ইমাম হোসেন-এর সাথে হোসেনী ব্রাহ্মণরা।

কারস্টেন হোলগার” রচিত ‘জিসাস লিভড ইন ইন্ডিয়া’র মতন জিসাস কী ক্রুশবিদ্ধ হওয়ার পর ভারতে এসেছিলেন কিনা কিংবা অনেকের সন্দেহ- জিশু কী আদও বিবাহিত ছিলেন কিনা, জিশুর বংশধররা পৃথিবীতে আছেন কিনা; এমন বিতর্কিত কিংবা কল্পনা নির্ভর ঘটনার মতন ধরে নিতে হবে হোসেনী ব্রাহ্মণ সম্প্রদায়ের ইতিহাসটুকু।

সনাতন ধর্মে সরস্বত ব্রাহ্মণ সম্প্রদায়ের আদি নিবাস মূলত উত্তর ভারতে। সেই সম্প্রদায়ের আবার সাতটি স্বতন্ত্র গোষ্ঠী রয়েছে। যাদের মধ্যে মোহ্যাল ব্রাহ্মণ ছাড়াও রয়েছে ভিমাল, বলি, চিবড়! আমার আলোচনা মোহ্যাল ব্রাহ্মণদের প্রসঙ্গে। হিন্দু শাস্ত্রমতে ব্রাহ্মণদের কাজ যজ্ঞ,উপাসনাদি ইত্যাদিতে আবদ্ধ থাকলেও ‘দত্ত’ ব্রাহ্মণদের ইতিহাস কিছুটা ব্যতিক্রম। ‘দত্ত’রা হচ্ছে এই মোহ্যাল গোষ্ঠীর একমাত্র যোদ্ধা বংশীয় ব্রাহ্মণ, যারা একই সাথে হোসেনী ব্রাহ্মণ নামেও পরিচিত। ভারতের পুনের হোসেনী ব্রাহ্মণদের দাবি (যাদের আদি নিবাস ছিল পাঞ্জাব), তাদের পূর্ব-পুরুষরা নবী মুহাম্মদের দৌহিত্র ও হযরত আলী’র পুত্র ইমাম হোসেন-এর পক্ষে কারবালায় (বর্তমান ইরাক) লড়াই করেছেন।

১০ মহরমে কারবালা নামক স্থানে নবী পরিবারের ৭২ জন খুন হোন। যাদের অধিকাংশই ছিল নারী ও শিশু। পুরুষদের মধ্যে একমাত্র জয়নাল আবেদিন ছাড়া পরিবারের সকল পুরুষ এই যুদ্ধে শাহাদাত বরণ করেন। শিশু পুত্র আলী আজগরকে কোলে নিয়ে যখন তার প্রাণ বাঁচানোর জন্যে সামান্য পানি প্রার্থনা করা হচ্ছিল তখন একটি তীর শিশু বক্ষকে ছেদ করে। অদ্ভুত বিষয় হচ্ছে, নবী মুহাম্মদের নাতী শেরে খোদা আলীর পুত্র হোসেনকে যখন ঘিরে ধরা হয় তখন সেই সৈন্যদের মাঝে বহু হাফেজ জুব্বাধারী, লম্বা চুল ও পাগড়ীধারী সৈন্যও ছিল। আর তাদের সেনাপতি সা’দ ছিলেন মোফাচ্ছিরে কোরান। সেই স্থানে আনুষ্ঠানিক নামাজিরাও ছিল যারা বলেছিল-তাড়াতাড়ি হোসেন এর শিরশ্ছেদ করতে হবে যেন আছরের নামাজ কাজা না হয়। তাই মুসলিমদের সাথে সাথে হোসেনী ব্রাহ্মণ সম্প্রদায়ও মহরম উদযাপন করে কারবালার সেই করুণ ইতিহাসকে স্মরণ করে থাকেন।

ইয়াজিদ ও ইমাম হোসেনের মধ্যে যে বিরোধী তা মূলত আরবের হাশেমি ও উমাইয়া গোত্রের বিরোধের ধারাবাহিক মাত্র। এই দুই গোত্রের মধ্যে যে বিরোধ তা নবী মুহাম্মদের জন্মের অনেক আগ থেকে শুরু। তাই তো লোকমুখে প্রচলিত আছে, কারবালার যুদ্ধের পর ইয়াজিদ এক পঙক্তি কবিতাও লিখে ফেলেন:

”হাশেমিরা ক্ষমতার জুয়া খেলে,
কিন্তু কোন শব্দ আসলো না, কোন দৈববাণীও নামলো না।”

শুধু এটাই নয়, এর আগে আলির মৃত্যুর পর খলিফা মতাওয়াক্কিল নিজের দরবারে উপস্থিত গণ্যমান্যদের চিত্তবিনোদনের জন্যে তিনি এক ভাঁড়কে নিয়োজিত করেন যে আলির বেশ ধারণ করে নর্তন-কুর্দন করতো। মুতাওয়াক্কিল ইমাম হোসেন (নবীর নাতি) এর সমাধিতে লাঙ্গল চালিয়ে দেন এবং সেচ করতে থাকেন যাতে ওই সমাধির কোন চিহ্ন না পাওয়া যায়; মানুষের মন থেকে যেন ইমাম হোসেন এর স্মৃতি নিশ্চিহ্ন হয়ে যায়।

হোসেনী ব্রাহ্মণদের মতে, আনুমানিক ৬৮০ খ্রিস্টাব্দের দিকে, সেই সময়কার প্রায় ৫০০ ‘দত্ত’ ব্রাহ্মণ তাদের পূর্ব ইতিহাসের অংশ হিসেবে ইমাম হোসেন এর নামের ‘হোসেন’ অংশটি নিজেদের উপাধির অংশ করে নেন এবং নিজেদের ‘হোসেনি ব্রাহ্মণ’ নামে পরিচয় দিতে শুরু করেন। স্থানীয়দের মধ্যে, এই হোসেনী ব্রাহ্মণদের পূর্ব-পুরুষ ছিলেন-রাহাব দত্ত। যিনি বন্ধু ইমাম হোসেনের জন্যে লড়াই করতে সুদূর আরব দেশে যান। নিজের ছেলেদের সাথে নিয়ে লড়াই করেন ইয়াজিদ এর বিরুদ্ধে। যুদ্ধে তাঁর সব সন্তান নিহত হয়। বলা হয়, ইমাম হোসেন তাঁর প্রতি রাহাব দত্তের এই ভালোবাসা দেখে তাঁকে সুলতান উপাধি দেন এবং তাঁকে ভারতে চলে যেতে অনুরোধ করেন। রাহাব দত্ত পরবর্তীতে ভারতে ফিরে আসেন ঠিকই এবং তাঁর নামের সাথে ‘হোসেনী’ যুক্ত করে নেন। কর্নেল রামস্বরূপ বকশী যিনি এই হোসেনী ব্রাহ্মণদেরই বংশধর, তিনি মনে করেন- “প্রতিবছর মুসলিমদের পাশাপাশি আশুরা উদযাপন হিন্দু-মুসলিম ভাতৃত্বের গুরুত্বপূর্ণ অংশ। আমরা এই উপমহাদেশের কয়েকশ বছরের হিন্দু-মুসলিম সহাবস্থানেরই প্রতীক।” তারা মনে করেন, রাহাব দত্তের সাথে মোহাম্মদের পরিবারের সাথে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল এবং আরবে তিনি বেশ সম্মানিত ছিলেন। কারবালার যুদ্ধে তিনি তাঁর সাত পুত্রের জীবন উৎসর্গ করেন যাদের নাম যথাক্রমে: পোরো, রাম সিং , হারাস সিং, রাই পান, সাহাস রাই, শের খান, ধারো। দত্ত ব্রাহ্মণরা এবং শিয়া অনুসারীরা তাদের যুদ্ধ ত্যাগ করেননি যতদিন না পর্যন্ত ইয়াজিদ ক্ষমতা ছাড়ছিলেন। ইমাম হোসেনের মৃত্যুর পর মাত্র ৪০ দিন ইয়াজিদ ক্ষমতায় ছিলেন। দুঃসাহসিক হোসেনী ব্রাহ্মণরা একাত্ম হন আমির আল মোখতারের এর সাথে। যাকে আমরা মোখতারের বিদ্রোহ হিসেবে জানি। যিনি ইমাম হোসেনের সবচেয়ে কাছের অনুসারী ছিলেন। তারা কুফার দুর্গ আক্রমণ করেন এবং ইয়াজিদের গভর্নর ওবাইদুল্লাহকে ক্ষমতাচ্যুত করেন। আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ তথ্য বলে রাখা যেতে পারে, হযরত আলি কর সংগ্রহ এবং ব্যবস্থাপনার মত গুরুত্বপূর্ণ পদে দত্ত ব্রাহ্মণদের নিয়োগ করেছিলেন বাসরার যুদ্ধে যা “উটের যুদ্ধ” নামে খ্যাত। (সূত্র- Brahmins Fought for Imam Hussain in the Battle of Karbala)

বলা হয় পরবর্তীতে, সুন্নি মুসলিমরা যখন শিয়াদের এবং দত্ত ব্রাহ্মণদের বিরুদ্ধে প্রচারণা শুরু করল তখন সাত পুত্র হারানোর ক্ষোভে দুঃখে রাহাব দত্ত আফগানিস্তান চলে যান। অন্যান্য দত্ত ব্রাহ্মণরা আরব ছেড়ে আনুমানিক ৭২৮ খ্রিষ্টাব্দে ভারতের শিয়ালকোটে চলে আসেন। কেউবা রাজস্থানের পুশকারেও চলে যান। এছাড়া রাহাব দত্তের অন্যান্য বংশধরদের মধ্যে মোহদারা এখনও আফগানিস্তানে রয়েছেন। আজও ভারতে হোসেনি ব্রাহ্মণরা মহরম পালন করেন অন্যান্য মুসলিমদের সাথে। এদের অনেকেই এখন দত্ত, শর্মা, ভরদ্বাজ ইত্যাদি ব্যবহার করেন।

মীর মোশারফ হোসেন-এর ‘বিষাদ সিন্ধু’তে আজর নামে যে ব্যক্তির কথা উল্লেখ আছে তিনি ছিলেন ব্রাহ্মণ সম্প্রদায়ের ভারতীয় লোক। মোফারফ হোসেন হয়তো এরকম কোন ঘটনা শুনেই বিষাদ সিন্ধু’তে আজর চরিত্রটি যুক্ত করে থাকতে পারেন। অন্যদিকে আহমদ ছফা সম্ভবত এই কাহিনী সম্পর্কে অবগত ছিলেন না তাই তাঁর “বাঙালি মুসলমানের মন” বইতে এই বিষয়ে কড়া সমালোচনা করেছেন। বর্তমান ভারতে হোসেনী ব্রাহ্মণ সম্প্রদায়ের সদস্য সংখ্যা ৫ লাখ। এছাড়া পাকিস্তান, আফগানিস্তানেও হোসেনি ব্রাহ্মণ সম্প্রদায়ের লোক বসবাস করে। এখন কথা আসে, আরবের ময়দানে আবার ব্রাহ্মণ পাওয়া গেলে কি ভাবে? হোসেনি ব্রাহ্মণদের ভাষ্যমতে মুহম্মদের পরিবারের সাথে এই ব্রাহ্মণদের সম্পর্ক ছিল। তাহলে প্রশ্ন আসে এই সম্পর্কের কথা ইসলামের কোন ইতিহাসে লেখা আছে কিনা? আবার আরেকটি প্রশ্ন আমাদের সামনে হাজির হয় সেটি হল, ভারতে হোসেনি ব্রাহ্মণ সম্প্রদায়ের জবানবন্দি অনুযায়ী বিষাদ সিন্ধুর বর্ণনা অনুযায়ী আজর তিন জনের মাথা উৎসর্গ করেন নি, বরং সাতজন পুত্রকে উৎসর্গ করেছিলেন। তবে এখানে ব্যক্তির নাম আজর নয় রাহাব সিং দত্ত (Rahab Sidh Datt)!

তবে ঘটনা যাই ঘটুক না কেন, বর্তমান সময়ে জিশু খ্রিস্ট ভারতের এসেছিলেন কিনা সেই ইতিহাসের মতন রাহাব দত্ত ইমাম হোসেনের সাথে দেখা করতে পেরেছিলেন কিনা সেই ইতিহাস ধোঁয়াশায় থেকেই যায়। ইমাম হোসেনের সাথে দেখা হোক বা না হোক, সেই ইতিহাস হয়তো মিথ! কিন্তু পাঁচ লক্ষ মানুষ হিন্দু হয়েও ইমাম হোসেনের চেতনা ধারণা করে এটি কিন্তু মিথ্যে নয়। এটাই বাস্তবতা! বি.জে.পি ক্ষমতায় আসার পর ভারতের উগ্রবাদী হিন্দু সংগঠন আরএসএস যখন হিন্দু ধর্মে অ-হিন্দুদের দীক্ষিত করার কর্মসূচী ‘পুরখো কে ঘর ওয়াপসি’ হাতে নিলো তখন সবার আগে হোসেন ব্রাহ্মণ সম্প্রদায়ের ইস্যুটি সামনে এসে যায়। কারণ তারা হিন্দু হয়েও শিয়া মুসলিমদের একটি বিশ্বাস একই সাথে লালন করে।

হোসেন’কে কোন ভারতীয় সাহায্য করেছে আর সেই ইতিহাস ইরানে থাকবে না এটি অসম্ভব বিষয়। কিন্তু অনেকেই বলেন ইরানে শিয়া’দের ইতিহাসে এই বিষয়টি উল্লেখ নেই। এই ইতিহাস কতোটুকু সত্য নাকি মিথ সেই ভরসার জায়গা হল ইরানের শিয়াদের ইতিহাস। বাংলা ব্লগে ইসলামের রাজনৈতিক ইতিহাস বিষয়ে যারা জ্ঞান রাখেন তাদের মধ্যে অন্যতম পারভেজ আলম এই বিষয়ে বলেন-“উমাইয়ার খেলাফতের আমলে শিয়া মুভমেন্টের মূল জায়গা ছিল পূর্ব ইরান আর আফগানিস্তান। ইরানের খোরাসান ছিল শিয়া মুভমেন্টের জায়গা। শিয়া ডিসিডেন্টরা পশ্চিম ভারতের বিভিন্ন এলাকায় বসতি করেছিল হতে পারে তাদের মাধ্যমেই এই কিংবদন্তি-গুলার জন্ম হয়েছে। ভারতবর্ষের লোকজনরে সাথে নিয়া উমাইয়াদের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করছিল আব্বাসিয়রা, আব্বাসিয়রাও অতিতে শিয়া ছিল। প্লাস আব্বাসিয়রা প্রাচীন হিন্দু বৌদ্ধ ঐতিহ্যরে যথেষ্ট সম্মান করতো, অনেক বই পত্র অনুবাদ করছে, ভারতীয় পণ্ডিতদের বাগদাদে নিয়া গেছে, এইসব কাহিনী ঐসময়ও জন্ম হইতে পারে।”

হোসেনি ব্রাহ্মণ সম্প্রদায়ের একজন সদস্য সাক্ষাৎকারে বলেন, হোসেনী ব্রাহ্মণদের গলায় একটা চিহ্ন দেখা যায়। অতীতে এই চিহ্নের বিষয়ে আমার জানা ছিল না কিন্তু আমি লক্ষ্য করে দেখলাম আমার ছেলের মতন আমার গলার মধ্যেও একটি চিহ্ন আছে। এই চিহ্ন টি খুব ছোট আকারের হয়। এই চিহ্নটি জন্মগত-ভাবে হয়। হোসেনী ব্রাহ্মণ সম্প্রদায়ের প্রায় ৩০% মানুষের গলার মধ্যে জন্মগত-ভাবে একটি চিহ্ন থাকে। এই চিহ্নটি হল কারবালা’র যে sacrifice হয়েছিল তারই চিহ্ন!আমরা আমাদের পরিবারের যে কোন উৎসবে সবার আগে ঈশ্বরকে তারপর হোসেনকে পূজা/স্মরণ করে কাজ শুরু করি।

যারা ভাবছেন এমন বিশ্বাস থাকা সম্ভব কিনা তাদের স্মরণ করিয়ে দিতে চাই মোহাম্মদ আলী জিন্না’র কথা। মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ ছিলেন শিয়া খোজা সম্প্রদায়ের মানুষ। খোজাদের বিশ্বাস ও ধর্মীয় আচার-আচরণ সহজে কোনও পরিচিত ছাঁচের মধ্যে ফেলে বিচার করা চলে না। বার্নাড লিউইস খোজাদের বিবরণ দিতে গিয়ে বলেছিলেন, এরা “এক পাতলা মুসলিম আচ্ছাদনের তলায় হিন্দু মনো-ভাবাপন্ন। ইসলামি ধর্মবিশ্বাসের অধীনে এ এক বিশিষ্ট সম্প্রদায়, যার মধ্যে হিন্দু-মুসলিম দুয়েরই মিশ্রণ।” তাই সবশেষে যে কথাটি বলা যায়, হোসেনের সাথে ব্রাহ্মণরা লড়েছিল কিনা, তাদের মধ্যে বন্ধুত্ব ছিল কিনা তা স্পষ্ট করে বলা না গেলেও মুসলিম সম্প্রদায়ের বাহিরে হোসেইন বেঁচে আছেন ‘হোসেনী ব্রাহ্মণ’ সম্প্রদায়ের মধ্যে। এটাই সত্য এটাই বাস্তবতা।

একটু সুন্নিপন্থী সালাফি কিংবা আহলে হাদিস ১০ মহরমকে কী হিসেবে দেখে তা নিয়ে দুই একটি কথা বলতে চাই। বাংলাদেশের আহলে হাদিস কারবালার জন্যে ইয়াজিদকে সরাসারি দায়ী করে না। তবে তারা ইয়াজিদকে প্রশংসাও করে না। তারা মধ্যপন্থী (তাদের ভাষায়) অবস্থায় আছে তারা এক পক্ষের মতন ইয়াজিদকে গালাগাল করে না কিংবা কারবালার কারণে তারা খুশিও হয় না। এছাড়া ১০ মহরমে শোক পালন করা তারা বেদাত হিসেবে ঘোষণা করেছে। কারণ এই দিনে নবী মুসা ফেরাউনের কবল থেকে তার জাতিকে উদ্ধার করেছে। তাই এই দিন শোকের নয় বরং উৎসবের দিন। বাংলাদেশে মহরম পালন করাকে সালাফিপন্থী আইএসও বেদাত জ্ঞান করে এই কারণে পুরান ঢাকার মহরমের মিছিলে তারা বোমা হামলা চালায়।

তথ্য-সহায়তায়-
Brahmins Fought for Imam Hussain in the Battle of Karbala
http://hussainibrahmin.tumblr.com/brahminsinkarbala