দাসদার মাথায় ছিলো না যে তিনি কোনদিন মারা যাবেন। গতকাল তিনি শেষ পর্যন্ত চলেই গেলেন।
গতবছর একদিন চারটে বেগুন ভাজি, লাউয়ের সাথে ক্যাটফিসের তরকারী আর লাল শাক দিতে গিয়েছিলাম। ঘরে ঢুকতেই বললেন – “নৃপেন, খাবার এনেছো? দাও।” সাথে সাথেই খেতে শুরু করলেন। অত্যন্ত তৃপ্তি নিয়ে খেয়ে বললেন – “রাজভোগ খেলাম।”
মিনু লাল শাক করেছিলো। গতকাল দুপুরে লালশাক দেখেই দাসদার “রাজভোগ” খাওয়ার কথা মনে পড়লো। এবং রাত ৯ঃ০৯টায় ছোট ছেলে হিমমৌলির টেক্সট মেসেজ – “I just wanted to pass along some sad news. My father passed away today.”
দাসদা আমাকে যা বলে গেছেন, তাতে তিনি ৯৫ বছরের কিছু আগেই চলে গেলেন। তিনি ছিলেন চির নতুন। মৃত্যু নিয়ে তিনি কখনও ভাবেন নি। আমার বাড়ীর সামনে খালি জায়গাটা কিনে নতুন একটা বাড়ি বানাতে চেয়েছিলেন। জায়গার মালিকের সাথে কথা বলতে বলেছিলেন। আমি বলিনি। কারণ, আমি জানতাম তাঁর মাথায় এই বোধটুকু নেই যে নতুন বাড়ীতে উঠার মত সময় তাঁর হাতে থাকবে না। কতগুলো প্রজেক্ট নিয়ে ভেবেছিলেন। শরীরটা ঠিক হলেই শুরু করার প্ল্যান ছিলো। বয়সের সাথে একসময় শরীরটা শেষ হয়ে আসে। শরীর জোড় কমেছিলো। কিন্তু মনের জোড় কমেনে কোনদিন।
আমি তাঁকে অনেক সময় মজা করে Young Man বলতাম। তিনি মজা পেতেন। এ নিয়ে অনেক হাসাহাসি হতো।
আমি ঘন্টার পর ঘন্টা উনার সাথে আলাপ করেছি। একটা বিষয়ে আমাদের পুরোটাই মিল ছিলো। সেটা হলো – মানুষের ধর্ম বিশ্বাস। তিনি প্রচুর পড়াশুনা করতেন। এমনও আছে যে, রাত তিনটেতেও আমাকে ইমেইল করে সকাল সাতটায় ফোন করেছেন।
অত্যন্ত বাস্তববাদী লোক ছিলেন। মানুষকে সঠিক পরামর্শ দিতে পারতেন। সময় হয়েছে। তিনি চলে গেলেন। একজন অতি কাছের মানুষ হারালাম। কিন্তু স্মৃতিকে তো হারাতে পারবো না।
দাসদার “আগাছা দর্শণ” নিয়ে লিখেছিলাম /a>নভেম্বর ১১, ২০১২ তারিখে<
লিংকের লেখাটি ভালো লেগেছে। পড়ে বেশ মজা পেয়েছি —- “হিন্দুদের মধ্যে সাবালকত্ব এসেছে। একবিংশ শতকে এসে দেবতাদের নিয়ে ঠাট্টা-মস্করা করলে এরা আর গায়ে মাখে না। তেত্রিশ কোটি দেবতার দু-একটাকে খুন করে ফেললেও হিন্দুদের তেত্রিশ কোটি দেবতাই অবশিষ্ট থাকে। “
শুভ বিদায়, দাসদা!