ায় একটার পর একটা বিপত্তি ঘটিয়েই চলেছে। এ কোন দিন শোধরাবে না।
এর পুরান প্রজন্ম ও নতুন প্রজন্মের মধ্যে তেমন কনো পার্থক্য দৃস্টিগোচর হয় না।
আমি আপনার প্রত্যেক টা মন্তব্য কে সমর্থন করছি কায়মনবাক্যে।
@বিপ্লব পাল,
ক্ষতি তো অবশ্যই। কারণ ইতিহাসের অশরীরী আত্মা যে বাংলাদেশের আনাচে কানাচে বোমা ফাটাচ্ছে। নতুন প্রজন্মের মগজ ধোলাই করে ৭১ পূর্ববর্তী সময়ে আমাদের ফিরিয়ে নিয়ে যেতে চাচ্ছে।
@গীতা দাস,
চমৎকার জবাব। :yes:
@বিপ্লব পাল, :clap2:
@ফারুক,
আপনি এত হাততালি দিচ্ছেন কেন ভাই? ২৫মার্চে বিজয় উল্লাসে ইসলামের, না মরুভুমির গন্ধ পাইলেন?
@আকাশ মালিক,সেটা বোঝার ক্ষমতা থাকলে আর এই প্রশ্ন করতেন না। দুনিয়াতে ইসলাম ও মরুভূমিকে ঘৃনা করা ছাড়া ও বহু কিছু করার আছে। একটাই জীবণ আপনার , উপভোগ করুন।
@ফারুক, ‘একটাই জীবণ আপনার , উপভোগ করুন।'(আকাশ মালিককে)
-আদেশ ? উপদেশ ? রিমাইন্ডার ?
@ফারুক, আপনি পাকিস্তানকে ঘৃনা করার মধ্যে ইসলামকে ঘৃণা করা দেখলেই কই? দুইটা কি সমার্থক আপনার কাছে? তাহলে আমি আপনাকে চিনে রাখলাম। 🙂
আকাশ মালিককে যদি এই কথাই আপনি বলেন দুনিয়াই ইসলামকে বা মরুভূমির উটকে ঘৃণা করা ছাড়াও আরো অনেক কাজ আছে, তাহলে মনেও আমরাও বলতে পারি, দুনিয়াতে ইসলামকে ভালোবাসা বা পাকিস্থানকে ঘৃণা করাকে ইসলামকে ঘৃণা করা সমার্থক বলে ভাবা ছাড়াও আরো অনেক কাজ আছে।
@নীল রোদ্দুর,
চিনে রাখুন , তাতে আমার আপত্তি করার কিছু নেই। তবে পাকিস্তান ও ইসলাম সমার্থক এমন দাবী আমি কোথায় করলাম? আকাশ মালিকের প্রশ্নটি ভাল করে পড়ুন , তাহলে আমার প্রত্ত্যুত্তরের কারন বুঝবেন।
@বিপ্লব পাল,
এখন থেকে পনেরো বছর আগে বেলজিয়ামের রাস্তায় গগন নামের এক বাংলাদেশি তরুণকে নৃশংসভাবে পিটিয়ে মেরেছিল কয়েকজন পাকিস্তানি তরুণ। বাংলাদেশকে নিয়ে কুৎসিত গালাগাল করছিল ওই তরুণেরা। গগন এর প্রতিবাদ করেছিল। আর এই অপরাধে গগন নামের দেশপ্রেমিক বাংলাদেশি ছেলেটাকে পরপারে পাঠিয়েছিল পাকিস্তানিরা। আমাদের দেশের একশ্রেণীর তরুণের পাকিস্তান ক্রিকেট টীম নিয়ে মাত্রাছাড়া মাতামাতি দেখে গগনকে নিয়ে অত্যন্ত মর্মস্পর্শী লেখা লিখেছিলেন মুহাম্মদ জাফর ইকবাল। লেখাটির শিরোনাম ছিল ‘প্রিয় গগন’। আমি সেই লেখা থেকে সামান্য একটু অংশ এখানে উদ্ধৃত করছি।
গগন নামে বাংলাদেশের একজন তরুণকে কয়েকমাস আগে বেলজিয়ামে কয়েকজন পাকিস্তানি মিলে হত্যা করেছিল। আমি গগগনকে দেখিনি কিন্তু তবু মনে আমি বুঝি তাকে খুব ভালভাবে চিনি। একাত্তরে এই গগনের মতো তরুণেরা মুক্তিযুদ্ধ করেছিল, হাতে অস্ত্র তুলে নিয়ে পেশাদার পাকিস্তান সেনাবাহিনীর মুখোমুখি হয়েছিল। দেশের জন্য তাদের বুক ভরা ভালবাসা, এই দেশ নিয়ে তাদের স্বপ্ন, তাদের অহংকার। বেলজিয়ামের পথে কিছু পাকিস্তানি তরুণের বাংলাদেশকে নিয়ে কুৎসিত গালাগাল গগন সহ্য করেনি। গগন প্রতিবাদ করেছিল, মানুষ যেভাবে মায়ের সম্মান রক্ষা করে, বিদেশের মাটিতে সে সেইভাবে মাতৃভূমির সম্মান রক্ষা করতে চেয়েছিল। পাকিস্তানের সেই তরুণেরা তখন তাকে বেলজিয়ামের রাজপথে নৃশংসভাবে হত্যা করেছে- যে নৃশংসতায় আজ থেকে দুই যুগ আগে তারা এদেশের ত্রিশ লাখ মানুষকে হত্যা করেছে, এটি সেই একই নৃশংসতা। এটি কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়, এটি সেই একই ধারাবাহিকতা, একাত্তরেও পাকিস্তানিরা জানত তারা কোনো ভুল করেনি, এতদিন পরেও তারা জানে এখনো তারা কোনো ভুল করছে না। প্রয়োজনে এখনো তারা বাংলাদেশীদের হত্যা করতে পারে।
গগন ক্রিকেট খেলা ভালবাসতো কি না আমি জানি না। ……. গগন কখনো কোনো স্টেডিয়ামে পাকিস্তান টীমের ক্রিকেট খেলা দেখেছে কি না আমি জানি না। আমি শুধু একটা জিনিস জানি, আর যাই করুক পাকিস্তান টীমের সমর্থনে সে কখনোই পাকিস্তানের পতাকা তুলে উদবাহু নৃত্য করত না। বাংলাদেশের যে নাগরিক দেশটির জন্ম ইতিহাস জানে, এই দেশের জন্য যার বিন্দুমাত্র ভালবাসা রয়েছে, সম্মাবোধ রয়েছে, দেশের শহীদদের জন্য যার এতটুকু শ্রদ্ধা রয়েছে সে অন্য যেভাবেই তাদের সমর্থন প্রকাশ করুক না কেন, নিজের দেশের মাটিতে সেই দেশের জাতীয় পতাকাটি তুলে নিতে পারে না। গগনের নিজের দেশের জন্য গভীর ভালবাসা ছিল, আমি নিশ্চিত সে কখনোই তার হাতে সেই পতাকাটি তুলে নিত না।
জাতীয় পতাকা এক টুকরা কাপড় নয়, সেটি বিশাল একটি ব্যাপার। একজন স্বাধীন দেশের মানুষ কখনো অন্য দেশের পতাকা হাতে তুলে নেয় না। যে পতাকাটি এই দেশের মাটি থেকে সরানোর জন্য ত্রিশ লাখ মানুষকে বুকের রক্ত দিতে হয়েছে, যে দেশ কখনো পৃথিবীর সেই জঘন্যতম গণহত্যার জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করেনি সেই দেশের জাতীয় পতাকাটি হাতে তুলে নেওয়ার মাঝে যে একটি ভয়ংকর কুরুচি, দেশের সম্মানবোধের প্রতি একটি অশ্লীল অবহেলা রয়েছে, সেটি কি কখনো কিছু তরুণকে বলে দেওয়া হয়নি। দেশের ইতিহাস না জেনে কীভাবে একটি প্রজন্ম এই দেশে বড় হয়ে গেল?
@বিপ্লব পাল,
সাহিত্য কি শুধুই সাহিত্য, মানুষের অনুভূতি, হৃদয় বিচ্ছিন্ন ব্যাপার। তাহলে সাহিত্যকে গলা ধাক্কা দিয়ে ডাস্টবিনে ফেলতেও আমার দ্বিধা হবে না। যে সাহিত্য মানুষের অনুভূতির পরোয়া করে না, তা সৃষ্টি নয়, ম্যানুফ্যাকচারিং। তেল সাবানের মতই বানিজ্যিক ভোগ্যবস্তু!
@বিপ্লব পাল,
ক্ষতির বীজ দেখবেন? এই দেখেন। http://www.sachalayatan.com/jawshan/34818
আমি মনে প্রাণে গান্ধীবাদী। কিন্তু তবুও একাত্তরের ক্ষত শুকিয়ে যায় নি। ব্যক্তিগতভাবে নিয়েন না, প্রশ্ন করছি, আপনার বোনকে আপনার চোখের সামনে ধর্ষণ করলে, আপনার ভাইয়ের লাশ মানুষকে দেখানোর জন্য ঝুলিয়ে রাখলে, আপনার বাবাকে মা কে খুন করলে কি ৪০ বছর পরে আপনি সেটা ভুলে যাবেন, নাকি ঘাতকের সন্তানদের সাথে আপনার মেয়েকে বিয়ে দেবেন? বুকে দগদগে ঘা নিয়ে বন্ধুত্বের কথা চিন্তা করা কি সুস্থতা? যদি পারেন, তাহলে মনে হয় গান্ধীও পারলে চিতা থেকে উঠে এসে আপনাকে সালাম জানাবে।
@বিপ্লব পাল,
আপনার এই কথাটি বাস্তব নয়। ভারতে থেকে বিদেশী দলকে এখনও সাপোর্ট চলে। (কেন চলে ? বা ‘ব্যক্তিস্বাতন্ত্রবাদ’ -এ বিশ্বাসী কেউ একটি দেশের নাগরিক হয়েও অন্য বিদেশী এবং /অথবা বৈরী রাষ্ট্রকে সমর্থন করতে পারে কিনা-সে সব গুরুতর কথা অলস তাত্ত্বিকরা চিন্তা করলে, করতে পারেন। তার জন্য উদার সাজার বাসনায় সত্য অস্বীকার করা চলবে না।)
তবে এটা ঠিক, ভারতে এখন আই পি এল ইত্যাদি নিয়ে এত বেশী ক্রিকেট হয় যে সাধারণ মানুষের কাছে আগের মত অত আবেদন তৈরী করে না।
শিরোনামটা লেখার সাথে মানাচ্ছেনা, চক্ষু ব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। প্লিজ বদলে দিন।
@আকাশ মালিক, আমি আসলে এভাবেই আঘাত করতে চেয়েছি…। যখন আমাদেরই বাড়িতে পাকিস্তান পাকিস্তান করে অনেকে চিৎকার করে, পাকিস্তানের জাতিয় পতাকা ট্যাটু বানিয়ে হাতে-গালে-বুকে রেখে দেয় তখনও আমরা নিরব থাকি। মিডিয়াও এ নিয়ে কথা বলে না। anyway, আমি শিরোনামটা একটু ভেবে বদলে দিচ্ছি। ধন্যবাদ।
আর আপনার মেইল এড্রেসটা পেলে আমার খুব উপকার হতো।
@মোজাফফর হোসেন,
আজ আমি মুক্তমনার ব্যান খাবো, কিন্তু বলেই যাবো যা বলার।
আমি এই বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দিতাম। আপনারা যারা দেশে আছেন, যারা ২৫মার্চে পাকিদের সমর্থনে বিজয় উল্লাস দেখেছেন, আর কিছু করতে না পারেন, ভরা এক মুখ থু থু, একটি মাটির ঢেলাও কি ওদের দিকে ছুঁড়ে মারতে পারলেন না?
শোনরে ঐ জারজ সন্তানেরা, তোদের মা-বাবাকে বলিস, তারা তোদের জন্মই দিল মানুষ করলোনা। আরো বলিস, তারা যেন আমার বাড়ি এসে দেখে যায়, আমরা আমাদের সন্তানদের শিখায়েছি-
এইখানে তোর দাদীর কবর, এইখানে তোর মা———–
কুত্তার বাচ্চারা আমার দাদী আমার মাকে তোর বাবা খুন করেছিল এই মার্চ মাসে।
@আকাশ মালিক,
প্রায় একই রকমের একটি শিরোনাম “পাক সাদ জমিন সাদ বাদ” নামে বোধ হয় হুমায়ুন আজাদ সারের একটি বই আছে।
নব্বই এর দশকে শহীদ আফ্রিদিকে বাংলাদেশের লীগে (মহামেডানের জন্য মনে হয়) নিয়ে আসার পর ‘আফ্রিদি ম্যারি মি’ ব্যানারএবং প্ল্যাকার্ড হাতে তরুনীর নর্তন কুর্দনের চাক্ষুষ সাক্ষী আমি। যে দেশে মাত্র ত্রিশ বছর আগেই পাকিস্তানী হানাদারদের হাতে বাংলার লক্ষাধিক নারীকে ধর্ষিতা হতে হয়েছিল, মাত্র এক দু প্রজন্ম পরেই পাকমন পেয়ারী তরুন- তরুনীদের মাত্রাধিক উল্লাস আমাকে বিব্রত করে।
যদিও রাজনীতির সাথে খেলাধুলার সংস্রবের ঘোর বিরোধী আমি, তারপরেও ‘পাকিস্তান জিন্দাবাদ’ কিংবা ‘আফ্রিদি ম্যারি মি’ জাতীয় প্ল্যাকার্ড যেন আমাদের এবং পরবর্তী প্রজন্মগুলোর দীনতাকেই স্পষ্ট করে তুলে।
এ প্রসঙ্গে আরেকটি উলটো কথাও মনে হল। যদিও ব্যাপারটি ‘পলিটিকালি ইনকারেক্ট’ শোনাবে। আমার মুসলিম বন্ধুদের মধ্যে পাকিস্তানী সমর্থক যেমন ছিলো, তেমনি অনেক বন্ধু ছিলো যারা পাকিস্তানের ঘোরবিরধী। তাদের অনেককেই ভারত, ওয়েস্টইন্ডিজ, শ্রিলঙ্কা সহ অন্য দেশকে সমর্থন করতে দেখেছি (বাংলাদেশ তখনো টেস্ট স্ট্যাটাস পায়নি, তাই সেটিকে গোনায় রাখছি না)। কিন্তু আমি বহু মুসলিম বন্ধুদের ভারতকে সমর্থন করতে দেখেছি, কিন্তু আমার চেনা একটি ‘হিন্দু বন্ধু’কেও কখনো পাকিস্তানকে সমর্থন করতে দেখিনি (আমার সারা জীবনে একজনকে পেয়েছি, যিনি দেশের বাইরে থাকেন, এবং জন্মগতভাবে হিন্দু হয়েও পাকিস্তান টিমকে ক্রিকেটে সমর্থন করেন, নিঃসন্দেহে বিরল জীব তিনি)। আশি নব্বইএয়র ডিশ নেটওয়ার্ক এত সহজলভ্য ছিলো না। বৈধ অবৈধ নানা উপায়ে এন্টেনার সাথে থালা বাসন বদনা জুড়ে দিয়ে অনেকে কষ্ট করে ইন্ডিয়ান চ্যানেল ধরে খেলা দেখতেন। আমি জগন্নাথ হলে যেতাম খেলা দেখার জন্য। সেখানে টিভি রুমে ভারতের খেলা যারা দেখেছেন তারা জানেন – শতকরা ১০০ জনই ভারতের সমর্থক। কৃষমাচারি শ্রীকান্ত একটা চার বা ছক্কা মারলে, কিংবা অনিল কুম্বলে একটা উইকেট নিলেই শুরু হয়ে যেত উদ্বাহু নৃত্য। স্বীকার করছি হিন্দুদের জন্য ব্যাপারটি অনেক জটিল, আর সংখ্যালঘু হিসেবে তাদের জীবনকে না বুঝে ঢালাও মন্তব্য করা অনুচিৎ – কিন্তু একটি জিনিস আমাকে ভাবায়। মুসলিমদের জন্য পাকিস্তানপ্রীতিকে কটাক্ষ করা হলে, হিন্দুদের ভারতপ্রীতিকে কি একেবারে ছাড় দেয়া উচিৎ ? 🙂
@অভিজিৎ, খেলার সাথে আমিও রাজনৈতিক চেতনা ও ধর্মকে জড়াতে নারাজ। কিন্তু কথাগুলো চলে আসে যখন কোন বাঙ্গালি মুসলিম সাপোর্টার বলে, আমি পাক সাপোর্ট করি কারণ তারা মুসলিম।
আর কিছু খেলোয়াড়কে পছন্দ করা আর টিম বা দেশকে পছন্দ করা এক কথা না। যখন কেউ ১০ বছর ধরে পাক-টিমকে সাপোর্ট দিয়ে আসছে তখন সে নিষ্চয় পাকিস্তানকে পছন্দ করে, ওদেশের হয়ে যেই খেলুক না কেন সেই হবে তার প্রিয় খেলোয়ার।
অন্যান্য দেশকে সাপোর্ট করলে খুব একটা গায়ে লাগে না; কিন্তু যখন কেউ বলে পাকিস্তান জিতুক তখন মেজাজ বিগড়ে যায়, এই ক্ষেত্রে আমি কনজারভেটিব না হয়ে পারি না। আমি চাই, পাকিস্তান আমাদের ভালোলাগা-মন্দলাগা থেকে বের হয়ে যাক। আমি ওই দেশের জন্য দোয়া করার কোন কারণ দেখি না।
আমার অনেক বান্ধবী আছে যারা ক্রিকেট বোঝে না কিন্তু আফ্রিডিকে বোঝে…। ওদের জন্য করুনা হয়!!
ধন্যবাদ স্যার।
@মোজাফফর হোসেন,
এখানে মনে হয় জাতীয়তার চ্চেয়ে চেহারাটাই বড় ফ্যাক্টর। হুজুর হয়ে যাওয়ার আগে আফ্রিদী বেশ সুদর্শন ছিলেন।
@মোজাফফর হোসেন, ‘স্যার’ কথাটা বাদ দিয়ে দিলে কেমন হয়? বাংলা ব্লগে ‘স্যার’ ‘স্যার’ শুনতে কেমন যেন লাগে 🙂 ।
@বন্যা আহমেদ,
জ্বী, ম্যাডাম, একদম ঠিক কথা বলেছেন। 🙂
@বন্যা আহমেদ, জ্বী আচ্ছা…
@বন্যা আহমেদ,
হুজুর ডাকলে কেমন হয়?
@আকাশ মালিক,
পীরানি হলে মনে হয় আরো ভাল হয়, কি বলেন?
আপনাদের সিলেট অঞ্চল থেকেই সদ্য শিখলাম। আশা করি রাগ করবেন না।
@আকাশ মালিক,
:laugh:
কিংবা ওস্তাদ।
@অভিজিৎ,
হ্যা, যে কোন অনৈতিক সাম্প্রদায়িক বা স্বজন প্রীতি অবশ্যই নিন্দনীয় সে মুসলিম, হিন্দু যে কারো জন্য প্রযোজ্য। কিন্তু বাংলাদেশের মুসলিমদের পাকিস্তানপ্রীতি আর হিন্দুদের ভারতপ্রীতি একই দৃষ্টিভংগীতে অনেক সময় বিচার করা যায়না, কারন পাকিস্তানের সাথে বাংলাদেশের একটা দুঃখজনক ইতিহাস আছে বলে।
@অভিজিৎ,
অভিজিৎ, খুব সুন্দর বিশ্লেষণ। ১২০% সহমত।
যে পাকিস্তান বাংগালীদের পর এত নির্মম অত্যাচার করেছিল তাদের কিছু কিছু প্লেয়ারদের খেলা ভাল লাগলেও তাদেরকে সাপোর্ট করে তাদের জিতে উল্লাশিত যারা হয় তারা বাংগালী জাতির কলংক।
শাহরুক খানের ( যাকে আমি নাম্বার ওয়ান ফান্ডামেন্টালিস্ট বলবো ) আই পি এলে টিমে (যা আন্তর্জাতিক নিয়মের আয়তায় আসে না ) পাকিস্তানী প্লেয়ারদের নিয়গের সিধান্ত নিয়ে ভারতে অনেক প্রতিবাদের ঢেউ উঠেছিল আমারা জানি। পাকিস্তানকে সুস্থ মানসিকতার মানুষদেরকে সব সময়েই এভোয়েড করা উচিত।
@অভিজিৎ,
এই ব্যাপারটা আসলে দু ভাবেই দেখা যায়। খেলাধুলার সাথে রাজনীতি জড়ানো উচিত নয়। তবে আবার ৭১ সালের পাকিস্তানীদের কীর্তি, এবং বিশেষ করে তার জন্য আজ পর্যন্ত সেই কৃতকাজের জন্য ক্ষমা না চাওয়াও ভোলা উচিত নয়। এ দুয়ের মাঝে একটা ব্যালেন্স আনা উচিত।
কেউ পাকিস্তানের খেলা দেখে উল্লসিত হলে কি করে তাকে দোষ দেই? আবার কেউ ৭১ এর কথা ভেবে তাদের খেলা কিছুতেই ভাল লাগতে দেব না বা ভাল লাগলে প্রকাশ করা যাবে না এমন মানসিকতা প্রকাশ করেন তাদেরই বা কিভাবে সমর্থন করা যায়?
ভারত আমাদের ফারাক্কা দিয়ে শুকিয়ে মারছে, বিএসএফ এসে প্রায়ই আমাদের লোককে গুলি করে মারছে বলে আমি আজ মান্না দের গান বা পঙ্কজ উদাসের গান শোনা ছেড়ে দেব?
আমি নিজেও ছাত্রজীবনে পাকিস্তানের ঘোরতর সমর্থক ছিলাম। ইমরান, মিয়াদাদ এদের বলতে গেলে পীরের মত দেখতাম। কোথা থেকে খুজে খুজে পত্রিকা ম্যাগাজিন থেকে এদের ছবি বের করে কেটে কেটে জোগাড় করতাম। ঢাকা কলেজ থেকে হেঁটে হেঁটে বুয়েটের হলে যেতাম খেলা দেখতে।
একবার কলেজের এক বন্ধু জিজ্ঞাসা করল তুমি পাকিস্তানের এমন সাচ্চা সমর্থক হলে কেমন করে? আমি পড়লাম একটু চিন্তায়, এভাবে তো কখনো ভাবিনি। আমতা আমতা করে বললাম, আসলে ওদের নামগুলি অনেকটা আমাদের মত তো তাই…
সে মুচকি হাসি দিয়ে বলল আসলে তুমি ধর্মের ভাই বলেই ওদের সমর্থন দাও। বলা বাহুল্য সে নিজেও একই গোত্রীয়ও ছিল। দুজনে একই সাথে যেতাম, উল্লাস করতাম।
আমাদের উপমহাদেশীয় কালচারে ধর্মের প্রভাব অস্বীকার করা এখনো বহু যোজন বাকি। বাংলাদেশের হিন্দুরা যেমন একজনও পাকিস্তানকে সমর্থন করে না এতে তেমন অবাক হবার কিছু নেই। আমি অনেকের কাছে শুনেছি যে এমনকি ভারতের অনেক মুসলমানও ইন্ডিয়া-পাকিস্তান খেলায় পাকিস্তানকে সমর্থন করে। ৭১ সালে সমগ্র ভারত বাংলাদেশীদের প্রতি চরম সহানুভূতিশীল হলেও ভারতীয় মুসলমানেরা ছিল আমাদের উপর সামগ্রিভাবে চরম বিরক্ত। জয় বাংলার লোক শুনলে সব যায়গায় খাতির পাওয়া যেত, আবার উলটো দিকে জয় বাংলার লোক শুনে মুসলমান দোকানদার জিনিস বিক্রি করবে না এমন উদাহরনও আছে।
@আদিল মাহমুদ,
আপনার এই কথাটা মেনে নিয়ে কেউ যদি দল বেঁধে প্রকাশ্যে খোলা মাঠে ১৬ ডিসেম্বর, ২৫ মার্চ, ২১ ফেব্রুয়ারি নুরজাহানের উর্দু গান শুনে, বা উর্দু প্রেম দেখায়, আপনার অনুভুতিটা কেমন হবে?
আদিল ভাই, আমি আমার কথা বলতে পারি, আমার সামনে কেউ ঐ দিনগুলোতে উর্দু গান বাজাতে পারবেনা। এই প্রবাসে দু-একটি অনুষ্ঠানে কেউ কেউ চেষ্টা করেছেন পারেন নাই।
সারা বছর ভারতের মান্নাদে’র বাংলা গান শুনা, আর ২৫মার্চে পাকিস্তানের সমর্থনে বিজয় উল্লাস করা, তুলনাটা কি সঠিক হলো? আর ফরিদ ভাইয়ের সাক্ষ্য অনুযায়ী বুঝা যাচ্ছে সেখানে জামাত শিবিরের ইন্ধন ছিল। তাহলে তারা তো জেনে বুঝেই মুক্তিযোদ্ধের প্রতি কটাক্ষ করলো, শহিদদের অবমাননা করলো।
@অভিজিৎ,
আমি মনে করি একজন হিন্দু-মুসলমান নির্বিশেষেই কোন ভারতীয়র পক্ষে পাকিস্তান সমর্থন করা সম্ভব নয়। পাকিস্তান নিজেরা শুধুমাত্র মুসলমান বলে সংখ্যাগুরু হিন্দুদের সাথে প্রকাশ্যে সেপারেশনিস্ট হয়ে হোকাস-পোকাস একটি তত্বের উপর ভিত্তি করে পাকিস্তান গঠন করেছে। এবং শুধু সেটা করেই ক্ষান্ত থাকেনি এতবছর পরও ভারতের সাথে প্রকাশ্যে শত্রুতামূ্লক আচরণ অব্যাহত রেখেছে। একজন মুসলমান ভারত সমর্থন করে বলে দুই-একজন হিন্দুকেও পাকিস্তান সমর্থন করতে হবে এটা আমি নিছকই পলিটিকাল কারেক্টনেস বজায় রাখার জন্য একটি ব্যালেন্সিং দাবী বলে মনে করি। কোন হিন্দুর পক্ষে কোনভাবেই সম্ভব হওয়া উচিত না পাকিস্তানের মতো একটি হিন্দুবিদ্বেষী রাষ্ট্রেকে সমর্থন করা একই কারণে যেই কারণে একজন কালোর কখনও উচিত না ক্লু ক্লাক্স ক্লানকে সমর্থন করা।
আপনার গল্পের শিরোনামটা স্নায়ুর উপরে প্রচণ্ড রকমের চাপ সৃষ্টি করছে। হয়তো এটাই আপনার উদ্দেশ্য। তবুও অনধিকার অনুরোধ রইলো, যদি সম্ভব হয় তবে পালটে দিয়েন শিরোনামটা।
গল্প লিখতে গেলে লেখকের কল্পনায় প্রধান, তারপরেও ঐতিহাসিক বিষয়ের গল্পে ফ্যাক্টগুলোকে খেয়াল রাখা প্রয়োজন। পাকিস্তান ক্রিকেট টিম কি ১৫ ডিসেম্বর ২০০৮ এ কোনো খেলা খেলেছে? এই ধরনের ঘটনা ঘটেছিল ১৯৯২ সালের বিশ্বকাপে। পঁচিশে মার্চ সন্ধ্যেবেলায় ইমরান খানের নেতৃত্বে বিশকাপ জিতে নিয়েছিল পাকিস্তান। সেদিন সন্ধ্যের পরে ঢাকায় পাকিস্তান সমর্থকদের উল্লাস মিছিলের চাক্ষুস স্বাক্ষী আমি। এর পিছনে অবশ্য রাজনৈতিক কারণও ছিল। আপনার গল্পের পটভূমিকা সেই সময়ের হলে আরো ভালো হত। কারণ পরদিন জাহানারা ইমামের নেতৃত্বে ঘাতক দালালদের বিরুদ্ধে গণ আদালত বসার কথা ছিল।
এটা কি ১৯৭১ সালের কথা বলছেন? যদি হয় তবে মনে হয় সঠিক না বিষয়টা। ততক্ষণে পাকিস্তান বাহিনী আত্মসমর্পণ করে ফেলেছে।
আরেকটা বিষয় জানার খুব ইচ্ছে আমার। বাংলাদেশিদের মধ্যে পাকিস্তান ক্রিকেট টিম নিয়ে এই ক্রেজ কি এখনও আছে? এটা আশি আর নব্বই এর দশকে চরমে গিয়ে পৌঁছেছিল। আগে আমাদের নিজেদের ভাল টিম ছিল না বলে অনেকেই পাকিস্তানকে সমর্থন দিত। এখনতো বাংলাদেশ দলের পারফরম্যান্স, গ্লামার সব কিছুই পাকিস্তান ক্রিকেট টিমের চেয়ে শ্রেয়তর। এখন কেন ওই আন্ডার পারফর্ম করা, জুয়াড়ি আর ড্রাগ এডিক্ট খেলোয়াড় দিয়ে ভর্তি দলকে সমর্থন দিতে হবে?
@ফরিদ আহমেদ,
পঁচিশে মার্চ পাকিস্তান সমর্থকদের উল্লাস! বাহ, বাঙ্গালি বাহ।
আচ্ছা, রাজনৈতিক কারণটা কী ছিল?
@আকাশ মালিক,
আমার মন্তব্যেই উল্লেখ করা আছে কারণটা। পরের দিন জাহানারা ইমামের নেতৃত্বে একাত্তরের ঘাতক দালালদের বিচারের উদ্দেশ্যে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে গণ আদালত বসার কথা ছিল। ওটাকে গুরুত্বহীন করার উদ্দেশ্যে, পাকিস্তানের বিশ্বকাপ জয়ের ক্রেজকে কাজে লাগাতে চেয়েছিল জামাতে ইসলামী। ফলে, যতটুকু না স্বতস্ফূর্ত ছিল পাকিস্তানের পক্ষের বিজয় মিছিলসমূহ তারচেয়ে বেশি করা হয়েছিল জামত শিবিরের প্রত্যক্ষ ইন্ধনে।
@ফরিদ আহমেদ, না আমি যে খেলার কথা লিখেছি তা ঘটেনি। যদি কোনো ১৫ই ডিসেম্বর পাকিস্তানের খেলা হয়, তাহলে কি রাতারাতি পাকিস্তানের সাপোর্টারদের মানুসিকতা বদলে যাবে ? সাহিত্যে যা ঘটেছে তার কদর খুব একটা নেয়, ওটা ইতিহাসের প্রিয় বিষয়–আমি সম্ভাবনার কথা বলছি মাত্র।
ফায়ারিংটা হচ্ছে স্বাধীনতা উৎযাপন উপলক্ষে পাশের ক্যাম্প থেকে। প্রতি ১৬ই ডিসেম্বর রাত ১২টাই এটা করা হয়।
এখনো সেই পরিমান ক্রেজ রয়ে গেছে। যেহেতু আমি ক্রিকেট খেলা দেখি, তাই ব্যপারটি আমার চোখ এড়াতে পারিনি। ৯০ দশকের ক্রিকেট সম্পর্কে আমার কোন ধারণা নেই। আমি বলছি শূন্য দশকের কথা। আমি এখন ৩৫০ সদস্যবিশিষ্ট একটা ম্যাচে থাকি। এখনে ৭০% পাকিস্তানের সাপোর্টার। গতম্যাচেও পাকিস্তানের খেলা চলা কালে ওদের উল্লাসধ্বনি শুনে অসুস্থ বোধ করছিলাম। একছেলে গত বছর পাকিস্তান টিমের জন্য রোজা রেখেছিল। আমার কিছু ফ্যামিলি ও কয়েকজন বন্ধু পরিচিত আছে যারা বাংলাদেশের সাথে পাকিস্তানের খেলা হলে পাকিস্তানের পক্ষ নেয়। এগুলো আমার দেখা বাস্তবটা, ওদের জন্যই গল্পটি লেখা।