যারা এই পৃথিবীতে সুখ পায় খাঁটি- সুখী নাম নেয়-
সুখের স্বপ্ন বোনে শ্রমে যত্নে আশায়;
তাদের পিতৃপুরুষেরা কি রেখে যায়,
নিঃশর্তে দিয়ে যায় একফালি জমি।
সেইখানে নিকষিত বাতাসে যে শ্বাস নেয়,
বুক ভরে দম নেয়।
নিজের জমিতে সুঠাম দাড়িয়ে
ঝেড়ে ফেলে সে গভীর পাঁজরের দীর্ঘ দীর্ঘশ্বাস।

যার গরুর পাল আর গাভীন ক্ষেত
আশ্বাস দিয়ে রাখে দুধ আর ধানের।
মিঠে বসন্তের বাহারি পোশাকে
কারা তারে অমন সাজায়!
উৎসবে আমেজে হাসির সন্ধ্যায়!
লালিত ভেড়ারা আরও বেশী হাসি মুখে দিয়ে দেয়
নিজেদের দেহ থেকে বাড়তি পশমের ওম।
কেন তারা দেয়?
বাদাম, কড়াই আর ধঞ্চের সারিসারি দেহ
ভরা বর্ষায় আগুন আর গ্রীষ্মের ছায়া
দিয়ে যায় কেন তবে?
তারাও কি সুখী নয়?
একসাথে সে আর তাহারা সুখী হয়ে রয়।

যার ঘণ্টা দিন বছরের সময়-খাতা
তেলের মতন তেলতেলে পথ ধরে
হারিয়ে যায় সময়ের মরীচিকা পথে
নীরবে নিভৃতে।
যার শরীরের পেশী আর মনের মলয়ের
অবশ ঘুমের উপর দিয়ে সড়সড় সরে যায়,
সময়ের সেই যাওয়া, আর যাওয়া, আর যাওয়া।
সেই তবে সুখী।
সুখী নাম নিতে হয় তাকে।

রাতে যার নানান ঘুম হয় প্রগাঢ়,
কেন্দ্রীভূত হয় যার মন
জানাতে-শেখাতে, আর বিশ্রাম-সুখ সাধনে যুগপৎ-
একটা নিষ্পাপ মিষ্টি বিনোদনের সাথে
যে পারে মিশাতে কাঙ্ক্ষিত ধ্যানগ্রস্থতা,
সেই তবে সুখী নিশ্চয়।
সুখী নাম নিতে হয় তাকে।

মনে রেখো-
এইসব সুখীদের আমি একজন।
স্বপ্নে বুনি আবাস আর বিদায়ের ক্ষণ।
এমনিতর একটা জীবন-
অচেনা বাহুল্যহীন একখানা জীবনে
হোক তবে আমার আবাস।
তোমরা শুধু আমায় এইটুকুন দিও সাবধানে,
করো নিতর্কে।
এই ধরা থেকে হয়ে যাই যেন আমি চুরি
পরিপূর্ণ নিভৃতে।
নিদেন একখানা নিরেট পাথরও যেন
বলার সাহস না পায়-
কোথায় ঘুমাই আমি নীরব পাথার।
সেই বিদায়ের ক্ষণে
শুধু এইটুকু রেখ মনে।

(১৬৮৮ সালে জন্ম নেয়া ব্রিটিশ কবি আলেকজাণ্ডার পোপের বিশ্বখ্যাত কবিতা Ode on Solitude এর খোলনলচে পালটে ভাবানুবাদের স্বাদে এই বাংলা রূপান্তরের প্রয়াস পেয়েছি। একজন সনদহীন কবি হয়েও কবিতা প্রীতিতে আক্রান্ত হই বারবার।)